সালাতের মাকরুহ সমূহ (নাজায়িজ) ও যেসব কাজ জায়িজ

সালাতের মাকরুহ সমূহ (নাজায়িজ) ও যেসব কাজ জায়িজ

সালাতের মাকরুহ সমূহ (নাজায়িজ) ও যেসব কাজ জায়িজ  >> মিশকাতুল মাসাবীহ এর মুল সুচিপত্র দেখুন

পর্বঃ ৪, অধ্যায়ঃ ১৯

  • অধ্যায়ঃ ১৯. প্রথম অনুচ্ছেদ
  • অধ্যায়ঃ ১৯. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
  • অধ্যায়ঃ ১৯. তৃতীয় অনুচ্ছেদ

অধ্যায়ঃ ১৯. প্রথম অনুচ্ছেদ

৯৭৮. মুআবিয়াহ্ ইবনি হাকাম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদিন আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে সলাত আদায় করি। যখন মুসল্লীদের মাঝে থেকে একজন হাঁচি দিলো তখন আমি ইয়ারহামুকাল্ল-হ বললাম। ফলে লোকজন আমার প্রতি দৃষ্টি ক্ষেপন করিল। আমি বললাম, তোমাদের মা সন্তানহারা শোকাহত হোক। তোমাদের কি হলো যে, তোমরা আমার দিকে এমন করে তাকাচ্ছো? মুসল্লীরা আমাকে নীরব করানোর জন্য নিজ নিজ রানের উপর হাত দিয়ে মারতে লাগল। আমি যখন লক্ষ্য করলাম তারা আমাকে চুপ থাকতে বলছে, তখন আমি নীরব হয়ে গেলাম। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সলাত শেষ করিলেন। আমার মাতা-পিতা তাহাঁর জন্যে উৎসর্গ হোক। তার চেয়ে এত চমৎকার শিক্ষাদানে কোন শিক্ষক তার পরবর্তীকালে বা তার পূর্ববর্তীকালে আমি দেখিনি। তিনি আমাকে না ধমকি দিলেন, না মারলেন, না বক্‌লেন। তিনি শুধু এতটুকু বললেন, এ সলাতে মানবীয় কথাবার্তা বলা উপযুক্ত নয়। সলাত হলো তাসবীহ পড়া, তাকবীর বলা ও কুরআন পড়ার নাম। অথবা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এমনটি বলেছেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি জাহিলী যুগ ত্যাগকারী এক নতুন বান্দা। আল্লাহ আমাদেরকে ইসলামে নিয়ে আসছেন। আমাদের মধ্যে অনেকে গণকের কাছে আসে। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেন, তুমি তাদের কাছে আসবে না। আমি আবেদন করলাম, আমাদের অনেকে শুভ-অশুভ লক্ষণ মানে। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেন, এটা এমন একটা বিষয় যা তারা নিজেদের মনের মধ্যে পেয়ে থাকে। তা যেন তাদেরকে কোন কাজ থেকে বিরত না রাখে। মুআবিয়াহ্‌ [রাদি.] বলেন, আমি আবার বললাম, আমাদের মধ্যে এমন কতগুলো লোক আছে যারা রেখা টানে [ভবিষ্যদ্বানী করে]। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেন, নবীদের মধ্যে একজন নবী রেখা টানতেন। অতএব কারো রেখা টানা এ নবীর রেখা টানার সাথে মিল থাকলে ঠিক আছে।

[মুসলিম; মিশকাত সংকলকের উক্তি- তিনি বলেন, আমি “ওয়ালাকিন্নী সাকাততু”-কে সহীহ মুসলিম ও হুমায়দীর পুস্তকে এভাবে পেয়েছি। তবে জামিউল উসূল-এর লেখক লাকিন্নী শব্দের উপর كزا শব্দের দ্বারা বিশুদ্ধতার প্রতি ইশারা করছে।] {১};{১} সহীহ : মুসলিম ৫৩৭, নাসায়ী ১২১৮, দারিমী ১৫৪৩, সহীহ ইবনি খুযায়মাহ্ ৮৫৯। সালাতের মাকরুহ সমূহ (নাজায়িজ) ও যেসব কাজ জায়িজ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

৯৭৯. আবদুল্লাহ ইবনি মাস্ঊদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা নবী [সাঃআঃ]-কে সলাতরত অবস্থায় সালাম দিতাম। তিনি [সাঃআঃ] আমাদের সালামের জবাব দিতেন। আমরা যখন নাজাশী বাদশাহর নিকট থেকে ফিরে এসে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে সালাম দিলাম, তখন তিনি আমাদের সালামের জবাব দেননি। আমরা আরজ করলাম, হে আল্লাহর রসূল! আমরা আপনাকে সলাতের মধ্যে সালাম দিতাম, আপনি সালামের জবাব দিতেন। তিনি [সাঃআঃ] বললেন, সলাতের মধ্যে অবশ্যই ব্যস্ততা আছে। {১}

{১} সহীহ : বোখারী ৩৮৭৫, মুসলিম ৫০৮। সালাতের মাকরুহ সমূহ (নাজায়িজ) ও যেসব কাজ জায়িজ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস,

৯৮০. মুআয়ক্বীব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ]–কে এক লোক সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলো যে ব্যক্তি সলাতে সাজদার স্থানের মাটি সমান করে। তিনি বললেন, যদি তা করিতেই চাও তবে শুধু একবার তা করিবে। {১}

{১} সহীহ : বোখারী ১২০৭, মুসলিম ৫৪৪৬। সালাতের মাকরুহ সমূহ (নাজায়িজ) ও যেসব কাজ জায়িজ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

৯৮১. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সলাতে কোমর বা কাঁধে হাত রেখে ক্বিয়াম করিতে নিষেধ করিয়াছেন। {১}

{১} সহীহ : বোখারী ১২১৯, মুসলিম ৫৪৫। সালাতের মাকরুহ সমূহ (নাজায়িজ) ও যেসব কাজ জায়িজ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

৯৮২. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে সলাতে এদিক-সেদিক দৃষ্টি নিক্ষেপ করার ব্যাপারে প্রশ্ন করেছি। তিনি বলেছেন, এটা ছোঁ মারা। শয়তান বান্দাকে সলাত হইতে ছোঁ মেরে নিয়ে যায়। {১}

{১} সহীহ : বোখারী ৭৫১, আবু দাউদ ৯১০; হাদিসটি সহীহ মুসলিমে নেই। সালাতের মাকরুহ সমূহ (নাজায়িজ) ও যেসব কাজ জায়িজ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

৯৮৩. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইরশাদ করেছেনঃ লোকেরা যেন সলাতে দুআ করার সময় নযরকে আসমানের দিকে ক্ষেপন না করে। অন্যথায় তাদের দৃষ্টিকে ছোঁ মেরে নেয়া হবে।{১}

{১} সহীহ : মুসলিম ৪২৯। সালাতের মাকরুহ সমূহ (নাজায়িজ) ও যেসব কাজ জায়িজ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

৯৮৪. আবু ক্বাতাদাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ]-কে লোকজন নিয়ে সলাত পড়াতে দেখেছি। এমতাবস্থায় নাতনি উমামাহ্‌ বিনতু আবুল আস তখন তাহাঁর কাঁধে থাকত। তিনি [সাঃআঃ] যখন রুকূতে যেতেন উমামাকে নিচে নামিয়ে রাখতেন। আবার যখন তিনি [সাঃআঃ] সাজদাহ্‌ হইতে মাথা উঠাতেন, তাকে আবার কাঁধে উঠিয়ে দিতেন। {১}

{১} সহীহ : বোখারী ৫৯৯৬, মুসলিম ৫৪৩। সালাতের মাকরুহ সমূহ (নাজায়িজ) ও যেসব কাজ জায়িজ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

৯৮৫. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ সলাতে তোমাদের কারো হাই আসলে যথাসাধ্য তা আটকে রাখবে। কারণ [হাই দেয়ার সময়] শয়তান [মুখে] ঢুকে যায়। [{১}

{১} সহীহ : মুসলিম ২৯৯৫। সালাতের মাকরুহ সমূহ (নাজায়িজ) ও যেসব কাজ জায়িজ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

