অভিশাপ, গালি, গীবত, ফাসাদ, চোগলখোরী, দুমুখো লোক, অহঙ্কার, নাফরমানী
অভিশাপ, গালি, গীবত, ফাসাদ, চোগলখোরী, দুমুখো লোক, অহঙ্কার, নাফরমানী >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
৭৮/৪৩. অধ্যায়ঃ আল্লাহ তাআলার বাণীঃ হে মুমিনগণ! কোন সম্প্রদায় যেন অন্য সম্প্রদায়কে ঠাট্রা-বিদ্রুপ না করে, হইতে পারে তারা বিদ্রুপকারীদের চেয়ে উত্তম …… (এ সব হইতে) যারা তওবাহ না করে তারাই যালিম। (সুরা আল-হুজুরাত ৪৯/১১)
৭৮/৪৪. অধ্যায়ঃ গালি ও অভিশাপ দেয়া নিষিদ্ধ।
৭৮/৪৫. অধ্যায়ঃ মানুষের (আকৃতি সম্পর্কে) উল্লেখ করা জায়িয। যেমন লোকে কাউকে বলে লম্বা অথবা খাটো।
৭৮/৪৬. অধ্যায়ঃ গীবত করা।
৭৮/৪৭. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) -এর বাণীঃ আনসারদের গৃহগুলো উৎকৃষ্ট।
৭৮/৪৮. অধ্যায়ঃ ফাসাদ ও সন্দেহ সৃষ্টিকারীদের গীবত করা জায়িয।
৭৮/৪৯. অধ্যায়ঃ চোগলখোরী কবীরা গুনাহ।
৭৮/৫০. অধ্যায়ঃ চোগলখোরী নিন্দিত গুনাহ।
৭৮/৫১. অধ্যায়ঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ তোমরা মিথ্যা কথা পরিত্যাগ কর। (সুরা আল-হাজ্জঃ ৩০)
৭৮/৫২. অধ্যায়ঃ দুমুখো লোক সম্পর্কিত।
৭৮/৫৩. অধ্যায়ঃ আপন সঙ্গীকে তার ব্যাপারে অপরের কথা জানিয়ে দেয়া।
৭৮/৫৪. অধ্যায়ঃ এমন প্রশংসা যা পছন্দনীয় নয়।
৭৮/৫৫. অধ্যায়ঃ নিজের জ্ঞানের ভিত্তিতে কারো প্রশংসা করা।
৭৮/৫৬. অধ্যায়ঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ আল্লাহর ন্যায়-বিচার, সদাচরণ ও আত্মীয়দেরকে দেয়ার হুকুম দিচ্ছেন….. গ্রহন কর পর্যন্ত” (সুরা নাহল ১৬/৯০)। এবং আল্লাহর বাণীঃ “তোমাদের এ বিদ্রোহ তো (প্রকৃতপক্ষে) তোমাদের নিজেদেরই বিপক্ষে” (সুরা ইউনুস ১০/২৩)। “যার উপর যুল্ম করা হয়, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাকে সাহায্য করেন।” (সুরা হাজ্জ ২২/৬০)। আর মুসলিম অথবা কাফিরের কু-কর্ম প্রচার থেকে বিরত থাকা।
৭৮/৫৭. অধ্যায়ঃ একে অন্যের প্রতি বিদ্বেষ রাখা এবং পরস্পর বিরোধিতা করা নিষিদ্ধ।
৭৮/৫৮. অধ্যায়ঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ হে মুমিনগণ! তোমরা অধিকাংশ অনুমান হইতে বিরত থাক………. আয়াতের শেষ পর্যন্ত। (সুরা আল-হুজরাত ৪৯/১২)
৭৮/৫৯. অধ্যায়ঃ কেমন ধারণা করা যেতে পারে।
৭৮/৬০. অধ্যায়ঃ মুমিন কর্তৃক স্বীয় দোষ ঢেকে রাখা।
৭৮/৬১. অধ্যায়ঃ অহঙ্কার।
৭৮/৬২. অধ্যায়ঃ সম্পর্ক ত্যাগ।
৭৮/৬৩. অধ্যায়ঃ যে আল্লাহর নাফরমানী করে তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা বৈধ।
৭৮/৪৩. অধ্যায়ঃ আল্লাহ তাআলার বাণীঃ হে মুমিনগণ! কোন সম্প্রদায় যেন অন্য সম্প্রদায়কে ঠাট্রা-বিদ্রুপ না করে, হইতে পারে তারা বিদ্রুপকারীদের চেয়ে উত্তম …… (এ সব হইতে) যারা তওবাহ না করে তারাই যালিম। (সুরা আল-হুজুরাত ৪৯/১১)
৬০৪২
আবদুল্লাহ ইবনু যামআহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) মানুষের বায়ু নির্গমনে কাউকে হাসতে নিষেধ করিয়াছেন। তিনি আরও বলেছেনঃ তোমাদের কেউ কেন স্ত্রীকে ষাঁড় পিটানোর মত পিটাবে? পরে হয়ত, সে আবার তার সাথে গলাগলিও করিবে।
সাওরী, ওহায়ব ও আবু মুআবিয়াহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হিশাম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) থেকে বর্ণনা করেন, ষাঁড় পিটানোর স্থলে দাসকে বেত্রাঘাত করার ন্যায়।(আঃপ্রঃ- ৫৬০৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫০৩)
৬০৪৩
ইবনু উমার (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) মিনায় (খুতবার কালে) জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমরা কি জান আজ কোন দিন? সকলেই বললেনঃ আল্লাহ ও তাহাঁর রাসুলই বেশী জানেন। তখন নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ আজ সম্মানিত দিন। তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমরা জান, এটি কোন শহর? সবাই জবাব দিলেনঃ আল্লাহ ও তাহাঁর রাসুলই আধিক জানেন। তখন তিনি বললেনঃ এটি সম্মানিত শহর। তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমরা কি জান, এটা কোন মাস? তাঁরা বললেনঃ আল্লাহ ও তাহাঁর রাসুলই আধিক জানেন। তখন তিনি বললেনঃ এটা সম্মানিত মাস। তারপর তিনি বললেনঃ আল্লাহ তাআলা তোমাদের (পরস্পরের) জান, মাল ও ইজ্জতকে হারাম করিয়াছেন, যেমন হারাম তোমাদের এ দিন, তোমাদের এ মাস, তোমাদের এ শহর।(আঃপ্রঃ- ৫৬০৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫০৪)
৭৮/৪৪. অধ্যায়ঃ গালি ও অভিশাপ দেয়া নিষিদ্ধ।
৬০৪৪
আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন যে, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ মুসলিমকে গালি দেয়া ফাসিকী এবং তাকে হত্যা করা কুফুরী।
শুবাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) সূত্রে গুনদারও এ রকম বর্ণনা করিয়াছেন। (আঃপ্রঃ- ৫৬০৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫০৫)
৬০৪৫
আবু যার (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ একজন অপর জনকে ফাসিক বলে যেন গালি না দেয় এবং একজন অন্যজনকে কাফির বলে অপবাদ না দেয়। কেননা, অপরজন যদি তা না হয়, তবে সে অপবাদ তার নিজের উপরই আপতিত হইবে।[৩৫০৮; মুসলিম ১/২৭, হাদীস ৬১, আহমাদ ২১৫২১] আঃপ্রঃ- ৫৬১০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫০৬)
৬০৪৬
আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) অশালীন, লানতকারী ও গালিদাতা ছিলেন না। তিনি কাউকে তিরস্কার করার সময় শুধু এটুকু বলিতেনঃ তার কী হলো? তার কপাল ধুলিমলিন হোক।(আঃপ্রঃ- ৫৬১১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫০৭)
৬০৪৭
সাবিত ইবনু যাহ্হাক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি গাছের নীচে বাইআত গ্রহণকারীদের অন্যতম সহাবী ছিলেন। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন দলের উপর কসম খাবে, সে ঐ দলেরই শামিল হয়ে যাবে। আর মানুষ যে জিনিসের মালিক নয়, এমন জিনিসের নযর আদায় করা তার উপর ওয়াজিব নয়। আর কোন লোক দুনিয়াতে যে জিনিস দিয়ে আত্মহত্যা করিবে, ক্বিয়ামতের দিন সে জিনিস দিয়েই তাকে আযাব দেয়া হইবে। কোন লোক কোন মুমিনের উপর অভিশাপ দিলে, তা তাকে হত্যা করারই শামিল হইবে। আর কোন মুমিনকে কাফির বললে, তাও তাকে হত্যা করার মতই হইবে।(আঃপ্রঃ- ৫৬১২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫০৮)
৬০৪৮
সুলাইমান ইবনু সুরাদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
সুলাইমান ইবনু সুরাদ (রাদি.) নামক নাবী (সাঃআঃ) -এর এক সহাবী হইতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ দুজন লোক নাবী (সাঃআঃ) -এর সম্মুখে পরস্পর গালাগালি করছিল। তাদের একজন এতই রাগান্বিত হয়েছিলো যে, তার চেহারা ফুলে বিগড়ে গিয়েছিল। তখন নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ আমি অবশ্যই একটিই কালেমা জানি। সে ঐ কালেমাটি পড়লে তার রাগ চলে যেত। তখন এক লোক তার কাছে গিয়ে নাবী (সাঃআঃ) -এর ঐ কথাটি তাকে জানালো আর বললো যে, তুমি শয়তান থেকে আশ্রয় চাও। তখন সে বললোঃ আমার মধ্যে কি কোন রোগ দেখিতে পাচ্ছ? আমি কি পাগল? চলে যাও তুমি।(আঃপ্রঃ- ৫৬১৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫০৯)
৬০৪৯
উবাদাহ ইবনু সমিত (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ একদিন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) লোকদের লাইলাতুল কাদর সম্বন্ধে অবহিত করার জন্য বের হলেন। তখন দুজন মুসলিম ঝগড়া করছিলেন। নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, : আমি লাইলাতুল কাদর সম্পর্কে তোমাদের খবর দিতে বেরিয়ে এসেছিলাম। এ সময় অমুক, অমুক ঝগড়া করছিল। এজন্য ঐ খবরের ইল্ম আমার থেকে তুলে নেয়া হয়েছে। এটা হয়ত তোমাদের জন্য ভালোই হইবে। অতএব তোমরা তা রমাযানের শেষ দশকের নবম, সপ্তম ও পঞ্চম রাতে খোঁজ করিবে।(আঃপ্রঃ- ৫৬১৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫১০)
৬০৫০
আবু যার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ তাহাঁর উপর একখানা চাদর ও তাহাঁর গোলামের গায়ে একখানা চাদর দেখে বললাম, যদি আপনি ঐ চাদরটি নিতেন ও পরতেন, তাহলে আপনার এক জোড়া হয়ে যেত আর গোলামকে অন্য কাপড় দিয়ে দিতেন। তখন আবু যার (রাদি.) বললেনঃ একদিন আমার ও আরেক লোকের মধ্যে কথাবার্তা চলছিল। তার মা ছিল জনৈকা অনারব মহিলা। আমি তার মা তুলে গালি দিলাম। তখন লোকটি নাবী (সাঃআঃ) -এর নিকট তা বলিল। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ তুমি অমুককে গালি দিয়েছ? আমি বললামঃ হাঁ। তিনি বললেনঃ তুমি কি তার মা তুলে গালি দিয়েছ? আমি বললামঃ হাঁ। তিনি বললেনঃ নিশ্চয়ই তুমি তো এমন লোক যার মধ্যে জাহিলী যুগের স্বভাব আছে। আমি বললামঃ এখনো? এ বৃদ্ধ বয়সেও? তিনি বললেনঃ হাঁ! তারা তোমাদেরই ভাই। আল্লাহ তাআলা ওদের তোমাদের অধীন করিয়াছেন। সুতরাং আল্লাহ তাআলা যার ভাইকে তার অধীন করে দেন সে নিজে যা খায়, তাকেও যেন তা খাওয়ায়। সে নিজে যা পরে, তাকেও যেন তা পরায়। আর তার উপর যেন এমন কোন কাজ না চাপায়, যা তার শক্তির বাইরে। আর যদি তার উপর এমন কোন কঠিন ভার দিতেই হয়, তাহলে সে নিজেও যেন তাকে সাহায্য করে।(আঃপ্রঃ- ৫৬১৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫১১)
৭৮/৪৫. অধ্যায়ঃ মানুষের (আকৃতি সম্পর্কে) উল্লেখ করা জায়িয। যেমন লোকে কাউকে বলে লম্বা অথবা খাটো।
আর নাবী (সাঃআঃ) কাউকে যুল ইয়াদাইন (লম্বা হাত বিশিষ্ট) বলেছেন। তবে কারো বদনাম কিংবা অবমাননা করার নিয়্যাতে (জায়িয) নয়।
৬০৫১
আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার নাবী (সাঃআঃ) আমাদের নিয়ে যুহরের সলাত দুরাকআত আদায় করে সালাম ফিরালেন। তারপর সাজদাহর জায়গার সম্মুখে রাখা একটা কাঠের দিকে এগিয়ে গিয়ে তার উপর তাহাঁর এক হাত রাখলেন। সেদিন লোকেদের মাঝে আবু বাকর, উমার -ও হাযির ছিলেন। তাঁরা তাহাঁর সঙ্গে কথা বলিতে ভয় পেলেন। কিন্তু জলদি করে (কিছু) লোক বেরিয়ে গিয়ে বলিতে লাগলঃ সলাত খাটো করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজন ছিল, যাকে নাবী (সাঃআঃ) যুল ইয়াদাইন (লম্বা হাত বিশিষ্ট) বলে ডাকতেন, সে বললঃ হে আল্লাহর নাবী! আপনি কি ভূল করিয়াছেন, না সলাত কম করা হয়েছে? তিনি বললেনঃ আমি ভুলেও যাইনি এবং (সলাত) কমও করা হয়নি। তারা বললেনঃ বরং আপনিই ভুলে গেছেন, হে আল্লাহর রাসুল! তখন তিনি বললেনঃ যুল্ইয়াদাইন ঠিকই বলেছে। তারপর তিনি উঠে দাঁড়িয়ে দুরাকআত সলাত আদায় করিলেন ও সালাম ফিরালেন। এরপর তাকবীর বলে আগের সাজদাহর মত অথবা তাত্থেকে লম্বা সাজদাহ করিলেন। তারপর আবার মাথা তুললেন এবং তাকবীর বলিলেন এবং আগের সাজদাহর মত অথবা তাত্থেকে লম্বা সাজদাহ করিলেন। এরপর মাথা উঠালেন এবং তাকবীর বলিলেন।(আঃপ্রঃ- ৫৬১৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫১২)
৭৮/৪৬. অধ্যায়ঃ গীবত করা।
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহর বাণীঃ হে মুমিনগণ! তোমরা অধিকাংশ অনুমান হইতে বিরত থাক। কতক অনুমান পাপের অন্তর্ভুক্ত। তোমরা অন্যের দোষ খোঁজাখুঁজি করো না, একে অন্যের অনুপস্থিতিতে দোষ-ক্রটি বর্ণনা করো না। তোমাদের কেউ কি তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে পছন্দ করিবে? তোমরা তো সেটাকে ঘৃনাই করে থাক। আল্লাহকে ভয় কর, আল্লাহ খুব বেশি তাওবাহ ক্ববুলকারী, অতি দয়ালু…………. পর্যন্ত।” (সুরা আল হুজরাত ৪৯ : ১২)
৬০৫২
ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদিন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) দুটি কবরের পার্শ্ব দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তিনি বললেনঃ নিশ্চ্য়ই এ দুজন কবরবাসীকে শাস্তি দেয়া হচ্ছে। তবে বড় কোন গুনাহের কারণে কবরে তাদের আযাব দেয়া হচ্ছে না। এই কবরবাসী প্রস্রাব করার সময় সতর্ক থাকত না। আর ঐ কবরবাসী গীবত করে বেড়াত। এরপর তিনি খেজুরের একটি কাঁচা ডাল আনিয়ে সেটি দুটুকরো করে এক টুকরো এক কবরের উপর এবং এক টুকরো অন্য কবরের উপর গেড়ে দিলেন। তারপর বললেনঃ এ ডালের টুকরো দুটি শুকিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা অবশ্যই তাদের শাস্তি কমিয়ে দিবেন।(আঃপ্রঃ- ৫৬১৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫১৩)
৭৮/৪৭. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) -এর বাণীঃ আনসারদের গৃহগুলো উৎকৃষ্ট।
৬০৫৩
আবু উসাইদ সাঈদী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ আনসারদের গৃহগুলোর মধ্যে নাজ্জার গোত্রের গৃহগুলোই উৎকৃষ্ট।(আঃপ্রঃ- ৫৬১৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫১৪)
৭৮/৪৮. অধ্যায়ঃ ফাসাদ ও সন্দেহ সৃষ্টিকারীদের গীবত করা জায়িয।
৬০৫৪
আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
যে, একবার এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর নিকট আসার অনুমতি চাইলে তিনি বললেনঃ তাকে অনুমতি দাও। সে বংশের নিকৃষ্ট ভাই অথবা বললেনঃ সে গোত্রের নিকৃষ্ট সন্তান। লোকটি ভিতরে এলে তিনি তার সাথে নম্রতার সঙ্গে কথাবার্তা বলিলেন। তখন আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসুল! আপনি এ লোকের ব্যাপারে যা বলার তা বলেছেন। পরে আপনি আবার তার সাথে নম্রতার সাথে কথাবার্তা বলিলেন। তখন তিনি বললেনঃ হে আয়েশা! নিশ্চয়ই সবচেয়ে খারাপ লোক সে-ই যার অশালীনতা থেকে বাঁচার জন্য মানুষ তার সংসর্গ পরিত্যাগ করে। (আঃপ্রঃ- ৫৬১৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫১৫)
৭৮/৪৯. অধ্যায়ঃ চোগলখোরী কবীরা গুনাহ।
৬০৫৫
ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার নাবী (সাঃআঃ) মদীনার কোন বাগানের বাইরে গেলেন। তখন তিনি এমন দুজন লোকের শব্দ শুনলেন, যাদের কবরে আযাব দেয়া হচ্ছিল। তিনি বললেনঃ তাদের দুজনকে আযাব দেয়া হচ্ছে। তবে বড় গুনাহের কারণে শাস্তি দেয়া হচ্ছে না। আর তাহলো কবীরা গুনাহ। এদের একজন প্রস্রাবের সময় সতর্ক থাকত না। আর অন্য ব্যক্তি চোগলখোলী করে বেড়াতো। তারপর তিনি একটা কাঁচা ডাল আনিয়ে তা ভেঙ্গে দু টুকরো করে, এক কবরে এক টুক্রো আর অন্য কবরে এক টুক্রো গেড়ে দিলেন এবং বললেনঃ দুটি যতক্ষন পর্যন্ত না শুকাবে ততক্ষন পর্যন্ত তাদের আযাব হালকা করে দেয়া হইবে।(আঃপ্রঃ- ৫৬২০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫১৬)
৭৮/৫০. অধ্যায়ঃ চোগলখোরী নিন্দিত গুনাহ।
আল্লাহর বাণীঃ “যে বেশি বেশি কসম খায় আর যে (বার বার মিথ্যা কসম খাওয়ার কারণে মানুষের কাছে) লাঞ্ছিত- যে পশ্চাতে নিন্দা করে একের কথা অপরের কাছে লাগিয়ে ফিরে।” (সুরা আল-কলাম ৬৮ : ১০-১১) “দুর্ভোগ এমন প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য যে (সামনাসামনি) মানুষের নিন্দা করে আর (অসাক্ষাতে) দুর্নাম করে।” (সুরা আল-হুমাযাহ ১০৪ : ১)
৬০৫৬
হুযাইফাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বললেনঃ আমি নাবী (সাঃআঃ) কে বলিতে শুনিয়াছি যে, চোগলখোরী কক্ষনো জান্নাতে প্রবেশ করিবে না। [মুসলিম১/৪৫, হাদীস ১০৫, আহমাদ ২৩৩০৭] আঃপ্রঃ- ৫৬২১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫১৭)
৭৮/৫১. অধ্যায়ঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ তোমরা মিথ্যা কথা পরিত্যাগ কর। (সুরা আল-হাজ্জঃ ৩০)
৬০৫৭
আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যে লোক মিথ্যা কথা এবং সে অনুসারে কাজ করা আর মূর্খতা পরিহার করলো না, আল্লাহর নিকট তার পানাহার বর্জনের কোন প্রয়োজন নেই। (আ.প্র. ৫৬২২, ই.ফা. ৫৫১৮) আহামাদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেছেন, এক ব্যক্তি আমাকে এর সূত্র জ্ঞাত করিয়াছেন।
৭৮/৫২. অধ্যায়ঃ দুমুখো লোক সম্পর্কিত।
৬০৫৮
আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ ক্বিয়ামাতের দিন তুমি আল্লাহর কাছে ঐ লোককে সব থেকে খারাপ পাবে, যে দুমুখো। সে এদের সম্মুখে এক রূপ নিয়ে আসতো, আর ওদের সম্মুখে অন্য রূপে আসত।[৩৪৯৪; মুসলিম ৪৪/৪৮, হাদীস ২৫২৬, আহমাদ ১০৭৯৫] আঃপ্রঃ- ৫৬২৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫১৯)
৭৮/৫৩. অধ্যায়ঃ আপন সঙ্গীকে তার ব্যাপারে অপরের কথা জানিয়ে দেয়া।
৬০৫৯
ইবনু মাসউদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) (গণীমত) ভাগ করিলেন। তখন আনসারদের মধ্য থেকে এক (মুনাফিক) লোক বললঃ আল্লাহর কসম! এ কাজে মুহাম্মদ (সাঃআঃ) আল্লাহর সন্তুষ্টি চাননি। তখন আমি এসে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -কে এ কথা জানালাম। এতে তাহাঁর চেহারার রং পাল্টে গেল। তিনি বললেনঃ আল্লাহ মূসা (আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর উপর দয়া করুন। তাঁকে এর থেকেও অনেক অধিক কষ্ট দেয়া হয়েছে; তবুও তিনি ধৈর্য অবলম্বন করিয়াছেন।(আঃপ্রঃ- ৫৬২৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫২০)
৭৮/৫৪. অধ্যায়ঃ এমন প্রশংসা যা পছন্দনীয় নয়।
৬০৬০
আবু মূসা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) এক লোককে অন্য লোকের প্রশংসা করিতে শুনলেন এবং সে প্রশংসায় বাড়াবাড়ি করিল। তখন তিনি বললেনঃ তোমরা তো লোকটিকে মেরে ফেললে, কিংবা বললেনঃ লোকটির মেরুদন্ড ভেঙ্গে দিলে।(আঃপ্রঃ- ৫৬২৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫২১)
৬০৬১
আবু বাক্রাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী সাঃআঃ -এর সম্মুখে এক ব্যক্তির আলোচনা হল। তখন একলোক তার খুব প্রশংসা করলো। নাবী সাঃআঃ বললেনঃ আফসোস তোমার জন্য! তুমি তো তোমার সঙ্গীর গলা কেটে ফেললে। এ কথাটি তিনি কয়েকবার বলিলেন। তারপর তিনি বলিলেন) যদি কারো প্রশংসা করিতেই হয়, তবে সে যেন বলে, আমি তার ব্যাপারে এমন, এমন ধারণা পোষণ করি, যদি তার এরূপ হবার কথা মনে করা হয়। তার প্রকৃত হিসাব গ্রহণকারীতো হলেন আল্লাহ, আর আল্লাহর তুলনায় কেউ কারো পবিত্রতা বর্ণনা করিবে না। [২৬৬২] আঃপ্রঃ- ৫৬২৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫২২)
খালিদ রহঃ) সূত্রে ওহাইব বলেছেন وَيْلَكَ – ওয়াইলাকা
খালিদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) সূত্রে ওহাইব বলেছেন (—) ওয়াইলাকা।
৭৮/৫৫. অধ্যায়ঃ নিজের জ্ঞানের ভিত্তিতে কারো প্রশংসা করা।
সাদ (রাদি.) বলেন, আমি নাবী (সাঃআঃ) -কে যমীনের উপর বিচরণকারী কোন লোকের ব্যাপারে এ কথা বলিতে শুনিনি যে, সে জান্নাতী এক আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাদি.) ছাড়া।
৬০৬২
আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ হইতে বর্ণিতঃ
যে, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) ইযার সম্পর্কে কঠিন আযাবের কথা উল্লেখ করিলেন। তখন আবু বকর (রাদি.) বললেনঃ হে আল্লাহর রাসুল! আমার লুঙ্গিও একদিক দিয়ে ঝুলে পড়ে। তিনি বলিলেন, তুমি তাদের মধ্যে শামিল নও। (আঃপ্রঃ- ৫৬২৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫২৩)
৭৮/৫৬. অধ্যায়ঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ আল্লাহর ন্যায়-বিচার, সদাচরণ ও আত্মীয়দেরকে দেয়ার হুকুম দিচ্ছেন….. গ্রহন কর পর্যন্ত” (সুরা নাহল ১৬/৯০)। এবং আল্লাহর বাণীঃ “তোমাদের এ বিদ্রোহ তো (প্রকৃতপক্ষে) তোমাদের নিজেদেরই বিপক্ষে” (সুরা ইউনুস ১০/২৩)। “যার উপর যুল্ম করা হয়, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাকে সাহায্য করেন।” (সুরা হাজ্জ ২২/৬০)। আর মুসলিম অথবা কাফিরের কু-কর্ম প্রচার থেকে বিরত থাকা।
৬০৬৩
আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) এত এত দিন এমন অবস্থায় অতিবাহিত করছিলেন যে, তাহাঁর খেয়াল হতো যেন তিনি তাহাঁর স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হয়েছেনে, অথচ তিনি মিলিত হননি। আয়েশা (রাদি.) বলেন, অতঃপর তিনি আমাকে বললেনঃ হে আয়েশাহ! আমি যে ব্যাপারে জানতে চেয়েছিলাম, সে বিষয়ে আল্লাহ আমাকে জানিয়ে দিয়েছেন। (আমি স্বপ্নে দেখলাম) আমার কাছে দুজন লোক আসল। একজন বসলো আমার পায়ের কাছে এবং আরেকজন মাথার কাছে। পায়ের কাছে বসা ব্যক্তি মাথার কাছে বসা ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করলঃ এ ব্যক্তির অবস্থা কী? সে বললঃ তাঁকে যাদু করা হয়েছে। সে আবার জিজ্ঞেস করলঃ তাঁকে কে যাদু করেছে? সে বললঃ লাবীদ ইবনু আসাম। সে আবার জিজ্ঞেস করলঃ কিসের মধ্যে? সে বলিল, নর খেজুর গাছের খোসার ভিতরে তারঁ চিরুনীর এক টুকরা ও আঁচড়ানো চুল ঢুকিয়ে দিয়ে যারওয়ান কূপের মধ্যে একটা পাথরের নীচে রেখেছে। এরপর নাবী (সাঃআঃ) (সেখানে) গিয়ে দেখে বললেনঃ এ সেই কূপ যা আমাকে স্বপ্নে দেখানো হয়েছে। সেখানের খেজুর গাছের মাথাগুলো যেন শয়তানের মাথা এবং সে কুপের পানি যেন মেহেদী ভেজা পানি। এরপর নাবী (সাঃআঃ) -এর হুকুমে তা কূপ থেকে বের করা হলো। আয়েশা (রাদি.) বলেন, তখন আমি বললাম। হে আল্লাহর রাসুল! আপনি কেন অর্থাৎ এটি প্রকাশ করিলেন না? নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ আল্লাহ তো আমাকে আরোগ্য করে দিয়েছেন, আর আমি মানুষের নিকট কারো দুষ্কর্ম ছড়িয়ে দেয়া পছন্দ করি না। আয়েশা (রাদি.) বলেনঃ লাবীদ্ ইবনু আসাম ছিল ইয়াহূদীদের মিত্র বনূ যুরায়কের এক ব্যক্তি। (আঃপ্রঃ- ৫৬২৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫২৪)
৭৮/৫৭. অধ্যায়ঃ একে অন্যের প্রতি বিদ্বেষ রাখা এবং পরস্পর বিরোধিতা করা নিষিদ্ধ।
মহান আল্লাহর বাণীঃ আমি হিংসুকের হিংসার অনিষ্ট থেকে তোমার আশ্রয় চাইছি।
৬০৬৪
আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমরা ধারণা করা থেকে বিরত থাকো। ধারণা বড় মিথ্যা ব্যাপার। তোমরা দোষ তালাশ করো না, গোয়েন্দাগিরি করো না, পরস্পর হিংসা পোষণ করো না, একে অন্যের প্রতি বিদ্বেষভাব পোষন করো না এবং পরস্পর বিরোধে লিপ্ত হয়ো না; বরং তোমরা সবাই আল্লাহর বান্দা ভাই ভাই হয়ে যাও।(আঃপ্রঃ- ৫৬২৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫২৫)
৬০৬৫
আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
যে, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমরা পরস্পর বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাব পোষন করো না, পরস্পর হিংসা করো না, একে অন্যের বিরুদ্ধাচরণ করো না। তোমরা সবাই আল্লাহর বান্দা ভাই ভাই হয়ে যাও। কোন মুসলিমের জন্য তিন দিনের অধিক তার ভাইকে ত্যাগ করে থাকা বৈধ নয়।
[৬০৭৬; মুসলিম ৪৫/৭, হাদীস ২৫৫৯] (আঃপ্রঃ- ৫৬৩০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫২৬)
৭৮/৫৮. অধ্যায়ঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ হে মুমিনগণ! তোমরা অধিকাংশ অনুমান হইতে বিরত থাক………. আয়াতের শেষ পর্যন্ত। (সুরা আল-হুজরাত ৪৯/১২)
৬০৬৬
আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমরা অনুমান থেকে বেঁচে চলো। কারণ অনুমান বড় মিথ্যা ব্যাপার। আর কারো দোষ খুঁজে বেড়িও না, গোয়েন্দাগিরি করো না, পরস্পরকে ধোঁকা দিও না, আর পরস্পরকে হিংসা করো না, একে অন্যের প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাব পোষন করো না এবং পরস্পরের বিরুদ্ধাচরণ করো না। বরং সবাই আল্লাহর বান্দা ভাই ভাই হয়ে যাও।(আঃপ্রঃ- ৫৬৩১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫২৭)
৭৮/৫৯. অধ্যায়ঃ কেমন ধারণা করা যেতে পারে।
৬০৬৭
আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ অমুক অমুক ব্যক্তি আমাদের দ্বীনের ব্যাপারে কিছু জানে বলে আমি ধারণা করি না। রাবী লায়স বর্ণনা করেন যে, লোক দুটি মুনাফিক ছিল।(আঃপ্রঃ- ৫৬৩২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫২৮)
৬০৬৮
ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, লায়স আমাদের কাছে উক্ত হাদীস বর্ণনা করেন। (এতে রয়েছে) আয়েশা (রাদি.) বলেন, একদিন নাবী (সাঃআঃ) আমার নিকট এসে বললেনঃ হে আয়েশা! অমুক অমুক লোক আমাদের দীন, যার উপর আমরা রয়েছি, সে সম্পর্কে কিছু জানে বলে আমি ধারণা করি না। (আঃপ্রঃ- ৫৬৩৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫২৯)
৭৮/৬০. অধ্যায়ঃ মুমিন কর্তৃক স্বীয় দোষ ঢেকে রাখা।
৬০৬৯
আবু হুরাইরাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) কে বলিতে শুনিয়াছি যে, আমার সকল উম্মাতকে মাফ করা হইবে, তবে প্রকাশকারী ব্যতীত। আর নিশ্চয় এ বড়ই অন্যায় যে, কোন লোক রাতের বেলা অপরাধ করিল যা আল্লাহ গোপন রাখলেন। কিন্তু সে সকাল হলে বলে বেড়াতে লাগল, হে অমুক! আমি আজ রাতে এই এই কাজ করছি। অথচ সে এমন অবস্থায় রাত কাটাল যে, আল্লাহ তার কর্ম লুকিয়ে রেখেছিলেন, আর সে ভোরে উঠে তার উপর আল্লাহর দেয়া আবরণ খুলে ফেলল।[মুসলিম ৫৩/৮, হাদীস ২৯৯০] (আঃপ্রঃ- ৫৬৩৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫৩০)
৬০৭০
সফ্ওয়ান ইবনু মুহ্রিয (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
যে, এক লোক ইবনু উমার (রাদি.) -কে জিজ্ঞেস করলঃ আপনি নাজওয়া (ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ ও তাহাঁর মুমিন বান্দার মধ্যে গোপন আলোচনা)। ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) কে কী বলিতে শুনেছেন? বলিলেন, তিনি বলেছেনঃ তোমাদের এক ব্যক্তি তার প্রতিপালকের এত কাছাকাছি হইবে যে, তিনি তার উপর তাহাঁর নিজস্ব আবরণ টেনে দিয়ে দুবার জিজ্ঞেস করিবেনঃ তুমি এই এই কাজ করেছিলে? সে বলবেঃ হাঁ। আবার তিনি জিজ্ঞেস করিবেনঃ তুমি এই এই কাজ করেছিলে? সে বলবেঃ হাঁ। এভাবে তিনি তার স্বীকারোক্তি গ্রহণ করবেন। এরপর বলবেনঃ আমি দুনিয়াতে তোমার এগুলো লুকিয়ে রেখেছিলাম। আজ আমি তোমার এসব গুনাহ ক্ষমা করে দিলাম।(আঃপ্রঃ- ৫৬৩৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫৩১)
৭৮/৬১. অধ্যায়ঃ অহঙ্কার।
মুজাহিদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, (আল্লাহর বাণী) (—) অর্থাৎ তার ঘাড়। (—) অর্থাৎ নিজে নিজে মনে অহংকার পোষনকারী। (সুরা আল-হাজ্জঃ ৯)
৬০৭১
হারিসাহ ইবনু ওহাব খুযায়ী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ আমি কি তোমাদের জান্নাতীদের সম্পর্কে জ্ঞাত করবো না? (তারা হলেন) : ঐ সকল লোক যারা অসহায় এবং যাদের তুচ্ছ মনে করা হয়। তারা যদি আল্লাহর নামে শপথ করে, তাহলে তা তিনি নিশ্চয়ই পুরা করে দেন। আমি কি তোমাদের জাহান্নামীদের সম্পর্কে জ্ঞাত করবো না? তারা হল: কর্কশ স্বভাব, শক্ত হৃদয় ও অহংকারী। (আঃপ্রঃ- ৫৬৩৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫৩২)
৬০৭২
ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
মুহাম্মদ ইবনু ঈসা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) সূত্রে আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিত। তিনি বলেন, মাদীনাবাসীদের কোন এক দাসীও রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর হাত ধরে যেখানে চাইত নিয়ে যেত। আর তিনিও তার সাথে চলে যেতেন। (আঃপ্রঃ- ৫৬৩৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫৩২)
৭৮/৬২. অধ্যায়ঃ সম্পর্ক ত্যাগ।
এবং এ সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর বাণীঃ কোন লোকের জন্য তার ভাইয়ের সাথে তিনদিনের বেশি কথাবার্তা বর্জন করা জায়িয নয়।
৬০৭৩
আয়েশা (রাদি.) -এর বৈপিত্রেয় ভ্রাতুষ্পুত্র আওফ ইবনু মালিক ইবনু তুফায়ল (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আয়েশা (রাদি.) -কে জানানো হলো যে, তাহাঁর কোন বিক্রীর কিংবা দান করা সম্পর্কে আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র বলেছেনঃ আল্লাহর কসম! আয়েশা (রাদি.) অবশ্যই বিরত থাকবেন, নতুবা আমি নিশ্চয়ই তার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করবো। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ সত্যিই কি তিনি এ কথা বলেছেন? তারা বললেনঃ হাঁ।তখন আয়েশা (রাদি.) বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি আমার উপর মানৎ করে নিলাম যে, আমি ইবনু যুবায়রের সাথে আর কখনও কথা বলবো না। যখন এ বর্জনকাল লম্বা হলো, তখন ইবনু যুবায়র (রাদি.) আয়েশা (রাদি.) -এর নিকট সুপারিশ পাঠালেন। তখন তিনি বললেনঃ না, আল্লাহর কসম! এ ব্যাপারে আমি কখনো কোন সুপারিশ গ্রহণ করব না। আর আমার মানৎও ভাঙ্গবো না। এভাবে যখন বিষয়টি ইবনু যুবায়র (রাদি.) -এর জন্য দীর্ঘ হইতে লাগলো, তখন তিনি যহুরা গোত্রের দুব্যক্তি মিসওয়ার ইবন মাখরামাহ ও আবদুর রহমান ইবনু আসওয়াদ ইবনু আবদ ইয়াগুসের সাথে আলোচনা করিলেন। তিনি তাদের দুজনকে বললেনঃ আমি তোমাদের আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি যে, তোমরা দুজন আমাকে আয়েশা (রাদি.) -এর কাছে নিয়ে যাও। কারণ আমার সাথে তাহাঁর বিচ্ছিন্ন থাকার মানৎ জায়িয নয়। তখন মিসওয়ার (রাদি.) ও আবদুর রহমান (রাদি.) উভয়ে চাদর দিয়ে ইবনু যুবায়রকে ঢেকে নিয়ে এলেন এবং উভয়ে আয়েশা (রাদি.) -এর কাছে অনুমতি চেয়ে বললেনঃ আস্সালামু আলাইকা ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু আমরা কি ভেতরে আসতে পারি? আয়েশা (রাদি.) বললেনঃ আপনারা ভেতরে আসুন। তাঁরা বললেনঃ আমরা সবাই? তিনি বললেনঃ হাঁ, তোমরা সবাই প্রবেশ কর। তিনি জানতেন না যে, এঁদের সঙ্গে ইবনু যুবায়র (রাদি.) রয়েছেন। তাই যখন তাঁরা ভেতরে প্রবেশ করিলেন, তখন ইবনু যুবায়র (রাদি.) পর্দার ভেতর ঢুকে গেলেন এবং আয়েশা (রাদি.) -কে জড়িয়ে ধরে তাঁকে আল্লাহর কসম দিতে লাগলেন এবং কাঁদতে শুরু করিলেন। তখন মিসওয়ার (রাদি.) ও আবদুর রহমান (রাদি.) ও তাঁকে আল্লাহর কসম দিতে শুরু করিলেন। তখন আয়েশা (রাদি.) ইবনু যুবায়র (রাদি.) -এর সঙ্গে কথা বলিলেন এবং তার ওযর গ্রহন করিলেন। আর তাঁরা বলিতে লাগলেনঃ আপনি তো নিশ্চয়ই জানেন যে, নাবী (সাঃআঃ) সম্পর্ক বর্জন করিতে নিষেধ করিয়াছেন এবং বলেছেনঃ কোন মুসলিমের জন্য তার ভাইয়ের সাথে তিন দিনের বেশি সম্পর্ক ছিন্ন রাখা অবৈধ। যখন তাঁরা আয়েশা (রাদি.) -কে অধিক বুঝাতে ও চাপ দিতে লাগলেন, তখন তিনিও তাদের বুঝাতে ও কাঁদতে লাগলেন এবং বললেনঃ আমি মানৎ করে ফেলেছি। আর মানৎ তো কঠিন ব্যাপার। কিন্তু তাঁরা বারবার চাপ দিতেই থাকলেন, অবশেষে তিনি ইবনু যুবায়র (রাদি.) -এর সাথে কথা বলিলেন এবং তাহাঁর নয্রের জন্য (কাফফারা হিসেবে) চল্লিশ জন গোলাম মুক্ত করে দিলেন। এর পরে, যখনই তিনি তাহাঁর মানতের কথা মনে করিতেন তখন তিনি এত অধিক কাঁদতেন যে, তাহাঁর চোখের পানিতে তাহাঁর ওড়না ভিজে যেত।(আঃপ্রঃ-৫৬৩৭ , ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫৩৩)
৬০৭৪
আয়েশা (রাদি.) -এর বৈপিত্রেয় ভ্রাতুষ্পুত্র আওফ ইবনু মালিক ইবনু তুফায়ল (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আয়েশা (রাদি.) -কে জানানো হলো যে, তাহাঁর কোন বিক্রীর কিংবা দান করা সম্পর্কে আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র বলেছেনঃ আল্লাহর কসম! আয়েশা (রাদি.) অবশ্যই বিরত থাকবেন, নতুবা আমি নিশ্চয়ই তার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করবো। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ সত্যিই কি তিনি এ কথা বলেছেন? তারা বললেনঃ হাঁ।তখন আয়েশা (রাদি.) বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি আমার উপর মানৎ করে নিলাম যে, আমি ইবনু যুবায়রের সাথে আর কখনও কথা বলবো না। যখন এ বর্জনকাল লম্বা হলো, তখন ইবনু যুবায়র (রাদি.) আয়েশা (রাদি.) -এর নিকট সুপারিশ পাঠালেন। তখন তিনি বললেনঃ না, আল্লাহর কসম! এ ব্যাপারে আমি কখনো কোন সুপারিশ গ্রহণ করব না। আর আমার মানৎও ভাঙ্গবো না। এভাবে যখন বিষয়টি ইবনু যুবায়র (রাদি.) -এর জন্য দীর্ঘ হইতে লাগলো, তখন তিনি যহুরা গোত্রের দুব্যক্তি মিসওয়ার ইবন মাখরামাহ ও আবদুর রহমান ইবনু আসওয়াদ ইবনু আবদ ইয়াগুসের সাথে আলোচনা করিলেন। তিনি তাদের দুজনকে বললেনঃ আমি তোমাদের আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি যে, তোমরা দুজন আমাকে আয়েশা (রাদি.) -এর কাছে নিয়ে যাও। কারণ আমার সাথে তাহাঁর বিচ্ছিন্ন থাকার মানৎ জায়িয নয়। তখন মিসওয়ার (রাদি.) ও আবদুর রহমান (রাদি.) উভয়ে চাদর দিয়ে ইবনু যুবায়রকে ঢেকে নিয়ে এলেন এবং উভয়ে আয়েশা (রাদি.) -এর কাছে অনুমতি চেয়ে বললেনঃ আস্সালামু আলাইকা ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু আমরা কি ভেতরে আসতে পারি? আয়েশা (রাদি.) বললেনঃ আপনারা ভেতরে আসুন। তাঁরা বললেনঃ আমরা সবাই? তিনি বললেনঃ হাঁ, তোমরা সবাই প্রবেশ কর। তিনি জানতেন না যে, এঁদের সঙ্গে ইবনু যুবায়র (রাদি.) রয়েছেন। তাই যখন তাঁরা ভেতরে প্রবেশ করিলেন, তখন ইবনু যুবায়র (রাদি.) পর্দার ভেতর ঢুকে গেলেন এবং আয়েশা (রাদি.) -কে জড়িয়ে ধরে তাঁকে আল্লাহর কসম দিতে লাগলেন এবং কাঁদতে শুরু করিলেন। তখন মিসওয়ার (রাদি.) ও আবদুর রহমান (রাদি.) ও তাঁকে আল্লাহর কসম দিতে শুরু করিলেন। তখন আয়েশা (রাদি.) ইবনু যুবায়র (রাদি.) -এর সঙ্গে কথা বলিলেন এবং তার ওযর গ্রহন করিলেন। আর তাঁরা বলিতে লাগলেনঃ আপনি তো নিশ্চয়ই জানেন যে, নাবী (সাঃআঃ) সম্পর্ক বর্জন করিতে নিষেধ করিয়াছেন এবং বলেছেনঃ কোন মুসলিমের জন্য তার ভাইয়ের সাথে তিন দিনের বেশি সম্পর্ক ছিন্ন রাখা অবৈধ। যখন তাঁরা আয়েশা (রাদি.) -কে অধিক বুঝাতে ও চাপ দিতে লাগলেন, তখন তিনিও তাদের বুঝাতে ও কাঁদতে লাগলেন এবং বললেনঃ আমি মানৎ করে ফেলেছি। আর মানৎ তো কঠিন ব্যাপার। কিন্তু তাঁরা বারবার চাপ দিতেই থাকলেন, অবশেষে তিনি ইবনু যুবায়র (রাদি.) -এর সাথে কথা বলিলেন এবং তাহাঁর নয্রের জন্য (কাফফারা হিসেবে) চল্লিশ জন গোলাম মুক্ত করে দিলেন। এর পরে, যখনই তিনি তাহাঁর মানতের কথা মনে করিতেন তখন তিনি এত অধিক কাঁদতেন যে, তাহাঁর চোখের পানিতে তাহাঁর ওড়না ভিজে যেত।(আঃপ্রঃ-৫৬৩৭ , ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫৩৩)
৬০৭৫
আয়েশা (রাদি.) -এর বৈপিত্রেয় ভ্রাতুষ্পুত্র আওফ ইবনু মালিক ইবনু তুফায়ল (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আয়েশা (রাদি.) -কে জানানো হলো যে, তাহাঁর কোন বিক্রীর কিংবা দান করা সম্পর্কে আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র বলেছেনঃ আল্লাহর কসম! আয়েশা (রাদি.) অবশ্যই বিরত থাকবেন, নতুবা আমি নিশ্চয়ই তার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করবো। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ সত্যিই কি তিনি এ কথা বলেছেন? তারা বললেনঃ হাঁ।তখন আয়েশা (রাদি.) বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি আমার উপর মানৎ করে নিলাম যে, আমি ইবনু যুবায়রের সাথে আর কখনও কথা বলবো না। যখন এ বর্জনকাল লম্বা হলো, তখন ইবনু যুবায়র (রাদি.) আয়েশা (রাদি.) -এর নিকট সুপারিশ পাঠালেন। তখন তিনি বললেনঃ না, আল্লাহর কসম! এ ব্যাপারে আমি কখনো কোন সুপারিশ গ্রহণ করব না। আর আমার মানৎও ভাঙ্গবো না। এভাবে যখন বিষয়টি ইবনু যুবায়র (রাদি.) -এর জন্য দীর্ঘ হইতে লাগলো, তখন তিনি যহুরা গোত্রের দুব্যক্তি মিসওয়ার ইবন মাখরামাহ ও আবদুর রহমান ইবনু আসওয়াদ ইবনু আবদ ইয়াগুসের সাথে আলোচনা করিলেন। তিনি তাদের দুজনকে বললেনঃ আমি তোমাদের আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি যে, তোমরা দুজন আমাকে আয়েশা (রাদি.) -এর কাছে নিয়ে যাও। কারণ আমার সাথে তাহাঁর বিচ্ছিন্ন থাকার মানৎ জায়িয নয়। তখন মিসওয়ার (রাদি.) ও আবদুর রহমান (রাদি.) উভয়ে চাদর দিয়ে ইবনু যুবায়রকে ঢেকে নিয়ে এলেন এবং উভয়ে আয়েশা (রাদি.) -এর কাছে অনুমতি চেয়ে বললেনঃ আস্সালামু আলাইকা ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু আমরা কি ভেতরে আসতে পারি? আয়েশা (রাদি.) বললেনঃ আপনারা ভেতরে আসুন। তাঁরা বললেনঃ আমরা সবাই? তিনি বললেনঃ হাঁ, তোমরা সবাই প্রবেশ কর। তিনি জানতেন না যে, এঁদের সঙ্গে ইবনু যুবায়র (রাদি.) রয়েছেন। তাই যখন তাঁরা ভেতরে প্রবেশ করিলেন, তখন ইবনু যুবায়র (রাদি.) পর্দার ভেতর ঢুকে গেলেন এবং আয়েশা (রাদি.) -কে জড়িয়ে ধরে তাঁকে আল্লাহর কসম দিতে লাগলেন এবং কাঁদতে শুরু করিলেন। তখন মিসওয়ার (রাদি.) ও আবদুর রহমান (রাদি.) ও তাঁকে আল্লাহর কসম দিতে শুরু করিলেন। তখন আয়েশা (রাদি.) ইবনু যুবায়র (রাদি.) -এর সঙ্গে কথা বলিলেন এবং তার ওযর গ্রহন করিলেন। আর তাঁরা বলিতে লাগলেনঃ আপনি তো নিশ্চয়ই জানেন যে, নাবী (সাঃআঃ) সম্পর্ক বর্জন করিতে নিষেধ করিয়াছেন এবং বলেছেনঃ কোন মুসলিমের জন্য তার ভাইয়ের সাথে তিন দিনের বেশি সম্পর্ক ছিন্ন রাখা অবৈধ। যখন তাঁরা আয়েশা (রাদি.) -কে অধিক বুঝাতে ও চাপ দিতে লাগলেন, তখন তিনিও তাদের বুঝাতে ও কাঁদতে লাগলেন এবং বললেনঃ আমি মানৎ করে ফেলেছি। আর মানৎ তো কঠিন ব্যাপার। কিন্তু তাঁরা বারবার চাপ দিতেই থাকলেন, অবশেষে তিনি ইবনু যুবায়র (রাদি.) -এর সাথে কথা বলিলেন এবং তাহাঁর নয্রের জন্য (কাফফারা হিসেবে) চল্লিশ জন গোলাম মুক্ত করে দিলেন। এর পরে, যখনই তিনি তাহাঁর মানতের কথা মনে করিতেন তখন তিনি এত অধিক কাঁদতেন যে, তাহাঁর চোখের পানিতে তাহাঁর ওড়না ভিজে যেত।(আঃপ্রঃ-৫৬৩৭ , ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫৩৩)
৬০৭৬
আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন: তোমরা পরস্পর বিদ্বেষ ভাবাপন্ন হয়ো না, হিংসা করো না এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন থেকো না। আর তোমরা সবাই আল্লাহর বান্দা ও পরস্পর ভাই-ভাই হয়ে যাও। কোন মুসলিমের জন্য বৈধ নয় যে, সে তার ভাই থেকে তিন দিনের অধিক সম্পর্ক ছ্ন্নি হয়ে থাকবে।(আঃপ্রঃ- ৫৬৩৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫৩৪)
৬০৭৭
আবু আইউব আনসারী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ কোন লোকের জন্য বৈধ নয় যে, সে তার ভাই-এর সাথে তিন দিনের অধিক এমনভাবে সম্পর্ক ছিন্ন রাখবে যে, দুজনে দেখা হলেও একজন এদিকে আরেকজন ওদিকে মুখ ঘুরিয়ে রাখবে। তাদের মধ্যে যে আগে সালাম দিবে, সেই উত্তম লোক।[৬২৩৭; মুসলিম ৪৫/৮, হাদীস ২৫৬০, আহমাদ ২৩৬৫৪] আঃপ্রঃ- ৫৬৩৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫৩৫)
৭৮/৬৩. অধ্যায়ঃ যে আল্লাহর নাফরমানী করে তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা বৈধ।
কাব ইবনু মালিক (রাদি.) যখন (তাবূক যুদ্ধের সময়) নাবী (সাঃআঃ) -এর পেছনে থেকে গিয়েছিলেন, তখনকার কথা উল্লেখ করে বলেন যে, নাবী (সাঃআঃ) মুসলিমদেরকে আমাদের সাথে কথাবার্তা বলা নিষেধ করে দিয়েছিলেন। তিনি পঞ্চাশ দিনের কথাও উল্লেখ করেন।
৬০৭৮
আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন (একদা) রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ আমি তোমার রাগ ও খুশী উভয়টাই বুঝতে পারি। আয়েশা (রাদি.) বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলামঃ আপনি তা কীভাবে বুঝে নেন, হে আল্লাহর রাসুল! তিনি বললেনঃ যখন তুমি খুশী থাক, তখন তুমি বলঃ হাঁ, মুহম্মাদের প্রতিপালকের শপথ! আর যখন তুমি রাগান্বিত হও, তখন তুমি বলে থাকঃ না, ইবরাহীমের প্রতিপালকের শপথ! আয়েশা (রাদি.) বলিলেন, আমি বললাম, হাঁ। আমিতো কেবল আপনার নামটি পরিহার করি।(আঃপ্রঃ- ৫৬৪০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫৩৬)
Leave a Reply