আল্লাহদ্রোহী ও ধর্মত্যাগীদেরকে তাওবার প্রতি আহ্বান ও তাদের সাথে যুদ্ধ
আল্লাহদ্রোহী ও ধর্মত্যাগীদেরকে তাওবার প্রতি আহ্বান ও তাদের সাথে যুদ্ধ >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ৮৮, আল্লাহদ্রোহী ও ধর্মত্যাগীদেরকে তাওবার প্রতি আহ্বান ও তাদের সাথে যুদ্ধ, অধ্যায়ঃ (১-৯)=৯টি
৮৮/১. অধ্যা#881য়ঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে শিরক করে তার গুনাহ এবং দুনিয়া ও আখিরাতে তার শাস্তি। আল্লাহ বলেনঃ নিশ্চয়ই শির্ক বিরাট জুল্ম- (সুরা লুক্বমান ৩১/১৩)। তুমি আল্লাহর শরীক স্থির করলে তোমার কর্ম তো বিফল হইবে এবং তুমি হইবে ক্ষতিগ্রস্ত (সুরা আয্-যুমার ৩৯/৬৫)।
৮৮/২. অধ্যায়ঃ ধর্মত্যাগী পুরুষ ও নারীর বিধান এবং তাদেরকে তওবা প্রতি আহবান।
৮৮/৩. অধ্যায়ঃ যারা ফরযসমূহ গ্রহণ করিতে অস্বীকার করে এবং যাদেরকে ধর্মত্যাগের অপরাধে অপরাধী করা হয়েছে তাদেরকে হত্যা করা।
৮৮/৪. অধ্যায়ঃ যখন কোন যিম্মী বা অন্য কেউ নাবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বাক্চাতুরির মাধ্যমে গালি দেয় এবং স্পষ্ট করে না, যেমন তার কথা আস্সামু আলাইকা (তোমার মরণ হোক)।
৮৮/৫. অধ্যায়ঃ অত্যাচারিত হবার পর ও কাওম এর জন্য ক্ষমার পার্থনা করা
৮৮/৬. অধ্যায়ঃ খারিজী সম্প্রদায় ও মুলহিদদের অপরাধ প্রমাণিত হবার পর তাদেরকে হত্যা করা।
৮৮/৭. অধ্যায়ঃ যারা মনোতুষ্টির জন্য খারিজীদের সঙ্গে যুদ্ধ ত্যাগ করে এবং এজন্য যে যাতে লোকেরা তাদের প্রতি বিরূপ মনোভাব পোষণ না করে।
৮৮/৮. অধ্যায়ঃ নাবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বাণীঃ কক্ষনো কেয়ামত ঘটবে না, যতক্ষণ না দুটো দল পরস্পর লড়াই করিবে, অথচ তাদের দাবি হইবে একটাই।
৮৮/৯. অধ্যায়ঃ ব্যাখ্যা দানকারীদের ব্যাপারে যা বর্ণনা করা হয়েছে।
৮৮/১. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে শিরক করে তার গুনাহ এবং দুনিয়া ও আখিরাতে তার শাস্তি। আল্লাহ বলেনঃ নিশ্চয়ই শির্ক বিরাট জুল্ম- (সুরা লুক্বমান ৩১/১৩)। তুমি আল্লাহর শরীক স্থির করলে তোমার কর্ম তো বিফল হইবে এবং তুমি হইবে ক্ষতিগ্রস্ত (সুরা আয্-যুমার ৩৯/৬৫)।
৬৯১৮
আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন এ আয়াত অবতীর্ণ হলোঃ যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের ঈমানকে জুল্ম দ্বারা কলুষিত করেনি… (সুরা আনআম ৬/৮২)। তখন তা রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবাদের কাছে গুরুতর মনে হলো। তারা বলিলেন, আমাদের মাঝে এমন কে আছে যে তার ঈমানকে জুল্ম দ্বারা কলুষিত করে না। তখন রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তা অবশ্যই এমনটা নয়, তোমরা কি লুকমানের কথা শ্রবণ করনি? শিরকই বিরাট জুল্ম (সীমালঙ্ঘন)- (সুরা লুক্বমান ৩১/১৩)।(আঃপ্রঃ- ৬৪৩৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৫০)
৬৯১৯
আবু বাক্রাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সবচেয়ে কঠিন কবীরা গুনাহ হচ্ছে আল্লাহর সাথে শরীক করা, পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া ও মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া। মিথ্যা সাক্ষ্য কথাটি তিনবার বলিলেন। অথবা বলেছেন; মিথ্যা বক্তব্য। কথাটি বারবার বলিতে থাকলেন, এমন কি আমরা আকাঙ্ক্ষা করিতে লাগলাম, হায় যদি তিনি নীরব হয়ে যেতেন।(আঃপ্রঃ- , ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৫১)
৬৯২০
আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক বেদুঈন নাবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! কবীরা গুনাহসমূহ কী? তিনি বলিলেন, আল্লাহর সঙ্গে শরীক করা। সে বলিল, তারপর কোনটি? তিনি বললেনঃ তারপর পিতা-মাতার অবাধ্যতা। সে বলিল, তারপর কোনটি? তিনি বললেনঃ তারপর মিথ্যা কসম করা। আমি জিজ্ঞেস করলাম, মিথ্যা শপথ কী? তিনি বললেনঃ যে ব্যক্তি (শপথের সাহায্যে) মুসলিমের ধন-সম্পদ হরণ করে নেয়। অথচ সে এ শপথের ক্ষেত্রে মিথ্যাচারী।(আঃপ্রঃ- ৬৪৪০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৫২)
৬৯২১
ইবনু মাস্ঊদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক লোক বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা কি জাহিলী যুগের কাজ কর্মের জন্য পাকড়াও হবো? তিনি বললেনঃ যে লোক ইসলামী যুগে সৎ কাজ করিবে সে জাহিলী যুগের কাজ কর্মের জন্য পাকড়াও হইবেনা। আর যে ইসলাম কবুলের পর অসৎ কাজ করিবে, সে প্রথম ও পরবর্তীর জন্য (উভয় সময়ের কৃতকর্মের জন্য) পাকড়াও হইবে। [১২৩][মুসলিম ১/৫৩, হাদীস ১২০, আহমাদ ৩৬০৪, ৩৮৮৬] (আঃপ্রঃ- ৬৪৪১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৫৩)
[১২৩] কাফির ইসলাম গ্রহণ করলে তার ইসলামপূর্ব যাবতীয় গুনাহ ক্ষমা হয়ে যায়। ফলে সে ইসলামের উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে সৎ আমল করা অবস্থায় যদি মৃত্যু বরণ করে তাহলে পূর্বের কোন কুফুরী আমলের জন্য তাকে পাকড়াও করা হইবে না। পক্ষান্তরে যদি ইসলাম গ্রহণ করার পর আবারো পূর্ববর্তী কুফুরী আমল করে অথবা মুরতাদ হয়ে যায়, আর এমতাবস্থায় তার মৃত্যু ঘটে, তাহলে তার মুসলমান হওয়ার পূর্বের এবং মুসলমান হওয়ার পরের সকল কুফুরীর জন্য তাকে পাকড়াও করা হইবে। অবস্থা এমন যে, সে যেন কখনও মুসলমান হয়নি। (ফাতহুল বারী)
৮৮/২. অধ্যায়ঃ ধর্মত্যাগী পুরুষ ও নারীর বিধান এবং তাদেরকে তওবা প্রতি আহবান।
ইবনু উমর (রাদি.) যুহরী ও ইবরাহীম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, ধর্মত্যাগী নারীকে হত্যা করা হইবে এবং তার থেকে তওবা আহবান করা হইবে। আল্লাহ বলেনঃ ঈমান আনার পর যে সম্প্রদায় সত্য প্রত্যাখ্যান করে তাদেরকে আল্লাহ কিভাবে সৎ পথের নির্দেশ দেবেন…… এরাই তারা যারা পথভ্রষ্ট পর্যন্ত। (সুরা আল ইমরান ৩/৮৬-৯০)
আল্লাহর বাণীঃ যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তোমরা যদি তাদের দল বিশেষের আনুগত্য কর তবে তারা তোমাদেরকে ঈমানের পর আবার সত্য প্রত্যাখ্যানকারীতে পরিণত করিবে – (সুরা আল ইমরান ৩/১০০)। আল্লাহ বলেন, যারা ঈমান আনে, পরে কুফরী করে এবং আবার ঈমান আনে আবার কুফরী করে, এরপর তাদের কুফরী প্রবৃত্তি বৃদ্ধি পায় আল্লাহ তাদেরকে কিছুতেই ক্ষমা করবেন না এবং তাদের কোন পথও দেখাবেন না – ( সুরা আন-নিসা ৪/১৩৭)। আল্লাহ বলেন, তোমাদের মধ্যে কেউ দ্বীন হইতে ফিরে গেলে আল্লাহ এমন এক জাতি আনবেন যাদেরকে তিনি ভালবাসবেন ও যারা তাঁকে ভালবাসবে – (সুরা আল-মায়িদা ৫/৫৪)। আল্লাহ বলেনঃ যারা সত্য প্রত্যাখ্যানের জন্য হৃদয় খুলে রাখে তাদের উপর পতিত হয় আল্লাহর গযব এবং তাদের জন্য আছে মহাশাস্তি। তা এজন্য যে, তারা ইহ জীবনকে পর জীবনের উপর প্রাধান্য দেয়- (সুরা নাহল ১৬/১০৬-১০৭)।……(আরবী) অর্থ… (আরবী)- অবশ্যই তোমার প্রতিপালক তাদের জন্য যারা নির্যাতিত হবার পর দেশ ত্যাগ করে পরে জিহাদ করে এবং ধৈর্য ধারণ করে তোমার প্রতিপালক এসবের পর তাদের প্রতি অবশ্যই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু – (সুরা নাহল ১৬/১১০)। আল্লাহ বলেনঃ তারা সর্বদা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিতে থাকবে, যে পর্যন্ত তোমাদেরকে তোমাদের দ্বীন হইতে ফিরিয়ে না দেয়, যদি তারা সক্ষম হয়। তোমাদের মধ্যে যে কেউ স্বীয় দ্বীন হইতে ফিরে যায় ও কাফির হয়ে মারা যায়, ইহকাল ও পরকালে তাদের কর্ম নিষ্ফল হয়ে যায়। এরাই আগুনের অধিবাসী, সেখানে তারা স্থায়ী হইবে – (সুরা আল-বাকারা ২/২১৭)।
৬৯২২
ইকরিমাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আলী (রাদি.)-এর কাছে একদল যিন্দীককে (নাস্তিক ও ধর্মত্যাগীকে) আনা হল। তিনি তাদেরকে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিলেন। এ ঘটনা ইবনু আব্বাস (রাদি.)-এর কাছে পৌঁছলে তিনি বলিলেন, আমি কিন্তু তাদেরকে পুড়িয়ে ফেলতাম না। কেননা, রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিষেধাজ্ঞা আছে যে, তোমরা আল্লাহর শাস্তি দ্বারা শাস্তি দিও না। বরং আমি তাদেরকে হত্যা করতাম। কারণ, রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নির্দেশ আছে, যে কেউ তার দ্বীন বদলে ফেলে তাকে তোমরা হত্যা কর।(আঃপ্রঃ- ৬৪৪২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৫৪)
৬৯২৩
আবু মূসা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে এলাম। আমার সঙ্গে আশআরী গোত্রের দুজন লোক ছিল। একজন আমার ডানদিকে, অপরজন আমার বামদিকে। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন মিস্ওয়াক করছিলেন। উভয়েই তাহাঁর কাছে আবদার জানাল। তখন তিনি বললেনঃ হে আবু মূসা! অথবা বলিলেন, হে আবদুল্লাহ ইবনু কায়স! রাবী বলেন, আমি বললামঃ ঐ সত্তার কসম! যিনি আপনাকে সত্য দ্বীনসহ পাঠিয়েছেন, তারা তাদের অন্তরে কী আছে তা আমাকে জানায়নি এবং তারা যে চাকরি প্রার্থনা করিবে তা আমি বুঝতে পারিনি। আমি যেন তখন তাহাঁর ঠোঁটের নিচে মিস্ওয়াকের প্রতি লক্ষ্য করছিলাম যে তা এক কোণে সরে গেছে। তখন তিনি বলিলেন, আমরা আমাদের কাজে এমন কাউকে নিযুক্ত করব না বা করি না যে নিজেই তা চায়। বরং হে আবু মূসা! অথবা বলিলেন, হে আবদুল্লাহ ইবনু কায়স! তুমি ইয়ামানে যাও। এরপর তিনি তার পেছনে মুআয ইবনু জাবাল (রাদি.)-কে পাঠালেন। যখন তিনি সেখানে পৌঁছলেন, তখন আবু মূসা (রাদি.) তার জন্য একটি গদি বিছালেন আর বলিলেন, নেমে আসুন। ঘটনাক্রমে তার কাছে একজন লোক শেকলে বাঁধা ছিল। তিনি জিজ্ঞেস করিলেন, ঐ লোকটি কে? আবু মূসা (রাদি.) বলিলেন, সে প্রথমে ইয়াহূদী ছিল এবং মুসলিম হয়েছিল। কিন্তু আবার সে ইয়াহূদী হয়ে গেছে। আবু মূসা (রাদি.) বলিলেন, বসুন। মুআয (রাদি.) বলিলেন, না, বসব না, যতক্ষণ না তাকে হত্যা করা হইবে। এটাই আল্লাহ ও তাহাঁর রাসূলের ফায়সালা। কথাটি তিনি তিনবার বলিলেন। এরপর তার ব্যাপারে নির্দেশ দেয়া হল এবং তাকে হত্যা করা হল। তারপর তাঁরা উভয়ই কিয়ামুল্ লায়ল (রাত্রি জাগরণ) সম্পর্কে আলোচনা করিলেন। তখন একজন বলিলেন, আমি কিন্তু ইবাদতও করি, নিদ্রাও যাই। আর নিদ্রার অবস্থায় ঐ আশা রাখি যা ইবাদাত অবস্থায় রাখি। [১২৪] [২২৬১; মুসলিম ৩৩/৩, হাদীস ১৮২৪, আহমাদ ১৯৬৮৬] (আঃপ্রঃ- ৬৪৪৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৫৫)
[১২৪] কোন মুসলমান ধর্ম ত্যাগ করলে তাকে হত্যা করাই হল শরীয়তের বিধান। সাহাবীগণ (রাদি.) শরীয়তের বিধি-বিধান বাস্তবায়নে ছিলেন আপোষহীন। যে বান্দা আল্লাহ ও তাহাঁর রসূলের দেয়া নিয়ম বিধান অনুযায়ী যাবতীয় কার্য সম্পাদন করে, সে যাবতীয় কার্যেই নেকী হাসিল করিতে থাকে – তা সালাতই হোক বা নিদ্রাই হোক। যারা এশা ও ফযরের সালাত মসজিদে জামাতে সম্পাদন করে তারা রাতে ঘুমিয়েও সালাতের নেকী পায়। যারা এতিম বিধবা ও দুঃখী মানুষের সাহায্যে নিজেদেরকে নিয়োজিত রাখে, তারা রাতে ঘুমিয়েও সালাত সম্পাদনের নেকী লাভ করিতে থাকে।
৮৮/৩. অধ্যায়ঃ যারা ফরযসমূহ গ্রহণ করিতে অস্বীকার করে এবং যাদেরকে ধর্মত্যাগের অপরাধে অপরাধী করা হয়েছে তাদেরকে হত্যা করা।
৬৯২৪
আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন নাবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মৃত্যু হল এবং আবু বকর (রাদি.) খলীফা হলেন আর আরবের যারা কাফির হল, তখন উমর (রাদি.) বলিলেন, হে আবু বকর! আপনি কিভাবে লোকদের সঙ্গে যুদ্ধ করবেন? অথচ নাবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমাকে ততক্ষণ পর্যন্ত লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে যতক্ষণ না তারা লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহ (আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই) বলবে। আর যে কেউ লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহ বলে, যথার্থ কারণ না থাকলে সে তার জান-মাল আমার হাত থেকে রক্ষা করে নেয়। আর তার হিসাব আল্লাহর দায়িত্বে। [১২৫](আঃপ্রঃ-৬৪৪৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৫৬)
[১২৫] কাজী আয়াজ ও অন্যরা বলেন, মুরতাদ হওয়া লোকগুলো ছিল তিন প্রকারের,
(১) প্রথম প্রকারঃ যারা মূর্তি পূজার দিকে প্রত্যাবর্তন করেছিল।
(২) দ্বিতীয় প্রকারঃ যারা মুসাইলামাতুল কাযযাব ও আসওয়াদ আনাসীর অনুসারী ছিল। নাবী সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মৃত্যুর পূর্বেই তারা নবুওয়াতের দাবী করেছিল। ইয়ামামার অধিবাসীরা মুসাইলামার অনুসারী ছিল। আর সানআর অধিবাসীরা ছিল আসওয়াদ আনাসির অনুসারী। নাবী সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মৃত্যুর কিছুদিন পূর্বেই হত্যা করা হয়েছিল আসওয়াদকে। তার অনুসারীদের অল্প কিছু যা অবশিষ্ট ছিল তাদেরকে আবু বকর (রাদি.) এর খিলাফতের সময় রাসুল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যাকাত আদায়কারী আলেমরা হত্যা করেছিল। আর আবু বকর (রাদি.) খালিদ ইবনু ওয়ালিদের নেতৃত্বে একদল সৈন্য প্রেরণ করেছিলেন মুসাইলামার বিরুদ্ধে এবং তাঁরা তাকে হত্যা করেছিল।
(৩) তৃতীয় প্রকারঃ যারা ইসলামের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিল, কিন্তু যাকাত দিতে অস্বীকার করেছিল। যাদের যুক্তি হল যাকাত রাসুল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথেই নির্দিষ্ট। তারা তাদের স্বপক্ষে এই আয়াত পেশ করে,
(আরবী)
[সুরা আত-তওবা (৯): ১০৩]
ফলে তাদের ধারণা ছিল যে, যাকাত দেয়া নাবী সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে সম্পৃক্ত। কেননা তিনি ব্যতীত অন্য কেউ তাদেরকে পবিত্র করিতে এবং তাদের উপর রহমতের জন্য দুআ করিতে পারবে না। নাবীর সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মৃত্যুর পরে যদি যাকাত অন্যকে দেয় তাহলে তার দোয়া কীভাবে তাদের জন্য প্রশান্তির হইবে?
এই প্রকার লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার ব্যাপারেই ওমর (রাদি.) আবু বকর (রাদি.) এর সাথে বিতর্ক করেছিলেন, যেমন এই পরিচ্ছেদের হাদীসে এসেছে। আর আবু মুহাম্মাদ ইবনু হাযম তাহাঁর সুবিখ্যাত গ্রন্থ (আরবী) এর মধ্যে বলেন, নাবী সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মৃত্যুর পর আরবরা চার ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল।
(১) প্রথম শ্রেণীর লোক পূর্ণ ইসলামের উপরেই প্রতিষ্ঠিত ছিল – এদের সংখ্যাই সবচাইতে বেশী।
(২) দ্বিতীয় শ্রেণীর লোক ইসলামের উপরই প্রতিষ্ঠিত ছিল, কিন্তু তারা বলিল, আমরা যাকাত দেয়া ছাড়া ইসলামের সকল বিধান প্রতিষ্ঠা করব। এরা প্রথম শ্রেণীর চাইতে সংখ্যায় ছিল কম।
(৩) তৃতীয় শ্রেণীর লোকেরা কুফর ও মুরতাদ হওয়ার ঘোষণা দেয়। যেমন- তুলাইহা ও সুজাহ এর অনুগামীরা।
(৪) চতুর্থ শ্রেণীর লোকেরা উপরোক্ত তিন শ্রেণীর লোকদের কারো অনুসরণ না করে অপেক্ষাই ছিল যে, যারা বিজয় লাভ করিবে তাদেরকে তারা অনুসরণ করিবে। কিন্তু আলহামদু লিল্লাহ, এক বছর অতিবাহিত না হইতেই সবাই আবার ইসলামের সুশীতল ছায়ার তলে ফিরে এসেছিল। (ফাতহুল বারী)
৬৯২৫
আবু বক্র (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আবু বকর (রাদি.) বলিলেন, আল্লাহর কসম! যারা সালাত ও যাকাতের মধ্যে পার্থক্য করিবে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আমি যুদ্ধ করব। কেননা, যাকাত হল মালের হক। আল্লাহর কসম! যদি তারা একটি বক্রির বাচ্চাও না দেয় যা তারা রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে দিত, তাহলে তা না দেয়ার কারণে তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করব। উমর (রাদি.) বলেন, আল্লাহর কসম! আমি বুঝতে পারলাম যে, এটা আর কিছু নয় এবং আল্লাহ আবু বকর (রাদি.)-এর বক্ষ যুদ্ধের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। পরে আমি বুঝতে পারলাম যে, (আবু বকর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন) এটি-ই হক।(আঃপ্রঃ- ৬৪৪৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৫৬)
৮৮/৪. অধ্যায়ঃ যখন কোন যিম্মী বা অন্য কেউ নাবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বাক্চাতুরির মাধ্যমে গালি দেয় এবং স্পষ্ট করে না, যেমন তার কথা আস্সামু আলাইকা (তোমার মরণ হোক)।
৬৯২৬
আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ইয়াহূদী রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট দিয়ে গেল। আর বলিল, আস্সামু আলাইকা। তার উত্তরে রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ওয়া আলাইকা। এরপর রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাহাবীদের বললেনঃ তোমরা কি বুঝতে পেরেছ সে কী বলেছে? সে বলেছে, আস্সামু আলাইকা (তোমার মরণ হোক)। তারা বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা কি তাকে হত্যা করব না? তিনি বললেনঃ না। বরং যখন কোন আহলে কিতাব তোমাদেরকে সালাম করিবে তখন তোমরা বলবে, ওয়া আলাইকুম (তোমাদের উপরও)। [১২৬](আঃপ্রঃ- ৬৪৪৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৫৭)
[১২৬] ওয়া আলাইকুম – তোমাদের উপরও। অর্থাৎ যেমন অকল্যাণ চাইলে, তোমাদের উপরও তেমন অকল্যাণ পতিত হোক।
৬৯২৭
আবু নুআয়ম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদল ইয়াহূদী নাবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দরবারে প্রবেশের অনুমতি চাইল। (প্রবেশ করার সময়) তারা বলিল আস্সামু আলাইকা (তোমার মৃত্যু হোক)। তখন আমি বললাম, বরং তোদের উপর মৃত্যু ও লানত হোক। নাবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে আয়েশা! আল্লাহ কোমল। তিনি সকল কাজে কোমলতা পছন্দ করেন। আমি বললাম, আপনি কি শুনেননি তারা কী বলেছে? তিনি বললেনঃ আমিও তো বলেছি ওয়া-আলাইকুম (এবং তোমাদের উপরও)।(আঃপ্রঃ- ৬৪৪৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৫৮)
৬৯২৮
ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ইয়াহূদীরা যখন তোমাদের কাউকে সালাম করে তারা সামু আলাইকুম বলে। তাই তোমরা বলবে, আলাইকা – তোমাদের উপর। (আঃপ্রঃ- ৬৪৪৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৫৯)
৮৮/৫. অধ্যায়ঃ অত্যাচারিত হবার পর ও কাওম এর জন্য ক্ষমার পার্থনা করা
৬৯২৯
আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি যেন লক্ষ্য করছিলাম যে, নাবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন এক নাবীর কথা বর্ণনা করিয়াছেন যাকে তাহাঁর সম্প্রদায় প্রহার করে রক্তাক্ত করে ফেলে, আর তিনি আপন চেহারা থেকে রক্ত মুছছেন ও বলছেনঃ হে রব! তুমি আমার কাওমকে ক্ষমা করে দাও। কেননা, তারা বুঝে না। [১২৭] (আঃপ্রঃ- ৬৪৪৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৬০)
[১২৭] যে নাবী নির্যাতিত, নিপীড়িত, রক্তে রঞ্জিত হওয়ার পরেও বদ দোয়া না করে বলেন, “হে আমার প্রতিপালক আমার ক্বওমকে তুমি ক্ষমা করে দাও, কেননা তারা তো বুঝে না।” সেই নাবী যে কতবড় উদার, ধৈর্যশীল, উম্মাতের হিতাকাংক্ষী এবং সহানুভূতিশীল তা সকলের ভাবা উচিত।
৮৮/৬. অধ্যায়ঃ খারিজী সম্প্রদায় ও মুলহিদদের অপরাধ প্রমাণিত হবার পর তাদেরকে হত্যা করা।
এবং আল্লাহর বাণীঃ “আল্লাহ এমন নন যে, তিনি কোন সম্প্রদায়কে পথ দেখানোর পর তাদেরকে গোমরাহ করবেন – তাদেরকে কী বিষয়ে সাবধানে চলতে হইবে তা সুস্পষ্টরূপে ব্যক্ত না করা পর্যন্ত।” (সুরা আত্-তওবা ৯/১১৫)
ইবনু উমর (রাদি.) তাদেরকে আল্লাহর সৃষ্টির সবচেয়ে নিকৃষ্ট সৃষ্টি হিসেবে বিবেচনা করিতেন এবং তিনি বলেছেন, তারা এমন কিছু আয়াতকে মুমিনদের ওপর প্রয়োগ করেছে যা কাফিরদের ব্যাপারে নাযিল হয়েছে।
৬৯৩০
সুয়ারদ ইবনু গাফালা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আলী (রাদি.) বলেছেন, আমি যখন তোমাদেরকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কোন হাদীস বয়ান করি আল্লাহর শপথ! তখন তাহাঁর উপর মিথ্যা কথা আরোপ করার চেয়ে আকাশ থেকে নিচে পড়ে যাওয়াটা আমার কাছে শ্রেয়। কিন্তু আমি যদি আমার ও তোমাদের মধ্যকার বিষয় সম্পর্কে কিছু বলি, তাহলে মনে রাখতে হইবে যে, যুদ্ধ একটি কৌশল। আমি রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলিতে শুনিয়াছি, শেষ যুগে এমন এক সম্প্রদায়ের আবির্ভাব ঘটবে যারা হইবে অল্পবয়স্ক যুবক, নির্বোধ। তারা সৃষ্টির সবচেয়ে শ্রেষ্ঠতম কথা থেকে আবৃত্তি করিবে। অথচ ঈমান তাদের গলা অতিক্রম করিবে না। তারা দ্বীন থেকে এমনভাবে বের হয়ে যাবে যেমন তীর শিকার ভেদ করে বের হয়ে যায়। তাদেরকে যেখানেই তোমরা পাবে হত্যা করিবে। কেননা তাদেরকে হত্যা করলে হত্যাকারীর জন্য কেয়ামতের দিনে প্রতিদান আছে।(আঃপ্রঃ- ৬৪৪৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৬১)
৬৯৩১
আবু সালামা ও আত্বা ইবনু ইয়াসার (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
যে, তারা আবু সাঈদ খুদরী (রাদি.)-এর কাছে এলেন। তারা তাঁকে হারূরিয়্যা সম্প্রদায়ের ব্যাপারে প্রশ্ন করিলেন যে, আপনি কি নাবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে এদের ব্যাপারে কিছু শুনেছেন? তিনি বলিলেন, হারূরিয়্যা কী তা আমি জানি না। তবে নাবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলিতে শুনিয়াছি এ উম্মাতের মধ্যে বের হইবে। তার থেকে সম্প্রদায়ের আবির্ভাব হইবে কথাটি বলেননি। যাদের সালাতের তুলনায় তোমরা তোমাদের সালাতকে তুচ্ছ ভাববে। তারা কুরআন পড়বে বটে কিন্তু তা তাদের গলা অতিক্রম করিবে না। তারা দ্বীন থেকে বের হয়ে যাবে যেমন তীর শিকার ভেদ করে বের হয়ে যায়। তীর নিক্ষেপকারী তীরের প্রতি, তার অগ্রাংশের প্রতি, তীরের মুখে বেষ্টনীর প্রতি লক্ষ্য করে, তীরের ছিলার বেলায়ও সন্দেহ হয় যে তাতে কিছু রক্ত লেগে থাকল কি না। [১২৮](আঃপ্রঃ- ৬৪৫০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৬২)
[১২৮] এরা ইসলাম বর্হিভূত খারিজী সম্প্রদায়। আলী (রাদি.)র সময় তাদের আবির্ভাব ঘটেছিল।
৬৯৩২
আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি হারূরিয়্যা সম্পর্কে আলোচনা করছিলেন। তিনি বলেন, নাবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তারা ইসলাম থেকে এমনিভাবে বের হয়ে যাবে যেমন তীর শিকার থেকে বের হয়ে যায়। (আঃপ্রঃ- ৬৪৫১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৬৩)
৮৮/৭. অধ্যায়ঃ যারা মনোতুষ্টির জন্য খারিজীদের সঙ্গে যুদ্ধ ত্যাগ করে এবং এজন্য যে যাতে লোকেরা তাদের প্রতি বিরূপ মনোভাব পোষণ না করে।
৬৯৩৩
আবু সাঈদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন কিছু বণ্টন করছিলেন। ঘটনাক্রমে আবদুল্লাহ ইবনু যুলখুওয়ায়সিরা তামীমী এল এবং বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! ইনসাফ করুন। তিনি বললেনঃ আফসোস তোমার জন্য! আমি যদি ইনসাফ না করি তা হলে আর কে ইনসাফ করিবে? উমর ইবনু খাত্তাব (রাদি.) বলিলেন, আমাকে অনুমতি দিন, তার গর্দান উড়িয়ে দেই। তিনি বললেনঃ তাকে ছেড়ে দাও। তার জন্য সাথীরা আছে। যাদের সালাতের তুলনায় তোমরা তোমাদের সালাতকে তুচ্ছ মনে করিবে। যাদের সিয়ামের তুলনায় তোমরা তোমাদের সিয়ামকে তুচ্ছ মনে করিবে। তারা দ্বীন থেকে এমনিভাবে বেরিয়ে যাবে যেমন তীর শিকার ভেদ করে বেরিয়ে যায়। তীরের প্রতি লক্ষ্য করলে তাতে কিছু পাওয়া যায় না। তীরের মুখের বেষ্টনীর প্রতি লক্ষ্য করলেও কিছু পাওয়া যায় না। তীরের কাঠের অংশের দিকে দেখলেও তাতে কিছু পাওয়া যায় না। বরং তীর তীব্র গতিতে বেরিয়ে যাবার সময় তাতে মল ও রক্তের দাগ পর্যন্ত লাগে না। তাদের পরিচয় এই যে, তাদের একটি লোকের একটি হাত অথবা বলেছেন, একটি স্তন হইবে মহিলাদের স্তনের ন্যায়। অথবা বলেছেন, অতিরিক্ত গোশতের টুকরার ন্যায়। লোকদের মধ্যে বিরোধের সময় তাদের আবির্ভাব ঘটবে। আবু সাঈদ (রাদি.) বলেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমি তা নাবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে শুনিয়াছি। এও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আলী (রাদি.) তাদেরকে হত্যা করিয়াছেন। আমি তখন তাহাঁর সঙ্গে ছিলাম। তখন নাবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর দেয়া বর্ণনার সংগে মিলে এমন ব্যক্তিকে আনা হয়েছিল। তিনি বলেন, ওর সম্পর্কেই অবতীর্ণ হয়েছেঃ “ওদের মধ্যে এমন লোক আছে যে সদকা সম্পর্কে তোমাকে দোষারোপ করে”– (সুরা আত্-তওবা ৯/৫৮)।(আঃপ্রঃ- ৬৪৫২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৬৪)
৬৯৩৪
ইউসায়র ইবনু আমর (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি সাহল ইবনু হুনায়ফ (রাদি.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি নাবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে খারিজীদের সম্পর্কে কিছু বলিতে শুনেছেন কি? তিনি বলিলেন, আমি তাকে বলিতে শুনিয়াছি, আর তখন তিনি তাহাঁর হাত ইরাকের দিকে বাড়িয়েছিলেন যে, সেখান থেকে এমন একটি সম্প্রদায় বের হইবে যারা কুরআন পড়বে সত্য, কিন্তু তা তাদের গলা অতিক্রম করিবে না, তারা ইসলাম থেকে বেরিয়ে যাবে যেমন তীর শিকার ভেদ করে বেরিয়ে যায়। [৩৩৪৪; মুসলিম ১২/৪৯, হাদীস ১০৬৮] (আঃপ্রঃ- ৬৪৫৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৬৫)
৮৮/৮. অধ্যায়ঃ নাবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বাণীঃ কক্ষনো কেয়ামত ঘটবে না, যতক্ষণ না দুটো দল পরস্পর লড়াই করিবে, অথচ তাদের দাবি হইবে একটাই।
৬৯৩৫
আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কেয়ামত সংঘটিত হইবে না, যতক্ষণ না এমন দুটি দল পরস্পর লড়াই করিবে, যাদের দাবী হইবে অভিন্ন। [১২৯] (আঃপ্রঃ- ৬৪৫৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৬৬)
[১২৯] উল্লেখিত হাদীসটি নাবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নবুওয়াতের নিদর্শনের অন্তর্গত একটি হাদীস। অন্যদিকে আবার হাদীসটিতে বর্ণনা করা হয়েছে কিয়ামতের ছোট আলামতের একটি আলামত। আর তা হল, আলী (রাদি.) ও মুআবীয়া (রাদি.) এর মাঝে সংঘটিত সিফফীনের যুদ্ধ। (ফাতহুল বারী)
৮৮/৯. অধ্যায়ঃ ব্যাখ্যা দানকারীদের ব্যাপারে যা বর্ণনা করা হয়েছে।
৬৯৩৬
উমর ইবনু খাত্তাব (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি হিশাম ইবনু হাকীম (রাদি.)-কে রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জীবিত অবস্থায় সুরা ফুরক্বান পড়তে শুনিয়াছি। আমি তার পড়ার প্রতি কর্ণপাত করলাম, (আমি লক্ষ্য করলাম) যে, তিনি এর অনেকগুলো অক্ষর এমন নিয়মে পড়ছেন, যে নিয়মে রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে পড়াননি। ফলে আমি তাকে সালাতের মাঝেই আক্রমণ করিতে প্রস্তুত হলাম। কিন্তু সালাম ফিরানো পর্যন্ত অপেক্ষা করলাম। সালাম ফিরানোর পর আমি তাকে তার চাদর দিয়ে অথবা বলিলেন আমার চাদর দিয়ে জড়িয়ে ধরলাম। আর বললাম, তোমাকে এ সুরা কে পড়িয়েছে? তিনি বলিলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে তা পড়িয়েছেন। আমি তাকে বললাম, তুমি মিথ্যা বলছ। আল্লাহর শপথ! রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে এ সুরা পড়িয়েছেন যা তোমাকে পড়তে শুনিয়াছি। তারপর আমি তাকে রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে টেনে নিয়ে গেলাম। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমি এ লোককে সুরা ফুরক্বান এমন অক্ষর দিয়ে পড়তে শুনিয়াছি যা আপনি আমাকে পড়াননি। আর আপনি তো আমাকে সুরা ফুরক্বান পড়িয়েছেন। তিনি বলেন, তখন রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে উমর! তাকে ছেড়ে দাও। (আর বলিলেন) হে হিশাম! তুমি পড় তো। হিশাম তাহাঁর কাছে সেভাবেই পড়লেন, যেভাবে তাকে তা পড়তে আমি শুনিয়াছিলাম। রাসুলুল্লাহ (সা) বললেনঃ এভাবেই অবতীর্ণ করা হয়েছে। এরপর রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে উমর ! তুমিও পড়। আমি পড়লাম। তখন তিনি বললেনঃ এভাবেও অবতীর্ণ করা হয়েছে। অতঃপর বলিলেন, এ কুরআন সাত (কিরাআতে) ভাষায় অবতীর্ণ করা হয়েছে। কাজেই যে পদ্ধতিতেই সহজ হয় সে পদ্ধতিতেই তোমরা তা পাঠ কর। [১৩০] (আঃপ্রঃ- , ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৬৭৪)
যেমন আল্লাহর বাণী مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ)) কেউ পড়েছেন مَالِكِ। মুহাম্মাদ ইবনু সুমাইকা مَالِكَ পড়েছেন। কেউ পড়েছেন مَلْكِ, কেউ পড়েছেন مَلِيْكِ। নাফে مَالِكِ এর স্থলে مَلِكِيْ পড়েছেন। (তাফসীর কুরতুবী দ্রষ্টব্য)।
৬৯৩৭
আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন এ আয়াত অবতীর্ণ হলঃ যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের ঈমানকে যুল্ম দ্বারা কলুষিত করেনি – (সুরা আনআম ৬/৮২), তখন তা নাবী (সাঃআঃ)-এর সাহাবাদের জন্য কঠিন মনে হল। তারা বলিল, আমাদের মধ্যে এমন কে আছে যে তার ঈমানকে যুল্ম দ্বারা কলুষিত করে না? তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ তোমরা যেভাবে ধারণা করছ তা তেমন নয়। বরং এটা হচ্ছে ঐরূপ যেমন লুক্মান (আরবী) তার পুত্রকে বলেছিলেনঃ “হে বৎস! আল্লাহর সঙ্গে কোন শরীক করো না। শির্ক তো বড় যুল্ম (সীমালঙ্ঘন)”- (সুরা লুক্বমান ৩১/১৩)। [১৩১](আঃপ্রঃ- ৬৪৫৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৬৮)
কাউকে তার ন্যায্য অধিকার না দেয়াই হল ظلم যুল্ম। لاشريك হওয়ার মর্যাদা একমাত্র আল্লাহর। তাহাঁর সেই মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করাই ظلم বড় যুল্ম।
৬৯৩৮
ইতবান ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) সকালে আমার কাছে আসলেন। তখন এক লোক বলিল, মালিক ইবনু দুখ্শুন কোথায়? আমাদের এক ব্যক্তি বলিল, সে তো মুনাফিক; সে আল্লাহ ও তাহাঁর রাসুলকে ভালবাসে না। তা শুনে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ তোমরা কি এ কথা বলনি যে, সে আল্লাহর সন্তুষ্টি চেয়ে লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহ বলে। তারা বলিলেন, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ যে কোন বান্দা কেয়ামতের দিন ঐ কথা নিয়ে উপস্থিত হইবে, আল্লাহ তার উপর জাহান্নাম হারাম করে দেবেন। [৪২৪] (আঃপ্রঃ- ৬৪৫৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৬৯)
৬৯৩৯
একজন রাবী হইতে হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন কারণে আবু আবদুর রহমান ও হিববান ইবনু আতিয়্যার মাঝে ঝগড়া বাধে। আবু আবদুর রহমান হিববানকে বলিলেন, আমি অবশ্যই জানি যে, কোন্ বিষয়টি আপনার সাথীকে রক্তপাতে দুঃসাহস জুগিয়েছে। সাথী, অর্থাৎ আলী (রাদি.)। সে বলিল, সে কী! তোমার পিতা জীবিত না থাকুক। আবু আবদুর রহমান বলিল, তা আলী (রাদি.)-কে বলিতে শুনিয়াছি। হিববান বলিল, সে কী? আবদুর রহমান বলিল, যুবায়র, আবু মারছাদ এবং আমাকে রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ পাঠালেন। আমরা সকলেই অশ্বারোহী ছিলাম। তিনি বললেনঃ তোমরা রওযায়ে হাজ পর্যন্ত যাবে। আবু সালামাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আবু আওয়ানা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) সেরকমই বলেছেন। সেখানে একজন মহিলা আছে, যার কাছে হাতিব ইবনু আবু বাল্তাআ (রাদি.)-এর পক্ষ থেকে (মক্কার) মুশরিকদের কাছে পাঠানো একখানা চিঠি আছে। তোমরা তাকে আমার কাছে নিয়ে আসবে। আমরা আমাদের ঘোড়ায় চড়ে রওনা দিলাম। অবশেষে আমরা তাকে ঐ জায়গায় পেলাম যে জায়গার কথা আমাদের রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছিলেন। সে তার উটে চলছে। আবু বালতাআ (রাদি.) মক্কাবাসীদের কাছে তাদের দিকে রাসূলুল্লাহর সাঃআঃ রওনা হওয়ার সংবাদ জানিয়ে পত্র লিখেছেন। আমরা বললাম, তোমার সঙ্গে যে পত্র আছে তা কোথায়? সে বলিল, আমার সঙ্গে কোন পত্র নেই। আমরা তার উটকে বসালাম এবং তার হাওদায় খুঁজলাম। কিন্তু কিছুই পেলাম না। তখন আমার সাথী দুজন বলিল, তার সঙ্গে তো আমরা কোন পত্র দেখছি না। আমি বললাম, আমরা অবশ্যই জানি যে রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ মিথ্যা বলেননি। তারপর আলী (রাদি.) এই বলে কসম করে বলিলেন, ঐ সত্তার কসম! যাঁর নামে কসম করা হয়, অবশ্যই তোমাকে চিঠি বের করে দিতে হইবে। নইলে তোমাকে উলঙ্গ করে ফেলব। তখন সে তার চাদর বাঁধা কোমরের প্রতি দৃষ্টি দিল এবং (সেখান থেকে) চিঠিটি বের করে দিল। তারা চিঠিটি নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ-এর নিকট হাজির হলেন। তখন উমার (রাদি.) বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! সে আল্লাহ, তাহাঁর রাসুল ও মুমিনদের সঙ্গে খিয়ানত করেছে। আপনি আমাকে অনুমতি দিন, আমি তার গর্দান উড়িয়ে দেই। তখন রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ জিজ্ঞেস করলেনঃ হে হাতিব! এ কাজে তোমাকে কিসে উদ্বুদ্ধ করেছে? তিনি বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমি কেন আল্লাহ ও তাহাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান রাখব না। আসল কথা হল, আমি চাচ্ছিলাম যে, মক্কা্বাসীর প্রতি আমার দ্বারা অনুগ্রহের কাজ হোক যার বিনিময়ে আমার পরিবারবর্গ ও মাল ধন রক্ষা পায়। আপনার
সঙ্গীদের সকলেরই সেখানে নিজ গোত্রীয় এমন লোক আছে, যাদের মাধ্যমে আল্লাহ তার পরিবারবর্গ ও মাল ধন রক্ষার ব্যবস্থা করবেন। রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বললেনঃ সে ঠিকই বলেছে। কাজেই তোমরা তার সম্পর্কে ভালো ব্যতীত মন্দ কোন কথা বলো না। বর্ণনাকারী বলেন, উমার (রাদি.) পুনরায় বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! সে আল্লাহ, তাহাঁর রাসুল ও মুমিনদের সঙ্গে খিয়ানত করেছে। আমাকে অনুমতি দিন, আমি তার গর্দান উড়িয়ে দেই। তিনি বলিলেন, সে কি বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী নয়? তুমি কী করে জানবে আল্লাহ তাদের প্রতি লক্ষ্য করে বলেছেনঃ তোমরা যা ইচ্ছে কর, তোমাদের জন্য জান্নাত নির্ধারিত করে দিয়েছি। এ কথা শুনে উমার (রাদি.)-এর দুচোখ অশ্রুসিক্ত হয়ে গেল এবং তিনি বলিলেন, আল্লাহ ও তাহাঁর রাসুলই অধিক জানেন।[১] [৩০০৭]
আবু আবদুল্লাহ [বুখারী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)] বলেন, خَاخٍ সবচেয়ে বিশুদ্ধ। তবে আবু আওয়ানা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) অনুরূপ حَاجٍ বলেছেন, আবু আবদুল্লাহ [বুখারী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)] বলেছে خََاجٍ বিকৃতি। আর এটি একটি স্থান। হুশায়ম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) خَاخٍ বলেছেন। (আঃপ্রঃ- ৬৪৫৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৭০)
[১৩২] উল্লেখিত হাদীসের শিক্ষা:
(১) আনন্দের মুহূর্তে কান্না করা।
(২) উমর (রাদি.) ও সমস্ত বদরী সাহাবীদের গুণ ও কৃতিত্ব।
(৩)উমর (রাদি.)-এর শিক্ষা পাওয়া। কারণ নেতার উপস্থিতিতে তার অনুমতি ছাড়া হাদ্দ কায়িম করা বা শাস্তি দেয়া উচিত নয়।
(৪) অবাধ্যর কোন মর্যাদা নেই।
(৫) নাবী (সাঃআঃ) কে মহিলার সাথে হাওরের (রাদি.) ঘটনাটি আল্লাহ তাআলার জানিয়ে দেয়া নবুওয়াতের নিদর্শনের অন্তর্গত।
(৬) গোয়েন্দার আচ্ছাদন ফাঁস করা।
(৭) সত্য উদঘাটনের ব্যাপারে চাপপ্রয়োগের বৈধতা।
(৮) যে ব্যক্তির ভুল হয়েছে তার ভুল অস্বীকার করা উচিত নয় বরং স্বীকার করা ও ক্ষমা চাওয়া উচিত যেন দুটি গুনাহ একত্রিত না হয়।
(৯) গুনাহ করার কারণে যারা কোন মুসলমানকে কাফির বলে তাদের জবাব দান।
(১০) গুনাহগার মুসলমানকে যারা চিরস্থায়ী জাহান্নামী বলে তাদের খন্ডন। (ফাতহুল বারী)
তোমরা যা ইচ্ছে কর – এর অর্থ এ নয় যে তোমরা চাইলে শিরকে লিপ্ত হও। আল্লাহ তাআলা এ কথা বলিলেন যে, তোমরা একমাত্র ইসলামকে রক্ষা করার জন্য বদর যুদ্ধে নিজেদেরকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে দুনিয়ার কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে গেছ। অতঃপর তোমাদের দ্বারা গুরুতর কোন পাপ সংঘঠিত হইতেই পারে না যা তোমাদেরকে জাহান্নামে নিয়ে যেতে পারে। হ্যাঁ, ছোট খাট ভুলভ্রান্তি হলে হোক, তার জন্য তোমাদেরকে মোটেও পাকড়াও করা হইবে না।
Leave a Reply