ইসলামে পোশাকের বিধান -পায়জামা, লুঙ্গি, জুতা, রেশমী ও রঙিন কাপড়
ইসলামে পোশাকের বিধান -পায়জামা, লুঙ্গি, জুতা, রেশমী ও রঙিন কাপড় >> সুনানে নাসাই শরিফের মুল সুচিপত্র দেখুন
পর্বঃ ৪৯, সাজসজ্জা, হাদীস (৫২৯৪-৫৩৭৮)
১.পরিচ্ছেদঃ কোন কাপড় পরিধান করা মুস্তাহাব, আর কোন্টি মাকরূহ
২.পরিচ্ছেদঃ সোনালী ডোরাবিশিষ্ট রেশমী কাপড় ব্যবহার নিষেধ
৩.পরিচ্ছেদঃ ডোরাদার রেশমী কাপড় নারীদের ব্যবহারের অনুমতি
৪.পরিচ্ছেদঃ ইস্তাব্রাক বা রেশমী কাপড় পরিধান করা নিষেধ
৫.পরিচ্ছেদঃ ইসতাব্রাকের বর্ণনা
৬.পরিচ্ছেদঃ দীবাজ নামক রেশমী কাপড় পরা নিষেধ
৭.পরিচ্ছেদঃ সোনার কারুকার্য খচিত দীবাজ বা রেশমী বস্ত্র পরিধান
৮.পরিচ্ছেদঃ উক্ত হাদীস রহিত হওয়ার বর্ণনা
৯.পরিচ্ছেদঃ পৃথিবীতে রেশমী কাপড় পরার ব্যাপারে কঠোরতা; যে দুনিয়াতে তা পরবে, সে আখিরাতে তা পরতে পারবে না
১০.পরিচ্ছেদঃ রেশমী কাপড় পরার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা
১১.পরিচ্ছেদঃ রেশমী কাপড় পরার অনুমতি
১২.পরিচ্ছেদঃ জোড়া পোশাক পরিধান করা
১৩.পরিচ্ছেদঃ হিবারা [ইয়ামানী চাদর] পরিধান করা
১৪.পরিচ্ছেদঃ কুসুম রঙের কাপড় পরিধান করা নিষেধ
১৫.পরিচ্ছেদঃ সবুজ কাপড় পরিধান করা
১৬.পরিচ্ছেদঃ বুরদা [ডোরাকাটা চাদর] পরিধান করা
১৭.পরিচ্ছেদঃ সাদা কাপড় পরার আদেশ
১৮.পরিচ্ছেদঃ কাবা২ পরিধান করা
১৯.পরিচ্ছেদঃ পায়জামা পরিধান করা
২০.পরিচ্ছেদঃ লুঙ্গি ইত্যাদি পরে হেচড়িয়ে চলার উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা
২১.পরিচ্ছেদঃ লুঙ্গি পরিধানের স্থান
২২.পরিচ্ছেদঃ লুঙ্গি,চাদর ইত্যাদির যে অংশ পায়ের গিরার নীচে থাকিবে
২৩.পরিচ্ছেদঃ ইযাহার বা লুঙ্গি টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে পরা
২৪.পরিচ্ছেদঃ নারীদের কাপড়ের নিন্মাংশ
২৫.পরিচ্ছেদঃ এক কাপড়ে সর্বাঙ্গ জড়িয়ে তার একপার্শ্ব কাঁধের উপড় ফেলে রাখা নিষেধ
২৬.পরিচ্ছেদঃ এক কাপড়ে ইহতিবা [সর্বশরীর জড়িয়ে বসা] নিষেধ
২৭.পরিচ্ছেদঃ ছাইরঙ্গা পাগড়ি পরিধান করা
২৮.পরিচ্ছেদঃ কালো পাগড়ি ব্যবহার করা
২৯.পরিচ্ছেদঃ পাগড়ির প্রান্ত দুকাঁধের মাঝখানে লটকানো
৩০.পরিচ্ছেদঃ ছবি
৩১.পরিচ্ছেদঃ কঠিনতম শাস্তি যাহার হইবে
৩২.পরিচ্ছেদঃ কিয়ামতের দিন ছবি অঙ্কনকারীদের যা করিতে বলা হইবে
৩৩.পরিচ্ছেদঃ সর্বাপেক্ষা অধিক শাস্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তি
৩৪.পরিচ্ছেদঃ গায়ে দেওয়ার চাদর
৩৫.পরিচ্ছেদঃ রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] –এর জুতার বর্ণনা
৩৬.পরিচ্ছেদঃ এক জুতা পরে চলা নিষেধ
৩৭.পরিচ্ছেদঃ চামড়ার বিছানা
৩৮.পরিচ্ছেদঃ খাদিম ও বাহন রাখা
৩৯.পরিচ্ছেদঃ তলোয়ারের অলঙ্কার সম্পর্কে
৪০.পরিচ্ছেদঃ লাল জীনপোশের উপর বসা নিষেধ
৪১.পরিচ্ছেদঃ চেয়ারে বসা
৪২.পরিচ্ছেদঃ লাল তাঁবু ব্যবহার করা
১.পরিচ্ছেদঃ কোন কাপড় পরিধান করা মুস্তাহাব, আর কোন্টি মাকরূহ
৫২৯৪. আবুল আহ্ওয়াস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তাহাঁর পিতার মাধ্যমে হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি একবার রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত হলাম। তিনি আমাকে [পুরাতন মলিন কাপড় পরিহিত] খারাপ অবস্থায় দেখে বললেনঃ তোমার কি কোন মাল-সম্পদ আছে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। আল্লাহতাআলা আমাকে সর্বপ্রকার সম্পদই দান করিয়াছেন। তখন তিনি বললেনঃ যখন তোমাকে আল্লাহমাল দান করিয়াছেন, তখন এর চিহ্ন তোমার মধ্যে থাকা বাঞ্ছনীয়।
ইসলামে পোশাকের বিধান -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২.পরিচ্ছেদঃ সোনালী ডোরাবিশিষ্ট রেশমী কাপড় ব্যবহার নিষেধ
৫২৯৫. উমার ইবনি খাত্তাব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি মসজিদের দরজায় সোনালী ডোরাদার রেশমী চাদর বিক্রি হইতে দেখলেন। তিনি বলেন, আমি বললামঃ ইয়া রসূলুল্লাহ্! যদি আপনি জুমুআর দিনের জন্য এবং আপনার নিকট কোন বিদেশী প্রতিনিধিদল আসলে পরার জন্য এরূপ একজোড়া খরিদ করিতেন। তখন রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] বললেনঃ এতো ঐ ব্যক্তি পরিধান করিবে, আখিরাতে যাহার কোন অংশ থাকিবে না। পরবর্তীতে রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ]-এর নিকট ঐরকম কয়েক জোড়া কাপড় আসলে, তিনি তা হইতে একজোড়া আমাকে দান করিলেন। উমার [রাঃআঃ] বললেনঃ ইয়া রসূলুল্লাহ্! আপনি আমাকে এটা দিচ্ছেন, অথচ আগে আপনি এব্যাপারে যা বলার বলিলেন? নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ আমি তা তোমাকে পরার জন্য দেইনি। আমি এজন্য দিয়েছি যে, তুমি এটা অন্য কাউকে পরতে দেবে বা বিক্রি করে অন্য কাজে লাগাবে। উমার [রাঃআঃ] তা তাহাঁর এক বৈপিত্রেয় ভাইকে দান করেন, যে মুশরিক ছিল।
ইসলামে পোশাকের বিধান -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩.পরিচ্ছেদঃ ডোরাদার রেশমী কাপড় নারীদের ব্যবহারের অনুমতি
৫২৯৬. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
আমি নাবী [সাঃআঃ] -এর কন্যা যয়নাবের পরিধানে ডোরাকাটা রেশমী কামিজ দেখেছি।
হাদিসের তাহকিকঃ শায
৫২৯৭. আনাস ইবনি মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] -এর কন্যা উম্মে কুলসুমের পরিধানে সোনালী ডোরাদার রেশমী চাদর দেখেছেন।
ইসলামে পোশাকের বিধান -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫২৯৮. আলী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] -এর নিকট একটি ডোরাকাটা রেশমী কাপড় পেশ করা হলে তিনি তা আমার নিকট পাঠিয়ে দেন। আমি তা পরিধান করলে, তাহাঁর চেহারায় বিরক্তির ভাব লক্ষ্য করলাম। তিনি বললেনঃ আমি তোমাকে পরতে দেইনি। এরপর তিনি আমাকে আদেশ করলে আমি তা আমাদের নারীদেরকে বণ্টন করে দিলাম।
ইসলামে পোশাকের বিধান -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪.পরিচ্ছেদঃ ইস্তাব্রাক বা রেশমী কাপড় পরিধান করা নিষেধ
৫২৯৯. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
উমার [রাঃআঃ] একবার বের হইয়া দেখলেন, বাজারে ইস্তাব্রাক বা রেশমী জোড়া বিক্রি হচ্ছে। তিনি রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] -এর নিকট হাজির হইয়া বললেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আপনি এটা ক্রয় করুণ এবং জুমুআর দিন এবং আপনার নিকট বিদেশী প্রতিনিধিদল আসলে পরিধান করুন। রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] বললেনঃ এটা ঐ ব্যক্তিই পরবে, যাহার আখিরাতে কোন অংশ নেই। পরে এরকম তিনজোড়া কাপড় রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] -এর নিকট পেশ করা হলে তিনি এর একজোড়া উমার [রাঃআঃ] -কে, একজোড়া আলী [রাঃআঃ] -কে এবং একজোড়া উসামা [রাঃআঃ] -কে দিলেন। তখন উমার [রাঃআঃ] তাহাঁর নিকট এসে বললেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আপনি এর পূর্বে এ ব্যাপারে যা বলার তা বলেছিলেন, আর এখন এটা আমাকে দান করিলেন? তিনি বললেনঃ তুমি তা বিক্রি করে নিজের প্রয়োজন পূর্ণ কর অথবা তা টুকরা করে তোমার মহিলাদের ওড়না বানিয়ে দাও।
ইসলামে পোশাকের বিধান -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫.পরিচ্ছেদঃ ইসতাব্রাকের বর্ণনা
৫৩০০. ইয়াহ্ইয়া ইবনি আবু ইসহাক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সালিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, ইস্তাবাক কি? আমি বললামঃ রেশমী কাপড়ের মধ্যে যা শক্ত এবং মোটা হয়, তাই ইসতাব্রাক। সালিম বললেনঃ আমি আবদুল্লাহ্[রাঃআঃ] -কে বলিতে শুনেছিঃ উমার [রাঃআঃ]-এক ব্যক্তির নিকট রেশমী কাপড়ের এক জোড়া দেখিতে পেলেন এবং তা নাবী [সাঃআঃ] -এর নিকট এনে বললেনঃ আপনি এটা খরিদ করুন, এরপর হাদিসের শেষ পর্যন্ত বর্ণনা করিলেন।
ইসলামে পোশাকের বিধান -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৬.পরিচ্ছেদঃ দীবাজ নামক রেশমী কাপড় পরা নিষেধ
৫৩০১. আবদুল্লাহ্ইবনি উকায়ম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হুযায়ফা [রাঃআঃ] পানি চাইলে এক গ্রাম্য নেতা রৌপ্য নির্মিত পাত্রে পানি আনে। হুযায়ফা [রাঃআঃ] সেটি ছুঁড়ে মারলেন। তারপর এ আচরনের জন্য তাহাদের কাছে কৈফিয়ত দিলেন এবং বললেনঃ আমার জন্য এর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ তোমাদের কেউ যেন সোনা-রূপার পাত্রে পান না করে এবং দীবাজ ও রেশমী কাপড় পরিধান না করে। কেননা এটা পৃথিবীতে তাহাদের জন্য, আর আমাদের জন্য আখিরাতে।
ইসলামে পোশাকের বিধান -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৭.পরিচ্ছেদঃ সোনার কারুকার্য খচিত দীবাজ বা রেশমী বস্ত্র পরিধান
৫৩০২. ওয়াকিদ ইবনি আমর ইবনি সাদ ইবনি মুআয [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আনাস ইবনি মালিক [রাঃআঃ] মদিনায় আগমন করলে আমি তাহাঁর নিকট উপস্থিত হলাম এবং তাঁকে সালাম করলাম। তিনি বললেনঃ তুমি কে? আমি বললামঃ আমি ওয়াকিদ ইবনি আমর ইবনি সাদ ইবনি মুআয। তিনি বললেনঃ সাদ ইবনি মুআয [রাঃআঃ] তো বড় এবং লম্বাকৃতির লোক ছিলেন। এই বলে তিনি কাঁদলেন এবং বললেনঃ রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] দুমার বাদশাহ্উকায়দারের নিকট এক বাহিনী প্রেরণ করেন। তিনি রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] -এর নিকট রেশম এবং সোনার কারুকার্য খচিত একটি জুব্বা পাঠান। রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] তা পরিধান করে মিম্বরের উপর উঠে বসলেন। তারপর কোন কথা না বলে তিনি মেম্বর হইতে অবতরণ করিলেন। লোক তাহাঁর ঐ জুব্বা হাতে ধরে দেখিতে লাগলো। তিনি বললেনঃ তোমরা এটা দেখে আশ্চর্য বোধ করছো! বেহেশতে সাদ ইবনি মুআযের রুমালও তোমরা এই যা দেখছো, এর চেয়ে উৎকৃষ্ট।
হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
৮.পরিচ্ছেদঃ উক্ত হাদীস রহিত হওয়ার বর্ণনা
৫৩০৩. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, দীবাজ নামক রেশমী কাপড়ের একটি কাবা রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] -কে হাদিয়া স্বরূপ দান করা হলে তিনি তা পরিধান করেন। কিছুক্ষণ পর তিনি তা খুলে ফেলে তা উমার [রাঃআঃ] -এর নিকট পাঠিয়ে দেন। তখন অন্যান্য লোক জিজ্ঞাসা করলঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ্! আপনি হঠাৎ তা খুলে ফেললেন কেন? তিনি বললেনঃ আমাকে জিব্রাঈল [আঃ] তা পরতে নিষেধ করিয়াছেন। একথা শুনে উমার [রাঃআঃ] কাঁদতে কাঁদতে রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] –এর নিকট উপস্থিত হইয়া বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ্! আপনি যা অপছন্দ করেন তা আমাকে পরতে দিলেন? রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] বললেনঃ আমি তো তোমাকে তা পরতে দেইনি; আমি তো তোমাকে দিয়েছি বিক্রি করার জন্য। এরপর উমার [রাঃআঃ] দুই হাজার দিরহামে তা বিক্রি করে দেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৯.পরিচ্ছেদঃ পৃথিবীতে রেশমী কাপড় পরার ব্যাপারে কঠোরতা; যে দুনিয়াতে তা পরবে, সে আখিরাতে তা পরতে পারবে না
৫৩০৪. আব্দুল্লাহ্ইবনি যুবায়র [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি মিম্বরের উপর খুতবা দিতে গিয়ে বললেনঃ মুহাম্মদ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি পৃথিবীতে রেশমী কাপড় পরিধান করিবে, আখিরাতে সে কখনো তা পরতে পারবে না।
সাজসজ্জা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩০৫. আব্দুল্লাহ্ইবনি যুবায়র [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তোমরা নিজেদের নারীদেরকে রেশমী কাপড় পরতে দেবে না। আমি উমার ইবনি খাত্তাব [রাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি, রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে তা পৃথিবীতে পরিধান করিবে, সে আখিরাতে তা পরতে পারবেনা।
সাজসজ্জা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩০৬. ইমরান ইবনি হিত্তান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি আবদুল্লাহ্ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ]-কে রেশমী কাপড় পরিধান সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেনঃ তুমি এ ব্যাপারে আয়েশা [রাঃআঃ]-কে জিজ্ঞাসা কর। আমি আয়েশা [রাঃআঃ]-কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেনঃ আবদুল্লাহ্ইবনি উমার [রাঃআঃ]-কে জিজ্ঞাসা কর। আমি ইবনি উমার [রাঃআঃ]-কে জিজ্ঞাসা করলে–তিনি বললেনঃ আমার নিকট আবু হাফ্সা [রাঃআঃ] বর্ণনা করিয়াছেন যে, রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি পৃথিবীতে রেশমী কাপড় পরবে, আখিরাতে তার জন্য এর কোন অংশ থাকিবে না।
সাজসজ্জা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩০৭. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] বলেছেনঃ রেশমী কাপড় ঐ ব্যক্তিই পরিধান করিবে, যাহার আখিরাতে কোন অংশ নেই।
সাজসজ্জা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩০৮. আলী আল-বাকেরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক মহিলা আমার নিকট মাসাআলা জিজ্ঞাসা করার জন্য আসলে আমি তাকে বললামঃ ঐ যে আবদুল্লাহ্ইবনি উমার [রাঃআঃ]। তাহাঁর নিকট জিজ্ঞাসা করুন। ঐ মহিলা তাহাঁর নিকট জিজ্ঞাসা করার জন্য গেল, আর আমি তার পিছে পিছে গেলাম, তিনি কি বলেন শোনার জন্য। সেই নারী বললোঃ রেশমী কাপড় সম্বন্ধে আমাকে কিছু বলুন। তিনি বললেনঃ রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] তা ব্যবহার করিতে নিষেধ করিয়াছেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১০.পরিচ্ছেদঃ রেশমী কাপড় পরার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা
৫৩০৯. বারা ইবনি আযিব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] আমাদেরকে সাতটি বিষয়ে আদেশ করিয়াছেন এবং সাতটি বিষয়ে নিষেধ করিয়াছেন। তিনি আমাদেরকে নিষেধ করেছেনঃ সোনার আংটি, রূপার পাত্র, মায়াসির১, কাসসী২, ইসতাব্রাক৩ এবং দীবাজ৪ ও হারীর৫ হইতে।
১,২,৩,৪,৫ বিভিন্ন প্রকার রেশমী কাপড়।সাজসজ্জা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১১.পরিচ্ছেদঃ রেশমী কাপড় পরার অনুমতি
৫৩১০. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] আবদুর রহমান ইবনি আউফ এবং যুবায়র ইব্নুল আওয়াম [রাঃআঃ]-কে রেশমী জামা পরার অনুমুতি দান করেছিলেন; কেননা তাহাদের খুজলী রোগ হইয়াছিল।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩১১. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] আবদুর রহমান এবং যুবায়র [রাঃআঃ]-কে রেশমী কাপড়ের জামা ব্যবহারের অনুমুতি দান করেন, তাঁদের খুজলীতে আক্রান্ত হওয়ার দরুন।
সাজসজ্জা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩১২. আবু উসমান নাহদী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমরা উতবা ইবনি ফারকাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর সাথে ছিলাম। এমন সময় উমার [রাঃআঃ]-এর আদেশ পৌঁছলো, রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] বলেছেনঃ রেশমী কাপড় শুধু ঐ ব্যক্তিই পরিধান করিতে পারে, আখিরাতে যাহার কোন অংশ নেই; তবে এতটুকু পরিমান। আবু উসমান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেনঃ তিনি বৃদ্ধাঙ্গুলির সংলগ্ন আঙ্গুলীদ্বয় দ্বারা ইঙ্গিত করিলেন। আমার মনে হলো তা চাদরের প্রান্ত ভাগ হইবে। অবশেষে আমি যখন চাদর দেখলাম, তখন নিশ্চিত হলাম।
সাজসজ্জা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩১৩. উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি রেশমী কাপড় চার আঙ্গুলের বেশি ব্যবহারের অনুমুতি দেননি।
সাজসজ্জা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১২.পরিচ্ছেদঃ জোড়া পোশাক পরিধান করা
৫৩১৪. বারা ইবনি আযিব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ]-কে জোড়া পোশাক পরিহিত, মাথার চুল সুবিন্যাস্ত অবস্থায় দেখেছি। আমি পূর্বে ও পরে কাউকে তাহাঁর চেয়ে সুন্দর কাউকে দেখিনি।
সাজসজ্জা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৩.পরিচ্ছেদঃ হিবারা [ইয়ামানী চাদর] পরিধান করা
৫৩১৫. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হিবারা [ ইয়ামানী চাদর-বিশেষ] ছিল রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ]-এর নিকট সর্বাধিক পছন্দনীয় কাপড়।
সাজসজ্জা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৪.পরিচ্ছেদঃ কুসুম রঙের কাপড় পরিধান করা নিষেধ
৫৩১৬. আবদুল্লাহ্ইবনি আমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] তাকে দুটি কুসুম রঙের কাপড় পরিহিত অবস্থায় দেখে বললেনঃ এটা কাফিরদের পোশাক। অতএব, তুমি এটা পরিধান করোনা।
সাজসজ্জা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩১৭. আবদুল্লাহ্ইবনি আমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
এক সময় তিনি রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ]-এর নিকট দুটি কুসুম রঙের কাপড় পরিহিত অবস্থায় আগমন করলে তিনি রাগান্বিত হইয়া বলেনঃ ফেলে দাও। তিনি বললেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! কোথায় ফেলব? তিনি বললেনঃ দোযখে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩১৮. আলী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] আমাকে সোনার আংটি, রেশমী কাপড় ও কুসুম রঙের কাপড় পরতে এবং রুকু অবস্থায় কুরআন পাঠ করিতে নিষেধ করিয়াছেন।
সাজসজ্জা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৫.পরিচ্ছেদঃ সবুজ কাপড় পরিধান করা
৫৩১৯. আবু রিম্সা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
একদা রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] দুইখানা সবুজ কাপড় পরিহিত অবস্থায় আমাদের নিকট আগমন করেন।
সাজসজ্জা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৬.পরিচ্ছেদঃ বুরদা [ডোরাকাটা চাদর] পরিধান করা
৫৩২০. খাব্বাব ইবনি আরত [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ]-এর নিকট অভিযোগ করলাম, তখন তিনি কাবা শরীফের ছায়ায় একখানা বুরদার উপর মাথা রেখে আরাম করছিলেন। আমি বললামঃ আপনি কি আমাদের জন্য সাহায্য প্রার্থনা করবেন না, আপনি কি আমাদের জন্য আল্লাহর কাছে দুআ করবেন না?
সাজসজ্জা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩২১. সাহ্ল ইবনি সাদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একজন মহিলা একখানা বুরদা নিয়ে আসলে সাহ্ল [রাঃআঃ] বলেনঃ তোমরা কি জান, বুরদা কি? উপস্থিত লোকজন বললঃ হ্যাঁ, এমন চাদর যাহার কিনারায় নকশা করা ছিল। মহিলা বললঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমি এটা আপনাকে পরানোর জন্য নিজ হাতে তৈরি করেছি। রাসূলাল্লাহ্[সাঃআঃ] এমনভাবে তা গ্রহণ করিলেন যেন তাহাঁর সেটি প্রয়োজন, আর তিনি তা লুঙ্গিরূপে পরে আমাদের নিকট আসলেন।
সাজসজ্জা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৭.পরিচ্ছেদঃ সাদা কাপড় পরার আদেশ
৫৩২২. সামূরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা সাদা কাপড় পরিধান করিবে। কেননা এটা বেশি পবিত্র হইয়া ও বেশি পরিচ্ছন্ন১। আর তোমরা তোমাদের মৃতদেরকে সাদা কাপড় দিয়ে কাফন দেবে।
১} যেহেতু সামান্য ময়লা হলে বা সামান্য নাপাকী লাগলেই দেখা যায়, ফলে ধুয়ে ফেলা হয়। জসজ্জা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩২৩. সামূরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা সাদা কাপড় ব্যবহার করিবে। জীবিতরা তা পরবে আর মৃতদেরকে তা দিয়ে কাফন দেবে। কেননা, এটাই উৎকৃষ্ট কাপড়।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৮.পরিচ্ছেদঃ কাবা২ পরিধান করা
৫৩২৪. মিসওয়ার ইবনি মাখ্রামা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
একদা রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] কাবা বণ্টন করিলেন কিন্তু মাখ্রামা [রাঃআঃ]-কে কিছু না দেওয়ায় তিনি বললেনঃ প্রিয়পুত্র! তুমি আমার সাথে চল; আমরা রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ]-এর নিকট যাব। আমি তাহাঁর সাথে রওয়ানা হলাম। তিনি আমাকে বললেনঃ তুমি ভেতরে প্রবেশ করে তাঁকে আমার নিকট ডেকে আনো, আমি তাঁকে ডাকলে তিনি ঐ কাবা পরিহিত অবস্থায় তার নিকট আগমন করিলেন এবং বললেনঃ আমি এটা আপনার জন্য রেখে দিয়েছি, মাখরামা সেটি পরিধান করিলেন।
২} ঢোলা জোব্বা, যা জামার উপর পরা হয়। আরব ও ইরানীরা পরে থাকে।সাজসজ্জা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৯.পরিচ্ছেদঃ পায়জামা পরিধান করা
৫৩২৫. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি নাবী [সাঃআঃ] -কে আরাফাতে বলিতে শোনেন ঃ যাহার লুঙ্গি না মিলে, সে যেন পায়জামা পরিধান করে এবং যাহার জুতা নেই সে যেন মোজা পরিধান করে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২০.পরিচ্ছেদঃ লুঙ্গি ইত্যাদি পরে হেচড়িয়ে চলার উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা
৫৩২৬. আব্দুল্লাহ্ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] বলেছেনঃ এক ব্যক্তি গর্বভরে স্বীয় পরিধেয় লুঙ্গি বা পায়জামা হেচড়িয়ে চলতো। সে কিয়ামত পর্যন্ত মাটির মধ্যে ধসতে থাকিবে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩২৭. আবদুল্লাহ্[রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি গর্বভরে নিজের কাপড় মাটিতে হেচড়িয়ে চলে, কিয়ামতের দিন আল্লাহতার দিকে দৃষ্টিপাত করবেন না।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩২৮. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি গর্বভরে নিজের কাপড় মাটিতে হেঁচড়িয়ে চলে আল্লাহপাক কিয়ামতের দিন তার প্রতি দৃষ্টিপাত করবেন না।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২১.পরিচ্ছেদঃ লুঙ্গি পরিধানের স্থান
৫৩২৯. হুযায়ফা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ লুঙ্গি ,পায়জামা ইত্যাদি পায়ে গোছার মধ্যবর্তী স্থান পর্যন্ত থাকা উচিত যেখানে মাংসপেশী অবস্থিত। যদি তা পছন্দ না হয়, তবে আরও কিছু নিচে পরতে পার। যদি আরও নিচু করিতে ইচ্ছা কর, তবে পায়ের গোছার নিচে পরবে, কিন্তু গিরার নিম্নাংশের লুঙ্গি পরার কোন অধিকার নাই।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২২.পরিচ্ছেদঃ লুঙ্গি,চাদর ইত্যাদির যে অংশ পায়ের গিরার নীচে থাকিবে
৫৩৩০. আবু হুরাইরা হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ লুঙ্গি ইত্যাদির যে অংশ গিরার নীচে থাকিবে, তা দোজখে থাকিবে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩৩১. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] থেকে বর্ণনা করিয়াছেন, তিনি বলেছেনঃ ইযাহার বা লুঙ্গির যে অংশ গোড়ালির উপরিস্থ গিরার নীচে থাকিবে তা দোযখে অবস্থান করিবে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩.পরিচ্ছেদঃ ইযাহার বা লুঙ্গি টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে পরা
৫৩৩২. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ইযাহার বা লুঙ্গি ইত্যাদি যে ব্যক্তি নীচে ঝুলিয়ে পরিধান করে, তার প্রতি আল্লাহতাআলা রহমতের দৃষ্টি নিক্ষেপ করবেন না।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩৩৩. আবু যর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন তিন প্রকার ব্যক্তির সাথে আল্লাহতাআলা কথা বলবেন না এবং তাহাদেরকে গুনাহ থেকে পবিত্র করবেন না, বরং তাহাদের জন্য থাকিবে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। তাহাদের একজন ঐ ব্যক্তি, যে দান করে পরে খোঁটা দেয়; দ্বিতীয় ব্যক্তি, যে ইযাহার বা লুঙ্গি ইত্যাদি লটকিয়ে চলে; তৃতীয় ব্যক্তি যে মিথ্যা শপথ দ্বারা পণ্য চালায়।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩৩৪. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ইযাহার, জামা, পাগড়ি ইত্যাদির যে কোন একটি যে ব্যক্তি অহংকারভরে ঝুলায়, তার প্রতি আল্লাহতাআলা কিয়ামতের দিন দৃষ্টিপাত করবেন না।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩৩৫. মালিক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তাহাঁর পিতা থেকে হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি গর্বভরে তার কাপড় ঝুলিয়ে পরবে, কিয়ামতের দিন আল্লাহতাআলা তাহাঁর প্রতি দৃষ্টিপাত করবেন না। তখন আবু বকর [রাঃআঃ] বলিলেনঃ ইয়া রসূলুল্লাহ, অসতর্কতাবস্থায় আমার ইযারের একদিক লম্বা হইয়া যায়। কিন্তু সতর্ক হলে বোধহয় এরূপ হইবে না। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেনঃ যারা গর্বভরে এরূপ করে, আপনি তাহাদের অন্তর্ভুক্ত নন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৪.পরিচ্ছেদঃ নারীদের কাপড়ের নিন্মাংশ
৫৩৩৬. ইবনি উমার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি গর্বভরে নিজের কাপড় হেচড়িয়ে চলে, আল্লাহতাআলা তার প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ করবেন না। উম্মে সালামা [রাঃআঃ] বললেনঃ ইয়া রসূলুল্লাহ্; নারীরা তাহাদের কাপড়ের নিম্নাংশ কিভাবে রাখবে? তিনি বললেনঃ তারা তা এক বিঘত লম্বা করে দিবে। বর্ণনাকারী বলেন, উম্মে সালামা [রাঃআঃ] বলিলেনঃ তা হলে তো তাহাদের পা খোলা থাকিবে। রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] বলিলেনঃ তাহলে তারা তা এক হাত লম্বা করিবে, এর উপর যেন তারা লম্বা না করে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩৩৭. উম্মে সালামা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে নারীদের আঁচল সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলিলেনঃ তারা তা অর্ধ হাত লম্বা করিবে। উম্মে সালামা [রাঃআঃ] বললেনঃ তবে তো পা খোলা থাকিবে। তিনি বলিলেনঃ তা হলে একহাত লম্বা করিবে, তার চেয়ে লম্বা করিবে না।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩৩৮. উম্মে সালামা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
ইযাহার বা লুঙ্গি ইত্যাদি সম্পর্কে রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] যা বলেছেনঃ তা বলার পর উম্মে সালামা জিজ্ঞাসা করিলেনঃ নারীরা কী করিবে? তিনি বলিলেনঃ তারা আধহাত লম্বা করিবে। উম্মে সালামা [রাঃআঃ] বলিলেনঃ তখনও তো তাহাদের পা প্রকাশিত হইয়া পড়বে। রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] বলিলেনঃ তাহলে তারা একহাত ঝুলাবে, এর উপর বাড়াবে না।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩৩৯. উম্মে সালামা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞাসা করা হল নারীরা তাহাদের আঁচল কতটুকু নীচু করিবে? তিনি বলিলেনঃ তারা আধহাত লম্বা করিবে। উম্মে সালামা [রাঃআঃ] বলিলেনঃ তখনও তো তাহাদের পা খোলা থাকিবে। রসূলুল্লাহ্বলিলেনঃ তাহলে তারা একহাত লম্বা করিবে কিন্তু এর উপর বাড়াবে না।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৫.পরিচ্ছেদঃ এক কাপড়ে সর্বাঙ্গ জড়িয়ে তার একপার্শ্ব কাঁধের উপড় ফেলে রাখা নিষেধ
৫৩৪০. আবু সাইদ খুদ্রী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] ইশতিমালুস-সাম্মা অর্থাৎ এক কাপড়ে এমনভাবে শরীর জড়াতে নিষেধ করিয়াছেন যে, তাহাঁর একদিক কাঁধের উপর ফেলে রাখা হইবে এবং একই কাপড়ে পিঠ ও হাঁটু আবৃত করে এমনভাবে বসতে নিষেধ করিয়াছেন, যাতে ঐ কাপড়ের কিছুমাত্র লজ্জাস্থানের উপর না থাকে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩৪১. আবু সাইদ খুদরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] ইশতিমালুম-সাম্মা পদ্ধতিতে কাপড় পরতে এবং একই কাপড়ে পিঠ, হাঁঠু ইত্যাদি আবৃত করে এমনভাবে বসতে নিষেধ করিয়াছেন, যাতে ঐ কাপড় কিছুমাত্র লজ্জাস্থানের উপর না থাকে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৬.পরিচ্ছেদঃ এক কাপড়ে ইহতিবা [সর্বশরীর জড়িয়ে বসা] নিষেধ
৫৩৪২. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] ইশতিমালুম-সাম্মা পদ্ধতিতে কাপড় পরতে এবং একই কাপড়ে পিঠ, হাঁঠু জড়িয়ে বসতে নিষেধ করিয়াছেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৭.পরিচ্ছেদঃ ছাইরঙ্গা পাগড়ি পরিধান করা
৫৩৪৩। আমর ইবনি হুরায়স [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তাহাঁর পিতা থেকে হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ]-এর মাথায় ছাইরঙা পাগড়ি দেখেছি।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৮.পরিচ্ছেদঃ কালো পাগড়ি ব্যবহার করা
৫৩৪৪. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] মক্কা বিজয়ের দিন ইহরাম ব্যতীত প্রবেশ করিলেন, তখন তাহাঁর মাথায় কালো পাগড়ি শোভা পাচ্ছিল।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩৪৫. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] মক্কা বিজয়ের দিন মক্কায় প্রবেশ করেন, তখন তাহাঁর মাথায় কালো পাগড়ি ছিল।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৯.পরিচ্ছেদঃ পাগড়ির প্রান্ত দুকাঁধের মাঝখানে লটকানো
৫৩৪৬. জাফর ইবনি আমর ইবনি উমাইয়া [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তার পিতা বলেছেন, আমি যেন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে কালো পাগড়ি পরিহিত অবস্থায় মিম্বরের উপর দেখেছি, যাহার প্রান্তদেশ তাহাঁর স্কন্ধদ্বয়ের উপর লটকানো রয়েছে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩০.পরিচ্ছেদঃ ছবি
৫৩৪৭. আবু তাল্হা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] বলেছেনঃ ফেরেশ্তা ঐ ঘরে প্রবেশ করে না, যে ঘরে কুকুর অথবা ছবি থাকে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩৪৮. আবু তাল্হা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ]–কে বলিতে শুনেছিঃ ফেরেশতা ঐ ঘরে প্রবেশ করে না, যে ঘরে কুকুর অথবা ভাস্কর্য থাকে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩৪৯. উবায়দুল্লাহ্ইবনি আবদুল্লাহ্[রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি আবু তাল্হা আনসারী [রাঃআঃ]–কে তাহাঁর রুগ্নাবস্থায় দেখিতে গেলে তাহাঁর নিকট সাহ্ল ইবনি হুনায়ফকে দেখিতে পান। আবু তাল্হা [রাঃআঃ] এক ব্যক্তিকে তাহাঁর নিচ বিছানা বের করে ফেলতে আদেশ করিলেন। তখন সাহ্ল [রাঃআঃ] তাঁকে বললেনঃ কেন বের করবেন? তিনি বললেনঃ কেননা তাতে ছবি রয়েছে। এ ব্যাপারে রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] যা বলেছেন, তা তো তুমি জান। সাহ্ল বললেনঃ তিনি কি বলেন নি যে, কাপড়ে নক্শারূপে থাকলে কোন ক্ষতি নেই? আবু তাল্হা [রাঃআঃ] উত্তর করলেনঃ হ্যাঁ, কিন্তু আমার মনের জন্য এটাই বেশি স্বস্তিকর।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩৫০. আবু তাল্হা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ঘরে ছবি থাকে, সে ঘরে ফেরেশতা প্রবেশ করে না। হাদীস বর্ণনাকারী বুস্র [রাঃআঃ] বলেন, যায়দ ইবনি খালিদ অসুস্থ হলে, আমরা তাঁকে দেখিতে গেলাম। আমরা তাহাঁর দরজায় একখানা পর্দা লটকানো দেখলাম, যাতে ছবি রয়েছে। আমি উবায়দুল্লাহ খাওলানীকে বললামঃ যায়দ [রাঃআঃ]-কে আমাদের গতকাল ছবি সম্বন্ধে সংবাদ দেননি? উবায়দুল্লাহ্[রাঃআঃ] বললেনঃ তুমি কি শোননি? তিনি এও বলেছেনঃ কাপড়ে নকশারূপে থাকলে কোন ক্ষতি নেই?
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩৫১. আলী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
আমি কিছু খাদ্য প্রস্তুত করে রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ]–কে দাওয়াত দিলাম। তিনি এসে ঘরে প্রবেশ করে একখানা এমন পর্দা দেখলেন, যাতে ছবি ছিল। তিনি বের হইয়া বললেনঃ ফেরেশ্তা ঐ ঘরে প্রবেশ করে না, যে ঘরে ছবি থাকে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩৫২. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
একদা রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] বাইরে গেলেন। তারপর আবার প্রবেশ করিলেন। আমি একটি পর্দা লটকিয়ে রেখেছিলাম, যাতে ডানাবিশিষ্ট ঘোড়ার ছবি ছিল। তিনি তা দেখে বললেনঃ তুমি তা খুলে ফেল।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩৫৩. উম্মুল মুমিনীন আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার একখানা পর্দার কাপড় ছিল, যাতে ছিল পাখীর ছবি। কেউ ঘরে ঢোকার সময় তা তাহাঁর সামনে পড়তো। রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] বললেনঃ হে আয়েশা! তুমি এটা উল্টিয়ে দাও। কেননা যখন আমি ঘরে প্রবেশ করি, তখন তা [মার্কা] দেখলে, দুনিয়া আমার স্মরণে এসে পড়ে। তিনি আর বলেনঃ আমাদের আর একখানা চাদর ছিল, যাতে পণ্যচিহ্ন অঙ্কিত ছিল, আমরা তা পরতাম, তাই তা কাটি নি।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩৫৪. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার ঘরে একখানা কাপড় ছিল, যাতে ছিল অনেক ছবি। আমি তা ঘরের চেরাগদানের উপর লটকিয়ে রেখেছিলাম। রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] সে দিকে ফিরে নামায পড়তেন। তিনি বললেনঃ হে আয়েশা! তুমি তা আমার সামনে থেকে সরিয়ে ফেল। আমি তা সরিয়ে ফেলি এবং তা দিয়ে বালিশ বানাই।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩৫৫. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি একখানা পর্দা ঝুলিয়েছিলেন, যাতে ছবি ছিল। রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] ঘরে প্রবেশ করে তা খুলে ফেললেন। তখন তা খণ্ডিত করে দুইটি বালিশ বানাই। ঐ মজলিসের রবীআ ইবনি আতা নামক এক ব্যক্তি বলে উঠলোঃ আমি আবু মুহাম্মদ অর্থাৎ কাসিমকে বলিতে শুনিয়াছি, আয়েশা [রাঃআঃ] বলেছেন, রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] তাতে হেলান দিতেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩১.পরিচ্ছেদঃ কঠিনতম শাস্তি যাহার হইবে
৫৩৫৬. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] কোন এক সফর শেষে তশরীফ আনলেন। আমি চেরাগদানে একটি পর্দা ঝুলিয়েছিলাম। যাতে ছবি অঙ্কিত ছিল। তিনি সেটি খুলে ফেলে বললেনঃ কিয়ামতের দিন সর্বাধিক আযাব হইবে তাহাদের, যারা আল্লাহর সৃষ্টবস্তুর ছবি অঙ্কন করে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩৫৭. উম্মুল মুমিনীন আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] আমার নিকট আগমন করিলেন। আমি ছবিযুক্ত একটি পর্দা ঝুলিয়ে রেখেছিলাম। তা দেখার পর তাহাঁর চেহারার রঙ পরিবর্তিত হলো। তিনি তা নিজ হইতে ছিঁড়ে ফেললেন এবং বললেনঃ কিয়ামতের দিন সর্বাধিক আযাব ঐ ব্যক্তিদের হইবে, যারা আল্লাহর সৃষ্টির অনুরূপ ছবি অঙ্কিত করে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩২.পরিচ্ছেদঃ কিয়ামতের দিন ছবি অঙ্কনকারীদের যা করিতে বলা হইবে
৫৩৫৮. নাযর ইবনি আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ]-এর নিকট উপবিষ্ট ছিলাম। এ সময় ইরাকের এক ব্যক্তি তাহাঁর নিকট এসে বললোঃ আমি এরূপ ছবি অঙ্কন করে থাকি, আপনি এ ব্যাপারে কি বলেন? তিনি বললেনঃ নিকটে এসো, নিকটে এসো। আমি মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ]–কে বলিতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি পৃথিবীতে কোন ছবি অঙ্কন করিবে, কিয়ামতের দিন তাকে ঐ ছবিতে প্রাণ সঞ্চার করিতে বলা হইবে কিন্তু সে তাতে প্রাণ সঞ্চার করিতে সক্ষম হইবে না।
ইসলামে পোশাকের বিধান -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩৫৯. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন ছবি অঙ্কন করিবে, তাকে শাস্তি দেওয়া হইবে, যতক্ষণ না সে তাতে প্রাণ সঞ্চার করিবে; অথচ সে তাতে প্রাণ দিতে সক্ষম হইবে না।
ইসলামে পোশাকের বিধান -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩৬০. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ছবি অঙ্কন করিবে, তাকে শাস্তি দেওয়া হইবে, যে পর্যন্ত না সে তাতে প্রাণ সঞ্চার করিবে; অথচ সে তাতে প্রাণ দিতে সক্ষম হইবে না।
ইসলামে পোশাকের বিধান -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩৬১. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] বলেছেনঃ ছবি তৈরিকারী লোকদেরকে কিয়ামতের দিন শাস্তি দেওয়া হইবে। তাহাদেরকে বলা হইবে, তোমরা যা তৈরি করেছ, তাতে জীবন দান কর।
ইসলামে পোশাকের বিধান -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩৬২. নাবী [সাঃআঃ]–এর স্ত্রী আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] বলেছেনঃ এ সকল ছবি অঙ্কনকারীকে কিয়ামতের দিন শাস্তি দেওয়া হইবে। তাহাদেরকে বলা হইবে, তোমরা যা তৈরি করেছ, তাতে প্রাণ দান কর।
ইসলামে পোশাকের বিধান -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩৬৩. উম্মুল মুমিনীন আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
কিয়ামতের দিন সর্বাপেক্ষা অধিক শাস্তি ঐ লোকদের হইবে, যারা সৃষ্টিকার্যে আল্লাহর অনুকরণ করে।
ইসলামে পোশাকের বিধান -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩.পরিচ্ছেদঃ সর্বাপেক্ষা অধিক শাস্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তি
৫৩৬৪. আবদুল্লাহ্[রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন ছবি তৈরিকারীরা সর্বাধিক শাস্তিপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হইবে।
ইসলামে পোশাকের বিধান -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩৬৫. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার জিব্রাঈল [আঃ] রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ]–এর নিকট প্রবেশের অনুমতি প্রার্থনা করলে, তিনি বললেনঃ আসুন! জিব্রাঈল [আঃ] বললেনঃ আমি কি করে প্রবেশ করবো, আপনার ঘরে এমন পর্দা লটকানো রয়েছে, যাতে ছবি রয়েছে। হয় আপনি তাহাদের মাথা কেটে ফেলুন, না হয় তা বিছানা বানান, যাতে তা পদদলিত হয়। কেননা, আমরা ফেরেশতাগণ এমন ঘরে প্রবেশ করি না, যাতে ছবি রয়েছে।
ইসলামে পোশাকের বিধান -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৪.পরিচ্ছেদঃ গায়ে দেওয়ার চাদর
৫৩৬৬. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্[সাঃআঃ] আমাদের গায়ে দেওয়ার চাদরে নামায পড়তেন না।
ইসলামে পোশাকের বিধান -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৫.পরিচ্ছেদঃ রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] –এর জুতার বর্ণনা
৫৩৬৭. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর জুতায় দুইটি ফিতা ছিল।
ইসলামে পোশাকের বিধান -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩৬৮. আমর ইবনি আউস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর জুতায় দুইটি ফিতা ছিল।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ লিগাইরিহি
৩৬.পরিচ্ছেদঃ এক জুতা পরে চলা নিষেধ
৫৩৬৯. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যখন তোমাদের কারো জুতার ফিতা ছিড়ে যায়, তখন সে যেন তা মেরামত না করা পর্যন্ত এক জুতা পায়ে দিয়ে না হাঁটে।
ইসলামে পোশাকের বিধান -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩৭০. আবু রযীন [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
আমি আবু হুরাইরা [রাঃআঃ]-কে দেখেছি, তিনি তাহাঁর ললাটে হাত মেরে বলছেন, হে ইরাকের অধিবাসীবৃন্দ! তোমরা কি ধারনা কর যে, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সম্বন্ধে মিথ্যা কথা বলবো? আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ তোমাদের কারো জুতার ফিতা ছিঁড়ে গেলে সে তা মেরামত করা পর্যন্ত যেন এক জুতা পরে না চলে।
ইসলামে পোশাকের বিধান -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৭.পরিচ্ছেদঃ চামড়ার বিছানা
৫৩৭১. আনাস ইবনি মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একখানা চামড়ায় শুলেন। তিনি ঘর্মাক্ত হলে উম্মে সুলায়ম গিয়ে তাহাঁর ঘাম মুছে একটি শিশিতে রাখলেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তা দেখিতে পেয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ হে উম্মে সুলায়ম? তুমি এটা কি করছ? তিনি বললেনঃ আমি আপনার এই ঘাম আমার সুগন্ধির সাথে মিশ্রিত করবো। তা শুনে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হাসলেন।
ইসলামে পোশাকের বিধান -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৮.পরিচ্ছেদঃ খাদিম ও বাহন রাখা
৫৩৭২. সামুরাহ ইবনি সাহম [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
আমি আবু হাশিম ইবনি উৎবা [রাঃআঃ]-এর নিকট গেলাম, তখন তিনি প্লেগে আক্রান্ত ছিলেন। মুআবিয়া [রাঃআঃ] তাঁকে দেখিতে আসলেন। তখন আবু হাশিম কাঁদতে লাগলেন। মুআবিয়া [রাঃআঃ] তাঁকে বললেনঃ তুমি কাঁদছো কেন? তোমার কি কোন ব্যথার যন্ত্রণা, না তুমি দুনিয়ার জন্য কাঁদছ? পার্থিব আনন্দের দিন তো তোমার কেটে গেছে। তিনি বললেনঃ এর কোনটাই নয়। কিন্তু রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে একটি উপদেশ দান করেছিলেন, আমি যদি তা পালন করতাম! তিনি বলেছিলেনঃ যখন তুমি গনীমতের মাল লোকদের মাঝে বণ্টন হইতে দেখবে, তখন তা হইতে তোমার জন্য একটি খাদিম এবং আল্লাহর রাস্তায় যাওয়ার একটি বাহনই যথেষ্ট মনে করিবে। কিন্তু আমি মাল পেয়ে তা জমা করেছি।
হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদীস
৩৯.পরিচ্ছেদঃ তলোয়ারের অলঙ্কার সম্পর্কে
৫৩৭৩. আবু উমামা ইবনি সাহল [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর তলোয়ার হাতলের প্রান্তদেশ ছিল রূপার।
ইসলামে পোশাকের বিধান -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩৭৪. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর তলোয়ারের খাপের নিম্নাংশ ছিল রূপার, আর তাহাঁর তলোয়ারের হাতলের প্রান্তদেশ ছিল রূপার এবং তার মাঝখানে ছিল রূপার কড়া।
ইসলামে পোশাকের বিধান -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩৭৫. সাঈদ ইবনি আবুল হাসান [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর তলোয়ারের হাতলের প্রান্তদেশ ছিল রূপার।
ইসলামে পোশাকের বিধান -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪০.পরিচ্ছেদঃ লাল জীনপোশের উপর বসা নিষেধ
৫৩৭৬. আলী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে বলেছেনঃ বল, হে আল্লাহ! আমাকে সঠিক পথে চালাও এবং আমাকে সরল পথ প্রদর্শন কর। আর তিনি আমাকে লাল মায়াসিরের উপর বসতে নিষেধ করিয়াছেন। মায়াসির এক প্রকার রেশমী চাদর, যা নারীরা তাহাদের স্বামীদের জন্য তৈরী করতো, যেন তারা তা হাওদার উপর রেখে বসতে পারে, ডোরাদার লাল চাদরের ন্যায়।
ইসলামে পোশাকের বিধান -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪১.পরিচ্ছেদঃ চেয়ারে বসা
৫৩৭৭. হুমায়দ ইবনি হিলাল [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
আবু রিফাআ [রাঃআঃ] বলেছেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত হলাম। তখন তিনি খুতবা দিচ্ছিলেন। আমি বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! একজন মুসাফির এসেছে এবং সে তার দ্বীন সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করছে। সে জানে না তার দ্বীন কি? তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] খুতবা বন্ধ করে আমার দিকে এগিয়ে আসলেন। একখানা চেয়ার আনা হলো, আমার যতটুকু মনে পড়ে, তার পায়াসমূহ ছিল লোহার। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার উপর উপবেশন করিলেন। তারপর তিনি আমাকে শিক্ষা দিতে লাগলেন, আল্লাহতায়ালা তাঁকে যা হইতে শিক্ষা দেন তা হইতে। এরপর তিনি খুতবায় ফিরে গেলেন এবং তা শেষ করিলেন।
ইসলামে পোশাকের বিধান -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪২.পরিচ্ছেদঃ লাল তাঁবু ব্যবহার করা
৫৩৭৮. আবু জুহায়ফা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা বাতহা নামক স্থানে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে ছিলাম, তখন তিনি লালবর্ণের তাঁবুতে ছিলেন এবং তাহাঁর নিকট অল্পসংখ্যক লোকই ছিল। এসময় বেলাল [রাঃআঃ] এসে আযান দিলেন। তিনি ডানে ও বামে তাহাঁর মুখ ফেরাচ্ছিলেন।
ইসলামে পোশাকের বিধান -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
Leave a Reply