ইতিকাফ সম্পর্কে আলোচনা

ইতিকাফ সম্পর্কে আলোচনা

ইতিকাফ সম্পর্কে আলোচনা >> মিশকাতুল মাসাবীহ এর মুল সুচিপত্র দেখুন

পর্বঃ ৭, অধ্যায়ঃ ৯

  • অধ্যায়ঃ ৯. প্রথম অনুচ্ছেদ
  • অধ্যায়ঃ ৯. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
  • অধ্যায়ঃ ৯. তৃতীয় অনুচ্ছেদ

অধ্যায়ঃ ৯. প্রথম অনুচ্ছেদ

২০৯৭. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

[তিনি বলেন] নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাহাঁর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সবসময়ই মাসের শেষ দশদিন ইতিকাফ করিয়াছেন, তাহাঁর পরে তাহাঁর স্ত্রীগণও ইতিকাফ করিয়াছেন।

[বোখারী, মুসলিম]{১ ,{১} সহীহ : বোখারী ২০২৬, মুসলিম ১১৭২, আবু দাউদ ২৪৬২, তিরমিজি ৭৯০, আহমাদ ২৪৬১৩, দারাকুত্বনী ২৩৬৪, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৮৫৭১, ইরওয়া ৯৬৬। ইতিকাফ সম্পর্কে আলোচনা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২০৯৮. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, কল্যাণকর কাজের ব্যাপারে [দান-খয়রাত] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন মানুষের মধ্যে সবচেয়ে প্রশস্ত হৃদয়ের অধিকারী। আর তাহাঁর হৃদয়ের এ প্রশস্ততা রমাযান [রমজান] মাসে বেড়ে যেত সবচেয়ে বেশী। রমাযান [রমজান] মাসে প্রতি রাতে জিবরীল আমীন তাহাঁর সাথে সাক্ষাৎ করিতেন। তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তাঁকে কুরআন শুনাতেন। জিবরীল আমীনের সাক্ষাতের সময় তাহাঁর দান প্রবাহিত বাতাসের বেগের চেয়েও বেশী বেড়ে যেত।

[বোখারী, মুসলিম]{১}, {১} সহীহ : বোখারী ১৯০২, মুসলিম ২৩০৮, আহমাদ ৩৪২৫, সহীহ ইবনি খুযায়মাহ্ ১৮৮৯, সহীহ ইবনি হিববান ৩৪৪০, শামায়িল ৩০৩।ইতিকাফ সম্পর্কে আলোচনা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২০৯৯. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে প্রতি বছর [রমাযানে] একবার কুরআন শরীফ পড়ে শুনানো হত। তাহাঁর মৃত্যুবরণের বছর কুরআন শুনানো হয়েছিল [দুবার]। তিনি প্রতি বছর [রমাযান [রমজান] মাসে] দশ দিন ইতিকাফ করিতেন। কিন্তু ইন্তিকালের বছর তিনি ইতিকাফ করিয়াছেন বিশ দিন।

[বোখারী]{১}, {১} সহীহ : বোখারী ৪৯৯৮। ইতিকাফ সম্পর্কে আলোচনা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২১০০. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইতিকাফ করার সময় মাসজিদ থেকে আমার দিকে তাহাঁর মাথা বাড়িয়ে দিতেন। আমি মাথা আঁচড়ে দিতাম। তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] প্রাকৃতিক প্রয়োজন ছাড়া কখনো ঘরে প্রবেশ কর তেন না।

[বোখারী, মুসলিম]{১}. {১} সহীহ : বোখারী ২০২৯, মুসলিম ২৯৭, আহমাদ ২৪৫২১, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৮৫৯২। ইতিকাফ সম্পর্কে আলোচনা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২১০১. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একবার উমার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করিলেন, [হে আল্লাহর রসূল!] জাহিলিয়্যাতের যুগে আমি এক রাতে মাসজিদে হারামে ইতিকাফ করার মানৎ করেছিলাম। তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেন, তোমার মানৎ পুরা করো।

[বোখারী, মুসলিম]{১}, {১} সহীহ : বোখারী ২০৩২, মুসলিম ১৬৫৬, আহমাদ ২৫৫, সহীহ ইবনি হিববান ৪৩৮০। ইতিকাফ সম্পর্কে আলোচনা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

অধ্যায়ঃ ৯. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ

২১০২. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক রমাযানের শেষ দশকে ইতিকাফ করিতেন। কিন্তু এক বছর তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তা করিতে পারলেন না। এর পরের বছর তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বিশ দিন ইতিকাফ করিলেন।

[তিরমিজি]{১}, {১} সহীহ : তিরমিজি ৮০৩, সহীহ ইবনি খুযায়মাহ্ ২২২৭, মুসতাদারাক লিল হাকিম ১৬০১। ইতিকাফ সম্পর্কে আলোচনা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২১০৩. আবু দাউদ, ইবনি মাজাহ হইতে বর্ণীতঃ

হাদিসটি উবাই ইবনি কাব [রাদি.] হইতে বর্ণনা করিয়াছেন।{১}

{১} সহীহ : আবু দাউদ ২৪৬৩, ইবনি মাজাহ ১৭৭০, আহমাদ ২১২৭৭, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৮৫৬৪, সহীহ ইবনি হিব্বান ৩৬৬৩। ইতিকাফ সম্পর্কে আলোচনা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২১০৪. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইতিকাফ করার নিয়্যাত করলে [প্রথম] ফজরের নামাজ আদায় করিতেন। তারপর ইতিকাফের স্থানে প্রবেশ করিতেন।

[আবু দাউদ ও ইবনি মাজাহ]{১}, {১} সহীহ : আবু দাউদ ২৪৬৪, তিরমিজি ৭৯১, সহীহ ইবনি হিব্বান ৩৬৬৬, ইবনি মাজাহ ১৭৭১, সহীহ আল জামি ৪৬৫৮। ইতিকাফ সম্পর্কে আলোচনা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২১০৫. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইতিকাফ অবস্থায় হাঁটতে হাঁটতে পথের এদিক সেদিক না গিয়ে ও না দাঁড়িয়ে রোগীর অবস্থা জিজ্ঞেস করিতেন। [আবু দাউদ ও ইবনি মাজাহ]{১}

{১} জইফ : আবু দাউদ ২৪৭২, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৮৫৯৫, জইফ আল জামি ৪৫৮৯। কারণ এর সানাদে লায়স ইবনি আবু সুলায়ম একজন দুর্বল রাবী। হাফেয ইবনি হাজার [রাহিমাহুল্লাহ] তার সম্পর্কে বলেন, তিনি একজন সত্যবাদী রাবী। কিন্তু শেষ দিকে স্মৃতিশক্তি এলোমেলো হওয়ায় নিজের হাদিস নিরূপণ করিতে পারতেন না। ফলে তিনি মাতরূক হয়েছেন। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

২১০৬. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, ইতিকাফকারীর জন্য এ নিয়ম পালন করা জরুরী- [১] সে যেন কোন রোগী দেখিতে না যায়। [২] কোন জানাযায় শারীক না হয়। [৩] স্ত্রী সহবাস না করে। [৪] স্ত্রীর সাথে ঘেঁষাঘেষি না করে। [৫] প্রয়োজন ছাড়া কোন কাজে বের না হয়। [৬] সওম ছাড়া ইতিকাফ না করে এবং [৭] জামি মাসজিদ ছাড়া যেন অন্য কোথাও ইতিকাফে না বসে। [আবু দাউদ]{১}

{১} হাসান সহীহ : আবু দাউদ ২৪৭৩, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৮৫৯৪। এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান সহীহ

অধ্যায়ঃ ৯. তৃতীয় অনুচ্ছেদ

২১০৭. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইতিকাফ করার সময় তাহাঁর জন্য মাসজিদে বিছানা পাতা হত। সেখানে তাহাঁর জন্য তাওবার খুঁটির পেছনে খাট লাগানো হত।

[ইবনি মাজাহ]{১}, {১} হাসান : ইবনি মাজাহ ১৭৭৪, সহীহ ইবনি খুযায়মাহ্ ২২৩৬, তারাজুআতুল আলবানী ৩২। এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান হাদিস

২১০৮. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইতিকাফকারী সম্পর্কে বলেছেন যে, ইতিকাফকারী ঐ ব্যক্তির ন্যায় যে বাইরে থেকে সকল নেক কাজ করে, গুনাহ হইতে বেঁচে থাকে-তার জন্য নেকী লেখা হয়।

[ইবনি মাজাহ]{১}, {১} জইফ : ইবনি মাজাহ ১৭৮১, শুআবুল ঈমান ৩৬৭৮। কারণ এর সানাদে উবায়দাহ্ ইবনি বিলাল একজন মাজহূল রাবী আর ফারকদ ইবনি ইয়াকূব আস্ সাবাখী একজন দুর্বল রাবী। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply