কবিতা পাঠ, যাআমূ, ওয়াইলাকা বলা সম্পর্কে এবং কাউকে মারহাবা বলা

কবিতা পাঠ, যাআমূ, ওয়াইলাকা বলা সম্পর্কে এবং কাউকে মারহাবা বলা

কবিতা পাঠ, যাআমূ, ওয়াইলাকা বলা সম্পর্কে এবং কাউকে মারহাবা বলা >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

৭৮/৯০. অধ্যায়ঃ কবিতা পাঠ, সঙ্গীত ও উট হাঁকানোর সঙ্গীতের মধ্যে যা জায়িয ও যা না-জায়িয।
৭৮/৯১. অধ্যায়ঃ কবিতার মাধ্যমে মুশরিকদের নিন্দা করা ।
৭৮/৯২. অধ্যায়ঃ যে কবিতা মানুষকে এতটা প্রভাবিত করে, যা তাকে আল্লাহর স্মরণ, ইলম হাসিল ও কুরআন থেকে বাধা দান করে, তা নিষিদ্ধ
৭৮/৯৩. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) -এর উক্তিঃ তোমার ডান হাত ধূলি ধূসরিত হোক । তোমার হস্তপদ ধ্বংস হোক এবং তোমার কন্ঠদেশ ঘায়েল হোক ।
৭৮/৯৪. অধ্যায়ঃ যাআমূ (তারা ধারণা করেন) সম্পর্কে যা বর্ণিত হয়েছে।
৭৮/৯৫. অধ্যায়ঃ কাউকে ওয়াইলাকা বলা সম্পর্কে যা বর্ণিত হয়েছে।
৭৮/৯৬. অধ্যায়ঃ মহামহিম আল্লাহর প্রতি ভালবাসার নিদর্শন।
৭৮/৯৭. আধ্যায়ঃ কোন লোকের অন্য লোককে দূর হও বলা।
৭৮/৯৮. অধ্যায়ঃ কাউকে মারহাবা বলা

৭৮/৯০. অধ্যায়ঃ কবিতা পাঠ, সঙ্গীত ও উট হাঁকানোর সঙ্গীতের মধ্যে যা জায়িয ও যা না-জায়িয।

মহান আল্লাহর বানীঃ বিভ্রান্তরাই কবিদের অনুসরন করে, তুমি কি দেখ না যে, তারা প্রতি ময়দানেই উদভ্রান্ত হয়ে ফিরে ? আর তারা যা বলে তা তারা নিজেরা করে না। কিন্তু ওরা ব্যতীত যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে আর আল্লাহকে খুব বেশি স্মরণ করে আর নির্যাতিত হওয়ার পর নিজেদের প্রতিরক্ষার ব্যবস্থা করে। যালিমরা শীঘ্রই জানতে পারবে কোন (মহা সংকটময়) জায়গায় তারা ফিরে যাচ্ছে। (সুরা শুআরা ২৬/২২৪-২৭)

ইবনু আব্বাস বলেন, (তারা প্রত্যেক ময়দানে উদভ্রান্ত অবস্থায় ঘুরে বেড়ায়?) এর অর্থ হল তারা প্রত্যেক নিরর্থক কথায় ডুবে থাকে।

৬১৪৫

উবাই ইবনু কাব (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

যে, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ নিশ্চয়ই কোন কোন কবিতার মধ্যে জ্ঞানের কথাও আছে।( আঃপ্রঃ- ৫৭০৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৬০১)

৬১৪৬

জুনদুব (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলিলেন, একবার নাবী (সাঃআঃ) এক জিহাদে হেঁটে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ তিনি একটা পাথরে হোঁচট খেয়ে পরে গেলেন এবং তাহাঁর একটা আঙ্গুল রক্তে ভিজে গেল। তখন তিনি কবিতার ছন্দে বললেনঃ

তুমি একটা রক্তে ভেজা আঙ্গুল ছাড়া কিছুই নও,

আর যে কষ্ট ভোগ করছ তা তো কেবল আল্লাহর রাস্তাতেই।(আঃপ্রঃ- ৫৭০৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৬০২)

৬১৪৭

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, কবিরা যে সব কথা বলেছেন, তার মধ্যে কবি লবীদের কথাটাই সর্বাধিক সত্য। (তিনি বলেছেন)

শোন ! আল্লাহ ছাড়া সব কিছুই বাতিল।

তিনি আরও বলেছেন, কবি উমাইয়াহ ইবনু সাল্‌ত ইসলাম গ্রহনের নিকটবর্তী হয়েছিল। [৩৮৪১; মুসলিম পর্ব ৪১/হাদীস ২২৫৬, আহমাদ ১০০৮০] (আঃপ্রঃ- ৫৭০৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৬০৩)

৬১৪৮

সালামাহ ইবনু আকওয়া (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার আমরা রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর সঙ্গে খাইবার অভিযানে গেলাম। আমরা রাতে চলছিলাম। দলের মধ্যে থেকে একজন আমির ইবনু আক্‌ওয়া (রাদি.) বলিলেন যে, আপনি কি আপনার কবিতাগুলো থেকে কিছু পড়ে আমাদের শুনাবেন না? আমির (রাদি.) ছিলেন একজন কবি। কাজেই তিনি দলের লোকদের হুদী গেয়ে শুনাতে লাগলেনঃ

“হে আল্লাহ ! তুমি না হলে, আমরা হিদায়াত পেতাম না।

আমরা সদাকাহ দিতাম না, সালাত আদায় করতাম না।

আমাদের পূর্ববর্তী গুনাহ ক্ষমা করুন; যা আমরা আপনার জন্য আপনার জন্য উৎসর্গিত করেছি।

যদি আমরা শত্রুর মুখোমুখী হই, তখন আমাদের পদদ্বয় সুদৃঢ় রাখুন।

আমাদের উপর শান্তি বর্ষণ করুন,

শত্রুর ডাকের সময় আমরা যেন বীরের মত ধাবিত হই।

যখন তারা হৈ-হুল্লোড় করে, আমাদের উপর আক্রমণ চালায়।”

তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) জিজ্ঞেস করলেনঃ এ উট চালক লোকটি কে? লোকেরা বললেনঃ তিনি আমির ইবনু আক্‌ওয়া। তিনি বললেনঃ আল্লাহ তার উপর রহম করুন। দলের একজন বললেনঃ হে আল্লাহর নাবী! তার জন্য তো শাহাদাত নির্দিষ্ট হয়ে গেল। হায়! যদি আমাদের এ সুযোগ দান করিতেন। তারপর আমরা খাইবারে পৌঁছে শত্রুদের অবরোধ করে ফেললাম। এ সময় আমরা ভীষণ ক্ষুধার্ত হয়ে পড়লাম। অবশেষে আল্লাহ (খাইবারে যুদ্ধে) তাদের উপর আমাদের বিজয় দান করিলেন। তারপর যেদিন খাইবার জয় হলো, সেদিন লোকেরা অনেক আগুন জ্বালাল। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমরা এত সব আগুন কেন জ্বালাচ্ছ? লোকেরা বললোঃ গোশ্‌ত রান্নার জন্য। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ কিসের গোশ্‌ত? তারা বললঃ গৃহপালিত গাধার গোশত। তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ এসব গোশ্‌ত ফেলে দাও এবং হাঁড়িগুলো ভেঙ্গে দাও। এক ব্যক্তি বললঃ হে আল্লাহর রাসুল! বরং গোশ্‌তগুলো ফেলে আমরা হাড়িগুলো ধুয়ে নেই? তিনি বললেনঃ আচ্ছা তাই কর। রাবী বলেনঃ যখন লোকেরা যুদ্ধে সারিবদ্ধ হল। আমির (রাদি.) -এর তলোয়ার খানা ছোট ছিল। তিনি এক ইয়াহূদীকে মারার উদ্দেশ্যে এটি দিয়ে তার উপর আক্রমণ করিলেন। কিন্তু তার তলোয়ারের ধারাল অংশ আমির (রাদি.) -এরই হাঁটুতে এসে আঘাত করিল। এতে তিনি মারা গেলেন। তারপর ফিরার সময় সবাই ফিরলেন। সালামাহ (রাদি.) বলেনঃ আমার চেহারার রঙ বদল হওয়া দেখে, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমরা কী হয়েছে? আমি বললামঃ আমার বাপ-মা আপনার প্রতি কুরবান হোক! লোকেরা বলছে যে, আমিরের আমাল সব বরবাদ হয়ে গেছে। তিনি বললেনঃ এ কথাটা কে বলেছে? আমি বললামঃ অমুক, অমুক, অমুক এবং উসায়দ ইবনু হুযাইর আনসারী (রাদি.)। তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ যারা এ কথা বলেছে, তারা মিথ্যা বলেছে। তিনি বললেনঃ তাহাঁর জন্য আছে দুটি পুরস্কার, সে জাহিদ এবং মুজাহিদ। আরবে তাহাঁর মত লোক অল্পই হইবে। (আঃপ্রঃ- ৫৭০৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৬০৪)

৬১৪৯

আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার নাবী (সাঃআঃ) তাহাঁর কতক স্ত্রীর নিকট আসলেন। তখন তাঁদের সঙ্গে উম্মু সুলায়মও ছিলেন। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ- সর্বনাশ, হে আনজাশাহ! তুমি (উট) ধীরে চালাও। কেননা, তুমি কাঁচপাত্র (মহিলা) নিয়ে চলেছ। রাবী আবু কিলাবা বলেনঃ নাবী (সাঃআঃ) সাওকাকা বিল কাওয়ারীর বাক্য দ্বারা এমন বিষয়ের প্রতি ইশারা করিলেন, যা অন্য কেউ বললে, তোমরা তাকে ঠাট্টা করিতে।[৬১৬১, ৬২০২, ৬২০৯, ৬২১০, ৬২১১; মুসলিম ৪৩/১৭, হাদীস ২৩২৩, আহমাদ ১২৯৩৪] আঃপ্রঃ- ৫৭০৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৬০৫)

৭৮/৯১. অধ্যায়ঃ কবিতার মাধ্যমে মুশরিকদের নিন্দা করা ।

৬১৫০

আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার হাস্‌সান ইবনু সাবিত (রাদি.) রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর নিকট মুশরিকদের নিন্দা করার অনুমতি চাইলেন। তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ তা হলে এ নিন্দা থেকে আমার বংশের মর্যাদা কীভাবে রক্ষা পাবে? তখন হাস্‌সান (রাদি.) বললেনঃ আমি তাদের থেকে আপনাকে এমনভাবে বের করে নেব, যেভাবে মাখানো আটা থেকে চুল বের করা হয়।

রাবী উরওয়াহ বর্ণনা করেন, একদিন আমি আয়েশা (রাদি.) -এর কাছে হাস্‌সান (রাদি.) -কে গালি দিতে লাগলাম, তখন তিনি বললেনঃ তুমি তাঁকে গালি দিওনা। কারণ, তিনি নাবী (সাঃআঃ) -এর পক্ষ হইতে মুশরিকদের প্রতিরোধ করিতেন।(আঃপ্রঃ- ৫৭১০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৬০৬)

৬১৫১

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আবু হুরাইরা (রাদি.) তাহাঁর বর্ণনায় নাবী (সাঃআঃ) -এর কথা উল্লেখ করে বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমাদের ভাই অর্থাৎ কবি ইবনু রাওয়াহা (রাদি.) অশ্লীল কথা বলেননি। তিনি বলিতেনঃ

আমাদের মধ্যে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) রয়েছেন, তিনি কুরআন তিলাওয়াত করেন;

যখন সকালের মন মাতানো আলো ফুটে উঠে।

আমরা পথহারা হবার পর তিনি আমাদের সুপথ দেখিয়েছেন।

আর আমরা অন্তরের সাথে একীন করলাম যে, তিনি যা বলেছেন, তা ঘটবেই।

তিনি নিজ পৃষ্ঠদেশ বিছানা থেকে আলাদা রেখেই রাত্রি অতিবাহিত করেন।

যখন কাফিরদের আনন্দের শয্যা তাদের পক্ষে খুব কষ্টকর হয়।(আঃপ্রঃ- ৫৭১১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৬০৭)

৬১৫২

হাস্‌সান ইবনু সাবিত (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, হে আবু হুরাইয়া! আমি আপনাকে আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞেস করছি। আপনি কি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -কে এ কথা বলিতে শুনেছেন যে, ওহে হাস্‌সান! তুমি আল্লাহর রসূলের পক্ষ থেকে প্রত্যুত্তর দাও। হে আল্লাহ! তুমি জিবরীল (আঃ) -এর দ্বারা তাকে সাহায্য কর। আবু হুরাইয়াহ (রাদি.) বললেনঃ হাঁ।(আঃপ্রঃ- ৫৭১২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৬০৮)

৬১৫৩

বারাআ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

যে, নাবী (সাঃআঃ) হাস্‌সান (রাদি.) -কে বললেনঃ তুমি কাফিরদের নিন্দা করো। জিবরীল (আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ কাজে তোমাকে সাহায্য করবেন।(আঃপ্রঃ- ৫৭১৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৬০৯)

৭৮/৯২. অধ্যায়ঃ যে কবিতা মানুষকে এতটা প্রভাবিত করে, যা তাকে আল্লাহর স্মরণ, ইলম হাসিল ও কুরআন থেকে বাধা দান করে, তা নিষিদ্ধ

৬১৫৪

ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

যে, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমাদের কারো পেট কবিতা দিয়ে ভরার চেয়ে পুঁজে ভরা অনেক ভাল।(আঃপ্রঃ- ৫৭১৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৬১০)

৬১৫৫

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ কোন ব্যক্তির পেট কবিতা দিয়ে ভরার চেয়ে এমন পুঁজে ভরা উত্তম, যা তোমাদের পেটকে ধ্বংস করে ফেলে।[মুসলিম পর্ব ৪১/হাদীস ২২৫৭, আহমাদ ১০২০১] আঃপ্রঃ- ৫৭১৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৬১১)

৭৮/৯৩. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) -এর উক্তিঃ তোমার ডান হাত ধূলি ধূসরিত হোক । তোমার হস্তপদ ধ্বংস হোক এবং তোমার কন্ঠদেশ ঘায়েল হোক ।

৬১৫৬

আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, পর্দার হুকুম অবতীর্ণ হবার পর আবু কুআইসের ভাই আফলাহ আমার ঘরে প্রবেশের অনুমতি চাইলেন। আমি বললামঃ আল্লাহর কসম! আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) থেকে অনুমতি না নিয়ে তাকে অনুমতি দেব না। কারণ আবু কুআইসের স্ত্রী আমাকে দুগ্ধ পান করিয়েছেন। ইতোমধ্যে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমার ঘরে প্রবেশ করিলেন। আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসুল! এ লোক আমাকে দুধ পান করাননি। বরং তাহাঁর স্ত্রী আমাকে দুধ পান করিয়েছেন। তিনি বললেনঃ অনুমতি দাও। কারণ এ লোকটি তোমার (দুধ) চাচা। তোমার ডান হস্ত ধূলি ধূসরিত হোক। রাবী উরওয়াহ বলেন, এ কারণেই আয়েশা (রাদি.) বলিতেন যে, বংশগত সম্পর্কে যারা হারাম হয়, দুধ পান সম্পর্কেও তোমরা তাদের হারাম গণ্য করিবে।(আঃপ্রঃ- ৫৭১৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৬১২)

৬১৫৭

আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) (হাজ্জ সমাপন শেষে) ফিরে আসার ইচ্ছে পোষণ করিলেন। তখন ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার কারণে তাহাঁর দরজার সামনে সাফিয়্যাহ (রাদি.) চিন্তিত ও বিষণ্ন মুখে দাঁড়িয়ে আছেন দেখিতে পেলেন। তখন তিনি কুরাইশদের বাগধারায় বললেনঃ আক্‌রা হাল্‌কা। তুমি তো দেখছি, আমাদের আটকে দিবে। এরপর জিজ্ঞেস করিলেন, তুমি কি কুরবানীর দিনে ফরয তাওয়াফ করেছিলে? তিনি বললেনঃ হাঁ। তখন তিনি বললেনঃ তাহলে এখন রওনা দাও।(আঃপ্রঃ- ৫৭১৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৬১৩)

৭৮/৯৪. অধ্যায়ঃ যাআমূ (তারা ধারণা করেন) সম্পর্কে যা বর্ণিত হয়েছে।

৬১৫৮

উম্মু হানী বিনত আবু ত্বলিব (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, মাক্কাহ বিজয়ের বছর আমি নাবী (সাঃআঃ) -এর নিকট গিয়ে তাঁকে গোসলরত অবস্থায় পেলাম। তখন তাহাঁর কন্যা ফাতিমাহ (রাদি.) তাঁকে পর্দা দিয়ে আড়াল করছিলেন। আমি তাঁকে সালাম করলাম। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ এ কে? আমি বললামঃ আমি আবু ত্বলিবের কন্যা উম্মু হানী। তিনি বললেনঃ উম্মু হানীর জন্য মারহাবা। তারপর তিনি যখন গোসল শেষ করিলেন। তখন তিনি দাঁড়ালেন এবং এক কাপড় গায়ে জড়িয়ে আট রাকআত সলাত আদায় করিলেন। তিনি সলাত শেষ করলে আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসুল! আমি হুবাইরার ছেলে অমুককে নিরাপত্তা দান করেছিলাম কিন্তু আমার ভাই বলছে, সে তাকে হত্যা করিবে। রাসুলুল্লাহ সালাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে উম্মু হানী! তুমি যাকে নিরাপত্তা দিয়েছ, আমিও তাকে নিরাপত্তা দিলাম। উম্মু হানী (রাদি.) বলেনঃ এই সময়টি ছিল চাশ্‌তের সময়।(আঃপ্রঃ- ৫৭১৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৬১৪)

৭৮/৯৫. অধ্যায়ঃ কাউকে ওয়াইলাকা বলা সম্পর্কে যা বর্ণিত হয়েছে।

৬১৫৯

আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

যে, নাবী (সাঃআঃ) এক ব্যক্তিকে একটা কুরবানীর উট হাঁকিয়ে নিতে দেখে, তাকে বললেনঃ এতে সওয়ার হও। সে বললঃ এটি তো কুরবানীর উট। তিনি পুনরায় বললেনঃ এতে সওয়ার হও। সে বললঃ এটি তো কুরবানীর উট। তিনি বললেনঃ এতে সওয়ার হও। সে বলিল, এটি তো কুরবানীর উট। তিনি বললেনঃ ওয়াইলাকা (তোমার অকল্যাণ হোক) তুমি এটির উপর সওয়ার হয়ে যাও।(আঃপ্রঃ- ৫৭১৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৬১৫)

৬১৬০

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

যে, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) এক ব্যক্তিকে একটা কুরবানীর উট হাঁকিয়ে নিয়ে যেতে দেখে বললেনঃ তুমি এর উপর সওয়ার হও। সে বললঃ হে আল্লাহর রাসুল! এটি তো কুরবানীর উট। তখন তিনি দ্বিতীয় বা কিংবা তৃতীয়বার বললেনঃ ওয়াইলাকা (তোমার অনিষ্ট হোক) তুমি এতে সওয়ার হও।(আঃপ্রঃ- ৫৭২০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৬১৬)

৬১৬১

আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর এক সফরে ছিলাম। তাহাঁর সঙ্গে তখন আনজাশাহ নামের এক কালো গোলাম ছিল। সে পুঁথি গাইছিল। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাকে বললেনঃ ওহে আনজাশাহ! তোমার সর্বনাশ। তুমি উটটিকে কাঁচপাত্র সদৃশ সওয়ারীদের নিয়ে ধীরে চালাও।(আঃপ্রঃ- ৫৭২১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৬১৭)

৬১৬২

আবু বাক্‌রাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ এক ব্যক্তি নাবী (সাঃআঃ) -এর সামনে অন্য জনের প্রশংসা করলো। তিনি বললেনঃ ওয়াইলাকা (তোমার অমঙ্গল হোক) তুমি তো তোমার ভাই এর গর্দান কেটে দিয়েছ। তিনি এ কথাটি তিনবার বলিলেন। তিনি আরও বললেনঃ যদি তোমাদের কাউকে কারো প্রশংসা করিতেই হয়, আর সে তার ব্যাপারে অবগত থাকে, তবে শুধু এতটুকু বলবে যে, আমি এ ব্যক্তি সম্পর্কে এ রকম ধারণা পোষণ করি। প্রকৃত হিসাব নিকাশের মালিক একমাত্র আল্লাহ। আর আমি নিশ্চিতভাবে আল্লাহর সামনে কারো পবিত্রতা বর্ণনা করছি না।(আঃপ্রঃ- ৫৭২২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৬১৮)

৬১৬৩

আবু সাঈদ খুদরী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ একবার নিজ অধিকারভুক্ত কিছু মাল নাবী (সাঃআঃ) বন্টন করে দিচ্ছিলেন। এমন সময় তামীম গোত্রের যুল খুয়াইসিরা নামক এক ব্যক্তি বলে উঠলঃ হে আল্লাহর রাসুল! ইনসাফ করুন। তখন তিনি বললেনঃ ওয়াইলাকা (তোমার অমঙ্গল হোক) আমি ইনসাফ না করলে আর কে ইনসাফ করিবে? তখন উমার (রাদি.) বললেনঃ আপনি আমাকে অনুমতি দিন, আমি এর গর্দান উড়িয়ে দেই। তিনি বললেনঃ না। কারণ, তার এমন কতকগুলো সঙ্গী আছে, যাদের সলাতের সামনে নিজেদের সলাতকে তুচ্ছ মনে করিবে এবং তাদের সিয়ামের সামনে তোমাদের নিজেদের সিয়ামকে তুচ্ছ মনে করিবে। তারা দ্বীন থেকে এমনভাবে বেরিয়ে যাবে, যেমন তীর শিকার ভেদ করে বেরিয়ে যায়…… গোবর ও রক্তকে এমনভাবে অতিক্রম করে যায় যে তীরের অগ্রভাগ দেখলে তাতে কোন চিহ্ন পাওয়া যায় না, তার উপরিভাগে দেখলেও কোন চিহ্ন পাওয়া যায় না। তার কাঠামোতেও কোন চিহ্ন নেই। তার পাতির মধ্যেও কোন চিহ্ন নেই। এমন সময় তাদের আবির্ভাব হইবে, যখন মুসলিমদের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দিবে। তাদের পরিচয় হলো, তাদের নেতা এমন এক ব্যক্তি হইবে, যার একহাত স্ত্রীলোকের স্তনের মত অথবা পিত্তের মত কাঁপতে থাকবে। রাবী আবু সাঈদ (রাদি.) বলেন, আমি সাক্ষ্য দিয়ে বলছি যে, আমি নিশ্চয়ই নাবী (সাঃআঃ) থেকে একথা শুনিয়াছি এবং আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমি নিজে আলী (রাদি.) -এর সাথে ছিলাম যখন তিনি এ দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছিলেন। তখন সে লোকটিকে যুদ্ধে নিহত লোকদের মধ্য থেকে তালাশ করে আনার পর তাকে ঠিক সেই হালাতেই পাওয়া গেল, যে হালাতের বর্ণনা নাবী (সাঃআঃ) দিয়েছিলেন।(আঃপ্রঃ- ৫৭২৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৬১৯)

৬১৬৪

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

যে, একবার এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর খিদমাতে এসে বললঃ হে আল্লাহর রাসুল! আমি তো ধ্বংস হয়ে গেছি। তিনি বললেনঃ ওয়াইহাকা (আফসোস তোমার জন্য) এরপর সে বললঃ আমি রমাযানের মধ্যেই দিনের বেলায় স্ত্রীর সাথে যৌন সঙ্গম করে ফেলেছি। তিনি বললেনঃ একটা গোলাম আযাদ করে দাও। সে বললঃ আমার কাছে তা নেই। তিনি বললেনঃ তাহলে তুমি এক নাগাড়ে দুমাস সাওম পালন কর। সে বললঃ আমি এতেও অপারগ। তিনি বললেনঃ তবে তুমি ষাটজন মিসকীনকে খাওয়াও। লোকটি বললঃ আমি এটাও পারি না। নাবী (সাঃআঃ) -এর নিকট এক ঝুড়ি খেজুর এলো। তখন তিনি বললেনঃ এটা নিয়ে যাও এবং সদাকাহ করে দাও। সে বললঃ হে আল্লাহর রাসুল! তা কি আমার পরিবার ছাড়া অন্যকে দেব? সেই সত্তার কসম! যাঁর হাতে আমার প্রাণ। মাদীনাহর উভয় প্রান্তের মধ্যস্থলে আমার চেয়ে অভাবী আর কেউ নেই। তখন নাবী (সাঃআঃ) এমনভাবে হাসলেন, তাহাঁর পার্শ্বের ছেদন দন্ত পর্যন্ত প্রকাশ পেল। তিনি বললেনঃ তবে তুমিই নিয়ে যাও। (আঃপ্রঃ- ৫৭২৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৬২০)

যুহরি হইতে ইউনুস এরকমই বর্ণনা করিয়াছেন। যুহরি হইতে আবদুর রহমান বিন খালিদ ওয়াইলাকা বলেছেন।

৬১৬৫

আবু সাঈদ খুদরী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

একজন গ্রাম্য লোক এসে বললঃ হে আল্লাহর রাসুল! আপনি আমাকে হিজরাতের বিষয়ে কিছু বলুন। তিনি বললেনঃ আফসোস তোমার প্রতি, হিজরাত তো খুব কঠিন কাজ। তোমার কি উট আছে? সে বললঃ হাঁ। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ তুমি কি এর যাকাত দিয়ে থাক? লোকটি বললঃ হাঁ। তিনি বললেনঃ তবে তুমি সমুদ্রের ঐ পাশ থেকেই আমাল করে যাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমার আমাল এতটুকু কমিয়ে দিবেন না।(আঃপ্রঃ- ,৫৭২৫ ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৬২১)

৬১৬৬

ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ ওয়াইলাকুম অথবা ওয়াইহাকুম (তোমাদের জন্য আফসোস) আমার পরে তোমরা আবার কাফির অবস্থায় ফিরে যেয়ো না। যাতে তোমরা একে অন্যের গর্দান উড়িয়ে দেবে। (আঃপ্রঃ- ৫৭২৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৬২২)

৬১৬৭

আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

যে, এক গ্রাম্য লোক নাবী (সাঃআঃ) -এর খিদমাতে এসে বললঃ হে আল্লাহর রাসুল! ক্বিয়ামাত কবে হইবে? তিনি বললেনঃ তোমার জন্য আক্ষেপ, তুমি এর জন্য কী প্রস্তুতি গ্রহণ করেছ? সে জবাব দিলঃ আমি তো তার জন্য কিছু প্রস্তুতি গ্রহণ করিনি, তবে আল্লাহ ও তাহাঁর রাসুলকে ভালবাসি। তিনি বললেনঃ তুমি যাকে ভালবাস, ক্বিয়ামতের দিন তুমি তাহাঁর সঙ্গেই থাকবে। তখন আমরা বললামঃ আমাদের জন্যও কি এরূপ? তিনি বললেনঃ হাঁ। এতে আমরা সে দিন অতিশয় আনন্দিত হলাম। আনাস (রাদি.) বলেন, এ সময় মুগীরাহ (রাদি.)র একটি যুবক বয়সের ছেলে পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। সে ছিল আমার বয়সী। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ যদি এ যুবকটি অধিক দিন বেঁচে থাকে, তবে সে বৃদ্ধ হবার আগেই ক্বিয়ামত সংঘটিত হইতে পারে।(আঃপ্রঃ- ৫৭২৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৬২৩)

৭৮/৯৬. অধ্যায়ঃ মহামহিম আল্লাহর প্রতি ভালবাসার নিদর্শন।

আল্লাহ তাআলার বাণীঃ (আপনি বলে দিন) যদি তোমরা আল্লাহকে সত্যই ভালবেসে থাকো, তাহলে তোমরা আমার অনুসরণ কর। তাহলে আল্লাহও তোমাদের ভালবাসবেন। (সুরা আলু ইমরান ৪/৩১)

৬১৬৮

আব্দুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ মানুষ যাকে ভালবাসবে সে তারই সাথী হইবে।(আঃপ্রঃ- ৫৭২৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৬২৪)

৬১৬৯

আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাদি.) বলেছেনঃ এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর নিকট এসে জিজ্ঞেস করলঃ হে আল্লাহর রাসুল! এমন ব্যক্তির ব্যাপারে আপনি কী বলেন, যে ব্যক্তি কোন দলকে ভালবাসে, কিন্তু (আমালের ক্ষেত্রে) তাদের সমান হইতে পারেনি? তিনি বললেনঃ মানুষ যাকে ভালবাসে সে তারই সাথী হইবে। [৬১৬৮; মুসলিম ৪৫/৫০/, হাদীস ২৬৪০, আহমাদ ১৮১১৩] আঃপ্রঃ- ৫৭২৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৬২৫)

৬১৭০

আবু মূসা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ নাবী (সাঃআঃ) -কে জিজ্ঞেস করা হলোঃ এক ব্যক্তি একদলকে ভালবাসে, কিন্তু (আমালে) তাদের সমপর্যায়ের হইতে পারেনি। তিনি বললেনঃ মানুষ যাকে ভালবাসে, সে তারই সাথী হইবে।[মুসলিম৪৫/৫০, হাদীস ২৬৪১] আঃপ্রঃ- ৫৭৩০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৬২৬)

৬১৭১

আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

এক ব্যক্তি নাবী (সাঃআঃ) -কে জিজ্ঞেস করলঃ হে আল্লাহর রাসুল! ক্বিয়ামাত কবে হইবে? তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ তুমি এর জন্য কী প্রস্তুতি গ্রহণ করেছ? সে বললঃ আমি এর জন্য তো অধিক কিছু সালাত, সাওম এবং সদাকাহ আদায় করিতে পারিনি। কিন্তু আমি আল্লাহ ও তাহাঁর রাসুলকে ভালবাসি। তিনি বললেনঃ তুমি যাকে ভালবাস তারই সাথী হইবে। [৩৬৮৮; মুসলিম ৪৫/৫০, হাদীস ২৬৩৯, আহমাদ ১২০৭৬] আঃপ্রঃ- ৫৭৩১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৬২৭)

৭৮/৯৭. আধ্যায়ঃ কোন লোকের অন্য লোককে দূর হও বলা।

৬১৭২

ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) ইবনু সাঈদকে বললেনঃ আমি তোমার জন্য একটি কথা গোপন রেখেছি, তুমি বলতো সে কথাটা কী? সে বললঃ দুখ তখন তিনি বললেনঃ দূর হও।(আঃপ্রঃ- ৫৭৩২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৬২৮)

৬১৭৩

আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, উমার ইবনু খাত্তাব (রাদি.) একদল সাহাবীসহ রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর সঙ্গে ইবনু সাইয়্যাদের নিকট গমন করেন। তাঁরা সেখানে গিয়ে তাকে বনূ মাগালাহের দুর্গের পার্শ্বে বালকদের খেলায় মগ্ন পেলেন। তখন সে বালেগ হবার নিকটবর্তী বয়সে পৌছেছে। সে নাবী (সাঃআঃ) -এর আগমন টের পেল না যতক্ষণ না রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাহাঁর হাত দিয়ে তাহাঁর পিঠে মারলেন। তারপর তিনি

বললেনঃ তুমি কি সাক্ষ্য দাও যে, আমিই আল্লাহর রাসুল! তখন সে নাবী (সাঃআঃ) -এর দিকে তাকিয়ে বললোঃ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি উম্মী সম্প্রদায়ের রাসুল! এরপর ইবনু সাইয়্যাদ বললঃ আপনি কি সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, আমিই আল্লাহর রাসুল? রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাকে ধাক্কা মেরে বললেনঃ আমি আল্লাহ ও তাহাঁর রাসুলদের উপর ঈমান রাখি। তারপর আবার তিনি ইবনু সাইয়্যাদকে জিজ্ঞেস করলেনঃ তুমি কী দেখিতে পাও? সে বললঃ আমার নিকট সত্যবাদী ও মিথ্যাচারী উভয়ই আসেন। রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ বিষয়টি তোমার উপর এলোমেলো করে দেওয়া হয়েছে। এরপর নাবী (সাঃআঃ) তাকে বললেনঃ আমি তোমার (পরীক্ষার) জন্য কিছু গোপন রাখছি। সে বললঃ তা দুখ। তখন তিনি বললেনঃ দূর হও। তুমি কখনো তোমার ভাগ্যকে অতিক্রম করিতে পারবে না। উমার (রাদি.) বললেনঃ হে আল্লাহর রাসুল! আপনি কি তার ব্যাপারে আমাকে অনুমতি দেন যে, আমি তার গর্দান কেটে দেই। তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ এ যদি সে (দাজ্জালই) হয়, তাহলে তার উপর তোমাকে ক্ষমতা দেয়া হইবে না। আর এ যদি সে না হয়ে থাকে, তবে তাকে হত্যা করা তোমার জন্য ভাল হইবে না।(আঃপ্রঃ- ৫৭৩৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৬২৯)

৬১৭৪

সালিম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

সালিম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, এরপর আমি আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাদি.) -কে বলিতে শুনিয়াছি যে, এ ঘটনার পর একদিন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) এবং উবাই ইবনু কাব (রাদি.) সেই খেজুর বাগানের দিকে রওয়ানা হলেন, যেখানে ইবনু সাইয়্যাদ ছিল। অবশেষে যখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বাগানে প্রবেশ করিলেন, তখন তিনি খেজুর গাছের আড়ালে চলতে লাগলেন। তাহাঁর উদ্দেশ্য ছিল যে, ইবনু সাইয়্যাদ তাঁকে দেখার আগেই যেন তিনি তাহাঁর কিছু কথাবার্তা শুনে নিতে পারেন। এ সময় ইবনু সাইয়্যাদ তার বিছানায় একখানা চাদর গায়ে দিয়ে শুয়েছিল। আর তার চাদরের মধ্যে হইতে বিড়বিড় শব্দ শুনা যাচ্ছিল। ইতোমধ্যে ইবনু সাইয়্যাদের মা নাবী (সাঃআঃ) -কে দেখল যে, তিনি খেজুরের গাছের আড়ালে লুকিয়ে লুকিয়ে আসছেন। তখন তার মা তাকে ডেকে বললঃ ওহে সাফ্‌! –এটা ছিল তার ডাক নাম- এই যে, মুহাম্মাদ (সাঃআঃ)। তখন ইবনু সাইয়্যাদ চুপ হল। তখন রাসুলুল্লাহ (রাদি.) বললেনঃ যদি তার মা তাকে সতর্ক না করতো তবে তার (ব্যাপার) প্রকাশ পেয়ে যেতো।(আঃপ্রঃ- ৫৭৩৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৬২৯)

৬১৭৫

আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ বর্ণনা করিয়াছেন যে, একদিন রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ সহাবাদের মধ্যে দাঁড়িয়ে আল্লাহ তাআলার যথাবিহিত প্রশংসার পর দাজ্জালের উল্লেখ করে বললেনঃ আমি তোমাদের তার ব্যাপারে সাবধান করে দিচ্ছি। প্রত্যেক নাবীই এর ব্যাপারে তাহাঁর কওমকে সাবধান করে গিয়েছেন। আমি এর ব্যাপারে এমন কথা বলছি যা অন্য কোন নাবী তাহাঁর কওমকে বলেননি। তোমরা জেনে রাখ সে কানা; কিন্তু আল্লাহ কানা নন। [৩০৫৭] আঃপ্রঃ- ৫৭৩৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৬২৯)

আবু আবদুল্লাহ বুখারী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, خسأت الكلب অর্থাৎ আমি তাকে দূর করেছি। خايئين অর্থ বিতাড়নকারী।

৭৮/৯৮. অধ্যায়ঃ কাউকে মারহাবা বলা

আয়েশা (রাদি.) বলেন, নাবী (সাঃআঃ) ফাতেমাহ (রাদি.) -কে বলেছেনঃ আমার মেয়ের জন্য মারহাবা। উম্মু হানী (রাদি.) বলেন, আমি একবার নাবী (সাঃআঃ) -এর নিকট এলাম। তিনি বললেনঃ উম্মু হানী মারহাবা।

৬১৭৬

ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আবদুল কায়সের প্রতিনিধি দল নাবী (সাঃআঃ) -এর কাছে এলে তিনি বললেনঃ এই প্রতিনিধি দলের প্রতি মারহাবা, যারা লাঞ্ছিত ও লজ্জিত হয়ে আসেনি। তারা বললঃ হে আল্লাহর রাসুল! আমরা রাবিয়া গোত্রের লোক। আমরা ও আপনার মাঝে অবস্থান করছে মুযার গোত্র। এজন্য আমরা হারাম মাস ব্যতীত আপনার খিদমতে পৌছতে পারি না। সুতরাং আপনি আমাদের এমন কিছু চূড়ান্ত নিয়ম-নীতি বাতলিয়ে দেন যা অনুসরণ করে আমরা জান্নাতে যেতে পারি এবং আমাদের পেছনে যারা রয়েছে তাদের পথ দেখাতে পারি। তিনি বললেনঃ আমি চারটি ও চারটি নির্দেশ দিচ্ছি। তোমরা সালাত কায়িম করিবে, যাকাত দিবে, রমাযান মাসের সিয়াম পালন করিবে এবং গানীমাতের মালের পঞ্চমাংশ দান করিবে। আর কদুর খোলে, সবুজ রং করা কলসে, খেজুর মূলের পাত্রে আলকাতরা রঙানো পাত্রে পান করিবে না।(আঃপ্রঃ- ৫৭৩৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৬৩০)

Comments

Leave a Reply