ইমাম ও মুক্তাদি এর দারাবার স্থান

ইমাম ও মুক্তাদি এর দারাবার স্থান

ইমাম ও মুক্তাদি এর দারাবার স্থান >> মিশকাতুল মাসাবীহ এর মুল সুচিপত্র দেখুন

পর্বঃ ৪, অধ্যায়ঃ ২৫

  • অধ্যায়ঃ ২৫. প্রথম অনুচ্ছেদ
  • অধ্যায়ঃ ২৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
  • অধ্যায়ঃ ২৫. তৃতীয় অনুচ্ছেদ

অধ্যায়ঃ ২৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ

১১১. সামুরাহ্ ইবনি জুনদুব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে আদেশ করিয়াছেন। যখন আমাদের তিন লোক সলাত আদায় করিবে তখন আমাদের একজন [উত্তম ব্যক্তি] সামনে চলে যাবে অর্থাৎ ঈমামতি করিবে। {১}

{১} সানাদ জইফ : আত তিরমিজি ২৩৩। কারণ এর সানাদে ইসমাঈল বিন মুসলিম একজন দুর্বল রাবী এবং হাসান মুদাল্লিস রাবী।এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

১১১২. আম্মার ইবনি ইয়াসির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি [একদিন] মাঠে [সলাতে] মানুষের ঈমামতি করছিলেন। সলাত আদায় করার জন্যে তিনি একটি চত্বরের উপর দাঁড়িয়ে গেলেন। মুক্তাদীগণ ছিলেন তার নীচে দাঁড়িয়ে। এ অবস্থা দেখে হুযায়ফাহ্‌ কাতার থেকে বেরিয়ে এসে সামনের দিকে গেলেন এবং আম্মারের হাত ধরলেন। আম্মার তাঁকে অনুকরণ করিলেন। হুযায়ফাহ্‌ তাঁকে নীচে নামিয়ে দিলেন। আম্মারের সলাত শেষ হওয়ার পর হুযায়ফাহ্‌ তাঁকে বললেন। আপনি কি জানেননি, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইরশাদ করিয়াছেন : কোন লোক জামাআতে সলাতের ঈমাম হলে তার দাঁড়াবার স্থান যেন মুক্তাদীদের দাঁড়াবার স্থান হইতে উঁচু না হয়। অথবা এ রকমের কোন শব্দ উচ্চারণ করিয়াছেন। আম্মার উত্তর দিলেন, এ জন্যেই তো আপনি যখন আামার হাত ধরেছেন আমি আপনার অনুসরণ করেছি। ]{১}

{১} জইফ : আবু দাউদ ৫৯৮, ইরওয়া ৫৪৪। কারণ এর সানাদের রাবী আবু খালিদকে ঈমাম যাহাবী অপরিচিত বলেছেন। আর رَجُلٌ [ব্যক্তি] একজন মাজহূল রাবী। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

১১১৩. সাহল ইবনি সাদ আস্ সাইদী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

একদিন তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর মিম্বার কিসের তৈরি ছিল? তিনি বললেন, জঙ্গলের ঝাউ কাঠের তৈরি ছিল। সেটাকে অমুক মহিলার স্বাধীন করা গোলাম অমুকে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর জন্যে তৈরি করেছিলেন। সেটা তৈরি হয়ে গেলে, মাসজিদে রাখা হলো। তখন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর ওপর দাঁড়ালেন। ক্বিবলামুখী হয়ে সলাতের জন্য তাকবীর তাহ্‌রীমা বাঁধলেন। সকলে তার পেছনে দাঁড়িয়ে গেলেন। তিনি [সাঃআঃ] মিম্বারের উপর হইতেই ক্বিরাআত পাঠ করিলেন। রুকূ করিলেন। অন্যান্য লোকও তাহাঁর পেছনে রুকূ করিলেন। অতঃপর তিনি রুকূ হইতে মাথা উত্তোলন করিলেন। এরপরে মিম্বার থেকে পা নামিয়ে জমিনে সাজদাহ্‌ করিলেন। এরপর পুনরায় তিনি মিম্বারে উঠলেন। কুরআন পড়লেন। রুকূ করিলেন রুকূ থেকে মাথা উত্তোলন করিলেন, তারপর পেছনে সরে আসলেন এমনকি জমিনে সাজদাহ্‌ করিলেন। {এ ভাষা বোখারী [রাহিমাহুল্লাহ]-এর একক; আবার বোখারী মুসলিমের মিলিত বিবরণটা এরূপ। এ হাদিসের বর্ণনাকারী হাদিসের শেষে এ উক্তি পেশ করিলেন। যখন তিনি [সাঃআঃ] সলাত হইতে অবসর হলেন, তখন বললেন, “আমি এজন্যে এ আমাল করেছি, তোমরা যেন আমার অনুকরণ করো। আমার সলাতের পরিস্থিতি, এর বিধানাবলী জানতে পার।] {১}

{১} সহীহ : বোখারী ৩৭৭, ৯১৭, মুসলিম ৫৪৪। এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১১১৪. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিজের কামরায় সলাত আদায় করিলেন। আর লোকেরা কামরার বাইরে হইতে তাহাঁর সাথে সলাতের ইকতেদা করিলেন। {১}

{১} সহীহ : বোখারী ৭২৯, আবু দাউদ ১১২৬। এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

অধ্যায়ঃ ২৫. তৃতীয় অনুচ্ছেদ

১১১৫. আবু মালিক আল আশ্আরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি কি তোমাদেরকে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সলাতের ব্যাপারে কিছু বলব না? [তাহলে] শুনো! তিনি [সাঃআঃ] লোকদেরকে সলাত আদায় করার জন্য [প্রথমে] পুরুষদের কাতার করালেন, এরপর তাদের পেছনে শিশুদের কাতার দাঁড় করালেন। তারপর তাদের নিয়ে সলাত আদায় করালেন। [আবু মালিক] তাহাঁর [সাঃআঃ]-এর সলাতের বিবরণ দেয়ার পর বললেন, অতঃপর তিনি [সাঃআঃ] শেষে বললেন, এভাবে সলাত আদায় করিতে হবে। আবদুল আলা যিনি আবু মালিক থেকে বর্ণনা করে বলেন, আমার মনে হয়, আবু মালিক আমার উম্মাতের- এ কথাটিও বলেছেন। {১}

{১} জইফ : আবু দাউদ ৬৭৭, আহমাদ ২২৯১৮, বায়হাক্বী ৫১৬৫। এর সানাদে শাহর বিন হাওশাব স্মৃতিশক্তিগত ত্রুটিজনিত দোষে দুষ্ট একজন দুর্বল রাবী এবং মুসনাদে আহমাদের সানাদে আব্বাস বিন আল ফাযল একজন মাতরূক রাবী তবে তার হাদিস মুতাবি হওয়ার যোগ্যতা সম্পন্ন।এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

১১১৬. ক্বায়স ইবনি উবাদ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদিন আমি মাসজিদে প্রথম কাতারে দাঁড়িয়ে সলাত আদায় করছিলাম। এ সময় এক লোক আমাকে পেছন থেকে টেনে একপাশে নিয়ে নিজে আমার স্থানে দাঁড়ালেন। আল্লাহর শপথ! এ রাগে আমার সলাতে হুঁশ ছিল না। সলাত শেষ করার পর আমি তাকিয়ে দেখলাম তিনি উবাই ইবনি কাব। আমাকে রাগান্বিত দেখে তিনি বললেন, হে যুবক! [আমার এর জন্যে] আল্লাহ তোমাকে যেন কষ্ট না দেয়! আমার জন্যে নবী [সাঃআঃ]-এর ওয়াসিয়াত ছিল, আমি যেন তাহাঁর নিকট দাঁড়াই। তারপর ক্বিবলাব দিকে মুখ ফিরিয়ে তিনবার এ কথা বললেন, রবের কাবার কসম! ধ্বংস হয়ে গেছে আহলুল আক্বদ। আরো বললেন, আল্লাহর কসম! তাদের ওপর [জনগণের সম্পর্কে] আমার কোন চিন্তা নেই। চিন্তা তো হলো তাদের জন্যে যাদের নেতারা গোমরাহ করছে। ক্বায়স ইবনি উবাদ বলেন, আমি উবাই ইবনি কাবকে বললাম। হে আবু ইয়াকূব! আহলুল আক্বদ বলিতে আপনি কি বুঝাচ্ছেন। তিনি বললেন, উমারাহ্‌ [নেতা ও শাসকবর্গ] । ] {১}

{১} সহীহ : নাসায়ী ৮০৮, শুআবুল ঈমান ৬৯৮২। এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply