মৃত ব্যক্তির জানাজা পড়ার নিয়ম প্রশংসা দোয়া ও তাকবীর সংখ্যা
মৃত ব্যক্তির জানাজা পড়ার নিয়ম প্রশংসা দোয়া ও তাকবীর সংখ্যা >> সুনানে নাসাই শরিফের মুল সুচিপত্র দেখুন
পর্বঃ ২১ঃ জানাযা, হাদীস (১৯০৭-২০০৬)
১.পরিচ্ছেদঃ জানাযার অনুমতি প্রদান করা
২.পরিচ্ছেদঃ জানাযা তাড়াতাড়ি পড়া
৩.পরিচ্ছেদঃ জানাযার জন্য দাঁড়াবার আদেশ
৪.পরিচ্ছেদঃ মুশরিকদের মৃত দেহের জন্য দাঁড়ানো
৫..পরিচ্ছেদঃ না দাঁড়ানোর অনুমতি
৬.পরিচ্ছেদঃ মৃত্যুতে মুমিনের নিষ্কৃতি প্রাপ্তি
৭.পরিচ্ছেদঃ কাফির থেকে নিষ্কৃতি
৮.পরিচ্ছেদঃ মৃত ব্যক্তির প্রশংসা করা
৯.পরিচ্ছেদঃ মৃত ব্যক্তি সম্পর্কে ভাল ব্যতীত মন্তব্য না করা
১০.পরিচ্ছেদঃ মৃত ব্যক্তিদের মন্দ বলার নিষেধাজ্ঞা
১১.পরিচ্ছেদঃ জানাযার পিছু পিছু যাওয়ার নির্দেশ
১২.পরিচ্ছেদঃ জানাযার অনুগমণকারীদের ফযীলত
১৩.পরিচ্ছেদঃ জানাযায় আরোহীর অবস্থান
১৪.পরিচ্ছেদঃ জানাযার পদব্রজে চলাকারী ব্যক্তির চলার স্থান
১৫.পরিচ্ছেদঃ মৃত ব্যক্তির জানাযার নামাজ আদায় করার নির্দেশ
১৬.পরিচ্ছেদঃ শিশুদের জানাযার নামাজ আদায় করা
১৭.পরিচ্ছেদঃ শিশুদের জানাযার নামাজ আদায় করা
১৮.পরিচ্ছেদঃ মুশরিকদের সন্তান
১৯.পরিচ্ছেদঃ শহীদের জানাযার নামাজ
২০.পরিচ্ছেদঃ তাহাদের উপর জানাযার নামাজ আদায় না করা
২১.পরিচ্ছেদঃ রজমকৃত [পাথর নিক্ষেপিত] ব্যক্তিরদের উপর জানাযার নামাজ আদায় না করা
২২.পরিচ্ছেদঃ রজমকৃত [পাথর নিক্ষেপিত] ব্যক্তিরদের উপর জানাযার নামাজ আদায় করা
২৩.পরিচ্ছেদঃ ওসিয়্যতে অন্যায়কারীর উপর জানাযার নামাজ আদায় করা
২৪.পরিচ্ছেদঃ খিয়ানতকারীর উপর জানাযার নামাজ আদায় করা
২৫.পরিচ্ছেদঃ ঋণগ্রস্থ ব্যক্তির উপর জানাযার নামাজ আদায় করা
২৬.পরিচ্ছেদঃ আত্মহত্যাকারীর উপর জানাযার নামাজ আদায় না করা
২৭.পরিচ্ছেদঃ মুনাফিকদের উপর জানাযার নামাজ আদায় করা
২৮.পরিচ্ছেদঃ মসজিদে জানাযার নামাজ আদায় করা
২৯.পরিচ্ছেদঃ রাত্রে জানাযার নামাজ আদায় করা
৩০.পরিচ্ছেদঃ জানাযার নামাজে কাতারবন্দী হয়ে দাঁড়ানো
৩১.পরিচ্ছেদঃ জানাযার নামাজ দাঁড়িয়ে আদায় করা
৩২.পরিচ্ছেদঃ মহিলা ও শিশুর জানযার নামাজ একত্রিত করা
৩৩.পরিচ্ছেদঃ পুরুষ এবং মহিলার জানাযার নামাজ একত্রিত করা
৩৪.পরিচ্ছেদঃ জানাযায় তাকবীরের সংখ্যা
৩৫.পরিচ্ছেদঃ দোয়া
৩৬.পরিচ্ছেদঃ যে মৃত ব্যক্তির উপর একশত জন ব্যক্তি জানাযার নামাজ আদায় করে তার ফযীলত
৩৭.পরিচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি কোন মৃত ব্যক্তির ওপর জানাযা নামাজ আদায় করে তার সওয়াব
৩৮.পরিচ্ছেদঃ জানাযা রাখার পূর্বে বসে পড়া
৩৯.পরিচ্ছেদঃ জানাযার জন্য দাঁড়ানো
৪০.পরিচ্ছেদঃ শহীদকে স্বীয় রক্তসহ দাফন করা
৪১.পরিচ্ছেদঃ মুশরিকদের দাফন করা
১.পরিচ্ছেদঃ জানাযার অনুমতি প্রদান করা
১৯০৭. আবু উসামা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
এক অসহায় মহিলা অসুস্থ হলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] –কে তার অসুস্থতা সম্পর্কে সংবাদ দেওয়া হলো। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] অসহায়দের সেবা শুশ্রুষা করিতেন এবং তাহাদের অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিতেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, যদি সে [অসহায় মহিলা] মারা যায় তবে আমাকে সংবাদ দিও। রাত্রে তার জানাযা পড়া হলো আর সাহাবায়ে কেরাম রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] –কে জাগানো সমীচীন মনে করিলেন না। যখন সকাল হল রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] –কে ঘটনা জানানো হল। তিনি বলিলেন, আমি কি তোমাদের আমাকে সংবাদ দিতে বলিনি? তাঁরা বলিলেন, ইয়া রসূলুল্লাহ! আমরা আপনাকে রাত্রে জাগানো সমীচীন মনে করিনি। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার কবরের পার্শ্বে নিয়ে লোকজন নিয়ে কাতারবন্দী হয়ে দাঁড়ালেন এবং চারটি তাকবীর বলিলেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২.পরিচ্ছেদঃ জানাযা তাড়াতাড়ি পড়া
১৯০৮. আবদূর রহমান ইবনি মিহরান [রহঃ] হইতে বর্ণীত
যে, আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] বলেছেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- কে বলিতে শুনিয়াছি যে, যখন কোন নেককার ব্যক্তিকে খাটিয়ায় রাখা হয়, সে বলে, “আমাকে শীঘ্র পাঠাও, আমাকে শীঘ্র পাঠাও” আর যখন কোন বদকার ব্যক্তিকে খাটিয়ায় রাখা হয় তখন সে বলে, “হায়! তোমরা আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছ?”
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯০৯. আবু সাঈদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি আবু সাঈদ খুদরী [রাঃআঃ] -কে বলিতে শুনেছেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যখন কোন মৃত ব্যক্তিকে খাটিয়ায় রাখা হয় আর লোকজন তাকে কাঁধে বহন করে, যদি সে নেককার হয়, তবে সে বলিতে থাকে, “আমাকে শীঘ্র পাঠাও, আমাকে শীঘ্র পাঠাও” আর যদি বদকার হয় তবে বলিতে থাকে, “হায়! তোমরা আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছ?” তার আওয়াজ মানুষ ব্যতীত অন্য সবাই শুনতে পায়। যদি মানুষ তা শুনতে পেত তবে অবশ্যই বেহুঁশ হয়ে পড়ত।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯১০. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমরা জানাযা তাড়তাড়ি পড়ে নেবে। যদি সে নেককার হয় তবে তা তার জন্য কল্যাণকর। তোমরা তাকে তাড়াতাড়ি তার কল্যাণের দিকে পাঠিয়ে দাও। আর যদি বদকার হয় তবে একজন বদকারকে স্বীয় স্কন্ধ থেকে নামিয়ে রাখ।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯১১. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে আমি বলিতে শুনিয়াছি, তোমরা জানাযা তাড়তাড়ি পড়ে ফেলবে। যদি সে নেককার হয় তবে তোমরা তাকে স্বীয় কল্যাণের দিকে তাড়াতাড়ি পাঠিয়ে দিলে আর যদি বদকার হয় তবে একজন বদকারকে স্বীয় স্কন্ধ থেকে নামিয়ে রাখবে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯১২. আব্দুর রহমান [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমি আব্দুর রহমান ইবনি সামুরা [রাঃআঃ]-এর জানাযায় উপস্থিত ছিলাম। যিয়াদ [রাঃআঃ] খাটিয়ার সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন আব্দুর রহমান [রাঃআঃ]-এর কিছু পরিবার-পরিজনের লোক এবং গোলামগণ জানাযার খাটিয়া কে সম্মুখে রেখে হেঁটে যাচ্ছিলেন এবং বলছিলেন, “তোমরা ধীরে ধীরে চলো, আল্লাহ্ তাআলা তোমাদের বরকত দিন। তারা ধীরে ধীরে চলছিল। যখন আমরা মিরবাদ নামক জায়গায় রাস্তায় পৌছলাম আবু বাকরা [রাঃআঃ] খচ্চরের উপর আরোহনাবস্থায় আমাদের সাথে মিলিত হলেন, তাহাদের কার্যকলাপ দেখে খচ্চরে আরোহনাবস্থায় তাহাদের দিকে ধাবিত হলেন এবং তাহাদের দিকে চাবুক নিয়ে ঝুঁকলেন এবং বলিলেন, তোমরা এই সমস্ত ছাড়, ওই সত্তার শপথ! যিনি আবুল কাশেম [রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে সম্মানিত করিয়াছেন, আমার স্মরণ আছে, আমি একদা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে ছিলাম। আমরা জানাযা নিয়ে খুব দ্রুত যাচ্ছিলাম। একথা শুনে লোকজন খুশি হয়ে গেল।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯১৩. আবু বাক্রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমার স্মরণ আছে, আমি একবার রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে ছিলাম, আমরা জানাযা নিয়ে খুব দ্রুত যাচ্ছিলাম।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯১৪. আবু সাঈদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যখন তোমার কাছ দিয়ে কোন জানাযা নিয়ে যাওয়া হয়, তখন তোমরা দাঁড়িয়ে যাবে। আর যারা জানাযার সাথে যাবে তারা জানাযা রাখার পূর্বে বসবে না।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩.পরিচ্ছেদঃ জানাযার জন্য দাঁড়াবার আদেশ
১৯১৫. আমির ইবনি রাবীআ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তোমাদের কেউ যখন জানাযা দেখে তখন যদি সে তাহাদের সাথে না যায় তবে তাকে দাঁড়িয়ে থাকতে হইবে, যতহ্মণ না সে জানাযার পিছনে পড়ে কিংবা পিছনে পড়ার পূর্বে জানাযা রাখা হয়।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯১৬. আমির ইবনি রাবীআ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেছেনঃ তোমরা যখন জানাযা দেখবে তখন তোমরা তার পিছনে না পড়া পর্যন্ত কিংবা তা না রাখা পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকিবে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯১৭. আবু সাঈদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যখন তোমরা জানাযা দেখবে, দাঁড়িয়ে যাবে। আর যে তার অনুগমন করিবে সে যেন তা রাখার পূর্বে না বসে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯১৮. আবু সাঈদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] –কে কোন জানাযায় উপস্থিত হয়ে কখনো তা রাখার পূর্বে বসতে দেখিনি।
হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৯১৯. আবু সাঈদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর কাছ দিয়ে লোকজন জানাযা নিয়ে যাচ্ছিল, তখন তিনি দাঁড়িয়ে গেলেন, আর আমর [রাঃআঃ] বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট দিয়ে জানাযা নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি দাঁড়িয়ে গেলেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯২০. ইয়াযীদ ইবনি সাবিত [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তাঁরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর সাথে উপবিষ্ট ছিলেন, এমন সময় একটি জানাযা দেখা দিল তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] দাঁড়িয়ে গেলেন আর তাহাঁর সাথে যারা ছিলেন তারাও দাঁড়িয়ে গেলেন। ঐ জানাযা চলে না যাওয়া পর্যন্ত তারা দাঁড়িয়ে রইলেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪.পরিচ্ছেদঃ মুশরিকদের মৃত দেহের জন্য দাঁড়ানো
১৯২১. ইসমাঈল ইবনি মাসঊদ [রহঃ] হইতে বর্ণীত
সহল ইবনি হুনায়ফ ও কায়স ইবনি সাদ ইবনি উবাদাহ্ [রাঃআঃ] কাদিসিয়ায় ছিলেন। তাঁদের নিকট দিয়ে একটি জানাযা যাওয়ার সময় তাঁরা দাঁড়িয়ে গেলেন, এখন তাঁদেরকে বলা হলো, “এতো যিম্মীর [আশ্রিত বিধর্মী] লাশ” , তখন তারা বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর কাছ দিয়ে একটি জানাযা নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি দাঁড়িয়ে গেলে তাঁকে বলা হল, “সে তো ইয়াহুদী”, তিনি বলিলেন, সে কি মানুষ নয়?
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯২২. জাবির ইবনি আব্দুল্লাহ্ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমাদের কাছ দিয়ে একটি জানাযা যাওয়ার সময় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] দাঁড়িয়ে গেলেন এবং আমরাও তাহাঁর সাথে দাঁড়িয়ে গেলাম। তখন আমি বললাম, “ইয়া রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ! এতো এক ইয়াহুদী মহিলার জানাযা”। তিনি বলিলেন, “ প্রত্যেক মৃত্যুতেই ভীতি আছে। অতএব যখন তোমরা জানাযা দেখবে তখন দাঁড়িয়ে যাবে”।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৫.পরিচ্ছেদঃ না দাঁড়ানোর অনুমতি
১৯২৩. আবু মামার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমরা একদা আলী [রাঃআঃ]-এর নিকট ছিলাম। এমন সময় তাহাঁর কাছ দিয়ে একটি জানাযা গেলে তাঁরা [আলী [রাঃআঃ] এর কাছে উপবিষ্ট লোকজন] দাঁড়িয়ে গেলেন। তখন আলী [রাঃআঃ] বলিলেন, “এ কি?” তাঁরা বলিলেন, আবু মুসা [রাঃআঃ] এর নির্দেশ। তখন তিনি বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক ইয়াহুদী মহিলার জানাযার জন্য দাঁড়িয়েছিলেন। এরপর আর তা করেন নি।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯২৪. মুহাম্মাদ [রহঃ] হইতে বর্ণীত
হাসান ইবনি আলী এবং ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ]-এর নিকট দিয়ে একটি জানাযা গেলে হাসান [রাঃআঃ] দাঁড়িয়ে গেলেন কিন্তু ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] দাঁড়ালেন না। তখন হাসান [রাঃআঃ] বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কি ইয়াহুদীর জানাযার জন্য দাঁড়ান নি? ইবনি আব্বাস বলিলেন, হ্যাঁ। তারপর তিনি দাঁড়ান নি।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯২৫. ইবনি সীরীন [রহঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, হাসান ইবনি আলী এবং ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ]-এর নিকট দিয়ে একটি জানাযা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তখন হাসান [রাঃআঃ] দাঁড়িয়ে গেলেন কিন্তু ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] দাঁড়ালেন না। তখন হাসান [রাঃআঃ] ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ]-কে বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কি এর জন্য দাঁড়ান নি? ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] বলিলেন, এর জন্য দাঁড়িয়েছিলেন কিন্তু পরে তিনি বসে পড়েন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯২৬. আবু মিজলায [রহঃ] হইতে বর্ণীত
তাঁদের নিকট দিয়ে একটি জানাযা যাওয়ার সময় তাঁদের একজন দাঁড়ালেন অন্যজন বসে রইলেন। তখন যিনি দাঁড়িয়েছিলেন তিনি বলিলেন, তুমি তো নিশ্চয় জানো যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এ ব্যাপারে দাঁড়িয়েছিলেন? যিনি বসেছিলেন তিনি বলিলেন, আমি জানি যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বসা ছিলেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯২৭. জাফরের পিতা মুহাম্মাদ [রহঃ] হইতে বর্ণীত
যে, হাসান ইবনি আলী [রাঃআঃ] বসা ছিলেন, তখন তাহাঁর কাছ দিয়ে একটি জানাযা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল সেই জানাযা চলে না যাওয়া পর্যন্ত লোকজন দন্ডায়মান ছিল। তখন হাসান [রাঃআঃ] বলিলেন, একজন ইয়াহুদীর জানাযা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তথায় উপবিষ্ট ছিলেন। ইয়াহুদীর জানাযা তাহাঁর মাথার উপর দিয়ে যাবে তা তিনি অপছন্দ করার কারণে দাঁড়িয়েছিলেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯২৮. আবু যুবায়র [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি জাবির [রাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেন যে, নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট দিয়ে এক ইয়াহুদীর জানাযা যাচ্ছিল তখন তিনি তা অদৃশ্য না হওয়া পর্যন্ত দাঁড়িয়ে ছিলেন।
আবু যুবাইর [রহঃ] ….. আমাদেরকে সংবাদ এ দিয়েছেন যে, তিনি জাবির [রাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এবং তাহাঁর সাহাবীগন এক ইয়াহুদীর জানাযার জন্য দাঁড়িয়েছিলেন তা অদৃশ্য হয়ে না যাওয়া পর্যন্ত।
হাদিসের তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
১৯২৯. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর কাছ দিয়ে একটি জানাযা যাওয়ার সময় তিনি দাঁড়িয়ে গেলে তাঁকে বলা হল যে, এটাতো এক ইয়াহুদীর জানাযা। তিনি বলিলেন, আমরা তো ফেরেশতাহাদের সম্মানার্থে দাঁড়িয়েছি।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৬.পরিচ্ছেদঃ মৃত্যুতে মুমিনের নিষ্কৃতি প্রাপ্তি
১৯৩০. আবু কাতাদা ইবনি রিবয়ী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সামনে দিয়ে একটি জানাযা নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি বলিলেন, হয়তো বা এ ব্যক্তি নিষ্কৃতি পাচ্ছে বা তার থেকে লোকজন নিষ্কৃতি পাচ্ছে। সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করিলেন যে, কেই বা নিজে নিষ্কৃতি পায় আর কার থেকেই বা লোকজন নিষ্কৃতি পায়? তিনি বলিলেন, যে মুমিন ব্যক্তি যখন মৃত্যুবরণ করে এখন সে দুনিয়ার দুঃখ কষ্ট থেকে নিষ্কৃতি পায় আর গুনাহগারের মৃত্যু হলে তার মৃত্যুতে অন্যান্য লোকজন, জনপদ, বৃক্ষরাজি এবং প্রাণীকুল তার থেকে নিষ্কৃতি পায়।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৭.পরিচ্ছেদঃ কাফির থেকে নিষ্কৃতি
১৯৩১. আবু কাতাদা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে বসা ছিলাম। এমতাবস্থায় একটি জানাযা দেখা গেল। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, হয়তো বা সে নিষ্কৃতি পাচ্ছে বা তার থেকে মুমিনগণ নিষ্কৃতি পাচ্ছে। মুমিন ব্যক্তি যখন মৃত্যুবরণ করে তখন সে তার দুঃখ কষ্ট ও বালা-মুসীবত থেকে নিষ্কৃতি পায় আর গুনাহগার মৃত্যুবরন করলে তাহাঁর থেকে অন্যান্য লোকজন, জনপদ, বৃক্ষরাজি এবং প্রাণীকুল নিষ্কৃতি পায়।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮.পরিচ্ছেদঃ মৃত ব্যক্তির প্রশংসা করা
১৯৩২. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, একটি জানাযা যেতে লাগলে তার উত্তম প্রশংসা করা হল। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন, তার জন্য জান্নাত নির্ধারিত হয়ে গেল। আর একটি জানাযা যাচ্ছিল, যার পাপের আলোচনা করা হচ্ছিল। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন, তার জন্য দোযখ সাব্যস্ত হয়ে গেল। তখন উমর [রাঃআঃ] বলিলেন, আপনার উপর আমার মাতা-পিতা উৎসর্গীত হোক; একটি জানাযা যাচ্ছিল যার ভাল প্রশংসা করা হল, আর আপনি বলিলেন যে, তার জন্য জান্নাত সাব্যস্ত হয়ে গেল। অন্য আর একটি জানাযা যাচ্ছিল যার পাপের আলোচনা করা হচ্ছিল আর আপনি বলিলেন যে, তার জন্য দোযখ সাব্যস্ত হয়ে গেল। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তোমরা যার ভাল প্রশংসা কর তাহাঁর জন্য জান্নাত সাব্যস্ত হয়ে যায় আর তোমরা যার পাপের আলোচনা কর তার জন্য দোযখ সাব্যস্ত হয়ে যায়। কারন তোমরা জমীনে আল্লাহ্র সাক্ষী।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৩৩. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, লোকজন নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট একটি জানাযা নিয়ে যাচ্ছিল এবং তাহাঁর ভাল প্রশংসা করছিল। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন, তাহাঁর জন্য জান্নাত সাব্যস্ত হয়ে গেল। অতঃপর অন্য একটি জানাযা নিয়ে যাচ্ছিল যার পাপের আলোচনা করছিল। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন, তার জন্য দোযখ সাব্যস্ত হয়ে গেল। তারা বললো, প্রথম এবং দ্বিতীয় ব্যক্তির ব্যাপারে আপনার একই মন্তব্য “সাব্যস্ত হয়ে গেল?” নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন, ফেরেশতাগন আসমানে আল্লাহ্ তাআলার সাক্ষী আর তোমরা যমীনে আল্লাহ্ তাআলার সাক্ষী।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৩৪. আবুল আসওয়াদ দোয়ালী [রহঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমি একবার মদীনা শরীফে এসে উমর ইবনি খাত্তাব [রাঃআঃ]-এর পাশে বসেছিলাম। এমন সময়ে একটি জানাযা নিয়ে যাওয়া হচ্চিল আর তার সাথীরা তার সম্পর্কে ভাল প্রশংসা করছিল। তখন উমর [রাঃআঃ] বলিলেন যে, তার জন্য [জান্নাত] সাব্যস্ত হয়ে গেল। তৃতীয়বার আরো একটি জানাযা নিয়ে যাওয়ার হচ্ছিল আর তার সম্পর্কে তার সাথীরা মন্দ আলোচনা করছিল। তখন উমর [রাঃআঃ] বলিলেন যে, তার জন্য [দোযখ] সাব্যস্ত হয়ে গেল। আমি বললাম, কি সাব্যস্ত হয়ে গেছে ইয়া আমীরাল মুমিনীন? তিনি বলিলেন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যে রকম বলেছেন, আমি সে রকমই বলেছি যে, যে কোন মুসলমান সম্পর্কে চারজন মানুষ ভাল বলে সাক্ষ্য দেয়, আল্লাহ্ তাআলা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। আমরা বললাম, যদি তিনজন সাক্ষ্য দেয়? তিনি বলিলেন, তিনজন মানুষ সাক্ষ্য দিলেও। আমরা বললাম, যদি দুইজন মানুষ সাক্ষ্য দেয়? তিনি বলিলেন, দুইজন মানুষ সাক্ষ্য দিলেও।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৯.পরিচ্ছেদঃ মৃত ব্যক্তি সম্পর্কে ভাল ব্যতীত মন্তব্য না করা
১৯৩৫. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ]-এর সামনে এক মৃত ব্যক্তি সম্পর্কে মন্দ মন্তব্য করা হলে তিনি বলিলেন, তোমরা মৃত ব্যক্তিদের সম্পর্কে ভাল মন্তব্য ছাড়া মন্তব্য করিবে না।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১০.পরিচ্ছেদঃ মৃত ব্যক্তিদের মন্দ বলার নিষেধাজ্ঞা
১৯৩৬. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমরা [মুসলমান] মৃত ব্যক্তিদের মন্দ বলবে না। কেননা তারা স্বীয় কৃতকর্মের ফল ভোগ করিবে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৩৭. আব্দুল্লাহ ইবনি আবু বকর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনি মালিক [রাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তিনটি জন্তু মৃত ব্যক্তির পিছু পিছু যায়। তার পরিবার-পরিজন, তার ধন-সম্পত্তি এবং তার কৃতকর্ম। অতঃপর দুইটি বস্তু ফিরে আসে তার পরিবার-পরিজন এবং তার ধন-সম্পত্তি আর অন্য বস্তুটি তার সাথেই থেকে যায় আর তা হল তার কৃতকর্ম।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৩৮. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, প্রত্যেক মুমিন ব্যক্তির উপর অন্য মুমিন ভাইয়ের ছয়টি অধিকার রয়েছেঃ [১] যখন অসুস্থ হইবে তার সেবা শুশ্রষা করিবে; [২] তার জানাযায় উপস্থিত হইবে যখন সে মারা যাবে; [৩] তার আতিথ্য গ্রহন করিবে যখন সে দাওয়াত করিবে; [৪] যখন তার সাথে সাক্ষাৎ হইবে তাকে সালাম করিবে; [৫] যখন সে হাঁচি দেবে তখন তার উত্তরে [আরবী] বলবে; [৬] তার কল্যাণ কামনা করিবে সে অনুপস্থিত থাকুক বা উপস্থিত থাকুক।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১১.পরিচ্ছেদঃ জানাযার পিছু পিছু যাওয়ার নির্দেশ
১৯৩৯. বারা ইবনি আযিব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের সাতটি কাজের নির্দেশ দিয়েছেন এবং সাতটি কাজ থেকে বারণ করিয়াছেন, অসুস্থের হাঁচি দাতার উত্তরে [আরবী] বলার, শপথ পূরণে সহায়তার, অত্যাচারিতের সাহায্য করার, সালাম বিস্তারের, আমন্ত্রণকারীর আমন্ত্রন গ্রহণ করার এবং জানাযার পিছু পিছু গমন করার তিনি আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন আর তিনি স্বর্ণের আংটি পরিধান, রৌপ্য পাত্র ব্যবহার, রেশম নির্মিত গদী ব্যবহার, কসি [এক প্রকার মিসরীয় কাপড়] নির্মিত কাপড় পরিধান, রেশমী মোটা কাপড় ব্যবহার এবং রেশম ও দীবাজ [এক প্রকার রেশমী পোষাক] ব্যবহার থেকে আমাদের নিষেধ করিয়াছেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১২.পরিচ্ছেদঃ জানাযার অনুগমণকারীদের ফযীলত
১৯৪০. মুসাইয়াব ইবনি রাফি [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমি বারা ইবনি আযিব [রাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি জানাযার নামাজ আদায় করা পর্যন্ত জানাযার অনুগমন করে তার জন্য এক কীরাত সওয়াব রয়েছে। আর যে ব্যক্তি দাফন করা পর্যন্ত জানাযার অনুগামী হয় তার জন্য দুই কীরাত সওয়াব রয়েছে। এক কীরাত উহুদ পাহাড়ের সমপরিমাণ।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৪১. আব্দুল্লাহ ইবনি মুগাফ্ফাল [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি দাফন করা পর্যন্ত জানাযার অনুগামী হয় তার জন্য দুই কীরাত সওয়াব রয়েছে। আর যদি দাফনের পূর্বেই ফিরে তবে তার জন্য রয়েছে এক কীরাত সওয়াব।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৩.পরিচ্ছেদঃ জানাযায় আরোহীর অবস্থান
১৯৪২. মুগীরা ইবনি শুবা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, আরোহী জানাযার পিছনে চলবে। পদব্রজে চলাকারী জানাযার যেখান দিয়া ইচ্ছা সেখান দিয়ে চলতে পারে। নবজাত শিশুর [ক্রন্দন করার পর মারা গেলে] জানাযা আদায় করা হইবে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৪.পরিচ্ছেদঃ জানাযার পদব্রজে চলাকারী ব্যক্তির চলার স্থান
১৯৪৩. মুগীরা ইবনি শুবা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, সওয়ারী জানাযার পিছনে চলবে আর পদব্রজ চলাকারী ব্যক্তি যেথায় দিয়ে ইচ্ছা সেখান দিয়ে চলবে। আর নবজাত শিশুর [ক্রন্দন করার পর মারা গেলে] জানাযা আদায় করা হইবে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৪৪. আব্দুল্লাহ ইবনি উমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আবু বকর এবং উমর [রাঃআঃ]-কে জানাযার আগে আগে পায়ে হেঁটে চলতে দেখেছেন।
হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
১৯৪৫. ইবনি উমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ], আবু বকর, উমর এবং উসমান [রাঃআঃ]-কে জানাযার আগে আগে পায়ে হেঁটে চলতে দেখেছেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৫.পরিচ্ছেদঃ মৃত ব্যক্তির জানাযার নামাজ আদায় করার নির্দেশ
১৯৪৬. ইমরান ইবনি হুসায়ন [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন যে, তোমাদের এক ভাই [নাজ্জাশী] মৃত্যুবরণ করেছে, তোমরা প্রস্তুত হও এবং তার উপর জানাযার নামাজ আদায় কর।১
{১} এই হাদিস দ্বারা ঈমাম শাফিঈ [রহঃ] বলেন, মৃত ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে জানাযার নামাজ জায়েয কিন্তু আবু হানিফা [রহঃ]-এর জায়েয নহে, ইহা শুধু রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর জন্যই নির্দিষ্ট ছিল।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৬.পরিচ্ছেদঃ শিশুদের জানাযার নামাজ আদায় করা
১৯৪৭. উম্মুল মুমিনীন আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর কাছে একটি আনসারী বালকের মৃতদেহ আনা হলে তিনি তার উপর জানাযার নামাজ আদায় করিলেন। আয়িশাহ [রাঃআঃ] বলেন, আমি বললাম, জান্নাতের চড়ুই পাখীদের মধ্য হইতে এ চড়ুই পাখীটি কতই ভাগ্যবান! সে কোন পাপ কাজ করেনি এবং পাপ তাকে স্পর্শ করেনি। তিনি বলিলেন, এর অন্যথাও হইতে পারে হে আয়িশাহ [রাঃআঃ]। আল্লাহ্ তাআলা জান্নাত সৃষ্টি করিয়াছেন এবং তার বাসিন্দা সৃষ্টি করিয়াছেন। আর তাহাদের সৃষ্টি করিয়াছেন স্বীয় পিতার ঔরসে এবং জাহান্নাম সৃষ্টি করিয়াছেন আর তার বাসিন্দাও সৃষ্টি করিয়াছেন। তাহাদের সৃষ্টি করিয়াছেন স্বীয় পিতার ঔরসে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৭.পরিচ্ছেদঃ শিশুদের জানাযার নামাজ আদায় করা
১৯৪৮. মুগীরা ইবনি শুবা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি উল্লেখ করিয়াছেন যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, আরোহীরা জানাযার পিছু পিছু চলবে আর পদব্রজে চলাকারী জানাযার যে দিক দিয়ে ইচ্ছে সে দিক দিয়ে চলবে। [ক্রন্দন করার পর মারা গেলে] নবজাতকের জানাযার নামাজ আদায় করা হইবে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮.পরিচ্ছেদঃ মুশরিকদের সন্তান
১৯৪৯. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মুশরিকদের সন্তানদের ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হলে বলেছিলেন, আল্লাহ্ তাআলাই তাহাদের ভবিষ্যৎ কর্ম সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৫০. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] মুশরিকদের সন্তানদের ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হলে বলেছিলেন, আল্লাহ্ তাআলাই তাহাদের ভবিষ্যৎ কর্ম সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৫১. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মুশরিকদের সন্তানদের ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হলে বলেছিলেন, যখন আল্লাহ্ তাআলা তাহাদের সৃষ্টি করেন তখন তিনি তাহাদের ভবিষ্যৎ কর্ম সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৫২. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] মুশরিকদের সন্তানদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হলে বলেছিলেন, আল্লাহ্ তাআলাই তাহাদের ভবিষ্যৎ কর্ম সম্পর্কে অধিক পরিজ্ঞাত।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯.পরিচ্ছেদঃ শহীদের জানাযার নামাজ
১৯৫৩. শাদ্দাদ ইবনি হাদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, একজন গ্রাম্য ব্যক্তি নাবী [সাঃআঃ] এর কাছে এসে তাহাঁর উপর ঈমান আনলো এবং তাহাঁর অনুসরণ করিল। অতঃপর বললো যে, আমি আপনার সাথে হিজরতকারী অবস্থায় অবস্থান করব। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর সম্পর্কে কোন সাহাবীকে ওসিয়্যত করিলেন। এক যুদ্ধে নাবী [সাঃআঃ] গনীমত স্বরূপ কিছু বন্দী হস্তগত হল। তিনি সেগুলো বণ্টন করে দিলেন এবং ঐ গ্রাম্য সাহাবীকেও দিলেন। তার অংশ একজন সাহাবীকে দিলেন। তিনি অন্যান্য সাহাবীদের উট চরাতেন। যখন তিনি আসলেন সেগুলো তাকে দেওয়া হলে তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, এগুলো কি? তারা বলেন, তোমার অংশ যা তোমাকে নাবী [সাঃআঃ] দিয়েছেন। তিনি সেগুলো নিলেন এবং সেগুলো নিয়ে নাবী [সাঃআঃ] এর কাছে এসে বলিলেন, এগুলো কি? নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন, এগুলো আমি তোমার জন্য বণ্টন করেছি। তখন তিনি বলিলেন, এ জন্য আমি আপনার অনুসরণ করিনি বরং এ জন্য আমি আপনার অনুসরণ করেছি, যেন এখানে আমি তীর গ্রহণ করিতে পারি এবং সে স্বীয় গলদেশের প্রতি ইঙ্গিত করিল এবং শহীদ হইতে পারি ও জান্নাতে প্রবেশ করিতে পারি। তিনি বলিলেন, যদি তুমি আল্লাহ্ তাআলাকে বিশ্বাস কর। তবে আল্লাহ্ তাআলা তোমার সে আশা সত্য করে দেখাবেন। অল্প কিছুক্ষণ পরেই তিনি শত্রু নিধনের জন্য দৌড়িয়ে গেলেন। অতঃপর তাঁকে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সামনে আনা হলে দেখা গেল ঠিক ঐ স্থানেই তীর বিদ্ধ ছিল যে দিকে তিনি ইঙ্গিত করেছিলেন। তখন নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন, এ কি সেই ব্যক্তিই? সাহাবীগণ বলিলেন, হ্যাঁ। তিনি বলিলেন, সে আল্লাহ্ তাআলাকে সত্য বলে বিশ্বাস করেছিল, আল্লাহ্ তাআলাও তাকে সত্য সাব্যস্ত করে দেখিয়ে দিয়েছেন। অতঃপর রাসুলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] তাঁকে স্বীয় জুব্বা দ্বারা কাফন দিলেন এবং তাঁকে সম্মুখে রেখে তাহাঁর জানাযার নামাজ আদায় করিলেন। তাহাঁর জানাযা নামাজে যা প্রকাশ পেয়েছিল তা হল, “হে আল্লাহ। এ ব্যক্তি তোমার বান্দা সে তোমার রাস্তায় মুহাজির অবস্থায় বের হয়েছিল। এখন সে শাহাদাত প্রাপ্ত হয়েছে আমি তার জন্য সাক্ষী হয়ে রইলাম।”
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৫৪. উকবা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একদিন বের হয়ে উহুদের শহীদের উপর জানাযার নামাজ আদায় করিলেন যেরূপ মৃতদের উপর আদায় করা হয়। পড়ে মিম্বরে ফিরে এসে বলিলেন, তোমাদের আমি অগ্রগামী দল স্বরূপ পাঠাচ্ছি। আর আমি তোমাদের জন্য সাক্ষী হয়ে রইলাম।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২০.পরিচ্ছেদঃ তাহাদের উপর জানাযার নামাজ আদায় না করা
১৯৫৫. জাবির ইবনি আব্দুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উহুদের শহীদের মধ্যে হইতে দুজনকে এক কাপড়ে একত্রিত করিতেন অতঃপর জিজ্ঞাসা করিতেন যে, কে কুরআন শরীফে সম্পর্কে অধিক পরিজ্ঞাত? যখন তাহাদের কোন একজনের দিকে ইশারা করা হত তখন তাকে কবরে অগ্রে শায়িত করে দিতেন এবং বলিতেন যে, আমি এদের জন্য সাক্ষী হয়ে রইলাম। আর শহীদের স্বীয় রক্ত মাখা শরীরে তাহাদের উপর জানাযার নামাজ আদায় না করেই বিনা গোসলে দাফন করার নির্দেশ দিতেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২১.পরিচ্ছেদঃ রজমকৃত [পাথর নিক্ষেপিত] ব্যক্তিরদের উপর জানাযার নামাজ আদায় না করা
১৯৫৬. জাবির ইবনি আব্দুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
আসলাম গোত্রের এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর কাছে এসে যিনার স্বীকারোক্তি করিল। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন, সে আবারো স্বীকারোক্তি করিল, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আবারো তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন, সে আবারো স্বীকারোক্তি করিল। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আবারো তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। এভাবে সে নিজের উপর চার বার সাক্ষ্য দান করিল। অতঃপর নাবী [সাঃআঃ] জিজ্ঞাসা করিলেন যে, তুমি কি অপ্রকৃতস্ত? সে বললো, না। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জিজ্ঞাসা করিলেন, তুমি কি বিবাহিত? সে বললো, হ্যাঁ, অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে পাথর মারার নির্দেশ দিলেন। যখন পাথর মারা শুরু হল সে অধৈর্য হয়ে দৌড় দিল তখন তাকে ধরে এনে পুনরায় পাথর মারা হল, যাতে সে মারা গেল। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার সম্পর্কে ভাল মন্তব্য করিলেন কিন্তু তার উপর জানাযার নামাজ আদায় করিলেন না।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২২.পরিচ্ছেদঃ রজমকৃত [পাথর নিক্ষেপিত] ব্যক্তিরদের উপর জানাযার নামাজ আদায় করা
১৯৫৭. ইমরান ইবনি হুসায়ন [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ জুহায়না গোত্রের এক মহিলা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর কাছে এসে বললো যে, আমি যিনা করেছি আর সে গর্ভবতী ছিল। তিনি তাকে স্বীয় আত্মীয়-স্বজনের নিকট সোপর্দ করে দিলেন এবং বললেনঃ এর সাথে সদ্ব্যবহার কর, আর যখন সে প্রসব করিবে, তখন তাকে আমার কাছে নিয়ে আসবে। প্রসবের পর তাকে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর কাছে নিয়ে আসা হলে তিনি তাকে পাথর মারার নির্দেশ দিলেন। তার উপর কাপড় জড়ানো হল, পরে পাথর মারা হল। অতঃপর তিনি তার জানাযার নামাজ আদায় করিলেন। উমর [রাঃআঃ] বলিলেন, আপনি তার উপর জানাযার নামাজ আদায় করিলেন অথচ সে যিনা করেছে। তিনি বলিলেন, সে এমন তওবা করেছে যে, তা যদি সত্তরজন মদীনাবাসীকে বণ্টন করে দেওয়া হত তবে তা তাহাদের জন্য পর্যাপ্ত হয়ে যেত তুমি কি এরচেয়ে উত্তম তওবা দেখেছ, যে নিজকে আল্লাহ্ তাআলার জন্য উৎসর্গ করে দিয়েছে?
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৩.পরিচ্ছেদঃ ওসিয়্যতে অন্যায়কারীর উপর জানাযার নামাজ আদায় করা
১৯৫৮. ইমরান ইবনি হুসায়ন [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন যে, এক ব্যক্তি তার মৃত্যুর সময় নিজের ছয়টি গোলাম মুক্ত করে দিয়েছিল। সেগুলো ছাড়া তার অন্য কোন সম্পত্তি ছিল না। এ সংবাদ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর কাছে পৌছলে এ কারণে তিনি রাগান্বিত হয়ে গেলেন এবং বলিলেন, আমি ইচ্ছা করেছিলাম, তার জানাযার নামাজ আদায় করব না। অতঃপর তিনি তার গোলামদের ডাকলেন এবং তিনটি ভাগ করে তাহাদের মধ্যে লটারী দিলেন এবং দুইজনকে মুক্ত করে দিয়ে বাকী চারজনকে গোলাম অবস্থায় রেখে দিলেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৪.পরিচ্ছেদঃ খিয়ানতকারীর উপর জানাযার নামাজ আদায় করা
১৯৫৯. যায়দ ইবনি খালিদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, খায়বারে এক ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, [গণীমতের মধ্যে] তোমাদের যে সাথী আল্লাহ্ তাআলার রাস্তায় খিয়ানত করেছে তার উপর তোমরা জানাযার নামাজ আদায় কর। আমরা তার মাল-সামান তল্লাশী চালিয়ে ইয়াহুদীদের মূল্যবান পাথর থেকে একটি পাথর পেলাম, যার মূল্য দুই দিরহাম সমতুল্য ছিল।
হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২৫.পরিচ্ছেদঃ ঋণগ্রস্থ ব্যক্তির উপর জানাযার নামাজ আদায় করা
১৯৬০. আবু কাতাদাহ [রহঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর কাছে একজন আনসারী ব্যক্তির মৃত দেহ আনা হল জানাযার নামাজ আদায় করার জন্য। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তোমরা নিজেরাই স্বীয় সাথীর উপর জানাযার নামাজ আদায় কর, যেহেতু সে ঋণগ্রস্ত। আবু কাতাদা [রহঃ] বলিলেন, সে ঋণ আমার উপর [সে ঋণ আদায়ের দায়িত্ব আমার] নাবী [সাঃআঃ] তা আদায় করার অঙ্গীকার চাইলেন। আদায় করার অঙ্গীকার করা হলে তিনি জানাযার নামাজ আদায় করিলেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৬১. সালামা ইবনি আকওয়া [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] এর কাছে একজনের মৃত দেহ আনা হলে সাহাবীগণ বলিলেন, হে আল্লাহ্র নাবী! আপনি এর উপর জানাযার নামাজ আদায় করুন। তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন যে, সে কি ঋণগ্রস্ত? সাহাবীগণ বলিলেন, হাঁ। তিনি পুনরায় জিজ্ঞাসা করিলেন যে, সে কি কোন সম্পত্তি রেখে গেছে? সাহাবীগণ বলিলেন না। তিনি বলিলেন, তোমরা নিজেরাই স্বীয় সাথীর উপর জানাযার নামাজ আদায় কর। একজন আনসারী সাহাবী বলিলেন, যাকে আবু কাতাদাহ [রাঃআঃ] বলা হয়, “আপনি তাহাঁর উপর জানাযার নামাজ আদায় করুন যেহেতু তার ঋণ পরিশোধ করার দায়িত্ব আমার উপর। অতঃপর রাসুলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] তাহাঁর উপর জানাযার নামাজ আদায় করিলেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৬২. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির উপর জানাযার নামাজ আদায় করিতেন না। এক ব্যক্তির মৃতদেহ আনা হলে তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন যে, এর উপর কোন ঋণ আছে? সাহাবীগণ বলিলেন, হাঁ, তার উপর দুই দীনার ঋণ রয়েছে। তিনি বলিলেন, তোমরা নিজেরাই স্বীয় সাথীর উপর জানাযার নামাজ আদায় কর। আবু কাতাদাহ [রাঃআঃ] বলিলেন, সে দিরহাম আমার উপর হে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] [উহা পরিশোধের দায়িত্ব আমার]। অতঃপর তিনি তার উপর জানাযার নামাজ আদায় করিলেন। যখন আল্লাহ্ তাআলা স্বীয় রাসূল[সাঃআঃ]-কে মক্কা বিজয় দান করিলেন, তখন তিনি বলিলেন, আমি প্রত্যেক মুমিনের নিকট তার নিজ অপেক্ষা ঘনিষ্ঠতর। যে ব্যক্তি ঋণ রেখে যায় তা পরিশোধ করার দায়িত্ব আমার। আর যে ব্যক্তি ধন-সম্পদ রেখে যায় তা তার ওয়ারিসদের।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৬৩. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
যখন কোন ঋণগ্রস্ত মুমিন ব্যক্তি মারা যেত রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জিজ্ঞাসা করিতেন, তার কি কোন ত্যাজ্য সম্পত্তি আছে? যদি সাহাবীগণ হাঁ বলিতেন, তাহলে তার উপর জানাযার নামাজ আদায় করিতেন। আর যদি তারা না বলিতেন, তাহলে তিনি বলিতেন যে, তোমরা নিজেরাই স্বীয় সাথীর উপর জানাযার নামাজ আদায় কর। যখন আল্লাহ্ তাআলা স্বীয় রাসূলকে মক্কা বিজয় দান করিলেন তখন তিনি বলিলেন, আমি মুমিনের নিকট তাহাদের নিজেদের অপেক্ষা ঘনিষ্ঠতর। যে ব্যক্তি ঋণগ্রস্ত অবস্থায় মারা যায় তার ঋণ পরিশোধ করার দায়িত্ব আমার আর যে ব্যক্তি ধন-সম্পদ রেখে যায় তা তার ওয়ারিসদের।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৬.পরিচ্ছেদঃ আত্মহত্যাকারীর উপর জানাযার নামাজ আদায় না করা
১৯৬৪. জাবির ইবনি সামুরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি আত্মহত্যা করে ফেললো তীরের ফলা দ্বারা। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তখন বলিলেন, আমি কিন্তু তার উপর জানাযার নামাজ আদায় করব না।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৬৫. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি পাহাড় থেকে পড়ে গিয়ে আত্মহত্যা করে সে ব্যক্তি দোযখের আগুনে সদা সর্বদা পাহাড় থেকে পড়তে থাকিবে। আর যে ব্যক্তি বিষ পান করে আত্মহত্যা করে সে ব্যক্তি দোযখের আগুনে সদা সর্বদা স্বীয় হস্তে বিষ পান করিতে থাকিবে। আর যে ব্যক্তি লৌহ দ্বারা আত্মহত্যা করে তার হস্তে একটি লৌহ থাকিবে যা দ্বারা দোযখের আগুনে সদা সর্বদা নিজের পেটে আঘাত করিতে থাকিবে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৭.পরিচ্ছেদঃ মুনাফিকদের উপর জানাযার নামাজ আদায় করা
১৯৬৬. উমর ইবনি খাত্তাব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, যখন আব্দুল্লাহ ইবনি উবাইর মৃত্যু হল রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে তার উপর জানাযার নামাজ আদায় করার জন্য ডাকা হল। যখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যাওয়ার জন্য দাঁড়ালেন তখন আমি তাহাঁর দিকে দ্রুত গিয়ে বললামঃ ইয়া রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আপনি ইবনি উবাইর উপর জানাযার নামাজ আদায় করবেন? অথচ সে অমুক, অমুক দিন এরূপ বলেছিল। আমি গুণে গুণে বললাম, তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মুচকি হাসলেন এবং বলিলেন, হে উমর [রাঃআঃ] আমা হইতে সরে যাও, আমি যখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর উপর পীড়াপীড়ি করিতে লাগলাম তখন তিনি বলিলেন, আমাকে এখতিয়ার দেওয়া হলে আমি ইস্তিগফারকেই গ্রহণ করেছি। যদি আমি জানতাম যে, আমি সত্তর বারের বেশি ক্ষমা চাইলে তাকে ক্ষমা করা হইবে তাহলে আমি সত্তরবারের বেশীই ক্ষমা চাইতাম। অতঃপর তিনি তার উপর জানাযার নামাজ আদায় করিলেন, তারপর ফিরে গেলেন। কিছুক্ষণ পরেই সূরা বারাআতের দুইটি আয়াত অবতীর্ণ হল,
وّلاَ تُصَلِّ عَلى اَحَدٍ مِّنهُم مَّا تَ ابَداً وَّ لاَ تَقُم علَيَّ قَبرِهِ اِنَّهُم كَفَرُوا باِالَّهِ ورَسُو لِهِ و ماَ تُوا أُهُوَ فَسِقُونّ
“তাহাদের কেহ মারা গেলে আপনি কখনো তার উপর জানাযার নামাজ আদায় করবেন না এবং তার কবরের পাশেও দাঁড়াবেন না। তারা আল্লাহ্ তাআলার এবং তদীয় রাসূলের নাফরমানী করেছে এবং তারা নাফরমান অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছে। আমি পরে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে আমার সেদিনের সাহসিকতায় আশ্চর্যান্বিত হয়ে গিয়েছিলাম। আল্লাহ ও তাহাঁর রাসূলই অধিক জ্ঞাত।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৮.পরিচ্ছেদঃ মসজিদে জানাযার নামাজ আদায় করা
১৯৬৭. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সুহায়ল ইবনি বায়দা [রাঃআঃ]-এর উপর মসজিদেই জানাযার নামাজ আদায় করেছিলেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৬৮. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সুহাইল ইবনি বায়দা [রাঃআঃ]-এর উপর মসজিদের অভ্যন্তরেই জানাযার নামাজ আদায় করেছিলেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৯.পরিচ্ছেদঃ রাত্রে জানাযার নামাজ আদায় করা
১৯৬৯. আবু উমামা সাহ্ল ইবনি হুনায়ফ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ একজন গ্রাম্য দরিদ্র মহিলা রোগাক্রান্ত হলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সাহাবাদের তার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করিতেন এবং বলিতেন যে, সে যদি মৃত্যুবরণ করে তাহলে তার উপর আমার জানাযার নামাজ আদায় করা ব্যতীত তাকে কবরস্থ করিবে না। কিছুদিন পর তার মৃত্যু হলে সাহাবীগণ তাকে নিয়ে ইশার পর মদীনায় আসলেন। এসে তাঁরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে নিদ্রিতাবস্থায় পেয়ে জাগানো অপছন্দনীয় মনে করে তার উপর জানাযার নামাজ আদায় করে বকীয় গরকদ নামক কবরস্থানে তাকে কবরস্থ করে ফেললেন। যখন সকাল হল এবং সাহাবীগণ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে আসলেন, তখন তিনি তাহাদের উক্ত মহিলা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেলন। তারা বলিলেন, ইয়া রসূলুল্লাহ ! আমরা তো তাকে কবরস্থ করে ফেলেছি। আমরা আপনার কাছে এসেছিলাম কিন্তু আপনাকে নিদ্রিত অবস্থায় পেয়ে জাগানো অশোভনীয় মনে করেছিলাম। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তোমরা সকলে চলো। অতঃপর তিনি পদব্রজে চলতে শুরু করিলেন। সাহাবীগণও তাহাঁর সাথে চলতে শুরু করিলেন। কবরস্থানে এসে তাঁরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে তার কবর দেখালেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] দাঁড়িয়ে গেলেন, সাহাবীগণও তাহাঁর পিছনে কাতারবন্দী হয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মহিলাটির উপর জানাযার নামাজ আদায় করিলেন ও চারটি তাকবীর বলিলেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩০.পরিচ্ছেদঃ জানাযার নামাজে কাতারবন্দী হয়ে দাঁড়ানো
১৯৭০. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছিলেনঃ তোমাদের ভাই নাজাশী মৃত্যুবরণ করিয়াছেন, তোমরা দাঁড়াও এবং তাহাঁর উপর জানাযার নামাজ আদায় কর। তিনি নিজে দাঁড়ালেন এবং আমাদের কাতারবন্দী করালেন যেভাবে আমরা জানাযার নামাজে কাতারবন্দী হয়ে দাঁড়াই। অতঃপর তিনি তাহাঁর উপর জানাযার নামাজ আদায় করিলেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৭১. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
যে, নাজাশী যে দিন মৃত্যুবরণ করেছিলেন সেদিন নাবী [সাঃআঃ] সাহাবীগণকে তাহাঁর মৃত্যু সংবাদ জানিয়ে দিয়েছিলেন। অতঃপর ঈদগাহে তাঁদের নিয়ে কাতারবন্দী হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন এবং তাহাঁর উপর জানাযার নামাজ আদায় করেছিলেন ও চারটি তাকবীর বলেছিলেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৭২. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মদীনাতে স্বীয় সাহাবীদের নাজাশীর মৃত্যু সংবাদ দিলেন। সাহাবীগণ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর পেছনে কাতার বন্দী হয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন এবং তিনি তাহাঁর উপর জানাযার নামাজ আদায় করিলেন ও চারটি তাকবীর বলিলেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৭৩. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমাদের ভাই মৃত্যুবরণ করিয়াছেন। অতএব তোমরা দাঁড়াও এবং তাহাঁর উপর জানাযার নামাজ আদায় কর। [জানাযার নামাজে] আমরা দুইটি কাতার বেঁধে দাঁড়িয়েছিলাম।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৭৪. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, যে দিন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নাজাশীর উপর জানাযার নামাজ আদায় করেছিলেন সেদিন আমি দ্বিতীয় কাতারে ছিলাম।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৭৫. ইমরান ইবনি হুসায়ন [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের বলিলেন যে, তোমাদের ভাই নাজাশী মৃত্যুবরণ করিয়াছেন। অতএব তোমরা দাঁড়াও এবং তাহাঁর উপর জানাযার নামাজ আদায় কর। রাবী বলেন, অতঃপর আমরা দাঁড়িয়ে গেলাম এবং কাতারবন্দী হয়ে গেলাম, যে রকম মৃতের সামনে কাতারবন্দী হয়ে দাঁড়ানো হয় এবং তার উপর জানাযার নামাজ আদায় করলাম, যে রকম মৃতের সামনে আদায় করা হয়।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩১.পরিচ্ছেদঃ জানাযার নামাজ দাঁড়িয়ে আদায় করা
১৯৭৬. সামুরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে উম্মে কাব-এর জানাযার নামাজ আদায় করেছিলাম যিনি নিফাস অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছিলেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জানাযার নামাজে তাহাঁর ঠিক মাঝখানে বরাবর দাঁড়িয়েছিলেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩২.পরিচ্ছেদঃ মহিলা ও শিশুর জানযার নামাজ একত্রিত করা
১৯৭৭. আম্মার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, একবার শিশু ও মহিলার জানাযা একত্রিত হলে শিশুর জানাযা লোকজনের সম্মুখভাবে রাখা হল এবং মহিলার জানাযা শিশুটির পেছনে রাখা হল আর এবং তাহাদের উভয়ের উপরে জানাযার নামাজ আদায় করা হল। উপস্থিত লোকজনের মধ্যে আবু সাঈদ খুদ্রি, ইবনি আব্বাস, আবু কাতাদা এবং আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] প্রমুখ ছিলেন। এ সম্পর্কে তাঁদের জিজ্ঞাসা করা হলে তাঁরা বলিলেন যে, এটাই সুন্নাত।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৩.পরিচ্ছেদঃ পুরুষ এবং মহিলার জানাযার নামাজ একত্রিত করা
১৯৭৮. ইবনি জুরাইজ হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমি নাফেকে বলিতে শুনিয়াছি, তাহাঁর ধারণামতে ইবনি উমর [রাঃআঃ] একত্রে নয়জনের জানাযার নামাজ আদায় করেছিলেন, পুরুষদের জানযা ইমামের সম্মুখে আর মহিলাদের জানাযা কিবলার দিকে রেখেছিলেন, সমস্ত জানাযা এক কাতারে রাখা হয়েছিল। উম্মে কুলছুম বিন্ত আলী, উমর ইবনি খাত্তাব [রাঃআঃ]-এর স্ত্রী এবং তার এক ছেলে যাকে যায়দ বলা হত তাহাদের জানাযা একত্রে রাখা হয়েছিল। সে দিন ঈমাম ছিলেন সাঈদ ইবনি আস [রাঃআঃ] আর উপস্থিত লোকদের মধ্যে ছিলেন ইবনি উমর, আবু হুরাইরা, আবু সাঈদ এবং আবু কাতাদা [রাঃআঃ] প্রমুখ। ইমামের সম্মুখে পুরুষদের রাখা হয়েছিল। রাবী বলেন, এক ব্যক্তি বলিল, [পুরুষদের জানাযা ইমামের সম্মুখে রাখা] আমি বিশ্বাস করিতে পারলাম না। রাবী বলেন যে, আমি ইবনি আব্বাস আবু হুরাইরা, আবু সাঈদ এবং আবু কাতাদা [রাঃআঃ]-এর দিকে তাকালাম এবং বললাম, এ ব্যাপারে আপনাদের অভিমত কি? তাঁরা বলিলেন, এটাই সুন্নাত।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৭৯. সামুরা ইবনি জুন্দুব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] অমুকের মাতার উপর জানাযার নামাজ আদায় করেছিলেন যিনি নিফাসের অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছিলেন, তাহাঁর জানাযার ঠিক মাঝখানে তিনি দাঁড়িয়েছিলেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৪.পরিচ্ছেদঃ জানাযায় তাকবীরের সংখ্যা
১৯৮০. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সাহাবীদের নাজাশীর মৃত্যু সংবাদ দিলেন এবং তাঁদের নিয়ে বের হয়ে কাতারবন্দী হয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন এবং চারটি তাকবীর বলিলেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৮১. আবু উমামা ইবনি সাহ্ল [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, একজন গ্রাম্য মহিলা রোগাক্রান্ত হয়ে গেল। যেহেতু রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর অত্যাধিক পছন্দনীয় কাজ ছিল রোগীর শুশ্রুষা করা, তাই তিনি বলিলেন, এই মহিলা যখন মৃত্যুবরণ করিবে আমাকে সংবাদ দেবে। সে মহিলা রাত্রে মৃত্যুবরণ করিল এবং সাহাবীগণ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে অবগত না করেই তাকে কবরস্থ করিলেন। যখন সকাল হল রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করিলেন। সাহাবীগণ বলিলেন, আমরা আপনাকে ঘুম হইতে জাগানো অশোভনীয় মনে করেছিলাম হে আল্লাহর রাসূল [সাঃআঃ]! অতঃপর তিনি তার কবরের নিকট আসলেন এবং তার জানাযার নামাজ আদায় করিলেন ও চারটি তাকবীর বলিলেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৮২. ইবনি আবী লায়লা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
যে, যায়দ ইবনি আরকাম [রাঃআঃ] একবার জানাযার নামাজ আদায় কালে পাঁচটি তাকবীর বলিলেন। এবং বলিলেন যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এরকমই তাকবীর বলেছিলেন।{১}
{১} ইসলামের প্রথম যুগে তাকবীরের সংখ্যায় মতভেদ ছিল, পরবর্তীতে সর্বসম্মতিক্রমে চার তাকবীর নির্ধারিত হয়েছে।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৫.পরিচ্ছেদঃ দোয়া
১৯৮৩. আউফ ইবনি মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে একবার জানাযার নামাজে বলিতে শুনিয়াছি
اَلَّهُمَّ ا غفِرلَهُ وَارحَمهُ وَاعفُ عَنهُ وَعَافِهِ وَاَكرِم نُزُ لَهُ وَوَسِّعَ مُدخَلَهُ وَاغسِلهُ بِمآَ ءِ وتَّلجٍ وَّبَرَ دٍ وَّ نَقِّهِ مِنَ ا لخَطاَ ياَ كَمَآ يُنّقِّي التَّو بُ ا لاَبيَضُ مِنَ الدَّنَسِ واَبدِلهُ دَا راً خَيراً مِّنّ اهَلِهِ و زَو جاً خَيراً مِّنّ زَوجِهِ و قِهِ عَذَا بَ القَبرِ و عَذابَ النَّاار
Uccharon: আল্লাহুম্মাগ ফির লাহু ওয়ার হামহু ওয়াফু আনহু ওয়া আফিহি ওয়া আকরিম নুজুলাহু ওয়া ওয়াশ সিয়া মুদখালাহু ওউয়াগসিলহু বিমায়ে ওয়াত তাজিও ওয়া বারাদিও অয়া নাক্কিহি মিনাল খতাইয়া কামা ইউঙ্কিত তাওবুল আবইয়াদু মিনাদ দানাস ওয়া আব্দিলহু দারান খয়রান মিন আহলিহি ওয়াজান খায়রান মিন জাওবিহি ওয়া কিহি আজাবাল কাবরি ওয়া আজাবান নার
আউফ [রাঃআঃ] বলেন, আমি আকাংক্ষা করেছিলাম যে, যদি সেই মৃত ব্যক্তিটি আমি হতাম যেই মৃত ব্যক্তির জন্য রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] দোয়া করেছিলেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৮৪. আউফ ইবনি মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে জানাযার নামাজ আদায় করার সময় দোয়া পড়তে শুনিয়াছি। তিনি দোয়াতে বলছিলেন-
اللَّهُمَّ ا غفِرلَهُ وَارحَمهُ وَاعفُ عَنهُ وَعَافِهِ وَاَكرِم نُزُ لَهُ وَوَسِّعَ مُدخَلَهُ وَاغسِلهُ بِمآَ ءِ وتَّلجٍ وَّبَرَ دٍ وَّ نَقِّهِ مِنَ ا لخَطاَ ياَ كَمَآ يُنّقِّي التَّو بُ ا لاَبيَضُ مِنَ الدَّنَسِ واَبدِلهُ دَا راً خَيراً مِّنّ اهَلِهِ و زَو جاً خَيراً مِّنّ زَوجِهِ و قِهِ عَذَا بَ القَبرِ و عَذابَ النَّاار
Uccharon: আল্লাহুম্মাগ ফির লাহু ওয়ার হামহু ওয়াফু আনহু ওয়া আফিহি ওয়া আকরিম নুজুলাহু ওয়া ওয়াশ সিয়া মুদখালাহু ওউয়াগসিলহু বিমায়ে ওয়াত তাজিও ওয়া বারাদিও অয়া নাক্কিহি মিনাল খতাইয়া কামা ইউঙ্কিত তাওবুল আবইয়াদু মিনাদ দানাস ওয়া আব্দিলহু দারান খয়রান মিন আহলিহি ওয়াজান খায়রান মিন জাওবিহি ওয়া কিহি আজাবাল কাবরি ওয়া আজাবান নার
রাবী বলেন, অথবা তিনি বলেছিলেন
اَعِذهُ مِن ا عَذَ ا ب القَبرِ
আয়িদহু মিন আজাবাল কাবর
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৮৫. উবায়দ ইবনি খালিদ সুলামী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] দুই ব্যক্তির মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন স্থাপন করে দিয়েছিলেন। তাহাদের একজন নিহত হল। অন্যজন পরে স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করলে আমরা তার জানাযার নামাজ আদায় করলাম। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন, তোমরা কি পড়েছিলে? সাহাবীগণ বলিলেন, আমরা তার জন্য দোয়া করেছিলাম
اللَّهُمَّ اغفِر لَهُ اللَّهُمَّ ا رحَمهُ اللَّهُمَّ اَلحِقهُ بِصَا حِبِهِ
আল্লাহুম্মাগ ফির লাহু আল্লাহুম্মার হামহু আল্লাহুম্মা আহিকহু বিসা হিবিহি
তখন নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন, নিহত ব্যক্তির নামাজের উপর মৃত ব্যক্তির মর্যাদা কোথায়? এবং নিহত ব্যক্তির কৃতকর্মের উপর মৃত ব্যক্তির কৃতকর্মের মর্যাদা কোথায়? এতদুভয়ের ব্যবধান তো আসমান এবং যমীনের মধ্যকার ব্যবধানের ন্যায়।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৮৬. আবু ইবরাহীম আনসারী [রাঃআঃ]-এর পিতা হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ]-কে মৃতের জানাযায় বলিতে শুনেছেনঃ
اللَّهُمَّ اغفِر لِحَيِّناَ ومَيِّتِنَا وَشاَ هِدِناَ وَغَآ إِبِناَ وَذَ كَرِ ناَ وَاُنثاَناَ وَصَغِيرِناَ وَكَبِيِرِناَ
আল্লা-হুম্মাগফির লিহায়্যিনা ওয়া মায়্যিতিনা ওয়া শা-হিদিনা ওয়া গা-য়িবিনা ওয়া যাকারিনা ওয়া উনসা-না ওয়া সাগিরিনা ওয়া কাবীরিনা
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৮৭. তালহা ইবনি আব্দুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমি ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ]-এর পেছনে জানাযার নামাজ আদায় করেছিলাম। তাতে তিনি সূরা ফাতিহা এবং অন্য একটি সূরা তিলাওয়াত করেছিলেন এবং এতটুকু উচ্চ স্বরে তিলাওয়াত করেছিলেন যে, আমরা তা শুনতে পেয়েছিলাম। যখন তিনি অবসর হলেন আমি তাহাঁর হস্ত ধারণ পূর্বক জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলিলেন, এটা সুন্নাত এবং সঠিক।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৮৮. তালহা ইবনি আব্দুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমি ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ]-এর পেছনে জানাযার নামাজ আদায় করেছিলাম। আমি তাঁকে সূরা ফাতিহা তিলাওয়াত শুনতে পেলাম। যখন তিনি অবসর হলেন আমি তাহাঁর হস্ত ধারণ পূর্বক জিজ্ঞাসা করলামঃ আপনি জানাযার নামাজে সূরা ফাতিহা তিলাওয়াত করিয়াছেন? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ! এটা তো সুন্নাত এবং সঠিক।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৮৯. আবু উমামা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, জানাযার নামাজে সুন্নাত হল প্রথম তাকবীর চুপে চুপে সূরা ফাতিহা তিলাওয়াত করিবে। অতঃপর আরো তিনটি তাকবীর বলবে; শেষ তাকবীরে সালাম ফিরাবে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৯০. কুতায়বা [রহঃ] হইতে বর্ণীত
যাহ্হাক ইবনি কায়স দিমাশকী [রহঃ] থেকেও অনুরূপ বর্ণিত।
হাদিসের তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
৩৬.পরিচ্ছেদঃ যে মৃত ব্যক্তির উপর একশত জন ব্যক্তি জানাযার নামাজ আদায় করে তার ফযীলত
১৯৯১. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এমন কোন মৃত ব্যক্তি নেই যার উপর এমন একদল মুসলমান জানাযার নামাজ আদায় করে যাদের সংখ্যা একশত পৌছে যায় এবং যারা তার সম্পর্কে করে তাহাদের সুপারিশ গ্রহণ করা হইবে না। হাদিসের অন্যতম রাবী সাল্লাম ইবনি আবু মূতী বলেন, পরবর্তীতে আমি এই হাদিস শুআয়ব ইবনি হাবহাব-এর নিকট বর্ণনা করলে তিনি বললেনঃ আনাস ইবনি মালিক [রাঃআঃ] নাবী [সাঃআঃ] সূত্রে আমার কাছে এই হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৯২. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মুসলমানদের মধ্যে এমন কোন মৃত ব্যক্তি নেই যার উপর এমন একদল মানুষ জানাযার নামাজ আদায় করে যাদের সংখ্যা একশতে পৌঁছে যায় আর যারা তার সম্পর্কে সুপারিশ করে তাহাদের সুপারিশ গ্রহণ করা হইবে না।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৯৩. আবু বাক্কার হাকাম ইবনি ফাররুখ [রহঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমাদের নিয়ে আবুল মালীহ [রহঃ] এক মৃত ব্যক্তির জানাযার নামাজ আদায় করছিলেন। আমরা ধারণা করলাম যে তিনি হয়ত তাকবীর বলে ফেলেছেন। ইত্যবসরে তিনি আমাদের দিকে মুখ ফিরিয়ে বলিলেন, তোমরা কাতারবন্দী হয়ে দাড়িয়ে যাও এবং উত্তমরুপে সুপারিশ কর।
আবুল মালিহ [রহঃ] বলেন যে, আমার কাছে আব্দুল্লাহ ইবনি সালীত [রহঃ] নাবী [সাঃআঃ] এর সহধর্মিণী উম্মুল মুমিনিন মায়মুনা [রাঃআঃ] থেকে আমার কাছে বর্ণনা করিয়াছেন যে, তিনি বলেছেনঃ আমাকে নাবী [সাঃআঃ] অবহিত করিয়াছেন যে, এমন কোন মৃত ব্যক্তি নাই যার ওপর একদল মানুষ জানাযার নামাজ আদায় করে, তার ব্যাপারে তাহাদের সুপারিশ গ্রহন করা হয় না। রাবী বলেন, আমি আবুল মালিহ কে দলে লোকের সংখ্যা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলিলেন, চল্লিশজন।
হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
৩৭.পরিচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি কোন মৃত ব্যক্তির ওপর জানাযা নামাজ আদায় করে তার সওয়াব
১৯৯৪. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন মৃত ব্যক্তির ওপর জানাযার নামাজ আদায় করে তার জন্য এক কীরাত সওয়াব। আর যে ব্যক্তি লাশ কবরস্থ করা পর্যন্ত অপেক্ষা করে তার জন্য দুই কীরাত সওয়াব, দুই কীরাত সওয়াব এর পরিমাণ হল দুইটি বিরাট কীরাত পাহাড়ের সমপরিমাণ।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৯৫. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন মৃত ব্যক্তির জানাযায় উপস্থিত হয়ে তার জানাযার নামাজ আদায় করে তার জন্য এক কীরত সওয়াব। আর যে ব্যক্তি কোন মৃত ব্যক্তির জানাযায় শরীক হয়ে লাশ দাফন করা পর্যন্ত থাকে তার জন্য দুই কীরাত সওয়াব। প্রশ্ন করা হলঃ ইয়া রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]! দুই কীরাতের পরিমাণ কতটুকু? তিনি বলিলেন, দুইটি বিরাট পাহাড়ের সমতুল্য।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৯৬. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন যে, যে ব্যক্তি পুণ্যের আশায় কোন মুসলিম ব্যক্তির জানাযায় অনুগমন করে এবং তার জানাযার নামাজ আদায় করে এবং তাকে কবরস্থ করে তার জন্য দুই কীরাত সওয়াব রয়েছে। আর যে ব্যক্তি তার জানাযার নামাজ আদায় করে অতঃপর ফিরে যায় কবরস্থ করার পূর্বেই সে ব্যক্তি এক কীরাত সওয়াব নিয়ে ফিরে যায়।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯৯৭. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন মৃত ব্যক্তির অনুগমন করে এবং তার জানাযার নামাজ আদায় করে ফিরে যায় তার জন্য রয়েছে এক কীরাত সওয়াব। আর যে ব্যক্তি তার অনুগমন করে এবং তার জানাযার নামাজ আদায় করে অতঃপর অপেক্ষমাণ থাকে তাকে কবরস্থ করা পর্যন্ত তার জন্য রয়েছে দুই কীরাত সওয়াব। প্রত্যেক কীরাত সওয়াব উহুদ পাহাড়ের চেয়েও বৃহৎ।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৮.পরিচ্ছেদঃ জানাযা রাখার পূর্বে বসে পড়া
১৯৯৮. আবু সাঈদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যখন তোমরা কোন জানাযা দেখবে দাঁড়িয়ে যাবে। আর যে ব্যক্তি তার অনুগমন করিবে সে জানাযা না রাখা পর্যন্ত বসবে না।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯.পরিচ্ছেদঃ জানাযার জন্য দাঁড়ানো
১৯৯৯. আলী ইবনি আবু তালিব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তাহাঁর কাছে জানাযা না রাখা পর্যন্ত তাহাঁর জন্য দাঁড়ানোর ব্যপারে উল্লেখ করলে তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] দাঁড়িয়েছিলেন, অতঃপর বসে গিয়েছিলেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২০০০. আলী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে দেখলাম তিনি দাঁড়ালেন আমরাও দাঁড়ালাম আমরা তাকে দেখলাম যে, তিনি বসে গেলেন আমরাও বসে গেলাম।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২০০১. বারা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে একটি জানাযায় বের হলাম, যখন কবরস্থান পর্যন্ত পৌঁছলাম তখনও দাফন শেষ হয়নি। তিনি বসে গেলেন তো আমরাও তাহাঁর পাশে বসে গেলাম, যেন আমাদের মাথার উপর পাখি রয়েছিল।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০.পরিচ্ছেদঃ শহীদকে স্বীয় রক্তসহ দাফন করা
২০০২. আব্দুল্লাহ ইবনি ছালাবা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উহুদের শহীদদের সম্পর্কে বলেছিলেন, তাহাদেরকে স্বীয় রক্তসহ ঢেকে দাও। কেননা যে কোন ক্ষত যা আল্লাহ্র রাস্তায় হয় কিয়ামতের দিন সেখান থেকে রক্ত প্রবাহিত হইবে রং হইবে রক্তের কিন্তু তাহাঁর সুগন্ধি হইবে মিশ্কের সুগন্ধির ন্যায়।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২০০৩. উবায়দুল্লাহ ইবনি মুআইয়া [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
এক ব্যক্তি থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তায়েফের দিন দুইজন মুসলমান আঘাতপ্রাপ্ত হলে তাহাদের রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর কাছে নিয়ে আসা হল। তিনি তাহাদের সেই আঘাতের ক্ষত অবস্থায় দাফন করার নির্দেশ দিলেন। ইবনি মুআইয়া [রাঃআঃ] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর যুগেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২০০৪. জাবির ইবনি আব্দুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উহুদের শহীদদের ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, তাহাদের যেন স্বীয় শাহাদাতের স্থানে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। তাহাদের মদিনায় নিয়ে আসা হয়েছিল।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২০০৫. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমরা শহীদদের তাহাদের নিজ নিজ শাহাদাতের স্থানেই দাফন কর।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪১.পরিচ্ছেদঃ মুশরিকদের দাফন করা
২০০৬. আলী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ]-কে বললাম, আপনার বৃদ্ধ পথভ্রষ্ট চাচা মৃত্যুবরণ করিয়াছেন, এখন তাকে কে দাফন করিবে? তিনি বলিলেন, তুমি গিয়ে তোমার পিতাকে ঢেকে রাখো এবং তুমি আমার কাছে না আসা পর্যন্ত অন্য কিছু করিবে না। অতঃপর আমি তাকে ঢেকে দিলাম। এরপর তাহাঁর কাছে আসলাম। তিনি আমাকে নির্দেশ দেওয়ায় আমি গোসল করলাম এবং তিনি আমার জন্য দোয়া করিলেন। রাবী বলেন, আলী [রাঃআঃ] কিছু দোয়া উল্লেখ করেছিলেন যা আমি স্মরণ রাখতে পারিনি।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
Leave a Reply