সুরা ইউসুফ তাফসীর

সুরা ইউসুফ তাফসীর

সুরা ইউসুফ তাফসীর >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন >> >> সুরা ইউসুফ আরবি তে পড়ুন বাংলা অনুবাদ সহ

সুরা ইউসুফ তাফসীর

৬৫/১২/১.অধ্যায়ঃ আল্লাহ তাআলার বাণীঃ
৬৫/১২/২.অধ্যায়ঃ আল্লাহ তাআলার বাণীঃ ইউসুফ ও তার ভাইদের কাহিনীতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে জিজ্ঞাসুদের জন্য। (সুরা ইউসুফ ১২/৭)
৬৫/১২/৩.অধ্যায়ঃ আল্লাহ তাআলার বাণীঃ (না, ইউসুফকে বাঘে খায়নি) বরং তোমরা নিজেদের মন থেকে একটি কাহিনী সাজিয়ে নিয়েছ। ধৈর্য ধারণ করাই উত্তম। (সুরা ইউসুফ ১২/১৮)
৬৫/১২/৪.অধ্যায়ঃ
৬৫/১২/৫.অধ্যায়ঃ
৬৫/১২/৬.অধ্যায়ঃ আল্লাহ তাআলার বাণীঃ এমনকি যখন রাসুলগণ নিরাশ হয়ে গেলেন। (সুরা ইউসুফ ১২/১১০)

৬৫/১২/১.অধ্যায়ঃ আল্লাহ তাআলার বাণীঃ

সুরা (১২) : ইউসুফ (আঃ)

ফুযায়ল (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হুসায়ন (র.) মুজাহিদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, مُتْكَاءً (এক জাতীয়) লেবু এবং ফুযায়ল (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন যে, مُتْكًا হাবশী ভাষায় (এক জাতীয়) লেবুকে বলা হয়। ইবনু উয়াইনাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) …… মুজাহিদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) থেকে বর্ণনা করেন যে, مُتْكًا ঐ সব, যা চাকু দিয়ে কাটা হয়। ক্বাদাতাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, لَذُوْعِلْمٍ সে আলিম, যে তার ইল্মের উপর আমাল করে। ইবনু যুবায়র (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, صُوَاعٌ ফারসী মাপ-পাত্র, যার উভয় পাশ মিলানো থাকে; আজমীগণ এটা দিয়ে পানি পান করে। ইবনু আববাস (রাদি.) বলেন, تُفَنِّدُوْنِ আমাকে মূর্খ মনে কর। অন্য হইতে বর্ণিতঃ غَيَابَةٌ যেসব বস্তু তোমা হইতে গোপন রয়েছে। وَالْجُبُّ ঐ কূপকে বলে যার মুখ বাঁধা হয়নি। بِمُؤْمِنٍلَنَا তুমি আমার কথায় বিশ্বাসী। بِمُؤْمِنٍلَنَا অধোগতি শুরু হওয়ার আগের বয়স। বলা হয় بَلَغَ أَشُدَّهُ وَبَلَغُوْا أَشُدَّهُمْ অর্থাৎ সে বা তারা পূর্ণ বয়সে উপনীত হয়েছে। কেউ কেউ বলেন, এর একবচন شَدٌّ (কারো কারো মতে) الْمُتَّكَأُ যে জিনিসের উপর পানাহার করার বা কথাবার্তা বলার সময় হেলান দেয়া হয়। যাঁরা مَتَكًا অর্থ লেবু বলেছেন এতে তা রদ হল। আরবদের ভাষায় উতরুঞ্জ শব্দের ব্যবহার নেই। যখন তাদের প্রতি এই অভিযোগ দ্বারা প্রমাণ করা হয় যে, মুত্তাকা অর্থ বিছানা, তখন তাঁরা আরো খারাপ অর্থ গ্রহণ করিল এবং বলিল যে, এখানে مُتْكٌ -এর ت সাকিন। এর অর্থ স্ত্রীলোকের লজ্জাস্থানের পার্শ্ব। এ থেকে ব্যবহার হয় مَتْكَاءِ (যে নারীর সে অংশ কাটা হয়নি) এবং ابْنُ الْمَتْكَاءِ (মাত্কার পুত্র)। সে ঘটনায় লেবু হলেও তা তাকিয়া দেয়ার পরই হইবে। شَعَفَهَا তার অন্তরকে আচ্ছন্ন করিল। مَشْعُوْفٌ যার অন্তর প্রেমে জ্বালিয়ে দিয়েছে। أَصْبُ আমি আসক্ত হয়ে যাব। أَحْلَامٍ অনর্থক স্বপ্ন যার কোন ব্যাখ্যা নেই। أَضْغَاثُ ঘাসের মুঠা এবং যা এ জাতীয়। যেমন পূর্বের আয়াতে আছে خُذْ بِيَدِكَ ضِغْثًا এক মুঠো ঘাস লও। একবচনে ضِغْثٌ থেকে গঠিত نَمِيْرُ আমরা খাদ্যদ্রব্য এনে দিব। نَزْدَادُكَيْلَبَعِيْرٍ আমরা আরো এক উট বোঝাই পণ্য আনব। أَوَىإِلَيْهِ নিজের কাছে রাখল। السِّقَايَةُ পান পাত্র, পরিমাপ-পাত্র। সারাক্ষণ থাকবে حَرَضًامُحْرَضًا খুব দুর্বল হওয়া) يُذِيْبُكَ الْهَمُّ দুশ্চিন্তা-তোমাকে শেষ করে দিবে, تَحَسَّسُوْا তোমরা খোঁজ লও। مُزْجاةٌ স্বল্প, غَاشِيَةٌمِنْ عَذابِ الله عَامَّةٌ مُجَلِّلَةٌআল্লাহর শাস্তি সকলকে ঘিরে ফেলেছে।

{وَيُتِمُّ نِعْمَتَه” عَلَيْكَ وَعَلٰٓى اٰلِ يَعْقُوْبَ كَمَآ أَتَمَّهَا عَلٰٓى أَبَوَيْكَ مِنْ قَبْلُ إِبْرٰهِيْمَ وَإِسْحٰقَ}

আর পূর্ণ করবেন তাহাঁর অনুগ্রহ তোমার প্রতি ও ইয়াকুব পরিবারের প্রতি; যেমন তিনি ইতোপূর্বে তা পূর্ণ করেছিলেন তোমার পিতৃ-পুরুষ ইব্রাহীম ও ইসহাকের প্রতি। (সুরা ইউসুফ ১২/৬)

৪৬৮৮

আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ সম্মানিত ব্যক্তির পুত্র সম্মানিত এবং তাহাঁর পিতাও সম্মানিত ব্যক্তির পুত্র সম্মানিত। তিনি হলেন ইউসুফ (আ.) যাঁর পিতা ইয়াকুব (আ.), যাঁর পিতা ইসহাক (আ.) যাঁর পিতা ইব্রাহীম (আ.)। [৩৩৮২] (আ.প্র. ৪৩২৭, ই.ফা. ৮ম/৪৩২৭)

৬৫/১২/২.অধ্যায়ঃ আল্লাহ তাআলার বাণীঃ ইউসুফ ও তার ভাইদের কাহিনীতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে জিজ্ঞাসুদের জন্য। (সুরা ইউসুফ ১২/৭)

৪৬৮৯

আবু হুরাইরাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হল, কোন্ ব্যক্তি বেশি সম্মানিত? তিনি বলিলেন, তাদের মধ্যে সে-ই আল্লাহর নিকট অধিক সম্মানিত, যে তাদের মধ্যে সবচাইতে অধিক আল্লাহ্ভীরু। লোকেরা বলিল, আমরা এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিনি। তিনি বলিলেন, সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তি হলেন আল্লাহর নাবী ইউসুফ (আ.)। তিনি নাবীর পুত্র, (তাহাঁর পিতাও) নাবীর পুত্র এবং (তাহাঁর পিতার পিতা) খালীলুল্লাহ (আ.)-এর পুত্র। লোকেরা বলিল, আপনাকে আমরা এ ব্যাপারে প্রশ্ন করিনি। তিনি বলিলেন, সম্ভবত তোমরা আরব বংশ সম্পর্কে আমাকে জিজ্ঞেস করেছ। তারা বলিল, হ্যাঁ।

রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলিলেন, যারা জাহিলিয়্যাতে তোমাদের মাঝে উত্তম ছিল, ইসলামেও তারা উত্তম যদি তারা দ্বীন সম্পর্কে জ্ঞানের অধিকারী হয়। আবু উসামাহ (রাদি.) উবাইদুল্লাহ্র সূত্রে অনুরূপ বর্ণনা করেন। [৩৩৫৩] (আ.প্র. ৪৩২৮, ই.ফা. ৪৩২৮)

৬৫/১২/৩.অধ্যায়ঃ আল্লাহ তাআলার বাণীঃ (না, ইউসুফকে বাঘে খায়নি) বরং তোমরা নিজেদের মন থেকে একটি কাহিনী সাজিয়ে নিয়েছ। ধৈর্য ধারণ করাই উত্তম। (সুরা ইউসুফ ১২/১৮)

{سَوَّلَتْ} زَيَّنَتْ.

سَوَّلَتْ সুন্দর করে সাজিয়ে শোভনীয় করে দেখান।

৪৬৯০

যুহ্রী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

উরওয়াহ ইবনু যুবায়র, সাঈদ ইবনু মুসাইয়্যিব, আলক্বামাহ ইবনু ওয়াক্কাস এবং উবাইদুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি নাবী (সাঃআঃ)-এর সহধর্মিণী আয়েশাহ (রাদি.) “ইফ্ক সম্পর্কে أَهْلُ الإِفْكِ যা বলেছেন, তা শুনিয়াছি। অতঃপর আল্লাহ তাকে সবকিছু থেকে নির্দোষ ঘোষণা করিয়াছেন। (বর্ণনাকারীদের) একদল থেকে আমি হাদীসটির কিছু অংশ শুনিয়াছি। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) [আয়েশাহ (রাদি.)-কে] বলিলেন, যদি তুমি নির্দোষ হয়ে থাক তবে অতিশীঘ্র আল্লাহ তোমার নির্দোষিতা প্রকাশ করে দিবেন; আর যদি তোমার দ্বারা এ গুনাহ সংঘটিত হয়ে থাকে, তবে আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর এবং তাওবাহ কর। আয়েশাহ (রাদি.) বলিলেন, আল্লাহর কসম! এ সময় আমি ইউসুফ (আ.)-এর পিতা [ইয়াকুব (আ.)]-এর উদাহরণ ব্যতীত আর কিছুই জবাব দেয়ার মতো খুঁজে পাচ্ছি না। (আমিও তাহাঁর মত বলছি) ঃ সুতরাং পূর্ণ ধৈর্যই শ্রেয়, তোমরা যা বলছ সে বিষয়ে একমাত্র আল্লাহই আমার সাহায্যস্থল। অবশেষে আল্লাহ তাআলা (আমার নির্দোষিতা ঘোষণা করে) إِنَّ الَّذِينَ جَاءُوا بِالإِفْكِ সহ দশটি আয়াত অবতীর্ণ করিয়াছেন। [২৫৯৩] (আ.প্র. ৪৩২৯, ই.ফা. ৪৩২৯)

[১] রাসুলুল্লাহ সাঃআঃ-এর সহধর্মিণী আয়েশাহ (রাদি.)-এর বিরুদ্ধে অপবাদ রটনা সম্পর্কিত।

৪৬৯১

আয়েশাহ (রাদি.)-এর মাতা উম্মু রূমান (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, (অপবাদ রটনার সময়) আয়েশাহ (রাদি.) আমাদের ঘরে জ্বরে আক্রান্ত ছিল। তখন নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, সম্ভবত এ অপবাদের কারণে জ্বর হয়েছে। আয়েশাহ (রাদি.) বলিলেন, হ্যাঁ। তিনি উঠে বসলেন এবং বলিলেন, আমার এবং আপনাদের দৃষ্টান্ত হল ইয়াকুব (আ.) এবং তাহাঁর পুত্র ইউসুফ (আ.)-এর ন্যায়। [ইয়াকুব (আ.) তাহাঁর ছেলেদেরকে বলিলেন] বরং তোমরা এক মনগড়া কাহিনী সাজিয়ে নিয়ে এসেছ কাজেই “ধৈর্যই শ্রেয়। তোমরা যা বলছ, সে বিষয়ে একমাত্র আল্লাহই আমার সাহায্যস্থল।” [৩৩৮৮] (আ.প্র. ৪৩৩০, ইা.ফা. ৪৩৩০)

৬৫/১২/৪.অধ্যায়ঃ

আল্লাহ তাআলার বাণীঃ

الَّتِيْ هُوَ فِيْ بَيْتِهَا عَنْ نَّفْسِهٰ وَغَلَّقَتِ الْأَبْوَابَ وَقَالَتْ هَيْتَ لَكَ

যে মহিলার ঘরে ইউসুফ ছিল, সে তাকে ফুসলাতে লাগল এবং দরজাগুলো বন্ধ করে দিল। সে বললঃ তোমাকে বলছি এদিকে এসো! (সুরা ইউসুফ ১২/২৩)

وَقَالَ عِكْرِمَةُ {هَيْتَ لَكَ} بِالْحَوْرَانِيَّةِ هَلُمَّ وَقَالَ ابْنُ جُبَيْرٍ تَعَالَهْ.

ইকরামাহ বলেন, هَيْتَ আইস হুরানের ভাষা, ইবনু যুবায়র বলেন تَعَالَهْ এসো।

৪৬৯২

আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, هَيْتَ لَكَ আমরা সেভাবেই পড়তাম, যেভাবে আমাদের শিখানো হয়েছে। مَثْوَاهُ স্থান এবং أَلْفَيَا তারা দুজনে পেল। এ থেকে أَلْفَوْا آبَاءَهُمْ হয়েছে। এমনিভাবে ইবনু মাসঊদ (রাদি.) হইতে بَلْ عَجِبْتُ وَيَسْخَرُونَ এর মধ্যে ت-কে পেশযুক্ত করে বর্ণনা করা হয়েছে। (তিনি এভাবে পড়তেন)। (আ.প্র. ৪৩৩১, ই.ফা. ৪৩৩১)

৪৬৯৩

আবদুল্লাহ হইতে বর্ণিতঃ

যখন কুরাইশগণ রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর ইসলামের দাওয়াত অস্বীকার করিল, তখন তিনি আল্লাহর দরবারে আরয করিলেন, হে আল্লাহ! যেমনিভাবে আপনি ইউসুফ (আ.)-এর সময় সাত বছর ধরে দুর্ভিক্ষ দিয়েছিলেন, তেমনিভাবে ওদের ওপর দুর্ভিক্ষ অবতীর্ণ করুন। তারপর কুরাইশগণ এক বছর পর্যন্ত এমন দুর্ভিক্ষের মধ্যে আপতিত হল যে, সব কিছু ধ্বংস হয়ে গেল; এমনকি তারা হাড় পর্যন্ত খেতে শুরু করিল; যখন কোন ব্যক্তি আকাশের দিকে নজর করত, তখন আকাশ ও তার মধ্যে শুধু ধোঁয়া দেখত।

আল্লাহ বলেন, فَارْتَقِبْ يَوْمَ تَأْتِي السَّمَاءُ بِدُخَانٍ مُبِينٍ “সেদিনের অপেক্ষায় থাক, যেদিন আকাশ স্পষ্ট ধোঁয়া নিয়ে আসবে।” (সুরা দুখান ৪৪/১০)

আল্লাহ আরও বলেন ঃ إِنَّا كَاشِفُو الْعَذَابِ قَلِيلاً إِنَّكُمْ عَائِدُونَ “আমি শাস্তি কিছুটা সরিয়ে নিব, যেন তোমরা (পূর্বাবস্থায়) ফিরে আস” (সুরা দুখান ৪৪/১৫)। ক্বিয়ামাতের দিন তাদের থেকে আযাব দূর করা হইবে কি? এবং دُخَانُ ও بَطْشَةُ এর ব্যাখ্যা আগে বলা হয়েছে। [১০০৭] (আ.প্র. ৪৩৩২, ই.ফা. ৪৩৩২)

৬৫/১২/৫.অধ্যায়ঃ

আল্লাহ তাআলার বাণীঃ

{فَلَمَّا جَآءَهُ الرَّسُوْلُ قَالَ ارْجِعْ إِلٰى رَبِّكَ فاسْأَلْهُ مَا بَالُ النِّسْوَةِ الّٰتِيْ قَطَّعْنَ أَيْدِيَهُنَّ طإِنَّ رَبِّيْ بِكَيْدِهِنَّ عَلِيْمٌ قَالَ مَا خَطْبُكُنَّ إِذْ رَاوَدْتُّنَّ يُوْسُفَ عَنْ نَّفْسِهٰطقُلْنَ حَاشَ لِلهِ}

৪৬৯৪

আবু হুরাইরাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা লূত (আ.)-এর উপর রহম করুন। তিনি তাহাঁর সম্প্রদায়ের চরম শত্রুতায় বাধ্য হয়ে, নিজের নিরাপত্তার জন্য শক্ত খুঁটি অর্থাৎ আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করেছিলেন। যতদিন পর্যন্ত ইউসুফ (আ.) (বন্দীখানায়) ছিলেন, আমি যদি এভাবে বন্দীখানায় থাকতাম, তবে মুক্তি পাবার ডাকে অবশ্যই সাড়া দিতাম । আমরা (সন্দেহভঞ্জন করার ব্যাপারে) ইব্রাহীম (আ.)-এর চেয়েও আগে বেড়ে যেতাম যখন আল্লাহ তাঁকে বলিলেন, তুমি কি বিশ্বাস কর না? জবাবে তিনি বলিলেন, হাঁ। তবে আমার মনের প্রশান্তির জন্য। [৩৩৭২] (আ.প্র. ৪৩৩৩, ই.ফা. ৪৩৩৩)

[১] মুক্তি পাওয়ার জন্য তৎক্ষণাৎ আহবানকারীর আহবানে সাড়া দিতাম। কিন্তু ইউসুফ (আ.) তাহাঁর নির্দোষিতা ঘোষিত হওয়ার পূর্বে জেল থেকে মুক্ত হইতে চাননি।

[2] এর দ্বারা রাসুলুল্লাহ সাঃআঃ-এর সর্বশ্রেষ্ঠ নাবীসুলভ বিনয়-নম্রতার প্রকাশ ঘটেছে।

৬৫/১২/৬.অধ্যায়ঃ আল্লাহ তাআলার বাণীঃ এমনকি যখন রাসুলগণ নিরাশ হয়ে গেলেন। (সুরা ইউসুফ ১২/১১০)

৪৬৯৫

উরওয়াহ ইবনু যুবায়র (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আয়েশাহ (রাদি.)-কে আল্লাহ তাআলার বাণী ঃ حَتَّى إِذَا اسْتَيْأَسَ الرُّسُلُ এর ব্যাখ্যা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম যে, এ আয়াতে শব্দটা أَكُذِبُوا না كُذِّبُوا আয়েশাহ (রাদি.) বলিলেন, اَكُذِّبُوا আমি জিজ্ঞেস করলাম, যখন আম্বিয়ায়ে কিরাম পূর্ণ বিশ্বাস করে নিলেন, এখন তাদের সম্প্রদায় তাদের প্রতি মিথ্যারোপ করিবে, তখন الظَّن ব্যবহারের উদ্দেশ্য কী? আয়েশাহ (রাদি.) বলিলেন, হ্যাঁ, আমার জীবনের কসম! তারা পূর্ণ বিশ্বাস করেই নিয়েছিলেন। আমি তাঁকে বললাম ظَنُّوا أَنَّهُمْ قَدْ كُذِبُوا অর্থ কী দাঁড়ায়? আয়েশাহ (রাদি.) বলিলেন, মাআযাল্লাহ! রাসুলগণ কখনও আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা ধারণা করিতে পারেন না। আমি বললাম, তবে আযাতের অর্থ কী হইবে? তিনি বলিলেন, তারা রাসুলদের অনুসারী, যারা তাদের প্রতিপালকের প্রতি ঈমান এনেছে এবং রাসুলদের সত্য বলে স্বীকার করেছে, তারপর তাদের প্রতি দীর্ঘকাল ধরে (কাফেরদের) নির্যাতন চলেছে এবং আল্লাহর সাহায্য আসতেও অনেক দেরী হয়েছে, এমনকি যখন রাসুলগণ তাঁদের সম্প্রদায়ের মধ্য থেকে তাঁদের প্রতি মিথ্যারোপকারীদের ঈমান আনা সম্পর্কে নিরাশ হয়ে গেছেন এবং রাসুলদের এ ধারণা জন্মেছে যে, এখন তাঁদের অনুসারীরাও তাদের প্রতি মিথ্যারোপ করিতে শুরু করিবে, এমন সময় তাঁদের কাছে আল্লাহর সাহায্য এল। [৩৩৮৯] (আ.প্র. ৪৩৩৪, ই.ফা. ৪৩৩৪)

[১]كُذِّبُوْا তাশ্দীদসহ না তাশ্দীদ ব্যতীত।

[2] তাঁরা ধারণা করিলেন অথবা ভাবলেন।

[3]আল্লাহর নিকট পরিত্রাণ চাই।

[4] যারা ঈমান এনেছিল।

৪৬৯৬

উরওয়াহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন ঃ আমি আয়েশাহ (রাদি.)-কে বললাম সম্ভবত كُذِبُوا (তাখফীফ সহ)। তিনি বলিলেন, মাআযাল্লাহ! ঐরূপ (كُذُّبُوْا)। [৩৩৮৯] (আ.প্র. ৪৩৩৫, ই.ফা. ৪৩৩৫)


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply