সাফা ও মারওয়া তে তাহলিল তাকবীর দুয়া ও সাঈ করা

সাফা ও মারওয়া তে তাহলিল তাকবীর দুয়া ও সাঈ করা

সাফা ও মারওয়া তে তাহলিল তাকবীর দুয়া ও সাঈ করা >> সুনানে নাসাই শরিফের মুল সুচিপত্র দেখুন

পর্বঃ ২৪ঃ হজ্জের বিধি-বিধানসমূহ (২৯৬৬-২৯৯৪)

১.পরিচ্ছেদঃ যে দরজা দিয়ে [লোকেরা] বের হয়, সেই দরজা দিয়ে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাফার দিকে বের হওয়া
২.পরিচ্ছেদঃ সাফা ও মারওয়া প্রসঙ্গে
৩.পরিচ্ছেদঃ সাফায় দাঁড়াবার স্থান
৪.পরিচ্ছেদঃ সাফা পাহাড়ে তাকবীর বলা
৫.পরিচ্ছেদঃ সাফা পাহাড়ে তাহ্‌লীল করা
৬.পরিচ্ছেদঃ সাফার উপর যিকির এবং দুআ করা
৭.পরিচ্ছেদঃ বাহনে আরোহণ করে সাফা ও মারওয়ার তাওয়াফ [সাঈ] করা
৮.পরিচ্ছেদঃ সাফা ও মারওয়ার মধ্যে হেঁটে চলা
৯.পরিচ্ছেদঃ সাফা ও মারওয়ার মধ্যস্থলে রমল করা
১০.পরিচ্ছেদঃ সাফা ও মারওয়ার মধ্যে সাঈ করা
১১.পরিচ্ছেদঃ নিম্ন সমতলে সাঈ করা
১২.পরিচ্ছেদঃ হেঁটে চলার স্থান
১৩.পরিচ্ছেদঃ রমলের স্থান
১৪.পরিচ্ছেদঃ মারওয়ার উপর অবস্থানের স্থান
১৫.পরিচ্ছেদঃ মারওয়ার উপর তাকবীর বলা
১৬.পরিচ্ছেদঃ কিরান ও তামাত্তু হজ্জকারী সাফা ও মারওয়ায় কয়টি সাঈ করিবে?
১৭.পরিচ্ছেদঃ উমরা আদায়কারী কোথায় চুল কাটবে?
১৮.পরিচ্ছেদঃ কিরূপে চুল কাটবে?
১৯.পরিচ্ছেদঃ যে হজ্জের ইহ্‌রাম বেঁধেছে এবং হাদী [কুরবানীর পশু] সাথে এনেছে, তার কী করনীয়
২০.পরিচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি উমরার ইহ্‌রাম বেঁধেছে এবং হাদী [কুরবানীর পশু] সঙ্গে এনেছে সে কি করিবে?
২১.পরিচ্ছেদঃ ইয়াওমুত্‌ তারবিয়া১ – এর আগে খুতবা
২২.পরিচ্ছেদঃ তামাত্তু হজ্জকারী ব্যক্তি হজ্জের ইহ্‌রাম কখন করিবে?

১.পরিচ্ছেদঃ যে দরজা দিয়ে [লোকেরা] বের হয়, সেই দরজা দিয়ে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাফার দিকে বের হওয়া

২৯৬৬. আমর ইবনি দীনার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন ঃ আমি ইবনি উমার [রাঃআঃ] -কে বলিতে শুনিয়াছি ঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] মক্কায় আগমন করার পর সাতবার কাবা তাওয়াফ করেন। পরে মাকামে ইবরাহীমের পেছনে দাঁড়িয়ে দুরাকআত নামাজ আদায় করেন। তারপর যে দরজা দিয়ে লোক বের হয়, সে দরজা দিয়েই তিনি সাফার দিকে বের হন এবং সাফা ও মারওয়ার সাঈ করেন। শুবা [রাঃআঃ] বলেন ঃ আইউব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আমর ইবনি দীনার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সুত্রে আমার কাছে বর্ণনা করেন যে, ইবনি উমার [রাঃআঃ] একে সুন্নত [বিধিবদ্ধ নিয়ম] বলে আখ্যায়িত করিয়াছেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২.পরিচ্ছেদঃ সাফা ও মারওয়া প্রসঙ্গে

২৯৬৭. উরওয়া [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

আমি আয়েশা [রাঃআঃ]-এর নিকট [আরবী] [অর্থঃ তাই যে কেউ কাবা গৃহের [হজ্জ কিংবা উমরা করে] এ দুটির [সাফা-মারওয়ার] মধ্যে যাতায়াত [সাঈ] করাতে তাহাঁর কোন পাপ নেই। [২ ঃ ১৫৮] এ আয়াত পাঠ করে বললামঃ এ দুটির মধ্যে সাঈ না করাকে আমি মন্দ মনে করি না। তিনি বলেন ঃ তুমি যা বললে তা মন্দ কথা, জাহিলী যুগে লোকেরা এই দু পাহাড়ের সাঈ করতো না। যখন ইসলামের যুগ এলো এবং কুরআন নাযিল হলো ঃ [আরবী] “নিশ্চয় সাফা ও মারওয়া আল্লাহর অন্যতম নিদর্শন” [২ ঃ ১৫৮]। তখন রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] সাঈ করিলেন এবং আমরাও তাহাঁর সঙ্গে সাঈ করলাম। তাই ইহা সুন্নত [বিধিবদ্ধ বিধান]।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৯৬৮. উরওয়া [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

আমি আয়েশা [রাঃআঃ] –কে [আরবী] এ আয়াত সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করলাম এবং বললাম ঃ আল্লাহর শপথ সাফা ও মারওয়ায় সাঈ না করলে কারো অন্যায় হইবে না। আয়েশা [রাঃআঃ] বলিলেন ঃ তুমি যা ব্যাখ্যা করলে, তা ভাল নয়, হে ভাগ্নে! তুমি এই আয়াতের মর্ম যা বুঝেছ; যদি তা-ই হতো তাহলে তো বলা হত এর সাঈ না করলে কোন অন্যায় হইবে না কিন্তু এই আয়াত নাযিল হইয়াছে আনসারদের ইসলাম গ্রহণের [পূর্ববর্তী অবস্থা] সম্বন্ধে। [ইসলাম গ্রহণের] পূর্বে যারা মুশাল্লাল [স্থান]-এর নিকট অবস্থিত মানাতে তাগিয়া [একটি মূর্তি]-এর ইবাদত করতো। তারা এখানে ইহ্‌রাম বাঁধত এবং যারা এখানে ইহ্‌রাম বাঁধত তাঁরা সাফা ও মারওয়ার সাঈ করতো না। যখন তাঁরা রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] -কে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করেছিল, তখন মহান মহিয়ান আল্লাহ তাআলা নাযিল করেন ঃ [আরবী]১ তারপর রসুলুল্লাহ পর্বতদ্বয়ের সাঈ করাকে শরীআতের আহকামভুক্ত করেন। তাই কেউ পর্বতদ্বয়ের সাঈ বাদ দিতে পারবে না।

{১} অর্থঃ সাফা ও মারওয়া আল্লাহ তাআলার শিআর [বিশেষ] প্রতীক সমূহের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং যারা বায়তুল্লাহর হ্জ্জ করিবে তাহাদের জন্য এ দুটিতে সাঈ [প্রদক্ষিণ] করলে কোন অপরাধ হইবে না।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৯৬৯. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন ঃ আমি শুনিয়াছি যে, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন সাফায় গমনের ইচ্ছায় মসজিদ [অর্থাৎ তাওয়াফের স্থান] থেকে বের হলেন, তখন তিনি বলিলেন ঃ আমরা সেখান থেকে আরম্ভ করব যেখান থেকে আল্লাহ তাআলা আরম্ভ করিয়াছেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৯৭০. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] সাফার দিকে বের হইয়া বলিলেন ঃ আল্লাহ তাআলা যে স্থান থেকে আরম্ভ করিয়াছেন, আমরাও সে স্থান থেকে আরম্ভ করবো। তারপর তিনি পাঠ করেন ঃ

إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَائِرِ اللَّهِ [البقرة: 158]

[অর্থ ঃ সাফা ও মারওয়া আল্লাহ তাআলার শিআর [বিশেষ] প্রতীক সমুহের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং যারা বায়তুল্লাহ্‌র হজ্জ করিবে তাহাদের জন্য এ দুটিতে সাঈ করলে কোন অপরাধ হইবে না।]

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩.পরিচ্ছেদঃ সাফায় দাঁড়াবার স্থান

২৯৭১. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] সাফায় আরোহণ করে যখন তিনি বায়তুল্লাহ্‌ দেখিতে পান তখন তাকবীর বলেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৪.পরিচ্ছেদঃ সাফা পাহাড়ে তাকবীর বলা

২৯৭২. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন ঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] সাফায় [পাহাড়ে] আরোহণ করে তিনবার তাকবীর [আল্লাহু আকবর] বলেন। এরপর তিনি বলেন ঃ

لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। তিনি একক, তাহাঁর কোন শরীক নেই, রাজত্ব তাহাঁরই, প্রশংসা তাহাঁরই, এবং তিনি সব কিছুতে ক্ষমতাবান।

তিনি এইরূপ তিনবার বলেন, পরে দুআ করেন। মারওয়া পাহাড়েও তিনি এইরূপ করেন।হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৫.পরিচ্ছেদঃ সাফা পাহাড়ে তাহ্‌লীল করা

২৯৭৩. জাফর ইবনি মুহাম্মাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি জাবির [রাঃআঃ] কে নাবী [সাঃআঃ]-এর হজ্জ সম্বন্ধে বলিতে শুনেছেন ঃ তারপর নাবী [সাঃআঃ] সাফায় আরোহণ করে [লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্‌ পড়েন] এবং এর মাঝে দুআ করেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৬.পরিচ্ছেদঃ সাফার উপর যিকির এবং দুআ করা

২৯৭৪. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন ঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] সাতবার বায়তুল্লাহ্‌র তাওয়াফ করেন, এতে তিনবার রমল করেন এবং চারবার সাধারনভাবেই হাঁটেন। তারপর মাকামে ইবরাহীমের কাছে দাঁড়িয়ে দুরাকআত নামাজ আদায় করেন এবং পড়েন ঃ [আরবি] এ সময় তিনি লোকদেরকে শোনাবার জন্য উচ্চকণ্ঠে পড়েন। এরপর সেখান থেকে এসে তিনি হাজরে আসওয়াদ স্পর্শ ও চুম্বন করেন। তারপর সাফার দিকে গমন করেন এবং বলেন ঃ আমরা তা হইতে আরম্ভ করবো, আল্লাহ যা হইতে আরম্ভ করিয়াছেন। এরপর তিনি সাফা হইতে আরম্ভ করেন এবং উপর আরোহণ করেন। সেখান থেকে বায়তুল্লাহ্‌ দেখিতে পেলেন এবং তিনি তিনবার বলেন ঃ [আরবি] এরপর তিনি আল্লাহু আকবর বলেন এবং আল্লাহর প্রশংসা করেন। এরপর তাহাঁর জন্য যা [তাকদীর] নির্ধারিত ছিল তিনি তা দিয়ে দুআ করেন। পরে তিনি পায়ে হেঁটে নেমে আসেন এবং উপত্যকার নিম্নভূমিতে তাহাঁর দুপা স্থির হইতে থাকল। তিনি দ্রুত হেঁটে চলেন, যাতে তাহাঁর দুই পা ঊর্ধ্বগামী হয়। পরে তিনি মারওয়া পাহাড়ে আরোহণ করেন। এখানেও বায়তুল্লাহ্‌ তাহাঁর দৃষ্টিগোচর হয়। এখানেও তিনি তিনবার বলেন ঃ [আরবি] এরপর তিনি আল্লাহকে স্মরণ করেন, [সুবহানাল্লাহ ও আলহামদুলিল্লাহ বলেন]। এখানে তিনি আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী দুআ করিলেন। দুআ করেন এবং এভাবে তিনি তাওয়াফ শেষ করেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৭.পরিচ্ছেদঃ বাহনে আরোহণ করে সাফা ও মারওয়ার তাওয়াফ [সাঈ] করা

২৯৭৫. আবু যুবায়র [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি জাবির ইবনি আব্দুল্লাহ [রাঃআঃ] -কে বলিতে শুনেছেন ঃ নাবী [সাঃআঃ] বিদায় হজ্জে বাহনের উপর থেকে বায়তুল্লাহ্‌ তাওয়াফ করেন এবং সাফা ও মারওয়ার মাঝে সাঈ করেন, যেন লোকে তাঁকে দেখিতে পায় এবং তিনি উপর থেকে অবলোকন করেন। যেন প্রশ্নকারীগণ তাহাঁর কাছে প্রশ্ন করিতে পারেন। কেননা লোকেরা তাঁকে পরিবেষ্টিত করে রেখেছিল [অনেক ভিড় ছিল]।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৮.পরিচ্ছেদঃ সাফা ও মারওয়ার মধ্যে হেঁটে চলা

২৯৭৬. কাসীর ইবনি জুমহান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

আমি ইবনি উমার [রাঃআঃ] -কে দেখেছি তিনি সাফা ও মারওয়ার মধ্যস্থলে হাঁটছেন। তিনি বলেন ঃ যদি আমি হেঁটে চলি, তা এজন্য যে, আমি রাসুলুলাহ [সাঃআঃ] -কে হাঁটতে দেখেছি। আর যদি আমি দ্রুত ছুটে চলি [সাঈ করি], তা এজন্য যে, আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] -কে দ্রুত ছুটে চলতে দেখেছি।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৯৭৭. সাঈদ ইবনি জুবায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

আমি ইবনি উমার [রাঃআঃ]-কে দেখেছি, এরপর তিনি পূর্ব হাদিসের মত উল্লেখ করেন। তবে তিনি [অতিরিক্ত] বলেন ঃ আমি তখন ছিলাম বৃদ্ধ ।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৯.পরিচ্ছেদঃ সাফা ও মারওয়ার মধ্যস্থলে রমল করা

২৯৭৮. যূহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন ঃ লোকেরা ইবনি উমার [রাঃআঃ] -কে জিজ্ঞাসা করিলেন ঃ আপনি কি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] -কে সাফা ও মারওয়ার মধ্যস্থলে রমল করিতে দেখেছেন? তিনি বলেন ঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] ছিলেন একদল লোকের মধ্যে এবং তাঁরা সকলেই রমল করেন। আমি মনে করি, তাঁরা রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর রমলের অনুকরণেই রমল করিয়াছেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ জইফ হাদীস

১০.পরিচ্ছেদঃ সাফা ও মারওয়ার মধ্যে সাঈ করা

২৯৭৯. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন ঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] সাফা ও মারওয়ার মধ্যে সাঈ করেন মুশরিকদেরকে তাহাঁর [ও সাহাবীদের] শক্তি প্রদর্শনের জন্য।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১১.পরিচ্ছেদঃ নিম্ন সমতলে সাঈ করা

২৯৮০. কুতায়বা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

জনৈক মহিলা থেকে বর্ণিত যে, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] -কে উপত্যকার নিম্ন সমতলে১ সাঈ [সাফা ও মারওয়া পাহাড়দ্বয়ের ঢালের মধ্যবর্তী নিম্ন সমতলকে বাতনুল মাসীল করিতে দেখেছি। তিনি বলছিলেন ঃ এই উপত্যকা দ্রুতগতিতে অতিক্রম করিতে হয়।

{১} সাফা ও মারওয়া পাহাড়দ্বয়ের ঢালের মধ্যবর্তী নিম্ন সমতলকে বাতনুল মাসীল [ঢলের পানি চলার নিম্নভুমি] বলা হইয়াছে। সাঈ করার সময় এ স্থানটুকু দ্রুত অতিক্রম করিতে হয়।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১২.পরিচ্ছেদঃ হেঁটে চলার স্থান

২৯৮১. জাবির ইবনি আব্দুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন সাফা থেকে অবতরন করিতেন তখন [স্বাভাবিক] হাঁটতেন, এমনকি তাহাঁর পদদ্বয় উপত্যকার নিম্নভুমিতে অবতরিত হলে তিনি সাঈ করে তা পার হইতেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৩.পরিচ্ছেদঃ রমলের স্থান

২৯৮২. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন ঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর পদদ্বয় উপত্যকার নিম্নভাগে পৌছলে, তখন তিনি রমল [সাঈ] করিতে করিতে তা পার হইয়া যান।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৯৮৩. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] অবতরন করেন অর্থাৎ সাফা হইতে। যখন তাহাঁর পদযুগল উপত্যকায় [নিম্নভুমিতে] অবতরণ করে, তখন তিনি রমল করেন। আর যখন তিনি উপরে [মারওয়া] আরোহণ করেন, তখন তিনি [স্বাভাবিকভাবে] হেঁটে চলেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৪.পরিচ্ছেদঃ মারওয়ার উপর অবস্থানের স্থান

২৯৮৪. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ্‌ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] মারওয়ায় এসে তার উপর আরোহণ করেন। তারপর বায়তুল্লাহ্‌ তাহাঁর দৃষ্টিগোচর হলো। তখন তিনি তিনবার বলেন ঃ

لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

এরপর তিনি আল্লাহকে স্মরণ [যিকির] করেন, সুবহানাল্লাহ ও আল-হামদুলিল্লাহ বলেন। তারপর তিনি আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী দুআ করেন এবং এভাবে তিনি তাওয়াফ সম্পন্ন করেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৫.পরিচ্ছেদঃ মারওয়ার উপর তাকবীর বলা

২৯৮৫. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন ঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] সাফার দিকে গেলেন এবং তাতে আরোহণ করিলেন। এরপর বায়তুল্লাহ তাহাঁর দৃষ্টিগোচর হলো। এরপর তিনি মহান মহিয়ান আল্লাহর তাওহীদ বর্ণনা করিলেন এবং তাহাঁর বড়ত্ব ঘোষণা [তাকবীর পাঠ] করিলেন। তিনি বলিলেন ঃ

لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ يُحْيِي وَيُمِيتُ وَهُوَ، عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

এরপর তিনি চলতে লাগলেন যখন তাহাঁর পদদ্বয় [উপত্যকাতে সমতলে] নামলো তখন সাঈ করিলেন। যখন উপত্যকা থেকে উপরে উঠে এলো, তখন তিনি হেঁটে মারওয়ায় পৌঁছলেন। তিনি এখানেও তাই করিলেন, যা তিনি সাফায় করেছিলেন। এভাবে তিনি তাহাঁর তাওয়াফ সম্পন্ন করেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৬.পরিচ্ছেদঃ কিরান ও তামাত্তু হজ্জকারী সাফা ও মারওয়ায় কয়টি সাঈ করিবে?

২৯৮৬. আবু যুবায়র [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি জাবির [রাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছেন যে, নাবী [সাঃআঃ] সাফা ও মারওয়ার মধ্যে একবারের বেশি তাওয়াফ [সাঈ] করেন নি।

{১} অর্থাৎ হজ্জ ও উমরার জন্য ভিন্ন ভিন্ন সাঈ করেন নি।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৭.পরিচ্ছেদঃ উমরা আদায়কারী কোথায় চুল কাটবে?

২৯৮৭. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ]-এর একবারের উমরায় মারওয়া পাহাড়ের উপরে তাহাঁর চুল কাঁচি দিয়ে কেটেছেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৯৮৮. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন ঃ আমি মারওয়ায় রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর চুল কেটেছি এক বেদুইনের কাঁচি দিয়ে।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৮.পরিচ্ছেদঃ কিরূপে চুল কাটবে?

২৯৮৯. মূআবিয়া [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন ঃ আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর চুলের চারদিক থেকে কেটেছি, আমার কাছে বিদ্যমান একটি কাঁচি দিয়ে তাহাঁর বায়তুল্লাহ্‌র তাওয়াফ ও সাফা মারওয়া সাঈ-এর পর যিলহাজ্জ মাসের [প্রথম] দশকে। কায়স [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, লোকেরা মুআবিয়া [রাঃআঃ]-এর এ বিষয়টিতে আপত্তি প্রদান করিয়াছেন।

{১} কারণ বিদায় হজ্জে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] মিনাতেই ইহ্‌রাম থেকে হালাল হইয়াছিলেন। সম্ভবত অন্য কোন উমরার পর মুআবিয়া [রাঃআঃ] এইরূপ করেছিলেন। সময়ের বর্ণনায় ভ্রান্তি রয়েছে। হাশিয়াতুল জাদীদা। -অনুবাদক। ৮ম হিজরীতে জিইররানা থেকে ইহ্‌রাম বেঁধে উমরায় মুআবিয়া [রাঃআঃ] নাবী [সাঃআঃ]-এর চুল কেটে ছিলেন – সম্পাদক।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ শায

১৯.পরিচ্ছেদঃ যে হজ্জের ইহ্‌রাম বেঁধেছে এবং হাদী [কুরবানীর পশু] সাথে এনেছে, তার কী করনীয়

২৯৯০. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন ঃ আমরা হজ্জের নিয়্যতেই রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে বের হই। যখন তিনি বায়তুল্লাহ্‌র তাওয়াফ এবং সাফা ও মারওয়ার সাঈ করেন, তখন বলিলেন ঃ যাহার সাথে হাদী [কুরবানীর পশু] রয়েছে, সে তার ইহরামে স্থির থাকিবে। আর যাহার সাথে হাদী [কুরবানীর পশু] নেই, সে হালাল হইয়া যাবে।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২০.পরিচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি উমরার ইহ্‌রাম বেঁধেছে এবং হাদী [কুরবানীর পশু] সঙ্গে এনেছে সে কি করিবে?

২৯৯১. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন ঃ আমরা বিদায় হজ্জে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে বের হই। আমাদের মধ্যে কেউ তো হজ্জের ইহ্‌রাম করে, আর কেউ কেউ উমরার ইহ্‌রাম করে এবং হাদী [কুরবানীর পশু] সঙ্গে নেয়। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন ঃ যে উমরার ইহ্‌রাম করেছে, আর কুরবানীর পশু সাথে আনেনি, সে হালাল হইয়া যাবে। আর যে উমরার ইহ্‌রাম করেছে ও হাদী [কুরবানীর পশু] সঙ্গে এনেছে, সে হালাল হইবে না। আর যে হজ্জের ইহ্‌রাম করেছে সে তার হজ্জ পূর্ণ করিবে। আয়েশা [রাঃআঃ] বলেন ঃ আমি ঐ সকল লোকের মধ্যে ছিলাম, যারা উমরার ইহ্‌রাম করেছিল।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৯৯২. আসমা বিন্‌ত আবু বকর [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিত হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন ঃ আমরা হজ্জের ইহ্‌রাম করে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে বের হলাম। আমরা মক্কার নিকটবর্তী হলে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন ঃ যাহার সাথে হাদী [কুরবানীর পশু] নেই, সে যেন হালাল হইয়া যায়, আর যাহার সাথে হাদী [কুরবানীর পশু] রয়েছে, সে তার ইহ্‌রামের উপর স্থির থাকিবে। আসমা [রাঃআঃ] বলেন ঃ যুবায়র [রাঃআঃ]-এর সাথে হাদী [কুরবানীর পশু] থাকায় তিনি তাহাঁর ইহ্‌রামে স্থির থাকেন। আর আমার সাথে হাদী [কুরবানীর পশু] না থাকায় আমি হালাল হইয়া যাই। আমি আমার পোশাক পরিধান করি, সুগন্ধি ব্যবহার করি এবং যুবায়র [রাঃআঃ]-এর কাছে বসি। তিনি বলিলেন ঃ আমার থেকে দূরে থাক। আমি বলি ঃ তুমি কি ভয় করছ যে, আমি তোমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়বো?

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২১.পরিচ্ছেদঃ ইয়াওমুত্‌ তারবিয়া১ – এর আগে খুতবা

২৯৯৩. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] উমরা করে জিইররানা নামক স্থানে ফিরে আসার পরে [হজ্জের সময়] আবু বকর [রাঃআঃ] -কে হজ্জের আমীর নিযুক্ত করে প্রেরণ করেন। আমরাও তাহাঁর সঙ্গে আসলাম। যখন আরজ নামক স্থানে পৌঁছলেন তখন সকাল হলে তিনি তাকবীর বলার জন্য প্রস্তুত হলেন। এমন সম্যে তাহাঁর পেছনে উটের ডাক শুনতে পেয়ে তিনি তাকবীর না দিয়ে বলিলেন ঃ এতো রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর উটনী জাদআর ডাক। হয়তো রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] হজ্জের ব্যাপারে নতুন কোন সিদ্ধান্তে উপনীত হইয়াছেন। হয়তো রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাশরীফ এনেছেন, আমরা তাহাঁর সঙ্গে নামাজ আদায় করবো। হঠাৎ দেখা গেল এর আরোহী হলেন আলী [রাঃআঃ]। আবু বকর [রাঃআঃ] তাঁকে বলিলেন ঃ আপনি কি আমীর [হিসেবে এসেছেন], না দূত [হিসেবে]। তিনি বলিলেন ঃ আমি দূত [হিসেবে এসেছি]। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে সূরা [তাওবা বা] বারাআত সহ প্রেরণ করিয়াছেন। আমি হজ্জের বিভিন্ন অবস্থান কেন্দ্রে লোকদের তা শুনাব। আমরা মক্কায় আগমন করলাম। যিলহাজ্জের ৮ তারিখের একদিন পূর্বে আবু বকর [রাঃআঃ] লোকের সামনে দাঁড়িয়ে খুতবা দিলেন এবং তাহাদেরকে হজ্জের আহ্‌কাম শুনালেন। তিনি তাহাঁর খুতবা শেষ করলে আলী [রাঃআঃ] দাঁড়ালেন এবং তিনি লোকের মধ্যে [সূরা] বারাআত পাঠ করে শুনালেন এবং তা শেষ করিলেন। পরে আমরা তাহাঁর সঙ্গে বের হলাম। যখন আরাফার দিন উপস্থিত হলো, তখন আবু বকর [রাঃআঃ] লোকের মধ্যে দাঁড়িয়ে খুতবা দিলেন। তাহাদের কাছে হজ্জের আহ্‌কাম বর্ণনা করিলেন। যখন তিনি তাহাঁর বক্তব্য শেষ করিলেন, তখন আলী [রাঃআঃ] দাঁড়িয়ে লোকের মধ্যে [সূরা] বারাআত পাঠ করে শুনালেন। এরপর দশ তারিখ [কুরবানীর দিন] আসলে আমরা মুযদালিফা থেকে ইফাযা [প্রস্থান] করলাম। আবু বকর [রাঃআঃ] ফিরে এসে লোকের মধ্যে খুতবা দিলেন। তাতে তিনি ইফাযা ও কুরবানীর আহ্‌কাম এবং হজ্জের আহ্‌কাম বর্ণনা করিলেন। তিনি যখন খুতবা শেষ করিলেন, তখন আলী [রাঃআঃ] দাঁড়িয়ে লোকের মধ্যে বারাআতের ঘোষণা শুনালেন, এবং তা [সূরা বারাআত শুনানো] শেষ করিলেন। প্রথম নফরের দিন১ আসলে আবু বকর [রাঃআঃ] লোকের উদ্দেশ্যে খুতবা দিলেন; কিরূপে নফর বা দেশের পথে যাত্রা করিতে হইবে এবং রমী [কংকর নিক্ষেপ] করিতে হইবে সে সমস্ত আহ্‌কাম তাহাদেরকে শিক্ষা দিলেন। তিনি খুতবা শেষ করলে আলী [রাঃআঃ] দাঁড়িয়ে লোকের নিকট সূরা বারাআত পড়ে শুনালেন এবং তা শেষ পর্যন্ত পাঠ করিলেন।

আবু আবদুর রহমান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, ইবনি খুশায়ম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হাদীস বর্ণনায় তেমন শক্তিশালী নন। আমি ইবনি জুরায়জ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আবু যুবায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] থেকে এ সনদে বর্ণনা না করে ইবনি জুরায়জ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ইবনি খুশায়ম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] থেকে, তিনি আবু যুবায়র [রাঃআঃ] এ সনদে রেওয়ায়ত বর্ণনা করেছি। কেননা প্রথমোক্ত সনদে ইবনি জুরায়জ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ও আবু যুবায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর মধ্যের একজন রাবী বাদ পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যাকে উসূলে হাদিসের ভাষায় মুনকাতি [আরবী] বলা হয়। আমি এ হাদীসটি ইসহাক ইবনি রাহওয়াই ইবনি ইবরাহীম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সুত্রে লিপিবদ্ধ করেছি। ইয়াহ্‌ইয়া ইবনি সাঈদ আল-কাত্তান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ইবনি খুশায়ম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] থেকে হাদীস বর্ণনা বাদ দেননি। আর আবদুর রহমান থেকেও না। তবে আলী ইবনি মাদীনী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ইবনি খুশায়ম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] -কে মুনকারুল হাদীস১ বলে মন্তব্য করিয়াছেন। আর আলী ইবনি মাদীনী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তাহাঁর সৃষ্টি হাদীস শাস্ত্রের জন্যেই।

{১} আইয়্যামে-ই-তাশরীকের দ্বিতীয় দিন

{১} মুনকার ঃ কোন দুর্বল রাবীর বর্ণিত হাদীস অপর কোন মকবূল [গ্রহণযোগ্য] রাবীর বর্ণিত হাদিসের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ হলে তাকে বলে মুনকার। এরূপ বর্ণনাকারী রাবীকে মুনকারুল হাদীস বলা হয়। বুখারী শরীফ বাংলা অনুবাদ-এর ভুমিক, ই.ফা. বা থেকে প্রকাশিত। -অনুবাদক

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ জইফ হাদীস

২২.পরিচ্ছেদঃ তামাত্তু হজ্জকারী ব্যক্তি হজ্জের ইহ্‌রাম কখন করিবে?

২৯৯৪. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন ঃ যিলহাজ্জ মাসের চারদিন অতীত হওয়ার পর আমরা রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে [মক্কায়] আগমন করলাম। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন ঃ তোমরা হালাল হইয়া যাও এবং একে উমরা গণ্য কর। এতে আমাদের অন্তর সংকুচিত হলো এবং আমাদের কাছে তা ভারী মনে হলো। নাবী [সাঃআঃ]-এর কাছে এ সংবাদ পৌছলে তিনি বলিলেন ঃ হে লোকেরা! তোমরা হালাল হইয়া যাও, আমার নিকট যে হাদী [কুরবানীর পশু] রয়েছে, যদি তা না থাকতো তাহলে তোমরা যা করছ আমিও তা করতাম [হালাল হইয়া যেতাম]। এরপর আমরা হালাল হইয়া গেলাম এবং স্ত্রী সহবাসও করলাম। হালাল ব্যক্তি যা যা করে আমরাও তাই করলাম। যখন তারবিয়ার দিন {২} আসলো তখন আমরা মক্কাকে পেছনে রেখে [মিনার উদ্দেশ্যে রওনা করে] আমরা হজ্জের তাল্‌বিয়া পড়লাম।

{২} যুলহিজ্জার ৮ম দিন -অনুবাদক

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply