নফল সালাত
নফল সালাত >> মিশকাতুল মাসাবীহ এর মুল সুচিপত্র দেখুন
পর্বঃ ৪, অধ্যায়ঃ ৩৯
- অধ্যায়ঃ ৩৯. প্রথম অনুচ্ছেদ
- অধ্যায়ঃ ৩৯. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
- অধ্যায়ঃ ৩৯. তৃতীয় অনুচ্ছেদ
অধ্যায়ঃ ৩৯. প্রথম অনুচ্ছেদ
১৩২২। আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বিলালকে ফাজ্রের সলাতের সময়ে ইরশাদ করিলেন : হে বিলাল! ইসলাম কবুল করার পর তুমি এমন কি আমাল করেছ যার থেকে অনেক সওয়াব হাসিলের আশা করিতে পার। কেননা, আমি আমার সম্মুখে জান্নাতে তোমার জুতার শব্দ শুনতে পেয়েছি। [এ কথা শুনে] বিলাল বললেন, আমি তো অনেক আশা করার মতো কোন আমাল করিনি। তবে রাত্রে বা দিনে যখনই আমি উযূ করেছি, আমার সাধ্যমতো উযূ দিয়ে আমি [তাহ্ইয়্যাতুল উযূর] সালাত আদায় করেছি। {১}
{১} সহীহ : বোখারী ১১৪৯, মুসলিম ২৪৫৮, ইরওয়া ৪৬৪, সহীহ আত তারগীব ২২৬, আহমাদ ৮৪০৩, ইবনি খুযায়মাহ্ ১২০৮। নফল সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১৩২৩। জাবির [রাদি.] ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আমাদেরকে [আল্লাহর নিকট] ইস্তিখারাহ্ করার নিয়ম ও দুআ এ রকম শিখাতেন, যেভাবে আমাদেরকে তিনি কুরআনের সূরাহ্ শিখাতেন। তিনি বলিতেন, তোমাদের কোন লোক কোন কাজ করার সংকল্প করলে সে যেন ফার্য সলাত ব্যতিত দু রাক্আত নাফল সলাত আদায় করে। তারপর এ দুআ পড়ে-
اَللّهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هذَا الْأَمْرَ خَيْرٌ لِّىْ فِىْ دِينِىْ وَمَعَاشِىْ وَعَاقِبَةِ أَمْرِىْ – أَوْقَالَ فِىْ عَاجِلِ أَمْرِىْ وَاجِلِه – فَاقْدُرْهُ لِىْ وَيَسِّرْهُ لِىْ ثُمَّ بَارِكْ لِىْ فِيهِ وَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هذَا الْأَمْرَ شَرٌّ لِّىْ فِىْ دِينِىْ وَمَعَاشِىْ وَعَاقِبَةِ أَمْرِىْ – أَوْ قَالَ فِىْ عَاجِلِ أَمْرِىْ وَاجِلِه – فَاصْرِفْهُ عَنِّىْ وَاصْرِفْنِىْ عَنْهُ وَاقْدُرْ لِيَ الْخَيْرَ حَيْثُ كَانَ ثُمَّ أَرْضِنِىْ بِه
“আল্ল-হুম্মা ইন্নি আস্তাখীরুকা বিইলমিকা ওয়া আস্তাক্বদিরুকা বিকুদরাতিকা ওয়া আস্আলুকা মিন ফাযলিকাল আযীমি ফাইন্নাকা তাক্বদিরু ওয়ালা- আক্বদিরু ওয়া তালামু ওয়ালা- আলামু ওয়া আনতা আল্লা-মুল গুয়ূব, আল্লা-হুম্মা ইন্না কুনতা তালামু আন্না হা-যাল আমরা খায়রুল লী ফী দীনী ওয়ামা আ-শী ওয়া আ-ক্বিবাতী আমরী আও ক্বা-লা ফী আ-জিলি আমরী ওয়া আ-জিলিহী ফাক্বদুরহু লী ওয়া ইয়াসসিরহু লী সুম্মা বা-রিক লী ফিহি ওয়া ইন কুনতা তালামু আন্না হা-যাল আমরা শাররুল লী ফি দীনি ওয়ামা আ-শী ওয়া আ-ক্বিবাতী আমরী আও ক্বা-লা ফী আ-জিলি আমরী ওয়া আ-জিলিহী ফাসরিফহু আন্নী ওয়াসরিফ্নী আন্হু ওয়াক্ব দুরলিয়াল খয়রা হায়সু কা-না সুম্মা আরযিনী বিহী” [অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমি তোমারই জানার ভিত্তিতে তোমার নিকট কল্যাণ কামনা করছি। তোমার কুদরতের দ্বারা তোমার নিকট নেক আমাল করার শক্তি প্রার্থনা করছি। তোমার নিকট তোমার মহা ফজল চাই। এজন্য তুমি সকল কাজের শক্তি দাও। আমি তোমার ইচ্ছা ব্যতিত কোন কাজ করিতে পারব না। তুমি সব কিছুই জানো। আমি কিছুই জানি না। সব গোপন কথা তোমার জানা। হে আল্লাহ! তুমি যদি ইচ্ছা কর এ কাজটি [উদ্দেশ্য] আমার জন্য আমার দীনে, দুনিয়ায়, আমার জীবনে, আমার পরকালে অথবা বলেছেন, এ দুনিয়ায় ঐ দুনিয়ায় ভাল হবে, তাহলে তা আমার জন্যে ব্যবস্থা করে দাও। আমার জন্য তা সহজ করে দাও। তারপর আমার জন্য বারাকাত দান করো। আর তুমি যদি এ কাজকে আমার জন্য আমার দীন, আমার জীবন, আমার পরকাল অথবা বলেছেন, আমার ইহকাল ও পরকালে ক্ষতিগ্রস্থ মনে করো, তাহলে আমাকে তার থেকে, আর তাকে আমার থেকে ফিরিয়ে রাখো। আর আমার জন্যে যা কল্যাণকর তা করে দাও। অতঃপর এর সঙ্গে আমাকে রাজী করো।] হাদিস বর্ণনাকারী বলেন, এ কাজটি বলার সময় দরকারের ব্যাপারটি স্মরণ করিতে হবে। {১}
{১} সহীহ : বোখারী ১১৬২, ৬৩৮২, ৭৩৯০, আবু দাউদ ১৫৩৮, আত তিরমিজি ৪৮০, ইবনি মাজাহ ১৩৮৩, নাসায়ী ৩২৫২, আহমাদ ১৪৭০৭, ইবনি হিব্বান ৮৮৭, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৪৯২১, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১০১৬, সহীহ আত তারগীব ৬৮২, সহীহ আল জামি ৮৭৭। নফল সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
অধ্যায়ঃ ৩৯. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
১৩২৪। আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমীরুল মুমিনীন আবু বাকর সিদ্দীক্ব [রাদি.] আমাকে বলেছেন এবং তিনি সম্পূর্ণ সত্য বলেছেন। তিনি বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] -কে বলিতে শুনিয়াছি : যে কোন লোক অন্যায় করার পর [লজ্জিত হয়ে] উঠে গিয়ে উযূ করে ও সলাত আদায় করে এবং আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে, আল্লাহ তাআলা তার গুনাহ ক্ষমা করে দেন। তারপর তিনি এ আয়াত পড়লেন [মূল আয়াত হাদীসে আছে] : -“এবং যেসব লোক এমন কোন কাজ করে বসে যা বাড়াবাড়ি ও নিজেদের ওপর যুলম, এরপর আল্লাহর কথা স্মরণ হয়, তখন নিজেদের গুনাহের জন্যে আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে থাকে”- [সূরাহ আ-ল ইমরান ৩ : ১৩৫]।
[তিরমিজি ও ইবনি মাজাহ; কিন্তু ইবনি মাজাহ উপরোক্ত আয়াত উল্লেখ করেননি]। {১}; {১} সহীহ : আত তিরমিজি ৪০৬, ইবনি মাজাহ ১৩৯৫, আহমাদ ২, সহীহ আত তারগীব ৬৮০। নফল সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১৩২৫। হুযায়ফাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, কোন সম্পর্কে নবী [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] -কে চিন্তিত করে তুললে তিনি নাফল্ সলাত আদায় করিতে দাঁড়িয়ে যেতেন। {১}
{১} হাসান : আবু দাউদ ১৩১৯, আহমাদ ২৩২৯৯, শুআবুল ঈমান ২৯১২, সহীহ আল জামি ৪৭০৩। এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান হাদিস
১৩২৬। বুরায়দাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] ফাজ্রের সময় বিলালকে ডাকলেন। তাকে তিনি বললেন, কি আমাল দ্বারা তুমি আমার পূর্বে জান্নাতে চলে গেছ। আমি যখনই জান্নাতে প্রবেশ করেছি, তোমার জুতার আওয়াজ শুনিয়াছি। বিলাল আবেদন করিলেন, হে আলাহর রাসূল! আমি আযান দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে দু রাক্আত সলাত অবশ্যই আদায় করি। আর আমার উযূ নষ্ট হয়ে গেলে তখনই আমি উযূ করে আল্লাহর জন্যে দু রাক্আত সলাত আদায় করা জরুরী মনে করেছি। এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেন : হ্যাঁ, এ কারণেই তুমি এত বিশাল মর্যাদায় পৌঁছে গেছ। {১}
{১} সহীহ : আত তিরমিজি ১৩৮৯, আহমাদ ২২৯৯৬, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১০১২, সহীহ আল জামি ৭৮৯৪, ইবনি খুযায়মাহ্ ১২০৯, ইবনি হিব্বান ৭০৮৬, ৭০৮৭, মুসতাদরাক লিল হাকিম ১১৭৯, শুআবুল ঈমান ২৪৬১, সহীহ আত তারগীব ২০১। নফল সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১৩২৭। আবদুল্লাহ ইবনি আবু আওফা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইরশাদ করেছেনঃ আল্লাহর নিকট বা কোন লোকের নিকট কারো কোন দরকার হয়ে পড়লে সে যেন ভাল করে উযূ করে দুরাক্আত সলাত আদায় করে। তারপর আল্লাহর প্রশংসা করে, নবী [সাঃআঃ]-এর ওপর দরুদ পড়ে, এ দুআ পড়ে [দুআর বাংলা অর্থঃ] “আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। তিনি বড়ই ধৈর্যশীল ও অনুগ্রহশীল। আল্লাহ মহাপবিত্র, তিনি আরশে আযীমের অধিপতি। সব প্রশংসা আল্লাহ তাআলার, যিনি সমগ্র বিশ্বের পালনকর্তা। হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট ঐসব জিনিস চাই যার উপর তোমার রহমত বর্ষিত হয় এবং যা তোমার ক্ষমা পাওয়ার উপায় হয়। আর আমি আমার ভাল কাজের অংশ চাই। সকল গুনাহ থেকে বাঁচতে চাই। হে আল্লাহ! তুমি আমার কোন গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া ব্যতীত, আমার কোন দুঃখ দূর করে দেয়া ব্যতীত, আমার কোন দরকার যা তোমার নিকট পছন্দনীয়, পূরণ করা ব্যতীত রেখে দিও না, হে আর্হামার রহিমীন”। {১}
{১} খুবই দুর্বল : আত তিরমিজি ৪৭৯, ইবনি মাজাহ ১৩৮৪, মুসতাদরাক লিল হাকিম ১১৯৯, শুআবুল ঈমান ২৯৯৫, জইফ আল জামি ৫৮০৯, জইফ আত তারগীব ৪১৬। কারণ এর সানাদে ফায়দ ইবনি আবদুর রহমান দুর্বল রাবী। তার সম্পর্কে ঈমাম আহমাদ [রাহিমাহুল্লাহ] বলেছেন, সে মাতরূকুল হাদিস।এই হাদিসটির তাহকীকঃ খুবই দুর্বল
Leave a Reply