বিধবা নারীর শোক পালনের পদ্ধতি – চার মাস দশ দিন বিরত রাখবে

বিধবা নারীর শোক পালনের পদ্ধতি – চার মাস দশ দিন বিরত রাখবে

বিধবা নারীর শোক পালনের পদ্ধতি >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

পর্বঃ ৬৮, তালাক, অধ্যায়ঃ (৪৬-৫৩)=৮টি

৬৮/৪৬. অধ্যায়ঃ বিধবা (যার স্বামী মারা গেছে) মহিলা চার মাস দশ দিন শোক পালন করিবে।
৬৮/৪৭. অধ্যায়ঃ শোক পালনকারিণীর জন্য সুরমা ব্যবহার করা।
৬৮/৪৮. অধ্যায়ঃ তুহুর অর্থাৎ পবিত্রতার সময় শোক পালনকারিণীর জন্য চন্দন কাঠের সুগন্ধি ব্যবহার।
৬৮/৪৯. অধ্যায়ঃ শোক পালনকারিণী হালকা রং-এর সুতার কাপড় ব্যবহার করিতে পারে।
৬৮/৫০. অধ্যায়ঃ (মহান আল্লাহর বাণী): তোমাদের মধ্য হইতে যারা স্ত্রীদেরকে রেখে মারা যাবে সে অবস্থায় স্ত্রীরা নিজেদেরকে চার মাস দশ দিন বিরত রাখবে। তারপর যখন তাদের ইদ্দৎকাল পূর্ণ হইবে, তখন তোমাদের নিজেদের সম্বন্ধে বৈধভাবে যা কিছু করিবে তাতে তোমাদের কোন গুনাহ নেই। বস্তুতঃ তোমরা যা কিছু করছ, আল্লাহ সে বিষয়ে পরিজ্ঞাত। (সুরা আল-বাক্বারা ২/২৩৪)
৬৮/৫১. অধ্যায়ঃ বেশ্যার উপার্জন ও অবৈধ বিয়ে।
৬৮/৫২. অধ্যায়ঃ নিভৃতেবাস করার পরে মাহরের পরিমাণ, অথবা নির্জনবাস ও স্পর্শ করার পূর্বে ত্বলাক্ব দিলে স্ত্রীর মাহর এবং কিভাবে নির্জনবাস প্রমাণিত হইবে সে প্রসঙ্গে
৬৮/৫৩. অধ্যায়ঃ তালাকপ্রাপ্তা নারীর যদি মোহর নির্ণিত না হয় তাহলে সে মুতআ পাবে।

৬৮/৪৬. অধ্যায়ঃ বিধবা (যার স্বামী মারা গেছে) মহিলা চার মাস দশ দিন শোক পালন করিবে।

যুহরী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, বিধবা কিশোরীর জন্য খোশবু ব্যবহার করা ঠিক হইবে না। কারণ, তাকেও ইদ্দাত পালন করিতে হইবে।

হুমায়দ ইবনু নাফি হইতে বর্ণিত হয়েছে তাকে যয়নাব বিনতু আবু সালামাহ নিম্নোক্ত তিনটি হাদীস সম্পর্কে সংবাদ প্রদান করেনঃ

৫৩৩৪

যাইনাব বিনত আবু সালামাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

যাইনাব বিনত আবু সালামাহ (রাদি.) বলেনঃ নাবী (সাঃআঃ)- এর স্ত্রী উম্মু হাবীবাহর পিতা আবু সুফ্ইয়ান ইবনু হার্‌ব (রাদি.) মারা গেলে আমি তাহাঁর কাছে হাজির হলাম। উম্মু হাবীবাহ (রাদি.) যাফরান ইত্যাদি মিশ্রিত হলদে রং এর খুশবু নিয়ে আসতে বলিলেন। তিনি এক বালিকাকে এ থেকে কিছু মাখালেন। এরপর তাহাঁর নিজের চেহারার উভয় দিকে কিছু মাখলেন। এরপর বললেনঃ আল্লাহর কসম! খুশবু মাখার কোন দরকার আমার নেই। তবে আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)- কে বলিতে শুনিয়াছি, আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী কোন নারীর জন্য কারো মৃত্যুতে তিন দিনের বেশী শোক পালন করা হালাল হইবে না। কিন্তু স্বামীর মৃত্যুতে চার মাস দশ দিন শোক পালন করিবে।(আঃপ্রঃ- ৪৯৩৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৫)

৫৩৩৫

যাইনাব (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

যাইনাব বিনত জাহশের ভাই মৃত্যুবরণ করলে আমি তার (যায়নাবের) নিকট গেলাম। তিনিও খুশবু আনিয়ে ব্যবহার করিলেন। এরপর বললেনঃ আল্লাহর কসম! খুশবু ব্যবহার করার কোন প্রয়োজন আমার নেই। তবে আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)- কে মিম্বরের উপর বলিতে শুনেছিঃ আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী কোন নারীর জন্য কারো মৃত্যুতে তিন দিনের বেশী শোক পালন করা হালাল হইবে না তবে তার স্বামীর মৃত্যুতে চার মাস দশ দিন শোক পালন করিতে পারবে।(আঃপ্রঃ- ৪৯৩৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৫)

৫৩৩৬

যাইনাব (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

যাইনাব (রাদি.) বলেনঃ আমি উম্মু সালামাহকে বলিতে শুনেছিঃ এক নারী রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)- এর কাছে এসে বললঃ হে আল্লাহর রাসুল! আমার মেয়ের স্বামী মারা গেছে। তার চোখে অসুখ। তার চোখে কি সুরমা লাগাতে পারবে? তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) দুঅথবা তিন বার বলিলেন, না। তিনি আরও বললেনঃ এতো মাত্র চার মাস দশ দিনের ব্যাপার। অথচ জাহিলী যুগে এক মহিলা এক বছরের মাথায় বিষ্ঠা নিক্ষেপ করত।(আঃপ্রঃ- ৪৯৩৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৫)

৫৩৩৭

হুমায়দ (র) হইতে বর্ণিতঃ

হুমায়দ্ বলেন, আমি যাইনাবকে জিজ্ঞেস করলাম, এক বছরের মাথায় বিষ্ঠা নিক্ষেপের অর্থ কী? তিনি বলেন, সে যুগে কোন স্ত্রীর স্বামী মারা গেলে সে অতি ক্ষুদ্র একটি প্রকোষ্ঠে প্রবেশ করতো এবং নিকৃষ্ট কাপড় পরত, কোন খুশবু ব্যবহার করিতে পারত না। এভাবে এক বছর পার হলে তার কাছে চতুষ্পদ জন্তু যথা- গাধা, বকরী অথবা গাভী আনা হতো। আর সে তার গায়ে হাত বুলাতো। হাত বুলাতে বুলাতে অনেক সময় সেটা মরেও যেত। এরপর সে স্ত্রীলোকটি) বেরিয়ে আসতো। তাকে বিষ্ঠা দেয়া হতো এবং তা তাকে নিক্ষেপ করিতে হতো। অতঃপর সে ইচ্ছা করলে খুশবু অথবা অন্য কিছু ব্যবহার করিতে পারত। মালিক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-কে ুما تفتضبه শব্দের অর্থ জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেনঃ স্ত্রীলোকটি ঐ প্রাণীর চামড়ায় হাত বুলাতো। [মুসলিম ১৮/৯, হাদীস ১৪৮৬, ১৪৮৯] আঃপ্রঃ- ৪৯৩৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৫)

৬৮/৪৭. অধ্যায়ঃ শোক পালনকারিণীর জন্য সুরমা ব্যবহার করা।

৫৩৩৮

উম্মু সালামাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আছে যে, এক মহিলার স্বামী মারা গেলে তার পরিবারের লোকেরা তার চোখদুটো নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় করিল। তারা রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)- এর কাছে এসে তার সুরমা ব্যবহারের অনুমতি প্রার্থনা করিল। তিনি বললেনঃ সুরমা ব্যবহার করিতে পারবে না। তোমাদের অনেকেই (জাহিলী যুগে) তার নিকৃষ্ট কাপড় বা নিকৃষ্ট ঘরে অবস্থান করত। যখন এক বছর পেরিয়ে যেত, আর কোন কুকুর সে দিকে যেত, তখন সে বিষ্ঠা নিক্ষেপ করত। কাজেই চার মাস দশ দিন পার না হওয়া পর্যন্ত সুরমা ব্যবহার করিতে পারবে না।(আঃপ্রঃ- ৪৯৪০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৬)

৫৩৩৯

উম্মু হাবীবাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

(বর্ণনাকারী বলেন) আমি যাইনাবকে উম্মু হাবীবাহ (রাদি.) থেকে বর্ণনা করিতে শুনিয়াছি যে, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বসী কোন মুসলিম নারীর জন্য কারো মৃত্যুতে তিন দিনের বেশী শোক পালকন করা হালাল নয়। তবে স্বামীর মুত্যুতে চার মাস দশ দিন শোক পালন করিবে। [১২৮০; মুসলিম ১৮/৯, হাদীস ১৪৮৭, আহমাদ ২৬৮১৬] আঃপ্রঃ- ৪৯৪০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৬)

৫৩৪০

মুহাম্মাদ ইবনু সীরীন (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

যে, উম্মু আতিয়্যাহ (রাদি.) বলেছেন, স্বামী ব্যতীত অন্য কারো মৃত্যু হলে তিন দিনের বেশী শোক পালন করিতে আমাদেরকে নিষেধ করা হয়েছে।(আঃপ্রঃ- ৪৯৪১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৭)

৬৮/৪৮. অধ্যায়ঃ তুহুর অর্থাৎ পবিত্রতার সময় শোক পালনকারিণীর জন্য চন্দন কাঠের সুগন্ধি ব্যবহার।

৫৩৪১

উম্মু আতিয়্যাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, কারো মৃত্যুতে তিন দিনের বেশী শোক পালন করা হইতে আমাদেরকে নিষেধ করা হত। তবে স্বামী মারা গেলে চার মাস দশ দিন শোক পালন করিতে হইবে এবং আমরা যেন সুরমা খুশবু ব্যবহার না করি আর রঙিন কাপড় যেন না পরি তবে হালকা রঙের ছাড়া। আমাদের কেউ যখন হায়িয শেষে গোসল করে পবিত্র হয়, তখন (দুর্গন্ধ দূর করার জন্য) আযফার নামক সুগন্ধি ব্যবহার করার আমাদেরকে অনুমতি দেয়া হয়েছে। তাছাড়া আমাদেরকে জানাযার অনুসরণ করিতে নিষেধ করা হতো।(আঃপ্রঃ- ৪৯৪২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৮)

৬৮/৪৯. অধ্যায়ঃ শোক পালনকারিণী হালকা রং-এর সুতার কাপড় ব্যবহার করিতে পারে।

৫৩৪২

উম্মু আতিয়্যাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বসী কোন মহিলার জন্য স্বামী ব্যতীত অন্য কারো মৃত্যুতে তিন দিনের বেশী শোক পালন করা হালাল হইবে না। সুরমা ও রঙিন কাপড়ও ব্যবহার করিতে পারবে না। তবে সূতাগুলো একত্রে বেঁধে হালকা রং লাগিয়ে তা দিয়ে কাপড় বুনলে তা ব্যবহার করা যাবে।(আঃপ্রঃ- ৪৯৪৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৯)

৫৩৪৩

উম্ম আতিয়্যাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) নিষেধ করিয়াছেন শোক পালনকারিণী যেন সুগন্ধি না মাখে। তবে হায়িয থেকে পবিত্র হলে (দুর্গন্ধ দূর করার জন্য) কাফূরের কুস্ত ও আযফার সুগন্ধি ব্যবহার করিতে পারে।(আঃপ্রঃ- ৪৯৪৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৯)

৬৮/৫০. অধ্যায়ঃ (মহান আল্লাহর বাণী): তোমাদের মধ্য হইতে যারা স্ত্রীদেরকে রেখে মারা যাবে সে অবস্থায় স্ত্রীরা নিজেদেরকে চার মাস দশ দিন বিরত রাখবে। তারপর যখন তাদের ইদ্দৎকাল পূর্ণ হইবে, তখন তোমাদের নিজেদের সম্বন্ধে বৈধভাবে যা কিছু করিবে তাতে তোমাদের কোন গুনাহ নেই। বস্তুতঃ তোমরা যা কিছু করছ, আল্লাহ সে বিষয়ে পরিজ্ঞাত। (সুরা আল-বাক্বারা ২/২৩৪)

৫৩৪৪

মুজাহিদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

মহান আল্লাহর বাণীঃ “তোমাদের মধ্যে যারা বিবিদেরকে রেখে মারা যাবে” (সুরা আল-বাক্বারা ২:২৪০) তিনি এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, স্বামীর বাড়ীতে অবস্থান করে এ ইদ্দাত পালন করা মহিলার জন্য ওয়াজিব ছিল। পরে মহান আল্লাহ অবতীর্ণ করেনঃ “তোমাদের মধ্যে যারা বিবিদেরকে রেখে মারা যাবে, তারা বিবিদের জন্য অসিয়ত করিবে যেন এক বৎসরকাল সুযোগ-সুবিধা পায় এবং গৃহ হইতে বের করে দেয়া না হয়, তবে যদি তারা নিজেরাই বের হয়ে যায়, তবে তোমাদের প্রতি গুনাহ নেই তারা নিজেদের ব্যাপারে বৈধভাবে কিছু করলে”। (সুরা আল-বাক্বারা ২:২৪০)। মুজাহিদ বলেনঃ আল্লাহ তাআলা সাত মাস বিশ রাতকে তার জন্য পূর্ণ বছর সাব্যস্ত করিয়াছেন। মহিলা ইচ্ছা করলে ওসিয়ত অনুসারে থাকতে পারে, আবার চাইলে চলেও যেতে পারে। এ কথাই আল্লাহ তাআলা বলেছেনঃ “বের না করে, তবে যদি স্বেচ্ছায় বের হয়ে যায় তবে তাতে তোমাদের কোন পাপ নেই” তাই মহিলার উপর ইদ্দাত পালন করা যথারীতি ওয়াজিব আছে। আবু নাজীহ এ কথাগুলো মুজাহিদ থেকে বর্ণনা করিয়াছেন।

আত্বা বলেন, ইবনু আব্বাস (রাদি.) বলেছেনঃ এ আয়াতটি স্বামীর বাড়ীতে ইদ্দাত পালন করার নির্দেশকে রহিত করে দিয়েছে। অতএব, সে যেখানে ইচ্ছা ইদ্দাত পালন করিতে পারে।

আত্বা বলেনঃ ইচ্ছা হলে ওয়াসিয়াত অনুযায়ী সে স্বামীর পরিবারে অবস্থান করিতে পারে। আবার ইচ্ছা হলে অন্যত্রও ইদ্দাত পালন করিতে পারে। কেননা, মহান আল্লাহ বলেছেনঃ “তারা নিজেরদের জন্য বিধিমত যা করিবে, তাতে তোমাদের কোন পাপ নেই”। আত্বা বলেন, এরপর মিরাসের আয়াত অবতীর্ণ হলে বাসস্থান দেয়ার হুকুমও রহিত হয়ে যায়। এখন সে যেখানে মনে চায় ইদ্দাত পালন করিতে পারে, তাকে বাসস্থান দেয় জরুরী নয়।(আঃপ্রঃ- ৪৯৪৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪০)

৫৩৪৫

উম্মু হাবীবাহ বিনত আবু সুফ্‌ইয়ান (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

যখন তাহাঁর কাছে তার পিতার মৃত্যু সংবাদ পৌঁছল, তখন তিনি সুগন্ধি আনিয়ে তার উভয় হাতে লাগালেন এবং বললেনঃ সুগন্ধি ব্যবহারে কোন দরকার আমার নেই। কিন্তু যেহেতু আমি নাবী (সাঃআঃ)- কে বলিতে শুনেছিঃ আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী কোন নারীর জন্য কারো মৃত্যুতে তিন দিনের অধিক শোক পালন করা হালাল হইবে না। তবে স্বামীর মৃত্যুতে চার মাস দশ দিন শোক পালক করিতে হইবে।(আঃপ্রঃ- ৪৯৪৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪১)

৬৮/৫১. অধ্যায়ঃ বেশ্যার উপার্জন ও অবৈধ বিয়ে।

হাসান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেছেন, যদি কেউ অজান্তে কোন মুহাররাম (যার সাথে বিষে করা অবৈধ) মহিলাকে বিয়ে করে ফেলে, তবে তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে হইবে। মহিলা নির্দিষ্ট মাহর ব্যতীত অন্য কিছু পাবে না। তিনি পরবর্তীতে বলেছেন, সে মাহরে মিসাল পাবে।

৫৩৪৬

আবু মাসঊদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বরেন, নাবী (সাঃ) কুকুরের মূল্য, গণকের পারিশ্রমিক এবং পতিতার উপার্জন গ্রহণ করিতে নিষেধ করিয়াছেন।(আঃপ্রঃ- ৪৯৪৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪২)

৫৩৪৭

আবু জুহাইফাহ (রাদি.)- এর পিতা হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) লানাত করিয়াছেন উল্কি অঙ্কণকারিণী, উল্কি গ্রহণকারিণী, সূদ গ্রহীতা ও সূদ দাতাকে। তিনি কুকুরের মূল্য ও পতিতার উপার্জন ভোগ করিতে নিষেধ করিয়াছেন। চিত্রাঙ্কণকারীদেরকেও তিনি লানাত করিয়াছেন।(আঃপ্রঃ- ৪৯৪৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪৩)

৫৩৪৮

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

দাসীর অবৈধ উপার্জন ভোগ করিতে নাবী (সাঃআঃ) নিষেধ করিয়াছেন।(আঃপ্রঃ- ৪৯৪৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪৪)

৬৮/৫২. অধ্যায়ঃ নিভৃতেবাস করার পরে মাহরের পরিমাণ, অথবা নির্জনবাস ও স্পর্শ করার পূর্বে তালাক দিলে স্ত্রীর মাহর এবং কিভাবে নির্জনবাস প্রমাণিত হইবে সে প্রসঙ্গে

৫৩৪৯

সাঈদ ইবনু যুবায়র (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ইবনু উমারকে জিজ্ঞেস করলামঃ যদি কেউ তার স্ত্রীকে অপবাদ দেয়? তিনি বলিলেন, নাবী (সাঃআঃ) আজলান গোত্রের এক দম্পতির বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করে দেন। নাবী (সাঃআঃ) বলেনঃ আল্লাহ জানেন তোমাদের দুজনের একজন অবশ্যই মিথ্যাবাদী। সুতরাং তোমাদের কেউ কি তাওবাহ করিবে? তারা উভয়ে অস্বীকার করিল। তিনি আবার বললেনঃ আল্লাহ জানেন তোমাদের একজন অবশ্যই মিথ্যাবাদী। কাজেই তোমাদের মধ্যে তাওবাহ করিতে কে প্রস্তুত? তারা কেউ রাযী হল না। এরপর তিনি তাদের মধ্য বিচ্ছেদ ঘটিয়ে দিলেন। আইয়ূব বলেনঃ আমর ইবনু দীনার আমাকে বলিলেন, হাদীসে আরো কিছু কথা আছে, আমি তা তোমাকে বর্ণনা করিতে দেখছি না। রাবী বলেন, লোকটি তখন বলিল, আমার মাল (প্রদত্ত মাহর) ফেরত পাব না? তিনি বললেনঃ তুমি কোন মাল পাবে না। যদি তুমি সত্যবাদী হও, তবে তো তুমি তার সাথে সহবাস করেছ। আর যদি মিথ্যাচারী হও, তাহলে মাল ফেরত পাওয়া তো বহু দূরের ব্যাপার।(আঃপ্রঃ- ৪৯৪৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪৫)

৬৮/৫৩. অধ্যায়ঃ তালাকপ্রাপ্তা নারীর যদি মোহর নির্ণিত না হয় তাহলে সে মুতআ পাবে।

কারণ মহান আল্লাহ বলেছেনঃ “তোমাদের প্রতি কোন গুনাহ নেই, যদি তোমরা স্ত্রীদেরকে স্পর্শ না করে, কিংবা তাদের মাহর ধার্য না করে তালাক দাও এবং তোমরা স্ত্রীদেরকে খরচের সংস্থান করিবে, অবস্থাপন্ন ব্যক্তি তার সাধ্যমত এবং অবস্থাহীন ব্যক্তি তার সাধ্যমত বিধি অনুযায়ী খরচপত্রের ব্যবস্থা করিবে, পূর্ণবানদের উপর এটা দায়িত্ব। যদি তোমরা তাদেরকে স্পর্শ করার পূর্বে তালাক দাও, অথচ তাদের মাহর ধার্য করা হয়, সে অবস্থায় ধার্যকৃত মাহরের অর্ধেক, কিন্তু যদি স্ত্রীরা দাবী মাফ করে দেয় কিংবা যার হাতে বিয়ের বন্ধন আছে সে মাফ করে দেয়, বস্তুতঃ ক্ষমা করাই তাকওয়ার অধিক নিকটবর্তী এবং তোমরা পারস্পরিক সহায়তা হইতে বিমুখ হয়ো না, যা কিছু তোমরা করছ আল্লাহ নিশ্চয়ই তার সম্যক দ্রষ্টা।”– (সুরা আল-বাক্বারা ২/২৩৬-২৩৭)। আল্লাহ আরও বলেছেনঃ “তালাকপ্রাপ্তা নারীদের সঙ্গভাবে ভরণ-পোষণ করা মুত্তাকীদের কর্তব্য। এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তাহাঁর আয়াত বর্ণনা করেন যাতে তোমরা বুঝতে পার।“-(সুরা আল-বাক্বারা ২/২৪১-২৪২)।

আর লিআনকারিণীকে তার স্বামী তালাক দেয়ার সময় নাবী (সাঃআঃ) তার জন্য মুতআর [তাকে উপভোগের বিনিময় হিসাবে] কিছু দিয়ে দেয়ার কথা উল্লেখ করেননি।

৫৩৫০

ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আছে যে, নাবী (সাঃআঃ) লিআনকারী স্বামী-স্ত্রীকে বলেছিলেন, আল্লাহই তোমাদের হিসাব নিবেন। তোমাদের একজন মিথ্যাবাদী। তার (মহিলার) উপর তোমার কোন অধিকার নেই। সে বললঃ হে আল্লাহর রাসুল! আমার মাল? তিনি বললেনঃ তোমার জন্যে কোন মাল নেই। তুমি যদি সত্যি কথা বলে থাক, তাহলে এ মাল তার লজ্জাস্থানকে হালাল করার বিনিময়ে হইবে। আর যদি মিথ্যা বলে থাক, তবে এটা তুমি মোটেই চাইতে পার না, তুমি তো তার থেকে অনেক দূরে।[৫৩১১; মুসলিম ১৯/হাদীস ১৪৯৩, আহমাদ ৪৫৮৭] আঃপ্রঃ- ৪৯৫০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪৬)


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply