জামাতে সালাত আদায়ের ফজিলত । দুজন বা ততোধিক ব্যক্তি হলেই জামাআত
জামাতে সালাত আদায়ের ফজিলত । দুজন বা ততোধিক ব্যক্তি হলেই জামাআত >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ১০, আযান, অধ্যায়ঃ (২৯-৪৫)=১৭টি
১০/২৯. অধ্যায়ঃ জামাতে সালাত আদায় করা ওয়াজিব ।
১০/৩০. অধ্যায়ঃ জামাতে সালাত আদায় করার মর্যাদা ।
১০/৩১. অধ্যায়ঃ ফজর সালাত জামাতে আদায়ের ফযীলত ।
১০/৩২. অধ্যায়ঃ প্রথম ওয়াক্তে যুহরের সালাতে যাওয়ার মর্যাদা ।
১০/৩৩. অধ্যায়ঃ (মসজিদে গমনে) প্রতি পদক্ষেপে পুণ্যের আশা রাখা ।
১০/৩৪. অধ্যায়ঃ ইশার সালাত জামাতে আদায় করার ফযীলত ।
১০/৩৫. অধ্যায়ঃ দুজন বা ততোধিক ব্যক্তি হলেই জামাআত ।
১০/৩৬. অধ্যায়ঃ মসজিদে সালাতে অপেক্ষমান ব্যক্তি এবং মসজিদের ফযীলত ।
১০/৩৭. অধ্যায়ঃ সকাল-সন্ধ্যায় মসজিদে যাবার ফযীলত ।
১০/৩৮. অধ্যায় : ইক্বামাত হয়ে গেলে ফরয ব্যতীত অন্য কোন সালাত নেই ।
১০/৩৯.অধ্যায়ঃ রোগাক্রান্ত ব্যক্তির কী পরিমাণ রোগাক্রান্ত অবস্থায় জামাতে শামিল হওয়া উচিত ।
১০/৪০. অধ্যায়ঃ বৃষ্টি ও ওজরবশত নিজ আবাসস্থলে সালাত আদায়ের অনুমতি ।
১০/৪১. অধ্যায়ঃ যারা উপস্থিত হয়েছে তাদের নিয়েই কি সালাত আদায় করিবে এবং বৃষ্টির দিনে কি জুমুআর খুতবা পড়বে?
১০/৪২. অধ্যায়ঃ খাবার উপস্থিত হবার পর যদি সালাতের ইক্বামাত হয় ।
১০/৪৩. অধ্যায়ঃ খাবার হাতে থাকা অবস্থায় ইমামকে সালাতের দিকে আহবান করলে ।
১০/৪৪. অধ্যায়ঃ ঘরের কাজ-কর্মে ব্যস্ত থাকা অবস্থায় ইক্বামাত হলে, সালাতের জন্য বের হয়ে যাবে ।
১০/ ৪৫. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি কেবলমাত্র আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর সালাত ও তাহাঁর নিয়ম-নীতি শিক্ষা দেয়ার উদ্দেশ্যে লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করেন ।
১০/২৯. অধ্যায়ঃ জামাতে সালাত আদায় করা ওয়াজিব ।
হাসান বাসরী (র.) বলেন, কোন মা যদি তাহাঁর সন্তানের প্রতি স্নেহবশত ইশার সালাত জামাতে আদায় করিতে নিষেধ করে, তবে এ ব্যাপারে সন্তান তার মায়ের আনুগত্য করিবে না।
৬৪৪. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যাঁর হাতে আমার প্রাণ, তাহাঁর শপথ! আমার ইচ্ছা হয়, জ্বালানী কাঠ সংগ্রহ করিতে আদেশ দেই, অতঃপর সালাত কায়েমের আদেশ দেই, অতঃপর সালাতের আযান দেয়া হোক, অতঃপর এক ব্যক্তিকে লোকদের ইমামত করার নির্দেশ দেই। অতঃপর আমি লোকদের নিকট যাই এবং তাদের (যারা সালাতে শামিল হয়নি) ঘর জ্বালিয়ে দেই। যে মহান সত্তার হাতে আমার প্রাণ, তাহাঁর কসম! যদি তাদের কেউ জানত যে, একটি গোশ্তহীন মোটা হাড় বা ছাগলের ভালো দুটি পা পাবে তাহলে অবশ্যই সে ইশা সালাতের জামাতেও হাযির হতো।
(৬৫৭, ২৪২০, ৭২২৪; মুসলিম ৫/২৪, হাদীস ৬৫১, আহমাদ ৭৩৩২) (আ.প্র. ৬০৮, ই.ফা. ৬১৬)
১০/৩০. অধ্যায়ঃ জামাতে সালাত আদায় করার মর্যাদা ।
জামাআত না পেলে আসওয়াদ ইবন ইয়াযীদ (রাদি.) অন্য মসজিদে চলে যেতেন । আনাস ইবন মালিক (রাদি.) এমন এক মসজিদে গেলেন যেখানে ইকামত দিয়ে জামাতে সালাত আদায় করিলেন ।
৬৪৫. আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেনঃ জামাতে সালাতের ফযীলত একাকী আদায়কৃত সালাত অপেক্ষা সাতাশ গুণ বেশী।
(৬৪৯, মুসলিম ৫/৪২, হাদীস ৬৫০, আহমাদ ৫৩৩২) (আ.প্র. ৬০৯, ই.ফা. ৬১৭)
৬৪৬. আবু সাঈদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-কে বলিতে শুনেছেন, একাকী সালাত আদায়ের চেয়ে জামাতে সালাত আদায়ের ফযীলত পঁচিশগুন বেশী।
(আ.প্র. ৬১০, ই.ফা. নাই)
৬৪৭. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেনঃ কোনো ব্যক্তির জামাতের সাথে সালাতের সওয়াব, তার নিজের ঘরে ও বাজারে আদায়কৃত সালাতের সওয়াবের চেয়ে পঁচিশ গুণ বাড়িয়ে দেয়া হয়। এর কারণ এই যে, সে যখন উত্তমরূপে উযূ করলো, অতঃপর একমাত্র সালাতের উদ্দেশে মসজিদে রওয়ানা করিল তখন তার প্রতি কদমের বিনিময়ে একটি মর্তবা বৃদ্ধি করা হয় এবং একটি গুনাহ মাফ করা হয়। সালাত আদায়ের পর সে যতক্ষণ নিজ সালাতের স্থানে থাকে, মালাকগণ (ফেরেশতাগণ) তার জন্য এ বলে দুআ করিতে থাকেন-
اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَيْهِ اللَّهُمَّ ارْحَمْهُ
“হে আল্লাহ! আপনি তার উপর রহমত বর্ষণ করুন এবং তার প্রতি অনুগ্রহ করুন।” আর তোমাদের কেউ যতক্ষণ সালাতের অপেক্ষায় থাকে ততক্ষণ পর্যন্ত সে সালাতে রত বলে গণ্য হয়। (১৭৬)
(আ.প্র. ৬১১, ই.ফা. ৬১৮)
১০/৩১. অধ্যায়ঃ ফজর সালাত জামাতে আদায়ের ফযীলত ।
৬৪৮. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-কে বলিতে শুনেছেন যে, জামাতের সালাত তোমাদের কারো একাকী সালাত হইতে পঁচিশ গুণ অধিক সওয়াব রাখে। আর ফজরের সালাতে রাতের ও দিনের মালাকগণ (ফেরেশতাগণ) একত্রিত হয়। অতঃপর আবু হুরাইরা (রাদি.) বলিতেন, তোমরা চাইলে (এর প্রমাণ স্বরূপ) ——- অর্থাৎ “ফজরের সালাতে (মালাকগণ (ফেরেশতাগণ)) উপস্থিত হয়”- (সুরা ইসরা ১৭/১৮) এ আয়াত পাঠ কর।
৬৪৯. শুআয়ব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
আমাকে নাফি (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণনা করে শুনিয়েছেন যে, জামাতের সালাতে একাকী সালাত হইতে সাতাশ গুণ অধিক সওয়াব হয়।
৬৫০. উম্মুদ দারদা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার আবু দারদা (রাদি.) ভীষণ রাগান্বিত অবস্থায় আমার নিকট এলেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কিসে তোমাকে রাগান্বিত করেছে? তিনি বলিলেন, আল্লাহর শপথ! মুহাম্মাদ (সাঃআঃ)-এর উম্মাতের মধ্যে জামাতে সালাত আদায় বাদ দিয়ে তাহাঁর তরীকার আর কিছুই দেখছি না।
৬৫১. আবু মুসা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ (মসজিদ হইতে) যে যত অধিক দূরত্ব অতিক্রম করে সালাতে আসে, তার তত অধিক পুণ্য হইবে। আর যে ব্যক্তি ইমামের সঙ্গে সালাত আদায় করা পর্যন্ত অপেক্ষা করে, তার পুণ্য সে ব্যক্তির চেয়ে অধিক, যে একাকী সালাত আদায় করে ঘুমিয়ে পড়ে।
১০/৩২. অধ্যায়ঃ প্রথম ওয়াক্তে যুহরের সালাতে যাওয়ার মর্যাদা ।
৬৫২. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেনঃ এক ব্যক্তি রাস্তা দিয়ে চলার সময় রাস্তায় একটি কাঁটাযুক্ত ডাল দেখিতে পেয়ে তা সরিয়ে ফেলল। আল্লাহ তাআলা তার এ কাজ সাদরে কবুল করে তার গুনাহ মাফ করে দিলেন।
৬৫৩. See previous Hadith. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
অতঃপর আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বললেনঃ শহীদ পাঁচ প্রকার- ১. প্লেগে মৃত ব্যক্তি ২. কলেরায় মৃত ব্যক্তি ৩. পানিতে নিমজ্জিত ব্যক্তি ৪. চাপা পড়ে মৃত ব্যক্তি এবং ৫. আল্লাহর পথে (জিহাদে) শহীদ। তিনি আরও বলেছেনঃ মানুষ যদি আযান দেয়া এবং প্রথম কাতারে সালাত আদায় করার কী ফযীলত তা জানত আর কুরআহর মাধ্যমে ফায়সালা করা ছাড়া সে সুযোগ না পেতো, তাহলে কুরআহর মাধ্যমে হলেও তারা সে সুযোগ গ্রহণ করতো।
৬৫৪. See previous Hadith. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আর আউয়াল ওয়াক্ত (যুহরের সালাতে যাওয়ার) কী ফযীলত তা যদি মানুষ জানত, তাহলে এর জন্য তারা আবশ্যই সর্বাগ্রে যেত। আর ইশা ও ফজর সালাত (জামাতে) আদায়ে কী ফযীলত, তা যদি তারা জানত তা হলে তারা হামাগুড়ি দিয়ে হলেও এজন্য অবশ্যই উপস্থিত হতো।
১০/৩৩. অধ্যায়ঃ (মসজিদে গমনে) প্রতি পদক্ষেপে পুণ্যের আশা রাখা ।
৬৫৫. আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ হে বনী সালিমা! তোমরা কি (মসজিদে আসার পথে) তোমাদের পদক্ষেপের নেকী কামনা কর না? ——— “তাদের কর্ম ও কীর্তিসমূহ লিখে রাখি” (সুরা ইয়া সীন ৩৬/১২) তাহাঁর এ বাণী সম্পর্কে মুজাহিদ বলেন। —– অর্থাৎ তোমাদের পদক্ষেপসমূহ।
৬৫৬. ইবনু মারইয়াম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
বনী সালিমা গোত্রের লোকেরা নিজেদের ঘর-বাড়ি ছেড়ে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর নিকট এসে বসতি স্থাপন করিতে চেয়েছিল। আনাস (রাদি.) বলেন, কিন্তু মদীনার কোনো এলাকা একেবারে শূন্য হওয়াটা নাবী (সাঃআঃ) পছন্দ করেননি। তাই তিনি তোমরা কি (মসজিদে আসা যাওয়ায়) তোমাদের পদচিহ্নগুলোর সওয়াব কামনা কর না? মুজাহিদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, ——– অর্থাৎ যমীনে চলার পদচিহ্নসমূহ।
১০/৩৪. অধ্যায়ঃ ইশার সালাত জামাতে আদায় করার ফযীলত ।
৬৫৭. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন যে, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ মুনাফিকদের জন্য ফজর ও ইশার সালাত অপেক্ষা অধিক ভারী সালাত আর নেই। এ দু সালাতের কী ফযীলত, তা যদি তারা জানতো, তবে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তারা উপস্থিত হতো। (রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেন) আমি ইচ্ছে করেছিলাম যে, মুয়াজ্জিনকে ইকামত দিতে বলি এবং কাউকে লোকদের ইমামত করিতে বলি, আর আমি নিজে একটি আগুনের মশাল নিয়ে গিয়ে অতঃপর যারা সালাতে আসেনি, তাদের উপর আগুন ধরিয়ে দেই।
১০/৩৫. অধ্যায়ঃ দুজন বা ততোধিক ব্যক্তি হলেই জামাআত ।
৬৫৮. মালিক ইবনু হুওয়াইরিস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ সালাতের সময় হলে তোমাদের দুজনের একজন আযান দিবে এবং ইকামত বলবে। অতঃপর তোমাদের মধ্যে যে বয়সে অধিক বড় সে ইমামাত করিবে।
১০/৩৬. অধ্যায়ঃ মসজিদে সালাতে অপেক্ষমান ব্যক্তি এবং মসজিদের ফযীলত ।
৬৫৯. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যতক্ষণ তার সালাতের স্থানে থাকে তার উযূ ভঙ্গ না হওয়া পর্যন্ত তার জন্য মালাকগণ (ফেরেশতাগণ) এ বলে দুআ করেন যে, হে আল্লাহ! আপনি তাকে ক্ষমা করে দিন, হে আল্লাহ! আপনি তার উপর রহম করুন। আর তোমাদের মাঝে যে ব্যক্তির সালাতই তাকে বাড়ি ফিরে যাওয়া হইতে বিরত রাখে, সে সালাতে রত আছে বলে পরিগণিত হইবে।
৬৬০. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) বলেন, যে দিন আল্লাহর (রহমতের) ছায়া ছাড়া আর কোন ছায়া থাকবে না, সেদিন সাত ব্যক্তিকে আল্লাহ তাআলা তাহাঁর নিজের (আরশের) ছায়ায় আশ্রয় দিবেন। ১. ন্যায়পরায়ণ শাসক, ২. সে যুবক যার জীবন গড়ে উঠেছে তার প্রতিপালকের ইবাদতের মধ্যে, ৩. সে ব্যক্তি যার অন্তর মসজিদের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে, ৪. সে দু ব্যক্তি যারা পরস্পরকে ভালবাসে আল্লাহর ওয়াস্তে, একত্র হয় আল্লাহর জন্য এবং পৃথকও হয় আল্লাহর জন্য, ৫. সে ব্যক্তি যাকে কোনো উচ্চ বংশীয় রূপসী নারী আহবান জানায়, কিন্তু সে এ বলে প্রত্যাখ্যান করে যে, আমি আল্লাহকে ভয় করি, ৬. সে ব্যক্তি যে এমন গোপনে দান করে যে, তার ডান হাত যা খরচ করে বাম হাত তা জানে না, ৭. সে ব্যক্তি যে নির্জনে আল্লাহর যিক্র করে, ফলে তার দু চোখ দিয়ে অশ্রুধারা বইতে থাকে।
৬৬১. হুমাইদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আনাস (রাদি.)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) কি আংটি ব্যবহার করিতেন? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। এক রাতে তিনি ইশার সালাত অর্ধরাত পর্যন্ত বিলম্বে আদায় করিলেন। সালাত শেষ করে আমাদের দিকে মুখ ফিরিয়ে বলিলেন, লোকেরা সালাত আদায় করে ঘুমিয়ে গেছে। কিন্তু তোমরা যতক্ষণ সালাতের জন্য অপেক্ষা করেছ, ততক্ষণ সালাতে রত ছিলে বলে গণ্য করা হয়েছে। আনাস (রাদি.) বলেন, এ সময় আমি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর আংটির উজ্জ্বলতা লক্ষ্য করছিলাম।
১০/৩৭. অধ্যায়ঃ সকাল-সন্ধ্যায় মসজিদে যাবার ফযীলত ।
৬৬২. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সকালে বা সন্ধ্যায় যতবার মসজিদে যায়, আল্লাহ তাআলা তার জন্য জান্নাতে ততবার মেহমানদারীর ব্যবস্থা করে রাখেন।
১০/৩৮. অধ্যায় : ইকামত হয়ে গেলে ফরয ব্যতীত অন্য কোন সালাত নেই ।
৬৬৩. আবদুল্লাহ ইবনু মালিক ইবনু বুহাইনাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) এক ব্যক্তির পাশ দিয়ে গেলেন। অন্য সূত্রে ইমাম বুখারী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আবদুর রহমান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)… হাফ্স ইবনু আসিম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মালিক ইবনু বুহাইনাহ নামক আয্দ গোত্রীয় এক ব্যক্তিকে বলিতে শুনিয়াছি যে, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এক ব্যক্তিকে দু রাকআত সালাত আদায় করিতে দেখলেন। তখন ইকামত হয়ে গেছে। আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) যখন সালাত শেষ করিলেন, লোকেরা সে লোকটিকে ঘিরে ফেলল। আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) তাকে বললেনঃ ফজর কি চার রাকআত? ফজর কি চার রাকআত? [১]
গুনদার ও মুআয (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) শুবা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) সূত্রে হাদীসটি বর্ণিত বলে উল্লেখ করিয়াছেন। কিন্তু ইবনু ইসহাক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) সাদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-এর মাধ্যমে সে হাফ্স (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে হাদীসটি বর্ণনা করিতে গিয়ে আবদুল্লাহ ইবনু বুহাইনাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিত বলে উল্লেখ করিয়াছেন। (এ বর্ণনাটিই সঠিক) তবে হাম্মাদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) সাদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-এর মাধ্যমে তিনি হাফ্স (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে হাদীসটি বর্ণনা করিতে গিয়ে মালিক ইবনু বুহাইনাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিত বলে উল্লেখ করিয়াছেন।
[১] ইকামত হয়ে গেলে কোন নফল সালাত আদায় করা যাবে না। এ সংক্রান্ত হাদীস বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয় অনেকে ইকামত হয়ে যাবার পরও নফল সালাত আদায় করিতে থাকেন। বিশেষ করে ফজরের সালাত চলাকালীন সময়ে অনেককেই দেখা যায় সুন্নাত দু রাকাআত সালাত আদায় করিতে। ফজরের জামাআত চলতে থাকলে ঐ জামাতে শামিল না হয়ে তাড়াহুড়ো করে সুন্নাত পড়ে জামাতে শামিল হওয়া হাদীসের বিরোধিতা করার শামিল । প্রমাণ নিম্নের হাদীসগুলোঃ আবদুল্লাহ ইবনু সারজাস বলেন, এক ব্যক্তি এল। তখন (রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) ফজরের সালাতে ছিলেন। ফলে লোকটি দু রাকআত আদায় করে জামাতে প্রবেশ করিল। (রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) সালাত শেষ করে তাকে বলিলেন, ওহো অমুক! সালাত কোনটি! যেটি আমাদের সঙ্গে আদায় করলে সেটি না যেটি তুমি একা আদায় করলে? (নাসায়ী, মাবসূত ১ম খণ্ড ১০১ পৃষ্ঠা লাহোরী ছাপা) নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন, যখন ফারয সালাতের তাকবীর দেয়া হয়ে যায় তখন ফারয সালাত ব্যতীত অন্য কোন (নফল বা সুন্নাত) সালাত হইবে না। (মুসলিম, মিশকাত ৯৬ পৃষ্ঠা)
হানাফী ইমাম মুহাম্মাদ বলেন, সুন্নাত না আদায় করে জামাতেই ঢুকতে হইবে। (মাবসূত ১ম খণ্ড ১৬৭ পৃষ্ঠা) ফজরের সুন্নাত সালাত ছুটে গেলে ফারয সালাত আদায়ের পর পরই পড়ে নিবে অথবা কোন জরুরী প্রয়োজন থাকলে এ দু রাকআত সালাত সূর্যোদয়ের পরেও পড়তে পারবেন। (তিরমিযী ১ম খণ্ড)
১০/৩৯.অধ্যায়ঃ রোগাক্রান্ত ব্যক্তির কী পরিমাণ রোগাক্রান্ত অবস্থায় জামাতে শামিল হওয়া উচিত ।
৬৬৪. আসওয়াদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমরা আয়েশা (রাদি.)-এর নিকট বসে নিয়মিত সালাত আদায় ও তার মর্যাদা সম্বন্ধে আলোচনা করছিলাম। আয়েশা (রাদি.) বলিলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) যখন অন্তিম রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়লেন, তখন সালাতের সময় হলে আযান দেয়া হলো। তখন তিনি বলিলেন, আবু বক্রকে লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করিতে বল। তাঁকে বলা হলো যে, আবু বকর (রাদি.) অত্যন্ত কোমল হৃদয়ের লোক, তিনি যখন আপনার স্থানে দাঁড়াবেন তখন লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করা তাহাঁর পক্ষে সম্ভব হইবে না। আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) আবার সে কথা বলিলেন এবং তারাও আবার তা-ই বলিলেন। তৃতীয়বারও তিনি সে কথা বলে বলিলেন, তোমরা ইউসুফের সাথীদের মত। আবু বক্রকে নির্দেশ দাও যেন লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করে নেয়। আবু বকর (রাদি.) এগিয়ে গিয়ে সালাত শুরু করিলেন। এদিকে নাবী (সাঃআঃ) নিজেকে একটু হালকাবোধ করিলেন। দুজন লোকের কাঁধে ভর দিয়ে বেরিয়ে এলেন। আয়েশা (রাদি.) বলেন, আমার চোখে এখনও স্পষ্ট ভাসছে। অসুস্থতার কারণে তাহাঁর দুপা মাটির উপর দিয়ে হেঁচড়ে যাচ্ছিল। তখন আবু বকর (রাদি.) পিছনে সরে আসতে চাইলেন। নাবী (সাঃআঃ) তাকে স্বস্থানে থাকার জন্য ইঙ্গিত করিলেন। অতঃপর আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-কে আনা হলো, তিনি আবু বকর (রাদি.)-এর পাশে বসলেন।
আমাশকে জিজ্ঞেস করা হলোঃ তাহলে নাবী (সাঃআঃ) ইমামাত করছিলেন। আর আবু বকর (রাদি.) আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর অনুসরণে সালাত আদায় করছিলেন এবং লোকেরা আবু বকর (রাদি.)-এর সালাতের অনুসরণ করছিল। আমাশ (রাদি.) মাথার ইঙ্গিতে বলিলেন, হ্যাঁ। আবু দাঊদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) শুবা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) সূত্রে আমাশ (রাদি.) হইতে হাদীসের কিয়দংশ উল্লেখ করিয়াছেন। আবু মুআবিয়াহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) অতিরিক্ত বলেছেন, তিনি আবু বকর (রাদি.)-এর বাঁ দিকে বসেছিলেন এবং আবু বকর (রাদি.) দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করছিলেন।
৬৬৫. আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) যখন একেবারে কাতর হয়ে গেলেন এবং তাহাঁর রোগের তীব্রতা বেড়ে গেলো, তখন তিনি আমার ঘরে সেবা-শুশ্রূষার জন্য তাহাঁর অন্যান্য স্ত্রীগণের নিকট সম্মতি চাইলেন। তাঁরা সম্মতি দিলেন। সে সময় দু জন লোকের কাঁধে ভর করে (সালাতের জন্য) তিনি বের হলেন, তাহাঁর দু পা মাটিতে হেঁচড়িয়ে যাচ্ছিল। তিনি ছিলেন আব্বাস (রাদি.) ও অপর এক সাহাবীর মাঝখানে। (বর্ণনাকারী) উবাইদুল্লাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আয়েশা (রাদি.)-এর বর্ণিত এ ঘটনা ইবনু আব্বাস (রাদি.)-এর নিকট ব্যক্ত করি। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করিলেন, তুমি কি জান, তিনি কে ছিলেন, যার নাম আয়েশা (রাদি.) বলেননি? আমি বললাম, না। তিনি বলিলেন, তিনি ছিলেন আলী ইবনু আবু ত্বলিব (রাদি.)।
১০/৪০. অধ্যায়ঃ বৃষ্টি ও ওজরবশত নিজ আবাসস্থলে সালাত আদায়ের অনুমতি ।
৬৬৬. নাফি (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইবনু উমর (রাদি.) একদা তীব্র শীত ও বাতাসের রাতে সালাতের আযান দিলেন। অতঃপর ঘোষণা করিলেন, প্রত্যেকেই নিজ নিজ আবাসস্থলে সালাত আদায় করে নাও, অতঃপর তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) প্রচণ্ড শীত ও বৃষ্টির রাত হলে মুয়াজ্জিনকে এ কথা বলার নির্দেশ দিতেন- “প্রত্যেকে নিজ নিজ আবাসস্থলে সালাত আদায় করে নাও।”
৬৬৭. মাহমুদ ইবনু রাবী আল-আনসারী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইতবান ইবনু মালিক (রাদি.) তাহাঁর নিজ গোত্রের ইমামাত করিতেন। তিনি ছিলেন অন্ধ। একদা তিনি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-কে বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! কখনো কখনো ঘোর অন্ধকার ও বর্ষণ প্রবাহিত হয়ে পড়ে। অথচ আমি একজন অন্ধ ব্যক্তি। হে আল্লাহর রাসুল! আপনি আমার ঘরে কোন এক স্থানে সালাত আদায় করুন যে স্থানটিকে আমার সালাতের স্থান হিসেবে নির্ধারিত করব। অতঃপর আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) তার ঘরে এলেন এবং বললেনঃ আমার সালাত আদায়ের জন্য কোন জায়গাটি তুমি ভাল মনে কর? তিনি ইংগিত করে ঘরের জায়গা দেখিয়ে দিলেন। আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) সে স্থানে সালাত আদায় করিলেন।
১০/৪১. অধ্যায়ঃ যারা উপস্থিত হয়েছে তাদের নিয়েই কি সালাত আদায় করিবে এবং বৃষ্টির দিনে কি জুমুআর খুতবা পড়বে?
৬৬৮. আবদুল্লাহ ইবনু হারিস (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ঝড়-বৃষ্টির দিনে ইবনু আব্বাস (রাদি.) আমাদের উদ্দেশ্য খুতবা দিচ্ছিলেন। মুয়াজ্জিন যখন —– পর্যন্ত পৌঁছল, তখন তিনি তাকে বলিলেন, ঘোষণা করে দাও যে, “সালাত যার যার আবাসস্থলে।” এ শুনে লোকেরা একে অন্যের দিকে তাকাতে লাগলো- যেন তারা বিষয়টাকে অপছন্দ করলো। তিনি তাদের লক্ষ্য করে বলিলেন, মনে হয় তোমরা বিষয়টি অপছন্দ করছ। তবে, আমার চেয়ে যিনি উত্তম ছিলেন অর্থাৎ আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) তিনিই এরূপ করিয়াছেন। একথা সত্য যে, জুমুআর সালাত ওয়াজিব। তবে তোমাদের অসুবিধায় ফেলা আমি পছন্দ করিনা। ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতেও অনুরূপ বর্ণিত আছে। তবে এ সূত্রে এমন উল্লেখ আছে, আমি তোমাদের গুনাহর অভিযোগে ফেলতে পছন্দ করিনা যে, তোমরা হাঁটু পর্যন্ত কাদা মাড়িয়ে আসবে।
৬৬৯. আবু সালামা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবু সাঈদ খুদরী (রাদি.)- কে (লাইলাতুল কাদর সম্পর্কে) জিজ্ঞেস করলে তিনি বলিলেন, এক খণ্ড মেঘ এসে এমনভাবে বর্ষণ শুরু করিল যে, যার ফলে (মসজিদে নাববীর) ছাদ দিয়ে পানি পড়া শুরু হল। কেননা, (তখন মসজিদের) ছাদ ছিল খেজুরের ডালের তৈরি। এমন সময় সালাতের ইকামত দেওয়া হল, আমি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)- কে পানি ও কাদার উপর সিজদা করিতে দেখলাম, এমন কি আমি তাহাঁর কপালেও কাদামাটির চিহ্ন দেখলাম।
৬৭০. আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
এক আনসারী (সাহাবী) আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) কে বলিলেন, আমি আপনার সাথে মসজিদে এসে সালাত আদায় করিতে অপারগ। তিনি ছিলেন মোটা। তিনি নাবী (সাঃআঃ)-এর জন্য কিছু খাবার তৈরি করিলেন এবং তাঁকে বাড়িতে দাওয়াত করে নিয়ে গেলেন। তিনি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-কে এর জন্য একটি চাটাই পেতে দিলেন এবং চাটাইয়ের এক প্রান্তে কিছু পানি ছিটিয়ে দিলেন। নাবী (সাঃআঃ) সে চাটাইয়ের উপর দুরাকআত সালাত আদায় করিলেন। জারূদ গোত্রের এক ব্যক্তি আনাস (রাদি.)-কে জিজ্ঞেস করিল, নাবী কি চাশ্তের নামাজ আদায় করিতেন? তিনি বলিলেন, ঐ দিন ছাড়া আর কোনদিন তাঁকে এ সালাত আদায় করিতে দেখিনি।
১০/৪২. অধ্যায়ঃ খাবার উপস্থিত হবার পর যদি সালাতের ইকামত হয় ।
ইবনু উমর (রাদি.) (সালাতের) পূর্বে রাতের খাবার খেয়ে নিতেন। আবু দারদা (রাদি.) বলেছেন, জ্ঞানীর পরিচয় হল, প্রথমে নিজের প্রয়োজন মেটানো, যাতে নিশ্চিতভাবে সালাতে মনোনিবেশ করিতে পারে।
৬৭১. আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যখন রাতের খাবার উপস্থিত করা হয়, আর সে সময় সালাতের ইকামত হয়ে যায়, তখন প্রথমে খাবার খেয়ে নাও।
৬৭২. আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেনঃ বিকেলের খাবার পরিবেশন করা হলে মাগরিবের সালাতের পূর্বে তা খেয়ে নিবে। খাওয়া রেখে সালাতে তাড়াহুড়া করিবে না।
৬৭৩. ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যখন তোমাদের কারো সামনে রাতের খাবার এসে পড়ে, অপরদিকে সালাতের ইকামত হয়ে যায়। তখন পূর্বে খাবার খেয়ে নিবে। খাওয়া রেখে সালাতে তাড়াহুড়া করিবেনা। [নাফি (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন] ইবনু উমর (রাদি.) এর জন্য খাবার পরিবেশন করা হত, সে সময় সালাতের ইকামত দেওয়া হত, তিনি খাবার শেষ না করে সালাতে আসতেন না। অথচ তিনি ইমামের কিরাআত শুনতে পেতেন।
৬৭৪. ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন খাবার খেতে থাক, তখন সালাতের ইকামত হয়ে গেলেও খাওয়া শেষ না করে তাড়াহুড়া করিবেনা। আবু আবদুল্লাহ ইমাম বুখারী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমাকে ইবরাহীম ইবনু মুনযির (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) এ হাদীসটি ওয়াহব ইবনু উসমান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণনা করিয়াছেন এবং ওয়াহব হলেন মদীনাবাসী।
১০/৪৩. অধ্যায়ঃ খাবার হাতে থাকা অবস্থায় ইমামকে সালাতের দিকে আহবান করলে ।
৬৭৫. আমর ইবনু উমাইয়াহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) কে (বকরীর) সামনের রানের গোশ্ত কেটে খেতে দেখিতে পেলাম, এমনসময় তাঁকে সালাতের জন্য ডাকা হলে তিনি ছুরি রেখে দিয়ে উঠে গেলেন ও নতুন উযূ না করেই সালাত আদায় করিলেন।
১০/৪৪. অধ্যায়ঃ ঘরের কাজ-কর্মে ব্যস্ত থাকা অবস্থায় ইকামত হলে, সালাতের জন্য বের হয়ে যাবে ।
৬৭৬. আসওয়াদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আয়েশা (রাদি.) কে জিজ্ঞেস করলাম, নাবী (সাঃআঃ) ঘরে থাকা অবস্থায় কী করিতেন? তিনি বলিলেন, ঘরের কাজ-কর্মে ব্যস্ত থাকতেন। অর্থাৎ পরিবারবর্গের সহায়তা করিতেন। আর সালাতের সময় হলে সালাতের জন্য চলে যেতেন।
Leave a Reply