হাজরে আসওয়াদ , সাফা, মারওয়া, তাওয়াফ ও কাবা শরিফ
হাজরে আসওয়াদ , সাফা, মারওয়া, তাওয়াফ ও কাবা শরিফ >> সুনান তিরমিজি শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন
অধ্যায়ঃ ৭, অনুচ্ছেদঃ (২৯-৪৯)=২১টি
২৯. অনুচ্ছেদঃ মক্কায় যাওয়ার উদ্দেশে গোসল করা
৩০. অনুচ্ছেদঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] উচ্চভূমি দিয়ে মক্কায় প্রবেশ করিতেন এবং নিম্নভূমি দিয়ে বের হইতেন
৩১. অনুচ্ছেদঃ দিনের বেলা রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর মক্কায় আগমন
৩১. অনুচ্ছেদঃ দিনের বেলা রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর মক্কায় আগমন
৩৩. অনুচ্ছেদঃ তাওয়াফ আদায়ের নিয়ম-কানুন
৩৪. অনুচ্ছেদঃ হাজরে আসওয়াদ হইতে হাজরে আসওয়াদ পর্যন্ত দ্রুত প্ৰদক্ষিণ করা
৩৫. অনুচ্ছেদঃ শুধু হাজরে আসওয়াদ ও রুকনে ইয়ামানী চুম্বন করা
৩৬. অনুচ্ছেদঃ ইযতিবা অবস্থায় রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাওয়াফ করিয়াছেন
৩৭. অনুচ্ছেদঃ হাজরে আসওয়াদে চুম্বন দেওয়া
৩৮. অনুচ্ছেদঃ মারওয়ার আগে সাফা হইতে সাঈ শুরু করিতে হইবে
৩৯. অনুচ্ছেদঃ সাফা ও মারওয়া পাহাড় দুটির মধ্যে সাঈ করা
৪০. অনুচ্ছেদঃ আরোহী অবস্থায় তাওয়াফ করা
৪১. অনুচ্ছেদঃ তাওয়াফের ফাষীলাত
৪২. অনুচ্ছেদঃ আসর ও ফজরের পরেও তাওয়াফের ক্ষেত্রে তাওয়াফের নামাজ আছে
৪৩. অনুচ্ছেদঃ তাওয়াফের দুই রাকআত নামাযের কিরাআত
৪৪. অনুচ্ছেদঃ উলঙ্গ অবস্থায় তাওয়াফ করা নিষিদ্ধ
৪৫. অনুচ্ছেদঃ কাবা শরীফের অভ্যন্তরে যাওয়া
৪৬. অনুচ্ছেদঃ কাবার অভ্যন্তরে নামাজ আদায় করা
৪৭. অনুচ্ছেদঃ [নির্মাণকল্পে] কাবা ঘর ভাঙ্গা প্রসঙ্গে
৪৮. অনুচ্ছেদঃ হাতীমে নামাজ আদায় করা
৪৯. অনুচ্ছেদঃ হাজরে আসওয়াদ, রুকন ও মাকামে ইবরাহীমের ফযিলত
২৯. অনুচ্ছেদঃ মক্কায় যাওয়ার উদ্দেশে গোসল করা
৮৫২. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] মক্কা শরীফে যাওয়ার উদ্দেশে ফাখ নামক জায়গাতে গোসল করেন।
সনদ খুবই দুর্বল। ফাখ শব্দ উল্লেখ না করে বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন। সহীহ আবু দাঊদ [১২২৯]। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি সুরক্ষিত নয়। মক্কা মুকাররমায় যাওয়ার জন্য রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] গোসল করিতেন মর্মে বর্ণিত ইবনি উমার [রাদি.] হইতে নাফি-এর হাদীসটি বেশী সহিহ। ঈমাম শাফি [রঃ] মক্কায় যাওয়ার জন্য গোসল করা মুস্তাহাব বলেছেন। রাবী আবদুর রহমান ইবনি যাইদ ইবনি আসলাম হাদীস শাস্ত্রে দুর্বল। আহ্মাদ ইবনি হাম্বল, আলী ইবনিল মাদীনী প্রমুখ তাকে যঈফ বলেছেন। তার সূত্র ব্যতীত অন্য কোন সূত্রে এ হাদীসটি মারফূ হিসেবে বর্ণিত হয়েছে কি-না তা আমাদের জানা নেই।ওমরাহ হজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ খুবই দুর্বল
৩০. অনুচ্ছেদঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] উচ্চভূমি দিয়ে মক্কায় প্রবেশ করিতেন এবং নিম্নভূমি দিয়ে বের হইতেন
৮৫৩. আইশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন মক্কায় আগমন করিলেন তখন এর উচ্চভূমি দিয়ে আসলেন এবং বের হলেন নিম্নভূমি দিয়ে।
– সহীহ, সহীহ আবু দাউদ [১৬৩৩] বুখারী, মুসলিম।ইবনি উমার [রাদি.] হইতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আইশা [রাদি.]-এর হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন।ওমরাহ হজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩১. অনুচ্ছেদঃ দিনের বেলা রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর মক্কায় আগমন
৮৫৪. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] দিনের বেলা মক্কা নগরীতে আগমন করেন।
– সহীহ, সহীহ আবু দাউদ [১৬২৯], বুখারী, মুসলিম।এই হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান বলেছেন।ওমরাহ হজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩২. অনুচ্ছেদঃ বাইতুল্লাহ্ শরীফ দেখে হাত তোলা মাকরূহ
৮৫৫.মুহাজির আল-মাক্কী [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ
জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.]-কে প্রশ্ন করা হলঃ কোন ব্যক্তি বাইতুল্লাহ্ শরীফ দেখে তার উভয় হাত তুলবে কি-না। তিনি বলিলেন, আমরা নাবী [সাঃআঃ] -এর সাথে হাজ্জ করেছি, কিন্তু তখন কি আমরা তা করেছি?
যঈফ, যঈফ আবু দাঊদ [৩২৬], মিশকাত তাহকীক ছানী [২৫৭৪]।আবু ঈসা বলেন, বাইতুল্লাহ্ দেখে হাত তোলা বিষয়ের এই হাদীসটি শুবা হইতে আবু কাযাআর সূত্রেই আমরা জেনেছি। আবু কাযাআর নাম সুওয়াইদ ইবনি হুজাইর।ওমরাহ হজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
৩৩. অনুচ্ছেদঃ তাওয়াফ আদায়ের নিয়ম-কানুন
৮৫৬. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, মক্কায় পৌছার পর রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] মাসজিদুল হারামে প্রবেশ করেন এবং হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করেন, তারপর ডান দিকে এগিয়ে গেলেন এবং তিন বার তাওয়াফ করিলেন দ্রুত পদক্ষেপে, আর স্বাভাবিক গতিতে তাওয়াফ করিলেন চার বার। এরপর মাকামে ইবরাহীমে আসলেন এবং পাঠ করলেনঃ
وَاتَّخِذُوا مِنْ مَقَامِ إِبْرَاهِيمَ مُصَلًّى
“মাকামে ইবরাহীমকে তোমরা নামাযের জায়গা হিসাবে গ্রহণ কর”[সূরাদি. বাকারা- ১২৫]। তিনি এখানে তাহাঁর ও বাইতুল্লাহর মাঝে মাকামে ইবরাহীমকে রেখে দুই রাকআত নামাজ আদায় করিলেন, এরপর হাজরে আসওয়াদের নিকট এসে তা চুম্বন করিলেন। এরপর তিনি বের হয়ে গেলেন সাফা পাহাড়ের দিকে [সাঈর উদ্দেশ্যে]। [বর্ণনাকারী বলেন] আমার ধারণা তিনি তখন পাঠ করলেনঃ
إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَائِرِ اللَّهِ
“নিশ্চয়ই সাফা ও মারওয়া [পাহাড়দুটি] আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্তর্ভুক্ত”[সূরাদি. বাকারা-১৫৮]।
– সহীহ, ইবনি মা-জাহ [৩০৭৪], মুসলিম।ইবনি উমার [রাদি.] হইতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এই হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। এই হাদীস অনুযায়ী আলিমগণ আমল করেন।ওমরাহ হজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৪. অনুচ্ছেদঃ হাজরে আসওয়াদ হইতে হাজরে আসওয়াদ পর্যন্ত দ্রুত প্ৰদক্ষিণ করা
৮৫৭. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
হাজরে আসওয়াদ হইতে শুরু করে হাজরে আসওয়াদ পর্যন্ত রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তিন বার দ্রুত পদক্ষেপে তাওয়াফ করেন এবং ধীর পদক্ষেপে চারবার তাওয়াফ করেন।
— সহীহ, প্রাগুক্ত।ইবনি উমার [রাদি.] হইতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। জাবির [রাদি.]-এর বর্ণিত হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। আলিমগণ এই হাদীস অনুযায়ী আমল করিয়াছেন। ঈমাম শাফি [রঃ] বলেন, কোন লোক নিজ ইচ্ছায় দ্রুত পদে তাওয়াফ [রমল] ছেড়ে দিলে তার এই কাজটি মন্দ বলে বিবেচিত হইবে, কিন্তু এইজন্য তার উপর কিছু ধার্য হইবে না। প্রথম তিন চক্করে রমল না করলে বাকী চক্করসমূহে আর তা করিবে না। একদল আলিম বলেছেন, মক্কাবাসী এবং যারা মক্কা হইতে ইহরাম বাঁধেন তাহাদের জন্য রমল [দ্রুত পদে তাওয়াফ] নেই।ওমরাহ হজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৫. অনুচ্ছেদঃ শুধু হাজরে আসওয়াদ ও রুকনে ইয়ামানী চুম্বন করা
৮৫৮. আবুত তুফাইল [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি ইবনি আব্বাস [রাদি.]-এর সাথে ছিলাম। তাওয়াফের সময় মুআবিয়া [রাদি.] যে রুকনের পাশ দিয়েই যেতেন সেটিই চুম্বন করিতেন। ইবনি আব্বাস [রাদি.] তাকে বলিলেন, শুধুমাত্র রুকনে ইয়ামানী ও হাজরে আসওয়াদই রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] চুম্বন করিতেন। মুআবিয়া [রাদি.] বলেন, বাইতুল্লাহর কিছুই উপেক্ষণীয় নয়।
-সহীহ, আলহাজ্জুল কাবীর, বুখারী, মুসলিম।উমার [রাদি.] হইতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। ইবনি আব্বাস [রাদি.] বর্ণিত হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। এই হাদীস অনুযায়ী বেশিরভাগ আলিম আমল করার কথা বলেছেন অর্থাৎ হাজরে আসওয়াদ ও রুকনে ইয়ামানী ব্যতীত আর কিছু চুম্বন করিবে না।ওমরাহ হজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৬. অনুচ্ছেদঃ ইযতিবা অবস্থায় রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাওয়াফ করিয়াছেন
৮৫৯. ইয়ালা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
একটি চাদরের মধ্যভাগ ডান বগলের নীচে দিয়ে এবং তার দুই প্রান্ত বাম কাঁধের উপর দিয়ে জড়ানো [ইযতিবা] অবস্থায় [বাহু খোলা রেখে] রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বাইতুল্লাহ্ তাওয়াফ করিয়াছেন।
-হাসান, ইবনি মা-জাহ [২৯৫৪]।আবু ঈসা বলেন, এটি ইবনি জুরাইজ হইতে বর্ণিত সাওরীর হাদীস। এটিকে আমরা শুধুমাত্র তার হাদীস হিসেবেই জেনেছি। এই হাদীসটি হাসান সহীহ। আবদুল হামীদ হলেন ইবনি জুবাইরা ইবনি শাইবা এবং ইয়ালা [রাদি.] হলেন ইয়ালা ইবনি উমাইয়্যা।ওমরাহ হজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস
৩৭. অনুচ্ছেদঃ হাজরে আসওয়াদে চুম্বন দেওয়া
৮৬০. আবিস ইবনি রবীআ [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.]-কে আমি হাজরে আসওয়াদে চুমা দিতে দেখেছি এবং তিনি তখন বলছিলেনঃ আমি তোমাকে চুমা দিচ্ছি অথচ আমি জানি তুমি শুধুই একটি পাথর। আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে যদি তোমাকে চুমা দিতে না দেখতাম তাহলে আমি তোমাকে চুমা দিতাম না।
-সহীহ, ইবনি মা-জাহ [২৯৪৩], বুখারী, মুসলিম।আবু বাকর ও ইবনি উমার [রাদি.] হইতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন।ওমরাহ হজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৮৬১. যুবাইর ইবনি আরাবী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
এক ব্যক্তি ইবনি উমারকে হাজরে আসওয়াদ চুম্বন সম্পর্কে প্রশ্ন করিলেন। জবাবে তিনি বলিলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ]-কে তা স্পর্শ ও চুম্বন করিতে দেখেছি। লোকটি বললোঃ আপনি কি মনে করেন? আমি যদি পরাভূত হই, আপনি কি মনে করেন? আমি যদি ভিড়ে আটকে পরি, তিনি বলিলেন, তোমার ঐ কি মনে কর [কথাটি] ইয়ামানে রেখে আস [লোকটি ইয়ামানী ছিল তাই একথা বলিলেন] আমি নাবী [সাঃআঃ]-কে উহা স্পর্শ করিতে ও চুম্বন দিতে দেখেছি।
-সহীহ [আল-হাজ্জুলকাবীর] বুখারী।
বর্ণনাকারী এই যুবাইর ইবনি আরাবী হইতে হাম্মাদ ইবনি যাইদ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। আর যুবাইর ইবনি আদী কুফাবাসী যার উপনাম আবু সালামা তিনি আনাস ইবনি মালিক এবং আরও অনেক সাহাবী হইতে হাদীস শুনেছেন। তার নিকট হইতে সুফিয়ান সাওরী এবং আরও অনেক হাদীস বিশারদ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। আবু ঈসা ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান সহীহ বলেছেন। হাদীসটি আরও একাধিক সূত্রে বর্ণিত আছে।এই হাদীস অনুযায়ী আলিমগণ আমল করার কথা বলেছেন। হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করাকে তারা মুস্তাহাব বলেছেন। তবে এর নিকটে আসা সম্ভব না হলে তাতে হাত দিয়ে স্পর্শ করে হাতে চুম্বন করিবে। এতটুকু নিকটে আসাও সম্ভব না হলে এর বরাবর এসে দাড়িয়ে আল্লাহু আকবার বলবে। এটি ঈমাম শাফি [রঃ]-এর অভিমত।ওমরাহ হজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৮. অনুচ্ছেদঃ মারওয়ার আগে সাফা হইতে সাঈ শুরু করিতে হইবে
৮৬২.জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] মক্কায় আসার পর বাইতুল্লাহ্ শরীফে সাত [শাওতে] তাওয়াফ করিলেন। তারপর মাকামে ইবরাহীমে এসে পাঠ করলেনঃ
وَاتَّخِذُوا مِنْ مَقَامِ إِبْرَاهِيمَ مُصَلًّى
ইবরাহীমের দাড়াবার জায়গাকে তোমরা নামাযের জায়গা হিসেবে গ্রহণ কর” [সূরাদি. বাকারা- ১২৫]। তারপর মাকামে ইবরাহীমের পিছনে তিনি দুরাকআত নামাজ আদায় করিলেন, তারপর হাজরে আসওয়াদের নিকটে এসে তা চুমা দিলেন, তারপর বললেনঃ যে দিক হইতে আল্লাহ্ তাআলা শুরু করিয়াছেন সে দিক হইতে [দৌড়ানো] আমরাও শুরু করব। সাফা পর্বত হইতে তিনি সাঈ শুরু করিলেন এবং পাঠ করলেনঃ
إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَائِرِ اللَّهِ
“সাফা ও মারওয়া আল্লাহ্ তাআলার নিদর্শনসমূহের অন্তর্ভুক্ত”[সূরাদি. বাকারা- ১৫৮]।
-সহীহ, ইবনি মা-জাহ [১৩৭৪], মুসলিমে এরূপ বর্ণনা আছে –“আমি শুরু করব”।এই হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। আলিমগণের মতে এই হাদীস অনুযায়ী আমল করিতে হইবে। মারওয়ার আগে সাফা হইতে সাঈ শুরু করিতে হইবে। সাফার আগে মারওয়া হইতে সাঈ শুরু করলে তা সঠিক হইবে না, বরং শুরু করিতে হইবে সাফা হইতেই। সাফা ও মারওয়ার সাঈ না করে যদি কোন লোক শুধু বাইতুল্লাহ্ তাওয়াফ করে চলে আসে তবে এ প্রসঙ্গে আলিমগণের মধ্যে মতের অমিল রহিয়াছে। কিছু সংখ্যক আলিম বলেন, যদি কোন লোক সাফা ও মারওয়ার সাঈ না করে মক্কা হইতে বেরিয়ে যায় এবং মক্কার নিকটেই থাকা অবস্থায় যদি সে কথা তার মনে পড়ে তবে সে ফিরে আসবে এবং সাফা ও মারওয়ার সাঈ পুরো করিবে। আর যদি দেশে ফিরার পর তার মনে পড়ে তাহলে তার হজ্জ হয়ে যাবে কিন্তু তাকে একটি দম [কুরবানী] দিতে হইবে। এটা সুফিয়ান সাওরীর অভিমত।কোন কোন আলিম বলেছেন, কোন লোক যদি সাফা ও মারওয়ার মাঝে সাঈ না করে দেশে ফিরে আসে তাহলে তার হজ্জ আদায় হইবে না। এটা ঈমাম শাফি [রঃ]-এর অভিমত। তিনি বলেন, সাফা ও মারওয়ার মাঝে সাঈ করা ওয়াজিব, তা ব্যতীত হজ্জ হইবে না।ওমরাহ হজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৯. অনুচ্ছেদঃ সাফা ও মারওয়া পাহাড় দুটির মধ্যে সাঈ করা
৮৬৩. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, মুশরিকদেরকে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার শক্তি প্রদর্শনের লক্ষ্যে বাইতুল্লাহ তাওয়াফ ও সাফা-মারওয়ার মধ্যে সাঈ করিয়াছেন [দৌড়িয়েছেন]।
-সহীহ, বুখারী, মুসলিম।আইশা, ইবনি উমার ও জাবির [রাদি.] হইতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। ইবনি আব্বাস [রাদি.]-এর বর্ণিত হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। সাফা ও মারওয়ার মাঝে সাঈ করাকে [দৌড়ে চলাকে] আলিমগণ মুস্তাহাব বলেছেন। সাঈ না করে সাফা ও মারওয়ার মাঝে যদি কোন লোক শুধু হেঁটে প্রদক্ষিণ করে তবে তাও জায়িয।ওমরাহ হজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৮৬৪. কাসীর ইবনি জুমহান [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, সাফা ও মারওয়ার মাঝে দৌড়ে চলার স্থানে ইবনি উমার [রাদি.]-কে আস্তে চলতে দেখে আমি বললাম, সাফা ও মারওয়ার মাঝে দৌড়ে চলার স্থানে আপনি আস্তে চলছেন যে? তিনি বলেন, আমি যদি দ্রুত চলি তবে দ্রুত চলতে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কেও দেখেছি। আর যদি আস্তে চলি তবে আস্তে চলতেও রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে দেখেছি, আর আমি তো এখন একজন বৃদ্ধ লোক।
-সহীহ, ইবনি মা-জাহ [২৯৮৮]।এই হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। একই রকম হাদীস ইবনি উমার [রাদি.] হইতে সাঈদ ইবনি জুবাইর [রঃ]-ও বর্ণনা করিয়াছেন।ওমরাহ হজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪০. অনুচ্ছেদঃ আরোহী অবস্থায় তাওয়াফ করা
৮৬৫. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিজের বাহনে সাওয়ার হয়ে [বাইতুল্লাহ] তাওয়াফ করিয়াছেন। তিনি হাজরে আসওয়াদের নিকটে পৌঁছে এর প্রতি ইশারা করিয়াছেন।
-সহীহ, ইবনি মা-জাহ [২৯৪৮], বুখারী, মুসলিম।জাবির, আবুত তুফায়িল ও উন্মু সালামা [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। ইবনি আব্বাস [রাদি.] বর্ণিত হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। কোন কারণ ছাড়া আরোহী অবস্থায় বাইতুল্লাহ তাওয়াফ ও সাফা-মারওয়ার মাঝে সাঈ করাকে একদল আলিম মাকরূহ বলেছেন। এই অভিমত ঈমাম শাফিরও।ওমরাহ হজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪১. অনুচ্ছেদঃ তাওয়াফের ফাষীলাত
৮৬৬. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে লোক পঞ্চাশ বার বাইতুল্লাহ্ তাওয়াফ করিবে সে তার মায়ের গর্ভ হইতে ভূমিষ্ঠ হওয়ার দিনের মত পাপ মুক্ত হয়ে যাবে।
যঈফ, যঈফা [৫১০২]।এই অনুচ্ছেদে আনাস ও ইবনি উমার [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, ইবনি আব্বাস [রাদি.] বর্ণিত হাদীসটি গারীব। আমি মুহাম্মাদ [বুখারী]-কে এই হাদীস প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এটি ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে তাহাঁর উক্তি হিসেবে বর্ণিত হয়ে থাকে।ওমরাহ হজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
৮৬৭. আইয়ূব সাখতিয়ানী [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনি সাঈদ ইবনি জুবাইরকে মুহাদ্দিসগণ তার পিতা সাঈদ ইবনি জুবাইর হইতেও উত্তম গণ্য করিতেন। তার এক ভাই ছিল, যার নাম আবদুল মালিক ইবনি সাঈদ ইবনি জুবাইর। তার নিকট হইতেও মুহাদ্দিসগণ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।
-সনদ সহীহ।ওমরাহ হজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪২. অনুচ্ছেদঃ আসর ও ফজরের পরেও তাওয়াফের ক্ষেত্রে তাওয়াফের নামাজ আছে
৮৬৮. জুবাইর ইবনি মুতইম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ হে আবদ মানাফের বংশধরগণ! তোমরা কোন লোককে রাত ও দিনের যে কোন সময় ইচ্ছা বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করিতে এবং নামাজ আদায় করিতে বাধা দিও না।
-সহীহ, সহীহ ইবনি মা-জাহ [১২৫৪]।ইবনি আব্বাস ও আবু যার [রাদি.] হইতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। জুবাইর [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। আবদুল্লাহ ইবনি আবু নাজীহও এই হাদীস আবদুল্লাহ ইবনি বাবা হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। ঈমামদের মধ্যে মক্কা শারীফে আসর ও ফজরের নামাযের পর অন্য কোন নামাজ আদায় করার বৈধতা প্রসঙ্গে মতের অমিল আছে। কিছু সংখ্যক আলিম আসর ও ফজরের পরে নামাজ ও তাওয়াফে কোন সমস্যা না থাকার কথা বলেছেন। এই অভিমত ঈমাম শাফি, আহমাদ ও ইসহাকেরও। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর এই হাদীসকে তারা প্রমাণ হিসাবে হাযির করেন। আরেক দল আলিম বলেন, আসরের পর যদি কোন লোক তাওয়াফ করে তাহলে সে লোক সূর্য না ডোবা পর্যন্ত তাওয়াফের নামাজ আদায় করিবে না। এমনিভাবে ফজরের পর কোন লোক যদি তাওয়াফ করে তাহলে সে লোক সূর্য না উঠা পর্যন্ত তাওয়াফের নামাজ আদায় করিবে না। তারা নিজেদের মতের অনুকূলে উমার [রাদি.]-এর হাদীস পেশ করিয়াছেন। ফজরের নামাযের পড় তিনি তাওয়াফ করিলেন, কিন্তু [তাওয়াফের] নামাজ আদায় করিলেন না। সূর্য উঠার পর তিনি ঐ নামাজ যীতুয়া নামক জায়গাতে পৌছে আদায় করেন। এই মত সুফিয়ান সাওরী ও মালিকেরও।ওমরাহ হজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪৩. অনুচ্ছেদঃ তাওয়াফের দুই রাকআত নামাযের কিরাআত
৮৬৯. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তাওয়াফের দুই রাকাআত নামাজ আদায়ে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইখলাসের দুইটি সূরা তিলাওয়াত করেনঃ সূরা কাফিরূন এবং সূরা ইখলাস।
-সহীহ, ইবনি মা-জাহ [৩০৭৪], মুসলিম।ওমরাহ হজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৮৭০. জাফর ইবনি মুহাম্মদ [রঃ] হইতে তাহাঁর পিতার সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, তাওয়াফের দুরাকআত নামাযে তিনি [মুহাম্মাদ আল-বাকির] সূরা কাফিরূন ও সূরা ইখলাস তিলাওয়াত করিতে পছন্দ করিতেন।
-সনদ সহীহ, মাকতু।আব্দুল আজীজ ইবনি ইমরানের হাদীসের তুলনায় এই হাদীসটিকে আবু ঈসা বেশি সহীহ বলেছেন। কেননা বর্ণনাকারী আবদুল আযীয ইবনি ইমরান হাদীস শাস্ত্রে দুর্বল।ওমরাহ হজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ মাকতু
৪৪. অনুচ্ছেদঃ উলঙ্গ অবস্থায় তাওয়াফ করা নিষিদ্ধ
৮৭১. যাইদ ইবনি উসাই [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আলী [রাদি.]-কে আমি প্রশ্ন করলাম, কি বিষয় সহকারে আপনাকে [নবম হিজরীতে মক্কায়] পাঠানো হয়েছিল? তিনি বলিলেন, চারটি বিষয় [ঘোষণা করার জন্য]। মুসলিম ছাড়া আর কোন লোক জান্নাতে যাবে না; কোন লোক উলঙ্গ অবস্থায় বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করিতে পারবে না; এইখানে [কাবা শারীফে] মুসলিম ও মুশরিকগণ এই বছরের পর একত্র হইতে পারবে না এবং যে সব লোকের সাথে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর চুক্তি আছে সে সব লোকের চুক্তি নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত বলবৎ থাকিবে, কিন্তু যে সব লোকের চুক্তিতে কোন মেয়াদের উল্লেখ নেই সে সব লোকের চুক্তির মেয়াদ [আজ হইতে] চার মাস পর্যন্ত।
-সহীহ, ইরওয়া [১১০১]।আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আলী [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন।ওমরাহ হজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৮৭২. ইবনি আবু উমার হইতে বর্ণীতঃ
ইবনি আবু উমার ও নাসর ইবনি আলী তারা উভয়ে সুফিয়ান হইতে, তিনি আবু ইসহাকের বরাতে পূর্বোক্ত হাদীসের মতই বর্ণনা করিয়াছেন। তবে যাইদ ইবনি উসাইর স্থলে তারা উভয়ে ইয়ুসাই উল্লেখ করিয়াছেন, এটাই বেশি সহীহ।
-সহীহ, দেখুন পূর্বের হাদীস।আবু ঈসা বলেন, এই ক্ষেত্রে শুবার ভুল আছে। বর্ণনাকারীর নামটি তিনি যাইদ ইবনি উসাইল বলে উল্লেখ করিয়াছেন।ওমরাহ হজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪৫. অনুচ্ছেদঃ কাবা শরীফের অভ্যন্তরে যাওয়া
৮৭৩. আইশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমার নিকট হইতে অচঞ্চল চোখে ও প্রফুল্ল মনে চলে গেলেন কিন্তু [কিছুক্ষণ পর] ফিরে আসলেন চিন্তাগ্রস্ত অবস্থায়। আমি তাঁকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমি কাবার ভেতরে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমার মন বলছিল আমি যদি এরূপ না করতাম [তবে সেটাই ভাল ছিল]। আমার ভয় হচ্ছে আমার পরে আমার উম্মাতদেরকে যন্ত্রণায় ফেললাম কি-না।
যঈফ, ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[৩০৬৪]আবু ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহিহ।ওমরাহ হজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
৪৬. অনুচ্ছেদঃ কাবার অভ্যন্তরে নামাজ আদায় করা
৮৭৪. বিলাল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
কাবার অভ্যন্তরে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] নামাজ আদায় করিয়াছেন।
-সহীহ, ইবনি মা-জাহ [৩০৬৩], বুখারী, মুসলিম।ইবনি আব্বাস [রাদি.] বলেন, তিনি নামাজ আদায় করেননি, বরং তাকবীর ধ্বনি করিয়াছেন।উসামা ইবনি যাইদ, ফাযল ইবনি আব্বাস, উসমান ইবনি তালহা ও শাইবা ইবনি উসমান [রাদি.] হইতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। বিলাল [রাদি.] বর্ণিত এই হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। এই হাদীস অনুযায়ী বেশিরভাগ আলিম মত দিয়েছেন। কাবার অভ্যন্তরে নামাজ আদায় করাতে কোন সমস্যা আছে বলে তারা মনে করেন না; ঈমাম মালিক বলেন, নফল নামাজ কাবার অভ্যন্তরে আদায় করাতে কোন সমস্যা নেই; তবে ফরয নামাজ আদায় করা মাকরূহ। ঈমাম শাফি বলেন, যে কোন নামাজ কাবার অভ্যন্তরে আদায় করায় সমস্যা নেই তা ফরয হোক বা নফল হোক। কেননা, কিবলামূখী হওয়া, পবিত্রতা অর্জন করা ইত্যাদি প্রসঙ্গে ফরয ও নফলের বিধান একই।ওমরাহ হজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪৭. অনুচ্ছেদঃ [নির্মাণকল্পে] কাবা ঘর ভাঙ্গা প্রসঙ্গে
৮৭৫.আসওয়াদ ইবনি ইয়াযীদ [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ
, ইবনি যুবাইর [রাদি.] তাকে বলিলেন, তোমাকে উন্মুল মুমিনীন আইশা [রাদি.] যে হাদীস বলেছেন, তা আমার নিকটে বর্ণনা কর। আসওয়াদ বলেন, তিনি আমাকে বলেছেন যে, তাকে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছিলেনঃ যদি তোমার সম্প্রদায় জাহিলী যুগের এত নিকটে এবং ইসলাম গ্রহণের ক্ষেত্রে নবদীক্ষিত না হত তাহলে আমি কাবা ঘরকে ভেঙ্গে [পুনঃনির্মাণ করে] এর দুটো দরজা বানাতাম।
-সহীহ, ইবনি মা-জাহ [৮৭৫]।বর্ণনাকারী বলেন, পরে যখন ইবনিয যুবাইর [রাদি.] ক্ষমতাধিকারী হন তখন এটিকে ভেঙ্গে [পুনঃনির্মাণ করেন এবং] এর দুইটি দরজা তৈরী করেন।এই হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন।ওমরাহ হজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪৮. অনুচ্ছেদঃ হাতীমে নামাজ আদায় করা
৮৭৬. আইশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, কাবা ঘরের অভ্যন্তরে ঢুকে সেখানে আমি নামাজ আদায়ের ইচ্ছা করতাম। তাই রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমার হাত ধরে হিজর [হাতীম]-এ প্রবেশ করিয়ে আমাকে বললেনঃ যদি তুমি বাইতুল্লায় চাও তাহলে এই হিজরেই নামাজ আদায় করে নাও। কেননা, এ বাইতুল্লাহর অংশ। কিন্তু তোমার সম্প্রদায় কাবা ঘর ছোট করে নির্মাণ করে এবং [অর্থাভাবে] এই স্থানটিকে কাবার বাইরে রেখে দেয়।
-হাসান সহীহ, সহীহ আবু দাউদ [১৭৬৯], সহীহাহ [৪৩]।এই হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। বর্ণনাকারী আলকামার পিতার নাম বিলাল।ওমরাহ হজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান সহীহ
৪৯. অনুচ্ছেদঃ হাজরে আসওয়াদ, রুকন ও মাকামে ইবরাহীমের ফযিলত
৮৭৭. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ জান্নাত হইতে হাজরে আসওয়াদ অবতীর্ণ হয়েছিল দুধ হইতেও বেশি সাদা অবস্থায়। কিন্তু এটিকে আদম সন্তানের গুনাহ এমন কালো করে দিয়েছে।
-সহীহ, মিশকাত [২৫৭৭], তালীকুর রাগীব [২/১২৩], আল-হাজ্জুল কাবীর।আবদুল্লাহ ইবনি আমর ও আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এই হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন।ওমরাহ হজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৮৭৮. আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে আমি বলিতে শুনেছিঃ হাজরে আসওয়াদ ও মাকামে ইবরাহীম জান্নাতের ইয়াকূত [দীপ্তিশীল মূল্যবান মণি] হইতে দুটো ইয়াকূত। আল্লাহ্ তাআলা এই দুটির আলোকপ্রতা নিম্প্রভ করে দিয়েছেন। এ দুটির প্রভা যদি তিনি নিস্তেজ করে না দিতেন তাহলে তা পূর্ব-পশ্চিমের মধ্যে যা কিছু আছে সব আলোকিত করে দিত।
-সহীহ, মিশকাত [২৫৭৯]।আবু ঈসা বলেন, আবদুল্লাহ ইবনি আমির [রাদি.]-এর এই বক্তব্য মাওকুফভাবে বর্ণিত আছে। আনাস [রাদি.] হইতেও এই বিষয়ে হাদীস বর্ণিত আছে, তবে তা গারীব।ওমরাহ হজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
Leave a Reply