হজ্জে কিরান বিষয়ক মাসালা ও মাসায়েল

হজ্জে কিরান বিষয়ক মাসালা ও মাসায়েল

হজ্জে কিরান বিষয়ক মাসালা ও মাসায়েল >> আল হিদায়া ফিকহ এর মুল সুচিপত্র দেখুন

কিতাবঃ আল হিদায়া, দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ – কিরান

হজ্জে কিরান হলো হজ্জে তামাত্তু ও হজ্জে ইফরাদ থেকে উত্তম।

ইমাম শাফিঈ(রঃআঃ) বলেন, তামাত্তু  কিরান  থেকে উত্তম। কেননা কুরআনে তামাত্তু এর উল্লেখ রহিয়াছে, কিন্তু কিরানের কোন উল্লেখ নেই।

ইমাম শাফিঈ(রঃআঃ) এর দলিল হলো রসূলুল্লাহ্‌ (সাঃআঃ) এর বাণী – কিরান হলো শরীআত প্রদত্ত একটি রুখসত বা অবকাশ।

আর এ জন্য যে পৃথক পৃথক হজ্জ ও উমরা আদায়ের মধ্যে অধিক তালবিয়া, দীর্ঘ সফর এবং অধিক হলক (মাথা মুড়ানো) রহিয়াছে।

আমাদের দলিল হলো রসূলুল্লাহ(সাঃআঃ) এর বাণী- হে মুহাম্মদের অনুসারিগণ! তোমরা এক সাথে হজ্জ ও উমরার ইহরাম বাধ।

তাছাড়া এই জন্য যে, তাতে দুটি ইবাদত একত্রি করা হয়। সুতরাং এটা যুগপত্ ইতিকাফ ও রোযার সাদাকা এবং তাহাজ্জুদসহ আল্লাহর রাস্তায় প্রহরাদানের সদৃশ হলো। আর তালবিয়ার তো নির্ধারিত কোন সংখ্যা নেই।

আর সফর উদ্দেশ্য মূলক ইবাদত নয়। আর হলক তো হলো ইবাদত হতে বের হওয়ার প্রক্রিয়া। সুতরাং ইমাম শাফিঈ(রঃআঃ) যে তিনটি বিষয় উল্লেখ করেছেন, তা দ্বারা হজ্জে ইফরাদ অগ্রগণ্য হবে না।

ইমাম শাফিঈ(রঃআঃ) যে হাদীস বর্ণনা করেছেন, তার উদ্দেশ্য হলো জাহেলিয়াত যুগের অধিবাসীদের এ মন্তব্য নাকচ করা যে, হজ্জের মাসকগুলোতে উমরা করা নিকৃষ্টতম পাপ।

(মালিক (রঃআঃ) যে হাদীস বর্ণনা করেছেন, কুরআনে কিরানের উল্লেখ রহিয়াছে। কেননা আল্লাহ্‌ তায়ালার বাণী- (তোমরা আল্লাহ্‌র জন্য হজ্জ ও উমরা পূর্ণ করো) এর অর্থ হলো আপন পরিবার-পরিজনের নিকট থেকে উভয়ের জন্য ইহরাম বাধা, যেমন ইতোপূর্বে আমরা উল্লেখ করেছি।

তাছাড়া এতে আগে থেকে ইহরাম বাধা হয়। এবং হজ্জ ও উমরা উভয়ের ইহরাম মীকাত থেকে শুরু করে উভয় ইবাদত থেকে ফারিগ হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। অথচ হজ্জে তামাত্তু এরূপ নয়। সুতরাং কিরান তামাত্তু থেকে উত্তম হবে। ( হজ্জে কিরান )

আর কেউ কেউ বলেছেন, আমাদের মধ্যে ও ইমাম শাফিঈ(রঃআঃ) এর মধ্যে মত পার্থক্যের ভিত্তি এই যে, আমাদের মতে কিরান হজ্জকারীকে দুটি তাওয়াফ এবং দুটি সাঈ করিতে হয়। আর ইমাম শাফিঈ(রঃআঃ) এর মতে একটি তাওয়াফ ও একটি সাঈ করিতে হয়।

ইমাম কুদূরী(রঃআঃ) বলেন, কিরানের বিবরণ এই যে, মীকাত থেকে এক সঙ্গে হজ্জ ও উমরার ইহরাম বাধবে এবং (ইহরামের দুই রাকাআতে) নামাজের পর বলিবে- হে আল্লাহ! আমি এবং আমার পক্ষ থেকে এ দুটি গ্রহণ করুন। কেননা কিরান অর্থই হলো হজ্জ ও উমরাকে একত্র করা। যেমন বলা হয়- (জিনিসটি ঐ জিনিসটির সংগে যুক্ত করলাম) যখন দুজিনিসকে একত্র করা হয়। একইভাবে কিরান হয়ে যাবে।

যদি উমরার তাওয়াফের চার চক্কর শেষ হওয়ার পূর্বে হজ্জকে উমরার মাঝে দাখিল করে দেয়। যেহেতু উভয় ইবাদতকে একত্র করা বাস্তবায়িত হইয়াছে। কেননা তাওয়াফের অধিকাংশ চক্কর এখনো বিদ্যমান রহিয়াছে।

আর যখন উভয়টি আদায় করার প্রতিজ্ঞা নিলো তখন উভয়টিকে সহজ করে দেওয়ার জন্য (আল্লাহর নিকট) প্রার্থনা করবে। এবং আদায়ের ক্ষেত্রে উমরাকে হজ্জের উপর অগ্রবর্তী করবে।

তদ্রুপ (তালবিয়ার ক্ষেত্রে) এক সাথে বলিবে- কেননা সেতো উমরার কাজ আগে করবে, সুতরাং তালবিয়াতেও উমরার কথা আগে উল্লেখ করবে।

অবশ্য যদি দুআ ও তালবিয়ায় উমরার কথা পরে উল্লেখ করে, তাহলে কোন ক্ষতি নেই। কেননা অব্যয়টি নিছক যুক্ত করার অর্থে ব্যবহৃত (অগ্র পশ্চাত অর্থে নয়)

যদি শুধু অন্তরে নিয়্যত করে এবং তালবিয়াতে হজ্জ ও উমরার কথা উল্লেখ না করে, তাহলেও যথেষ্ট হবে। নামাজের উপর কিয়াস করে।

মক্কায় প্রবেশ করার পর প্রথম কাজ হিসাবে বায়তুল্লাহর সাত চক্কর তাওয়াফ করবে। এবং সাতের প্রথম তিনটিতে রামাল করবে। তারপর সাফা ও মারওয়ার মাঝে সাঈ করবে। এগুলো হলো উমরার কার্যসমূহ।

অতঃপর হজ্জের আমল শুরু করবে। অর্থাত সাত চক্কর তাওয়াফুল কুদূম করবে। তারপর সাঈ করবে। যেমন হজ্জে ইফরাদকারীদের ক্ষেত্রে আমরা বয়ান করে এসেছি।

আর উমরার কার্যসমূহকে অগ্রবর্তী করবে। কেননা আল্লাহ্‌ তা’আলা ইরাশাদ করেছেন- আর কিরানে তো (কার্যতঃ) তামাত্তু এরই মর্ম রহিয়াছে।

হজ্জ আর উমরার মাঝখানে মাথা মুড়াবে না। কেননা হজ্জের ইহরামের প্রতি এটি অপরাধ। আর সে কুরবানীর দিন মাথা মুড়াবে। যেমন ইফরাদকারী মাথা মুড়া্য়। ( হজ্জে কিরান )

আমাদের মতে সে হালকের (মাথা মুড়ানোর) মাধ্যমে হালাল হবে, যাবাহ করার মাধ্যমে নয়। যেমন হজ্জে ইফরাদকারী (হলকের মাধ্যমে) হালাল হয়। এ হলো আমাদের মাযহাব।

ইমাম শাফিঈ(রঃআঃ) বলেন, কিরানকারী একটি তাওয়াফ ও একটি সাঈ করবে। কেননা রসূলুল্লাহ(সাঃআঃ) বলেছেন, কিয়ামত পর্যন্ত উমরা হজ্জের মাঝে প্রবিষ্ট হয়ে গেছে।

তাছাড়া হজ্জে কিরানের ভিত্তিই হলো পরস্পর প্রবিষ্টতার উপর। এ কারণেই তো তাতে এক তালবিয়া ও এক সফর এবং এক হলক যথেষ্ট হয়ে থাকে। সুতরাং রুকনসমূহ(তথা তাওয়াফ সাঈ) এর ব্যাপারেও এরূপ হবে। আমাদের প্রমাণ এই যে, সুবাই ইব্‌ন মাবাদ যখন দুটি তাওয়াফ ও দুটি সাঈ করেছিলেন, তখন উমর (রাঃআঃ) তাকে বলেছিলেন, তুমি তোমার নাবীর সুন্নাতের দিকে পথপ্রাপ্ত হয়েছো।

তাছাড়া কারণ এই যে, কিরান অর্থই হলো একটি ইবাদতকে অন্য একটি ইবাদতের সংগে যুক্ত করা। আর সেটা প্রতিটি ইবাদেতর আমল আলাদাভাবে পূণরূপে আদায় করার মাধ্যমেই বাস্তবায়িত হবে।

আর এ জন্য যে, নির্দিষ্ট ইবাদতের মধ্যে প্রবিষ্টতা প্রয়োগ হয় না।

আর সফর তো হলো ইবাদত পর্যন্ত পৌছার মাধ্যমে এবং তালবিয়া হলো ইহরাম বাধার জন্য, আর মাথা মুড়ানো হলো ইহরাম থেকে হালাল হওয়ার জন্য। সুতরাং এ সকল কাজ তো উদ্দেশ্যমূলক নয়। পক্ষান্তরে রুকনসমূহ হলো উদ্দিষ্ট। তুমি কি লক্ষ্য করছ না যে, নফল নামাজের দুই দুই রাকাআত একত্রে আদায় করলে পরস্পর প্রবিষ্ট হয় না, অথচ এক তাহরীমা দ্বারাই তা আদায় করা যায়।

ইমাম শাফিঈ(রঃআঃ) এর বর্ণীত রিওয়ায়াতের অর্থ হলো উমরার ওয়াক্ত হজ্জের ওয়াক্তের অন্তর্ভূক্ত হইয়াছে।

ইমাম মুহাম্মাদ(রঃআঃ) বলেন, যদি কিরানকারী উমরা ও হজ্জের জন্য প্রথমেই দুই তাওয়াফ করে নেয় এবং এরপর দুই সাঈ করে, তাহলে তার জন্য যথেষ্ট। কেননা তার উপর যা কর্তব্য ছিলো, তা সে আদায় করেছে। তবে উমরার সাঈ বিলম্বিত করায় এবং তাওয়াফে কুদূমকে উমরার সাঈর উপর অগ্রবর্তী করায় সে মন্দ কাজ করল। তবে তার উপর কিছুই ওয়াজিব হবে না।

সাহেবাইনের মতে এ হুকুম স্পষ্ট। কেননা তাদের মতে উমরা ও হজ্জের কোন কাজ অগ্রবর্তী বা বিলম্বিত করার কারণে দম ওয়াজিব হয় না।

আর ইমাম আবূ হানফা(রঃআঃ) এর মতে তাওয়াফে কুদূম হলো সুন্নাত। আর তা তরকের দ্বারা কম ওয়াজিব হয় না। সুতরাং সুন্নাতকে অগ্রবর্তী করার দ্বারা দম ওয়াজিব না হওয়া আরো স্বাভাবিক। আর অন্য আমলে ব্যস্ত হওয়ার কারণে সাঈকে বিলম্বিত করার দ্বারা দম ওয়াজিব হয় না। সুতরাং তাওয়াফ সম্পাদনের সাঈ বিলম্বিত হওয়াার কারণে দম ওয়াজিব হবে না।

ইমাম কুদূরী(রঃআঃ) বলেন, কুরবানীর দিন যখন জামরায় কঙ্কর নিক্ষেপ করে ফেলবে তখন এক বকরী কিংবা এক গরু কিংবা এক উট কিংবা বাদানার (উটের ) এক-সপ্তমাংশ কুরবানী দিবে। এ হলো কিরানের দম। কেননা কিরানে তামাত্তু-এর মর্ম রহিয়াছে। আর তামাত্তু এর ক্ষেত্রে হাদী ওয়াজিব হওয়া কুরআনের ভাষ্যে প্রমাণিত। আর হাদী উট দ্বারা কিংবা গরু দ্বারা কিংবা বকরী দ্বারা হয়ে থাকে। হাদী অধ্যায়ে এ প্রসংগে আলোচনা করবো ইনশাল্লাহ্‌।

ইমাম কুদূরী(রঃআঃ) বাদানাহ্‌ দ্বারা এখানে উট উদ্দেশ্যে করেছেন। যদিও বাদানাহ শব্দটি উট ও গরু উভয়কে অন্তর্ভূক্ত করে। যেমন ইতোপূর্বে আমরা উল্লেখ করে এসেছি। উটের সাতভাগের একভাগ যেমন জাইয তেমনি গরুর সাতভাগের একভাগও জাইয।

যদি যাবাহ করার মতো কিছু তার না থাকে, তাহলে হজ্জের দিনগুলোতে তিন দিন রোযা রাখবে, যার শেষ দিন হবে আরাফার দিন। আর সাতদিন রোযা রাখবে আপন পরিবার-পরিজনের নিকট ফিরে আসার পর। কেননা, আল্লাহ্‌ তা’আলা ইরশাদ করেছেন-

যে ব্যক্তি যাবাহ করার মতো কিছু না পায় সে হজ্জের সময় তিন দিন রোযা রাখবে আর সাতটি রোযা রাখবে যখন তোমরা ফিরে আসবে। এ-ই হলো পূর্ণ দশটি।

নাস যদিও তামাত্তু সম্পর্কে নাযিল হইয়াছে, কিন্তু কিরানও তার সমতুল্য। কেননা (এখানেও) সে দুটি ইবাদত আদায়ের দ্বারা উপকৃত হচ্ছে। আর আয়াতের হজ্জ শব্দটি দ্বারা হজের সময় উদ্দেশ্য। আর তা আল্লাহই বেশী জানেন। কেননা হজ্জ নিজস্বভাবে রোযার কাল হতে পারে না। তবে সর্বোত্তম হলো ইয়াওমুত্তারবিয়ার একদিন পূর্ব থেকে অর্থাত্‌ সাত তারিখ থেকে এবং ইয়ামুত্তারবিয়াতে (আট তারিখে) এবং ইয়াওমে আরাফায় (নয় তারিখে) এই তিন দিনে রোযা রাখা। কেননা রোযা হলো হাদীর স্থলবর্তী। সুতরাং মূল  জিনিস তথা হাদী সংগ্রহে সক্ষম হওয়ার প্রত্যাশা শেষ সময় পর্যন্ত রোযাকে বিলম্বিত করাই মুস্তাহাব হবে।

যদি হজ্জ থেকে ফারিগ হওয়ার পর মক্কায় থাকা অবস্থায় সাতটি রোযা রেখে নেয়। তাহলে তাও জাইয হবে। এর অর্থ হলো আইয়ামে তাশরীক অতিক্রান্ত হওয়ার পর। কেননা  এ দিনগুলোতে রোযা রাখা নিষিদ্ধ।

ইমাম শাফিঈ (র. বলেন, তা জাইয হবে না। কেননা তা প্রত্যাবর্তনের সাথে সম্পৃক্ত।  তবে যদি মক্কায় থেকে যাওয়ার নিয়্যত করে , তাহলে প্রত্যাবর্তন সম্ভাবনা রহিত হওয়ার কারণে মক্কাতে রোযা রাখা যথেষ্ট হবে।

আমাদের দলিল এই যে, (আয়াতে উল্লেখিত) এর অর্থ হলো যখন তোমরা হজ্জ থেকে প্রত্যাবর্তন করো অর্থাত্‌ হজ্জ সম্পন্ন করে ফেল। কেননা সম্পন্ন হওয়া পরিবার-পরিজনের নিকট প্রত্যাবর্তনের কারণ। কারণ সাব্যস্ত হওয়ার পরই রোযা আদায় করা হচ্ছে। সুতরাং তা জাইয হবে।

যদি তার রোযা ফউত হয়ে যায় আর ইয়াওমুন নহর এসে পড়ে তাহলে দম ছাড়া আর কিছু যথেষ্ট হবে না।

ইমাম শাফিঈ(রঃআঃ) বলেন, এ তাশরীকের দিনগুলোর পরে রোযা রেখে যাবে। কেননা এগুলো নির্ধারিত সময়ের সিয়াম। সুতরাং রমাযানের সাওমের ন্যায় এগুলো কাযা করা হবে। ই

ইমাম মালিক(রঃআঃ) বলেন, আইয়ামে তাশরীকেই সিয়াম পালন করবে। কেননা আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেছেন- যে ব্যক্তি কিছু না পায় তার জন্য বিধান হলো হজ্জের সময় তিন দিনের সিয়াম পালন। আর এই দিনগুলো হজ্জের সময়।

আমাদের দলিল হলো  এই দিনগুলোতে সিয়াম পালনের নিষেধ সংক্রান্ত প্রসিদ্ধ হাদীস রহিয়াছে। সুতরাং নাস এই হাদীস দ্বারা র্শতযুক্ত হবে। অথবা এ জন্য যে (নিষিদ্ধ দিনে আদায় করলে) তা ত্রুটিমুক্ত হয়ে যাবে। সুতরাং তা দ্বারা এ রোযা আদায় হবে না, যা পূর্ণ আকারে ওয়াজিব হইয়াছে।

কিন্তু এর পরে আর কাযা করবে না। কেননা রোযা হলো (হাদী যবাহ করার) স্থলবর্তী আর স্থলবর্তী শুধু শরীআত কৃর্তক নির্ধারণ করা হয়। আর নাস সেটাকে হজ্জের সময়ের সাথে সম্পৃক্ত করেছে। আর দম জাইয হওয়া হল মৌলিক বিধান অনুসারে।

উমর (রাঃআঃ) হতে বর্ণীত আছে যে, এ ধরণের ক্ষেত্রে তিনি বকরী যবাহ করার আদেশ করেছেন।

যদি হাদী সংগ্রহ করিতে সক্ষম না হয় তাহলে হালাল হয়ে যাবে আর তার উপর দুটি দম ওয়াজিব হবে। একটি তো হলো দুই ইবাদত একত্র করার সুবিধা ভোগের দম আর দ্বিতীয়টি হলো হাদী যবাহ করার পূর্বে হালাল হওয়ার দম।

কিরান হজ্জকারী যদি মক্কা প্রবেশ না করে আরাফাত অভিমুখে চলে যায়, তাহলে সে উকুফের মাধ্যমে উমরা তরককারী হয়ে গেলো। কেননা এখন তার পক্ষে উমরা আদায় করা সম্ভব নয়। কারণ তাহলে সে উমরার কার্যগুলোক হজ্জের কার্যগুলোর উপর ভিত্তিকারী হবে। অথচ সেটা শরীআত সম্মত নয়।

তবে শুধু আরাফা অভিমুখে যাত্রা করা দ্বারাই সে উমরা তরককারী হয়ে যাবে না।

ইমাম আবূ হানীফা(রঃআঃ) এর মাযহাবের এ-ই বিশুদ্ধ মত। তার মতে এই ব্যক্তির মাঝে এবং জুমুআর দিন যুহর আদায় করার পর জুমুআর জন্য যাত্রাকারী ব্যক্তির মাঝে পার্থক্যের কারণ এই যে, জুমুআর ক্ষেত্রে যুহর আদায় করার পরও জুমুআ আদায়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা করার কুরআনী আদেশ তার উপর আরোপিত হয়। পক্ষান্তরে কিরান ও তামাত্তু এর ক্ষেত্রে উমরা আদায়ের পূর্বে যাত্রা করা নিষিদ্ধ। সুতরাং উভয় অবস্থার মাঝে পার্থক্য রহিয়াছে।

ইমাম কুদূরী(রঃআঃ) বলেন, আর তার যিম্মা থেকে কিরানের দম রহিত হয়ে যাবে। কেননা যখন উমরা বর্জিত হলো তখন দুই ইবাদত আদায়ের সুবিধা সে লাভ করেনি।

তবে উমরা শুরু করে তা তরক করার কারণে তার উপর দম ওয়াজিব। এবং উমরা কাযা করিতে হবে। কেননা উমরা শুরু করা বিশুদ্ধ ছিলো। সুতরাং সে অবরুদ্ধ ব্যক্তির সদৃশ হলো। আল্লাহই অধিক অবগত। ( হজ্জে কিরান )


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply