কোন কোন জিনিসের যাকাত দিতে হয়
কোন কোন জিনিসের যাকাত দিতে হয় >> মিশকাতুল মাসাবীহ এর মুল সুচিপত্র দেখুন
পর্বঃ ৬, অধ্যায়ঃ ২
- অধ্যায়ঃ ২. প্রথম অনুচ্ছেদ
- অধ্যায়ঃ ২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
- অধ্যায়ঃ ২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ
অধ্যায়ঃ ১. প্রথম অনুচ্ছেদ
১৭৯৪. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন,রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ পাঁচ ওয়াসাকের কম খেজুর থাকলে যাকাত ওয়াজিব হয়না। পাঁচ উকিয়ার কম রূপায় যাকাত বাধ্যতামূলক নয়। কিংবা পাঁচটির কম উট থাকলেও যাকাত ওয়াজিব হয় না।
[বোখারী,মুসলিম] {১},{১} সহীহ : বোখারী ১৪৫৯, মুসলিম ৯৮০, আবু দাউদ ২৪৭৪, মুয়াত্ত্বা মালিক ৮৩৩, মুসান্নাফ ইবনি আবী শায়বাহ্ ৭২৫৮, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৭২৪৩, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৫৬৯। কোন কোন জিনিসের যাকাত দিতে হয় -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১৭৯৫. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন,রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ গোলাম ও ঘোড়ার জন্য মালিক মুসলিমকে যাকাত দিতে হবে না। আর এক বর্ণনায় রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ গোলামের যাকাত দেয়া কোন মুসলিমের জন্য ওয়াজিব নয়। তবে সদাক্বায়ে ফিত্র দেওয়া ওয়াজিব।
[বোখারী,মুসলিম] {১}, {১} সহীহ : বোখারী ১৪৬৪, মুসলিম ৯৮২, ২৪৭২। কোন কোন জিনিসের যাকাত দিতে হয় -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১৭৯৬. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন,আবু বাক্র সিদ্দীক্ব [রাদি.] যখন তাঁকে বাহরাইনের শাসনকর্তা নিয়োগ দিয়ে পাঠান তখন এ নির্দেশনামাটি লিখে দিয়েছিলেন,বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম। এ চিঠি ফরজ সদাক্বাহ অর্থাৎ যাকাত সম্পর্কে। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এটি মুসলিমদের ওপর ফার্য করিয়াছেন এবং এটিকে জারী করার জন্য আল্লাহ তাআলা তাহাঁর রসূলকে নির্দেশ দিয়েছেন। এ প্রেক্ষিতে মুসলিম কোন ব্যক্তির কাছে নিয়মানুযায়ী যাকাত চাওয়া হলে সে যেন তা আদায় করে। আর কোন ব্যক্তির নিকট নিয়ম ভেঙ্গে যাকাত চাওয়া হলে সে যেন [বেশী যাকাত] না দেয়। চব্বিশ ও চব্বিশের কম উটের যাকাত হবে বকরী। প্রতি পাঁচ উটে একটি বকরী দিতে হবে। [পাঁচটি উটের কম হলে যাকাত দিতে হবে না। পাঁচ থেকে নয় উটে এক বকরী। দশ থেকে চৌদ্দটি হলে দুটি বকরী। পনের হইতে ঊনিশে তিনটা বকরী। আর বিশ থেকে চব্বিশ পর্যন্ত চারটি বকরী। উটের সংখ্যা পঁচিশ থেকে পয়ত্রিশ পর্যন্ত এক বছরের মাদি উট [বিনতে মাখায] যাকাত দিতে হবে। উটের সংখ্যা ছত্রিশ থেকে পঁয়তাল্লিশ হলে একটু দুবছরের মাদী উট [বিনতে লাবুন] যাকাত দিতে হবে। ছেচল্লিশ থেকে ষাট পর্যন্ত উটে নরের সাথে মিলনের যোগ্য একটি তিন বছরের মাদী উট [হিক্কাহ] দিতে হবে। উটের সংখ্যা একষট্টি থেকে পঁচাত্তর পর্যন্ত পৌঁছালে চার পেরিয়ে পাঁচ বছরে পা দিয়েছে এমন একটি মাদী উট [জাযাআহ] দিতে হবে। উটের সংখ্যা ছিয়াত্তর থেকে নব্বই পৌঁছে গেলে দুটি দুবছরের উটনী [বিনতু লাবুন] যাকাত লাগবে। একানব্বই হইতে একশত বিশ পর্যন্ত উটে তিন বছর বয়সী নরের সাথে মিলনের যোগ্য দুটি উট [হিক্কাতানে]। একশবিশ ছাড়ালে প্রতি চল্লিশ উটে দুবছরের একটি মাদি উট [বিনতু লাবুন] ও পঞ্চাশটি করে বাড়লে পুরা তিন বছর বয়সী উট যাকাত দিতে হবে। যার নিকট শুধু চারটি উট আছে তার যাকাত লাগবে না। অবশ্য মালিক চাইলে,নাফল সদাকাহ কিছু দিতে পারে। উটের সংখ্যা পাঁচ হলে একটি বকরী যাকাত দিতে হবে। আর চার বছরের মাদী উট নিসাবে পৌঁছে গেলে [৬১-৭৫] এবং তা তাহাঁর নিকট না থাকলে,তিন বছর বয়সী উট [অর্থাৎ একষট্টি থেকে পঁচাত্তর পর্যন্ত উটের সংখ্যার যাকাত] দিতে হবে। এর সাথে বাড়তি দুটি বকরী দিবে যদি সহজসাধ্য হয়। অথবা বিশ দিরহাম দিয়ে দিবে। চার বছর পার হয়ে ও পাঁচ বছরে পদার্পণ করা উটের যাকাত দিতে হবে। কিন্তু তাহাঁর তিন বছর বয়সী মাদী উট থাকলে সেটাই যাকাত হিসেবে গ্রহণ করা হবে। কিন্তু যাকাত গ্রহণকারী প্রদানকারীকে বিশ দিরহাম অথবা দুটি বকরী ফেরত দিবে। কোন ব্যক্তির নিকট দুবছরের উট থাকলে তার যাকাত দিতে হবে। যদি তার কাছে না থেকে এক বছরের উট থাকে। তবে থেকে এক বছরের উটই যাকাত হিসেবে গ্রহণ করা হবে। যাকাত আদায়কারী এর সাথে আরো বিশ দিরহাম অথবা দুটি বকরী আদায় করিবে। যে ব্যক্তির যাকাত হিসেবে একটি এক বছরের উট ওয়াজিব আছে কিন্তু তার কাছে তা নেই। বরং দুবছরের উট [ইবনি লাবুন] থাকে,তার থেকে তাই গ্রহণ করিতে হবে। তবে এ অবস্থায় অন্যকিছু ওয়াজিব হবে না।
আর পালিত বকরীর ক্ষেত্রে বকরীর সংখ্যা চল্লিশ হইতে শুরু করে একশত বিশ পর্যন্ত হলে একটি বকরী যাকাত দিতে হবে। একশ বিশ হইতে দুশ পর্যন্ত দুটি বকরী। আর দুশ হইতে তিনশ বকরীর জন্য তিনটি বকরী। তিনশর বেশী হলে,প্রত্যেক একশটি বকরীর জন্য একটি বকরী যাকাত দিতে হবে। যার নিকট পালিত বকরী চল্লিশ থেকে একটিও কম হবে তার উপর যাকাত ওয়াজিব নয়। তবে মালিক ইচ্ছা করলে নাফল সদাকাহ হিসেবে কিছু দিতে পারে। যাকাতের মাল যেন [উট,গরু,ছাগল] অতিবৃদ্ধ,ত্রুটিযুক্তি না হয়। যাকাত উসূলকারী গ্রহণ করিতে চাইলে জায়িয। বিভিন্ন পশুকে এক জায়গায় একত্র না করা উচিত। যাকাত দেবার ভয়ে পশুকে পৃথক পৃথক রাখাও ঠিক না। যদি যাকাতের নিসাবে দুব্যক্তি যৌথভাবে শরীক হয়,তাহলে সমানভাবে ভাগ করে নেয়া উচিত। আর রূপার ক্ষেত্রে চল্লিশ ভাগের একভাগ যাকাত ওয়াজিব। কোন ব্যক্তি একশত নব্বই দিরহামের মালিক হলে [যা নিসাব হিসেবে গণ্য নয়] তার উপর কিছু ফারয হবে না। তবে নফল সদাকাহ হিসেবে কিছু দিতে পারে।
[বোখারী],{১},{১} সহীহ : বোখারী ১৪৪৮, ১৪৫০, ১৪৫১, ১৪৫৩, ১৪৫৪, ১৪৫৫, দারাকুত্বনী ১৯৮৪, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৭৩৮৮। কোন কোন জিনিসের যাকাত দিতে হয় -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১৭৯৭.আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে স্থান আকাশের অথবা প্রবাহিত কূপের পানিতে সিক্ত হয় অথবা যা নালার পানিতে তরতাজা হয়,তাতে উশর [১০ভাগের ১ভাগ] আদায় করিতে হবে। আর যে সব ফসল সেঁচের মাধ্যমে উৎপাদিত হয় তাতে নিস্ফে উশর [২০ভাগের ১ভাগ] আদায় করিতে হবে
।[বোখারী] {১},{১} সহীহ : বোখারী ১৪৮৩, আবু দাউদ ১৫৯৬, আত তিরমিজি ৬৪০, নাসায়ী ২৪৮৮, ইবনি মাজাহ ১৮১৬, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৭৪৮৫, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৫৮০, ইরওয়া ৭৯৯। কোন কোন জিনিসের যাকাত দিতে হয় -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১৭৯৮.আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুল [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোনও জানোয়ার [যেমন-ঘোড়া,গরু,মহিষ ইত্যাদি] কাউকে আহত করলে তা মাফ। কূপ খনন করিতে কেউ মারা গেলে তাতে মালিকের ওপর ক্ষতিপূরণ মাফ। তেমনি খনি খনন করিতে কেউ মারা গেলেও মালিকের দোষ মাফ। আর রিকাযে এক-পঞ্চমাংশ অংশ দেয়া ওয়াজিব।
[বোখারী, মুসলিম] {১}, {১} সহীহ : বোখারী ৬৯১২, আবু দাউদ ৪৫৯৩, আত তিরমিজি ৬৪২, নাসায়ী ২৪৯৫, ইবনি আবী শায়বাহ্ ২৭৩৭৪, আহমাদ ৭২৫৪, দারিমী ২৪২২, মুসলিম ১৭১০। কোন কোন জিনিসের যাকাত দিতে হয় -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
অধ্যায়ঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
১৭৯৯. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলাল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমি ঘোড়া ও গোলামের যাকাত মাফ করে দিয়েছি। তোমরা ৪০ দিরহাম রূপায় ১ দিরহাম রূপা যাকাত আদায় কর [যদি রুপার নিসাবের পরিমান ২০০ দিরহাম হয়]। কারণ-১৯০ দিরহাম পর্যন্ত বা ২০০ দিরহামের কম রুপার যাকাত ফার্য হয়না। ২০০ দিরহাম রুপা হলে ৫ দিরহাম যাকাত দিতে হবে। তিরমিজি, আবু দাউদ; আবু দাউদ হারিসুল আওয়ার হইতে আলীর এ বর্ণনাটি নকল করিয়াছেন যে, যুহায়র বলেছেন, আলী নাবি [সাঃআঃ] এর বরাতে বলেছেন, ৪০ দিরহামে ১ দিরহাম [৪০ ভাগের ১ ভাগ] আদায় করো। আর ২০০ দিরহাম পূর্ণ না হলে কোন কিছু আদায় করা ওয়াজিব নয়। ২০০ দিরহাম পুরা হলে তার মধ্যে ৫ দিরহাম যাকাত ওয়াজিব হবে।
আর বকরীর নিসাব প্রত্যেক ৪০ টিতে ১ টি বকরীর যাকাত ওয়াজিব। ১২০ টি বকরী পর্যন্ত চলবে। সংখ্যায় এর চেয়ে ১ টি বেড়ে গেলে ২০০ পর্যন্ত ২টি বকরী যাকাত হবে। আবার ২০০ হইতে ১টি বেড়ে গেলে ৩০০ পর্যন্ত ৩টি বকরী যাকাত হবে। আর ৩০০ হইতে বেশি হলে [অর্থাৎ ৪০০ হলে] প্রত্যেক ১০০ বকরীতে ১টি করে বকরী যাকাত দেয়া ওয়াজিব। যদি কারো নিকট নিসাব সংখ্যক বকরী না থাকে অর্থাৎ ৩৯ টি থাকে তাহলে যাকাত দিতে হবে না।
আর গরুর যাকাতের নিসাব হল, প্রত্যেক ৩০ টি গরুতে ১ বছরের ১ টি গরু, আর ৪০ টি গরু হলে ২ বছর বয়সের ১ টি গরু যাকাত হিসেবে দেয়া ওয়াজিব। চাষাবাদ ও আরোহণের কাজে ব্যবহৃত গরুর কোন যাকাত নেই।{১}
{১} সহীহ : আবু দাউদ ১৫৭২, ১৪৭৪, আত তিরমিজি ১৫৭৪। কোন কোন জিনিসের যাকাত দিতে হয় -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১৮০০.মুআয [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন,নবী [সাঃআঃ] তাঁকে প্রশাসক বানিয়ে ইয়ামানে পাঠাবার সময় এ হুকুম দিয়েছিলেন,প্রত্যেক ৩০টি গরুতে ১ বছর বয়সী ১ টি গরু এবং প্রত্যেক ৪০ টি গরুতে দুবছর বয়সী ১ টি গরু যাকাত হিসেবে উসুল করিবে।
[আবু দাউদ, তিরমিজি, নাসায়ী, দারিমী] {১}, {১} সহীহ : আবু দাউদ ১৫৭৬, আত তিরমিজি ৬২৩, নাসায়ী ২৪৫০। কোন কোন জিনিসের যাকাত দিতে হয় -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১৮০১. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ [নিসাবের চেয়ে] বেশী যাকাত গ্রহণকারী যাকাত অস্বীকারকারীর সমান [অর্থাৎ যাকাত না দেয়া যেমন গুনাহ তেমনি পরিমাণের চেয়ে বেশি যাকাত উসুল করাও গুনাহ
[আবু দাউদ, তিরমিজি] {১}, {১} হাসান সহীহ : আত তিরমিজি ৬৪৬, আবু দাউদ ১৫৮৫, ইবনি মাজাহ ১৮০৮, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৭২৮০, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৫৯৭, সহীহ আত তারগীব ৭৮৫, সহীহ আল জামি আস্ সগীর ৬৭১৯।এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান সহীহ
১৮০২. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ শস্য ও খেজুর ৫ ওয়াসাক পরিমাণ না হওয়া পর্যন্ত যাকাত ওয়াজিব হবে না।
[নাসায়ী] {১}, {১} সহীহ : মুসলিম ৯৭৯, নাসায়ী ২৪৮৫, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৭৪৭০, ইরওয়া ৩/৮০১। কোন কোন জিনিসের যাকাত দিতে হয় -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১৮০৩. মূসা ইবনি ত্বলহাহ্ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমাদের কাছে মুআয এর ওই চিঠি বিদ্যমান আছে,যা নবী [সাঃআঃ] তার কাছে পাঠিয়েছিলেন। বস্তুত মুআয বর্ণনা করিয়াছেন,নবী [সাঃআঃ] তাঁকে গম,যব, আঙ্গুর ও খেজুরের যাকাত উসুল করিতে আদেশ করিয়াছেন।
[এ হাদিসটি মুরসাল, শারহে সুন্নাতে বর্ণনা করা হয়েছে]{ {১},{১} সহীহ : আহমাদ ২১৪৮৪, ইরওয়া ৮০১, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৫৮০। কোন কোন জিনিসের যাকাত দিতে হয় -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১৮০৪.আত্তাব ইবনি আসীদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন,নবী [সাঃআঃ] আঙ্গুরের যাকাতের ব্যাপারে বলেছেন,আঙ্গুরের ব্যাপারে এভাবে আন্দাজ অনুমান করিতে হবে যেভাবে খেজুরের ব্যাপারে শুকিয়ে গেলে করা হয়। তারপর আঙ্গুর শুকিয়ে গেলে তার যাকাত আদায় করিতে হবে। যেভাবে খেজুরের যাকাত আদায় করা হয়।
[তিরমিজি, আবু দাউদ] {১};{১} জইফ : আবু দাউদ ১৬০৩, আত তিরমিজি ৬৪৪, মুসনাদ আশ শাফিঈ ৬৬১, ইবনি খুযায়মাহ্ ২৩১৬, সহীহ ইবনি মাজাহ ৩২৭৯, দারাকুত্বনী ২০৪৬, মুসতাদরাক লিল হাকিম ৬৫২৫। কারণ সানাদে বিচ্ছিন্নতা রয়েছে। সাঈদ আত্তাব হইতে শ্রবণ করেননি।এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
১৮০৫.সাহল ইবনি আবু হাস্মাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] প্রায়ই বলিতেন, তোমরা যখন [আঙ্গুর অথবা খেজুরের যাকাত আন্দাজ অনুমান করিবে] তখন এর দুই-তৃতীয়াংশ নিয়ে নিবে। আর এক-তৃতীয়াংশ ছেড়ে দিবে। যদি এক-তৃতীয়াংশ দিতে না পার তাহলে অন্ততঃ এক-চতুর্থাংশ দিবে।
[তিরমিয], আবু দাউদ, নাসায়ী] {১},{১} জইফ : আবু দাউদ ১৬০৫, আত তিরমিজি ৬৪৩, নাসায়ী ২৪৯১, সহীহ ইবনি খুযায়মাহ্ ২৩১৯, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৭৪৪৩, জইফ আল জামি আস্ সগীর ৪৭৬। আলবানী [রাহিমাহুল্লাহ] বলেছেন, এ সানাদে রাবী আবদুর রহমান ইবনি মাসউদ ইবনি নাইয়্যার সম্পর্কে হাফিয যাহাবী [রাহিমাহুল্লাহ] বলেছেন, সে একজন অপরিচিত রাবী।এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
১৮০৬.আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] আব্দুল্লাহ ইবনি রওয়াহাকে [খায়বারের] ইয়াহুদীদের কাছে পাঠাতেন। তিনি সেখানে গিয়ে খেজুরের পরিমাণ অনুমান করিতেন। তখন তা মিষ্টি হত,কিন্তু খাবার উপযুক্ত হত না।
[আবু দাউদ] {১},{১} জইফ : আবু দাউদ ১৬০৬, শারহুস্ সুন্নাহ্ ২১৭৭। আলবানী [রাহিমাহুল্লাহ] বলেছেন, হাজ্জাজ এবং ইবনি জুরাইজ এর মাঝে একজন ব্যক্তি রয়েছে যিনি অপরিচিত।এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
১৮০৭. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেছেন রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] মধুর যাকাত সম্পর্কে বলেছেন,প্রত্যেক দশ মশকে এক মশক যাকাত দেয়া ওয়াজিব। [তিরমিজি; তিনি {ঈমাম তিরমিজি] বলেন, এ হাদিসের সানাদের ব্যপারে কথাবার্তা আছে। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে উদ্ধৃত এ সম্পর্কিত অধিকাংশ হাদিস সহীহ নয়।] {১}
{১} সহীহ : আত তিরমিজি ৬২৯, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৫৮১, সহীহ আল জামি আস্ সগীর ৪২৫২। কোন কোন জিনিসের যাকাত দিতে হয় -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১৮০৮.আব্দুল্লাহ ইবনি মাসউদ-এর স্ত্রী যায়নাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের উদ্দেশে প্রদত্ত ভাষণে বললেন,হে মেয়েরা! তোমাদের মালের যাকাত আদায় করো,অলংকার হলেও। কেননা ক্বিয়ামতের দিন তোমাদের বেশিরভাগই জাহান্নামী হবে।
[তিরমিজি] {১}.{১} সহীহ : আত তিরমিজি ৬৩৫, আহমাদ ২৭০৪৮, দারিমী ১৬৯৪, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৫৮৩, সহীহ আত তারগীব ৮৯১, সহীহ আল জামি আস্ সগীর ৭৯৮১। কোন কোন জিনিসের যাকাত দিতে হয় -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১৮০৯. আমর ইবনি শুআয়ব হইতে বর্ণীতঃ
আম্র ইবনি শুআয়ব তার পিতা হইতে, তার পিতা তার দাদা হইতে বর্ননা করিয়াছেন। [একদিন] দুজন মহিলা রাসুল [সাঃআঃ] এর নিকট উপস্থিত হলেন। উভয়ের হাতে সোনার চুড়ি পরেছিল। রসুল [সাঃআঃ] বললেন তোমরা কি এগুলোর যাকাত দিয়েছ? তারা বলিল “জ্বী না”। তিনি বললেন তোমরা কি চাও আল্লাহতাআলা [ক্বিয়ামতের দিন] তোমাদেরকে দুটি আগুনের বালা পরাবেন? তারা বলিল “না”। তখন তিনি বললেন, তাহলে এ সোনার যাকাত দিয়ে দাও। [তিরমিজি; তিনি বলেছেন, এ হাদিসটি এভাবে মুসান্না ইবনি সব্বাহ [রাহিমাহুল্লাহ] আম্র ইবনি শুআয়ব থেকে বর্ননা করিয়াছেন। আর মুসান্না ইবনি সব্বাহ এবং ইবনি লাহীআহ-কে {যিনি এ হাদিসের একজন বর্ণনাকারীর ব্যপারে] দুর্বল মনে করা হয়। আর এ বিষয়ে নবী [সাঃআঃ] থেকে কোন সহীহ হাদিস বর্ণিত হয় নি।] {১}
{১} হাসান : তবে অন্য শব্দে। আত তিরমিজি ৬৩৭, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৫৮৩।এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান হাদিস
১৮১০.উম্মু সালামাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন,আমি সোনার আওযাহ [এক রকম অলংকারের নাম] পরতাম। আমি একদিন বললাম,হে আল্লাহর রসুল! এ সোনার অলংকার ও কি সঞ্চিত মাল হিসাবে গন্য হবে? [যে ব্যাপারে কুরআনে ভয় দেখানো হয়েছে?] তিনি বললেন,যে জিনিসে নিসাব পুর্ণ হয় এবং এর যাকাত দিয়ে দেয়া হয়,তা পবিত্র হয়ে যায়। তখন তা সঞ্চিত ধন সম্পদের মধ্যে গণ্য নয়।
[মালিক,আবু দাউদ] {১},{১} মারফূ সূত্রটি হাসান : আবু দাউদ ১৫৬৪, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৭৫৫০, সিলসিলাহ্ আস্ সহীহাহ্ ৫৫৯।এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান হাদিস
১৮১১. সামুরাহ্ ইবনি জুনদুব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন,রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে ব্যবসায়ের জন্য তৈরী করা মালপত্রের যাকাত আদায়ের হুকুম দিতেন।
[আবু দাউদ] {১}, {১} জইফ : আবু দাউদ ১৫৬২, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৭৫৯৭। কারণ এর সানাদে জাফার ইবনি সাদ, খুবায়ব এবং সুলায়মান সকল রাবী মাজহূল।এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
১৮১২.রবীআহ্ ইবনি আবু আবদুর রহমান [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীতঃ
রবীআহ ইবনি আবু আবদুর রহ্মান [রাদি.] একাধিক সাহাবী হইতে বর্ননা করিয়াছেন যে, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বিল্লাল ইবনি হারিস আল মুযানীকে ফারা-তে অবস্থিত ক্বাবালিয়াহ্ নামক স্থানের খনি জায়গীর দিয়েছিলেন। সেসব খনি হইতে এখন পর্যন্ত কেবল যাকাতই উসূল করা হয়।
[আবু দাউদ] {১},{১} জইফ : আবু দাউদ ৩০৬১, মুয়াত্ত্বা মালিক ৮৫১, সুনানুল কুবরা লিল কুবরা ১১৮৪১, ইরওয়া ৮৯১। কারণ রাবিআর শায়খ একজন বেনামী রাবী। তিনি সম্ভবত একজন তাবিঈ। তাই এটি মুরসাল।এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
অধ্যায়ঃ ১. তৃতীয় অনুচ্ছেদ
১৮১৩. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তরি-তরকারি ও দান করে দেয়া গাছপালার কোন যাকাত নেই। পাঁচ ওয়াসাকের চেয়ে কম পরিমাণ শস্যে যাকাত নেই, কাজে-কর্মে ব্যবহার্য জানোয়ারের যাকাত নেই, জাব্হাহ্তেও যাকাত নেই। সাক্র [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন জাব্হাহ্ হচ্ছে ঘোড়া,খচ্চর ও গোলাম।
[দারাকুত্বনি] {১},{১} সুনান আদ্ দারাকুত্বনী ১৯০৭।এই হাদিসটির তাহকীকঃ নির্ণীত নয়
১৮১৪. ত্বাউস [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একবার ইয়ামেন এর শাসক মুয়ায ইবনি জাবাল [রাদি.] এর নিকট [যাকাত উশুল করার জন্য] ওয়াক্বাস গাভী আনা হয়েছিলো তিনি [তা দেখে] বললেন,এসব থেকে [যাকাত উসুলের জন্য] আমাকে আদেশ দেয়া হয়নি।
[দারাকুত্বনী শাফীঈ; ঈমাম শাফীঈ বলেন, ওয়াক্বাস এসব জানোয়ার কে বলা হয়, যা প্রথমিকভাবে যাকাতের নিসাবের সীমায় পৌছায় নি।] {১},{১} সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৭২৯১।এই হাদিসটির তাহকীকঃ নির্ণীত নয়
Leave a Reply