সূরা আন-নিসা তাফসীর – মহান আল্লাহর বাণীঃ
সূরা আন-নিসা তাফসীর – মহান আল্লাহর বাণীঃ >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন >>সুরা নিসা আরবি তে পড়ুন বাংলা অনুবাদ সহ
৬৫/৪/১. অধ্যায়ঃ আর যদি তোমরা ভয় কর যে, ইয়াতীম মেয়েদের ব্যাপারে সুবিচার করিতে পারবে না, তবে বিয়ে করে নাও অন্য নারীদের মধ্য থেকে যাকে তোমাদের মনঃপুত হয়। (সুরা আন-নিসা ৪/৩)
৬৫/৪/২. অধ্যায়ঃ
৬৫/৪/৩. অধ্যায়ঃ আর যদি সম্পত্তি বণ্টনকালে (উত্তরাধিকারী নয় এমন) আত্মীয় ইয়াতীম ও মিসকীন উপস্থিত হয়, তবে তা থেকে তাদের কিছু দিবে এবং তাদের সঙ্গে সদালাপ করিবে। (সুরা আন-নিসা ৪/৮)
৬৫/৪/৫. অধ্যায়ঃ আর তোমরা পাবে অর্ধেক তোমাদের স্ত্রীদের পরিত্যক্ত সম্পত্তির। (সুরা আন-নিসা ৪/১২)
৬৫/৪/৬. অধ্যায়ঃ
৬৫/৪/৭. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ আমি উত্তরাধিকারী নির্ধারণ করে দিয়েছি সে সম্পত্তির যা ছেড়ে যায় পিতা-মাতা ও নিকট- আত্মীয়রা। আর যাদের সঙ্গে তোমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়েছ তাদের দিয়ে দাও তাদের প্রাপ্য অংশ। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সম্যক দ্রষ্টা। (সুরা আন-নিসা ৪/৩৩)
৬৫/৪/৯. অধ্যায়ঃ আর তখন কী অবস্থা হইবে যখন আমি উপস্থিত করব প্রত্যেক উম্মাত থেকে একজন সাক্ষী এবং আপনাকে তাদের উপর উপস্থিত করব সাক্ষী রূপে? (সুরা আন-নিসা ৪/৪১)
৬৫/৪/১০. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ আর যদি তোমরা পীড়িত হও অথবা সফরে থাক অথবা তোমাদের কেউ শৌচ স্থান থেকে আসে ……….। (সুরা আন-নিসা ৪/৪৩)
৬৫/৪/১১. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর এবং আনুগত্য কর রাসূলের এবং তাদের যারা তোমাদের মধ্যে ফায়সালার অধিকারী। তারপর যদি তোমরা কোন বিষয়ে মতভেদ কর, তবে তা প্রত্যর্পণ কর আল্লাহ ও রাসূলের প্রতি-যদি তোমরা ঈমান এনে থাক আল্লাহর প্রতি এবং শেষ দিনের প্রতি। আর এটাই উত্তম এবং পরিণামে কল্যাণকর। (সুরা আন-নিসা ৪/৫৯)
৬৫/৪/১২. অধ্যায়ঃ তবে না; আপনার রবের কসম! তারা মুমিন হইবে না যে পর্যন্ত না তারা আপনার উপর বিচারের ভার অর্পণ করে সেসব বিবাদ-বিসম্বাদের যা তাদের মধ্যে সংঘটিত হয়, তারপর তারা নিজেদের মনে কোনরূপ দ্বিধা-সংকোচ বোধ না করে আপনার সিদ্ধান্তের ব্যাপারে এবং সর্বান্তঃকরণে তা মেনে নেয়। (সুরা আন-নিসা ৪/৬৫)
৬৫/৪/১৩. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ কেউ আল্লাহ এবং রসূলের আনুগত্য করে …….. যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করিয়াছেন। (সুরা আন-নিসা ৪/৬৯)
৬৫/৪/১৪. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের কী হল যে, তোমরা যুদ্ধ করিবে না আল্লাহর পথে এবং অসহায় নর-নারী ও শিশুগণের জন্য …….. যার অধিবাসী যালিম। (সুরা আন-নিসা ৪/৭৫)
৬৫/৪/১৫. অধ্যায়ঃ তোমাদের কী হল যে, তোমরা মুনাফিকদের সম্বন্ধে দুদল হয়ে গেলে? অথচ আল্লাহ তাদের পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দিয়েছেন তাদের কৃতকর্মের দরুন। (সুরা আন-নিসা ৪/৮৮)
৬৫/৪/১৬. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ আর যখন তাদের কাছে পৌঁছে কোন সংবাদ নিরাপত্তা কিংবা ভয় সংক্রান্ত, তখন তারা তা প্রচার করে দেয়। (সুরা আন-নিসা ৪/৮৩)
৬৫/৪/১৮. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ কেউ তোমাদের সালাম করলে তাকে বল নাঃ তুমি তো মুমিন নও। (সুরা আন-নিসা ৪/৯৪)
৬৫/৪/১৯. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ সমান নয় সেসব মুমিন যারা বিনা ওজরে ঘরে বসে থাকে এবং ঐসব মুমিন যারা আল্লাহর পথে নিজেদের জানমাল দিয়ে জিহাদ করে।(সুরা আন-নিসা ৪/৯৫)
৬৫/৪/২০. অধ্যায়ঃ নিশ্চয় যারা নিজেদের উপর যুল্ম করে, মালায়িকাহ তাদের জান কবজের সময় বলবেঃ তোমরা কী অবস্থায় ছিলে? তারা বলবেঃ আমরা দুনিয়ায় অসহায় অবস্থায় ছিলাম। মালায়িকাহ বলবেঃ আল্লাহর দুনিয়া কি এমন প্রশস্ত ছিল না যে, তোমরা সেখানে হিজরাত করে চলে যেতে? (সুরা আন-নিসা ৪/৯৭)
৬৫/৪/২১. অধ্যায়ঃ তবে সেসব অসহায় পুরুষ, নারী ও শিশু যারা কোন উপায় অবলম্বন করিতে পারে না এবং কোন পথেরও সন্ধান জানে না। (সুরা আন-নিসা ৪/৯৮)
৬৫/৪/২২. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ আল্লাহ এদের ক্ষমা করবেন। কারণ আল্লাহ অতিশয় মার্জনাকারী, পরম ক্ষমাশীল। (সুরা আন-নিসা ৪/৯৯)
৬৫/৪/২৪. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ আর লোকেরা আপনার কাছে নারীদের সম্বন্ধে বিধান জানতে চায়। বলুনঃ আল্লাহ তাদের সম্বন্ধে তোমাদের ব্যবস্থা দিচ্ছেন এবং যা তোমাদের তিলাওয়াত করে শুনান হয় কুরআনে তা ঐসব ইয়াতিম নারীদের সম্পর্কে যাদের তোমরা তাদের নির্ধারিত প্রাপ্য প্রদান কর না অথচ তোমরা তাদের বিবাহ করিতে চাও এবং অসহায় শিশুদের সম্বন্ধে, আর ইয়াতিমদের ব্যাপারে ইনসাফের সঙ্গে কার্য নির্বাহ করিবে। (সুরা আন-নিসা ৪/১২৭)
৬৫/৪/২৫. অধ্যায়ঃ আর যদি কোন স্ত্রী তার স্বামীর পক্ষ থেকে অসদাচরণ কিংবা উপেক্ষার আশংকা করে। (সুরা আন-নিসা ৪/১২৮)
৬৫/৪/২৬. অধ্যায়ঃ নিঃসন্দেহে মুনাফিকরা থাকবে জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে। (সুরা আন-নিসা ৪/১৪৫)
৬৫/৪/২৭. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ তোমার নিকট ওয়াহী প্রেরণ করেছি যেমন ইউনুস, হারূন এবং সুলাইমান (আঃ)-এর নিকট ওয়াহী প্রেরণ করেছিলাম। (সুরা আন-নিসা ৪/১৬৩)
৬৫/৪/২৮. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ লোকেরা আপনার কাছে বিধান জানতে চায়। আপনি বলুনঃ আল্লাহ তোমাদের বিধান দিচ্ছেন কালালা- (পিতা-মাতাহীন নিঃসন্তান ব্যক্তি) সম্বন্ধে। যদি কোন ব্যক্তি নিঃসন্তান অবস্থায় মারা যায়। (পিতা-মাতা না থাকে) এবং তার এক বোন থাকে তবে সে পরিত্যক্ত সম্পত্তির অর্ধাংশ পাবে; সে যদি সন্তানহীনা হয় তবে তার ভাই তার ওয়ারিস হইবে। (সুরা আন-নিসা ৪/১৭৬)
৬৫/৪/১. অধ্যায়ঃ আর যদি তোমরা ভয় কর যে, ইয়াতীম মেয়েদের ব্যাপারে সুবিচার করিতে পারবে না, তবে বিয়ে করে নাও অন্য নারীদের মধ্য থেকে যাকে তোমাদের মনঃপুত হয়। (সূরা আন-নিসা ৪/৩)
সুরা (৪) : আন-নিসা
قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ : {يَسْتَنْكِفُ} يَسْتَكْبِرُ. {قِوَامًا} : قِوَامُكُمْ مِنْ مَعَايِشِكُمْ. {لَهُنَّ سَبِيْلًا} يَعْنِي الرَّجْمَ لِلثَّيِّبِ، وَالْجَلْدَ لِلْبِكْرِ. وَقَالَ غَيْرُهُ : {مَثْنَى وَثُلَاثَ وَرُبَاع} يَعْنِي اثْنَتَيْنِ وَثَلَاثًا وَأَرْبَعًا وَلَا تُجَاوِزُ الْعَرَبُ رُبَاعَ.
ইবনু আববাস (রাদি.) বলেন, يَسْتَنْكِفُ অহঙ্কার করে, قِوَامًا -তোমাদের জীবিকার্জনের মাধ্যম। لَهُنَّ سَبِيْلًا -সাইয়েবা বা বিবাহিতার জন্য প্রস্তর নিক্ষেপ (রজম) আর কুমারীর জন্য বেত্রাঘাত। তিনি ব্যতীত অন্যান্য তাফসীরকারক বলেন, مَثْنَى وَثُلَاثَ وَرُبَاع অর্থাৎ দুই, তিন এবং চার; আরবগণ رُبَاعَ শব্দকে غير منصرف বা অপরিবর্তনশীল শব্দ মনে করে।
৪৫৭৩
আয়েশাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে একজন ইয়াতীম বালিকা ছিল। অতঃপর সে তাকে বিয়ে করিল। সে বালিকার একটি বাগান ছিল। তার অন্তরে ঐ বালিকার প্রতি কোন আকর্ষণ না থাকা সত্ত্বেও বাগানের কারণে সে ঐ বালিকাটিকে বিবাহ করে রেখে দিতে চায়। এ সম্পর্কে আয়াত অবতীর্ণ হয় আর যদি আশঙ্কা কর যে, ইয়াতীম মেয়েদের প্রতি সুবিচার করিতে পারবে না। আমার ধারণা যে, উরওয়াহ বলেন, ইয়াতীম বালিকাটি সে বাগান ও মালের অংশীদার ছিল। [২৪৯৪] (আ.প্র. ৪২১২, ই.ফা. ৪২১৫)
৪৫৭৪
উরওয়াহ ইবনু যুবায়র (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
বর্ণিত। তিনি আয়েশাহ (রাদি.)-কে জিজ্ঞেস করিলেন মহান আল্লাহর বাণী وَإِنْخِفْتُمْأَنْلاَتُقْسِطُوافِيالْيَتَامَى সম্পর্কে। তিনি উত্তরে বলিলেন, হে ভাগ্নে! সে হচ্ছে পিতৃহীনা বালিকা, অভিভাবকের তত্ত্বাবধানে থাকে এবং তার সম্পত্তিতে অংশীদার হয় এবং তার রূপ ও সম্পদ তাকে (অভিভাবককে) আকৃষ্ট করে। এরপর সেই অভিভাবক উপযুক্ত মোহর না দিয়ে তাকে বিবাহ করিতে চায়। তদুপরি অন্য ব্যক্তি যে পরিমাণ মোহর দেয় তা না দিয়ে এবং তার প্রতি ন্যায়বিচার না করে তাকে বিয়ে করিতে চায়। এরপর তাদের পারিবারিক ঐতিহ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ মোহর এবং ন্যায় ও সমুচিত মোহর প্রদান ব্যতীত তাদের বিয়ে করিতে নিষেধ করা হয়েছে এবং তদ্ব্যতীত যে সকল মহিলা পছন্দ হয় তাদেরকে বিয়ে করিতে অনুমতি দেয়া হয়েছে। উরওয়া (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন যে, আয়েশাহ (রাদি.) বলেছেন, এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর লোকেরা রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর কাছে মহিলাদের ব্যাপারে জানতে চাইলে আল্লাহ তাআলা অবতীর্ণ করেন وَيَسْتَفْتُونَكَفِيالنِّسَاءِ “এবং লোকেরা আপনার কাছে নারীদের বিষয়ে জানতে চান……”। আয়েশাহ (রাদি.) বলেন, আল্লাহর বাণী অন্য এক আয়াতেতোমরা তাদেরকে বিয়ে করিতে আগ্রহ প্রকাশ কর। ইয়াতীম বালিকার ধন-সম্পদ কম হলে এবং সুন্দরী না হলে তাকে বিবাহ করিতে আগ্রহ প্রকাশ করো না। আয়েশাহ (রাদি.) বলেন, তাই ইয়াতীম বালিকাদের মাল ও সৌন্দর্যের আকর্ষণে বিবাহ করিতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে ন্যায়বিচার করলে ভিন্ন কথা। কেননা তারা সম্পদের অধিকারী না হলে এবং সুন্দরী না হলে তাদেরকেও বিবাহ করিতে আগ্রহ প্রকাশ করে না। [২৪৯৪] (আ.প্র. ৪২১৩, ই.ফা. ৪২১৬)
৬৫/৪/২. অধ্যায়ঃ
–
{وَمَنْ كَانَ فَقِيْرًا فَلْيَأْكُلْ بِالْمَعْرُوْفِ فَإِذَا دَفَعْتُمْ إِلَيْهِمْ أَمْوَالَهُمْ فَأَشْهِدُوْا عَلَيْهِمْ وَكَفٰى بِاللهِ حَسِيْبًا} {وَبِدَارًا} مُبَادَرَةً. {أَعْتَدْنَا} : أَعْدَدْنَا أَفْعَلْنَا مِنَ الْعَتَادِ.
এবং যে অভাবগ্রস্ত সে যেন সঙ্গত পরিমাণে ভোগ করে। যখন তোমরা তাদের হাতে তাদের সম্পদ প্রত্যর্পণ করিবে, তখন সাক্ষী রাখবে। (সূরা আন-নিসা ৪/৬)
وَبِدَارًا শীঘ্রই أَعْتَدْنَا প্রস্তুত করে রেখেছি। আর أَعْتَدْنَا শব্দটি أَفْعَلْنَا এর ওজনে الْعَتَادِ মাসদার থেকে (নির্গত)।
৪৫৭৫
আয়েশাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর বাণী وَمَنْكَانَغَنِيًّافَلْيَسْتَعْفِفْوَمَنْكَانَفَقِيرًافَلْيَأْكُلْبِالْمَعْرُوفِ সম্পদশালী গ্রহণ করিবে না অবতীর্ণ হয়েছে ইয়াতীমের সম্পদ উপলক্ষে, যদি তত্ত্বাবধায়ক দরিদ্র হয় তাহলে তত্ত্বাবধানের বিনিময়ে ন্যায্য পরিমাণে তা থেকে ভোগ করিবে। [২২১২] (আ.প্র. ৪২১৪, ই.ফা. ৪২১৭)
৬৫/৪/৩. অধ্যায়ঃ আর যদি সম্পত্তি বণ্টনকালে (উত্তরাধিকারী নয় এমন) আত্মীয় ইয়াতীম ও মিসকীন উপস্থিত হয়, তবে তা থেকে তাদের কিছু দিবে এবং তাদের সঙ্গে সদালাপ করিবে। (সূরা আন-নিসা ৪/৮)
৪৫৭৬
ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আয়াতটি সুস্পষ্ট, মানসুখ নয়। সাঈদ (রাদি.) ইবনু আব্বাস (রাদি.) থেকে ইকরামাহ (রাদি.)-এর অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। আল্লাহর বাণী ঃ وَإِذَاحَضَرَالْقِسْمَةَأُولُوالْقُرْبَىوَالْيَتَامَىوَالْمَسَاكِينُ “আর যদি সম্পত্তি বণ্টনকালে আত্মীয়, ইয়াতীম ও মিসকীন উপস্থিত হয়”। (সুরা আন্-নিসা ৪/১১)। [২৭৫৯] (আ.প্র. ৪২১৫, ই.ফা. ৪২১৮)
৬৫/৪/৫. অধ্যায়ঃ আর তোমরা পাবে অর্ধেক তোমাদের স্ত্রীদের পরিত্যক্ত সম্পত্তির। (সূরা আন-নিসা ৪/১২)
৪৫৭৮
ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মৃত ব্যক্তির সম্পদ লাভ করত সন্তানরা, আর ওয়াসীয়াত ছিল পিতামাতার জন্য। অতঃপর তাত্থেকে আল্লাহ তাআলা স্বীয় পছন্দ অনুযায়ী কিছু রহিত করিলেন এবং পুরুষদের জন্য মহিলার দ্বিগুণ নির্দিষ্ট করিলেন। পিতামাতা প্রত্যেকের জন্য ষষ্ঠাংশ ও তৃতীয়াংশ নির্ধারণ করিলেন, স্ত্রীদের জন্য অষ্টমাংশ ও চতুর্থাংশ নির্ধারণ করিলেন এবং স্বামীর জন্য অর্ধাংশ ও চতুর্থাংশ নির্ধারণ করিলেন। [২৭৪৭] (আ.প্র. ৪২১৭, ই.ফা. ৪২২০)
৬৫/৪/৬. অধ্যায়ঃ
–
{لَا يَحِلُّ لَكُمْ أَنْ تَرِثُوا النِّسَآءَ كَرْهًا ط وَلَا تَعْضُلُوْهُنَّ لِتَذْهَبُوْا بِبَعْضِ مَآ اٰتَيْتُمُوْهُنَّ} الْآيَةَ
আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের জন্য হালাল নয় নারীদের জবরদস্তি উত্তরাধিকার গণ্য করা। (সূরা আন-নিসা ৪/১৯)
وَيُذْكَرُ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ: {لَا تَعْضُلُوْهُنَّ} لَا تَقْهَرُوْهُنَّ. {حُوْبًا}: إِثْمًا. {تَعُوْلُوْا}: تَمِيْلُوْا. {نِحْلَةً} النِّحْلَةُ الْمَهْرُ.
ইবনু আববাস (রাদি.) হইতে বর্ণিত لَا تَعْضُلُوْهُنَّ-তাদের উপর শক্তি প্রয়োগ করো না। حُوْبًا -গুনাহ, تَعُوْلُوْا-ঝুঁকে পড়। نِحْلَةً -মাহর।
৪৫৭৯
ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, يَاأَيُّهَاالَّذِينَآمَنُوالاَيَحِلُّلَكُمْأَنْتَرِثُواالنِّسَاءَكَرْهًاوَلاَتَعْضُلُوهُنَّلِتَذْهَبُوابِبَعْضِمَاآتَيْتُمُوهُنَّ ইসলামের প্রথম যুগে অবস্থা এমন ছিল যে, কোন ব্যক্তি মারা গেলে তার অভিভাবকগণ তার স্ত্রীর মালিক হয়ে বসত। তারা ইচ্ছা করলে নিজেরা ঐ মহিলাকে বিয়ে করত। ইচ্ছা করলে অন্যের কাছে দিত। কিংবা তাকে মৃত্যু পর্যন্ত আটকে রাখত। কারও কাছে বিয়ে দিত না। মহিলার পরিবারের চেয়ে এরা অধিক হকদার হয়ে বসত। এরপর এ আয়াত অবতীর্ণ হল। [৬৯৪৮] (আ.প্র. ৪২১৮, ই.ফা. ৪২২১)
৬৫/৪/৭. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ আমি উত্তরাধিকারী নির্ধারণ করে দিয়েছি সে সম্পত্তির যা ছেড়ে যায় পিতা-মাতা ও নিকট- আত্মীয়রা। আর যাদের সঙ্গে তোমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়েছ তাদের দিয়ে দাও তাদের প্রাপ্য অংশ। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সম্যক দ্রষ্টা। (সূরা আন-নিসা ৪/৩৩)
وَقَالَ مَعْمَرٌ : و {مَوَالِي} وَأَوْلِيَاءُ وَرَثَةٌ. {وَالَّذِيْنَ عَاقَدَتْ أَيْمَانُكُمْ} هُوَ مَوْلَى الْيَمِيْنِ وَهْوَ الْحَلِيْفُ. وَالْمَوْلَى أَيْضًا ابْنُ الْعَمِّ، وَالْمَوْلَى الْمُنْعِمُ الْمُعْتِقُ، وَالْمَوْلَى الْمُعْتَقُ، وَالْمَوْلَى الْمَلِيْكُ، وَالْمَوْلَى مَوْلًى فِي الدِّيْنِ. مَوَالِيْ এক প্রকার হচ্ছে সে সকল আত্মীয়, যারা রক্ত সম্বন্ধের উত্তরাধিকারী। অপরপক্ষ عَاقَدَتْ أَيْمَانُكُمْ অর্থাৎ চুক্তিবদ্ধ উত্তরাধিকারী। আবার مَوْلَى-চাচাত ভাই, مَوْلَى الْمُنْعِمُ-যে দাস মুক্ত করে, مَوْلَى-আযাদকৃত দাস, مَوْلَى-বাদশাহ, مَوْلَى-মহাজন।
৪৫৮০
ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, وَلِكُلٍّجَعَلْنَامَوَالِيَ হচ্ছে বংশীয় উত্তরাধিকারী, وَالَّذِينَعَاقَدَتْأَيْمَانُكُمْ হচ্ছে মুহাজিরগণ যখন মদিনায় এসেছিলেন তখন তারা আনসারদের উত্তরাধিকারী হইতেন। আত্মীয়তার জন্য নয় বরং রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) কর্তৃক তাঁদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব স্থাপনের কারণে। যখন وَلِكُلٍّجَعَلْنَامَوَالِيَ অবতীর্ণ হল, তখন এ হুকুম রহিত হয়ে গেল। তারপর বলিলেন, যাদের সঙ্গে তোমরা চুক্তি করে থাক সাহায্য-সহযোগিতা ও পরস্পরের উপকার করার। আগের উত্তরাধিকার ব্যবস্থা রহিত হল এবং এদের জন্য ওয়াসীয়াত বৈধ করা হল।
হাদীসটি আবু উসামাহ ইদরীসের কাছে থেকে এবং ইদরীস ত্বলহার নিকট হইতে শুনেছেন। [২২৯২] (আ.প্র. ৪২১৯, ই.ফা. ৪২২২)
৬৫/৪/৯. অধ্যায়ঃ আর তখন কী অবস্থা হইবে যখন আমি উপস্থিত করব প্রত্যেক উম্মাত থেকে একজন সাক্ষী এবং আপনাকে তাদের উপর উপস্থিত করব সাক্ষী রূপে? (সূরা আন-নিসা ৪/৪১)
{الْمُخْتَالُ} وَالْخَتَّالُ وَاحِدٌ : {نَطْمِسَ وُجُوْهًا} : نُسَوِّيَهَا حَتَّى تَعُوْدَ كَأَقْفَائِهِمْ طَمَسَ الْكِتَابَ مَحَاهُ. {بجَهَنَّمَ سَعِيْرًا} : وُقُوْدًا
الْخَتَّالُ الْمُخْتَالُ একই অর্থে ব্যবহৃত, দাম্ভিক। نَطْمِسَ-সমান করে দেব। শেষ পর্যন্ত তাদের গর্দানের পশ্চাৎদিকের মতো হয়ে যাবে। طَمَسَ الْكِتَابَ কিতাবের লেখা মুছে ফেলা। سَعِيْرًا জ্বলন্ত।
৪৫৮২
আমর ইবনু মুররা হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) আমাকে বলিলেন, আমার কাছে কুরআন পাঠ কর। আমি বললাম, আমি আপনার কাছে পাঠ করব? অথচ আপনার কাছেই তা অবতীর্ণ হয়েছে। তিনি বলিলেন, অন্যের মুখ থেকে শুনতে আমি পছন্দ করি। এরপর আমি তাহাঁর নিকট সুরা নিসা পাঠ করলাম, যখন আমি فَكَيْفَإِذَاجِئْنَامِنْكُلِّأُمَّةٍبِشَهِيدٍوَجِئْنَابِكَعَلَىهَؤُلَاءِشَهِيدً পর্যন্ত পাঠ করলাম, তিনি বলিলেন, থাম, থাম, তখন তাহাঁর দুচোখ হইতে টপ টপ করে অশ্র“ ঝরছিল। [৫০৪৯, ৫০৫০, ৫০৫৫, ৫০৫৬] (আ.প্র. ৪২২১, ই.ফা. ৪২২৪)
৬৫/৪/১০. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ আর যদি তোমরা পীড়িত হও অথবা সফরে থাক অথবা তোমাদের কেউ শৌচ স্থান থেকে আসে ……….। (সূরা আন-নিসা ৪/৪৩)
{صَعِيْدًا}: وَجْهَ الْأَرْضِ وَقَالَ جَابِرٌ كَانَتْ الطَّوَاغِيْتُ الَّتِيْ يَتَحَاكَمُوْنَ إِلَيْهَا فِيْ جُهَيْنَةَ وَاحِدٌ وَفِيْ أَسْلَمَ وَاحِدٌ وَفِيْ كُلِّ حَيٍّ وَاحِدٌ كُهَّانٌ يَنْزِلُ عَلَيْهِمْ الشَّيْطَانُ وَقَالَ عُمَرُ : {الْجِبْتُ} : السِّحْرُ، {وَالطَّاغُوْتُ} : الشَّيْطَانُ. وَقَالَ عِكْرِمَةُ : {الْجِبْتُ} بِلِسَانِ الْحَبَشَةِ شَيْطَانٌ. {وَالطَّاغُوْتُ} : الْكَاهِنُ.
صَعِيْدًا-মাটির উপরিভাগ। জাবির (রাদি.) বলেন, যে সকল তাগূতের কাছে তারা বিচারের জন্য যেত তাদের একজন ছিল বুহাইনাহ গোত্রের, একজন আসলাম গোত্রের এবং এভাবে প্রত্যেক গোত্রে এক-একজন করে তাগূত ছিল। তারা হচ্ছে গণক। তাদের কাছে শয়তান আসত।
উমার (রাদি.) বলেন, الْجِبْتُ-জাদু, وَالطَّاغُوْتُ-শায়তবন। ইকরামাহ (রাদি.) বলেন, হাবশী ভাষায় শায়ত্বনকে الْجِبْتُ বলা হয়। আর গণককে طَّاغُوْتُ বলা হয়।
৪৫৮৩
আয়েশাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার কাছ থেকে আসমা (রাদি.)-এর একটি হার হারিয়ে গিয়েছিল। সেটা খোঁজার জন্য রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) কয়েকজন লোক পাঠিয়েছিলেন। তখন সলাতের সময় হল, তাদের কাছে পানি ছিল না। তারা উযূর অবস্থায় ছিলেন না আবার পানিও পেলেন না। এরপর বিনা অযুতে সলাত আদায় করে ফেললেন। তখন আল্লাহ তাআলা তায়াম্মুমের নিয়মবিধি অবতীর্ণ করিলেন। [৩৩৪] (আ.প্র. ৪২২২, ই.ফা. ৪২২৫)
৬৫/৪/১১. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর এবং আনুগত্য কর রাসূলের এবং তাদের যারা তোমাদের মধ্যে ফায়সালার অধিকারী। তারপর যদি তোমরা কোন বিষয়ে মতভেদ কর, তবে তা প্রত্যর্পণ কর আল্লাহ ও রাসূলের প্রতি-যদি তোমরা ঈমান এনে থাক আল্লাহর প্রতি এবং শেষ দিনের প্রতি। আর এটাই উত্তম এবং পরিণামে কল্যাণকর। (সূরা আন-নিসা ৪/৫৯)
৪৫৮৪
ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন যে, أَطِيعُوااللهَوَأَطِيعُواالرَّسُولَوَأُولِيالأَمْرِمِنْكُمْ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়েছে আবদুল্লাহ ইবনু হুযাফাহ ইবনু ক্বায়স ইবনু আদী সম্পর্কে যখন তাঁকে নাবী (সাঃআঃ) একটি সৈন্য দলের দলনায়ক করে প্রেরণ করেছিলেন। [মুসলিম ৩৩/৮, হাদীস ১৮৩৪] (আ.প্র. ৪২২৩, ই.ফা. ৪২২৬)
৬৫/৪/১২. অধ্যায়ঃ তবে না; আপনার রবের কসম! তারা মুমিন হইবে না যে পর্যন্ত না তারা আপনার উপর বিচারের ভার অর্পণ করে সেসব বিবাদ-বিসম্বাদের যা তাদের মধ্যে সংঘটিত হয়, তারপর তারা নিজেদের মনে কোনরূপ দ্বিধা-সংকোচ বোধ না করে আপনার সিদ্ধান্তের ব্যাপারে এবং সর্বান্তঃকরণে তা মেনে নেয়। (সূরা আন-নিসা ৪/৬৫)
৪৫৮৫
উরওয়াহ হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, হাররা বা মাদীনাহর কঙ্করময় ভূমিতে একটি পানির নালাকে কেন্দ্র করে একজন আনসার যুবায়র (রাদি.)-এর সাথে ঝগড়া করেছিলেন। নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, হে যুবায়র! প্রথমত তুমি তোমার জমিতে পানি দাও, তারপর তুমি প্রতিবেশীর জমিতে পানি ছেড়ে দেবে। আনসারী বলিলেন, হে আল্লাহররাসুল! সে আপনার ফুফাত ভাই, তাই এই ফয়সালা। এতে রাসুল (সাঃআঃ)-এর চেহারা রক্তিম হয়ে গেল। তারপর তিনি বলিলেন, হে যুবায়র! তুমি তোমার জমিতে পানি দাও। তারপর সেচ নালা ভর্তি করে পানি রাখো, অতঃপর তোমার প্রতিবেশিকে পানি দাও।
আনসারী যখন রাসুল (সাঃআঃ)-কে রাগানি¦ত করিলেন তখন তিনি তার হক পুরোপুরি যুবায়র (রাদি.)-কে প্রদানের জন্য স্পষ্ট নির্দেশ দিলেন। তাদেরকে প্রথমে নাবী (সাঃআঃ) এমন একটি নির্দেশ দিয়েছিলেন যাতে প্রশস্ততা ছিল।
যুবায়র (রাদি.) বলেন, فَلاَوَرَبِّكَلاَيُؤْمِنُونَحَتَّىيُحَكِّمُوكَفِيمَاشَجَرَبَيْنَهُمْ আয়াতটি এ উপলক্ষে অবতীর্ণ হয়েছে বলে আমি মনে করি। [২৩৬০] (আ.প্র. ৪২২৪, ই.ফা. ৪২২৭)
৬৫/৪/১৩. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ কেউ আল্লাহ এবং রসূলের আনুগত্য করে …….. যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করিয়াছেন। (সূরা আন-নিসা ৪/৬৯)
৪৫৮৬
আয়েশাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন যে, আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে বলিতে শুনিয়াছি যে, প্রত্যেক নাবী অন্তিম সময়ে পীড়িত হলে তাঁকে দুনিয়া ও আখিরাতের যে কোন একটি গ্রহণ করিতে বলা হয়। যে অসুখে তাঁকে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে সে অসুখে তাহাঁর ভীষণ শ্বাসকষ্ট আরম্ভ হয়েছিল। সে সময় আমি তাঁকে مَعَالَّذِينَأَنْعَمَاللهُعَلَيْهِمْمِنْالنَّبِيِّينَوَالصِّدِّيقِينَوَالشُّهَدَاءِوَالصَّالِحِينَ তাঁরা নাবীগণ, সত্যপরায়ণ, শহীদ ও সৎকর্মশীল যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ বর্ষণ করিয়াছেন, তাঁদের সঙ্গী হইবেন (সূরা আন-নিসা ৪/৬৯) বলিতে শুনিয়াছি। এরপর আমি বুঝে নিয়েছি যে, তাঁকে (দুনিয়া বা আখিরাতে) যে কোন একটি বেছে নেয়ার অবকাশ দেয়া হয়েছে। [৪৪৩৫] (আ.প্র. ৪২২৫, ই.ফা. ৪২২৮)
৬৫/৪/১৪. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের কী হল যে, তোমরা যুদ্ধ করিবে না আল্লাহর পথে এবং অসহায় নর-নারী ও শিশুগণের জন্য …….. যার অধিবাসী যালিম। (সূরা আন-নিসা ৪/৭৫)
৪৫৮৭
উবাইদুল্লাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন যে, আমি ইবনু আব্বাস (রাদি.)-কে বলিতে শুনিয়াছি তিনি বলেছেন যে, আমি এবং আমার আম্মা (আয়াতে বর্ণিত) অসহায়দের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম। [১৩৫৭] (আ.প্র. ৪২২৬, ই.ফা. ৪২২৯)
৪৫৮৮
ইবনু আবু মুলাইকাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইবনু আব্বাস (রাদি.) إِلاَّالْمُسْتَضْعَفِينَمِنْالرِّجَالِوَالنِّسَاءِوَالْوِلْدَانِ “তবে যেসব অসহায় পুরুষ, নারী ও শিশু …….” (সূরা আন-নিসা ৪/৯৮) আয়াতটি তিলাওয়াত করিলেন এবং বলিলেন, আল্লাহ যাদের অক্ষমতাকে অনুমোদন করিয়াছেন আমি এবং আমার আম্মা তাদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম। ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিত حَصِرَتْসংকুচিত হয়েছে। تَلْوُواأَلْسِنَتَكُمْبِالشَّهَادَةِসাক্ষ্য দিতে তাদের জিহ্বা বক্র হয়। الْمُهَاجَرُالْمُرَاغَمُ হিজরাতের স্থান, رَاغَمْتُقَوْمِيআমার গোত্রকে ত্যাগ করেছি, مَوْقُوتًا এবং مُوَقَّتًاতাদের উপর সময় নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। [১৩৫৭] (আ.প্র. ৪২২৭, ই.ফা. ৪২৩০)
৬৫/৪/১৫. অধ্যায়ঃ তোমাদের কী হল যে, তোমরা মুনাফিকদের সম্বন্ধে দুদল হয়ে গেলে? অথচ আল্লাহ তাদের পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দিয়েছেন তাদের কৃতকর্মের দরুন। (সূরা আন-নিসা ৪/৮৮)
قَالَ : ابْنُ عَبَّاسٍ : بَدَّدَهُمْ. {فِئَةٌ} : جَمَاعَةٌ.
ইবনু আববাস (রাদি.) বলেছেন, بَدَّدَهُمْ-তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করিয়াছেন, فِئَةٌ-দল।
৪৫৮৯
যায়দ ইবনু সাবিত (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
فَمَالَكُمْفِيالْمُنَافِقِينَفِئَتَيْنِ উহূদের যুদ্ধ থেকে একদল লোক দলত্যাগ করে ফিরে এসেছিল, এরপর তাদের ব্যাপারে লোকেরা দুদল হয়ে গেল, একদল বলছে তাদেরকে হত্যা করে ফেল; অপরদল বলছে তাদেরকে হত্যা করো না, তখন অবতীর্ণ হল ঃ فَمَالَكُمْفِيالْمُنَافِقِينَفِئَتَيْنِ অর্থাৎ নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন, এই মাদীনাহ হল পবিত্র স্থান, আগুন যেভাবে রৌপ্যের কালিমা দূর করে এটাও অপবিত্রতা দূর করে দেয়। [১৮৮৪; মুসলিম ১৫/৮৮, হাদীস ১৩৮৪, আহমাদ ২১৬৫৫] (আ.প্র. ৪২২৮, ই.ফা. ৪২৩১)
৬৫/৪/১৬. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ আর যখন তাদের কাছে পৌঁছে কোন সংবাদ নিরাপত্তা কিংবা ভয় সংক্রান্ত, তখন তারা তা প্রচার করে দেয়। (সূরা আন-নিসা ৪/৮৩)
{يَسْتَنْبِطُوْنَهُ} : يَسْتَخْرِجُوْنَهُ. {حَسِيْبًا} كَافِيًا. {إِلَّا إِنَاثًا} : يَعْنِي الْمَوَاتَ حَجَرًا أَوْ مَدَرًا وَمَا أَشْبَهَهُ. {مَرِيْدًا} مُتَمَرِّدًا. {فَلَيُبَتِّكُنَّ} بَتَّكَهُ قَطَّعَهُ. {قِيْلًا} وَقَوْلًا وَاحِدٌ. {طَبَعَ} خَتَمَ.
يَسْتَنْبِطُوْنَهُ তারা সেটির ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। حَسِيْبًا যথেষ্ট। إِلَّا إِنَاثًا বলা হয় প্রাণহীন ও অচেতন পদার্থকে যেমন- পাথর বা অনুরূপ পদার্থ। مَرِيْدًا বিদ্রোহী। فَلَيُبَتِّكُنَّ কান ছিদ্র করা। وَقَوْلًا ও قِيْلًا এর একই অর্থাৎ বলা। طَبَعَ সীলমোহরকৃত।
৬৫/৪/১৭. অধ্যায়ঃ
কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে কোন মুমিনকে হত্যা করলে তার শাস্তি জাহান্নাম। (সূরা আন-নিসা ৪/৯৩)
৪৫৯০
সাঈদ ইবনু যুবায়র (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন যে, এই আয়াত সম্পর্কে কূফাবাসীগণ ভিন্ন ভিন্ন মত প্রকাশ করিল। (কেউ বলেন মানসূখ, কেউ বলেন মানসূখ নয়। এ ব্যাপারে আমি ইবনু আব্বাস (রাদি.)-এর কাছে গেলাম এবং তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, উত্তরে তিনি বলিলেন, وَمَنْيَقْتُلْمُؤْمِنًامُتَعَمِّدًافَجَزَاؤُهُجَهَنَّمُ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়েছে এবং এটি শেষের দিকে অবতীর্ণ আয়াত; এটাকে কোন কিছু রহিত করেনি। [৩৮৫৫; মুসলিম ৫৪/হাদীস ৩০২৩] (আ.প্র. ৪২২৯, ই.ফা. ৪২৩২)
৬৫/৪/১৮. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ কেউ তোমাদের সালাম করলে তাকে বল নাঃ তুমি তো মুমিন নও। (সূরা আন-নিসা ৪/৯৪)
السِّلْمُ وَالسَّلَمُ وَالسَّلَامُ وَاحِدٌ.
السِّلْمُ এবং السَّلَمُ একরূপ, শান্তি।
৪৫৯১
ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন যে, وَلاَتَقُولُوالِمَنْأَلْقَىإِلَيْكُمْالسَّلاَمَلَسْتَمُؤْمِنًا আয়াতের ঘটনা হচ্ছে এই যে, এক ব্যক্তির কিছু ছাগল ছিল, মুসলিমদের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হলে সে তাঁদেরকে বলিল “আস্সালামু আলাইকুম”, মুসলিমরা তাকে হত্যা করিল এবং তার ছাগলগুলো নিয়ে নিল, এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা এই আয়াত অবতীর্ণ করিলেন عَرَضَالْحَيَاةِالدُّنْيَا পার্থিব সম্পদের লালসায়আর সে সম্পদ হচ্ছে এ ছাগল পাল।
আত্বা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, ইবনু আব্বাস (রাদি.) السَّلاَمَ পড়েছেন। (আ.প্র. ৪২৩০, ই.ফা. ৪২৩৩)
৬৫/৪/১৯. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ সমান নয় সেসব মুমিন যারা বিনা ওজরে ঘরে বসে থাকে এবং ঐসব মুমিন যারা আল্লাহর পথে নিজেদের জানমাল দিয়ে জিহাদ করে।(সূরা আন-নিসা ৪/৯৫)
৪৫৯২
যায়দ ইবনু সাবিত (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাঁকে لاَيَسْتَوِيالْقَاعِدُونَمِنَالْمُؤْمِنِينَوَالْمُجَاهِدُونَفِيسَبِيلِاللهِ আয়াতটি লেখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি আমাকে বলছিলেন এমন সময় ইবনু উম্মু মাকতুম (রাদি.) তাহাঁর কাছে আসলেন এবং বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)! আল্লাহর শপথ, যদি আমার জিহাদ করার ক্ষমতা থাকত তা হলে অবশ্যই জিহাদ করতাম। তিনি অন্ধ ছিলেন। এরপর আল্লাহ তাআলা তাহাঁর রাসুল (সাঃআঃ)-এর উপর ওয়াহী নাযিল করিলেন, এমন অবস্থায় যে তাহাঁর উরু আমার উরুর উপর ছিল তা আমার কাছে এতই ভারী লাগছিল যে, আমি আমার উরু ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা করছিলাম। তারপর তাহাঁর থেকে এই অবস্থা কেটে গেল, আর আল্লাহ তাআলা অবতীর্ণ করিলেন ঃ غَيْرَأُولِيالضَّرَرِঅক্ষম ব্যক্তিরা ব্যতীত (সূরা আন-নিসা ৪/৯৫)। [২৮৩২] (আ.প্র. ৪২৩১, ই.ফা. ৪২৩৪)
৪৫৯৩
বারাআ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলিলেন, যখন لاَيَسْتَوِيالْقَاعِدُونَمِنَالْمُؤْمِنِينَ….. আয়াতটি অবতীর্ণ হল, তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) যায়দ (রাদি.)-কে ডাকলেন। তিনি তা লিখে নিলেন। ইবনু উম্মু মাকতুম (রাদি.) তাহাঁর অক্ষমতার ওযর পেশ করিলেন, আল্লাহ তাআলা অবতীর্ণ করিলেন ঃ غَيْرَأُولِيالضَّرَرِ অক্ষম ব্যক্তিরা ব্যতীত (সূরা আন-নিসা ৪/৯৫)। [২৮৩১] (আ.প্র. ৪২৩২, ই.ফা. ৪২৩৫)
৪৫৯৪
বারাআ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন যে, لاَيَسْتَوِيالْقَاعِدُونَمِنَالْمُؤْمِنِينَوَالْمُجَاهِدُونَفِيسَبِيلِاللهِ আয়াতটি যখন অবতীর্ণ হল, তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলিলেন অমুককে ডেকে আন। এরপর দোয়াত, কাঠ অথবা হাড় খণ্ড নিয়ে তিনি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর কাছে আসলেন। তিনি বলিলেন, লিখে নাও ঃ لاَيَسْتَوِيالْقَاعِدُونَمِنَالْمُؤْمِنِينَوَالْمُجَاهِدُونَ ….. فِيسَبِيلِاللهِরাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর পেছনে ছিলেন ইবনু উম্মু মাকতুম (রাদি.)। তিনি বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) আমি অক্ষম ব্যক্তি। এরপর তখনই অবতীর্ণ হল ঃ لاَيَسْتَوِيالْقَاعِدُونَمِنَالْمُؤْمِنِينَغَيْرَأُولِيالضَّرَرِوَالْمُجَاهِدُونَفِيسَبِيلِاللهِ অর্থাৎ “যারা কোন প্রকার ওযর ব্যতীত বাড়িতে বসে থাকে তারা এবং আল্লাহর পথে জিহাদকারীগণ সমান হইতে পারে না।” [২৮৩১] (আ.প্র. ৪২৩৩, ই.ফা. ৪২৩৬)
৪৫৯৫
ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
বদরের যুদ্ধে যোগদানকারী আর বদর যুদ্ধে অনুপস্থিত মুমিনগণ সমান নয়। [৩৯৫৪] (আ.প্র. ৪২৩৪, ই.ফা. ৪২৩৭)
৬৫/৪/২০. অধ্যায়ঃ নিশ্চয় যারা নিজেদের উপর যুল্ম করে, মালায়িকাহ তাদের জান কবজের সময় বলবেঃ তোমরা কী অবস্থায় ছিলে? তারা বলবেঃ আমরা দুনিয়ায় অসহায় অবস্থায় ছিলাম। মালায়িকাহ বলবেঃ আল্লাহর দুনিয়া কি এমন প্রশস্ত ছিল না যে, তোমরা সেখানে হিজরাত করে চলে যেতে? (সূরা আন-নিসা ৪/৯৭)
৪৫৯৬
আবুল আসওয়াদ মুহাম্মাদ ইবনু আবদুর রহমান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন যে, একদল সৈন্য পাঠানোর জন্যে মাদীনাহ বাসীদের উপর নির্দেশ দেয়া হলে আমাকেও তাতে অন্তর্ভুক্ত করা হল। আমি ইবনু আব্বাস (রাদি.)-এর মুক্ত গোলাম ইকরামাহর সঙ্গে দেখা করলাম এবং তাঁকে এ ব্যাপারে জানালাম। তিনি আমাকে এ ব্যাপারে কঠোরভাবে নিষেধ করিলেন, তারপর বলিলেন কিছু সংখ্যক মুসলিম মুশরিকদের সঙ্গে থেকে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর বিরুদ্ধে মুশরিকদের দল ভারী করেছিল, তীর এসে তাদের কারো উপর পড়ত এবং তাকে মেরে ফেলত অথবা তাদের কেউ মার খেত এবং নিহত হত তখন আল্লাহ তাআলা অবতীর্ণ করিলেন ঃ إِنَّ الَّذِينَ تَوَفَّاهُمْ الْمَلاَئِكَةُ ظَالِمِي أَنْفُسِهِمْ আবুল আসওয়াদ থেকে লাইস এটা বর্ণনা করিয়াছেন। [৭০৮৫] (আ.প্র. ৪২৩৫, ই.ফা. ৪২৩৮)
৬৫/৪/২১. অধ্যায়ঃ তবে সেসব অসহায় পুরুষ, নারী ও শিশু যারা কোন উপায় অবলম্বন করিতে পারে না এবং কোন পথেরও সন্ধান জানে না। (সূরা আন-নিসা ৪/৯৮)
৪৫৯৭
ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
إِلاَّ الْمُسْتَضْعَفِينَ সম্পর্কে তিনি বলেছেন যে, আল্লাহ তাআলা যাদের অক্ষমতা কবূল করিয়াছেন আমার মাতা তাঁদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। [১৩৫৭] (আ.প্র. ৪২৩৬, ই.ফা. ৪২৩৯)
৬৫/৪/২২. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ আল্লাহ এদের ক্ষমা করবেন। কারণ আল্লাহ অতিশয় মার্জনাকারী, পরম ক্ষমাশীল। (সূরা আন-নিসা ৪/৯৯)
৪৫৯৮
আবু হুরাইরাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) ইশার সলাত আদায় করছিলেন, তিনি সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ বলিলেন, তারপর সাজদাহ করার পূর্বে বলিলেন, হে আল্লাহ! আয়্যাশ ইবনু আবু রাবিয়াকে মুক্ত করুন। হে আল্লাহ! সালামাহ ইবনু হিশামকে মুক্ত করুন। হে আল্লাহ! ওয়ালিদ ইবনু ওয়ালিদকে মুক্ত করুন। হে আল্লাহ! অক্ষম মুমিনদেরকে মুক্ত করুন। হে আল্লাহ! মুযার গোত্রের উপর কঠিন শাস্তি অবতীর্ণ করুন। হে আল্লাহ! তাদের উপর ইউসুফ (আ.)-এর যুগের দুর্ভিক্ষের মত দুর্ভিক্ষ চাপিয়ে দিন। [৭৯৭] (আ.প্র. ৪২৩৭, ই.ফা. ৪২৪০)
৬৫/৪/২৪. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ আর লোকেরা আপনার কাছে নারীদের সম্বন্ধে বিধান জানতে চায়। বলুনঃ আল্লাহ তাদের সম্বন্ধে তোমাদের ব্যবস্থা দিচ্ছেন এবং যা তোমাদের তিলাওয়াত করে শুনান হয় কুরআনে তা ঐসব ইয়াতিম নারীদের সম্পর্কে যাদের তোমরা তাদের নির্ধারিত প্রাপ্য প্রদান কর না অথচ তোমরা তাদের বিবাহ করিতে চাও এবং অসহায় শিশুদের সম্বন্ধে, আর ইয়াতিমদের ব্যাপারে ইনসাফের সঙ্গে কার্য নির্বাহ করিবে। (সূরা আন-নিসা ৪/১২৭)
৪৬০০
আয়েশাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
বর্ণিত। وَتَرْغَبُونَ أَنْ تَنْكِحُوهُنَّ يَسْتَفْتُونَكَ فِي النِّسَاءِ قُلْ اللهُ يُفْتِيكُمْ فِيهِنَّ আয়াত সম্পর্কে তিনি বলেছেন যে, সে হচ্ছে ঐ ব্যক্তি যার নিকট ইয়াতীম বালিকা থাকে সে তার অভিভাবক এবং তার মুরুব্বী, এরপর সেই বালিকা সেই অভিভাবকের সম্পদের অংশীদার হয়ে যায়, এমনকি খেজুর বাগানেও। সে ব্যক্তি তাকে বিয়েও করে না এবং অন্য কারো নিকট বিয়ে দিতেও অপছন্দ করে এ আশঙ্কায় যে, তার যেই সম্পদে বালিকা অংশীদার সেই সম্পদে অন্য ব্যক্তি অংশীদার হয়ে যাবে। এভাবে সেই ব্যক্তি ঐ বালিকাকে আটকে রাখে। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। [২৪৯৪] (আ.প্র. ৪২৩৯, ই.ফা. ৪২৪২)
৬৫/৪/২৫. অধ্যায়ঃ আর যদি কোন স্ত্রী তার স্বামীর পক্ষ থেকে অসদাচরণ কিংবা উপেক্ষার আশংকা করে। (সূরা আন-নিসা ৪/১২৮)
وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ : {شِقَاقٌ} تَفَاسُدٌ. {وَأُحْضِرَتْ الْأَنْفُسُ الشُّحَّ} هَوَاهُ فِي الشَّيْءِ يَحْرِصُ عَلَيْهِ. {كَالْمُعَلَّقَةِ} لَا هِيَ أَيِّمٌ، وَلَا ذَاتُ زَوْجٍ. {نُشُوْزًا} : بُغْضًا.
ইবনু আববাস (রাদি.) বলেছেন, شِقَاقٌ পরস্পর ঝগড়া-বিবাদ, وَأُحْضِرَتْ الْأَنْفُسُ الشُّحَّ কোন বস্তুর প্রতি অত্যধিক আশঙ্কা বা লোভ করা, كَالْمُعَلَّقَةِ সধবাও নয়, বিধবাও নয়। نُشُوْزًا হিংসা।
৪৬০১
আয়েশাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
وَإِنْ امْرَأَةٌ خَافَتْ مِنْ بَعْلِهَا نُشُوزًا أَوْ إِعْرَاضًا আয়াত সম্পর্কে তিনি বলেছেন যে, কোন ব্যক্তির বিবাহ বন্ধনে কোন মহিলা থাকে কিন্তু স্বামী তার প্রতি আকৃষ্ট নয় বরং তাকে আলাদা করে দিতে চায়, তখন স্ত্রী বলে আমার এই দাবী থেকে আমি তোমাকে অব্যাহতি দিচ্ছি, এ সম্পর্কে এ আয়াত অবতীর্ণ হল। [২৪৫০] (আ.প্র. ৪২৪০, ই.ফা. ৪২৪৩)
৬৫/৪/২৬. অধ্যায়ঃ নিঃসন্দেহে মুনাফিকরা থাকবে জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে। (সূরা আন-নিসা ৪/১৪৫)
وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ : أَسْفَلَ النَّارِ. {نَفَقًا} : سَرَبًا.
ইবনু আববাস (রাদি.) أَسْفَلَ النَّارِ সম্বন্ধে পদের সঙ্গে পড়েছেন। نَفَقًا-মাটির নীচের সুড়ঙ্গ পথ।
৪৬০২
আসওয়াদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
আমরা আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাদি.)-এর মজলিসে ছিলাম, সেখানে হুযাইফাহ আসলেন এবং আমাদের সম্মুখে দণ্ডায়মান হয়ে সালাম দিলেন। এরপর বলিলেন, তোমাদের চেয়ে উত্তম গোত্রের উপরও মুনাফিকী এসেছিল। আসওয়াদ বলিলেন, সুবহানাল্লাহ! অথচ আল্লাহ তাআলা বলেন, “মুনাফিকগণ জাহান্নামের নিম্নতম স্তরে থাকবে”। আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাদি.) হেসে উঠলেন। হুযাইফাহ (রাদি.) মসজিদের এক কোণে গিয়ে বসলেন, আবদুল্লাহ (রাদি.) উঠে গেলে তাহাঁর শিষ্যবর্গও চলে গেলেন। এরপর হুযাইফাহ (রাদি.) আমার দিকে একটি পাথর টুকরো নিক্ষেপ করে আমাকে ডাকলেন। আমি তার নিকট গেলে তিনি বলিলেন, আমি তার হাসিতে বিস্মিত হলাম অথচ আমি যা বলেছি তা তিনি বুঝেছেন। এমন এক গোত্র যারা তোমাদের চেয়ে উত্তম তাদের মধ্যেও মুনাফিকী সৃষ্টি করা হয়েছিল। তারপর তারা তাওবাহ করেছে এবং আল্লাহ তাআলা তাদের তাওবাহ গ্রহণ করিয়াছেন। (আ.প্র. ৪২৪১, ই.ফা. ৪২৪৪)
৬৫/৪/২৭. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ তোমার নিকট ওয়াহী প্রেরণ করেছি যেমন ইউনুস, হারূন এবং সুলাইমান (আঃ)-এর নিকট ওয়াহী প্রেরণ করেছিলাম। (সূরা আন-নিসা ৪/১৬৩)
৪৬০৩
আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন যে, “আমি ইউনুস ইবনু মাত্তা (আ.) থেকে উত্তম” এটা বলা কারো জন্য শোভনীয় নয়। [৩৪১২] (আ.প্র. ৪২৪২, ই.ফা. ৪২৪৫)
৪৬০৪
আবু হুরাইরাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি বলে “আমি ইউনুস ইবনু মাত্তা থেকে উত্তম” সে মিথ্যা বলে। [৩৪১৫] (আ.প্র. ৪২৪৩, ই.ফা. ৪২৪৬)
৬৫/৪/২৮. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ লোকেরা আপনার কাছে বিধান জানতে চায়। আপনি বলুনঃ আল্লাহ তোমাদের বিধান দিচ্ছেন কালালা- (পিতা-মাতাহীন নিঃসন্তান ব্যক্তি) সম্বন্ধে। যদি কোন ব্যক্তি নিঃসন্তান অবস্থায় মারা যায়। (পিতা-মাতা না থাকে) এবং তার এক বোন থাকে তবে সে পরিত্যক্ত সম্পত্তির অর্ধাংশ পাবে; সে যদি সন্তানহীনা হয় তবে তার ভাই তার ওয়ারিস হইবে। (সূরা আন-নিসা ৪/১৭৬)
وَ {الْكَلَالَةُ} : مَنْ لَمْ يَرِثْهُ أَبٌ أَوْ ابْنٌ وَهُوَ مَصْدَرٌ مِنْ تَكَلَّلَهُ النَّسَبُ.
كَلَالَةِ-যার পিতা কিংবা পুত্র উত্তরাধিকারী না থাকে مُكَلَّةُ النَّسَبِ বাক্য থেকে এটা ক্রিয়াপদ।
৪৬০৫
আবু ইসহাক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
আমি বারাআ (রাদি.)-কে বলিতে শুনিয়াছি যে, সর্বশেষ নাযিলকৃত সুরা হচ্ছে “বারাআত” এবং সর্বশেষ নাযিলকৃত আয়াত হচ্ছে يَسْتَفْتُونَكَ قُلْ اللهُ يُفْتِيكُمْ فِي الْكَلاَلَةِ। [৪৩৬৪; মুসলিম ২৩/৩, হাদীস ১৬১৮] (আ.প্র. ৪২৪৪, ই.ফা. ৪২৪৭)
Leave a Reply