চার খলিফার জীবনী – আবু বাক্‌র, উমার, উসমান ও আলী [রা]

চার খলিফার জীবনী – আবু বাক্‌র, উমার, উসমান ও আলী [রা]

চার খলিফার জীবনী – আবু বাক্‌র, উমার, উসমান ও আলী [রা] >> সুনান তিরমিজি শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন

অধ্যায়ঃ ৪৬, অনুচ্ছেদঃ (১৪-২১)=৮টি

১৪. অনুচ্ছেদঃ আবু বাক্‌র সিদ্দীক্ব [রাদি.]-এর গুণাবলী
১৫. অনুচ্ছেদঃ [এক বান্দা পার্থিব জীবনের উপর আল্লাহ তাআলার সান্নিধ্যকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন]
১৬. অনুচ্ছেদঃ আবু বাক্‌র ও উমার [রাদি.]-এর গুণাবলী ।
১৭. অনুচ্ছেদঃ আবু বাক্‌র [রাদি.]-এর খলীফাহ্‌ হওয়ার ইঙ্গিত
১৮. অনুচ্ছেদঃ উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.]-এর মর্যাদা
১৯. অনুচ্ছেদঃ উসমান ইবনি আফ্ফান [রাদি.]-এর মর্যাদা।
২০. অনুচ্ছেদঃ আলী ইবনি আবী ত্বালিব [রাদি.]-এর মর্যাদা।
২১. অনুচ্ছেদঃ মুনাফিক্বরা আলী [রাদি.]-এর প্রতি বিদ্বেষী

১৪. অনুচ্ছেদঃ আবু বাক্‌র সিদ্দীক্ব [রাদি.]-এর গুণাবলী

৩৬৫৫. আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেন, আমি প্রত্যেক বন্ধুর বন্ধুত্ব হইতে অব্যাহতি গ্রহন করছি। আমি যদি কাউকে অন্তরঙ্গ বন্ধু হিসেবে গ্রহন করতাম তাহলে আবু কুহাফার ছেলে আবু বাক্‌র সিদ্দীককেই বন্ধু বানাতাম। তোমাদের এই সাথী আল্লাহ তাআলার অন্তরঙ্গ বন্ধু।

সহীহঃ যঈফাহ্‌ ৩০৩৪ নং হাদীসের অধীনে, মুসলিম।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। এ অনুচ্ছেদে আবু সাঈদ, আবু হুরাইরাহ্‌, ইবনিয্‌ যুবাইর ও ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৬৫৬. উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আবু বাক্‌র [রাদি.] আমাদের নেতা, আমাদের মাঝে সবচাইতে উত্তম, আমাদের মাঝে রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর বেশী পছন্দনীয় ব্যক্তি।

হাসানঃ মিশকাত [৬০১৮], বুখারী [৩৭৫৪] নং হাদীসে এর প্রথমাংশ উল্লেখ আছে।আবু ঈসা বলেন, হাদীসটি সহীহ গারীব।এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস

৩৬৫৭. আবদুল্লাহ ইবনি শাক্বীক্ব [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ

আয়িশাহ্‌ [রাদি.]-কে আমি প্রশ্ন করলাম, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর সাহাবীদের মাঝে তাহাঁর কাছে কে সর্বাধিক প্রিয় ছিলেন। তিনি বলিলেন, আবু বাকর [রাদি.] । আমি আবার প্রশ্ন করলাম, তারপর কে? তিনি বলিলেন, উমর [রাদি.]। আমি আবার প্রশ্ন করলাম, তারপর কে? তিনি বলিলেন, আবু উবাইদাহ্‌ ইবনিল জাররাহ। আমি আবার প্রশ্ন করলাম, তারপর কে?শাক্বীক্ব [রঃ] বলেন, এবার তিনি চুপ থাকলেন।

সহীহঃ মুসলিম।আবু ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৬৫৮. আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ [জান্নাতে] সর্বোচ্চ সম্মাননায় আসীন লোকদেরকে অবশ্যই তাহাদের নীচের মর্যাদার লোকেরা দেখিতে পাবে, যেমন তোমরা আসমানের দিগন্তে উদিত তারকা দেখিতে পাও। আবু বাক্‌র ও উমার তাহাদেরই দলভুক্ত, বরং আরো বেশি রহমত ও মর্যাদার অধিকারী।

সহীহঃ ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[৯৬] ।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। এ হাদীস আতিয়্যাহ্‌ হইতে আবু সাঈদ [রাদি.]-এর বরাতে একাধিক সূত্রে বর্ণিত হয়েছে।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৫. অনুচ্ছেদঃ [এক বান্দা পার্থিব জীবনের উপর আল্লাহ তাআলার সান্নিধ্যকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন]

৩৬৫৯. আবুল মুআল্লা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

একদিন রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] খুতবা [ভাষণ] দেবার সময় বলেনঃ আল্লাহ্‌ তাআলা তাহাঁর এক বান্দাকে এই ইখতিয়ার দেন যে, সে যতদিন ইচ্ছা দুনিয়ার নিয়ামাতরাজি যথেচ্ছা ভোগ করিবে অথবা আল্লাহ্‌ তাআলার সাথে মিলিত হইবে। ঐ বান্দা আল্লাহ্‌ তাআলার সাথে মিলিত হওয়াকেই ইখতিয়ার করেছে। রাবী বলেন, [এ কথা শুনে] আবু বাক্‌র [রাদি.] কেঁদে ফেলেন। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাহাবীগন বলেন, তোমরা কি এ বৃদ্ধের কাণ্ড দেখে অবাক হইবে না যে, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন আল্লাহ্‌ তাআলার এক পুন্যবান বান্দা প্রসঙ্গে আলোচনা করিলেন, তাকে দুনিয়ার ভোগ-বিলাস ও আল্লাহ্‌ তাআলার সান্নিধ্য অর্জন, এ দুটির যে কোন একটি গ্রহনের ইখতিয়ার দিয়েছেন তখন সে বান্দা তাহাঁর রবের সান্নিধ্য অর্জনকেই ইখতিয়ার করিয়াছেন [এতে কান্নার কি আছে]। রাবী বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] যা বলেছেন, তার তাৎপর্য বুঝার ব্যাপারে আবু বাক্‌র [রাদি.]-ই ছিলেন তাহাদের মধ্যে বেশি জ্ঞানী। আবু বাক্‌র [রাদি.] বলেন, বরং আমরা আমাদের পিতা-মাতা ও আমাদের ধন-সম্পদ আপনার জন্য উৎসর্গ করব। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ লোকদের মধ্যে এমন কেউ নেই যে নিজের সাহচর্য ও নিজস্ব সম্পদ দিয়ে ইবনি আবু কুহাফার চাইতে অধিক আমার প্রতি অনুগ্রহ করেছে। যদি আমি আল্লাহ্‌ তাআলা ব্যতীত অন্য কাউকে অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করতাম, তবে ইবনি আবু কুহাফাকেই অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করতাম। কিন্তু বড় বন্ধুত্ব ও ভ্রাতৃত্ব হচ্ছে ঈমানের [বন্ধুত্ব ও ভ্রাতৃত্ব]। এ কথা তিনি দুই অথবা তিনবার বলেন। তোমরা জেনে রাখ! তোমাদের সাথী [মহানাবী] আল্লাহ্‌ তাআলার একনিষ্ঠ বন্ধু।

এ অনুচ্ছেদে আবু সাঈদ [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব।এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস

৩৬৬০. আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] [মাসজিদে নাববীর] মিম্বারে বসে বললেনঃ আল্লাহ তাহাঁর এক বান্দাকে দুনিয়ার ভোগবিলাস ও আল্লাহ তাআলার কাছে রক্ষিত ভোগবিলাস এ দুইয়ের মাঝে যে কোন একটি গ্রহণ করার এখতিয়ার দান করলে ঐ বান্দা আল্লাহ তাআলার কাছে রক্ষিত ভোগবিলাসকে এখতিয়ার করিয়াছেন। তখন আবু বাক্‌র [রাদি.] বলিলেন, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আপনার জন্য আমাদের বাবা-মা উৎসর্গিত হোক। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা [তার কথায়] বিস্মিত হলাম এবং লোকেরা বলিল, এই বৃদ্ধ লোকের প্রতি খেয়াল কর, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] এক বান্দা প্রসঙ্গে সংবাদ দিচ্ছেন যে, তাকে আল্লাহ তাআলা এখতিয়ার দিয়েছেন যে, তিনি ইচ্ছা করলে আল্লাহ তাআলা তাকে দুনিয়ার ভোগ সামগ্ৰীও দান করিতে পারেন কিংবা তিনি ইচ্ছা করলে আল্লাহ তাআলার নিকট তাকে রক্ষিত ভোগসামগ্ৰীও দান করিতে পারেন। অথচ এই লোক বলছেন, আপনার জন্য আমাদের বাবা-মাকে উৎসর্গ করলাম! সেই এখতিয়ারপ্রাপ্ত বান্দা হলেন রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] । আর আবু বাক্‌র [রাদি.] আমাদের মাঝে, তাহাঁর প্রসঙ্গে সবচেয়ে অধিক জ্ঞানী। তারপর নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেনঃ লোকদের মাঝে স্বীয় মাল ও সাহচর্য দিয়ে আমার প্রতি সবচাইতে উপকার [কৃতজ্ঞতায় আবদ্ধ] করিয়াছেন আবু বাক্‌র। আমি যদি আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে একনিষ্ঠ বন্ধুরূপে গ্রহণ করতাম, তবে আবু বাক্‌রকেই একনিষ্ঠ বন্ধুরূপে গ্রহণ করতাম। কিন্তু ইসলামী ভ্রাতৃত্বই যথেষ্ট। মাসজিদে আবু বাক্‌রের দ্বার [বা জানালা] ছাড়া আর কোন দ্বার [বা জানালা] বাকি থাকিবে না।

সহীহঃ বুখারী [৩৬৫৪], মুসলিম [৭/১০৮] ।আবু ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৬৬১. আবু হুরাইরাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ আবু বাক্‌র ছাড়া আর কারো যে কোন ধরনের দয়া আমার উপর ছিল আমি তার প্রতিদান দিয়েছি। আমার উপর তার যে দয়া রহিয়াছে, ক্বিয়ামাতের দিন আল্লাহ তাআলা তাকে তার প্রতিদান দিবেন। আর আমাকে কারো সম্পদ এতটা উপকৃত করেনি, যতটা আবু বাক্‌রের সম্পদ আমাকে উপকৃত করেছে। আমি যদি কাউকে অন্তরঙ্গভাবে গ্রহণ করতাম, তাহলে আবু বাক্‌রকেই একনিষ্ঠ বন্ধুরূপে গ্রহণ করতাম। অবগত হও! তোমাদের এই সাখী আল্লাহ তাআলার অন্তরঙ্গ বন্ধু।

যঈফঃ তবে “কারো সম্পদ আমাকে এতটা উপকার করেনি…” শেষ পর্যন্ত সহীহঃ তাখরীজু মুশকিলাতিল ফাক্বর [১৩] ।আবু ঈসা বলেন, উপর্যুক্ত সনদে এ হাদীসটি হাসান গারীব।এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস

১৬. অনুচ্ছেদঃ আবু বাক্‌র ও উমার [রাদি.]-এর গুণাবলী ।

৩৬৬২. হুযাইফাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ তোমরা আমার পরে আবু বাক্‌র ও উমারের অনুসরণ করিবে।

সহীহঃ ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[৯৭] ।

এ অনুচ্ছেদে ইবনি মাসঊদ [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। এ হাদীস সুফ্‌ইয়ান সাওরী-আবদুল মালিক ইবনি উমাইর হইতে, তিনি রিবঈর আযাদকৃত গোলাম হইতে তিনি, রিব্‌ঈ হইতে, তিনি হুযাইফাহ্ [রাদি.] হইতে, তিনি নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] হইতে এই সনদে রিওয়ায়াত করিয়াছেন। আহ্‌মাদ ইবনি মানী প্রমুখ-সুফ্‌ইয়ান ইবনি উয়াইনাহ্‌ হইতে, তিনি আবদুল মালিক ইবনি উমাইর [রঃ] হইতে পূর্বোক্ত হাদীসের একই রকম বর্ণনা করিয়াছেন। এ হাদীসে সুফ্‌ইয়ান ইবনি উয়াইনাহ নিজ শাইখের নাম গোপন [তাদলীস] করিয়াছেন। অতএব কখনও তিনি বর্ণনা করিয়াছেন যাইদা-মালিক ইবনি উমাইর হইতে, আবার কখনো যাইদার নাম উল্লেখ করেননি। ইব্‌রাহীম ইবনি সাদ এ হাদীস সুফ্‌ইয়ান সাওরী হইতে, তিনি আবদুল মালিক ইবনি উমাইর হইতে, তিনি রিব্‌ঈর মুক্তিপ্রাপ্ত দাস হইতে, তিনি রিব্‌ঈ হইতে, তিনি হুযাইফাহ্‌ [রাদি.] হইতে তিনি নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] হইতে এই সনদে বর্ণনা করিয়াছেন।

এ হাদীসটি সালিম আল-আন্‌ উমী রিব্‌ঈ হইতে, তিনি হুযাইফাহ্‌ হইতে এই সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৬৬৩. হুযাইফাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর কাছে আমরা অবস্থান করছিলাম। তখন তিনি বললেনঃ তোমাদের মাঝে আমি আর কত দিন বেঁচে থাকব তা আমার জানা নেই। অতএব তোমরা আমার অবর্তমানে দুজন লোকের অনুসরণ করিবে- এ কথা বলে তিনি আবু বাক্‌র ও উমর [রাদি.]-এর দিকে ইশারা করিলেন।

সহীহঃ দেখুন পূর্বের হাদীস।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৬৬৪. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আবু বাক্‌র ও উমার [রাদি.] প্রসঙ্গে বলেছেনঃ এরা দুজন নাবী-রাসূলগণ ছাড়া পূর্বাপর জন্নাতের সকল বয়স্কদের নেতা হইবেন।

সহীহঃ দেখুন পরবর্তী হাদীস।আবু ঈসা বলেন, উপর্যুক্ত সনদে এ হাদীসটি হাসান গারীব।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৬৬৫. আলী ইবনি আবী ত্বালিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর সাথে ছিলাম। সে সময় আবু বাক্‌র ও উমর [রাদি.] আবির্ভূত হন। অতঃপর রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেনঃ এরা দুজন জান্নাতে নাবী-রাসূলগণ ছাড়া পূর্বাপর [সৰ্বকালের] পূর্ণ বয়স্কদের নেতা হইবেন। হে আলী! এটা তাহাদেরকে জানাবে না।

সহীহঃ ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[৯৫] ।আবু ঈসা বলেন, উক্ত সনদসূত্রে এ হাদীসটি গারীব। আল-ওয়ালীদ ইবনি মুহাম্মাদ আল-মুয়াক্কিরী হাদীস শাস্ত্রে দুর্বল। আলী ইবনি হুসাইন [রঃ] আলী [রাদি.] হইতে কিছু শুনেননি। এ হাদীস অবশ্য আলী [রাদি.] হইতে অন্য সনদেও বর্ণিত হয়েছে। এ অনুচ্ছেদে আনাস ও ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৬৬৬. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ আবু বাক্‌র ও উমার নাবী-রাসূলগণ ছাড়া পূর্বাপর সমস্ত বয়স্ক জান্নাতবাসীর নেতা হইবেন। হে আলী! তাহাদের দুজনকে জানাইও না।

সহীহঃ দেখুন পূর্বের হাদীস।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৬৬৭. আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আবু বাক্‌র [রাদি.] বলেছেন, আমি সেই লোক নই কি যে সর্বাগ্রে ইসলাম কবুল করেছে? আমি কি এমন কাজের অধিকারী নই?

সহীহঃ আল-আহাদীসুল মুখতারাহ [১৯-২০] ।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। এ হাদীস কতিপয় বর্ণনাকারী শুবাহ্‌ হইতে, তিনি জুরাইরী হইতে, তিনি আবু নায্‌রাহ্‌-এর সনদে উদ্ধৃতি করিয়াছেন এবং তিনি বলেন, আবু বাক্‌র [রাদি.] বলেছেন। এটাই বেশি সহীহ। মুহাম্মাদ ইবনি বাশশার-আবদুর রহমান ইবনি মাহ্‌দী হইতে, তিনি শুবাহ্‌ হইতে, তিনি জুরাইরী হইতে, তিনি আবু নায্‌রাহ্‌ [রাদি.] হইতে, তিনি বলেন, আবু বাক্‌র [রাদি.] বলেছেন….উক্ত মর্মে একই রকম রিওয়ায়াত করিয়াছেন এবং এতে তিনি আবু সাঈদ [রাদি.]-এর উল্লেখ করেননি। এটাই অধিক সহীহ।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৬৬৮. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর মুহাজির ও আনসার সাহাবীদের আবু বাক্‌র ও উমারসহ বসা অবস্থায় তাহাদের নিকট আসতেন। কিন্তু আবু বাক্‌র ও উমার [রাদি.] ব্যতীত অন্য কেউই রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর দিকে চোখ তুলে তাকাতেন না। অথচ তাঁরা উভয়ে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর দিকে তাকাতেন এবং তিনিও তাহাদের উভয়ের দিকে তাকাতেন। তারা উভয়ে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসতেন এবং তিনিও তাহাদের উভয়ের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসতেন।

যঈফ, মিশকাত [৬০৫৩]আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধু হাকাম ইবনি আতিয়্যার সূত্রে এ হাদীস জেনেছি। কোন কোন হাদীস বিশারদ হাকাম ইবনি আতিয়্যার সমালোচনা করিয়াছেন।এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস

৩৬৬৯. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদিন রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আবু বাক্‌র ও উমার [রাদি.]-এর হাত ধরা অবস্থায় বেরিয়ে এসে মাসজিদে ঢুকেন। তাহাদের একজন ছিলেন তাহাঁর ডান পাশে এবং অপরজন ছিলেন তাহাঁর বাম পাশে। তিনি বলেনঃ কিয়ামাতের দিন আমরা এভাবে [হাত ধরা অবস্থায়] উঠবো।

যঈফ, ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[৯৯]আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। সাঈদ ইবনি মাসলামা হাদীস বিশেষজ্ঞদের মতে তেমন মজবুত রাবী নন। এ হাদীসটি নাফি হইতে ইবনি উমার [রাদি.] সূত্রেও ভিন্নরূপে বর্ণিত হয়েছে।এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস

৩৬৭০. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আবু বাক্‌র [রাদি.]-কে বলেনঃ আপনি হাওযে [কাওসারে] আমার সাথী এবং [হিযরাতকালেও ছাওর পর্বত] গুহায় আপনিই [ছিলেন] আমার সাথী।

যঈফ, মিশকাত [৬০১৯]আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব।এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস

৩৬৭১. আবদুল্লাহ ইবনি হান্‌ত্ত্বাব [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আবু বাক্‌র ও উমার [রাদি.]-কে প্রত্যক্ষ করে বলেনঃ এদের উভয়ের কান ও চোখ একই।

সহীহঃ সহীহাহ্‌ [৮১৪] ।এ অনুচ্ছেদে আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি মুরসাল। কেননা আবদুল্লাহ ইবনি হানত্বাব [রঃ] নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর দেখা পাননি।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৬৭২. আয়িশাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেনঃ আবু বাক্‌রকে হুকুম দাও তিনি যেন লোকদের নামাজ আদায় করান। আয়িশাহ্‌ [রাদি.] বলিলেন, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আবু বাক্‌র আপনার স্থানে দাঁড়ালে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ার কারণে লোকদেরকে কিরাআত শুনাতে পারবেন না। অতএব আপনি উমার [রাদি.]-কে হুকুম দিন তিনি যেন লোকদের নামাজ আদায় করান। আয়িশাহ্‌ [রাদি.] বলেন, তিনি পুনরায় বললেনঃ আবু বাক্‌রকে নির্দেশ দাও তিনি যেন লোকদের নামাজ আদায় করান। আয়িশাহ্‌ [রাদি.] বলেন, এবার আমি হাফ্‌সাহ্‌ [রাদি.]-কে বললাম, আপনি রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে বলুন, আবু বাক্‌র [রাদি.] তাহাঁর স্থানে দাঁড়ালে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ার কারণে লোকদেরকে [তার কিরাআত] শুনাতে পারবেন না। অতএব আপনি উমার [রাদি.]-কে বলুন তিনি যেন লোকদের নামাজ আদায় করান। হাফসাহ্‌ [রাদি.] তাই করিলেন। সে সময় রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেনঃ তোমারই তো ইউসুফ [আঃ]-এর জন্য সমস্যা সৃষ্টিকারী সঙ্গী [যার ফলে তিনি জেলে যেতে বাধ্য হন]। আবু বাক্‌রকেই লোকদের নামাজ আদায় করানোর হুকুম দাও। সে সময় হাফসাহ্‌ [রাদি.] আয়িশাহ্‌ [রাদি.]-কে বলিলেন, কখনো আমি তোমার নিকট হইতে মঙ্গল পাইনি।

সহীহঃ ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১২৩২], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। এ অনুচ্ছেদে আবদুল্লাহ ইবনি মাসঊদ, আবু মূসা, ইবনি আব্বাস, সালিম ইবনি উবাইদ ও আবদুল্লাহ ইবনি যামআহ্‌ [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৬৭৩. আইশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন জাতির মধ্যে আবু বাক্‌র হাযির থাকতে তাহাদের ঈমামতি করা অন্য কারো জন্য কাম্য নয়।

অত্যন্ত দুর্বল, যঈফা [৪৮২০]আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব।এই হাদীসটির তাহকিকঃ খুবই দুর্বল

৩৬৭৪. আবু হুরাইরাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ যে লোক একই মালের এক জোড়া আল্লাহ তাআলার রাস্তায় খরচ করে তাকে জান্নাতে ডাকা হইবে, হে আল্লাহ তাআলার বান্দা! এটাই উত্তম জায়গা। সুতরাং যে লোক নামাযী, তাকে নামাযের দ্বার হইতে আহবান করা হইবে। যে লোক মুজাহিদ তাকে জিহাদের দ্বার হইতে আহবান করা হইবে। যে লোক দানশীল তাকে দান-খাইরাতের দ্বার হইতে আহবান করা হইবে। যে লোক রোযাদার তাকে রোযার বিশেষ দ্বার [রাইয়্যান] হইতে আহবান করা হইবে। সে সময় আবু বাক্‌র [রাদি.] বলিলেন, আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য উৎসর্গ হোক! কোন লোককে সকল দরজা হইতে ডাকার তো দরকার নেই। তা সত্ত্বেও কোন লোককে কি এসবগুলো দরজা হইতে আহবান করা হইবে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, এবং আমি আশা করি আপনিও তাহাদের অন্তর্ভুক্ত থাকিবেন।

সহীহঃ সহীহাহ্‌ [২৮৭৮], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৬৭৫. যাইদ ইবনি আসলাম [রঃ] কর্তৃক তাহাঁর পিতা হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.]-কে আমি বলিতে শুনিয়াছি, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] [তাবূকের যুদ্ধের প্রাক্কালে] আমাদেরকে দান-খাইরাত করার হুকুম করেন। সৌভাগ্যক্রমে ঐ সময় আমার সম্পদও ছিল। আমি [মনে মনে] বললাম, যদি আমি কোন দিন আবু বাক্‌র [রাদি.]-কে ডিঙ্গাতে পারি তাহলে আজই সেই সুযোগ। উমার [রাদি.] বলেন, আমি আমার অর্ধেক সম্পদ নিয়ে এলাম। রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেনঃ তোমার পরিবার-পরিজনদের জন্য তুমি কি বাকি রেখে এসেছ? আমি বললাম, এর সমপরিমাণ। আর আবু বাক্‌র [রাদি.] তার সমস্ত মাল নিয়ে আসলেন। তিনি বললেনঃ হে আবু বাক্‌র! তোমার পরিবার-পরিজনদের জন্য তুমি কি বাকি রেখে এসেছ? তিনি বলিলেন, তাহাদের জন্য আল্লাহ ও তার রাসূলকেই রেখে এসেছি। আমি [মনে মনে] বললাম, কখনও আমি কোন প্রসঙ্গে আবু বাক্‌র [রাদি.]-কে ডিঙ্গাতে পারব না।

হাসানঃ মিশকাত [৬০২১] ।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস

১৭. অনুচ্ছেদঃ আবু বাক্‌র [রাদি.]-এর খলীফাহ্‌ হওয়ার ইঙ্গিত

৩৬৭৬. জুবাইর ইবনি মুত্বইম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

এক মহিলা রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর নিকট এসে তাহাঁর সঙ্গে কোন প্রসঙ্গে কথা বলিল। তিনি তাকে কিছু করার ব্যাপারে হুকুম দেন। সে বলিল, হে আল্লাহর রাসূল! আচ্ছা আমি [আবার এসে] আপনাকে যদি না পাই?তিনি বললেনঃ যদি তুমি আমাকে না পাও তবে আবু বাক্‌রের কাছে এসো।

সহীহঃ বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি সহীহ। এই সূত্রে গারীব।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৬৭৭. আবু হুরাইরাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ একদিন এক লোক একটি গরুর পিঠে আরোহিত থাকা অবস্থায় গরুটি বলিল, আমাকে এজন্য সৃষ্টি করা হয়নি, আমাকে সৃষ্টি করা হয়েছে কৃষিকাজের জন্য। সে সময় রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেনঃ আমি, আবু বাক্‌র ও উমার [রাদি.] -এই বিষয়টির উপর দৃঢ় আস্থা স্থাপন করলাম। আবু সালামাহ্ [রঃ] বলেন, তারা দুজন সেদিন জনতার মাঝে হাযির ছিলেন না।

সহীহঃ ইরওয়াহ্‌ [২৪৭], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ।মুহাম্মাদ ইবনি বাশশার-মুহাম্মাদ ইবনি জাফার হইতে, তিনি শুবাহ [রঃ] হইতে উপর্যুক্ত সনদে একই রকম বর্ণনা করিয়াছেন। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৬৭৮. আয়িশাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আবু বাক্‌রের দ্বার ছাড়া আর সমস্ত দ্বার বন্ধ করে দেয়ার হুকুম দেন।

সহীহঃ বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ, দেখুন হাদীস নং ৩৬৬০।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি উপর্যুক্ত সনদে গারীব। এ অনুচ্ছেদে আবু সাঈদ [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৬৭৯. আয়িশাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর কাছে আবু বাক্‌র [রাদি.] প্রবেশ করলে তিনি বললেনঃ আপনি জাহান্নামের আগুন হইতে মুক্তিপ্রাপ্ত আল্লাহর বান্দা [আত্বীকুল্লাহ] । সেদিন হইতে তিনি আত্বীক নামে ভূষিত হন।

সহীহঃ মিশকাত তাহক্বীক্ব সানী [হাঃ ৬০২২]আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। এ হাদীস কিছু বর্ণনাকারী মাআন হইতে রিওয়ায়াত করিয়াছেন এবং তিনি মূসা ইবনি ত্বালহা হইতে, তিনি আয়িশাহ্‌ [রাদি.] হইতে এই সনদের উল্লেখ করিয়াছেন।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৬৮০. আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ প্রত্যেক নাবীরই আকাশবাসীদের মধ্য হইতে দুজন উযীর এবং যমিনবাসীদের মধ্য হইতে দুজন উযীর ছিল। আকাশবাসীদের মধ্য হইতে আমার দুজন উযীর হলেন জিবরাঈল ও মীকাঈল আলাইহিস সালাম এবং যমিনবাসীদের মধ্য হইতে আমার দুজন উযীর হলেন আৰু বাকর ও উমার।

যঈফ, মিশকাত [৬০৫৬]আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারিব। আর আবুল জাহ্‌হাফের নাম দাউদ ইবনি আৰু আওফ। সুফিয়ান সাওরী [রাহঃ] হইতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেনঃ আবুল জাহ্‌হাফ আমাদের নিকট হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন এবং তিনি ছিলেন প্রিয় লোক। তালীদ ইবনি সুলাইমানের ডাক নাম আবু ইদরীস, তিনি শীয়া মতালম্বী।এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস

১৮. অনুচ্ছেদঃ উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.]-এর মর্যাদা

৩৬৮১. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেনঃ

اللَّهُمَّ أَعِزَّ الإِسْلاَمَ بِأَحَبِّ هَذَيْنِ الرَّجُلَيْنِ إِلَيْكَ بِأَبِي جَهْلٍ أَوْ بِعُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ

“হে আল্লাহ! আবু জাহ্‌ল কিংবা উমার ইবনিল খাত্তাব- এই দুজনের মাঝে তোমার নিকট যে বেশি প্রিয়, তার মাধ্যমে তুমি ইসলামকে মজবুত কর ও মর্যাদা দান কর”। ইবনি উমার [রাদি.] বলেন, ঐ দুজনের মাঝে উমার [রাদি.]-ই আল্লাহ তাআলার প্রিয় হিসেবে আবির্ভূত হন।

সহীহঃ মিশকাত, তাহক্বীক্ব সানী [৬০৩৬] ।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ এবং ইবনি উমার [রাদি.]-এর বর্ণনার পরিপ্রেক্ষিতে গারীব।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৬৮২. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলা উমার [রাদি.]-এর মুখে ও হৃদয়ে সত্যকে স্থাপন করিয়াছেন। ইবনি উমার [রাদি.] বলেন, জনগণের সম্মুখে কখনো কোন প্রসঙ্গ আবির্ভূত হলে লোকজনও তা সম্পর্কে মন্তব্য ব্যক্ত করত এবং উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.]-ও অভিমত ব্যক্ত করিতেন। দেখা যেত, উমার [রাদি.]-এর অভিমত এর সমর্থনে কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে।

সহীহঃ ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১০৮] ।এ অনুচ্ছেদে আল-ফাযল ইবনি আব্বাস, আবু যার ও আবু হুরাইরাহ্‌ [রাদি.] হইতে হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ, উপর্যুক্ত সূত্রে গারীব। খারিজাহ্‌ ইবনি আবদুল্লাহ আল-আনসারী হলেন ইবনি সুলাইমান ইবনি যাইদ ইবনি সাবিত। তিনি একজন নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারী।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৬৮৩. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ “হে আল্লাহ! আবু জাহল ইবনি হিশাম অথবা উমার ইবনিল খাত্তাবের মারফত ইসলামকে শক্তিশালী কর”। রাবী বলেনঃ পরের দিন সকালে উমার [রাদি.] রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট হাযির হয়ে ইসলাম ক্ববূল করেন।

অত্যন্ত দুর্বল, মিশকাত [৬০৩৬]আৰু ঈসা বলেনঃ উপরোক্ত সূত্রে এ হাদীসটি গারীব। কিছু মুহাদীস আন-নাযর আবু উমারের সমালোচনা করিয়াছেন। তিনি মুনকার হাদীস বর্ণনা করেন।এই হাদীসটির তাহকিকঃ খুবই দুর্বল

৩৬৮৪. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেনঃ উমার [রাদি.] আবু বাকর [রাদি.]-কে বলেনঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর পরেই হে সর্বোত্তম মানুষ। আবু বাকর [রাদি.] বলেন, আপনি আমার প্রসঙ্গে এমন মন্তব্য করিলেন! অথচ আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে অবশ্যই বলিতে শুনেছিঃ উমারের চাইতে অধিক ভালো কোন লোকের উপর দিয়ে সূর্য উঠেনি।

মাওযু যঈফা [১৩৫৭]আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধু আলোচ্য সূত্রেই এ হাদীস জেনেছি। এ হাদীসের সনদসূত্র তেমন মজবুত নয়। এ অনুচ্ছেদে আবুদ দারদা [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে।এই হাদীসটির তাহকিকঃ জাল হাদীস

৩৬৮৫. মুহাম্মাদ ইবনি সীরীন হইতে বর্ণীতঃ

আমি মনে করি না যে, এমন কোন ব্যক্তি আছেন যিনি নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে ভালবাসেন অথচ আবু বাক্‌র ও উমার [রাদি.]-এর মর্যাদা খাটো করে দেখেন।

সনদ সহীহ মাকতু ।আবু ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান গারীব।এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ মাকতু

৩৬৮৬. উক্ববাহ্‌ ইবনি আমির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ আমার পরবর্তীতে কেউ নাবী হলে অবশ্যই উমার ইবনিল খাত্তাবই নাবী হত।

হাসানঃ সহীহাহ্‌ [৩২৭] ।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। আমরা শুধুমাত্র মিশরাহ ইবনি আ-হান বর্ণিত হাদীস হিসেবে এটি অবগত হয়েছি।এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস

৩৬৮৭. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ আমি স্বপ্নে দেখলাম যেন আমার কাছে এক পেয়ালা দুধ আনা হয়েছে, তা হইতে আমি পান করলাম এবং বাকি অংশটুকু উমার ইবনিল খাত্তাবকে দিলাম। সাহাবীগণ বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি এর কি ব্যাখ্যা করেন? তিনি বললেনঃ “জ্ঞান”।

সহীহঃ বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। ২২৮৪ নং হাদীস পূর্বে বর্ণিত হয়েছে।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৬৮৮. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেনঃ মিরাজের রাতে আমি জান্নাতে প্রবেশ করে তাতে একখানা সোনার বালাখানা প্রত্যক্ষ করলাম। আমি প্রশ্ন করলাম, এ বালাখানা কার? ফেরেশতারা বলিলেন, কুরাইশের এক যুবকের। আমি ধারণা করলাম, আমিই সেই যুবক। আমি প্রশ্ন করলামঃ কে সেই যুবক? ফেরেশতারা বলিলেন, উমার ইবনিল খাত্তাব।

সহীহঃ সহীহাহ্ [১৪০৫, ১৪২৩], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৬৮৯. বুরাইদাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

এক দিন ভোরে রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বিলাল [রাদি.]-কে ডেকে বললেনঃ হে বিলাল! তুমি জান্নাতে কি কারণে আমার আগে আগে থাকছ? যখনই আমি জান্নাতে প্রবেশ করেছি সে সময়ই আমার আগে তোমার জুতার শব্দ শুনতে পেয়েছি। গত রাতেও আমি জান্নাতে প্রবেশ করেছি এবং আমার আগে তোমার জুতার শব্দ শুনতে পেয়েছি। আমি স্বর্ণনির্মিত একটি বর্গাকার সুউচ্চ প্রাসাদের নিকট এসে বললামঃ এ প্রাসাদটি কার? ফেরেশতারা বলিলেন, এটা আরবের এক ব্যক্তির। আমি বললাম, আমি একজন আরব। সুতরাং এ প্রাসাদটি কার? তারা বলিলেন, কুরাইশ বংশের এক লোকের। আমি বললামঃ আমি কুরাইশ বংশীয়, অতএব এ প্রাসাদটি কার? তারা বলিলেন, মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর উম্মাতের এক ব্যক্তির। আমি বললাম, আমিই মুহাম্মাদ, সুতরাং এ প্রাসাদটি কার? তারা বলিলেন, উমার ইবনিল খাত্তাবের। তারপর বিলাল [রাদি.] বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! কখনো আমি আযান দিলেই দুই রাকআত নামাজ আদায় করি এবং কখনো আমার উযূ ছুটে গেলেই আমি উযূ করি এবং মনে করি আল্লাহ তাআলার নামে দুই রাকআত নামাজ আদায় করা আমার কর্তব্য। রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেনঃ এ দুটি কারণেই [তোমার এ মর্যাদা]।

সহীহঃ তালীকুর রাগীব [১/৯৯]।এ অনুচ্ছেদে জাবির, মুআয ও আবু হুরাইরাহ্‌ [রাদি.] কর্তৃকও হাদীস বর্ণিত আছে যে, নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ জান্নাতের মাঝে আমি সোনার তৈরী একখানা প্রাসাদ দেখে বললাম, এ প্রাসাদটি কার? বলা হল, উমার ইবনিল খাত্তাবের। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব। রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর বাণীঃ “গত রাতে আমি জান্নাতে প্রবেশ করেছি”, এর অর্থ “আমি স্বপ্নে দেখেছি যেন আমি জান্নাতে প্রবেশ করেছি”। কোন কোন হাদীসে এ রকমই বর্ণিত আছে। ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেছেন, নাবীদের স্বপ্নও ওয়াহী।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৬৯০. বুরাইদাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] তাহাঁর কোন এক যুদ্ধাভিযানে যান। তিনি ফিরে এলে এক কৃষ্ণবর্ণা মেয়ে এসে বলে, হে আল্লাহর রাসূল! আমি মানত করেছিলাম যে, আপনাকে আল্লাহ তাআলা হিফাযাতে [সুস্থাবস্থায়] ফিরিয়ে আনলে আপনার সম্মুখে আমি দফ বাজাব এবং গান করব। রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] তাকে বললেনঃ তুমি সত্যিই যদি মানত করে থাক তবে দফ বাজাও, তা না হলে বাজিও না। সে দফ [এক মুখ খোলা ঢোল] বাজাতে লাগল। এই অবস্থায় সেখানে আবু বাক্‌র [রাদি.] এলেন এবং সে দফ বাজাতে থাকে, তারপর আলী [রাদি.] এলেন এবং সে ওটা বাজাতে থাকে। তারপর উসমান [রাদি.] এলেন, সে সময়ও সে তা বাজাতে থাকে। তারপর উমার [রাদি.] এসে প্রবেশ করলে সে দফটি তার নিতম্বের নীচে রেখে তার উপর অবস্থান করে। রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেনঃ হে উমার! তোমাকে দেখলে শাইতানও ভয় পায়। আমি উপবিষ্ট ছিলাম আর ঐ মেয়েটি দফ বাজাচ্ছিল। পরে আবু বাক্‌র এসে প্রবেশ করলে সে সময়ও সে তা বাজাতে থাকে। এরপর আলী প্রবেশ করলে সে সময়ও সে তা বাজাতে থাকে। এরপর উসমান এসে প্রবেশ করলে তখনও সে তা বাজাতে থাকে। অবশেষে তুমি এসে যখন প্রবেশ করলে, হে উমার! সে সময় সে দফটি ফেলে দিল।

সহীহঃ নাক্বদুল কিত্তানী [৪৭-৪৮], সহিহাহ্‌ [২২৬১]।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ এবং বুরাইদাহ্‌র বর্ণনার পরিপ্রেক্ষিতে গারীব। এ অনুচ্ছেদে উমার, সাদ ইবনি আবী ওয়াক্কাস ও আয়িশাহ্‌ [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৬৯১. আয়িশাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বসা ছিলেন। সে সময় আমরা একটা সোরগোল ও শিশুদের হৈচৈ শুনতে পেলাম। রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] উঠে গিয়ে দেখলেন, এক হাবশী নারী নেচেকুদে খেলা দেখাচ্ছে আর শিশুরা তার চারিদিকে ভীড় জমিয়েছে। তিনি বললেনঃ হে আয়িশাহ্‌! এসো এবং প্রত্যক্ষ কর। অতএব আমি গেলাম এবং রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর কাঁধের উপর আমার চিবুক রেখে তার খেলা প্রত্যক্ষ করিতে লাগলাম। আমার চিবুক ছিল তাহাঁর মাথা ও কাঁধের মধ্যবর্তী জায়গায়। [কিছুক্ষণ পর] আমাকে তিনি বললেনঃ তুমি কি তৃপ্ত হওনি, তোমার কি তৃপ্তি পূর্ণ হয়নি? তিনি বলেন, আমি না, না বলিতে থাকলাম। আমার লক্ষ্য ছিল, আমাকে রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] কতটুকু খাতির করেন তা পর্যবেক্ষণ করা। ইত্যবসরে উমার [রাদি.] আবির্ভূত হন এবং মুহূর্তের মধ্যে সমস্ত লোক তার কাছ হইতে সটকে পড়ে। আয়িশা [রাদি.] বলেন, সে সময় রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেনঃ আমি দেখলাম জিন ও মানববেশধারী শাইতানগুলো উমারকে দেখেই সরে যাচ্ছে। তিনি বলেন, তারপর আমি ফিরে এলাম।

সহীহঃ মিশকাত [৬০৩৯] ।আবু ঈসা বলেন, উপর্যুক্ত সনদে এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৬৯২. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমার জন্যই প্রথমে [কবর] বিদীর্ণ করা হইবে, তারপর আবু বকরের, তারপর উমারের জন্য। তারপর আমি আল-বাকীর কবরবাসীদের নিকট আসব এবং তাহাদেরকে আমার সাথে হাশরের মাঠে সমবেত করা হইবে। তারপর আমি মক্কাবাসীদের জন্য প্রতীক্ষা করব। পরিশেষে হারামাইন শরীফাইন [মক্কা ও মদীনা]-এর মধ্যবর্তী স্থানে আমাকে উঠানো হইবে।

যঈফ, যঈফা [২৯৪৯]আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। [আমার মতে] আসিম ইবনি উমার হাফেজে হাদীস নন।এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস

৩৬৯৩. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ সাবেক উম্মাতদের মাঝে মুহাদ্দাস [তীক্ষ্ণবুদ্ধি ও সূক্ষদর্শী লোক] আবির্ভাব হইতেন। আমার উম্মাতদের মাঝে কেউ মুহাদ্দাস হলে তা উমার ইবনিল খাত্তাবই।

হাসান সহীহঃ বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি সহীহ। ইবনি উয়াইনার অপর এক শাগরিদ সুফ্ইয়ান ইবনি উয়াইনার সনদে আমার কাছে রিওয়ায়াত করিয়াছেন যে, তিনি বলেন, মুহাদ্দাসুন অর্থ মুফাহ্‌হামূন [আল্লাহ যাদেরকে ইসলামের পূর্ণ জ্ঞান দান করেন]।এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান সহীহ

৩৬৯৪. আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমাদের সামনে জান্নাতীদের একজন আবির্ভূত হইবেন। ইত্যবসরে আবু বাকর [রাদি.] আবির্ভূত হন। তিনি আবার বলেনঃ তোমাদের সামনে জান্নাতীদের একজন আবির্ভূত হইবেন। ইত্যবসরে উমর [রাদি.] আবির্ভূত হন।

যঈফ, মিশকাত [৬০৮৫]এ অনুচ্ছেদে আবু মূসা ও জাবির [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ ইবনি মাসউদ [রাদি.]-এর রিওয়ায়াত হিসেবে এ হাদীসটি গারীব।এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস

৩৬৯৫. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ একদিন এক লোক তার মেষ [বকরী] পাল চরাচ্ছিল। হঠাৎ একটি নেকড়ে বাঘ এসে একটি বকরী ধরে ফেলে। তার মালিক এসে নেকড়ের কাছ থেকে বকরীটি ছিনিয়ে নিল। নেকড়ে বলিল, হিংস্র জন্তুর দিনে [যেদিন মানুষ মারা যাবে এবং হিংস্র জন্তুরা বাকি থাকিবে] তুমি কি করিবে, যেদিন আমি ছাড়া এদের কোন রাখাল থাকিবে না? রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেনঃ আমি নিজে এবং আবু বকর ও উমার এতে [নেকড়ের মন্তব্যে] বিশ্বাস স্থাপন করলাম। আবু সালামাহ্ [রাদি.] বলেন, সেই মজলিসে ঐ দিন তারা দুজন হাযির ছিলেন না।

সহীহঃ বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এটি ৩৬৭৭ নং হাদীসের পূর্ণাঙ্গরূপ।মুহাম্মাদ ইবনি বাশশার-মুহাম্মাদ ইবনি জাফার হইতে, তিনি শুবাহ্ হইতে, তিনি সাদ ইবনি ইবরাহীম [রঃ] হইতে অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৯. অনুচ্ছেদঃ উসমান ইবনি আফ্ফান [রাদি.]-এর মর্যাদা।

৩৬৯৬. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] হেরা পর্বতে ছিলেন এবং তাহাঁর সঙ্গে ছিলেন আবু বকর, উমার, উসমান, আলী, ত্বালহা ও আয্-যুবাইর [রাদি.]। [তাহাদের পদতলের] পাথরটি নড়াচড়া করলে নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেনঃ স্থির হয়ে থাক। কেননা তোমার উপর একজন নাবী কিংবা একজন সিদ্দীক অথবা একজন শহীদ রয়েছেন।

সহীহঃ সহীহাহ্ [২/৫৬২], মুসলিম।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি সহীহ। এ অনুচ্ছেদে উসমান, সাঈদ ইবনি যাইদ, ইবনি আব্বাস, সাহ্ল ইবনি সাদ, আনাস ইবনি মালিক ও বুরাইদাহ্ [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত হয়েছে।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৬৯৭. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আবু বাক্র, উমার ও উসমান [রাদি.]-সহ উহূদ পাহাড়ে আরোহণ করেন। তাহাদেরকে নিয়ে পাহাড় কেঁপে উঠে। রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] [পদাঘাত করে] বললেনঃ হে উহুদ! শান্ত হও। তোমার উপরে একজন নাবী, একজন সিদ্দীক্ব [পরম সত্যবাদী] ও দুজন শহীদ রয়েছেন।

সহীহঃ সহীহাহ্ [৮৭৫], বুখারী।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৬৯৮. তালহা ইবনি উবাইদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ প্রত্যেক নাবীর একজন করে ঘনিষ্ঠ বন্ধু আছে। জান্নাতে আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু হইবেন উসমান [রাদি.]।

যঈফ, ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১০৯]আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গরীব। এর সনদসূত্র নয় এবং এটি মুনকাতে হাদীস। তেমন সুদৃঢ় নয় এবং এটি মুনকাতে হাদীস।এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস

৩৬৯৯. আবু আবদুর রহমান আস্-সুলামী [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, যখন উসমান [রাদি.] বিদ্রোহীদের মাধ্যমে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন, সে সময় তিনি তার ঘরের উপরিতলে [ছাদে] উঠলেন, তারপর বলিলেন, আজ আল্লাহর ক্বসম করে আমি তোমাদের মনে করিয়ে দিচ্ছি, তোমরা কি অবহিত আছ যে, হেরা পর্বত কম্পিত হলে রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছিলেনঃ হে হেরা! শান্ত হয়ে যাও, কেননা তোমার উপর রয়েছেন একজন নাবী কিংবা একজন সিদ্দীক্ব কিংবা একজন শহীদ? লোকেরা বলিল, হ্যাঁ। তিনি পুনরায় বলিলেন, আমি আল্লাহ তাআলার নামে ক্বসম করে তোমাদেরকে মনে করিয়ে দিচ্ছি যে, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] উসরা বাহিনীর [তাবূকের যুদ্ধের] জন্য বলেছিলেনঃ কে এটা পছন্দনীয় বা ক্ববূল হওয়ার যোগ্য [অধিক পরিমাণের] খরচ দিতে তৈরী আছে? সে সময় লোকেরা চরম আর্থিক সংকট ও কঠিন পরিস্থিতির মুকাবিলা করছিল। অতএব সেই বাহিনীর প্রয়োজনীয় ব্যয় আমিই বহন করেছি। লোকেরা বলিল, হ্যাঁ। আবার তিনি বলিলেন, আল্লাহ্ তাআলার নামে প্রতিজ্ঞা করে তোমাদেরকে আমি আরও মনে করিয়ে দিতে চাই, তোমরা কি জ্ঞাত আছ যে, রূমা কূপের পানি কেউই ক্রয় করা ব্যতীত পান করিতে পারত না? সেই কূপ আমি ক্রয় করে আমি ধনী, দরিদ্র ও মুসাফিরদের জন্য ওয়াক্ফ করে দিয়েছি। লোকেরা বলিল, ইয়া আল্লাহ! হ্যাঁ [আমরা জানি]। তিনি তার আরো কিছু [জনহিতকর] সমাজকল্যাণমূলক কথা মনে করিয়ে দেন।

সহীহঃ ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১০৯]।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ এবং উপর্যুক্ত সূত্রে গারীব।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৭০০. আবদুর রহমান ইবনি খাব্বাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেনঃ যখন রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] জনসাধারণকে জাইশুল উসরাত অর্থাৎ তাবুকের সামরিক অভিযানে আর্থিক সহায়তা দেবার জন্য উৎসাহিত করছিলেন, তখন আমি সেখানে হাযির ছিলাম। উসমান [রাদি.] দাড়িঁয়ে বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! আমি সুসজ্জিত এক শত উট [গদি-পালানসহ] আল্লাহ্ তাআলার রাস্তায় দান করলাম। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আবার যুদ্ধের [আর্থিক খরচ বহনের উদ্দেশ্যে] লোকদেরকে উৎসাহিত করিলেন। উসমান [রাদি.] দাড়িঁয়ে বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! গদি-পালানসহ আমি দুই শত উট আল্লাহ্ তাআলার রাস্তায় দান করলাম। তিনি আবারও লোকদেরকে যুদ্ধের জন্য উৎসাহিত করেন। উসমান [রাদি.] দাড়িঁয়ে বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! আমি গদি-পালানসহ তিন শত উট আল্লাহ্ তাআলার রাস্তায় দান করলাম। রাবী আবদুর রহমান [রাদি.] বলেনঃ আমি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মিম্বারের উপর হইতে এ কথা বলিতে বলিতে নামতে দেখছি- আজকের পর হইতে উসমান যাই করুক তার জন্য তাকে কৈফিয়াত দিতে হইবে না। আজকের পর হইতে উসমান যাই করুক তার জন্য তাকে কৈফিয়ত দিতে হইবে না।

যঈফ, মিশকাত [৬০৬৩]আবু ঈসা বলেনঃ উপরোক্ত সনদসূত্রে এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধুমাত্র আস-সাকান ইবনিল মুগীরাহর সূত্রেই হাদীসটি জানতে পেরেছি। এ অনুচ্ছেদে আবদুর রহমান ইবনি সামুরা [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে।এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস

৩৭০১. আবদুর রহমান ইবনি সামুরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, উসমান [রাদি.] এক হাজার দীনারসহ রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর নিকট হাযির হলেন। বর্ননাকারী আল-হাসান ইবনি ওয়াক্বি [রঃ] বলেন, আমার কিতাবের [পাণ্ডুলিপির] অন্য জায়গায় আছে, তিনি তার জামার হাতার মধ্যে করে সেগুলো নিয়ে আসেন যখন রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] তাবূকের যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। মুদ্রাগুলো তিনি রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর কোলে ঢেলে দেন। আবদুর রহমান [রাদি.] বলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে আমি সেগুলো তাহাঁর কোলে ওলট-পালট করিতে করিতে বলিতে শুনলামঃ আজকের পর হইতে উসমান যে কার্যকলাপই করুক তা তার কোন অনিষ্ট করিতে পারবে না। তিনি কথাটি দুবার বলিলেন।

হাসানঃ মিশকাত [৬০৬৪]।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি উপর্যুক্ত সনদে হাসান গারীব।এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস

৩৭০২. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেনঃ যখন রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] [লোকদেরকে] স্বতস্ফূর্তভাবে আনুগত্যের শপথ [বাইআতুর রিদওয়ান] করার হুকুম দেন তখন উসমান ইবনি আফ্ফান [রাদি.] রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে মক্কার বাসিন্দাদের নিকট গিয়েছিলেন। আনাস [রাদি.] বলেনঃ লোকেরা আনুগত্যের শপথ করেন। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ উসমান আল্লাহ ও তার রাসূলের প্রয়োজনীয় কাজে গেছে। তারপর তিনি নিজের এক হাত অপর হাতের উপর রাখেন [উসমানের বাইআতস্বরূপ]। রাবী বলেনঃ উসমান [রাদি.]-এর জন্য রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর হাতখানা লোকদের নিজেদের জন্য তাহাদের হাতের চাইতে বেশি ভাল ছিল।

যঈফ, মিশকাত [৬০৬৫]আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব।এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস

৩৭০৩. সুমামাহ্ ইবনি হায্ন আল-কুশাইরী [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, যখন উসমান [রাদি.] [তার] ঘরের ছাদে উঠেন [বিদ্রোহীদের শান্ত করার জন্য] সে সময় আমি সেই গৃহে ছিলাম। তিনি বলিলেন, তোমাদের যে দুই সহকর্মী তোমাদেরকে আমার বিপক্ষে উপস্থিত করেছে আমার সম্মুখে তাহাদেরকে উপস্থিত কর। বর্ননাকারী বলেন, তাহাদেরকে আনা হল, যেন দুটি উট অথবা দুটি গাধা [অর্থাৎ মোটাতাজা]। বর্ননাকারী বলেন, উপর হইতে উসমান [রাদি.] তাহাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলিলেন, আমি তোমাদেরকে আল্লাহ ও দ্বীন ইসলামের ক্বসম দিয়ে প্রশ্ন করছি, তোমরা কি জান যে, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] [হিজরাত করে] মাদীনায় এলেন এবং রূমার কূপ ছাড়া এখানে অন্য কোথায়ও মিষ্টি পানির বন্দোবস্ত ছিল না? রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেনঃ যে লোক রূমার কূপটি ক্রয় করে মুসলিম সর্বস্তরের জন্য ওয়াক্ফ করে দিবে সে জান্নাতে তার তুলনায় বেশি উত্তম প্রতিদান পাবে। তারপর আমি আমার মূল সম্পত্তি দিয়ে তা ক্রয় করি [এবং উৎসর্গ করে দেই]। অথচ আজ আমাকে সেই কূপের পানি পান করিতে তোমরা বাধা দিচ্ছ, এমনকি আজ আমি সাগরের [লোনা] পানি পান করছি। লোকেরা বলিল, হে আল্লাহ! হ্যাঁ, সত্য। তিনি পুনরায় বলিলেন, আমি তোমাদেরকে আল্লাহ তাআলা এবং দ্বীন ইসলামের ক্বসম দিয়ে প্রশ্ন করছি, তোমরা কি জান যে, মাসজিদে নাববী মুসল্লীদের জন্য একেবারে ক্ষুদ্র ছিল? রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেনঃ যে লোক অমুক গোত্রের জমিখণ্ড ক্রয় করে মাসজিদের সঙ্গে সংযুক্ত করিবে, তার প্রতিদানে সে জান্নাতের মাঝে এর তুলনায় উত্তম প্রতিদান পাবে। আমি আমার মূল সম্পত্তি দিয়ে তা ক্রয় করে মাসজিদের সাথে সংযুক্ত করেছি আর আজকে তোমরা আমাকে সেখানে দুই রাকআত নামাজ আদায় করিতে বাধা দিচ্ছ। তারা বলিল, হে আল্লাহ! হ্যাঁ [তা সত্য]। তিনি বলিলেন, তোমরা কি জান যে, আমি আমার মূল সম্পত্তি দিয়ে জাইশে উসরাত [তাবুকের যুদ্ধের সৈন্যদের] যুদ্ধ সরঞ্জামাদির ব্যবস্থা করেছি? লোকেরা বলিল, হে আল্লাহ সাক্ষী, হ্যাঁ, সত্য। তারপর তিনি বলিলেন, আমি তোমাদেরকে আল্লাহ ও দ্বীন ইসলামের শপথ দিয়ে প্রশ্ন করছি, তোমরা কি জান যে, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] মক্কার সাবীর পর্বতের উপর ছিলেন এবং তাহাঁর সাথে ছিলেন আবু বাক্র, উমার ও আমি? পর্বত [আনন্দে] কম্পিত হয়, ফলে তা হইতে পাথরও খসে নীচে পড়ে যায়। রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] পাহাড়কে পদাঘাত করে বললেনঃ হে সাবীর! শান্ত ও স্থির হয়ে যাও। কেননা তোমার উপর একজন নাবী, একজন সিদ্দীক্ব [পরম সত্যবাদী] ও দুজন শহীদ অবস্থানরত রয়েছেন। লোকেরা বলিল, হে আল্লাহ! হ্যাঁ, সত্য। বর্ণনাকারী বলেন, উসমান [রাদি.] তাকবীর ধ্বনি দিয়ে বলিলেন, কাবার প্রভুর ক্বসম! তোমরা আমার পক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছ। আমি নিশ্চিত শহীদ। তিনি এ কথাটি তিনবার বলেন।

হাসানঃ ইরওয়াহ্‌ [১৫৯৪]।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। উসমান [রাদি.] হইতে এ হাদীস অন্যসূত্রেও বর্ণিত হয়েছে।এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস

৩৭০৪. আবুল আশআস আস্-সানআনী [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, {উসমান [রাদি.] শহীদ হলে} সিরিয়ায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বক্তা [ঐ বিষয়ে] বক্তব্য রাখেন। তাহাদের মাঝে রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] এর কিছু সাহাবীও ছিলেন। তাহাদের মাঝে হইতে সর্বশেষে মুর্রাহ্ ইবনি কাব [রাদি.] বক্তৃতা দিতে দাঁড়ান। তিনি বলিলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] কর্তৃক একটি হাদীস না শুনে থাকলে আমি বক্তৃতা দিতে দাঁড়াতাম না। রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] ঝগড়া-বিবাদের কথা উল্লেখ করেন এবং শীঘ্রই তা সংঘটিত হইবে বলে ইংগিত করেন। বর্ণনাকারী বলেন, সে সময়ে এক ব্যক্তি কাপড় দিয়ে মূখমণ্ডল আবৃত করে সেখান দিয়ে অতিক্রম করলে রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] [তাকে ইঙ্গিত করে] বললেনঃ এ লোকটি ঐ সময় সৎপথে দণ্ডায়মান থাকিবে। বর্ণনাকারী বলেন, আমি উঠে তার নিকটে গিয়ে দেখি, তিনি উসমান ইবনি আফফান [রাদি.]। তারপর আমি তাকে সহ রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর নিকটে এসে প্রশ্ন করলাম, ইনিই কি সেই [সৎপথপ্রাপ্ত] লোক? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ।

সহীহঃ ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১১১]।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। এ অনুচ্ছেদে ইবনি উমার, আবদুল্লাহ ইবনি হাওয়ালাহ্ ও কাব ইবনি উজরাহ্ [রাদি.] হইতেও হাদীসটি বর্ণিত আছে।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৭০৫. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেনঃ হে উসমান! আল্লাহ তাআলা হয়ত তোমাকে একটি জামা পরিধান করাবেন [খিলাফত দান করবেন]। তোমার হইতে লোকেরা তা খুলে নিতে চাইলে তুমি তাহাদের দাবিতে তা ত্যাগ করিবে না।

সহীহঃ ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১১২]। এ হাদীসে দীর্ঘ ঘটনা আছে।আবু ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান গারীব।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৭০৬. উসমান ইবনি আবদুল্লাহ ইবনি মাওহিব [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ

এক মিসরবাসী বাইতুল্লাহ্‌র হাজ্জ আদায় করে। সে একদল লোককে বসা দেখে বলে, এরা কারা? লোকেরা বলিল, এরা কুরাইশ বংশীয়। সে পুনরায় বলে, এই বয়স্ক [শায়খ] লোকটি কে? লোকেরা বলিল, ইবনি উমার [রাদি.]। সে সময় সে তার নিকটে এসে বলিল, আপনাকে আমি কয়েকটি বিষয়ে প্রশ্ন করব। অতএব আপনি আমাকে [তা] বলুন। আমি এ বাইতুল্লাহ্‌র মর্যাদার শপথ দিয়ে আপনাকে প্রশ্ন করছি, আপনি কি অবহিত আছেন যে, উসমান [রাদি.] উহূদ যুদ্ধের দিন [যুদ্ধক্ষেত্র হইতে] পলায়ন করিয়াছেন? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। সে আবার বলিল, আপনি কি জানেন, তিনি [হুদাইবিয়ায় অনুষ্ঠিত] বাইআতুর রিযওয়ানে অনুপস্থিত ছিলেন? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। সে পুনরায়ও বলিল, আপনি কি অবহিত আছেন যে, তিনি বদ্‌রের যুদ্ধে অনুপস্থিত ছিলেন এবং তাতে উপস্থিত হননি? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। সে বলিল, আল্লাহু আকবার। তারপর ইবনি উমার [রাদি.] তাকে বলিলেন, এবার এসো! যেসব বিষয়ে তুমি প্রশ্ন করেছ তা তোমাকে আমি সুস্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দেই। উহূদের দিন তার পলায়নের ঘটনা প্রসঙ্গে আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তার ঐ ব্যাপারটি ইতোমধ্যেই আল্লাহ তাআলা ক্ষমা করে দিয়েছেন, সম্পূর্ণভাবে মাফ করিয়াছেন। তারপর বাদ্‌রের যুদ্ধে তার অনুপস্থিতির কারণ এই যে, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর মেয়ে [রুকাইয়াহ্‌] তার সহধর্মিণী ছিলেন [এবং সে সময় তিনি মারাত্নক অসুস্থ ছিলেন]। রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] তাঁকে বললেনঃ যে লোক বদ্‌রের যুদ্ধে যোগদান করেছে তার সমপরিমাণ সাওয়াব ও গানীমাত তুমি পাবে। আর তিনি রুকাইয়ার দেখাশুনা করার জন্য তাকে মাদীনাতে থাকারই নির্দেশ দিলেন। আর বাইআতে রিদওয়ানে তার অনুপস্থিতির কারণ এই যে, মাক্কাবাসীদের কাছে উসমান [রাদি.]-এর চাইতে বেশি মর্যাদাবান কোন মুসলিম লোক [হুদাইবিয়ায়] উপস্থিত থাকলে রাসুলূল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] [তার পরিবর্তে] তাকেই প্রেরণ করিতেন। তা না থাকাতে রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] উসমান [রাদি.]-কেই [মাক্কায়] প্রেরণ করিলেন। আর উসমান [রাদি.]-এর মক্কার অভিমূখে রওয়ানা হয়ে যাওয়ার পর বাইআতুর রিযওয়ান অনুষ্ঠিত হয়। বর্ণনাকারী বলেন, [বাইআত অনুষ্ঠানকালে] রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] তাহাঁর ডান হাতের দিকে ইশারা করে বললেনঃ এটা উসমানের হাত। তারপর তিনি ঐ হাতটি তাহাঁর অন্য হাতের উপর স্থাপন করে বললেনঃ এটি উসমানের [বাইআত]। তারপর ইবনি উমার [রাদি.] লোকটিকে বলিলেন, এবার তুমি এ ব্যাখ্যা সঙ্গে নিয়ে যাও।

সহীহঃ বুখারী [৯৬৯৮]।আবু ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৭০৭. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর জীবদ্দশাতেই আমরা আবু বাক্‌র, উমার ও উসমান [রাদি.]-কে গণ্যমান্য লোক বলতাম।

সহীহঃ মিশকাত [৬০৭৬], বুখারী [৩৬৯৭] ।আবু ঈসা বলেন, উপর্যুক্ত সনদে এ হাদীসটি হাসান সহীহ গরীব। এ হাদীস উবাইদুল্লাহ ইবনি উমারের বর্ণনার পরিপ্রেক্ষিতে গরীব গণ্য হয়েছে। উক্ত হাদীস ইবনি উমার [রাদি.] হইতে অন্যসূত্রেও বর্ণিত আছে।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৭০৮. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] একটি ঝগড়ার কথা উল্লেখ করে বলেনঃ সে অর্থাৎ উসমান ইবনি আফ্‌ফান সেই ঝগড়ায় অন্যায়ভাবে নিহত হইবে।

আবু ঈসা বলেন, উক্ত সনদসূত্রে ইবনি উমার [রাদি.]-এর এ হাদীসটি হাসান গারীব।এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস

৩৭০৯. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেনঃ এক লোকের মরদেহ তার জানাযার নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের] নিকটে আনা হয়। কিন্তু তিনি তার জানাযার নামাজ আদায় করিলেন না। তাঁকে বলা হল, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আমরা এই লোকের পূর্বে আপনাকে আর কারো জানাযা আদায় করা হইতে বিরত থাকতে দেখিনি। তিনি বললেনঃ এ লোকটি উসমানের প্রতি হিংসা পোষণ করত, তাই আল্লাহ তাআলা তার প্রতি নারাজ হয়েছেন।

মাওযূ, যঈফা [১৯৬৭]আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধু উপরোক্ত সূত্রেই এ হাদীস জেনেছি। এই মুহাম্মাদ ইবনি যিয়াদ হলেন মায়মূন ইবনি মিহরানের শিষ্য এবং তিনি হাদীস শাস্ত্রে অত্যাধিক দুর্বল। আর মুহাম্মাদ ইবনি যিয়াদ, যিনি আবু হুরাইরা [রাদি.]-এর শিষ্য, বসরার অধিবাসী, নির্ভরযোগ্য রাবী এবং তার উপনাম আবুল হারিস। আর মুহাম্মাদ ইবনি যিয়াদ আল-আলহানী হলেন আবু উমামা [রাদি.]-এর শিষ্য, তিনিও নির্ভরযোগ্য রাবী। তিনি সিরিয়ার বাসিন্দা এবং তার আরেক নাম আবু সুফিয়ান।এই হাদীসটির তাহকিকঃ জাল হাদীস

৩৭১০. আবু মূসা আল-আশআরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর সঙ্গে রওয়ানা হলাম। তিনি এক আনসারীর বাগিচায় ঢুকে তাহাঁর প্রাকৃতিক প্রয়োজন সাড়েন, তারপর আমাকে বললেনঃ হে আবু মূসা! দরজায় যাও, যাতে বিনা অনুমতিতে কেউ আমার নিকট প্রবেশ করিতে না পারে। এক লোক এসে দরজায় আঘাত করলে আমি বললাম, আপনি কে? তিনি বলিলেন, আমি আবু বাক্‌র। সে সময় আমি গিয়ে বললাম, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! এই যে আবু বাক্‌র অনুমতিপ্রার্থী। তিনি বললেনঃ তাকে অনুমতি দাও এবং তাকে জান্নাতের সুখবর দাও। অতএব তিনি প্রবেশ করিলেন এবং আমি তাকে জান্নাতের সুখবর জানালাম। তারপর এক লোক এসে দরজায় আঘাত করলে আমি বললাম, আপনি কে? তিনি বলেন, উমার। আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! এই যে উমার আপনার অনুমতি চায়। তিনি বললেনঃ তাকে দরজা খুলে দাও এবং তাকেও জান্নাতের সুসংবাদ দাও। অতএব আমি দরজা খুলে দিলে তিনি প্রবেশ করেন এবং তাকেও আমি জান্নাতের সুসংবাদ দিলাম। তারপর আরেক লোক এসে দরজায় আঘাত করলে আমি বললাম, আপনি কে? তিনি বলিলেন, উসমান। আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! এই যে উসমান অনুমতিপ্রার্থী। তিনি বললেনঃ তাকে দরজা খুলে দাও এবং তার উপর কঠিন বিপদ আসবে এ কথা বলে তাকেও জান্নাতের সুসংবাদ জানাও।

সহীহঃ সহীহ আদাবুল মুফরাদ, বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। এ হাদীস আবু উসমান আন-নাহ্‌দী হইতে একাধিক সনদে বর্ণিত হয়েছে। এ অনুচ্ছেদে জাবির ও ইবনি উমার [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৭১১. আবু সাহ্‌লাহ্‌ [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ

উসমান [রাদি.] নিজগৃহে অবরুদ্ধ থাকাকালে বলিলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আমাকে একটি ওয়াদা [উপদেশ] দিয়েছেন। সুতরাং আমি তাতে ধৈর্য ধারণ করব।

সহীহঃ ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১১৩]।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব। এ হাদীস আমরা শুধুমাত্র ইসমাঈল ইবনি আবু খালিদের সনদে অবগত হয়েছি।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২০. অনুচ্ছেদঃ আলী ইবনি আবী ত্বালিব [রাদি.]-এর মর্যাদা।

৩৭১২. ইমরান ইবনি হুসাইন [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] এক সামরিক বাহিনী পাঠানোর সময় আলী ইবনি আবী ত্বালিব [রাদি.]-কে তাহাদের সেনাপতি নিযুক্ত করেন। তিনি সেনাদলের একটি খণ্ডাংশের [সারিয়্যা] পরিদর্শনে যান এবং এক যুদ্ধবন্দিনীর সঙ্গে মিলিত হন। কিন্তু তার সাথীরা তার এ কাজ পছন্দ করিলেন না। অতএব রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর চারজন সাহাবী শপথ করে বলিলেন, যখন আমরা রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর দেখা পাব, তাঁকে তখন আলীর কার্যকলাপ প্রসঙ্গে জানাব। মুসলিমদের নিয়ম ছিল যে, তারা কোন সফর বা অভিযান শেষে ফিরে এসে সর্বপ্রথম রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁকে সালাম করিতেন, তারপর নিজ নিজ গৃহে ফিরে যেতেন। সুতরাং উক্ত সেনাদল ফিরে এসে রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে সালাম জানায় এবং চার সাহাবীর একজন দাঁড়িয়ে বলেন, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! লক্ষ্য করুন, আলী ইবনি আবী ত্বালিব এই এই করিয়াছেন। রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] তার দিক হইতে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। তারপর দ্বিতীয় ব্যক্তি দাঁড়িয়ে পূর্বোক্ত ব্যক্তির মতো বক্তব্য পেশ করেন এবং রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] তার হইতেও মুখ ফিরিয়ে নিলেন। এবার তৃতীয়জন দাঁড়িয়ে পূর্বোক্তজনের একই রকম বক্তব্য পেশ করেন এবং রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] তার হইতেও মুখ ফিরিয়ে নেন। অবশেষে চতুৰ্থজন দাঁড়িয়ে পূর্বোক্তদের একই রকম বক্তব্য পেশ করেন। এবার রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] তার চেহারায় অসন্তুষ্টির ভাব নিয়ে তাহাদের দিকে মনোনিবেশ করে বললেনঃ আলী প্রসঙ্গে তোমরা কি বলিতে চাও? তোমরা আলী প্রসঙ্গে কি বলিতে চাও? আলী প্রসঙ্গে কি বলিতে চাও? [বংশ, বৈবাহিক সম্পর্ক, অগ্রগণ্যতা, ভালবাসা ইত্যাদি প্রসঙ্গে] আলী আমার হইতে এবং আমি আলী [রাদি.] হইতে। আমার পরে সে-ই হইবে সমস্ত মুমিনের সঙ্গী ও পৃষ্ঠপোষক।

আবু ঈসা বলেন এহাদীসটি হাসান গারীব। এ হাদীস আমরা শুধুমাত্র জাফার ইবনি সুলাইমানের সনদে অবগত হয়েছি।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৭১৩. আবু সারীহাহ্‌ অথবা যাইদ ইবনি আরক্বাম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ আমি যার সাখী বা পৃষ্ঠপোষক, আলীও তার সাখী বা পৃষ্ঠপোষক।

সহীহঃ সহীহাহ্‌ [১৭৫০], রাওযুন্‌ নায়ীর [১৭১], মিশকাত [৬০৮২]।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। এ হাদীস শুবাহ্‌ আবু আবদুল্লাহ মাইমূন হইতে, তিনি যাইদ ইবনি আরক্বাম [রাদি.] হইতে, তিনি নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] হইতে একই রকম রিওয়ায়াত করিয়াছেন। আবু সারীহাহ্‌ হলেন রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর সাহাবী হুযাইফাহ্‌ ইবনি আসীদ আল-গিফারী [রাদি.]।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৭১৪. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলা আবু বাকরের মঙ্গল করুন। তিনি তার মেয়েকে আমার সাথে বিয়ে দিয়েছেন, আমাকে দারুল হিজরাতে [মাদীনাতে] নিয়ে এসেছেন এবং নিজের মাল দিয়ে বিলালকে গোলাম হইতে আযাদ করিয়াছেন। আল্লাহ তাআলা উমারকে দয়া করুন। অপ্রিয় হলেও তিনি হাক [সত্য] কথা বলেন। তার সত্য ভাষণই তাকে সঙ্গহীন করিয়াছেন। আল্লাহ তাআলা উসমানের প্রতি দয়া করুন। সে এত অধিক লাজুক যে, ফেরেশতারা পর্যন্ত তাকে দেখে লজ্জাবোধ [সম্মান] করেন। আল্লাহ তাআলা আলীকে দয়া করুন। হে আল্লাহ! সে যেখানেই থাকুক, সত্যকে তার চিরসাথী করুন।

অত্যন্ত দুর্বল, যঈফা [২০৯৪], মিশকাত [৬১২৫]আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধু উপরোক্ত সূত্রেই এ হাদীস জেনেছি। মুখতার ইবনি নাফি বাসরার শাইখ, অনেক অপরিচিত বিষয় তিনি বর্ণনা করেন, আবু হাইয়্যান আত্-তাইমীর নাম ইয়াহইয়া ইবনি সাঈদ কূফার অধিবাসী নির্ভরযোগ্য রাবী।এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস

৩৭১৫. রিবঈ ইবনি হিরাশ [রাহঃ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেনঃ আলী [রাদি.] কূফার মুক্তাঙ্গনে [আর-রাহবায়] আমাদের নিকট বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি বলেনঃ হুদাইবিয়ার দিন মুশরিকদের কজন লোক আমাদের নিকটে আসে। তাহাদের মধ্যে সুহাইল ইবনি আমরসহ আরো কজন গণ্যমান্য মুশরিক ছিল। তারা বলিল, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আমাদের সন্তান-সন্তুতি, ভাই ও ক্রীতদাসসহ কিছু সংখ্যক লোক আপনার নিকট এসে পরেছে। ধর্ম সম্পর্কে তারা মূর্খ এবং তারা আমাদের ভূসম্পত্তি ও ক্ষেত- খামার হইতে পালিয়ে এসেছে। অতএব আপনি তাহাদেরকে আমাদের নিকট ফিরিয়ে দিন। যদিও তাহাদের ধর্মের বিষয়ে তেমন জ্ঞান নেই, তাই আমরা তাহাদেরকে বুঝাব। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেলেনঃ হে কুরাইশের লোকেরা! তোমরা এরকম কর্মকাণ্ড হইতে বিরত হও। অন্যথায় আল্লাহ তাআলা তোমাদের বিরদ্ধে এমন লোকদের পাঠাবেন, যারা তোমাদের ঘাড়ে দ্বীনের তরবারি দিয়ে আঘাত করিবে। আল্লাহ তাআলা তাহাদের অন্তরগুলোকে ঈমানের ব্যপারে পরীক্ষা করে নিয়েছেন। তখন মুসলমানরা প্রশ্ন করেন, হে আল্লাহ্‌র রাসূ্ল! কে সেই ব্যক্তি? আবু বাকর [রাদি.]-ও বলেন, ইয়া রাসূ্লুল্লাহ! কে সেই ব্যক্তি? উমার [রাদি.]- ও বলেন,হে আল্লাহ্‌র রাসূ্ল! কে সেই লোক? তিনি বললেনঃ সে একজন জুতা সেলাইকারী! রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আলী [রাদি.]-কে তাহাঁর জুতাটা সেলাই করিতে দিয়েছিলেন। রাবী বলেনঃ আলী [রাদি.] আমাদের দিকে তাকালেন এবং বলিলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি নিজ ইচ্ছায় আমার প্রতি মিথ্যারোপ করিল, সে যেন জাহান্নামে তার থাকার জায়গা নির্ধারণ করিল।

তবে হাদীসের শেষাংশ সহীহ মুতাওয়াতির, দেখুন হাদীস নং [২৬৪৫] আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব। আমরা শুধু আলী [রাদি.]-এর রিওয়ায়াত হিসেবে উপরোক্ত সূত্রেই এ হাদীস জেনেছি। তিরমিযী জারুদ হইতে ওয়াকীর সূত্রে বলেনঃ রিবঈ ইবনি হিরাশ ইসলামের মধ্যে কোন মিথ্যা কথা বলেননি। মুহাম্মাদ ইবনি ইসমাঈল আবদুল্লাহ ইবনি আবীল আসওয়াদ হইতে, তিনি আব্দুর রহমান ইবনি মাহদী হইতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেনঃ মানসূর ইবনিল মুতামির কূফাবাসীদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা বিশ্বস্ত রাবী।এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস

২১. অনুচ্ছেদঃ মুনাফিক্বরা আলী [রাদি.]-এর প্রতি বিদ্বেষী

৩৭১৬. আল-বারাআ ইবনি আযিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আলী [রাদি.]-কে বললেনঃ তুমি আমা হইতে, আর আমিও তোমা হইতে। অর্থাৎ আমরা পরস্পরে অভিন্ন পরিবারের অন্তর্ভুক্ত।

সহীহঃ সহীহাহ্‌ [৩/১৭৮], সহীহ আল-জামি [১৪৮৫]। এ হাদীসে একটি ঘটনা আছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৭১৭. আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা আনসার সম্প্রদায় মুনাফিকদের নিশ্চয়ই চিনি। তারা আলী [রাদি.]-এর প্রতি হিংসা পোষণকারী।

আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধুমাত্র আবু হারুনের সূত্রেই হাদীসটি জানতে পেরেছি। শুবা [রাহঃ] আবু হারূন আল-আবদীর সমালোচনা করিয়াছেন। এ হাদীস আমাশ হইতে, তিনি আবু সালিহ হইতে, তিনি আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে এ সুত্রেও বর্ণিত হয়েছে।

আল মুসাবির আল-হিমইয়ারী তার মা এর নিকট থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেনঃ আমি উম্মু সালামাহ-এর নিকট গিয়ে তাঁকে বলিতে শুনলাম, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিতেনঃ একমাত্র মুনাফিকরাই আলী [রাদি.]- কে ভালবাসে না। আর মুমিনগণ তার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে না।যঈফ,মিশকাত [৬০৯১], এ অনুচ্ছেদে আলী [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত হয়েছে। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি এই সূত্রে হাসান গারীব। আবদুল্লাহ ইবনি আব্দুর রহমান হইতে সুফিয়ান সাওরী হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।এই হাদীসটির তাহকিকঃ খুবই দুর্বল

৩৭১৮. আবদুল্লাহ ইবনি বুরাইদা [রাহঃ] হইতে তার পিতা হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ চার ব্যক্তিকে ভালোবাসাতে আল্লাহ তাআলা আমাকে হুকুম করিয়াছেন এবং তিনি আমাকে এও জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনিও তাহাদের ভালোবাসেন। বলা হল, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদেরকে তাহাদের নামগুলো বলুন। তিনি বললেনঃ আলীও তাহাদের একজন। এ কথা তিনি তিনবার বলিলেন। [অবশিষ্ট তিনজন হলেন] আবু যার, মিকদাদ ও সালমান [রাদি.]। তাহাদেরকে ভালোবাসাতে তিনি আমাকে আদেশ করিয়াছেন এবং তিনি আমাকে এও জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনিও তাহাদেরকে ভালোবাসেন।

যঈফ, ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১৪৯]আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। আমরা শুধু শারীকের রিওয়ায়াত হিসেবেই এ হাদীস জেনেছি।এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস

৩৭১৯. হুবশী ইবনি জুনাদাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেনঃ আলী আমার হইতে এবং আমি আলী হইতে। আমার কোন কাজ থাকলে আমি নিজেই সম্পন্ন করি অথবা আমার পক্ষ হইতে তা আলীই সম্পন্ন করে।

হাসানঃ ইবনি মাজাহ্‌ [১১৯]।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব।এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস

৩৭২০. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর সাহাবীদের মধ্যে ভায়ের সম্পর্ক সৃষ্টি করিলেন। তারপর আলী [রাদি.] কান্না ভেজা চোখে এসে বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি আপনার সাহাবীদের ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করিয়াছেন, অথচ আমাকে কারো সাথে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করেননি। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে বললেনঃ দুনিয়া ও পরকালে তুমি আমারই ভাই।

যঈফ, মিশকাত[৬০৮৪]আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। এ অনুচ্ছেদে যাইদ ইবনি আবু আওফা [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে।এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস

৩৭২১. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের] নিকট পাখির ভুনা গোশত হাযির ছিল। তিনি বলেনঃ ইয়া আল্লাহ! তোমার সৃষ্টির মধ্যে তোমার নিকট সবচাইতে প্রিয় ব্যক্তিকে আমার সাথে এই পাখির গোশত খাওয়ার জন্য হাযির করে দাও। ইত্যবসরে আলী [রাদি.] এসে হাযির হন এবং তাহাঁর সাথে খাবার খান।

যঈফ, মিশকাত [৬০৮৫]আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। আমরা শুধু উপরোক্ত সূত্রে আস-সুদ্দীর রিওয়ায়াত হইতে এ হাদীস জেনেছি। এ হাদীস অন্যভাবেও আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণিত হয়েছে। আস-সুদ্দীর নাম ইসমাঈল ইবনি আবদুর রহমান। তিনি আনাস ইবনি মালিক [রাদি.]-এর দেখা পেয়েছেন এবং হুসাইন ইবনি আলী [রাদি.]-কে দেখেছেন। শুবা, সুফিয়ান সাওরী, যাইদাহ্ ইয়াহ্ইয়া ইবনি সাঈদ আলকাত্তান প্রমুখ তাকে নির্ভরযোগ্য বলেছেন।এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস

৩৭২২. আবদুল্লাহ ইবনি আমর ইবনি হিন্দ আল-জামালী [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আলী [রাদি.] বলেছেনঃ আমি যখনই রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট কিছু চেয়েছি তখনই তিনি আমাকে দিয়েছেন এবং যখন নিশ্চুপ থেকেছি তখনও আমাকেই প্রথম দিয়েছেন।

যঈফ, মিশকাত [৬০৮৬]আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান এবং আলোচ্য সূত্রে গারীব।এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস

৩৭২৩. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমি [জ্ঞানের ভান্ডার] পাঠশালা এবং আলী তার দরজা।

যঈফ, মিশকাত [৬০৮৭]আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব মুনকার। কিছু রাবী এ হাদীস শারীক হইতে বর্ণনা করিয়াছেন এবং তারা এর সনদে আস-সুনবিহী হইতে উল্লেখ করেননি। অনন্তর আমরা উক্ত হাদীস শারীক হইতে কোন নির্ভরযোগ্য রারীর সূত্রে জানতে পারিনি। এ অনুচ্ছেদে ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত হয়েছে।এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস

৩৭২৪. আমির ইবনি সাদ ইবনি আবী ওয়াক্কাস [রঃ] হইতে তার পিতা হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, মুআবিয়াহ্‌ ইবনি আবী সুফ্‌ইয়ান [রাদি.] সাদ [রাদি.]-কে আমীর নিযুক্ত করে বলিলেন, আবু তুরাবকে গালি দিতে তোমায় বাধা দিল কিসে? সাদ [রাদি.] বলিলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তিনটি কথা মনে রাখব, যা রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেন, সে সময় পর্যন্ত আমি তাকে গালমন্দ করব না। ঐগুলোর একটি কথাও আমার নিকটে লাল রংয়ের উট লাভের তুলনায় বেশি প্রিয়। [এক] রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে আমি আলী [রাদি.]-এর লক্ষ্যে একটি কথা বলিতে শুনিয়াছি, যে সময় তিনি তাকে মাদীনায় তাহাঁর জায়গায় নিয়োগ করে কোন এক যুদ্ধাভিযানে যান। সে সময় আলী [রাদি.] তাকে বলিলেন, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আপনি আমাকে শিশু ও নারীদের সঙ্গে কি রেখে যাচ্ছেন? রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] তাকে বললেনঃ হে আলী! তুমি কি এতে খুশি নও যে, তোমার মর্যাদা আমার নিকট মূসা [আঃ]-এর নিকট হারূন [আঃ]-এর মতই? কিন্তু [পার্থক্য এই যে,] আমার পরবর্তীতে কোন নাবী নেই। [দুই] আমি খাইবারের [যুদ্ধাভিযানের] দিন রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে বলিতে শুনেছিঃ এমন এক লোকের হাতে আমি [যুদ্ধের] পতাকা অর্পণ করব যে আল্লাহ তাআলা ও তাহাঁর রাসূলকে ভালবাসে এবং আল্লাহ তাআলা ও তাহাঁর রাসূলও তাকে মুহাব্বাত করেন। বর্ণনাকারী বলেন, প্রত্যেকে তা লাভের আশায় অপেক্ষা করিতে থাকলাম। তিনি বললেনঃ তোমরা আলীকে আমার নিকটে ডেকে আন। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি তাহাঁর কাছে এসে হাযির হন, তখন তার চোখ উঠেছিল। রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] তার দুই চোখে স্বীয় মুখ নিঃসৃত লালা লাগিয়ে দেন এবং তার হাতে পতাকা অর্পণ করেন। আল্লাহ তাআলা তাকে বিজয়ী করিলেন। [তিন] এ আয়াত যখন অবতীর্ণ হল [অনুবাদ]ঃ আমরা আহ্‌বান করি আমাদের পুত্রদেরকে ও তোমাদের পুত্রদেরকে, আমাদের নারীদেরকে ও তোমাদের নারীদেরকে…..”— [সূরা আ-লি ইমরান ৬১]। সে সময় রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আলী, ফাতিমাহ্‌, হাসান ও হুসাইন [রাদি.]-কে ডাকেন [এবং তাহাদেরকে নিয়ে খোলা ময়দানে গিয়ে] বললেনঃ হে আল্লাহ! এরা সকলে আমার পরিবার-পরিজন।

সহীহঃ মুসলিম [হাঃ ৭/১২০]।আবু ঈসা বলেন, উপর্যুক্ত সনদে এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৭২৫. আল-বারাআ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] দুটি সামরিক বাহিনী প্রেরণ করিলেন এবং একদলের সেনাপতি বানালেন আলী [রাদি.]-কে এবং অপর দলের অধিনায়ক বানালেন খালিদ ইবনিল ওয়ালিদ [রাদি.]-কে। তিনি আরো বলেনঃ যখন যুদ্ধ শুরু হইবে তখন আলী হইবে [সমগ্র বাহিনীর] প্রধান সেনাপতি। রাবী বলেন, আলী [রাদি.] একটি দুর্গ জয় করেন এবং সেখান হইতে একটি যুদ্ধবন্দিনী নিয়ে নেন। এ প্রসঙ্গে খালিদ [রাদি.] এক চিঠি লিখে আমার মাধ্যমে তা [রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের] নিকট পাঠান যাতে তিনি আলী [রাদি.]-এর দোষ চর্চা করেন। রাবী বলেন, আমি চিঠি নিয়ে রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের] নিকট হাযির হলাম। তিনি চিঠি পড়ার পর তাহাঁর [মুখমন্ডলের] রং বিবর্ণ হয়ে গেল। তারপর তিনি বললেনঃ তুমি এমন লোক প্রসঙ্গে কি ভাবো যে আল্লাহ তাআলা ও তাহাঁর রাসূলকে ভালোবাসে এবং আল্লাহ তাআলা ও তাহাঁর রাসূলও যাকে ভালোবাসেন? রাবী বলেন, তখন আমি বললাম, আমি আল্লাহ্ তাআলার অসন্তোষ ও তাহাঁর রাসূলের অসন্তোষ হইতে আল্লাহ তাআলার আশ্রয় চাই। আমি একজন বার্তাবাহক মাত্র। [এ কথায়] তিনি নীরব হন।

সনদ দূর্বল, ১৬৮৭ নং হাদীসে পূর্বেও বর্ণিত হয়েছে।আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীস হাসান গারীব। আমরা শুধু উপরোক্ত সূত্রেই এ হাদীস জেনেছি।এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস

৩৭২৬. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেনঃ তাইফ অভিযানের দিন রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আলী [রাদি.]-কে নিকটে ডেকে তার সাথে চুপিচুপি কথাবার্তা বলিলেন। জনসাধারন বলিল, তিনি তাহাঁর চাচাত ভাইয়ের সাথে দীর্ঘক্ষন চুপিসারে কথাবার্তা বলিলেন। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ আমি তার সাথে চুপিসারে কথা বলিনি, বরং আল্লাহ্ তাআলাই তার সাথে চুপিসারে কথা বলেছেন।

যঈফ,মিশকাত [৬০৮৮], যঈফ [৩০৮৪],আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীস হাসান গারীব। আমরা শুধু আল-আজলাহ-এর রিওয়ায়াত হিসেবে এ হাদীস জেনেছি। ইবনিল ফুযাইল ব্যতীত অন্য রাবীও আল-আজলাহ হইতে এ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। “আল্লাহ্ তাআলাই চুপিসারে তার সাথে কথা বলেছেন” বাক্যের মর্মার্থ এই যে, তার সাথে চুপিসারে কথা বলার জন্য আল্লাহ্ তাআলাই আমাকে হুকুম করিয়াছেন।এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস

৩৭২৭. আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আলী [রাদি.]-কে বললেনঃ হে আলী! তুমি ও আমি ছাড়া আর কারো জন্য এ মাসজিদে নাপাক হওয়া বৈধ নয়।

যঈফ, মিশকাত [৬০৮৯] যঈফা [৪৯৭৩], আলী ইবনিল মুনযির বলেন, আমি যিরার ইবনি সুরাদকে প্রশ্ন করলাম, এ হাদীসের মর্মার্থ কি? তিনি বলেন, তুমি ও আমি ছাড়া নাপাক অবস্থায় এ মসজিদের মধ্য দিয়ে হাটাচলা করা অন্য কারো জন্য জায়িজ নয়।আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। আমরা শুধু আলোচিত সূত্রেই এ হাদীস জেনেছি। মুহাম্মাদ ইবনি ইসমাঈল [ঈমাম বুখারী] এ হাদীস আমার নিকট শুনেছেন এবং তিনি এটিকে গারীব বলে মত দিয়েছেন।এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস

৩৭২৮. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] নাবূওয়াত পেয়েছেন সোমবার এবং আলী [রাদি.] নামাজ আদায় করেন মঙ্গলবার।

আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। আমরা শুধু মুসলিম আল-আওয়ারের সূত্রেই এ হাদীস প্রসঙ্গে জেনেছি। আর মুসলিম আল-আওয়ার হাদীসবিশেষজ্ঞদের মতে তেমন মজবুত রাবী নন। উক্ত হাদীস মুসলিম হইতে, তিনি হাব্বাহ হইতে, তিনি আলী [রাদি.] হইতে এ সূত্রেও একই রকম বর্ণিত হয়েছে।এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস

৩৭২৯. আবদুল্লাহ ইবনি আমর ইবনি হিন্দ আল-জামালী [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আলী [রাদি.] বলেছেনঃ আমি যখনই রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের] নিকট কিছু চেয়েছি তখনই তিনি আমাকে দিয়েছেন এবং যখন নিশ্চুপ থেকেছি তখনও আমাকেই প্রথম দিয়েছেন।

হাদীসটি ৩৭২২ নং হাদীসেও বর্ণনা করা হয়েছে।আবু ঈসা বলেনঃ উপরোক্ত সনদ সূত্রে হাদীসটি হাসান গারীব।এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৩৭৩০. জাবির ইবনি আবদিল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আলী [রাদি.]-কে বললেনঃ আমার নিকটে মর্যাদায় মুসা [আঃ]-এর নিকট হারূনের মর্যাদার মত। তবে আমার পরে কোন নাবী নেই।

পূর্বের হাদীসের সহায়তায় সহীহ।আবু ঈসা বলেন, উপর্যুক্ত সনদে এ হাদীসটি হাসান গারীব। এ অনুচ্ছেদে সাদ যাইদ ইবনি আরক্বাম, আবু হুরাইরাহ্‌ ও উম্মু সালমাহ্‌ [রাদি.] হইতে হাদীস বর্ণিত আছে।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৭৩১. সাদ ইবনি আবি ওয়াক্‌কাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আলী [রাদি.]-কে বললেনঃ আমার কাছে তুমি মর্যাদায় মুসা [আঃ]-এর ক্ষেত্রে হারুন স্থানীয়। তবে আমার পরে নাবী নেই।

সহীহঃ ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১২১], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। এ হাদীস সাদ [রাদি.]-এর সূত্রে রাসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] হইতে একাধিক সনদে বর্ণিত হয়েছে। এ হাদীসকে ইয়াহ্‌ইয়া ইবনি সাঈদ আল-আনসারীর বর্ণনার পরিপ্রেক্ষিতে গারীব বলা হয়েছে।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৭৩২. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] [মাসজিদে] আলী [রাদি.]-এর দ্বার ছাড়া সকল দ্বার বন্ধ করার হুকুম দিয়েছেন।

সহীহঃ যঈফাহ্‌ [৪৯৩২, ৪৯৫১] নং হাদীসের অধীনে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। এ হাদীস আমরা শুধুমাত্র শুবাহ্ হইতে উক্ত সনদে এভাবেই জানতে পেরেছি।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৭৩৩. আলী ইবনি আবু তালিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] হাসান ও হুসাইনের হাত ধরে বলেনঃ যে ব্যক্তি আমাকে ভালোবাসে এবং এ দুজন ও তাহাদের পিতা-মাতাকে ভালোবাসে, সে কিয়ামতের দিন আমার সাথে একই মর্যাদায় থাকিবে।

যইফ, যইফা [৩১২২], তাখরীজুল মুখতারাহ্ [৩৯২-৩৯৭],আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। আমরা জাফর ইবনি মুহাম্মাদ হইতে শুধুমাত্র এই সূত্রেই হাদীসটি জেনেছি।এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস

৩৭৩৪. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, [ইসলাম গ্রহণ করে] আলী [রাদি.]-ই সর্বপ্রথম নামাজ আদায় করেন।

সহীহঃ যঈফাহ্‌ [৪৯৩২] নং হাদীসের অধীনে, মুসলিম।আবু ঈসা বলেন, উপর্যুক্ত সনদে এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধুমাত্র শুবাহ্ হইতে, আবু বাল্‌জের সনদে বর্ণিত মুহাম্মাদ ইবনি হুমাইদের হাদীসের পরিপ্রেক্ষিতে এটি অবগত হয়েছি। আবু বাল্‌জের নাম ইয়াহ্‌ইয়া ইবনি সুলাইম। বিশেষজ্ঞ আলিমগণ এ বিষয়ে মতভেদ করিয়াছেন যে, কে প্রথম ইসলাম গ্রহণ করিয়াছেন? কিছু বিশেষজ্ঞ বলেন, আবু বাক্‌র সিদ্দীক্ব [রাদি.] সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করিয়াছেন। আর কিছু বিশেষজ্ঞ বলেন, আলী [রাদি.] সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করিয়াছেন। কিছু বিশেষজ্ঞ আলিম বলেন, বয়স্ক পুরুষদের মাঝে সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন আবু বাক্‌র আস সিদ্দীক্ব [রাদি.]। আলী [রাদি.] আট বছর বয়সে ইসলাম গ্রহণ করেন। আর মহিলাদের মাঝে সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন উম্মুল মুমিনীন খাদীজাহ্ [রাদি.]।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৭৩৫. যাইদ ইবনি আরক্বাম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, সর্বপ্রথম আলী [রাদি.] ইসলাম গ্রহণ করিয়াছেন। আম্‌র ইবনি মুর্‌রাহ্‌ বলেন, আমি এ কথাটি ইবরাহীম নাখঈর কাছে উল্লেখ করলে তিনি তা অস্বীকার করে বলেন, সর্বপ্রথম আবু বাক্‌র [রাদি.]-ই ইসলাম গ্রহণ করিয়াছেন।

সহীহঃ যঈফাহ্‌ [৪১৩৯] নং হাদীসের অধীনে, নাখাঈর বর্ণানাটি মাকতু।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। আবু হামযার নাম ত্বালহা ইবনি ইয়াযীদ।চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৭৩৬. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, উম্মী নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আমাকে এ ওসীয়াত করেন যে, মুমিনরাই তোমাকে ভালবাসবে এবং মুনাফিক্বরাই তোমার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করিবে। আদী ইবনি সাবিত [রাদি.] বলেন, নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] যে যুগের জন্য দুআ করিয়াছেন, আমি সে যুগেরই অন্তর্ভূক্ত।

সহীহঃ ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১১৪], মুসলিম।আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। চার খলিফার জীবনী – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৭৩৭. উম্মু আতিয়্যা [রা] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] একটি সেনা বাহিনী প্রেরণ করেন, তাহাদের সঙ্গে আলী [রাদি.]-ও ছিলেন। রাবী বলেন, আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে তাহাঁর দুই হাত উপরে তুলে বলিতে শুনলামঃ ইয়া আল্লাহ! আলীকে না দেখিয়ে আমাকে মৃত্যু দান করো না।

যঈফ, মিশকাত [৬০৯০], আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। আমরা শুধু আলোচ্য সুত্রেই এ হাদীস জেনেছি। এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস

Comments

Leave a Reply