দুনিয়াবি ইলম , অভিশাপ, মুমিন, সম্পদ, দান, ধনি দরিদ্র
দুনিয়াবি ইলম , অভিশাপ, মুমিন, সম্পদ, দান, ধনি দরিদ্র >> সুনান তিরমিজি শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন
অধ্যায়ঃ ৩৪, অনুচ্ছেদঃ (১৩-৪৪)=৩২টি
১৩. অনুচ্ছেদঃ আল্লাহ্ তাআলার নিকট পৃথিবীর মূল্যহীনতা ও তুচ্ছতা
১৪. অনুচ্ছেদঃ দুনিয়া অভিশপ্ত
১৫. অনুচ্ছেদঃ একই বিষয়
১৬. অনুচ্ছেদঃ দুনিয়া মুমিনদের জন্য কারাগার এবং কাফিরদের জন্য জান্নাত
১৭. অনুচ্ছেদঃ দুনিয়ার দৃষ্টান্ত চারজন লোকের অনুরূপ
১৮. অনুচ্ছেদঃ দুনিয়ার চিন্তা ও পার্থিব মোহ
১৯. অনুচ্ছেদঃ একজন খাদিম ও একটি পরিবহনই যথেষ্ট
২০. অনুচ্ছেদঃ সম্পদ দুনিয়ামুখী করে
২১. অনুচ্ছেদঃ ঈমানদারের দীর্ঘায়ু
২২. অনুচ্ছেদঃ দীর্ঘ জীবন ও সুন্দর আমলের অধিকারী ব্যক্তি সর্বোত্তম
২৩. অনুচ্ছেদঃ এ উম্মাতের গড় আয়ু ষাট ও সত্তরের মাঝামাঝি হইবে
২৪. অনুচ্ছেদঃ যামানা নিকটবর্তী হয়ে যাবে এবং আশা-আকাঙক্ষা হ্রাস পাবে
২৫. অনুচ্ছেদঃ পার্থিব আশা-আকাঙ্ক্ষা কম করা
২৬. অনুচ্ছেদঃ এই উম্মাতের লোক ধন-সম্পদের পরীক্ষায় নিপতিত হইবে
২৭. অনুচ্ছেদঃ কারো নিকট দুই উপত্যকা পরিমাণ সম্পদ থাকলেও সে তৃতীয়টি কামনা করিবে
২৮. অনুচ্ছেদঃ দুটি বস্তুর কামনায় বৃদ্ধের অন্তরও যুবকে পরিণত হয়
২৯. অনুচ্ছেদঃ দুনিয়ার প্রতি অনাসক্তি
৩০. অনুচ্ছেদঃ বাসস্থান, বস্ত্র, খাদ্য ও পানীয়ের অধিকার
৩১. অনুচ্ছেদঃ দান-খাইরাত ও ভোগ-ব্যবহারকৃত সম্পদ
৩২. অনুচ্ছেদঃ গ্রহীতার হাত হইতে দাতার হাত উত্তম
৩৩. অনুচ্ছেদঃ আল্লাহ্ তাআলার উপর পুরোপরি নির্ভরশীল হওয়া
৩৪. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি সপরিবারে নিরাপদে ভোরে উপনীত হয়
৩৫. অনুচ্ছেদঃ প্রয়োজনের ন্যূনতম পরিমাণে সন্তুষ্ট থাকা এবং ধৈর্য ধারণ করা
৩৭. অনুচ্ছেদঃ ধনীদের পূর্বে দরিদ্র মুহাজিরগণ জান্নাতে প্রবেশ করবেন
৩৮. অনুচ্ছেদঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] ও তাহাঁর পরিবারের আর্থিক অবস্থা
৩৯. অনুচ্ছেদঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাহাবীদের জীবন-যাপন
৪০. অনুচ্ছেদঃ মনের ঐশ্বর্যই আসল ঐশ্বর্য
৪১. অনুচ্ছেদঃ নিজের সম্পদ গ্রহণ করা
৪২. অনুচ্ছেদঃ দিরহাম ও দীনারের দাসগণ অভিশপ্ত
৪৩. অনুচ্ছেদঃ সম্পদ ও প্রতিপত্তির মোহ মানুষকে পথভ্রষ্ট করে
৪৪. অনুচ্ছেদঃ পার্থিব জীবন ছায়ার মতো ক্ষণস্থায়ী
১৩. অনুচ্ছেদঃ আল্লাহ্ তাআলার নিকট পৃথিবীর মূল্যহীনতা ও তুচ্ছতা
২৩২০. সাহল ইবনি সাদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহ্ তাআলার নিকট যদি এই পৃথিবীর মূল্য মশার একটি পাখার সমানো হত তাহলে তিনি কোন কাফিরকে এখানকার পানির এক ঢোকও পান করাতেন না।
সহীহ্ , সহীহাহ্ [৯৪০]।আবু ঈসা বলেন, আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি সহীহ্ এবং উপরোক্ত সূত্রে গারীব।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩২১. মুসতাওরিদ ইবনি শাদ্দাদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি আরোহীদলের সাথে ছিলাম, যারা রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে একটি মৃত ছাগল ছানার পাশে এসে দাঁড়ান। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] প্রশ্ন করিলেন, তোমরা কি মনে কর, তার মনিবের নিকট এটা নিকৃষ্ট ও মূল্যহীন হওয়ায় সে তা নিক্ষেপ করেছে? তারা বলিল, হে আল্লাহ্র রাসূল [সাঃআঃ]! এটা মূল্যহীন হওয়ার কারণে তারা ফেলে দিয়েছে। তিনি বললেনঃ তার মনিবের নিকট এটা যতটুকু মূল্যহীন, আল্লাহ্ তাআলার নিকট পৃথিবীটা এর চেয়েও অধিক মূল্যহীন ও নিকৃষ্ট।
সহীহ্ , ইবনি মা-জাহ [৪১১১]।আবু ঈসা বলেন, জাবির ও ইবনি উমার [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। মুস্তাওরিদ [রাদি.] বর্ণিত হাদীসটি হাসান গারীব।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৪. অনুচ্ছেদঃ দুনিয়া অভিশপ্ত
২৩২২. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি ঃ দুনিয়া ও তার মাঝের সকলকিছুই অভিশপ্ত, কিন্তু আল্লাহ্ তাআলার যিকির ও তার সাথে সংগতিপূর্ণ অন্যান্য আমল, আলিম ও ইলম অন্বেষণকারী এর ব্যতিক্রম।
হাসান , ইবনি মা-জাহ [৪১১২]।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস
১৫. অনুচ্ছেদঃ একই বিষয়
২৩২৩. বানূ ফিহ্রের মুসতাওরিদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলু্ল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ দুনিয়া আখিরাতের তুলনায় এতটুকু, যেমন তোমাদের কেউ সমুদ্রের পানিতে তার একটি আঙ্গুল ডুবিয়ে তুলে আনল। সে দেখুক তার আঙ্গুল কতটুকু পানি নিয়ে ফিরেছে।
সহীহ্ , ইবনি মা-জাহ [৪১০৮], মুসলিম।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। ইসমাঈল ইবনি আবু খালিদের উপনাম আবু আবদুল্লাহ। কাইসের পিতা আবু হাযিম, তার নাম আব্দ ইবনি আওফ, তিনি সাহাবী।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৬. অনুচ্ছেদঃ দুনিয়া মুমিনদের জন্য কারাগার এবং কাফিরদের জন্য জান্নাত
২৩২৪. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ দুনিয়া [পার্থিব জীবন] মুমিনদের জন্য কারাগারস্বরূপ এবং কাফিরদের জন্য জান্নাতস্বরূপ।
সহীহ্ , মুসলিম [৮/২১০]।আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৭. অনুচ্ছেদঃ দুনিয়ার দৃষ্টান্ত চারজন লোকের অনুরূপ
২৩২৫. আবু কাবশা আল-আনমারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেন ঃ আমি তিনটি বিষয়ে শপথ করছি এবং সেগুলোর ব্যাপারে তোমাদেরকে বলছি। তোমরা এগুলো মনে রাখবে। তিনি বলেন, দান-খাইরাত করলে কোন বান্দার সম্পদ হ্রাস পায় না। কোন বান্দার উপর যুলুম করা হলে এবং সে তাতে ধৈর্য ধারণ করলে আল্লাহ্ তাআলা অবশ্যই তার সম্মান বাড়িয়ে দেন। কোন বান্দাহ ভিক্ষার দরজা খুললে অবশ্যই আল্লাহ্ তাআলাও তার অভাবের দরজা খুলে দেন অথবা তিনি অনুরূপ কথা বলেছেন। আমি তোমাদেরকে একটি কথা বলছি, তোমরা তা মুখস্থ রাখবে। তারপর তিনি বলেনঃ চার প্রকার মানুষের জন্য এই পৃথিবী। আল্লাহ্ তাআলা যে বান্দাহকে ধন-সম্পদ ও ইল্ম [জ্ঞান] দিয়েছেন, আর সে এই ক্ষেত্রে তার প্রভুকে ভয় করে, এর সাহায্যে আত্মীয়দের সাথে সৌজন্যমূলক ব্যবহার করে এবং এতে আল্লাহ্ তাআলারও হক আছে বলে সে জানে, সেই বান্দার মর্যাদা সর্বোচ্চ। আরেক বান্দাহ, যাকে আল্লাহ্ তাআলা ইল্ম দিয়েছেন কিন্তু ধন-সম্পদ দেননি সে সৎ নিয়্যাতের [সংকল্পের] অধিকারী। সে বলে, আমার ধন-সম্পদ থাকলে আমি অমুক অমুক ভালো কাজ করতাম। এই ধরনের লোকের মর্যাদা তার নিয়্যাত মুতাবিক নির্ধারিত হইবে। এ দুজনেরই সাওয়াব সমান সমান হইবে। আরেক বান্দাহ, আল্লাহ্ তাআলা তাকে ধন-সম্পদ প্রদান করিয়াছেন কিন্তু ইল্ম দান করেননি। আর সে ইল্মহীন [জ্ঞানহীন] হওয়ার কারণে তার সম্পদ স্বীয় প্রবৃত্তির চাহিদা মতো ব্যয় করে। সে ব্যক্তি এ বিষয়ে তার রবকেও ভয় করে না এবং আত্মীয়দের সাথে সৌজন্যমূলক ব্যবহারও করে না। আর এতে যে আল্লাহ্ তাআলার হক রয়েছে তাও সে জানে না। এই লোক সর্বাধিক নিকৃষ্ট স্তরের লোক। অপর এক বান্দাহ, যাকে আল্লাহ্ তাআলা ধন-সম্পদও দান করেননি, ইল্মও দান করেননি। সে বলে, আমার যদি ধন-সম্পদ থাকত তাহলে আমি অমুক অমুক ব্যক্তির ন্যায় [প্রবৃত্তির বাসনামতো] কাজ করতাম। তার নিয়্যাত মুতাবিক তার স্থান নির্ধারিত হইবে। অতএব, এদের দুজনের পাপ হইবে সমান সমান।
সহীহ্ , ইবনি মা-জাহ [৪২২৮]।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৮. অনুচ্ছেদঃ দুনিয়ার চিন্তা ও পার্থিব মোহ
২৩২৬. আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কেউ যদি অভাব-অনটনে পড়ে তা মানুষের নিকট উপস্থাপন করে তাহলে তার অভাব-অনটন দূর হইবে না। আর যে ব্যক্তি অভাব-অনটনে পড়ে তা আল্লাহ্ তাআলার নিকট উপস্থাপন করে তবে অবশ্যই আল্লাহ্ তাআলা তাকে দ্রুত অথবা বিলম্বে রিযিক দান করেন।
তাকে দ্রুত মৃত্যু দেন অথবা দ্রুত ধনশালী করেন এই অর্থে হাদীসটি সহীহ্ , সহীহ্ আবু দাঊদ [১৪৫২], সহীহাহ্ [২৭৮৭]।আবু ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ্ গারীব।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৯. অনুচ্ছেদঃ একজন খাদিম ও একটি পরিবহনই যথেষ্ট
২৩২৭. আবু ওয়াইল [রাহঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, কোন একদিন রোগাক্রান্ত আবু হাশিম ইবনি উতবাকে মুআবিয়া [রাদি.] দেখিতে আসেন। তাকে তিনি প্রশ্ন করেন, হে মামা! আপনি কেন কাঁদছেন? রোগযাতনা আপনাকে অস্থির করে তুলেছে, নাকি দুনিয়ার লোভ? তিনি বলিলেন, এ দুটির কোনটিই নয়। [বরং আমার কান্নার কারণ এই যে,] আমার কাছ থেকে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] একটি ওয়াদা নিয়েছিলেন, কিন্তু আমি তা বাস্তবায়িত করিতে পারিনি। তিনি বলেছিলেন, সম্পদের ক্ষেত্রে একটি খাদিম ও আল্লাহ্ তাআলার পথে [যুদ্ধ করার] একটি জন্তুযান, এতটুকুই তোমার জন্য যথেষ্ট। অথচ আমি এখন দেখিতে পাচ্ছি যে, আমি অনেক সম্পদ জমা করে ফেলেছি।
যাইদা ও উবাইদাহ্ ইবনি হুমাইদ এই হাদীসটি মানসূর হইতে, তিনি আবু ওয়াইল হইতে, তিনি সামুরা ইবনি সাহম [রাহঃ]-এর সূত্রে একইরকম বর্ণনা করিয়াছেন। আবু ঈসা বলেন, এ অনুচ্ছেদে বুরাইদা আল-আসলামী [রাদি.] হইতেও রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর হাদীস বর্ণিত আছে।হাসান , ইবনি মা-জাহ [৪১০৩]।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস
২০. অনুচ্ছেদঃ সম্পদ দুনিয়ামুখী করে
২৩২৮. আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা [অযাচিত] পার্থিব সম্পদ গ্রহণ করো না। কেননা, এর দ্বারা তোমরা দুনিয়ার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়বে।
সহীহ্ , সহীহাহ্ [১২]।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২১. অনুচ্ছেদঃ ঈমানদারের দীর্ঘায়ু
২৩২৯. আবদুল্লাহ ইবনি বুস্র [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
কোন এক গ্রাম্য লোক প্রশ্ন করিল, হে আল্লাহ্র রাসূল [সাঃআঃ]! মানুষের মধ্যে শ্রেষ্ঠ কে? তিনি বললেনঃ যে দীর্ঘ জীবন লাভ করেছে এবং তার কর্মকান্ড সুন্দর হয়েছে।
সহীহ্ , সহীহাহ্ [১৮৩৬], মিশকাত, তাহকীক ছানী [৫২৮৫], আর রাওয [৯২৬]।আবু হুরাইরা ও জাবির [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান এবং এই সনদে গারীব।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২২. অনুচ্ছেদঃ দীর্ঘ জীবন ও সুন্দর আমলের অধিকারী ব্যক্তি সর্বোত্তম
২৩৩০. আবু বাকর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, কোন এক ব্যক্তি প্রশ্ন করিল, হে আল্লাহ্র রাসূল [সাঃআঃ]! উত্তম ব্যক্তি কে? তিনি বললেনঃ যে দীর্ঘ জীবন পেয়েছে এবং তার আমল সুন্দর হয়েছে। সে আবার প্রশ্ন করিল, মানুষের মধ্যে কে নিকৃষ্ট? তিনি বললেনঃ যে দীর্ঘ জীবন পেয়েছে এবং তার আমল খারাপ হয়েছে।
পূর্বের হাদীসের সহায়তায় সহিহ।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩. অনুচ্ছেদঃ এ উম্মাতের গড় আয়ু ষাট ও সত্তরের মাঝামাঝি হইবে
২৩৩১. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমার উম্মাতের [গড়] আয়ু ষাট হইতে সত্তর বছর হইবে।
আমার উম্মাতের বয়স ষাট ও সত্তরের মাঝামাঝি এই অর্থে হাদীসটি হাসান সহীহ্ ৩৩১৩ নং পরবর্তীতে বর্ণনা আসবে। ইবনি মা-জাহ [৪২৩৬]।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান এবং আবু সালিহ্-আবু হুরাইরা [রাদি.]-এর সূত্রে গারীব। আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে একাধিক সূত্রে এ হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান সহীহ
২৪. অনুচ্ছেদঃ যামানা নিকটবর্তী হয়ে যাবে এবং আশা-আকাঙক্ষা হ্রাস পাবে
২৩৩২. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যামানা পরস্পর নিকটবর্তী [সংকীর্ণ] না হওয়া পর্যন্ত কিয়ামাত সংঘটিত হইবে না। তখন একবছর হইবে একমাসের মতো, একমাস হইবে এক সপ্তাহের মতো, এক সপ্তাহ হইবে একদিনের মতো, একদিন হইবে এক ঘন্টার মত এবং এক ঘন্টা হইবে প্রজ্বলিত আগুনের একটি স্ফুলিংগের মতো।
সহীহ্ , মিশকাত, তাহকীক ছানী [৫৪৪৮]।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি এই সূত্রে গারীব। সাদ ইবনি সাঈদ হলেন ইয়াহ্ইয়া ইবনি সাঈদের ভাই।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৫. অনুচ্ছেদঃ পার্থিব আশা-আকাঙ্ক্ষা কম করা
২৩৩৩. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমার শরীর স্পর্শ করে বললেনঃ পৃথিবীতে এমনভাবে দিনযাপন কর, যেন তুমি একজন প্রবাসী অথবা পথচারী মুসাফির। তুমি নিজেকে কবরবাসীদের অন্তর্ভূক্ত মনে কর। মুজাহিদ [রাহঃ] বলেন, ইবনি উমার [রাদি.] আমাকে বললেনঃ তুমি সকালে উপনীত হয়ে বিকালের জন্য নিজেকে অস্তিত্ববান মনে করো না এবং বিকালে উপনীত হয়ে সকালের জন্য নিজেকে অস্তিত্ববান মনে করো না। অসুস্থ হওয়ার পূর্বে তোমার সুস্থতার এবং মৃত্যুর পূর্বে তোমার জীবনের সুযোগকে কাজে লাগাও। কেননা, হে আল্লাহ্র বান্দা! তুমি তো জান না, আগামীকাল তুমি কি নামে অভিহিত হইবে।
সহীহ্ , সহীহাহ্ [১১৫৭], বুখারী।“তুমি নিজেকে কবরবাসী মনে কর এবং তুমি তো জাননা” এই অংশ ব্যতীত।
আবু ঈসা বলেন, আমাশ-মুজাহিদ হইতে, তিনি ইবনি উমার [রাদি.]-এর সূত্রে এই হাদীসটি একইরকম বর্ণনা করিয়াছেন। আহ্মাদ ইবনি আবদা আয-যাব্বী-বাসরী-হাম্মাদ ইবনি যাইদ হইতে, তিনি লাইস হইতে, তিনি মুজাহিদ হইতে, তিনি ইবনি উমার [রাদি.] হইতে, তিনি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে এই সূত্রে উপরোক্ত হাদীসের মতো বর্ণনা করিয়াছেন।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৩৪. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর হাত ঘাড়ের পিছনে স্থাপন করিলেন, তারপর তা প্রসারিত করে বললেনঃ এই হলো আদম সন্তান, আর এটা হলো তার আয়ু। তিনি তারপর তিনবার বললেনঃ আর এই হলো তার আশা-আকাঙ্ক্ষা।
সহীহ্ , ইবনি মা-জাহ [৪২৩২], বুখারী অনুরূপ।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। আবু সাঈদ [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৩৫. আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, কোন একদিন রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের সম্মুখ দিয়ে যাচ্ছিলেন। আমরা তখন আমাদের একটি কুঁড়েঘর মেরামত করছিলাম। তিনি প্রশ্ন করিলেন, এটা কি করছ? আমরা বললাম, এটা নড়বড়ে হয়ে গেছে, তা ঠিকঠাক করছি। তিনি বললেনঃ আমি তো দেখিতে পাচ্ছি সেই ব্যাপারটি [মৃত্যু] এর চেয়েও দ্রুত এসে যাচ্ছে।
সহীহ্ , মিশকাত, তাহকীক ছানী [৫২৭৫]।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। আবুস সাফারের নাম সাঈদ ইবনি ইউহমিদ, তিনি ইবনি আহ্মাদ আস-সাওরী বলেও কথিত।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৬. অনুচ্ছেদঃ এই উম্মাতের লোক ধন-সম্পদের পরীক্ষায় নিপতিত হইবে
২৩৩৬. কাব ইবনি ইয়ায [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি ঃ প্রত্যেক উম্মাতের জন্য কোন না কোন ফিত্না রয়েছে। আর আমার উম্মাতের ফিত্না হলো ধন-সম্পদ।
সহীহ্ , সহীহাহ্ [৫৯৪]।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ গারীব। আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র মুআবিয়া ইবনি সালিহ [রাহঃ]-এর সূত্রে জেনেছি।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৭. অনুচ্ছেদঃ কারো নিকট দুই উপত্যকা পরিমাণ সম্পদ থাকলেও সে তৃতীয়টি কামনা করিবে
২৩৩৭. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন আদম-সন্তানের অধীনে যদি দুই উপত্যকা ভর্তি স্বর্ণ থাকে তবুও সে তৃতীয় একটি স্বর্ণভর্তি উপত্যকা অর্জনের ইচ্ছা করিবে। মাটি ব্যতীত অন্য কিছুই তার মুখ ভর্তি করিতে পারবে না। যে লোক ত্বাওবাহ করে আল্লাহ্ তাআলা তার ত্বাওবাহ ক্ববূল করেন।
সহীহ্ , তাখরীজ মুশকিলাতুল ফাকরি [১৪], বুখারী, মুসলিম।উবাই ইবনি কাব, আবু সাঈদ, আইশা, ইবনিয যুবাইর, আবু ওয়াকিদ, জাবির, ইবনি আব্বাস ও আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ এবং এই সূত্রে গারীব।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৮. অনুচ্ছেদঃ দুটি বস্তুর কামনায় বৃদ্ধের অন্তরও যুবকে পরিণত হয়
২৩৩৮. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ দুটি বস্তুর কামনায় বৃদ্ধের অন্তরও যুবক থাকে ঃ দীর্ঘ জীবন ও সম্পদের প্রাচুর্য।
হাসান সহীহ্ , ইবনি মা-জাহ [৪২৩৩], মুসলিম।আনাস [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান সহীহ
২৩৩৯. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আদম সন্তান বৃদ্ধ হয়ে যায়; কিন্তু দুটি ব্যাপারে যুবকই থাকে ঃ বেঁচে থাকার লোভ এবং সম্পদের মোহ।
সহীহ্ , ইবনি মা-জাহ।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৯. অনুচ্ছেদঃ দুনিয়ার প্রতি অনাসক্তি
২৩৪০. আবু যার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ হালাল বস্তুকে হারাম করে নেয়া এবং ধন-সম্পদ ধ্বংস করার নাম দুনিয়ার প্রতি অনাসক্তি [যুহ্দ] নয়, বরং দুনিয়ার প্রতি অনাসক্তি হলঃ আল্লাহ্ তাআলার নিকটে যা আছে তার চাইতে তোমার হাতে যা আছে তার উপর বেশী নির্ভরশীল না হওয়া এবং তুমি কোন বিপদে পড়লে তার বিনিময়ে সাওয়াবের আশার তুলনায় বিপদে না পড়াটা তোমার নিকট অধিকতর কাঙ্ক্ষিত না হওয়া।
খুবই দুর্বল, ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[৪১০০]আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধুমাত্র উপরোক্ত সনদেই হাদীসটি জেনেছি। আবু ইদরীস আল-খাওলানীর নাম আয়িযুল্লাহ, পিতা আব্দুল্লাহ। আমর ইবনি ওয়াকিদ একজন প্রত্যাখ্যাত রাবী।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ খুবই দুর্বল
৩০. অনুচ্ছেদঃ বাসস্থান, বস্ত্র, খাদ্য ও পানীয়ের অধিকার
২৩৪১. উসমান ইবনি আফফান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ মানুষের জন্য এই কয়টি বস্তু ছাড়া আর কোন অধিকার নেইঃ তার বসবাসের জন্য একটি ঘর ও লজ্জা নিবারণের জন্য প্রয়োজনীয় কাপড় এবং এক টুকরা রুটি ও পানি।
যঈফ, যঈফা [১০৬৩], না কদুল কাত্তানী [পৃঃ ২২]আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। এটি হল আল-হুরাইস ইবনিস সায়িবের রিওয়ায়াত। [তিনি আরও বলেন] আমি আবু দাঊদ সুলাইমান ইবনি সালম আল-বালখীকে বলিতে শুনিয়াছি, আন-নাযর ইবনি শুমাইল বলেন, জিলফুল খুব্য এমন রুটি যার সাথে তরকারী নেই।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
৩১. অনুচ্ছেদঃ দান-খাইরাত ও ভোগ-ব্যবহারকৃত সম্পদ
২৩৪২. মুতাররিফ [রাহঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তার বাবার সূত্রে বর্ণিত আছে, তিনি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট গেলেন। তখন তিনি বলছিলেন ঃ
يَقُولُ ابْنُ آدَمَ مَالِي مَالِي وَهَلْ لَكَ مِنْ مَالِكَ إِلاَّ مَا تَصَدَّقْتَ فَأَمْضَيْتَ أَوْ أَكَلْتَ فَأَفْنَيْتَ أَوْ لَبِسْتَ فَأَبْلَيْتَ
“সম্পদের প্রাচুর্যের মোহ তোমাদেরকে [আল্লাহ্ তাআলা হইতে] উদাসীন করে ফেলেছে” [সুরা ঃ তাকাসুর-১]। তিনি আরো বললেনঃ মানুষ বলে, আমার মাল, আমার সম্পদ। কিন্তু তুমি দান-খাইরাত করে যা [আল্লাহ্ তাআলার খাতায়] জমা রেখেছ, খেয়ে যা শেষ করেছ এবং পরিধান করে যা পুরানো করেছ এগুলো ব্যতীত তোমার সম্পদ বলিতে আর কিছু নেই। আর-বি
সহীহ্ , মুসলিম।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩২. অনুচ্ছেদঃ গ্রহীতার হাত হইতে দাতার হাত উত্তম
২৩৪৩. আবু উমামা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ হে আদম সন্তান! তোমার প্রয়োজনাতিরিক্ত সম্পদ যদি তুমি [সৎকাজে] খরচ করে ফেল তাহলে তা তোমার জন্য কল্যাণকর। কিন্তু তুমি যদি তা গচ্ছিত রাখ তাহলে তা তোমার জন্য অকল্যাণকর। তোমার প্রয়োজন পরিমান সম্পদ জমা রাখলে তাতে কোন দোষারোপ করা হইবে না। আর তোমার পোষ্যদের হইতেই [দান-খাইরাত] আরম্ভ কর। নীচের হাত হইতে উপরের হাত উত্তম।
সহীহ্ , ইরওয়া [৩/৩১৮], মুসলিম।. আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। শাদ্দাদ ইবনি আবদুল্লাহ্র উপনাম আবু আম্মার।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩. অনুচ্ছেদঃ আল্লাহ্ তাআলার উপর পুরোপরি নির্ভরশীল হওয়া
২৩৪৪. উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা যদি প্রকৃতভাবেই আল্লাহ্ তাআলার উপর নির্ভরশীল হইতে তাহলে পাখিদের যেভাবে রিযিক দেয়া হয় সেভাবে তোমাদেরকেও রিযিক দেয়া হতো। এরা সকালবেলা খালি পেটে বের হয় এবং সন্ধ্যা বেলায় ভরা পেটে ফিরে আসে।
সহীহ্ , ইবনি মা-জাহ [৪১৬৪]।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। আমরা এই হাদীসটি শুধুমাত্র উপরোক্ত সূত্রেই জেনেছি। আবু তামীম আল-জাইশানীর নাম আবদুল্লাহ ইবনি মালিক।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৪৫. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ]-এর যুগে দুই ভাই ছিল। তাহাদের একজন রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর দরবারে উপস্থিত থাকত এবং অন্যজন আয়-উপার্জনে লিপ্ত থাকত। কোন একদিন রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট সেই উপার্জনকারী ভাই তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করিল। তিনি তাকে বললেনঃ হয়তো তার ওয়াসীলায় তুমি রিযিকপ্রাপ্ত হচ্ছ।
সহীহ্ , মিশকাত [৫৩০৮], সহীহাহ্ [২৭৬৯]।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ গারীব।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৪. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি সপরিবারে নিরাপদে ভোরে উপনীত হয়
২৩৪৬. উবাইদুল্লাহ ইবনি মিহসান আল-খিত্মী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে যে লোক পরিবার-পরিজনসহ নিরাপদে সকালে উপনীত হয়, সুস্থ শরীরে দিনাতিপাত করে এবং তার নিকট সারা দিনের খোরাকী থাকে তবে তার জন্য যেন গোটা দুনিয়াটাই একত্র করা হলো।
হাসান , ইবনি মা-জাহ [৪১৪১]।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ গারীব। আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র মারওয়ান ইবনি মুআবিয়ার সূত্রেই জেনেছি। হীযাত অর্থ একত্র করা হলো। মুহাম্মাদ ইবনি ইসমাঈল-হুমাইদী হইতে, তিনি মারওয়ান ইবনি মুআবিয়া হইতে উপরোক্ত হাদীসের মতো হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। আবুদ দারদা [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস
৩৫. অনুচ্ছেদঃ প্রয়োজনের ন্যূনতম পরিমাণে সন্তুষ্ট থাকা এবং ধৈর্য ধারণ করা
২৩৪৭. আবু উমামা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ আমার বন্ধুদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী ঈর্ষনীয় হল সেই মুমিন ব্যক্তি যার অবস্থা খুবই হালকা [স্বল্প সম্পদ এবং পরিবারের সদস্য সংখ্যাও কম] এবং যে নামাযে মনোযোগী, সুচারুরূপে তার প্রভুর ইবাদাত করে, একান্ত নিভৃতেও তাহাঁর অনুগত থাকে, মানুষের মাঝে অখ্যাত, তার দিকে অংগুলি সংকেত করা হয় না, আর ন্যূনতম প্রয়োজন মাফিক তার রিযিক এবং তাতেই ধৈর্য ধারণকারী। তারপর রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর দুই হাতের ইংগিতে বলেনঃ শীঘ্রই তার মৃত্যু হয়, তার জন্য ক্রন্দনকারীর সংখ্যাও কম, তার রেখে যাওয়া সম্পদও খুব সামান্য।
যঈফ, মিশকাত, তাহকীক ছানী [৫১৮৯],
একই সনদসূত্রে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ আমার রব আমার নিকট মক্কার বাতহা অর্থাৎ কংকরময় এলাকা আমার জন্য স্বর্ণে পরিণত করার প্রস্তাব করেন। আমি বললাম, হে আমার রব! প্রয়োজন নেই, বরং আমি একদিন তৃপ্তির সাথে খাবো আর একদিন ক্ষুধার্ত থাকব। একই কথা তিনি তিনবার বা তদ্রূপ বলিলেন। যখন ক্ষুধার্ত থাকব তখন বিনীতভাবে তোমার নিকটে প্রার্থনা করব ও তোমাকেই মনে করব এবং যখন তৃপ্তির সাথে খাবো তখন তোমার শুকরিয়া আদায় করব ও তোমার প্রশংসা করব।
যইফ, মিশকাত, তাহকীক ছানী [৫১৯০],আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। এ অনুচ্ছেদে ফাযালা ইবনি উবাইদ হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আল-কাসিম [রাদি.] তিনি আবদুর রহমানের পুত্র এবং উপনাম আবু আবদির রহমান, মতান্তরে আবু আবদিল মালিক। তিনি আবদুর রহমান ইবনি খালিদ ইবনে ইয়াযিদ ইবনে মুআবিয়ার মুক্তদাস। তিনি সিরিয়ার অধিবাসী এবং বিশ্বস্ত রাবী। আর আলী ইবনি ইয়াযীদ হাদীস শাস্ত্রে দুর্বল এবং তার উপনাম আবু আবদিল মালিক।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
২৩৪৮. আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে লোক ইসলাম ক্ববূল করেছে, এবং তার নিকট নূন্যতম রিযিক রহিয়াছে এবং তাকে আল্লাহ্ তাআলা অল্পে তুষ্ট থাকার তাওফীক দিয়েছেন, সে-ই সফলকাম হলো।
সহীহ্ , ইবনি মা-জাহ [৪১৩৮]।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৪৯. ফাযালা ইবনি উবাইদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেন ঃ সেই ব্যক্তি কতই না সৌভাগ্যবান যাকে ইসলামের পথে হিদায়াত দান করা হয়েছে এবং তার জীবিকা ন্যূনতম প্রয়োজন মাফিক এবং সে তাতেই খুশি।
সহীহ্ , তালীকুর রাগীব [২/১১], সহীহাহ্ [১৫০৬]।আবু হানীর নাম হুমাইদ ইবনি হানী। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৭. অনুচ্ছেদঃ ধনীদের পূর্বে দরিদ্র মুহাজিরগণ জান্নাতে প্রবেশ করবেন
২৩৫১. আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ দরিদ্র মুহাজিরগণ তাহাদের সম্পদশালীদের চেয়ে পাঁচশত বছর পূর্বে জান্নাতে প্রবেশ করিবে।
সহীহ্ , ইবনি মা-জাহ [৪১২৩]।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৫২. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] [দুআ করে] বলেনঃ হে আল্লাহ্! তুমি আমাকে দরিদ্র অবস্থায় বাঁচিয়ে রাখ, দরিদ্র থাকাবস্থায় মৃত্যু দিও এবং কিয়ামাত দিবসে দরিদ্রদের দলভুক্ত করে হাশর করো। [একথা শুনে] আইশা [রাদি.] বলেন, হে আল্লাহ্র রাসূল [সাঃআঃ]! কেন এরূপ বলছেন? তিনি বললেনঃ হে আইশা! তারা তো তাহাদের সম্পদশালীদের চেয়ে চল্লিশ বছর পূর্বে জান্নাতে প্রবেশ করিবে। হে আইশা! তুমি যাঞ্চাকারী দরিদ্রকে ফিরিয়ে দিও না। যদি দেয়ার মতো কিছু তোমার নিকট না থাকে, তাহলে একটি খেজুরের টুকরা হলেও তাকে দিও। হে আইশা! তুমি দরিদ্রদের ভালোবাসবে এবং তাহাদেরকে তোমার সান্নিধ্যে রাখবে। তাহলে কিয়ামাতের দিন আল্লাহ্ তাআলা তোমাকে তাহাঁর সান্নিধ্যে রাখবেন।
সহীহ্ , ইবনি মা-জাহ [৪১২৬]।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৫৩. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ দরিদ্রগণ সম্পদশালীদের চেয়ে পাঁচশত বছর পূর্বে জান্নাতে যাবে। আর তা হলো [আখিরাতের] অর্ধদিনের সমান।
হাসান সহীহ্ , ইবনি মা-জাহ [৪১২২]।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান সহীহ
২৩৫৪. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ দরিদ্র মুসলমানগণ জান্নাতে যাবে সম্পদশালীদের চেয়ে অর্ধদিন পূর্বে। এই অর্ধদিন হলো পাঁচ শত বছরের সমান।
হাসান সহীহ্ , দেখুন হাদীস নং ২৩৫৩।এ হাদীসটি সহিহ।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান সহীহ
২৩৫৫. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ দরিদ্র মুসলমানগণ তাহাদের সম্পদশালীদের চেয়ে চল্লিশ বছর পূর্বে জান্নাতে যাবে।
দরিদ্র মুহাজিরগণ এই শব্দে হাদীসটি সহীহ্ , মুসলিম [৮/২২০]।
আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৮. অনুচ্ছেদঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] ও তাহাঁর পরিবারের আর্থিক অবস্থা
২৩৫৬. মাসরূক [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ কোন এক সময় আমি আয়িশা [রাদি.]-এর নিকটে গেলাম। তিনি আমার জন্য খাবার আনালেন। পরে তিনি বললেনঃ আমি যখনি পেট পুরে খাবার খাই তখনি আমি কাঁদতে চাইলে কাঁদতে পারি। আমি প্রশ্ন করলাম, তা কেন? তিনি বললেনঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] যে অবস্থায় দুনিয়া হইতে বিদায় নিয়েছেন সে কথা মনে পড়ে। আল্লাহ্ তাআলার শপথ! তিনি কোন দিনই দুবার গোশত ও রুটি দ্বারা পেট ভরে খেতে পাননি।
যঈফ, তালীকুর রাগীব ৪/১০৯, মুখতাসার শামায়িল ১২৮আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
২৩৫৭. আইশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত এক নাগাড়ে দুইদিন যবের রুটি পেট ভরে খেতে পাননি।
সহীহ্ , মুখতাসার শামা-ইল [১২৩], মুসলিম।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৫৮. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] ও তাহাঁর পরিবার এই দুনিয়া ছেড়ে যাওয়ার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত কখনো এক নাগাড়ে তিনদিন পেট ভরে গমের রুটি খেতে পাননি।
সহীহ্ , ইবনি মা-জাহ [৩৩৪৩], বুখারী, মুসলিম।আবু ঈসা বলেন, এই হাদীসটি সহীহ্ হাসান এবং উক্ত সূত্রে গারীব।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৫৯. সুলাইম ইবনি আমির [রাহঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি আবু উমামা [রাদি.]-কে বলিতে শুনিয়াছি, নাবী [সাঃআঃ]-এর ঘরে কখনো যবের রুটিও অতিরিক্ত হতো না।
সহীহ্ , মুখতাসার শামাইল [১২৪], তালীকুর রাগীব [৪/১১০]।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ এবং উক্ত সূত্রে গারীব। এই ইয়াহ্ইয়া ইবনি আবু বুকাইর হলেন কূফাবাসী এবং আবু বুকাইর তার পিতা। তার সূত্রে সুফিয়ান সাওরী হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। আর ইয়াহ্ইয়া ইবনি আবদুল্লাহ ইবনি বুকাইর হলেন মিসরবাসী এবং তিনি লাইস ইবনি সাদের ছাত্র।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৬০. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] ও তাহাঁর পরিবার-পরিজন একাধারে কয়েক রাত ক্ষুধার্ত অবস্থায় কাটিয়ে দিতেন। তাহাদের জন্য রাতের খাবার জুটত না। আর বেশিরভাগ সময় যবের রুটিই ছিল তাহাদের খাদ্য।
হাসান , ইবনি মা-জাহ [২৩৪৭]।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস
২৩৬১. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এই দুআ করেন ঃ
اللَّهُمَّ اجْعَلْ رِزْقَ آلِ مُحَمَّدٍ قُوتًا
হে আল্লাহ্! মুহাম্মাদের পরিবারের জন্য শুধুমাত্র জীবন ধারণোপযোগী [পরিমাণ] রিযিকের ব্যবস্থা করুন।
সহীহ্ , ইবনি মা-জাহ [৪১৩৬], বুখারী, মুসলিম।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৬২. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আগামী দিনের জন্য কোন কিছু সঞ্চয় করে রাখতেন না।
সহীহ্ , মুখতাসার শাখাইল [৩০৪], তালীকুর রাগীব [২/৪২]।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। এ হাদীসটি জাফর ইবনি সুলাইমান হইতে সাবিতের সূত্রে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে মুরসাল হিসাবেও বর্ণিত হয়েছে।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৬৩. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কখনো টেবিলে খাবার খাননি এবং কখনো পাতলা রুটিও খাননি।
সহীহ্ , ইবনি মা-জাহ [৩২৯২, ৩২৯৩], বুখারী।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ এবং সাঈদ ইবনি আবু আরূবার রিওয়ায়াত হিসাবে গারীব।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৬৪. সাহল ইবনি সাদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তাকে প্রশ্ন করা হলো, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কখনো ময়দার রুটি খেয়েছেন কি? সাহ্ল [রাদি.] বলিলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আল্লাহ্ তাআলার সাথে সাক্ষাৎ [মৃত্যু] হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত কখনো ময়দা দেখেননি। তাকে আবার প্রশ্ন করা হলো, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর যুগে আপনাদের নিকট কি কোন চালুনি ছিল? তিনি বলিলেন, আমাদের কোন চালুনি ছিল না। আবার প্রশ্ন করা হলো, তাহলে যব নিয়ে আপনারা কি করিতেন? তিনি বলিলেন, আমরা তাতে ফুঁ দিতাম, ফলে যা উড়ে যাওয়ার তা উড়ে যেত, তারপর তাতে পানি ঢেলে খামির তৈরি করতাম।
সহীহ্ , ইবনি মা-জাহ [৩৩৩৫], বুখারী।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। এ হাদীসটি আবু হাযিম [রাহঃ]-এর সূত্রে মালিক ইবনি আনাস [রাহঃ] বর্ণনা করিয়াছেন।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৯. অনুচ্ছেদঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাহাবীদের জীবন-যাপন
২৩৬৫. কাইস [রাহঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, সাদ ইবনি আবী ওয়াক্কাস [রাদি.]-কে আমি বলিতে শুনিয়াছি ঃ আমিই প্রথম ব্যক্তি যে আল্লাহ্ তাআলার পথে রক্ত ঝরিয়েছে এবং আমিই প্রথম ব্যক্তি যে আল্লাহ্ তাআলার রাস্তায় তীর ছুড়েছে। আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাহাবীদের সাথে এক যুদ্ধাভিযানে যোগদান করি। তখন খাবারের জন্য আমরা গাছের পাতা ও বাবলা গাছের ফল ব্যতিত আর কিছুই পাইনি। ফলে আমাদের এক একজন ছাগল ও উটের বিষ্ঠার ন্যায় পায়খানা করত। কিন্তু বর্তমানে আসাদ বংশের জনগণ দ্বীনের ব্যাপারে আমাকে তিরস্কার করছে। তাহলে তো আমি ব্যর্থ হলাম এবং আমার সব আমলও বাতিল হয়ে গেল।
সহীহ্ , মুখতাসার শামাইল [১১৪], বুখারী, মুসলিম।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। তবে এটি বাইয়ানের বর্ণনা সূত্রে গারীব।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৬৬. কাইস [রাহঃ] হইতে বর্ণীতঃ
সাদ ইবনি মালিক [রাদি.]-কে আমি বলিতে শুনিয়াছি, আরবের মধ্যে আমিই প্রথম ব্যক্তি যে আল্লাহ্ তাআলার পথে তীর নিক্ষেপ করেছে। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে আমরা নিজেরা জিহাদ করেছি। তখন খাবারের জন্য বাবলা গাছের ফল আর বুনো জাম ছাড়া আমাদের সাথে আর কিছু ছিল না। আমাদের এক একজন তা খেয়ে ছাগলের বিষ্ঠার ন্যায় পায়খানা করত। অথচ বর্তমানে আসাদ বংশের জনগণ ধর্মের ব্যাপারে আমাকে তিরস্কার করছে। তাই যদি হয়, তাহলে তো আমি ব্যর্থ হয়েছি এবং আমার আমলও বিনষ্ট হয়ে গেল।
সহীহ্ , দেখুন পূর্বের হাদীস।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। উতবা ইবনি গাযওয়ান [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৬৭. মুহাম্মাদ ইবনি সীরীন [রাহঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, কোন একদিন আমরা আবু হুরাইরা [রাদি.]-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। তিনি গোলাপী রংয়ের দুটি কাতান কাপড় পড়ে ছিলেন। তিনি একটি কাপড় দিয়ে নাক পরিষ্কার করিলেন এবং বলিলেন, বেশ, বেশ, আবু হুরাইরা আজ কাতান কাপড় দিয়ে নাক পরিষ্কার করছে! অথচ আমার অবস্থা এরূপ ছিল যে, আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর মিম্বার ও আইশা [রাদি.]-এর ঘরের মাঝখানে ক্ষুধার তাড়নায় কাতর হয়ে পড়ে থাকতাম। এ পথে কেউ এসে আমার ঘাড়ের উপর পা রাখত এবং মনে করত যে, আমি পাগল হয়ে গেছি। অথচ আমার মধ্যে কোন পাগলামী ছিল না, বরং ক্ষুধার যন্ত্রণায় আমার এরূপ অবস্থা হতো।
সহীহ্ , বুখারী [৭৩২৪]।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ এবং এই সূত্রে গারীব।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৬৮. ফাযালা ইবনি উবাইদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন লোকদের সাথে নিয়ে জামাআতে নামায় আদায় করিতেন, তখন কিছু লোক অসহনীয় ক্ষুধার যন্ত্রনায় নামাযের মধ্যেই দাঁড়ানো অবস্থা হইতে পড়ে যেতেন। তারা ছিলেন সুফ্ফার সদস্য। তাহাদের এ অবস্থা দেখে বেদুঈনরা বলত, এরা পাগল নাকি। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] নামাজ শেষ করে তাহাদের দিকে মুখ ফিরিয়ে বলিতেন ঃ আল্লাহ্ তাআলার নিকট তোমাদের যে কি মর্যাদা রয়েছে তা তোমরা জানলে আরো ক্ষুধার্ত, আরো অভাব-অনটনে থাকতে পছন্দ করিতে। ফাযালা [রাদি.] বলেন, সে সময়ে আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে ছিলাম।
সহীহ্ , তালীকুর রাগীব [৪/১২০]।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি সহিহ।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৬৯. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, কোন একদিন রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এমন সময় ঘর হইতে বের হলেন, যে সময়ে তিনি সচরাচর বের হন না এবং এ সময় কেউ তাহাঁর সাথে সাক্ষাৎ করিতেও আসতো না। [এ মুহূর্তে] আবু বকর [রাদি.] এসে উপস্থিত হলেন। তিনি প্রশ্ন করিলেন ঃ হে আবু বাক্র! আপনি কি মনে করে এলেন? তিনি বলিলেন, আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে দেখা করিতে, তাহাঁর বারকাতময় মুখমন্ডল দেখিতে ও তাঁকে সালাম প্রদানের উদ্দেশ্যে এসেছি। ইতোমধ্যে উমার [রাদি.]-ও এসে উপস্থিত হলেন। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] প্রশ্ন করিলেন ঃ হে উমার! আপনার এ সময় আসার কারণ কি? তিনি বলিলেন, হে আল্লাহ্র রাসূল [সাঃআঃ]! ক্ষুধার তাড়নায়। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ আমিও এরূপ কিছু অনুভব করছি। এই বলে তাঁরা আবুল হাইসাম ইবনি আত্তাইহান আল-আনসারী [রাদি.]-এর বাড়ীর দিকে যাত্রা শুরু করিলেন। আর তিনি ছিলেন প্রচুর খেজুরগাছ ও বকরীর মালিক, কিন্তু তার কোন খাদিম ছিল না। তাঁরা তাকে বাড়ীতে না পেয়ে তার স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করিলেন, আপনার সাথী কোথায়? তিনি বলিলেন, তিনি আমাদের জন্য মিঠা পানি আনতে গেছেন। ইতোমধ্যে আবুল হাইসাম [রাদি.] পানিভর্তি মশক নিয়ে ফিরে এলেন এবং সেটা রেখেই রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে জড়িয়ে ধরলেন এবং বলিলেন, আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কুরবান হোক! তারপর তিনি তাঁদেরকে নিয়ে তাহাঁর বাগানে গেলেন এবং তাহাদের জন্য বিছানা বিছিয়ে দিলেন। তারপর তিনি খেজুরগাছ হইতে কয়েক গুচ্ছ খেজুর নামিয়ে এনে তাঁদের সামনে রাখলেন। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাঁকে বললেনঃ আমাদের জন্য পাকা খেজুর বেছে আলাদা করে নিয়ে আসলে না কেন? তিনি বলিলেন, হে আল্লাহ্র রাসূল [সাঃআঃ]! আমি ভাবলাম যে, আপনারা নিজেদের ইচ্ছামতো তাজা কিংবা পাকা খেজুর বেছে খাবেন, [এজন্য দুরকম খেজুরই পেশ করলাম]। তারপর তাঁরা খেজুর খেয়ে সেই পানি পান করিলেন। তারপর রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ যাঁর হাতে আমার প্রাণ সেই মহান সত্তার শপথ! কিয়ামাত দিবসে এসব নিয়ামাত প্রসঙ্গেও তোমাদেরকে প্রশ্ন করা হইবে। এই সুশীতল ছায়া, সুস্বাদু কাঁচা-পাকা খেজুর ও ঠান্ডা পানি [কতই না সুন্দর নিয়ামাত]। এরপর আবুল হাইসাম [রাদি.] তাঁদের জন্য খাবার তৈরী করিতে চলে গেলেন। নাবী [সাঃআঃ] তাঁকে বলে দিলেন ঃ কোন অবস্থাতেই দুধেল পশু যবাহ করিবে না। কাজেই তিনি নাবীন একটি নর ছাগল যবাহ করিলেন এবং রান্না করে তাঁদের জন্য নিয়ে এলেন। তাঁরা তা খেলেন। তারপর নাবী [সাঃআঃ] তাকে প্রশ্ন করিলেন ঃ তোমার কি কোন খাদিম আছে? তিনি বলিলেন, না। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ যখন আমার নিকট বন্দী আসবে তুমি তখন এসো। পরে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট দুটি গোলাম আসে। তাহাদের সাথে তৃতীয় কোন গোলাম ছিল না। আবুল হাইসাম [রাদি.] তাহাঁর নিকট এলে নাবী [সাঃআঃ] তাকে বললেনঃ এদের মধ্যে যেটা ভালো লাগে বেছে নাও। তিনি বলিলেন, হে আল্লাহ্র নাবী [সাঃআঃ]! আপনিই আমাকে একটি পছন্দ করে দিন। তখন নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ যার কাছে পরামর্শ চাওয়া হয় তাকে আমানাতদার হইতে হয়। ঠিক আছে, তুমি এটাই নাও। কেননা, আমি একে নামাজ আদায় করিতে দেখেছি। আমি তোমাকে উপদেশ দিচ্ছি তার সাথে উত্তম আচরণ করার জন্য। আবুল হাইসাম [রাদি.] রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর উপদেশ প্রসঙ্গে তাহাঁর স্ত্রীর নিকট গিয়ে তাকে জানিয়ে দেন। তার স্ত্রী বলিলেন, একে মুক্ত করা ব্যতীত আপনি নাবী [সাঃআঃ]-এর বক্তব্যের মর্ম পর্যন্ত পৌছ্তে পারবেন না। তিনি বলিলেন, ঠিক আছে, সে এখন মুক্ত। নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ আল্লাহ্ তাআলা যত নাবী ও খলীফা প্রেরণ করিয়াছেন, তাহাদের সকলকেই দুজন করে একান্ত পরামর্শক দিয়েছেন। একজন সাথী তো তাকে ভালো কাজের আদেশ দিতে থাকে এবং অন্যায় কাজে প্রতিহত করে। আর অন্যজন তাকে ধ্বংস করার কোন সুযোগই ছাড়ে না। যাকে এই অসৎ পরামর্শক হইতে হিফাযাত করা হয়েছে তাকেই বাঁচানো হয়েছে।
সহীহ্ , সহীহাহ্ [১৬৪১], মুখতাসার শামাইল [১১৩]।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ গারীব।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৭০. আবু সালামা ইবনি আবদুর রাহমান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
কোন একদিন রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ], আবু বাক্র ও উমার [রাদি.] বের হলেন….। তারপর তিনি উক্ত মর্মে পূর্বোক্ত হাদীসের মতোই হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। এই সনদে আবু হুরাইরা [রাদি.]-এর উল্লেখ নেই।
সহীহ্ , দেখুন পূর্বের হাদীস।আবু আওয়ানার রিওয়ায়াতের চাইতে শাইবানের রিওয়ায়াত দীর্ঘ ও বেশি পূর্ণাঙ্গ। হাদীস বিশারদদের মতে শাইবান বিশ্বস্ত বর্ণনাকারী এবং তার সংকলনও আছে। আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে উপরোক্ত হাদীসটি ভিন্ন সুত্রেও বর্ণিত আছে। ইবনি আব্বাস [রাদি.]-এর সূত্রেও হাদীসটি বর্ণিত আছে।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৭১. আবু তালহা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকটে অনাহারের অভিযোগ করলাম এবং নিজেদের পেটের কাপড় উঠিয়ে একটা পাথর [বাঁধা] দেখালাম। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-ও তাহাঁর পেটের কাপড় উঠিয়ে আমাদেরকে দুটি পাথর বাঁধা দেখালেন।
যঈফ, মুখতাসার শামায়িল [১১২]আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধুমাত্র উপরোক্ত সূত্রেই এ হাদীস জেনেছি।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
২৩৭২. সিমাক ইবনি হারব [রাহঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নুমান ইবনি বাশীর [রাদি.]-কে আমি বলিতে শুনিয়াছি ঃ এখন তোমরা কি নিজেদের খুশি মতো পানাহার করিতে পারছো না? অথচ আমি তোমাদের নাবী [সাঃআঃ]-কে দেখেছি যে, তিনি এই নিকৃষ্ট ও শুকনো খেজুরও পেতেন না, যা দ্বারা তাহাঁর পেট ভরতে পারেন।
সহীহ্ , মুখতাসার শামা-ইল [১১০], মুসলিম।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি সহিহ। সিমাক ইবনি হারব [রাহঃ] হইতে আবু আওয়ানা এবং আরও অনেকে আবুল আহওয়াস বর্ণিত হাদীসের সমার্থক হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। শুবা [রাহঃ] সিমাক হইতে, তিনি নুমান ইবনি বশীর হইতে, তিনি উমার [রাদি.] হইতে এই সূত্রে এ হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪০. অনুচ্ছেদঃ মনের ঐশ্বর্যই আসল ঐশ্বর্য
২৩৭৩. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ পার্থিব সম্পদের আধিক্য থাকলেই ঐশ্বর্যশালী হওয়া যায় না। মনের ঐশ্বর্যই আসল ঐশ্বর্য।
সহীহ্ , ইবনি মা-জাহা [৪১৩৭], বুখারী, মুসলিম।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। আবু হাসীনের নাম উসমান, পিতা আসিম আল-আসাদী।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪১. অনুচ্ছেদঃ নিজের সম্পদ গ্রহণ করা
২৩৭৪. হামযা ইবনি আবদুল মুত্তালিবের স্ত্রী খাওলা বিনতু কাইস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি ঃ এ পার্থিব ধন-সম্পদ হলো সবুজ-শ্যামল, মনোরম ও মধুময়। যে লোক সঠিক পন্থায় তার প্রয়োজন মুতাবিক তা গ্রহণ করে তার জন্য তাতে বারকাত দেয়া হয়। এমন অনেক লোক আছে, যারা আল্লাহ্ ও তাহাঁর রাসূল [সাঃআঃ]-এর দেয়া এই সম্পদ নিজেদের খুশি মুতাবিক ভোগ-ব্যবহার করে। কিয়ামাত দিবসে তাহাদের জন্য জাহান্নাম ব্যতীত আর কিছুই নেই।
সহীহ্ , সহীহাহ্ [১৫৯২], মিশকাত, তাহকীক ছানী [৪০১৭]।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। আবুল ওয়ালীদের নাম উবাইদ সানুতা।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪২. অনুচ্ছেদঃ দিরহাম ও দীনারের দাসগণ অভিশপ্ত
২৩৭৫. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ দীনার ও দিরহামের দাসগণ অভিশপ্ত।
আবু ঈসা বলেনঃ উপরোক্ত বর্ণনায় হাদীসটি হাসান গারীব। এই হাদীসটি অন্য সূত্রেও আবু সালিহ হইতে তিনি আবু হুরাইরা হইতে তিনি রাসূল [সাঃআঃ] হইতে অনুরূপভাবে আরও পূর্ণ ও দীর্ঘ বর্ণিত হয়েছে।যঈফ, মিশকাত, তাহকীক ছানী [৫১৮০]দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
৪৩. অনুচ্ছেদঃ সম্পদ ও প্রতিপত্তির মোহ মানুষকে পথভ্রষ্ট করে
২৩৭৬. কাব ইবনি মালিক আল-আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ দুটি ক্ষুধার্ত নেকড়ে বাঘকে ছাগলের পালে ছেড়ে দেয়া হলে পরে তা যতটুকু না ক্ষতিসাধন করে, কারো সম্পদ ও প্রতিপত্তির লোভ এর চেয়ে বেশি ক্ষতিসাধন করে তার ধর্মের।
সহীহ্ , রাওযুন নাযীর [৫-৭]।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। ইবনি উমার [রাদি.] হইতে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সূত্রেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। তবে তার সনদসূত্র সহীহ্ নয়।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪৪. অনুচ্ছেদঃ পার্থিব জীবন ছায়ার মতো ক্ষণস্থায়ী
২৩৭৭. আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কোন একসময় খেজুর পাতার মাদুরে শুয়েছিলেন। তিনি ঘুম হইতে জাগ্রত হয়ে দাঁড়ালে দেখা গেল তাহাঁর গায়ে মাদুরের দাগ পড়ে গেছে। আমরা বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল [সাঃআঃ]! আমরা আপনার জন্য যদি একটি নরম বিছানার [তোষক] ব্যবস্থা করতাম। তিনি বললেনঃ দুনিয়ার সাথে আমার কি সম্পর্ক? দুনিয়াতে আমি এমন একজন পথচারী মুসাফির ছাড়া তো আর কিছুই নই, যে একটি গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিল, তারপর তা ছেড়ে দিয়ে গন্তব্যের দিকে চলে গেল।
সহীহ্ , ইবনি মা-জাহ [৪১০৯]।ইবনি উমার ও ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ।দুনিয়াবী ভোগবিলাস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
Leave a Reply