অহংকার, বন্ধুত্ব, ক্ষমা, লজ্জা ও ঝগড়া সম্পর্কে হাদিস
অহংকার, বন্ধুত্ব, ক্ষমা, লজ্জা ও ঝগড়া সম্পর্কে হাদিস >> সুনান তিরমিজি শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন
অধ্যায়ঃ ২৫, অনুচ্ছেদঃ (৫১-৬৭)=১৭টি
৫১. অনুচ্ছেদঃ গালিগালাজ প্রসঙ্গে
৫২. অনুচ্ছেদঃ মুসলমানদের গালি দেয়া
৫৩. অনুচ্ছেদঃ উত্তম কথা বলা প্রসঙ্গে
৫৪. অনুচ্ছেদঃ সৎকর্মশীল গোলামের মর্যাদা
৫৫. অনুচ্ছেদঃ মানুষের সাথে সদ্ভাব বজায় রাখা
৫৬. অনুচ্ছেদঃ কু-ধারণা পোষণ
৫৭. অনুচ্ছেদঃ কৌতুক করা
৫৮. অনুচ্ছেদঃ ঝগড়া-বিবাদ প্রসঙ্গে
৬০. অনুচ্ছেদঃ বন্ধুত্ব ও বিদ্বেষ উভয় ক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় রাখা
৬১. অনুচ্ছেদঃ অহংকার প্রসঙ্গে
৬২. অনুচ্ছেদঃ সচ্চরিত্র ও সদাচার
৬৩. অনুচ্ছেদঃ ইহ্সান [অনুগ্রহ] এবং ক্ষমা ও উদারতা প্রদর্শন
৬৪. অনুচ্ছেদঃ ভাইদের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করা
৬৫. অনুচ্ছেদঃ লজ্জা ও সম্ভ্রমবোধ
৬৬. অনুচ্ছেদঃ ধীর-স্থিরতা ও তাড়াহুড়া
৬৭. অনুচ্ছেদঃ নম্রতা প্রসঙ্গে
৫১. অনুচ্ছেদঃ গালিগালাজ প্রসঙ্গে
১৯৮১. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ দুইজন লোক একে অপরকে গালি দেয়ার অপরাধ প্রথমে গালি প্রদানকারীর উপর এসে পড়ে, যতক্ষন পর্যন্ত নির্যাতিত ব্যক্তি [দ্বিতীয় ব্যক্তি] সীমালংঘন না করে।
সহীহ, মুসলিম। সাদ, ইবনি মাসউদ ও আবদুল্লাহ ইবনি মুগাফফাল [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৯৮২. যিয়াদ ইবনি ইলাকা [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, মুগীরা ইবনি শুবা [রাদি.]-কে আমি বলিতে শুনিয়াছি, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মৃত ব্যক্তিদেরকে তোমরা গালি দিও না, [যদি দাও] তাহলে জীবিতদেরই কষ্ট দিলে।
সহীহ, রাওয [৩৫৭] , তালীকুর রাগীব [৪/১৩৫] , সহীহাহ [২৩৭৯]। আবু ঈসা বলেন, এই হাদীসটি বর্ণনায় সুফিয়ানের শাগরিদগণ দ্বিমত পোষণ করিয়াছেন। তাহাদের কেউ কেউ আল-হাফারীর রিওয়ায়াতের অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন অনেকে বলেছেন, সুফিয়ান-যিয়াদ ইবনি ইলাকা হইতে বর্ণনা করিয়াছেন যে, তিনি বলেন, আমি এক ব্যক্তিকে মুগীরা ইবনি শুবার নিকট [রাদি.] -রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সূত্রে একইরকম হাদীস বর্ণনা করিতে শুনিয়াছি। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫২. অনুচ্ছেদঃ মুসলমানদের গালি দেয়া
১৯৮৩. আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুসলমানকে গালি দেয়া ফাসিকী ও নাফারমানীমূলক কাজ এবং তাকে মেরে ফেলা বা তার বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করা কুফরীমূলক কাজ।
সহীহ, ইবনি মা-জাহ [৬৯] , বুখারী ও মূসলিম। অধঃস্তন বর্ণনাকারী যুবাইদ বলেন, আবু ওয়াইলকে আমি প্রশ্ন করলাম, আপনি এ হাদীসটি কি আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.]-এর নিকট শুনেছেন? তিনি বলেন, হ্যাঁ। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি সহিহ। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩. অনুচ্ছেদঃ উত্তম কথা বলা প্রসঙ্গে
১৯৮৪. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ জান্নাতের মধ্যে একটি বালাখানা [প্রাসাদ] আছে। এর ভিতর হইতে বাইরের এবং বাহির হইতে ভিতরের দৃশ্য দেখা যায়। এক বিদুঈন [গ্রাম্যলোক] দাঁড়িয়ে বলিল, হে আল্লাহ্র রাসূল [সাঃআঃ] ! এই বালাখানা কোন ব্যক্তির জন্য? তিনি বললেনঃ যে লোক মানুষের সাথে উত্তমভাবে কথা বলে, ক্ষুধার্তকে খাদ্য দেয়, সর্বদা রোযা পালন করে এবং মানুষ যখন রাতে ঘুমিয়ে থাকে তখন আল্লাহ্ তাআলার উদ্দেশ্যে নামাজ আদায় করে তার জন্য।
হাসান, মিশকাত [২৩৩৫] , তালীকুর রাগীব [২/৪৬]। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। আমরা এ হাদীস প্রসঙ্গে শুধুমাত্র আবদূর রাহমান ইবনি ইসহাকের সূত্রেই জেনেছি। এই আবদূর রাহমানের স্মরণশক্তি সম্পর্কে কোন কোন হাদীস বিশারদ সমালোচনা করিয়াছেন। তিনি কূফার বাসিন্দা। আর আবদূর রাহমান ইবনি ইসহাক আল-কুরাশী একজন মাদীনার অধিবাসী। তিনি পূর্বোক্তজনের চাইতে বেশি বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য। তারা উভয়ে ছিলেন সমসাময়িক। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস
৫৪. অনুচ্ছেদঃ সৎকর্মশীল গোলামের মর্যাদা
১৯৮৫. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ সেই লোক কতইনা উত্তম যে নিজের প্রভুরও আনুগত্য করে এবং নিজের মনিবের হকও আদায় করে অর্থাৎ গোলাম।
সহীহ, তালীকুর রাগীব [৩/১৫৯] , বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ।কাব [রাদি.] বলেন, আল্লাহ্ ও তার রাসূল সত্যিই বলেছেন। এ অনুচ্ছেদে আবু মূসা ও ইবনি উমার [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৯৮৬. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তিন ব্যক্তি কিয়ামাতের দিন কস্তরীর টিলার উপর থাকিবে। [এক] যে ক্রীতদাস আল্লাহ্ তাআলার হাকও আদায় করে এবং মনিবের হাকও আদায় করে, [দুই] যে ইমামের উপর তার মুসল্লিগণ সন্তুষ্ট এবং [তিন] যে ব্যক্তি দিনে ও রাতে পাঁচবার নামাযের জন্য আহ্বান জানায়।
যঈফ, মিশকাত [৬৬৬]। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। সুফিয়ান হইতে আবুল ইয়াকজান-এর সূত্রেই শুধু আমরা এ হাদীস প্রসঙ্গে জেনেছি। আবুল ইয়াকজানের নাম উসমান ইবনি কাইস, মতান্তরে ইবনি উমাইর এবং এটাই প্রসিদ্ধ। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
৫৫. অনুচ্ছেদঃ মানুষের সাথে সদ্ভাব বজায় রাখা
১৯৮৭. আবু যার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] আমাকে বলেছেনঃ তুমি যেখানেই থাক আল্লাহ্ তাআলাকে ভয় কর, মন্দ কাজের পরপরই ভাল কাজ কর, তাতে মন্দ দূরীভূত হয়ে যাবে এবং মানুষের সাথে উত্তম আচরণ কর।
হাসান, মিশকাত [৫০৮৩] , রাওযুন নাযীর [৮৫৫] আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। মাহমুদ ইবনি গাইলান-আবু আহমদ হইতে, তিনি আবু নুআইম হইতে, তিনি সুাফিয়ান হইতে, তিনি হাবীব [রঃ] হইতে এই সূত্রে একইরকম বর্ণনা করিয়াছেন। মাহমূদ-ওয়াকী হইতে, তিনি সুফিয়ান হইতে, তিনি হাবীব ইবনি আবি সাবিত হইতে, তিনি মাইমুন ইবনি আবী শাবীব হইতে, তিনি মুআয ইবনি জাবাল [রাদি.] হইতে, তিনি রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] হইতে একইরকম বর্ণনা করিয়াছেন। মাহ্মূদ বলেন আবু যার [রাদি.]-এর হাদীসটি সহিহ। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস
৫৬. অনুচ্ছেদঃ কু-ধারণা পোষণ
১৯৮৮. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মন্দ ধারণা পোষণ করা হইতে তোমরা দূরে থাক। কেননা, মন্দ ধারণা হলো সবচেয়ে বড় মিথ্যা কথা।
সহীহ, গাইয়াতুল মারাম [৪১৭] , বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। সুফিয়ান বলেন ধারণা-অনুমান দুই প্রকারে বিভক্ত এক প্রকার ধারনা পাপের অন্তর্ভুক্ত এবং অন্য প্রকার ধারণা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত নয়। অন্তরে কাল্পনিক ধারণা পোষণ করে মুখে তা প্রকাশ করা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত। যদি মনে মনে ধারণা পোষণ করা হয় এবং তা মুখে প্রকাশ না করা হয় তাহলে তা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত নয়। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৭. অনুচ্ছেদঃ কৌতুক করা
১৯৮৯. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] আমাদের [ছোটদের] সাথে মিশতেন। এমনকি আমার ছোট ভাইটিকে তিনি কৌতুক করে বলিতেনঃ হে আবু উমাইর! কি করেছে নুগাইর [ছোট পোষা পাখি]।
সহীহ, বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। ৩৩৩ নং হাদীস পূর্বে বর্ণিত হয়েছে. হান্নাদ-ওয়াকী হইতে, তিনি শুবা হইতে, তিনি আবুত তাইয়্যাহ হইতে, তিনি আনাস [রাদি.] হইতে এইরকম বর্ণনা করিয়াছেন। আবুত তাইয়্যাহ্-এর নাম ইয়াযীদ, পিতা হুমাইদ আয-যুবাই। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৯৯০. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, সাহাবীগণ বলেন, হে আল্লাহ্র রাসূল [সাঃআঃ] ! আপনিতো আমাদের সাথে কৌতুকও করে থাকেন। তিনি বললেনঃ আমি শুধু সত্য কথাই বলে থাকি [এমনকি কৌতুকেও]।
সহীহ, সহীহাহ্ [১৭২৬] , মুখতাসার শামা-ইল [২০২]। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৯৯১. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট একজন লোক আরোহণযোগ্য একটি বাহন চাইল। তিনি বললেনঃ একটি উষ্ট্রীর বাচ্চায় আমি তোমাকে আরোহণ করাব। সে বলিল, হে আল্লাহ্র রাসূল [সাঃআঃ] ! আমি উষ্ট্রীয় বাচ্চা দিয়ে কি করব? রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ উষ্ট্রী ব্যতীত আর কোন কিছু কি উট প্রসব করে?
সহীহ্, মিশকাত [৪৮৮৬] , মুখতাসার শামা-ইল [২০৩]। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ গারীব। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৯৯২. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
।নাবী [সাঃআঃ] তাকে “হে দুই কান বিশিষ্ট” বলে সম্বোধন করেন।
সহীহ, মুখতাসার শামা-ইল [২০০] আবু উসামা বলেন, তিনি কৌতুক হিসাবে তা বলিতেন। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি সহিহ গারীব। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৮. অনুচ্ছেদঃ ঝগড়া-বিবাদ প্রসঙ্গে
১৯৯৩. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি বাতিল ও জঘন্য মিথ্যা বলা ছেড়ে দিল, তার জন্য জান্নাতের মধ্যে এক পাশে প্রাসাদ নির্মাণ করা হয়। যে ব্যক্তি ন্যায়ানুগ হওয়া সত্ত্বেও ঝগড়া-বিবাদ ছেড়ে দিল, তার জন্য জান্নাতের মাঝখানে একটি প্রাসাদ নির্মাণ করা হয়। যে ব্যক্তি নিজের চরিত্র উন্নত করে তার জন্য জান্নাতের সর্বোচ্চ জায়গাতে একটি প্রাসাদ নির্মাণ করা হয়।
ঝগড়া সম্পর্কে হাদিস-এই শব্দে হাদীসটি যঈফ, ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[৫১]। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
১৯৯৪. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ঝগড়াটে হওয়াই তোমার পাপিষ্ট হওয়ার জন্য যথেষ্ঠ।
যঝগড়া সম্পর্কে হাদিস-ঈফ, যঈফা [৪০৯৬]। আবু ঈসা বলেছেন, এ হাদীসটি গারীব। শুধু উপরোক্ত সূত্রেই আমরা এ হাদীস জেনেছি। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
১৯৯৫. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমার ভাইয়ের সাথে ঝগড়া করো না, তাকে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করো না এবং তার সাথে এরূপ ওয়াদা করো না যা তুমি পরে ভেঙ্গে ফেলবে।
ঝগড়া সম্পর্কে হাদিস-যঈফ, মিশকাত, তাহকীক ছানী [৪৮৯২]। আবু ঈসা বলেনঃ উল্লেখিত সনদসূত্রে এ হাদীসটি গারীব। আমার মতে আব্দুল মালিক হলেন ইবনি বাশীর। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
৫৯. অনু্চ্ছেদঃ কোমল ধরনের আচরণ
১৯৯৬. আইশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর সাথে দেখা করার জন্য একজন লোক অনুমতি চাইলো। আমি সে সময় তাহাঁর সামনে উপস্থিত ছিলাম। তিনি বললেনঃ গোত্রের মধ্যে এই লোকটি অথবা গোত্রের এই ভাই কতই না মন্দ! তারপর তিনি তাকে ভিতরে প্রবেশের সম্মতি প্রদান করিলেন এবং তার সাথে নম্র ভাষায় কথা বলিলেন। লোকটি চলে যাওয়ার পর আমি তাকে বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল [সাঃআঃ] ! আপনি প্রথম অবস্থায় তার ব্যাপারে এইে এই কথা বলিলেন, তারপর তার সাথে নম্র ভাষায় কথা বলিলেন! তিনি বলিলেন, হে আইশা! মানুষের মধ্যে সেই ব্যক্তি সবচেয়ে নিকৃষ্ট, যার অশালীন আচরণ হইতে মুক্তির জন্য জনগণ তাকে পরিত্যাগ করে।
সহীহ, সহীহাহ [১০৪৯] , মুখতাসা শামা-ইল [৩০১] , বুখারী, মুসলিম। আবু ঈসা বলেন এ হাদীসটি হাসান সহিহ। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৬০. অনুচ্ছেদঃ বন্ধুত্ব ও বিদ্বেষ উভয় ক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় রাখা
১৯৯৭. . আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
[মুহাম্মাদ ইবনি সীরীন বলেন] আমার অনুমান যে, তিনি এটা মারফূভাবে বর্ণনা করিয়াছেন [অর্থাৎ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর বাণী স্বরূপ বর্ণনা করিয়াছেন]। তিনি বলেছেনঃ নিজের বন্ধুর সাথে ভালবাসার আধিক্য প্রদর্শন করিবে না। হয়ত সে একদিন তোমার শত্রু হয়ে যাবে। তোমার শত্রুর সাথেও শত্রুতার চরম সীমা প্রদর্শন করিবে না। হয়ত সে একদিন তোমার বন্ধু হয়ে যাবে।
সহীহ, গাইয়াতুল মারাম [৪৭২]। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। আমরা তা উল্লেখিত সনদসূত্রে এভাবেই জেনেছি। এ হাদীসটি আইয়্যূব [রঃ] হইতে ভিন্ন সনদেও বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান ইবনি আবু জাফর আলী [রাদি.]-এর সূত্রে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। কিন্তু এটি দুর্বল। সহীহ্ হলো আলী [রাদি.] হইতে মাওকূফ বর্ণনাটি। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৬১. অনুচ্ছেদঃ অহংকার প্রসঙ্গে
১৯৯৮. আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ সরিষার দানা সমপরিমাণ অহংকারও [সামান্যতম] যার অন্তরে আছে সে জান্নাতে যেতে পারবে না। আর সরিষার দানা সমপরিমান ঈমানও যার অন্তরে আছে সে জাহান্নামে যাবে না।
সহীহ, তাখরীজ ইসলাহুল মাসা-জিদ [১১৫] , মুসলিম। আবু হুরাইরা, ইবনি আব্বাস, সালামা ইবনিল আকওয়া ও আবু সাঈদ [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৯৯৯. আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তির অন্তরে অণু পরিমাণ অহংকারও আছে সে জান্নাতে যেতে পারবে না। আর যে ব্যক্তির অন্তরে অণু পরিমাণ ঈমানও আছে সে জাহান্নামে যাবে না। তখন একজন বলিল, আমার নিকট এটা তো খুবই পছন্দনীয় যে, আমার জামা-কাপড় সুন্দর হোক এবং আমার জুতা জোড়াও সুন্দর হোক। তিনি বললেনঃ আল্লাহ্ তাআলা অবশ্যই সৌন্দর্যকে পছন্দ করেন। কোন ব্যক্তির সদর্পে সত্যকে প্রত্যাখ্যান করা এবং মানুষকে তুচ্ছজ্ঞান করাই হলো অহংকার।
সহীহ, সহীহাহ্ [১৬২৬] , মুসলিম। “যে ব্যক্তির অন্তরে অণু পরিমাণ ঈমানও আছে সে ব্যক্তি জাহান্নামে যাবে না” শীর্ষক হাদীসের ব্যখ্যায় একদল মুহাদ্দিস বলেন, সে জাহান্নামে স্থায়ী হইবে না [আযাবের পর মুক্তি পাবে]। আবু সাঈদ খুদরী [রাদি.]-এর সূত্রে নাবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেছেনঃ “যার অন্তরে অনুপরিমাণ ঈমানও আছে তাকে জাহান্নাম হইতে বের করা হইবে”। “হে আমাদের প্রভু! তুমি যে ব্যক্তিকে জাহান্নামে দাখিল করাবে তাকে তুমি অপমান করলে” শীর্ষক আয়াতের ব্যাখ্যায় একদল তাবিঈ বলেন, যে ব্যক্তিকে তুমি চিরস্থায়ী জাহান্নামী করলে তাকে তুমি চরম অপমানিত করলে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ গারীব। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২০০০. সালামা ইবনিল আকওয়া [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি নিজেকে বড় বলে ভাবতে ভাবতে এমন এক পর্যায়ে নিয়ে যায় শেষ পর্যন্ত সে অহংকারীদের তালিকাভুক্ত হয়ে যায়। ফলে অহংকারীদের যে পরিণতি হয় তারও তাই হয়।
যঈফ, যঈফা [১৯১৪]। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
২০০১. নাফি ইবনি জুবাইর ইবনি মুতঈম [রাদি.] হইতে তার পিতার সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ
তিনি [যুবাইর] বলেন, তোমরা বলে থাক আমার মধ্যে অহংকার রয়েছে। অথচ আমি গাধায় আরোহণ করি, চাদর পরিধান এবং ছাগলের দুধ দোহন করি। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে এ কাজগুলো করে তার মধ্যে সামান্যতম অহংকারও নেই।
সনদ সহীহ। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ গারীব। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৬২. অনুচ্ছেদঃ সচ্চরিত্র ও সদাচার
২০০২. আবুদ দারদা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কিয়ামাত দিবসে মুমিনের দাঁড়িপাল্লায় সচ্চরিত্র ও সদাচারের চেয়ে বেশি ওজনের আর কোন জিনিস হইবে না। কেননা, আল্লাহ্ তাআলা অশ্লীল ও কটুভাষীকে ঘৃণা করেন।
সহীহ, সহীহাহ্ [৮৭৬] , রাওযুন নাযীর [৯৪১]। আবু ঈসা বলেন, আইশা, আবু হুরাইরা, আনাস ও উসামা ইবনি শারীক [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহিহ। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২০০৩. আবুদ দারদা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ সচ্চরিত্র ও সদাচারই দাঁড়িপাল্লায় মধ্যে সবচাইতে ভারী হইবে। সচ্চরিত্রবান ও সদাচারি ব্যক্তি তার সদাচার ও চারিত্রিক মাধুর্য দ্বারা অবশ্যই রোযাদার ও নামাযীর পর্যায়ে পৌছে যায়।
সহীহ, প্রাগুক্ত। আবু ঈসা বলেন, উল্লেখিত সনদসূত্রে এ হাদীসটি গারীব। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২০০৪. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে প্রশ্ন করা হলো, কোন কর্মটি সবচাইতে বেশি পরিমাণ মানুষকে জান্নাতে নিয়ে যাবে। তিনি বললেনঃ আল্লাহ্ভীতি, সদাচার ও উত্তম চরিত্র। আবার তাঁকে প্রশ্ন করা হলো, কোন কাজটি সবচাইতে বেশি পরিমাণ মানুষকে জাহান্নামে নিয়ে যাবে। তিনি বললেনঃ মুখ ও লজ্জাস্থান।
সনদ, হাসান। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি সহীহ গারীব। আবদুল্লাহ ইবনি ইদরীস হলেন ইবনি ইয়াযীদ ইবনি আবদুর রাহমান আল-আওদী। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস
২০০৫. আবদুল্লাহ ইবনিল মুবারাক [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ
সদাচার ও উত্তম চরিত্রের বর্ণনা দিতে গিয়ে আবদুল্লাহ ইবনিল মুবারাক [রঃ] বলেন, তা হলো হাস্যোজ্জ্বল চেহারা, উত্তম জিনিস দান করা এবং কষ্ট দেয়া হইতে বিরত থাকা।
সনদ সহীহ। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৬৩. অনুচ্ছেদঃ ইহ্সান [অনুগ্রহ] এবং ক্ষমা ও উদারতা প্রদর্শন
২০০৬. আবুল আহ্ওয়াস [রঃ] হইতে তার বাবা হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল [সাঃআঃ] ! আমি কোন লোককে অতিক্রম করি, সে আমাকে পানাহার করায় না, মেহমানদারীও করে না। যদি ঐ লোকটি আমাকে অতিক্রম করে, আমি কি একইভাবে তার প্রতিশোধ গ্রহণ করিতে পারি? তিনি বললেনঃ না, তুমি তার মেহমানদারী কর। [বর্ণনাকারী বলেন] আমাকে খুবই পুরাতন পোশাক পরে থাকতে দেখে তিনি প্রশ্ন করলেনঃ তোমার ধন-দৌলত আছে কি? আমি বললাম, আল্লাহ্ তাআলা আমাকে উট, ছাগল-ভেড়া প্রভৃতি সকল প্রকার সম্পদই দিয়েছেন। তিনি বললেঃ তা তোমার শরীরে পরিলক্ষিত হওয়া উচিত।
সহীহ, গাইয়াতুল মারাম [৭৫] , সহীহাহ্ [১৩২০]। আবু ঈসা বলেন, আইশা, জাবির ও আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহিহ। আবুল আহ্ওয়াসের নাম আওফ, পিতা মালিক ইবনি নাযলা আল-জুশামী। “ইক্রিহি্” অর্থ তাকে আতিথ্য প্রদর্শন কর। “আল-কিরা” অর্থ “আতিথেয়তা”। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২০০৭. হুযাইফা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমার অনুকরণপ্রিয় হয়ো না যে, তোমরা এরূপ বলবেঃ লোকরা যদি আমাদের সাথে ভাল ব্যবহার করে তাহলে আমরাও ভাল ব্যবহার করব। যদি তারা আমাদের সাথে যুলুম করে তাহলে আমরাও যুলুম করব। বরং তোমরা নিজেদের অন্তরে এ কথা বদ্ধমূল করে নাও যে, লোকেরা তোমাদের সাথে ভাল ব্যবহার করলে তোমরাও ভাল ব্যবহার করিবে। তারা তোমাদের সাথে অন্যায় ব্যবহার করলেও তোমরা যুলুমের পথ বেছে নিবে না।
যঈফ, নাকদুল কাত্তানী [২৬] মিশকাত [৫১২৯], আবু ঈসা বলেছেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। শুধু উল্লেখিত সদনসূত্রেই আমরা এটা জেনেছি। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
৬৪. অনুচ্ছেদঃ ভাইদের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করা
২০০৮. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লা্হু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ যে লোক আল্লাহ্ তাআলার সন্তুষ্টি হাসিলের আশায় কোন অসুস্থ লোককে দেখিতে যায় অথবা নিজের ভাইয়ের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করিতে যায়, একজন ঘোষক [ফেরেশতা] তাকে ডেকে বলিতে থাকেনঃ কল্যাণময় তোমার জীবন, কল্যাণময় তোমার এই পথ চলাও। তুমি তো জান্নাতের মধ্যে একটি বাসস্থান নির্দিষ্ট করে নিলে।
হাসান, মিশকাত [৫০১৫]। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। আবু সিনানের নাম ঈসা ইবনি সিনান। হাম্মাদ ইবনি সালামা-সাবিত হইতে, তিনি আবু রাফি হইতে, তিনি আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে, তিনি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে এইরকম কিছু বর্ণনা করিয়াছেন। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস
৬৫. অনুচ্ছেদঃ লজ্জা ও সম্ভ্রমবোধ
২০০৯. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ লজ্জা-সম্ভ্রম হচ্ছে ঈমানের অঙ্গ, আর ঈমানের [ঈমানদারের] জায়গা জান্নাতে। নির্লজ্জতা ও অসভ্যতা হচ্ছে দুর্ব্যবহারের অঙ্গ, আর দুর্ব্যবহারের [দুর্ব্যবহারকারীর] জায়গা জাহান্নামে।
সহীহ, সহীহাহ্ [৪৯৫] , রাওযুস নাযীর [৭৪৬]। আবু ঈসা বলেন, ইবনি উমার, আবু বাক্রা, আবু উমামা ও ইমরান ইবনি হুসাইন [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহিহ। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৬৬. অনুচ্ছেদঃ ধীর-স্থিরতা ও তাড়াহুড়া
২০১০. আবদুল্লাহ ইবনি সারজিস আল-মুযানী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ উত্তম আচরণ, দৃঢ়তা-স্থিরতা ও মধ্যমপন্থা অবলম্বন করা হচ্ছে নাবুওয়াতের চব্বিশ ভাগের একভাগ।
হাসান, রাওযুন নাযীর [৩৮৪] , তালীকুর রাগীব [৩/৬]। আবু ঈসা বলেন, ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান গারীব। কুতাইবা-নূহ ইবনি কাইস হইতে, তিনি আবদুল্লাহ ইবনি ইমরান হইতে, তিনি আবদুল্লাহ ইবনি সারজিস [রাদি.] হইতে, তিনি রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম] হইতে [উপরের হাদীসের] একইরকম বর্ণনা করিয়াছেন। এই সূত্রটিতে আসিমের উল্লেখ নেই। কিন্তু নাসর ইবনি আলীর হাদীসটিই সহিহ। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস
২০১১. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আবদুল কাইস বংশের প্রতিনিধি দলের নেতা আশাজ্জকে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমাদের মধ্যে এরুপ দুটি গুন রয়েছে যা আল্লাহ্ তাআলা অধিক পছন্দ করেনঃ সহিষ্ণুতা ও স্থিরতা।
সহীহ, ইবনি মা-জাহ [৪১৮৮] , মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব। আশাজ্জ আল-আসারী [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২০১২. সাহল ইবনি সাদ আস-সায়িদী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ধৈর্য ও স্থিরতা আল্লাহ্ তাআলার পক্ষ হইতে, আর তাড়াহুড়া শাইতানের পক্ষ হইতে।
যঈফ, মিশকাত, তাহকীক ছানী [৫০৫৫] আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। একদল হাদীস বিশারদ আবদুল মুহাইমিনের সমালোচনা করিয়াছেন। তারা বলেছেন, তার স্মৃতিশক্তি দুর্বল। আল-আশাজ্জ-এর নাম আল-মুনযির, পিতা আয়িয। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
৬৭. অনুচ্ছেদঃ নম্রতা প্রসঙ্গে
২০১৩. আবুদ দারদা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তিকে নমনীয়তার অংশ দেয়া হয়েছে তাকে কল্যাণের অংশ দেয়া হয়েছে। নমনীয়তার অংশ হইতে যে ব্যক্তিকে বঞ্চিত করা হয়েছে তাকে কল্যাণের অংশ হইতে বঞ্চিত করা হয়েছে।
সহীহ, সহীহাহ্ [৫১৫, ৮৭৪]। আবু ঈসা বলেন, আইশা, জারীর ইবনি আবদুল্লাহ ও আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহিহ। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
Leave a Reply