হজ্জের বিধি নিষেধ – শিকার করা, পশু হত্যা, মুহরিমের শিংগা লাগান

হজ্জের বিধি নিষেধ – শিকার করা, পশু হত্যা, মুহরিমের শিংগা লাগান

হজ্জের বিধি নিষেধ – শিকার করা, পশু হত্যা, মুহরিমের শিংগা লাগান >> সুনানে নাসাই শরিফের মুল সুচিপত্র দেখুন

পর্বঃ ২৪ঃ হজ্জের বিধি-বিধানসমূহ (২৮১৬-২৮৯৪)

১.পরিচ্ছেদঃ মুহরিম ব্যক্তির জন্য যে শিকার আহার করা বৈধ
২.পরিচ্ছেদঃ মুহরিমের জন্য যে শিকার করা অবৈধ
৩.পরিচ্ছেদঃ মুহরিম ব্যক্তির হাসি দেখে যদি কোন হালাল ব্যক্তি শিকারের সন্ধান পায় এবং তা হত্যা করে তাহলে সে [মুহরিম] তা আহার করিবে কিনা ?
৪.পরিচ্ছেদঃ যখন মুহরিম ব্যক্তি শিকারের দিকে ইশারা করে এবং হালাল ব্যক্তি তা শিকার করে [তার বিধান]
৫.পরিচ্ছেদঃ মুহরিম যে সকল জন্তু হত্যা করিতে পারে, দংশনকারী কুকুর হত্যা করা
৬.পরিচ্ছেদঃ সাপ মারা
৭.পরিচ্ছেদঃ ইঁদুর মারা
৮.পরিচ্ছেদঃ গিরগিটি [বড় টিকটিকি] মারা
৯.পরিচ্ছেদঃ বিচ্ছু মারা
১০.পরিচ্ছেদঃ চিল মারা
১১.পরিচ্ছেদঃ কাক মারা
১২.পরিচ্ছেদঃ মুহরিম যে সকল প্রাণী হত্যা করিতে পারবে না
১৩.পরিচ্ছেদঃ মুহরিমের জন্য বিবাহের অনুমতি
১৪.পরিচ্ছেদঃ এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা
১৫.পরিচ্ছেদঃ মুহরিমের শিংগা লাগান
১৬.পরিচ্ছেদঃ মুহরিম ব্যক্তি রোগের কারণে শিংগা লাগান
১৭.পরিচ্ছেদঃ মুহরিমের পায়ের উপরিভাগে শিংগা লাগান।
১৮.পরিচ্ছেদঃ মুহরিমের মাথায় মধ্যস্থলে শিংগা লাগান।
১৯.পরিচ্ছেদঃ মুহরিমের মাথায় উকুন উপদ্রব করলে।
২০.পরিচ্ছেদঃ মুহরিম মারা গেলে তাঁকে কুল পাতা দিয়ে গোসল দেয়া
২১.পরিচ্ছেদঃ মুহরিম ইনতিকাল করলে তাকে কয়টি কাপড়ে কাফন দেয়া হইবে?
২২.পরিচ্ছেদঃ মুহরিম ব্যক্তি ইনতিকাল করলে তাহাঁর গায়ে সুগন্ধি লাগান নিষেধ
২৩.পরিচ্ছেদঃ মুহরিমের মাথা এবং চেহারা ঢাকার নিষেধাজ্ঞা
২৪.পরিচ্ছেদঃ মৃত মুহরিমের মাথা ঢাকা নিষেধ
২৫.পরিচ্ছেদঃ যে শত্রু কর্তৃক অবরুদ্ধ হয়
২৬.পরিচ্ছেদঃ মক্কায় প্রবেশ করা
২৭.পরিচ্ছেদঃ রাতে মক্কায় প্রবেশ করা
২৮.পরিচ্ছেদঃ কোন স্থান থেকে মক্কায় প্রবেশ করিবে
২৯.পরিচ্ছেদঃ পতাকা নিয়ে মক্কায় প্রবেশ
৩০.পরিচ্ছেদঃ ইহরাম ব্যতীত মক্কায় প্রবেশ
৩১.পরিচ্ছেদঃ নাবী [সাঃআঃ] এর মক্কায় প্রবেশের সময়
৩২.পরিচ্ছেদঃ হারামে কবিতা পাঠ করা ও ইমামের সামনে দিয়ে হাঁটা-চলা করা
৩৩.পরিচ্ছেদঃ মক্কার মর্যাদা ও পবিত্রতা
৩৪.পরিচ্ছেদঃ মক্কায় যুদ্ধবিগ্রহ হারাম
৩৫.পরিচ্ছেদঃ হারাম শরীফের মর্যাদা ও পবিত্রতা
৩৬.পরিচ্ছেদঃ হারামে যে সকর প্রাণী মারা যায়
৩৭.পরিচ্ছেদঃ হারাম শরীফে সাপ মারা
৩৮.পরিচ্ছেদঃ টিকটিকি মারা
৩৯.পরিচ্ছেদঃ বিচ্ছু মারা
৪০.পরিচ্ছেদঃ হারামে ইঁদুর মারা
৪১.পরিচ্ছেদঃ হারামে চিল মারা
৪২.পরিচ্ছেদঃ হারামে কাক মারা
৪৩.পরিচ্ছেদঃ হারামের শিকারকে ভয় দেখানো [হতচকিত করা] নিষেধ
৪৪.পরিচ্ছেদঃ হজ্জকে ও হাজীকে সম্বর্ধনা জানানো

১.পরিচ্ছেদঃ মুহরিম ব্যক্তির জন্য যে শিকার আহার করা বৈধ

২৮১৬. আবু কাতাদা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

[একদা] তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সঙ্গে ছিলেন। যখন তিনি মক্কায় কোন এক রাস্তায় পৌছলেন, তখন তিনি তাহাঁর কয়েকজন মুহরিম সঙ্গীসহ পেছনে রয়ে গেলেন, তিনি নিজে মুহরীম ছিলেন না। এমন সময় তিনি একটি বন্য গাধা [নীল গরু] দেখিতে পেলেন। তিনি একটি ঘোড়ায় আরোহণ করিলেন। তারপর তিনি তাহাঁর সাথীদেরকে বলিলেন তাহাঁর চাবুকটি তার হাতে তুলে দিতে। কিন্তু তারা অস্বীকার করিলেন। পরে তিনি তাঁদেরকে তীরটি তুলে দিতে বলিলেন। এরপর তিনি নিজে তা [তীর] তুলে নিয়ে গাধার উপর আক্রমণ করিলেন এবং তা শিকার করিলেন। তা থেকে নাবী [সাঃআঃ] এর কোন সাহবী খেলেন। আর কেউ কেউ খেতে অস্বীকৃতি জানালেন। তারপর তাঁরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে পেয়ে এ সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করিলেন। তিনি বললেনঃ এ তো বিশেষ খাদ্য, যা আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে খাওয়ালেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৮১৭. মুআয ইবনি আবদুর রহমান তায়মী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমরা তালহা ইবনি উবায়দুল্লাহর সঙ্গে ছিলাম, আর আমরা সকলে ছিলাম, মুহরিম। তাঁকে একটি পাখি হাদিয়া দেওয়া হলো। তখন তিনি ছিলেন নিদ্রিত। আমাদের মধ্যে কেউ তা আহার করলো আর কেউ তা আহার করলো না। ইত্যবসরে তালহা [রাঃআঃ] নিদ্রা থেকে জাগলেন। যারা তা খেয়েছিলেন, তিনিও তাহাদের অনুসারী হলেন এবং বললেনঃ আমরা তা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সঙ্গে আহার করেছি।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৮১৮. বাহযী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইহরাম অবস্থায় মক্কার উদ্দেশ্যে বের হলেন। যখন তাঁরা রাওহা নামক স্থানে পৌঁছলেন, তখন আহত অবস্থায় একটি জংলী গাধা দেখিতে পেলেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর কাছে আলোচনা করা হলে তিনি বললেনঃ এটা ছেড়ে দাও, হয়ত তার মালিক এসে পড়বে। তারপর তার মালিক বাহযী [রাঃআঃ] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট এসে বললেনঃ ইয়া রসূলুল্লাহ! এই গাধার ব্যাপারটি আপনাদের হাতে। পরে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আবু বকর [রাঃআঃ] কে আদেশ করলে তিনি তা সাথীদের মধ্যে ভাগ করে দিলেন। তারপর যখন তিনি রুয়াইছাহ ও আরজ এর মধ্যবর্তী উছাইয়াহ নামক স্থানে পৌঁছলেন, তখন দেখা গেল একটি হরিণ ছায়ায় শায়িত রয়েছে, তার গায়ে একটি তীর বিদ্ধ আছে। বর্ণনাকারী বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক ব্যক্তিকে আদেশ করিলেন, সে যেনো তার [হরিণের] নিকট দাঁড়িয়ে থাকে, যাতে কোন ব্যক্তি তাকে অতিক্রম করে যাওয়ার সময় তাকে উত্যক্ত না করে।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২.পরিচ্ছেদঃ মুহরিমের জন্য যে শিকার করা অবৈধ

২৮১৯. সাব ইবনি জাছছাম [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি আবওয়ায় অথবা ওয়াদ্দানে [স্থানের নাম] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে একটি বন্য গাধা হাদিয়া দিলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তা ফিরিয়ে দেন। এতে আমার চেহারার অবস্থা দেখে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ আমি যেহেতু মুহরিম, সেজন্য তা তোমাকে ফেরত দিয়েছি।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৮২০. সাব ইবনি জাছছামা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] [মক্কায়] আগমনকালে যখন ওয়াদ্দানে পৌছলেন, তখন একটি বন্য গাধা দেখলেন। [যা তাঁকে সাব ইবনি জাছছাম কর্তৃক হাদিয়া হিসেবে দেয়া হইয়াছে।] তিনি তা তাকে ফেরত দিলেন এবং বললেনঃ আমরা মুহরিম, আমরা শিকার আহার করি না।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৮২১. আতা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] যায়দ ইবনি আরকাম [রাঃআঃ]- কে বলিলেন ঃ আপনি কি জানেন যে, নাবী [সাঃআঃ] –কে তাহাঁর ইহরাম অবস্থায় শিকার করা পশুর এক অংশ হাদিয়া দেয়া হইয়াছিল। আর তিনি তা গ্রহণ করেন নি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ।

আমর ইবনি আলী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]……… ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ যায়দ ইবনি আরকাম [রাঃআঃ] আগমন করলে ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] তাঁকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলিলেন, আপনি কিরূপে আমাকে সংবাদ দিয়েছিলেন যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] –কে তাহাঁর ইহরাম অবস্থায় শিকার করা পশুর গোশত হাদিয়া দেয়া হইয়াছিল? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, জনৈক ব্যক্তি শিকারের গোশত তাঁকে হাদিয়া দিয়েছিল। তিনি তা গ্রহণ করেন নি। তিনি তা ফেরত দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন যে, আমরা তা ভক্ষণ করি না, কেননা, আমরা মুহরিম।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৮২২. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ সাব ইবনি জাছছামা [রাঃআঃ] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] –কে বন্য গাধার একটি পা হাদিয়া দিলেন যাহার থেকে রক্ত ঝরছিল, আর তখন তিনি কুদায়দ নামক স্থানে ইহরাম অবস্থায় ছিলেন। পরে তিনি তা তাকে ফেরত দিলেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৮২৩. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

সাব ইবনি জাছছামা [রাঃআঃ] নাবী [সাঃআঃ] –কে একটি গাধা হাদিয়া দিলেন, তখন তিনি ছিলেন মুহরিম। তিনি তা তাকে ফেরত দিলেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩.পরিচ্ছেদঃ মুহরিম ব্যক্তির হাসি দেখে যদি কোন হালাল ব্যক্তি শিকারের সন্ধান পায় এবং তা হত্যা করে তাহলে সে [মুহরিম] তা আহার করিবে কিনা ?

২৮২৪. আবদুল্লাহ ইবনি আবু কাতাদা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ হুদায়বিয়ার বছর আমার পিতা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] –এর সাথে রওনা হলেন। তাহাঁর সাহাবিগণ ইহরাম বাঁধলেন, আর তিনি [আবু কাতাদা] ইহরাম বাঁধলেন না। আমি আমার সাথীদের সাথে ছিলাম। এমন সময় তারা একে অন্যের দিকে তাকিয়ে হেসে উঠলেন। আমি লক্ষ্য করে দেখলাম, একটি বন্য গাধা। আমি তাকে লক্ষ্য করে বর্শা নিক্ষেপ করলাম। [বর্শা নিক্ষেপ করিতে] আমি তাঁদের সাহায্য কামনা করলাম, কিন্তু তাঁরা আমাকে সাহায্য করিতে অস্বীকৃতি জানালেন। আমরা তার গোশত খেলাম। আমরা কাফেলা থেকে বিচ্ছিন্ন হইয়া পড়ার আশংকা করলাম। তারপর আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] –এর সন্ধানে ঘোড়াকে কখনো অতি দ্রুত এবং কখনো স্বাভাবিকভাবে দৌঁড়ালাম। মধ্যরাতে গিফার গোত্রের এক ব্যক্তির সাথে আমার সাক্ষাত হলো। তাকে জিজ্ঞাসা করলামঃ তুমি কোথায় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] –কে ছেড়ে [দেখে] এসেছে? সে বললেনঃ সুকয়া নামক স্থানে তাঁকে দুপুরের বিশ্রামরত অবস্থায় ছেড়ে এসেছি। পরে তাহাঁর সাথে মিলিত হইয়া বললামঃ ইয়া রসূলুল্লাহ! আপনার সাহাবীবৃন্দ আপনাকে সালাম দিয়েছেন। তারা [আপনার থেকে পেছনে থাকার কারণে] বিচ্ছিন্ন হইয়া যাওয়ার ভয় করছে। অতএব আপনি তাঁদের জন্য অপেক্ষা করুন। তিনি তাঁদের জন্য অপেক্ষা করিলেন। আমি বললামঃ ইয়া রসূলুল্লাহ! আমি একটি বন্য গাধা ধরে ফেলেছি। আর তার কিছু অংশ আমার নিকট আছে। তিনি কাফেলাকে লক্ষ্য করে বললেনঃ তোমরা তা আহার কর, অথচ তারা তখন মুহরিম ছিল।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৮২৫. ইয়াহ্ইয়া ইবনি আবু কাসীর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আবদুল্লাহ ইবনি আবু কাতাদা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আমার নিকট বর্ণনা করিয়াছেন যে, তাহাঁর পিতা তাঁকে অবহিত করিয়াছেন, তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] –এর সঙ্গে হুদায়বিয়ার অভিযানে ছিলেন। তিনি বললেনঃ আমি ব্যতীত সকলেই উমরার ইহরাম করেছিলেন। আমি একটি বন্য গাধা শিকার করলাম, এবং তা থেকে আমার সাথীদেরকে খাওয়ালাম, অথচ তাঁরা ছিলেন মুহরিম। তারপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] –এর নিকট এসে তাঁকে এ সংবাদ দিলাম যে, এর উদ্বৃত্ত গোশত আমাদের নিকট রয়েছে। তিনি বললেনঃ তোমরা তা খাও। অথচ তারা সকলেই মুহরিম ছিলেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৪.পরিচ্ছেদঃ যখন মুহরিম ব্যক্তি শিকারের দিকে ইশারা করে এবং হালাল ব্যক্তি তা শিকার করে [তার বিধান]

২৮২৬. আবদুল্লাহ ইবনি মাওহাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি আবদুল্লা্হকে তার পিতা আবু কাতাদা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণনা করিতে শুনিয়াছি যে, [তারা] এক সফরে ছিলেন। তাঁদের কেউ কেউ মুহরিম ছিলেন, আর কেউ কেউ মুহরিম ছিলেন না। তিনি বলেনঃ আমি একটি বন্য গাধা দেখিতে পেলাম। আমি আমার ঘোড়ায় আরোহণ করে বর্শা ধারণ করলাম এব্ং তাঁদের সাহায্য চাইলাম। কিন্তু তারা আমাকে সাহায্য করিতে অস্বীকার করিলেন। তারপর আমি তাঁদের একজনের নিকট থেকে একটি তীর কেড়ে নিয়ে ঐ গাধাকে আক্রমণ করলাম এবং তাকে ধরে ফেললাম। তারা তা থেকে খেলেন এবং অবৈধ হওয়ার ভয় করিলেন। বর্ণনাকারী বলেনঃ নাবী [সাঃআঃ] –কে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেনঃ তোমরা কি তার দিকে ইঙ্গিত অথবা সাহায্য করেছিলে? তাঁরা বললেনঃ না। তিনি বললেনঃ তা হলে খাও।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৮২৭. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] –কে বলিতে শুনেছিঃ তোমাদের জন্য স্থলের শিকার হালাল, যদি তোমরা তা শিকার না কর অথবা তোমাদের উদ্দেশ্যে শিকার করা না হয়। আবু আবদুর রহমান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেনঃ আমর ইবনি আবু আমর হাদীসে তত নির্ভরযোগ্য নন, যদিও মালিক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তাহাঁর থেকে হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ জইফ হাদীস

৫.পরিচ্ছেদঃ মুহরিম যে সকল জন্তু হত্যা করিতে পারে, দংশনকারী কুকুর হত্যা করা

২৮২৮. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ পাঁচ প্রকার প্রাণী হত্যা করায় মুহরিমের কোন পাপ নেই। তা হলো- কাক, চিল, বিচ্ছু, ইঁদুর এবং দংশনকারী কুকুর।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৬.পরিচ্ছেদঃ সাপ মারা

২৮২৯. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] থেকে বর্ণনা করিয়াছেন যে, তিনি বলেছেনঃ মুহরিম ব্যক্তি পাঁচ প্রকার প্রাণী হত্যা করিতে পারেঃ সাপ, ইঁদুর, চিল, ঐ কাক- যাহার পেটে বা পিঠে সাদা বর্ণ রয়েছে এবং দংশনকারী কুকুর।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৭.পরিচ্ছেদঃ ইঁদুর মারা

২৮৩০. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] পাঁচ প্রকার প্রাণী হত্যা করিতে মুহরিমকে অনুমতি দিয়েছেন। তা হলো- কাক, চিল, ইঁদুর, দংশনকারী কুকুর এবং বিচ্ছু।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৮.পরিচ্ছেদঃ গিরগিটি [বড় টিকটিকি] মারা

২৮৩১. সাঈদ ইবনি মুসায়্যাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

এক মহিলা আয়েশা [রাঃআঃ]- এর নিকট উপস্থিত হইয়া দেখলো যে, তাহাঁর হাতে একটি ছড়ি রয়েছে। মহিলা জিজ্ঞাসা করলেনঃ এটা কি ? তিনি বললেনঃ এটা গিরগিটি মারার জন্য। কেননা, নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ প্রত্যেক [প্রাণী]ই ইবরাহীম [আঃ]-এর আগুন নির্বাপিত করিতে চেষ্টা করেছিল, তবে এ জীবটি ব্যতীত। অতএব, তিনি একে হত্যা করিতে আমাদেরকে আদেশ করিয়াছেন এবং তিনি ঘরের সাপ মারতে নিষেধ করিয়াছেন। তবে পিঠে দুই সাদা দাগ [অথবা বিন্দু] বিশিষ্ট এবং কর্তিত লেজ বিশিষ্ট সাপ ছাড়া। কেননা, এই দুই প্রকারের সাপ চোখ অন্ধ করে দেয় এবং স্ত্রীলোকের গর্ভপাত ঘটায়।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৯.পরিচ্ছেদঃ বিচ্ছু মারা

২৮৩২. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ পাঁচ প্রকার প্রাণীকে ইহরাম অবস্থায় মারলে কোন পাপ হইবে না। সেগুলো হলো- চিল, ইঁদুর, দংশনকারী কুকুর, বিচ্ছু এবং কাক।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১০.পরিচ্ছেদঃ চিল মারা

২৮৩৩. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ এক ব্যক্তি বললেনঃ ইয়া রসূলুল্লাহ! ইহরাম অবস্থায় আমরা কোন্‌ কোন্ প্রাণী হত্যা করিতে পারি? তিনি বললেনঃ পাঁচ প্রকার প্রাণী হত্যা করলে তাতে কোন পাপ হইবে না। তা হলো- চিল, কাক, ইঁদুর, বিচ্ছু ও দংশনকারী কুকুর।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১১.পরিচ্ছেদঃ কাক মারা

২৮৩৪. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

[একদা] নাবী [সাঃআঃ] –কে জিজ্ঞাসা করা হলেনঃ মুহরিম কোন্ কোন্ প্রাণী হত্যা করিতে পারে? তিনি বললেনঃ বিচ্ছু, ইঁদুর, চিল, কাক আর দংশনকারী কুকুর।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৮৩৫. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি পাঁচ প্রকার প্রাণী হরম শরীফে এব্ং ইহরাম অবস্থায় হত্যা করে, যেগুলো হত্যার জন্য তার কোন পাপ হইবে না। সেগুলো হলো- ইঁদুর, চিল, কাক, বিচ্ছু এবং দংশনকারী কুকুর।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১২.পরিচ্ছেদঃ মুহরিম যে সকল প্রাণী হত্যা করিতে পারবে না

২৮৩৬. ইবনি আবু আম্মার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাঃআঃ]-কে গোসাপ সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করলাম, তিনি আমাকে তা খাওয়ার আদেশ দিলেন। আমি বললামঃ তা কি শিকার? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। আমি বললামঃ আপনি কি তা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে শুনেছেন? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৩.পরিচ্ছেদঃ মুহরিমের জন্য বিবাহের অনুমতি

২৮৩৭. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ নাবী [সাঃআঃ] ইহরাম অবস্থায় মায়মূনা [রাঃআঃ]-কে বিবাহ করেছিলেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ শায

২৮৩৮. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইহরাম অবস্থায় বিবাহ করেছিলেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

২৮৩৯. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মায়মূনা [রাঃআঃ]-কে বিবাহ করেছিলেন। তখন তাঁরা উভয়ে মুহরিম ছিলেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ শায

২৮৪০. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মায়মূনা [রাঃআঃ]-কে ইহরাম অবস্থায় বিবাহ করেছিলেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ শায

২৮৪১. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] মায়মূনা [রাঃআঃ]-কে বিবাহ করেছিলেন, তখন তিনি ছিলেন মুহরিম।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ শায

১৪.পরিচ্ছেদঃ এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা

২৮৪২. আবান ইবনি উসমান [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি উসমান ইবনি সাফফান [রাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুহরিম বিবাহ করিবে না, বিবাহের পয়গাম পাঠাবে না এবং অপর কাউকে বিবাহ দেবে না।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৮৪৩. আবান ইবনি উসমান [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি মুহরিমকে বিবাহ করিতে, বিবাহ দিতে, বা বিবাহের পয়গাম পাঠাতে নিষেধ করিয়াছেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৮৪৪. নুবায়হ্ ইবনি ওহাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ উমার ইবনি উবায়দুল্লাহ্ ইবনি মামার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আবান ইবনি উসমান [রাঃআঃ]-এর নিকট জিজ্ঞাসা করে পাঠান যে, মুহরিম কি বিবাহ করিতে পারে ? আবান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, উসমান ইবনি আফফান [রাঃআঃ] বর্ণনা করিয়াছেন যে, নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুহরিম বিবাহ করিবে না, বিবাহের পয়গামও পাঠাবে না।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৫.পরিচ্ছেদঃ মুহরিমের শিংগা লাগান

২৮৪৫. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইহরাম অবস্থায় শিংগা লাগিয়েছিলেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৮৪৬. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইহরাম অবস্থায় শিংগা লাগিয়েছিলেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৮৪৭. আতা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি যে, নাবী [সাঃআঃ] ইহরাম অবস্থায় শিংগা লাগিয়েছিলেন।

আর সনদের অন্য ধারায় আমর ইবনি দীনার বলেনঃ আমাকে তাউস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] থেকে অবহিত করিয়াছেন, তিনি বলেছেন যে, নাবী [সাঃআঃ] ইহরাম অবস্থায় শিংগা লাগিয়েছিলেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৬.পরিচ্ছেদঃ মুহরিম ব্যক্তি রোগের কারণে শিংগা লাগান

২৮৪৮. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] –এর [পায়ে] যে ব্যথা ছিল, তার জন্য তিনি ইহরাম অবস্থায় শিংগা লাগিয়েছিলেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৭.পরিচ্ছেদঃ মুহরিমের পায়ের উপরিভাগে শিংগা লাগান।

২৮৪৯. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর পা মুবারকের পিঠে যে ব্যাথা ছিল, তার জন্য ইহরাম অবস্থায় তিনি শিংগা লাগিয়েছিলেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৮.পরিচ্ছেদঃ মুহরিমের মাথায় মধ্যস্থলে শিংগা লাগান।

২৮৫০. আরাজ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি আবদুল্লাহ ইবনি বুহায়না [রাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মক্কার পথে লাহইয়ু জামাল নামক স্থানে ইহরাম অবস্থায় মাথার মধ্যস্থলে শিংগা লাগিয়েছিলেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৯.পরিচ্ছেদঃ মুহরিমের মাথায় উকুন উপদ্রব করলে।

২৮৫১. কাব ইবনি উজারা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি মুহরিম অবস্থায় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে ছিলেন। তখন তার মাথার উকুন তাকে কষ্ট দিতেছিল। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাঁকে মাথা মুন্ডন করিতে আদেশ করিলেন এবং বললেনঃ তিন দিন রোজা রাখ অথবা ছয়জন মিসকীনকে দুই দুই মুদ্দ[সের] করে খাওয়ার [খাদ্য প্রদান করে] অথবা একটি বকরী [সাদকারূপে] যবাই কর। এর যে কোন একটি আদায় করলেই তোমার জন্য তা যথেষ্ট হইবে।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৮৫২. কাব ইবনি উজারা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমার ইহরাম বাঁধার পর আমার মাথার উকুন বেড়ে গেল। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট এই সংবাদ পৌঁছলে তিনি আমার নিকট আগমন করিলেন। তখন আমি আমার সাথীদের জন্য রান্না করছিলাম। তিনি তাহাঁর আঙ্গুল দ্বারা আমার মাথা র্স্পশ করে বললেনঃ উঠ, ইহা মুন্ডন করে ফেল এবং ছয়জন মিসকীনকে সাদাকা দাও।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২০.পরিচ্ছেদঃ মুহরিম মারা গেলে তাঁকে কুল পাতা দিয়ে গোসল দেয়া

২৮৫৩. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

এক ব্যক্তি নাবী [সাঃআঃ] এর সাথে ছিল। তাকে তার উটনী পিঠ হইতে ফেলে দেয়ায় তার ঘাড় ভেঙ্গে গেল এবং সে মারা গেল। আর সে ছিল মুহরিম। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তাকে কুল পাতার পানি দ্বারা গোসল দাও। আর তাকে তার দুখানা কাপড় দ্বারা কাফন দাও, তার গায়ে কোন সুগন্ধি লাগাবে না এবং তার মাথাও ঢাকবে না। কেননা, কিয়ামতের দিন তালবিয়া পাঠ করিতে করিতে তার উত্থান হইবে।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২১.পরিচ্ছেদঃ মুহরিম ইনতিকাল করলে তাকে কয়টি কাপড়ে কাফন দেয়া হইবে?

২৮৫৪. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

এক মুহরিম ব্যক্তি উট থেকে পড়ে যাওয়ায় তার ঘাড় ভেঙ্গে গেল এবং সে মারা গেল। নাবী [সাঃআঃ] এর নিকট এ সংবাদ পৌঁছলে তিনি বলেনঃ তাকে কুল পাতার পানি দ্বারা গোসল দাও এবং [ ইহরামের] দুকাপড় দিয়েই তাকে দাফন দাও। এরপর তিনি বলেনঃ তার মাথা কাফনের বাইরে থাকিবে। আর তার গায়ে খুশবু লাগাবে না। কেননা সে কিয়ামতের দিন তালবিয়া পড়তে পড়তে উঠবে। শুবা [রাঃআঃ] বলেনঃ আমি দশ বছর পর তাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি ঐ হাদীস বর্ণানা করিলেন, যেমন পূর্বে তিনি বর্ণনা করিতেন। কিন্তু তাতে তিনি বলিলেন; তার চেহারা এবং মাথা ঢাকবে না।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২২.পরিচ্ছেদঃ মুহরিম ব্যক্তি ইনতিকাল করলে তাহাঁর গায়ে সুগন্ধি লাগান নিষেধ

২৮৫৫. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ এক ব্যক্তি আরাফায় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে অবস্থান করছিল। হঠাং সে তার সাওয়ারী থেকে পড়ে যায় [এবং সাথে সাথে মারা যায়]। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তাকে কুল পাতার পানি দিয়ে গোসল দাও এবং দুই কাপড়ে দাফন দাও, তার গায়ে সুগন্ধি লাগাবে না এবং তার মাথা ঢাকবে না। কেননা, মহান মহিয়ান আল্লাহ তাআলা তাকে কিয়ামতের দিন তালবিয়া পাঠরত অবস্থায় উঠাবেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৮৫৬. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ এক মুহরিম ব্যক্তিকে তার উটনী পিঠ থেকে ফেলে হত্যা করলো। তাকে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট আনা হলে তিনি বললেনঃ তাকে গোসল দিয়ে কাফন পরাও, তার মাথা ঢেকো না এবং তার গায়ে সুগন্ধি লাগিও না। কেননা, তলবিয়া পড়তে পড়তে তার উত্থান হইবে

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৩.পরিচ্ছেদঃ মুহরিমের মাথা এবং চেহারা ঢাকার নিষেধাজ্ঞা

২৮৫৭. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে হজ্জের সফরে ছিল। তার উট তাকে ফেলে দিলে সে ইনতিকাল করলো। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তাকে গোসল দেয়া হইবে এবং দুই কাপড়ে কাফন দেয়া হইবে, আর তার চেহারা ও মাথা ঢাকা যাবে না। কেননা, সে কিয়ামতের দিন তলবিয়া পড়তে পড়তে উঠবে।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৪.পরিচ্ছেদঃ মৃত মুহরিমের মাথা ঢাকা নিষেধ

২৮৫৮. ইবনি জুরায়জ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

আমর ইবনি দীনার আমাকে অবহিত করিয়াছেন যে, সাঈদ ইবনি জুবায়র তাকে অবহিত করিয়াছেন, ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] তাকে [ইবনি জুবায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]] অবহিত করেছেনঃ এক মুহরিম ব্যক্তি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে আগমন করছিল। সে তার উটের উপর থেকে পড়ে আঘাত পেয়ে মারা গেল। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তাকে কুল পাতার পানিতে গোসল দাও এবং তার কাপড় দুইখানা দিয়ে তাকে কাফন দাও; আর তার মাথা ঢেকো না। কেননা সে কিয়ামতের দিন তালবিয়া পড়তে পড়তে আসবে।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৫.পরিচ্ছেদঃ যে শত্রু কর্তৃক অবরুদ্ধ হয়

২৮৫৯. নাফি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ ইবনি আবদুল্লাহ এবং সালিম ইবনি আবদুল্লাহ তাকে অবহিত করিয়াছেন যে, যখন আবদুল্লাহ ইবনি যুবাইর [রাঃআঃ] [শত্রু] সেনা কর্তৃক আক্রান্ত হলেন। এটি তার শহীদ হওয়ার পূর্বের ঘটনা। তারা আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাঃআঃ] এর সাথে এই মর্মে আলাপ করিলেন যে, এ বছর হজ্জ না করলে আপনার কোন ক্ষতি হইবে না। আমরা আশংকা করি যে, আপনার এবং বায়তুল্লাহর মধ্যে [শত্রু] প্রতিবন্ধক হইবে। তিনি বললেনঃ আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে বের হলাম। তখন কাফির কুরায়শরা বায়তুল্লাহর নিকট প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলো। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর হাদী যবাই করিলেন, মাথা মুণ্ডন করিলেন। তিনি [ইবনি উমার [রাঃআঃ]] বলিলেন যে, আমি তোমাদেরকে সাক্ষী রেখে বলছি, আমি ইনশা আল্লাহ উমরার নিয়্যত করলাম। আমি চলতে থাকব যদি আমার ও বায়তুল্লাহর মধ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না হয়, তাহলে তাওয়াফ করবো। আর যদি আমার ও বায়তুল্লাহর মধ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়, তাহলে আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে যখন ছিলাম তখন তিনি যা করিয়াছেন, আমিও এখন তা করবো। তারপর তিনি কিছুক্ষন চললেন এবং বললেনঃ উভয়ের অর্থাৎ [হজ্জ ও উমরার] অবস্থা একই। আমি তোমাদেরকে সাক্ষী রাখছি যে, আমি আমার উমরার সাথে হজ্জকে ওয়াজিব [নিয়্যত] করে নিয়েছি। তিনি এ দুটি থেকে হালাল হলেন না। এমন কি কুরবানীর দিন হালাল হলেন এবং কুরবানী করিলেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৮৬০. হাজ্জাজ ইবনি আমর আনসারী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছেনঃ যে ব্যক্তি খোঁড়া হইয়া গেল, অথবা তার পা ভেঙ্গে গেল, সে হালাল হইয়া গেল। [তার জন্য হালাল হবার বৈধতা সৃষ্টি হল।] তবে তাকে আর একটি হজ্জ করিতে হইবে। আমি ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] এবং আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] কে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তাঁরা বললেনঃ তিনি সত্যই বলেছেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৮৬১. হাজ্জাজ ইবনি আমর হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেনঃ যে খোঁড়া হইয়াছে, অথবা যাহার পা ভেঙ্গেছে, সে হালাল হইয়া গেল এবং তার উপর অন্য এক হজ্জ ফরয হইবে। আমি ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] এবং আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] কে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তাঁরা বললেনঃ তিনি সত্যই বলেছেন। আর শুআয়ব [রাঃআঃ] তাহাঁর বর্ণিত হাদীসে উল্লেখ করেছেনঃ তাহাঁর উপর পরবর্তী বছর হজ্জ ওয়াজিব হইবে।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬.পরিচ্ছেদঃ মক্কায় প্রবেশ করা

২৮৬২. মূসা ইবনি উকরা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

আমার নিকট হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন, আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাঃআঃ] তাহাঁর নিকট হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন মক্কায় আগমন করিতেন, তখন যী-তূয়া স্থানে অবতরণ করিতেন এবং সেখানে রাত যাপন করে ফজরের নামাজ আদায় করিতেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নামাজ আদায়ের স্থানটি ছিল শক্ত মাটির উঁচু ঢিলার ওপর। সেথায় যে মসজিদ নির্মান করা হইয়াছিল এ স্থানটি সেই মসজিদে ছিল না; বরং এর নীচে উঁচু অমসৃন শক্ত ঢিলার উপর ছিল।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৭.পরিচ্ছেদঃ রাতে মক্কায় প্রবেশ করা

২৮৬৩. মুহাররিশ কাবী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] রাতে উমরার নিয়্যত জিইররানা থেকে হেঁটে বের হলেন, জিইররানাতেই তাহাঁর ভোর হলো, যেন তিনি সেখানেই রাত যাপন করিয়াছেন। সূর্য [পশ্চিমে] ঢলার পর তিনি জিইররানা থেকে সারিফ উপত্যকার দিকে গমন করিলেন, এমনকি তিনি সারিফ থেকে মদীনার রাস্তার মঙ্গমস্থলে গেলেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৮৬৪. মুহাররিশ কাবী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] জিইররানা থেকে রাতে বের হলেন, তখন তাঁকে স্বচ্ছ রূপার [পাত] মত মনে হচ্ছিল। তারপর তিনি উমরা আদায় করিলেন, তারপর সেখানেই ভোর হলো, যেন তিনি সেখানেই রাত যাপন করিয়াছেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৮.পরিচ্ছেদঃ কোন স্থান থেকে মক্কায় প্রবেশ করিবে

২৮৬৫. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ছানিয়াতুল উলইয়া নামক স্থান দিয়ে মক্কায় প্রবেশ করেন, যা বাতহার নিকট অবস্থিত। আর তিনি ছানিয়্যাতুস সুফলা নামক স্থান দিয়ে বের হন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৯.পরিচ্ছেদঃ পতাকা নিয়ে মক্কায় প্রবেশ

২৮৬৬. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] যখন মক্কায় প্রবেশ করেন, তখন তার পতাকা ছিল সাদা রংয়ের।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩০.পরিচ্ছেদঃ ইহরাম ব্যতীত মক্কায় প্রবেশ

২৮৬৭. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] যখন মক্কায় প্রবেশ করেন, তখন তাহাঁর মাথার শিরস্ত্রাণ ছিল। তখন তাঁকে বলা হলোঃ ইবনি খাতাল কাবার গিলাফ ধরে আছে। তিনি বলিলেনঃ তাকে হত্যা কর।{১}

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৮৬৮. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

মক্কা বিজয়ের দিন নাবী [সাঃআঃ] তাতে প্রবেশ করেন, তখন তাহাঁর মাথায় শিরস্ত্রাণ ছিল।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৮৬৯. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] মক্কা বিজয়ের দিন ইহরাম ব্যতীত মক্কায় প্রবেশ করেছিলেন। আর তার মাথায় কালো বর্ণের পাগড়ি ছিল।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩১.পরিচ্ছেদঃ নাবী [সাঃআঃ] এর মক্কায় প্রবেশের সময়

২৮৭০. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এবং তাহাঁর সাহাবীগণ যিলহাজ্জ মাসের ৪ তারিখ ভোরে মক্কায় পদার্পণ করেন। তখন তাঁরা হজ্জের তালবিয়া পাঠ করছিলেন। সে সময় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাঁদেরকে হালাল হইতে [ইহরাম ভঙ্গ করিতে] আদেশ দেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৮৭১. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন ঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মক্কায় যিলহাজ্জ মাসের ৪ তারিখ রাত গত হওয়ার পর প্রবেশ করেন এবং তখন তিনি হজ্জের ইহরাম অবস্থায় ছিলেন। তিনি বাতহা নামক স্থানে ফজরের নামাজ আদায় করে বলেনঃ যাহার একে উমরায় পরিণত করার ইচ্ছা হয় সে তা করিতে পারে।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৮৭২. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] যিলহাজ্জ মাসের চতুর্থ তারিখের রাত অতিক্রান্ত হওয়ার পর ভোরে মক্কায় পদার্পণ করেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩২.পরিচ্ছেদঃ হারামে কবিতা পাঠ করা ও ইমামের সামনে দিয়ে হাঁটা-চলা করা

২৮৭৩. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] উমরাতুল কাযায় মক্কায় প্রবেশ করেন, আর তখন আবদুল্লাহ ইবনি রাওয়াহা [রাঃআঃ] এই কবিতা পাঠ করিতে করিতে তাহাঁর সামনে হাঁটছিলেনঃ [আরবি]

অর্থঃ হে কাফির সম্প্রদায়! তাহাঁর রাস্তা ছেড়ে দাও। [তাহাঁর প্রবেশে বাধা দিলে] আজ আমরা তোমাদেরকে আঘাত করিবে তাহাঁর [অথবা কুরআনের] অবতরণ সূত্রে। এমন আঘাত, যা মাথা স্থানচ্যুত করে দেবে এবং বন্ধুকে বন্ধুর কথা ভুলিয়ে দেবে।

তখন তাঁকে উমার [রাঃআঃ] বলিলেনঃ হে ইবনি রাওয়াহা! রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সামনে মহান মহিয়ান আল্লাহর হারাম শরীফে তুমি কবিতা আবৃত্তি করছো? নাবী [সাঃআঃ] বলিলেনঃ তাকে করিতে দাও। তার [এই কবিতা] কাফিরদের অন্তরে তীর নিক্ষেপের চেয়ে দ্রুত ক্রিয়া বিস্তারকারী।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৩.পরিচ্ছেদঃ মক্কার মর্যাদা ও পবিত্রতা

২৮৭৪. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মক্কা বিজয়ের দিন বলেনঃ এই শহর, একে আল্লাহ তাআলা পৃথিবী ও নভোমন্ডল সৃষ্টির দিনেই সম্মানিত [ও নিষিদ্ধ অঞ্চল] করিয়াছেন। অতএব তাআল্লহর সম্মান দ্বারাই কিয়ামতের দিন পর‌্যন্ত সম্মানিত, তার কাটাঁও তোলা যাবে না, সেখানে শিকার করা যাবে না, আর সেখানে কোন দ্রব্য পতিত থাকলে কোউ তা উঠাবে না, অবশ্য তার কথা স্বতন্ত্র, যে সে দ্রব্যের কথা প্রচার করিবে। আর তার ঘাস কাটা যাবে না। ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] বলিলেনঃ ইয়া রসূলুল্লাহ। ইযখির নামক ঘাস ব্যতীত? তারপর তিনি এমন শব্দ উল্লেখ করিলেন, যাহার অর্থ ইযখির ব্যতীত।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৪.পরিচ্ছেদঃ মক্কায় যুদ্ধবিগ্রহ হারাম

২৮৭৫. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মক্কা বিজয়ের দিন বলিলেনঃ নিশ্চয় এই শহর পবিত্র [সম্মানিত]। আল্লাহ তাআলা একে পবিত্র করিয়াছেন। আমার পূর্বে তাতে যুদ্ধ বিগ্রহ করা কারো জন্য বৈধ ছিল না। আমার জন্য দিনের কিয়দংশে তা বৈধ করা হইয়াছে। অতএব তা আল্লাহ তাআলার পবিত্রকরণে পবিত্র ও সম্মানিত।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৮৭৬. আবু শুরায়হ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি [মদীনার শাসনকর্তা] আমর ইবনি সাঈদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] -কে বলেছিলেন, যখন আমর মক্কার দিকে [ইবনি যুবায়র [রাঃআঃ] এর বিরুদ্ধে] সেনাবাহিনী প্রেরণ করেছিলেনঃ হে আমীর! শুনুন, আমি আপনার নিকট এমন একটি হাদীস বর্ণনা করবো, যা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মক্কা বিজয়ের দিন [তাহাঁর ভাষনে] বলেছিলেনঃ যা আমার দুই কান শ্রবণ করেছে, যা আমার অন্তর সংরক্ষণ করেছে, আর যখন তিনি তা বলেছিলেন তখন আমার দুই চোখ তা দেখেছে। তিনি প্রথমে আল্লাহর প্রশংসা বর্ণনা ও গুনগান করেন, তারপর বলেনঃ মক্কাকে আল্লাহই সম্মান [পবিত্রতা] দান করিয়াছেন, তাকে কোন লোক সম্মানিত [পবিত্র] করেনি, আর এমন কোন মুসলমানের জন্য সেখানে রক্তপাত বৈধ নয়, যে আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে। সেখানের কোন বৃক্ষ কর্তন করিবে না। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সেখানে যুদ্ধ করার দরুন যদি কেউ বৈধতা দাবী করে, তবে তাকে বলবে, আল্লাহ তাআলা তাহাঁর রাসূলকে অনুমতি প্রদান করেছিলেন; তাহাদেরকে অনুমতি দান করেননি। তিনি [সাঃআঃ] বলেনঃ আমাকে দিনের অল্প সময়ের জন্য অনুমতি প্রদান করেছিলেন। তারপর তার সম্মান [পবিত্রতা] আজ ফিরে এসেছে, যেমন গতকাল তা সম্মানিত ছিল। অতএব, উপস্থিত ব্যক্তি যেন অনুপস্থিত ব্যক্তিকে এ সংবাদ পৌঁছে দেয়।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৫.পরিচ্ছেদঃ হারাম শরীফের মর্যাদা ও পবিত্রতা

২৮৭৭. যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

সুহায়ম [রাঃআঃ] আমাকে সংবাদ দিয়েছেন যে, তিনি আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছেন যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ একটি সৈন্যদল এই কাবা শরীফে যুদ্ধ করিতে আসবে, তদেরকে বায়দা নামক স্থানে ধসিয়ে দেয়া হইবে।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ

২৮৭৮. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন; বিভিন্ন সেনাবাহিনী এই কাবা ঘরের যুদ্ধ থেকে বিরত থাকিবে না; যতক্ষণ না তাহাদের একদলকে যমীনে ধসিয়ে দেয়া হইবে।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৮৭৯. হাফসা বিনত উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ এই হারামের দিকে একটি সেনাদল পাঠানো হইবে। যখন তারা বায়দা নামক স্থানে [অথবা একটি উন্মুক্ত প্রান্তরে] পৌঁছবে, তখন তাহাদের প্রথমাংশ এবং শেষাংশকে ধসিয়ে দেয়া হইবে, আর তাহাদের মধ্যাংশও পরিত্রাণ পাবে না। আমি বললামঃ যদি তাহাদের মধ্যে মুমিনরা থাকে, [তবে তাহাদের কি অবস্থা হইবে?] তিনি বলিলেনঃ তা [ঐ ভুখণ্ড] তাহাদের জন্য কবর হইবে।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ মুনকার

২৮৮০. উমাইয়া ইবনি সাফওয়ান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি তার দাদা আবদুল্লাহ ইবনি সাফওয়ানকে বলিতে শুনিয়াছি যে, হাফসা [রাঃআঃ] আমাকে বলেছেন যে, নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ একটি সেনাদল এই কাবা ঘরের স্থানে যুদ্ধ করার অভিপ্রায়ে আসবে, তারা যখন বায়দা নামক স্থানে [উন্মুক্ত প্রান্তরে] পৌঁছবে, তখন তাহাদের মধ্যবর্তী দলকে ধসিয়ে দেয়া হইবে। তারপা তাহাদেরকে অগ্রবর্তী দল ও পেছনের দল ডাকাডাকি করিবে। এরপর এদের সকলকে ধসিয়ে দেয়া হইবে। তাহাদের মধ্যে থেকে কেউই পরিত্রাণ পাবে না। ঐ বিচ্ছিন্ন ব্যক্তি ব্যতীত, যে তাহাদের সম্পর্কে সংবাদ দেবে। তখন এক ব্যক্তি বলিলেনঃ আমি তোমার সম্বন্ধে সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তুমি তোমার দাদার নামে মিথ্যা বলনি আর আমি তোমার দাদা সম্বন্ধে সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তিনি হাফসার নামে মিথ্যা বলেন নি। আর হাফসা [রাঃআঃ] সম্বন্ধে সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তিনি নাবী [সাঃআঃ] এর নামে মিথ্যা বলেন নি।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৬.পরিচ্ছেদঃ হারামে যে সকর প্রাণী মারা যায়

২৮৮১. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেন ঃ পাঁচ প্রকার দৃষ্ট [কষ্টদায়ক জন্তু] -কে হিল্ল{১} [হারাম বহির্ভূত অঞ্চল] এবং হারামে হত্যা করা যাবে, কাক, চিল, দংশনকারী কুকুর ও বিচ্ছু এবং ইঁদুর।

{১} কাবা শরীফের চারদিকে [কম বেশী] একটি পরিসীমা আল্লাহ তাআলা ঘোষিত হারাম যা পবিত্র ও সম্মানিত [খাসভূমি] অঞ্চল। এর বাইরের সমস্ত স্থান হিল্ল [স্বাভাবিক বৈধ] অঞ্চল।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৭.পরিচ্ছেদঃ হারাম শরীফে সাপ মারা

২৮৮২. সাঈদ ইবনি মুসায়্যাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

সূত্রে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেনঃ পাঁচ প্রকার অনিষ্টকারী প্রাণী হিল্ল ও হারাম [উভয় স্থানে] হত্যা করা যাবে। [তা হলো] সাপ, দংশনকারী কুকুর, চিল, ধূসর বর্ণের কাক ও ইদুঁর।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৮৮৩. আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে মিনার খাদ [গুহায় আবস্থান] করছিলাম। এমন সময় সূরা  ওয়াল মুরনামাজ নাযিল হলো। ইত্যবসরে একটি সাপ বের হলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ তাকে হত্যা কর। আমরা তাকে হত্যা করার জন্য তাড়াতাড়ি সেদিকে গেলাম। এমন সময় সে তার গর্তে ঢুকে গেল।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৮৮৪. আবু উবায়দাহ [রাঃআঃ] এর পিতা জাররাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আরাফার দিনের পূর্ববর্তী রাতে আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে ছিলাম। এমন সময় একটি সাপের উপস্থিতি টের পাওয়া গেল। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ তাকে মেরে ফেল। ইত্যবসরে তা একটি গর্তের ছিদ্রে প্রবেশ করলো। আমরা এক খণ্ড কাঠ ঢুকিয়ে সেই গর্তের কিছু অংশ উপড়ে ফেললাম এবং একটি খেজুর গাছের ডালে আগুন ধরিয়ে তাতে ঢুকিয়ে দিলাম। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ আল্লাহ তাআলা তোমাদের অনিষ্ট থেকে তাকে রক্ষা করিয়াছেন এবং তোমাদেরকেও তার অনিষ্ট থেকে রক্ষা করিয়াছেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ লিগাইরিহি

৩৮.পরিচ্ছেদঃ টিকটিকি মারা

২৮৮৫. উম্মু শরীক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে টিকটিকি হত্যা করিতে আদেশ করিয়াছেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৮৮৬. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ টিকটিকি দুষ্ট [অনিষ্টকারী] প্রাণী।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৯.পরিচ্ছেদঃ বিচ্ছু মারা

২৮৮৭. আয়েশা[রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ পৃথিবীর উপর বিচরণকারীর মধ্যে পাঁচটি সবই অনিষ্টকর। হিল্ল ও হারামের বাইরে [সর্বত্র] তাহাদের হত্যা করা যাবে। [সেগুলো হলঃ] দংশনকারী কুকুর, কাক, চিল, বিচ্ছু এবং ইঁদুর।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৪০.পরিচ্ছেদঃ হারামে ইঁদুর মারা

২৮৮৮. উরওয়া [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

আয়েশা [রাঃআঃ] বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ বিচরণকারী প্রাণীদের মধ্যে পাঁচটি সবই অনিষ্টকর। হারামে তাহাদেরকে হত্যা করা যাবে। [সেগুলো হলঃ] কাক, চিল, দংশনকারী ইঁদুর ও বিচ্ছু।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৮৮৯. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ]-এর স্ত্রী হাফসা [রাঃআঃ] বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যমীনে বিচরণকারী প্রাণীগুলোর মধ্যে পাঁচটি এমন আছে যাদের হত্যাকারীর কোন পাপ নেই। [তা হলোঃ] বিচ্ছু, কাক, চিল, ইঁদুর ও দংশনকারী কুকুর।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৪১.পরিচ্ছেদঃ হারামে চিল মারা

২৮৯০. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ অনিষ্টকারী পাঁচ প্রকার জন্তু হিল্ল [হারামের বাইরে] ও হারামে [উভয় স্থানেই] তাহাদেরকে হত্যা করা যাবেঃ চিল, কাক, ইঁদুর, বিচ্ছু, দংশনকারী কুকুর।

আব্দুর রাজ্জাক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেনঃ আমাদের কেউ কেউ বলেছেন যে, মাআমার তা যুহরী হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি সালিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে, তিনি তাহাঁর পিতা হইতে এবং উরওয়া [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে, উরওয়া [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আয়েশা [রাঃআঃ] এবং তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে বর্ণনা করিয়াছেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৪২.পরিচ্ছেদঃ হারামে কাক মারা

২৮৯১. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ পাঁচ প্রকার অনিষ্টকারী প্রাণী হারামে হত্যা করা যাবে। বিচ্ছু, কাক, ইঁদুর, দংশনকারী কুকুর এবং চিল।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৪৩.পরিচ্ছেদঃ হারামের শিকারকে ভয় দেখানো [হতচকিত করা] নিষেধ

২৮৯২. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ এই মক্কা নগরী মহান মহিয়ান আল্লাহ তাআলা তাকে হারাম করিয়াছেন, যমীন ও আকাশ সৃষ্টির দিন থেকে। আমার পূর্বে তা কারো জন্য হালাল ছিল না। আর আমার পরেও হালাল হইবে না। দিনের কিছু সময় তা আমার জন্য হালাল করা হইয়াছিল। আর তা আমার এ সময় থেকে আল্লাহ তাআলা কর্তৃক হারাম করা দ্বারা কিয়ামত পর্যন্ত হারাম থাকিবে। সেখানকার ঘাস কাটা যাবে না, তার গাছ কাটা যাবে না, তার শিকারকে সন্ত্রস্ত করা যাবে না। আর সেখানে পতিত কোন বস্তু কারও জন্য উঠানো হালাল হইবে না। ঐ ব্যক্তি ব্যতীত, যে [তার লোকের মধ্যে] প্রচার করে। তখন আব্বাস [রাঃআঃ] দাঁড়ালেন এবং তিনি ছিলেন অভিজ্ঞ ও সাহসী লোক। তিনি বললেনঃ ইযখির নামক ঘাস ব্যতীত? কেননা, তা আমাদের ঘর দুয়ারের জন্য এবং কবরের জন্য। তিনি [সাঃআঃ] বললেনঃ ইযখির ব্যতীত।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৪৪.পরিচ্ছেদঃ হজ্জকে ও হাজীকে সম্বর্ধনা জানানো

২৮৯৩. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ নাবী [সাঃআঃ] উমরাতুল কাযা আদায় করার জন্য মক্কায় প্রবেশ করলে ইবনি রাওয়াহা তাহাঁর সামনে [কবিতা] বলিতে লাগলেনঃ

[আরবী]

অর্থঃ হে কাফির সম্প্রদায়! তাহাঁর রাস্তা ছেড়ে দাও। [তাহাঁর প্রবেশে বাধা দিলে] আমরা তার [কুরআনের] বিশ্লেষণে তোমাদেরকে আঘাত করব। এমন আঘাত, যা মাথাকে তার অবস্থান [ঘাড়] থেকে স্থানচ্যুত করে দেবে এবং বন্ধুকে বন্ধুর কথা ভুলিয়ে দেবে।

তখন উমার [রাঃআঃ] বললেনঃ হে ইবনি রাওয়াহা! রসূলুল্লাহ[সাঃআঃ]-এর সামনে হারাম শরীফে তুমি কবিতা আবৃত্তি করছ? নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ তাকে করিতে দাও। ঐ মহান সত্তার শপথ! যাঁহার হাতে আমার প্রাণ, তার কথা [কবিতা] গুলো তাহাদের জন্য বর্শার আঘাত অপেক্ষা অধিক ক্রিয়া সম্পন্ন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৮৯৪. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন মক্কায় আগমন করেন, তখন বনী হাশিমের বালকেরা তাঁকে অভ্যর্থনা জানায়। ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] বলেনঃ তিনি তাহাদের একজনকে সামনে এবং অন্যজনকে পেছনে তুলে নিলেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply