প্রতিনিধিত্ব , ভাগ বাঁটোয়ারা, ঋণ পরিশোধ, রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদি
প্রতিনিধিত্ব , ভাগ বাঁটোয়ারা, ঋণ পরিশোধ, রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদি >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ৪০, প্রতিনিধিত্ব, অধ্যায়ঃ (১-১৬)=১৬টি
৪০/১. অধ্যায়: ভাগ বাঁটোয়ারা ইত্যাদির ক্ষেত্রে এক শরীক অন্য শরীকের ওয়াকিল হওয়া।
৪০/২. অধ্যায়: মুসলমানের পক্ষে কোন মুসলমানকে মুসলমান দেশে কিংবা অমুসলিম দেশে প্রতিনিধি নিয়োগ করা বৈধ।
৪০/৩. অধ্যায়: স্বর্ণ-রৌপ্য বেচা-কেনা ও ওজনে বিক্রয়যোগ্য বস্তুসমূহে প্রতিনিধি নিয়োগ করা।
৪০/৪. অধ্যায়ঃ যখন রাখাল অথবা প্রতিনিধি দেখে যে, কোন বকরী মারা যাচ্ছে কিংবা কোন জিনিস নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, তখন সে বকরিটাকে যবেহ করে দিবে এবং যে জিনিসটা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়, সেটাকে ঠিক রাখার ব্যবস্থা করিবে।
৪০/৫. অধ্যায়ঃ উপস্থিত ও অনুপস্থিত ব্যক্তিকে ওয়াকীল নিয়োগ করা বৈধ।
৪০/৬. অধ্যায়ঃ ঋণ পরিশোধ করার জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ।
৪০/৭. অধ্যায়ঃ কোন প্রতিনিধিকে কিংবা কোন কওমের সুপারিশকারীকে কোন দ্রব্য হিবা করা বৈধ।
৪০/৮. অধ্যায়ঃ কেউ কোন লোককে কিছু দান করার জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ করে, কিন্তু কত দিবে তা উল্লেখ করেনি, তবে সে নিয়ম অনুযায়ী দান করিবে।
৪০/৯. অধ্যায়ঃ নারী কর্তৃক বিয়ের ক্ষেত্রে ইমামকে কাফিল নিয়োগ করা।
৪০/১০. অধ্যায়ঃ যদি কেউ কোন লোককে প্রতিনিধি নিয়োগ করে এবং ঐ প্রতিনিধি কোন কিছু বাদ দেয় অতঃপর প্রতিনিধি নিয়োগকারী তা অনুমোদন করে তবে এটা বৈধ। আর প্রতিনিধি যদি নির্দিষ্ট মেয়াদে কাউকে ধার প্রদান করে তবে তা বৈধ।
৪০/১১. অধ্যায়ঃ যদি ওয়াকীল কোন খারাপ জিনিস বিক্রয় করে, তবে তার বিক্রয় গ্রহণযোগ্য নয়।
৪০/১২. অধ্যায়ঃ ওয়াক্ফকৃত সম্পদে প্রতিনিধি নিয়োগ ও তার খরচপত্র এবং তার বন্ধু-বান্ধবকে আহার করানো, আর নিজেও শরীআত সম্মতভাবে আহার করা প্রসঙ্গে।
৪০/১৩. অধ্যায়ঃ (শরীআত নির্ধারিত শাস্তি) দন্ড প্রয়োগের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ করা।
৪০/১৪. অধ্যায়ঃ কুরবানীর উট ও তার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ।
৪০/১৫. অধ্যায়ঃ যখন কোন লোক তার নিয়োজিত প্রতিনিধিকে বলিল, এ মাল আপনি যেখানে ভাল মনে করেন খরচ করেন এবং ওয়াকীল বলিল, আপনি যা বলেছেন তা আমি শ্রবণ করেছি।
৪০/১৬. অধ্যায়ঃ কোষাগার ইত্যাদিতে বিশ্বস্ত প্রতিনিধি নিয়োগ করা
৪০/১. অধ্যায়: ভাগ বাঁটোয়ারা ইত্যাদির ক্ষেত্রে এক শরীক অন্য শরীকের ওয়াকিল হওয়া।
নাবী (সাঃআঃ) তাহাঁর হজ্জের কুরবানীর পশুতে আলী (রাদি.)-কে শরীক করেন। পরে তা বন্টন করে দেওয়ার আদেশ দেন
২২৯৯. আলী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) আমাকে কুরবানীকৃত উটের গলার মালা ও তার চামড়া দান করার হুকুম দিয়েছেন।
২৩০০. উকবাহ ইবনু আমির (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন যে, নাবী (সাঃআঃ) তাঁকে কিছু বকরী (ভেড়া) সাহাবীদের মধ্যে বন্টন করিতে দিলেন। বন্টন করার পর একটি বকরীর বাচ্চা বাকী থেকে যায়। তিনি তা নাবী (সাঃআঃ)- কে অবহিত করেন। তখন তিনি বলিলেন, তুমি নিজে এটাকে কুরবানী করে দাও।
৪০/২. অধ্যায়: মুসলমানের পক্ষে কোন মুসলমানকে মুসলমান দেশে কিংবা অমুসলিম দেশে প্রতিনিধি নিয়োগ করা বৈধ।
২৩০১. আবদুর রহমান ইবনু আওফ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি উমাইয়া ইবনু খালফের সঙ্গে এ মর্মে একটা চুক্তিনামা করলাম যে, সে মক্কায় আমার মাল-সামান হিফাযত করিবে আর আমি মদীনায় তার মাল-সামান হিফাযত করব। যখন আমি চুক্তি নামায় আমার নামের শেষে রহমান শব্দটি উল্লেখ করলাম তখন সে বলিল, আমি রহমানকে চিনি না। জাহিলী যুগে তোমার যে নাম ছিল সেটা লিখ। তখন আমি তাতে আবদু আমর লিখে দিলাম। বদর যুদ্ধের দিন যখন লোকজন ঘুমিয়ে পড়ল তখন আমি উমাইয়াকে রক্ষা করার জন্য একটি পাহাড়ের দিকে গেলাম। বিলাল (রাদি.) তাকে দেখে ফেললেন। তিনি দৌড়ে গিয়ে আনসারদের এক মজলিসে বলিলেন, এই যে উমাইয়া ইবনু খাল্ফ। যদি উমাইয়া বেঁচে যায়, তবে আমার বেঁচে থাকায় লাভ নেই। তখন আনসারদের একদল তার সাথে আমাদের পিছে পিছে ছুটলেন। যখন আমার আশঙ্কা হল যে, তারা আমাদের নিকট এসে পড়বেন, তখন আমি উমাইয়ার পুত্রকে তাঁদের জন্য পেছনে রেখে এলাম, যাতে তাঁদের দৃষ্টি তার উপর পড়ে। তাঁরা তাকে হত্যা করিলেন। তারপরেও তাঁরা ক্ষান্ত হলেন না, তাঁরা আমাদের পিছু ধাওয়া করিলেন। উমাইয়া ছিল স্থুলদেহী। যখন আনসাররা আমাদের কাছে পৌঁছে গেলেন, তখন আমি তাকে বললাম, বসে পড়। সে বসে পড়ল। আমি তাকে বাঁচানোর জন্য আমার দেহখানা দ্বারা তাকে আড়াল করে রাখলাম। কিন্তু তাঁরা আমার নীচে দিয়ে তরবারী ঢুকিয়ে তাকে হত্যা করে ফেলল। তাঁদের একজনের তরবারির আঘাত আমার পায়েও লাগল। রাবী বলেন, আবদুর রহমান ইবনু আওফ (রাদি.) তাহাঁর পায়ের সে আঘাত আমাদেরকে দেখাতেন। আবু আবদুল্লাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন ইউসুফ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) সালিহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে এবং ইবরাহীম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) তার পিতা হইতে বর্ণনা শুনেছেন।
৪০/৩. অধ্যায়: স্বর্ণ-রৌপ্য বেচা-কেনা ও ওজনে বিক্রয়যোগ্য বস্তুসমূহে প্রতিনিধি নিয়োগ করা।
উমর ও ইবন উমর (রাদি.) সোনা-রুপার ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যাপারে ওয়াকীল নিয়োগ করেছিলেন।
২৩০২. আবু সাঈদ খুদরী ও আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) এক ব্যাক্তিকে খায়বারের কর্মচারী নিয়োগ করিলেন। সে বেশ কিছু উন্নতমানের খেজুর তাহাঁর নিকটে নিয়ে আসল। নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, খায়বারের সব খেজুরই কি এরকম? সে বলিল, আমরা দু সার বদলে এর এক সা নিয়ে থাকি কিংবা তিন সার বদলে দুসা নিয়ে থাকি। তখন নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, এরূপ কর না। মিশ্রিত খেজুর দিরহাম নিয়ে বিক্রি কর। তারপর এ দিরহাম দিয়েই উন্নতমানের খেজুর ক্রয় কর। ওজনে বিক্রয়যোগ্য বস্তুসমূহের ব্যাপারেও তিনি একই কথা বলেছেন।
২৩০৩. আবু সাঈদ খুদরী ও আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) এক ব্যাক্তিকে খায়বারের কর্মচারী নিয়োগ করিলেন। সে বেশ কিছু উন্নতমানের খেজুর তাহাঁর নিকটে নিয়ে আসল। নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, খায়বারের সব খেজুরই কি এরকম? সে বলিল, আমরা দু সার বদলে এর এক সা নিয়ে থাকি কিংবা তিন সার বদলে দুসা নিয়ে থাকি। তখন নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, এরূপ কর না। মিশ্রিত খেজুর দিরহাম নিয়ে বিক্রি কর। তারপর এ দিরহাম দিয়েই উন্নতমানের খেজুর ক্রয় কর। ওজনে বিক্রয়যোগ্য বস্তুসমূহের ব্যাপারেও তিনি একই কথা বলেছেন।
৪০/৪. অধ্যায়ঃ যখন রাখাল অথবা প্রতিনিধি দেখে যে, কোন বকরী মারা যাচ্ছে কিংবা কোন জিনিস নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, তখন সে বকরিটাকে যবেহ করে দিবে এবং যে জিনিসটা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়, সেটাকে ঠিক রাখার ব্যবস্থা করিবে।
২৩০৪. ইবনু কাব ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি তার পিতা হইতে বর্ণনা করেন যে, তার কতকগুলো ছাগল-ভেড়া ছিল, যা সাল্ নামক স্থানে চরে বেড়াতো। একদিন আমাদের এক দাসী দেখলো যে, আমাদের ছাগল ভেড়ার মধ্যে একটি মারা যাচ্ছে। তখন সে একটি পাথর ভেঙ্গে তা দিয়ে ছাগলটাকে যবেহ করে দিল। কাব তাদেরকে বলিলেন, তোমরা এটা খেয়ো না, যে পর্যন্ত না আমি নাবী (সাঃআঃ)- কে জিজ্ঞেস করে আসি অথবা কাউকে নাবী (সাঃআঃ)-এর নিকট জিজ্ঞেস করিতে পাঠায়। তিনি নিজেই নাবী (সাঃআঃ)- কে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলে অথবা কাউকে পাঠিয়েছিলেন। তিনি [নাবী (সাঃআঃ)] তা খাওয়ার হুকুম দিয়েছিলেন। উবায়দুল্লাহ বলেন, এ কথাটা আমার কাছে খুব ভাল লাগল যে, দাসী হয়েও সে ছাগলটাকে যবেহ করিল।
৪০/৫. অধ্যায়ঃ উপস্থিত ও অনুপস্থিত ব্যক্তিকে ওয়াকীল নিয়োগ করা বৈধ।
ইবনু আমর (রাদি.) তাহাঁর পরিবারের ওয়াকীলকে লিখে পাঠান, যেন সে তাহাঁর ছোট-বড় সকলের তরফ হইতে সাদাকায়ে ফিতর আদায় করে দেয়, অথচ সে অনুপুস্থিত ছিল।
২৩০৫. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ)-এর নিকট কোন এক ব্যাক্তির একটি বিশেষ বয়সের উট পাওনা ছিল। সে পাওয়ার জন্য আসলে তিনি সাহাবী দের বলিলেন, তার পাওনা দিয়ে দাও। তাঁরা সে উটের সমবয়সী উট অনেক খোঁজাখুঁজি করিলেন। কিন্তু তা পেলেন না। কিন্তু তা থেকে বেশী বয়সের উট পেলেন। তখন নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, তাই দিয়ে দাও। তখন লোকটি বলিল, আপনি আমার প্রাপ্য পুরোপুরি আদায় করিয়াছেন; আল্লাহ আপনাকেও পুরোপুরি প্রতিদান দিন। নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, যে পরিশোধ করার বেলায় উদার সেই তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যাক্তি।
৪০/৬. অধ্যায়ঃ ঋণ পরিশোধ করার জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ।
২৩০৬. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
এক ব্যাক্তি নাবী (সাঃআঃ)-এর কাছে পাওনার জন্য তাগাদা দিতে এসে রূঢ় ভাষায় কথা বলিতে লাগল। এতে সাহাবীগণ তাকে শায়েস্তা করিতে উদ্যত হলেন। তখন আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলিলেন, তাক ছেড়ে দাও। কেননা, পাওনাদারদের কড়া কথা বলার অধিকার রয়েছে। তারপর তিনি বলিলেন, তার উটের সমবয়সী একটি উট তাকে দিয়ে দাও। তাঁরা বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! এটা নেই। এর চেয়ে উত্তম উট রয়েছে। তিনি বলিলেন, তাই দিয়ে দাও। তোমাদের মধ্যে সেই সর্বোৎকৃষ্ট, যে ঋণ পরিশোধের বেলায় উত্তম।
৪০/৭. অধ্যায়ঃ কোন প্রতিনিধিকে কিংবা কোন কওমের সুপারিশকারীকে কোন দ্রব্য হিবা করা বৈধ।
কেননা, নাবী (সাঃআঃ) হাওয়াযিন গোত্রের প্রতিনিধি দলকে যখন তারা গনীমতের মাল ফেরত চেয়েছিল বলেছিলেন, আমি আমার অংশ তোমাদেরকে দিয়ে দিচ্ছি।
২৩০৭. মারওয়ান ইবনু হাকাম ও মিসওয়ার ইবনু মাখরামা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
হাওয়াযিন গোত্রের প্রতিনিধি দল যখন ইসলাম গ্রহন করে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর কাছে এলেন, তখন তিনি উঠে দাঁড়ালেন। প্রতিনিধি দল আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর কাছে তাদের ধন-সম্পদ ও বন্দী ফেরত চাইলেন। তখন তিনি বলিলেন, আমার নিকট সত্য কথাই অধিকতর পছন্দনীয়। কাজেই তোমরা দুটোর মধ্যে একটা বেছে নাও- হয় বন্দী, নয় সম্পদ। আমি তো এদের আগমনের অপেক্ষায়ই প্রতীক্ষমান ছিলাম। (বর্ণনাকারী বলেন) তায়ীফ হইতে প্রত্যাবর্তন করে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) দশ রাতেরও বেশী তাদের জন্য অপেক্ষা করেছিলেন। যখন (প্রতিনিধি দল) বুঝতে পারলেন যে, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) দুটোর মধ্যে একটি ফেরত দেবেন, তখন তারা বলিলেন, আমরা আমাদের বন্দীদেরকে গ্রহন করছি। তখন আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) মুসলিমগণের মাঝে দাঁড়িয়ে আল্লাহ তাআলার যথাযথ প্রশংসা করে বলিলেন, তোমাদের এই ভাইয়েরা তাওবা করে আমার কাছে এসেছে এবং আমার অভিপ্রায় এই যে, আমি তাদের বন্দীদের ফেরত দিই। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে যে ব্যাক্তি নিজ খুশিতে স্বেচ্ছা-প্রণোদিত হয়ে ফেরত দিতে চায়, সে দিক। আর তোমাদের মধ্যে যে এর বিনিময় গ্রহন পছন্দ করে, আমরা সেই গণীমতের মাল হইতে তা দিব যা আল্লাহ প্রথম আমাদের দান করবেন। সে তা করুক অর্থাৎ বিনিময় নিয়ে ফেরত দিক। সাহাবীগণ বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা স্বেচ্ছায় তাদেরকে ফেরত দিলাম। আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলিলেন, তোমাদের মধ্যে কে অনুমতি দিল আর কে দিল না, তা আমরা বুঝতে পারছি না। কাজেই তোমরা ফিরে যাও এবং তোমাদের নেতাগণ তোমাদের মতামত আমাদের নিকট পেশ করুক। সাহাবীগণ ফিরে গেলেন। তাঁদের নেতা তাঁদের সাথে আলাপ-আলোচনা করিলেন। তারপর তারা আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর নিকট এসে জানালেন যে, সাহাবীগণ সন্তুষ্টচিত্তে অনুমতি দিয়েছেন
২৩০৮. মারওয়ান ইবনু হাকাম ও মিসওয়ার ইবনু মাখরামা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
হাওয়াযিন গোত্রের প্রতিনিধি দল যখন ইসলাম গ্রহন করে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর কাছে এলেন, তখন তিনি উঠে দাঁড়ালেন। প্রতিনিধি দল আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর কাছে তাদের ধন-সম্পদ ও বন্দী ফেরত চাইলেন। তখন তিনি বলিলেন, আমার নিকট সত্য কথাই অধিকতর পছন্দনীয়। কাজেই তোমরা দুটোর মধ্যে একটা বেছে নাও- হয় বন্দী, নয় সম্পদ। আমি তো এদের আগমনের অপেক্ষায়ই প্রতীক্ষমান ছিলাম। (বর্ণনাকারী বলেন) তায়ীফ হইতে প্রত্যাবর্তন করে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) দশ রাতেরও বেশী তাদের জন্য অপেক্ষা করেছিলেন। যখন (প্রতিনিধি দল) বুঝতে পারলেন যে, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) দুটোর মধ্যে একটি ফেরত দেবেন, তখন তারা বলিলেন, আমরা আমাদের বন্দীদেরকে গ্রহন করছি। তখন আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) মুসলিমগণের মাঝে দাঁড়িয়ে আল্লাহ তাআলার যথাযথ প্রশংসা করে বলিলেন, তোমাদের এই ভাইয়েরা তাওবা করে আমার কাছে এসেছে এবং আমার অভিপ্রায় এই যে, আমি তাদের বন্দীদের ফেরত দিই। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে যে ব্যাক্তি নিজ খুশিতে স্বেচ্ছা-প্রণোদিত হয়ে ফেরত দিতে চায়, সে দিক। আর তোমাদের মধ্যে যে এর বিনিময় গ্রহন পছন্দ করে, আমরা সেই গণীমতের মাল হইতে তা দিব যা আল্লাহ প্রথম আমাদের দান করবেন। সে তা করুক অর্থাৎ বিনিময় নিয়ে ফেরত দিক। সাহাবীগণ বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা স্বেচ্ছায় তাদেরকে ফেরত দিলাম। আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলিলেন, তোমাদের মধ্যে কে অনুমতি দিল আর কে দিল না, তা আমরা বুঝতে পারছি না। কাজেই তোমারা ফিরে যাও এবং তোমাদের নেতাগণ তোমাদের মতামত আমাদের নিকট পেশ করুক। সাহাবীগণ ফিরে গেলেন। তাঁদের নেতা তাঁদের সাথে আলাপ-আলোচনা করিলেন। তারপর তারা আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর নিকট এসে জানালেন যে, সাহাবীগণ সন্তুষ্টচিত্তে অনুমতি দিয়েছেন
৪০/৮. অধ্যায়ঃ কেউ কোন লোককে কিছু দান করার জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ করে, কিন্তু কত দিবে তা উল্লেখ করেনি, তবে সে নিয়ম অনুযায়ী দান করিবে।
২৩০৯. জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি এক সফরে নাবী (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে ছিলাম। আমি ধীরগতি সম্পন্ন উটের সাওয়ার ছিলাম, যার ফলে উটটা দলের পেছনে পড়ে গেল। এমনি অবস্থায় নাবী (সাঃআঃ) আমার কাছ দিয়ে গেলেন এবং বলিলেন, এ কে? আমি বললাম, জাবির ইবনু আবদুল্লাহ। তিনি বলিলেন, তোমার কী হলো (পেছনে কেন)? আমি বললাম, আমি ধীরগতি সম্পন্ন উটে সাওয়ার হয়েছি। তিনি বলিলেন, তোমার কাছে কি কোন লাঠি আছে? আমি বললাম, হ্যাঁ আছে। এটা আমাকে দাও। আমি তখন সেটা তাঁকে দিলাম। তিনি উটটাকে চাবুক মেরে হাঁকালেন। এতে উটটা (দ্রুত চলে) সে স্থান হইতে দলের অগ্রভাগে চলে গেল। তিনি বলিলেন, এটা আমার কাছে বিক্রি করে দাও। আমি বললাম, নিশ্চয় হে আল্লাহর রাসুল! এটা আপনারই (অর্থাৎ বিনা মালেই নিয়ে নিন)। তিনি বলিলেন, (না) বরং এটা আমার কাছে বিক্রি কর। তিনি বলিলেন, চার দীনার মূল্যে আমি এটা কিনে নিলাম। তবে মদীনা পর্যন্ত এর পিঠে তুমিই সাওয়ার থাকবে। আমরা যখন মদীনার নিকটবর্তী হলাম, তখন আমি আমার বাড়ীর দিকে রওয়ানা হলাম। তিনি জিজ্ঞেস করিলেন, কোথায় যাচ্ছ? আমি বললাম, আমি একজন বিধবা মেয়েকে বিয়ে করেছি। তিনি বলিলেন, কুমারী কেন বিয়ে করলে না? তুমি তার সাথে খেলা করিতে? সে তোমার সাথে খেলা করত এবং আমি বললাম, আমার আব্বা মারা গেছেন এবং কয়েকজন কন্যা রেখে গেছেন। আমি চাইলাম এমন একটা মেয়েকে বিয়ে করিতে, যে হইবে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এবং বিধবা। তিনি বলিলেন, তাহলে ঠিক আছে। আমরা মদীনায় পৌঁছালে তিনি বলিলেন, হে বিলাল! জাবিরকে তার দাম দিয়ে দাও এবং কিছু বেশীও দিয়ে দিও। কাজেই বিলাল (রাদি.) তাকে চার দিনার এবং অতিরিক্ত এক কীরাত (সোনা) দিলেন। জাবির (রাদি.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর দেয়া অতিরিক্ত এক কীরাত সোনা কখনো আমার কাছ হইতে বিচ্ছিন্ন হত না। তাই তা জাবির (রাদি.)-এর থলেতে সব সময় থাকত, কখনো বিচ্ছিন্ন হত না।
৪০/৯. অধ্যায়ঃ নারী কর্তৃক বিয়ের ক্ষেত্রে ইমামকে কাফিল নিয়োগ করা।
২৩১০. সাহল ইবনু সাদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক মহিলা আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর নিকট এসে বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! আমি আপনার প্রতি আমাকে হেবা করে দিয়েছি। তখন এক ব্যক্তি বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! একে আমার সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দিন। তিনি বলিলেন, কুরআনের যে অংশটুকু তোমার মুখস্থ রয়েছে তার বিনিময়ে আমি এর সঙ্গে বিয়ে দিলাম।
৪০/১০. অধ্যায়ঃ যদি কেউ কোন লোককে প্রতিনিধি নিয়োগ করে এবং ঐ প্রতিনিধি কোন কিছু বাদ দেয় অতঃপর প্রতিনিধি নিয়োগকারী তা অনুমোদন করে তবে এটা বৈধ। আর প্রতিনিধি যদি নির্দিষ্ট মেয়াদে কাউকে ধার প্রদান করে তবে তা বৈধ।
২৩১১.আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) আমাকে রমযানের যাকাত হিফাযত করার দায়িত্বে নিযুক্ত করিলেন। এক ব্যক্তি এসে অঞ্জলি ভর্তি করে খাদ্য সামগ্রী নিতে লাগল। আমি তাকে পাকড়াও করলাম এবং বললাম, আল্লাহর কসম! আমি তোমাকে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর কাছে উপস্থিত করব। সে বলিল, আমাকে ছেড়ে দিন। আমি খুব অভাবগ্রস্থ, আমার যিম্মায় পরিবারের দায়িত্ব রয়েছে এবং আমার প্রয়োজন তীব্র। তিনি বলিলেন, আমি ছেড়ে দিলাম। যখন সকাল হলো, নাবী (সাঃআঃ) আমাকে জিজ্ঞেস করিলেন, হে আবু হুরাইরা, তোমার রাতের বন্দী কি করলে? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! সে তার তীব্র অভাব ও পরিবার, পরিজনের কথা বলায় তার প্রতি আমার দয়া হয়, তাই তাকে ছেড়ে দিয়েছি। তিনি বলিলেন, সাবধান! সে তোমার কাছে মিথ্যা বলেছে এবং সে আবার আসবে। সে আবার আসবে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) এর উক্তির কারণে আমি বুঝতে পারলাম যে, সে পুনরায় আসবে। কাজেই আমি তার অপেক্ষায় থাকলাম। সে এল এবং অঞ্জলি ভরে খাদ্য সামগ্রী নিতে লাগল। আমি ধরে ফেললাম এবং বললাম, আমি তোমাকে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর কাছে নিয়ে যাব। সে বলিল, আমাকে ছেড়ে দিন। কেননা, আমি খুবই দরিদ্র এবং আমার উপর পরিবার-পরিজনের দায়িত্ব ন্যস্ত, আমি আর আসব না। তার প্রতি আমার দয়া হল এবং আমি তাকে ছেড়ে দিলাম। সকাল হলে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) আমাকে জিজ্ঞেস করিলেন, হে আবু হুরাইরা! তোমার বন্দী কী করলে? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! সে তার তীব্র প্রয়োজন এবং পরিবার-পরিজনের কথা বলায় তার প্রতি আমার দয়া হয়। তাই আমি তাকে ছেড়ে দিয়েছি। তিনি বলিলেন, খবরদার সে তোমার কাছে মিথ্যা বলেছে এবং সে আবার আসবে। তাই আমি তৃতীয়বার তার অপেক্ষায় রইলাম। সে আসল এবং অঞ্জলি ভর্তি করে খাদ্য সামগ্রী নিতে লাগল। আমি তাকে পাকড়াও করলাম এবং বললাম, আমি তোমাকে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর কাছে অবশ্যই নিয়ে যাব। এ হলো তিনবারের শেষবার। তুমি প্রত্যেক বার বল যে, আর আসবে না, কিন্তু আবার আস। সে বলিল, আমাকে ছেড়ে দাও। আমি তোমাকে কয়েকটি কথা শিখিয়ে দেব। যা দিয়ে আল্লাহ তোমাকে উপকৃত করবেন। আমি বললাম, সেটা কী? সে বলিল, যখন তুমি রাতে শয্যায় যাবে তখন আয়াতুল কুরসী —- اللهُ لاَ إِلٰهَ إِلاَّ هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ ——————— আয়াতের শেষ পর্যন্ত পড়বে। তখন আল্লাহর তরফ হইতে তোমার জন্য একজন রক্ষক নিযুক্ত হইবে এবং ভোর পর্যন্ত শয়তান তোমার কাছে আসতে পারবে না। কাজেই তাকে ছেড়ে দিলাম। ভোর হলে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) আমাকে বলিলেন, গত রাতের তোমার বন্দী কী করিল? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! সে আমাকে বলিল যে, সে আমাকে কয়েকটি বাক্য শিক্ষা দেবে যা দিয়ে আল্লাহ আমাকে লাভবান করবেন। তাই আমি তাকে ছেড়ে দিয়েছি। তিনি আমাকে বলিলেন, এই বাক্যগুলো কী? আমি বললাম, সে আমাকে বলিল, যখন তুমি তোমার বিছানায় শুতে যাবে তখন আয়াতুল কুরসী ————– اللهُ لاَ إِلٰهَ إِلاَّ هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ ——– প্রথম হইতে আয়াতের শেষ পর্যন্ত পড়বে এবং সে আমাকে বলিল, এতে আল্লাহর তরফ হইতে তোমার জন্য একজন রক্ষক নিযুক্ত থাকবেন এবং ভোর পর্যন্ত তোমার নিকট কোন শয়তান আসতে পারবে না। সাহাবায়ে কিরাম কল্যাণের জন্য বিশেষ লালায়িত ছিলেন। নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, হ্যাঁ, এ কথাটি তো সে তোমাকে সত্য বলেছে। কিন্তু হুশিয়ার, সে মিথ্যুক। হে আবু হুরাইরা! তুমি কি জান, তিন রাত ধরে তুমি কার সাথে কথাবার্তা বলেছিলে। আবু হুরাইরা (রাদি.) বলিলেন, না। তিনি বলিলেন, সে ছিল শয়তান।
৪০/১১. অধ্যায়ঃ যদি ওয়াকীল কোন খারাপ জিনিস বিক্রয় করে, তবে তার বিক্রয় গ্রহণযোগ্য নয়।
২৩১২. আবু সাঈদ খুদরী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বিলাল (রাদি.) কিছু বরনী খেজুর (উন্নতমানের খেজুর) নিয়ে নাবী (সাঃআঃ)-এর কাছে আসেন। নাবী (সাঃআঃ) তাকে জিজ্ঞেস করিলেন, এগুলো কোথায় পেলে? বিলাল (রাদি.) বলিলেন, আমাদের নিকট কিছু নিকৃষ্ট মানের খেজুর ছিল। নাবী (সাঃআঃ)- কে খাওয়ানোর উদ্দেশ্যে তা দু সা-এর বিনিময়ে এক সা কিনেছি। একথা শুনে নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, হায়! হায়! এটাতো একেবারে সুদ! এটাতো একেবারে সুদ! এরূপ করো না। যখন তুমি উৎকৃষ্ট খেজুর কিনতে চাও, তখন নিকৃষ্ট খেজুর ভিন্নভাবে বিক্রি করে দাও। তারপর সে মুল্যের বিনিময়ে উৎকৃষ্ট খেজুর কিনে নাও।
৪০/১২. অধ্যায়ঃ ওয়াক্ফকৃত সম্পদে প্রতিনিধি নিয়োগ ও তার খরচপত্র এবং তার বন্ধু-বান্ধবকে আহার করানো, আর নিজেও শরীআত সম্মতভাবে আহার করা প্রসঙ্গে।
২৩১৩. আমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, উমার (রাদি.)-এর সদাকা সম্পর্কিত লিপিতে ছিল যে, মুতাওয়াল্লী নিজে ভোগ করলে এবং বন্ধু-বান্ধবকে আপ্যায়ন করলে কোন গুনাহ নেই; যদি মাল সঞ্চয় করার উদ্দেশ্য না থাকে। ইবনু উমার (রাদি.), উমার (রাদি.)-এর সদাকার মুতাওয়াল্লী ছিলেন। তিনি যখন মক্কাবাসী লোকেদের নিকট অবতরণ করিতেন, তখন তাদেরকে সেখান হইতে উপঢৌকন পাঠিয়ে দিতেন।
৪০/১৩. অধ্যায়ঃ (শরীআত নির্ধারিত শাস্তি) দন্ড প্রয়োগের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ করা।
২৩১৪. যায়েদ ইবনু খালিদ ও আবু হুরাইরা (রাদি.) সুত্রে নাবী (সাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হে উনাইস (ইবনু যিহাক আসলামী) সে মহিলার নিকট যাও। যদি সে (অপরাধ) স্বীকার করে তবে তাঁকে প্রস্তর নিক্ষেপে হত্যা কর।
২৩১৫. যায়েদ ইবনু খালিদ ও আবু হুরাইরা (রাদি.) সুত্রে নাবী (সাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হে উনাইস (ইবনু যিহাক আসলামী) সে মহিলার নিকট যাও। যদি সে (অপরাধ) স্বীকার করে তবে তাঁকে প্রস্তর নিক্ষেপে হত্যা কর।
২৩১৬. উকবা ইবনু হারিস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নুআইমানকে অথবা ইবনু নুআইমানকে নেশাগ্রস্থ অবস্থায় আনা হল। তখন আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) ঘরে উপস্থিত লোকদেরকে তাকে প্রহার করিতে আদেশ দিলেন। রাবী বলেন, যারা তাকে প্রহার করেছিল, তাদের মধ্যে আমিও ছিলাম। আমরা তাকে জুতা দিয়ে এবং খেজুর ডাল দিয়ে প্রহার করেছি।
৪০/১৪. অধ্যায়ঃ কুরবানীর উট ও তার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ।
২৩১৭. আমরাহ বিনতু আবদুর রহমান (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আয়েশা (রাদি.) বলেন, আমি নিজ হাতে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর কুরবানীর জন্তুর জন্য হার পাকিয়েছি। তারপর আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) নিজ হাতে তাকে হার পরিয়ে আমার পিতা [আবু বকর (রাদি.)]-এর সঙ্গে পাঠিয়েছেন। কুরবানীর জন্তু যবেহ করার পর আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর উপর কোন কিছু হারাম থাকেনি, যা আল্লাহ তাহাঁর জন্য হালাল করিয়াছেন।
৪০/১৫. অধ্যায়ঃ যখন কোন লোক তার নিয়োজিত প্রতিনিধিকে বলিল, এ মাল আপনি যেখানে ভাল মনে করেন খরচ করেন এবং ওয়াকীল বলিল, আপনি যা বলেছেন তা আমি শ্রবণ করেছি।
২৩১৮. আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মদীনায় আনসারদের মধ্যে আবু তালহাই সবচেয়ে বেশী ধনী ছিলেন এবং তাহাঁর সম্পদের মধ্যে বায়রুহা তাহাঁর সবচেয়ে প্রিয় সম্পদ ছিল, এটা মসজিদের (নাববীর) সম্মুখে অবস্থিত ছিল। আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) তথায় যেতেন এবং এতে যে উৎকৃষ্ট পানি ছিল তা পান করিতেন। যখন এ আয়াত নাযিল হলোঃ
لَنْ تَنَالُوا الْبِرَّ حَتَّى تُنْفِقُوا مِمَّا تُحِبُّونَ
“তোমরা যা ভালবাস, তা হইতে ব্যয় না করা পর্যন্ত তোমরা কখনো পুণ্য লাভ করিবে না”— (আল্ ইমরান (৩) : ৯২)। তখন আবু তালহাহ (রাদি.) আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর সামনে এসে দাঁড়ালেন এবং বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আল্লাহ তাহাঁর কিতাবে বলেছেনঃ “তোমরা যা ভালবাস, তা হইতে যে পর্যন্ত দান না করিবে, সে পর্যন্ত তোমরা প্রকৃত পুণ্য লাভ করিবে না” – (আল্ ইমরান (৩) : ৯২)। আর আমার সম্পদের মধ্যে বায়রুহা আমার নিকট সবচেয়ে প্রিয় সম্পদ। আমি ওটা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দান করে দিলাম। ওর সওয়াব ও প্রতিদান আমি আল্লাহর নিকট প্রত্যাশা করছি। কাজেই হে আল্লাহর রাসুল! আপনি ওটাকে যেখানে ভাল মনে করেন, খরচ করেন। নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, বেশ। এ সম্পদ তো প্রস্থানকারী, এ সম্পদ তো চলে যাওয়ার। তুমি এ ব্যাপারে যা বললে, তা আমি শুনলাম এবং এটাই সঙ্গত মনে করি যে, এটা তুমি তোমার আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে বণ্টন করে দিবে। আবু তালহাহ (রাদি.) বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমি তাই করব। তারপর আবু তালহাহ (রাদি.) তার নিকটাত্মীয় ও চাচাত ভাইদের মধ্যে তা বণ্টন করে দিলেন।
ইসমাঈল (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) মালিক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে অনুরূপ হাদীস বর্ণনায় ইয়াহইয়া (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-এর অনুসরণ করিয়াছেন। রাওহ মালিক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণনা করিয়াছেন, এতে তিনি রায়িহুন স্থলে রাবিহুন বলেছেন। এর অর্থ হল লাভজনক।
৪০/১৬. অধ্যায়ঃ কোষাগার ইত্যাদিতে বিশ্বস্ত প্রতিনিধি নিয়োগ করা
২৩১৯. আবু মূসা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন, বিশ্বস্ত কোষাধ্যক্ষ যে ঠিকমত ব্যয় করে, অনেক সময় বলেছেন, যাকে দান করিতে বলা হয় তাকে পরিপূর্ণভাবে সন্তুষ্টচিত্তে দিয়ে দেয় সেও (কোষাধ্যক্ষ) দানকারীদের একজন।
Leave a Reply