নামাজে হাত বাধা কনুই পাঞ্জা তর্জনী আঙ্গুল ঈশারা ও দৃষ্টি
নামাজে হাত বাধা কনুই পাঞ্জা তর্জনী আঙ্গুল ঈশারা ও দৃষ্টি >> সুনানে নাসাই শরিফের মুল সুচিপত্র দেখুন
পর্বঃ ১১, নামাজ আরম্ভ করা, হাদীস (১২৬৪-১২৭৬)
১.পরিচ্ছেদঃ [নামাজে] হস্তদ্বয় রাখার স্থান।
২.পরিচ্ছেদঃ [নামাজে] কুনইদ্বয় রাখার স্থান।
৩.পরিচ্ছেদঃ [নামাজে] পাঞ্জাদ্বয়া রাখার স্থান।
৪.পরিচ্ছেদঃ তর্জনি ব্যতীত ডান হাতের অন্যান্য আঙ্গুল বন্ধ করা।
৫.পরিচ্ছেদঃ ডান হাতের দুআঙ্গুলি বন্ধ রাখার এবং এর মধ্যমা ও বৃদ্ধাঙ্গুলি দ্বারা গোলাকার বৃত্ত বানানো।
৬.পরিচ্ছেদঃ বাম হাত হাটুর উপর খুলে রাখা।
৭.পরিচ্ছেদঃনামাজে] তাশাহহুদ[আততাহিয়্যাতূ] আদায়কালে অঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করা।
৮.পরিচ্ছেদঃ দুআঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করার নিষেধাজ্ঞা এবং কোন আঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করিতে হইবে তার বর্ণনা
৯.পরিচ্ছেদঃ ইশারা করার সময় তর্জনি অঙ্গুলি ঝুঁকানো
১০.পরিচ্ছেদঃ [নামাজে] তর্জনি দ্বারা ইশারা করার সময় দৃষ্টি রাখার স্থান
১১.পরিচ্ছেদঃ নামাজে দোয়া করার সময় আকাশের দিকে দৃষ্টি তোলার ওপর নিষেধাজ্ঞা
১.পরিচ্ছেদঃ [নামাজে] হস্তদ্বয় রাখার স্থান।
১২৬৪. ওয়াইল ইবন হুজুর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি নাবী [সাঃআঃ]-কে দেখলেন যে, তিনি নামাজে বসে তাহাঁর বাম পা বিছিয়ে দিলেন আর তাহাঁর হস্তদ্বয় তাহাঁর উরুদ্বয়ের উপর রাখলেন এবং তর্জনি আঙ্গুলী দ্বারা ইশারা করে তদ্দারা দোয়া করিলেন।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২.পরিচ্ছেদঃ [নামাজে] কুনইদ্বয় রাখার স্থান।
১২৬৫. ওয়াইল ইবন হুজুর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমি [মনে মনে] বললাম, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নামাজের প্রতি লক্ষ্য রাখব যে, তিনি কীভাবে নামাজ আদায় করেন। একদিন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নামাজে দাড়ালেন এবং কিবলার দিকে মুখ করে তাহাঁর হস্তদ্বয় ওঠালেন এমনভাবে যে, তা তাহাঁর কর্ণদ্বয়ের বরাবর হয়ে গেল, তারপর তিনি তাহাঁর ডান হাত দ্বারা বাম হাত ধরলেন, যখন তিনি রুকু করার ইচ্ছা করিলেন তখন হস্তদ্বয় পূর্বের ন্যায় ওঠালেন এবং হস্তদ্বয় তাহাঁর হাটুর উপর রাখলেন,যখন তিনি তার মাথা রুকু হইতে ওঠালেন হস্তদ্বয়কে পূর্বের ন্যায় ওঠালেন। তারপর যখন তিনি সিজদা করিলেন, তার মাথা হস্তদ্বয়ের মধ্যস্থলে রাখলেন। পরে বসে তাহাঁর বাম পা বিছালেন ও বাম হাত বাম উরুর ওপর রাখলেন। আর তাহাঁর ডান কনুই ডান উরুর ওপর রাখলেন এবং দুআঙ্গুল দ্বারা গোলাকার বৃত্ত বানালেন। তাকে এরুপই করিতে দেখেছি। রাবী বিশর [রহঃ] তর্জনি আঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করিলেন এবং মধ্যমা ও বৃদ্ধাঙ্গুলি দ্বারা গোলাকার বৃত্ত বানালেন।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩.পরিচ্ছেদঃ [নামাজে] পাঞ্জাদ্বয়া রাখার স্থান।
১২৬৬. আলী ইবন আব্দুর রহমান [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন আমি আব্দুল্লাহ ইবন উমার [রাঃআঃ]-এর পার্শ্বে নামাজ আদায় করছিলাম, তখন আমি কংকর [সিজদার স্থান থেকে] সরালে তিনি আমাকে বলিলেন, তুমি [সিজদার স্থান থেকে] কংকর সরাবে না, কেননা তা শয়তানের কুমন্ত্রনা থেকেই হয়ে থাকে এবং তুমি করিবে যেরুপ রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে আমি করিতে দেখেছি। [আলী [রাঃআঃ]বলেন ] আমি বললাম, আপনি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে কিরুপ করিতে দেখেছেন? তিনি বলেন এরুপ। ডান পা খাড়া করিলেন ও বাম পা বিছালেন এবং তার ডান হাত তার ডান উরু ও বাম হাত বাম উরুর ঊপর রাখলেন এবং তর্জনি দ্বারা ইশারা করিলেন।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪.পরিচ্ছেদঃ তর্জনি ব্যতীত ডান হাতের অন্যান্য আঙ্গুল বন্ধ করা।
১২৬৭. আলী ইবন আব্দুর রহমান [রহঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, [আব্দুল্লাহ] ইবন উমার [রাঃআঃ] আমাকে দেখলেন যে, আমি নামাজে পাথর নিয়ে খেলা করছি। যখন তিনি সালাম ফিরালেন আমাকে [তা থেকে] নিষেধ করিলেন ও বলিলেন, তুমি সেরুপই করিবে যেরুপ তিনি অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] করিতেন। আমি বললাম, তিনি কিরুপ করিতেন? তিনি বলিলেন, যখন তিনি নামাজে বসতেন তার ডান হাত তার উরুর উপর রাখতেন ও বন্ধ করে দিতেন অর্থাৎ তার সমস্ত আঙ্গুলি এবং বৃদ্ধাঙ্গুলির সংলগ্ন আঙ্গুলি [তর্জনি] দ্বারা ইশারা করিতেন আর তার বাম হাত তার বাম উরুর উপর রাখতেন।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৫.পরিচ্ছেদঃ ডান হাতের দুআঙ্গুলি বন্ধ রাখার এবং এর মধ্যমা ও বৃদ্ধাঙ্গুলি দ্বারা গোলাকার বৃত্ত বানানো।
১২৬৮. ওয়াইল ইবন হুজুর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমি [মনে মনে] বললাম যে, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নামাজের প্রতি লক্ষ্য রাখব যে, তিনি কীভাবে নামাজ আদায় করেন। অতএব, আমি তার প্রতি লক্ষ্য রাখতে লাগলাম। পরে তিনি বর্ণনা করে বলেন, তিনি {রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]নামাজে} বসলেন এবং তাহাঁর বাম পা বিছিয়ে দিলেন ও তাহাঁর বাম হাত তাহাঁর উরুর ও বাম হাঁটুর উপর রাখলেন আর তাহাঁর ডান উরুর উপর ডান কনুই খাড়া করিলেন এবং তাহাঁর দুটি অঙ্গুলি বন্ধ রাখলেন ও [অন্য দুটির দ্বারা] গোলাকার বৃত্ত বানালেন তারপর একটি অঙ্গুলি ওঠালেন। আমি তাকে দেখলাম যে, তিনি সেই অঙ্গুলিটা নাড়াচ্ছেন আর তদ্বারা ইশারা করছেন। [সংক্ষেপিত]
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৬.পরিচ্ছেদঃ বাম হাত হাটুর উপর খুলে রাখা।
১২৬৯. [আব্দুল্লাহ] ইবন উমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন নামাজে বসতেন তাহাঁর উভয় হাত উভয় উরুর উপর রাখতেন এবং বৃদ্ধাঙ্গুলির সংলগ্ন অঙ্গুলি [তর্জনি] উপরে উঠাতেন ও তদ্দ্বারা ইশারা করিতেন আর তাহাঁর বাম হাত হাটুর উপর রাখতেন।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১২৭০. আব্দুল্লাহ ইবন যুবায়র [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] যখন দোয়া করিতেন, অঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করিতেন কিন্তু তা নাড়াতেন না। ইবন জুরায়জ [রহঃ] বলেন, হাদিসের অন্যতম রাবী আমর [রহঃ] এতটুকু বাড়িয়ে দিয়েছেন যে, আমির তার পিতা আব্দুল্লাহ ইবন যুবায়র [রাঃআঃ] থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি নাবী [সাঃআঃ]-কে অনুরুপভাবে দোয়া করিতে এবং তার বাম হাত দ্বারা তার বাম পায়ের উপর ঠেস দিতে দেখেছেন।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
৭.পরিচ্ছেদঃ [নামাজে] তাশাহহুদ[আততাহিয়্যাতূ] আদায়কালে অঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করা।
১২৭১. মাওসিলী নুমায়র খুযায়ী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমি [একদা] রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে দেখলাম যে, তিনি নামাজে তার ডান হাত তার ডান ঊরুর উপর রেখেছেন এবং অঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করিয়াছেন।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮.পরিচ্ছেদঃ দুআঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করার নিষেধাজ্ঞা এবং কোন আঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করিতে হইবে তার বর্ণনা
১২৭২. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
এক সাহাবী, সাদ [রাঃআঃ] দুঅঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করিতেন। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন তুমি এক অঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করিবে, এক অঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করিবে।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১২৭৩. সাদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] [একদিন] আমার কাছে দিয়ে গেলেন। তখন আমি আমার সমুদয় অঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করছিলাম। তিনি আমাকে বলিলেন, তুমি এক অঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করিবে, এক অঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করিবে এবং তিনি তর্জনি দ্বারা ইশারা করিলেন।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৯.পরিচ্ছেদঃ ইশারা করার সময় তর্জনি অঙ্গুলি ঝুঁকানো
১২৭৪. বসরার অধিবাসী নুমায়র খুযায়ী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে নামাজে বসা অবস্থায় ডান হাত ডান উরুর উপর রেখে তর্জনি উঁচু করে কিছুটা ঝুঁকিয়ে রেখে ইশারা করিতে দেখেছেন।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
১০.পরিচ্ছেদঃ [নামাজে] তর্জনি দ্বারা ইশারা করার সময় দৃষ্টি রাখার স্থান
১২৭৫. আব্দুল্লাহ ইবনি যুবায়র [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন তাশাহহুদ আদায় করিতে বসতেন তখন তাহাঁর বাম হাত তাহাঁর বাম উরুর উপর রাখতেন এবং তর্জনি দ্বারা ইশারা করিতেন। আর দৃষ্টি তাহাঁর ইশারা অতিক্রম করত না।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
10পরিচ্ছেদঃ নামাজে দোয়া করার সময় আকাশের দিকে দৃষ্টি তোলার ওপর নিষেধাজ্ঞা
১২৭৬. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, মুসল্লীগণ নামাজে দোয়া করার সময় আকাশের দিকে তাহাদের দৃষ্টিপাত করা থেকে বিরত থাকিবে। নতুবা তাহাদের দৃষ্টিশক্তি আল্লাহ তাআলা কেড়ে নেবেন।
নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
Leave a Reply