বিয়ের খুৎবাহ , দুআ, ওয়ালীমা, মাহর, উপহার, বাসর করা সম্পর্কে
বিয়ের খুৎবাহ , দুআ, ওয়ালীমা, মাহর, উপহার, বাসর করা সম্পর্কে >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ৬৭, বিয়ে শাদী, অধ্যায়ঃ (৪৮-৭৯)=৪২টি
৬৭/৪৮. অধ্যায়ঃ বিয়ের খুৎবাহ
৬৭/৪৯. অধ্যায়ঃ বিয়ে ও ওয়ালীমায় দফ বাজানো।
৬৭/৫০. অধ্যায়ঃ আল্লাহ তাআলার বাণীঃ এবং তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের সন্তুষ্টচিত্তে মাহর পরিশোধ কর। (সুরা আন-নিসা ৪/৪)
৬৭/৫১. অধ্যায়ঃ কুরআন শিক্ষা দেয়ার বিনিময়ে মাহর ব্যতীত বিবাহ প্রদান।
৬৭/৫২. অধ্যায়ঃ মাহর হিসাবে দ্রব্যসামগ্রী এবং লোহার আংটি।
৬৭/৫৩. অধ্যায়ঃ বিয়েতে শর্তারোপ করা।
৬৭/৫৪. অধ্যায়ঃ বিয়ের সময় মেয়েদের জন্য যেসব শর্তারোপ করা বৈধ নয়।
৬৭/৫৫. অধ্যায়ঃ বরের জন্য সুফ্রা (হলুদ রঙের সুগন্ধি) ব্যবহার করা।
৬৭/৫৬. অধ্যায়ঃ বরের জন্য কিভাবে দোয়া করিতে হইবে।
৬৭/৫৭. অধ্যায়ঃ বরের জন্য কীভাবে দুআ করিতে হইবে।
৬৭/৫৮. অধ্যায়ঃ ঐ নারীদের দোয়া যারা কনেকে সাজায় এবং বরকে উপহার দেয়।
৬৭/৫৯. অধ্যায়ঃ জিহাদে যাবার পূর্বে যে স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হইতে চায়।
৬৭/৬০. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি নয় বছরের মেয়ের সঙ্গে বাসর করে।
৬৭/৬১. অধ্যায়ঃ সফরে বাসর করা সম্পর্কে।
৬৭/৬২. অধ্যায়ঃ শোভাযাত্রা ও মশাল ছাড়া দিবাভাগে বাসর করা।
৬৭/৬৩. অধ্যায়ঃ মহিলাদের জন্য বিছানার চাদর ও বালিশের ওয়ার ব্যবহার করা।
৬৭/৬৪. অধ্যায়ঃ যেসব নারী কনেকে বরের কাছে সাজিয়ে পাঠায় তাদের প্রসঙ্গে।
৬৭/৬৫. অধ্যায়ঃ দুলহীনকে উপঢৌকন প্রদান।
৬৭/৬৬. অধ্যায়ঃ কনের জন্যে পোশাক-পরিচ্ছদ ইত্যাদি ধার করা।
৬৭/৬৭. অধ্যায়ঃ স্ত্রীর কাছে গমনকালে কী বলিতে হইবে?
৬৭/৬৮. অধ্যায়ঃ ওয়ালীমাহ একটি অধিকার।
৬৭/৬৯. অধ্যায়ঃ ওয়ালীমার ব্যবস্থা করিতে হইবে একটা বকরী দিয়ে হলেও।
৬৭/৭০. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তির কোন স্ত্রীর বিয়ের সময় অন্যদেরকে বিয়ের সময়ের ওয়ালীমার চেয়ে বড় ধরণের ওয়ালীমার ব্যবস্থা করা।
৬৭/৭১. অধ্যায়ঃ একটি ছাগলের চেয়ে কম কিছুর দ্বারা ওয়ালীমা করা।
৬৭/৭২. অধ্যায়ঃ ওয়ালীমার দাওয়াত গ্রহণ করা কর্তব্য। যদি কেউ একাধারে সাত দিন অথবা অনুরূপ অধিক দিন ওয়ালীমার ব্যবস্থা করে।
৬৭/৭৩. অধ্যায়ঃ যে দাওয়াত কবূল করে না, সে যেন আল্লাহ এবং তাহাঁর রাসুল (সাঃআঃ) – এর অবাধ্য হল।
৬৭/৭৪. অধ্যায়ঃ বকরীর পায়া খাওয়ানোর জন্যও যদি দাওয়াত করা হয়।
৬৭/৭৫. অধ্যায়ঃ বিয়ে বা অন্যান্য অনুষ্ঠানে দাওয়াত গ্রহন করা।
৬৭/৭৬. অধ্যায়ঃ বরযাত্রীদের সঙ্গে মহিলা ও শিশুদের গমন।
৬৭/৭৭. অধ্যায়ঃ যদি কোন অনুষ্ঠানে দ্বীনের খেলাফ বা অপছন্দনীয় কোন কিছু নজরে আসে,তা হলে ফিরে আসবে কি?
৬৭/৭৮. অধ্যায়ঃ নববধূ কর্তৃক বিয়ে অনুষ্ঠানে খিদমত করা।
৬৭/৭৯. অধ্যায়ঃ আন-নাকী বা অন্যন্য যাতে মাদকতা নেই। এমন শরবত ওয়ালীমাতে পান করানো।
৬৭/৪৮. অধ্যায়ঃ বিয়ের খুৎবাহ
৫১৪৬
ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
পূর্বাঞ্চল থেকে দুব্যক্তি এসে বক্তৃতা দিল। তখন নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, কোন কোন বক্তৃতায় যাদু আছে।(আঃপ্রঃ- ৪৭৬৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৬৯)
৬৭/৪৯. অধ্যায়ঃ বিয়ে ও ওয়ালীমায় দফ বাজানো।
৫১৪৭
রুবাই বিনত মুআব্বিয ইবনু আফরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার বাসর রাতের পরের দিন নাবী (সাঃআঃ) এলেন এবং আমার বিছানার ওপর বসলেন, যেমন বর্তমানে তুমি আমার কাছে বসে আছ। সে সময় আমাদের ছোট মেয়েরা দফ বাজাচ্ছিল এবং বাদরের যুদ্ধে শাহাদাত প্রাপ্ত আমার বাপ-চাচাদের শোকগাঁথা গাচ্ছিল।[১৬] তাদের একজন বলে বসল, আমাদের মধ্যে এক নাবী আছেন, যিনি আগামী দিনের কথা জানেন। তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলিলেন, এ কথা বাদ দাও, আগে যা বলছিলে, তাই বল।(আঃপ্রঃ- ৪৭৬৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৭০)
৬৭/৫০. অধ্যায়ঃ আল্লাহ তাআলার বাণীঃ এবং তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের সন্তুষ্টচিত্তে মাহর পরিশোধ কর। (সুরা আন-নিসা ৪/৪)
আর অধিক মাহর এবং সর্বনিম্ন মাহর কত এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, “এবং তোমরা যদি তাদের একজনকে অগাধ অর্থও দিয়ে থাক, তবুও তা থেকে কিছুই গ্রহণ করো না।” (সুরা আন-নিসা ৪/২০) এবং আল্লাহ তাআলা আরো বলেন, “অথবা তোমরা তাদের মাহরের পরিমাণ নির্দিষ্ট করে দাও।” (সুরা আল-বাকারাহঃ ২/২৩৬)
সাহল (রাদি.) বলেছেন, নাবী (সাঃআঃ) এক ব্যক্তিকে বলিলেন, যদি একটি লোহার আংটিও হয়, তবে মাহর হিসাবে যোগাড় করে দাও।
৫১৪৮
আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবদুর রহমান ইবনু আওফ (রাদি.) কোন এক মহিলাকে বিয়ে করিলেন এবং তাকে মাহর হিসাবে খেজুর দানার পরিমাণ স্বর্ণ দিলেন। যখন নাবী (সাঃআঃ) তার মুখে বিয়ের খুশির ছাপ দেখলেন তখন তাকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিলেন; তখন সে বললঃ আমি এক নারীকে খেজুর আঁটি পরিমাণ স্বর্ণ দিয়ে বিয়ে করেছি। [২০৪৯]
ক্বাতাদাহ আনাস থেকে বর্ণনা করেন যে, আবদুর রহমান বিন আওফ (রাদি.) খেজুরের দানা পরিমাণ স্বর্ণ মাহর হিসাবে দিয়ে কোন মহিলাকে বিয়ে করেন। (আঃপ্রঃ- ৪৭৬৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৭১)
৬৭/৫১. অধ্যায়ঃ কুরআন শিক্ষা দেয়ার বিনিময়ে মাহর ব্যতীত বিবাহ প্রদান।
৫১৪৯
সাহল ইবনু সাদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আমি অন্যান্য লোকের সঙ্গে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – এর কাছে বসা ছিলাম। এমন সময় একজন মহিলা দাঁড়িয়ে বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! আমি নিজেকে আপনার কাছে পেশ করছি, এখন আপনার মতামত দিন। নাবী (সাঃআঃ) কোন উত্তর দিলেন না। এরপর মহিলাটি পুনরায় দাঁড়িয়ে বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! আমি আমার জীবনকে আপনার কাছে পেশ করছি। আপনার মতামত দিন। তিনি কোন উত্তর করিলেন না। তারপর তৃতীয় বারে দাঁড়িয়ে বলিল, আমি আমার জীবন আপনার কাছে সোপর্দ করছি। আপনার মতামত দিন। এরপর একজন লোক দাঁড়িয়ে বলিল, হে আল্লাহর রাসুল, এ মহিলাকে আমার সঙ্গে বিয়ে দিন। তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলিলেন, তোমার কাছে কিছু আছে কি? লোকটি বলিল, না। তিনি বলিলেন, যাও খুঁজে দেখ, একটি লোহার আংটি হলেও নিয়ে এসো। লোকটি চলে গেল এবং খুঁজে দেখল। এরপর এসে বলিল, আমি কিছুই পেলাম না; এমনকি একটি লোহার আংটিও না। নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, তোমার কি কিছু কুরআন জানা আছে? সে বলিল, অমুক অমুক সুরা আমার মুখস্থ আছে। নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, তোমার যে পরিমাণ কুরআন মুখস্থ আছে, তার বিনিময়ে এ মহিলাকে তোমার সঙ্গে বিয়ে দিলাম।(আঃপ্রঃ- ৪৭৬৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৭২)
৬৭/৫২. অধ্যায়ঃ মাহর হিসাবে দ্রব্যসামগ্রী এবং লোহার আংটি।
৫১৫০
সাহল ইবনু সাদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) এক ব্যক্তিকে বলিলেন, তুমি বিয়ে কর একটি লোহার আংটির বিনিময়ে হলেও।(আঃপ্রঃ- ৪৭৭০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৭৩)
৬৭/৫৩. অধ্যায়ঃ বিয়েতে শর্তারোপ করা।
উমার (রাদি.) বলেছেন, কোন চুক্তির শর্ত নির্ধারণ করলেই অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। মিস্ওয়ার (রাদি.) বলেন, নাবী (সাঃআঃ) তাহাঁর এক জামাতার প্রশংসা করে বলেছেন যে, যখন সে আমার সঙ্গে কথা বলেছে, সত্য বলেছে। যখন সে ওয়াদা করেছে, তখন ওয়াদা রক্ষা করেছে।
৫১৫১
উক্বাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, সকল শর্তের চেয়ে বিয়ের শর্ত পালন করা তোমাদের অধিক কর্তব্য এজন্য যে, এর মাধ্যমেই তোমাদেরকে স্ত্রী অঙ্গ ভোগ করার অধিকার দেয়া হয়েছে।(আঃপ্রঃ- ৪৭৭১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৭৪)
৬৭/৫৪. অধ্যায়ঃ বিয়ের সময় মেয়েদের জন্য যেসব শর্তারোপ করা বৈধ নয়।
ইবনু মাসঊদ (রাদি.) বলেন, একজন নারীর জন্য এরূপ শর্তারোপ করা বৈধ নয় যে, সে তার (মুসলিম) বোনকে (অর্থাৎ আগের স্ত্রীকে) ত্বলাক্ব দেয়ার কথা বলবে।
৫১৫২
আবু হুরায়রা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন, বিয়ের সময় কোন নারীর জন্য এরূপ শর্তারোপ করা বৈধ নয় যে, তার বোনের (আগের স্ত্রীর) ত্বালাক্ব দাবি করিবে, যাতে সে তার পাত্র পূর্ণ করে নিতে পারে (একচেটিয়া অধিকার ভোগ করিতে পারে) কেননা, তার ভাগ্যে যা নির্দিষ্ট আছে তাই সে পাবে।(আঃপ্রঃ- ৪৭৭২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৭৫)
৬৭/৫৫. অধ্যায়ঃ বরের জন্য সুফ্রা (হলুদ রঙের সুগন্ধি) ব্যবহার করা।
আবদুর রহমান ইবনু আওফ (রাদি.) নাবী (সাঃআঃ) থেকে বর্ণনা করিয়াছেন।
৫১৫৩
আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আবদুর রহমান ইবনু আওফ (রাদি.) রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর নিকটে এমন অবস্থায় এলেন যে, তার সুফরার (হলুদ রঙ) চিহ্ন ছিল। রাসুল (সাঃআঃ) তাকে চিহ্ন সম্পর্কে প্রশ্ন করিলেন। আবদুর রাহমান ইবনু আওফ (রাদি.) তার উত্তরে বলিলেন, তিনি এক আনসারী নারীকে বিয়ে করিয়াছেন। নাবী (সাঃআঃ) জিজ্ঞেস করিলেন, তুমি তাকে কী পরিমাণ মাহর দিয়েছ? তিনি বলিলেন, আমি তাকে খেজুরের আঁটি পরিমাণ স্বর্ণ দিয়েছি। নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, ওয়ালীমার ব্যবস্থা কর একটি বকরী দিয়ে হলেও।[২০৪৯; মুসলিম ১৬/১২, হাদীস ১৪২৭, আহমাদ ১৩৩৬৯](আঃপ্রঃ- ৪৭৭৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৭৬)
৬৭/৫৬. অধ্যায়ঃ বরের জন্য কিভাবে দোয়া করিতে হইবে।
৫১৫৪
আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) যয়নাব (রাদি.) – এর বিয়েতে ওয়ালীমার ব্যবস্থা করেন এবং মুসলিমদের জন্য উত্তম খাদ্যের ব্যবস্থা করেন। তারপর তাহাঁর বিয়ের সময়ের নিয়ম মত তিনি বাইরে আসেন এবং উম্মুল মুমিনীনদের গৃহে প্রবেশ করে তাদের জন্য দোয়া করেন এবং তাঁরাও তাহাঁর জন্য দোয়া করেন। এরপরে ফিরে এসে তিনি দেখলেন, দুজন লোক বসে আছে। এরপর তিনি ফিরে গেলেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমার মনে নেই আমি তাঁকে ঐ লোক দুটি চলে যাবার সংবাদ দিয়েছিলাম, না অন্য মাধ্যমে তিনি খবর পেয়েছিলেন।(আঃপ্রঃ- ৪৭৭৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৭৭)
৬৭/৫৭. অধ্যায়ঃ বরের জন্য কীভাবে দুআ করিতে হইবে।
৫১৫৫
আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) আবদুর রহমান ইবনু আওফ (রাদি.) – এর দেহে সুফ্রার (হলুদ রঙ) চিহ্ন দেখিতে পেয়ে বলিলেন, এ কী? আবদুর রহমান (রাদি.) বলিলেন, আমি এক মহিলাকে একটি খেজুরের আঁটি পরিমাণ স্বর্ণের বিনিময়ে বিয়ে করেছি। নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, আল্লাহ তাআলা তোমার এ বিয়েতে বারাকাত দান করুন। তুমি একটি ছাগলের দ্বারা হলেও ওয়ালীমার ব্যবস্থা কর।(আঃপ্রঃ- ৪৭৭৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৭৮)
৬৭/৫৮. অধ্যায়ঃ ঐ নারীদের দোয়া যারা কনেকে সাজায় এবং বরকে উপহার দেয়।
৫১৫৬
আয়িশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
যখন নাবী (সাঃআঃ) আমাকে বিয়ে করেন তখন আমার মা আমার কাছে এলেন এবং আমাকে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করালেন, আমি সেখানে কয়েকজন আনসারী মহিলাকে দেখলাম। তারা কল্যাণ, বারাকাত ও সৌভাগ্য কামনা করে দুআ করছিলেন।(আঃপ্রঃ- ৪৭৭৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৭৯)
৬৭/৫৯. অধ্যায়ঃ জিহাদে যাবার পূর্বে যে স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হইতে চায়।
৫১৫৭
আবু হুরায়রা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) বলেন, নাবীগণের মধ্য থেকে কোন একজন নাবী জিহাদের জন্য বের হলেন এবং নিজ লোকদেরকে বলিলেন, ঐ ব্যক্তি যেন আমার সঙ্গে জিহাদে না যায়, যে বিয়ে করেছে এবং স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হইতে চায় অথচ এখনও মিলন হয়নি। (আঃপ্রঃ- ৪৭৭৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৮০)
৬৭/৬০. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি নয় বছরের মেয়ের সঙ্গে বাসর করে।
৫১৫৮
উরওয়া (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন নাবী (সাঃআঃ) আয়িশা (রাদি.) – কে বিয়ে করেন তখন তাহাঁর বয়স ছিল ছয় বছর এবং যখন বাসর করেন তখন তাহাঁর বয়স ছিল নয় বছর এবং নয় বছর তিনি নাবী (সাঃআঃ) – এর সঙ্গে জীবন কাটান।(আঃপ্রঃ- ৪৭৭৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৮১)
৬৭/৬১. অধ্যায়ঃ সফরে বাসর করা সম্পর্কে।
৫১৫৯
আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) তিনদিন মদীনা এবং খায়বরের মধ্যবর্তী কোন স্থানে অবস্থান করেন। সেখানে তিনি সফিয়্যাহ বিনতে হুইয়াই (রাদি.) – এর সঙ্গে মিলিত হন। এরপর আমি মুসলিমদেরকে ওয়ালীমার জন্য দাওয়াত করি, তাতে রুটি ও গোশত ছিল না। নাবী (সাঃআঃ) চামড়ার দস্তরখান বিছাবার জন্য আদেশ করিলেন এবং তাতে খেজুর, পনির এবং মাখন রাখা হল। এটাই রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – এর ওয়ালীমা। মুসলিমেরা একে অপরকে বলিতে লাগল, সফীয়্যাহ কি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – এর স্ত্রী হিসাবে গণ্য হইবেন, না ক্রীতদাসী হিসাবে। সকলে বলিল, নাবী (সাঃআঃ) যদি তাকে পর্দার ভিতরে রাখেন তাহলে তিনি ইম্মুহাতুল মুমিনীনদের মধ্যে গণ্য হইবেন। আর যদি পর্দায় না রাখেন, তাহলে ক্রীতদাসী হিসাবে গণ্য হইবে। এরপর যখন নাবী (সাঃআঃ) রওয়ানা হলেন, তাকে উটের পিঠে তাহাঁর পেছনে বসালেন এবং তার জন্য লোকদের থেকে পর্দার ব্যবস্থা করিলেন। (আঃপ্রঃ- ৪৭৭৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৮২)
৬৭/৬২. অধ্যায়ঃ শোভাযাত্রা ও মশাল ছাড়া দিবাভাগে বাসর করা।
৫১৬০
আয়িশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) যখন আমাকে বিয়ে করার পর আমার আম্মা আমার কাছে এলেন এবং আমাকে নাবী (সাঃআঃ) – এর ঘরে নিয়ে গেলেন। দুপুর বেলা আমার কাছে তাহাঁর আগমন ব্যতীত আর কিছুই আমাকে বিস্মিত করেনি।(আঃপ্রঃ- ৪৭৮০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৮৩)
৬৭/৬৩. অধ্যায়ঃ মহিলাদের জন্য বিছানার চাদর ও বালিশের ওয়ার ব্যবহার করা।
৫১৬১
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, তোমরা কি বিছানার চাদর ব্যবহার করেছ? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! বিছানার চাদর কোথায় পাব? নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, খুব শীঘ্রই এগুলো পেয়ে যাবে।(আঃপ্রঃ- ৪৭৮১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৮৪)
৬৭/৬৪. অধ্যায়ঃ যেসব নারী কনেকে বরের কাছে সাজিয়ে পাঠায় তাদের প্রসঙ্গে।
৫১৬২
আয়িশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
কোন এক আনসারীর জন্য এক মহিলাকে বিয়ের কনে হিসাবে সাজালে নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, হে আয়িশা! এতে আনন্দ ফূর্তির ব্যবস্থা করনি? আনসারগণ এ সব আনন্দ-ফূর্তি পছন্দ করে।(আঃপ্রঃ- ৪৭৮২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৮৫)
৬৭/৬৫. অধ্যায়ঃ দুলহীনকে উপঢৌকন প্রদান।
৫১৬৩
আবু উসমান হইতে বর্ণিতঃ
একদিন আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) আমাদের বানী রিফাআর মসজিদের নিকট গমনকালে তাকে এ কথা বলিতে শুনিয়াছি যে, যখনই উম্মু সুলায়মের নিকট দিয়ে নাবী (সাঃআঃ) যেতেন, তাঁকে সালাম দিতেন। আনাস (রাদি.) আরো বলেন, নাবী (সাঃআঃ) – এর যখন যাইনাব (রাদি.) – এর সঙ্গে বিয়ে হয়, তখন উম্মু সুলায়ম আমাকে বলিলেন, চল আমরা রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – এর জন্যে কিছু হাদীয়া পাঠাই। আমি তাকে বললাম, হ্যাঁ, এ ব্যবস্থা করুন। তখন তিনি খেজুর, মাখন ও পনির এক সঙ্গে মিশিয়ে হালুয়া বানিয়ে একটি ডেকচিতে করে আমাকে দিয়ে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – এর কাছে পাঠালেন। আমি সেসব নিয়ে তাহাঁর কাছে উপস্থিত হলে তিনি এগুলো রেখে দিতে বলেন এবং আমাকে কয়েকজন লোকের নাম উল্লেখ করে ডেকে আনার আদেশ করেন। আরো বলেন, যার সঙ্গে দেখা হয় তাকেও দাওয়াত দিবে। তিনি যেভাবে আমাকে হুকুম করিলেন, আমি সেভাবে কাজ করলাম। যখন আমি ফিরে এলাম, তখন ঘরে আনেক লোক দেখিতে পেলাম। নাবী (সাঃআঃ) তখন হালুয়া (হাইশ) পাত্রের মধ্যে হাত রাখা অবস্থায় ছিলেন এবং আল্লাহ তাআলার মর্জি মোতাবেক কিছু কথা বলিলেন। তারপর তিনি দশ দশ জন করে লোক খাওয়ার জন্য ডাকলেন এবং বলিলেন, তোমরা বিসমিল্লাহ বলে খাওয়া শুরু কর এবং প্রত্যেকে পাত্রের নিজ নিজ দিক হইতে খাও। যখন তাদের খাওয়া-দাওয়া শেষ হল তাদের মধ্য থেকে অনেকেই চলে গেল এবং কিছু সংখ্যক লোক কথাবার্তা বলিতে থাকল। যা দেখে আমি বিরক্তি বোধ করলাম। তারপর নাবী (সাঃআঃ) সেখান থেকে বের হয়ে অন্য ঘরে গেলেন। আমিও সেখান থেকে বেরিয়ে এলাম। যখন আমি বললাম, তারাও চলে গেছে তখন তিনি নিজের কক্ষে ফিরে এলেন এবং পর্দা ফেলে দিলেন। তিনি তাহাঁর কক্ষে থাকলেন এবং এই আয়াত পাঠ করলেনঃ “তোমরা যারা ঈমান এনেছ শোন! নাবীগৃহে প্রবেশ কর না যতক্ষণ না তোমাদেরকে অনুমতি দেয়া হয় খাদ্য গ্রহণের জন্য, (আগেভাগেই এসে পড় না) খাদ্য প্রস্তুতির জন্য অপেক্ষা করে যেন বসে থাকতে না হয়। তবে তোমাদেরকে ডাকা হলে তোমরা প্রবেশ কর। অতঃপর তোমাদের খাওয়া হলে তোমরা চলে যাও। কথাবার্তায় মশগুল হয়ে যেয়ো না। তোমাদের এ কাজ নাবীকে কষ্ট দেয়। সে তোমাদেরকে (উঠে যাওয়ার জন্য বলিতে) লজ্জাবোধ করে, আল্লাহ সত্য কথা বলিতে লজ্জাবোধ করেন না।” (সুরা আল-আহযাব ৩৩: ৫৩) আবু উসমান (রাদি.) বলেন, আনাস (রাদি.) বলেছেন যে, তিনি দশ বছর নাবী (সাঃআঃ) – এর খিদমাত করিয়াছেন।[৪৭৯১; মুসলিম ১৬/১৩, হাদীস ১৪২৮]
৬৭/৬৬. অধ্যায়ঃ কনের জন্যে পোশাক-পরিচ্ছদ ইত্যাদি ধার করা।
৫১৬৪
আয়িশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন যে, তিনি আসমা (রাদি.) থেকে গলার একছড়া হার ধার হিসাবে এনেছিলেন। এরপর তা হারিয়ে যায়। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাহাঁর কয়েকজন সাহাবীকে তা খোঁজ করে বের করার জন্য পাঠালেন। এমন সময় সলাতের ওয়াক্ত হয়ে গেলে তারা বিনা ওযূতে সলাত আদায় করিলেন। এরপর যখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – এর খেদমতে হাযির হয়ে অভিযোগ করিলেন, তখন তায়াম্মুমের আয়াত অবতীর্ণ হল। উসায়দ ইবনু হুযায়র (রাদি.) বলিলেন, [হে আয়িশা (রাদি.)!] আল্লাহ আপনাকে উত্তম পুরষ্কার দান করুন! কারণ যখনই আপনার ওপর কোন অসুবিধা আসে, তখনই আল্লাহ তাআলার তরফ থেকে তা আপনার জন্য বিপদমুক্তির ও উম্মাতের জন্য বারাকাতের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।(আঃপ্রঃ- ৪৭৮৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৮৬)
৬৭/৬৭. অধ্যায়ঃ স্ত্রীর কাছে গমনকালে কী বলিতে হইবে?
৫১৬৫
ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে কেউ যখন যৌন সঙ্গম করে, তখন যেন সে বলে, “বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা জান্নিবনিশ শায়তানা ওয়া জান্নিবিশ শায়তানা মা রাযাকতানা”- আল্লাহর নামে শুরু করছি, হে আল্লাহ! আমাকে তুমি শয়তান থেকে দূরে রাখ এবং আমাকে তুমি যা দান করিবে তা থেকে শয়তানকে দূরে রাখ। এরপরে যদি তাদের দুজনের মাঝে কিছু ফল দেয়া হয় অথবা বাচ্চা পয়দা হয়, তাকে শয়তান কখনো ক্ষতি করিতে পারবে না।(আঃপ্রঃ- ৪৭৮৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৮৭)
৬৭/৬৮. অধ্যায়ঃ ওয়ালীমাহ একটি অধিকার।
আবদুর রহমান ইবনু আওফ (রাদি.) বলেছেন, নাবী (সাঃআঃ) আমাকে বলিলেন, ওয়ালীমার ব্যবস্থা কর, একটি বকরী দিয়ে হলেও।
৫১৬৬
আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন নাবী (সাঃআঃ) মদীনায় আসেন তখন আমার বয়স দশ বছর ছিল। আমার মা, চাচী ও ফুফুরা আমাকে রাসুল (সাঃআঃ) – এর খাদিম হবার জন্য উৎসাহিত করেছিলেন। এরপর আমি দশ বছরকাল তাহাঁর খেদমত করি। যখন নাবী (সাঃআঃ) – এর ইন্তিকাল হয় তখন আমার বয়স ছিল বিশ বছর। আমি পর্দা সম্পর্কে অন্যদের চেয়ে অধিক জানি। পর্দা সম্পর্কীয় প্রাথমিক আয়াতসমূহ যয়নাব বিনতে জাহাশ (রাদি.) – এর সঙ্গে নাবী (সাঃআঃ) – এর বাসর রাত যাপনের সময় অবতীর্ণ হয়েছিল। সেদিন সকাল বেলা নাবী (সাঃআঃ) দুলহা ছিলেন এবং লোকদেরকে ওয়ালীমার দাওয়াত করিলেন। সুতরাং তাঁরা এসে খানা খেলেন। কিছু লোক ব্যতীত সবাই চলে গেলেন। তাঁরা দীর্ঘ সময় অবস্থান করিলেন। তারপর নাবী (সাঃআঃ) উঠে বাইরে গেলেন। আমিও তাহাঁর পিছু পিছু চলে এলাম, যাতে করে অন্যেরাও বের হয়ে আসে। নাবী (সাঃআঃ) সামনের দিকে এগিয়ে গেলেন, এমন কি তিনি আয়িশা (রাদি.) – এর কক্ষের নিকট পর্যন্ত গেলেন, এরপরে বাকি লোকগুলো হয়ত চলে গেছে এ কথা ভেবে তিনি ফিরে এলেন, আমিও তাহাঁর সঙ্গে ফিরে এলাম। নাবী (সাঃআঃ) যাইনাব (রাদি.) – এর কক্ষে প্রবেশ করে দেখিতে পেলেন যে, লোকগুলো বসে রহিয়াছে – চলে যায়নি। সুতরাং নাবী (সাঃআঃ) পুনরায় বাইরে বেরুলেন এবং আমি তাহাঁর সঙ্গে এলাম। যখন আমরা আয়িশা (রাদি.) -এর কক্ষের নিকট পর্যন্ত পৌঁছলাম, তিনি ভাবলেন যে, এতক্ষণে হয়ত লোকগুলো চলে গেছে। তিনি ফিরে এলেন। আমিও তাহাঁর সঙ্গে ফিরে এসে দেখলাম যে, লোকগুলো চলে গেছে। এরপর নাবী (সাঃআঃ) আমার ও তাহাঁর মাঝখানে একটি পর্দা টেনে দিলেন। এ সময় পর্দার আয়াত অবতীর্ণ হল।(আঃপ্রঃ- ৪৭৮৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৮৮)
৬৭/৬৯. অধ্যায়ঃ ওয়ালীমার ব্যবস্থা করিতে হইবে একটা বকরী দিয়ে হলেও।
৫১৬৭
আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবদুর রহমান ইবনু আওফ (রাদি.) একজন আনসারী মহিলাকে বিয়ে করিলেন। নাবী (সাঃআঃ) জিজ্ঞেস করিলেন, কী পরিমাণ মাহর দিয়েছ? তিনি উত্তর করিলেন, খেজুরের আঁটি পরিমাণ স্বর্ণ দিয়েছি। আনাস (রাদি.) আরও বলেন, যখন নাবী (সাঃআঃ) – এর সাহাবীগণ মদীনায় আসলেন, তখন মুহাজিরগণ আনসারদের গৃহে অবস্থান করিতেন। আবদুর রহমান ইবনু আওফ (রাদি.) সাদ ইবনু রাবী (রাদি.)-এর গৃহে অবস্থান করিতেন। সাদ (রাদি.) আবদুর রহমান (রাদি.) – কে বলিলেন, আমি আমার বিষয়-সম্পত্তি দুভাগ করে আমারা উভয়ে সমান ভাগে ভাগ করে নেব এবং আমি আমার দু স্ত্রীর মধ্যে একজন তোমাকে দেব। আবদুর রহমান (রাদি.) বলিলেন, আল্লাহ তোমার সম্পত্তি ও স্ত্রীতে বারকাত দান করুন। তারপর আবদুর রহমান (রাদি.) বাজারে গেলেন এবং ব্যবসা করিতে লাগলেন এবং লাভ হিসেবে কিছু পনির ও ঘি পেলেন এবং বিয়ে করিলেন। নাবী (সাঃআঃ) তাঁকে বলিলেন, একটি ছাগল দিয়ে হলেও ওয়ালীমাহ কর।(আঃপ্রঃ- ৪৭৮৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৮৯)
৫১৬৮
আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) যখন বিয়ে করেন, তখন ওয়ালীমা করেন, কিন্তু যাইনাব (রাদি.) – এর বিয়ের সময় যে পরিমাণ ওয়ালীমার ব্যবস্থা করেছিলেন, তা অন্য কারো বেলায় করেননি। সেই ওয়ালীমা ছিল একটি ছাগল দিয়ে।(আঃপ্রঃ- ৪৭৮৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৯০)
৫১৬৯
আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বর্ণনা করেন যে, নাবী (সাঃআঃ) সাফিয়্যাহ (রাদি.) – কে আযাদ করে বিয়ে করেন এবং এই আযাদ করাকেই তাহাঁর মাহর নির্দিষ্ট করেন এবং তার হায়স (এক প্রকার সুস্বাদু হালুয়া) দ্বারা ওয়ালীমাহর ব্যবস্থা করেন।(আঃপ্রঃ- ৪৭৮৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৯১)
৫১৭০
আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) তাহাঁর এক সহধর্মিণীর সঙ্গে বাসর ঘরের ব্যবস্থা করিলেন এবং ওয়ালীমার দাওয়াত দেয়ার জন্য আমাকে পাঠালেন।(আঃপ্রঃ- ৪৭৮৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৯২)
৬৭/৭০. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তির কোন স্ত্রীর বিয়ের সময় অন্যদেরকে বিয়ের সময়ের ওয়ালীমার চেয়ে বড় ধরণের ওয়ালীমার ব্যবস্থা করা।
৫১৭১
আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
যায়নাবের বিয়ের আলোচনায় আনাস (রাদি.) উপস্থিত হয়ে তিনি বলিলেন, যায়নাব বিনতে জাহাশের সঙ্গে নাবী (সাঃআঃ) – এর বিয়ের সময় যে ওয়ালীমার ব্যবস্থা করা হয়েছিল, তার চেয়ে বড় ওয়ালীমার ব্যবস্থা তাহাঁর অন্য কোন স্ত্রীর বিয়েতে আমি দেখিনি। এতে তিনি একটি ছাগল দ্বারা ওয়ালীমা করেন।(আঃপ্রঃ- ৪৭৯০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৯৩)
৬৭/৭১. অধ্যায়ঃ একটি ছাগলের চেয়ে কম কিছুর দ্বারা ওয়ালীমা করা।
৫১৭২
সফীয়্যাহ বিনতে শাইবাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) তাহাঁর কোন এক স্ত্রীর বিয়েতে দুই মুদ (চার সের) যব দ্বারা ওয়ালীমার ব্যবস্থা করেন।(আঃপ্রঃ- ৪৭৯১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৯৪)
৬৭/৭২. অধ্যায়ঃ ওয়ালীমার দাওয়াত গ্রহণ করা কর্তব্য। যদি কেউ একাধারে সাত দিন অথবা অনুরূপ অধিক দিন ওয়ালীমার ব্যবস্থা করে।
কেননা নাবী (সাঃআঃ) ওয়ালীমার সময় এক বা দু দিন ধার্য করেননি।
৫১৭৩
আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, তোমাদের কাউকে ওয়ালীমার দাওয়াত করা হলে তা অবশ্যই গ্রহণ করিবে।[৫১৭৯; মুসলিম ১৬/১৫, হাদীস ১৪২৯, আহমাদ ৪৯৪৯](আঃপ্রঃ- ৪৭৯২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৯৫)
৫১৭৪
আবু মূসা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন, বন্দীদেরকে মুক্তি দাও, দাওয়াত কবুল কর এবং রোগীদের সেবা কর।(আঃপ্রঃ- ৪৭৯৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৯৬)
৫১৭৫
বারাআ ইবনু আযিব (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) আমাদেরকে সাতটি কাজ করিতে বলেছেন এবং সাতটি কাজ করিতে নিষেধ করিয়াছেন। তিনি আমাদেরকে রোগীর সেবা করার, জানাযায় অংশগ্রহণ করার, হাঁচি দিলে তার জবাব দেয়ার, কসম পুরা করায় সহযোগিতা করার, মজলুমকে সাহায্য করার, সালামের বিস্তার করার এবং কেউ দাওয়াত দিলে তা কবূল করার নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া তিনি আমাদের নিষেধ করিয়াছেন স্বর্ণের আংটি পরতে, রুপার পাত্র ব্যবহার করিতে, ঘোড়ার পিঠের ওপরে রেশমী গদি ব্যবহার করিতে এবং কাস্সিয়া বা পাতলা রেশমী কাপড় এবং দ্বিবাজ ব্যবহার করিতে। আবু আওয়ানাহ এবং শায়বানী আশ্আস সূত্রে সালামের বিস্তারের কথা সমর্থন করে বর্ণনা করেন।(আঃপ্রঃ- ৪৭৯৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৯৭)
৫১৭৬
সাহল ইবনু সাদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
বর্ণিত। তিনি বলেন, আবু উসায়দা আস্ সাঈদী (রাদি.) নাবী (সাঃআঃ) – কে তার বিয়ে উপলক্ষে ওয়ালীমায় দাওয়াত করিলেন। তাহাঁর নববধূ সেদিন খাদ্য পরিবেশন করছিলেন। সাহল বলেন, তোমরা কি জান, সে দিন নাবী (সাঃআঃ) – কে কী পানীয় দেয়া হয়েছিল? সারারাত ধরে কিছু খেজুর পানির মধ্যে ভিজিয়ে রেখে তা থেকে তৈরি পানীয়। নাবী (সাঃআঃ) যখন খাওয়া শেষ করিলেন, তখন তাঁকে ঐ পানীয়ই পান করিতে দেয়া হল। [৫১৮২, ৫১৮৩, ৫৫৯১, ৫৫৯৭, ৬৬৮৫; মুসলিম ৩৬/৯, হাদীস ২০০৬, আহমাদ ৭২৮৩](আঃপ্রঃ- ৪৭৯৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৯৮)
৬৭/৭৩. অধ্যায়ঃ যে দাওয়াত কবূল করে না, সে যেন আল্লাহ এবং তাহাঁর রাসুল (সাঃআঃ) – এর অবাধ্য হল।
৫১৭৭
আবু হুরায়রা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যে ওয়ালীমায় কেবল ধনীদেরকে দাওয়াত করা হয় এবং গরীবদেরকে দাওয়াত করা হয় না সেই ওয়ালীমা সবচেয়ে নিকৃষ্ট। যে ব্যক্তি দাওয়াত কবুল করে না, সে আল্লাহ এবং তাহাঁর রাসুল (সাঃআঃ) – এর সঙ্গে অবাধ্যতা করে। [মুসলিম ১৬/১৪, হাদীস ১৪৩২, আহমাদ ৭২৮৩] (আঃপ্রঃ- ৪৭৯৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৯৯)
৬৭/৭৪. অধ্যায়ঃ বকরীর পায়া খাওয়ানোর জন্যও যদি দাওয়াত করা হয়।
৫১৭৮
আবু হুরায়রা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) বলেনঃ আমাকে পায়া খেতে দাওয়াত দেয়া হলে আমি তা কবুল করব এবং আমাকে যদি কেউ পায়া হাদীয়া দেয়, তবে আমি তা অবশ্যই গ্রহন করব।(আঃপ্রঃ- ৪৭৯৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮০০)
৬৭/৭৫. অধ্যায়ঃ বিয়ে বা অন্যান্য অনুষ্ঠানে দাওয়াত গ্রহন করা।
৫১৭৯
আব্দুল্লাহ ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন যে, নাবী (সাঃআঃ) ইরশাদ করেন, যদি তোমাদেরকে বিয়ে অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেয়া হয়, তবে তা রক্ষা কর। নাফি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাদি.) – এর নিয়ম ছিল, তিনি সওমরত অবস্থাতেও বিয়ের বা অন্য কোন দাওয়াত রক্ষা করিতেন। (আঃপ্রঃ- ৪৭৯৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮০১)
৬৭/৭৬. অধ্যায়ঃ বরযাত্রীদের সঙ্গে মহিলা ও শিশুদের গমন।
৫১৮০
আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা নাবী (সাঃআঃ) কিছু সংখ্যক মহিলা এবং শিশুকে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে ফিরতে দেখলেন। তিনি আনন্দে দাঁড়িয়ে গেলেন এবং বলিলেন, আমি আল্লাহর নামে বলছি, তোমরা সকল মানুষের চেয়ে আমার কাছে প্রিয়।(আঃপ্রঃ- ৪৭৯৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮০২)
৬৭/৭৭. অধ্যায়ঃ যদি কোন অনুষ্ঠানে দ্বীনের খেলাফ বা অপছন্দনীয় কোন কিছু নজরে আসে,তা হলে ফিরে আসবে কি?
ইবনু মাসঊদ (রাদি.) কোন এক বাড়িতে (প্রাণীর) ছবি দেখে ফিরে এলেন।
ইবনু উমার (রাদি.) আবু আইয়ূব (রাদি.) – কে দাওয়াত করে বাড়িতে আনলেন। তিনি এসে ঘরের দেয়ালের পর্দায় ছবি দেখিতে পেলেন। এরপর ইবনু উমার (রাদি.) এ ব্যাপারে বলিলেন, মহিলাদের সঙ্গে পেরে উঠিনি। আবু আইয়ূব (রাদি.) বল্লেন, আমি যাদের সম্পর্কে আশংকা করে ছিলাম, তাতে আপনার ব্যাপারে আশঙ্কা করিনি। আল্লাহর কসম, আমি আপনার ঘরে কোন খাদ্য খাব না। এরপর তিনি চলে গেলেন।
৫১৮১
নাবী (সাঃআঃ) – এর সহধর্মিণী আয়িশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি একটি বালিশ বা গদি কিনে এনেছিলাম, যার মধ্যে ছবি ছিল। যখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) সেই ছবিটি দেখলেন, তিনি দরজার বাহিরে দাঁড়িয়ে গেলেন; ভিতরে প্রবেশ করিলেন না। আমি বুঝতে পারলাম যে, তাহাঁর চোখে এটা অত্যন্ত অপছন্দনীয় ব্যাপার। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমি আল্লাহর কাছে তাওবাহ করছি এবং তাহাঁর রাসূলের কাছে ফিরে আসছি। আমি কী অন্যায় করেছি? তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলিলেন, এ বালিশ কিসের জন্য? আমি বললাম, এটা আপনার জন্য খরিদ করে এনেছি, যাতে আপনি বসতে পারেন এনং হেলেন দিতে পারেন। তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলিলেন, এই ছবি নির্মাতাকে ক্বিয়ামতের দিন শাস্তি প্রদান করা হইবে এবং বলা হইবে, যা তুমি সৃষ্টি করেছ তার প্রাণ দাও এনং তিনি আরও বলেন, যে ঘরে প্রাণীর ছবি থাকে সে ঘরে ফেরেশতা প্রবেশ করে না।(আঃপ্রঃ- ৪৮০০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮০৩)
৬৭/৭৮. অধ্যায়ঃ নববধূ কর্তৃক বিয়ে অনুষ্ঠানে খিদমত করা।
৫১৮২
সাহল (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন আবু উসায়দ আস্সাঈদী (রাদি.) তাহাঁর ওয়ালীমায় নাবী (সাঃআঃ) এবং তাহাঁর সাহাবীগণকে দাওয়াত দিলেন, তখন তাহাঁর নববধূ উম্মু উসায়দ ব্যতীত আর কেউ সে খাদ্য প্রস্তুত এবং পরিবেশন করেননি। তিনি একটি পাথরের পাত্রে সারা রাত পানির মধ্যে খেজুর ভিজিয়ে রাখেন। যখন (সাঃআঃ) খওয়া-দাওয়া শেষ করেন, তখন সেই তোহফা নাবী (সাঃআঃ) – কে পান করান।(আঃপ্রঃ- ৪৮০১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮০৪)
৬৭/৭৯. অধ্যায়ঃ আন-নাকী বা অন্যন্য যাতে মাদকতা নেই। এমন শরবত ওয়ালীমাতে পান করানো।
৫১৮৩
সাহল ইবনু সাদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবু উসায়দ আস্সাঈদী (রাদি.) তাহাঁর ওয়ালীমায় নাবী (সাঃআঃ) – কে দাওয়াত দেন। তাহাঁর নববধূ সেদিন নাবী (সাঃআঃ) – কে খাদ্য এবং পানীয় পরিবেশন করেন। সাহল (রাদি.) বলেন, তোমরা কি জান সেই নববধূ রাসুল (সাঃআঃ) – কে কী পান করিয়েছিলেন। তিনি নাবী (সাঃআঃ) – এর জন্য একটি পানপাত্রে কিছু খেজুর সারারাত ধরে ভিজিয়ে রেখেছিলেন।(আঃপ্রঃ- ৪৮০২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮০৫)
Leave a Reply