ঈদের নামাজ এ তাকবীর , কিরাত, মহিলাদের ঈদের মাঠে যাওয়া
ঈদের নামাজ এ তাকবীর , কিরাত, মহিলাদের ঈদের মাঠে যাওয়া >> সুনান তিরমিজি শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন
অধ্যায়ঃ ৪, অনুচ্ছেদঃ (৩০-৩৮)=৯টি
৩০. অনুচ্ছেদঃ ঈদের দিন পায়ে হেঁটে চলাচল করা
৩১. অনুচ্ছেদঃ খুতবার পূর্বে দুই ঈদের নামাজ আদায় করিবে
৩২. অনুচ্ছেদঃ ঈদের নামাযে আযান ও ইক্বামাত নেই
৩৩. অনুচ্ছেদঃ দুই ঈদের নামাযের কিরাআত
৩৪. অনুচ্ছেদঃ দুই ঈদের নামাযের তাকবীর
৩৫. অনুচ্ছেদঃ দুই ঈদের নামাযের পূর্বে এবং পরে কোন নামাজ নেই
৩৬. অনুচ্ছেদঃ মহিলাদের ঈদের মাঠে যাওয়া
৩৭. অনুচ্ছেদঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক রাস্তা দিয়ে ঈদের মাঠে যেতেন এবং অন্য রাস্তা দিয়ে ফিরে আসতেন
৩৮. অনুচ্ছেদঃ ঈদুল ফিতরের দিন নামাজ আদায় করিতে যাওয়ার পূর্বে কিছু খাওয়া
৩০. অনুচ্ছেদঃ ঈদের দিন পায়ে হেঁটে চলাচল করা
৫৩০. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, ঈদের মাঠে পায়ে হেঁটে যাওয়া এবং যাওয়ার আগে কিছু খাওয়া সুন্নাতের অন্তর্ভুক্ত।
-হাসান। ইবনি মাজাহ- [১২৯৪-১২৯৭] আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান। বেশিরভাগ বিদ্বান এ হাদীস অনুসারে আমল করিয়াছেন। কোন অজুহাত না থাকলে যানবাহনে চড়ে না গিয়ে বরং ঈদের মাঠে হেঁটে যাওয়াকে তাঁরা মুস্তাহাব বলেছেন। ঈদুল ফিতরের দিন ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে কিছু খাওয়া মুস্তাহাব। এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস
৩১. অনুচ্ছেদঃ খুতবার পূর্বে দুই ঈদের নামাজ আদায় করিবে
৫৩১. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ], আবু বাকর ও উমার [রাদি.] খুতবা দেওয়ার পূর্বে দুই ঈদের নামাজ আদায় করিতেন, তারপর খুতবা দিতেন।
-সহী্হ। ইবনি মাজাহ- [১২৭৬], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এ অনুচ্ছেদে জাবির ও ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ ইবনি উমারের হদীসটি হাসান সহিহ। নাবী [সাঃআঃ]-এর সাহাবী ও অন্যরা এ হাদীস অনুযায়ী আমল করিয়াছেন। তাঁরা বলেছেন, খুতবা দেওয়ার আগে নামাজ আদায় করিতে হইবে। কথিত আছে মারওয়ান ইবনিল হাকামই সর্বপ্রথম নামাযের আগে খুতবা দিয়েছিলেন- মুসলিম। ঈদের নামাজ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩২. অনুচ্ছেদঃ ঈদের নামাযে আযান ও ইক্বামাত নেই
৫৩২. জাবির ইবনি সামুরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর সাথে দুই ঈদের নামাজ আযান এবং ইক্বামাত ব্যতীত একবার দুবার নয় একাধিকবার আদায় করেছি [আহমাদ, মুসলিম, আবু দাঊদ]।
-হাসান সহিহ। সহিহ আবু দাউদ- [১০৪২], মুসলিম। এ অনুচ্ছেদে জাবির ইবনি আবদুল্লাহ ও ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ জাবির ইবনি সামূরার হাদীসটি হাসান সহিহ। নাবী [সাঃআঃ]-এর বিশেষজ্ঞ সাহাবীগণ ও অন্যরা এ হাদীস অনুযায়ী দুই ঈদের নামাজ ও নফল নামাযের জন্য আযান দিতেন না। এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান সহীহ
৩৩. অনুচ্ছেদঃ দুই ঈদের নামাযের কিরাআত
৫৩৩. নুমান ইবনি বাশীর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] দুই ঈদের নামাযে এবং জুমুআর নামাযে “সাব্বিহিসমা রব্বিকাল আলা” এবং “হাল আতাকা হাদীসুল গাশিয়াহ্” সূরা দুটি পাঠ করিতেন। কখনো কখনো ঈদ এবং জুমুআর নামাজ একই দিনে হয়ে যেত। তিনি তখনও দুই নামাযে উল্লেখিত সূরা দুটিই পাঠ করিতেন।
সহিহ। ইবনি মাজাহ- [১১১৯], মুসলিম। এ অনুচ্ছেদে আবু ওয়াকিদ, সামুরা ইবনি জুনদুব ও ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ নুমান ইবনি বাশীরের হাদীসটি হাসান সহিহ। আরো কয়েকটি সূত্রে উল্লেখিত হাদীসের মতই বর্ণনা এসেছে। অপর একটি সূত্রে বর্ণিত আছে, নাবী [সাঃআঃ] দুই ঈদের নামাযে সূরা কাফ ও সূরা ইকতারাবাতিস সাআহ পাঠ করিতেন। ঈমাম সাফিঈ এই মতের সমর্থক। ঈদের নামাজ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩৪. উবাইদুল্লাহ ইবনি আবদুল্লাহ ইবনি উতবা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] আবু ওয়াকিদ লাইসী [রাদি.] -কে প্রশ্ন করিলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার নামাযে কোন্ কোন্ সূরা পাঠ করিতেন? তিনি বলিলেন, তিনি [রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]] কাফ ওয়াল কুরআনিল মাজীদ ও ইকতারাবাতিস সাআতু ওয়ান শাক্কাল কামার সূরা দুটি পাঠ করিতেন।
-সহিহ। ইবনি মাজাহ- [১২৮২], মুসলিম। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহিহ। ঈদের নামাজ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৪. অনুচ্ছেদঃ দুই ঈদের নামাযের তাকবীর
৫৩৬. কাসীর ইবনি আবদুল্লাহ [রঃ] হইতে পর্যায়ক্রমে তাহাঁর পিতা ও দাদা হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] উভয় ঈদের নামাযে প্রথম রাকআতে কিরাআত পাঠ করার আগে সাত তাকবীর এবং দ্বিতীয় রাকআতে কিরাআত পাঠ করার আগে পাঁচ তাকবীর বলেছেন।
-সহিহ। ইবনি মাজাহ- [১২৭৯]। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান। এ অনুচ্ছেদে আয়েশা, ইবনি উমার ও আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। এ অনুচ্ছেদে উল্লেখিত হাদীসটিই বেশি উত্তম। নাবী [সাঃআঃ]-এর একদল সাহাবা ও অন্যরা এ হাদীস আনুযায়ী আমল করিয়াছেন। আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতেও একই রকম বর্ণিত আছে। তিনি মাদীনাতে এভাবেই নামাজ আদায় করিয়াছেন। মাদীনাবাসীদের এটাই মত। ঈমাম মালিক, শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাক এই মত গ্রহণ করিয়াছেন। আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] ঈদের নামাযের তাকবীর প্রসঙ্গে বলেছেনঃ ঈদের নামাযে মোট নয়টি তাকবীর রয়েছে [মুসনাদে আবদুর রাযযাক]। প্রথম রাকআতে কিরাআতের পূর্বে পাঁচ তাকবীর। দ্বিতীয় রাকআতে কিরাতের পর রুকূর তাকবীরসহ মোট চার তাকবীর। নাবী [সাঃআঃ]-এর একাধিক সাহাবী হইতেও এরকমই বর্ণিত হয়েছে। কুফাবাসীদের এটাই মত। সুফিয়ান সাওরীও এরূপ মত দিয়েছেন। ঈদের নামাজ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৫. অনুচ্ছেদঃ দুই ঈদের নামাযের পূর্বে এবং পরে কোন নামাজ নেই
৫৩৭. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] ঈদুল ফিতরের দিন নামাজ আদায় করিতে বের হলেন। তিনি দুই রাকআত নামাজ আদায় করালেন এবং তার পূর্বেও তিনি কোন [নফল] নামাজ আদায় করেননি এবং পরেও আদায় করেননি।
-সহিহ। ইবনি মাজাহ- [১২৯১], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এ অনুচ্ছেদে আব্দুল্লাহ্ ইবনি উমার আবদুল্লাহ ইবনি আমর ও আবু সাঈদ [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ ইবনি আব্বাসের হাদীসটি হাসান সহিহ। নাবী [সাঃআঃ]-এর একদল সাহাবী ও তাবিঈ এ হাদীস অনুযায়ী আমল করিয়াছেন। ঈমাম শাফি, আহমাদ এবং ইসহাক এই মতের পক্ষে [ঈদের নামাযের আগে-পরে কোন নফল নামাজ নেই]। অপর একদল বিদ্বানের মতে, ঈদের নামাযের আগে বা পরে নফল নামাজ আদায় করা যায়। এ দুটি মতের মধ্যে প্রথমোক্ত মতই বেশি সহিহ। ঈদের নামাজ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩৮. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি এক ঈদের দিন নামাজ আদায় করিতে বের হলেন। তিনি এর পূর্বেও কোন [নফল] নামাজ আদায় করেননি এবং পরেও আদায় করেননি। তিনি বলিলেন, নাবী [সাঃআঃ] এমনটিই করিয়াছেন।
-হাসান সহিহ। ইরওয়া- [৩/৯৯]। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহিহ। এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান সহীহ
৩৬. অনুচ্ছেদঃ মহিলাদের ঈদের মাঠে যাওয়া
৫৩৯. উম্মু আতিয়্যা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার দিন কুমারী, তরুণী, প্রাপ্তবয়স্কা, পর্দানশিন এবং ঋতুবতী সব মহিলাদের [নামাযের জন্য] বের হওয়ার [ঈদের মাঠে যাওয়ার] হুকুম করিতেন। ঋতুবতী মহিলারা নামাযের জামাআত হইতে এক পাশে সরে থাকতো কিন্তু তারা মুসলমানদের দুআয় শারীক হত। এক মহিলা বলিলেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! যদি কোন নারীর নিকট [শরীর ঢাকার মত] চাদর না থাকে? তিনি বললেনঃ তার [মুসলিম] বোন তার অতিরিক্ত চাদর তাকে ধার দিবে।
-সহিহ। ইবনি মাজাহ- [১৩০৭, ১৩০৮], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। ঈদের নামাজ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৭. অনুচ্ছেদঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক রাস্তা দিয়ে ঈদের মাঠে যেতেন এবং অন্য রাস্তা দিয়ে ফিরে আসতেন
৫৪১. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] ঈদের দিন এক পথ দিয়ে যেতেন এবং অন্য পথ দিয়ে ফিরে আসতেন।
-সহিহ। ইবনি মাজাহ- [১৩০১]। অপর এক সনদসূত্রে এ হাদীসটি জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিত হয়েছে [বুখারী]। এ অনুচ্ছেদে আবদুল্লাহ ইবনি উমার ও আবু রাফি [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। কিছু বিদ্বান এ হাদীসের উপর আমল করার জন্য ইমামের এক পথ দিয়ে ঈদের মাঠে যাওয়া এবং অন্য পথ দিয়ে আসাকে মুস্তাহাব বলেছেন। ঈমাম শাফি এই মত দিয়েছেন। জাবির [রাদি.] -এর সূত্রে বর্ণিত হাদীসটি বেশি সহিহ। ঈদের নামাজ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৮. অনুচ্ছেদঃ ঈদুল ফিতরের দিন নামাজ আদায় করিতে যাওয়ার পূর্বে কিছু খাওয়া
৫৪২. আবদুল্লাহ ইবনি বুরাইদা [রাদি.] হইতে তাহাঁর পিতা হইতে বর্ণীতঃ
তিনি [বুরাইদা] বলেন, নাবী [সাঃআঃ] ঈদুল ফিতরের দিন কিছু না খাওয়া পর্যন্ত নামাযে বের হইতেন না এবং ঈদুল আযহার দিন নামাজ না আদায় করা পর্যন্ত কিছু খেতেন না।
-সহিহ। ইবনি মাজাহ- [১৭৫৬]। এ অনুচ্ছেদে আলী ও আনাস [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ বুরাইদার হাদীসটি গারীব। ঈমাম বুখারী বলেছেন, এ হাদীসটি ছাড়া সাওয়াব ইবনি উতবার সূত্রে বর্ণিত আর কোন হাদীস আমার জানা নেই। একদল মনীষী ঈদুল ফিতরের দিন কিছু খেয়ে ঘর হইতে নামাযের জন্য বের হওয়া মুস্তাহাব বলেছেন। তাঁরা খেজুর খাওয়া পছন্দ করছেন। তাহাদের মতে ঈদুল আযহার দিন নামাজ হইতে আসার পর পানাহার করা মুস্তাহাব। ঈদের নামাজ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৪৩. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] ঈদুল ফিতরের দিন নামাজ আদায় করিতে বের হওয়ার আগে খেজুর দিয়ে নাস্তা করিতেন।
-সহিহ। ইবনি মাজাহ- [১৭৫৪]। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ গারীব। ঈদের নামাজ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
Leave a Reply