কুরবানি হাদিস

কুরবানি হাদিস

কুরবানি হাদিস >> মিশকাতুল মাসাবীহ এর মুল সুচিপত্র দেখুন

পর্বঃ ৪, অধ্যায়ঃ ৪৮

  • অধ্যায়ঃ ৪৮. প্রথম অনুচ্ছেদ
  • অধ্যায়ঃ ৪৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
  • অধ্যায়ঃ ৪৮. তৃতীয় অনুচ্ছেদ

অধ্যায়ঃ ৪৮. প্রথম অনুচ্ছেদ

১৪৫৩. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কোন এক কুরবানীর ঈদে ধূসর রং ও শিংওয়ালা দুটি দুম্বা কুরবানী করিলেন। নিজ হাতে তিনি এ দুম্বা দুটিকে

بِسْمِ اللّهِ وَاللّهُ أكْبَرُ

বিস্মিল্লা-হ ও আল্ল-হু আকবার বলে যাবাহ করিলেন। আমি তাকেঁ [যাবাহ করার সময়] দুম্বা দুটির পাঁজরের উপর নিজের পা রেখে বিস্মিল্লা-হি ওয়াল্ল-হু আকবার বলিতে শুনিয়াছি।

[বোখারী, মুসলিম] {১}, 1] সহীহ : বোখারী ৫৫৬৫, মুসলিম ১৯৬৬, আত তিরমিজি ১৪৯৪, নাসায়ী ৪৩৮৭, ইবনি মাজাহ ৩১২০, আহমাদ ১৩২০২, ইবনি খুযায়মাহ্ ২৮৯৫, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৯১৬০, ইরওয়া ১১৩৭, আদ্ দাওয়াতুল কাবীর ৫৪৩। কুরবানি হাদিস -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১৪৫৪. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এমন একটি শিংওয়ালা দুম্বা আনতে বললেন যা কালোতে হাঁটে, কালোতে শোয়, কালোতে দেখে অর্থাৎ যে দুম্বার পা কালো, পেট কালো ও চোখ কালো। কুরবানী করার জন্য ঠিক এমনি একটি দুম্বা আনা হলো। তখন তিনি [সাঃআঃ] আয়িশাকে [রাদি.] বললেন, হে আয়িশাহ্! একটি ছুরি লও। এটিকে পাথরে ধাঁর করাও। আয়িশাহ্ [রাদি.] বললেন, আমি তাই করলাম। তারপর তিনি [সাঃআঃ] ছুরিটি হাতে নিয়ে দুম্বাটিকে ধরলেন। অতঃপর এটাকে পাঁজরের উপর শোয়ালেন এবং যাবাহ করিতে করিতে বললেন,

بِسْمِ اللّهِ اللّهُمَّ تَقَبَّلْ مِنْ مُحَمَّدٍ وَالِ مُحَمَّدٍ وَمِنْ أُمَّةِ مُحَمَّدٍ

“আল্লাহ্‌র নামে শুরু করছি, হে আল্লাহ! তুমি এ কুরবানীকে মুহাম্মাদ, মুহাম্মাদের পরিবার এবং মুহাম্মাদের উম্মাতের পক্ষ হইতে গ্রহণ করো।” এরপর তিনি এ কুরবানী দ্বারা লোকদের সকালের খাবার খাইয়ে দিলেন।

[মুসলিম] {১}, {১} সহীহ : মুসলিম ১৯৬৭, আবু দাউদ ২৭৯২, আহমাদ ২৪৪৯১, শারহু মাআনির আসার ৬২২৩, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৯০৪৬। কুরবানি হাদিস -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১৪৫৫. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেন : তোমরা [কুরবানীতে] মুসিন্নাহ্ ছাড়া কোন পশু যাবাহ করিবে না। হ্যাঁ ,যদি মুসিন্নাহ্ পাওয়া না যায় তবে দুম্বার জাযাআহ্ যাবাহ করিতে পার।

[মুসলিম] {১}, {১} সহীহ : মুসলিম ১৯৬৩, আবু দাউদ ২৭৯৭, নাসায়ী ৪৩৭৮, ইবনি মাজাহ ৩১৪১, আহমাদ ১৪৩৪৮, ইবনি খুযায়মাহ্ ২৯১৮, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১০১৫৩, ইরওয়া ১১৪৫। যদিও শায়খ সুনানের তাহ্ক্বীক্বে হাদিসটিকে জইফ বলেছেন। কুরবানি হাদিস -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১৪৫৬. উক্ববাহ্ ইবনি আমির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] একবার তাহাঁর সাহাবীদের মধ্যে কুরবানী করার জন্য বন্টন করার সময় উক্ববাকে কতগুলো ছাগল-ভেড়া দিলেন। বন্টনের পর একটি এক বছরের বাচ্চা ছাগল রয়ে গেল। তিনি রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে তা জানালেন। তিনি [সাঃআঃ] বললেন, এটি তুমি কুরবানী করে দাও। অপর এক বর্ণনায় আছে, আমি বললাম হে আল্লাহর রসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]! আমার ভাগে তো একটি মাত্র বাচ্চা ছাগল রইল। তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেন, তুমি এটাই কুরবানী করে দাও।

[বোখারী, মুসলিম] {১}, {১} সহীহ : বোখারী ২৩০০, মুসলিম ১৯৬৫, আত তিরমিজি ১৫০০, নাসায়ী ৪৩৭৯, ইবনি মাজাহ ৩১৩৮, ইবনি হিব্বান ৫৮৯৮। কুরবানি হাদিস -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১৪৫৭. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] ঈদগাহের ময়দানেই যাবাহ করিতেন বা নহর করিতেন।

[বোখারী] {১}, {১} সহীহ : বোখারী ৫৫৫২, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৯১১৯। কুরবানি হাদিস -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১৪৫৮. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেন : একটি উট সাতজনের পক্ষ হইতে [ঠিক একইভাবে] একটি গরু সাতজনের পক্ষ থেকে [কুরবানী] করা বৈধ হবে।

[মুসলিম, আবু দাউদ; ভাষা আবু দাউদের] {১}, {১} সহীহ : মুসলিম ১৩১৮, আবু দাউদ ২৮০৮, আত তিরমিজি ৯০৪, নাসায়ী ৪৩৯৩, আহমাদ ১৪২৬৫, ইবনি খুযায়মাহ্ ২৯০, ইবনি হিব্বান ৪০০৬, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১০১৯৫, সহীহ আল জামি ২৮৮৯। কুরবানি হাদিস -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১৪৫৯. উম্মু সালামাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেন : তোমাদের কেউ কুরবানী করার ইচ্ছা রাখলে, যিলহাজ্জ মাসের প্রথম দশক শুরু হয়ে গেলে সে যেন নিজের চুল ও চামড়ার কোন কিছু না ধরে অর্থাৎ না কাটে। অন্য এক বর্ণনায় আছে, সে যেন কেশ স্পর্শ না করে ও নখ না কাটে। অপর এক বর্ণনায় আছে, যে ব্যক্তি জিলহাজ্জ মনের নব চাঁদ দেখবে ও কুরবানী করার নিয়্যাত করিবে সে যেন নিজের চুল ও নিজের নখগুলো কর্তন না করে।

[মুসলিম] {১}, {১} সহীহ : মুসলিম ১৯৭৭, নাসায়ী ৪৩৬৪, ইবনি মাজাহ ৩১৪৯, আহমাদ ২৬৪৭৪, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৯০৪৩, শুআবুল ঈমান ৬৯৪৮, ইরওয়া ১১৬৩, সহীহ আল জামি ৫২০। কুরবানি হাদিস -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১৪৬০. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন। রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] ইরশাদ করেন : আল্লাহ তাআলার নিকট তাহাঁর দিনসমূহের মধ্যে এমন কোন দিন নেই, যে দিনের আমাল এ দশদিনের আমাল অপেক্ষা অধিক প্রিয়। সহাবীগণ জিজ্ঞেস করিলেন, হে আল্লাহর রসূল! আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও নয়? তিনি বললেন, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও নয়। তবে যে ব্যক্তি নিজের জীবন ও সম্পদ নিয়ে বের হয়েছে। আর তা হইতে কোন কিছু নিয়ে ফিরেনি।

[বোখারী] {১}, {১} সহীহ : বোখারী ৯৬৯, আবু দাউদ ২৪৩৮, আত তিরমিজি ৭৫৭, ইবনি মাজাহ ১৭২৭, ইবনি আবী শায়বাহ্ ১৯৫৪০, আহমাদ ১৯৬৮, ইবনি খুযায়মাহ্ ২৮৬৫, ইবনি হিব্বান ৩২৪, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৮৩৯২, ইরওয়া ৮৯০, সহীহ আত তারগীব ১২৪৮। কুরবানি হাদিস -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১৪৬১. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] এক কুরবানীর দিনে দুটি ছাই রঙের শিংওয়ালা খাশী দুম্বা কুরবানী করিলেন। ওদের ক্বিবলামুখী করে বললেন

إِنِّىْ وَجَّهْتُ وَجْهِيَ للَّذىْ فَطَرَ السَّموتِ وَالْأَرْضَ عَلى مِلَّةِ إِبْرَاهِيمَ حَنِيْفًا وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ إِنَّ صَلَاتِىْ وَنُسُكِىْ وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِىْ لِلّهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ لَا شَرِيْكَ لَه وَبِذلِكَ أَمَرْتُ وَأَنَا مِنَ الْمُسْلِمِينَ اَللّهُمَّ مِنْكَ وَلَكَ عَنْ مُحَمَّدٍ وَأُمَّتِه بِسْمِ اللّهِ وَاللّهُ أَكْبَرُ

“ইন্নী ওয়াজজাহতু ওয়াজহিয়া লিল্লাযী ফাত্বারাস সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরযা আলা-মিল্লাতি ইবরা-হীমা হানীফাও্ ওয়ামা-আনা্- মিনাল মুশরিকীন, ইন্না সলা-তী ওয়া নুসুকী ওয়া মাহইয়া-ইয়া ওয়া মামা-তী লিল্লা-হি রব্বিল আ-লামীন, লা-শারীকা লাহ্ ওয়াবিযা-লিকা আমারতু ওয়া আনা-মিনাল মুসলিমীন, আল্ল-হুম্মা মিনকা ওয়ালাকা আন্ মুহাম্মাদিন ওয়া উম্মাতিহী, বিসমিল্লা-হি ওয়াল্ল-হু আকবার” বলে যাবাহ করিতেন। [আহমাদ, আবু দাউদ, ইবনি মাজাহ ও দারিমী। কিন্তু আহমাদ, আবু দাউদ ও তিরমিজি বণর্না করিয়াছেন, নিজ হাতে যাবাহ করিলেন এবং বললেন,

بِسْمِ اللّهِ وَاللّهُ أَكْبَرُ اللّهُمَّ هذَا عَنِّي وَعَمَّنْ لَمْ يُضَحِّ مِنْ أُمَّتِىْ

বিসমিল্লা-হি ওয়াল্লা-হু আকবার, আল্ল-হুমা হা-যা- আন্নী, ওয়া আম্মান লাম ইউযাহহি মিন উম্মাতী” [অর্থাৎ হে আল্লাহ এ কুরবানী আমার পক্ষ থেকে কবূল করো। কবুল করো আমার উম্মাদগনণের মধ্য থেকে যারা কুরবানী করিতে পারেনি তাদের পক্ষ হইতে।] {১}

{১} জইফ : আবু দাউদ ২৭৯৫, ইবনি মাজাহ ৩১২১, আহমাদ ১৫০২২, আদ্ দাওয়াতুল কাবীর ৫৪৪। সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৯১৮৪। কারণ এর সানাদে ইসমাঈল বিন আইয়্যাশ রয়েছে, যার শামীদের থেকে বর্ণিত যার হাদিসগুলো দুর্বল। আর এ বর্ণনাটি সেগুলোর অন্যতম। তারপরের আংশটুকু সহীহ। আবু দাউদ ২৮১০, আত তিরমিজি ১৫২১, আহমাদ ১৪৮৯৫। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

১৪৬২. হানাশ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি আলী [রাদি.] কে দুটি দুম্বা কুরবানী করিতে দেখে জিজ্ঞেস করলাম। এটাই কি [অর্থাৎ দুটি কেন]? আলী [রাদি.] বললেন, রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আমাকে তাহাঁর পক্ষ হইতে কুরবানী করার জন্য ওয়াসীয়াত করে গেছেন। তাই আমি তাহাঁর পক্ষ হইতে একটি দুম্বা কুরবানী করছি।

[আবু দাউদ, তিরমিজি] {১}, {১} জইফ : আবু দাউদ ২৭৯০। কারণ এর সানাদে শরীক স্মৃতিশক্তিগত কারণে দুর্বল রাবী এবং হানাশ-কে জমহূর একজন দুর্বল রাবী হিসেবে অবহিত করিয়াছেন।এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

১৪৬৩. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] কুরবানীর [জানোয়ারের] চোখ, নাক ভালভাবে দেখে নেয়ার জন্য আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন। যে পশুর কানের সম্মুখ ভাগ শেষের ভাগ কাটা গেছে। অথবা যে পশুর কান গোলাকারবাভে ছিদ্রিত হয়ে গেছে বা যার কান পাশের দিকে থেকে কেটে গিয়াছে সেসব পশু যেন কুরবানী না করি।

[তিরমিজি, আবু দাউদ, নাসায়ী; তবে দারিমী [আরবী] “কান” পর্যন্ত বর্ণনা করিয়াছেন।] {১}, {১} জইফ তবে أَنْ نَسْتَشْرِفَ الْعَيْنَ وَالْأُذُنَ অংশটুকু ব্যতীত, কেননা তা সহীহ সূত্রে প্রমাণিত। আবু দাউদ ২৮০৪, আত তিরমিজি ১৪৯৮, নাসায়ী ৪৩৭২, ইবনি মাজাহ ৩১৪৩, জইফ আল জামি ৬৩৫৩, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৯১০২। এই হাদিসটির তাহকীকঃ অন্যান্য

১৪৬৪. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] শিং ভাঙ্গা, কান কাটা, পশু দিয়ে কুরবানী করিতে বারণ করিয়াছেন।

[ইবনি মাজাহ] {১}, {১} জইফ : আত তিরমিজি ১৫০৪, ইবনি মাজাহ ৩১৪৫, আহমাদ ১১৫৮, ইবনি খুযায়মাহ্ ২৯১৩, মুসতাদরাক লিল হাকিম ১৭১৯। কারণ এর সানাদে জুরাই ইবনি কালীব রয়েছে যার সম্পর্কে আবু হাতিম [রাহিমাহুল্লাহ] বলেছেন, তার হাদিস দ্বারা দলীল দেয়া যাবে না। আর ইবনি হাজার [রাহিমাহুল্লাহ] বলেছেন, তার হাদিস দুর্বল। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

১৪৬৫. বারা ইবনি আযিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] কে জিজ্ঞেস করা হলো, কোন্ ধরনের জানোয়ার কুরবানী করা হইতে বেঁচে থাকা উচিত? তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] নিজ হাত দিয়ে ইঙ্গিত করে বললেন, চার ধরনের পশু [কুরবানী করা হইতে] বেঁছে থাকা উচিত। [১] যে পশু স্পষ্ট খোঁড়া। [২] যে পশু স্পষ্ট কানা। [৩] যে পশু সুস্পষ্ট রোগা ও দুর্বল। [৪] যে পশুর হাড়ের মজ্জা নেই তথা একেবারেই শুকিয়ে গেছে। [মালিক, আহমাদ, তিরমিজি, আবু দাউদ, নাসায়ী, ইবনি মাজাহ, দারিমী] {১}

{১} সহীহ : আবু দাউদ ২৮০২, আত তিরমিজি ১৪৯৭, নাসায়ী ৪৩৬৯, ইবনি মাজাহ ৩১৪৪, মুয়াত্ত্বা মালিক ১৭৫৭, আহমাদ ১৮৫১০, ইবনি খুযায়মাহ্ ২৯১২, শারহু মাআনির আসার ৬১৮৭, ইবনি হিব্বান ৫৯২১, মুসতাদরাক লিল হাকিম ১৭১৮, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৯০৯৪, ইরওয়া ১১৪৮, সহীহ আল জামি ৮৮৬। কুরবানি হাদিস -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১৪৬৬. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] শিংওয়ালা শক্তিশালী দুম্বা কুরবানী করিতেন। যে দুম্বা অন্ধকারে দেখত। অন্ধকারে ভক্ষণ করত এবং অন্ধকারে চলত। অর্থাৎ যে দুম্বার চোখ কালো, চোখ মুখ কালো ও পা কালো।

[তিরমিজি, আবু দাউদ, নাসায়ী,ইবনি মাজাহ] {১}, {১} সহীহ : আবু দাউদ ২৭৯৬, আত তিরমিজি ১৪৯৬, নাসায়ী ৪৩৯০, ইবনি মাজাহ ৩১২৮, মুসতাদরাক লিল হাকিম ৭৫৪৮। কুরবানি হাদিস -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১৪৬৭. বানী সুলায়ম গোত্রের এক সাহাবী মুজাশি [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলিতেন : ছয় মাস পূর্ণ ভেড়া এক বছর বয়সের ছাগলের কাজ পূরণ করে।

[আবু দাউদ, নাসায়ী, ইবনি মাজাহ] {১}, {১} সহীহ : আবু দাউদ ২৭৯৯, নাসায়ী ৪৩৮৩, ইবনি মাজাহ ৩১৪০, মুসতাদরাক লিল হাকিম ৭৫৩৯, ইরওয়া ১১৪৬। কুরবানি হাদিস -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১৪৬৮. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি। ছয়মাস বয়স অতিবাহিত ভেড়া বেশ উত্তম কুরবানী।

[তিরমিজি] {১}, {১} জইফ : আত তিরমিজি ১৪৯৯, ইরওয়া ১১৪৩, সিলসিলাহ্ আয্ যঈফাহ্ ৬৪, জইফ আল জামি ৫৯৭১, আহমাদ ৯৭৩৯, ইরওয়া ১১৪৩, জইফ আল জামি ৫৯৭১। কারণ এর সানাদে কিদাম বিন আবদুর রহমান এবং আবু কিবাশ দুজনে অপরিচিত রাযী। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

১৪৬৯. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা এক সফরে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে ছিলাম। তখন কুরবানীর সময় উপস্থিত হলো। আমরা তখন এক গরুতে সাতজন ও এক উটে দশজন করে [কুরবানীতে] অংশীদার হলাম।

[তিরমিজি, নাসায়ী, ইবনি মাজাহ; ঈমাম তিরমিজি বলেছেন, হাদিসটি হাসান, গারীব।] {১}, {১} সহীহ : আত তিরমিজি ১৫০১, নাসায়ী ৪৩৯২, ইবনি মাজাহ ৩১৩১, ইবনি খুযায়মাহ্ ২৯০৮। কুরবানি হাদিস -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১৪৭০. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন : কুরবানীর দিনে আদাম সস্তানগণ এমন কোন কাজ করিতে পারে না যা আল্লাহর নিকট রক্ত প্রবাহিত করার [অর্থাৎ কুরবানী করা] চেয়ে বেশী প্রিয় হইতে পারে। কুরবানীর সকল পশুর শিং, পশম, এদের ক্ষুরসহ ক্বিয়ামাতের দিন [কুরবানীকারীর নেকীর পাল্লায়] এসে হাজির হবে। কুরবানীর পশুর রক্ত মাটি স্পর্শ করার পূর্বেই আল্লাহর নিকট মর্যাদাকর স্থানে পৌঁছে যায়। তাই তোমরা সানন্দে কুরবানী করিবে।

[তিরমিজি, ইবনি মাজাহ] {১}, {১} জইফ : আত তিরমিজি ১৪৯৩, ইবনি মাজাহ ৩১২৬, জইফ আত তারগীব ৬৭১, জইফ আল জামি ৫১১২। এর সানাদে আবুল মুসান্না সুলায়মান বিন ইয়াযীদ একজন খুবই দুর্বল রাবী। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

১৪৭১. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইরশাদ করিয়াছেন : জিলহাজ্জ মাসের প্রথম দশদিন অপেক্ষা আর কোন উত্তম দিন নেই। যে দিন আল্লাহর ইবাদাত করার জন্য প্রিয়তর হইতে পারে। এ দশদিনের প্রতি দিনের সিয়াম এক বছরের সিয়ামের সমমর্যাদার। এর প্রত্যেক রাতের সলাত ক্বদরের রাতের সলাত সমতুল্য। [তিরমিজি, ইবনি মাজাহ; ঈমাম তিরমিজি বলেছেন, হাদিসটির সানাদ দুর্বল।] {১}

{১} জইফ : আত তিরমিজি ৭৫৮, ইবনি মাজাহ ১৭২৮, শুআবুল ঈমান ৩৪৮০, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১১২৬, সিলসিলাহ্ আয্ যঈফার ৫১৪২, জইফ আত তারগীব ৭৩৪, জইফ আল জামি ৫১৬১। কারণ এর সানাদে নাহ্হাল বিন ক্বহ্ম সর্বসম্মতক্রমে একজন দুর্বল রাবী। কুরবানি হাদিস- এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

অধ্যায়ঃ ৪৮. তৃতীয় অনুচ্ছেদ

১৪৭২. জুনদুব ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, এক কুরবানীর ঈদে আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে উপস্থিত ছিলাম। [আমি দেখলাম] তিনি সলাত আদায় করিলেন এবং সালাম ফিরায়ে সলাত হইতে অবসর হওয়া ছাড়া আর কিছু করিলেন না। এ সময় তিনি কিছু কুরবানীর গোশত দেখলেন, যা সলাত আদায়ের পূর্বেই যাবাহ করা হয়েছিল। তিনি তখন বললেন, যে সলাত আদায়ের আগে অথবা আমার সলাত আদায়ের আগে বর্ণনাকারীর সন্দেহ কুরবানীর পশু যাবাহ করছে সে যেন অন্য একটি কুরবানী করে নেয়। আর এক বর্ণনায় আছে, জুনদুব বলেন, নবী [সাঃআঃ] কুরবানীর দিন সলাত আদায় করিলেন। তারপর ভাষণ প্রদান করিলেন। এরপর কুরবানীর পশু যাবাহ করিলেন এবং বললেন, যে ব্যক্তি সলাত আদায়ের আগে কুরবানীর পশু যাবাহ করেছে সে যেন আর একটি পশু যাবাহ করে। আর যে যাবাহ করেনি সে যেন আল্লাহর নামে যাবাহ করে।

[বোখারী,মুসলিম] {১}, {১} সহীহ : বোখারী ৯৮৫, ৫৫০০, মুসলিম ১৯৬০। কুরবানি হাদিস -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১৪৭৩. নাফি [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] বলেন, কুরবানীর দিনের পরেও অর্থাৎ দশই যিলহাজ্জের পরেও দুদিন কুরবানীর দিন অবশিষ্ট থাকে। {১}

{১} সহীহ : মুয়াত্ত্বা মালিক ১৭৭৪, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৯২৫৪। কুরবানি হাদিস -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১৪৭৪. ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি [ঈমাম মালিক] আরো, আলী ইবনি আবী ত্বালিব [রাদি.] হইতেও এরূপ একটি উক্তি প্রমাণিত। {১}

{১} জইফ : মুয়াত্ত্বা মালিক ১৭৭৫, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৯২৫৪। এর সানাদটি মুনক্বতি। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

১৪৭৫. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] মাদীনায় দশ বছর বসবাস করিয়াছেন। [আর এ দশ বছরই] তিনি একাধারে প্রতি বছর কুরবানী করিয়াছেন।

[তিরমিজি] {১}, {১} জইফ : আত তিরমিজি ১৫০৭, আহমাদ ৪৯৫৫। কারণ এর সানাদে হাজ্জাজ বিন আরত্বত একজন মুদ্দালিস রাবী। তিনি عنعن সূত্রে হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

১৪৭৬. যায়দ ইবনি আরক্বাম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর সহাবীগণ তাঁকে জিজ্ঞেস করিলেন, হে আল্লাহর রসূল! [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] এ কুরবানীটা কি? তিনি বললেন, তোমাদের পিতা ইবরাহীম [আঃ]-এর সুন্নাত। তাঁরা আবার জিজ্ঞেস করিলেন : এতে কি আমাদের জন্য সাওয়াব আছে, হে আল্লাহর রসূল! তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেন : কুরবানীর পশুর প্রত্যেকটি পশমের পরিবর্তে একটি করে প্রতিদান রয়েছে। সহাবীগণ আবার জিজ্ঞেস করিলেন, হে আল্লাহর রসূল! পশমওয়ালা পশুদের ব্যাপারে কি হবে? [এদের পশম তো অনেক বেশী]? তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেন : পশমওয়ালা পশুদের প্রতিটি পশমের পরিবর্তে একটি করে নেকী রয়েছে।

[আহমাদ, ইবনি মাজাহ] {১}, {১} মাওযূ : ইবনি মাজাহ ৩১২৭, আহমাদ ১৯২৮৩, মুসতাদরাক লিল হাকিম ৩৪৬৭, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৯০১৭, জইফ আত তারগীব ৬৭২। এর সানাদে রাবী আয়যুল্লাহ সম্পর্কে ঈমাম আবু হাতিম বলেছেন, যেন মুনকারুল হাদিস। আর বর্ণনাকারী আবু দাউদ সম্পর্কে ঈমাম যাহাবী [রাহিমাহুল্লাহ] বলেছেন, যে হাদিস রচনা করে। এই হাদিসটির তাহকীকঃ জাল হাদিস। এই হাদিসটির তাহকীকঃ জাল হাদিস


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply