ভাল মৃত্যুর আলামত , দোয়া, মৃত্যু যন্ত্রণা ও অধিক স্মরণ করা

ভাল মৃত্যুর আলামত , দোয়া, মৃত্যু যন্ত্রণা ও অধিক স্মরণ করা

ভাল মৃত্যুর আলামত , দোয়া, মৃত্যু যন্ত্রণা ও অধিক স্মরণ করা >> সুনানে নাসাই শরিফের মুল সুচিপত্র দেখুন

পর্বঃ ২১ঃ জানাযা, হাদীস (১৮১৮ – ১৮৩৮)

১.পরিচ্ছেদঃ মৃত্যু কামনা করা
২.পরিচ্ছেদঃ মৃত্যুর দোয়া
৩.পরিচ্ছেদঃ মৃত্যুকে অধিক স্মরণ করা।
৪.পরিচ্ছেদঃ মৃত্যুমুখী ব্যক্তিকে স্মরণ করিয়ে দেয়া।
৫.পরিচ্ছেদঃ মৃত্যুমুখী মুমিন ব্যক্তির লক্ষণ
৬.পরিচ্ছেদঃ মৃত্যু যন্ত্রণা
৭.পরিচ্ছেদঃ সোমবারের মৃত্যু
৭.পরিচ্ছেদঃ নিজ জন্মস্থান ছাড়া অন্যত্র মৃত্যুবরণ করা
৯.পরিচ্ছেদঃ মুমিন ব্যক্তি স্বীয় প্রাণ বহির্গত হওয়ার সময় যে সব অত্যাশ্চর্য দৃশ্য অবলোকন করে থাকে।
১০.পরিচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার সাথে সাক্ষাৎ পছন্দ করে

১.পরিচ্ছেদঃ মৃত্যু কামনা করা

১৮১৮. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমাদের কেউ কখনো মৃত্যু কামনা করিবে না। কেননা সে যদি নেককার হয় তাহলে হয়ত তার নেকী আরো বৃদ্ধি পাবে। আর যদি সে বদকার হয় তাহলে সে তাওবার দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করিতে পারবে।

জানাযা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৮১৯. আবু উবায়দ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছেন যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমাদের কেউ কখনো মৃত্যু কামনা করিবে না। কেননা সে যদি নেককার হয় তাহলে হয়ত সে জীবিত থেকে আরো নেকী বৃদ্ধি করিতে পারবে, যা তার জন্য মঙ্গলজনক হইবে। আর যদি সে বদকার হয় তাহলে হয়তো সে তাওবার দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করিতে পারবে।

জানাযা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৮২০. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমাদের কেউ যেন কখনো পার্থিব বালা-মুসীবতে নিপতিত হওয়ার কারণে মৃত্যু কামনা না করে, বরং সে যেন বলে

اللَّهُمَّ أَحْيِنِي مَا كَانَتِ الْحَيَاةُ خَيْرًا لِي، وَتَوَفَّنِي إِذَا كَانَتِ الْوَفَاةُ خَيْرًا لِي 

আল্লাহুম্মা আহইয়ানি মা কানাতিল হায়াতু খইরান লি ওয়া তাওয়াক্কানি ইজা কনাতিল ওয়া ফাতু খয়রান লি

[“হে আল্লাহ! যতদিন আমার জীবিত থাকা মঙ্গলজনক হয়, ততদিন পর্যন্ত আপনি আমাকে জীবিত রাখুন, আর যখন আমার মৃত্যু মঙ্গলজনক হয় তখন আপনি আমাকে মৃত্যু দিন।”]

জানাযা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৮২১. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, সাবধান! তোমাদের কেউ যেন কখনো পার্থিব বালা-মুসীবতের সম্মুখীন হয়ে মৃত্যু কামনা না করে। একান্ত যদি মৃত্যু কামনা করিতেই হয় তাহলে যেন বলে

اللَّهُمَّ أَحْيِنِي مَا كَانَتِ الْحَيَاةُ خَيْرًا لِي، وَتَوَفَّنِي مَا كَانَتِ الْوَفَاةُ خَيْرًا لِي 

আল্লাহুম্মা আহইয়ানি মা কানাতিল হায়াতু খইরান লি ওয়া তাওয়াক্কানি মা কনাতিল ওয়া ফাতু খয়রান লি

[“হে আল্লাহ, আমার জীবিত থাকা যতদিন পর্যন্ত মঙ্গলজনক হয় ততদিন পর্যন্ত আপনি আমাকে জীবিত রাখুন, আর যখন আমার মৃত্যু মঙ্গলজনক হয়, তখন আপনি আমাকে মৃত্যু দিন।”]

জানাযা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২.পরিচ্ছেদঃ মৃত্যুর দোয়া

১৮২২. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমরা মৃত্যুর দোয়া করিবে না এবং তার কামনাও করিবে না। একান্ত কাউকে যদি দোয়া করিতেই হয় তাহলে সে যেন বলে,

اللَّهُمَّ أَحْيِنِي مَا كَانَتِ الْحَيَاةُ خَيْرًا لِي، وَتَوَفَّنِي إِذَا كَانَتِ الْوَفَاةُ خَيْرًا لِي 

আল্লাহুম্মা আহইয়ানি মা কানাতিল হায়াতু খইরান লি ওয়া তাওয়াক্কানি ইজা কনাতিল ওয়া ফাতু খয়রান লি

[“হে আল্লাহ! আমার জীবিত থাকা যতদিন পর্যন্ত মঙ্গলজনক হয় ততদিন পর্যন্ত আপনি আমাকে জীবিত রাখুন, আর যখন আমার মৃত্যু মঙ্গলজনক হয় তখন আমাকে মৃত্যু দিন।”]

জানাযা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৮২৩. কায়স [রহঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমি খাব্বাব [রাঃআঃ] এর কাছে উপস্থিত হলাম, তখন তাহাঁর পেটের সাত জায়গায় ক্ষত ছিল। তিনি বলেন, যদি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের মৃত্যুর দোয়া করিতে বারণ না করিতেন, তাহলে আমি মৃত্যুর দোয়া করতাম।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩.পরিচ্ছেদঃ মৃত্যুকে অধিক স্মরণ করা।

১৮২৪. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমরা মৃত্যুকে অধিক স্মরণ কর।

জানাযা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ

১৮২৫. উম্মে সালামা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি যে, তোমরা যখন মৃত্যুমুখী মানুষের কাছে যাও তখন তার ভাল কর্মসমূহের আলোচনা করিতে থাকো। কেননা ফেরেশতারা তোমাদের বলার উপর আমীন বলে থাকেন। যখন আবু সালামা [রাঃআঃ]-এর ইন্তিকাল হল, আমি বললাম, ইয়া রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]! আমি তাহাঁর সম্পর্কে কি রকম বাক্য ব্যবহার করব। তিনি বলিলেন, তুমি বলবেঃ

.اللَّهُمَّ اغْفِرْ لَنَا وَلَهُ، وَأَعْقِبْنِي مِنْهُ عُقْبَى حَسَنَةً

আল্লাহুম্মা গফিরলানা ওয়া লাহু ওয়া কিবনি মিনহু উকবা হাসানাতান

[“হে আল্লাহ, আপনি আমাদের এবং তাকে ক্ষমা করে দিন, এবং আপনি আমাকে তাহাঁর পরিবর্তে ভাল প্রতিদান দিন।”]। তাই, আল্লাহ তাআলা আমাকে তাহাঁর পরিবর্তে রাসূলূল্লাহ [সাঃআঃ]-কে প্রতিদান স্বরুপ দিয়েছেন।

জানাযা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৪.পরিচ্ছেদঃ মৃত্যুমুখী ব্যক্তিকে স্মরণ করিয়ে দেয়া।

১৮২৬. আবু সাঈদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমরা নিজেদের মৃত্যুমুখী ব্যক্তিদের

لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ

লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু

…স্মরণ করিয়ে দাও।

জানাযা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৮২৭. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমরা নিজেদের মৃত্যুমুখী ব্যক্তিদের

لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ

লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু

স্মরণ করিয়ে দাও।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৫.পরিচ্ছেদঃ মৃত্যুমুখী মুমিন ব্যক্তির লক্ষণ

১৮২৮. আব্দুল্লাহর পিতা বুরায়দা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি, মুমিন ব্যক্তি ঘর্মাক্ত ললাটের সাথে মৃত্যুবরণ করে থাকে। [মৃত্যুর সময় ললাট ঘর্মাক্ত হওয়া মুমিনের আলামত]।

জানাযা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৮২৯. বুরায়দা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি, মুমিন ব্যক্তি ঘর্মাক্ত ললাটের সাথে মৃত্যুবরণ করে থাকে।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৬.পরিচ্ছেদঃ মৃত্যু যন্ত্রণা

১৮৩০. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর মৃত্যুকালীন সময়ে তাহাঁর মাথা আমার থুতনী এবং গলদেশের মাঝখানে ছিল। তাহাঁর মৃত্যু যন্ত্রণা দর্শনের পর আমি অন্য কারো মৃত্যু যন্ত্রণা খারাপ মনে করি না।

জানাযা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৭.পরিচ্ছেদঃ সোমবারের মৃত্যু

১৮৩১. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমার সর্বশেষ দৃষ্টিপাত যা আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর প্রতি করেছিলাম তা ছিল তাহাঁর পর্দা উঠানোর সময়। তখন সাহাবীরা আবু বকর [রাঃআঃ]-এর পেছনে কাতার বন্দী নামাজ আদায় করেছিলেন। পর্দা উঠানোর সময় আবু বকর [রাঃআঃ] পেছনে সরে আসার ইচ্ছা করলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাঁদের প্রতি ইশারা করিলেন যে, তোমরা স্থির থাক এবং পর্দা টেনে দিলেন। সে দিনের শেষ প্রহরেই তিনি ইন্তেকাল করেন। সে দিন ছিল সোমবার।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৮.পরিচ্ছেদঃ নিজ জন্মস্থান ছাড়া অন্যত্র মৃত্যুবরণ করা

১৮৩২. আমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, মদীনায় জন্ম গ্রহণকারীদের মধ্য থেকে এক ব্যক্তি তথায় মারা গেলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার জানাযা পড়ে বলিলেন, এ ব্যক্তি যদি তার জন্মস্থান ভিন্ন অন্যত্র মারা যেত! সাহাবীরা বলিলেন, কেন ইয়া রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]! তিনি বলিলেন, কোন ব্যক্তি যদি স্বীয় জন্মস্থান ভিন্ন অন্যত্র মারা যায় তাহলে তার জন্মস্থান এবং মৃত্যু স্থানের মধ্যবর্তী দূরত্বের পরিমাপ করে জান্নাতে তাকে ততটুকু স্থান দেয়া হইবে।

জানাযা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৯.পরিচ্ছেদঃ মুমিন ব্যক্তি স্বীয় প্রাণ বহির্গত হওয়ার সময় যে সব অত্যাশ্চর্য দৃশ্য অবলোকন করে থাকে।

১৮৩৩. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] বলেছেন, মুমিন ব্যক্তি যখন মৃত্যুর সম্মুখীন হয় তখন তার কাছে একদল রহমতের ফেরেশতা সাদা রেশমী কাপড় নিয়ে এসে [তার] আত্মাকে উদ্দেশ্য করে বলিতে থাকেন, “তুমি আল্লাহর তাআলার রহমত এবং সন্তুষ্টির পানে বের হয়ে আস আল্লাহ তাআলা তোমার উপর রুষ্ট নন; তুমি তাহাঁর উপর সন্তুষ্ট, তিনিও তোমার উপর সন্তুষ্ট। তখন আত্মা মেশকের সুঘ্রাণ অপেক্ষাও অধিক সুঘ্রান ছড়াতে ছড়াতে বের হয়ে আসে। যখন ফেরেশতাগণ সম্মানের খাতিরে আত্মাকে পর্যায়ক্রমে একজনের হাত থেকে অন্যজনের হাতে দিয়ে আসমানের দরজায় নিয়ে আসেন তখন তথাকার ফেরেশতাগণ বলিতে থাকেন, “এ সুগন্ধি কত না উত্তম! যা তোমরা পৃথিবী থেকে নিয়ে আসলে। আর তাঁরা তাকে মুমিনদের রুহসমূহের কাছে নিয়ে যান। তোমাদের কেউ প্রবাস থেকে আসলে তোমরা যেরূপ আনন্দিত হও, মুমিনদের রূহও ঐ নবাগত রূহকে পেয়ে ততোধিক আনন্দিত হয়। মুমিনদের রূহ নবাগত রূহকে জিজ্ঞাসা করে যে, অমুক ব্যক্তি দুনিয়াতে কি কাজ করেছে? অমুক ব্যক্তি দুনিয়াতে কি কাজ করেছে? তখন ফেরেশতারা বলেন, তার সম্পর্কে তোমরা কি জিজ্ঞাসা করিবে? সে দুনিয়ার চিন্তা-ভাবনায় ছিল। যখন নবাগত রূহ বলেঃ সে কি তোমাদের কাছে আসেনি? তখন আসমানের ফেরেশতারা বলেনঃ তাকে তার বাসস্থান হাবিয়াতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আর কাফির যখন তার মৃত্যুর সম্মুখীন হয় তখন তার কাছে আযাবের ফেরেশতারা চটের ছালা নিয়ে আগমন করে এবং আত্মাকে উদ্দেশ্য করে বলে থাকে, “তুমি আল্লাহ তাআলার আযাবের পানে বের হয়ে আস, তুমিও আল্লাহ তাআলার উপর অসন্তুষ্ট, আল্লাহ তাআলাও তোমার উপর অসুন্তষ্ট।” তখন সে মুর্দারের দুর্গন্ধ থেকেও অধিকতর দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে বের হয়ে আসে। যখন ফেরেশতারা তাকে নিয়ে দুনিয়ার আসমানের দরজায় পৌছে তখন তথাকার ফেরেশতারা বলিতে থাকেঃ এ কি দুর্গন্ধ! এরপর ফেরেশতারা তাকে কাফিরদের আত্মাসমূহের কাছে নিয়ে যায়।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১০.পরিচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার সাথে সাক্ষাৎ পছন্দ করে

১৮৩৪. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার সাথে সাক্ষাৎ পছন্দ করে আল্লাহ্‌ তাআলাও তার সাথে সাক্ষাৎ পছন্দ করেন, আর যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার সাথে সাক্ষাৎ অপছন্দ করে আল্লাহ তাআলাও তার সাথে সাক্ষাৎ অপছন্দ করেন। রাবী সুরায়হ [রহঃ] বলেন, আমি আয়িশাহ [রাঃআঃ]-এর কাছে এসে তাঁকে বললাম, হে উম্মুল মুমিনীন, আমি আবু হুরাইরা [রাঃআঃ]–কে রাসূল [সাঃআঃ] থেকে একটি হাদিস উল্লেখ করিতে শুনিয়াছি; উক্ত হাদিসের বর্ণনা যদি সঠিক হয়ে থাকে তাহলে আমরা তো নিশ্চিতরূপে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে যাব। আয়িশাহ [রাঃআঃ] জিজ্ঞাসা করিলেন, কেন? তিনি বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার সাথে সাক্ষাৎ পছন্দ করে আল্লাহ তাআলাও তার সাথে সাথে সাক্ষাৎ পছন্দ করেন, আর যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার সাথে সাক্ষাৎ অপছন্দ করে আল্লাহ তাআলাও তার সাথে সাক্ষাৎ অপছন্দ করেন।” অথচ আমাদের সবাই মৃত্যুকে অপছন্দ করে থাকে। আয়িশাহ [রাঃআঃ] বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উক্ত হাদিস ঠিকই বলেছেন, কিন্তু তার অর্থ তুমি যা বুঝেছো তা নয়, বরং যখন দৃষ্টি উধ্বমুখী হয়ে যায়, হৃদকম্পন শুরু হয়ে যায়, এবং পশমসমূহ দাঁড়িয়ে যায় [শরীর রোমান্ঞ্ছিত হয়ে ওঠে] ঐ সংকটময় মুহূর্তে যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার সাথে সাক্ষাৎ পছন্দ করে আল্লাহ্‌ তাআলাও তার সাথে সাক্ষাৎ পছন্দ করেন, আর যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌ তাআলার সাথে সাক্ষাৎ অপছন্দ করে আল্লাহ্‌ তাআলাও তার সাথে সাক্ষাৎ অপছন্দ করেন।

জানাযা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৮৩৫. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, “আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন, যখন আমার বান্দা আমার সাথে সাক্ষাৎ পছন্দ করে, আমিও তার সাথে সাক্ষাৎ পছন্দ করি। আর যখন সে আমার সাথে সাক্ষাৎ অপছন্দ করে আমিও তার সাথে সাক্ষাৎ অপছন্দ করি।”

জানাযা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৮৩৬. উবাদাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌ তাআলার সাথে সাক্ষাৎ পছন্দ করে আল্লাহ্‌ তাআলাও তার সাথে সাক্ষাৎ পছন্দ করেন, আর যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌ তাআলার সাথে সাক্ষাৎ অপছন্দ করে আল্লাহ্‌ও তার সাথে সাক্ষাৎ অপছন্দ করেন।

জানাযা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৮৩৭. উবাদাহ ইবনি সামিত [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌ তাআলার সাথে সাক্ষাৎ পছন্দ করে, আল্লাহ্‌ তাআলাও তার সাথে সাক্ষাৎ পছন্দ করেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌ তাআলার সাথে সাক্ষাতকে অপছন্দ করে আল্লাহ্‌ তাআলাও তার সাথে সাক্ষাতকে অপছন্দ করেন।

জানাযা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৮৩৮. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌ তাআলার সাথে সাক্ষাৎ পছন্দ করে আল্লাহ্‌ তাআলা ও তার সাথে সাক্ষাৎ পছন্দ করেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌ তাআলার সাথে সাক্ষাৎ অপছন্দ করে, আল্লাহ্‌ তাআলাও তার সাথে সাক্ষাৎ অপছন্দ করেন। আমর [রহঃ] তাহাঁর হাদীসে এ অংশটুকু বৃদ্ধি করিয়াছেন। বলা হল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্‌ [সাঃআঃ]! আল্লাহ্‌ তাআলার সাথে সাক্ষাৎ অপছন্দ করাতো মৃত্যুকে অপছন্দ করা অথচ আমরা সকলেই তো মৃত্যুকে অপছন্দ করে থাকি। তিনি বলিলেন, এ হল তার মৃত্যুকালীন অবস্থা, যখন তাকে আল্লাহ্‌ তাআলার মাগফিরাত এবং রহমতের সুসংবাদ দেয়া হয়, তখন সে আল্লাহ্‌র তাআলার সাথে সাক্ষৎ পছন্দ করে আর আল্লাহ তাআলাও তার সাথে সাক্ষাৎ পছন্দ করেন। আর যখন তাকে আল্লাহ্‌ তাআলার আযাবের দুঃসংবাদ দেয়া হয়, তখন সে আল্লাহ্‌ তাআলার সাথে সাক্ষাৎ অপছন্দ করে আর আল্লাহ্‌ তাআলাও তার সাথে সাক্ষাৎ অপছন্দ করেন।

জানাযা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

Comments

Leave a Reply