উমরা হজ্জ , তামাত্তু, ইহরাম, মুহরিম, শিঙ্গা, শিকার ও শত্রু

উমরা হজ্জ , তামাত্তু, ইহরাম, মুহরিম, শিঙ্গা, শিকার ও শত্রু

উমরা হজ্জ , তামাত্তু, ইহরাম, মুহরিম, শিঙ্গা, শিকার ও শত্রু ,এই অধ্যায়ে হাদীস=২৫৮ টি ( ৬৯৬-৯৫৩ পর্যন্ত ) >> মুয়াত্তা ইমাম মালিক এর মুল সুচিপত্র দেখুন

অধ্যায় – ২০ঃ হজ্জ

পরিচ্ছেদঃ ১৭হজ্জের মাসসমূহে উমরা করা

৭৫০

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

তাঁর কাছে রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, রসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তিনবার উমরা করিয়াছেন, একবার হুদায়বিয়ার বৎসর, আরেকবার উমরাতুল কাযা, আরেকবার উমরা-ই-জি ইররানা। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

উমরা হজ্জ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৭৫১

হিশাম ইবনি উরওয়াহ্ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

হিশাম ইবনি উরওয়াহ্ [রাহিমাহুল্লাহ] তাঁর পিতা হইতে বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তিনবার উমরা করিয়াছেন। এক উমরা শাওয়ালে আর দুই উমরা যিলকদে। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

উমরা হজ্জ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৭৫২

আবদুর রহমান ইবনি হারমালা আসলামী [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আবদুর রহমান ইবনি হারমালা আসলামী [রাহিমাহুল্লাহ] বর্ণনা করেন এক ব্যক্তি সাঈদ ইবনি মুসায়্যাব [রাহিমাহুল্লাহ]-কে জিজ্ঞেস করিল হজ্জের পূর্বে উমরা আদায় করব কি ? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-ও হজ্জের পূর্বে উমরা করেছিলেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

উমরা হজ্জ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৭৫৩

সাঈদ ইবনি মুসায়্যাব [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

নিশ্চয় উমার ইবনি আবী সালমা [রাহিমাহুল্লাহ] উমার ইবনি খাত্তাব [রাদি.]-এর নিকট শাওয়াল মাসে উমরা করার অনুমতি চাইলে তিনি অনুমতি দেন। অতঃপর তিনি উমরা আদায় করে হজ্জ না করে বাড়ি ফিরে আসেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

উমরা হজ্জ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ১৮উমরার মধ্যে কোন সময় লাব্বায়কা বলা বন্ধ করা যাবে

৭৫৪

হিশাম ইবনি উরওয়াহ্ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

হিশাম ইবনি উরওয়াহ্ [রাহিমাহুল্লাহ] তাঁর পিতা হইতে বর্ণনা করেন তিনি উমরাতে হারাম শরীফে প্রবেশ করার পর লাব্বায়কা বলা বন্ধ করিতেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, তানয়ীম [মক্কার অদূরবর্তী হারাম শরীফ বহির্ভূত একটি স্থান] হইতে যে ব্যক্তি উমরায় ইহরাম বাঁধবে, বায়তুল্লাহ্ শরীফ দৃষ্টিগোচর না হওয়া পর্যন্ত সে যেন লাব্বায়কা বলা বন্ধ না করে।

ইয়াহইয়া [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, মালিক [রাহিমাহুল্লাহ]-কে জিজ্ঞেস করা হল মক্কার বাহিরে বসবাসকারী ব্যক্তি মীকাত হইতে উমরার ইহরাম বেঁধে আসলে কখন তাকে লাব্বায়কা বলা বন্ধ করিতে হইবে ? তিনি বলিলেন, হারাম শরীফে প্রবেশ করার পর সে উহা বন্ধ করে দেবে। আবদুল্লাহ্ ইবনি উমার [রাদি.]-ও তদ্রূপ করিতেন বলে জানা গিয়েছে।

উমরা হজ্জ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ১৯হজ্জে তামাত্তু

৭৫৫

মুহাম্মদ ইবনি আবদুল্লাহ্ ইবনি হারিস [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

সাদ ইবনি আবি ওককাস [রাদি.] ও যাহ্‌হাক ইবনি কায়েস [রাদি.]-এর মধ্যে হজ্জে তামাত্তু সম্পর্কে আলোচনা হচ্ছিল। যাহ্‌হাক [রাদি.] বলিলেন : আল্লাহ তাআলার হুকুম-আহকাম সম্পর্কে অজ্ঞ লোকেরাই হজ্জে তামাত্তু করে। সাদ বলিলেন, ভ্রাতুষ্পত্র, তোমার কথাটা ঠিক হয়নি। যাহ্‌হাক [রাদি.] বলিলেন, উমার ইবনি খাত্তাব [রাদি.] হজ্জে তামাত্তু করা নিষেধ করিয়াছেন। সাদ [রাদি.] বলিলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] নিজে হজ্জে তামাত্তু করিয়াছেন আর আমরাও তাঁর সঙ্গে উহা করেছি। [তিরমিজি ৮২২, নাসাঈ ২৭৩৪, উমার [রাদি.] তামাত্তু নিষেধ করিয়াছেন বুখারি ও মুসলিমে বর্ণিত রয়েছে আবু মূসা [রাদি.] হইতে,]

এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য

৭৫৬

আবদুল্লাহ্ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আল্লাহর কসম, হজ্জের পূর্বে উমরা করা এবং কুরবানীর পশু সঙ্গে নিয়ে যাওয়া যিলহজ্জ মাসে হজ্জ করে আবার উমরা করা হইতে আমার কাছে বেশি প্রিয়। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

উমরা হজ্জ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৭৫৭

আবদুল্লাহ্ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

যদি কেউ হজ্জের মাসে অর্থাৎ শাওয়াল, যিলকাদা, যিলহজ্জ মাসে হজ্জের পূর্বে উমরা আদায় করে মক্কায় এতদিন অবস্থান করে, যতদিনে সে হজ্জই আদায় করিতে পারে, তার এই হজ্জ তামাত্তু বলে গণ্য হইবে এবং সামর্থ্য অনুযায়ী তার উপর কুরবানী করা জরুরী হইবে। যদি কুরবানী করার সামর্থ্য তার না থাকে তবে মক্কায় অবস্থানকালে তিনদিন এবং বাড়ি ফিরে আর সাতদিন তাকে রোযা রাখতে হইবে। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, উক্ত হুকুম তখনই প্রযোজ্য হইবে যখন উমরা সমাপন করে হজ্জ পর্যন্ত মক্কায় অবস্থানরত থাকিবে এবং হজ্জও করিবে।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, মক্কার বাসিন্দা কোন ব্যক্তি অন্য কোথাও গিয়ে বসতি স্থাপন করিল। হজ্জের মাসে সে উমরা করিতে এসে মক্কা শরীফে অবস্থান করে হজ্জ সমাধা করিল। তার এই হজ্জ হজ্জে তামাত্তু বলে গণ্য হইবে। এই ব্যক্তির উপর কুরবানী করা জরুরী হইবে। কুরবানী করিতে না পারলে তাকে রোযা রাখতে হইবে। মক্কায় অপরাপর স্থায়ী বাসিন্দার মত তার হুকুম হইবে না।

ইয়াহইয়া [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, মালিক [রাহিমাহুল্লাহ]-কে জিজ্ঞেস করা হল হজ্জের মাসে মক্কার বাহিরের অধিবাসী এক ব্যক্তি উমরার ইহরাম বেঁধে মক্কায় এল এবং উমরা করে হজ্জ সমাধা করার নিয়তে মক্কায় রয়ে গেল। তার এই হজ্জ তামাত্তু বলে গণ্য হইবে কি ? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ, মক্কাবাসীদের মত তার হুকুম হইবে না। মক্কায় থাকবার নিয়ত যদিও সে করেছে, কিন্তু সে মক্কায় যখন প্রথম পদাপর্ণ করেছিল তখন সে মক্কার বাসিন্দা ছিল না। সুতরাং কুরবানী দেওয়া এবং কুরবানী দিতে হলে রোযা রাখা এইরূপ ব্যক্তির উপর ওয়াজিব হইবে। এই ব্যক্তি মক্কায় কেবল অবস্থান করার নিয়ত করেছে এবং সামনের ব্যাপার কি হইবে তাও সে জানে না। এমতাবস্থায় সে মক্কাবাসী বলে গণ্য হইবে না।

উমরা হজ্জ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৭৫৮

ইয়াহইয়া ইবনি সাঈদ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

ইয়াহইয়া ইবনি সাঈদ [রাহিমাহুল্লাহ] সাঈদ ইবনি মুসায়্যাব [রাহিমাহুল্লাহ]-কে বলিতে শুনেছেন শাওয়াল, যিলকাদা ও যিলহজ্জ মাসে উমরা করে যদি কেউ হজ্জ পর্যন্ত মক্কায় অবস্থান করে এবং হজ্জ করে নেয় তবে তার এই হজ্জ হজ্জে তামাত্তু বলে গণ্য হইবে। সামর্থ্য থাকলে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হইবে। অসমর্থ হলে হজ্জের সময় তিনদিন এবং হজ্জের পর বাড়ি ফিরে সাত দিন তাকে রোযা রাখতে হইবে। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

উমরা হজ্জ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ২০যে অবস্থায় তামাত্তু হয় না

৭৫৯

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

যে ব্যক্তি হজ্জের মাসে উমরা করে বাড়ি ফিরে গেল, আবার সে বৎসরেই হজ্জ করিল, ঐ ব্যক্তির উপর কুরবানী ওয়াজিব হইবে না। কারণ তার হজ্জ তামাত্তু বলে গণ্য হইবে না।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, মক্কার বাহিরের কোন ব্যক্তি যদি মক্কায় এসে সেখানে স্থায়িভাবে বসবাস করিতে শুরু করে এবং হজ্জের মাসে উমরা করে সেই বৎসরেই হজ্জ করে তবে তার হজ্জ তামাত্তু হইবে না। তার উপর কুরবানী বা রোযা কিছুই ওয়াজিব হইবে না। কেননা মক্কার নাগরিকত্ব গ্রহণ করায় সে মক্কাবাসীদের মত হয়ে গেল। আর মক্কায় স্থায়ী বাসিন্দাদের হজ্জে তামাত্তু হয় না।

ইয়াহইয়া [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, মালিক [রাহিমাহুল্লাহ]-কে জিজ্ঞেস করা হল, মক্কায় কোন স্থায়ী বাসিন্দা জিহাদ বা অন্য কোন সফরে বাহিরে চলে গিয়েছিল, পরে সে মক্কায় বসবাস করার উদ্দেশ্যে আবার সেখানে ফিরে এল, সে হজ্জের মাসে উমরার নিয়তে মক্কায় এসে উমরা সমাধা করার পর ঐ বৎসর হজ্জও করিল, ঐ ব্যক্তির হজ্জ কি হজ্জে তামাত্তু হইবে ? মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলিলেন, না, তার হজ্জ তামাত্তু বলে গণ্য হইবে না এবং তার উপর কুরবানী বা রোযা কিছুই ওয়াজিব হইবে না। কেননা আল্লাহ্ তাআলা ইরশাদ করিয়াছেন

ذَلِكَ لِمَنْ لَمْ يَكُنْ أَهْلُهُ حَاضِرِي الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ.

এটা তাদের জন্য যাদের পরিজনবর্গ মসজিদুল হারামের বাসিন্দা নয়। ২ ১৯৬

উমরা হজ্জ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ২১উমরা সম্পর্কীয় বিবিধ আহকাম

৭৬০

আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেন, এক উমরা আরেক উমরার মধ্যবর্তী গুনাহসমূহের জন্য কাফফারাস্বরূপ। জান্নাতই মকবুল হজ্জের প্রতিবাদ। [বুখারি ১৭৭৩, মুসলিম ১৩৪৯]

এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৭৬১

সুমাই [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

সুমাই [রাহিমাহুল্লাহ] আবু বক্‌র ইবনি আবদুর রহমান [রাহিমাহুল্লাহ]-কে বলিতে শুনেছেন, এক মহিলা রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর খিদমতে এসে আরয করিল হজ্জের সমস্ত প্রস্তুতি শেষ করা সত্ত্বেও একটি বাধার কারণে আমি হজ্জ করিতে পারিনি, এখন কি করব ? রসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলিলেন, রমযান মাসে উমরা করে নাও। রমযান মাসের উমরাতে হজ্জের সমান সওয়াব রয়েছে। [আবু দাঊদ ১৯৮৮, আল বানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন {সহীহ ও যয়ীফ সুনান আবু দাঊদ} আর ঈমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি মুরসাল]

এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য

৭৬২

আবদুল্লাহ্ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

উমার ইবনি খাত্তাব [রাদি.] বলেছেন, হজ্জ ও উমরার মাসে তোমরা ব্যবধান রেখো যাতে হজ্জ ও উমরা উভয়ই সম্পূর্ণরূপে আদায় হইতে পারে। এর উপায় হল, হজ্জের মাসে তোমরা উমরা করো না। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

উমরা হজ্জ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৭৬৩

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

তাঁর নিকট রেওয়ায়াত পৌঁছিছে যে, উসমান ইবনি আফফান [রাদি.] যখন উমরা করিতেন, মদীনায় ফিরে না যাওয়া পর্যন্ত উট হইতে অবতরণ করিতেন না। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, উমরা করা সুন্নত। এমন কোন মুসলমান দেখা যায়নি যিনি এটা পরিত্যাগ করার অনুমতি দেন।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, একই বৎসরে একাধিক উমরা করা জায়েয নয়।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, উমরার ইহরাম বেঁধে স্ত্রী সহবাস করলে উমরা বিনষ্ট হয়ে যাবে এবং তাঁর উপর আরেকটি উমরা কাযা ও একটি কুরবানী করা ওয়াজিব হইবে। তাই সত্বর তাকে উহার কাযা আদায় করে নেওয়া উচিত। যে স্থান হইতে প্রথম উমরার ইহরাম বেঁধেছিল সেই স্থান হইতেই তাকে এই কাযা উমরার ইহরাম বাঁধতে হইবে, তবে প্রথম উমরার ইহরাম নির্দিষ্ট মীকাতের পূর্বে বেঁধে থাকলে কাযা উমরার ইহরাম মীকাত হইতে বাঁধবে।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, উমরার ইহরাম বেঁধে কোন ব্যক্তি মক্কায় এল এবং জানাবত [গোসল ফরয হওয়া] অবস্থায় বা ওযূ ব্যতিরেকে সে তাওয়াফ ও সাফা-মারওয়ার সায়ী করিল। পরে ভুলবশত স্ত্রীসহবাস করিল। অতঃপর উমরার কথা তার মনে পড়ল। তখন সে গোসল বা ওযূ করে পুনরায় তাওয়াফ ও সাফা-মারওয়ার সায়ী করিবে এবং তদস্থলে অন্য একটি উমরা কাযা করিবে ও একটি কুরবানী দেবে। মহিলাও ইহরামরত অবস্থায় তদ্রূপ কিছু করলে তাকেও [পুরুষদের মত] আমল করিতে হইবে।

তানয়ীম নামক স্থান হইতে উমরার ইহরাম বাঁধার ব্যাপারে মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, হারাম শরীফ হইতে বের হয়ে যে কোন স্থান হইতে উমরার ইহরাম বাঁধতে পারবে। আল্লাহর ইচ্ছায় এই ইহরামই মুহরিমের জন্য যথেষ্ট। তবে মীকাত হইতে ইহরাম বাঁধা উত্তম। কারণ রসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] কর্তৃক নির্ধারিত স্থান হইতে ইহরাম বাঁধা নিঃসন্দেহে উত্তম এবং তানয়ীম হইতে দূরে অবস্থিত।

উমরা হজ্জ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ২২ইহরাম থাকা অবস্থায় বিবাহ করা

৭৬৪

সুলায়মান ইবনি ইয়াসার [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তাঁর আযাদকৃত গোলাম আবু রাফি এবং জনৈক আনসারী ব্যক্তিকে পাঠালেন। তাঁরা দুজনে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর পক্ষে মায়মুনা বিনতে হারিসের কাছে বিবাহের পয়গাম দিলেন। রসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তখন মদীনা হইতে মক্কার পথে যাত্রা করেননি। [সহীহ, ঈমাম তিরমিজি ৮৪১, আবু রাফি থেকে বর্ণনা করেন। আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন {সহীহ ও যয়ীফ সুনানে তিরমিজি} তবে ঈমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি মুরসাল]

এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য

৭৬৫

নুবাইহ্ ইবনি ওহাব [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

তাহাকে উমার ইবনি উবায়দুল্লাহ্ [রাহিমাহুল্লাহ]-এর এবং আবান ইবনি উসমান [রাহিমাহুল্লাহ]-এর নিকট বলে পাঠালেন, [তাঁরা দুজনে তখন ইহরাম অবস্থায় ছিলেন] শায়বাহ্ ইবনি যুবায়রের মেয়ের সহিত আমার পুত্র তালহা ইবনি উমারের বিবাহ প্রদান করিতে ইচ্ছা করেছি। আপনিও এতে শামিল হইবেন বলে আশা করি। এই সংবাদ পেয়ে আবান ইবনি উসমান [রাহিমাহুল্লাহ] আসতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে বলিলেন, উসমান ইবনি আফফান [রাদি.]-এর নিকট আমি শুনিয়াছি, তিনি বলেছেন, রসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন, মুহরিম [ইহরামরত ব্যক্তি] নিজেও বিবাহ করিবে না এবং অন্যকেও বিবাহ করাবে না এবং বিবাহের পয়গামও দিবে না। [সহীহ, মুসলিম ১৪০৯]

এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৭৬৬

আবু গাতফান ইবনি তরীফ মূররী [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আবু গাতফান ইবনি তরীফ মূররী [রাহিমাহুল্লাহ] বর্ণনা করেন তাঁর পিতা তরীফ ইহরাম অবস্থায় মক্কায় এক মহিলাকে বিবাহ করেন, কিন্তু উমার ইবনি খাত্তাব [রাদি.] এটা বাতিল বলে ঘোষণা করেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

উমরা হজ্জ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৭৬৭

নাফি [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ্ ইবনি উমার [রাদি.] বলিতেন, মুহরিম ব্যক্তি বিবাহ করিবে না বা বিবাহের পয়গাম দেবে না, নিজের হোক বা অন্যের, সকল অবস্থায়ই তা নিষিদ্ধ। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

উমরা হজ্জ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৭৬৮

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] জ্ঞাত হয়েছেন যে, সাঈদ ইবনি মুসায়্যাব [রাহিমাহুল্লাহ], সালিম ইবনি আবদুল্লাহ্ [রাহিমাহুল্লাহ] এবং সুলায়মান ইবনি ইয়াসার [রাহিমাহুল্লাহ]-কে মুহরিম ব্যক্তির বিবাহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তাঁরা সকলেই বলেছিলেন মুহরিম ব্যক্তি নিজে বিবাহ করিবে না বা বিবাহ করাবে না। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, মুহরিম ব্যক্তি ইচ্ছা করলে এবং ইদ্দতের ভিতর হইলে তার স্ত্রীর প্রতি রুজু করিতে পারে। [রজয়ী তালাক দেয়া স্ত্রীকে গ্রহণ করিতে পারে।]

উমরা হজ্জ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ২৩মুহরিম ব্যক্তির শিঙ্গা লাগানো

৭৬৯

সুলায়মান ইবনি ইয়াসার [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

ইহরাম অবস্থায় মাথায় শিঙ্গা লাগিয়েছেন এবং সেদিন তিনি মক্কাগামী পথের উপর উপস্থিত লাহ্‌ইয়া জামাল নামক স্থানে ছিলেন। [বুখারি ১৮৩৬, ঈমাম মুসলিম ইবনি ওয়াইনার বরাত দিয়ে মুত্তাসিল সনদে বর্ণনা করেন ১২০৩, তবে ঈমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি {মুরসাল}]

এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য

৭৭০

নাফি [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ্ ইবনি উমার [রাদি.] বলিতেন, বাধ্য না হলে মুহরিমের জন্য শিঙ্গা লাগানো উচিত নয়। মালিক [রাহিমাহুল্লাহ]-ও অনুরূপ মত ব্যক্ত করিয়াছেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

উমরা হজ্জ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ২৪কোন ধরনের শিকারকৃত বস্তু মুহরিম খেতে পারে

৭৭১

উমার ইবনি আবদুল্লাহ্ মাওলা আবুন নাযর [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

উমার ইবনি আবদুল্লাহ্ মাওলা আবুন নাযর [রাহিমাহুল্লাহ] নাফি [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণনা করেন তিনি ছিলেন আবু কাতাদার মাওলা। নাফি [রাহিমাহুল্লাহ] বলেছেন, আবু কাতাদা আনসারী [রাদি.] বর্ণনা করিয়াছেন যে, তিনি এক সফরে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর সাথে ছিলেন। কতিপয় মুহরিম সঙ্গীসহ তিনি পেছনে থেকে যান। তিনি নিজে অবশ্য ইহরাম বাঁধা অবস্থায় ছিলেন না। হঠাৎ একটা বন্য গাধা দৃষ্টিগোচর হল, তৎক্ষণাৎ একটি ঘোড়ায় আরোহণ করে তিনি উহা শিকার করিতে ছুটলেন। সঙ্গীদের নিকট চাবুক চাইলেন; কিন্তু কেউই দিলেন না, বর্শাখানা চাইলে তাও কেউ দিলেন না। শেষে তিনি নিজে ঘোড়া হইতে নেমে এসে বর্শা সংগ্রহ করলেন এবং উক্ত গাধাটিকে শিকার করলেন। সঙ্গিগণের কেউ কেউ এর গোশত খেলেন, আর কেউ কেউ খেতে অস্বীকৃতি জানালেন। পরে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর সাথে যখন সাক্ষাৎ হল তখন উক্ত ঘটনা তাহাকে জানালে তিনি বলিলেন, উহা এমন এক খাদ্য ছিল যা আল্লাহ্ তাআলা তোমাদেরকে খাওয়াইছেন। {১} [বুখারি ৫৪৯১, মুসলিম ১১৯৬]

{১} সামুদ্রিক প্রাণী শিকার করে মুহরিম খেতে পারে এবং স্থলে বসবাসকারী প্রাণী শিকার করা তার জন্য জায়েয নয়। মুহরিম নয় এমন ব্যক্তি যদি শিকার করে এবং মুহরিমের তাতে কোনরূপ অংশগ্রহণ বা সহযোগিতা না থাকে, তবে তা সে খেতে পারবে।

এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৭৭২

উরওয়াহ্ ইবনি যুবায়র [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

যুবায়র ইবনি আওয়াম [রাদি.] ইহরাম অবস্থায় পাথেয় হিসেবে হরিণের ভুনা গোশত সঙ্গে নিতেন। মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, সফীফ অর্থ হল কাদীদ অর্থাৎ শুকনা গোশত। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

উমরা হজ্জ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৭৭৩

বর্ণনাকারী হইতে বর্ণিতঃ

আতা ইবনি ইয়াসার [রাহিমাহুল্লাহ] আবু কাতাদা [রাদি.]-র বন্য গাধা শিকার সম্পর্কে আবুন্ নাযরের হাদীসটির মতই বর্ণনা করিয়াছেন। তবে যায়দ ইবনি আসলাম [রাহিমাহুল্লাহ] বর্ণিত হাদীসে শিকার সংক্রান্ত ঘটনায় নিম্নোক্ত বাক্যটি রয়েছে যে, রসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তখন বলেছেন, উহার কোন গোশত অবশিষ্ট আছে কি? [বুখারি ৫৪৯১, মুসলিম ১১৯৬]

এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৭৭৪

ঈসা ইবনি তালহা ইবনি ওবায়দুল্লাহ্ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

ঈসা ইবনি তালহা ইবনি ওবায়দুল্লাহ্ [রাহিমাহুল্লাহ] উমায়র ইবনি সালমা জমরী [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণনা করেন উমায়র তাহাকে খবর দিয়েছেন যে, বাহযী {১} [রাদি.] বর্ণনা করেন ইহরাম বেঁধে রসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] মক্কার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেন, রওহা নামক স্থানে পৌঁছে একটি বন্য গাধা দেখিতে পাওয়া গেল। এটা সম্পর্কে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর সাথে আলোচনা করলে তিনি বলিলেন, ছেড়ে দাও. এখন হয়তো উহার মালিক আসবে। ততক্ষণে বাহযী এসে পৌঁছালেন, আর তিনিই উহার মালিক ছিলেন। তিনি বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! এটা আপনার, সকল ইখতিয়ার আপনারই। শেষে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নির্দেশে আবু বক্‌র [রাদি.] সঙ্গীদের মধ্যে উহার গোশত বণ্টন করে দেন। পরে সকলেই সম্মুখে অগ্রসর হলেন। রুয়াইসা ও আরজ নামক স্থানদ্বয়ের মধ্যবর্তী উসায়া নামক স্থানে যখন পৌঁছালেন তখন একটি গাছের ছায়ায় একটি তীরবিদ্ধ হরিণ মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেল। বর্ণনাকারী ধারণা করিয়াছেন যে, রসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তখন এক ব্যক্তিকে হরিণটির নিকট দাঁড়িয়ে পাহারা দিতে নির্দেশ দিলেন, যাতে সকলেই তাকে অতিক্রম করে সম্মুখে চলে না যাওয়া পর্যন্ত কেউ উহার কোন কিছু করিতে না পারে। [সহীহ, নাসাঈ ২৮১৮, আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন {সহীহ ও যয়ীফ সুনানে আবু দাঊদ}]

{১} তাঁর নাম যায়দ ইবনি কাব বলে উল্লেখ করা হয়েছে। -আউজাযুল মাসালিক

এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য

৭৭৫

আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বাহরাইন হইতে আসতেছিলেন। রবাজা নামক স্থানে ইহরাম বাঁধা অবস্থায় কতিপয় ইরাকী আরোহীর সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হল। তারা তাহাকে শিকারের গোশত খাওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিল। উক্ত শিকার রবাজাবাসীদের ছিল। আবু হুরায়রা [রাদি.] বলেন, পরে এই ফতওয়া সম্পর্কে আমার মধ্যে সন্দেহ সৃষ্টি হয়। মদীনায় এসে উমার ইবনি খাত্তাব [রাদি.]-কে তা জানালাম। তিনি বলিলেন, তুমি তাদেরকে এ সম্পর্কে কি বলেছিলে ? আমি বললাম তাদেরকে উহা খেতে পারে বলে মত দিয়েছিলাম। তখন তিনি বলিলেন, এট না বলে অন্য কিছু যদি বলিতে তবে তোমাকে আমি শায়েস্তা করতাম অর্থাৎ তিনি তাকে ভয় দেখালেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

উমরা হজ্জ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৭৭৬

বর্ণনাকারী হইতে বর্ণিতঃ

সালিম ইবনি আবদুল্লাহ্ [রাহিমাহুল্লাহ] আবু হুরায়রা [রাদি.]-কে আবদুল্লাহ্ ইবনি উমার [রাদি.]-এর নিকট হাদীস বর্ণনা করিতে শুনেছেন। আবু হুরায়রা [রাদি.] বলিতেছিলেন, যে রবাজা নামক স্থানে ইহরাম অবস্থায় কতিপয় লোকের সাথে তাঁর সাক্ষাত হয়। ইহরামবিহীন লোকের শিকারকৃত পশু যা তারা খাচ্ছে সে পশুর গোশত তারা খেতে পারবে কিনা এই সম্পর্কে তাঁর ফতওয়া জিজ্ঞেস করা হল। তিনি তাদেরকে তা খেতে পারে বলে ফতওয়া দেন। তিনি বলেন, পরে মদীনায় এসে উমার ইবনি খাত্তাব [রাদি.]-কে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলিলেন, তুমি কি ফতওয়া দিয়েছিলে ? আমি বললাম ঐ গোশত খেতে পারে বলে ফতওয়া দিয়েছিলাম। তিনি বলিলেন, এই ফতওয়া না দিয়ে যদি অন্য কোন ফতওয়া তুমি দিতে তবে তোমাকে আমি শাস্তি দিতাম। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

উমরা হজ্জ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৭৭৭

বর্ণনাকারী হইতে বর্ণিতঃ

কাব আহবার [রাহিমাহুল্লাহ] যখন সিরিয়া হইতে আসেন কতিপয় ইহরাম বাঁধা আরোহীও তখন তাঁর সঙ্গী হয়। পথে তাঁরা কিছু শিকারের গোশত পেলেন। কাব [রাহিমাহুল্লাহ] তাদেরকে তা খেতে অনুমতি দিলেন। ঐ আরোহী দল মদীনায় এসে উমার ইবনি খাত্তাব [রাদি.]-কে উক্ত ঘটনা জানালেন। তিনি বলিলেন, তোমাদেরকে উক্ত গোশত খেতে কে ফতওয়া দিয়েছিলেন ? তাঁরা বলিলেন, কাব [রাহিমাহুল্লাহ]। তিনি বলিলেন, ফিরে না আসা পর্যন্ত কাবকে আমি তোমাদের আমীর বানিয়ে দিলাম। পরে মক্কার পথে তাঁরা অনেক পঙ্গপাল দেখিতে পেলেন। কাব তাদেরকে তা খেতে বলে দিলেন। তাঁরা ফিরে উমার ইবনি খাত্তাব [রাদি.]-কে তা জানালেন। তিনি কাবকে বলিলেন, কি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে তুমি এই ধরনের ফতওয়া দিলে ? কাব বলিলেন, এ জাতীয় পঙ্গপাল [টিড্ডী] সামুদ্র্রিক প্রাণীর অন্তর্ভুক্ত [আর মুহরিমের জন্য সামুদ্রিক প্রাণী খাওয়া জায়েয]। উমার [রাদি.] বলিলেন, এটা কেমন করে কাব বলিলেন, আমীরুল মুমিনীন ! সেই সত্তার কসম যাঁর হাতে আমার প্রাণ, এ জাতীয় পঙ্গপাল এক প্রকার সামুদ্রিক মাছের হাঁচি হইতে জন্ম হয়ে থাকে। উহা বৎসরে মাত্র দুবারই হাঁচি দিয়া থাকে। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

ইয়াহইয়া [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, মালিক [রাহিমাহুল্লাহ]-কে জিজ্ঞেস করা হল পথে শিকারের গোশত পাওয়া গেলে মুহরিম ব্যক্তি তা ক্রয় করিতে পারে কি? তিনি বলিলেন, হজ্জযাত্রীদের নিয়তে শিকার করে থাকলে তা আমার কাছে মাকরূহ বলে মনে হয়, তবে সাধারণভাবে বিশেষ কোন নিয়ত ব্যতিরেকে শিকার করা হয়ে থাকলে উহা ক্রয় করায় দোষের কিছুই নেই।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, ইহরাম বাঁধার সময় কোন ব্যক্তির নিকট তৎকর্তৃক শিকারকৃত কোন পশু ছিল অথবা শিকারকৃত কোন পশু ক্রয় করিল। তবে তা ছেড়ে দেয়া তার জন্য জরুরী নয়, বরং বাড়িতে তা রেখে যাবে।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, সমুদ্র, নদী-নালা এবং পুকুর ইত্যাদির মাছ মুহরিমগণ শিকার করিতে পারবে।

উমরা হজ্জ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ২৫যে ধরনের শিকার মুহরিম খেতে পারে না

৭৭৮

সাব ইবনি জাসসামা লায়সী [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] আবওয়া বা ওয়াদ্দান নামক স্থানে অবস্থান করিতেছিলেন। তখন তিনি [রাবী] একটা বন্য গাধা হাদিয়া হিসেবে তাঁর খেদমতে পেশ করেন। রসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তা ফিরিয়ে দিলেন। সাব [রাদি.] বলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এতে আমার চেহারায় দুঃখের অভিব্যক্তি প্রকাশ পেতে দেখে বলিলেন, আমরা মুহরিম, [ইহরাম] অবস্থায় আছি। কেবল এজন্য এটা ফিরিয়ে দিয়েছি। [বুখারি ১৮২৫, মুসলিম ১১৯৩]

এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৭৭৯

আবদুল্লাহ্ ইবনি রবীআ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

গরমের সময় আরজ নামক স্থানে উসমান ইবনি আফফান [রাদি.]-কে ইহরামের হালতে একটি লাল কম্বল দ্বারা মুখ ঢেকে বসে থাকতে দেখলাম। সে সময় শিকার করা জন্তুর কিছু গোশত তাঁর কাছে পেশ করা হয়। তিনি সঙ্গীদেরকে তা খেয়ে নিতে বলিলেন। সঙ্গীরা বলিলেন, আপনি নিজে খাচ্ছেন না ? উসমান [রাদি.] বলিলেন, আমি তোমাদের মত নই, এটা আমার জন্য শিকার করা হয়েছে, সুতরাং আমি খেতে পারি না। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

উমরা হজ্জ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৭৮০

উরওয়াহ্ ইবনি যুবায়র [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

উম্মুল মুমিনীন আয়েশা [রাদি.] তাহাকে বলেছেন, ভ্রাতুষ্পুত্র, ইহরামের মাত্র দশটা দিন বাকি। মনে যদি দ্বিধা-সন্দেহের সৃষ্টি হয়, তবে শিকারের গোশত খাওয়া এই কয়দিন একেবারেই ছেড়ে দাও।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, মুহরিম ব্যক্তির নিয়তে কোন প্রাণী শিকার করা হয়ে থাকলে, আর ঐ ব্যক্তি তা জানা থাকা সত্ত্বেও যদি উক্ত শিকার ভক্ষণ করে, তবে তাকে উহার পরিবর্তে বদলা আদায় করিতে হইবে।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, মালিক [রাহিমাহুল্লাহ]-কে জিজ্ঞেস করা হল যদি খাদ্যাভাবের দরুন মুহরিম ব্যক্তির জন্য মৃত পশু খাওয়া জায়েয হয়, এমতাবস্থায় সে মৃত প্রাণী খাবে, না শিকারকৃত প্রাণী খাবে ? তিনি বলিলেন, সে মৃত প্রাণী খাবে। কারণ আল্লাহ্ তাআলা কালামে পাকে উপায়হীন অবস্থায় মৃত প্রাণী খাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন, পক্ষান্তরে মুহরিমের জন্য কোন অবস্থায়ই শিকারকৃত প্রাণী আহারের অনুমতি প্রদান করেননি।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, মুহরিম যদি কোন প্রাণী শিকার করে বা ঐ জাতীয় প্রাণী যবেহ করে, তবে তা খাওয়া মুহরিম বা হালাল [যিনি ইহরাম অবস্থায় নাই] কোন ব্যক্তির জন্যই জায়েয নয়। কেননা শরীয়তের দৃষ্টিতে তা যবেহ বলে গণ্য হয় না।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, শিকার সে নিজে আহার করুক বা শিকার করার পর নিজে আহার না করুক, উভয় অবস্থায়ই তাকে একই ধরনের কাফফারা দিতে হইবে। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

উমরা হজ্জ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ২৬হারাম শরীফের এলাকায় শিকার করা

৭৮১

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

হারাম শরীফের এলাকায় যদি কোন প্রাণী শিকার করা হয় বা হারাম শরীফের এলাকায় কোন প্রাণীকে লক্ষ করে শিকারী কুকুর ছাড়া হয় আর তা যদি হারাম শরীফের বাইরে নিয়েও তাকে শিকার করে তবু উক্ত পশু খাওয়া হালাল নয়। যে ব্যক্তি ঐ ধরনের কাজ করিবে তাকে কাফফারা হিসেবে তার বদলা দিতে হইবে। আর যদি হারাম শরীফের বাহিরে কোন প্রাণীকে লক্ষ করে শিকারী কুকুর ছাড়া হয় আর তা হারাম শরীফের ভেতর এনে শিকার করে, তবে তাও খাওয়া জায়েয নয়, কিন্তু উক্ত ব্যক্তির উপর কাফ্‌ফারা আসবে না। তবে হারাম শরীফের অতি নিকট সীমানায় যদি কুকুর ছেড়ে থাকে তবে তাকেও কাফ্‌ফারা দিতে হইবে।

উমরা হজ্জ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ২৭শিকার করার প্রতিফল

৭৮২

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আল্লাহ্ তাআলা ইরশাদ করেন হে মুমিনগণ, ইহরাম অবস্থায় তোমরা কোন প্রাণী শিকার করো না। কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে শিকার করে তবে যা শিকার করিল তদ্রূপ একটি গৃহপালিত পশু তাকে বদলা দিতে হইবে। এর ফয়সালা তোমাদের মধ্যে দুজন তাকওয়ার অধিকারী লোক করে দেবে। এইরূপ ধার্যকৃত পশু কুরবানী হিসেবে মক্কায় প্রেরিত হইবে অথবা উহার কাফফারা হইবে মিসকীনকে আহার্য দান করা বা সমপরিমাণ রোযা রাখা যাতে সে স্বীয় কৃতকর্মের ফল ভোগ করিতে পারে।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, কোন ইহরামবিহীন ব্যক্তি যদি কোন প্রাণী শিকার করে পরে ইহরাম বেঁধে উক্ত শিকার বধ করে তবে সে ঐ মুহরিম ব্যক্তির মত, যে ব্যক্তি শিকারকৃত প্রাণী খরিদ করে বধ করে। আল্লাহ্ উহা হইতে নিষেধ করিয়াছেন, সুতরাং উক্ত ব্যক্তির উপরও উহার বিনিময় প্রদান ওয়াজিব হইবে।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, আমাদের সিদ্ধান্ত হল, মুহরিম একা বা দলবদ্ধভাবে যেভাবেই শিকার করুন না কেন তাঁর উপর বদলা দেওয়ার হুকুম প্রযোজ্য হইবে।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, এই বিষয়ে সর্বোত্তম যে কথা আমি শুনিয়াছি তা হল শিকারকৃত প্রাণীটির মূল্য হিসেব করে দেখা হইবে যে, ঐ মূল্যের বিনিময়ে কত পরিমাণ শস্য বাজারে পাওয়া যায়। পরে এক এক মুদ পরিমাণ শস্য এক একজন মিসকীনদের দিয়ে দেওয়া হইবে বা এক এক মুদ হিসেবে যত পরিমাণ মুদ হইবে তত সংখ্যক রোযা রাখবে। মিসকীনদের সংখ্যা হিসেবে তা হইবে। দশজন মিসকীন হলে দশ রোযা, বিশজন হলে বিশ রোযা, এইভাবে সংখ্যা ষাটের অধিকও যদি হয়ে যায় তবে তত পরিমাণ রোযা তাকে রাখতে হইবে।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, আমি শুনিয়াছি যে, ইহরামবিহীন ব্যক্তি হারাম শরীফের অভ্যন্তরে কোন প্রাণী শিকার করলে তার উপর ইহরাম বেঁধে হারমের ভিতর বধ করার মত হুকুম হইবে।

উমরা হজ্জ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ২৮ইহরাম অবস্থায় কোন্ ধরনের প্রাণী হত্যা করা জায়েয

৭৮৩

আবদুল্লাহ্ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেন, পাঁচ প্রকার প্রাণী মুহরিম ব্যক্তি যদি হত্যা করে তবে তার কোন গুনাহ হইবে না কাক, চিল, বিচ্ছু, ইঁদুর, হিংস্র কুকুর [বা হিংস্র জন্তু, যথা বাঘ, চিতাবাঘ ইত্যাদি]। [বুখারি ১৮২৮, মুসলিম ১১৯৯]

এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৭৮৪

আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেন, পাঁচ ধরনের প্রাণী ইহরাম অবস্থায় যদি কেউ হত্যা করে, তবে তার কোন গুনাহ্ হইবে না, যথা বিচ্ছু, ইঁদুর, হিংস্র কুকুর, চিল ও কাক। [বুখারি ৩৩১৫, মুসলিম ১২০০]

এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৭৮৫

হিশাম ইবনি উরওয়াহ্ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

হিশাম ইবনি উরওয়াহ্ [রাহিমাহুল্লাহ] তাঁর পিতা হইতে বর্ণনা করেন রসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন, পাঁচ প্রকার প্রাণী ফাসিক। এগুলো হারাম শরীফের ভিতর ও বাহিরে যেকোন স্থানে পাওয়া গেলে মেরে ফেলা উচিত; যথা ইঁদুর, বিচ্ছু, কাক, চিল ও হিংস্র কুকুর। [সহীহ, মুসলিম ১১৯৮]

এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৭৮৬

ইবনি শিহাব [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

উমার ইবনি খাত্তাব [রাদি.] হারাম শরীফে সাপ মারার হুকুম দিয়েছেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, হিংস্র কুকুর বলিতে যাকে হারাম শরীফে হত্যার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তা এই ধরনের পশুকে বুঝায় যা মানুষকে কামড়ায় বা হামলা করে বা ভয় প্রদর্শন করে, যেমন সিংহ, বাঘ, চিতাবাঘ ইত্যাদি। কিন্তু যে সমস্ত পশু হিংস্র বটে, তবে হামলা করে না, যেমন হায়েনা, শিয়াল, বিড়াল ইত্যাদি পশু- মুহরিম ব্যক্তির এগুলো মারা উচিত নয়। মারলে তার উপর ফিদইয়া দেওয়া ওয়াজিব।

আর যে সমস্ত পাখির উল্লেখ নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] করিয়াছেন [যেমন কাক ও চিল], এগুলো ব্যতীত অন্যান্য ক্ষতিকারক পাখিও মুহরিম ব্যক্তির জন্য হত্যা করলে তাকে ফিদইয়া দিতে হইবে।

উমরা হজ্জ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ২৯ইহরাম অবস্থায় কি ধরনের কাজ করা জায়েয

৭৮৭

বর্ণনাকারী হইতে বর্ণিতঃ

রবীআ ইবনি আবদুল্লাহ্ ইবনি হুদায়র [রাহিমাহুল্লাহ] উমার ইবনি খাত্তাব [রাদি.]-কে সুক্ইয়া নামক জনপদে স্বীয় উটের উকুন বের করে কাদায় ফেলতে দেখেছেন, অথচ তিনি তখন ইহরাম অবস্থায় ছিলেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, আমি একে অপছন্দ করি।

উমরা হজ্জ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৭৮৮

আলকামা ইবনি আবি আলকামা [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আলকামা ইবনি আবি আলকামা [রাহিমাহুল্লাহ] তাঁর মাতা হইতে বর্ণনা করেন নাবী [সাঃআঃ]-এর পত্নী আয়েশা [রাদি.]- কে বলিতে শুনিয়াছি, তাহাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল ইহরাম অবস্থায় শরীর চুলকাতে পারবে কি ? তিনি [আয়েশা রা.] বলেন, হ্যাঁ, চুলকাতে পারবে, ভালভাবে চুলকাতে পারবে। কেউ আমার হাত বেঁধে রাখলে তবে পা দ্বারা যদি সম্ভব হয়, প্রয়োজন হলে তা দিয়েই আমি চুলকাব। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

উমরা হজ্জ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৭৮৯

আইয়ূব ইবনি মূসা [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

চোখে অসুখ হওয়ায় আবদুল্লাহ্ ইবনি উমার [রাদি.] ইহরাম অবস্থায়ও আয়না দেখেছিলেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

উমরা হজ্জ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৭৯০

নাফি [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ্ ইবনি উমার [রাদি.] মুহরিম ব্যক্তির জন্য উটের উকুন ইত্যাদি বের করা মাকরূহ বলে মনে করিতেন। মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, আমার নিকট এই মতটিই অধিক প্রিয়। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

উমরা হজ্জ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৭৯১

বর্ণনাকারী হইতে বর্ণিতঃ

মুহাম্মদ ইবনি আবদুল্লাহ্ ইবনি আবু মরইয়াম [রাহিমাহুল্লাহ] সাঈদ ইবনি মুসায়্যাব [রাহিমাহুল্লাহ]-এর নিকট জিজ্ঞেস করলেন, ইহরামকালে আমার একটা নখ ভেঙে গিয়েছে, এখন কি করব ? সাঈদ [রাহিমাহুল্লাহ] বলিলেন, এটা কেটে ফেল। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

ইয়াহইয়া [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, মালিক [রাহিমাহুল্লাহ]-কে জিজ্ঞেস করা হল মুহরিম ব্যক্তির কানে ব্যথা হলে সে কানে গন্ধবিহীন তেল ব্যবহার করিতে পারবে কি ? তিনি বলিলেন, এতে কোন দোষ নেই। যদি মুখেও ঢালে, তবুও আমি দোষ মনে করি না।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, মুহরিম ব্যক্তি যদি ফোঁড়া বা ফোস্কা ফাটিয়ে দেয় বা প্রয়োজনে শিঙ্গা লাগায় তবে কোন গুনাহ হইবে না।

উমরা হজ্জ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ৩০হজ্জেবদল

৭৯২

আবদুল্লাহ্ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

ফযল ইবনি আব্বাস [রাদি.] রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর সাথে তাঁর পেছনে আরোহী ছিলেন। এমন সময় খাসআম কবীলার এক মহিলা রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট মাসআলা জানতে এলেন। ফযল তার দিকে তাকাতে লাগলেন আর সে মহিলাটিও ফযলকে দেখিতে লাগলেন। রসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] ফযলের চেহারা অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিলেন। মহিলাটি বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! আমার পিতার উপর হজ্জ এমন সময় ফরয হল যে, বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি এত দুর্বল যে, উটের পিঠে বসতে সক্ষম নন। তাঁর পক্ষ হইতে হজ্জ করা আমার জন্য বৈধ হইবে কি ? রসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলিলেন, হ্যাঁ, করে নাও। এই ঘটনাটি ছিল বিদায় হজ্জের। [বুখারি ১৫১৩, মুসলিম ১৩৩৪]

এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

পরিচ্ছেদঃ ৩১শত্রু দ্বারা পথে বাধাপ্রাপ্ত হলে হজ্জ সম্পাদনে ইচ্ছুক ব্যক্তি কি করিবে

৭৯৩

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

শত্রু যদি কারো যাত্রাপথে বাধার সৃষ্টি করে এবং বায়তুল্লাহ পর্যন্ত সে যদি পৌঁছাতে না পারে তবে যে স্থানে বাধাপ্রাপ্ত হইবে সে স্থানেই সে ইহরাম খুলে ফেলবে ও কুরবানী দিবে এবং মাথা কামাবে। তাকে আর দ্বিতীয়বার এই হজ্জ কাযা করিতে হইবে না।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, তাঁর নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, মক্কার কাফিরগণ হুদায়বিয়ার ময়দানে রসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] ও তাঁর সাহাবীগণকে মক্কায় যেতে বাধা দিল। তখন তাঁরা সেখানেই ইহরাম খুলে ফেলেছিলেন, হাদয়ী কুরবানী দিয়েছিলেন এবং মাথা কামায়ে ছিলেন। বায়তুল্লাহ্ তাওয়াফ এবং কুরবানীর পশু মক্কায় পৌঁছার পূর্বেই তাঁরা হালাল হয়ে গিয়েছিলেন। পরে রসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] কোন সঙ্গী বা সাহাবীকে দ্বিতীয়বার এই হজ্জ কাযা করার বা পুনরায় করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে আমাদের জানা নাই। {১} [হাদীসটি মুরসাল, হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন, তবে এই ঘটনাটি বুখারি ও মুসলিমে রয়েছে]

{১} শত্রু দ্বারা হজ্জের পধে বাধাপ্রাপ্ত হওয়াকে ইহসার বলা হয়।

এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য

৭৯৪

নাফি [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

বিশৃংখলার বৎসর আবদুল্লাহ্ ইবনি উমার [রাদি.] উমরা করার নিয়তে মক্কার উদ্দেশ্যে যাত্রা করার সময় বলেছিলেন বায়তুল্লায় যাওয়ার পথে যদি আমি বাধাপ্রাপ্ত হই, তবে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে থাকাকালীন এই অবস্থায় আমরা যা করেছিলাম আজও তাই করব। রসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] হুদায়বিয়ার বৎসর শুধু উমরার নিয়তেই মক্কা যাত্রা করেছিলেন এই কথা খেয়াল করে আবদুল্লাহ্ ইবনি উমার [রাদি.]-ও শুধু উমরার ইহরাম বাঁধলেন। পরে চিন্তা করে দেখলেন, বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার বেলায় হজ্জ ও উমরার হুকুম একই ধরনের। তোমাদেরকে সাক্ষী বানাচ্ছি যে, আমি এখন হজ্জ ও উমরা উভয়ই আমার উপর ওয়াজিব করে নিলাম। এই বলে তিনি যাত্রা শুরু করলেন এবং বায়তুল্লাহ্ এসে তাওয়াফ সমাধা করলেন, আর এইটুকুই নিজের জন্য যথেষ্ট মনে করলেন। কুরবানীর যে পশু ছিল তাও নাহর করলেন। {১} [বুখারি ১৬৩৯, মুসলিম ১২৩০]

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, আমার মতে নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এবং তাঁর সাহাবীগণ যা করেছিলেন হজ্জের পথে বাধাপ্রাপ্ত হলে তাই করা উচিত। তবে শত্রুর দ্বারা নয়, অন্য কোন কারণে বাধাপ্রাপ্ত হলে বায়তুল্লাহ্ না যাওয়া পর্যন্ত আর সে হালাল হইবে না।

{১} এ সময় হাজ্জাজ ইবনি ইউসুফ আবদুল্লাহ্ ইবনি যুবায়র [রাদি.]-এর উপর মক্কায় হামলা চালিয়েছিল। তাই এ সময়টাকে এখানে বিশৃংখলার বৎসর বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অতঃপর তিনি সাথীদের দিকে লক্ষ করে বলিলেন, বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার বেলায় হজ্জ ও উমরার হুকুম একই ধরনের।

উমরা হজ্জ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ৩২শত্রু ব্যতীত অন্য কোন কারণে বাধাপ্রাপ্ত হলে কি করণীয়

৭৯৫

আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

অসুস্থতার কারণে যদি কারো যাত্রা বাধাপ্রাপ্ত হয় তবে তাওয়াফ ও সাফা মারওয়ার সায়ী করা ব্যতীত সে হালাল হইবে না। কোন কাপড় বা ঔষধ ব্যবহার করার প্রয়োজন হলে [যা ইহরাম অবস্থায় জায়েয নয়] তা ব্যবহার করিবে এবং উহার ফিদইয়া দেবে। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

উমরা হজ্জ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৭৯৬

ইয়াহইয়া ইবনি সাঈদ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

তাঁর নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, নাবী [সাঃআঃ]-এর সহধর্মিনী আয়েশা [রাদি.] বলিতেন, ইহরামকে শুধু বায়তুল্লাহই হালাল করিতে পারে। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

উমরা হজ্জ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৭৯৭

আইয়ূব ইবনি আবি তামীমা সাখতীয়ানী [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আইয়ূব ইবনি আবি তামীমা সাখতীয়ানী [রাহিমাহুল্লাহ] বসরার জনৈক প্রবীণ {১} ব্যক্তি হইতে বর্ণনা করেন তিনি বলেন, মক্কার উদ্দেশ্যে একবার রওয়ানা হলাম। পথে উট হইতে পড়ে আমার উরু ভেঙে যায়। মক্কায় আমি একজনকে পাঠালাম। তখন সেখানে আবদুল্লাহ্ ইবনি আব্বাস [রাদি.], আবদুল্লাহ্ ইবনি উমার [রাদি.] এবং আরও অনেক বিজ্ঞ লোক উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের কেউই আমাকে এই অবস্থায় ইহ্‌রাম খুলতে অনুমতি দিলেন না। ফলে সাত মাস পর্যন্ত সেখানে আমি পড়ে রইলাম। শেষে সুস্থ হয়ে উমরা আদায় করে ইহরাম খুললাম। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

{১} আবু উমার [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, বসরার উক্ত ব্যক্তির নাম আবদুল্লাহ্ ইবনি যায়দ। কেউ কেউ তাঁর নাম উল্লেখ করিয়াছেন ইয়াযিদ ইবনি আবদুল্লাহ্ আশ-শিখ্খীর।

উমরা হজ্জ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৭৯৮

বর্ণনাকারী হইতে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ্ ইবনি উমার [রাদি.] বলেন, অসুস্থতার কারণে যদি কেউ যাত্রা করেও কাবায় পৌঁছাতে না পারে তবে তাওয়াফ ও সাফা-মারওয়া সায়ী না করা পর্যন্ত সে আর হালাল হইবে না। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

সুলায়মান ইবনি ইয়াসার [রাদি.] হইতে বর্ণিত; মাবদ ইবনি হুযাবা মাখযুমী [রাহিমাহুল্লাহ] মক্কা আসার পথে তাঁর বাহন হইতে পড়ে গিয়ে আহত হন। তিনি তখন ইহরাম অবস্থায় ছিলেন। অতঃপর একটি কূপের নিকট যাত্রা বিরতি করলেন এবং খোঁজ নিয়ে জানতে পারলেন যে, সেখানে আবদুল্লাহ্ ইবনি উমার [রাদি.], আবদুল্লাহ্ ইবনি যুবায়র [রাদি.] এবং মারওয়ান ইবনিল হাকাম [রাদি.] আছেন। তাঁদের নিকট উক্ত ঘটনা বর্ণনা করলে তাঁরা বলিলেন, প্রয়োজনীয় ঔষধ ব্যবহার কর আর উহার ফিদইয়া আদায় করে দিও। সুস্থ হওয়ার পর উমরা আদায় করে ইহরাম খুলে ফেলো। আগামী বৎসর পুনরায় এই হজ্জ আদায় করে নিও এবং সামর্থ্যানুযায়ী কুরবানী দিও। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, শত্রু ছাড়া অন্য কোন কারণে হজ্জে বাধ্যপ্রাপ্ত হলে আমাদের নিকটও মাসআলা অনুরূপ।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, আবু আইয়ূব আনসারী [রাদি.] এবং হাব্বান ইবনি আসওয়াদ [রাদি.] যখন হজ্জের নির্ধারিত সময়ে উপস্থিত হইতে পারলেন না এবং নাহরের দিন উপস্থিত হলেন, সেই বৎসর দশ তারিখে মক্কায় গিয়ে পৌঁছালেন, তখন উমার ইবনি খাত্তাব [রাদি.] তাদেরকে বলেছিলেন উমরা করে ইহরাম খুলে নিন এবং এই বৎসর ফিরে যান। আগামী বৎসর হজ্জ করিবেন এবং কুরবানী দিবেন। কুরবানীর সামর্থ্য না হলে আপনাদেরকে হজ্জের সময় তিনদিন এবং বাড়ি ফিরে সাতদিন রোযা রাখতে হইবে।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, ইহরাম বাঁধার পর অসুস্থতা বা অন্য কোন কারণে যেমন তারিখে ভুল করার দরুন, যদি হজ্জ করিতে না পারে তবে তার হুকুম মুহসারের মত হইবে। {১}

ইয়াহইয়া [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, মালিক [রাহিমাহুল্লাহ]-কে জিজ্ঞেস করা হল মক্কাবাসী কোন ব্যক্তি হজ্জের নিয়তে ইহরাম বাঁধার পর তার পা ভেঙে গেল বা দাস্ত শুরু হল, এখন সে কি করিবে ? তিনি বলিলেন, তার হুকুম মুহসারের মত। মক্কার বাহিরের অধিবাসী কোন ব্যক্তির ইহসার বা বাধ্যপ্রাপ্ত হলে যে হুকুম, এখানেও সে হুকুম প্রযোজ্য হইবে।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, হজ্জের মাসে কোন ব্যক্তি উমরার ইহরাম বেঁধে মক্কা এল এবং উমরা সমাধা করে মক্কা হইতে পুনরায় হজ্জের ইহরাম বাঁধার পর তার পা ভেঙে গেল বা এমন কোন কষ্ট পেল যাতে সে আরাফাতে যেতে আর সক্ষম হল না। তখন সে যখন সুস্থ হইবে হারাম শরীফের বারে গিয়ে মক্কায় ফিরে আসবে এবং তাওয়াফ ও সাফা-মারওয়ার সায়ী করে ইহরাম খুলে ফেলবে। পরে আগামী বৎসর পুনরায় হজ্জ করিবে এবং কুরবানী দিবে।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, কোন ব্যক্তি হজ্জের মওসুমে উমরার ইহরাম বেঁধে মক্কায় প্রবেশ করিল। অতঃপর উমরা পূর্ণ করে মক্কা হইতে হজ্জের ইহরাম বাঁধল। অতঃপর [দুর্ঘটনায় হাত পা] ভাঙল অথবা অন্য কোন বাধার সম্মুখীন হল। ফলে অন্য লোকদের সঙ্গে আরাফাতে উপস্থিত হইতে পারেনি। মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, উক্ত ব্যক্তি ইহরাম অবস্থায় থাকিবে। যখন সে সুস্থ হইবে, হিলের [হারাম শরীফের বারে] দিকে যাবে। অতঃপর মক্কার দিকে প্রত্যাবর্তন করিবে। তাওয়াফ করিবে ও সাফা-মারওয় সায়ী করিবে এবং হালাল হইবে। তার উপর আগামী বৎসর হাদ্‌য়ী ও হজ্জ ওয়াজিব হইবে।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, যে ব্যক্তি মক্কা হইতে হজ্জের ইহ্‌রাম বেঁধেছে, তাওয়াফ ও সাফা-মারওয়া সায়ী করেছে, অতঃপর সে অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং লোকের সঙ্গে আরাফাতে উপস্থিত হইতে পারেনি। তিনি বলেন, যদি সে হজ্জ করিতে না পারে যখন সম্ভব হইবে তখন সে হিলের দিকে যাবে এবং উমরার নিয়ত করে মক্কায় প্রবেশ করিবে। এর কারণ, প্রথমে সে তাওয়াফ ও উমরার নিয়ত করেনি। এইজন্য সে পুনরায় তাওয়াফ ও সায়ী করিবে এবং তার উপর আগামী বৎসর হাদ্‌য়ী ও হজ্জ ওয়াজিব হইবে।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, যে ব্যক্তি হজ্জের ইহরাম বেঁধেছে সে যদি মক্কার বাহিরের লোক হয়, সে অসুস্থতার দরুন যদি হজ্জ করিতে না পারে, অথচ এর পূর্বে সে তাওয়াফ ও সাফা-মারওয়া সায়ী করেছিল, সেই ব্যক্তি উমরা করে হালাল হইবে এবং আরেকবার বায়তুল্লাহ্ তাওয়াফ ও সাফা-মারওয়ার সায়ী করিবে। কারণ তার পূর্বের তাওয়াফ ও সায়ী ছিল হজ্জের নিয়তে। তার উপর আগামী বৎসর হাদ্‌য়ী ও হজ্জ ওয়াজিব হইবে।

{১} উমরা করে ইহরাম খুলবে এবং কুরবানী দিবে।

উমরা হজ্জ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

Comments

Leave a Reply