৯৮৬. ঈমাম বোখারীর এক বর্ণনায় আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যখন তোমাদের কারও সলাতের মধ্যে হাই আসে, তখন সে যেন স্বীয়শক্তি অনুযায়ী তা প্রতিরোধ করিতে চেষ্টা করে এবং হা করে মুখ খুলে না দেয়। নিশ্চয়, এটা শায়ত্বনের পক্ষ হইতেই হয়ে থাকে, শয়তান তাতে হাসে। {১}

{১} সহীহ : বোখারী ৬২২৬; তবে তাতে «صلاة» শব্দের উল্লেখ নেই। সালাতের মাকরুহ সমূহ (নাজায়িজ) ও যেসব কাজ জায়িজ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

৯৮৭. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইরশাদ করেছেনঃ গত রাতে একটি দুষ্ট জিন্ আমার নিকট ছুটে এসেছে, আমার সলাত বিনষ্ট করার জন্য। আল্লাহ তাআলা আমাকে ক্ষমতা দিলেন। ফলে আমি তাকে ধরে ফেললাম। আমি ইচ্ছা করলাম মাসজিদে নাবাবীর কোন একটি খুঁটির সাথে একে বেঁধে ফেলতে, যাতে তোমরা সকলে একে দেখিতে পারো। সে মুহূর্তে আমার ভাই সুলায়মান [আঃ]-এর এ দুআটি স্মরণ করলাম,

رَبِّ هَبْ لِيْ مُلْكًا لَا يَنْبَغِيْ لِأَحَدٍ مِّنْ ۢبَعْدِيْ [ص 38 : 35]

“রাব্বি হাব্লী মুলকান লা- ইয়াম্বাগী লিআহাদীম মিম্‌ বাদী” [অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমাকে এমন একটি বাদশাহী দান করো, যা আমার পর আর কারো জন্যে সমীচীন হবে না]। তারপর আমি একে অপদস্ত করে ফেরত দিয়েছি। {১}

{১} সহীহ : বোখারী ৩৪২৩, মুসলিম ৫৪১। সালাতের মাকরুহ সমূহ (নাজায়িজ) ও যেসব কাজ জায়িজ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

৯৮৮. সাহল ইবনি সাদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইরশাদ করেছেনঃ সলাতের মধ্যে যে ব্যক্তির কাছে কোন কিছু আপতিত হয় সে ব্যক্তি যেন সুব্‌হা-নাল্ল-হ পড়ে নেয়। আর হাত তালি একমাত্র মহিলাদের জন্য নির্দিষ্ট।

আরো এক বর্ণনায় আছে, তিনি [সাঃআঃ] বলেছেন, তাসবীহ পড়া পুরুষদের বেলায়, আর হাত তালি দেয়া নারীদের বেলায় প্রযোজ্য। {১}

{১} সহীহ : বোখারী ৬৮৩, ১২০৩, মুসলিম ৪২১, ৪২২। সালাতের মাকরুহ সমূহ (নাজায়িজ) ও যেসব কাজ জায়িজ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

অধ্যায়ঃ ১৯. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ

৯৮৯. আবদুল্লাহ ইবনি মাস্ঊদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা হাবশাহ্‌ যাওয়ার পূর্বে নবী [সাঃআঃ]-কে তাহাঁর সলাতরত অবস্থায় সালাম দিতাম। তিনি [সাঃআঃ]-ও আমাদের সালামের উত্তর দিতেন। আমরা যখন হাবাশাহ্‌ হইতে ফিরে [মাদীনায়] আসি আমি তখন তাকে সলাতরত অবস্থায় পাই। তারপর আমি তাকে সালাম দিলাম কিন্তু তিনি আমাকে সালামের জবাব দিলেন না সলাত শেষ না হওয়া পর্যন্ত, তরপর তিনি [সাঃআঃ] বললেন, আল্লাহ তাআলা যখন যে বিষয় ইচ্ছা করেন সে বিষয় আদেশ জারী করেন। আল্লাহ এখন সলাতে কথাবার্তা না বলার আদেশ জারী করিয়াছেন। অতঃপর তিনি আমার সালামের উত্তর দিলেন। {১}

{১} সহীহ : আবু দাউদ ৯২৪। সালাতের মাকরুহ সমূহ (নাজায়িজ) ও যেসব কাজ জায়িজ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

৯৯. এরপর তিনি [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ

এরপর তিনি [সাঃআঃ] বলেন, সলাত শুধু কুরআন পড়া ও আল্লাহর যিক্‌র করার জন্য। অতএব তোমরা যখন সলাত আদায় করিবে তখন এ অবস্থায়ই থাকিবে। ] {১}

{১} হাসান : আবু দাউদ ৯৩১। এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান হাদিস

৯৯১. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি বিলালকে প্রশ্ন করলাম, নবী [সাঃআঃ] সলাতরত থাকা অবস্থায় তারা রসূল [সাঃআঃ]-কে সালাম দিলে তিনি সালামের জবাব কিভাবে দিতেন? বিলাল উত্তরে বললেন, তিনি [সাঃআঃ] হাত দিয়ে [সালামের জবাবে] ইশারা করিতেন।

[তিরমিজি; নাসায়ীর বর্ণনাও এমনই। তবে তাতে বিলাল-এর স্থলে সুহায়ব [রাদি.] থেকে বর্ণিত হয়েছে বলে উল্লেখ হয়েছে।] {১};{১} সহীহ : আত তিরমিজি ৩৬৮, নাসায়ী ১১৮৭। সালাতের মাকরুহ সমূহ (নাজায়িজ) ও যেসব কাজ জায়িজ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

৯৯২. রিফাআহ্ ইবনি রাফি [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর পেছনে সলাত আদায় করলাম। [সলাতের মধ্যে] আমি হাঁচি দিলাম। আমি ক্বালিমায়ে হাম্‌দ অর্থাৎ

الْحَمْدُ لِلّهِ حَمْدًا كَثِيرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيهِ مُبَارَكًا عَلَيْهِ كَمَا يُحِبُّ رَبُّنَا وَيَرْضى

“আলহাম্দু লিল্লা-হি হাম্‌দান কাসীরান ত্বইয়্যিবাম্‌ মুবা-রাকান ফীহি মুবা-রাকান আলায়হি কামা- ইউহিব্বু রব্বুনা- ওয়া ইয়ার্‌যা-” পাঠ করলাম। সলাত শেষ করে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ফিরে বললেন, সলাতের মাঝে কথা বলিল কে? এতে কেউ কোন কথা বলেনি, তিনি [সাঃআঃ] পুনরায় প্রশ্ন করিলেন। তবুও কেউ কোন কথা বলেনি। তৃতীয়বার তিনি [সাঃআঃ] আবার প্রশ্ন করিলেন। এবার রিফাআহ্ [রাদি.] বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমি। নবী [সাঃআঃ] বললেন, ঐ জাতের শপথ যাঁর হাতে আমার প্রাণ! ত্রিশের বেশি মালাক [ফেরেশ্‌তা] এ ক্বালিমায়ে হাম্‌দগুলো কার আগে কে উপরে নিয়ে যাবে এ নিয়ে প্রতিযোগিতা করছে।

[তিরমিয়ী, আবু দাউদ, ইবনি মাজাহ] {১},{১} সহীহ : আত তিরমিজি ৪০৪, আবু দাউদ ৭৭০, নাসায়ী ৯৩১। সালাতের মাকরুহ সমূহ (নাজায়িজ) ও যেসব কাজ জায়িজ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

৯৯৩. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইরশাদ করেছেনঃ সলাতে হাই তোলা শায়ত্বনের কর্ম। অতএব সলাতে তোমাদের কেউ হাই তুললে তা যথাসম্ভব বারণ করার চেষ্টা করিবে। [তিরমিজি; তাহাঁর অন্য বর্ণনা ও ইবনি মাজাহ-এর বর্ণনায় এ শব্দগুলো আছেঃ অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, সলাতে হাই আসলে সে যেন নিজের হাত মুখের উপর রাখে।] {১}

{১} সহীহ : আত তিরমিজি ৩৭০, ইবনি মাজাহ ৯৬৮, সহীহুল জামি ৩০১২, ৪২৬। সালাতের মাকরুহ সমূহ (নাজায়িজ) ও যেসব কাজ জায়িজ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

৯৯৪. কাব ইবনি উজরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইরশাদ করেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন উযূ করে তখন সে সুন্দর করে উযূ করিবে। তারপর সলাতের উদ্দেশ্য করে মাসজিদে যাবে। আর তখন এক হাতের আঙ্গুলকে অন্য হাতের আঙ্গুলের মধ্যে ঢুকিয়ে মটকাবে না। কেননা সে সলাতে আছে।

[আহ্মাদ, তিরমিজি, আবু দাউদ, নাসায়ী, দারিমী] {১}, {১} সহীহ : আবু দাউদ ৫৬২, আত তিরমিজি ৩৮৬, সহীহ আত তারগীব ২৯৪, আহমাদ ১৮১০৩। সালাতের মাকরুহ সমূহ (নাজায়িজ) ও যেসব কাজ জায়িজ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

৯৯৫. আবু যার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যখন কোন বান্দা সলাতের মধ্যে থাকে, আল্লাহ তাআলা তার সঙ্গে থাকেন, যতক্ষন না সে এদিক সেদিক দৃষ্টি ফেরায়। আর সে এদিক সেদিক নযর করলে তিনি তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন।

[আহমাদ, আবু দাউদ, নাসায়ী, দারিমী] {১};{১} জইফ : আবু দাউদ ৯০৯, নাসায়ী ১১৯৫, আহমাদ ২৯৫০৪, সহীহ আত তারগীব ৫৫৪। কারণ এর সানাদে আবুল আহওয়াস নামে একজন দুর্বল রাবী রয়েছে। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

৯৯৬. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] আমাকে বললেন, হে আনাস! সলাতে তুমি তোমার দৃষ্টিকে সাজদার স্থানে রাখবে। [এ হাদিসটিকে ঈমাম বায়হাক্বী সুনানে কাবীরের আনাস [রাদি.] থেকে হাসান এর সূত্রে হাদিসটি মারফূ হিসেবে উল্লেখ করিয়াছেন]। {১}

{১} খুবই দুর্বল : বায়হাক্বী ৩৩৬০, যঈফুল জামি ৩৫৮৯। কারণ এর সানাদে আন্তুওয়ানাহ্ নামে একজন অপরিচিত বর্ণনাকারী রয়েছে। এই হাদিসটির তাহকীকঃ খুবই দুর্বল

৯৯৭. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে বললেন, হে আমার বৎস! সলাতে এদিক-সেদিক তাকানো থেকে সাবধান থাকো। কারণ সলাতে [ঘাড় ফিরিয়ে] এদিক-সেদিক লক্ষ্য করা ধ্বংসাত্নক কান্ড। যদি নিরুপায় হয়ে পড় তবে নাফ্‌ল সলাতের ক্ষেত্রে [অনুমতি থাকিবে] ফার্‌জ সলাতের ক্ষেত্রে নয়। ] {১}

{১} দুর্বল : আত তিরমিজি ৫৮৯, যঈফুল জামি ৬৩৮৯, জইফ আত তারগীব ২৯০। কারণ সাঈদ ইবনুল মুসাইয়্যিব আনাস [রাদি.] [রাযিঃ] হইতে বর্ণনা করেননি। অতএব সানাদে বিচ্ছিন্নতা রয়েছে। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

৯৯৮. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সলাতের মাঝে ডানদিকে বামদিকে লক্ষ্য করিতেন, পেছনের দিকে গর্দান ঘুরাতেন না। {১}

{১} সহীহ : আত তিরমিজি ৫৮৭, সহীহ আল জামি ৫০১১। সালাতের মাকরুহ সমূহ (নাজায়িজ) ও যেসব কাজ জায়িজ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

৯৯৯,. আদী ইবনি সাবিত [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ সলাতের মাঝে হাঁচি আসা, তন্দ্রা আসা, হাই তোলা, মাসিক হওয়া, বমি হওয়া, নাক দিয়ে রক্ত নির্গত হওয়া শয়তান কর্তৃক আয়োজিত হয়। ] {১}

{১} দুর্বল : আত তিরমিজি ২৭৪৮, জইফ আল জামি ৩৮৬৫। কারণ এর সানাদে দুটি ত্রুটি রয়েছে। প্রথমতঃ সাবিত অপরিচিত বর্ণনাকারী। দ্বিতীয়তঃ শরীক বিন আবদুল্লাহ আল ক্বাযী দুর্বল রাবী। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

১০০০. মুত্বর্রিফ ইবনি আবদুল্লাহ ইবনি শিখখীর [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ]- এর নিকট আসলাম এমতাবস্থায় যে, তিনি সলাত আদায় করিতেছিলেন এবং তাহাঁর ভিতর থেকে টগবগে আওয়াজ হচ্ছিল যেমন ডেগের ফুটন্ত পানির টগবগ আওয়াজ হয়। অর্থাৎ তিনি কান্নাকাটি করছিলেন।

আর এক বর্ণনায় আছে, তিনি বলেছেন, আমি নবী [সাঃআঃ]-কে সলাত আদায় করিতে দেখেছি। এমতাবস্থায় তাহাঁর সিনার মধ্যে চাক্কির আওয়াজের ন্যায় কান্নার আওয়াজ থাকত। [আহমাদ, নাসায়ী প্রথমাংশটুকু, আবু দাউদ দ্বিতীয়াংশটুকু বর্ণনা করিয়াছেন]১};{১} সহীহ : আবু দাউদ ৯০৪, নাসায়ী ১২১৪, সহীহ আত তারগীব ৫৪৪, আহমাদ ১৬৩১২, সহীহ ইবনি হিব্বান ৭৫৩। সালাতের মাকরুহ সমূহ (নাজায়িজ) ও যেসব কাজ জায়িজ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১০০১. আবু যার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন সলাতে দাঁড়াবে সে যেন হাত দিয়ে পাথর ঘষে না উঠায়। কেননা রহ্‌মাত তার সম্মুখ দিয়ে আগমন করে। {১}

{১} দুর্বল : আবু দাউদ ৯৪৫, আত তিরমিজি ৩৭৯, নাসায়ী ১১৯১, ইবনি মাজাহ ১০২৭, আহমাদ ২১৩৩০, দারিমী ১৪২৮, জইফ আত তারগীব ২৯৫, জইফ আত জামি ৬১৩। কারণ সানাদে আবুল আহওয়াস অপরিচিত বর্ণনাকারী যার নিকট থেকে তার ছাত্র যুহরী ছাড়া অন্য কেউ বর্ণনা করেননি। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

১০০২. উম্মু সালামাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] আমদের আফলাহ নামক গোলামকে দেখলেন যে, সে যখন সাজদায় যায় [তখন সাজদার স্থান সাফ করার জন্য] ফুঁ দেয়। তিনি [সাঃআঃ] বললেন, হে আফ্লাহ! তুমি তোমার চেহারাকে ধূলিময় করো। ] {১}

{১} দুর্বল : আত তিরমিজি ৩৮১, জইফ আত তারগীব ২৯৬, জইফ আল জামি ৬৩৭। কারণ এর সানাদে আবু সালিহ নামে একজন অপরিচিত বর্ণনাকারী রয়েছে যেমনটি ঈমাম যাহাবী [রাহিমাহুল্লাহ] তার সম্পর্কে বলেছেন। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

১০০৩. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইরশাদ করেছেনঃ সলাতে কোমরে হাত বেঁধে দাঁড়ানো জাহান্নামীদের বিশ্রাম স্বরূপ। ] {১}

{১} দুর্বল : ইবনি খুযায়মাহ্ ৯০৯, ইবনি হিব্বান ২২৮৬, জইফ আল জামি ২২৭৩, জইফ আত তারগীব ২৯৭। হাদিসটি মুনকার, কারণ আবদুল্লাহ [রাদি.] বিন আল আযুর এর হিশাম বিন হিসান থেকে বর্ণিত হাদিসগুলো মুনকার যেমনটি ঈমাম যাহাবী [রাহিমাহুল্লাহ] তার মীযান-এ উল্লেখ করিয়াছেন। আর এ হাদিসটি সেগুলোর অন্তর্গত। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

১০০৪. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ সলাতরত অবস্থায়ও দু কালোকে হত্যা করো অর্থাৎ সাপ ও বিচ্ছুকে।

[আহমাদ, আবু দাউদ, আবু দাউদ, তিরমিজি, নাসায়ী অর্থের দিক দিয়ে] {১}; {১} সহীহ : আবু দাউদ ৯২১, আত তিরমিজি ৩৯০, নাসায়ী ১২০২, ইবনি মাজাহ ১২৪৫, সহীহ আল জামি ১১৪৭, আহমাদ ১০১১৬। সালাতের মাকরুহ সমূহ (নাজায়িজ) ও যেসব কাজ জায়িজ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১০০৫. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নাফ্‌ল সলাত আদায় করিতেন এমতাবস্থায় দরজা বন্ধ থাকত। আমি এসে দরজা খুলতে বলতাম। তিনি হেঁটে এসে দরজা খুলে দিয়ে আবার মুসাল্লায় চলে যেতেন। আয়িশাহ [রাদি.] বলেন, দরজা ছিল ক্বিবলামুখী

। [আহমাদ, আবু দাউদ, তিরমিজি, নাসায়ীতে অনুরূপ] {১}; {১} হাসান : আবু দাউদ ৯২২, আত তিরমিজি ৬০১, নাসায়ী ১২০৬, আহমাদ ২৪০২৭। এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান হাদিস

১০০৬. ত্বালক বিন আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইরশাদ করেছেনঃ সলাতরত অবস্থায় তোমাদের কেউ যখন নিঃশব্দে বাতাস বের করে, সে যেন ফিরে গিয়ে উযূ করে এসে পুনরায় সলাত আদায় করে নেয়।

[আবু দাউদ; এ বর্ণনাটিকে ঈমাম তিরমিজিও কিছু বেশ কম করে বর্ণনা করিয়াছেন।] {১};{১} দুর্বল : আবু দাউদ ২০৫, ১০০৫, আত তিরমিজি ১১৬৫, ইবনি হিব্বান ২২৩৭। কারণ এর সানাদে মুসলিম বিন সাল্লাম একজন মুনকার রাবী যার কাছ হইতে শুধুমাত্র ঈসা বিন হাত্ত্বান হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

১০০৭. আয়িশাহ্ সিদ্দীক্বা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] ইরশাদ করেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন সলাতে উযূ ভঙ্গ করে ফেলে সে যেন তার নাক চেপে ধরে তারপর সলাত ছেড়ে চলে আসে। [আবু দাউদ] {১}

{১} সহীহ : আবু দাউদ ১১৪, সহীহ আল জামি ২৮৬। সালাতের মাকরুহ সমূহ (নাজায়িজ) ও যেসব কাজ জায়িজ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১০০৮. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন শেষ বৈঠকের শেষ পর্যায় উপনীত হয়, আর সালাম ফিরানোর আগে উযূ ভঙ্গ হয়ে যায়, তবুও তার সলাত বৈধ হবে। [তিরমিজি; তিনি বলেছেন, এ হাদিসটির সূত্র শক্তিশালী নয় এবং তার সূত্রের মাঝে গণ্ডগোল মনে করছেন হাদিস বিশারদগণ।] {১}

{১} দুর্বল : আত তিরমিজি ৪০৮। কারণ এর সানাদে আবদুর রহমান বিন যিয়াদ বিন আন্উম একজন দুর্বল বর্ণনাকারী। সাথে সাথে হাদিসটি সহীহ হাদিসের পরিপন্থী। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

অধ্যায়ঃ ১৯. তৃতীয় অনুচ্ছেদ

১০০৯. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] সলাত আদায়ের জন্যে বের হলেন। যখন তাকবীর দিলেন তখন তিনি [সাঃআঃ] পেছনের দিকে ফিরলেন এবং সাহাবীদেরকে ইশারা করে বললেন, তোমরা যেভাবে আছো সেভাবে থাকো। তারপর তিনি [সাঃআঃ] বের হয়ে গেলেন। গোসল করিলেন। তারপর আসলেন। এমতাবস্থায় তার চুল থেকে পানির ফোঁটা গড়িয়ে পড়ছিল। তিনি সহাবীদের নিয়ে সলাত আদায় করিলেন। তারপর যখন সলাত শেষ করিলেন তখন তিনি [সাঃআঃ] সহাবীদেরকে লক্ষ্য করে বললেন, আমি অপবিত্র ছিলাম। গোসল করিতে ভুলে গিয়েছিলাম। [আহ্‌মা্দ] {১}

{১} হাসান : আহমাদ ৯৪৯৪, ইবনি মাজাহ ১২২০। এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান হাদিস

১০১০. ঈমাম মালিক হইতে বর্ণীতঃ.

হাদিসটি ঈমাম মালিক আত্বা ইবনি ইয়াসার [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে মুরসালরুপে বর্ণনা করিয়াছেন। {১}

{১} সহীহ মুরসাল : মুয়াত্ত্বা। এই হাদিসটির তাহকীকঃ অন্যান্য

১০১১. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে যুহরের সলাত আদায় করতাম। আমি এক মুষ্টি পাথর হাতে নিতাম আমার হাতের তালুতে শীতল করারা জন্যে। প্রচণ্ড গরম থেকে বাঁচার জন্যে এ পাথরগুলোকে সাজদার স্থানে রাখতাম।

[আবু দাউদ, নাসায়ীতে অনুরূপ] {১};{১} হাসান : আবু দাউদ ৩৯৯। এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান হাদিস

১০১২. আবুদ্ দারদা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সলাত আদায় করিতে দাঁড়ালেন। আমরা তাঁকে সলাতে “আঊযুবিল্লাহ-হি মিনকা” পরতে শুনলাম। এরপর তিনি [সাঃআঃ] তিনবার বললেন, “আমি তোমাদের ওপর অভিশাপ করছি, আল্লাহর অভিশাপ দ্বারা”। এরপর তিনি [সাঃআঃ] তাহাঁর হাত প্রশস্ত করিলেন, যেন তিনি কোন জিনিস নিচ্ছেন। তিনি [সাঃআঃ] যখন সলাত শেষ করিলেন তখন আমরা বললাম, হে আল্লাহর রসূল। আজ আমরা আপনাকে সলাতে এমন কথা বলিতে শুনলাম যা এর পূর্বে আর কখনো বলিতে শুনিনি। আর আজ আমরা আপনাকে হাত বিস্তার করিতেও দেখেছি। জবাবে তিনি [সাঃআঃ] বললেন, আল্লাহর শত্রু ইবলীস আমার চেহারায় নিক্ষেপ করার জন্যে আগুনের টুকরা হাতে করে নিয়ে এসেছিল। তখন আমি তিনবার বলেছিলাম,

أَعُوذُ بِاللّهِ مِنْكَ

“আঊযুবিল্লাহ-হি মিনকা” [আমি আল্লাহর কাছে তোমার শত্রুতা হইতে আশ্রয় চাই]। এরপর আমি বলেছি, আমি তোমার ওপর অভিশাপ বর্ষণ করছি, আল্লাহর সম্পূর্ণ লানত দ্বারা। এতে সে দূরে সরেনি। তারপর আমি তাকে ধরতে ইচ্ছা করলাম। আল্লাহর শপথ! যদি আমার ভাই সুলায়মান [আঃ]-এর দুআ না থাকত তাহলে [সে মাসজিদের খাম্বায়] ভোর পর্যন্ত বাঁধা থাকত। আর মাদীনার শিশু-বাচ্চারা একে নিয়ে খেলতো। {১}

{১} সহীহ : মুসলিম ৫৪২, নাসায়ী ১২১৫। সালাতের মাকরুহ সমূহ (নাজায়িজ) ও যেসব কাজ জায়িজ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১০১৩. নাফি [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] এক ব্যক্তির পাশ দিয়ে গমন করিলেন, তখন সে সলাত আদায় করছিল। আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] তাকে সালাম প্রদান করিলেন। সে ব্যক্তি আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.]-এর সালামের উত্তর স্বশব্দে দিলো। আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] তার নিকট ফিরে গেলেন এবং বললেন, তোমাদের কোন লোককে সলাতরত অবস্থায় সালাম দেয়া হলে তার উত্তর স্বশব্দে দিতে নেই, বরং নিজের হাত দিয়ে ইশারা করিবে। [মালিক] {১}

{১} সহীহ : মালিক ৪০৭। সালাতের মাকরুহ সমূহ (নাজায়িজ) ও যেসব কাজ জায়িজ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply