যে সকল প্রাণী খাওয়া হালাল এবং যেসব হারাম
যে সকল প্রাণী খাওয়া হালাল এবং যেসব হারাম >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ৭২, যবেহ ও শিকার করা, অধ্যায়ঃ (১৩-৩৮)=২৬টি
৭২/১৩. অধ্যায়ঃ ফড়িং খাওয়া
৭২/১৪. অধ্যায়ঃ অগ্নিপূজকদের বাসনপত্র ও মৃত জানোয়ার
৭২/১৫. অধ্যায়ঃ যবহের বস্তুর উপর বিসমিল্লাহ বলা এবং ইচ্ছাকৃতভাবে যে বিসমিল্লাহ তরক করে।
৭২/১৬. অধ্যায়ঃ যে জন্তুকে দেব-দেবী ও মূর্তির নামে যবহ করা হয়।
৭২/১৭. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ)-এর ইরশাদঃ আল্লাহর নামে যবহ করিবে।
৭২/১৮. অধ্যায়ঃ যে জিনিস রক্ত প্রবাহিত করে অর্থাৎ বাঁশ, পাথর ও লোহা।
৭২/১৯. অধ্যায়ঃ দাসী ও মহিলার যবহকৃত জন্তু
৭২/২০. অধ্যায়ঃ দাঁত, হাড় ও নখের সাহায্যে যবহ করা যাবে না।
৭২/২১. অধ্যায়ঃ বেদুঈন ও তাদের মত লোকদের যবহকৃত জন্তু।
৭২/২২. অধ্যায়ঃ আহলে কিতাবের যবহকৃত জন্তু ও এর চর্বি। তারা দারুল হারবের লোক হোক কিংবা না হোক।
৭২/২৩. অধ্যায়ঃ যে জন্তু পালিয়ে যায় তার হুকুম বন্য জন্তুর মত।
৭২/২৪. অধ্যায়ঃ নহর ও যবহ করা
৭২/২৫. অধ্যায়ঃ পশুর অঙ্গহানি করা, বেঁধে তীর দ্বারা হত্যা করা ও চাঁদমারি করা মাকরূহ।
৭২/২৬.অধ্যায়ঃ মুরগীর গোশ্ত
৭২/২৭. অধ্যায়ঃ ঘোড়ার গোশ্ত
৭২/২৮. অধ্যায়ঃ গৃহপালিত গাধার গোশ্ত
৭২/২৯. অধ্যায়ঃ গোশ্তভোজী যাবতীয় হিংস্র জন্তু খাওয়া প্রসঙ্গে।
৭২/৩১. অধ্যায়ঃ কস্তুরী
৭২/৩২. অধ্যায়ঃ খরগোশ
৭২/৩৩. অধ্যায়ঃ যব্ব
৭২/৩৪. অধ্যায়ঃ যদি জমাট কিংবা তরল ঘিয়ের মধ্যে ইঁদুর পড়ে
৭২/৩৫. অধ্যায়ঃ পশুর মুখে চিহ্ন লাগানো ও দাগানো
৭২/৩৬. অধ্যায়ঃ কোন দল মালে গনিমত লাভ করার পর যদি তাদের কেউ সাথীদের অনুমতি ব্যাতীত কোন বক্রী কিংবা উট যবহ করে ফেলে, তাহলে নাবী (সাঃআঃ) হইতে বর্ণিত রাফি (রাদি.) এর হাদীস অনুসারে সেই গোশ্ত খাওয়া যাবে না।
৭২/৩৭. অধ্যায়ঃ কোন দলের উট ছুটে গেলে তাদের কেউ যদি সেটিকে তাদের উপকারের নিয়্যাতে তীর ছুঁড়ে মারে এবং হত্যা করে, তাহলে রাফি (রাদি.) হইতে বর্ণিত নাবী করীম (সাঃ) এর হাদীস অনুযায়ী তা জায়েজ
৭২/৩৮. অধ্যায়ঃ নিরুপায় ব্যক্তির খাওয়া
৭২/১৩. অধ্যায়ঃ ফড়িং খাওয়া
৫৪৯৫
ইবনু আবু আওফা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমরা নাবী (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে সাতটি কিংবা ছয়টি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। আমরা তাহাঁর সঙ্গে ফড়িংও খাই। সুফ্ইয়ান, আবু আওয়ানা ও ইসরাঈল এরা আবু ইয়াফূর ইবনু আওফার সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন সাতটি যুদ্ধে।
৭২/১৪. অধ্যায়ঃ অগ্নিপূজকদের বাসনপত্র ও মৃত জানোয়ার
৫৪৯৬
আবু সালাবা খুশানী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী (সাঃআঃ)-এর কাছে এসে বললামঃ হে আল্লাহর রাসুল! আমরা আহলে কিতাবের এলাকায় বাস করি, তাদের পাত্রে খাই এবং আমরা শিকারের এলাকায় বাস করি, তীর ধনুকের সাহায্যে শিকার করি এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর ও প্রশিক্ষণবিহীন কুকুরের সাহায্যে শিকার করি। নাবী বললেনঃ তুমি যে বললে তোমরা আহলে কিতাবের ভূখন্ডে থাক, অপারগ না হলে তাদের বাসনপত্রে খেও না, যদি কোন উপায় না পাও তাহলে সেগুলো ধুয়ে তাতে খেয়ো। আর তুমি যে বললে, তোমরা শিকারের এলাকায় বাস কর, যদি তোমার তীরের দ্বারা যা শিকার করিতে চাও, সেখানে আল্লাহর নাম নাও এবং খাও। আর তুমি যা তোমার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুরের দ্বারা শিকার কর, সেখানে আল্লাহর নাম নাও এবং খাও। আর তুমি যা শিকার কর তোমার প্রশিক্ষণবিহীন কুকুরের দ্বারা এবং যবহ করিতে পার তবে তা যবহ করে খাও।(আঃপ্রঃ- ৫০৯০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৮৭)
৫৪৯৭
সালামাহ ইবনু আকওয়া (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, খাইবার বিজয়ের দিন সন্ধ্যায় মুসলিমগণ আগুন জ্বালালেন। নাবী (সাঃআঃ) জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমরা কি জন্য এ সব আগুন জ্বালিয়েছ? তারা বললঃ গৃহপালিত গাধার গোশ্ত। তিনি বললেনঃ হাঁড়ির সব কিছু ফেলে দাও এবং হাঁড়িগুলো ভেঙ্গে ফেল। দলের একজন দাঁড়িয়ে বললঃ হাঁড়ির সব কিছু ফেলে দেই এবং হাঁড়িগুলো ধুয়ে নেই। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ তাও করিতে পার।(আঃপ্রঃ- ৫০৯১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৮৮)
৭২/১৫. অধ্যায়ঃ যবহের বস্তুর উপর বিসমিল্লাহ বলা এবং ইচ্ছাকৃতভাবে যে বিসমিল্লাহ তরক করে।
ইবনু আব্বাস (রাদি.) বলেছেনঃ কেউ বিসমিল্লাহ বলিতে ভুলে গেলে তাতে কোন দোষ নেই। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেনঃ “যাতে (যবহ করার সময়) আল্লাহর নাম নেওয়া হয়নি তা তোমরা মোটেই খাবে না, তা হচ্ছে পাপাচার”- (সুরা আল-আনআম ৬/১২১)।. আর যে ব্যক্তি বিসমিল্লাহ বলিতে ভুলে যায়, তাঁকে ফাসিক্ব (গুনাহগার) বলা যায় না। আল্লাহ আরো ইরশাদ করেনঃ শায়ত্বনেরা তাদের বন্ধুদেরকে তোমাদের সঙ্গে তর্ক-ঝগড়া করার জন্য প্ররোচিত করে…..(সুরা আল-আনআম ৬/১২১) (শেষ পর্যন্ত)।
৫৪৯৮
রাফি ইবনু খাদীজ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমরা নাবী (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে যুল হুলাইফায় ছিলাম। লোকজন ক্ষুধার্ত হয়ে যায়। তখন আমরা কিছু সংখ্যক উট ও বুকরী (গনীমত হিসেবে) লাভ করি। নাবী (সাঃআঃ) ছিলেন সকলের পেছনে। সবাই তাড়াতাড়ি করিল এবং হাঁড়ি চড়িয়ে দিল। নাবী (সাঃআঃ) তাদের কাছে এসে পৌঁছালেন। তখন তিনি হাঁড়িগুলো ঢেকে দিতে নির্দেশ দিলেন। হাঁড়িগুলো ঢেকে দেয়া হল। তারপর তিনি (প্রাপ্ত গানীমাত) বন্টন করিলেন। দশটি বকরী একটি উটের সমান গণ্য করিলেন। এ সময়ে একটি উট পালিয়ে গেল। দলে অশ্বারোহীর সংখ্যা ছিল খুব কম। তারা উটটির পেছনে ছুটল কিন্তু তারা সেটি কাবু করিতে অসমর্থ হল। অবশেষে একজন উটটির প্রতি তীর ছুঁড়লে আল্লাহ উটটিকে থামিয়ে দিলেন। তখন নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ এ সকল চতুষ্পদ প্রাণির মধ্যে বন্য জন্তুর মত পালিয়ে যাবার স্বভাব আছে। কাজেই যখন কোন প্রাণী তোমাদের থেকে পালিয়ে যায়, তখন তার সঙ্গে তোমরা তেমনই ব্যবহার করিবে। বর্ণনাকারী বলেন, আমার দাদা বলেছেন, আমরা আশা করছিলাম কিংবা তিনি বলেছেন, আমরা আশঙ্কা করছিলাম যে, আগামীকাল আমরা শত্রুদের সম্মুখীন হইতে পারি। অথচ আমাদের নিকট কোন ছুরি নেই। তাহলে আমরা কি বাঁশের (রাখারী) দিয়ে যবহ করব? নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ যে জিনিস রক্ত প্রবাহিত করে দেয় এবং তাতে বিসমিল্লাহ বলা হয় তা খাও। তবে দাঁত ও নখ দিয়ে নয়। এ সম্পর্কে আমি তোমাদের জ্ঞাত করছি যে, দাঁত হল হাড় বিশেষ, আর নখ হল হাবশী সম্প্রদায়ের ছুরি।(আঃপ্রঃ- ৫০৯২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৮৯)
৭২/১৬. অধ্যায়ঃ যে জন্তুকে দেব-দেবী ও মূর্তির নামে যবহ করা হয়।
৫৪৯৯
“আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাদি.) রসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বালদাহর নিম্নাঞ্চলে যায়দ ইবনু আমর ইবনু নাবীইলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এটি ছিল রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর উপর অহী অবতীর্ণ হবার পূর্বের ঘটনা। তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর সামনে দস্তরখান বিছানো হল। তাতে গোশ্ত ছিল। তখন যায়দ ইবনু আমর তা থেকে খেতে অস্বীকার করিলেন। তারপর তিনি বললেনঃ তোমরা তোমাদের দেব-দেবীর নামে যা যবহ কর, তা থেকে আমি খাই না। আমি কেবল খাই যা আল্লাহর নামে যবহ করা হয়েছে।(আঃপ্রঃ- ৫০৯৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৯০)
৭২/১৭. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ)-এর ইরশাদঃ আল্লাহর নামে যবহ করিবে।
৫৫০০
জুনদুব ইবনু সুফ্ইয়ান বাজালী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার আমরা রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে কুরবানী পালন করলাম। তখন কতক লোক সলাতের পূর্বেই তাদের কুরবানীর পশুগুলো যবহ করে নিয়েছিল। নাবী (সাঃআঃ) সলাত থেকে ফিরে যখন দেখলেন, তখন সলাতের পুর্বেই যবহ করে ফেলেছে, তখন তিনি বললেনঃ যে ব্যক্তি সলাতের পূর্বে যবহ করেছে, সে যেন তার বদলে আরেকটি যবহ করে নেয়। আর যে ব্যক্তি আমাদের সলাত আদায় করা পর্যন্ত যবহ করেনি, সে যেন এখন আল্লাহর নাম নিয়ে যবহ করে।(আঃপ্রঃ- ৫০৯৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৯১)
৭২/১৮. অধ্যায়ঃ যে জিনিস রক্ত প্রবাহিত করে অর্থাৎ বাঁশ, পাথর ও লোহা।
৫৫০১
ইবনু কাব ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি ইবনু উমার (রাদি.)-কে জানিয়েছেন যে, তাহাঁর পিতা (কাব) তাকে বলেছেনঃ তাঁদের একটি দাসী সালা নামক স্থানে বক্রী চরাত। সে দেখিতে পেল, পালের একটি বক্রী মারা যাচ্ছে। সে একটি পাথর ভেঙ্গে তা দিয়ে সেটি যবহ করিল। তখন তিনি (কাব) পরিবারের লোকজনকে বললেনঃ আমি নাবী (সাঃআঃ)-এর কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করে আসার পূর্বে তোমরা তা খেয়ো না। অথবা তিনি বলেছেনঃ আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করার জন্য কাউকে পাঠিয়ে জেনে নেয়ার আগে তোমরা তা খেয়ো না। এরপর তিনি নাবী (সাঃআঃ)-এর কাছে এলেন অথবা তিনি কাউকে তাহাঁর নিকট পাঠালেন তখন নাবী (সাঃআঃ) সেটি খেতে আদেশ দিলেন।(আঃপ্রঃ- ৫০৯৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৯২)
৫৫০২
আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন যে, কাব ইবনু মালিকের একটি দাসী বাজারের কাছে অবস্থিত সালা নামক ছোট পর্বতের উপর তার বক্রী চরাত। তাত্থেকে একটি বক্রী মরার উপক্রম হল। সে এটিকে ধরল এবং পাথর ভেঙ্গে তা দিয়ে সেটিকে যবহ করে। তখন লোকজন নাবী (সাঃআঃ)-এর নিকট ঘটনাবলী উল্লেখ করলে তিনি তাদের তা খাওয়ার অনুমতি দিলেন।(আঃপ্রঃ- ৫০৯৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৯৩)
৫৫০৩
রাফি(রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ হে আল্লাহর রাসুল! আমাদের কাছে কোন ছুরি নেই। নাবী (সাঃআঃ) উত্তর দিলেনঃ যে জিনিস রক্ত প্রবাহিত করে এবং যার উপর আল্লাহর নাম নেওয়া হয়, তা খাও। তবে দাঁত ও নখ দিয়ে নয়। নখ হল হাবশীদের ছুরি আর দাঁত হল হাড়। তখন একটি উট পালিয়ে গেল। তীর নিক্ষেপ করে সেটিকে আটকানো হল। তখন নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ এ সকল উটের মধ্যে বুনো জানোয়ারের মত পালিয়ে যাবার অভ্যাস আছে। কাজেই তাত্থেকে কোনটি যদি তোমাদের আয়ত্বের বাইরে চলে যায়, তাহলে তার সঙ্গে তেমন ব্যবহার কর।(আঃপ্রঃ- ৫০৯৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৯৪)
৭২/১৯. অধ্যায়ঃ দাসী ও মহিলার যবহকৃত জন্তু
৫৫০৪
কাব ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
এক নারী পাথরের সাহায্যে একটি বক্রী যবহ করেছিল। এ ব্যাপারে নাবী (সাঃআঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি সেটি খাওয়ার নির্দেশ দেন।
লায়স (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) নাফি (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) সূত্রে বলেনঃ তিনি এক আনসারকে নাবী (সাঃআঃ) থেকে আবদুল্লাহ সম্পর্কে বলিতে শুনেছেন যে, কাব (রাদি.)-এর একটি দাসী…….। পরবর্তী অংশ উক্ত হাদীসের মতই।(আঃপ্রঃ- ৫০৯৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৯৫)
৫৫০৫
এক আনসারী থেকে তিনি মুআয ইবনু সাদ কিংবা সাদা ইবনু মুআয (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
কাব ইবনু মালিক (রাদি.)-এর একটি দাসী সালা পর্বতে বক্রী চরাত। বক্রীগুলোর মধ্যে একটিকে মরার উপক্রম দেখে সে একটি পাথর দ্বারা সেটিকে যবহ করিল। এ ব্যাপারে নাবী (সাঃআঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হল। তিনি বললেনঃ সেটি খাও।(আঃপ্রঃ- ৫০৯৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৯৬)
৭২/২০. অধ্যায়ঃ দাঁত, হাড় ও নখের সাহায্যে যবহ করা যাবে না।
৫৫০৬
রাফি ইবনু খাদীজ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ খাও অর্থাৎ যা রক্ত প্রবাহিত করে (তা দিয়ে যবেহ করে) তবে দাঁত ও নখ দিয়ে নয়।(আঃপ্রঃ- ৫১০০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৯৭)
৭২/২১. অধ্যায়ঃ বেদুঈন ও তাদের মত লোকদের যবহকৃত জন্তু।
৫৫০৭
আয়েশাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদল লোক নাবী (সাঃআঃ)-কে বলিল কতক লোক আমাদের নিকট গোশ্ত নিয়ে আসে। আমরা জানি না যে, পশু যবহের সময় বিসমিল্লাহ বলা হয়েছিল কিনা। তখন নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ তোমারাই এর উপর বিসমিল্লাহ পড় এবং তা খাও। আয়েশাহ (রাদি.) বলেনঃ প্রশ্নকারী দলটি ছিল কুফর থেকে নতুন ইসলাম গ্রহণকারী। ইমাম বুখারী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেনঃ দারাওয়ারদী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) আলী (রাদি.) থেকে একই রকম বর্ণনা করিয়াছেন। আবু খালিদ ও তুফাবী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) এরকমই বর্ণনা করিয়াছেন।আঃপ্রঃ- ৫১০১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৯৮)
৭২/২২. অধ্যায়ঃ আহলে কিতাবের যবহকৃত জন্তু ও এর চর্বি। তারা দারুল হারবের লোক হোক কিংবা না হোক।
মহান আল্লাহর ইরশাদঃ আজ তোমাদের জন্য যাবতীয় ভাল ও পবিত্র বস্তু হালাল করা হল আর যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের খাদ্য তোমাদের জন্য হালাল, আর তোমাদের খাদ্য তাদের জন্য হালাল- (আল-মায়িদাহ ৫/৫)।
যুহরী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেছেনঃ আরব অঞ্চলের খৃস্টানদের যবহকৃত পশুতে কোন দোষ নেই। তবে তুমি যদি তাকে গায়রুল্লাহর নাম পড়তে শোন, তাহলে খেয়ো না। আর যদি না শুনে থাক, তাহলে মনে রেখ যে, আল্লাহ তাদের কুফুরীকে জেনে নেয়ার পরেও অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। হাসান ও ইবরাহীম বলেছেনঃ খাতনাবিহীন লোকের যবাহকৃত পশুতে কোন দোষ নেই। ইবনু আব্বাস (রাদি.) বলেছেন, তাদের খাবার অর্থ তাদের যবহকৃত।
৫৫০৮
আব্দুল্লাহ ইবনু মুগাফ্ফাল (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা খায়বরের একটি কিল্লা অবরোধ করে রেখেছিলাম। এমন সময়ে এক লোক চর্বি ভর্তি একটি থলে ছুঁড়ে মারল। আমি সেটি উঠিয়ে নেয়ার জন্য ছুটে গেলাম। ঘুরে তাকিয়ে দেখি নাবী (সাঃআঃ)। তাঁকে দেখে আমি লজ্জিত হলাম।(আঃপ্রঃ- ৫১০২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৯৯)
৭২/২৩. অধ্যায়ঃ যে জন্তু পালিয়ে যায় তার হুকুম বন্য জন্তুর মত।
ইবনু মাসউদ (রাদি.)-ও এ ফতোয়া দিয়েছেন। ইবনু আব্বাস (রাদি.) বলেছেনঃ তোমার অধীনস্থ যে জন্তু তোমাকে অপরাগ করে দেয়, সে শিকারের ন্যায়। যে উট কুয়ার মধ্যে পড়ে যায় তার যে জায়গায় তোমার পক্ষে সম্ভব হয়, আঘাত (যবহ) কর। আলী ইবনু উমার এবং আয়েশাহ-ও এটাই মত।
৫৫০৯
আমর ইবনু আলী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) রাফি ইবনু খাদীজ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসুল! আমরা আগামী দিন শত্রুর সম্মুখীন হব, অথচ আমাদের কাছে কোন ছুরি নেই। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ তুমি ত্বরান্বিত করিবে কিংবা তিনি বলেছেনঃ জলদি (যবহ) করিবে। যা রক্ত প্রবাহিত করে এবং আল্লাহর নাম নেয়া হয়, তা খাও। তবে দাঁত ও নখ দ্বারা নয়। তোমাকে বলছিঃ দাঁত হল হাড় আর নখ হল হাবশীদের ছুরি। আমরা কিছু উট ও বক্রী গনীমত হিসাবে পেলাম। সেগুলো থেকে একটি উট পালিয়ে যায়। একজন সেটির উপর তীর নিক্ষেপ করলে আল্লাহ উটটি আটকিয়ে দেন। তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ এ সব গৃহপালিত উটের মধ্যে বন্য পশুর স্বভাব আছে। কাজেই তা থেকে কোনটি যদি তোমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তা হলে তার সঙ্গে এরকমই ব্যবহার করিবে। (আঃপ্রঃ- ৫১০৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০০১)
৭২/২৪. অধ্যায়ঃ নহর ও যবহ করা
আত্বা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) এর উদ্ধৃতি দিয়ে ইবনু জুরাইজ বলেছেনঃ গলা বা সিনা ব্যতীত যবহ কিংবা নহর করা যায় না। [আত্বা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন] আমি বললামঃ যে জন্তুকে যবহ করা হয় সেটাকে আমি যদি নহর করি, তাহলে যথেষ্ট হইবে কি? তিনি বললেনঃ হাঁ। কেননা, আল্লাহ তাআলা গরুকে যবহ করার কথা উল্লেখ করিয়াছেন। কাজেই যে জন্তুকে নহর করা হয়, তা যদি তুমি যবহ কর, তবে তা জায়িয। অবশ্য আমার নিকট নহর করাই অধিক পছন্দনীয়। যবহ অর্থ হল রগগুলোকে কেটে দেয়া। আমি বললামঃ তাহলে কিছু রগকে অবশিষ্ট রাখতে হইবে যেন হাতের ভিতরের সাদা রগ কাটা না যায়। তিনি বললেনঃ আমি তা মনে করি না। তিনি বললেনঃ নাফি (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) আমাকে জানিয়েছেন, ইবনু উমার (রাদি.) নাখ থেকে নিষেধ করিয়াছেন। তিনি বলেনঃ নাখ হল হাড়ের ভিতরের সাদা রগ কেটে দেয়া এবং তারপর ছেড়ে দেয়া, যাতে জন্তুটি মারা যায়। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেনঃ “স্মরণ কর, যখন মূসা (আঃ) স্বীয় সম্প্রদায়কে বলেছিল, আল্লাহ তোমাদেরকে একটা গরু যবহ করার আদেশ দিচ্ছেন…… তারা তাকে যবহ করিল যদিও তাদের জন্য সেটা প্রায় অসম্ভব ছিল” -(সুরা আল-বাকারাহ ২/৬৭-৭১)। সাঈদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ইবনু আব্বাস (রাদি.) থেকে বর্ণনা করেনঃ গলা ও সিনার মধ্যে যবহ করাকে যবহ বলে। ইবনু উমার ইবনু আব্বাস ও আনাস (রাদি.) বলেনঃ যদি মাথা কেটে ফেলে তাতে দোষ নেই।
৫৫১০
আসমা বিনত আবু বাক্র (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর আমলে আমরা একটি ঘোড়া নহর করে সেটা খেয়েছি। [৫৫১১, ৫৫১২, ৫৫১৯; মুসলিম ৩৪/৬, হাদীস ১৯৪২, আহমাদ ২৬৯৮৫] আঃপ্রঃ- ৫১০৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০০১)
৫৫১১
আসমা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর আমলে আমরা একটি ঘোড়া যবহ করেছি। তখন আমরা মদীনায় থাকতাম। পরে আমরা সেটি খেয়েছি।(আঃপ্রঃ- ৫১০৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০০২)
৫৫১২
আসমা বিনত আবু বাক্র হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর আমলে আমরা একটি ঘোড়া নহর করেছি। এরপর তা খেয়েছি। নহর কথাটির বর্ণনা এ সঙ্গে হিশামের সূত্র দিয়ে ওয়াকী ও ইবনু উয়াইনাহ এ রকমই বর্ণনা করিয়াছেন। [৫৫১০; মুসলিম ৩৪/৬, হাদীস ১৯৪২, আহমাদ ২৬৯৮৫] আঃপ্রঃ- ৫১০৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০০৩)
৭২/২৫. অধ্যায়ঃ পশুর অঙ্গহানি করা, বেঁধে তীর দ্বারা হত্যা করা ও চাঁদমারি করা মাকরূহ।
৫৫১৩
হিশাম ইবনু যায়দ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি আনাস (রাদি.)-এর সঙ্গে হাকাম ইবনু আইয়ূবের কাছে গেলাম। তখন আনাস (রাদি.) দেখলেন, কয়েকটি বালক কিংবা বর্ণনাকারী বলেছেন, কয়েকজন তরুণ একটি মুরগী বেঁধে তার দিকে তীর ছুঁড়ছে। আনাস (রাদি.) বললেনঃ নাবী (সাঃআঃ) জীবজন্তুকে বেঁধে এভাবে তীর ছুঁড়তে নিষেধ করিয়াছেন। [মুসলিম ৩৪/১২, হাদীস ১৯৫৬, আহমাদ ১২১৬২] আঃপ্রঃ- ৫১০৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০০৪)
৫৫১৪
ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদের কাছে গিয়েছিলেন। এ সময় ইয়াহইয়া পরিবারের একটি বালক একটি মুরগীকে বেঁধে তার দিকে তীর ছুঁড়ছিল। ইবনু উমার (রাদি.) মুরগীটির দিকে এগিয়ে গিয়ে সেটি মুক্ত করে দিলেন। তারপর মুরগী ও বালকটিকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে গিয়ে বলিলেন, হত্যার উদ্দেশ্যে এভাবে বেঁধে পাখি মারতে তোমরা তোমাদের বালকদের বাধা দিও। কেননা, আমি নাবী (সাঃআঃ) থেকে শুনেছিঃ তিনি হত্যার উদ্দেশ্যে জন্তু জানোয়ার বেঁধে তীর নিক্ষেপ করিতে নিষেধ করিয়াছেন।[মুসলিম ৩৪/১২, হাদীস ১৯৫৭, ১৯৫৮] আঃপ্রঃ- ৫১০৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০০৫)
৫৫১৫
সাঈদ ইবনু যুবায়র (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বললেনঃ আমি ইবনু উমার (রাদি.)-এর কাছে ছিলাম। এরপর আমরা একদল তরুণ কিংবা তিনি বলেছেন, একদল মানুষের কাছ দিয়ে যাবার সময় দেখলাম, তারা একটি মুরগী বেঁধে তার দিকে তীর ছুঁড়ছে। তারা যখন ইবনু উমার (রাদি.)-কে দেখিতে পেল, তখন তারা তা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। ইবনু উমার (রাদি.) বললেনঃ এ কাজ কে করেছে? এ কাজ যে করে নাবী (সাঃআঃ) তাহাঁর উপর অভিশাপ দিয়েছেন।
শুবাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) থেকে সুলাইমান এ রকমই বর্ণনা করিয়াছেন। মিনহাল ইবনু উমার -এর সূত্রে বলেন, যে ব্যক্তি জীব-জন্তুর অঙ্গহানি করে তাকে নাবী (সাঃআঃ) লানাত করিয়াছেন। আঃপ্রঃ- ৫১০৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০০৬)
৫৫১৬
আব্দুল্লাহ ইবনু ইয়াযীদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) লুটতরাজ ও অঙ্গহানি করিতে নিষেধ করিয়াছেন।(আঃপ্রঃ- ৫১১০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০০৭)
৭২/২৬.অধ্যায়ঃ মুরগীর গোশ্ত
৫৫১৭
আবু মূসা আশআরী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী (সাঃআঃ)-কে মুরগীর গোশ্ত খেতে দেখেছি।(আঃপ্রঃ- ৫১১১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০০৮)
৫৫১৮
আবু মামার (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)… যাহদাম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা আবু মূসা আশআরী (রাদি.)-এর কাছে ছিলাম। জারমের এ গোত্র ও আমাদের মাঝে ভ্রাতৃত্ব ছিল। আমাদের কাছে খাদ্য আনা হল। তাতে ছিল মোরগের গোশ্ত। দলের মধ্যে লাল রংয়ের এক ব্যক্তি বসা ছিল। সে খাবারের কাছে গেল না। আবু মূসা আশআরী (রাদি.) তখন বললেনঃ এগিয়ে এসো, আমি নাবী (সাঃআঃ)-কে মোরগের গোশ্ত খেতে দেখেছি। সে বললঃ আমি এটিকে এমন কিছু খেতে দেখেছি, যে কারণে তা খেতে আমি অপছন্দ করি। তখন আমি কসম করেছি যে, আমি তা খাব না। তিনি বললেনঃ এগিয়ে এসো, আমি তোমাকে জানাব, কিংবা তিনি বলিলেন, আমি তোমাদের কাছে হাদীস বর্ণনা করব। আমি আশআরীদের একদলসহ রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর নিকট এলাম। এরপর আমি তাহাঁর সামনে এসে হাজির হই যখন তিনি ছিলেন ক্রোধান্বিত। তখন তিনি বন্টন করছিলেন সদাকাহর কিছু জানোয়ার। আমরা তাহাঁর কাছে সাওয়ারী চাইলাম। তখন তিনি কসম করে বললেনঃ আমাদের কোন সাওয়ারী দেবেন না এবং বললেনঃ তোমাদেরকে সাওয়ারীর জন্য দিতে পারি এমন কোন পশু আমার কাছে নেই। তারপর রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর নিকট গনীমতের কিছু উট আনা হল। তিনি বললেনঃ আশআরীগণ কোথায়? আশআরীগণ কোথায়? আবু মূসা আশআরী (রাদি.) বলেনঃ এরপর তিনি আমাদের সাদা চূড়ওয়ালা বলিষ্ঠ পাঁচটি উট দিলেন। আমরা কিছু দূরে গিয়ে অবস্থান করলাম। তখন আমি আমার সাথীদের বললামঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাহাঁর কসমের কথা ভুলে গিয়েছিলেন। আল্লাহর কসম! যদি আমরা রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে তাহাঁর কসমের ব্যাপারে গাফিল রাখি, তাহলে আমরা কোন দিন সফলকাম হব না। তাই আমরা নাবী (সাঃআঃ)-এর কাছে ফিরে গেলাম। তাঁকে বললামঃ হে আল্লাহর রাসুল! আমরা আপনার নিকট সাওয়ারী চেয়েছিলাম, তখন আপনি আমাদের সাওয়ারী দেবেন না বলে শপথ করেছিলেন। আমাদের মনে হয়, আপনি আপনার শপথের কথা ভুলে গেছেন। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ আল্লাহ নিজেই তো আমাদের সাওয়ারীর জানোয়ার দিয়েছেন। আল্লাহর কসম, আমি যখন কোন বিষয়ে শপথ করি, এরপর শপথের বিপরীত কাজ অধিক কল্যাণকর মনে করি, তখন আমি কল্যাণকর কাজটিই করি এবং কাফ্ফারা দিয়ে হালাল হয়ে যাই।(আঃপ্রঃ- ৫১১২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০০৮)
৭২/২৭. অধ্যায়ঃ ঘোড়ার গোশ্ত
৫৫১৯
আসমা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর যুগে আমরা একটি ঘোড়া নহর করলাম এবং সেটি খেলাম।(আঃপ্রঃ- ৫১১৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০০৯)
৫৫২০
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ খাইবারের দিনে নাবী (সাঃআঃ) গাধার গোশ্ত খেতে নিষেধ করিয়াছেন। আর ঘোড়ার গোশ্তের ব্যাপারে তিনি অনুমতি প্রদান করিয়াছেন।(আঃপ্রঃ- ৫১১৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০১০)
৭২/২৮. অধ্যায়ঃ গৃহপালিত গাধার গোশ্ত
এ ব্যাপারে নাবী থেকে সালামাহ (রাদি.) বর্ণিত হাদীস আছে।
৫৫২১
ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
খাইবারের দিন নাবী (সাঃআঃ) গৃহপালিত গাধার গোশ্ত খেতে নিষেধ করিয়াছেন।(আঃপ্রঃ- ৫১১৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০১১)
৫৫২২
আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) গৃহপালিত গাধার গোশ্ত খেতে নিষেধ করিয়াছেন। ইবনু মুবারক, উবাইদুল্লাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) সূত্রে নাফি থেকে এ রকমই বর্ণনা করিয়াছেন। উবাইদুল্লাহ সালিম সূত্রে আবু উসামাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) এ রকমই বর্ণনা করিয়াছেন।(আঃপ্রঃ- ৫১১৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০১২)
৫৫২৩
আলী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, খাইবারের বছর নাবী (সাঃআঃ) মুতআ (স্বল্পকালীন বিয়ে) থেকে এবং গৃহপালিত গাধার গোশ্ত খেতে নিষেধ করিয়াছেন। (আঃপ্রঃ- ৫১১৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০১৩)
৫৫২৪
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ খাইবারের দিন নাবী (সাঃআঃ) গাধার গোশ্ত খেতে নিষেধ করিয়াছেন। তবে ঘোড়ার গোশ্ত খেতে অনুমতি প্রদান করিয়াছেন।(আঃপ্রঃ- ৫১১৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০১৪)
৫৫২৫
বারাআ ও ইবনু আবু আওফা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তাঁরা বলেনঃ নাবী (সাঃআঃ) গাধার গোশ্ত খেতে নিষেধ করিয়াছেন।(আঃপ্রঃ- ৫১১৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০১৫)
৫৫২৬
বারাআ ও ইবনু আবু আওফা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তাঁরা বলেনঃ নাবী (সাঃআঃ) গাধার গোশ্ত খেতে নিষেধ করিয়াছেন। (আঃপ্রঃ- ৫১১৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০১৫)
৫৫২৭
আবু সালাবা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) গৃহপালিত গাধার গোশ্ত খাওয়া হারাম করিয়াছেন। ইবনু শিহাব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) থেকে যুবাইদী ও উকাইল এ রকমই বর্ণনা করিয়াছেন।
যুহরীর বরাত দিয়ে মালিক, মামার, মাজিশুন, ইউনুস ও ইবনু ইসহাক বলেছেন যে, নাবী (সাঃআঃ) দাঁতওয়ালা যাবতীয় হিংস্র জন্তু খেতে নিষেধ করিয়াছেন।[মুসলিম ৩৪/৫, হাদীস ১৯৩২, আহমাদ] আঃপ্রঃ- ৫১২০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০১৬)
৫৫২৮
আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর কাছে এক আগন্তুক এসে বললঃ গাধাগুলো খেয়ে ফেলা হচ্ছে। তারপর আরেক আগন্তুক এসে বললঃ গাধাগুলো খেয়ে ফেলা হচ্ছে। তারপর আরেক আগন্তুক এসে বললঃ গাধাগুলোকে শেষ করা হচ্ছে। তখন নাবী (সাঃআঃ) ঘোষণাকারীকে ঘোষণার আদেশ দিলেন। সে লোকজনের মধ্যে ঘোষণা দিলঃ আল্লাহ ও তাহাঁর রাসুল তোমাদেরকে গৃহপালিত গাধার গোশ্ত খেতে নিষেধ করিয়াছেন। কেননা, এগুলো ঘৃণ্য। তখন ডেকচিগুলো উল্টে ফেলা হল, আর তাতে গোশ্ত টগবগ করে ফুটছিল।(আঃপ্রঃ- , ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০১৭)
৫৫২৯
আমর (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
আমি জাবির ইবনু যায়দকে জিজ্ঞেস করলামঃ লোকে ধারণা করে যে, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) গৃহপালিত গাধার গোশ্ত খেতে নিষেধ করিয়াছেন। তিনি বললেনঃ হাকাম ইবনু আমর গিফারীও বসরায় আমাদের কাছে এ কথা বলিতেন। কিন্তু জ্ঞান সমৃদ্ধ ইবনু আব্বাস (রাদি.) তা অস্বীকার করিয়াছেন। তারপর তিনি এ আয়াতটি তিলাওয়াত করেছেনঃ বল, আমার প্রতি যে ওয়াহী করা হয়েছে তাতে মানুষ যা আহার করে তার কিছুই নিষিদ্ধ পাই না”। (সুরা আল-আনআম ৬/১৪৫)।(আঃপ্রঃ- ৫১২১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০১৮)
৭২/২৯. অধ্যায়ঃ গোশ্তভোজী যাবতীয় হিংস্র জন্তু খাওয়া প্রসঙ্গে।
৫৫৩০
আবু সালাবা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) দাঁতওয়ালা যাবতীয় হিংস্র জন্তু খেতে নিষেধ করিয়াছেন। যুহরী থেকে ইউনুস, মামার ইবনু উয়াইনা ও মাজিশূন এ রকমই বর্ণনা করিয়াছেন।(আঃপ্রঃ- ৫১২৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০১৯)
৭২/৩০. অধ্যায়ঃ মৃত জন্তুর চামড়া
৫৫৩১
আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) একটি মৃত ছাগলের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তিনি বললেনঃ তোমরা এটির চামড়া থেকে কেন উপকার গ্রহণ করছ না? লোকজন উত্তর করলঃ এটি মৃত। তিনি বললেনঃ শুধু তার খাওয়াকে হারাম করা হয়েছে।(আঃপ্রঃ- ৫১২৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০২০)
৫৫৩২
ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ একবার নাবী (সাঃআঃ) একটি মৃত ছাগলের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তিনি বললেনঃ এটির মালিকদের কী হল, তারা যদি এটির চামড়া থেকে উপকার গ্রহণ করত!(আঃপ্রঃ- ৫১২৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০২১)
৭২/৩১. অধ্যায়ঃ কস্তুরী
৫৫৩৩
আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ কোন আঘাতপ্রাপ্ত লোক যে আল্লাহর পথে আঘাত পায়, সে ক্বিয়ামাতের দিন এ অবস্থায় আসবে যে, তার ক্ষতস্থান থেকে টকটকে লাল রক্ত ঝরছে আর তার সুগন্ধি হইবে কস্তুরীর সুগন্ধির ন্যায়।(আঃপ্রঃ- ৫১২৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০২২)
৫৫৩৪
আবু মূসা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ সৎ সঙ্গী ও অসৎ সঙ্গীর দৃষ্টান্ত হল, কস্তুরীওয়ালা ও কামারের হাপরের ন্যায়। কস্তুরীওয়ালা হয়ত তোমাকে কিছু দান করিবে কিংবা তার নিকট হইতে তুমি কিছু খরিদ করিবে কিংবা তার নিকট হইতে তুমি সুবাস পাবে। আর কামারের হাপর হয়ত তোমার কাপড় পুড়িয়ে দেবে কিংবা তার নিকট হইতে পাবে দুর্গন্ধ। [২১০১; মুসলিম ৪৫/৪৫, হাদীস ২৬২৮] আঃপ্রঃ- ৫১২৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০২৩)
৭২/৩২. অধ্যায়ঃ খরগোশ
৫৫৩৫
আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমরা মাররুয্ যাহরান-এ একটি খরগোশকে ধাওয়া করলাম। তখন লোকেরাও এর পেছনে ছুটল এবং তারা ক্লান্ত হয়ে পড়ল। এরপর আমি সেটিকে ধরে ফেললাম এবং আবু ত্বলহার নিকট নিয়ে এলাম। তিনি এটিকে যবহ করিলেন এবং তার পিছনের অংশ কিংবা তিনি বলেছেনঃ দু রান নাবী (সাঃআঃ)-এর কাছে পাঠিয়ে দিলেন এবং তিনি তা গ্রহণ করিলেন।(আঃপ্রঃ- ৫১২৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০২৪)
৭২/৩৩. অধ্যায়ঃ যব্ব
৫৫৩৬
ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যব্ব আমি খাই না, আর হারামও বলি না।(আঃপ্রঃ- ৫১২৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০২৫)
৫৫৩৭
খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর সঙ্গে মায়মুনা (রাদি.) এর সঙ্গে গেলেন। সেখানে ভুনা করা যব্ব পরিবেশন করা হল। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) সেদিকে হাত বাড়ালেন। এ সময় এক মহিলা বলিল, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে জানিয়ে দাও তিনি কী জিনিস খেতে যাচ্ছেন। তখন তাঁরা বললেনঃ হে আল্লাহর রাসুল! এটি যব্ব। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) শুনে হাত তুলে নিলেন। খালিদ (রাদি.) বললেনঃ আমি বলাম হে আল্লাহর রাসুল! এটি কি হারাম? তিনি বললেনঃ না, হারাম নয়। তবে আমাদের এলাকায় এটি নেই। তাই আমি একে অপছন্দ করি। খালিদ (রাদি.) বলেনঃ এরপর আমি তা আমার দিকে এনে খেতে লাগলাম। আর রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছিলেন।[৫৩৯১; মুসলিম ৩৪/৭, হাদীস ১৯৪৩] আঃপ্রঃ- ৫১৩০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০২৬)
৭২/৩৪. অধ্যায়ঃ যদি জমাট কিংবা তরল ঘিয়ের মধ্যে ইঁদুর পড়ে
৫৫৩৮
মাইমূনা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
একটি ইঁদুর ঘিয়ের মধ্যে পড়ে মরে গিয়েছিল। তখন নাবী (সাঃআঃ) এর নিকট এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেনঃ ইঁদুরটি এবং তার আশে-পাশের অংশ ফেলে দাও। তারপর তা খাও।
সুফইয়ান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-এর কাছে জিজ্ঞেস করা হয় যে, মামার এ হাদীসটি যুহরী, সাঈদ ইবনু মুসাইয়্যাব, আবু হুরাইরা (রাদি.) এর সনদে বর্ননা করেন। তিনি বললেনঃ আমি যুহরী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-কে বলিতে শুনিয়াছি যে, তিনি উবাইদুল্লাহ, ইবনু আব্বাস, মাইমূনা সূত্রে নাবী (সাঃআঃ) থেকে বর্ননা করিয়াছেন। তিনি আরো বলেন যে, আমি যুহরী থেকে উক্ত সনদে এ হাদীসটি কয়েকবার শুনিয়াছি। (আঃপ্রঃ- ৫১৩১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০২৭)
৫৫৩৯
যুহরী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
জিজ্ঞেস করা হয় জমাট কিংবা তরল তেল কিংবা ঘিয়ের মধ্যে ইঁদুর ইত্যাদি জীব পড়ে মারা গেলে তার কী নির্দেশ? তিনি বলিলেন আমাদের কাছে উবাইদুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ সুত্রে হাদীস পৌছেছে যে, ঘিয়ের মধ্যে পড়ে একটি ইঁদুর মারা গিয়েছিল, সেটি সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) আদেশ দিয়েছিলেন, ইঁদুর ও এর নিকটবর্তী অংশ ফেলে দিতে, এরপর তা ফেলে দেয়া হয় ও খাওয়া হয়। (আঃপ্রঃ- ৫১৩২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০২৮)
৫৫৪০
মাইমূনা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল এমন একটি ইঁদুর সম্পর্কে যা ঘিয়ের মধ্যে পড়েছিল। তখন তিনি বলেছিলেনঃ ওটি এবং তার আশ-পাশের অংশ ফেলে দাও, তারপর খাও।(আঃপ্রঃ- ৫১৩৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০২৯)
৭২/৩৫. অধ্যায়ঃ পশুর মুখে চিহ্ন লাগানো ও দাগানো
৫৫৪১
ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি জানোয়ারের মুখে চিহ্ন লাগানোকে অপছন্দ করিতেন। ইবনু উমার আরো বলেছেনঃ নাবী সাঃআঃ জানোয়ারের মুখে মারতে নিষেধ করিয়াছেন। আনকাযী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হানযালী সূত্রে কুতাইবাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) এরকমই বর্ণনা করেন। তিনি বলনঃ تُضْرَبُ الصُّورَةُ অর্থাৎ চেহারায় মারতে নিষেধ করিয়াছেন। আঃপ্রঃ- ৫১৩৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৩০)
৫৫৪২
আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন আমি আমার এক ভাইকে নিয়ে নাবী (সাঃআঃ)-এর নিকট গেলাম, যেন তিনি তাকে তাহনীক করেন অর্থাৎ খেজুর বা অন্য কিছু চিবিয়ে তার মুখে দেন। এ সময়ে তিনি তাহাঁর ঊট বাঁধার জায়গায় ছিলেন। তখন আমি তাঁকে দেখলাম তিনি একটি বক্রীর গায়ে চিহ্ন লাগাচ্ছেন। বর্ননাকারী বলেন, আমার মনে হয় তিনি (হিশাম) বলেছেনঃ বক্রীর কানে চিহ্ন লাগাচ্ছেন।(আঃপ্রঃ- ৫১৩৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৩১)
৭২/৩৬. অধ্যায়ঃ কোন দল মালে গনিমত লাভ করার পর যদি তাদের কেউ সাথীদের অনুমতি ব্যাতীত কোন বক্রী কিংবা উট যবহ করে ফেলে, তাহলে নাবী (সাঃআঃ) হইতে বর্ণিত রাফি (রাদি.) এর হাদীস অনুসারে সেই গোশ্ত খাওয়া যাবে না।
চোরের যবেহকৃত পশুর ব্যাপারে তাউস ও ইকরিমাহ বলেছেন, তা ফেলে দাও।
৫৫৪৩
রাফি ইবনু খাদিজ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলিলেন আমি নাবী (সাঃআঃ) কে বললাম। আগামী দিন আমরা শত্রুর সম্মুখিন হব অথচ আমাদের সাথে কোন ছুরি নেই। তিনি বললেনঃ সতর্ক দৃষ্টি রাখ অথবা তিনি বলেছেন, জলদি কর। যে জিনিস রক্ত প্রবাহিত করে এবং যাতে আল্লাহর নাম নেয়া হয়, সেটি খাও। যতক্ষন না সেটি দাঁত কিংবা নখ হয়। এ ব্যাপারে তোমাদের জানাচ্ছি, দাঁত হল হাড়, আর নখ হল হাবশীদের ছুরি। দলের দ্রুতগতি লোকেরা আগে বেড়ে গেল এবং গনীমতের মালামাল লাভ করিল। নাবী (সাঃআঃ) ছিলেন তাদের পিছনে। তারা ডেকচি চড়িয়ে দিল। নাবী (সাঃআঃ) এসে তা উল্টে দেয়ার আদেশ দিলেন, অতঃপর সেগুলো উল্টে দেয়া হল। এরপর তিনি তাদের মধ্যে মালে গনীমত বন্টন করিলেন এবং দশটি বক্রীকে একটি উটের সমান গন্য করিলেন। দলের অগ্রভাগের নিকট থেকে একটি উট ছুটে গিয়েছিল। অথচ তাদের সঙ্গে কোন অশ্বারোহী ছিল না। এ অবস্থায় এক ব্যক্তি উটটির দিকে তীর ছুঁড়লে আল্লাহ উটটিকে থামিয়ে দিলেন। তখন নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ এ সকল চতুষ্পদ জীবের মধ্যে বন্য পশুর স্বভাব আছে। কাজেই, এগুলোর কোনটি যদি এমন করে, তাহলে তার সঙ্গে এরকমই ব্যাবহার করিবে।(আঃপ্রঃ- ৫১৩৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৩২)
৭২/৩৭. অধ্যায়ঃ কোন দলের উট ছুটে গেলে তাদের কেউ যদি সেটিকে তাদের উপকারের নিয়্যাতে তীর ছুঁড়ে মারে এবং হত্যা করে, তাহলে রাফি (রাদি.) হইতে বর্ণিত নাবী করীম (সাঃ) এর হাদীস অনুযায়ী তা জায়েজ
৫৫৪৪
রাফী ইবনু খাদীজ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক সফরে আমরা নাবী (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে ছিলাম। তখন উটগুলোর মধ্য থেকে একটি উট পালিয়ে যায়। তিনি বলেন, তখন এক ব্যক্তি সেটির দিকে তীর ছুঁড়লে আল্লাহ সেটিকে থামিয়ে দেন। তিনি বলেন, এরপর নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ এ সব পশুর মধ্যে বন্য পশুর স্বভাব আছে। সুতরাং তার মধ্যে কোনটি তোমাদের উপর বেয়াড়া হয়ে উঠলে তার সঙ্গে সেরকমই ব্যাবহার কর। তিনি বলেন, আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসুল! আমরা অনেক সময় যুদ্ধ অভিযানে বা সফরে থাকি, যবহ করিতে ইচ্ছে করি কিন্তু ছুরি থাকে না। তখন নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ আঘাত করো এমন বস্তু দিয়ে যা রক্ত ঝরায় অথবা তিনি বলেছেনঃ এমন বস্তু দিয়ে যা রক্ত ঝরায় এবং যার উপরে আল্লাহর নাম নেয়া হয়েছে সেটি খাও, তবে দাঁত ও নখ বাদে। কারন দাঁত হল হাড়, আর নখ হল হাবশীদের ছুরি।(আঃপ্রঃ- ৫১৩৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৩৩)
৭২/৩৮. অধ্যায়ঃ নিরুপায় ব্যক্তির খাওয়া
আল্লাহ তাআলার বানীঃ হে মুমীনগন! আমার দেয়া পবিত্র বস্তুগুলো খেতে থাক এবং আল্লাহর উদ্দেশ্যে শোকর করিতে থাক, যদি তোমরা তাহাঁরই উপাসক হও- নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের প্রতি হারাম করিয়াছেন মৃত-জীব, রক্ত ও শূকরের মাংস এবং সেই দ্রব্য যার প্রতি আল্লাহ ছাড়া অন্যের নাম নেয়া হয়েছে, কিন্তু যে ব্যক্তি বাধ্য হয়ে বিদ্রোহী না হয়ে এবং সীমা অতিক্রম না করে তা গ্রহন করিবে, তার কোন গুনাহ নেই- (সুরা আল-বাকারাহ ২/১৭২-১৭৩)। আল্লাহ আরো বলেনঃ তবে কেউ পাপ করার প্রবনতা ব্যাতীত ক্ষুধার জ্বালায় (নিষিদ্ধ বস্তু খেতে) বাধ্য হলে…(সুরা আল-মায়িদাহ ৫/৩)। আল্লাহ আরো বলেনঃ কাজেই যার উপর আল্লাহর নাম নেয়া হয়েছে তা তোমরা খাও যদি তাহাঁর নিদর্শনাবালীতে তোমরা বিশ্বাসী হয়ে থাক- তোমাদের কী হয়েছে যে, যাতে আল্লাহর নাম নেয়া হয়েছে তা তোমরা খাবে না? তোমাদের জন্য যা হারাম করা হয়েছে তা বিশদভাবে বাতলে দেয়া হয়েছে, তবে যদি তোমরা নিরুপায় হও (তবে ততটুকু নিষিদ্ধ বস্তু খেতে পার যাতে প্রাণে বাঁচতে পার), কিন্তু অনেক লোকই অজ্ঞানতাবশতঃ তাদের খেয়াল খুশী দ্বারা অবশ্যই (অন্যদেরকে) পথভ্রষ্ট করে, তোমার প্রতিপালক সীমালঙ্ঘনকারীদের সম্পর্কে সবচেয়ে বেশী অবগত- (সুরা আল-আনআম ৬/১১৮-১১৯)
আল্লাহ আরো বলেনঃ বল, আমার প্রতি যে ওয়াহী করা হয়েছে তাতে মানুষ যা আহার করে তার কিছুই নিষিদ্ধ পাইনা মৃত, প্রবহমান রক্ত ও শূকরের মাংস ছাড়া। কারন তা অপবিত্র অথবা আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে যবহ করার ফাসিকী কাজ। কিন্তু কেউ অবাধ্য না হয়ে বা সীমালঙ্ঘন না করে নিরুপায় হলে তোমার প্রতিপালক তো বড়ই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সুরা আল-আনআম ৬/১৪৫)
আল্লাহ আরো বলেনঃ কাজেই আল্লাহ তোমাদেরকে যে সকল বৈধ পবিত্র রিয্ক দিয়েছেন তা তোমরা খাও আর আল্লাহর অনুগ্রহের শুকরিয়া আদায় কর যদি তোমরা প্রকৃতই তাহাঁর বন্দেগী করিতে ইচ্ছুক হও। আল্লাহ তোমাদের জন্য হারাম করিয়াছেন মৃত জীব, রক্ত, শূকরের মাংস আর যা যবেহ করার সময় আল্লাহ ছাড়া অন্যের নাম নেয়া হয়েছে। কিন্তু কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে অবাধ্য না হয়ে ও সীমালঙ্ঘন না করে নিতান্ত নিরুপায় (হয়ে এসব খেতে বাধ্য) হলে আল্লাহ তো বড়ই ক্ষমাশীল, বড়ই দয়ালু। (সুরা নাহল ১৬/১১৪-১১৫)
Leave a Reply