আর আমি নূহ আঃ কে তার জাতির নিকট প্রেরণ করেছিলাম
আর আমি নূহ আঃ কে তার জাতির নিকট প্রেরণ করেছিলাম >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ৬০, আম্বিয়া কিরাম, অধ্যায়ঃ (৩-৪)=২টি
৬০/৩. অধ্যায়ঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ আর আমি নূহকে তার জাতির নিকট প্রেরণ করেছিলাম- (হুদঃ ২৫)।
৬০/৪. অধ্যায়ঃ (মহান আল্লাহর বাণীঃ)
৬০/৩. অধ্যায়ঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ আর আমি নূহকে তার জাতির নিকট প্রেরণ করেছিলাম- (হুদঃ ২৫)।
ইবনু আব্বাস (রাদি.) বলেন, ————– এর অর্থ যা আমাদের সামনে প্রকাশ পেয়েছে। ——— তুমি থেমে যাও। ————– পানি সবেগে উত্থিত হল। আর ইকরিমা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, ———- অর্থ ভূপৃষ্ঠ। আর মুজাহিদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, ——– জর্জিয়ার একটি পাহাড়। ——– অবস্থা।
মহান আল্লাহর বাণীঃ আমি নূহকে তার জাতির নিকট প্রেরন করেছিলাম (নূহঃ ১) ………… সুরার শেষ পর্যন্ত। “আর তাদেরকে শুনিয়ে দাও নূহের অবস্থা-যখন সে স্বীয় সম্প্রদায়কে বলিল, হে আমার সম্প্রদায়, যদি তোমাদের মাঝে আমার অবস্থিতি এবং আল্লাহর আয়াতসমূহের মাধ্যমে নসীহাত করা ভারী বলে মনে হয়ে থাকে ……………….. আমি আনুগত্য অবলম্বন করি।” (ইউনুসঃ ৭১-৭২)
৩৩৩৭. ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
রসূলূল্লাহ (সাঃআঃ) একদা জন সমাবেশে দাঁড়ালেন এবং আল্লাহর যথোপযুক্ত প্রশংসা করিলেন, অতঃপর দাজ্জালের উল্লেখ করে বলিলেন, আমি তোমাদেরকে তার নিকট হইতে সাবধান করছি আর প্রত্যেক নাবীই নিজ নিজ সম্প্রদায়কে এ দাজ্জাল হইতে সাবধান করে দিয়েছেন। নূহ (আঃ) -ও নিজ সম্প্রদায়কে দাজ্জাল হইতে সাবধান করিয়াছেন। কিন্তু আমি তোমাদেরকে তার সম্বন্ধে এমন একটা কথা বলছি, যা কোন নাবী তাহাঁর সম্প্রদায়কে বলেননি। তা হলো তোমরা জেনে রেখ, নিশ্চয়ই দাজ্জাল এক চক্ষু বিশিষ্ট, আর আল্লাহ এক চক্ষু বিশিষ্ট নন।
৩৩৩৮. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, আমি কি তোমাদেরকে দাজ্জাল সম্পর্কে এমন একটি কথা বলে দেব না, যা কোন নাবীই তাহাঁর সম্প্রদায়কে বলেননি? তা হলো, নিশ্চয়ই সে হইবে এক চোখওয়ালা, সে সঙ্গে করে হুবহু জান্নাত এবং জাহান্নাম নিয়ে আসবে। [১] অতএব যাকে সে বলবে যে, এটি জান্নাত প্রকৃতপক্ষে সেটি হইবে জাহান্নাম। আর আমি তার সম্পর্কে তোমাদের নিকট তেমনি সাবধান করছি, যেমনি নূহ (আঃ) তার সম্প্রদায়কে সে সম্পর্কে সাবধান করিয়াছেন।
[১] দাজ্জালের আবির্ভাবের ব্যাপারে মিল্লাতে ইসলামিয়ার ইজমা হওয়া সত্ত্বেও ভ্রান্ত-পথভ্রষ্ট অমুসলিম কাদিয়ানী সম্প্রদায় তা অস্বীকার করে এবং উল্লিখিত হাদীসের বিভিন্ন প্রকার অপব্যাখ্যা করে থাকে।
৩৩৩৯. আবু সাঈদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, (কেয়ামতের দিন) নূহ এবং তাহাঁর উম্মত (আল্লাহর দরবারে) হাযির হইবেন। তখন আল্লাহ তাঁকে জিজ্ঞেস করবেন, তুমি কি (আমার বাণী) পৌঁছিয়েছ? তিনি বলবেন, হ্যাঁ, হে আমার রব! তখন আল্লাহ তাহাঁর উম্মতকে জিজ্ঞেস করবেন, নূহ কি তোমাদের নিকট আমার বাণী পৌঁছিয়েছেন। তারা বলবে, না, আমাদের নিকট কোন নাবীই আসেননি। তখন আল্লাহ নূহকে বলবেন, তোমার জন্য সাক্ষ্য দিবে কে? তিনি বলবেন, মুহাম্মাদ (সাঃআঃ) এবং তাহাঁর উম্মত। [রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলিলেন] তখন আমরা সাক্ষ্য দিব। নিশ্চয়ই তিনি আল্লাহর বাণী পৌঁছিয়েছেন। আর এটিই হল মহান আল্লাহর বাণীঃ আর এভাবেই আমি তোমাদেরকে মধ্যমপন্থী উম্মত করেছি, যেন তোমরা মানব জাতির উপর সাক্ষী হও-
(আল- বাকারাহঃ ১৪৩)। ——— অর্থ ন্যায়পরায়ণ।
৩৩৪০. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা নাবী (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে এক খানার দাওয়াতে উপস্থিত ছিলাম। তাহাঁর সামনে (রান্না করা) ছাগলের বাহু আনা হল, এটা তাহাঁর নিকট পছন্দনীয় ছিল। তিনি সেখান হইতে এক খন্ড খেলেন এবং বলিলেন, আমি কিয়ামতের দিন সমগ্র মানব জাতির সরদার হব। তোমরা কি জান? আল্লাহ কিভাবে (কিয়ামতের দিন) একই সমতলে পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকল মানুষকে একত্র করবেন? যেন একজন দর্শক তাদের সবাইকে দেখিতে পায় এবং একজন আহ্বানকারীর আহ্বান সবার নিকট পৌঁছায়। সূর্য তাদের অতি নিকটে এসে যাবে। তখন কোন কোন মানুষ বলবে, তোমরা কি লক্ষ্য করনি, তোমরা কি অবস্থায় আছ এবং কী পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছ। তোমরা কি এমন ব্যক্তিকে খুঁজে বের করিবে না, যিনি তোমাদের জন্য তোমাদের রবের নিকট সুপারিশ করবেন? তখন কিছু লোক বলবে, তোমাদের আদি পিতা আদম (আঃ) আছেন। তখন সকলে তাহাঁর নিকট যাবে এবং বলবে, হে আদম! আপনি সমস্ত মানব জাতির পিতা। আল্লাহ আপনাকে নিজ হাতে সৃষ্টি করিয়াছেন এবং তার পক্ষ হইতে রূহ আপনার মধ্যে ফুঁকেছেন। তিনি ফেরেশতাদেরকে (আপনার সম্মানের) নির্দেশ দিয়েছেন। সে অনুযায়ী সকলে আপনাকে সিজদাও করিয়াছেন এবং তিনি আপনাকে জান্নাতে বসবাস করিতে দিয়েছেন। আপনি কি আমাদের জন্য আপনার রবের নিকট সুপারিশ করবেন না? আপনি দেখেন না, আমরা কী অবস্থায় আছি এবং কী কষ্টের সম্মুখীন হয়েছি। তখন তিনি বলবেন, আমার রব আজ এমন রাগান্বিত হয়েছেন এর পূর্বে এমন রাগান্বিত হননি আর পরেও এমন রাগান্বিত হইবেন না। আর তিনি আমাকে বৃক্ষটি হইতে নিষেধ করেছিলেন। তখন আমি ভুল করেছি। এখন আমি নিজের চিন্তায়ই ব্যস্ত। তোমরা আমাকে ছাড়া অন্যের নিকট যাও। তোমরা নূহের নিকট চলে যাও। তখন তারা নূহ (আঃ)-এর নিকট আসবে এবং বলবে, হে নূহ! পৃথিবীবাসীদের নিকট আপনিই প্রথম রাসুল এবং আল্লাহ আপনার নাম রেখেছেন কৃতজ্ঞ বান্দা। আপনি কি লক্ষ্য করছেন না, আমরা কী ভয়াবহ অবস্থায় পড়ে আছি? আপনি দেখছেন না আমরা কতই না দুঃখ কষ্টের সম্মুখীন হয়ে আছি? আপনি কি আমাদের জন্য আপনার রবের নিকট সুপারিশ করবেন না? তখন তিনি বলবেন, আমার রব আজ এমন রাগান্বিত হয়ে আছেন, যা ইতোপূর্বে হন নাই এবং এমন রাগান্বিত পরেও হইবেন না। এখন আমি নিজের চিন্তায়ই ব্যস্ত। তোমরা নাবী [মুহাম্মাদ (সাঃআঃ)]-এর নিকট চলে যাও। তখন তারা আমার নিকট আসবে আর আমি আরশের নীচে সিজদায় পড়ে যাব। তখন বলা হইবে, হে মুহাম্মাদ! আপনার মাথা উঠান এবং সুপারিশ করুন। আপনার সুপারিশ গ্রহন করা হইবে আর আপনি যা চান, আপনাকে তাই দেয়া হইবে। মুহাম্মাদ ইবনু উবাইদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, হাদীসের সকল অংশ মুখস্ত করিতে পারিনি।
৩৩৪১. আবদুল্লাহ (ইবনু মাসঊদ) (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) সকল ক্বারীদের ক্বিরাআতের মত ——————– তিলাওয়াত করিয়াছেন।
৬০/৪. অধ্যায়ঃ (মহান আল্লাহর বাণীঃ)
আর নিশ্চয়ই ইলইয়াসও রাসুলগণের মধ্যে একজন ছিলেন। স্মরণ কর, তিনি তাহাঁর সম্প্রদায়কে বলেছিলেন, তোমরা কি সাবধান হইবে না? ……………. আমি তা পরবর্তীদের স্মরণে রেখেছি।
(আস্সাফফাতঃ ১২৩-১২৯)
ইবনু আব্বাস (রাদি.) বলেন, (ইলয়াস আঃ-এর কথাকে) মর্যাদার সঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে। ইলয়াসের প্রতি সালাম। আমি সৎ-কর্মশীলদেরকে এভাবেই পুরস্কৃত করে থাকি। নিঃসন্দেহে তিনি ছিলেন আমার মুমিন বান্দাদের অন্যতম– (আস্সাফফাত ১৩০-১৩২)
Leave a Reply