আরব দেশ – মাদীনা মক্কা আজমী শাম ও ইয়ামানের মর্যাদা
আরব দেশ – মাদীনা মক্কা আজমী শাম ও ইয়ামানের মর্যাদা >> সুনান তিরমিজি শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন
অধ্যায়ঃ ৪৬, অনুচ্ছেদঃ (৬৬-৭৫)=১০টি
৬৬. অনুচ্ছেদঃ আনসারগণের ও কুরাইশদের মর্যাদা
৬৭. অনুচ্ছেদঃ আনসারদের কোন ঘর শ্রেষ্ঠ?
৬৮. অনুচ্ছেদঃ মাদীনা মুনাও্ওয়ারার মর্যাদা
৬৯. অনুচ্ছেদঃ মাক্কা মুআজ্জামার মর্যাদা
৭০. অনুচ্ছেদঃ আরবদেশের মর্যাদা
৭১. অনুচ্ছেদঃ আজমীদের [অনারবদের] মর্যাদা
৭২. অনুচ্ছেদঃ ইয়ামানের মর্যাদা
৭৩. অনুচ্ছেদঃ গিফার, আসলাম, জুহাইনাহ্ ও মুযাইনাহ্ গোত্রসমূহ প্রসঙ্গে
৭৪. অনুচ্ছেদঃ বানু সাক্বীফ ও বানু হানীফাহ্ গোত্র দুটি প্রসঙ্গে
৭৫. অনুচ্ছেদঃ শাম ও ইয়ামানের মর্যাদা।
৬৬. অনুচ্ছেদঃ আনসারগণের ও কুরাইশদের মর্যাদা
৩৮৯৯. উবাই ইবনি কাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ যদি দ্বীন ইসলামে হিজরাত না থাকত তাহলে আমি আনসারদের একজনই হতাম।
হাসান সহীহঃ সহীহাহ্ [১৭৬৮], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ।এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান সহীহ
৩৯০০.আল-বারাআ ইবনি আযিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে বলিতে শুনেছেন অথবা তিনি বলেছেন, নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আনসারদের প্রসঙ্গে বলেছেনঃ মুমিন মাত্রই তাহাদেরকে ভালবাসে এবং মুনাফিক্ব মাত্রই তাহাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে। যে লোক তাহাদেরকে ভালবাসে, আল্লাহ তাআলাও তাহাদের ভালবাসেন। আর যে লোক তাহাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে, আল্লাহও তাহাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করেন। শুবাহ্ [রঃ] বলেন, আমি আদী ইবনি সাবিতকে প্রশ্ন করলাম, আপনি হাদীসটি আল-বারাআ [রাদি.] হইতে শুনেছেন কি? তিনি বলিলেন, তিনিই তো আমার কাছে হাদীসটি রিওয়ায়াত করিয়াছেন।
সহীহঃ ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১৬৩], বুখারী।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি সহীহ। তিনি আরো বলেন, একই সনদে নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] হইতে বর্ণিত আছে তিনি বলেনঃ যদি আনসরাগণ কোন গিরিসংকটে বা গিরিখাদে প্রবেশ করে তবে অবশ্য আমিও আনসারদের সাথেই থাকব।হাসান সহীহঃ প্রাগুক্ত।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান।আরব দেশ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৯০১. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আনসারদের কিছু সংখ্যক লোককে একত্রিত করে বললেনঃ তোমাদের মাঝে আনসারদের ব্যতীত অপর কেউ আছে কি? তারা বলিলেন, না, তবে আমাদের এক ভাগ্নে আছে। তিনি বললেনঃ সম্প্রদায়ের ভাগ্নে তাহাদের অন্তর্ভূক্ত। তারপর তিনি বললেনঃ সবেমাত্র কুরাইশরা জাহিলিয়াত ত্যাগ করে মুসলমান হয়েছে এবং তারা বিপদে পতিত। তাই তাহাদের ভগ্নহৃদয়ে আমি কিছুটা সহানুভূতির ছোয়া লাগাতে চাই এবং তাহাদের মনজয় করিতে চাই [কিছু অতিরিক্ত সম্পদ দিয়ে] । তোমরা কি খুশি নও যে, লোকেরা দুনিয়া [মাল] নিয়ে বাড়ি ফিরবে আর তোমরা আল্লাহ্র রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ফিরবে? তারা বলিলেন, হ্যাঁ। তারপর রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেনঃ যদি লোকেরা কোন গিরিপথ বা গিরিখাদ পার করে এবং আনসাররা যদি অন্য কোন গিরিসংকট বা গিরিখাদে চলে, তবে আমি আনসারদের গিরিসংকট বা গিরিখাদেই একসঙ্গে চলব।
সহীহঃ সহীহাহ্ [১৭৭৬], রাওযুন্ নাযীর [৯৬১], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।আরব দেশ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৯০২. যাইদ ইবনি আরক্বাম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আল-হাররার দিন আনাস [রাদি.]-এর পরিবার ও তার চাচার পরিবার যে নির্যাতনের শিকার হয় তাকে শোক প্রকাশ করে তিনি [যাইদ] আনাস ইবনি মালিক [রাদি.]-এর কাছে একখানা লোকবার্তা লিখে প্রেরণ করেন। তিনি তাকে লিখেন, আপনাকে আমি আল্লাহ তাআলার পক্ষ হইতে একটি সুখবর দিচ্ছি। নিশ্চয় রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে আমি বলিতে শুনেছিঃ “হে আল্লাহ্! তুমি আনসারদেরকে ক্ষমা করে দাও, তাহাদের সন্তানদেরও এবং তাহাদের সন্তানদের সন্তানদেরকও”। arbi
সহীহঃ বুখারী [৪৯০৬], মুসলিম মারফূ অংশ বর্ণনা করিয়াছেন।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। ক্বাতাদাহ্ [রঃ] হাদীসটি নায্র ইবনি আনাস হইতে, তিনি যাইদ ইবনি আরক্বাম [রাদি.] হইতে এই সনদে রিওয়ায়াত করিয়াছেন।আরব দেশ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৯০৩. আবু তালহা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে বললেনঃ তুমি তোমার জাতির লোকদেরকে আমার সালাম পৌছাও। আমার জানামতে তারা সংযমী ও ধৈর্যশীল।
যঈফ, মিশকাত [৬২৪২], হাদীসটির ২য় অংশ সহীহ।আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ।এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
৩৯০৪. আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ হুঁশিয়ার! আমার আহলে বাইত হল আমার আশ্ৰয়স্থল, যেখানে আমি ফিরে আসি। আর আমার গোপনীয়তার রক্ষক হল আনসারগণ। সুতরাং তোমরা তাহাদের ভুল-ভ্রান্তি মাফ কর এবং তাহাদের শিষ্টাচার গ্রহণ কর।
“আহলে বাইত” উল্লিখিত অংশটুকু মুনকার, মিশকাত [৬২৪০]
আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান। এ অনুচ্ছেদে আনাস [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে।এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য
৩৯০৫. মুহাম্মাদ ইবনি সাদ [রঃ] হইতে তাহাঁর বাবা হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ যে কেউ কুরাইশদেরকে অপদস্ত করার ইচ্ছা করিবে, আল্লাহ তাকে অপদগ্রস্ত করবেন।
সহীহঃ সহীহাহ্ [১১৭৮] ।আবু ঈসা বলেন, এ সনদ সূত্রে হাদীসটি গারীব। আব্দ ইবনি হুমাইদ-ইয়াকূব ইবনি ইবরাহীম ইবনি সাদ হইতে, তিনি তার পিতা হইতে, তিনি সালিহ ইবনি কাইসান হইতে, তিনি ইবনি শিহাব [রঃ] হইতে উক্ত সনদে একই রকম বর্ণনা করিয়াছেন।এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস
৩৯০৬. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ আল্লাহ তাআলা ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে এরূপ কোন লোক কখনো আনসারদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করিতে পারে না।
সহীহঃ সহীহাহ্ [হাঃ ১২৩৪], মুসলিম আবু হুরাইরা্হ্ ও আবু সাঈদ হইতে বর্ণনা করিয়াছেন।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।আরব দেশ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৯০৭. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ আনসারগণ আমার গোপনীয়তার রক্ষক ও আমানতদার। শীঘ্রই জনসংখ্যা বেড়ে যাবে কিন্তু আনসারদের সংখ্যা কমে যাবে। অতেএব তোমরা তাহাদের সদাচার গ্রহণ কর এবং তাহাদের ত্রুটি-বিচ্যুতি পরিত্যাগ কর।
সহীহঃ বুখারী [৩৮০১], মুসলিম [৭/১৭৪] ।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।আরব দেশ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৯০৮. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ
اللَّهُمَّ أَذَقْتَ أَوَّلَ قُرَيْشٍ نَكَالاً فَأَذِقْ آخِرَهُمْ نَوَالاً
“হে আল্লাহ! প্রথমে আপনি কুরাইশদেরকে শাস্তির স্বাদ আস্বাদন করিয়েছেন; অতএব পরে তাহাদেরকে দান ও অনুগ্রহের স্বাদ আস্বাদন করান”।
হাসান সহীহঃ যঈফাহ্ [৩৯৮] নং হাদীসের অধীনে।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব। আবদুল ওয়াহ্হাব আল-ওয়াররাক-ইয়াহ্ইয়া ইবনি সাঈদ আল-উমাবী হইতে, তিনি আমাশ [রঃ] হইতে এই সনদে একই রকম বর্ণনা করিয়াছেন।এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান সহীহ
৩৯০৯. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ
اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِلأَنْصَارِ وَلأَبْنَاءِ الأَنْصَارِ وَلأَبْنَاءِ أَبْنَاءِ الأَنْصَارِ وَلِنِسَاءِ الأَنْصَارِ
“হে আল্লাহ! তুমি আনসারদের মাফ করে দাও, আনসারদের সন্তানদেরকেও, আনসারদের সন্তানদের সন্তানদেরকেও এবং আনসারদের নারীদেরকেও”।
সহীহঃ মুসলিম [৭/১৭৩-১৭৪] ।আবু ঈসা বলেন, উপর্যক্ত সনদে এ হাদীসটি হাসান গারীব।আরব দেশ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৬৭. অনুচ্ছেদঃ আনসারদের কোন ঘর শ্রেষ্ঠ?
৩৯১০. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ আমি তোমাদেরকে কি আনসারদের ঘরগুলোর মাঝে শ্রেষ্ঠ ঘর অথবা আনসারদের মধ্যকার শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি প্রসঙ্গে জানাব না? সাহাবীগণ বলিলেন, হ্যাঁ, হে আল্লাহ্র রাসূল! রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলিলেন, আনসারদের মাঝে শ্রেষ্ঠ হল বানু নাজ্জার , তারপর তাহাদের নিকটতর যারা অর্থাৎ আবদুল আশহাল, তারপর তাহাদের নিকটতম যারা অর্থাৎ বানুল হারিস ইবনিল খাযরাজ, তারপর তাহাদের কাছের যারা অর্থাৎ বানু সাইদাহ্। এরপর তিনি দুই হাতে ইশারা করে তাহাদের আঙ্গুলগুলো মুষ্টিবদ্ধ করিলেন, তারপর হাত দুখানা এমনভাবে প্রসারিত করিলেন যেমন কেউ তার হাত দিয়ে কিছু নিক্ষেপ করলো। অতঃপর তিনি বলিলেন, আনসারদের সব ঘরই উত্তম ও শ্রেষ্ঠ।
সহীহঃ বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। আর এ হাদীস আনাস [রাদি.] হইতে, আবু উসাইদ আস-সাঈদী [রাদি.]–এর বরাতে নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] হইতে এই সনদেও বর্ণিত আছে।আরব দেশ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৯১১. আবু উসাইদ আস-সাঈদী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ আনসারদের ঘরগুলোর মাঝে ভাল হল বানু নাজ্জারের ঘরগুলো, তারপর বানু আবদুল আশহালের ঘরগুলোর, তারপর ইবনিল হারিস ইবনিল খাযরাজ, তারপর বানু সাইদাহ্। আনসারদের প্রত্যেক পরিবারের মাঝেই মঙ্গল রয়েছে। সাদ [রাদি.] বলেন, আমি দেখছি যে, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আমাদের গোত্রের উপর অন্যান্য আনসার পরিবারকে মর্যাদা দিয়েছেন। সে সময় তাকে বলা হল, তিনি তোমাদেরকে তো অনেকের উপরই মর্যাদা দিয়েছেন।
সহীহঃ বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। আবু উসাইদ আস-সাঈদী [রাদি.]-এর নাম মালিক ইবনি রাবীআহ্।আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.]–এর বরাতেও নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] হইতে অনুরূপ বর্ণিত আছে। মামার যুহরী হইতে তিনি আবু সালামাহ্ হইতে, তিনি উবাইদুল্লাহ ইবনি আবদুল্লাহ ইবনি উত্বাহ হইতে, তিনি আবু হুরাইরাহ্ হইতে, তিনি নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] হইতে এই সনদে বর্ণনা করিয়াছেন।আরব দেশ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৯১২. জাবির ইবনি আবদিল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ আনসারদের ঘরগুলোর মাঝে বানু নাজ্জারই সবচাইতে ভাল।
সহীহঃ পূর্বের হাদীসের সহায়তায়। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি এই সূত্রে গারীব।আরব দেশ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৯১৩. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ আনসারদের মাঝে বানু আবদুল আশহালই ভাল।
এই হাদীসের পূর্বের হাদীসের সহায়তায় সহীহ।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি উপর্যুক্ত সনদে গারীব।আরব দেশ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৬৮. অনুচ্ছেদঃ মাদীনা মুনাও্ওয়ারার মর্যাদা
৩৯১৪. আলী ইবনি আবী ত্বালিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর সঙ্গে বের হলাম। অবশেষে যখন আমরা সাদ ইবনি আবী ওয়াক্কাস [রাদি.]-এর বসতি এলাকা হার্রাতুস-সুক্ইয়া-তে পৌঁছলাম, সে সময় রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেনঃ আমার জন্য উযূর পানি নিয়ে এসো। তিনি উযূ করিলেন, তারপর ক্বিবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে বললেনঃ “হে আল্লাহ্! ইবরাহীম [আঃ] তোমার বান্দা ও অন্তরঙ্গ বন্ধু ছিলেন। মাক্কাবাসীদের জন্য তিনি বারাকাতের দুআ করিয়াছেন। আর আমিও তোমরা বান্দা ও রাসূল। আমি মাদীনাবাসীদের জন্য তোমার নিকট দুআ করছি যে, তুমি মাক্কাবাসীদের জন্য যে পরিমাণ বারাকাত দান করেছ, মাদীনাবাসীদের মুদ্দ ও সা-এ তার দ্বিগুন বারাকাত দান কর এবং এক বারাকাতের সঙ্গে দুটি বারাকাত দান কর।
সহীহঃ তালীকুর রাগীব [২/১৪৪]।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। এ অনুচ্ছেদে আয়িশাহ্, আবদুল্লাহ ইবনি যাইদ ও আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] কর্তৃকও হাদীস বর্ণিত আছে।আরব দেশ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৯১৫. আলী ইবনি আবী ত্বালিব ও আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তারা প্রত্যেকে বলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ আমার ঘর ও আমার মিম্বারের মাঝের জায়গা জান্নাতের বাগিচাগুলোর মধ্যকার একটি বাগিচা।
হাসান সহীহঃ যিলালুল জান্নাত [৭৩১], রাওযুন্ নাযীর [১১১৫], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ।আবু ঈসা বলেন, উপর্যুক্ত সনদে আলী [রাদি.] বর্ণিত হাদীস হিসেবে এ হাদীসটি হাসান গারীব। আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.]–এর বরাতে নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] হইতে হাদীসটি একাধিক সূত্রে বর্ণিত হয়েছে।এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান সহীহ
৩৯১৬. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ আমার ঘর ও আমার মিম্বারের মাঝের জায়গা জান্নাতের বাগিচাগুলোর মধ্যকার একটি বাগিচা।
হাসান সহীহঃ যিলালুল জান্নাত [৭৩১], রাওযুন্ নাযীর [১১১৫], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ।একই সনদসূত্রে নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] হইতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমার এই মাসজিদে এক রাকাআত নামাজ মাসজিদুল হারাম ছাড়া আর অন্য কোন মাসজিদে এক রাকাআত নামাজ অপেক্ষা ভাল।হাসান সহীহঃ ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১৪০৪, ১৪০৫], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। এ হাদীস আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.]–এর বরাতে নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] হইতে এই সনদে একাধিক সূত্রে বর্ণিত হয়েছে।এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান সহীহ
৩৯১৭. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ কেউ মাদীনাতে মৃত্যুবরণ করিতে সক্ষম হলে সে যেন সেখানেই মৃত্যুবরণ করে। কারণ যে ব্যক্তি সেখানে মৃত্যুবরণ করিবে আমি তার জন্য সুপারিশ করব।
সহীহঃ ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[৩১১২]।এ অনুচ্ছেদে সুবাইআহ্ বিনতুল হারিস আল-আসলামিয়্যাহ্ [রাদি.] কর্তৃকও হাদীস বর্ণিত হয়েছে। আবু ঈসা বলেন, উক্ত সনদে এ হাদীসটি হাসান সহীহ এবং আইয়ুব আস-সাখতিয়ানীর বর্ণনার পরিপ্রেক্ষিতে গারীব।আরব দেশ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৯১৮. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তার এক মুক্ত দাসী এসে তাঁকে বলিলেন, আমার জন্য দিনাতিপাত কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই আমি ইরাকের দিকে যেতে চাই। তিনি বলিলেন, তবে তুমি সিরিয়ার দিকে যাবার মনস্থ করলে না কেন? সেটা টো হাশরের মাঠ। তিনি আরও বলিলেন, আরে নির্বোধ? ধৈর্যধারণ কর। রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে আমি বলিতে শুনেছিঃ যে লোক মাদীনার কষ্ট–কাঠিন্য ও দুর্ভিক্ষে ধৈর্যধারণ করে, ক্বিয়ামাতের দিন আমি তার জন্য সাক্ষী হব এবং সুপারিশকারী হব।
সহীহঃ তাখরিজু ফিক্হিস্ সীরাহ্ [১৮৪], মুসলিম।এ অনুচ্ছেদে আবু সাঈদ, সুফ্ইয়ান ইবনি আবী যুহাইর ও সুবাইআহ্ আল-আসলামিয়্যাহ্ [রাদি.] কর্তৃকও হাদীস বর্ণিত হয়েছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ, উবাইদুল্লাহ্র বর্ণিত হাদীস হিসেবে গারীব।আরব দেশ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৯১৯. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ইসলামী শহরগুলোর মধ্যে সবশেষে জনমানবশূন্য হইবে মদীনা।
যঈফ, যঈফা [১৩০০]আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গরীব। আমরা শুধু জুনাদা হইতে হিশামের সূত্রে বর্ণিত হাদীস হিসেবে এটি জেনেছি।এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
৩৯২০. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
একদিন এক বেদুঈন রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর নিকট ইসলামের উপর বাইআত হয়। মাদীনার জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সেই বেদুঈন রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর নিকট এসে বলে, আমার বাইআত প্রত্যাহার করুন। কিন্তু তিনি অস্বীকার করেন। অতএব সে চলে গেল। বেদুঈন পুনরায় এসে বলিল, আমার বাইআত প্রত্যাহার করুন। এবারও তিনি অস্বীকার করেন। ফলে বেদুঈন চলে গেল। তারপর রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেনঃ এ মাদীনা হল কামাড়ের হাপড়ের মত, যা তার ময়লা দূর করে এবং পবিত্রতাকে খাঁটি করে।
সহীহঃ সহিহাহ্ [২১৭], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ।এ অনুচ্ছেদে আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] কর্তৃকও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।আরব দেশ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৯২১. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, মাদীনায় আমি যদি হরিণকে চরে বেড়াতে দেখি, তবে সেটাকে ভয় দেখাব না। কেননা রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ মাদীনার দুই কংকরময় এলাকার মধ্যবর্তী জায়গা হারাম।
সহীহঃ বুখারী [১৮৭৩], মুসলিম [৪/১১৬]।এ অনুচ্ছেদে সাদ আবদুল্লাহ ইবনি যাইদ, আনাস, আবু আইউব, যাইদ ইবনি সাবিত, রাফি ইবনি খাদীজ, জাবির ও সাহ্ল ইবনি হুনাইফ [রাদি.] কর্তৃকও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ।আরব দেশ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৯২২. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
উহূদ পাহাড় রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর দৃষ্টিগোচর হলে তিনি বললেনঃ এ পাহাড় আমাদেরকে মুহাব্বাত করে এবং আমরাও তাকে মুহাব্বাত করি। হে আল্লাহ্! ইব্রাহীম [আঃ] নিশ্চয়ই মাক্কাকে হারাম ঘোষণা করিয়াছেন, আর আমি দুই কংকরময় এলাকার মধ্যবর্তী জায়গাটিকে হারাম ঘোষণা করলাম।
সহীহঃ বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।আরব দেশ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৯২৩. জারীর ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ অবশ্যই আল্লাহ তাআলা আমার নিকটে ওয়াহী পাঠান যে, এ তিনটি জায়গার যেটিতেই তুমি যাবে, সেটিই হইবে তোমার হিজরাতের জায়গাঃ মাদীনা অথবা বাহরাইন অথবা কিন্নাসরীন।
মাওযু, আর-রাদ্দু আলাল কাত্তানী, হাদীস নং [১]আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধু ফাযল ইবনি মূসার রিওয়ায়াত হিসেবে এটি জেনেছি। আবু আমির এ হাদীস বর্ণনায় একাকী।এই হাদীসটির তাহকিকঃ জাল হাদীস
৩৯২৪. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ কেউ মাদীনায় দুর্ভিক্ষ ও কষ্ট-কাঠিন্য সহ্য করলে ক্বিয়ামাতের দিন তার জন্য আমি অবশ্যই সাক্ষী অথবা সুপারিশকারী হব।
সহীহঃ তাখরীজু ফিক্হিস্ সীরাহ্ [১৮৪], মুসলিম।এ অনুচ্ছেদে আবু সাঈদ, সুফ্ইয়ান ইবনি আবী যুহাইর ও সুবাইআহ্ আল-আসলামিয়্যাহ্ [রাদি.] কর্তৃক হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, উপর্যুক্ত সনদে এ হাদীসটি হাসান গারীব। সালিহ ইবনি আবী সালিহ হলেন সুহাইল ইবনি আবী সালিহের ভাই।আরব দেশ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৬৯. অনুচ্ছেদঃ মাক্কা মুআজ্জামার মর্যাদা
৩৯২৫. আবদুল্লাহ ইবনি আদী ইবনি হাম্রাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে আমি মাক্কার একটি ক্ষুদ্র টিলার উপর দণ্ডায়মানরত দেখলাম। তিনি বললেনঃ আল্লাহ্র ক্বসম! তুমি নিশ্চয় আল্লাহ্ তাআলার সকল ভূমির মাঝে সর্বোত্তম এবং আল্লাহ্ তাআলার নিকট তুমিই সবচেয়ে প্রিয়ভূমি। আমাকে যদি তোমর বুক হইতে [জোরপূর্বক] বিতাড়িত না করা হত তবে আমি কখনও [তোমায় ছেড়ে] চলে যেতাম না।
সহীহঃ ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[৩১০৮]।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব সহীহ। এ হাদীস ইউনুস যুহ্রী হইতে একই রকম রিওয়ায়াত করিয়াছেন। মুহাম্মাদ ইবনি আম্র [রঃ] আবু সালামাহ্ হইতে, তিনি আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে, তিনি নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] হইতে এই সনদে এটি রিওয়ায়াত করিয়াছেন। আমার মতে আবু সালামার বরাতে আবদুল্লাহ ইবনি আদী ইবনি হামরার সনদে যুহরী হইতে বর্ণিত হাদীসটি অনেক বেশী সহীহ।আরব দেশ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৯২৬. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] মক্কা ভূমিকে উদ্দেশ্য করে বলেনঃ কতই না পবিত্র ও উত্তম শহর তুমি এবং আমার নিকট কতই না প্রিয়। আমার স্বজাতি যদি তোমার হইতে আমাকে বিতাড়িত না করত তবে আমি তোমাকে ব্যতীত অন্য কোথাও বসবাস করতাম না।
সহীহঃ মিশকাত [হাঃ ২৭২৪]।আবু ঈসা বলেন, উপর্যুক্ত সনদে এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব।আরব দেশ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৭০. অনুচ্ছেদঃ আরবদেশের মর্যাদা
৩৯২৭. সালমান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে বললেনঃ হে সালমান! আমার প্রতি হিংসা করো না, তাহলে তুমি তোমার দীনকে টুকরো করে ফেলবে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আপনার প্রতি কি করে হিংসা পোষণ করিতে পারি, অথচ আল্লাহ তাআলা আপনার মাধ্যমেই আমাদেরকে হিদায়াত দান করিয়াছেন? রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ আরবের প্রতি হিংসা পোষণ করাই হচ্ছে আমার প্রতি হিংসা পোষণ।
যঈফ, যঈফা [২০২০], মিশকাত [৫৯৮৯]আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারব। আমরা শুধু আবু বদর শুজা ইবনিল ওয়ালীদের সূত্রেই এ হাদীস জেনেছি। আমি মুহাম্মাদ ইসমাঈলকে বলিতে শুনিয়াছি আবু যাবইয়ান সালমানের সাক্ষাৎ পান নাই।সালমান [রাদি.] আলী [রাদি.]-এর পূর্বেই ইন্তিকাল করিয়াছেন।এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
৩৯২৮. উসমান ইবনি আফফান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আরবদের সাথে ঠকবাজী করিবে সে আমার শাফাআতের সীমায় প্রবেশ করিবে না এবং সে আমার ভালোবাসাও অর্জন করিতে পারবে না।
মাওযু, যঈফা [৫৪৫], মিশকাত [৫৯৯০]আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধু হুসাইন-ইবনি উমার আল-আহমাসী হইতে মুখারিক সূত্রেই এ হাদীস জেনেছি। হুসাইন মুহাদীসগণের মতে তেমন মজবুত রাবী নন।এই হাদীসটির তাহকিকঃ জাল হাদীস
৩৯২৯. মুহাম্মাদ ইবনি আবু রাযীন [রঃ] হইতে তার মা হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন ঃ উন্মুল হারীরের অবস্থা এই ছিল যে, আরবের কোন লোক ইন্তিকাল করলে তিনি তাতে গভীরভাবে শোকাভিভূত হইতেন। তাকে বলা হল, আমরা লক্ষ্য করেছি যে, আরবের কোন লোক ইন্তিকাল করলে আপনি তাতে গভীরভাবে শোকাভিভূত হন। তিনি বলিলেন, আমি আমার মনিবকে বলিতে শুনিয়াছি, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আরবের লোকদের মৃত্যু হচ্ছে কিয়ামাত কাছাকাছি হওয়ার লক্ষণ।
যঈফ, যঈফা [৪৫১৫]আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারিব। আমরা শুধু সুলাইমান ইবনি হারবের রিওয়ায়াত হিসেবে এটি জেনেছি।এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
৩৯৩০. জাবির ইবনি আবদিল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি উম্মু শারীক [রাদি.]–কে বলিতে শুনেছেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ লোকেরা দাজ্জালের ভয়ে পলায়ন করিবে, অবশেষে তারা পাহাড়-পর্বতে গিয়ে আশ্রয় নিবে। উম্মু শারীক প্রশ্ন করিলেন, হে আল্লাহ্র রাসুল! সে সময় আরবরা কোথায় থাকিবে? তিনি বলেন, সে সময় তারা সংখ্যায় অতি নগণ্য হইবে।
সহীহঃ সহিহাহ্ [৩০৭৯], মুসলিম।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব।আরব দেশ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৯৩১. সামুরা ইবনি জুনদুব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ সাম হল আরবদের আদিপিতা, ইয়াফিস হল রূমীদের [তুর্কীদের] আদিপিতা এবং হাম হল আবিসিনীয়দের আদিপিতা।
যঈফ, যঈফা [৩৬৩৮]আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান। ইয়াফিস, ইয়াফিত ও ইয়াফাস ইত্যাদি উচ্চারণও আছে।এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
৭১. অনুচ্ছেদঃ আজমীদের [অনারবদের] মর্যাদা
৩৯৩২. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সামনে অনারবদের উল্লেখ করা হল। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ আমি তাহাদেরকে অথবা তাহাদের কিছুকে তোমাদের চেয়ে অথবা তোমাদের কিছুর চেয়ে নির্ভরযোগ্য মনে করি।
যঈফ, মিশকাত [৬২৪৫]
আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারব। আমরা শুধু আবু বকর ইবনি আইয়াশের সূত্রে এ হাদীস জেনেছি। সালিহ হলেন মিহরানের পুত্র, আমর ইবনি হুরাইসের আযাদ গোলাম।এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
৩৯৩৩. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]–এর নিকট আমরা উপস্থিত ছিলাম। সে সময় সূরা আল-জুমুআহ্ অবতীর্ণ হয় এবং তিনি তা পাঠ করেন। তিনি ওয়া আখারীনা মিনহুম লাম্মা ইয়াল্হাকু বিহিমি” [এবং তাহাদের অন্যেরা যারা এখনও তাহাদের সঙ্গে একত্রিত হয়নি] পর্যন্ত পৌঁছলে এক ব্যক্তি তাঁকে প্রশ্ন করিলেন, হে আল্লাহ্র রাসুল! এসব লোক কারা, এখনো যারা আমাদের সঙ্গে একত্রিত হয়নি? তিনি তাকে কিছুই বলিলেন না। আবু হুরায়রা্ [রাদি.] বলেন, সালমান আল-ফারিসী [রাদি.] আমাদের মধ্যে হাযির ছিলেন। আবু হুরায়রা্ [রাদি.] বলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] নিজের হাতখানা সালমান [রাদি.]-এর উপর রেখে বলিলেন, সেই সত্তার ক্বসম যাঁর হাতে আমার জীবন! সুরাইয়্যাহ্ তারকায় ঈমান থাকলেও এদের [অনারবদের] কিছু লোক তা নিয়ে আসবে।
সহীহঃ বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এটা ৩৩১০ নং হাদীসের পুনরুক্তি।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। হাদীসটি একাধিক সূত্রে আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.]-এর বরাতে নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] হইতে বর্ণিত হয়েছে। আবুল গাইস এর নাম সালিম, তিনি আবদুল্লাহ ইবনি মুত্বী এর মুক্তদাস মাদীনার অধিবাসী।আরব দেশ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৭২. অনুচ্ছেদঃ ইয়ামানের মর্যাদা
৩৯৩৪. যাইদ ইবনি সাবিত [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] ইয়ামান দেশের দিকে তাকিয়ে বললেনঃ
اللَّهُمَّ أَقْبِلْ بِقُلُوبِهِمْ وَبَارِكْ لَنَا فِي صَاعِنَا وَمُدِّنَا
“হে আল্লাহ্! তাহাদের মন [আমাদের দিকে] ফিরিয়ে দিন এবং আমাদের সা ও মুদ্দ-এ বারাকাত দান করুন”।
হাসান সহীহঃ মিশকাত, তাহক্বীক্ব সানী [৬২৬৩], ইরওয়া [৪/১৭৬]।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ এবং যাইদ ইবনি সাবিত [রাদি.]-এর বর্ণনার পরিপ্রেক্ষিতে গারীব। আমরা শুধুমাত্র ইমরান আল-কাত্তানের সনদেই হাদীসটি জানতে পেরেছি।এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান সহীহ
৩৯৩৫. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ তোমাদের নিকট ইয়ামানবাসী এসেছে। তারা খুব নরম মন ও কোমল হৃদয়ের লোক। ঈমান ইয়ামান হইতে এসেছে এবং প্রজ্ঞাও ইয়ামান হইতে এসেছে।
সহীহঃ রাওযুন্ নাযীর [১০৩৪], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ।এ অনুচ্ছেদে ইবনি আব্বাস ও ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।আরব দেশ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৯৩৬. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ রাজত্ব কুরাইশদের মাঝে, বিচার–বিধান আনসারদের মধ্যে, [সুমধুর সুরে] আযান হাবশীদের মাঝে এবং আমানতদারী আয্দ অর্থাৎ ইয়ামানবাসীদের মাঝে।
সহীহঃ সহিহাহ্ [১০৮৩]।মুহাম্মাদ ইবনি বাশ্শার–আব্দুর রহমান ইবনি মাহ্দী হইতে, তিনি মুআবিয়াহ্ ইবনি সালিহ হইতে, তিনি আবু মারইয়াম আল-আনসারী হইতে, তিনি আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে এই সনদে উপর্যুক্ত হাদীসের একই রকম বর্ণনা করিয়াছেন, তবে মারফুরুপে নয়। এ হাদীস যাইদ ইবনি হুবাবের বর্ণিত হাদীসটির তুলনায় অনেক বেশী সহীহ।আরব দেশ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৯৩৭. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল আযদ [ইয়ামানীরা] হল দুনিয়ার বুকে আল্লাহর সহায়তাকারী। লোকেরা তাহাদেরকে দাবিয়ে রাখতে চাইবে। কিন্তু আল্লাহ তাআলা তা হইতে দিবেন না, বরং তিনি তাহাদেরকে সমুন্নত করবেন। মানুষের সামনে অবশ্যই এমন এক যামানা আসবে, যখন কোন ব্যক্তি বলবে, হায় যদি আমার পিতা ইয়ামানী [আযদী] হইতেন? হায়, যদি আমার মাতা ইয়ামানী [আযদী] গোত্রীয় হইতেন?
যঈফ, যঈফা [২৪৬৭]. আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধু উপরোক্ত সূত্রেই হাদীসটি প্রসঙ্গে জেনেছি। আনাস [রাদি.] হইতে উপরোক্ত সূত্রে হাদীসটি মাওকুফ হিসেবেও বর্ণিত আছে। আমাদের মতে মাওকুফ বর্ণনাটিই অনেক বেশি সহীহ।এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
৩৯৩৮. গাইলান ইবনি জারীর [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ
আনাস ইবনি মালিক [রাদি.]-কে আমি বলিতে শুনিয়াছি, আমরা আয্দ গোত্রভুক্ত না হলে উত্তম মানুষই হতাম না।
সনদ সহীহঃ মাওকুফ।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান, সহীহ গারীব।আরব দেশ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৯৩৯. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমরা রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকটে হাযির থাকা অবস্থায় তার নিকতে এক লোক আসে। আমার ধারণা লোকটি কাইস গোত্রীয়। সে বলিল, হে আল্লাহর রাসূল! হিমৃইয়ার গোত্রকে অভিসম্পাত করুন। তিনি তার হইতে অন্য দিকে মুখ সরিয়ে নেন। সে অপর পাশ দিয়ে এলে তিনি এবারও তার হইতে মুখ সরিয়ে নেন। আবার সে অপর পাশ দিয়ে এলে তিনি এবারও তার হইতে মুখ সরিয়ে নেন। লোকটি অপর পাশ দিয়ে এলে এবারও তিনি তার হইতে মুখ সরিয়ে নেন। তারপর রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ হিমূইয়ার গোত্রের প্রতি আল্লাহ তাআলা দয়া করুন, তাহাদের মুখে সালাম [শান্তি], তাহাদের হাতে খাদ্যসম্ভার এবং তারা নিরাপত্তা ও ঈমানের ধারক।
মাওষু, যঈফা [৩৪৯]আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারব। আমরা শুধু আবদুর রাযযাকের সূত্রে উপরোক্তভাবে এ হাদীস জেনেছি। আর মীনাআর কাছ হইতে বেশিরভাগ মুনকার হাদীস বর্ণিত হয়ে থাকে।এই হাদীসটির তাহকিকঃ জাল হাদীস
৭৩. অনুচ্ছেদঃ গিফার, আসলাম, জুহাইনাহ্ ও মুযাইনাহ্ গোত্রসমূহ প্রসঙ্গে
৩৯৪০. আবু আইউব আল-আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ আনসারগণ ও মুযাইনাহ্, জুহাইনাহ্, আশজা, গিফার গোত্রগুলো ও বানু আবদুদ দার–এর লোকেরা আমার সঙ্গী ও সাহায্যকারী। আল্লাহ ব্যতীত তাহাদের কোন সাহায্যকারী সঙ্গী নেই। আল্লাহ ও তাহাঁর রাসূলই তাহাদের সাহায্যকারী সঙ্গী বা সাথী।
সহীহঃ মুসলিম [৭/১৭৮]।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।আরব দেশ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৯৪১. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ আসলাম গোত্রকে আল্লাহ হিফাযাতে রাখুন। গিফার গোত্রকে আল্লাহ তাআলা মাফ করুন। আর উসাইয়্যাহ্ গোত্র আল্লাহ্ ও তাহাঁর রাসূলের অবাধ্যাচরণ করেছে।
সহীহঃ বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।আরব দেশ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৭৪. অনুচ্ছেদঃ বানু সাক্বীফ ও বানু হানীফাহ্ গোত্র দুটি প্রসঙ্গে
৩৯৪২. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, লোকেরা বলিল, হে আল্লাহর রাসূল! সাকীফ সম্প্রদায়ের তীরগুলো আমাদেরকে ছিন্নভিন্ন করেছে। সুতরাং আপনি তাহাদের বদদুআ করুন! তিনি বলিলেন ঃ
اللَّهُمَّ اهْدِ ثَقِيفًا
হে আল্লাহ! সাকীফ সম্প্রদায়কে হিদায়াত দান করুন।
যঈফ, মিশকাত [৫৯৮৬]আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব।এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
৩৯৪৩. ইমরান ইবনি হুসাইন [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তিনটি গোত্রের প্রতি মন্দ মনোভাব রেখে মারা যানঃ বানু সাকীফ, বানু হানীফা ও বানু উমাইয়্যা।
আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গরীব। আমরা শুধু আলোচ্য সূত্রেই এ হাদীস জেনেছি।এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
৩৯৪৪. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ সাক্বীফ গোত্রে এক চরম মিথ্যাবাদী ও এক নরঘাতকের সৃষ্টি হইবে।
সহীহঃ মুসলিম [২১২৩] নং হাদীস পূর্বে বর্ণিত হয়েছে।আব্দুর রহমান ইবনি ওয়াক্বিদ আবু মুসলিম শারীক [রঃ]-এর সনদে উপরের হাদীসের একই রকম বর্ণনা করিয়াছেন। আবদুল্লাহ ইবনি উস্ম–এর উপনাম আবু উলওয়ান, তিনি কুফার অধিবাসী।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। এ হাদীস আমরা শুধুমাত্র শারীকের সনদে অবগত হয়েছি। শারীক [রঃ] বলেন, আবদুল্লাহ ইবনি আসিম। ইসরাঈলও এই শাইখ হইতে বর্ণনা করিয়াছেন, কিন্তু তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনি ইস্মাহ্। এ অনুচ্ছেদে আসমা বিনতু আবী বাক্র [রাদি.] কর্তৃকও হাদীস বর্ণিত আছে।আরব দেশ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৯৪৫. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে এক বেদুঈন একটি জোয়ান উষ্ট্রী উপহার দেয়। তিনি তার বিনিময়ে তাকে ছয়টি উষ্ট্রী দেন। কিন্তু লোকটি তারপরও অখুশি থাকে। বিষয়টি রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] জানতে পারলে তিনি আল্লাহ তাআলার প্রশংসা ও গুণগান করার পর বলেনঃ অমুক লোক আমাকে একটি উষ্ট্রী উপঢৌকন দিলে আমি এর বিনিময়ে তাকে ছয়টি উষ্ট্রী প্রদান করি। তারপরও সে অখুশি। অতএব আমি প্রতিজ্ঞা করলাম যে, আমি কুরাইশী অথবা আনসারী অথবা সাক্বাফী অথবা দাওসীদের ছাড়া আর কারো নিকট হইতে উপঢৌকন কবুল করব না।
সহীহঃ মিশকাত, তাহক্বীক্ব সানী [৩০২২], সহিহাহ্ [১৬৮৪]।এ হাদীসে আরো বেশী বক্তব্য আছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি একাধিক সূত্রে আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিত আছে। ইয়াযীদ ইবনি হারুন [রঃ] আইউব-আবুল আলা হইতে বর্ণনা করেন। তিনি হলেন আইউব ইবনি মিসকীন। তিনি ইবনি আবী মিসকীন বলেও পরিচিত। সম্ভবতঃ এই হাদীস যা আইউব হইতে, সাঈদ আল-মাকবুরীর সূত্রে বর্ণিত আছে, তিনি হলেন আইউব আবুল আলা।আরব দেশ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৯৪৬. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, ফাযারা গোত্রের এক ব্যক্তি গাবা নামক জায়গায় প্রাপ্ত তার উটপাল হইতে একটি উষ্ট্রী নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে উপঢৌকন দেন। তিনি এর বিনিময়ে তাকে কিছু দান করেন। কিন্তু তাতে সে সন্তুষ্ট হয়নি। বর্ণনাকারী বলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে আমি মিম্বারের উপর বলিতে শুনেছিঃ আরবের কোন এক লোক আমাকে কিছু উপহার দিলে আমি আমার সামর্থ্য অনুযায়ী তাকে কিছু দান করি। কিন্তু সে তাতে অখুশি প্রকাশ করে। এমনকি এ ব্যপারে সে আমার উপর অখুশিই হয়ে যায়। আল্লাহ্র ক্বসম! এরপর হইতে আমি আর কুরাইশী কিংবা আনসারী অথবা সাক্বাফী অথবা দাওসী লোক ছাড়া আরবের আর কোন লোকের উপহার গ্রহণ করব না।
সহীহঃ দেখুন পূর্বের হাদীস।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। এটা ইয়াযীদ ইবনি হারুনের বর্ণিত হাদীসের চাইতে অনেক বেশি সহীহ।আরব দেশ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৯৪৭. আমির ইবনি আবু আমির আল-আশআরী [রাদি.] হইতে তার পিতা হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আসাদ গোত্র ও আশআরী গোত্র কত ভাল। তারা যুদ্ধের মাঠ হইতে পালায় না এবং গানীমাতের মাল আত্মসাৎ করে না। কাজেই তারা আমার হইতে এবং আমি তাহাদের হইতে। আমির [রঃ] বলেন, আমি উক্ত হাদীস মুআবিয়া [রাদি.]-এর নিকট বর্ণনা করলে তিনি বলেন, এইরূপ নয়। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এভাবে বলেননি, বরং বলেছেনঃ তারা আমার হইতে এবং আমারই। আমির [রঃ] বলেন, আমার পিতা আমাকে এরকম বলেননি, বরং তিনি আমাকে বলেছেন, আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনিয়াছি ঃ তারা আমার হইতে এবং আমি তাহাদের হইতে। মুআবিয়া [রাদি.] বলেন, তুমি তোমার পিতার বর্ণিত হাদীস বেশি জান।
যঈফ, যঈফা [৪৬৯২]আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। আমরা শুধু ওয়াহুব ইবনি জারীরের সূত্রে এ হাদীস জেনেছি। কথিত আছে যে, আসাদ সম্প্রদায় ও আৰ্যদ সম্প্রদায় একই।এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
৩৯৪৮. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেনঃ আসলাম গোত্রকে আল্লাহ তাআলা হিফাযাতে রাখুন, গিফার গোত্রকে আল্লাহ মাফ করুন।
সহীহঃ বুখারী [হাঃ ১০০৬, ৩৫১৩, ৩৫১৪], মুসলিম [হাঃ ৭/১৭৭, ১৭৮]।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। এ অনুচ্ছেদে আবু যার, আবু বারযা আল-আসলামী, বুরাইদা ও আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] কর্তৃকও হাদীস বর্ণিত আছে।আরব দেশ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৯৪৯. মুহাম্মাদ ইবনি বাশ্শার, মুওয়াম্মাল হইতে বর্ণীতঃ
তিনি সুফ্ইয়ান হইতে, তিনি আবদুল্লাহ ইবনি দীনার হইতে, শুবার হাদীসের মতই বর্ণনা করিয়াছেন। আর তাতে অতিরিক্ত আছে “উসাইয়্যাহ্ আল্লাহ ও তার রাসূলের অবাধ্য হয়েছে”।
সহীহঃ দেখুন পূর্বের হাদীস।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।আরব দেশ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৯৫০. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ সেই সত্তার ক্বসম, যাঁর হাতে মুহাম্মাদের জীবন! গিফার, আসলাম ও মুযাইনাহ্ গোত্র এবং যারা জুহাইনাহ্ গোত্রীয় এবং মুযাইনাহ্ গোত্রীয়, তারা ক্বিয়ামাতের দিন আল্লাহ তাআলার কাছে অবশ্যই আসাদ, তাঈ ও গাতাফান গোত্রের তুলনায় ভাল বিবেচিত হইবে।
সহীহঃ সহিহাহ্ [৩২১২], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ।. আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।আরব দেশ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৯৫১. ইমরান ইবনি হুসাইন [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, তামীম গোত্রের প্রতিনিধিদল রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর মাজলিসে হাযির হলে তিনি বলেনঃ হে বানূ তামীম! সুখবর গ্রহণ কর। তারা বলিল, আপনি আমাদের সুখবর দিয়েছেন, তাই আমাদেরকে কিছু দান করুন। বর্ণনাকারী বলেন, এতে রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর মুখমণ্ডল বিবর্ণ হয়ে যায়। তারপর ইয়ামান দেশীয় এক প্রতিনিধিদল আগমন করলে তিনি বলেন, তোমরা সুখবর কবূল কর, যা তামীম গোত্র গ্রহণ করেনি। তারা বলিল, অবশ্যই আমরা তা গ্রহণ করলাম।
সহীহঃ সহীহাহ্ [৩২১২], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।আরব দেশ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৯৫২. আবদুর রহমান ইবনি আবু বাক্রাহ্ [রঃ] হইতে তার বাবা হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ আসলাম, গিফার ও মুযাইনাহ্ গোত্রসমূহ তামীম, আসাদ, গাতাকান ও আমির ইবনি সাসাআহ্ গোত্রসমূহ হইতে ভাল। তিনি উচ্চস্বরে কথাটি বলিলেন। লোকেরা বলেনঃ ঐ গোত্রের লোকগুলো তো ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত হল। তিনি বলেনঃ ঐ গোত্রগুলোর ব্যক্তিগুলো এসব গোত্রের লোকদের চেয়ে অধিক ভাল।
সহীহঃ বুখারী [৩৫১৬], ও মুসলিম [৭/১৭৯-১৮০]।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।আরব দেশ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৭৫. অনুচ্ছেদঃ শাম ও ইয়ামানের মর্যাদা।
৩৯৫৩. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেনঃ হে আল্লাহ্! আমাদের শামদেশে বারাকাত দান করুন, হে আল্লাহ্! আমাদের ইয়ামানদেশে বারাকাত দান করুন। লোকেরা বলিল, আমাদের নাজদের জন্যও [দুআ করুন]। তিনি পুনরায় বলেনঃ হে আল্লাহ্! আমাদের সিরিয়ায় বারাকাত দান করুন, আমাদের ইয়ামানদেশে বারাকাত দান করুন। এবারও লোকেরা বলিল, আমাদের নাজদের জন্যও [দুআ করুন]। তিনি বললেনঃ সেখানে ভূমিকম্প, বিশৃঙ্খলা বা বিপর্যয় রয়েছে অথবা তিনি বলেছেনঃ সেখান হইতেই শাইতানের শিং আবির্ভাব হইবে।
সহীহঃ তাখরীজু ফাযায়িলিশ শাম [৮], সহিহাহ্ [২২৪৬]।আবু ঈসা বলেন, উপর্যুক্ত সনদে এ হাদীসটি হাসান সহীহ এবং ইবনি আওনের বর্ণনার পরিপ্রেক্ষিতে গারীব। হাদীসটি সালিম ইবনি আবদিল্লাহ ইবনি উমার – তার বাবা হইতে, তিনি নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] হইতে এই সনদেও বর্ণিত হয়েছে।আরব দেশ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৯৫৪. যাইদ ইবনি সাবিত [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর সম্মুখে উপস্থিত হয়ে চামড়ার উপর হইতে কুরআন সংকলন করেছিলাম। সে সময় রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেনঃ সিরিয়ার জন্য মঙ্গল। আমরা বললাম, তা কেন হে আল্লাহ্র রাসূল! তিনি বললেনঃ কেননা দয়াময় রহমানের ফেরেশতাগণ তার উপর নিজেদের ডানা বিস্তার করে রেখেছেন।
সহীহঃ ফাযায়িলিশ শাম [১], মিশকাত [৬৬২৪], সহিহাহ্ [৫০২]।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। আমরা শুধুমাত্র ইয়াহ্ইয়া ইবনি আইউবের সনদে হাদীসটি অবগত হয়েছি।আরব দেশ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৯৫৫. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ যে সমস্ত সম্প্রদায় তাহাদের পূর্বপুরুষদের নিয়ে গর্ব করে, তারা যেন অবশ্যই তা হইতে বিরত থাকে। কেননা তারা জাহান্নামের কয়লায় পরিণত হয়েছে। নতুবা তারা আল্লাহ তাআলার দরবারে গোবরে পোকার তুলনায় বেশি অপমানিত হইবে, যা নিজের নাক দিয়ে গোবরের ঘুঁটা তৈরী করে। তোমাদের হইতে আল্লাহ তাআলা জাহিলী যুগের গরব-অহংকার ও পূর্বপুরুষদের নিয়ে আত্মগর্ব প্রকাশ দূরীভূত করিয়াছেন। এখন সে মুমিন-মুত্তাক্বী অথবা পাপাত্মা–দুরাচার। সমস্ত মানুষ আদম [আঃ]–এর সন্তান। আর আদম [আঃ]-কে সৃষ্টি করা হয়েছে মাটি হইতে।
হাসানঃ তালীকুর রাগীব [৪/২১, ৩৩, ৩৪], গাইয়াতুল মারাম [৩১২]।এ অনুচ্ছেদে ইবনি উমার ও ইবনি আব্বাস [রাদি.] কর্তৃকও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব।এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস
৩৯৫৬. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলা জাহিলী যুগের গর্ব-অহংকার ও পূর্বপুরুষদের নিয়ে আভিজাত্যের অহংকার তোমাদের হইতে অপসারণ করিয়াছেন। এখন কোন লোক হয় খোদাভীরু মুমিন কিংবা বদ-নাসীব পাপী। মানুষ আদমের সন্তান, আর আদম [আঃ] মাটি হইতে সৃষ্টি।
হাসানঃ দেখুন পূর্বের হাদীস।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। আমার দৃষ্টিতে এ হাদীসটি প্রথমোক্ত হাদীসের চেয়ে বেশী সহীহ। সাঈদ আল-মাক্ববুরী [রঃ] আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে হাদীস শুনেছেন। তিনি তার পিতার সনদে আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বহু হাদীস রিওয়ায়াত করিয়াছেন। এ হাদীস সুফ্ইয়ান সাওরী প্রমুখ হিশাম ইবনি সাদ হইতে, তিনি সাঈদ আল-মাক্ববুরী হইতে, তিনি আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে, তিনি নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] হইতে এই সনদে আবু আমির হইতে হিশামের সনদে বর্ণিত হাদীসের একই রকম রিওয়ায়াত করিয়াছেন।এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস
Leave a Reply