হজে কংকর নিক্ষেপ করা , দুআ করা এবং অন্যান্য নিয়মাবলী

হজে কংকর নিক্ষেপ করা , দুআ করা এবং অন্যান্য নিয়মাবলী

হজে কংকর নিক্ষেপ করা , দুআ করা এবং অন্যান্য নিয়মাবলী >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

পর্বঃ ২৫, হজ্জ, অধ্যায়ঃ (১২৬-১৫১)=২৬টি

২৫/১২৬. অধ্যায়ঃ ইহরামের সময় মাথায় আঠালো দ্রব্য লাগান ও মাথা মুণ্ডানো।
২৫/১২৭. অধ্যায়ঃ হালাল হওয়ার সময় মাথার চুল মুণ্ডন করা ও ছাঁটা।
২৫/১২৮. অধ্যায়ঃ উমরাহ আদায়ের পর তামাত্তু হজ্জ সম্পাদনকারীর চুল ছাঁটা।
২৫/১২৯. অধ্যায়ঃ কুরবানীর দিবসে তাওয়াফে যিয়ারত সম্পাদন করা।
২৫/১৩০. অধ্যায়ঃ ভুলবশত বা অজ্ঞতার কারণে কেউ যদি সন্ধ্যার পর কংকর মারে অথবা কুরবানীর পশু যবহ করার পূর্বে মাথা মুণ্ডন করে ফেলে।
২৫/১৩১. অধ্যায়ঃ জামারার নিকট সওয়ারীতে আরোহিত অবস্থায় ফতোয়া প্রদান করা।
২৫/১৩২. অধ্যায়ঃ মিনার দিবসগুলোতে খুৎবাহ প্রদান করা।
২৫/১৩৩. অধ্যায়ঃ (হাজীদের) পানি পান করানোর ব্যবস্থাকারী ও অন্যান্যরা মিনার রাত্রিগুলিতে মক্কায় অবস্থান করিতে পারে কি?
২৫/১৩৪. অধ্যায়ঃ কঙ্কর নিক্ষেপ।
২৫/১৩৫. অধ্যায়ঃ বাতন ওয়াদী তথা (উপত্যকার নীচুস্থান) হইতে কঙ্কর নিক্ষেপ।
২৫/১৩৬. অধ্যায়ঃ জামারায় সাতটি কঙ্কর নিক্ষেপ।
২৫/১৩৭. অধ্যায়ঃ বাইতুল্লাহকে বাম দিকে রেখে জামারায়ে আকাবায় কঙ্কর নিক্ষেপ।
২৫/১৩৮. অধ্যায়ঃ প্রতিটি কঙ্কর এর সঙ্গে তাকবীর পাঠ।
২৫/১৩৯. অধ্যায়ঃ জামারায়ে আকাবায় কঙ্কর নিক্ষেপ করে অপেক্ষা না করা।
২৫/১৪০. অধ্যায়ঃ অপর দুই জামারায় কঙ্কর নিক্ষেপ করে সমতল ভুমিতে গিয়ে কিবলামুখী হয়ে দাঁড়ানো।
২৫/১৪১. অধ্যায়ঃ নিকটবর্তী এবং মধ্যবর্তী জামারার নিকট দুই হস্ত উত্তোলন করা।
২৫/১৪২. অধ্যায়ঃ দুই জামারার নিকটে দুআ করা।
২৫/১৪৩. অধ্যায়ঃ কঙ্কর নিক্ষেপ এর পর সুগন্ধি ব্যবহার এবং তাওয়াফে যিয়ারাতের পূর্বে মাথা মুণ্ডন।
২৫/১৪৪. অধ্যায়ঃ বিদায়ী তাওয়াফ।
২৫/১৪৫. অধ্যায়ঃ তাওয়াফে যিয়ারতের পর কোন স্ত্রী লোকের ঋতু আসলে।
২৫/১৪৬. অধ্যায়ঃ (মিনা হইতে) ফেরার দিন আবতাহ নামক স্থানে আসর সালাত আদায় করা।
২৫/১৪৭. অধ্যায়ঃ মুহাসসাব।
২৫/১৪৮. অধ্যায়ঃ মক্কার প্রবেশের পূর্বে যু-তুয়া উপত্যকায় অবতরণ এবং মক্কা হইতে ফেরার সময় যুল-হুলাইফার বাতহাতে অবতরণ।
২৫/১৪৯. অধ্যায়ঃ মক্কা হইতে প্রত্যাবর্তনের সময় যু-তুয়া উপত্যকায় অবতরন করা।
২৫/১৫০. অধ্যায়ঃ (হজ্জের) মৌসুমে ব্যবসা করা এবং জাহিলি যুগের বাজারগুলোতে ক্রয়-বিক্রয় করা।
২৫/১৫১. অধ্যায়ঃ মুহাসসাব হইতে শেষ রাতে যাত্রা করা।

২৫/১২৬. অধ্যায়ঃ ইহরামের সময় মাথায় আঠালো দ্রব্য লাগান ও মাথা মুণ্ডানো।

১৭২৫. হাফসা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, হে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)! লোকদের কী হল যে, তারা উমরাহ করে হালাল হয়ে গেল অথচ আপনি উমরাহ হইতে হালাল হননি! আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বললেনঃ আমি তো আমার মাথায় আঠালো বস্তু লাগিয়েছি এবং পশুর গলায় কিলাদা ঝুলিয়েছি। তাই কুরবানী না করে আমি হালাল হইতে পারি না। (১৫৬৬)

(আঃপ্রঃ ১৬০৭, ইঃফাঃ ১৬১৪)

২৫/১২৭. অধ্যায়ঃ হালাল হওয়ার সময় মাথার চুল মুণ্ডন করা ও ছাঁটা।

১৭২৬. নাফি (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

ইবনু উমর (রাদি.) বলিতেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) হজ্জের সময় তাহাঁর মাথা কামিয়েছিলেন।

(৪৪১০, ৪৪১১, মুসলিম ১৫/৫৫, হাদীস ১৩০৪, আহমাদ ৫৬১৮) (আঃপ্রঃ ১৬০৮, ইঃফাঃ ১৬১৫)

১৭২৭. আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেনঃ হে আল্লাহ! মাথা মুণ্ডনকারীদের প্রতি রহম করুন। সাহাবীগণ বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! যারা মাথার চুল ছোট করেছে তাদের প্রতিও। রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ হে আল্লাহ! মাথা মুণ্ডনকারীদের প্রতি রহম করুন। সাহাবীগণ বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! যারা চুল ছোট করেছে তাদের প্রতিও। এবার আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বললেনঃ যারা চুল ছোট করেছে তাদের প্রতিও। লায়স (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমাকে নাফি (রফ.) বলেছেন, আল্লাহ মাথা মুণ্ডনকারীদের প্রতি রহমত বর্ষণ করুন, এ কথাটি তিনি একবার অথবা দুবার বলেছেন। রাবী বলেন, উবায়দুল্লাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) নাফি (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণনা করেন, চতুর্থবার বলেছেনঃ চুল যারা ছোট করেছে তাদের প্রতিও।

(মুসলিম ১৫/৫৫, হাদীস ১৩০২, আহমাদ ৭১৬১) (আঃপ্রঃ ১৬০৯, ইঃফাঃ ১৬১৬)

১৭২৮. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদিন আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বললেনঃ হে আল্লাহ! মাথা মুণ্ডনকারীদের ক্ষমা করুন। সাহাবীগণ বলিলেন, যারা চুল ছোট করেছে তাদের প্রতিও। আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বললেনঃ হে আল্লাহ! মাথা মুণ্ডনকারীদেরকে ক্ষমা প্রদর্শন করুন। সাহাবীগণ বলিলেন, যারা চুল ছোট করেছে তাদের প্রতিও। আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) কথাটি তিনবার বলেন, এরপর বললেনঃ যারা চুল ছোট করেছে তাদের উপরও।

(আঃপ্রঃ ১৬১০, ইঃফাঃ ১৬১৭)

১৭২৯. আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) মাথা কামালেন এবং সাহাবীদের একদলও। আর অন্য একটি দল চুল ছোট করিলেন। (১৬৩৯)

(আঃপ্রঃ ১৬১১. ইঃফাঃ ১৬১৮)

১৭৩০. ইবনু আব্বাস (রাদি.) ও মুআবিয়া (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি একটি কাঁচি দিয়ে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর চুল ছোট ছোট করে দিয়েছিলাম।

(মুসলিম ১৫/৩৩, হাদীস ১২৪৬) (আঃপ্রঃ ১৬১২, ইঃফাঃ ১৬১৯)

২৫/১২৮. অধ্যায়ঃ উমরাহ আদায়ের পর তামাত্তু হজ্জ সম্পাদনকারীর চুল ছাঁটা।

১৭৩১. ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) মক্কায় এসে সাহাবীদের নির্দেশ দিলেন, তারা যেন বাইতুল্লাহ এবং সাফা ও মারওয়ার তাওয়াফ করে। এরপর মাথার চুল মুড়িয়ে বা চুল ছেঁটে হালাল হয়ে যায়। (১৫৪৫)

(আঃপ্রঃ ১৬১৩, ইঃফাঃ ১৬২০)

২৫/১২৯. অধ্যায়ঃ কুরবানীর দিবসে তাওয়াফে যিয়ারত সম্পাদন করা।

আবু যুবাইর (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) আয়েশা (রাদি.) ও ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণনা করেন যে, নাবী (সাঃআঃ) তাওয়াফে যিয়ারত রাত পর্যন্ত বিলম্ব করিয়াছেন। আবু হাসসান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) সূত্রে ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিত যে, নাবী (সাঃআঃ) মিনার দিনগুলোতে বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করিতেন।

১৭৩২. ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি একদা তাওয়াফ করিলেন, এরপর কায়লুলা করেন এবং অতঃপর মিনায় আসেন অর্থাৎ কুরবানীর দিন। আবদুর রাযযাক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) এটি মারফূ হাদীস হিসেবে বর্ণনা করিয়াছেন এবং বলেছেন, আমার নিকট উবায়দুল্লাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) এ হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন।

(মুসলিম ১৫/৫৮, হাদীস ১৩০৮, আহমাদ ৪৭৯৮) (আঃপ্রঃ অনুচ্ছেদ ১২৮ কিতাবুল হজ্জ ইঃফাঃ ১৬২০)

১৭৩৩. আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা নাবী (সাঃআঃ) এর সঙ্গে হজ্জ আদায় করে কুরবানীর দিন তাওয়াফে যিয়ারত করলাম। এ সময় সাফিয়্যাহ (রাদি.)-এর ঋতু দেখা দিল। তখন নাবী (সাঃআঃ) তাহাঁর সঙ্গে তা ইচ্ছা করছিলেন যা একজন পুরুষ তার স্ত্রীর সঙ্গে ইচ্ছা করে থাকে। আমি আরয করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! তিনি তো ঋতুবতী। আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বললেনঃ তবে তো সে আমাদের আটকিয়ে ফেলবে। তারা বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! সাফিয়্যাহ (রাদি.) তো কুরবানীর দিন তাওয়াফে যিয়ারত করে নিয়েছেন। আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বললেনঃ তবে রওয়ানা হও। কাসিম, উরওয়া ও আসাদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) সূত্রে আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিত যে, সাফিয়্যা কুরবানীর দিন তাওয়াফে যিয়ারত আদায় করিয়াছেন।

(২৯৪, মুসলিম ১৫/৬৭, হাদীস ১২১১, আহমাদ ২৪৫৭৯) (আঃপ্রঃ ১৬১৪, ইঃফাঃ ১৬২১)

২৫/১৩০. অধ্যায়ঃ ভুলবশত বা অজ্ঞতার কারণে কেউ যদি সন্ধ্যার পর কংকর মারে অথবা কুরবানীর পশু যবহ করার পূর্বে মাথা মুণ্ডন করে ফেলে।

১৭৩৪. ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ)-কে যবহ করা, মাথা কামান ও কঙ্কর মারা এবং (এ কাজগুলো) আগে-পিছে করা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেনঃ কোন দোষ নেই। (৮৪)

(আঃপ্রঃ ১৬১৫, ইঃফাঃ ১৬২২)

১৭৩৫. ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ)-কে মিনাতে কুরবানীর দিন (বিভিন্ন বিষয়ে ) জিজ্ঞেস করা হত, তখন তিনি বলিতেনঃ কোন দোষ নেই। তাঁকে এক সাহাবী জিজ্ঞেস করে বলিলেন, আমি যবহ (কুরবানী) করার আগেই মাথা কামিয়ে ফেলেছি। তিনি বললেনঃ যবহ করে নাও, এতে দোষ নেই। সাহাবী আরো বলিলেন, আমি সন্ধ্যার পর কঙ্কর মেরেছি। আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বললেনঃ কোন দোষ নেই। (৮৪)

(আঃপ্রঃ ১৬১৬, ইঃফাঃ ১৬২৩)

২৫/১৩১. অধ্যায়ঃ জামারার নিকট সওয়ারীতে আরোহিত অবস্থায় ফতোয়া প্রদান করা।

১৭৩৬. আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

বিদায় হজ্জের সময় আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) (সাওয়ারীতে) অবস্থান করছিলেন, তখন সাহাবীগণ তাঁকে জিজ্ঞেস করিতে লাগলেনঃ একজন জিজ্ঞেস করিলেন, আমি জানতাম না , তাই কুরবানী করার আগেই (মাথা) কামিয়ে ফেলেছি। তিনি ইরশাদ করলেনঃ তুমি কুরবানী করে নাও, কোন দোষ নেই। অতঃপর অপর একজন এসে বলিলেন , আমি না জেনে কঙ্কর মারার পূর্বেই কুরবানী করে ফেলেছি। তিনি ইরশাদ করলেনঃ কঙ্কর মেরে নাও, কোন দোষ নেই। সেদিন যে কোন কাজ আগে পিছে করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেনঃ করে নাও, কোন দোষ নেই। (৮৩)

(আঃপ্রঃ ১৬১৭, ইঃফাঃ ১৬২৪)

১৭৩৭. আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল আস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

কুরবানীর দিন নাবী (সাঃআঃ)-এর খুতবা দেওয়ার সময় তিনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তখন এক সাহাবী দাঁড়িয়ে বলিলেন, আমার ধারণা ছিল অমুক কাজের আগে অমুক কাজ। এরপর অপর এক সাহাবী দাঁড়িয়ে বলিলেন, আমার ধারণা ছিল অমুক কাজের আগে অমুক কাজ , আমি কুরবানী করার আগে মাথা কামিয়ে ফেলেছি। আর কঙ্কর মারার আগে কুরবানী করে ফেলেছি। এরূপ অনেক কথা জিজ্ঞেস করা হয়। তখন নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ করে নাও, কোন দোষ নেই। সব কটির জবাবে তিনি এ কথাই বলিলেন। সেদিন তাঁকে যা-ই জিজ্ঞেস করা হয়েছিল , উত্তরে তিনি বলেনঃ করে নাও, কোন দোষ নেই। (৮৩)

(আঃপ্রঃ ১৬১৮, ইঃফাঃ ১৬২৫)

১৭৩৮. আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল আস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) তাহাঁর উটনীর উপর অবস্থান করছিলেন। অতঃপর হাদীসের শেষ পর্যন্ত বর্ণনা করেন। যুহরী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে এ হাদীস বর্ণনায় মামার (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) সালিহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-এর অনুসরণ করিয়াছেন। (৮৩)

(আঃপ্রঃ ১৬১৮(ক), ইঃফাঃ ১৬২৬)

২৫/১৩২. অধ্যায়ঃ মিনার দিবসগুলোতে খুৎবাহ প্রদান করা।

১৭৩৯. ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) কুরবানীর দিন লোকদের উদ্দেশে একটি খুৎবাহ দিলেন। তিনি বললেনঃ হে লোক সকল ! আজকের এ দিনটি কোন্ দিন? সকলেই বলিলেন, সম্মানিত দিন। অতঃপর তিনি বললেনঃ এ শহরটি কোন শহর? তাঁরা বলিলেন, সম্মানিত শহর। অতঃপর তিনি বললেনঃ এ মাসটি কোন মাস? তাঁরা বলিলেন, সম্মানিত মাস। তিনি বললেনঃ তোমাদের রক্ত, তোমাদের সম্পদ, তোমাদের ইয্যত-সম্মান তোমাদের জন্য তেমনি সম্মানিত , যেমন সম্মানিত তোমাদের এ দিনটি , তোমাদের এ শহরে এবং তোমাদের এ মাস। এ কথাটি তিনি কয়েকবার বলিলেন। পরে মাথা উঠিয়ে বললেনঃ হে আল্লাহ ! আমি কি (আপনার পয়গাম) পৌঁছিয়েছি ! হে আল্লাহ ! আমি কি পৌঁছিয়েছি? ইবনু আব্বাস (রাদি.) বলেন, সে সত্তার কসম, যাঁর হাতে আমার প্রাণ , নিশ্চয়ই এ কথাগুলো ছিল তাহাঁর উম্মতের জন্য অসীয়ত। [নাবী (সাঃআঃ) আরো বলেনঃ] উপস্থিত ব্যক্তি যেন অনুপস্থিত ব্যক্তির কাছে পৌঁছিয়ে দেয়। আমার পরে তোমরা পরস্পর পরস্পরকে হত্যা করে কুফরীর দিকে প্রত্যাবর্তন করো না। (৭০৭৯)

(আঃপ্রঃ ১৬১৯, ইঃফাঃ ১৬২৭)

১৭৪০. ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেন, আমি নাবী (সাঃআঃ)-কে আরাফাত ময়দানে খুতবা দিতে শুনিয়াছি।

(১৮৪১, ১৮৪৩, ৫৮০৪, ৫৮৫৩) (আঃপ্রঃ ১৬২০, ইঃফাঃ ১৬২৮)

১৭৪১. আবু বকর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, কুরবানীর দিন নাবী (সাঃআঃ) আমাদের খুতবা দিলেন এবং বললেনঃ তোমরা কি জান আজ কোন্ দিন? আমরা বললাম , আল্লাহ ও তাহাঁর রাসুল (সাঃআঃ) সব চেয়ে বেশি জানেন। নাবী (সাঃআঃ) নীরব হয়ে গেলেন। আমরা ধারণা করলাম সম্ভবতঃ নাবী (সাঃআঃ) এর নাম পাল্টিয়ে অন্য নামে নামকরণ করবেন। তিনি বললেনঃ এটি কি কুরবানীর দিন নয়? আমরা বললাম , হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ এটি কোন্ মাস? আমরা বললামঃ আল্লাহ ও তাহাঁর রাসুল (সাঃআঃ)-ই সবচেয়ে বেশি জানেন। তিনি নীরব হয়ে গেলেন। আমরা মনে করিতে লাগলাম , হয়ত তিনি এর নাম পাল্টিয়ে অন্য নামে নামকরণ করবেন। তিনি বললেনঃ এ কি যিলহজ্জের মাস নয়? আমরা বললাম , হ্যাঁ। অতঃপর তিনি বললেনঃ এটি কোন্ শহর? আমরা বললামঃ আল্লাহ ও তাহাঁর রাসুল (সাঃআঃ)-ই সবচেয়ে বেশি জানেন। আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) নীরব হয়ে গেলেন। ফলে আমরা ভাবতে লাগলাম , হয়ত তিনি এর নাম বদলিয়ে অন্য নামে নামকরণ করবেন। তিনি বললেনঃ এ কি সম্মানিত শহর নয়? আমরা বললাম, নিশ্চয়ই। তোমাদের জান এবং তোমাদের মাল তোমাদের জন্য তোমাদের রবের সঙ্গে সাক্ষাতের দিন পর্যন্ত এমন সম্মানিত যেমন সম্মান রয়েছে তোমাদের এ দিনের, তোমাদের এ মাসের এবং তোমাদের এ শহরের। নাবী (সাঃআঃ) সাহাবীদের লক্ষ্য করে বললেনঃ শোন! আমি কি পৌঁছিয়েছি তোমাদের কাছে? সাহাবীগণ বলিলেন, হ্যাঁ (হে আল্লাহর রাসুল)। অতঃপর তিনি বললেনঃ প্রত্যেক উপস্থিত ব্যক্তি যেন অনুপস্থিত ব্যক্তির কাছে (আমার দাওয়াত) পৌঁছিয়ে দেয়। কেননা, যাদের কাছে পৌঁছানো হইবে তাদের মধ্যে অনেক ব্যক্তি এমন থাকে যে, শ্রবণকারীর চেয়ে অধিক সংরক্ষণকারী। তোমরা আমার পরে পরস্পর পরস্পরকে হত্যা করে কুফরীর দিকে প্রত্যাবর্তন করো না। (৬৭)

(আঃপ্রঃ ১৬২১, ইঃফাঃ ১৬২৯)

১৭৪২. ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) মিনায় অবস্থানকালে বললেনঃ তোমরা কি জান, এটি কোন্ দিন? তাঁরা বলিলেন, আল্লাহ ও তাহাঁর রাসুল (সাঃআঃ) সবচেয়ে বেশি জানেন। তিনি বললেনঃ এটি সম্মানিত দিন। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ তোমরা কি জান, এটি কোন্ শহর? তাঁরা বলিলেন, আল্লাহ ও তাহাঁর রাসুল (সাঃআঃ) সবচেয়ে বেশি জানেন। তিনি বললেনঃ এটি সম্মানিত শহর। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ তোমরা কি জান, এটি কোন্ মাস? তাঁরা বলিলেন, আল্লাহ ও তাহাঁর রাসুলই ভাল জানেন। তিনি বললেনঃ এটি সম্মানিত মাস। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ এ মাস, এ শহর , এ দিনটি তোমাদের জন্য যেমন সম্মানিত , তেমনিভাবে আল্লাহ তাআলা তোমাদের জান, তোমাদের সম্পদ ও তোমাদের ইয্‌যত-আবরুকে তোমাদের পরস্পরের জন্য সম্মানিত করে দিয়েছেন। হিশাম ইবনু গায (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) নাফি (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-এর মাধ্যমে ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, নাবী (সাঃআঃ) তাহাঁর হজ্জ আদায়কালে কুরবানীর দিন জামারাতের মধ্যবর্তী স্থলে দাঁড়িয়ে এ কথাগুলো বলেছিলেন এবং তিনি বলেছিলেন যে, এটি হল হজ্জে আকবারের দিন। এরপর নাবী (সাঃআঃ) বলিতে লাগলেন, হে আল্লাহ! তুমি সাক্ষী থাক। এরপর তিনি সাহাবীগণকে বিদায় জানালেন। তখন সাহাবীগণ বলিলেন, এটি-ই বিদায় হজ্জ।

(৪৪০৩, ৬০৪৩, ৬১৬৬, ৬৭৮৫, ৬৮৬৮, ৭০৭৭) (আঃপ্রঃ ১৬২২, ইঃফাঃ ১৬৩০)

২৫/১৩৩. অধ্যায়ঃ (হাজীদের) পানি পান করানোর ব্যবস্থাকারী ও অন্যান্যরা মিনার রাত্রিগুলিতে মক্কায় অবস্থান করিতে পারে কি?

১৭৪৩. ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

[আব্বাস (রাদি.) পানি পান করানোর জন্য মিনার রাতগুলোতে মক্কায় অবস্থানের ব্যাপারে নাবী (সাঃআঃ)-এর নিকট অনুমতি চাইলে] তিনি তাঁকে অনুমতি দিলেন। (১৬৩৪)

(ইঃফাঃ ১৬৩১)

১৭৪৪. ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি তাকে অনুমতি দিলেন। (উপরোক্ত হাদীসের ন্যায় তবে এ হাদীসে পূর্বোক্ত হাদীসের শব্দ (আ-রবি) -এর স্থলে (আরবি) শব্দের উল্লেখ করা হয়েছে)। (১৬৩৪)

(ইঃফাঃ ১৬৩১)

১৭৪৫. ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আব্বাস (রাদি.) পানি পান করানোর জন্য মিনার রাতগুলোতে মক্কায় অবস্থানের ব্যাপারে নাবী (সাঃআঃ)-এর নিকট অনুমতি চাইলেন। তিনি তাঁকে অনুমতি দিলেন। (১৬৩৪)

(আঃপ্রঃ ১৬২৩, ইঃফাঃ ১৬৩১)

২৫/১৩৪. অধ্যায়ঃ কঙ্কর নিক্ষেপ।

জাবির (রাদি.) বলেন, নাবী (সাঃআঃ) কুরবানীর দিন চাশতের সময় এবং পরবর্তী দিনগুলোতে সূর্য ঢলে যাওয়ার পর কঙ্কর নিক্ষেপ করিয়াছেন।

১৭৪৬. ওয়াবারা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন , আমি ইবনু উমর (রাদি.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, কখন কঙ্কর নিক্ষেপ করব? তিনি বলিলেন, তোমার ইমাম যখন কঙ্কর নিক্ষেপ করিবে, তখন তুমিও নিক্ষেপ করিবে। আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, তিনি বলিলেন, আমরা সময়ের অপেক্ষা করতাম , যখন সূর্য ঢলে যেত তখনই আমরা কঙ্কর নিক্ষেপ করতাম।

(আঃপ্রঃ ১৬২৪, ইঃফাঃ ১৬৩২)

২৫/১৩৫. অধ্যায়ঃ বাতন ওয়াদী তথা (উপত্যকার নীচুস্থান) হইতে কঙ্কর নিক্ষেপ।

১৭৪৭.আবদুর রহমান ইবনু ইয়াযীদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আব্দুল্লাহ (রাদি.) বাতন ওয়াদী হইতে কঙ্কর মারেন। তখন আমি তাকে বললাম, হে আবু আবদুর রহমান! লোকেরা তো এর উচ্চস্থান হইতে কঙ্কর মারে। তিনি বলিলেন, সে সত্তার কসম! যিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই, এটা সে স্থান, যেখানে সুরা আল-বাকারাহ নাযিল হয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনু ওয়ালীদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)…….আমাশ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে এরূপ বর্ণনা করেন।

(১৭৪৮,১৭৮৯,১১৭৫০, মুসলিম ১৫/৫০, হাদীস ১২৯৬) (আঃপ্রঃ ১৬২৫, ইঃফাঃ ১৬৩৩)

২৫/১৩৬. অধ্যায়ঃ জামারায় সাতটি কঙ্কর নিক্ষেপ।

এ কথাটি ইবনু উমর (রাদি.) নাবী (সাঃআঃ) হইতে বর্ণনা করেন।

১৭৪৮. আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি জামারাতুল কুবরা বা বড় জামারার কাছে গিয়ে বায়তুল্লাহকে বামে ও মিনাকে ডানে রেখে সাতটি কঙ্কর নিক্ষেপ করেন। আর বলেন, যাঁর প্রতি সুরা আল-বাকারাহ নাযিল হয়েছে তিনিও এরূপ কঙ্কর মেরেছেন। (১৭৪৭)

(আঃপ্রঃ ১৬২৬, ইঃফাঃ১৬৩৪)

২৫/১৩৭. অধ্যায়ঃ বাইতুল্লাহকে বাম দিকে রেখে জামারায়ে আকাবায় কঙ্কর নিক্ষেপ।

১৭৪৯. আবদূর রাহমান ইবনু ইয়াযীদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি ইবনু মাসঊদ (রাদি.)-এর সঙ্গে হজ্জ আদায় করিলেন। তখন তিনি বায়তুল্লাহকে নিজের বামে রেখে এবং মিনাকে ডানে রেখে জামারাকে সাতটি কঙ্কর নিক্ষেপ করিতে দেখেছেন। এরপর তিনি বলিলেন, এ তাহাঁর দাঁড়াবার স্থান যাঁর প্রতি সুরা বাকারা নাযিল হয়েছে। (১৭৪৭)

(আঃপ্রঃ ১৬২৭, ইঃফাঃ১৬৩৫)

২৫/১৩৮. অধ্যায়ঃ প্রতিটি কঙ্কর এর সঙ্গে তাকবীর পাঠ।

নাবী (সাঃআঃ) হইতে ইবনু উমর (রাদি.) এ কথাটি বর্ণনা করেন।

১৭৫০. আমাশ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি হাজ্জাজকে মিম্বরের উপর এরূপ বলিতে শুনিয়াছি, যে সুরার মধ্যে বাকারাহর উল্লেখ রয়েছে, সে সুরার মধ্যে আল-ইমরানের উল্লেখ রয়েছে এবং যে সুরার মধ্যে নিসা-এর উল্লেখ রয়েছে অর্থাৎ সে সুরা আল-বাকারাহ সুরা আল ইমরান ও সুরা আল নিসা বলা পছন্দ করতো না। বর্ণনাকারী আমাশ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, এ ব্যাপারটি আমি ইব্রাহীম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-কে বললাম। তিনি বলিলেন, আমার কাছে আবদূর রহমান ইবনু ইয়াযীদ (রাদি.) বর্ণনা করিয়াছেন যে, জামারায়ে আকাবাতে কঙ্কর মারার সময় তিনি ইবনু মাসঊদ (রাদি.) এর সঙ্গে ছিলেন। ইবনু মাসঊদ (রাদি.) বাতেন ওয়াদীতে গাছটির বরাবর এসে জামারাকে সামনে রেখে দাঁড়ালেন এবং তাকবীর সহকারে কঙ্কর মারলেন। এরপর বলিলেন, সে সত্তার কসম যিনি ব্যতীত প্রকৃত কোন ইলাহ নেই, এ স্থানেই দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি, যাঁর উপর নাযিল হয়েছে সুরা বাকারাহ (অর্থাৎ সুরা বাকারাহ বলা বৈধ) (১৭৪৭)

(আঃপ্রঃ ১৬২৮, ইঃফাঃ১৬৩৬)

২৫/১৩৯. অধ্যায়ঃ জামারায়ে আকাবায় কঙ্কর নিক্ষেপ করে অপেক্ষা না করা।

নাবী (সাঃআঃ) হইতে ইবনু উমর (রাদি.) এ কথাটি বর্ণনা করেন।

২৫/১৪০. অধ্যায়ঃ অপর দুই জামারায় কঙ্কর নিক্ষেপ করে সমতল ভুমিতে গিয়ে কিবলামুখী হয়ে দাঁড়ানো।

১৭৫১. ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি প্রথম জামারায় সাতটি কঙ্কর নিক্ষেপ করিতেন এবং প্রতিটি কঙ্কর নিক্ষেপের সাথে তাকবীর বলিতেন। তারপর সামনে অগ্রসর হয়ে সমতল ভূমিতে এসে কিবলামুখী হয়ে দীর্ঘক্ষন দাঁড়াতেন এবং উভয় হাত তুলে দুআ করিতেন। অতঃপর মধ্যবর্তী জামারায় কঙ্কর মারতেন এবং দীর্ঘক্ষন দাঁড়িয়ে থাকতেন। এরপর বাতন ওয়াদী হইতে জামারায়ে আকাবায় কঙ্কর মারতেন। এর কাছে তিনি বিলম্ব না করে ফিরে আসতেন এবং বলিতেন, আমি নাবী (সাঃআঃ)-কে এরূপ করিতে দেখেছি।

(১৭৫২,১৭৫৩) (আঃপ্রঃ ১৬২৯, ইঃফাঃ ১৬৩৭)

২৫/১৪১. অধ্যায়ঃ নিকটবর্তী এবং মধ্যবর্তী জামারার নিকট দুই হস্ত উত্তোলন করা।

১৭৫২. সালিম ইবনু আবদুল্লাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাদি.) নিকটবর্তী জামারায় সাতটি কঙ্কর মারতেন এবং প্রতিটি কঙ্কর নিক্ষেপের সাথে তাকবীর বলিতেন। এরপর সামনে এগিয়ে গিয়ে সমতল ভূমিতে এসে ক্বিবলামুখী হয়ে দীর্ঘক্ষন দাঁড়িয়ে থাকতেন এবং উভয় হাত উঠিয়ে দুআ করিতেন। অতঃপর মধ্যবর্তী জামারায় অনুরূপভাবে কঙ্কর মারতেন। এরপর বাঁ দিক হয়ে সমতল ভূমিতে এসে ক্বিবলামুখী হয়ে দীর্ধক্ষণ দাঁড়াতেন এবং উভয় হাত উঠিয়ে দুআ করিতেন। অতঃপর বাতন ওয়াদী হইতে জামারায়ে আকাবায় কঙ্কর মারতেন এবং এর কাছে তিনি দেরী করিতেন না। তিনি বলিতেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-কে আমি অনুরূপ করিতে দেখেছি। (১৭৫১)

(আঃপ্রঃ১৬৩০, ই,ফা, ১৬৩৮)

২৫/১৪২. অধ্যায়ঃ দুই জামারার নিকটে দুআ করা।

১৭৫৩. যুহরী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

মসজিদে মিনার দিক হইতে প্রথমে অবস্থিত জামারায় যখন আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) কঙ্কর মারতেন, সাতটি কঙ্কর মারতেন এবং প্রত্যেকটি কঙ্কর মারার সময় তিনি তাকবীর বলিতেন। এরপর সামনে এগিয়ে গিয়ে কিবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে উভয় হাত উঠিয়ে দুআ করিতেন এবং এখানে অনেক্ষন দাঁড়িয়ে থাকতেন। অতঃপর দ্বিতীয় জামারায় এসে সাতটি কঙ্কর মারতেন এবং প্রতিটি কঙ্কর মারার সময় তাকবীর বলিতেন। অতপর বাঁ দিকে মোড় নিয়ে ওয়াদীর কাছে এসে কিবলামূখী হয়ে দাঁড়াতেন এবং উভয় হাত উঠিয়ে দুআ করিতেন। অবশেষে আকাবার কাছে জামারায় এসে তিনি সাতটি কঙ্কর মারতেন এবং প্রতিটি কঙ্কর মারার সময় তাকবীর বলিতেন। এরপর ফিরে যেতেন, এখানে বিলম্ব করিতেন না। যুহরী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, সালিম ইবনু আবদুল্লাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-কে তাহাঁর পিতার মাধ্যমে নাবী (সাঃআঃ) হইতে অনুরূপ বর্ণনা করিতে শুনিয়াছি। (রাবী বলেন) ইবনু উমর (রাদি.)-ও তাই করিতেন। (১৭৫১)

(আঃপ্রঃ ১৬৩১, ইঃফাঃ ১৬৩৯)

২৫/১৪৩. অধ্যায়ঃ কঙ্কর নিক্ষেপ এর পর সুগন্ধি ব্যবহার এবং তাওয়াফে যিয়ারাতের পূর্বে মাথা মুণ্ডন।

১৭৫৪. আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আমার এ দুহাত দিয়ে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-কে খুশবু লাগিয়েছি, যখন তিনি ইহরাম বাঁধার ইচ্ছা করিয়াছেন এবং তাওয়াফে যিয়ারাহর পূর্বে যখন তিনি ইহরাম খুলে হালাল হয়েছেন। এ কথা বলে তিনি তাহাঁর উভয় হাত প্রসারিত করিলেন। (১৫৩৯)

(আঃপ্রঃ ১৬৩২, ইঃফাঃ ১৬৪০)

২৫/১৪৪. অধ্যায়ঃ বিদায়ী তাওয়াফ।

১৭৫৫. ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, লোকদের আদেশ দেয়া হয় যে, তাদের শেষ কাজ যেন বায়তুল্লাহ তাওয়াফ। তবে এ হুকুম ঋতুবর্তী মহিলাদের জন্য শিতিল করা হয়েছে।

(৩২৯.মুসলিম ১৫/৬৭, হাদীস১৩২৮) (আঃপ্রঃ ১৬৩৩, ইঃফাঃ ১৬৪১)

১৭৫৬. আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) যোহর, আসর, মাগরিব ও ইশার সালাত আদায় করে উপত্যকায় কিছুক্ষন শুয়ে থাকেন। অতঃপর সওয়ারীতে আরোহণ করে বায়তুল্লাহর দিকে এসে তিনি বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করেন। লায়স (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) … আনাস ইবনু মালিক (রাদি.)-এর মাধ্যমে নাবী (সাঃআঃ) হইতে এ হাদীস বর্ণনায় আমর ইবনু হারিস (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-এর অনুসরণ করিয়াছেন। (১৭৬৪)

(আঃপ্রঃ ১৬৩৪, ইঃফাঃ ১৬৪২)

২৫/১৪৫. অধ্যায়ঃ তাওয়াফে যিয়ারতের পর কোন স্ত্রী লোকের ঋতু আসলে।

১৭৫৭. আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ)-এর সহধর্মিণী সাফিয়্যা বিনতে হুয়াই (রাদি.) ঋতুবর্তী হলেন এবং পরে এ কথাটি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-কে অবগত করানো হয়। তখন তিনি বললেনঃ সে কি আমাদের যাত্রায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করিবে? তারা বলিলেন, তিনি তো তাওয়াফে যিয়ারত সমাধা করে নিয়েছেন। আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বললেনঃ তাহলে তো আর বাধা নেই। (২৯৪)

(আঃপ্রঃ ১৬৩৫, ইঃফাঃ ১৬৪৩)

১৭৫৮. ইক্‌রিমা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তাওয়াফে যিয়ারতর পর ঋতু এসেছে এমন মহিলা সম্পর্কে মাদিনাবাসী ইবনু আব্বাস (রাদি.)-কে জিজ্ঞেস করিলেন। তিনি তাদের বলিলেন, সে রওয়ানা হয়ে যাবে। তারা বলিলেন, আমরা আপনার কথা গ্রহন করব না এবং যায়েদের কথাও বর্জন করব না। তিনি বলিলেন, তোমরা মদীনায় ফিরে গিয়ে জিজ্ঞাস করে নিবে। তাঁরা মদীনায় এসে জিজ্ঞেস করিলেন যাদের কাছে তাঁরা জিজ্ঞেস করেছিলেন তাঁদের মধ্যে উম্মে সুলাইম (রাদি.)-ও ছিলেন। তিনি তাঁদের সাফিয়্যা (রাদি.) (উম্মুল মুমিনীন) -এর ঘটনাটি বর্ণনা করিলেন। হাদীসটি খালিদ ও কাতাদাহ(রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ইক্‌রিমা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণনা করেন।

(আঃপ্রঃ ১৬৩৬, ইঃফাঃ ১৬৪৪)

১৭৫৯. ইক্‌রিমা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তাওয়াফে যিয়ারতর পর ঋতু এসেছে এমন মহিলা সম্পর্কে মাদিনাবাসী ইবনু আব্বাস (রাদি.)-কে জিজ্ঞেস করিলেন। তিনি তাদের বলিলেন, সে রওয়ানা হয়ে যাবে। তারা বলিলেন, আমরা আপনার কথা গ্রহন করব না এবং যায়েদের কথাও বর্জন করব না। তিনি বলিলেন, তোমরা মদীনায় ফিরে গিয়ে জিজ্ঞাস করে নিবে। তাঁরা মদীনায় এসে জিজ্ঞেস করিলেন যাদের কাছে তাঁরা জিজ্ঞেস করেছিলেন তাঁদের মধ্যে উম্মে সুলাইম (রাদি.)-ও ছিলেন। তিনি তাঁদের সাফিয়্যা (রাদি.) (উম্মুল মুমিনীন) -এর ঘটনাটি বর্ণনা করিলেন। হাদীসটি খালিদ ও কাতাদাহ(রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ইক্‌রিমা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণনা করেন।

(আঃপ্রঃ ১৬৩৬, ইঃফাঃ ১৬৪৪)

১৭৬০. ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, তাওয়াফে যিয়ারত আদায় করার পর ঋতুরর্তী মহিলাকে রওয়ানা হয়ে যাওয়ার জন্য অনুমতি দেয়া হয়েছে। (৩২৯)

(আঃপ্রঃ ১৬৩৭, ইঃফাঃ ১৬৪৫)

১৭৬১. বর্ণনাকারী হইতে বর্ণিতঃ

আমি ইবনু উমর (রাদি.)-কে বলিতে শুনিয়াছি যে, সে মহিলা রওয়ানা হইতে পারবেনা। পরবর্তীতে তাকে এ কথাও বলিতে শুনিয়াছি যে, নাবী (সাঃআঃ) তাঁদেরকে অনুমতি দিয়েছেন। (৩৩০)

(আঃপ্রঃ ১৬৩৭, ইঃফাঃ ১৬৪৫)

১৭৬২. আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা নাবী (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে বের হলাম। হজ্জই ছিল আমাদের উদ্দেশ্য। নাবী (সাঃআঃ) মক্কায় পৌঁছে বায়তুল্লাহ তাওয়াফ ও সাফা ও মারওয়ার সায়ী করিলেন। তবে ইহরাম খুলেনি। তাহাঁর সঙ্গে কুরবানীর জানওয়ার ছিল। তাহাঁর সহধর্মিণি ও সাহাবীগনের মধ্যে যারা তাহাঁর সঙ্গে ছিলেন তাঁরাও তাওয়াফ করিলেন। তবে যাদের সঙ্গে কুরবানীর পশু ছিলনা, তাঁরা হালাল হয়ে গেলেন। এরপর আয়েশা (রাদি.) ঋতুবর্তী হয়ে পড়লেও(বর্ণনাকারী) বলেন) আমরা হজ্জের সমুদয় হুকুম-আহকাম আদায় করলাম। এরপর যখন লায়লাতুল –হাসবা অর্থাৎ রওয়ানা হওয়ার রাত হল, তখন তিনি বললেনঃ হে আল্লাহর রাসুল! আমি ব্যতীত আপনার সকল সাহাবীতো হজ্জ ও উমরাহ করে ফিরেছেন। আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বললেনঃ আমরা যে রাতে এসেছি সে রাতে তুমি কি বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করনি? আমি বললাম, না। অতঃপর তিনি বললেনঃ তুমি তোমার ভাইয়ের সঙ্গে তানঈম(নামক স্থানে) চলে যাও এবং সেখান হইতে উমরাহর ইহরাম বেঁধে নাও। আর অমুক অমুক স্থানে তোমার সঙ্গে সাক্ষাতের ওয়াদা থাকল। আয়েশা বলেন, এরপর আমি আব্দুর রাহমান (রাদি.)-এর সাথে তানঈম এর দিকে গেলাম এবং উমরাহর ইহরাম বাঁধলাম। আর সাফিয়্যা বিনতে হুয়াই (রাদি.)-এর ঋতু দেখা দিল। নাবী (সাঃআঃ) তা শুনে বিরক্ত হয়ে বলেনঃ তুমিতো আমাদেরকে আটকিয়ে ফেললে। তুমি কি কুরবানীর দিন তাওয়াফ করেছিলে? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন তাহলে কোন বাধা নেই, রওয়ানা হও।[আয়েশা (রাদি.) বলেন] আমি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে মিলিত হলাম। এমতাবস্থায় যে, তিনি মক্কার উপরের দিকে উঠছিলেন, আর আমি নিচের দিকে নামছিলাম। অথবা আমি উঠছিলাম আর তিনি নামছিলেন। মুসাদ্দাস(রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-এর বর্ণনায় এ হাদীসে(হ্যাঁ)-এর পরিবর্তে লা (না) রয়েছে। রাবী জারীর (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) মনসূর (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে এ হাদীস বর্ণনায় মুসাদ্দাদ(রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-এর অনুরূপ লা (না) বর্ণনা করিয়াছেন। (২৯৪)

(আঃপ্রঃ ১৬৩৮, ইঃফাঃ ১৬৪৯)

২৫/১৪৬. অধ্যায়ঃ (মিনা হইতে) ফেরার দিন আবতাহ নামক স্থানে আসর সালাত আদায় করা।

১৭৬৩. আবদুল আযীয ইবনু রুফায় (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনু মালিক (রাদি.)-কে বললাম, নাবী (সাঃআঃ) হইতে মনে রেখেছেন এমন কিছু কথা আমাকে বলুন, তারবিয়ার দিন নাবী (সাঃআঃ) যোহরের সালাত কোথায় আদায় করিয়াছেন? তিনি বলিলেন, মিনাতে। আমি বললাম, প্রত্যাবর্তনের দিন আসরের সালাত কোথায় আদায় করিয়াছেন? তিনি বলিলেন, আবতাহ নামক স্থানে। (তারপর বলিলেন) তুমি তাই কর, যেভাবে তোমার শাসকগণ করেন। (১৬৫৩)

(আঃপ্রঃ ১৬৩৯, ইঃফাঃ ১৬৪৭)

১৭৬৪. আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) যোহর, আসর, মাগরিব, ঈশার সালাত আদায়ের পর মুহাস্‌সাবে কিছুক্ষন শুয়ে থাকেন, পরে সওয়ার হয়ে বাইতুল্লাহর দিকে গেলেন এবং বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করিলেন। (১৭৫৬)

(আঃপ্রঃ ১৬৪০, ইঃফাঃ ১৬৫৮)

২৫/১৪৭. অধ্যায়ঃ মুহাসসাব।

১৭৬৫. আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, তা হল একটি মানযিল মাত্র, যেখানে নাবী (সাঃআঃ) অবতরণ করেতেন, যাতে বেরিয়ে যাওয়া সহজতর হয় অর্থাৎ এর দ্বারা আবতাহ বুঝানো হয়েছে।

(মুসলিম ১৫/৫৯, হাদীস ১৩১১, আহমদ ২৫৭৭৮) আঃপ্রঃ ১৬৪১, ইঃফাঃ ১৬৪৯)

১৭৬৬. ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, মুহাস্‌সাবে অবতরণ করা হজ্জের- কিছুই নয়। এ তো শুধু একটি মানযিল, যেখানে নাবী (সাঃআঃ) অবতরণ করেছিলেন।

(মুসলিম ১৫/৫৯, হাদীস ১৩১২, আহমদ ১৯২৫. (আঃপ্রঃ ১৬৪২, ইঃফাঃ ১৬৫০)

২৫/১৪৮. অধ্যায়ঃ মক্কার প্রবেশের পূর্বে যু-তুয়া উপত্যকায় অবতরণ এবং মক্কা হইতে ফেরার সময় যুল-হুলাইফার বাতহাতে অবতরণ।

১৭৬৭. নাফি (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ইবনু উমর (রাদি.) দু পাহাড়ের মদ্যস্থিত যু-তুয়া নামক স্থানে রাত যাপন করিতেন। এরপর মক্কার উঁচু গিরিপথের দিকে প্রবেশ করিতেন। হজ্জ বা উমরাহর আদায়ের জন্য মক্কা আসলে তিনি মাসজিদে হারামের দরজার সামনে ব্যতীত কোথাও উট বসাতেন না। অতঃপর মাসজিদে প্রবেশ করে হাজারে আসওয়াদের কাছে আসতেন এবং সেখান হইতে তাওয়াফ আরম্ভ করিতেন এবং সাত চক্কর তাওয়াফ করিতেন। তিনবার দ্রুতবেগে আর চারবার স্বাভাবিক গতিতে। এরপর ফিরে এসে দু রাকআত সালাত আদায় করিতেন এবং নিজের মানযিলে ফিরে যাওয়ার আগে সাফা-মারওয়ার মধ্যে সায়ী করিতেন। আর যখন হজ্জ বা উমরাহ হইতে ফিরতেন তখন যুল-হুলাইফা উপত্যকার বাতহা নামক স্থানে অবতরণ করেতেন, যেখানে নাবী (সাঃআঃ) অবতরণ করেছিলেন। (৪৯১)

(আঃপ্রঃ ১৬৪৩, ইঃফাঃ ১৬৫১)

১৭৬৮. খালিদ ইবনু হারিস (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, উবায়দুল্লাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-কে মুহাসসাব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে, তিনি নাফি(রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে আমাদের কাছে বর্ণনা করিলেন যে, তিনি বলেছেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ), উমর ও ইবনু উমর (রাদি.) সেখানে অবতরণ করিয়াছেন। নাফি (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে আরো বর্ণিত রয়েছে যে, ইবনু উমর (রাদি.) মুহাসসাবে যোহর ও আসর সালাত আদায় করিতেন। আমার মনে হচ্ছে, তিনি মাগরিবের কথাও বলেছেন, খালিদ (রাদি.) বলেন, ঈসা সম্পর্কে আমার কোন সন্দেহ নেই এবং তিনি সেখানে কিছূক্ষন নিদ্রা যেতেন। এ কথা ইবনু উমর (রাদি.) নাবী (সাঃআঃ) হইতেই বর্ণনা করিতেন।

(আঃপ্রঃ ১৬৪৪, ইঃফাঃ ১৬৫২)

২৫/১৪৯. অধ্যায়ঃ মক্কা হইতে প্রত্যাবর্তনের সময় যু-তুয়া উপত্যকায় অবতরন করা।

১৭৬৯.ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি যখনই মক্কা আসতেন তখনই যু-তুয়া উপত্যকায় রাত যাপন করিতেন। আর সকাল হলে (মক্কায়) প্রবেশ করিতেন। ফিরার সময়ও তিনি যু-তুয়ার দিকে যেতেন এবং সেখানে ভোর পর্যন্ত অবস্থান করেতেন। ইবনু উমর (রাদি.) বলিতেন যে, নাবী (সাঃআঃ) এরূপ করিতেন। (৪৯১)

(আঃপ্রঃ অনুচ্ছেদ ৪৮ কিতাবুল হজ্জ ইঃফাঃ ১৬৫২)

২৫/১৫০. অধ্যায়ঃ (হজ্জের) মৌসুমে ব্যবসা করা এবং জাহিলি যুগের বাজারগুলোতে ক্রয়-বিক্রয় করা।

১৭৭০. ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, জাহিলি যুগে যল-মাজায ও উকায লোকদের ব্যবসা কেন্দ্র ছিল। ইসলাম আসার পর মুসলিমগণ যেন তা অপছন্দ করিতে লাগল, অবশেষে এ আয়াত নাযিল হলঃ হজ্জের মৌসুমে তোমাদের প্রতিপালকের অনুগ্রহ সন্ধান করাতে তোমাদের পাপ নেই (আল-বাকারাঃ১৯৮)

(২০৫০,২০৯৮,৪৫১৯

(আঃপ্রঃ ১৬৪৫, ইঃফাঃ ১৬৫৩)

২৫/১৫১. অধ্যায়ঃ মুহাসসাব হইতে শেষ রাতে যাত্রা করা।

১৭৭১. আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, প্রত্যাবর্তনের দিন সাফিয়্যা (রাদি.)-এর ঋতু দেখা দিলে তিনি বলিলেন, আমার মনে হচ্ছে আমি তোমাদেরকে আটকিয়ে ফেললাম। নাবী (সাঃআঃ) তা শুনে “আররা, হালকা বলে বিরক্তি প্রকাশ করিলেন এবং বললেনঃ সে কি কুরবানীর দিন তাওয়াফ করেছে? বলা হল, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ তবে চল। (২৯৪)

(আঃপ্রঃ ১৬৪৬, ইঃফাঃ ১৬৫৪)

১৭৭২. আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে রওয়ানা হলাম। হজ্জ আদায় করাই ছিল আমাদের উদ্দেশ্য। আমরা(মক্কায়) আসলাম, তখন আমাদের হালাল হওয়ার নির্দেশ দেন। অতঃপর প্রত্যাবর্তনের রাত এলে সাফিয়্যাহ বিন্তু হুয়াই (রাদি.) এর ঋতু আরম্ভ হল। নাবী (সাঃআঃ) হালকা আকরা, বলে বিরক্তি প্রকাশ করে বললেনঃ আমার ধারণা, সে তোমাদের আটকিয়েই ফেলবে। অতঃপর বললেনঃ তুমি কি কুরবানীর দিন তাওয়াফ করেছিলে? সাফিয়্যাহ (রাদি.) বললেনঃ হ্যাঁ। তখন নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ তবে চল। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)! আমি তো (উমরা আদায় করে) হালাল হইনি। তিনি বললেনঃ তাহলে এখন তুমি তানঈম হইতে উমরাহ আদায় করে নাও। অতঃপর তাহাঁর সঙ্গে তার ভাই [আব্দুর রাহমান ইবনু আবু বক্‌র(রাদি.)] গেলেন। আয়েশা (রাদি.) বলেন, (উমরা আদায় করার পর) নাবী (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়, যখন তিনি শেষ রাতে (বিদায়ী তাওয়াফের জন্য) যাচ্ছিলেন। তখন তিনি বললেনঃ অমুক স্থানে তোমরা সাক্ষাৎ করিবে।

(২৪৯, মুসলিম ১৫/১৭, হাদীস ১২১১, আহমাদ ২৬২২৪) (আঃপ্রঃ ১৬৪৬, ইঃফাঃ ১৬৫৪)


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply