নামাজের সময় মাসআলা – আল হিদায়া ফিকাহ

নামাজের সময় মাসআলা – আল হিদায়া ফিকাহ

নামাজের সময় মাসআলা – আল হিদায়া ফিকাহ >> আল হিদায়া ফিকহ এর মুল সুচিপত্র দেখুন

কিতাবঃ আল হিদায়া, প্রথম অনুচ্ছেদ : নামাজের সময়সমূহ

  1. পরিচ্ছেদঃ নামাজের মুসতাহাব ওয়াক্ত
  2. পরিচ্ছেদঃ নামাজের মাকরূহ ওয়াক্ত

ভোরের দ্বিতীয় আলো যখন উদিত হয়, আর দ্বিতীয় আলো হলো যা দিগন্তে বিস্তৃত হয়, আর তার শেষ সময় হলো যতক্ষণ না সূর্য উদিত হয়। কেননা হযরত জিবরীল (আঃ) ইমামতি সম্পর্কিত হাদিসে বণির্ত আছে যে, তিনি প্রথম দিন ফজরের নামাযে রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর ইমাম হয়ে নামাজ আদায় করেন যখন আলো উদ্ভাসিত হয়। আর দ্বিতীয় দিন (নামাজ আদায় করেন) যখন খুব ফরসা হয়ে গলো, এমন কি সূর্য উদিত হওয়ার উপক্রম হল। হাদিসের শেষে রহিয়াছে-এরপর হযরত জিবরীল (আঃ) বলিলেন- এ দুই সময়ের মধ্যবর্তী সময়টি হলো আপনার ও আপনার উম্মতের জন্য সময়।

ধর্তব্য নয়। ফজরুল কাযিব হচ্ছে লম্বা-লম্বিতে উদ্ভাসিত আলো, যার পর অন্ধকার থেকে যায়। কেননা রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন-
বিলালের আযান যেন তোমাদের বিভ্রান্ত না করে। তদ্রুপ লম্বালম্বি আলো (যেন তোমাদের বিভ্রান্ত না করে)। দিগন্তে উদ্ভাসিত অর্থাত্ বিস্তৃত আলোই হলো ফজরের সময়।
যুহরের প্রথম সময় হলো যখন সূর্য হেলে পড়ে। কেননা জিবরীল (আঃ) প্রথম দিন সূর্য হেলে পড়ার সময় ইমামতি করেছেন।
আবূ হানীফা (রঃআঃ) এর মতে যুহরের শেষ সময় হলো যখন প্রতিটি বস্তুর ছায়া মধ্যাহ্ন ছায়ার বাদ দিয়ে দ্বিগুণ হয়ে যায়। আর দ্বিতীয় ইমামদ্বয় বলেন, যখন প্রতিটি জিনিসের ছায়া তার সমান হয়। ইহাও ইমাম আবূ হানীফা (রঃআঃ) হতে বর্ণীত, আরেকটি মত।

মধ্যাহ্ন ছায়া হলো ঠিক মধ্যাহ্নকালে কোন বস্তুর যে ছায়া হয়, তাই। দ্বিতীয় ইমামদ্বয়ের দলিল এই যে, জিব্রীল (আঃ) প্রথম দিন এ সময়ে আসরের ইমামতি করেছেন।
ইমাম আবূ হানীফা (রঃআঃ) এর দলিল হলো, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন-
যুহরকে তোমরা শীতল করে পড়ো। কেননা গরমের প্রচণ্ডতা জাহান্নামের তীব্রতা থেকেই আসছে।
আর আরব দেশে (প্রতিটি বস্তুর ছায়া তার সমান হওয়ায়) এ সময়টাতেই গরম প্রচণ্ডতম হয়। সুতরাং হাদিস যখন পরস্পর বিরোধপূর্ণ হলো তখন সন্দেহবশতঃ সময় শেষ হবে না।

আসরের প্রথম সময় হলো যখন উভয় মত অনুসারে যুহরের সময় পার হয়ে যায়। আর তার শেষ সময় হলো যতক্ষণ না সূর্য ডুবে যায়। কেননা রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন- যে ব্যক্তি সূর্য অস্তের আগে আসরের এক রাকাআত পেয়ে গেল, সে আসরের নামাজ পেয়ে গেলো।

মাগরিবের প্রথম সময় হলো সূর্য যখন ডুবে যায় এবং তার শেষ সময় হলো যতক্ষণ না অদৃশ্য হয়।
ইমাম শাফিঈ (রঃআঃ) বলেন, তিন রাকাআত পড়ার পরিমাণ সময় হলো মাগরিবের সময়। কেননা জিবরীল (আঃ) দুদিন একই সময়ে মাগরিবের ইমামতি করেছেন।

আমাদের দলিল হলো রাসূলু্ল্লাহ্ (সাঃআঃ) বলেছেন-
মাগরিবের প্রথম সময় হলো যখন সূর্য ডুবে এবং তার শেষ সময় হলো যখন অদৃশ্য হয়।
ইমাম শাফিঈ (রঃআঃ) কে হাদিস প্রমাণ স্বরূপ পেশ করেছেন, তাতে বিলম্ব না করার কারণ হল মাকরূহ থেকে বেঁচে থাকা। ইমাম আবূ হানীফা (রঃআঃ) এর অর্থ দিগন্তের ফরসা আলো, যার লালিমা পরে দেখা দেয়। পক্ষান্তরে ইমাম ইউসুফ ও মুহাম্মাদ (রঃআঃ) এর মতে লালিমাটিই হলো এরূপ। এরই অনুরূপ একটি বর্ণনা ইমাম আবূ হানীফা (রঃআঃ) থেকেও পাওয়া যায়। আর এ-ই হল ইমাম শাফিঈ (রঃআঃ) এরও (পূর্ববর্তী) অভিমত। কেননা, রাসুলুল্লাহ্ (সাঃআঃ) বলেছেন- শায়ক হলো দিগন্ত লালিমা।

ইমাম আবূ হানীফা (রঃআঃ) এর দলিল হলো রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর নিম্নোক্ত বাণী- মাগরিবের শেষ সময় হলো, যখন দিগন্ত কালো হয়ে যায়। ইমাম শাফিঈ (রঃআঃ) এর বর্ণীত হাদিসটি ইবন উমর (রাঃআঃ) এর উপর মওকুফ ইমাম মালিক মুআত্তা গ্রন্থে তা উল্লেখ করেছেন, আর এ সম্পর্কে সাহাবায়ে কিরামের মধ্যে মতপার্থক্য রহিয়াছে।

‘ঈশার প্রথম সময় হলো যখন অদৃশ্য হয়ে যায় এবং তার শেষ সময় হলো যতক্ষণ না ফজর (সুবহি সাদিক) উদিত হয়। কেননা রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন- ‘ঈশার শেষ সময় হলো যতক্ষণ না ফজর উদিত হয়। রাত্রের তৃতীয়াংশ অতিক্রান্ত দ্বারা ঈশার শেষ সময় নির্ধারণের ব্যাপারে এ হাদিস ইমাম শাফিঈ (রঃআঃ) এর বিপক্ষে দলিল।

বিতরের প্রথম সময় হলো ‘ঈশার পরে এবং তার শেষ সময় হলো যতক্ষণ না ফজর উদিত হয়। কেননা রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বিতর সম্পর্কে বলেছেন- ‘ঈশা ও ফজরের মধ্যবর্তী সময়ে তোমরা তা আদায় কর।
হিদায়া গ্রন্থকার বলেন, এটা সাহেবাইনের মত। আর ইমাম আবূ হানীফা (রঃআঃ) এর মতে ‘ঈশার সময়ই হচ্ছে বিতরের সময়। তবে তারতীব ওয়াজিব হওয়ার কারণে স্মরণ থাকা অবস্থায় বিতরকে ‘ঈশার আগে আদায় করা যাবে না।

পরিচ্ছেদঃ নামাজের মুসতাহাব ওয়াক্ত ( নামাজের সময় মাসআলা )

ফজর ফরসা হওয়ার পরে আদায় করা মুসতাহাব। কেননা রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন- তোমরা ফজর ফরসা হয়ে যাওয়ার পর আদায় কর। কেননা, এতেই রহিয়াছে অধিক সাওয়াব।
ইমাম শাফিঈ (রঃআঃ) বলেন, প্রত্যেক নামাজ অবিলম্বে আদায় করা মুসতাহাব। আামাদের বর্ণীত এ হাদিস আগামীতে বর্ণীতব্য হাদিস তাঁর বিপক্ষে দলিল।

গ্রীষ্মকালে যুহরের নামাজ সূর্যের তাপ কমে আসলে এবং শীতকালে আউয়াল ওয়াকতে আদায় করা মুসতাহাব। প্রমাণ ইতোপূর্বে আমাদের বর্ণীত হাদিস। আনাস (রাঃআঃ) বর্ণীত হাদিস যে, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) শীতকালে যুহর অবিলম্বে আদায় করিতেন এবং গ্রীষ্মকালে সূর্যের তাপ কমে আসলে আদায় করিতেন।

শীত-গ্রীষ্ম উভয় মৌসুমে সূর্য বির্বণ না হওয়া পর্যন্ত আসর বিলম্ব করা মুসতাহাব। কেননা, যেহেতু আসরের পরে নফল নামাজ মাকরূহ; সুতরাং বিলম্বে আদায় অধিক নফল আদায়ের অবকাশ পাওয়া যায়। আর ধর্তব্য হলো সূর্যের গোলক বিবর্ণ হওয়া। অর্থাত্ এমন অবস্থা হওয়া, যাতে চোখ না ধাঁধাঁয়। এই বিশুদ্ধ মত। আর এ পর্যন্ত বিলম্ব করা মাকরূহ্।
মাগরিবের নামাজ জলদি আদায় করা মুস্তাহাব। কেননা ইয়াহূদীদের সাথে সাদৃশ্য হয় বিধায় তা বিলম্ব করা মাকরূহ।
রাসুলুল্লাহ্ (সাঃআঃ) বলেছেন- আমার উম্মত যতদিন মাগরিব অবিলম্বে এবং ‘ঈশা বিলম্বে আদায় করবে, ততদিন তাহারা কল্যাণের পথে থাকবে।

‘ঈশাকে রাত্রের তৃতীয়াংশের পূর্ব পর্যন্ত বিলম্বিত করা মুস্তাহাব। কেননা রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন- যদি আমার উম্মতের উপর কষ্ট হবে না মনে না করতাম তাহলে অবশ্যই আমি ‘ঈশার নামাজ রাত্রের তৃতীয়াংশ পর্যন্ত বিলম্বিত করতাম।

তাছাড়া তা, ‘ঈশার পরে হাদিসে নিষিদ্ধ আলাপ-আলোচনা করা থেকে বিরত থাকার উপায়। কারো কারো মতে গ্রীষ্মকালে তাড়াতাড়ি করিতে হবে, যাতে জামাআতে মুসল্লীর সংখ্যা কমে না যায়। মধ্যরাত পর্যন্ত বিলম্ব করা বৈধ; কেননা, মাকরূহ হওয়ার দলিল অর্থাত্ জামাআত ছোট হওয়া এবং মুস্তাহাব হওয়ার দলিল অর্থাত্ আলাপচারিতা থেকে বিরত থাকা পরস্পর বিরোধী। সুতরাং মধ্যরাত পর্যন্ত বৈধতা প্রমাণিত হবে এবং দ্বিতীয় অর্ধেক পর্যন্ত মাকরুহ হওয়া প্রমাণিত হবে। কেননা তাতে জামাআত ছোট হয়। পক্ষান্তরে আলাপচারিতা এর আগেই বন্ধ হয়ে যায়।

তাহাজ্জুদের নামাজ আদায়ে অভ্যস্ত ব্যক্তির বিতরের ক্ষেত্রে রাত্রের শেষ ভাগ পর্যন্ত বিলম্ব করা মুস্তাহাব। আর যে জাগ্রত হ্ওয়ার ব্যাপারে অনিশ্চিত, সে ঘুমের আগেই বিতর আদায় করবে। কেননা রাসূলূল্লা্হ্ (সাঃআঃ) বলেছেন-
যে ব্যক্তি আশংকা করে যে, শেষ রাত্রে জাগ্রত হতে পারিবে না, সে যেন (আগে-ভাগেই) বিতর আদায় করে। আর যে শেষরাত্রে জাগ্রত হওয়ার আশা করে, সে যেন শেষ রাত্রেই বিতর আদায় করে।

মেঘলা দিন হলে ফজর, যুহর ও মাগরিব বিলম্বে আদায় করা এবং আসর ও ‘ঈশা জলদি আদায় করা মুস্তাহাব। কেননা মেঘ-বৃষ্টির কারণে ‘ঈশা বিলম্ব করায় জামাআত ছোট হবে। আর আসর বিলম্ব করিলে মাকরুহ ওয়াক্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। আর ফজরে সে সম্ভাবনা নেই। কেননা সে সময় দীর্ঘ।
ইমাম আবূ হানীফা (রঃআঃ) থেকে সতর্কতার জন্য সকল নামাজে বিলম্বের নির্দেশ বর্ণীত আছে। কেননা সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পরে (কাযা হলেও) নামাজ আদায় জাইয আছে। কিন্তু সময়ের আগে জাইয নেই।

পরিচ্ছেদঃ নামাজের মাকরূহ ওয়াক্ত ( নামাজের সময় মাসআলা )

সূর্যোদয়ের সময়, মধ্যাহ্নে সূর্যের মধ্যাকাশে অবস্থানকালে এবং সূর্যাস্তের সময় নামাজ জাইয নেই। কেননা, ‘উকবা ইবন ‘আমির (রাঃআঃ) বলেছেন-
তিনটি ওয়াকত রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাদেরকে নামাজ আদায় করিতে এবং আমাদের মৃতদের দাফন করিতে নিষেধ করেছেনঃ সূর্যোদয় কালে, সূর্য উপরে উঠে যাওয়া পর্যন্ত; মধ্যাহ্ন কালে সূর্য হেলে পড়া পর্যন্ত; আর যখন সূর্য অস্ত যাওয়ার উপক্রম হয়, তখন থেকে অস্ত যাওয়া পর্যন্ত।

তার বক্তব্য এর উদ্দেশ্য হলো জানাযার সালাত্। কেননা (ইজমা দ্বারা প্রমাণিত যে, উক্ত সময়) দাফন করা মাকরূহ নয়। আলোচ্য হাদিস তার অর্থ-ব্যপকতার কারণে ইমাম শাফিঈ (রঃআঃ) এর বিপক্ষে প্রমাণ। ফরযসমূহ এবং মক্কাকে বিশিষ্ট করার উদ্দেশ্য এবং ইমাম আবূ ইউসুফ (রঃআঃ) এর বিপক্ষে প্রমাণ জুমুআর দিন মধ্যাহ্ন কালে নফল নামাজ জাইয করার উদ্দেশ্য।
ইমাম কুদূরী (রঃআঃ) বলেন, জানাযার নামাজ জাইয হবে না।
আমাদের বর্ণীত হাদিসের দলিল মুতাবিক। ( নামাজের সময় মাসআলা )

সাজদায়ে তিলাওয়াতও জাইয হবে না। কেননা, তা নামাজেরই অংশ বিশেষ।
তবে সূর্যাস্তের সময় সে দিনের আসর আদায় করা যাবে। নামাজ ওয়াজিব হওয়ার বা হেতু হচ্ছে সময়ের সেই অংশ, যা বিদ্যমান আছে। (অর্থাত্ নামাজ শুরুর পূর্ব মুহূর্ত)। কেননা, হেতুর সম্পর্ক যদি সমগ্র সময়ের সাথে হয়, তাহলে সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পরে নামাজ আদায় করা ওয়াজিব হয়। আর সময়ের বিগত অংশের সাথে যদি সম্পর্কিত হয়, তাহলে শেষ সময়ে নামাজ আদায়কারী হয় নামাজ কাযাকারী। বিষয়টি যখন এমনই হলো, তবে তো সে যেমন তার উপর ওয়াজিব হইয়াছে, তেমনই আাদায় করেছে। আর অন্যান্য নামাজ এর ব্যতিক্রম। কেননা সেগুলো পূর্ণাংগ সময়ে ওয়াজিব হইয়াছে, সুতরাং অপূর্ণাংগ সময়ে তা আদায় হতে পারে না।

হিদায়া গ্রন্থকার বলেন, জানাযার নামাজ ও তিলাওয়াতের সাজদা সম্পর্কে উল্লেখিত নাজাইযের অর্থ হলো মাকরূহ হওয়া। সুতরাং ঐ সময়ে কেউ যদি জানাযার নামাজ আদায় করে কিংবা তখন সাজদার আয়াত তিলা্ওয়াত করে উক্ত তিলাওয়াতের সাজদা করে তাহলে জাইয হবে। কেননা, যেমন নাকিস সময়ে তা ওয়াজিব হইয়াছে, তেমনি নাকিস সময়ে তা আদায় করা হইয়াছে। কেননা জানাযা উপস্থিত হওয়া ও তিলাওয়াত করার মাধ্যমেই তা ওয়াজিব হয়।

ফজরের পরে সূর্যোদয় পর্যন্ত নফল পড়া, এবং আসরের পরে সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত নফল আদায় করা মাকরূহ। কেননা বর্ণীত আছে যে, নাবী (সাঃআঃ) তা নিষেধ করেছেন। তবে এই দুই সময়ে কাযা নামাজ ও তিলাওয়াতের সাজদা আদায় করিতে পারে এবং জানাযার নামাজ আদায় করিতে পারে। কেননা, এই মাকরূহ হওয়া ছিলো ফরযের মর্যাদার ভিত্তিতে, যেন সম্পূর্ণ সময়টা নামাজে মশগুল-তুল্য হয়ে যায়। (এই মাকরূহত্ব) সময়ের নিজস্ব কোন প্রকৃতির কারণে নয়। সুতরাং ফরযসমূহের ক্ষেত্রে এবং যে সকল ইবাদত স্বকীয়ভাবে ওয়াজিব হইয়াছে, যেমন, তিলাওয়াতের সিজদা, সেগুলোর ক্ষেত্রে সময়ের মাকরূহ হওয়ার হুকুম প্রকাশ পাবে না। আর নামাজ (ও মানতকৃত নামায) এর ক্ষেত্রে তা প্রকাশ পাবে। কেননা উক্ত ইবাদতে আবশ্যকতা তার নিজের পক্ষ থেকে সৃষ্ট কারণের সাথে সম্পৃক্ত। তাওয়াফের রাকাআতদ্বয়ের ক্ষেত্রে মাকরূহ প্রকাশ পাবে। এবং ঐ ব্যক্তির ক্ষেত্রেও মাকরূহ হওয়া প্রকাশ পাবে, যে নফল নামাজ শুরু করে তা ভংগ হইয়াছে। কেননা উক্ত নামাজের ওয়াজিব হওয়া তার নিজ কারণে নয়, অন্য কারণে। আর তা হলো তাওয়াফ খতম করা এবং শুরু করা নামাজকে নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা করা।

ফজরের উদয়ের পর ফজরের দুরাকাআতের অধিক নফল আদায় মাকরূহ। কেননা নামাজের প্রতি আগ্রহ সত্ত্বেও উক্ত দুই রাকাআতের অতিরিক্ত কিছু নাবী করীম (সাঃআঃ) আদায় করেন নি।
সূর্যাস্তের পর ফরযের পূর্বে কোন নফল আদায় করবে না। কেননা তাতে মাগরিবকে বিলম্ব করা হয়। তদ্রূপ জুমুআর দিন ইমাম যখন খুতবার জন্য (হুজরা থেকে) বের হবেন, তখন থেকে খুতবা শেষ হওয়া পর্যন্ত নফল আদায় করবে না। কেননা তাতে খুতবা শোনা থেকে অন্য-মনস্কতা হয়। ( নামাজের সময় মাসআলা )


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply