মজলিসের ফজিলত – মসজিদে ও জুমুআহর সলাত পর কা-ইলাহ
মজলিসের ফজিলত – মসজিদে ও জুমুআহর সলাত পর কা-ইলাহ >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ৭৯, অনুমতি চাওয়া, অধ্যায়ঃ (৩১-৪৪)=১৪টি
৭৯/৩১. অধ্যায়ঃ কেউ কাউকে তার বসার স্থান থেকে উঠাবে না।
৭৯/৩২ অধ্যায়ঃ (আরবি) “যখন বলা হয়- মাজলিস প্রশস্ত করে দাও, তখন তোমরা তা প্রশস্ত করে দিবে, আল্লাহ তোমাদেরকে প্রশস্ততা দান করবেন … ।” (সুরা মুজাদালাহ ৫৮/১১)
৭৯/৩৩. অধ্যায়ঃ সাথীদের অনুমতি না নিয়ে মজলিস কিংবা ঘর থেকে উঠে যাওয়া, কিংবা নিজে উঠে যাবার প্রস্তুতি গ্রহণ করা যাতে অন্যরা উঠে যায়।
৭৯/৩৪. অধ্যায়ঃ দু হাঁটুকে খাড়া করে দু হাতে বেড় দিয়ে নিতম্বের উপর বসা।
৭৯/৩৫. অধ্যায়ঃ যিনি তার সাথীদের সামনে হেলান দিয়ে বসেন।
৭৯/৩৬. অধ্যায়ঃ বিশেষ প্রয়োজনে অথবা যে কোন উদ্দেশ্যে যিনি তাড়াতাড়ি চলেন।
৭৯/৩৭. অধ্যায়ঃ পালঙ্ক ব্যবহার করা।
৭৯/৩৮. অধ্যায়ঃ হেলান দেয়ার জন্য যাঁকে একটা বালিশ পেশ করা হয়।
৭৯/৩৯. অধ্যায়ঃ জুমুআহর সলাত পর কা-ইলাহ।
৭৯/৪০. অধ্যায়ঃ মাসজিদে কা-ইলাহ করা।
৭৯/৪১. অধ্যায়ঃ যিনি কোন কাওমের নিকট যান এবং তাদের নিকট কা-ইলাহ করেন।
৭৯/৪২. অধ্যায়ঃ যেভাবে সহজ, সেভাবেই বসা।
৭৯/৪৩. অধ্যায়ঃ যিনি মানুষের সামনে কারো সঙ্গে কানে কানে কথা বলেন। আর যিনি আপন বন্ধুর গোপন কথা কারো কাছে প্রকাশ করেননি। অবশ্য তাহাঁর মৃত্যুর পর তা প্রকাশ করেন।
৭৯/৪৪. অধ্যায়ঃ চিত হয়ে শোয়া
৭৯/৩১. অধ্যায়ঃ কেউ কাউকে তার বসার স্থান থেকে উঠাবে না।
৬২৬৯
ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি অপর কাউকে তার বসার স্থান থেকে উঠিয়ে দিয়ে সে সেখানে বসবে না।[৯১১; মুসলিম ৩৯/১১, হাদীস ২১৭৭, আহমাদ ৬০৬৯] আঃপ্রঃ- ৫৮২৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭২২)
৭৯/৩২ অধ্যায়ঃ (আরবি) “যখন বলা হয়- মাজলিস প্রশস্ত করে দাও, তখন তোমরা তা প্রশস্ত করে দিবে, আল্লাহ তোমাদেরকে প্রশস্ততা দান করবেন … ।” (সুরা মুজাদালাহ ৫৮/১১)
৬২৭০. ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
ইবনু উমার (রাদি.) বর্ণিত যে, নাবী (সাঃআঃ) কোন লোককে তার বসার স্থান থেকে উঠিয়ে দিয়ে সেখানে অন্য লোক বসতে নিষেধ করিয়াছেন। তবে তোমরা বসার জায়গা প্রশস্ত করে দাও এবং ব্যবস্থা করে দাও। ইবনু উমার (রাদি.) কেউ তার জায়গা থেকে উঠে যাক এবং তার স্থানে অন্যজন বসুক তা পছন্দ করিতেন না। (আঃপ্রঃ- ৫৮২৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭২৩)
৭৯/৩৩. অধ্যায়ঃ সাথীদের অনুমতি না নিয়ে মজলিস কিংবা ঘর থেকে উঠে যাওয়া, কিংবা নিজে উঠে যাবার প্রস্তুতি গ্রহণ করা যাতে অন্যরা উঠে যায়।
৬২৭১. আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন নাবী (সাঃআঃ) যাইনাব বিনত জাহশ (রাদি.) –কে বিয়ে করিলেন, তখন তিনি কয়েকজন লোককে দাওয়াত করিলেন। তাঁরা খাদ্য গ্রহণের পর বসে বসে অনেক সময় পর্যন্ত আলাপ-আলোচনায় মশগুল থাকলেন। তখন তিনি নিজে চলে যাবার ভাব প্রকাশ করিলেন। কিন্তু তাতেও তাঁরা উঠলেন না। তিনি এ অবস্থা দেখে নিজেই উঠে দাঁড়ালেন। যখন তিনি চলে গেলেন, তখন লোকদের মধ্যে যারা দাঁড়াবার ইচ্ছে করিলেন, তারা তাহাঁর সঙ্গেই উঠে চলে গেলেন। কিন্তু তাদের তিনজন থেকে গেলেন। এরপর যখন নাবী (সাঃআঃ) ফিরে এসে ঘরে প্রবেশ করিতে চাইলেন, তখন দেখলেন যে ঐ তিনজন তখনো বসে আছেন। কিছুক্ষণ পর তারাও উঠে চলে গেলে, আমি গিয়ে তাঁকে তাদের চলে যাবার সংবাদ দিলাম। এরপর তিনি এসে ঘরে ঢুকলেন। তখন আমিও প্রবেশ করিতে চাইলে তিনি আমার ও তাহাঁর মধ্যে পর্দা টেনে দিলেন। এ সময় আল্লাহ তাআলা ওয়াহী অবতীর্ণ করলেনঃ “তোমরা যারা ঈমান এনেছ শোন! নাবীগৃহে প্রবেশ কর না যতক্ষণ না তোমাদেরকে অনুমতি দেয়া হয় …… আল্লাহর দৃষ্টিতে এটা মহা অপরাধ।” – (সুরা আল-আহযাব ৩৩/৫৩)।(আঃপ্রঃ- ৫৮২৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭২৪)
৭৯/৩৪. অধ্যায়ঃ দু হাঁটুকে খাড়া করে দু হাতে বেড় দিয়ে নিতম্বের উপর বসা।
৬২৭২
ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি একবার রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) –কে কাবার আঙ্গিনায় দু হাঁটু খাড়া করে দু হাত দিয়ে তা বেড় দিয়ে এভাবে উপবিষ্ট অবস্থায় পেয়েছি।(আঃপ্রঃ- ৫৮৩০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭২৫)
৭৯/৩৫. অধ্যায়ঃ যিনি তার সাথীদের সামনে হেলান দিয়ে বসেন।
খাব্বাব (রাদি.) বর্ণনা করেন, আমি একবার নাবী (সাঃআঃ) –এর কাছে আসলাম। তখন তিনি একটা চাদর দিয়ে বালিশ বানিয়ে তাতে হেলান দিচ্ছিলেন। আমি বললামঃ আপনি কি (আমার মুক্তির জন্য) আল্লাহর নিকট দুআ করবেন না? তখন তিনি সোজা হয়ে বসলেন।
৬২৭৩
আবু বাক্রাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ আমি কি তোমাদের নিকৃষ্ট কাবীরাহ গুনাহের বর্ণনা দিব না? সকলে বললেনঃ হ্যাঁ হে আল্লাহর রাসুল! তখন তিনি বললেনঃ তা হলো, আল্লাহর সঙ্গে কোন কিছুকে শারীক করা এবং মাতা-পিতার অবাধ্যতা।(আঃপ্রঃ- ৫৮৩১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭২৬)
৭৯/৩৬. অধ্যায়ঃ বিশেষ প্রয়োজনে অথবা যে কোন উদ্দেশ্যে যিনি তাড়াতাড়ি চলেন।
৬২৭৪
মুসাদ্দাদ হইতে বর্ণিতঃ
মুসাদ্দাদ, বিশ্রের এক সূত্রে এ রকম হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। তাতে অধিক বর্ণনা করিয়াছেন যে, তখন নাবী (সাঃআঃ) হেলান দেয়া অবস্থায় ছিলেন। এরপর তিনি সোজা হয়ে বসলেন এবং বললেনঃ হুশিয়ার হও! আর (সবচেয়ে বড় গুনাহ) মিথ্যা কথা বলা। এ কথাটা তিনি বারবার বলিতে থাকলেন। এমনকি আমরা বললামঃ হায়! তিনি যদি থামতেন।(আঃপ্রঃ- ৫৮৩২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭২৬)
৬২৭৫
উক্বাহ ইবনু হারিস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
উক্বাহ ইবনু হারিস (রাদি.) বলেনঃ একবার নাবী (সাঃআঃ) আসরের সলাত আদায় পূর্বক দ্রুত গিয়ে নিজ ঘরে প্রবেশ করিলেন।(আঃপ্রঃ- ৫৮৩৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭২৭)
৭৯/৩৭. অধ্যায়ঃ পালঙ্ক ব্যবহার করা।
৬২৭৬
আয়েশাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) (আমার) পালঙ্কের মাঝখানে দাঁড়িয়ে সলাত আদায় করিতেন। তখন আমি তাহাঁর কিবলার মাঝে শুয়ে থাকতাম। যখন আমার কোন প্রয়োজন হতো, তখন আমি তাহাঁর দিকে মুখ করে উঠে দাঁড়ানো পছন্দ করতাম না বরং আমি শায়িত অবস্থাতেই পেছনের দিক দিয়ে কেটে পড়তাম।(আঃপ্রঃ- ৫৮৩৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭২৮)
৬২৭৭
আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
যে, নাবী (সাঃআঃ) –এর নিকট আমার অধিক সওম পালন করার কথা উল্লেখ করা হলো। তখন তিনি আমার ঘরে আসলেন এবং আমি তাহাঁর উদ্দেশ্যে খেজুরের ছালে ভরা চামড়ার একটা বালিশ পেশ করলাম। তিনি মাটিতেই বসে গেলেন। আর বালিশটা আমার ও তাহাঁর মাঝে থেকে গেল। তিনি আমাকে বললেনঃ প্রত্যেক মাসে তিনদিন সওম পালন করা কি তোমার জন্যে যথেষ্ট নয়? আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসুল! তিনি বললেনঃ তা হলে পাঁচ দিন? আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসুল! তিনি বললেনঃ তবে সাতদিন? আমি আবার বললামঃ হে আল্লাহর রাসুল! তিনি বললেনঃ তবে নয়দিন? আমি পুনরায় বললামঃ হে আল্লাহর রাসুল! তিনি বললেনঃ তা হলে এগার দিন? আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসুল! তখন তিনি বললেনঃ দাউদ (আঃ) –এর সওমের চেয়ে অধিক কোন (নাফ্ল) সওম নেই। তিনি প্রত্যেক মাসের অর্ধেক দিন সওম পালন করিতেন অর্থাৎ একদিন সওম পালন করিতেন আর একদিন পালন করিতেন না।(আঃপ্রঃ- ৫৮৩৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭২৯)
৭৯/৩৮. অধ্যায়ঃ হেলান দেয়ার জন্য যাঁকে একটা বালিশ পেশ করা হয়।
৬২৭৮
ইবরাহীম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার আলক্বামাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) সিরিয়ায় গমন করিলেন। তখন তিনি মসজিদে গিয়ে দু রাকআত সালাত আদায় করে দুআ করলেনঃ
হে আল্লাহ! আপনি আমাকে একজন নেক সঙ্গী দান করুন। এরপর তিনি আবুদ্ দারদা -এর পাশে গিয়ে বসে পড়লেন। তারপর তাঁকে জিজ্ঞেস করলেনঃ আপনি কোন্ শহরের লোক? তিনি জবাব দিলেনঃ আমি কূফার অধিবাসী। তিনি জিজ্ঞেস করিলেন ঃ আপনাদের মধ্যে কি সেই লোক নেই। যিনি ঐ ভেদ সম্পর্কে জানতেন, যা অপর কেউ জানতেন না? রাবী বলেন) অর্থাৎ হুযাইফাহ । আবার জিজ্ঞেস করলেনঃ আপনাদের মধ্যে কি এমন লোক নেই, অথবা আছেন, যাঁকে আল্লাহ তাআলা তাহাঁর রাসূলের দুআর কারণে শয়তান থেকে পানাহ দিয়েছেন? রাবী বলেন) অর্থাৎ আম্মার তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেনঃ আর আপনাদের মধ্যে কি সে লোক নেই যিনি রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ -এর মিস্ওয়াক ও বালিশের দায়িত্বে ছিলেন? রাবী বলেন) অর্থাৎ আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ । আবুদ্ দারদা তাঁকে জিজ্ঞেস করেনঃ আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ সুরায়ে {وَاللَّيْلِ إِذَا يَغْشَى} কীভাবে পড়তেন? তিনি বললেনঃ তিনি ওয়ামা খালাকায যাকারা ওয়াল উনসার স্থলে ওয়ামা খালাকা অংশটুকু বাদ দিয়ে) পড়তেন {وَالذَّكَرِ وَالأُنْثَى}। তখন তিনি বললেনঃ এখানকার লোকেরা আমাকে এ সুরা সম্পর্কে সন্দেহে নিক্ষেপ করেছে। অথচ আমি রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ থেকে এ রকমই শুনিয়াছি। আঃপ্রঃ- ৫৮৩৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৩০)
৭৯/৩৯. অধ্যায়ঃ জুমুআহর সলাত পর কা-ইলাহ।
৬২৭৯
সাহল ইবনু সাদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমরা জুমুআহর সলাতের পরেই কা-ইলাহ করতাম এবং দুপুরের খাদ্য গ্রহণ করতাম।(আঃপ্রঃ- ৫৮৩৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৩১)
৭৯/৪০. অধ্যায়ঃ মাসজিদে কা-ইলাহ করা।
৬২৮০
সাহল ইবনু সাদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আলী (রাদি.) –এর কাছে আবু তুরাব –এর চেয়ে প্রিয় কোন নাম ছিল না। এ নামে ডাকা হলে তিনি খুবই খুশি হইতেন। কারণ একবার রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) ফাতেমাহ (রাদি.) –এর ঘরে আসলেন। তখন আলী (রাদি.) -কে ঘরে পেলেন না। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমার চাচাতো ভাই কোথায়? তিনি বললেনঃ আমার ও তাহাঁর মাঝে কিছু ঘটে যাওয়ায় তিনি আমার সঙ্গে রাগ করে বেরিয়ে গেছেন। আমার কাছে কা-ইলাহ করেননি। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) জনৈক লোককে বললেনঃ দেখতো সে কোথায়? সে লোকটি এসে বললঃ হে আল্লাহর রাসুল! তিনি তো মাসজিদে ঘুমিয়ে আছেন। তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) এসে দেখিতে পেলেন যে, তিনি কাত হয়ে শুয়ে আছেন, আর তাহাঁর চাদরখানা পার্শ্ব থেকে পড়ে গেছে। ফলে তার গায়ে মাটি লেগে গেছে। তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাহাঁর গায়ের মাটি ঝাড়তে লাগলেন এবং বলিতে লাগলেনঃ ওঠো, আবু তুরাব (মাটির বাপ) ওঠো, আবু তুরাব! এ কথাটা তিনি দুবার বলিলেন।(আঃপ্রঃ- ৫৮৩৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৩২)
৭৯/৪১. অধ্যায়ঃ যিনি কোন কাওমের নিকট যান এবং তাদের নিকট কা-ইলাহ করেন।
৬২৮১
আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ উম্মু সুলায়ম (রাদি.) নাবী (সাঃআঃ) –এর জন্য চামড়ার বিছানা বিছিয়ে দিতেন এবং তিনি সেখানেই ঐ চামড়ার বিছানার উপর কায়লুলা করিতেন। অতঃপর তিনি যখন ঘুম থেকে উঠতেন, তখন তিনি তাহাঁর শরীরের কিছুটা ঘাম ও চুল সংগ্রহ করিতেন এবং তা একটা বোতলের মধ্যে জমা করিতেন এবং পরে সুক্ক নামক সুগন্ধিতে মিশাতেন। রাবী বর্ণনা করেন যে, আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) –এর মৃত্যু সন্নিকট হলে, তিনি আমাকে অসিয়ত করলেনঃ যেন ঐ সুক্ক থেকে কিছুটা তাহাঁর সুগন্ধির সাথে মিলানো হয়। তাই তা তাহাঁর সুগন্ধিতে মেশানো হয়েছিল। (আঃপ্রঃ- ৫৮৩৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৩৩)
৬২৮২
আনাস ইবনে মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) কুবা এর দিকে যখন যেতেন তখন প্রায়ই উম্মু হারাম বিনতে মিলহান (রাদি.) –এর ঘরে প্রবেশ করিতেন এবং তিনি তাঁকে খানা খাওয়াতেন। তিনি উবাদাহ ইবনু সামিত (রাদি.) –এর স্ত্রী ছিলেন। একদিন তিনি তার ঘরে গেলে তাঁকে খাবার খাওয়ালেন। এরপর রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) সেখানেই ঘুমালেন। কিছুক্ষণ পরে তিনি সজাগ হয়ে হাসতে লাগলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ হে আল্লাহর রাসুল! আপনাকে কিসে হাসাচ্ছে? তিনি বললেনঃ স্বপ্নে আমাকে আমার উম্মাতের আল্লাহর পথে জিহাদকারী কিছু সংখ্যক মুজাহিদ দেখানো হয়েছে, যারা এই বিস্তীর্ণ সমুদ্রের মাঝে বাদশাহদের মত সিংহাসনে আসীন। তখন তিনি বললেনঃ আপনি দুআ করুন যেন আল্লাহ তাআলা আমাকেও তাদের অন্তর্ভুক্ত করে নেন। তিনি সে দুআ করিলেন এবং বিছানায় মাথা রেখে আবার শুয়ে পরলেন। কিছুক্ষণ পর তিনি আবার হাসতে হাসতে জাগ্রত হলেন। আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসুল! আপনাকে কিসে হাসাচ্ছে? তিনি বললেনঃ (স্বপ্নে) আমাকে আমার উম্মাতের আল্লাহর পথে জিহাদকারী কিছু সংখ্যক মুজাহিদ দেখানো হয়েছে, যারা এই বিস্তীর্ণ সমুদ্রের মাঝে বাদশাহদের মত সিংহাসনে আসীন। তখন আবার আমি বললামঃ আপনি আল্লাহর কাছে দুআ করুন যেন তিনি আমাকে তাদের মধ্যে শামিল করে নেন। তিনি বললেনঃ তুমি প্রথম বাহিনীরই মধ্যে শামিল থাকবে। সুতরাং তিনি মুআবিয়াহ (রাদি.) –এর আমলে সামুদ্রিক অভিযানে যান এবং অভিযান থেকে ফিরে এসে নিজের সওয়ারী থেকে পড়ে গিয়ে শাহাদাত বরণ করেন।[২৭৮৮, ২৭৮৯; মুসলিম ৩৩/৪৯, হাদীস ১৯১২] আঃপ্রঃ- ৫৮৪০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৩৪)
৬২৮৩
আনাস ইবনে মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) কুবা এর দিকে যখন যেতেন তখন প্রায়ই উম্মু হারাম বিনতে মিলহান (রাদি.) –এর ঘরে প্রবেশ করিতেন এবং তিনি তাঁকে খানা খাওয়াতেন। তিনি উবাদাহ ইবনু সামিত (রাদি.) –এর স্ত্রী ছিলেন। একদিন তিনি তার ঘরে গেলে তাঁকে খাবার খাওয়ালেন। এরপর রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) সেখানেই ঘুমালেন। কিছুক্ষণ পরে তিনি সজাগ হয়ে হাসতে লাগলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ হে আল্লাহর রাসুল! আপনাকে কিসে হাসাচ্ছে? তিনি বললেনঃ স্বপ্নে আমাকে আমার উম্মাতের আল্লাহর পথে জিহাদকারী কিছু সংখ্যক মুজাহিদ দেখানো হয়েছে, যারা এই বিস্তীর্ণ সমুদ্রের মাঝে বাদশাহদের মত সিংহাসনে আসীন। তখন তিনি বললেনঃ আপনি দুআ করুন যেন আল্লাহ তাআলা আমাকেও তাদের অন্তর্ভুক্ত করে নেন। তিনি সে দুআ করিলেন এবং বিছানায় মাথা রেখে আবার শুয়ে পরলেন। কিছুক্ষণ পর তিনি আবার হাসতে হাসতে জাগ্রত হলেন। আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসুল! আপনাকে কিসে হাসাচ্ছে? তিনি বললেনঃ (স্বপ্নে) আমাকে আমার উম্মাতের আল্লাহর পথে জিহাদকারী কিছু সংখ্যক মুজাহিদ দেখানো হয়েছে, যারা এই বিস্তীর্ণ সমুদ্রের মাঝে বাদশাহদের মত সিংহাসনে আসীন। তখন আবার আমি বললামঃ আপনি আল্লাহর কাছে দুআ করুন যেন তিনি আমাকে তাদের মধ্যে শামিল করে নেন। তিনি বললেনঃ তুমি প্রথম বাহিনীরই মধ্যে শামিল থাকবে। সুতরাং তিনি মুআবিয়াহ (রাদি.) –এর আমলে সামুদ্রিক অভিযানে যান এবং অভিযান থেকে ফিরে এসে নিজের সওয়ারী থেকে পড়ে গিয়ে শাহাদাত বরণ করেন। [২৭৮৮, ২৭৮৯; মুসলিম ৩৩/৪৯, হাদীস ১৯১২] আঃপ্রঃ- ৫৮৪০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৩৪)
৭৯/৪২. অধ্যায়ঃ যেভাবে সহজ, সেভাবেই বসা।
৬২৮৪
আবু সাঈদ খুদরী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) দু রকমের লেবাস এবং দু ধরণের বিক্রয় নিষেধ করিয়াছেন। ইশতিমালে সম্মা [১] এবং এক কাপড় পরে ইহতিবা [২] করিতে নিষেধ করিয়াছেন যাতে তার লজ্জাস্থানে কাপড়ের কোন অংশ না থাকে। এবং মুলামাসা ও মুনাবাযা – বেচাকেনা থেকেও।(আঃপ্রঃ- ৫৮৪১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৩৫)
[১] ইশতিমালে সাম্মাঃ উপর –নীচ সেলাই করা ফাঁক বিহীন কাপড়ে শরীর এমনভাবে জড়ানো যাতে অঙ্গ প্রত্যঙ্গ নড়াচড়া করিতে অসুবিধা হয়।
[২] ইহতিবাঃ সামনে দিকে দুই হাঁটু খাড়া করে রেখে পাছার ভরে বসা যাতে লজ্জাস্থান দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
৭৯/৪৩. অধ্যায়ঃ যিনি মানুষের সামনে কারো সঙ্গে কানে কানে কথা বলেন। আর যিনি আপন বন্ধুর গোপন কথা কারো কাছে প্রকাশ করেননি। অবশ্য তাহাঁর মৃত্যুর পর তা প্রকাশ করেন।
৬২৮৫
উম্মুল মুমিনীন আয়েশাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
একবার আমরা নাবী (সাঃআঃ) –এর সব স্ত্রী তাহাঁর নিকট জমায়েত হয়েছিলাম। আমাদের একজনও অনুপস্থিত ছিলাম না। এমন সময় ফাতেমাহ (রাদি.) পায়ে হেঁটে আসছিলেন। আল্লাহর কসম! তাহাঁর হাঁটা রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) –এর হাঁটার মতই ছিল। তিনি যখন তাঁকে দেখলেন, তখন তিনি আমার মেয়ের আগমণ শুভ হোক বলে তাঁকে সম্বর্ধনা জানালেন। এরপর তিনি যখন তাঁকে নিজের ডান পাশে অথবা (রাবী বলেন) বাম পাশে বসালেন। তারপর তিনি তার সঙ্গে কানে-কানে কিছু কথা বলিলেন, তিনি (ফাতেমাহ) খুব অধিক কাঁদতে লাগলেন। এরপর তাঁকে চিন্তিত দেখে দ্বিতীয়বার তাহাঁর সঙ্গে তিনি কানে-কানে আরও কিছু কথা বলিলেন। তখন ফাতেমাহ (রাদি.) হাসতে লাগলেন। তখন নাবী (সাঃআঃ) –এর স্ত্রীগণের মধ্য থেকে আমি বললামঃ আমাদের উপস্থিতিতে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বিশেষ করে আপনার সঙ্গে বিশেষ কী গোপনীয় কথা কানে-কানে বলিলেন, যার ফলে আপনি খুব কাঁদছিলেন? এরপর যখন নাবী (সাঃআঃ) উঠে চলে গেলেন, তখন আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম যে, তিনি আপনাকে কানে-কানে কী বলেছিলেন? তিনি বললেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) –এর ভেদ (গোপনীয় কথা) ফাঁস করবো না। এরপর রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) –এর মৃত্যু হল। তখন আমি তাঁকে বললামঃ আপনার উপর আমার যে দাবী আছে, আপনাকে আমি তার কসম দিয়ে বলছি যে, আপনি কি গোপনীয় কথাটি আমাকে জানাবেন না? তখন ফাতেমাহ (রাদি.) বললেনঃ হাঁ এখন আপনাকে জানাবো। সুতরাং তিনি আমাকে জানাতে গিয়ে বললেনঃ প্রথমবার তিনি আমার নিকট যে গোপন কথা বলেন, তা হলো এই যে, তিনি আমার নিকট বর্ণনা করেন যে, জিবরীল (আঃ) প্রতি বছর এসে পূর্ণ কুরআন একবার আমার নিকট পেশ করিতেন। কিন্তু এ বছর তিনি এসে তা আমার কাছে দু বার পেশ করিয়াছেন। এতে আমি ধারণা করছি যে, আমার চির বিদায়ের সময় সন্নিকট। সুতরাং তুমি আল্লাহকে ভয় করে চলবে এবং বিপদে ধৈর্য্যধারণ করিবে। নিশ্চয়ই আমি তোমার জন্য উত্তম অগ্রগমনকারী। তখন আমি কাঁদলাম যা নিজেই দেখলেন। তারপর যখন আমাকে চিন্তিত দেখলেন, তখন দ্বিতীয়বার আমাকে কানে-কানে বললেনঃ তুমি জান্নাতের মুসলিম মহিলাদের অথবা এ উম্মাতের মহিলাদের নেত্রী হওয়াতে সন্তুষ্ট হইবে না? (আমি তখন হাসলাম)।(আঃপ্রঃ- ৫৮৪২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৩৬)
৬২৮৬
উম্মুল মুমিনীন আয়েশাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
একবার আমরা নাবী (সাঃআঃ) –এর সব স্ত্রী তাহাঁর নিকট জমায়েত হয়েছিলাম। আমাদের একজনও অনুপস্থিত ছিলাম না। এমন সময় ফাতেমাহ (রাদি.) পায়ে হেঁটে আসছিলেন। আল্লাহর কসম! তাহাঁর হাঁটা রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) –এর হাঁটার মতই ছিল। তিনি যখন তাঁকে দেখলেন, তখন তিনি আমার মেয়ের আগমণ শুভ হোক বলে তাঁকে সম্বর্ধনা জানালেন। এরপর তিনি যখন তাঁকে নিজের ডান পাশে অথবা (রাবী বলেন) বাম পাশে বসালেন। তারপর তিনি তার সঙ্গে কানে-কানে কিছু কথা বলিলেন, তিনি (ফাতেমাহ) খুব অধিক কাঁদতে লাগলেন। এরপর তাঁকে চিন্তিত দেখে দ্বিতীয়বার তাহাঁর সঙ্গে তিনি কানে-কানে আরও কিছু কথা বলিলেন। তখন ফাতেমাহ (রাদি.) হাসতে লাগলেন। তখন নাবী (সাঃআঃ) –এর স্ত্রীগণের মধ্য থেকে আমি বললামঃ আমাদের উপস্থিতিতে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বিশেষ করে আপনার সঙ্গে বিশেষ কী গোপনীয় কথা কানে-কানে বলিলেন, যার ফলে আপনি খুব কাঁদছিলেন? এরপর যখন নাবী (সাঃআঃ) উঠে চলে গেলেন, তখন আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম যে, তিনি আপনাকে কানে-কানে কী বলেছিলেন? তিনি বললেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) –এর ভেদ (গোপনীয় কথা) ফাঁস করবো না। এরপর রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) –এর মৃত্যু হল। তখন আমি তাঁকে বললামঃ আপনার উপর আমার যে দাবী আছে, আপনাকে আমি তার কসম দিয়ে বলছি যে, আপনি কি গোপনীয় কথাটি আমাকে জানাবেন না? তখন ফাতেমাহ (রাদি.) বললেনঃ হাঁ এখন আপনাকে জানাবো। সুতরাং তিনি আমাকে জানাতে গিয়ে বললেনঃ প্রথমবার তিনি আমার নিকট যে গোপন কথা বলেন, তা হলো এই যে, তিনি আমার নিকট বর্ণনা করেন যে, জিবরীল (আঃ) প্রতি বছর এসে পূর্ণ কুরআন একবার আমার নিকট পেশ করিতেন। কিন্তু এ বছর তিনি এসে তা আমার কাছে দু বার পেশ করিয়াছেন। এতে আমি ধারণা করছি যে, আমার চির বিদায়ের সময় সন্নিকট। সুতরাং তুমি আল্লাহকে ভয় করে চলবে এবং বিপদে ধৈর্য্যধারণ করিবে। নিশ্চয়ই আমি তোমার জন্য উত্তম অগ্রগমনকারী। তখন আমি কাঁদলাম যা নিজেই দেখলেন। তারপর যখন আমাকে চিন্তিত দেখলেন, তখন দ্বিতীয়বার আমাকে কানে-কানে বললেনঃ তুমি জান্নাতের মুসলিম মহিলাদের অথবা এ উম্মাতের মহিলাদের নেত্রী হওয়াতে সন্তুষ্ট হইবে না? (আমি তখন হাসলাম)।(আঃপ্রঃ- ৫৮৪২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৩৬)
৭৯/৪৪. অধ্যায়ঃ চিত হয়ে শোয়া
৬২৮৭
আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ আনসারী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) কে মাসজিদে চিত হয়ে শুয়ে থাকতে দেখেছি, তখন তাহাঁর এক পা অন্য পায়ের উপর রাখা ছিল।(আঃপ্রঃ- ৫৮৪৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৩৭
Leave a Reply