কোন কোন সম্পদের উপর যাকাত ফরজ
কোন কোন সম্পদের উপর যাকাত ফরজ >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ২৪, যাকাত, অধ্যায়ঃ (৩২-৪৮)=১৭টি
২৪/৩২. অধ্যায়ঃ রৌপ্যের যাকাত
২৪/৩৩. অধ্যায়ঃ পণ্যদ্রব্যের যাকাত আদায় করা।
২৪/৩৪. অধ্যায়ঃ আলাদা আলাদা সম্পর্কে একত্রিত করা যাবে না। আর একত্রিতগুলো আলাদা করা যাবে না।
২৪/৩৫. অধ্যায়ঃ দুই অংশীদার (এর একজনের নিকট হইতে সমুদয় মালের যাকাত উসুল করা হলে) একজন অপরজন হইতে তার প্রাপ্য অংশ আদায় করে নিবে।
২৪/৩৬. অধ্যায়ঃ উটের যাকাত
২৪/৩৭. অধ্যায়ঃ যার উপর বিনতু মাখায যাকাত দেয়া ওয়াজিব হয়েছে অথচ তার কাছে তা নেই
২৪/৩৮. অধ্যায়ঃ বকরীর যাকাত
২৪/৩৯. অধ্যায়ঃ অধিক বয়সে দাঁত পড়া বৃদ্ধ ও ত্রুটিপূর্ণ বকরী গ্রহণ করা যাবে না, পাঁঠাও গ্রহণ করা হইবে না, তবে মালিক ইচ্ছা করলে (পাঁঠা) দিতে পারে।
২৪/৪০. অধ্যায়ঃ বকরি (চার মাস বয়সের মাদী) বাচ্চা যাকাত হিসেবে গ্রহণ করা।
২৪/৪১. অধ্যায়ঃ যাকাতের ক্ষেত্রে মানুষের উত্তম মাল নেয়া হইবে না
২৪/৪২. অধ্যায়ঃ পাঁচ উটের কমে যাকাত নেই
২৪/৪৩. অধ্যায়ঃ গরুর যাকাত
২৪/৪৪. অধ্যায়ঃ নিকটাত্মীয়দেরকে যাকাত দেয়া।
২৪/৪৫. অধ্যায়ঃ মুসলিমের উপর তার ঘোড়ায় কোন যাকাত নেই।
২৪/৪৬. অধ্যায়ঃ মুসলিমের উপর তার গোলামের যাকাত নেই।
২৪/৪৭. অধ্যায়ঃ ইয়াতীমকে সদকা দেয়া।
২৪/৪৮. অধ্যায়ঃ স্বামী ও পোষ্য ইয়াতীমকে যাকাত দেয়া।
২৪/৩২. অধ্যায়ঃ রৌপ্যের যাকাত
১৪৪৭. আবু সাঈদ খুদরী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেনঃ পাঁচের কম সংখ্যক উটের [৩৭] উপর যাকাত নেই, পাঁচ উকিয়া-এর কম পরিমাণ রূপার উপর যাকাত নেই এবং পাঁচ ওয়াসক-এর কম পরিমাণ উৎপন্ন দ্রব্যের উপর সাদকা (উশর) নেই। (আ.প্র. ১৩৫৩, ই.ফা. ১৩৫৯)
আবু সাঈদ (রাদি.) হইতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী (সাঃআঃ) হইতে এ হাদীসটি শুনিয়াছি।
[৩৭] উটের যে কোন সংখ্যাকে যাওদ বলে। ৫ যাওদ অর্থ ৫টি উট। অধিকাংশের মতে ৩ থেকে ১০টি উটের সংখ্যাকে যাওদ বলে।
২৪/৩৩. অধ্যায়ঃ পণ্যদ্রব্যের যাকাত আদায় করা।
তাউস (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, মুআয (ইবনু জাবাল) (রাদি.) ইয়ামানবাসীদেরকে বলিলেন, তোমরা যব ও ভুট্টার পরিবর্তে চাদর বা পরিধেয় বস্ত্র আমার কাছে যাকাত স্বরূপ নিয়ে এস। ওটা তোমাদের পক্ষেও সহজ এবং মদীনায় নাবী (সাঃআঃ)-এর সাহাবীগণের জন্যও উত্তম। নাবী (সাঃআঃ) বলেনঃ খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাদি.)-এর ব্যাপার হলো এই যে, সে তার বর্ম ও যুদ্ধাস্ত্র আল্লাহর পথে ওয়াকফ করে দিয়েছে। (মহিলাদের লক্ষ্য করে) নাবী (সাঃআঃ) বলেনঃ তোমরা তোমাদের অলংকার হইতে হলেও সাদকা কর। [ইমাম বুখারী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন,] নাবী (সাঃআঃ) পণ্যদ্রব্যের যাকাত সেই পণ্য দ্বারাই আদায় করিতে হইবে এমন নির্দিষ্ট করে দেননি। তখন মহিলাগণ কানের দুল ও গলার হার খুলে দিতে আরম্ভ করিলেন, [ইমাম বুখারী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন] সোনা ও রূপার বিষয়টি পণ্যদ্রব্য হইতে পৃথক করেননি (বরং উভয় প্রকারেই যাকাত স্বরূপ গ্রহণ করা হতো)। (আ.প্র. অনুচ্ছেদ ৩৪, ই.ফা. অনুচ্ছেদ ৯১৫)
১৪৪৮. আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আবু বকর (রাদি.) আনাস (রাদি.)-এর কাছে রাসুল (সাঃআঃ)-কে আল্লাহ তাআলা যাকাত সম্পর্কে যে বিধান দিয়েছেন সে সম্পর্কে লিখে জানালেন, যে ব্যক্তির উপর যাকাত হিসেবে বিনতে মাখায [৩৮] ওয়াজিব হয়েছে কিন্তু তার কাছে তা নেই বরং বিনত লাবূন [৩৯] রয়েছে, তা হলে তা-ই (যাকাত স্বরূপ) গ্রহণ করা হইবে। এ অবস্থায় যাকাত আদায়কারী যাকাত দাতাকে বিশটি দিরহাম বা দুটি বকরী দিবে। আর যদি বিনতে মাখায না থাকে বরং ইবনু লাবূন থাকে তা হলে তা-ই গ্রহণ করা হইবে। এমতাবস্থায় আদায়কারীর যাকাত দাতাকে কিছু দিতে হইবে না।
[৩৮] বিনতু মাখায অর্থ হচ্ছে যে যে উট এক বছর পূর্ণ হয়ে সবেমাত্র দ্বিতীয় বর্ষে পতিত হয়েছে। [৩৯] বিনতু লাবূন অর্থ যে উট দুবছর পূর্ণ হয়ে সবে মাত্র তৃতীয় বর্ষে পতিত হয়েছে।
১৪৪৯. ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) খুতবা প্রদানের পূর্বেই (ঈদের) সালাত আদায় করেন, এরপর বুঝতে পারলেন যে, (সকলের পিছনে থাকা বিধায়) নারীদেরকে খুতবার আওয়াজ পৌছাতে পারেননি। তাই তিনি নারীদের নিকট আসলেন, তাহাঁর সাথে বিলাল (রাদি.) ছিলেন। তিনি একখন্ড বস্ত্র প্রসারিত করে ধরলেন। নাবী (সাঃআঃ) তাদেরকে উপদেশ দিলেন ও সাদকা করিতে আদেশ করিলেন। তখন মহিলাগণ তাদের (অলংকারাদি) ছুঁড়ে মারতে লাগলেন। (রাবী) আইয়ুব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) তার কান ও গলার দিকে ইঙ্গিত করে (মহিলাগণের অলংকারাদি দান করার বিষয়) দেখালেন।
২৪/৩৪. অধ্যায়ঃ আলাদা আলাদা সম্পর্কে একত্রিত করা যাবে না। আর একত্রিতগুলো আলাদা করা যাবে না।
সালিম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে ইবনু উমর (রাদি.) সূত্রে নাবী (সাঃআঃ) হইতে অনুরূপ উল্লেখ করা হয়েছে।
১৪৫০. আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) যাকাত সম্পর্কে যে বিধান দিয়েছেন তা আবু বকর (রাদি.) তাহাঁর নিকট লিখে পাঠান, যাকাতের (পরিমাণ কম-বেশি হওয়ার) আশংকায় বিচ্ছিন্ন [৪০] (প্রাণী)-গুলোকে একত্রিত করা যাবে না এবং একত্রিতগুলোকে বিচ্ছিন্ন করা যাবে না।
[৪০] যাকাত এড়ানোর জন্য বিচ্ছিন্ন অবস্থা থেকে একত্র করার ঘটনাকে নিম্নোক্তভাবে ব্যাখ্যা করা যায়ঃ দুজন লোকের ৪০টি করে ছাগল আছে। কাজেই তাদের প্রত্যেকের অংশে একটি করে ছাগল যাকাত হিসেবে দেয়। তারা দুজনে তাদের ছাগলগুলোকে যদি এক সাথে করে ফেলে তাহলে মাত্র ১টি ছাগল যাকাত হিসেবে দিতে হইবে, কেননা ১০০টি ছাগলে ১টি ছাগলই যাকাত হিসেবে দেয়।
একত্র অবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন করার ঘটনাকে এভাবে ব্যাখ্যা করা যায়ঃ সমান অংশীদারিত্বে দুজন অংশীদারের ৫০টি ছাগল আছে। এক্ষেত্রে ১টি ছাগল যাকাত হিসেবে দেয়। যদি তারা ছাগলগুলি ২৫টি করে ভাগ করে ফেলে তাহলে যাকাত এড়াতে পারে, কেননা ৪০টির কমে যাকাত হয় না। তেমনিভাবে যাকাত আদায়কারীরও মানুষের সম্পদ একত্রিত করা বা বিচ্ছিন্ন করা অনুচিত। ২ জনের ৩০টি করে ছাগল থাকলে কারো যাকাত লাগবে না, এক্ষেত্রে আদায়কারীর পক্ষে ২ পাল ছাগলকে ১ পাল দেখিয়ে যাকাত হিসেবে একটি ছাগল আদায় করা অবৈধ।
২৪/৩৫. অধ্যায়ঃ দুই অংশীদার (এর একজনের নিকট হইতে সমুদয় মালের যাকাত উসুল করা হলে) একজন অপরজন হইতে তার প্রাপ্য অংশ আদায় করে নিবে।
তাউস ও আত্বা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, প্রত্যেক অংশীদার যদি স্বীয় সম্পদের পরিচয় করিতে সক্ষম হয়, তাহলে (যাকাতের ক্ষেত্রে) তাদের মাল একত্রিত করা হইবে না। সুফয়ান (সাওরী) (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, (দুই অংশীদারের) প্রত্যেকের বকরীর সংখ্যা চল্লিশ পূর্ণ না হলে যাকাত ফরয হইবে না।
১৪৫১.আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) যাকাত সম্পর্কে যে বিধান দিয়েছেন আবু বকর (রাদি.) তা তাকে লিখে জানালেন, এক অংশীদার অপর অংশীদারের নিকট হইতে তার প্রাপ্য আদায় করে নিবে।
২৪/৩৬. অধ্যায়ঃ উটের যাকাত
আবু বক্র, আবু যার ও আবু হুরাইরা (রাদি.) নাবী (সাঃআঃ) হইতে এ বিষয়ে হাদীস বর্ণনা করেন।
১৪৫২. আবু সাঈদ খুদরী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
জনৈক বেদুঈন আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর নিকট হিজরত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেনঃ তোমার তো বড় সাহস! হিজরতের ব্যাপার কঠিন, বরং যাকাত দেয়ার মত তোমার কোন উট আছে কি? সে বলিল, জী হ্যাঁ, আছে। আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বললেনঃ সাগরের ওপারে হলেও (যেখানেই থাক) তুমি আমল করিবে। তোমার ন্যূনতম আমলও আল্লাহ বিনষ্ট করবেন না।
২৪/৩৭. অধ্যায়ঃ যার উপর বিনতু মাখায যাকাত দেয়া ওয়াজিব হয়েছে অথচ তার কাছে তা নেই
১৪৫৩. আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আবু বকর (রাদি.) তাহাঁর কাছে আল্লাহ তাহাঁর রাসুল (সাঃআঃ)-কে যাকাত সম্পর্কে যে বিধান দিয়েছেন তা লিখে পাঠানঃ যে ব্যক্তির উপর উটের যাকাত হিসেবে জাযাআ ফরয হয়েছে, অথচ তার নিকট জাযাআহ [৪১] নেই বরং তার নিকট হিককা [৪২] রয়েছে, তখন হিককা গ্রহণ করা হইবে। এর সাথে সম্ভব হলে (পরিপূরকরূপে) দুটি বকরী দিবে, অথবা বিশটি দিরহাম দিবে। আর যার উপর যাকাত হিসেবে হিককা ফরয হয়েছে, অথচ তার কাছে হিককা নেই বরং জাযাআ রয়েছে, তখন তার হইতে জাযাআ গ্রহণ করা হইবে। আর যাকাত উসূলকারী (ক্ষতিপূরণ স্বরূপ) মালিককে বিশটি দিরহাম বা দুটি বকরী দিবে। যার উপর হিককা ফরয হয়েছে, অথচ তার নিকট বিনত লাবূন রয়েছে, তখন বিনতে লাবূনই গ্রহণ করা হইবে। তবে মালিক দুটি বকরী বা বিশটি দিরহাম দিবে। আর যার ওপর বিনত লাবূন ফরয হয়েছে, কিন্তু তার কাছে হিককা রয়েছে, তখন তার হইতে হিককা গ্রহণ করা হইবে এবং আদায়কারী মালিককে বিশটি দিরহাম বা দুটি বকরী দিবে। আর যার ওপর বিনত লাবূন ফরয হয়েছে কিন্তু তার নিকট তা নেই বরং বিনতে মাখায রয়েছে, তবে তাই গ্রহণ করা হইবে, অবশ্য মালিক এর সঙ্গে বিশটি দিরহাম বা দুটি বকরী দিবে।
[৪১] জাযাআহ অর্থ যে উট চার বছর পূর্ণ হয়ে পঞ্চম বর্ষে পতিত হয়েছে। [৪২] হিক্কা অর্থ যে উট তিন বছর পূর্ণ হয়ে চতুর্থ বর্ষে পতিত হয়েছে।
২৪/৩৮. অধ্যায়ঃ বকরীর যাকাত
১৪৫৪. আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আবু বকর (রাদি.) তাঁকে বাহরাইনে প্রেরণকালে অত্র বিধানটি তাহাঁর জন্য লিখে দেনঃ
পরম দয়ালু করুণাময় আল্লাহর নামে। এটাই যাকাতের নিসাব-যা নির্ধারণ করিয়াছেন আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) মুসলিমদের প্রতি এবং যা আল্লাহ তাআলা তাহাঁর রাসুলকে নির্দেশ দিয়েছেন। মুসলিমদের মধ্যে যার নিকট হইতে নিয়মানুযায়ী চাওয়া হয়, সে যেন তা আদায় করে দেয় আর তার চেয়ে অধিক চাওয়া হলে তা যেন আদায় না করে। চব্বিশ ও তার চেয়ে কম সংখ্যক উটের যাকাত বকরী দ্বারা আদায় করা হইবে। প্রতিটি পাঁচটি উটে একটি বকরী এবং উটের সংখ্যা পঁচিশ হইতে পয়ত্রিশ পর্যন্ত হলে একটি মাদী বিনতে মাখায। ছত্রিশ হইতে পয়তাল্লিশ পর্যন্ত একটি মাদী বিনতে লাবূন। ছয়চল্লিশ হইতে ষাট পর্যন্ত ষাড়ের পালযোগ্য একটি হিককা, একষট্টি হইতে পচাত্তর পর্যন্ত একটি জাযাআ, ছিয়াত্তর হইতে নব্বই পর্যন্ত দুটি বিনতে লাবূন, একানব্বইটি হইতে একশ বিশ পর্যন্ত ষাড়ের পালযোগ্য দুটি হিককা আর একশ বিশের অধিক হলে (অতিরিক্ত) প্রতি চল্লিশটিতে একটি করে বিনতে লাবূন এবং (অতিরিক্ত) প্রতি পঞ্চাশটিতে একটি করে হিককা। যার চারটির বেশি উট নেই, সেগুলোর উপর কোন যাকাত নেই, তবে মালিক স্বেচ্ছায় কিছু দিতে চাইলে দিতে পারবে। কিন্তু যখন পাঁচে পৌঁছে তখন একটি বকরী ওয়াজিব। আর বকরীর যাকাত সম্পর্কেঃ গৃহপালিত বকরী চল্লিশটি হইতে একশ বিশটি পর্যন্ত একটি বকরী। এর বেশি হলে দুশটি পর্যন্ত দুটি বকরী। দুশর অধিক হলে তিনশ পর্যন্ত তিনটি বকরী। তিনশ-র অধিক হলে প্রতি একশ-তে একটি করে বকরী। কারো গৃহপালিত বকরীর সংখ্যা চল্লিশ হইতে একটিও কম হলে তার উপর যাকাত নেই। তবে স্বেচ্ছায় দান করলে তা করিতে পারে। রৌপ্যের যাকাত চল্লিশ ভাগের এক ভাগ। একশ নব্বই দিরহাম হলে সেক্ষেত্রে যাকাত নেই [৪৩], তবে মালিক স্বেচ্ছায় কিছু দিলে দিতে পারে।
[৪৩] দুশ দিরহাম হল- রৌপ্যের যাকাতের নিসাব যা বর্তমান ওজন অনুযায়ী ৫৯৫ গ্রাম। (দ্রঃ আরকানুল ইসলাম)
২৪/৩৯. অধ্যায়ঃ অধিক বয়সে দাঁত পড়া বৃদ্ধ ও ত্রুটিপূর্ণ বকরী গ্রহণ করা যাবে না, পাঁঠাও গ্রহণ করা হইবে না, তবে মালিক ইচ্ছা করলে (পাঁঠা) দিতে পারে।
১৪৫৫.আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ তাহাঁর রাসুল (সাঃআঃ)-এর প্রতি যাকাতের যে বিধান দিয়েছেন তা আবু বকর (রাদি.) তাহাঁর নিকট লিখে পাঠান। তাতে রয়েছেঃ অধিক বয়সে দাঁত পরা বৃদ্ধ ও ত্রুটিযুক্ত বকরী এবং পাঁঠা যাকাত হিসেবে গ্রহণ করা যাবে না, তবে যাকাত প্রদানকারী শেষোক্ত প্রাণী তথা পাঁঠা ইচ্ছা করলে দিতে পারেন।
২৪/৪০. অধ্যায়ঃ বকরি (চার মাস বয়সের মাদী) বাচ্চা যাকাত হিসেবে গ্রহণ করা।
১৪৫৬. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবু বকর (রাদি.) বলেছেন, আল্লাহর কসম! তারা যদি (যাকাতের) ঐরূপ একটি ছাগল ছানাও দিতে অস্বীকার করে যা আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর কাছে দিতো, তবুও তাদের বিরুদ্ধে যাকাত না দেয়ার কারণে লড়াই করবো।
১৪৫৭. Read previous Hadith. উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আমার নিকট স্পষ্ট যে, যুদ্ধের ব্যাপারে আল্লাহ আবু বাকারের ক্বলব খুলে দিয়েছেন, তাই বুঝলাম তাহাঁর সিদ্ধান্তই সঠিক।
২৪/৪১. অধ্যায়ঃ যাকাতের ক্ষেত্রে মানুষের উত্তম মাল নেয়া হইবে না
১৪৫৮. ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) যখন মুআয (ইবনু জাবাল) (রাদি.)-কে শাসনকর্তা হিসেবে ইয়ামান দেশে পাঠান, তখন বলেছিলেনঃ তুমি আহলে কিতাব লোকদের নিকট যাচ্ছো। সেহেতু প্রথমে তাদের আল্লাহর ইবাদতের দাওয়াত দিবে। যখন তারা আল্লাহর পরিচয় লাভ করিবে, তখন তাদের তুমি বলবে যে, আল্লাহ দিন-রাতে তাদের উপর পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফরয করে দিয়েছেন। যখন তারা তা আদায় করিতে থাকবে, তখন তাদের জানিয়ে দিবে যে, আল্লাহ তাদের উপর যাকাত ফরয করিয়াছেন, যা তাদের ধন-সম্পদ হইতে গ্রহণ করা হইবে এবং তাদের দরিদ্রদের মধ্যে বিতরণ করে দেয়া হইবে। যখন তারা এর অনুসরণ করিবে তখন তাদের হইতে তা গ্রহণ করিবে এবং লোকের উত্তম [৪৪] মাল গ্রহণ করা হইতে বিরত থাকবে।
[৪৪] যাকাত প্রদানকারী বেছে বেছে খারাপ মাল যাকাত হিসেবে প্রদান করিবে না। আদায়কারী বেছে বেছে ভাল মালগুলো যাকাত হিসেবে গ্রহণ করিবে না। দ্রব্য মধ্যম মানের হইতে হইবে।
২৪/৪২. অধ্যায়ঃ পাঁচ উটের কমে যাকাত নেই
১৪৫৯. আবু সাঈদ খুদরী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেন, পাঁচ ওসাক-এর কম পরিমাণ খেজুরের যাকাত নেই। পাঁচ উকিয়ার কম পরিমাণ রৌপ্যের যাকাত নেই এবং পাঁচটির কম উটের যাকাত নেই।
২৪/৪৩. অধ্যায়ঃ গরুর যাকাত
আবু হুমাইদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ আমি অবশ্যই সে লোকদের চিনতে পারবো, যে হাশরের দিন হাম্বা হাম্বা চিৎকাররত গাভী নিয়ে আল্লাহর কাছে উপস্থিত হইবে। বলা হয়, – শব্দের স্থলে – শব্দও ব্যবহৃত হয়েছে। এ হইতে – মানে গরু যেমন চিৎকার করে, তোমরা তেমন চিৎকার করিবে। (মুমিনুনঃ ৬৪)
১৪৬০. আবু যার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী (সাঃআঃ)-এর কাছে গমন করলাম। তিনি বললেনঃ শপথ সেই সত্তার যাঁর হাতে আমার প্রাণ (বা তিনি বলিলেন) শপথ সেই সত্তার, যিনি ব্যতীত প্রকৃত কোন উপাস্য নেই, অথবা অন্য কোন শব্দে শপথ করিলেন, উট, গরু বা বকরী থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি এদের হক আদায় করেনি সেগুলো যেমন ছিল তার চেয়ে বৃহদাকার ও মোটা তাজা করে কিয়ামাতের দিন হাযির করা হইবে এবং তাকে পদপিষ্ট করিবে এবং শিং দিয়ে গুঁতো দিবে। যখনই দলের শেষটি চলে যাবে তখন পালাক্রমে আমার প্রথমটি ফিরিয়ে আনা হইবে। মানুষের বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত তার সাথে এরূপ চলতে থাকবে। হাদীসটি বুকায়র (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) আবু সারিহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-এর মাধ্যমে হুরাইরা (রাদি.) সূত্রে নাবী (সাঃআঃ) হইতে বর্ণনা করিয়াছেন।
২৪/৪৪. অধ্যায়ঃ নিকটাত্মীয়দেরকে যাকাত দেয়া।
নাবী (সাঃআঃ) বলেনঃ এরূপ দাতার দ্বিগুণ সওয়াব। আত্মীয়কে দান করার সওয়াব এবং যাকাত দেয়ার সওয়াব।
১৪৬১. আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মদীনার আনসারীগণের মধ্যে আবু তালহা (রাদি.) সবচাইতে বেশী খেজুর বাগানের মালিক ছিলেন। মসজিদে নাববীর নিকটবর্তী বায়রুহা নামক বাগানটি তাহাঁর কাছে অধিক প্রিয় ছিল। আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) তাহাঁর বাগানে প্রবেশ করে এর সুপেয় পানি পান করিতেন। আনাস (রাদি.) বলেন, যখন এ আয়াত অবতীর্ণ হলোঃ
لَنْ تَنَالُوا الْبِرَّ حَتَّى تُنْفِقُوا مِمَّا تُحِبُّونَ
“তোমরা যা ভালবাস তা হইতে ব্যয় না করা পর্যন্ত তোমরা কখনো পুণ্য লাভ করিবে না”- (আল-ইমরানঃ ৯২)। তখন আবু তালহা (রাদি.) আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর কাছে গিয়ে বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আল্লাহ বলেছেনঃ “তোমরা যা ভালবাস তা হইতে ব্যয় না করা পর্যন্ত তোমরা কখনো পুণ্য লাভ করিবে না”- (আল-ইমরানঃ ৯২)। আর বায়রুহা বাগানটি আমার কাছে অধিক প্রিয়। এটি আল্লাহর নামে সাদকা করা হলো, আমি এর কল্যাণ কামনা করি এবং তা আল্লাহর নিকট আমার জন্য সঞ্চয়রূপে থাকবে। কাজেই আপনি যাকে দান করা ভাল মনে করেন, তাকে দান করুন। তখন আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বললেনঃ তোমাকে ধন্যবাদ, এ হচ্ছে লাভজনক সম্পদ, এ হচ্ছে লাভজনক সম্পদ। তুমি যা বলেছ তা শুনলাম। আমি মনে করি, তোমার আপন জনদের মধ্যে তা বন্টন করে দাও। আবু তালহা (রাদি.) বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমি তাই করব। অতঃপর তিনি তাহাঁর আত্মীয়-স্বজন, আপন চাচার বংশধরের মধ্যে তা বন্টন করে দিলেন। রাবী রাওহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) — শব্দে আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-এর অনুসরণ করিয়াছেন। আর রাবী ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ও ইসমাঈল (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) মালিক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে — শব্দ বলেছেন।
১৪৬২. আবু সাঈদ খুদরী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ঈদুল আযহা বা ঈদুল ফিতরের দিনে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) ঈদগাহে গেলেন এবং সালাত শেষ করিলেন। পরে লোকদের উপদেশ দিলেন এবং তাদের সাদকা দেয়ার নির্দেশ দিলেন আর বললেনঃ লোক সকল! তোমরা সাদকা দিবে। অতঃপর মহিলাগণের নিকট গিয়ে বললেনঃ মহিলাগণ! তোমরা সাদকা দাও। আমাকে জাহান্নামে তোমাদেরকে অধিক সংখ্যক দেখানো হয়েছে। তারা বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! এর কারণ কী? তিনি বললেনঃ তোমরা বেশি অভিশাপ দিয়ে থাক এবং স্বামীর অকৃতজ্ঞ হয়ে থাক। হে মহিলাগণ! জ্ঞান ও দ্বীনে অপরিপূর্ণ হওয়া স্বত্বেও দৃঢ়চেতা পুরুষের বুদ্ধি হরণকারিণী তোমাদের মত কাউকে দেখিনি। যখন তিনি ফিরে এসে ঘরে পৌছলেন, তখন ইবনু মাসঊদ (রাদি.)-এর স্ত্রী যায়নাব (রাদি.) তাহাঁর কাছে প্রবেশের অনুমতি চাইলেন। বলা হলো, হে আল্লাহর রাসুল! যায়নাব এসেছেন। তিনি বলিলেন, কোন যায়নাব? বলা হলো, ইবনু মাসঊদের স্ত্রী। তিনি বললেনঃ হাঁ, তাকে আসতে দাও। তাকে অনুমতি দেয়া হলো। তিনি বলিলেন, হে আল্লাহর নাবী (সাঃআঃ) আজ আপনি সাদকা করার নির্দেশ দিয়েছেন। আমার অলংকার আছে। আমি তা সাদকা করার ইচ্ছা করেছি। ইবনু মাসঊদ (রাদি.) মনে করেন, আমার এ সাদকায় তাহাঁর এবং তাহাঁর সন্তানদেরই হক বেশি। তখন আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলিলেন, ইবনু মাসঊদ (রাদি.) ঠিক বলেছে। তোমার স্বামী ও সন্তানই তোমার এ সাদকার অধিক হকদার।
২৪/৪৫. অধ্যায়ঃ মুসলিমের উপর তার ঘোড়ায় কোন যাকাত নেই।
১৪৬৩. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন, মুসলিমের উপরে তার ঘোড়া ও গোলামের কোন যাকাত নেই।
২৪/৪৬. অধ্যায়ঃ মুসলিমের উপর তার গোলামের যাকাত নেই।
১৪৬৪. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন, মুসলিমের উপর তার গোলাম ও ঘোড়ার কোন যাকাত নেই।
২৪/৪৭. অধ্যায়ঃ ইয়াতীমকে সাদকা দেয়া।
১৪৬৫. আবু সাঈদ খুদরী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা নাবী (সাঃআঃ) মিম্বরে বসলেন এবং আমরা তাহাঁর আশেপাশে বসলাম। তিনি বললেনঃ আমার পরে তোমাদের ব্যাপারে আমি যা আশঙ্কা করছি তা হলো এই যে দুনিয়ার চাকচিক্য ও সৌন্দর্য (ধন-সম্পদ) তোমাদের সামনে খুলে দেয়া হইবে। এক সাহাবী বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! কল্যাণ কি কখনো অকল্যাণ বয়ে আনে? এতে নাবী (সাঃআঃ) নীরব হলেন। প্রশ্নকারীকে বলা হলো, তোমার কী হয়েছে? তুমি নাবী (সাঃআঃ)-এর সাথে কথা বলছ, কিন্তু তিনি তোমাকে জওয়াব দিচ্ছেন না? তখন আমরা অনুভব কলাম যে, নাবী (সাঃআঃ)-এর উপর ওয়াহী নাযিল হচ্ছে। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর তিনি তাহাঁর ঘাম মুছলেন এবং বললেনঃ প্রশ্নকারী কোথায়? যেন তার প্রশ্নকে প্রশংসা করে বলিলেন, কল্যাণ কখনো অকল্যাণ বয়ে আনে না। অবশ্য বসন্ত মৌসুম যে ঘাস উৎপন্ন করে তা (সবটুকুই সুস্বাদু ও কল্যাণকর বটে তবে) অনেক সময় হয়ত (ভোজনকারী প্রাণীর) জীবন নাশ করে অথবা তাকে মৃত্যুর কাছাকাছি নিয়ে যায়। তবে ঐ তৃণভোজী জন্তু, যে পেট ভরে খাওয়ার পর সূর্যের তাপ গ্রহণ করে এবং মল ত্যাগ করে, প্রস্রাব করে এবং পুণরায় চলে (সেই মৃত্যু থেকে রক্ষা পায় তেমনি) এই সম্পদ হলো আকর্ষণীয় সুস্বাদু। কাজেই সে-ই ভাগ্যবান মুসলিম, যে এই সম্পদ থেকে মিসকীন, ইয়াতীম ও মুসাফিরকে দান করে অথবা নাবী (সাঃআঃ) যেরূপ বলেছেন, আর যে ব্যক্তি এই সম্পদ অন্যায়ভাবে উপার্জন করে, সে ঐ ব্যক্তির ন্যায়, যে খেতে থাকে এবং তার পেট ভরে না। ক্বিয়ামত দিবসে ঐ সম্পদ তার বিপক্ষে সাক্ষ্য দিবে।
২৪/৪৮. অধ্যায়ঃ স্বামী ও পোষ্য ইয়াতীমকে যাকাত দেয়া।
এ প্রসঙ্গে নাবী (সাঃআঃ) হইতে আবু সাঈদ (রাদি.) হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।
১৪৬৬. আবদুল্লাহ (ইবনু মাসঊদ) (রাদি.)-এর স্ত্রী যায়নাব (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
[রাবী আমাশ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন,] আমি ইবরাহীম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-এর সাথে এ হাদীসের আলোচনা করলে তিনি আবু উবায়দাহ সূত্রে আমর ইবনু হারিস (রাদি.)-এর মাধ্যমে আবদুল্লাহ (রাদি.)-এর স্ত্রী যায়নাব (রাদি.) হইতে হুবহু বর্ণনা করেন। তিনি [যায়নাব (রাদি.)] বলেন, আমি মসজিদে ছিলাম। তখন নাবী (সাঃআঃ)-কে দেখলাম তিনি বলছেনঃ তোমরা সাদকা দাও যদিও তোমাদের অলংকার হইতে হয়। যায়নাব (রাদি.) আবদুল্লাহ (রাদি.) ও তাহাঁর পোষ্য ইয়াতীমের প্রতি খরচ করিতেন। তখন তিনি আবদুল্লাহকে বলিলেন, তুমি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর নিকট জেনে এসো যে, তোমার প্রতি এবং আমার পোষ্য ইয়াতীমদের প্রতি খরচ করলে আমার পক্ষ হইতে সাদকা আদায় হইবে কি? তিনি [ইবনু মাসউদ (রাদি.)] বলিলেন, বরং তুমিই আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর কাছে জেনে এসো। এরপর আমি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর নিকট গেলাম। তাহাঁর দরজায় আরো একজন আনসারী মহিলাকে দেখলাম, তার প্রয়োজনও আমার প্রয়োজনের অনুরূপ। তখন বিলাল (রাদি.)-কে আমাদের পাশ দিয়ে যেতে দেখে বললাম, আপনি নাবী (সাঃআঃ)-এর কাছে জিজ্ঞেস করুন, স্বামী ও আপন (পোষ্য) ইয়াতীমের প্রতি সাদকা করলে কি আমার পক্ষ হইতে তা যথেষ্ট হইবে? এবং এ কথাও বলেছিলাম যে, আমাদের কথা জানাবেন না। তিনি প্রবেশ করে তাঁকে জিজ্ঞেস করিলেন। আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বললেনঃ তারা কে? বিলাল (রাদি.) বলিলেন, যায়নাব। তিনি আবার জিজ্ঞেস করিলেন, কোন যায়নাব? তিনি উত্তর দিলেন, আবদুল্লাহর স্ত্রী। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ তার জন্য দুটি সওয়াব [৪৫] রয়েছে, আত্মীয়কে দেয়ার সওয়াব আর সাদকা দেয়ার সওয়াব।
[৪৫] কেউ নিজস্ব মাল থেকে অভাবগ্রস্ত নিকটাত্মীয়দেরকে যাকাত দিলে অধিক পুণ্য লাভ করিবে।
১৪৬৭. উম্মু সালামা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! (আমার স্বামী) আবু সালামার সন্তান, যারা আমারও সন্তান, তাদের প্রতি ব্যয় করলে আমার সওয়াব হইবে কি? তিনি বললেনঃ তাদের প্রতি ব্যয় কর। তাদের প্রতি ব্যয় করার সওয়াব তুমি অবশ্যই পাবে।
Leave a Reply