গোঁফ, নখ, দাড়ি, খিযাব এবং চুল সম্পর্কিত হাদিস

গোঁফ, নখ, দাড়ি, খিযাব এবং চুল সম্পর্কিত হাদিস

গোঁফ, নখ, দাড়ি, খিযাব এবং চুল সম্পর্কিত হাদিস >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

পর্বঃ ৭৭, পোশাক-পরিচ্ছদ, অধ্যায়ঃ (৬৩-৭৭)=১৫টি

৭৭/৬৩. অধ্যায়ঃ গোঁফ ছাটা।
৭৭/৬৪. অধ্যায়ঃ নখ কাটা
৭৭/৬৫. অধ্যায়ঃ দাড়ি বড় রাখা প্রসঙ্গে।
৭৭/৬৬. অধ্যায়ঃ বার্ধক্যকালের (খিযাব লাগান সম্পর্কিত) বর্ণনা।
৭৭/৬৭. অধ্যায়ঃ খিযাব
৭৭/৬৮. অধ্যায়ঃ কোঁকড়ানো চুল প্রসঙ্গে।
৭৭/৬৯. অধ্যায়ঃ মাথার চুলে জট করা।
৭৭/৭০. অধ্যায়ঃ মাথার চুল মাথার মাঝখানে দুভাগে ভাগ করা।
৭৭/৭১. অধ্যায়ঃ চুলের ঝুটি প্রসঙ্গে।
৭৭/৭২. অধ্যায়ঃ কাযা অর্থাৎ মাথার কিছু চুল মুড়ানো ও কিছু অংশে চুল রেখে দেয়া।
৭৭/৭৩. অধ্যায়ঃ স্ত্রী কর্তৃক নিজ হাতে স্বামীকে খুশবু লাগানো।
৭৭/৭৪. অধ্যায়ঃ মাথায় ও দাড়িতে খুশবু লাগানো প্রসঙ্গে।
৭৭/৭৫. অধ্যায়ঃ চিরুনি করা প্রসঙ্গে।
৭৭/৭৬. অধ্যায়ঃ হারাম অবস্থায় স্বামীর মাথা আঁচড়ে দেয়া।
৭৭/৭৭. অধ্যায়ঃ চিরুনী দ্বারা মাথা আঁচড়ানো।

৭৭/৬৩. অধ্যায়ঃ গোঁফ ছাটা।

ইবনু উমার (রাদি.) গোঁফ এত ছোট করিতেন যে, চামড়ার শুভ্রতা দেখা যেত এবং তিনি গোঁফ ও দাড়ির মাঝের পশমও কেটে ফেলতেন।

৫৮৮৮

ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

ইবনু উমার (রাদি.) সূত্রে নাবী (সাঃআঃ) হইতে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ গোঁফ কেটে ফেলা ফিতরাত (স্বভাবের) অন্তর্ভুক্ত।(আঃপ্রঃ- ৫৪৬০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৫৬)

৫৮৮৯

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেনঃ ফিতরাত (অর্থাৎ মানুষের জন্মগত স্বভাব) পাঁচটিঃ খাতনা করা, ক্ষুর ব্যবহার করা (নাভীর নিম্নে), বগলের পশম উপড়ে ফেলা, নখ কাটা ও গোঁফ খাটো করা। [৭] [৫৮৯১, ২৬৯৭; মুসলিম ২/১৬, হাদীস ২৫৭, আহমাদ ৭১৪২] আঃপ্রঃ- ৫৪৬১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৫৭)

[৭] গোঁফ ছোট করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে এগুলো মুখের ভিতর এসে না পড়ে। গোঁফ বেশী দীর্ঘ হলে নাকের এবং বাইরের ময়লা মিশে মুখের ভিতরে ঢোকে। পানি পান করার সময় এবং আহারের সময় গোঁফে আটকানো নাকের ও বাইরের রোগজীবানু ও ময়লাগুলো মুখের ভিতরে প্রবেশ করে নানাবিধ রোগ সৃষ্টি করিতে পারে। তাই ইসলামে গোঁফ লম্বা করে রাখা নিষিদ্ধ। কেননা এটা স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতার বিরোধীও বটে। যথাসময়ে গোঁফ কাটা, গুপ্তস্থানের ক্ষৌরকার্য্য করা, বগলের চুল ছেঁড়া ও নখ কাটা উচিত। ৪০ রাত বা দিন যেন অতিক্রম না করে সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেয়াও উচিত। কারণ রাসুল এগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার নির্ধারণ করিতে গিয়ে বলেছেনঃ ৪০ রাত বা দিন যেন অতিক্রান্ত না হয় (মুসলিম, তিরমিযী, নাসাঈ, আবু দাঊদ, ইবনু মাজাহ ও আহমাদ)

৭৭/৬৪. অধ্যায়ঃ নখ কাটা

৫৮৯০

ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ নাভীর নীচের পশম কামানো, নখ কাটা ও গোঁফ ছোট করা মানুষের স্বভাব। [৮](আঃপ্রঃ- ৫৪৬২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৫৮)

[৮] পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ। ইসলামের মহানাবী (সাঃআঃ) পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে খুবই তাগিদ দিয়েছেন। কোন ঈমানদার ব্যক্তি এমন হইতে পারে না যে, গোসল না করার কারণে তার শরীর থেকে গন্ধ বের হইবে যাতে সকলেই তাকে ঘৃণা করিবে। মুখ পরিষ্কার না করার কারণে মুখ থেকে গন্ধ আসবে, মাথার চুলে জট দেখা দিবে, বড় বড় গোঁফে মুখ ঢেকে যাবে, নখগুলো হইবে হিংস্র জন্তুর মত, সারা দেহে ময়লার স্তুপ জমবে- কোন ঈমানদার ব্যক্তি কক্ষনো এরকম হইতে পারে না। সে হইতে পারে না জটাজটধারী গাঁজার কলকিওয়ালা দুর্গন্ধে ভরপুর ইসলামের আদর্শ বিবর্জিত আশ্রমবাসীর মত।

৫৮৯১

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নাবী (সাঃআঃ) -কে বলিতে শুনিয়াছি- ফিতরাত পাঁচটিঃ খাতনা করা, (নাভীর নীচে) ক্ষুর ব্যবহার করা, গোঁফ ছোট করা, নখ কাটা ও বগলের পশম উপড়ে ফেলা।(আঃপ্রঃ- ৫৪৬৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৫৯)

৫৮৯২

ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

ইবনু উমার (রাদি.) সূত্রে নাবী (সাঃআঃ) হইতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, তোমরা মুশরিকদের উল্টো করবেঃ দাড়ি লম্বা রাখবে, গোঁফ ছোট করিবে।

ইবনু উমার (রাদি.) যখন হাজ্জ বা উমরাহ করিতেন, তখন তিনি তাহাঁর দাড়ি মুষ্টি করে ধরতেন এবং মুষ্টির বাইরে যতটুকু বেশী থাকত, তা কেটে ফেলতেন। [৫৮৯৩; মুসলিম ২/১৬, হাদীস ২৫৯, আহমাদ ৪৬৫৪] আঃপ্রঃ- ৫৪৬৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৬০)

৭৭/৬৫. অধ্যায়ঃ দাড়ি বড় রাখা প্রসঙ্গে।

আফাও অর্থ বর্ধিত করা। তাদের মাল বর্ধিত হয়েছে।

৫৮৯৩

ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমরা গোঁফ অধিক ছোট করিবে এবং দাড়ি ছেড়ে দিবে (বড় রাখবে)।(আঃপ্রঃ- ,৫৪৬৫ ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৬১)

৭৭/৬৬. অধ্যায়ঃ বার্ধক্যকালের (খিযাব লাগান সম্পর্কিত) বর্ণনা।

৫৮৯৪

মুহাম্মাদ ইবনু সীরীন (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আনাস (রাদি.) -কে জিজ্ঞেস করলাম যে, নাবী (সাঃআঃ) কি খিযাব লাগিয়েছেন? তিনি বললেনঃ বার্ধক্য তাঁকে অতি অল্পই পেয়েছিল।(আঃপ্রঃ- ৫৪৬৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৬২)

৫৮৯৫

সাবিত (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আনাস (রাদি.) -কে নাবী সাঃ-এর খিযাব লাগানোর ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হল। তিনি বললেনঃ নাবী (সাঃআঃ) খিযাব লাগানোর অবস্থা পর্যন্ত পৌঁছেননি। আমি তাহাঁর সাদা দাড়িগুলো গুনতে চাইলে, সহজেই গুনতে পারতাম। (আঃপ্রঃ- ৫৪৬৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৬৩)

৫৮৯৬

আবদুল্লাহ ইবনু মাওহাব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমাকে আমার পরিবারের লোকেরা এক পেয়ালা পানিসহ উম্মু সালামাহর কাছে পাঠাল। (উম্মু সালামাহর কাছে রক্ষিত) একটি পানির পাত্র হইতে (আনাসের পুত্র) ইসরাঈল তিনিটি আঙ্গুল দিয়ে কিছু পানি তুলে নিল। ঐ পাত্রের মধ্যে নাবী (সাঃআঃ) -এর কয়েকটি চুল ছিল। কারো চোখ লাগলে কিংবা কোন রোগ দেখা দিলে, উম্মু সালামাহর নিকট হইতে পানি আনার জন্য একটি পাত্র পাঠিয়ে দিত। আমি সে পাত্রের মধ্যে একবার তাকালাম, দেখলাম লাল রং-এর কয়েকটি চুল।(আঃপ্রঃ- ৫৪৬৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৬৪)

৫৮৯৭

আবদুল্লাহ ইবনু মাওহাব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, (একবার) আমি উম্মু সালামাহ (রাদি.) -এর নিকট গেলাম। তখন তিনি নাবী (সাঃআঃ) -এর কয়েকটি চুল বের করিলেন, যাতে খিযাব লাগানো ছিল।(আঃপ্রঃ- ৫৪৬৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৬৫)

৫৮৯৮

আবু নুআয়ম …………. ইবনু মাওহাবের হইতে বর্ণিতঃ

আবু নুআয়ম …………. ইবনু মাওহাবের সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন যে, উম্মু সালামা (রাদি.) তাকে (ইবনু মাওহাবকে) নাবী (সাঃআঃ) -এর লাল রং এর চুল দেখিয়েছেন।(আঃপ্রঃ- ৫৪৬৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৬৫)

৭৭/৬৭. অধ্যায়ঃ খিযাব

৫৮৯৯

আবু হুয়াইরাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ ইয়াহূদ ও নাসারারা (চুল ও দাড়িতে) রং লাগায় না। কাজেই তোমরা তাদের উল্টো কর।(আঃপ্রঃ- ৫৪৭০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৬৬)

৭৭/৬৮. অধ্যায়ঃ কোঁকড়ানো চুল প্রসঙ্গে।

৫৯০০

আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) না অতিরিক্ত লম্বা ছিলেন, না বেটে ছিলেন; না ধবধবে সাদা ছিলেন, আর না ফ্যাকাশে ছিলেন; চুল অতিশয় কোঁকড়ানোও ছিল না, আর সম্পূর্ণ সোজাও ছিল না। চল্লিশ বছর বয়সে আল্লাহ তাঁকে নবুওত দান করেন। এরপর মক্কায় দশ বছর এবং মদিনায় দশ বছর অবস্থান করেন। ষাট বছর বয়সকালে আল্লাহ তাঁকে মৃত্যু দান করেন। এ সময় তাহাঁর মাথায় ও দাড়িতে বিশটি চুলও সাদা হয়নি। [৯](আঃপ্রঃ- ৫৪৭১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৬৭)

[৯] নাবী (সাঃআঃ) এর জন্মের বছর, হিজরাতের বছর ও মৃত্যুর বছরসমূহকে যারা পূর্ণ বছর গননা করিয়াছেন তাদের মতানুযায়ী ৬৩ বছর। এবং যারা পূর্ণ ১২ মাসের বছর না হবার কারণে উক্ত বছরগুলো ছেড়ে দিয়েছেন তাদের মতানুসারে ৬০ বছর। মূলতঃ ৬৩ বছর বয়স পাওয়ার হাদীসের সাথে এ হাদীসের কোন দন্দ্ব নেই।

৫৯০১

বারাআ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, লাল জোড়া কাপড় পরিহিত অবস্থায় নাবী (সাঃআঃ) থেকে অন্য কাউকে আমি অধিক সুন্দর দেখিনি। (ইমাম বুখারী বলেন) আমার জনৈক সঙ্গী মালিক (রাদি.) থেকে বর্ণনা করিয়াছেন যে, নাবী (সাঃআঃ) -এর মাথার চুল প্রায় তাহাঁর কাঁধ পর্যন্ত পৌঁছাত। আবু ইসহাক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেনঃ আমি বারাআ (রাদি.) -কে কয়েকবার এ হাদীস বর্ণনা করিতে শুনিয়াছি। যখনই তিনি এ হাদীস বর্ণনা করিতেন, তখনই হাসতেন। শুবাহ বলেছেনঃ নাবী (সাঃআঃ) -এর চুল তাহাঁর উভয় কানের লতি পর্যন্ত পৌঁছতো।(আঃপ্রঃ- ৫৪৭২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৬৮)

৫৯০২

আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেনঃ আমি এক রাত্রিতে স্বপ্নে কাবা ঘরের সন্নিকটে এক গেরুয়া রঙের পুরুষ লোক দেখিতে পেলাম। এমন সুন্দর গেরুয়া লোক তুমি কখনও দেখনি। তাহাঁর মাথার চুল ছিল কাঁধ পর্যন্ত। কাঁধ পর্যন্ত লম্বা এমন সুন্দর চুল তুমি কখনও দেখনি। লোকটি চুল আঁচড়িয়েছে, আর তাথেকে ফোঁটা ফোঁটা পানি ঝরছে। সে দুজন লোকের উপর ভর দিয়ে কিংবা দুজন লোকের স্কন্ধে ভর করে কাবা ঘর প্রদিক্ষণ করছে। আমি জিজ্ঞেস করলামঃ এ লোকটি কে? জবাব দেওয়া হলঃ ইনি মারিয়ামের পুত্র (ঈসা) মাসীহ! অন্য আরেকজন লোক দেখলাম, যার চুল ছিল খুবই কোঁকড়ান, ডান চোখ টেরা, ফুলে উঠা আঙ্গুর যেন। আমি জিজ্ঞেস করলামঃ এ লোকটি কে? বলা হলঃ ইনি মাসীহ দাজ্জাল।(আঃপ্রঃ- ৫৪৭৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৬৯)

৫৯০৩

আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) -এর মাথার চুল (কখনও) কাঁধ পর্যন্ত লম্বা হতো। [৫৯০৪; মুসলিম ৪৩/২৬, হাদীস ২৩৩৮, আহমাদ ১৩৫৬৫] আঃপ্রঃ- ৫৪৭৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৭০)

৫৯০৪

আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) -এর চুল (কখনও) কাঁধ পর্যন্ত লম্বা হতো।(আঃপ্রঃ- ৫৪৭৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৭১)

৫৯০৫

ক্বাতাদাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) -কে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর চুল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর চুল মধ্যম ধরনের ছিল- না একেবারে সোজা, না বেশী কোঁকড়ানো। আর তা ছিল দুকান ও দুকাঁধের মাঝ পর্যন্ত।(আঃপ্রঃ- ৫৪৭৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৭২)

৫৯০৬

আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর হাত গোশ্‌তে পূর্ণ ছিল। তাহাঁর পরে আমি কোন লোককে এমন দেখিনি। আর নাবী (সাঃআঃ) -এর চুল ছিল মাঝারি রকমের, অধিক কোঁকড়ানোও না, অধিক সোজাও না।(আঃপ্রঃ- ৫৪৭৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৭৩)

৫৯০৭

আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) -এর মাথা ও দুপা ছিল মাংসপূর্ণ। তাহাঁর আগে ও তাহাঁর পরে আমি তাহাঁর মত অপর (কাউকে এত অধিক সুন্দর) দেখিনি। তাহাঁর হাতের তালু ছিল চওড়া।(আঃপ্রঃ- ৫৪৭৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৭৩)

৫৯০৮

আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) -এর দু পা ছিল মাংসপূর্ণ। চেহারা ছিল সুন্দর। আমি তাহাঁর পরে তাহাঁর মত কাউকে দেখিনি।(আঃপ্রঃ- ৫৪৭৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৭৪)

৫৯০৯

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) -এর দু পা ছিল মাংসপূর্ণ। চেহারা ছিল সুন্দর। আমি তাহাঁর পরে তাহাঁর মত কাউকে দেখিনি।(আঃপ্রঃ- ৫৪৭৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৭৪)

৫৯১০

আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেন যে, নাবী (সাঃআঃ) -এর দু পা ও হাতের দু কব্জা গোশ্তবহুল ছিল।(আঃপ্রঃ- ৫৪৭৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৭৪)

৫৯১১

আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) -এর দুটি কব্জি ও দুটি পা গোশতপূর্ণ ছিল। আমি তাহাঁর পরে তাহাঁর মত কাউকে দেখিনি(আঃপ্রঃ- ৫৪৭৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৭৪)

৫৯১২

জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) -এর দুটি কব্জি ও দুটি পা গোশতপূর্ণ ছিল। আমি তাহাঁর পরে তাহাঁর মত কাউকে দেখিনি(আঃপ্রঃ- ৫৪৭৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৭৪)

৫৯১৩

মুজাহিদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা একবার ইবনু আব্বাসের কাছে ছিলাম। তখন লোকজন দাজ্জালের কথা আলোচনা করিল। একজন বললঃ তার দুচোখের মাঝে লেখা থাকবে কাফির।

ইবনু আব্বাস (রাদি.) বললেনঃ আমি এমন কথা রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -কে বলিতে শুনিনি। তবে তিনি বলেছেনঃ তোমরা যদি ইব্রাহিম (আঃ)-কে দেখিতে চাও, তা হলে তোমাদের সঙ্গী নাবী (সাঃআঃ) -এর দিকে তাকাও। আর মূসা (আঃ) হচ্ছেন শ্যাম রঙের মানুষ, কোঁকড়ানো চুলের অধিকারী, নাকে লাগাম পরান লাল বর্ণের উষ্ট্রে আরোহণকারী। আমি যেন তাকেঁ লক্ষ্য করছি তিনি তালবিয়া (লাববাইকা………….) পাঠরত অবস্থায় (মাক্কাহ) উপত্যকায় নামছেন।(আঃপ্রঃ- ৫৪৮০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৭৫)

৭৭/৬৯. অধ্যায়ঃ মাথার চুলে জট করা।

৫৯১৪

আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি উমার (রাদি.) -কে বলিতে শুনিয়াছি- যে লোক চুলে জট পাকায়, সে যেন তা মুড়ে ফেলে। আর তোমরা মাথার চুলে তালবীদকারীদের মত চুলে জট পাকিও না। ইবনু উমার (রাদি.) বলিতেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -কে চুল তালবীদ করা অবস্থায় দেখেছি। [১০](আঃপ্রঃ- ৫৪৮১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৭৬)

[১০] তালবীদ এর অর্থ মাথার চুল কোন আঠাল জিনিস দিয়ে জমিয়ে রাখা, জট করা । বাবরী চুলওয়ালাদের জন্যে ইহরাম অবস্থায় এরূপ করা মুস্তাহাব। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) যে বছর হাজ্জ করেছিলেন সে বছর তাহাঁর মাথার বাবরি ছিল। সে বছর তিনি যাতে চুল বিক্ষিপ্ত না হয় ও উকুন না জন্মে সে জন্য তা করেছিলেন। এতদ্ব্যতীত ইসলামে তালবীদ বা জট পাকাতে নিষেধ করা হয়েছে।

৫৯১৫

ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -কে চুল জট করা অবস্থায় মুহরিম হয়ে উচ্চৈঃস্বরে তালবিয়া পাঠ করিতে শুনিয়াছি। তিনি বলেছেনঃ লাব্বাইকা আমি হাযির, হে আল্লাহ! আমি হাযির, আমি হাযির, আপনার কোন শরীক নেই। আমি হাযির, নিশ্চয়ই প্রশংসা এবং দয়া কেবল আপনারই, আর রাজত্বও। এতে আপনার কোন শরীক নেই। এ শব্দগুলো থেকে বাড়িয়ে তিনি অতিরিক্ত কিছু বলেননি।(আঃপ্রঃ- ৫৪৮২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৭৭)

৫৯১৬

হাফসাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) -এর স্ত্রী হাফসাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি জিজ্ঞেস করলামঃ হে আল্লাহর রাসুল! লোকদের কী হলো, তারা তাদের উমরাহর ইহরাম খুলে ফেলেছে, অথচ আপনি এখন্ও আপনার ইহরাম খুলেননি। তিনি বললেনঃ আমি আমার মাথার চুল জড়ো করে রেখেছি এবং আমার সঙ্গী (অর্থাৎ কুরবানীর পশু)-কে কিলাদাহ [১১] পরিয়েছি। তাই তা যবহ করার আগে আমি ইহরাম খুলব না।(আঃপ্রঃ- ৫৪৮৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৭৮)

[১১] কুরবানীর পশুর গলায় ঝুলানোর জন্য বিশেষ ধরনের মালা ।

৭৭/৭০. অধ্যায়ঃ মাথার চুল মাথার মাঝখানে দুভাগে ভাগ করা।

৫৯১৭

ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) সে সব বিষয়ে আহলে কিতাবের সঙ্গে সামঞ্জস্য করে চলা পছন্দ করিতেন, যে সব বিষয়ে তাঁকে (কুরআনে) কোন সুস্পষ্ট নির্দেশ দেয়া হয়নি। আর আহলে কিতাবরা তাদের চুল ঝুলিয়ে রাখত এবং মুশরিকরা তাদের মাথার চুলে সিঁথি কাটতো। নাবী (সাঃআঃ) তাহাঁর চুল ঝুলিয়েও রাখতেন, সিঁথিও কাটতেন।(আঃপ্রঃ- ৫৪৮৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৭৯)

৫৯১৮

আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ নাবী (সাঃআঃ) মুহরিম অবস্থায় সিঁথিতে যে খুশবু ব্যবহার করিতেন, আমি যেন তাহাঁর ঔজ্জ্বল্য এখনও দেখিতে পাচ্ছি।

আবদুল্লাহ বলেছেন, নাবী (সাঃআঃ) সিঁথিতে অর্থাৎ মাফারিক শব্দের পরিবর্তে তিনি মাফরাক শব্দ বলেছেন।(আঃপ্রঃ- ৫৪৮৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৮০)

৭৭/৭১. অধ্যায়ঃ চুলের ঝুটি প্রসঙ্গে।

৫৯১৯

ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ একবার আমি আমার খালা মাইমূনাহ বিন্ত হারিসের নিকট রাত কাটাচ্ছিলাম। ঐ রাতে রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ -ও তাহাঁর কাছে ছিলেন। ইবনু আববাস বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ উঠে রাতের সালাত আদায় করিতে লাগলেন। আমি তাহাঁর বাম পার্শ্বে গিয়ে দাঁড়ালাম। তখন তিনি আমার চুলের ঝুটি ধরে আমাকে তাহাঁর ডান পাশে নিয়ে দাঁড় করালেন। আঃপ্রঃ- ৫৪৮৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৮১)

আবু বিশর (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) থেকেبِذُؤَابَتِيঅথবা بِرَأْسِي বলে বর্ণনা করিয়াছেন। [১১৭] আঃপ্রঃ- ৫৪৮৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৮২)

৭৭/৭২. অধ্যায়ঃ কাযা অর্থাৎ মাথার কিছু চুল মুড়ানো ও কিছু অংশে চুল রেখে দেয়া।

৫৯২০

ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -কে কাযা থেকে নিষেধ করিতে শুনিয়াছি। রাবী উবাইদুল্লাহ বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলামঃ কাযা কী? তখন আবদুল্লাহ (রাদি.) আমাদের ইঙ্গিতে দেখিয়ে বললেনঃ শিশুদের যখন চুল কামানো হয়, তখন এখানে ওখানে চুল রেখে দেয়। এ কথা বলার সময় উবাইদুল্লাহ তাহাঁর কপাল ও মাথার দুপাশে দেখালেন। উবাইদুল্লাহকে আবার জিজ্ঞেস করা হলঃ বালক ও বালিকার জন্য কি একই নির্দেশ? তিনি বললেনঃ আমি জানি না। এভাবে তিনি বালকের কথা বলেছেন। উবাইদুল্লাহ বলেনঃ আমি এ কথা আবার জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেনঃ পুরুষ শিশুর মাথার সামনের ও পিছনের দিকের চুল কামানো দূষণীয় নয়। আর (অন্য এক ব্যাখ্যা মতে) কাযা বলা হয়- কপালের উপরে কিছু চুল রেখে বাকী মাথার কোথাও চুল না রাখা। তেমনিভাবে মাথার চুল একপাশ থেকে অথবা অপর পাশ থেকে কাটা। [৫৯২১; মুসলিম ৩৭/১৩, হাদীস ২১২০, আহমাদ ৪৪৭৩] আঃপ্রঃ- ৫৪৮৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৮৩)

৫৯২১

ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) কাযা থেকে নিষেধ করিয়াছেন। [৫৯২০; মুসলিম ৩৭/৩১, হাদীস ২১২০, আহমাদ ৪৪৭৩] আঃপ্রঃ- ৫৪৮৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৮৪)

৭৭/৭৩. অধ্যায়ঃ স্ত্রী কর্তৃক নিজ হাতে স্বামীকে খুশবু লাগানো।

৫৯২২

আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নাবী (সাঃআঃ) -কে তাহাঁর মুহরিম অবস্থায় নিজ হাতে খুশবু লাগিয়ে দিয়েছি এবং মিনাতেও সেখান থেকে রওনা হবার আগে তাঁকে আমি খুশবু লাগিয়েছি।(আঃপ্রঃ- ৫৪৯০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৮৫)

৭৭/৭৪. অধ্যায়ঃ মাথায় ও দাড়িতে খুশবু লাগানো প্রসঙ্গে।

৫৯২৩

আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি যত উৎকৃষ্ট খুশবু পেতাম, তা নাবী (সাঃআঃ) -কে লাগিয়ে দিতাম। এমন কি সে খুশবুর ঔজ্জ্বল্য তাহাঁর মাথায় ও দাড়িতে দেখিতে পেতাম।(আঃপ্রঃ- ৫৪৯১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৮৬)

৭৭/৭৫. অধ্যায়ঃ চিরুনি করা প্রসঙ্গে।

৫৯২৪

সাহল ইবনু সাদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

যে, একলোক একটি ছিদ্র দিয়ে নাবী (সাঃআঃ) -এর ঘরে উঁকি মারে। নাবী (সাঃআঃ) তখন চিরুনী দিয়ে মাথা আঁচড়াচ্ছিলেন। তিনি বললেনঃ আমি যদি জানতাম যে, তুমি ছিদ্র দিয়ে তাকিয়ে দেখছ, তা হলে এ (চিরুনী) দিয়ে আমি তোমার চোখ বিঁধিয়ে দিতাম। দৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্যই তো অনুমতি গ্রহণ করার বিধি রাখা হয়েছে।(আঃপ্রঃ- ৫৪৯২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৮৭)

৭৭/৭৬. অধ্যায়ঃ হারাম অবস্থায় স্বামীর মাথা আঁচড়ে দেয়া।

৫৯২৫

আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি হায়িয অবস্থায় রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর মাথা আঁচড়ে দিয়েছি। [২৯৫] (আ.প্র. ৫৪৯৩, ই.ফা. ৫৩৮৮)

হিশাম তার পিতার সূত্রে আয়েশা থেকে অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন।

৭৭/৭৭. অধ্যায়ঃ চিরুনী দ্বারা মাথা আঁচড়ানো।

৫৯২৬

আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

বর্ণিত যে, নাবী (সাঃআঃ) চিরুনী দিয়ে আঁচড়াতে ও অযু করিতে যথাসাধ্য ডান দিক থেকে শুরু করিতে পছন্দ করিতেন।(আঃপ্রঃ- ৫৪৯৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৮৯)

Comments

Leave a Reply