পায়খানা ও প্রস্রাবের আদব সমুহের হাদিস গুলো
পায়খানা ও প্রস্রাবের আদব সমুহের হাদিস গুলো >> মিশকাতুল মাসাবীহ এর মুল সুচিপত্র দেখুন
পর্বঃ ৩, অধ্যায়ঃ ২
- অধ্যায়ঃ ২. প্রথম অনুচ্ছেদ
- অধ্যায়ঃ ২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
- অধ্যায়ঃ ২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ
অধ্যায়ঃ ২. প্রথম অনুচ্ছেদ
৩৩৪. আবু আইয়ূব আল আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা যখন পায়খানায় যাবে তখন ক্বিবলাকে সামনে বা পেছনে রেখে বসবে না, বরং পূর্বদিকে ফিরে বসবে অথবা পশ্চিম দিকে। {১}
শায়খ ঈমাম মুহ্য়িয়ুস্ সুন্নাহ বলেছেন, এটা উন্মুক্ত প্রান্তরের হুকুম। দালান কোঠা বা ঘরের মধ্যকার পায়খানায় অথবা ঘরের মতো করে নির্মিত পায়খানায় এরূপ করা দোষের নয়।
{১} সহীহ : বোখারী ৩৯৪, মুসলিম ২৬৪। পায়খানা ও প্রস্রাবের আদব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩৩৫. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি আমার কোন কাজে [আমার বোন উম্মুল মুমিনীন] হাফসার ঘরের ছাদে উঠেছিলাম। তখন আমি দেখলাম, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] [নীচে এক ঘেরাও করা জায়গায়] ক্বিবলাহকে পেছনে রেখে [উত্তরে] সিরিয়ার দিকে মুখ ফিরিয়ে পায়খানা করছেন। {১}
{১} সহীহ : বোখারী ১৪৮, মুসলিম ২৬৪। পায়খানা ও প্রস্রাবের আদব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩৩৬. সালমান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে ক্বিবলার দিকে মুখ করে প্রস্রাব-পায়খানা করিতে, ডানহাতে ইস্তিঞ্জা করিতে, তিনটির কম ঢিলা দিয়ে ইস্তিঞ্জা করিতে এবং শুকনা গোবর ও হাড় দিয়ে ইস্তিঞ্জা করিতে নিষেধ করিয়াছেন। {১}
{১} সহীহ : মুসলিম ২৬২। পায়খানা ও প্রস্রাবের আদব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩৩৭. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] পায়খানায় গেলে বলিতেনঃ
اللّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْخُبُثِ وَالْخَبَائِثِ
“আল্ল- হুম্মা ইনী আউযুবিকা মিনাল খুবুসি ওয়াল খবা-য়িস”– {অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট নর ও নারী শায়ত্বনদের [ক্ষতি সাধন] থেকে আশ্রয় চাচ্ছি।{১}
{১} সহীহ : বোখারী ১৪২, মুসলিম ৩৭৫। পায়খানা ও প্রস্রাবের আদব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩৩৮. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] দুটি ক্ববরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি বললেন, এ দুই ক্ববরবাসীকে শাস্তি দেয়া হচ্ছে, কিন্তু কোন বিরাট গুনাহের জন্য শাস্তি দেয়া হচ্ছে না। এদের একজন প্রস্রাব করার সময় আড়াল করত না। সহীহ মুসলিমের আর এক বর্ণনায় আছে, প্রস্রাব করার পর উত্তমভাবে পাক-পবিত্রতা অর্জন করত না। আর অপরজন একজনের কথা অন্যজনের কানে লাগাত [চোগলখোরি করত]। এরপর তিনি [সাঃআঃ] খেজুরের একটি তাজা ডাল ভেঙ্গে তা দুই ভাগ করিলেন এবং প্রত্যেক ক্ববরে তার একটি অংশ গেড়ে দিলেন। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করিলেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনি এরূপ করিলেন কেন? তিনি [সাঃআঃ] বললেন, যে পর্যন্ত ডাল দুটি শুকিয়ে না যাবে, হয়তো তাদের শাস্তি হ্রাস করা হবে। {১}
{১} সহীহ : বোখারী ২১৮, মুসলিম ২৯২। পায়খানা ও প্রস্রাবের আদব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩৩৯. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন : তোমরা দুটি অভিসম্পাত থেকে বেঁচে থাকিবে। সহাবীগণ জিজ্ঞেস করিলেন, হে আল্লাহর রসূল! সে দুটি অভিসম্পাত কী? তিনি [সাঃআঃ] বললেন, যে ব্যক্তি মানুষের চলাচলের পথে অথবা তাদের কোন কিছুর ছায়ার স্থানে পায়খানা করে। {১}
{১} সহীহ : মুসলিম ২৬৯। পায়খানা ও প্রস্রাবের আদব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩৪০. আবু ক্বাতাদাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন : তোমাদের কেউ পানি পান করার সময় যেন পানপাত্রে নিঃশ্বাস না ফেলে, শৌচাগারে গেলে ডান হাতে নিজের পুরুষাঙ্গকে না ধরে এবং নিজের ডান হাত দিয়ে শৌচকার্য না করে। {১}
{১} সহীহ : বোখারী ১৫৩, মুসলিম ২৬৭। পায়খানা ও প্রস্রাবের আদব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩৪১. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন : কোন ব্যক্তি উযূ করার সময় যেন ভাল করে নাক ঝেড়ে নেয় এবং ইস্তিঞ্জা করার সময় বেজোড় সংখ্যায় ঢিলা [তিন, পাঁচ ও সাত] ব্যবহার করে। {৩৫৮]
[আরবী] [সে যেন প্রয়োজন পূরণের সময় ডান হাত দ্বারা পুরুষাঙ্গ স্পর্শ না করে]। অন্য বর্ণনায় রহিয়াছে [আর-বী] [অর্থাৎ যখন তোমাদের কেউ পেশাব করে সে যেন ডান হস্ত দ্বারা স্বীয় পুরুষাঙ্গ স্পর্শ না করে]। আরেকটি বর্ণনায় রহিয়াছে [আরবী] [অর্থাৎ তোমাদের কেউ যেন পেশাবরত অবস্থায় ডান হাত দ্বারা স্বীয় পুরুষাঙ্গ স্পর্শ না করে] উপরোক্ত সবগুলো বর্ণনা প্রমাণ করে যে পুরুষাঙ্গ স্পর্শের নিষেধাজ্ঞাটা পেশাবরত অবস্থার সাথে শর্তযুক্ত। এছাড়া অন্য অবস্থায় তা বৈধ। সর্বাবস্থায় ডান হাত দ্বারা পুরুষাঙ্গ স্পর্শ করা নিষেধ সম্পর্কিত যে সকল বর্ণনা এসেছে এগুলোর উৎসস্থল একই।
আবার কেউ কেউ বলেন ; সর্বাবস্থায় এ বিষয়টি নিষিদ্ধ হওয়াটাই যথাযথ হওয়া সত্ত্বেও নিষেধ করিয়াছেন। কেননা প্রস্রাবরত অবস্থায় তা স্পর্শ করা প্রয়োজন। আর ত্বল্ক্ব বিন আলী [রাদি.] কর্তৃক বর্ণিত হাদিসটিও ১ম উক্তিকে সমর্থন করে যেখানে “তিনি রসূল [সাঃআঃ] কে লজ্জাস্থান স্পর্শ সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি উত্তর দেন যে তাতো তোমার শরীরের একটি অঙ্গ মাত্র।” ত্বল্ক্ব [রাদি.]-এর এ বর্ণনাটি সর্বাবস্থায় তা স্পর্শ করার বৈধতা প্রমাণ করে। তবে আবু ক্বাতাদাহ্ [রাদি.]-এর সহীহ হাদিসটির মাধ্যমে প্রস্রাবরত অবস্থাটি বৈধতা থেকে বের হয়ে গেল এবং অন্য অবস্থায় তা বৈধতার উপর অবশিষ্ট রইল। ডান হাত দ্বারা ইস্তিঞ্জা নিষেধের কারণ ডান হাতের মর্যাদা রক্ষা। হাদিসটি উল্লিখিত তিনটি বিষয় যথা পানি পানের সময় পাত্রে শ্বাস ফেলা, প্রস্রাব করা কালে ডান হাত দ্বারা পুরুষাঙ্গ স্পর্শ এবং ডান হাত দ্বারা ইস্তিঞ্জা করা নিষিদ্ধ হওয়ার বিষয়ে সুস্পষ্ট প্রমাণ। কেননা নাহীর মূল অর্থ হল হারাম করা যদি অন্য কোন অর্থে গ্রহণের কারণ না থাকে। এখানে সে ধরনের কোন কারণ নেই। তবে জমহুরের মতে এখানে নাহী দ্বারা উদ্দেশ্য নাহীয়ে তানযীহি।{১}
{১} সহীহ : বোখারী ১৬১, মুসলিম ২৩৭। পায়খানা ও প্রস্রাবের আদব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩৪২. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] পায়খানায় যেতেন। আমি এবং অন্য এক বালক পানির পাত্র ও বর্শাধারী একটি লাঠি নিয়ে যেতাম। সে পানি দিয়ে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] শৌচ কার্য সমাধা করিতেন। {১}
{১} সহীহ : বোখারী ১৫২, মুসলিম ২৭১। পায়খানা ও প্রস্রাবের আদব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
অধ্যায়ঃ ২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৩. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] পায়খানায় প্রবেশকালে নিজের হাতের আংটি খুলে রাখতেন। {১} ঈমাম তিরমিজি বলেছেন, হাদিসটি হাসান সহীহ গরীব। ঈমাম আবু দাউদ বলেন, হাদিসটি মুনকার। অধিকন্তু তিনি খুলে রাখতেন এর পরিবর্তে রেখে দিতেন বলেছেন।
{১} জইফ : আবু দাউদ ১৯, নাসায়ী ৫২১৩, তিরমিজি ১৭৪৬।,এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
৩৪৪. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] যখন পায়খানায় যেতে ইচ্ছা করিতেন, তখন এত দূরে চলে যেতেন যাতে কেউ তাঁকে দেখিতে না পায়। {১}
{১} সহীহ : আবু দাউদ ২। পায়খানা ও প্রস্রাবের আদব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩৪৫. আবু মূসা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি একদিন নবী [সাঃআঃ]-এর সাথে ছিলাম। তিনি প্রস্রাব করার ইচ্ছা করলে একটি দেয়ালের কাছে গিয়ে নরম জায়গায় প্রস্রাব করিলেন। অতঃপর বললেন, তোমাদের কেউ প্রস্রাব করিতে ইচ্ছা করলে এরূপ নরম স্থান খোঁজ করিবে [যাতে শরীরে প্রস্রাবের ছিটা না আসে]। {১}
{১} জইফ : আবু দাউদ ৩, সিলসিলাহ্ আয্ যঈফাহ্ ২৩২০। এর সানাদে একজন অপরিচিত রাবী রয়েছে। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
৩৪৬. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] প্রস্রাব-পায়খানার সময় নির্দিষ্ট স্থানের কাছাকাছি যাওয়ার পরই কাপড় উঠাতেন [অর্থাৎ বসার সময়ে উঠাতেন, তার পূর্বে নয়]। {১}
{১} সহীহ : তিরমিজি ১৪, আবু দাউদ ১৪, সহীহুল জামি ৪৬৫২। যদিও আবু দাউদ সানাদে একজন অপরিচিত রাবী থাকায় হাদিসটি দুর্বল বলেছেন, কিন্তু বায়হাক্বী সে রাবীর নাম ক্বাসিম ইবনি মুহাম্মাদ বলেছেন। আর তিনি একজন বিশ্বস্ত রাবী। অতএব হাদিসটি সহীহ। পায়খানা ও প্রস্রাবের আদব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩৪৭. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন : [তালীম ও নাসীহাতের ব্যাপারে] আমি তোমাদের জন্য পিতা-পুত্রের ন্যায়। আমি তোমাদেরকে শিক্ষা দিয়ে থাকি [তোমাদের দীন, এমনকি প্রস্রাব-পায়খানার শিষ্টাচারও]। যখন তোমরা পায়খানায় যাবে ক্বিবলার দিকে মুখ করে বসবে না, পিঠ দিয়েও বসবে না। পায়খানা করার পর তিনটি ঢিলা দিয়ে তিনি পাক-পবিত্র হবার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন এবং শুকনা গোবর ও হাড় দিয়ে [পাক-পবিত্র হইতে] নিষেধ করিয়াছেন। তিনি ডান হাতে শৌচ করিতেও নিষেধ করিয়াছেন। {১}
আল্লামা আযীযী বলেন : রসূল [সাঃআঃ] জমিনের নিকটবর্তী না হয়ে পরিপূর্ণ কাপড় উত্তোলন করিতেন না বা করেননি। অতএব, কাপড় অপবিত্র হওয়ার আশংকা থাকলে সতর সংরক্ষন করে তা উত্তোলন করা বৈধ অন্যথায় প্রয়োজনানুপাতে উঠাবে।
{১} সহীহ : ইবনি মাজাহ ৩১৩, আবু দাউদ ৮। পায়খানা ও প্রস্রাবের আদব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩৪৮. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর ডান হাত ছিল তাহাঁর পবিত্রতা অর্জন ও খাবারের জন্য। আর বাম হাত ছিল প্রস্রাব-পায়খানা ও অপর অপছন্দনীয় কাজের জন্য। {১}
{১} সহীহ : আবু দাউদ ৩৩। পায়খানা ও প্রস্রাবের আদব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩৪৯. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন : তোমাদের কেউ যখন পায়খানায় যায়, সে যেন তিনটি ঢিলা সাথে করে নিয়ে যায়। এ ঢিলাগুলো দিয়ে সে পাক-পবিত্রতা অর্জন করিবে এবং এটাই তার জন্য যথেষ্ট হবে। {১}
{১} হাসান : আবু দাউদ ৪০, আহমাদ ২৪৪৯১, নাসায়ী ৪৪, দারিমী ৬৯৭। এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান হাদিস
৩৫০. আবদুল্লাহ] ইবনি মাস্ঊদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন : তোমরা শুকনা গোবর ও হাড় দিয়ে শৌচকর্ম করো না। কেননা এসব তোমাদের ভাই জিনদের খোরাক। {১} তবে ঈমাম নাসায়ী জিন্দের খোরাক বাক্যটি উল্লেখ করেননি।
{১} সহীহ : সহীহুল জামি ৭৩২৫, তিরমিজি ১৮। যদিও ঈমাম তিরমিজি হাদিসটিকে মুরসাল বলেছেন কিন্তু দুজন বিশ্বস্ত রাবী হাদিস মাওসুল সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন। পায়খানা ও প্রস্রাবের আদব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩৫১. ওয়াইফি ইবনি সাবিত [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন : হে রুওয়াইফি! হয়তো তুমি আমার পরে দীর্ঘ জীবন লাভ করিবে, তুমি তখন মানুষকে এ সংবাদ দিবে যে, যে ব্যক্তি নিজের দাড়ি জট পাকাবে অথবা ধনুকের রশি গলায় কবচ হিসেবে বাঁধবে অথবা পশুর গোবর বা হাড় দিয়ে শৌচকর্ম করিবে, মুহাম্মাদ [সাঃআঃ] তার সাথে কোন সম্পর্ক রাখেন না। {১}
{১} সহীহ : আবু দাউদ ৩৬, সহীহুল জামি ৭৩১ । পায়খানা ও প্রস্রাবের আদব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩৫২. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন : যে ব্যক্তি সুরমা লাগায়, সে যেন বেজোড় সংখ্যায় লাগায়। যে এভাবে করিল সে ভাল করিল, আর যে এভাবে করিল না সে গর্হিত কাজ করিল না। আর যে ব্যক্তি [প্রস্রাব-পায়খানা করার পর] ঢিলা ব্যবহার করে সে যেন বেজোড় ঢিলা ব্যবহার করে। যে ব্যক্তি এভাবে করিল সে ভাল করিল, আর যে ব্যক্তি করিল না সে গর্হিত কাজ করিল না। যে ব্যক্তি খাবার খেলো এবং [খাবারের পর] খিলাল দ্বারা দাঁত হইতে কিছু বের করিল, সে যেন তা মুখ থেকে ফেলে দেয়। আর যা জিহ্বা দিয়ে বের করে নেয় তা যেন গিলে ফেলে। যে এভাবে করিল সে উত্তম কাজ করিল, আর যে এরূপ করিল না সে গর্হিত কাজ করিল না। যে লোক পায়খানায় যায় সে যেন পর্দা করে। পর্দা করার জন্য যদি সে বালুর স্তুপ ছাড়া কিছু না পায় তাহলে স্তুপের দিকে যেন পিঠ দিয়ে বসে [কাপড় দিয়ে সামনের দিক ঢেকে রাখে]। কারণ শয়তান মানুষের বসার স্থান নিয়ে খেলা করে। যে এরূপ করিল ভাল করিল, আর না করলে মন্দ কিছু করিল না। {১}
{১} জইফ : আবু দাউদ ৩৫, ইবনি মাজাহ ৩৩৭, সিলসিলাহ্ আয্ যঈফাহ্ ১০২৮, দারিমী ৬৮৯। কারণ এর সানাদে দুজন অপরিচিত রাবী রয়েছে।এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
৩৫৩. আবদুল্লাহ ইবনি মুগাফফাল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন : তোমাদের কেউ যেন গোসলখানায় প্রস্রাব না করে, এরপর আবার সেখানে গোসল করে অথবা উযূ করে। কারণ মানুষের অধিকাংশ ওয়াস্ওয়াসা এসব থেকেই উৎপন্ন হয়।
{১} কিন্তু শেষের দুজন [তিরমিজি ও নাসায়ী], “এরপর সেখানে গোসল করে ও উযূ করে” উল্লেখ করেননি।; {১} সহীহ : আবু দাউদ ২৭, তিরমিজি ২১, নাসায়ী ৩৬, সহীহুস জামি ৭৫৯৭। পায়খানা ও প্রস্রাবের আদব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩৫৪. আবদুল্লাহ ইবনি সারজিস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যেন গর্তে প্রস্রাব না করে।{১}
{১} জইফ : আবু দাউদ ২৯, নাসায়ী ৩৪। এর রাবীগণ বিশ্বস্ত হলেও এর মধ্যে সূক্ষ্ম কিছু ত্রুটি রয়েছে। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
৩৫৫. মুআয [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন : তিনটি অভিশপ্ত হওয়ার যোগ্য কাজ- [১] পানির ঘাটে, [২] চলাচলের পথে ও [৩] কোন কিছুর ছায়ায় পায়খানা করা এমন করা হইতে বেঁচে থাকিবে। {১}
{১} হাসান লিগয়রিহী : আবু দাউদ ২৬, ইবনি মাজাহ ৩২৮, সহীহ তারগীব ১৪৬। যদিও বিচ্ছিন্নতা ও অপরিচিত রাবী থাকায় এর সানাদটি ত্রুটিযুক্ত, তারপরও এর শাহিদ বর্ণনা থাকায় এটি হাসান-এর স্তরে পৌঁছেছে। এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান লিগাইরিহি
৩৫৬. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন : দুই ব্যক্তি এক সঙ্গে যেন পায়খানায় এমনভাবে না বসে যে, দুজনেই দুজনার লজ্জাস্থান দেখিতে পায় এবং পরস্পরের সাথে কথা বলে। কেননা মহান আল্লাহ এ ধরনের কাজে খুবই রাগান্বিত হন। {১}
{১} সহীহ লিগয়রিহী : আবু দাউদ ১৫, সহীহুত্ তারগীব ১৫৫। এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ লিগাইরিহি
৩৫৭. যায়দ ইবনি আরক্বাম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন : এসব পায়খানার স্থান হচ্ছে [জ্বিন ও শাইত্বনের] উপস্থিতির স্থান। সুতরাং তোমাদের যারা পায়খানায় যাবে তারা যেন এ দুআ পড়ে :
أَعُوذُ بِاللهِ مِنَ الْخُبُثِ وَالْخَبَائِثِ
“আউযু বিল্লা-হি মিনাল খুবুসি ওয়াল খবা-য়িস”– [অর্থাৎ- আমি নাপাক নর-নারী শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই]। {১}
{১} সহীহ : আবু দাউদ ৬, ইবনি মাজাহ ২৯৬, সহীহুল জামি ২২৬৩। পায়খানা ও প্রস্রাবের আদব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩৫৮. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন : যখন তোমাদের কেউ পায়খানায় প্রবেশ করিবে তখন জিন শাইত্বনের চোখ ও বানী আদামের লজ্জাস্থানের মধ্যে পর্দা হল
بِسْمِ اللهِ
“বিসমিল্লা-হ” বলা। {১}
এ হাদিসটি ঈমাম তিরমিজি বর্ণনা করিয়াছেন এবং বলেছেন, এ হাদিসটি গরীব, এর সানাদ দুর্বল। {১} সহীহ : তিরমিজি ৬০৬, সহীহুল জামি ৩৫১১। পায়খানা ও প্রস্রাবের আদব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩৫৯. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] যখন পায়খানা হইতে বের হইতেন তখন বলিতেন :
غُفْرَانَكَ
“গুফরা-নাকা” [অর্থাৎ- হে আল্লাহ! তোমার ক্ষমা প্রার্থনা করছি]। {১}
{১} সহীহ : আবু দাউদ ৩০, তিরমিজি ৭, ইবনি মাজাহ ৩০০, সহীহুল জামি ৪৭০৭, দারিমী ৭০৭। পায়খানা ও প্রস্রাবের আদব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩৬০. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] পায়খানায় গেলে আমি তাহাঁর পেছনে পেছনে কখনও তাওর-এ করে আবার কখনও রাক্ওয়াহ্-এ করে পানি নিয়ে যেতাম। এ পানি দ্বারা তিনি শৌচকর্ম সম্পাদন করিতেন। এরপর তিনি [সাঃআঃ] মাটিতে স্বীয় হাত ঘষতেন। অতঃপর আমি আর এক পাত্রে পানি আনতাম। এ পানি দিয়ে তিনি [সাঃআঃ] উযূ করিতেন। {১}
{১} হাসান : আবু দাউদ ৪৫। এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান হাদিস
৩৬১. হাকাম ইবনি সুফ্ইয়ান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] প্রস্রাব করার পর উযূ করিতেন এবং নিজের লজ্জাস্থানে পানি ছিটিয়ে দিতেন। {১}
{১} সহীহ : আবু দাউদ ১৬৮, নাসায়ী ১৩৫, দারিমী ৭৩৮। হাদিসটির সানাদে অনেক বিশৃঙ্খলা থাকলেও এর অনেক শাহিদ বর্ণনা থাকায় তা সহীহ-এর স্তরে পৌঁছেছে। পায়খানা ও প্রস্রাবের আদব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩৬২. উমায়মাহ্ বিনতু রুক্বায়ক্বাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ]-এর খাটের নিচে একটি কাঠের গামলা ছিল। তিনি [সাঃআঃ] রাতে এতে প্রস্রাব করিতেন। {১}
{১} সহীহ : আবু দাউদ ২৪, নাসায়ী ৩২, সহীহুল জামি ৪৮৩২। পায়খানা ও প্রস্রাবের আদব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩৬৩. উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] আমাকে দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করিতে দেখে বললেন, উমার! [আইয়্যামে জাহিলিয়্যাতের ন্যায়] দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করো না। অতঃপর আমি আর কক্ষনো দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করিনি। ১}
{১} জইফ : ইবনি মাজাহ ৩০৮, যঈফাহ্ ৯৩৪, তিরমিজি ১২। কারণ এর সানাদে আবদুল কারীম ইবনি আবুল মাখরিক্ব নামে একজন দুর্বল রাবী রয়েছে। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
৩৬৪. হুযায়ফাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] কোন এক গোত্রের আবর্জনার স্থানে গেলেন এবং [সেখানে] দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করিলেন। {১} বলা হয়ে থাকে যে, তিনি [সাঃআঃ] কোন ওযরের কারণে এরূপ করিয়াছেন।
{১} সহীহ : বোখারী ২২৪, মুসলিম ২৭৩। পায়খানা ও প্রস্রাবের আদব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
অধ্যায়ঃ ২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৩৬৫. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, যে ব্যক্তি বলে, নবী [সাঃআঃ] দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করিতেন, তোমরা তাহাঁর কথা বিশ্বাস করো না। তিনি সবসময়ই বসে প্রস্রাব করিতেন। {১}
{১} সহীহ : তিরমিজি ১২, নাসায়ী ২৯, সিলসিলাহ্ আস্ সহীহাহ্ ২০১। পায়খানা ও প্রস্রাবের আদব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩৬৬. যায়দ ইবনি হারিসাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে জিবরীল আমিনের মাধ্যমে যখন নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট ওয়াহী নাযিল করা হচ্ছিল, তখনই তিনি নবী [সাঃআঃ] কে উযূ করা ও নামাজ আদায়ের শিক্ষা দিলেন। আর তিনি [সাঃআঃ] যখন উযূ করা শেষ করে এককোষ পানি [হাতে উঠিয়ে] নিলেন এবং তখন নিজের পুরুষাঙ্গের উপর ছিটিয়ে দিলেন। {১}
{১} সহীহ : আহমাদ ১৭৪৮০, দারাকুত্বনী ৩৯০, সহীহাহ্ ৭৪১। পায়খানা ও প্রস্রাবের আদব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩৬৭. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন : আমার কাছে জিবরীল [আঃ] এসে বললেন, হে মুহাম্মাদ! যখন আপনি উযূ করিবেন, তখন পানি [সন্দেহ দূর করার জন্য আপনার গুপ্তাঙ্গে] ছিটিয়ে দিবেন। {১}
{১} জইফ : তিরমিজি ৫০, সিলসিলাহ্ আয্ যঈফাহ্ ১৩১২। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
৩৬৮. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] প্রস্রাব করিলেন। উমার [রাদি.] তাহাঁর পেছনে পানির পাত্র নিয়ে দাঁড়ালেন। তিনি [সাঃআঃ] বললেন, উমার! এটা কী? উমার [রাদি.] বললেন, পানি। আপনার উযূ করার করার জন্য। তিনি [সাঃআঃ] বললেন, আমি এজন্য আদিষ্ট হইনি যে, যখনই প্রস্রাব করব তখনই উযূ করব। যদি আমি সর্বদা এমন করি তাহলে এটা সুন্নাত হয়ে যাবে। {১}
{১} জইফ : আবু দাউদ ৪২, ইবনি মাজাহ ৩২৭, সহীহুল জামি ৫৫৫১। কারণ এর সানাদে আবদুল্লাহ ইবনি ইয়াহ্ইয়া আত তাওয়াম নামক একজন রাবী রয়েছে যাকে হাফিয ইবনি হাজার দুর্বল বলেছেন। তবে مَا أُمِرْتُ এর পরের অংশটুকুকে শায়খ আলবানী সহীহুল জামি-তে সহীহ বলেছেন। এই হাদিসটির তাহকীকঃ অন্যান্য
৩৬৯. আবু আইয়ূব, জাবির ও আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
فِيهِ رِجَالٌ يُّحِبُّونَ أَنْ يَّتَطَهَّرُوا وَاللهُ يُحِبُّ الْمُطَّهِّرِيْنَ
“সেখানে [মাসজিদে কুবায়] এমন কিছু লোক রয়েছে যারা পবিত্রতা অর্জন করাকে পছন্দ করে এবং আল্লাহ পবিত্রতা অর্জনকারীদের পছন্দ করেন”- [সূরাহ্ আত তাওবাহ্ ৯:১০৮] এ আয়াত যখন নাযিল হয় তখন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেন, হে আনসারগণ! এ আয়াতে আল্লাহ পবিত্রতার ব্যাপারে তোমাদের প্রশংসা করিয়াছেন। তোমাদের পবিত্রতা কী? তাঁরা বললেন, আমরা সলাতের জন্য উযূ করি, নাপাকী হইতে পবিত্র হবার জন্য গোসল করি, পানি দিয়ে পবিত্রতা লাভ করে থাকি। তিনি [সাঃআঃ] বললেন, এটাই [পবিত্রতা], যার জন্য আল্লাহ তোমাদের প্রশংসা করিয়াছেন। সুতরাং তোমরা সবসময় এটা করিতে থাকিবে। {১}
{১} সহীহ লিগয়রিহী : ইবনি মাজাহ ৩৫৫, সহীহ আবু দাউদ ৩৫। যদিও এর সানাদে দুর্বলতা রয়েছে কিন্তু এর শাহিদ রিওয়ায়াত থাকায় তা সহীহ স্তরে উন্নীত হয়েছে। এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ লিগাইরিহি
৩৭০. সালমান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, মুশরিকদের কেউ ঠাট্টা করে আমাকে বলিল, তোমাদের বন্ধু [অর্থাৎ- রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]] তো দেখছি তোমাদেরকে পায়খানা-প্রস্রাবের নিয়ম-কানুনও শিখিয়ে দিচ্ছেন। আমি বললাম, হাঁ [এটা তো তাহাঁর অনুগ্রহ, দোষের তো কিছু নেই]। তিনি আমাদেরকে বলে দিয়েছেন, আমরা যেন পায়খানার সময় ক্বিবলার দিকে মুখ করে না বসি, ডান হাতে শৌচকর্ম না করি এবং পায়খানার পর তিনটি ঢিলার কম ব্যবহার না করি। আর এতে [ঢিলা] যেন গোবর ও হাড় না থাকে। {১}
{১} সহীহ : মুসলিম ২৬২, আহমাদ ২৩১৯১। পায়খানা ও প্রস্রাবের আদব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩৭১. আবদুর রহমান ইবনি হাসানাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন একদা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] [ঘর থেকে বের হয়ে] আমাদের কাছে এলেন, আর তাহাঁর হাতে ছিল একটি চামড়ার ঢাল [বর্ম]। তিনি ঢালটি [পর্দাস্বরূপ স্থাপন করে] তার দিকে ফিরে মাটিতে বসে প্রস্রাব করিলেন। তখন [মুশরিকদের] কয়েকজন বলে উঠল, দেখ, মেয়েদের মতো [পর্দা করে] প্রস্রাব করছেন। নবী [সাঃআঃ] এটা শুনলেন এবং বললেন, তোমার জন্য আফসোস হয়, তুমি কি জানো না যে, বানী ইসরাঈলের এক ব্যক্তির কি ঘটেছিল? অর্থাৎ তাদের শরীরে [বা কাপড়ে] যখন প্রস্রাব লাগতো, তখন তারা কাঁচি দিয়ে তা কেটে ফেলতো। তাই সে [বানী ইসরাঈল-এর এক ব্যক্তি] তা হইতে মানুষকে নিষেধ করিল। ফলে [মৃত্যুর পর] তাকে ক্ববরের আযাব দেয়া হল। {১}
{১} সহীহ : ইবনি মাজাহ ৩৪৬, আবু দাউদ, সহীহুত্ তারগীব ১৬২। পায়খানা ও প্রস্রাবের আদব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৩৭২. ঈমাম নাসায়ী হইতে বর্ণীতঃ
ঈমাম নাসায়ী এ হাদিসটি আবদুর রহমান [রাদি.] ও আবু মূসা [রাদি.] হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। {১}
{১} জইফ : নাসায়ী ৩০, ইবনি মাজাহ, জইফ সুনানে ইবনি মাজাহ । এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
৩৭৩. মারওয়ান আল আসফার [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি ইবনি উমার [রাদি.]-কে দেখলাম, তিনি ক্বিবলার দিকে তার উটকে বসালেন। তারপর উটের দিকে বসে প্রস্রাব করিতে লাগলেন। আমি বললাম, হে আবু আবদুর রহমান! এটা হইতে কি নিষেধ করা হয়নি। তিনি বললেন, না, বরং উন্মুক্ত জায়গায় এরূপ করা নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু যখন তোমার আর ক্বিবলার মধ্যে এমন কোন জিনিস আড়াল হয়, তখন এরূপ করাতে কোন দোষ নেই। {১}
{১} হাসান : আবু দাউদ ১১, ইরওয়া ৬১। এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান হাদিস
৩৭৪. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] যখন পায়খানা হইতে বের হইতেন, এ দুআ পড়তেন :
الْحَمْدُ لِلّهِ الَّذِي أَذْهَبَ عَنِّىْ الْأَذى وَعَافَانِىْ
“আলহাম্দু লিল্লা-হিল্লাযী আয্হাবা আন্নিল আযা-ওয়াআ-ফানী”- {অর্থাৎ- সকল প্রশংসা আল্লাহ তাআলার, যিনি আমার থেকে কষ্টদায়ক জিনিস দূর করিয়াছেন ও আমাকে নিরাপদ করিয়াছেন]। {১}
{১} জইফ : ইবনি মাজাহ ৩০১, ইরওয়া ৫৩। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
৩৭৫. ইবনি মাস্ঊদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, জিনের প্রতিনিধি দল যখন নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট পৌঁছলেন, তখন তাহাঁর নিকট বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনার উম্মাতকে গোবর, হাড় ও কয়লা দিয়ে ঢিলা ব্যবহার করিতে নিষেধ করে দিন। আল্লাহ তাআলা এগুলোকে আমাদের রিয্ক্ব হিসেবে নির্ধারণ করিয়াছেন। অতএব রসূল [সাঃআঃ] এগুলো দ্বারা ইস্তিঞ্জা করিতে নিষেধ করে দেন। {১}
{১} সহীহ : আবু দাউদ ৩৯। পায়খানা ও প্রস্রাবের আদব -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
Leave a Reply