হজ্জ ফউত হওয়া বিষয়ক মাসালা ও মাসায়েল

হজ্জ ফউত হওয়া বিষয়ক মাসালা ও মাসায়েল

হজ্জ ফউত হওয়া বিষয়ক মাসালা ও মাসায়েল >> আল হিদায়া ফিকহ এর মুল সুচিপত্র দেখুন

কিতাবঃ আল হিদায়া, অষ্টম অনুচ্ছেদ – হজ্জ ফউত হওয়া

যে ব্যক্তি হজ্জের ইহরাম বাধল, কিন্তু আরাফার উকুফ ফউত হয়ে গেলো, এমনকি দশ তারিখের ফজর উদিত হয়ে গেলো, তাহলে তার হজ্জ ফউত হয়ে গিয়েছে। কেননা আমরা উল্লেখ করেছি যে, উকুফের সময় দশ তারিখের ফজর উদিত হওয়া পর্যন্ত প্রলম্বিত।

আর তার কর্তব্য্ তাওয়াফ ও সাঈ করে হালাল হয়ে যাবে এবং পরবর্তী বছর হজ্জ কাযা করবে। আর তার উপর দম ওয়াজিব হবে না। কেননা রসূলুল্লাহ(সাঃআঃ) বলেছেন- যে ব্যক্তি রাত্রেও আরাফার উকুফ ফউত করলো তার হজ্জ ফউত হয়ে গেলো। সুতরাং সে যেন উমরার মাধ্যমে হালাল হয়ে যায়। আর তার উপর পরবর্তী বছর হজ্জ (কাযা) করা ওয়াজিব। আর উমরা তো তাওয়াফ ও সাঈ ছাড়া আর কিছু নয়।

তাছাড়া ইহরাম বিশুদ্ধরূপে সংঘটিত হওয়ার পর দুই ইবাদতের (হজ্জ ও উমরার) যে কোন একটি আদায় করা ছাড়া উক্ত ইহরাম থেকে বের হওয়ার কোন উপায় নেই। যেমন অনির্ধারিত ইহরামের ক্ষেত্রে। তবে এখানে যেহেতু হজ্জ করিতে সে অক্ষম হয়ে গেছে, সেহেতু তার জন্য উমরা নির্ধারিত হয়ে গেছে। আর তার উপর দম ওয়াজিব হবে না। কেননা উমরার ক্রিয়াকর্ম দ্বারাই হালাল হওয়া সম্পন্ন হইয়াছে। সুতরাং হজ্জ ফউতকারীর ক্ষেত্রে উক্ত উমরা অবরুদ্ধ ব্যক্তির ক্ষেত্রে যবাহ্‌ এর পর্যায়ে গণ্য। তাই উভয়টিকে একত্র করা হবে না।

উমরা কখনো ফউত হয় না। পাচটি দিন ছাড়া সারা বছর তা জাইয রহিয়াছে। ঐ পাচদিন উমরা করা মাকরূহ। দিনগুলো হলো আরাফার দিন, কুরবানীর দিন এবং আইয়ামে তাশরীক। কেননা আ্ইশা (রাঃআঃ) হতে বর্ণীত আছে যে, এই পাচদিন তিনি উমরা মাকরূহ বলতেন। তাছাড়া এগুলো হলো হজ্জের দিন। সুতরাং সেগুলো হজ্জের জন্য নির্ধারিত থাকবে।

ইমাম আবূ ইউসুফ(রঃআঃ) হতে বর্ণীত আছে যে, আরাফার দিন যাওয়ালের (সূর্য হেলে পড়ার) পূর্বে উমরা মাকরূহ হবে না। কেননা হজ্জের রুকন (অর্থাত্‌ আরাফার উকুফ) আরম্ভ হয় যাওয়ালে পরে, পূর্বে নয়। তবে আমরা যা উল্লেখ করেছি, তাই হলো প্রকাশ্য মাযহাব।

অবশ্য মাকরূহ হওয়া সত্ত্বেও যদি এই দিনগুলোতে উমরা আদায়  করে, তাহলে শুদ্ধ হবে। এবং ঐ দিনগুলোতে সে উমরার কারণে মুহরিম থাকবে। কেননা মাকরূহ হওয়ার কারণ উমরা বহির্ভূত কারণে রহিয়াছে। আর তা হলো হজ্জের বিষয়টির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা এবং হজ্জের সময়কে হজ্জের জন্য খালেস করে রাখা। সুতরাং উমরা শুরু করা শুদ্ধ হবে।

উমরা হলো সুন্নাত (মুআক্কাদাহ)

ইমাম শাফিঈ(রঃআঃ) বলেন,তা ফরয। কেননা রসূলুল্লাহ্‌ (সাঃআঃ) বলেছেন- হজ্জের ফরযের মতো উমরাও একটি ফরয।

আমাদের প্রমাণ হলো রসূলুল্লাহ(সাঃআঃ) এর বাণী- হজ্জ হলো ফরয এবং উমরা হলো নফল।

তাছাড়া উমরা কোন সময়ের সাথে আবদ্ধ নয়। তদুপরি তা উমরা ব্যতীত অন্য (যেমন, হজ্জের ) নিয়্যত দ্বারাও আদায় হয়। যেমন হজ্জ ফউতকারীর ক্ষেত্রে। আর এটা হলো নফলের আলামত।

ইমাম শাফিই(রঃআঃ)যে হাদীস বর্ণনা করেছেন, তার ব্যাখ্যা এই যে, উমরা হজ্জের ন্যয় কতিপয় আমলের মাঝে নির্ধারিত। কেননা পরস্পর বিপরীথ হাদীস দ্বারা ফরয ছাবিত হয় না।

ইমাম কুদুরী(রঃআঃ) বলেন, উমরা হলো তাওয়াফ ও সাঈ। তামাত্তু অধ্যায়ে আমরা তা আলোচনা করেছি। আল্লাহ্‌ সঠিক বিষয় অধিক অবগত।


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply