লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস
লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস >> মিশকাতুল মাসাবীহ এর মুল সুচিপত্র দেখুন
পর্বঃ ৭, অধ্যায়ঃ ৮
- অধ্যায়ঃ ৮. প্রথম অনুচ্ছেদ
- অধ্যায়ঃ ৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
- অধ্যায়ঃ ৮. তৃতীয় অনুচ্ছেদ
অধ্যায়ঃ ৮. প্রথম অনুচ্ছেদ
২০৮৩. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কদর রজনীকে রমাযান [রমজান] মাসের শেষ দশ দিনের বেজোড় রাতে অনুসন্ধান করো।
[বোখারী]{১}, {১} সহীহ : বোখারী ২০১৭, মুসলিম ১১৬৯, তিরমিজি ৭৯২, ইবনি আবী শায়বাহ্ ৮৬৬০, আহমাদ ২৪৪৪৫, ২৪২৯২, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৮৫৩১, ৮৫২৭, সহীহাহ্ ৩৬১৬, সহীহ আল জামি ২৯২২।লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
২০৮৪. আবদুল্লাহ ইবনি উমার হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথীদের কয়েক ব্যক্তিকে লায়লাতুল কদর [রমাযান [রমজান] মাসের] শেষ সাতদিনে স্বপ্নে দেখানো হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি দেখছি তোমাদের সকলের স্বপ্ন শেষ সাত রাতের ব্যাপারে এক। তাই তোমাদের যে ব্যক্তি কদর রজনী পেতে চাও সে যেন [রমাযান [রমজান] মাসের] শেষ সাত রাতে তা খুঁজে।
[বোখারী, মুসলিম]{১}, {১} সহীহ : বোখারী ২০১৫, মুসলিম ১১৬৫, মুয়াত্ত্বা মালিক ১১৪৪, আহমাদ ৪৪৯৯, মুজামুল আওসাত ৩৮৩, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৮৫৪৪, সহীহ ইবনি হিববান ৩৬৭৫, সহীহ আল জামি ৮৬৭। লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
২০৮৫. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা লায়লাতুল কদরকে রমাযান [রমজান] মাসের শেষ দশকে সন্ধান করো। লায়লাতুল কদর হলো নবম রাতে [অর্থাৎ- একুশতম রাতে], বাকী দিন হলো সপ্তম রাতে [সেটা হলো তেইশতম রাত], আর অবশিষ্ট থাকল পঞ্চম রাত [আর তা হলো পঁচিশতম] রাত।
[বোখারী]{১}, {১} সহীহ : বোখারী ২০২১, আবু দাউদ ১৩৮১, আহমাদ ২৫২০, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৮৫৩৩, শুআবুল ঈমান ৩৪০৭, সহীহ আল জামি ১২৪৪। লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
২০৮৬. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমাযানের প্রথম দশ দিনে ইতিকাফ করিয়াছেন। তারপর তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] একটি তুর্কী ছোট তাঁবুতে ইতিকাফ করিয়াছেন মধ্যের দশ দিন। অতঃপর তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তাহাঁর মাথা [তাঁবুর বাইরে] বের করে বলেছেন, আমি কদর রজনী সন্ধান করার জন্য প্রথম দশ দিনে ইতিকাফ করেছি। তারপর করেছি মাঝের দশ দিনে। তারপর আমার কাছে তিনি এসেছেন। মালাক [ফেরেশতা] আমাকে বলেছেন, লায়লাতুল কদর রমাযানের শেষ দশ দিনে। অতএব যে আমার সাথে ইতিকাফ করিতে চায় সে যেন শেষ দশ দিনে করে। আমাকে স্বপ্নে কদর রজনী নির্দিষ্ট করে দেখিয়েছেন। তারপর তা আমাকে ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে [অর্থাৎ- জিবরীল [আঃ] আমাকে বললেন, অমুক রাতে শবে কদর। তারপর তা কোন্ রাত আমি ভুলে গিয়েছি]।
[স্বপ্নে] নিজেকে দেখলাম যে, আমি এর ভোরে [অর্থাৎ- লায়লাতুল কদরের ভোরে] কাদামাটিতে সাজদাহ্ করছি। যেহেতু আমি ভুলে গিয়েছি সেটা কোন্ রাত ছিল। তাই এ রাতকে [রমাযানের] শেষ দশ দিনের মধ্যে সন্ধান করো। তাছাড়াও লায়লাতুল কদরকে বেজোড় রাতে অর্থাৎ- শেষ দশের বেজোড় রাতে সন্ধান করো। বর্ণনাকারী বলেন, [যে রাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বপ্নে দেখেছিলেন] সে রাতে বৃষ্টি হয়েছিল। মাসজিদের ছাদ খেজুরের ডালপাতার হওয়ায় একুশতম রাতের সকালে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কপালে পানি ও মাটির চিহ্ন ছিল। [এ হাদিস বর্ণনার ব্যাপারে অর্থের দিক দিয়ে বোখারী ও মুসলিম একমত। অবশ্য এ পর্যন্ত বর্ণনার শব্দগুলো ঈমাম মুসলিম উদ্ধৃত করিয়াছেন। আর রিওয়ায়াতের বাকী শব্দগুলো উদ্ধৃত করিয়াছেন ঈমাম বোখারী।]{১} {১} সহীহ : বোখারী ২০২৭, মুসলিম ১১৬৭, সহীহ ইবনি খুযায়মাহ্ ২২১৯, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৮৫৬৭, সহীহ ইবনি হিব্বান ৩৬৮৪। লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
২০৮৭. আবদুল্লাহ ইবনি উনায়স [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
সে বর্ণনা ২১তম রাতের সকালের স্থলে ২৩তম রাতের সকালে শব্দটি আছে।
[মুসলিম]{১}, {১} সহীহ : মুসলিম ১১৬৮, আহমাদ ১৬০৪৫, সহীহাহ্ ৩৯৮৫। লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
২০৮৮. যির ইবনি হুবায়শ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি উবাই ইবনি কাবকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনার [দীনী] ভাই আবদুল্লাহ ইবনি মাস্ঊদ বলেন, যে ব্যক্তি গোটা বছর ইবাদাত করার জন্য রাত জাগরণ করিবে, সে কদর রজনী পাবে। উবাই ইবনি কাব বললেন, আল্লাহ তাআলা ইবনি মাসউদ এর ওপর রহম করুন। তিনি এ কথাটা এজন্য বলেছেন, যেন মানুষ ভরসা করে বসে না থাকে। নতুবা তিনি তো জানেন যে, কদর রমাযান [রমজান] মাসেই আসে। আর রমাযান [রমজান] মাসের শেষ দশ দিনের এক রাতে কদর রজনী হয়। সে রাতটা সাতাশতম রাত। এদিকে উবাই ইবনি কাব কসম করিয়াছেন এবং ইনশা-আল্ল-হ বলা ছাড়াই বলেছেন, নিঃসন্দেহে কদর রাত [রমাযানের] সাতাশতম রাত। আমি আরয করলাম, হে আবুল মুনযির [উবাই-এর ডাক নাম]! কিসের ভিত্তিতে আপনি এ কথা বলেছেন? তিনি বললেন, ঐ আলামাত ও আয়াতের ভিত্তিতে, যা আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন। [তিনি বলেছেন], ঐ রাতের সকালে সূর্য উদয় হবে, কিন্তু এতে কিরণ বা আলো থাকিবে না।
[মুসলিম]{১}, {১} সহীহ : মুসলিম ৭৬২। লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
২০৮৯. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমাযান [রমজান] মাসের শেষ দশ দিনে যত ইবাদাত বন্দেগী [মুজাহাদাহ্] করিতেন এতো আর কোন মাসে করিতেন না।
[মুসলিম]{১}, {১} সহীহ : মুসলিম ১১৭৫, তিরমিজি ৭৯৬, ইবনি মাজাহ ১৭৬৭, আহমাদ ২৬১৮৮, সহীহ ইবনি খুযায়মাহ্ ২২১৫, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৮৪৬১, সহীহাহ্ ১১২৩, সহীহ আল জামি ৪৯১০। লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
২০৯০. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমাযানের শেষ দশ দিন এলে ইবাদাতের জন্য জোর প্রস্তুতি নিতেন। রাত জেগে থাকতেন, নিজের পরিবার-পরিজনকে জাগিয়ে দিতেন।
[বোখারী, মুসলিম]{১}, {১} সহীহ : বোখারী ২০২৪, মুসলিম ১১৭৪, সহীহ আল জামি ৪৭১৩, আবু দাউদ ১৩৭৬, নাসায়ী ১৬৩৯, ইবনি মাজাহ ১৭৬৮, আহমাদ ২৪১৩১, সহীহ ইবনি খুযায়মাহ্ ২২১৪, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৮৪৬০, ইবনি হিববান ৩৪৩৭। লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
অধ্যায়ঃ ৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
২০৯১. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে বলে দিন, যদি আমি কদর রাত পাই, এতে আমি কী দুআ করব? তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেনঃ তুমি বলবে,
اَللّٰهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعَفُ عَنِّىْ
আল্ল-হুম্মা ইন্নাকা আফুব্বুন, তুহিব্বুল আফ্ওয়া, ফাফু আন্নী [অর্থাৎ- হে আল্লাহ! তুমিই ক্ষমাকারী। আর ক্ষমা করাকে তুমি পছন্দ করো। অতএব তুমি আমাকে মাফ করে দাও।]
[আহমদ, ইবনি মাজাহ, তিরমিজি; আর ঈমাম তিরমিজি এটিকে সহীহ বলেছেন]{১}, {১} সহীহ : তিরমিজি ৩৫১৩, ইবনি মাজাহ ৩৮৫০, আহমাদ ২৫৩৮৪, মুসতাদারাক লিল হাকিম ১৯৪২, সহীহাহ্ ৩৩৩৭, সহীহ আল জামি ৩৩৯১। লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
২০৯২. আবু বাকরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলিতে শুনিয়াছি, তোমরা লায়লাতুল কদরকে [রমাযান [রমজান] মাসের] অবশিষ্ট নবম রাতে, অর্থাৎ- ২৯তম রাতে; অথবা অবশিষ্ট সপ্তম রাতে, অর্থাৎ- ২৭তম রাতে; অথবা অবশিষ্ট পঞ্চম রাতে, অর্থাৎ- ২৫তম রাতে; অথবা অবশিষ্ট তৃতীয় রাতে, অর্থাৎ- ২৩তম রাতে; অথবা শেষ রাতে খোঁজ করো।
[তিরমিজি]{১}, {১} সহীহ : তিরমিজি ৭৯৪, সহীহ ইবনি খুযায়মাহ্ ২১৭৫, সহীহ আল জামি ১২৪৩। লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
২০৯৩. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে লায়লাতুল কদর সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে, তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেন, তা প্রত্যেক রমাযানে আসে।
[আবু দাউদ। ঈমাম আবু দাউদ বলেন, সুফ্ইয়ান ও শুবাহ্ আবু ইসহাক হইতে, তিনি মাওকূফ হিসেবে এ হাদিসটি ইবনি উমার হইতে বর্ণনা করিয়াছেন।]{১}{১} জইফ : তবে সঠিক হলো তা মাওকূফ। আবু দাউদ ১৩৮৭, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৮৫২৬, জইফ আল জামি ৬১০২। কারণ এর সানাদে আবু ইসহাক একজন মুখতালাত্ব রাবী। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
২০৯৪. আবদুল্লাহ ইবনি উনায়স [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বললাম, হে আল্লাহর রসূল! গ্রামে-গঞ্জে আমার বাড়ী। ওখানেই আমি বসবাস করি। আলহামদুলিল্লাহ্ ওখানেই নামাজও আদায় করি। অতএব রমাযানের একটি নির্দিষ্ট রাতের কথা বলে দিন, [যে রাতে আমি সে রাত খুঁজতে] আপনার এ মাসজিদে আসতে পারি। এ কথা শুনে তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেনঃ আচ্ছা তুমি তবে [রমাযান [রমজান] মাসের] ২৩ তারিখ দিবাগত রাতে এসো। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর কেউ তাহাঁর ছেলেকে জিজ্ঞেস করিল, আপনার পিতা তখন কি করিতেন? ছেলে উত্তরে বলিল, তিনি আসরের নামাজ আদায়ের সময় মাসজিদে প্রবেশ করিতেন ফজরের নামাজ আদায়ের আগে [প্রাকৃতিক প্রয়োজন ছাড়া] কোন কাজে বের হইতেন না। ফজরের নামাজ শেষে মাসজিদের দরজায় নিজের বাহনটি প্রস্তুত পেতেন। এরপর বাহনটিতে বসতেন এবং নিজের গ্রামে চলে যেতেন
। [আবু দাউদ]{১}, এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান সহীহ
অধ্যায়ঃ ৮. তৃতীয় অনুচ্ছেদ
২০৯৫. উবাদাহ্ ইবনুস্ সামিত [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার আমাদেরকে লায়লাতুল কদরের খবর দেবার জন্য [মাসজিদে নাবাবীর হুজরা থেকে] বের হলেন। এ সময় মুসলিমদের দু ব্যক্তি ঝগড়া শুরু করিল। [এ অবস্থা দেখে] তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেনঃ আমি তোমাদেরকে লায়লাতুল কদর সম্পর্কে খবর দিতে বের হয়েছিলাম। কিন্তু অমুক অমুক ব্যক্তি ঝগড়া বিবাদে লিপ্ত হলো। ফলে [লায়লাতুল কদরের খবর আমার মন হইতে] উঠিয়ে নেয়া হলো। বোধ হয় [ব্যাপারটি] তোমাদের জন্য কল্যাণকর হয়েছে। তাই তোমরা লায়লাতুল কদরকে [রমাযানের] ২৯, ২৭ কিংবা ২৫-এর রাতে খোঁজ করিবে।
[বোখারী]{১}, {১} সহীহ : বোখারী ২০২৩, দারিমী ১৮২২, সহীহ ইবনি খুযায়মাহ্ ২১৯৮, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৮৫৫০, শুআবুল ঈমান ৩৪০৫। লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
২০৯৬. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ লায়লাতুল কদর শুরু হলে জিবরীল আমীন মালায়িকাহ্র [ফেরেশতাগণের] দলবলসহ [পৃথিবীতে] নেমে আসেন। তাঁরা দাঁড়িয়ে বা বসে থাকা আল্লাহর স্মরণকারী আল্লাহর প্রত্যেক বান্দার জন্য দুআ করিতে থাকেন। এরপর ঈদুল ফিতরের দিন এলে আল্লাহ তাআলা মালায়িকার কাছে তাহাঁর বান্দাদের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেন, হে আমার মালায়িকাহ্ [ফেরেশতা]! বলো দেখি সে প্রেমিকের কী পুরস্কার হইতে পারে যে নিজ কাজ সম্পাদন করেছে? মালায়িকাহ্ [ফেরেশতা] বলেন, হে আমাদের রব! তার পারিশ্রমিক পরিপূর্ণভাবে দিয়ে দেয়াই হচ্ছে তার পুরস্কার। তখন আল্লাহ বলেন, আমার মালায়িকাহ্ [ফেরেশতা]! আমার বান্দা ও বান্দীগণ তাদের ওপর আমার অর্পিত দায়িত্ব পালন করেছে। আজ [ঈদের দিন] আমার নিকট দুআর ধ্বনি দিতে দিতে ঈদগাহের দিকে ধাবিত হচ্ছে। আমার ইজ্জতের, বড়ত্বের, উঁচু শানের কসম! জেনে রাখো তাদের দুআ আমি নিশ্চয়ই কবূল করব। এরপর আল্লাহ বলেন, আমার [বান্দাগণ]! আমি নিশ্চয়ই তোমাদের সকল অপরাধ মাফ করে দিলাম। তোমাদের গুনাহখাতাগুলোকে নেক কাজে পরিবর্তন করে দিলাম। তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেন, অতঃপর তারা ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়ে বাড়ী ফিরে যায়।
[বায়হাক্বী- শুআবুল ঈমান]{১},{১} মাওযূ : শুআবুল ঈমান ৩৪৪৪। কারণ এর সানাদে আসরম ইবনি হাওশাব আল হামাদানী রয়েছেন, ইয়াহ্ইয়া [রাহিমাহুল্লাহ] তাকে মিথ্যাবাদী বলেছেন। বোখারী, মুসলিম ও নাসায়ী [রাহিমাহুল্লাহ] মাতরূক বলেছেন। দারাকুত্বনী [রাহিমাহুল্লাহ] তাকে মুনকার বলেছেন। ইবনি হিব্বান [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য রাবীর বর্ণিত হাদিসের বিপরীতে হাদিস জাল করিতেন। এই হাদিসটির তাহকীকঃ জাল হাদিস
Leave a Reply