দুবার সালাত আদায় করা
দুবার সালাত আদায় করা >> মিশকাতুল মাসাবীহ এর মুল সুচিপত্র দেখুন
পর্বঃ ৪, অধ্যায়ঃ ২৯
- অধ্যায়ঃ ২৯. প্রথম অনুচ্ছেদ
- অধ্যায়ঃ ২৯. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
- অধ্যায়ঃ ২৯. তৃতীয় অনুচ্ছেদ
অধ্যায়ঃ ২৯. প্রথম অনুচ্ছেদ
১১৫০. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, মুআয ইবনি জাবাল [রাদি.] রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে সলাত আদায় করিতেন। এরপর নিজের গোত্রে এসে তাদের সলাত আদায় করাতেন। {১}
{১} সহীহ : বোখারী ৭১১, মুসলিম ৪৬৫। দুবার সালাত আদায় করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১১৫১. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, মুআয [রাদি.] নবী [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে জামাআতে ইশার সলাত আদায় করিতেন। তারপর নিজ জাতির কাছে ফিরে এসে তাদের আবার ইশার সলাত আদায় করাতেন। তার জন্যে তা ছিল নাফল। {১}
{১} সহীহ : মুসনাদে শাফিঈ ৩০৬, সুনান আস্ সগীর লিল বায়হাক্বী ৫২৫। দুবার সালাত আদায় করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
অধ্যায়ঃ ২৯. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
১১৫২. ইয়াযীদ ইবনি আস্ওয়াদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে হজ্জে [বিদায় হাজ্জ] গিয়েছিলাম। সে সময় আমি একদিন তার সঙ্গে মসজিদে খায়েফে ফাজরের সলাত আদায় করেছি। তিনি সলাত সমাপ্ত করে পেছনের দিকে তাকিয়ে দেখলেন জামাআতের শেষ প্রান্তে দুলোক বসে আছে। যারা তাহাঁর সঙ্গে [জামাআতে] সলাত আদায় করেনি। তাদের দেখে তিনি বললেন তাদেরকে আমার নিকট নিয়ে আসো। তাদের এ অবস্থায়ই রসূলের নিকট হাযির করা হলো। ভয়ে তখন তাদের কাধের গোশত থরথর করে কাঁপছিল। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাদেরকে প্রশ্ন করিলেন। আমাদের সঙ্গে সলাত আদায় করিতে তোমাদেরকে কে বাধা দিয়েছে? তারা আরয করলো! হে আল্লাহর রসূল। আমরা আমাদের বাড়িতে সলাত আদায় করে এসেছি। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এ কথা শুনে বললেন ভবিষ্যতে এ কাজ আর করিবে না। তোমরা ঘরে সলাত আদায় করে আসার পরও মাসজিদে এসে জামাআত চলছে দেখলে জামাআতে সলাত আদায় করে নিবে। এ সলাত তোমাদের জন্যে নাফল হয়ে যাবে। {১}
{১} সহীহ : আবু দাউদ ৫৭৫, আত তিরমিজি ২১৯, নাসায়ী ০৮৫৮, আহমাদ ১৭৪৭৫, দারিমী ১৪০৭, মুজাম আল কাবীর লিত্ ত্ববারানী ৬১০, দারাকুত্বনী ১৫৩৪, সুনান আস্ সগীর লিল বায়হাক্বী ৫৫১, সহীহ ইবনি হিব্বান ১৫৬৪। দুবার সালাত আদায় করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
অধ্যায়ঃ ২৯. তৃতীয় অনুচ্ছেদ
১১৫৩. বুসর ইবনি মিহজান [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি তার পিতা থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি [তার পিতা মিহজান] এক সভায় রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে ছিলেন। এমন সময় আযান হয়ে গেল। তাই রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সলাতের জন্যে দাঁড়িয়ে গেলেন ও সলাত আদায় করিলেন। সলাত শেষ করে ফিরে আসলেন। দেখলেন মিহজান তার স্থানে বসে আছে। তিনি তাকে প্রশ্ন করিলেন। মানুষের সঙ্গে [জামাআতে] সলাত আদায় করিতে তোমাকে কোন জিনিস নিষেধ করেছিল? তুমি কি মুসলিম না। মিহজান বলিল, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রসূল! আমি মুসলিম। কিন্তু আমি আমার পরিবারের সঙ্গে সলাত আদায় করে এসেছি। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেন: তুমি তোমার বাড়িতে সলাত আদায় করে আসার পরে মসজিদে এসে সলাত হচ্ছে দেখলে লোকদের সঙ্গে [জামাআতে] সলাত আদায় করিবে তুমি [এর পূর্বে] সলাত আদায় করে থাকলেও। {১}
{১} সহীহ : নাসায়ী ৮৫৭, ইবনি হিব্বান ২৪০৫, মুসনাদ আশ্ শাফিঈ ১০৪৩, মালিক ৪৩৫, আহমাদ ১৬৩৯৩, দারাকুত্বনী ১৫৪১, মুসতাদরাক লিল হাকিম ৪৯০, সুনান আল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৩৬৩৮, সহীহাহ্ ১৩৩৭, সহীহ ১৩৩৭, দুবার সালাত আদায় করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১১৫৪. আসাদ ইবনি খুযায়মাহ্ গোত্রের এক লোক থেকে বর্ণিত। হইতে বর্ণীতঃ
তিনি আবু আইয়ুব আল আনসারী [রাদি.] কে প্রশ্ন করিলেন। আমাদের কেউ বাড়িতে সলাত আদায় করে মসজিদে আসলে [জামাআতে] সলাত হচ্ছে দেখলে তাদের সাথে সলাত পড়ি। কিন্তু আমি এ ব্যাপারে আমার মনে খটকা অনুভব করি। আবু আইয়ুব আল আনসারী জবাবে বললেন, আমিও এ সম্পর্কে নবী [সাঃআঃ]-কে প্রশ্ন করেছি। তিনি বলেছেন, এটা [দ্বিতীয়বার সলাত আদায় করা] তার জন্যে জামাআতের অংশ সমতুল্য। [এতে খটকার কিছু নেই]।{১}
1] জইফ : আবু দাউদ ৫৭৮, সুনান আল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৩৬৪১। কারণ এর সানাদে রাবী আফীফ সম্পর্কে ঈমাম যাহাবী বলেছেন, সে কে তা জানা যায় না। ঈমাম নাসায়ী তাকে নির্ভরযোগ্য বলেছেন এবং رَجُلٌ [ব্যক্তি] একজন অপরিচিত ব্যক্তি। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
১১৫৫. ইয়াযীদ ইবনি আমির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, [একদিন] আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট আসলাম। সে সময় তিনি লোকজন নিয়ে সলাত আদায় করছিলেন। আমি [এক পাশে] বসে থাকলাম। তাদের সঙ্গে জামাআতে অংশগ্রহণ করলাম না। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সলাত শেষ করে এদিকে ফিরে আমাকে বসা অবস্থায় দেখে বললেন। তুমি কি মুসলিম না, হে ইয়াযীদ! সলাত আদায় করনি। আমি বললাম। হ্যাঁ! আমি মুসলিম হে আল্লাহর রসূল! তিনি বললেন, তাহলে লোকদের সঙ্গে সলাতে অংশগ্রহণ করিতে তোমাকে নিষেধ করেছে কে? আমি বললাম, আমি আমার ঘরে সলাত আদায় করে এসেছি। আমার ধারণা ছিল আপনিও সলাত আদায় করে ফেলেছেন। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেন: তুমি যখন মসজিদে আসবে আর লোকজনকে জামাআতে সলাত আদায় করিতে দেখবে। তখন তুমিও সলাতে অংশগ্রহণ করিবে। যদি তুমি এর পূর্বে [একবার] সলাত আদায় করেও থাকো। আর এ [দ্বিতীয়বারের] সলাত তোমার জন্যে নাফল হিসেবে গণ্য হবে। আর পূর্বের পড়া সলাত ফারয হিসেবে আদায় হবে। {১}
{১} জইফ : আবু দাউদ ৫৭৭, জইফ আল জামি ৪৪৬। কারণ এর সানাদে নূহ একজন অপরিচিত রাবী। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
১১৫৬. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, এক লোক তাঁকে প্রশ্ন করিল। আমি আমার বাড়িতে সলাত আদায় করে নেই। এরপর মাসজিদে আসলে [মানুষদেরকে] ইমামের সঙ্গে সলাত আদায় করা অবস্থায় পাই। আমি কি [এ অবস্থায়] এ ইমামের পেছনে সলাত আদায় করিতে পারি? ইবনি উমার বললেন হ্যাঁ, পারো। তারপর ঐ লোক আবার প্রশ্ন করিল। তাহলে আমার [ফরয] সলাত কোনটি মনে করব? ইবনি উমার বললেন, এটা কি তোমার কাজ? এটা আল্লাহ তাআলার কাজ। তিনি যে সলাতকে চাইবেন ফারয হিসেবে গ্রহণ করে নেবেন। [মালিক] {১}
{১} সহীহ : মালিক ৪৩৬। দুবার সালাত আদায় করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১১৫৭. উম্মুল মুমিনীন মায়মূনাহ্ [রাদি.]-এর মুক্ত গোলাম সুলায়মান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একবার আমরা আবদুল্লাহ ইবনি উমার-এর নিকট বালাতে [মাসজিদের আঙিনায়] আসলাম। সে সময় মানুষেরা মাসজিদে [জামাআতে] সলাত আদায় করছিল। আমরা ইবনি উমার–কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি লোকদের সঙ্গে [জামাআতে] সলাত আদায় করছেন না কেন ? জবাবে আবদুল্লাহ ইবনি উমার বললেন, আমি সলাত আদায় করে ফেলেছি। আর আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি, তোমরা একই দিনে এক সলাত দুবার আদায় করিবে না। {১}
{১} সহীহ : আবু দাউদ ৫৭৯, নাসায়ী ৬৮০, ইবনি খুযায়মাহ্ ১৬৪১, ইবনি হিব্বান ২৩৯৬, মুজামুল কাবীর ১৩২৭০। দুবার সালাত আদায় করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১১৫৮. নাফি [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেছেন, আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] বলিতেন, যে লোক মাগরিবের সলাত কি ফাজ্রের সলাত একা একা আদায় করে নিয়েছে। এরপর এ সলাতগুলোকে [অন্যত্র] ঈমামকে জামাআতে আদায় করা অবস্থায় পায় তাহলে সে এ সলাতকে পুনরায় আদায় করিবে না। {১}
{১} সহীহ : মালিক ৪৩৯, মুসনাদে শাফিঈ ১০৪৪। দুবার সালাত আদায় করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
Leave a Reply