তাশাহুদ দরুদ ও দোয়া মাছুরা এবং এর পড় পর যিকির ও দোয়া করা
তাশাহুদ দরুদ ও দোয়া মাছুরা এবং এর পড় পর যিকির ও দোয়া করা >> সুনানে নাসাই শরিফের মুল সুচিপত্র দেখুন
পর্বঃ ১১, নামাজ আরম্ভ করা, হাদীস (১২৭৭-১৩১৫)
১.পরিচ্ছেদঃ নামাজে তাশাহহুদ ওয়াজিব হওয়া
২.পরিচ্ছেদঃ কুরআন শরীফের সূরা শিক্ষা দানের ন্যায় তাশাহহুদ শিক্ষা দান
৩.পরিচ্ছেদঃ তাশাহহুদ কিরূপ? [তাশাহহুদের বর্ণনা]
৪.পরিচ্ছেদঃ অন্য আর এক প্রকার তাশাহহুদ
৫.পরিচ্ছেদঃ আর এক প্রকার তাশাহহুদ
৬.পরিচ্ছেদঃ নাবী [সাঃআঃ]-এর উপর সালাম পাঠানো
৭.পরিচ্ছেদঃ নামাজে আল্লাহর মাহাত্ম্য বর্ণনা করা ও রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর উপর দরূদ শরীফ পাঠ করা
৮.পরিচ্ছেদঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর উপর দরূদ শরীফ পাঠ করার আদেশ
৯.পরিচ্ছেদঃ নাবী [সাঃআঃ]-এর উপর দরূদ শরীফ কিভাবে পড়তে হইবে?
১০.পরিচ্ছেদঃ আর এক প্রকার [দরূদ শরীফ]
১১.পরিচ্ছেদঃ নাবী [সাঃআঃ]-এর উপর দরূদ শরীফ পাঠের ফযীলত
১২.পরিচ্ছেদঃ নাবী [সাঃআঃ]-এর উপর দরূদ শরীফ পাঠ করার পর দোয়া নির্ধারণের ব্যাপারে স্বাধীনতা
১৩.পরিচ্ছেদঃ তাশাহহুদের পর যিকির করা
১৪.পরিচ্ছেদঃ যিকিরের পর দোয়া করা
১৫.পরিচ্ছেদঃ আর এক প্রকার দোয়া
১৬.পরিচ্ছেদঃ নামাজে তা’আউউয পড়া [বিতাড়িত শয়তান থেকে পানাহ চাওয়া]
১৭.পরিচ্ছেদঃ আর এক প্রকার [তাআউউয]
১৮.পরিচ্ছেদঃ তাশাহহুদের পর আর এক প্রকার যিকির
১৯.পরিচ্ছেদঃ নামাজ সংক্ষেপ করা
২০.পরিচ্ছেদঃ সর্বনিম্ন পর্যায়ের সংক্ষিপ্ত করণ যদ্বারা নামাজ শুদ্ধ হয়ে যায়
১.পরিচ্ছেদঃ নামাজে তাশাহহুদ ওয়াজিব হওয়া
১২৭৭. ইবনি মাসঊদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমরা তাশাহহুদ-এর বিধান অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বে নামাজে বলতামঃ আল্লাহর উপর সালাম, জিবরাঈল ও মীকাঈলের উপর সালাম। তখন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তোমরা এরূপ বলবে না। কেননা আল্লাহ তাআলাই স্বয়ং সালাম বরং তোমরা বলবেঃ
التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ، السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ، السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ، أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ
আত্তাহিয়্যাতু লিল্লা-হি ওয়াস্ সালাওয়া-তু ওয়াত্ব ত্বইয়িবা-তু, আসসালামু আলায়কা আইয়ুহান নাবিয়ু, ওয়া রহমাতুল্ল-হি ওয়া বারাকাতুহ। আসসালা-মু আলায়না- ওয়া ‘আলা- ‘ইবা-দিল্লা-হিস সলিহীন, আশহাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহূ ওয়া রসূলুহ”
(সকল প্রকার মৌখিক, দৈহিক ও আর্থিক ‘ইবাদত আল্লাহর জন্য। হে নবী! আপনার ওপর আল্লাহর সালাম, রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক। আমাদের এবং আল্লাহর নেক বান্দাদের ওপর সালাম বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন মা’বুদ নেই এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয় মুহাম্মাদ (সা.) তাঁর বান্দা ও রসূল।)
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২.পরিচ্ছেদঃ কুরআন শরীফের সূরা শিক্ষা দানের ন্যায় তাশাহহুদ শিক্ষা দান
১২৭৮. [আব্দুল্লাহ] ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের তাশাহহুদ শিক্ষা দিতেন যেরূপভাবে আমাদের কুরআনের সূরা শিক্ষা দিতেন।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩.পরিচ্ছেদঃ তাশাহহুদ কিরূপ? [তাশাহহুদের বর্ণনা]
১২৭৯. আব্দুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, আল্লাহ তাআলাই স্বয়ং সালাম। অতএব, তোমাদের কেউ যখন [নামাজ আদায়কালে] বসে তখন সে যেন বলেঃ
التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ، السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ، السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ، أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ
আত্তাহিয়্যাতু লিল্লা-হি ওয়াস সালাওয়া-তু ওয়াত্ব তুইয়িবা-তু, আসসালা-মু আলায়কা আইয়ুহান্ নাবিয়ু, ওয়া রহমাতুল্ল-হি ওয়া বারাকাতুহু। আসসালা-মু আলায়না- ওয়া আলা- ‘ইবা-দিল্লা-হিস সলিহীন, আশহাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লাল্লহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রসূলুহ”
(সকল প্রকার মৌখিক, দৈহিক ও আর্থিক ইবাদত আল্লাহর জন্য। হে নবী! আপনার ওপর আল্লাহর সালাম, রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক। আমাদের এবং আল্লাহর নেক বান্দাদের ওপর সালাম বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন মা’বুদ নেই এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয় মুহাম্মাদ (সা.) তাঁর বান্দা ও রসূল।)
এরপর দোয়া মাছুরা [কুরআন-হাদীসে বর্ণিত] দোয়া থেকে যা ইচ্ছা হয় পড়বে।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
৪.পরিচ্ছেদঃ অন্য আর এক প্রকার তাশাহহুদ
১২৮০. [আবু মূসা] আশআরী [রাঃআঃ হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের সামনে [একদিন] খুতবায় আমাদের সুন্নাত শিক্ষা দিলেন, আমাদের নামাজ সম্পর্কে বর্ণনা করিলেন। তিনি বলিলেন, তোমরা যখন নামাজে দাঁড়াবে তখন তোমাদের কাতার সোজা করে নেবে। তারপর তোমাদের একজন তোমাদের ঈমামতি করিবে। যখন সে তাকবীর বলবে, তোমরাও তাকবীর বলবে আর যখন সে ওয়ালাদদ্বাল্লীন বলবে, তোমরা তখন আমীন বলবে, আল্লাহ তোমাদের দোয়া কবুল করবেন। তারপর যখন সে তাকবীর বলে রুকূতে যাবে তখন তোমরাও তাকবীর বলে রুকূতে যাবে। কেননা, ঈমাম তোমাদের পূর্বে রুকূতে যাবে এবং তোমাদের পূর্বে রুকূ থেকে উঠবে। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন, এ [তোমাদের রুকূতে পরে যাওয়া এবং রুকূ থেকে পরে ওঠা] তার [ইমামের রুকূতে তোমাদের আগে যাওয়া ও তোমাদের আগে ওঠার] সমান হয়ে যাবে। আর যখন ঈমাম
سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ
সামি আল্ল-হু লিমান হামিদাহ
সামি আল্লাহু লিমান হামিদাহ
বলবে, তখন তোমরা
اللَّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ
আল্লাহুম্মা রাব্বানা লাকাল হামদ
বলবে। আল্লাহ তাআলা তাহাঁর নাবী [সাঃআঃ]-এর মুখ দ্বারা বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রশংসা করে আল্লাহ তাআলা তা শুনেন। তারপর যখন ঈমাম তাকবীর বলে সিজদা করিবে, তখন তোমরাও তাকবীর বলে সিজদা করিবে। কেননা, ঈমাম তোমাদের পূর্বে সিজদা করিবে এবং তোমাদের পূর্বে সিজদা থেকে ওঠবে। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, এ [তোমাদের সিজদায় ইমামের পরে যাওয়া ও পরে ওঠা] তাহাঁর [ইমামের] সিজদায় তোমাদের আগে যাওয়া ও আগে ওঠারও সমান হয়ে যাবে। আর যখন তোমরা বসবে তখন তোমাদের প্রত্যেকে বলবেঃ
الطَّيِّبَاتُ الصَّلَوَاتُ لِلَّهِ، السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ، السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ، أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ
“আত্তাহিয়্যাতু আত্ব ত্বইয়িবা-তু আস সালাওয়া-তু লিল্লা-হি আসসালা-মু আলায়কা আইয়ুহান নাবিয়ু, ওয়া রহমাতুল্ল-হি ওয়া বারাকা-তুহ। আসসালা-মু আলায়না- ওয়া আলা- ‘ইবা-দিল্লা-হিস স-লিহীন, আশহাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রসূলুহ”
(সকল প্রকার মৌখিক, দৈহিক ও আর্থিক ‘ইবাদত আল্লাহর জন্য। হে নবী! আপনার ওপর সালাম এবং আল্লাহর রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক। আমাদের এবং আল্লাহর নেক বান্দাদের ওপর সালাম বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন মা’বুদ নেই এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয় মুহাম্মাদ (সা.) তাঁর বান্দা ও রসূল।)।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৫.পরিচ্ছেদঃ আর এক প্রকার তাশাহহুদ
১২৮১. জাবির ইব্ন আব্দুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের তাশাহহুদ শিক্ষা দিতেন যেরূপভাবে আমাদের কুরআনের সূরা শিক্ষা দিতেন তা এইরূপঃ
بِسْمِ اللَّهِ وَبِاللَّهِ التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ وَأَسْأَلُ اللَّهَ الْجَنَّةَ وَأَعُوذُ بِهِ مِنْ النَّارِ
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৬.পরিচ্ছেদঃ নাবী [সাঃআঃ]-এর উপর সালাম পাঠানো
১২৮২. আব্দুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, আল্লাহ তাআলার কতক ফেরেশতা এমনো রয়েছেন, যাঁরা পৃথিবীতে বিচরণ করে বেড়ায়, তাঁরা আমার উম্মতের সালাম আমার কাছে পৌঁছিয়ে থাকেন।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১২৮৩. আবু তালহা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একদিন সানন্দে আমাদের কাছে আসলেন। আমরা বললাম, [আজ] আমরা আপনার চেহারায় প্রফুল্লতা দেখছি! তিনি বলিলেন, আমার কাছে [একজন] ফেরেশতা এসে বলিল, হে মুহাম্মদ [সাঃআঃ] আপনার প্রভু বলছেন যে, আপনাকে কি একথা খুশি করিবে না, যে ব্যক্তি আপনার উপর একবার দরূদ পড়বে আমি তাহাঁর উপর দশটি রহমত নাযিল করব। আর যে ব্যক্তি আপনার উপর একবার সালাম পাঠাবে আমি তাহাঁর উপর দশটি শান্তি বর্ষণ করব [সালাম পাঠাব]।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৭.পরিচ্ছেদঃ নামাজে আল্লাহর মাহাত্ম্য বর্ণনা করা ও রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর উপর দরূদ শরীফ পাঠ করা
১২৮৪. ফাজালা ইবনি উবায়দ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক ব্যক্তিকে নামাজে দোয়া করিতে শুনলেন সে [দোয়া] আল্লাহর প্রশংসাও করিল না এবং রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর উপর দরূদও পড়ল না। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে বলিলেন, হে মুসল্লী! তুমি দোয়া খুব তাড়াতাড়ি করে ফেলেছ। তারপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মুসল্লীদের দোয়া শিক্ষা দিলেন। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক ব্যক্তিকে দেখলেন, সে নামাজ আদায় করিল এবং আল্লাহ তাআলার মাহাত্ম্য বর্ণনা করিল, তাহাঁর প্রশংসা এবং রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর উপর দরূদ শরীফ পাঠ করিল। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] [তাকে] বলিলেন, তুমি দোয়া কর, তা [নিশ্চয়] কবূল করা হইবে এবং আল্লাহর কাছে চাও, তোমাকে দেওয়া হইবে।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮.পরিচ্ছেদঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর উপর দরূদ শরীফ পাঠ করার আদেশ
১২৮৫ঃ আবু মাসঊদ আনসারী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, সাদ ইবনি উবাদা [রাঃআঃ]-এর মজলিসে আমাদের কাছে [একদিন] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আসলেন, তাঁকে বশীর ইবনি সাদ [রাঃআঃ] জিজ্ঞাসা করিলেন, ইয়া রসূলুল্লাহ! আল্লাহ তাআলা আমাদের আপনার উপর দরূদ পড়তে আদেশ করিয়াছেন, আমরা কিভাবে আপনার উপর দরূদ পড়ব? তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] চুপ রইলেন। আমরা অনুতাপ করলাম যে, যদি তাঁকে জিজ্ঞাসাই না করতাম! তারপর তিনি বলিলেন, তোমরা বলবেঃ
اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ، وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ، وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ، وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ فِي الْعَالَمِينَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ
“আল-হুম্মা সল্লি আলা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আলা আ-লি মুহাম্মাদিন কামা- সল্লায়তা ‘আলা- আ-লি ইবরাহীমা ওয়াবা-রিক ‘আলা- মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আলা আ-লি মুহাম্মাদিন কামা- বা-রকতা ‘আলা- আ-লি ইব্রাহীমা ফিল আ-লামীনা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ” (হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মাদ (সা.) ও তার বংশধরের ওপর রহমত বর্ষণ কর, যেমন তুমি ইব্রাহীম (আঃ)-এর বংশধরের ওপর রহমত বর্ষণ করেছ। আর তুমি মুহাম্মাদ (সা.) ও তাঁর বংশধরের ওপর বরকত বর্ষণ কর, যেমন তুমি পৃথিবীবাসীর মধ্যে ইব্রাহীম আলায়হিস সালাম-এর বংশধরের ওপর বরকত বর্ষণ করেছ। নিশ্চয় তুমি প্রশংসিত গৌরবান্বিত)। আর সালামও করবে যেরূপ তোমরা শিখেছো।
আর সালামও করিবে যেরূপ তোমরা শিখলে।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৯.পরিচ্ছেদঃ নাবী [সাঃআঃ]-এর উপর দরূদ শরীফ কিভাবে পড়তে হইবে?
১২৮৬ ঃ আবু মাসঊদ আনসারী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ]-কে বলা হল, আপনার উপর দরূদ পড়তে ও সালাম পাঠাতে আমাদের আদেশ করা হয়েছে, সালাম কিভাবে পাঠাতে হয় তা তো আমরা জানি, কিন্তু আপনার উপর দরূদ কিভাবে পাঠ করবো? তিনি বলিলেন, তোমরা বলবেঃ
اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ، اللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ
“আল্ল-হুম্মা সল্লি আলা মুহাম্মাদিন কামা- সল্লায়তা ‘আলা- আ-লি ইবরা-হীমা আল্ল-হুম্মা বা-রিক ‘আলা- মুহাম্মাদিন কামা- বা-রকতা ‘আলা- আ-লি ইবরাহীম” (হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মদ (সা.)-এর ওপর রহমত বর্ষণ কর, যেমন তুমি রহমত বর্ষণ করেছিলে ইবরাহীম আলায়হিস সালাম -এর ওপর। হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মাদ (সা.)-এর ওপর বরকত বর্ষণ কর, যেমন তুমি ইবরাহীম আলায়হিস সালাম-এর ওপর বরকত বর্ষণ করেছিলে।)
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১০.পরিচ্ছেদঃ আর এক প্রকার [দরূদ শরীফ]
১২৮৭ : কাব ইবন উজরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমরা বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আপনাকে সালাম কিভাবে পাঠাতে হয় তা তো আমরা জানি, কিন্তু [আপনার উপর] দরূদ কিভাবে পড়ব? তিনি বলিলেন, তোমরা
اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ، اللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ، إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ
“আল্ল-হুম্মা সল্লি আলা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আলা আ-লি মুহাম্মাদিন কামা- সল্লায়তা ‘আলা- আ-লি ইবর-হীমা ইন্নাকা হামীদুম্ মাজীদ। আল্ল-হুম্মা বারিক ‘আলা- মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আলা আ-লি মুহাম্মাদিন কামা- বা-রকতা ‘আলা- আ-লি ইবর-হীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ” (হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ (সা.) -এর ওপর এবং তাঁর বংশধরদের ওপর রহমত বর্ষণ কর, যেরূপ ইবরাহীম (আঃ) এবং তাঁর বংশধরদের ওপর রহমত বর্ষণ করেছ। নিশ্চয় তুমি প্রশংসিত ও সম্মানিত। হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ (সা.)-এর ওপর এবং তার বংশধরদের ওপর বরকত দান কর, যেরূপ ইবরাহীম (আঃ) এবং তার বংশধরদের ওপর বরকত দান করেছ। নিশ্চয় তুমি প্রশংসিত ও সম্মানিত।)।
[আবদুর রহমান] ইবনি আবু লায়লা [রহঃ] বলেন, আমরা বলে থাকি তাঁদের সাথে আমাদের উপরেও [রহমত এবং বরকত বর্ষণ কর]। আবু আব্দুর রহমান [নাসাঈ] [রহঃ] বলেন, আমার উস্তাদ কাসিম ইবনি যাকারিয়া উল্লেখিত হাদিস অত্র সনদ সূত্রে বর্ণনা করেছিলেন, কিন্তু অত্র সনদ ভুল।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১২৮৮. কাব ইবনি উজরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমরা বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ ! আপনাকে সালাম পাঠানোর নিয়ম তো আমরা জানি, কিন্তু আপনার উপর দরূদ কিভাবে পড়বো? তিনি বলিলেন, তোমরা বলবেঃ
اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَآلِ إِبْرَاهِيمَ، إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ، وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَآلِ إِبْرَاهِيمَ، إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ
আল্ল-হুম্মা সল্লি আলা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আলা আ-লি মুহাম্মাদিন কামা- সল্লায়তা ‘আলা- ইবর-হীমা ওয়া আ-লি ইবরা-হীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ, ওয়াবা-রিক ‘আলা- মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আলা আ-লি মুহাম্মাদিন কামা- বা-রকতা ‘আলা- ইবর-হীমা ওয়া আ-লি ইবর-হীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ” (হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মাদ (সা.)-এর ওপর এবং মুহাম্মাদ (সা.)-এর বংশধরদের ওপর রহমত বর্ষণ কর, যেমন তুমি ইব্রাহীম আলাহিস সালাম ও তার বংশধরের ওপর রহমত বর্ষণ কর; আর মুহাম্মাদ ও তাঁর বংশধরের ওপর বরকত বর্ষণ কর, যেমন তুমি বরকত বর্ষণ করেছ ইব্রাহীম আলায়হিস সালাম ও তাঁর বংশধরের ওপর। নিশ্চয় তুমি প্রশংসিত ও গৌরবান্বিত।)
আব্দুর রহমান [রহঃ] বলেন, আমরা বলে থাকি তাহাদের সঙ্গে আমাদের উপরেও [রহম ও বরকত বর্ষণ কর]। আবু আব্দুর রহমান [নাসাঈ] [রহঃ] বলেন, পূর্ববর্তী সনদের তুলনায় অত্র সনদ অধিকতর সঠিক। কাসিম ইবনি যাকারিয়া [রহঃ] ব্যতীত অন্য কেউ পূর্ববর্তী সনদে আমর ইবনি মুররা [রহঃ]-এর নাম উল্লেখ করেন নি।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১২৮৯. ইবনি আবু লায়লা [রহঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, কাব ইবনি উজরা [রাঃআঃ] আমাকে বলিলেন, আমি কি তোমাকে কিছু হাদিয়া দেব না? [পরে বলিলেন,] আমরা বললাম, ইয়া রসূলুল্লাহ! আপনাকে সালাম পাঠানোর নিয়ম তো আমরা জানি, কিন্তু আপনার উপর দরূদ কিভাবে পাঠ করবো? তিনি বলিলেন, তোমরা বলবেঃ
اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَآلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ، اللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَآلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ
“আল্ল-হুম্মা সল্লি আলা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আ-লি মুহাম্মাদিন কামা- সল্লায়তা ‘আলা- আ-লি ইবর-হীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ। আল্ল-হুম্মা বারিক ‘আলা- মুহাম্মাদিও ওয়া আ-লি মুহাম্মাদিন কামা বা-রকতা ‘আলা- আ-লি ইবর-হীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।” (হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মাদ (সা.) ও তার বংশধরের ওপর রহমত বর্ষণ কর, যেমন তুমি ইব্রাহীম (আঃ)-এর বংশধরের ওপর রহমত বর্ষণ করেছিলে। নিশ্চয় তুমি প্রশংসিত ও গৌরবান্বিত। হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মাদ (সা.) ও তাঁর বংশধরের ওপর বরকত বর্ষণ কর, যেমন তুমি ইবরাহীম আলায়হিস সালাম-এর বংশধরের ওপর বরকত বর্ষণ করেছিলে। নিশ্চয় তুমি প্রশংসিত ও গৌরবান্বিত।)।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১২৯০. তালহা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমরা বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আপনার উপর দরূদ কিভাবে পাঠ করিতে হইবে? তিনি বলিলেন, তোমরা বলবেঃ
اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَآلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ، وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَآلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ
“আল্ল-হুম্মা সল্লি আলা- মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আলা আ-লি মুহাম্মাদিন কামা- সল্লায়তা ‘আলা- ইব্রাহীমা ওয়া আ-লি ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ ওয়াবা-রিক ‘আলা- মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আলা আ-লি মুহাম্মাদিন কামা- বা-রকতা ‘আলা- ইবরাহীমা ওয়া আ-লি ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।” (হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মাদ (সা.) ও তাঁর বংশধরের ওপর রহমত বর্ষণ কর, যেমন তুমি ইব্রাহীম ইব্রাহীম আলাহিস সালাম ও তাঁর বংশধরের ওপর রহমত বর্ষণ করেছিলে। নিশ্চয় তুমি প্রশংসিত ও গৌরবান্বিত। আর তুমি মুহাম্মাদ (সা.) ও তাঁর বংশধরের ওপর বরকত বর্ষণ কর। যেমন তুমি ইবরাহীম আলায়হিস সালাম ও তাঁর বংশধরের ওপর বরকত বর্ষণ করেছিলে। নিশ্চয় তুমি প্রশংসিত ও গৌরবান্বিত।)।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১২৯১. তালহা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
এক ব্যক্তি নাবী [সাঃআঃ]-এর কাছে এসে বলিল, ইয়া নাবীআল্লাহ [সাঃআঃ]! আমরা আপনার উপর দরূদ কিভাবে পাঠ করব? তিনি বলিলেন, তোমরা বলবেঃ
اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ، وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ
“আল্ল-হুম্মা সল্লি আলা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া’আলা আ-লি মুহাম্মাদিন কামা- সল্লায়তা ‘আলা- ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্ মাজীদ ওয়াবা-রিক ‘আলা- মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আলা আ-লি মুহাম্মাদিন কামা- বা-রকতা ‘আলা- ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।” (হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মাদ (সা.) ও তাঁর বংশধরের ওপর রহমত বর্ষণ কর। যেমন তুমি ইবরাহীম (আঃ)-এর ওপর রহমত বর্ষণ করেছিলে। নিশ্চয় তুমি প্রশংসিত ও গৌরবান্বিত। আর তুমি মুহাম্মাদ (সা.) ও তার বংশধরের ওপর বরকত বর্ষণ কর, যেমন তুমি ইবরাহীম আলায়হিস সালাম-এর ওপর বরকত বর্ষণ করেছিলে। নিশ্চয় তুমি প্রশংসিত ও গৌরবান্বিত।)
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১২৯২. যায়দ ইবনি খারিজা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে প্রশ্ন করলে তিনি বলিলেন, তোমরা আমার উপর দরূদ পাঠ কর এবং বেশি বেশি দোয়া কর আর তোমরা বলঃ
اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ
আল্ল-হুম্মা সল্লি আলা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া ‘আলা আ-লি মুহাম্মাদিন
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১২৯৩. আবু সাঈদ খুদরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমরা বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আপনার উপর সালাম পাঠানোর নিয়ম তো আমরা জানি, কিন্তু আপনার উপর দরূদ কিভাবে পাঠ করব? তিনি বলিলেন, তোমরা বলবেঃ
اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ عَبْدِكَ وَرَسُولِكَ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ، وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَآلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ
“আল্ল-হুম্মা সল্লি আলা মুহাম্মাদিন ‘আবদিকা ওয়া রসূলিকা কামা- সল্লায়তা ‘আলা- ইবর-হীমা ওয়াবা-রিক ‘আলা- মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আ-লি মুহাম্মাদিন কামা- বা-রকতা ‘আলা- ইবর-হীম।” (হে আল্লাহ! তুমি তোমার দাস ও তোমার রসূল মুহাম্মাদ (সা.) -এর ওপর রহমত বর্ষণ কর। যেমন তুমি ইবরাহীম আলায়হিস সালাম-এর ওপর রহমত বর্ষণ করেছিলে। আর তুমি মুহাম্মাদ (সা.) ও তাঁর বংশধরের ওপর বরকত বর্ষণ কর, যেমন তুমি ইবরাহীম (আঃ)-এর ওপর বরকত বর্ষণ করেছিলে।)
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১২৯৪. আবু হুমায়দ সাঈদী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
সাহাবীগণ বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমরা আপনার উপর দরূদ কিভাবে পাঠ করব? তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তোমরা বলবেঃ
“আল্ল-হুম্মা সল্লি আলা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আযওয়াজিহী ওয়া যুররিয়্যাতিহী”। হারিস-এর হাদীসে রয়েছে- “কামা- সল্লায়তা ‘আলা- আ-লি ইবর-হীমা ওয়াবা-রিক ‘আলা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আযওয়া-জিহী ওয়া যুররিয়্যাতিহী”। অতঃপর উভয় রাবী একত্রে বলেন- “কামা- বারকতা ‘আলা- আ-লি ই-হীমা ইন্নাকা হামীদুম্ মাজীদ”
হারিছের হাদীসে রয়েছেঃ [আরবি] তারপর উভয় রাবী একত্রে বলেনঃ [আরবি] আবু আব্দুর রহমান [নাসাঈ] [রহঃ] বলেন, কুতায়বা [রহঃ] অত্র হাদিস আমাদের কাছে দুবার বর্ণনা করেছিলেন, হয়তো তাহাঁর বর্ণিত হাদিসের কিয়দংশ {যা হারিছ [রহঃ] উল্লেখ করেছে} বাদ পড়ে গেছে।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১১.পরিচ্ছেদঃ নাবী [সাঃআঃ]-এর উপর দরূদ শরীফ পাঠের ফযীলত
১২৯৫. আবু তালহা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একদিন [আমাদের কাছে] আগমন করিলেন। তখন তাহাঁর চেহারায় প্রফুল্লতা দৃষ্টিগোচর হচ্ছিল। তিনি বলিলেন, জিবরাঈল [আঃ] আমার কাছে এসে বলিল, “ইয়া মুহাম্মদ [সাঃআঃ]! আপনাকে কি এই সংবাদ খুশি করে না যে, আপনার উম্মতের মধ্য থেকে যদি কোন ব্যক্তি আপনার উপর একবার দরূদ পাঠ করে আমি তাহাঁর দশবার মাগফিরাত চাইব, আর কেউ যদি আপনাকে একবার সালাম পাঠায় আমি তার প্রতি দশবার সালাম পাঠাব।”
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১২৯৬. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরূদ পাঠ করিবে আল্লাহ তাআলা তাহাঁর উপর দশবার রহমত নাযিল করবেন।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১২৯৭. আনাস ইবনি মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরূদ পাঠ করিবে আল্লাহ তাআলা তাহাঁর উপর দশবার রহমত নাযিল করবেন, তাহাঁর দশটি গুনাহ মিটিয়ে দেওয়া হইবে এবং তাহাঁর জন্য দশটি মর্যাদা উন্নীত করা হইবে।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১২.পরিচ্ছেদঃ নাবী [সাঃআঃ]-এর উপর দরূদ শরীফ পাঠ করার পর দোয়া নির্ধারণের ব্যাপারে স্বাধীনতা
১২৯৮. আব্দুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমরা যখন একদিন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে নামাজ আদায়কালে বসলাম, তখন বললাম, আল্লাহর উপর সালাম আল্লাহর বান্দাদের পক্ষ থেকে আর অমুক অমুকের উপর সালাম। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]বলিলেন, তোমরা আল্লাহর উপর সালাম বলো না, কেননা, আল্লাহই স্বয়ং সালাম, তোমাদের কেউ যখন নামাজ আদায়কালে বসে তখন সে যেন বলেঃ
আত্তাহিয়্যাতু লিল্লা-হি ওয়াস সালাওয়া-তু ওয়াত তইয়িবা-তু, আসসালা-মু আলায়কা আইয়ুহান নাবিয়ু, ওয়া রহমাতুল্ল-হি ওয়া বারাকা-তুহ। আসসালা-মু আলায়না- ওয়া আলা ইবা-দিল্লা-হিস্ স-লিহীন
(সকল প্রকার মৌখিক, দৈহিক ও আর্থিক ইবাদত আল্লাহর জন্য। হে নবী! আপনার ওপর আল্লাহর সালাম, রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক। আমাদের এবং আল্লাহর নেক বান্দাদের ওপর সালাম বর্ষিত হোক।)।
কেননা তোমরা যখন এ তাশাহহুদ পড়বে তা আসমান এবং যমীনের সকল নেক বান্দার রূহে পৌঁছবে।
আশহাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহূ ওয়া রসূলুহু”
(আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন মা’বুদ নেই এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয় মুহাম্মাদ (সা.) তাঁর বান্দা ও রসূল)
তারপর যে দোয়া ইচ্ছা হয় সে দোয়া করিবে।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৩.পরিচ্ছেদঃ তাশাহহুদের পর যিকির করা
১২৯৯. আনাস ইবনি মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, উম্মে সুলায়ম [রহঃ] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে এসে বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ ! আমাকে এমন কিছু বাক্য শিক্ষা দিন যা আমি আমার নামাজে পাঠ করিতে পারি। তিনি বলিলেন, তুমি সুবহানাল্লাহ দশবার, আলহামদু লিল্লাহ দশবার এবং আল্লাহু আকবর দশবার বলে আল্লাহর কাছে তোমার যা প্রয়োজন হয় তা চাইবে। তিনি বলবেন- হ্যাঁ, হ্যাঁ অর্থাৎ নিশ্চয় তিনি তোমার দোয়া কবুল করবেন।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৪.পরিচ্ছেদঃ যিকিরের পর দোয়া করা
১৩০০. আনাস ইবনি মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে বসা ছিলাম, অর্থাৎ তখন এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করছিল, যখন সে রুকূ-সিজদা এবং তাশাহহুদ পড়ে দোয়া করিতে আরম্ভ করিল তখন সে তাহাঁর দোয়া বললঃ
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِأَنَّ لَكَ الْحَمْدَ، لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ الْمَنَّانُ بَدِيعُ السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضِ، يَا ذَا الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ، يَا حَيُّ يَا قَيُّومُ إِنِّي أَسْأَلُكَ
আল্ল-হুম্মা ইন্নী আসআলুকা বিআন্না লাকাল হামদা লা- ইলা-হা ইল্লা আনতাল মান্না-নু বাদী’উস সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরযি ইয়া- যাল জালালি ওয়াল ইকর-ম ইয়া- হাইয়ু ইয়া- কইয়ুম ইন্নী আলুকা।”
(হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট প্রার্থনা করছি এই ওয়াসীলায় যে, সমস্ত প্রশংসা তোমারই, তুমি ব্যতীত কোন সত্য উপাস্য নেই। তুমি পরম অনুগ্রহদাতা, আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা। হে মহিমাময় এবং মহানুভব, হে চিরঞ্জীব অবিনশ্বর! আমি তোমার নিকট প্রার্থনা করছি।)।
তখন নাবী [সাঃআঃ] তাহাঁর সাহাবীগণকে বলিলেন, তোমরা কি জান সে কিসের দ্বারা দোয়া করিল? তাঁরা বলিলেন, আল্লাহ এবং তাহাঁর রাসূলই ভালো জানেন। তখন তিনি বলিলেন, যাঁর হাতে আমার প্রাণ তাহাঁর শপথ! সে আল্লাহর ঐ ইসমে আজম দ্বারা দোয়া করেছে যা দ্বারা দোয়া করা হলে তিনি তা কবুল করেন, আর যদ্বারা কোন কিছু চাওয়া হলে তা তিনি দান করেন।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৩০১. মিহজান ইবনি আদরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] [একদিন] মসজিদে প্রবেশ করে দেখলেন যে, এক ব্যক্তি তাশাহহুদ পড়ে নামাজ শেষ করার সময় বললো
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ يَا أَللَّهُ بِأَنَّكَ الْوَاحِدُ الْأَحَدُ الصَّمَدُ، الَّذِي لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌ، أَنْ تَغْفِرَ لِي ذُنُوبِي إِنَّكَ أَنْتَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ
আল্ল-হুম্মা ইন্নী আসআলুকা ইয়াল্ল-হু বিআন্নাকাল ওয়া-হিদুল আহাদুস সমাদুল্লাযী লাম ইয়ালিদ ওয়ালাম ইউলাদ ওয়ালাম ইয়াকুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদুন আন তাগফিরালী যুনূবী ইন্নাকা আনতাল গফুরুর রহীম।”
(হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি তোমার নিকট প্রার্থনা করছি, হে একক ও অমুখাপেক্ষী আল্লাহ! যিনি জনক নন জাতকও নন (তিনি কাউকে জন্ম দেননি আবার কারো থেকে তিনি জন্মও নেননি) এবং যার সমকক্ষ কেউ নেই, তুমি আমার গুনাহসমূহকে ক্ষমা করে দাও, নিশ্চয় তুমি ক্ষমাশীল দয়াবান।)।
তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তাঁকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে। এ বাক্যটি তিনি তিনবার বলিলেন।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৫.পরিচ্ছেদঃ আর এক প্রকার দোয়া
১৩০২. আবু বকর সিদ্দীক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিলেন, আমাকে এমন একটা দোয়া শিক্ষা দিন যদ্বারা আমি নামাজে দোয়া করব। তিনি বলিলেন, তুমি বলবেঃ
اللَّهُمَّ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي ظُلْمًا كَثِيرًا وَلَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ، فَاغْفِرْ لِي مَغْفِرَةً مِنْ عِنْدِكَ وَارْحَمْنِي، إِنَّكَ أَنْتَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ
আল্লাহুম্মা ইন্নি জাআলামতু নাফসি জুলমান কাসিরা ওয়ালা ইয়াগফেরুজ জুনুবা ইল্লা আন্তা ফাগফিরলি মাগফিরাতাম মিন ইন্দিকা ওয়ার হামনি ইন্নাকা আন্তাল গাফুরুর রাহিম
(হে আল্লাহ! আমি আমার নিজের নফসের উপর খুব বেশী অত্যাচার করেছি। তুমি ছাড়া পাপ মোচনকারী আর কেউ নেই। অতএব হে আল্লাহ! অনুগ্রহ করে আমাকে ক্ষমা কর এবং আমার প্রতি দয়া কর। নিশ্চয় তুমি দয়াবান ও ক্ষমাশীল।)।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৩০৩. মুআয ইবনি জাবাল [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমার হাত ধরে বলিলেন, হে মুআয! আমি তোমাকে ভালবাসি। তখন আমি বললাম, ইয়া রসূলুল্লাহ ! আমিও আপনাকে ভালবাসি। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তুমি প্রত্যেক নামাজে বলিতে বাদ দেবে না
رَبِّ أَعِنِّي عَلَى ذِكْرِكَ وَشُكْرِكَ وَحُسْنِ عِبَادَتِكَ
বব্বি আ’ইন্নী আলা-যিকরিকা ওয়া শুকরিকা ওয়া হুসনি ‘ইবা-দাতিক”
(আল্লাহ তোমার যিকর, শোকর এবং সুন্দর ‘ইবাদাতের জন্য আমাকে সহযোগিতা করো)।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৩০৪. শাদাদ ইবন আউস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
যে, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর নামাজে বলিতেনঃ
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الثَّبَاتَ فِي الْأَمْرِ، وَالْعَزِيمَةَ عَلَى الرُّشْدِ، وَأَسْأَلُكَ شُكْرَ نِعْمَتِكَ، وَحُسْنَ عِبَادَتِكَ، وَأَسْأَلُكَ قَلْبًا سَلِيمًا، وَلِسَانًا صَادِقًا، وَأَسْأَلُكَ مِنْ خَيْرِ مَا تَعْلَمُ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا تَعْلَمُ، وَأَسْتَغْفِرُكَ لِمَا تَعْلَمُ
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৩০৫. আতা ইবন সায়িব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আম্মার ইবন ইয়াসির [রাঃআঃ] একবার আমাদের সাথে নামাজ আদায় করিলেন এবং নামাজ সংক্ষিপ্ত করে ফেললেন। তখন কেউ কেউ তাকে বলিলেন, আপনি নামাজ সংক্ষিপ্ত করে ফেলেছেন। তিনি বলিলেন, কিন্তু এতদসত্ত্বেও তো আমি ঐ সমস্ত দোয়া পাঠ করে ফেলেছি যা আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে শুনিয়াছি। তারপর যখন তিনি [চলে যাওয়ার জন্য] উঠে দাড়ালেন, লোকদের মধ্য হইতে একজন তার অনুসরণ করিতে লাগলেন আতা [রাঃআঃ] বলেন তিনি ছিলেন আমার পিতা কিন্তু তিনি তার নাম বলেননি। তিনি তাকে ঐ দোয়া সম্পর্কে প্রশ্ন করিলেন এবং এসে সবাইকে ঐ দোয়ার সংবাদ দিলেন। সেই দোয়াটি ছিলঃ
اللَّهُمَّ بِعِلْمِكَ الْغَيْبَ، وَقُدْرَتِكَ عَلَى الْخَلْقِ، أَحْيِنِي مَا عَلِمْتَ الْحَيَاةَ خَيْرًا لِي، وَتَوَفَّنِي إِذَا عَلِمْتَ الْوَفَاةَ خَيْرًا لِي، اللَّهُمَّ وَأَسْأَلُكَ خَشْيَتَكَ فِي الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ، وَأَسْأَلُكَ كَلِمَةَ الْحَقِّ فِي الرِّضَا وَالْغَضَبِ، وَأَسْأَلُكَ الْقَصْدَ فِي الْفَقْرِ وَالْغِنَى، وَأَسْأَلُكَ نَعِيمًا لَا يَنْفَدُ، وَأَسْأَلُكَ قُرَّةَ عَيْنٍ لَا تَنْقَطِعُ، وَأَسْأَلُكَ الرِّضَاءَ بَعْدَ الْقَضَاءِ، وَأَسْأَلُكَ بَرْدَ الْعَيْشِ بَعْدَ الْمَوْتِ، وَأَسْأَلُكَ لَذَّةَ النَّظَرِ إِلَى وَجْهِكَ، وَالشَّوْقَ إِلَى لِقَائِكَ فِي غَيْرِ ضَرَّاءَ مُضِرَّةٍ، وَلَا فِتْنَةٍ مُضِلَّةٍ، اللَّهُمَّ زَيِّنَّا بِزِينَةِ الْإِيمَانِ، وَاجْعَلْنَا هُدَاةً مُهْتَدِينَ
“আল্ল-হুম্মা বি’ ইলমিকাল গয়বা ওয়া কুদরতিকা ‘আলাল খলকি আহয়িনী মা- ‘আলিমতাল হায়া-তা খয়রল্লী ওয়াতা ওয়াফফানী ইযা- ‘আলিমতাল ওয়াফা-তা খয়রল্লী আল্ল-হুম্মা ওয়া আসআলুকা খশইয়াতাকা ফিল গয়বি ওয়াশ শাহা-দাতি ওয়া আসআলুকা কালিমাতাল হাক্কি ফির রিযা- ওয়াল গযাবি ওয়া আসআলুকাল কসদা ফিল ফাকরি ওয়াল গিনা- ওয়া আসআলুকা নাঈমাল লা- ইয়ানফাদু ওয়া আস্আলুকা কুররতা ‘আয়নিল লা- তানকত্বি’উ ওয়া আসআলুকার রিযা-আ বা’দাল কযা-য়ি ওয়া আসআলুকা বারদাল ‘আয়শি বা’দাল মাওতি ওয়া আসআলুকা লাযযাতান নাযারি ইলা- ওয়াজহিকা ওয়াশ শাওকা ইলা- লিকা-য়িকা ফী গয়রি যররা-আ মুযিরাতিন্ ওয়ালা- ফিতনাতিন মুযিল্লাতিন আল্ল-হুম্মা যাইয়িন্না- বিযীনাতিল ঈমা-নি ওয়াজ আলনা- হুদা-তাম মুহতাদীন।”
(হে আল্লাহ! তোমার নিকটেই আছে গায়েবের জ্ঞান, তুমি সকল সৃষ্টি ওপর ক্ষমতাবান, তুমি যদি জান [মনে করো] আমার বেঁচে থাকা আমার জন্য কল্যাণকর তবে আমাকে বাঁচিয়ে রাখ। আর তুমি যদি মনে করো মৃত্যু আমার কল্যাণকর তাহলে আমার মৃত্যু ঘটাও। আমি প্রকাশ্যে ও গোপনে তোমাকে ভয় করার তাওফীক চাই, আমি খুশি ও রাগের সময়ে সত্য কথা বলার তাওফীক চাই, আমি মধ্যপন্থা তথা অভাবী ও ধনীর মাঝামাঝি জীবন যাপন করতে চাই। আমি তোমার কাছে এমন নি’আমাত (অনুগ্রহ) চাই যা শেষ হয়ে যাবে না। আমি তোমার কাছে চাই এমন চক্ষু শীতলকারী (বস্তু) যা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে না। মৃত্যুর পর আমি তোমার সন্তুষ্টি চাই। আমি তোমার নিকটে মৃত্যুর পরে আরাম-আয়েশের শীতলতা চাই। আমি তোমার চেহারার দিকে দষ্টির প্রশান্তি স্বরূপ চেয়ে থাকতে চাই। তোমার সাথে সাক্ষাতের বাসনা কোন ভ্রান্তিকর ফিতনাহ যেন বিনষ্ট করতে না পারে আমি সেই প্রার্থনা করি। হে আল্লাহ! তুমি আমাদেরকে ঈমানের সাজে সজ্জিত করা আর আমাদেরকে হিদায়াতপ্রাপ্তদের পথের পথিক করো।)।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৩০৬. কায়স ইবন উবাদ [রহঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, একবার আম্মার ইবন ইয়াসির [রাঃআঃ] একদল লোক নিয়ে নামাজ আদায় করিলেন, যাতে তিনি সংক্ষেপ করে ফেললেন আর মুসল্লীরা যেন ঐ সংক্ষিপ্ত করণকে খারাপ মনে করিলেন। তখন তিনি বলিলেন, আমি কি রুকু এবং সিজদা পরিপূর্ণ রূপে আদায় করিনি। তারা বলিলেন, নিশ্চয়ই। তখন তিনি বলিলেন, আমি তাতে এমন দোয়াও পড়েছি যা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] পড়তেন। সেই দোয়াটি হল
اللَّهُمَّ بِعِلْمِكَ الْغَيْبَ، وَقُدْرَتِكَ عَلَى الْخَلْقِ، أَحْيِنِي مَا عَلِمْتَ الْحَيَاةَ خَيْرًا لِي، وَتَوَفَّنِي إِذَا عَلِمْتَ الْوَفَاةَ خَيْرًا لِي، وَأَسْأَلُكَ خَشْيَتَكَ فِي الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ، وَكَلِمَةَ الْإِخْلَاصِ فِي الرِّضَا وَالْغَضَبِ، وَأَسْأَلُكَ نَعِيمًا لَا يَنْفَدُ، وَقُرَّةَ عَيْنٍ لَا تَنْقَطِعُ، وَأَسْأَلُكَ الرِّضَاءَ بِالْقَضَاءِ، وَبَرْدَ الْعَيْشِ بَعْدَ الْمَوْتِ، وَلَذَّةَ النَّظَرِ إِلَى وَجْهِكَ، وَالشَّوْقَ إِلَى لِقَائِكَ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ ضَرَّاءَ مُضِرَّةٍ، وَفِتْنَةٍ مُضِلَّةٍ، اللَّهُمَّ زَيِّنَّا بِزِينَةِ الْإِيمَانِ، وَاجْعَلْنَا هُدَاةً مُهْتَدِينَ
“আল্ল-হুম্মা বি’ ইলমিকাল গয়বা ওয়া কুদরতিকা ‘আলাল খলকি আহয়িনী মা- ‘আলিমতাল হায়া-তা খয়রল্লী ওয়াতাওয়াফফানী ইযা- ‘আলিমতাল ওয়াফা-তা খয়রল্লী ওয়া আসআলুকা খশইয়াতাকা ফিল গয়বি ওয়াশ শাহা-দাতি ওয়া কালিমাতিল ইখলা-সি ফির রিযা- ওয়াল গযাবি ওয়া আসআলুকা না’ঈমাল লা-ইয়ানফাদু ওয়া কুররতা ‘আয়নিল লা- তানকত্বি’উ ওয়া আসআলুকার রিযা-আ বিল কযা-য়ি ওয়া বারদাল ‘আয়শি বা’দাল মাওতি ওয়া লাযযাতান নাযারি ইলা- ওয়াজহিকা ওয়াশ শাওকা ইলা- লিকা-য়িকা ওয়া আ’উযুবিকা মিন্ যররা-আ মুযিররাতিন ওয়া ফিতনাতিম মুযিল্লাতিন আল্ল-হুম্মা যাইয়িন্না- বিযীনাতিল ঈমা-নি ওয়াজ আলনা- হুদা-তাম্ মুহতাদীন।”
হে আল্লাহ! তোমার নিকটেই আছে গায়েবের জ্ঞান, সকল সৃষ্টির ওপর তোমার ক্ষমতা আছে, তুমি যদি মনে কর বেঁচে থাকা আমার জন্য কল্যাণকর তবে আমাকে বাঁচিয়ে রাখ। আর তুমি যদি মনে কর মৃত্যু আমার জন্য কল্যাণকর তবে আমার মৃত্যু ঘটাও। আমি প্রকাশ্যে ও গোপনে তোমাকে ভয় করার তাওফীক প্রার্থনা করছি, খুশি ও রাগের সময় ইখলাসের [একনিষ্ঠতার] বাক্য বলার তাওফীক প্রার্থনা করছি, আমি তোমার কাছে এমন নি’আমাত [অনুগ্রহ] চাই যা শেষ হবে না। আমি তোমার কাছে চাই এমন চক্ষু শীতলকারী (নিআমাত) যা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে না। মৃত্যুর পর আমি তোমার সন্তুষ্টি চাই। আমি তোমার নিকটে মৃত্যুর পরে আরাম-আয়েশের শীতলতা চাই। আমি তোমার চেহারার দিকে দৃষ্টি প্রশান্তি স্বরূপ চেয়ে থাকতে চাই। আমি তোমার সাথে সাক্ষাত লাভের বাসনা কামনা করি। আমি সকল ক্ষতিকর ও ভ্রান্তিকর ফিনাহ থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাই। হে আল্লাহ! তুমি আমাদেরকে ঈমানের সাজে সজ্জিত করো। আর আমাদেরকে হিদায়াতপ্রাপ্তদের পথের পথিক কর।)।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৬.পরিচ্ছেদঃ নামাজে তা’আউউয পড়া [বিতাড়িত শয়তান থেকে পানাহ চাওয়া]
১৩০৭. ফরওয়াহ ইবন নওফল [রহঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমি আয়েশা [রাঃআঃ]-কে বললাম, আমাকে এমন কিছু বলুন যদ্বারা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর নামাজের দোয়া করিতেন। তিনি বলিলেন, হ্যাঁ, [বলব] রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] [তাহাঁর নামাজে] বলিতেন
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا عَمِلْتُ وَمِنْ شَرِّ مَا لَمْ أَعْمَلْ
আল্ল-হুম্মা ইন্নী আ’উযুবিকা মিন শাররি মা- ‘আমিলতু ওয়ামিন শাররি মা- লাম আ’ মাল”
(হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট সেসব কর্মের খারাবী থেকে আশ্রয় চাই যা আমি করেছি এবং তাথেকেও যা আমি করিনি)
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৭.পরিচ্ছেদঃ আর এক প্রকার [তাআউউয]
১৩০৮. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -কে কবরের আযাব সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি বলিলেন, হ্যাঁ! কবরের আযাব সত্য, আয়েশা [রাঃআঃ] বলেন, এরপর আমি রাসূলুল্লাহু [সাঃআঃ]-কে এমন কোন নামাজ আদায় করিতে দেখিনি যাতে তিনি কবরের আযাব থেকে পানাহ না চেয়েছেন।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৩০৯. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নামাজে এই দোয়া পড়তেন,
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ، اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْمَأْثَمِ وَالْمَغْرَمِ
আল্ল-হুম্মা ইন্নী আ’উযুবিকা মিন ‘আযা-বিল কবর, ওয়া আ’উযুবিকা মিন ফিতনাতিল মাসীহিদ দাজ্জা-ল, ওয়া আ’উযুবিকা মিন ফিনাতিল মাহইয়া-ইয়া ওয়াল মামা-ত। আল্ল-হুম্মা ইন্নী আ’উযুবিকা মিনাল মা’সামি ওয়াল মাগরম
তখন তাকে কেউ বলিল, আপনি প্রায়ই ঋণগ্রস্ততা থেকে পানাহ চেয়ে থাকেন কেন? তিনি বলিলেন, কোন লোক যখন ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ে, তখন সে কথা বলিতে মিথ্যা বলে এবং ওয়াদা করে খেলাফ করে।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৩১০. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহু [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন নামাজ আদায়কালে তাশাহহুদ পড়বে, তখন চার বস্তু থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাইবে ঃ ১. দোযখের আযাব থেকে। ২. কবরের আযাব থেকে। ৩. জীবন ও মরণের ফিৎনা থেকে। ৪. এবং মসীহে দাজ্জালের অনিষ্ট থেকে। অতঃপর তার জন্য যা [প্রয়োজনীয়] মনে আসে তার দোয়া করিবে।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮.পরিচ্ছেদঃ তাশাহহুদের পর আর এক প্রকার যিকির
১৩১১. জাবির [রহঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নামাজে তাশাহহুদের পর বলিতেনঃ [আরবি]।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯.পরিচ্ছেদঃ নামাজ সংক্ষেপ করা
১৩১২. হুযায়ফা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
যে, তিনি এক ব্যক্তিকে দেখলেন সে নামাজ সংক্ষেপে আদায় করছে। হুযায়ফা [রাঃআঃ] তাকে বলিলেন, তুমি কতদিন থেকে এভাবে নামাজ আদায় করছ? সে বলিল, চল্লিশ বছর যাবত। তিনি বলিলেন, তুমি চল্লিশ বছর যাবত নামাজ আদায় করছ না [পরিপূর্ণরূপে]। যদি তুমি এভাবে নামাজ আদায় করিতে করিতে মৃত্যুবরণ কর তা হলে তুমি মুহাম্মদ [সাঃআঃ] -এর নামাজের তরীকা ব্যতীত মৃত্যুবরণ করিবে। তারপর তিনি বলিলেন, কোন ব্যক্তি নামাজে কিরাআত সংক্ষিপ্ত করিতে পারে এভাবে যে, সে নামাজের ফরয ওয়াজিবসমূহ ঠিকমত আদায় করিবে এবং নামাজ সুন্দরভাবে আদায় করিবে। [সুন্নত ও মুস্তাহাব আমলগুলো পালনের মাধ্যমে]।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২০.পরিচ্ছেদঃ সর্বনিম্ন পর্যায়ের সংক্ষিপ্ত করণ যদ্বারা নামাজ শুদ্ধ হয়ে যায়
১৩১৩. রিফা’আ ইবন রাফি [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বর্ণনা করেন যে, এক ব্যক্তি একদা মসজিদে প্রবেশ করে নামাজ আদায় করিতে লাগাল আর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার প্রতি লক্ষ্য রাখছিলেন অথচ আমরা তা জানতামও না। সে ব্যক্তি নামাজ শেষ করে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে সালাম করলে তিনি বলিলেন, তুমি ফিরে গিয়ে পুনরায় নামাজ আদায় কর। কেননা, তুমি নামাজ আদায় করনি। সে ব্যক্তি ফিরে গিয়ে পুনরায় নামাজ আদায় করে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে আসলে তিনি বলিলেন, তুমি ফিরে গিয়ে পুনরায় নামাজ আদায় কর। কেননা তুমি নামাজ আদায় করনি। রাসুলুল্লাহু [সাঃআঃ] এরূপ তিনবার কি চার বার করলে ঐ ব্যক্তি তাঁকে বলিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! সেই আল্লাহর শপথ, যিনি আপনাকে সম্মানিত করিয়াছেন, আমি তো খুব চেষ্টা করে দেখলাম, আপনি আমাকে শিখিয়ে দিন। তখন তিনি বলিলেন, তুমি যখন নামাজ আদায়ের ইচ্ছা কর, তখন উত্তমরূপে ওযু করিবে। তারপর কিবলামুখী হয়ে তাকবীর বলবে। তারপর কুরআন পাঠ করে তাকবীর বলে রুকূতে যাবে এবং খুব স্থিরতার সাথে রুকূ করিবে। তারপর মাথা উঠিয়ে সোজা হয়ে দাড়িয়ে যাবে। তারপর সিজদা করিবে এবং স্থিরতার সাথে সিজদা করে মাথা ওঠাবে। পরে মাথা উঠিয়ে স্থিরতার সাথে বসবে। পুনরায় সিজদা করিবে এবং স্থিরতার সাথে সিজদা করে মাথা ওঠাবে। তারপর তুমি এরূপ করে স্বীয় নামাজ সমাপ্ত করিবে।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
১৩১৪. রিফা’আ ইবন রাফি [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমি একদা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] –এর সঙ্গে মসজিদে বসা ছিলাম। তখন এক ব্যক্তি এসে দুরাকআত নামাজ আদায় করিল। তারপর এসে নাবী [সাঃআঃ] –কে সালাম করিল। নাবী [সাঃআঃ] তাহাঁর নামাজের প্রতি লক্ষ্য রাখছিলেন। তিনি তাহাঁর সালামের উত্তর দিয়ে তাঁকে বলিলেন, তুমি ফিরে গিয়ে পুনরায় নামাজ আদায় কর, যেহেতু তুমি নামাজ আদায় করনি। তারপর সে ফিরে গিয়ে নামাজ আদায় করলো। পরে এসে নাবী [সাঃআঃ]-কে সালাম করলোঃ তিনি সালামের জবাব দিয়ে বলিলেন, তুমি ফিরে গিয়ে নামাজ আদায় কর। কারণ তুমি নামাজ আদায় করনি। এমনিভাবে তৃতীয় অথবা চতুর্থবারে সে বলিল, সেই আল্লাহর শপথ, যিনি আপনার উপর কিতাব [কুরআন] অবতীর্ণ করিয়াছেন, আমি তো খুব চেষ্টা করলাম এবং আমি নামাজ আদায় করিতে চাইও, আপনি আমাকে শিখিয়ে দিন। তখন তিনি বলিলেন, তুমি যখন নামাজ আদায় করিতে ইচ্ছা কর তখন উত্তমরূপে ওযূ করিবে, তারপর কিবলার দিকে মুখ করে তাকবীর বলবে, তারপর কুরআন পড়ে [তাকবীর বলে] রুকূতে যাবে। রুকূতে স্থির হইবে। তারপর মাথা উঠিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে যাবে। তারপর সিজদায় গিয়ে স্থিরভাবে সিজদা করিবে তারপর সিজদা থেকে মাথা উঠিয়ে স্থিরভাবে বসবে। আবার সিজদায় গিয়ে স্থিরভাবে সিজদা করিবে। তারপর মাথা ওঠাবে। যদি তুমি এই নিয়মে তোমার নামাজ শেষ কর, তবে তোমার নামাজ পূর্ণ হইবে। আর যদি এই নিয়মে কোন ত্রুটি হয় তবে তোমার নামাজও ততটুকু ত্রুটি যুক্ত হইবে।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৩১৫. সাদ ইবনি হিশাম [রহঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমি বললাম, হে উম্মুল মুমিনীন! রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর বিত্র-এর নামাজ সম্পর্কে আমাকে অবহিত করুন। তিনি বলিলেন, আমরা তাহাঁর জন্য মিসওয়াক প্রস্তুত রাখতাম এবং ওযূর পানি রাখতাম। তারপর যখন রাতে আল্লাহর ইচ্ছা হত তাঁকে তুলে দিতেন, তখন তিনি মিসওয়াক করে ওযূ করিতেন এবং আট রাকআত নামাজ আদায় করিতেন। তাতে তিনি অষ্টম রাকআতের শেষে বসতেন, এবং আল্লাহর যিকির ও দোয়া করিতেন। তারপর এমনভাবে সালাম ফিরাতেন যা আমরা শুনতে পেতাম।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
Leave a Reply