কিয়ামুল লাইল এর প্রতি উতসাহ দান

কিয়ামুল লাইল এর প্রতি উতসাহ দান

কিয়ামুল লাইল এর প্রতি উতসাহ দান >> মিশকাতুল মাসাবীহ এর মুল সুচিপত্র দেখুন

পর্বঃ ৪, অধ্যায়ঃ ৩৩

  • অধ্যায়ঃ ৩৩. প্রথম অনুচ্ছেদ
  • অধ্যায়ঃ ৩৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
  • অধ্যায়ঃ ৩৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ

অধ্যায়ঃ ৩৩. প্রথম অনুচ্ছেদ

১২১৯. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ ইরশাদ করেছেনঃ তোমাদের কোন লোক যখন [রাতে] ঘুমিয়ে যায়, শয়তান [শয়তান] তার মাথার পেছনের দিকে তিনটি গিরা লাগায়। প্রত্যেক গিরায় শয়তান [শয়তান] তার মনে এ কথার উদ্রেক করে দেয় যে, এখনো অনেক রাত বাকী, কাজেই ঘুমিয়ে থাকো। সে যদি রাতে জেগে উঠে এবং আল্লাহর নাম স্মরণ করে তাহলে তার [গাফলতির] একটি গিরা খুলে যায়। তারপর সে যদি উযূ [ওযু/ওজু/অজু] করে, [গাফলতির] আর একটি গিরা খুলে যায়। যদি সে সলাত [সালাত/নামায/সলাত] আরম্ভ করে তখন তার তৃতীয় গিরাটিও খুলে যায়। বস্ত্ততঃ এ লোক পাক-পবিত্র হয়ে ভোরের মুখ দেখে, নতুবা অপবিত্র হয়ে ভোরের দিকে কলূষ অন্তর ও অলস মন নিয়ে উঠে। {১}

{১} সহীহ : বোখারী ১১৪২, মুসলিম ৭৭৬। কিয়ামুল লাইল -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১২২০. মুগীরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাত্রে সলাত [সালাত/নামায/সলাত] আদায় করিতে পড়তে নবী সাঃআঃ-এর পা ফুলে যেত। তাঁকে বলা হলো, আপনি কেন এত কষ্ট করছেন। অথচ আপনার পূর্বের ও পরের সকল পাপ ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে? [এ কথা শুনে] তিনি [সাঃআঃ] ইরশাদ করিলেন, আমি কী কৃতজ্ঞতা স্বীকারকারী বান্দা হবো না? {১}

{১} সহীহ : বোখারী ১২১৮, মুসলিম ২৮১৯। কিয়ামুল লাইল -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১২২১. আবদুল্লাহ ইবনি মাস্ঊদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী সাঃআঃ-এর সম্মুখে এক লোক সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। তাঁকে বলা হলো, লোকটি সকাল পর্যন্ত একটানা ঘুমিয়ে থাকে, সলাতের জন্যে উঠে না। তিনি [সাঃআঃ] ইরশাদ করেন, এ লোকের কানে অথবা তিনি [সাঃআঃ] বলেছেন, তার দুকানে শয়তান [শয়তান] পেশাব করে দিয়েছে। {১}

{১} সহীহ : বোখারী ৩২৭০, মুসলিম ৭৭৪। কিয়ামুল লাইল -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১২২২. উম্মু সালামাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, এক রাত্রে রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ ঘাবড়িয়ে গিয়ে এ কথা বলিতে বলিতে ঘুম থেকে জেগে উঠলেন, সুবহা-নাল্ল-হ আজ রাত্রে কত ধন-সম্পদ অবতরণ করা হয়েছে। আর কত ফিতনাহ্ অবতরণ করা হয়েছে। হুজরাবাসিনীদেরকে ঘুম থেকে উঠিয়ে দিবে কে? তিনি এর দ্বারা তাহাঁর স্ত্রীদেরকেই বুঝিয়েছেন। যেন তারা সলাত [সালাত/নামায/সলাত] আদায় করে। কত মহিলা দুনিয়ায় কাপড় পরিধান করে আছে, কিন্তু আখিরাতে তারা উলঙ্গ থাকিবে। []{১}

{১} সহীহ : বোখারী ৭০৬৯। কিয়ামুল লাইল -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১২২৩. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ ইরশাদ করেছেনঃ প্রতি রাত্রে শেষ তৃতীয়াংশে আমাদের মর্যাদাবান বারাকাতপূর্ণ রব দুনিয়ার আকাশে নেমে আসেন এবং বলেন, যে আমাকে ডাকবে আমি তার ডাকে সাড়া দেব। যে আমার নিকট কিছু প্রার্থনা করিবে আমি তাকে তা দান করব। যে আমার নিকট মাফ চাইবে আমি তাকে মাফ করে দেব। ]{১}

{১} সহীহ : বোখারী ১১৪৫, মুসলিম ৭৫৮। কিয়ামুল লাইল -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১২২৪. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী সাঃআঃ-কে বলিতে শুনিয়াছি, রাত্রে এমন একটা সময় অবশ্যই আছে, কোন মুসলিম যদি এ সময়টা প্রাপ্ত হয় এবং আল্লাহ তাআলার নিকট দুনিয়া ও আখিরাতের কোন কল্যাণ করে তাহলে আল্লাহ তাআলা তাকে তা অবশ্যই দান করেন। এ সময়টা প্রতি রাত্রেই আসে। ]{১}

{১} সহীহ : মুসলিম ৭৫৭। কিয়ামুল লাইল -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১২২৫. আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ ইরশাদ করেছেনঃ আল্লাহ তাআলার নিকট সকল সলাতের মাঝে দাউদ [আঃ]-এর সলাত [সালাত/নামায/সলাত] এবং সকল সওমের মাঝে দাউদ [আঃ]-এর সওম সবচেয়ে বেশী প্রিয়। তিনি অর্ধেক রাত্র ঘুমাতেন। এক-তৃতীয়াংশ সলাত [সালাত/নামায/সলাত] আদায় করিতেন। তারপর রাতের ষষ্ঠাংশে আবার ঘুমাতেন। আর তিনি একদিন সওম পালন করিতেন এবং একদিন সওম ছেড়ে দিতেন।{১}

{১} সহীহ : বোখারী ১১৩১, মুসলিম ১১৫৯। কিয়ামুল লাইল -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১২২৬. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ রাত্রের প্রথমাংশে ঘুমাতেন, আর শেষাংশে জেগে থাকতেন। এরপর তিনি যদি তাহাঁর কোন স্ত্রীর নিকট যাওয়া দরকার মনে করিতেন যেতেন। এরপর আবার ঘুমিয়ে যেতেন। তিনি যদি ফজরের [ফজরের] পূর্বে আযানের সময় অপবিত্র অবস্থায় থাকতেন, উঠে যেতেন। নিজের শরীরে পানি ঢেলে নিতেন। আর অপবিত্র অবস্থায় না থাকলে ফাজ্‌রের [ফজরের] সলাতের জন্যে উযূ [ওযু/ওজু/অজু] করিতেন। [ফজরের] দু রাক্আত [সলাত] আদায় করে নিতেন।{১}

{১} সহীহ : বোখারী ১১৪৬, মুসলিম ৭৩৯, নাসায়ী ১৬৮০। কিয়ামুল লাইল -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

অধ্যায়ঃ ৩৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ

১২২৭. আবু উমামাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন : তোমাদের জন্যে ক্বিয়ামুল লায়ল [তাহাজ্জুদের সলাত] আদায় করা আবশ্যক। কারণ এটা তোমাদের পূর্বের নেক লোকদের অভ্যাস। [তাছাড়াও এ] ক্বিয়ামূল লায়ল আল্লাহর নৈকট্য লাভ আর পাপের কাফ্‌ফারাহ্‌। তোমাদেরকে পাপ থেকেও [এ ক্বিয়ামুল লায়ল] ফিরিয়ে রাখে। {১}

{১} হাসান লিগায়রিহী : আত তিরমিজি ৩৫৪৯, সহীহ ইবনি খুযায়মাহ্ ১১৩৫, সুনান আল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৪৩১৭, সহীহ আত তারগীব ৬২৪, সহীহ আল জামি ৪০৭৯। এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান লিগাইরিহি

১২২৮. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইরশাদ করিয়াছেন : তিন প্রকার লোকদের প্রতি নজর করে আল্লাহ তাআলা হাসেন [অর্থাৎ তাদের ওপর খুশি হন]। ঐ লোক, যে রাতে উঠে [তাহাজ্জুদের] সলাত আদায় করে। [দ্বিতীয়] ঐ লোক, যারা সলাতে কাতারবন্ধি হয়ে দাঁড়ায়। [তৃতীয়] ঐ লোকজন, যারা [দ্বীনের] দুশমনদের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য কাতারবদ্ধ হয়ে দাঁড়ায়।১}

{১} জইফ : ইবনি আবী শায়বাহ্ ৩৫৩৮, আহমাদ ১১৭৬২, শারহুস্ সুন্নাহ্ ৯২৯, সিলসিলাহ্ আয্ যঈফাহ্ ৩৪৫৩, ইবনি মাজাহ ২০০, জইফ আল জামি ২৬১১। কারণ এর সানাদে মুজালিদ একজন দুর্বল রাবী এবং হুশায়ম মুদাল্লিস রাবী যিনি عنعن সূত্রে হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন তদুপরি তিনি মুজালিদ থেকে হাদিস শ্রবণ করেননি যেমনটি ঈমাম আহমাদ তার عِلَلٌ গ্রন্থে উল্লেখ করিয়াছেন।এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

১২২৯. আমর ইবনি আবাসাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইরশাদ করেন : আল্লাহ তাআলা শেষ রাতেই বান্দার বেশী নিকটতম হন। তাই সে সময় তোমরা আল্লাহর যিক্‌রকারীদের মাঝে শামীল হওয়ার চেষ্টা করিতে যদি পারো অবশ্যই করো।

[তিরমিজি; তিনি বলেছেন, এ হাদিসটি হিসেবে হাসান সহীহ, সানাদগত দিক থেকে গরীব] {১}; {১} সহীহ : আত তিরমিজি ৩৫৭৯, ইবনি খুযায়মাহ্ ১১৪৭, মুসতাদরাক লিল হাকিম ১১৬২, সুনান আল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৪৬৬৩, আল কালিমুত্ব ত্বইয়্যিব ৫৪, সহীহ আল জামি ১১৭৩। কিয়ামুল লাইল -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১২৩০. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইরশাদ করিয়াছেন : আল্লাহ তাআলা ঐ লোকের ওপর রহমাত নাযিল করুন যে রাতে উঠে তাহাজ্জুদের সলাত আদায় করে। আবার নিজের স্ত্রীকেও সলাতের জন্যে জাগায়। যদি স্ত্রী না উঠে তাহলে তাহাঁর মুখে পানি ছিটিয়ে দেয়। আল্লাহ ঐ মহিলার প্রতিও রহমাত করেন যে রাত্রে উঠে তাহাজ্জদের সলাত আদায় করে। আবার তাহাঁর স্বামীকেও তাহাজ্জুদের সলাত আদায়ের জন্য উঠায়। যদি স্বামী ঘুম থেকে না উঠে তাহলে সে তাহাঁর মুখে পানি ছিটে দেয়। {১}

{১} হাসান সহীহ : আবু দাউদ ১৩০৮, নাসায়ী ১৬১০, ইবনি মাজাহ ১৩৩৬, ইবনি খুযায়মাহ্ ১১৪৮, ইবনি হিব্বান ২৫৬৭, মুসতাদরাক লিল হাকিম ১১৬৪, সুনান আল কুবরা ৪৩১৪, সহীহ আত তারগীব ৬২৫, সহীহ আল জামি ৩৪৯৪। এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান সহীহ

১২৩১. আবু উমামাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, প্রশ্ন করা হলো, হে আল্লাহর রসূল! কোন সময়ের দুআ আল্লাহর নিকট বেশি কবূল হয়। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেন, মাঝরাতের শেষ ভাগের দুআ। আর ফার্‌য সলাতের পরের দুআ। {১}

{১} হাসান : আত তিরমিজি ৩৪৯৯, আল কালিমুত্ব ত্বইয়্যিব ১১৪, সহীহ আত তারগীব ১৬৪৮। এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান হাদিস

১২৩২. আবু মালিক আল আশ্আরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইরশাদ করিয়াছেন : জান্নাতে এমন সব কক্ষ আছে যার বাইরের জিনিস ভেতর থেকে আর ভেতরের জিনিস বাইরে থেকে দেখা যায়। আর এ বালাখানা আল্লাহ তাআলা ঐসব ব্যক্তির জন্যে তৈরি করে রেখেছেন, যারা অন্য ব্যক্তির সঙ্গে নরম কথা বলে। [গরীব-মিসকীনকে] খাবার দেয়। প্রায়ই [নাফ্‌ল] সওম পালন করে। রাত্রে এমন সময় [তাহাজ্জুদের] সলাত আদায় করে যখন অনেক মানুষ ঘুমিয়ে থাকে। {১}

{১} হাসান লিগায়রিহী : ইবনি হিব্বান ৫০৯, মুসতাদরাক লিল হাকিম ২৭০, শুআবুল ঈমান ২৮২৫, সহীহ আত তারগীব ৬১৮, সহীহ আল জামি ২১২৩। এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান লিগাইরিহি

১২৩৩. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

ঈমাম তিরমিজিও এ ধরনের বর্ণনা আলী [রাদি.] হইতে নকল করিয়াছেন। কিন্তু এদের সূত্রে কোমল কথা বলে-এর স্থানে মধুর কথা বলে উদ্ধুত হয়েছে। উভয় বাক্যের অর্থ একই।।{১}

{১} হাসান : আত ১৯৮৪, ২৫২৭, আহমাদ ১৩৩৮, মুসনাদ আল বায্যার ৭০২, ইবনি খুযায়মাহ্ ২১৩৬। এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান হাদিস

অধ্যায়ঃ ৩৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ

১২৩৪.আবদুল্লাহ ইবনি আমর ইবনুল আস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে বললেন, হে আবদুল্লাহ! তিমি অমুক লোকের মতো হয়ো না। সে রাত্রে [সজাগ হয়ে] তাহাজ্জুদের সলাত আদায় করত, পরে তা ছেড়ে দিয়েছে। {১}

{১} সহীহ : বোখারী ১১৫২, মুসলিম ১১৫৯। কিয়ামুল লাইল -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১২৩৫. উসমান ইবনি আবুল আস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি : দাউদ [আলাইহিস সালাম]-এর জন্যে রাত্রের [শেষাংশের একটি] সময় নির্ধারিত ছিল। যে সময়ে তিনি নিজের পরিবারের সদস্যদেরকে উঠাতেন। তিনি বলিতেন, হে দাউদের পরিবারের লোকেরা! [ঘুম থেকে] জাগো এবং সলাত আদায় কর। কারণ এটা এমন মুহূর্ত, যে সময় আল্লাহ তাআলা দুআ কবুল করেন। কিন্তু জাদুকর ও ছিনতাইকারীর দুআ কবুল হয়না। {১}

{১} জইফ : আহমাদ ১৬২৪১, সিলসিলাহ্ আয্ যঈফাহ্ ১৯৬২, জইফ আল জামি ১৭৮০। দুটি কারণে: প্রথমতঃ আলী ইবনি যায়দ ইবনি জাদ্আন দুর্বল রাবী। দ্বিতীয়তঃ হাসান আল বাসারী এবং উসমান ইবনি আবিল আস-এর মধ্যে বিচ্ছিন্নতা। কারণ হাসান আল বসরী উসমান [রাদি.] থেকে হাদিস শ্রবণ করেননি। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

১২৩৬. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনিয়াছি : ফার্‌য সলাতের পর অধিক উত্তম সলাত হলো মাঝ রাত্রের সলাত। {১}

{১} সহীহ : আহমাদ ১০৯১৫, সুনান আল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৮৪২১, শুআবুল ঈমান ২৮২৬। কিয়ামুল লাইল -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১২৩৭. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একলোক রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর কাছে এলো এবং তাঁকে বলিল, অমুক লোক রাত্রে সলাত আদায় করে কিন্তু ভোরে উঠে চুরি করে। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেন : খুব তাড়াতাড়ি তার সলাত তাকে এ আমাল থেকে বাধা দিবে, তার যে আমালের কথা তুমি বলছ। {১}

{১} সহীহ : আহমাদ ৯৭৭৮, ইবনি হিব্বান ২৫৬০, শুআবুল ঈমান ২৯৯১, সিলসিলাহ্ আস্ সহীহাহ্ ৩৪৮২। কিয়ামুল লাইল -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১২৩৮. আবু সাঈদ আল খুদরী ও আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তারা বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইরশাদ করিয়াছেন : যখন কোন তার স্ত্রীকে ঘুম থেকে উঠায় ও উভয়ে এক সাথে সলাত আদায় করে অথবা তিনি এ কথা বলেছেন, তাদের প্রত্যেকে দু রাক্‌আত করে সলাত এক সাথে পড়ে, তাহলে এ দুই [স্বামী-স্ত্রী] লোকের নাম আল্লাহকে স্মরণকারী নর ও নারীদের দলের মাঝে লিপিবদ্ধ করা হয়।{১}

{১} সহীহ : আবু দাউদ ১৩০৯, ইবনি মাজাহ ১৩৩৫, সহীহ আত তারগীব ৬২৬। কিয়ামুল লাইল -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১২৩৯. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইরশাদ করিয়াছেন : আমার উম্মাতের মাঝে বেশী সম্ভ্রান্ত অর্থাৎ উন্নত মর্যাদার অধিকারী ব্যক্তি তারাই, যারা কুরআন বহনকারী ও সলাত আদায়ের মাধ্যমে রাত জাগরণকারী। {১}

{১} মাওযূ : শুআবুল ঈমান ২৯৭৭, যঈফাহ্ ২৪১৬, জইফ আত তারগীব ৩৬৬, জইফ আল জামি ৮৭২। এর সানাদে রাবী সাদ ইবনি সাঈদ সম্পর্কে ঈমাম বোখারী [রাহিমাহুল্লাহ] বলেছেন, لا يصح حديثة তার হাদিস বিশুদ্ধ নয়। আর তার শিক্ষক নাহশাল هَالِكٌ। এই হাদিসটির তাহকীকঃ জাল হাদিস

১২৪০. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, তাহাঁর পিতা উমার ইবনুল খাত্ত্বাব [রাদি.] রাত্রে আল্লাহর ইচ্ছা মতো সলাত আদায় করিতেন। রাত্রের শেষভাগে নিজ পরিবারকে সলাত আদায়ের জন্যে উঠিয়ে দিতেন। তিনি তাদের বলিতেন, সলাত আদায় কর। তারপর এ আয়াত পাঠ করিতেন :

وَأْمُرْ أَهْلَكَ بِالصَّلَاةِ وَاصْطَبِرْ عَلَيْهَا لَا نَسْأَلُكَ رِزْقًا نَحْنُ نَرْزُقُكَ وَالْعَاقِبَةُ لِلتَّقْوى﴾ [طه 20 : 132]

“ওয়ামুর আহ্‌লাকা বিস্‌সলা-তি ওয়াস্‌ত্বাবির আলায়হা- লা –নাস্‌আলুকা রিয্‌ক্বান। নাহনু নার্‌যুকুকা ওয়াল আ-ক্বিবাতু লিত্ তাক্বওয়া-”। অর্থাৎ “তোমার পরিবারের লোকজনদেরকে সালাতের আদেশ করিতে থাকো। নিজেও [এ কষ্টের] জন্যে ধৈর্য ধারণ করিতে থাকো। আমি তোমার নিকট রিয্‌ক্ব চাইনা। রিয্‌ক্ব তো আমিই তোমাকে দান করি। আখিরাতের সফলতা তো মুত্তাক্বী লোকদের জন্য”- [সূরাহ্‌ ত্ব-হা- ২০ : ১৩২]। [ {১}

{১} সহীহ : মালিক ৩৮৯, সুনান আস্ সুগরা লিল বায়হাক্বী ৮০২। কিয়ামুল লাইল -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply