গোপনীয়তা রক্ষা করা, খেলাধুলা ও পাকা ঘর-বাড়ি নির্মাণ করা
গোপনীয়তা রক্ষা করা, খেলাধুলা ও পাকা ঘর-বাড়ি নির্মাণ করা >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ৭৯, অনুমতি চাওয়া, অধ্যায়ঃ (৪৫-৫৩)=১০টি
৭৯/৪৫. অধ্যায়ঃ তৃতীয় ব্যক্তিকে বাদ দিয়ে দুজনে কানে-কানে বলবে না।
৭৯/৪৬.অধ্যায়ঃ গোপনীয়তা রক্ষা করা।
৭৯/৪৭. অধ্যায়ঃ তিনজনের অধিক হলে গোপনে কথা বলা, আর কানে-কানে কথা বলা দূষণীয় নয়।
৭৯/৪৮.অধ্যায়ঃ দীর্ঘক্ষণ কারো সাথে কানে-কানে কথা বলা।
৭৯/৪৯. অধ্যায়ঃ ঘুমানোর সময় ঘরে আগুন রাখবে না।
৭৯/৫০. অধ্যায়ঃ রাতে দরজা বন্ধ করা।
৭৯/৫১. অধ্যায়ঃ বয়োঃপ্রাপ্তির পর খাতনা করা এবং বগলের পশম উপড়ানো।
৭৯/৫২.অধ্যায়ঃ যেসব খেলাধুলা আল্লাহর আনুগত্য থেকে বিরত রাখে সেগুলো বাতিল (হারাম)।
৭৯/৫৩. অধ্যায়ঃ পাকা ঘর-বাড়ি নির্মাণ করা।
৭৯/৪৫. অধ্যায়ঃ তৃতীয় ব্যক্তিকে বাদ দিয়ে দুজনে কানে-কানে বলবে না।
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহর বাণীঃ হে মুমিনগণ! যখন গোপন পরামর্শ কর, সে পরামর্শ যেন পাপাচার, সীমালঙ্ঘন….. মুমিনদের কর্তব্য আল্লাহর উপর নির্ভর করা।”-(সুরা আল-মুজাদালাহ ৫৮/৯-১০)। আরও আল্লাহর বাণীঃ হে মুমিনগণ! তোমরা রসূলের সঙ্গে চুপিচুপি কথা বলিতে চাইলে তার পূর্বে সদাকাহ প্রদান করিবে…..তোমরা যা কর আল্লাহ তা সম্যক অবগত – (সুরা আল-মুজাদালাহ ৫৮/১২-১৩)
৬২৮৮
আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
যে, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ কোথাও তিনজন থাকলে তৃতীয় জনকে বাদ দিয়ে দুজনে মিলে চুপি চুপি কথা বলবে না।[মুসলিম পর্ব ৩৯/হাদীস ২১৮৩, আহমাদ ৪৬৮৫] আঃপ্রঃ- ৫৮৪৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৩৮)
৭৯/৪৬.অধ্যায়ঃ গোপনীয়তা রক্ষা করা।
৬২৮৯
আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ একবার নাবী (সাঃআঃ) কাছে একটি বিষয় গোপনে বলেছিলেন। আমি তাহাঁর পরেও কাউকে তা জানাইনি। এটা সম্পর্কে উম্মু সুলায়ম (রাদি.) আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন। কিন্তু আমি তাঁকেও বলিনি। [মুসলিম ৪৪/৩২, হাদীস ২৪৮২, আহমাদ ১৩২৯২] আঃপ্রঃ- ৫৮৪৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৩৯)
৭৯/৪৭. অধ্যায়ঃ তিনজনের অধিক হলে গোপনে কথা বলা, আর কানে-কানে কথা বলা দূষণীয় নয়।
৬২৯০
আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ কোথাও তোমরা তিনজনে থাকলে একজনকে বাদ দিয়ে দুজনে কানে-কানে কথা বলবে না। এতে তার মনে দুঃখ হইবে। তোমরা পরস্পর মিশে গেলে তবে তা করাতে দোষ নেই।[মুসলিম ৩৯/১৫, হাদীস ২১৮৪, আহমাদ ৪৪২৪] আঃপ্রঃ- ৫৮৪৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৪০)
৬২৯১
আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
যে, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) একদিন কিছু মাল লোকজনকে বণ্টন করে দিলেন। তখন একজন আনসারী মন্তব্য করিলেন যে, এ বাঁটোয়ারা এমন, যার মধ্যে আল্লাহর সন্তুষ্টির প্রতি লক্ষ্য রাখা হয়নি। তখন আমি বললাম সাবধান! আল্লাহর কসম! আমি নিশ্চয়ই নাবী (সাঃআঃ) -এর নিকট গিয়ে এ কথাটা বলে দিব। এরপর আমি তাহাঁর নিকট গেলাম। কিন্তু তখন তিনি একদল সাহাবীর মধ্যে ছিলেন। তাই আমি কথাটা তাঁকে কানে-কানেই বললাম। তখন তিনি রেগে গেলেন। এমনকি তাহাঁর চেহারার রঙ লাল হয়ে গেল। কিছুক্ষণ পরে তিনি বললেনঃ মূসা (আঃ)-এর উপর রহমত অবতীর্ণ হোক। তাঁকে এর চেয়ে অধিক কষ্ট দেয়া হয়েছে, কিন্তু তিনি ধৈর্য্য অবলম্বন করিয়াছেন।(আঃপ্রঃ- ৫৮৪৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৪১)
৭৯/৪৮.অধ্যায়ঃ দীর্ঘক্ষণ কারো সাথে কানে-কানে কথা বলা।
আল্লাহ তাআলার বাণীঃ “তারা গোপনে পরস্পর আলোচনায় বসে।” (সুরা ইসরা ১৭/৪৭) [আরবী] শব্দটির মাসদার হচ্ছে [আরবী]। এর দ্বারাই তাদের বর্ণনা দেয়া হয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে পরস্পর চুপিসারে কথা বলাবলি করা।
৬২৯২
আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
একবার সলাতের ইক্বামাত হয়ে গেলো, তখনও একজন লোক রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর সঙ্গে কানে-কানে কথা বলছিলেন এবং দীর্ঘক্ষণ ধরে তিনি এভাবে আলাপ করিতে থাকলেন। এমনকি তাহাঁর সঙ্গীগণ ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। তারপর তিনি দাঁড়িয়ে সলাত আদায় করিলেন।(আঃপ্রঃ- ৫৮৪৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৪২)
৭৯/৪৯. অধ্যায়ঃ ঘুমানোর সময় ঘরে আগুন রাখবে না।
৬২৯৩
সালিম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
সালিম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) তাহাঁর পিতা থেকে, তিনি নাবী (সাঃআঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেনঃ যখন তোমরা ঘুমাবে তখন তোমাদের ঘরে আগুন রেখে ঘুমাবে না।[মুসলিম ৩৬/১২, হাদীস ২০১৫, আহমাদ ৪৫১৫] আঃপ্রঃ- ৫৮৪৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৪৩)
৬২৯৪
আবু মূসা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার রাত্রি কালে মাদীনাহর এক ঘরে আগুন লেগে ঘরের লোকজনসমূহ পুড়ে গেল। এদের অবস্থা নাবী (সাঃআঃ) -কে অবহিত করা হল। তিনি বললেনঃ এ আগুন নিঃসন্দেহে তোমাদের চরম শত্রু। সুতরাং তোমরা যখন ঘুমাতে যাবে, তখন তা নিভিয়ে দিবে। [মুসলিম ৩৬/১২, হাদীস ১৬, আহমাদ ১৯৫৮৮] আঃপ্রঃ- ৫৮৫০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৪৪)
৬২৯৫
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)বলেছেনঃ তোমাদের পানাহারের পাত্রগুলো ঢেকে রাখবে। আর ঘুমাবার সময় (ঘরের) দরজাগুলো বন্ধ করিবে এবং বাতিগুলো নিভিয়ে ফেলবে। কারণ প্রায়ই দুষ্ট ইঁদুরগুলো জ্বালানো বাতির ফিতাগুলো টেনে নিয়ে যায় এবং ঘরের লোকজনকে পুড়িয়ে মারে।(আঃপ্রঃ- ৫৮৫১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৪৫)
৭৯/৫০. অধ্যায়ঃ রাতে দরজা বন্ধ করা।
৬২৯৬
জাবির (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ রাতে যখন তোমরা ঘুমাতে যাবে, তখন বাতি নিভিয়ে দেবে, দরজা বন্ধ করিবে, খাদ্য ও পানীয় দ্রব্যাদি ঢেকে রাখবে এবং মশ্কের মুখ বেঁধে রাখবে। হাম্মাম বলেনঃ এক টুকরা কাঠ দিয়ে হলেও।(আঃপ্রঃ- ৫৮৫২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৪৬)
৭৯/৫১. অধ্যায়ঃ বয়োঃপ্রাপ্তির পর খাতনা করা এবং বগলের পশম উপড়ানো।
৬২৯৭
আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ)বলেছেনঃ মানুষের স্বভাবগত বিষয় হলো পাঁচটিঃ খাতনা করা, নাভির নীচের পশম কামানো, বগলের পশম উপড়ে ফেলা, গোফ ছাঁটা এবং (অতিরিক্ত) নখ কাটা।(আঃপ্রঃ- ৫৮৫৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৪৭)
৬২৯৮
আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ ইবরাহীম (আঃ) আশি বছর বয়সের পর কাদূম নামক স্থানে নিজেই নিজের খাতনা করেন।
কুতাইবাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)আবুষ যিনাদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ কাদ্দুম একটি জায়গার নাম।(আঃপ্রঃ- ৫৮৫৪, ৫৮৫৩ ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭১৮)
৬২৯৯
সাঈদ ইবনু যুবায়র (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি [সাঈদ ইবনু যুবায়র (রাদি.)] আরও বলেনঃ তাদের নিয়ম ছিল যে, সাবালক না হওয়া পর্যন্ত তারা খাতনা করিতেন না।(আঃপ্রঃ- ৫৮৫৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৪৯)
৬৩০০
সাঈদ ইবনু যুবায়র (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইবনু আব্বাস (রাদি.) – কে জিজ্ঞেস করা হলো যে, নাবী (সাঃআঃ)- এর ওফাতের সময় আপনি বয়সে কার মত ছিলেন? তিনি বললেনঃ আমি তখন খাতনাকৃত ছিলাম।(আঃপ্রঃ- ৫৮৫৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৪৯)
৭৯/৫২.অধ্যায়ঃ যেসব খেলাধুলা আল্লাহর আনুগত্য থেকে বিরত রাখে সেগুলো বাতিল (হারাম)।
আর ঐ ব্যক্তির ব্যাপারে, যে তার বন্ধুকে বললো, চলো, আমি তোমার সাথে জুয়া খেলবো। এ প্রসঙ্গে আল্লাহর বাণীঃ “মানুষের মধ্যে কেউ কেউ অজ্ঞতাবশতঃ অসার বাক্য ক্রয় করে নেয়।” (সুরা লুকমান ৩১/৬)
৬৩০১
আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী সাঃআঃ বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যদি শপথ করে এবং তার শপথে বলে লাত ও উয্যার শপথ, তা হলে সে যেন لاَ إِلٰهَ إِلاَّاللهُ বলে, আর যে তার বন্ধুকে বলেঃ এসো আমি তোমার সাথে জুয়া খেলবো সে যেন সদাকাহ করে। আঃপ্রঃ- ৫৮৫৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৫০)
৭৯/৫৩. অধ্যায়ঃ পাকা ঘর-বাড়ি নির্মাণ করা।
আবু হুরাইরা (রাদি.) বর্ণনা করেন যে, নাবী (সাঃআঃ)বলেছেনঃ ক্বিয়ামতের এক নিদর্শন হলো, তখন পশুর রাখালেরা পাকা বাড়ি-ঘর নির্মাণে পারস্পরিক প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হইবে।
৬৩০২
ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ)-এর যুগে আমার খেয়াল হলো যে, আমি নিজ হাতে আল্লাহর কোন সৃষ্টির সাহায্য ব্যতীত এমন একটা ঘর বানিয়ে নেই, যা আমাকে বৃষ্টি থেকে রক্ষা করিবে এবং আমাকে রোদ থেকে ছায়া দিবে।(আঃপ্রঃ- ৫৮৫৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৫১)
৬৩০৩
ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
ইবনু উমার (রাদি.) বর্ণনা করেন। আল্লাহর কসম! আমি নাবী (সাঃআঃ)- এর পর থেকে এ পর্যন্ত কোন ইটের উপর ইট রাখিনি। (পাকা ঘর নির্মাণ করিনি) আমি কোন খেজুরের চারা লাগাইনি। সুফ্ইয়ান (রাবী) বর্ণনা করেন, আমি এ হাদীসটি তাহাঁর পরিবারের এক লোকের কাছে উল্লেখ করলাম। তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম! তিনি তো নিশ্চয়ই পাকা ঘর বানিয়েছেন। সুফ্ইয়ান বলেন, তখন আমি বললাম, তা হলে সম্ভবতঃ এ হাদীসটি তাহাঁর পাকা ঘর বানানোর আগেকার হইবে।(আঃপ্রঃ- ৫৮৫৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৫২)
Leave a Reply