পুরুষের পিছনে মহিলাদের সালাত ও শিশুদের বর্ণনা
পুরুষের পিছনে মহিলাদের সালাত ও শিশুদের বর্ণনা >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ১০, আযান, অধ্যায়ঃ (১৬১-১৬৬)=৭টি
১০/১৬১. অধ্যায়ঃ শিশুদের উযূ করা, কখন তাদের উপর গোসল ও পবিত্রতা অর্জন আবশ্যক হয় এবং সালাতের জামাআতে , দু ঈদে এবং জানাযায় তাদের উপস্থিত হওয়া এবং কাতারবন্দী হওয়া ।
১০/১৬২. অধ্যায়ঃ রাতে ও অন্ধকারে মহিলাগণের মসজিদের দিকে বের হওয়া ।
১০/১৬৩. অধ্যায়ঃ ইমামের দাঁড়ানো পর্যন্ত মানুষের অপেক্ষা ।
১০/১৬৪. অধ্যায়ঃ পুরুষদের পিছনে নারীদের সালাত।
১০/১৬৫. অধ্যায়ঃ ফজরের সালাত শেষে নারীদের তাড়াতাড়ি বাড়ীতে প্রত্যাবর্তন করা এবং মসজিদে তাদের সল্পকাল অবস্থান করা ।
১০/১৬৬.১. অধ্যায়ঃ মসজিদে যাওয়ার জন্য স্বামীর নিকট মহিলার সম্মতি চাওয়া ।
১০/১৬৬.২. অধ্যায়ঃ পুরুষদের পিছনে মহিলাদের সালাত আদায়।
১০/১৬১. অধ্যায়ঃ শিশুদের উযূ করা, কখন তাদের উপর গোসল ও পবিত্রতা অর্জন আবশ্যক হয় এবং সালাতের জামাতে , দু ঈদে এবং জানাযায় তাদের উপস্থিত হওয়া এবং কাতারবন্দী হওয়া ।
৮৫৭. শাবী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,এমন এক ব্যক্তি আমাকে খবর দিয়েছেন, যিনি নাবী (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে একটি পৃথক কবরের নিকট গেলেন। নাবী (সাঃআঃ) সেখানে লোকদের ইমামত করেন। লোকজন কাতারবন্দী হয়ে তাহাঁর পিছনে দাঁড়িয়ে গেল। আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আবু আমর! কে আপনাকে এ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন? তিনি বলিলেন, ইবনু আব্বাস (রাদি.)।
৮৫৮. আবু সাঈদ খুদরী (রাদি.) সুত্রে নাবী (সাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জুমুআর দিন প্রত্যেক বয়ঃপ্রাপ্ত (মুসলিমের) গোসল করা ওয়াজিব।
৮৫৯. ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি এক রাতে আমার খালা (উম্মুল মুমিনীন) মাইমূনাহ (রাদি.) এর নিকট রাত্র কাটালাম। সে রাতে নাবী (সাঃআঃ)-ও সেখানে নিদ্রা যান। রাতের কিছু অংশ অতিবাহিত হলে তিনি উঠলেন এবং একটি ঝুলন্ত মশ্ক হইতে পানি নিয়ে হালকা উযূ করিলেন। আমর (বর্ণনাকারী) এটাকে হাল্কা এবং অতি কম বুঝলেন। অতঃপর তিনি সালাতে দাঁড়ালেন। ইবনু আব্বাস (রাদি.) বলেন, আমি উঠে তাহাঁর মতই সংক্ষিপ্ত উযূ করলাম, অতঃপর এসে নাবী (সাঃআঃ)-এর বামপাশে দাঁড়িয়ে গেলাম। তখন তিনি আমাকে ঘুরিয়ে তাহাঁর ডানপাশে করে দিলেন। অতঃপর যতক্ষণ আল্লাহর ইচ্ছা সালাত আদায় করিলেন, অতঃপর বিছানায় শুয়ে ঘুমিয়ে পড়লেন। এমনকি শ্বাস-প্রশ্বাসের আওয়াজ হইতে লাগল, অতঃপর মুয়াজ্জিন এসে সালাতের কথা জানালে তিনি উঠে তাহাঁর সালাতের জন্য চলে গেলেন এবং সালাত আদায় করিলেন। কিন্তু (নতুন) উযূ করিলেন না। সুফিয়ান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমি আমর (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-কে জিজ্ঞেস করেছিলাম, লোকজন বলে থাকেন, নাবী (সাঃআঃ)-এর চোখ নিদ্রায় যেত কিন্তু তাহাঁর কাল্ব (হৃদয়) জাগ্রত থাকত। আমর (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলিলেন, উবায়দ ইবনু উমর (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-কে আমি বলিতে শুনিয়াছি যে, নিশ্চয়ই নাবীগণের স্বপ্ন ওয়াহী। অতঃপর তিনি তেলাওয়াত করিলেন إِنّيِ أَرَى في المَنامِ أَنّيِ أَذبَحُكَ [ইবরাহীম (আঃ), ইসমাঈল (আঃ)-কে বলিলেন] আমি স্বপ্ন দেখলাম, তোমাকে কুরবানী করছি। (সুরা আস্-সাফ্ফাত ৩৭/১০২)।
৮৬০. আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
ইসহাক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-এর দাদী মুলাইকা (রাদি.) খাদ্য তৈরি করে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-কে দাওয়াত করিলেন। তিনি তার তৈরি খাবার খেলেন। অতঃপর তিনি বললেনঃ তোমরা উঠে দাঁড়াও, আমি তোমাদের দিয়ে সালাত আদায় করব। আনাস (রাদি.) বলেন, আমি একটি চাটাইয়ে দাড়ালাম যা অধিক ব্যাবহারের কারণে কালো হয়ে গিয়েছিল। আমি এতে পানি ছিটিয়ে দিলাম। আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) সালাতে দাঁড়ালেন, আমার সঙ্গে এক ইয়াতীম বাচ্চাও দাঁড়াল এবং বৃদ্ধা আমাদের পিছনে দাঁড়ালেন। আমাদের নিয়ে তিনি দুরাকআত সালাত আদায় করিলেন।
৮৬১. আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি একটি গাধার উপর আরোহণ করে অগ্রসর হলাম। তখন আমি প্রায় বয়ঃপ্রাপ্ত। এ সময় রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) মিনায় প্রাচীর ব্যতীত অন্য কিছু সামনে রেখে লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করছিলেন। আমি কোন এক কাতারের সম্মুখ দিয়ে অগ্রসর হয়ে এক জায়গায় নেমে গেলাম এবং গাধাটিকে চরে বেড়ানোর জন্য ছেড়ে দিলাম। অতঃপর আমি কাতারে ঢুকে পড়লাম। আমার এ কাজে কেউ আপত্তি করিলেন না।
৮৬২. আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) ইশার সালাত আদায়ে দেরি করিলেন। অবশেষে উমর (রাদি.) তাঁকে আহবান করে বলিলেন, নারী ও শিশুরা ঘুমিয়ে পড়েছে। আয়েশা (রাদি.) বলেন, তখন আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বের হয়ে বললেনঃ তোমরা ছাড়া পৃথিবীতে কেউ আর এ সালাত আদায় করে না। (রাবী বলেন,) সে সময় মদীনাবাসী ছাড়া আর কেউ সালাত আদায় করতো না।
৮৬৩. ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি তাঁকে জিজ্ঞেস করিল, আপনি নাবী (সাঃআঃ) এর সাথে কখনো ঈদের মাঠে গমন করিয়াছেন? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ, গেছি। তবে তাহাঁর নিকট আমার যে মর্যাদা ছিল তা না থাকলে আমি অল্প বয়স্ক হবার কারণে সেখানে যেতে পারতাম না। তিনি কাসীর ইবনু সালাতের বাড়ির নিকট যে নিশানা ছিল সেখানে আসলেন (সালাত আদায়ের) পরে খুতবা দিলেন। অতঃপর মহিলাদের নিকট গিয়ে তিনি তাদের ওয়ায ও নসীহাত করেন। এবং তাদের সদকা করিতে নির্দেশ দেন। ফলে মহিলারা তাঁদের হাতের আংটি খুলে বিলাল (রাদি.)-এর কাপড়ের মধ্যে নিক্ষেপ করিতে থাকলেন। অতঃপর নাবী ও বিলাল (রাদি.) বাড়ি পৌছালেন।
১০/১৬২. অধ্যায়ঃ রাতে ও অন্ধকারে মহিলাগণের মসজিদের দিকে বের হওয়া ।
৮৬৪. আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) ইশার সালাত আদায়ে দেরি করিলেন। ফলে উমর (রাদি.) তাঁকে আহবান করে বলিলেন, মহিলা ও শিশুরা ঘুমিয়ে পড়েছে। তখন নাবী (সাঃআঃ) বেরিয়ে এসে বললেনঃ এ সালাতের জন্য পৃথিবীতে অন্য কেউ অপেক্ষারত নেই। সে সময় মদীনাবাসী ছাড়া অন্য কোথাও সালাত আদায় করা হতো না। তারা সূর্যাস্তের পর পশ্চিম আকাশের লালিমা অদৃশ্য হবার সময় হইতে রাতের প্রথম তৃতীয়াংশ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ইশার সালাত আদায় করিতেন।
৮৬৫. ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যদি তোমাদের স্ত্রীরা রাতের বেলা মসজিদে আসতে চায় তাহলে তাদের অনুমতি দিবে। শুবাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)…..ইবনু উমর (রাদি.) নাবী (সাঃআঃ) হইতে হাদীস বর্ণনায় উবাইদুল্লাহ ইবনু মূসা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-এর অনুসরণ করিয়াছেন।
১০/১৬৩. অধ্যায়ঃ ইমামের দাঁড়ানো পর্যন্ত মানুষের অপেক্ষা ।
৮৬৬. হিন্দ বিনত হারিস (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ)-এর স্ত্রী সালামা (রাদি.) তাঁকে জানিয়েছেন, নারীরা আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর সময় ফরয সালাতের সালাম ফিরানোর সাথে সাথে উঠে যেতেন এবং আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-ও তাহাঁর সঙ্গে সালাত আদায়কারী পুরুষগণ, আল্লাহ যতক্ষণ ইচ্ছা করেন অবস্থান করিতেন। অতঃপর আল্লাহর রাসুল উঠলে পুরুষরাও উঠে যেতেন।
৮৬৭. আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) যখন ফজরের সালাত শেষ করিতেন তখন নারীরা চাদরে সর্বাঙ্গ আচ্ছাদিত করে ঘরে ফিরতেন। অন্ধকারের দরুন তখন তাঁদেরকে চেনা যেতো না।
৮৬৮. আবু কাতাদা আনসারী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেনঃ আমি সালাতে দাঁড়িয়ে তা দীর্ঘায়িত করব বলে ইচ্ছা করি, অতঃপর শিশুর কান্না শুনতে পেয়ে আমি সালাত সংক্ষিপ্ত করি এ আশংকায় যে, তার মা কষ্ট পাবে।
৮৬৯. আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যদি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) জানতেন যে, নারীরা কী অবস্থা সৃষ্টি করেছে, তাহলে বনী ইসরাঈলের নারীদের যেমন বারণ করা হয়েছিল, তেমনি এদেরও মসজিদে আসা নিষেধ করে দিতেন। (রাবী) ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন,আমি আমরাহ (রাদি.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, তাদের কি নিষেধ করা হয়েছিল? তিনি বলিলেন, হাঁ।
১০/১৬৪. অধ্যায়ঃ পুরুষদের পিছনে নারীদের সালাত।
৮৭০. উম্মু সালামা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন ,নাবী (সাঃআঃ) যখন সালাম ফিরাতেন, তখন মহিলারা তাহাঁর সালাম শেষ করার পর উঠে যেতেন। নাবী (সাঃআঃ) দাঁড়ানোর পূর্বে স্বীয় স্থানে কিছুক্ষণ অবস্থান করিতেন। রাবী যুহরী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমাদের মনে হয়, তা এজন্য যে, অবশ্য আল্লাহ ভাল জানেন, যাতে পুরুষদের যাবার পূর্বেই নারীরা চলে যেতে পারে।
৮৭১. আনাস (ইবনু মালিক) (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) উম্মু সুলাইম (রাদি.)-এর ঘরে সালাত আদায় করেন। আমি এবং একটি ইয়াতীম তাহাঁর পিছনে দাড়ালাম আর উম্মু সুলাইম (রাদি.) আমাদের পিছনে দাঁড়ালেন।
১০/১৬৫. অধ্যায়ঃ ফজরের সালাত শেষে নারীদের তাড়াতাড়ি বাড়ীতে প্রত্যাবর্তন করা এবং মসজিদে তাদের সল্পকাল অবস্থান করা ।
৮৭২. আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) অন্ধকার থাকতেই ফজরের সালাত আদায় করিতেন। অতঃপর মুমিনদের স্ত্রীগণ চলে যেতেন, অন্ধকারের জন্য তাদের চেনা যেতনা অথবা বলেছেন, অন্ধকারের জন্য তাঁরা একে অপরকে চিনতেন না।
১০/১৬৬.১. অধ্যায়ঃ মসজিদে যাওয়ার জন্য স্বামীর নিকট মহিলার সম্মতি চাওয়া ।
৮৭৩. আবদুল্লাহ (রাদি.) সুত্রে নাবী (সাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তোমাদের কারো স্ত্রী যদি (সালাতের জন্য মসজিদে যাবার) অনুমতি চায় তাহলে তার স্বামী তাকে যেন বাধা না দেয়।
১০/১৬৬.২. অধ্যায়ঃ পুরুষদের পিছনে মহিলাদের সালাত আদায়।
৮৭৪. আনাস (ইবনু মালিক) (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) উম্মু সুলাইম (রাদি.)-এর ঘরে সালাত আদায় করেন। আমি এবং একটি ইয়াতীম তাহাঁর পিছনে দাঁড়ালাম আর উম্মু সুলাইম (রাদি.) আমাদের পিছনে দাঁড়ালেন।
৮৭৫. উম্মু সালামা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) যখন সালাম ফিরাতেন, তখন মহিলারা তাহাঁর সালাম শেষ করার পর উঠে যেতেন। নাবী (সাঃআঃ) দাঁড়ানোর পূর্বে স্বীয় স্থানে কিছুক্ষণ অবস্থান করিতেন। রাবী যুহরী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন,আমাদের মনে হয়, তা এজন্য যে, অবশ্য আল্লাহ ভাল জানেন, যাতে পুরুষদের যাবার পূর্বেই নারীরা চলে যেতে পারে।
Leave a Reply