জুমার দিনে করণীয় – দুআ কবুল, ওযূ, গোসল করা

জুমার দিনে করণীয় – দুআ কবুল, ওযূ, গোসল করা

জুমার দিনে করণীয় – দুআ কবুল, ওযূ, গোসল করা >> সুনান তিরমিজি শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন

অধ্যায়ঃ ৪, অনুচ্ছেদঃ (১-৮)=৮টি

১. অনুচ্ছেদঃ জুমার দিনের ফযিলত
২. অনুচ্ছেদঃ জুমার দিনে এমন একটি সময় রয়েছে যখন দুআ ক্ববূলের আশা করা যায়
৩. অনুচ্ছেদঃ জুমার দিন গোসল করা
৪. অনুচ্ছেদঃ জুমার দিনে গোসলের ফযিলত
৫. অনুচ্ছেদঃ জুমার দিনে ওযূ করা
৬. অনুচ্ছেদঃ জুমার দিন সকাল সকাল মসজিদে যাওয়া
৭. অনুচ্ছেদঃ কোন ওজর ছাড়াই জুমার নামাজ ছেড়ে দেয়া
৮. অনুচ্ছেদঃ নাই

১. অনুচ্ছেদঃ জুমার দিনের ফযিলত

৪৮৮. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ যেসব দিনে সূর্য উদয় হয় তাহাঁর মধ্যে জুমার দিনই উত্তম। এ দিনেই আদম [আঃ] -কে সৃষ্টি করা হয়েছে, এ দিনেই তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে এবং এ দিনই তাঁকে জান্নাত হইতে বের করা হয়েছে। আর জুমার দিনেই ক্বিয়ামাত সংঘটিত হইবে।

-সহিহ। সহীহাহ্‌- [১৫০২], সহীহ্‌ আবু দাঊদ- [৯৬১], মুসলিম, তালীক সহীহ্‌ ইবনি খুজাইমাহ- [৩/১১৬]। এ অনুচ্ছেদে আবু লুবাবা, সালমান, আবু যার, সাদ ইবনি উবাদা ও আওস ইবনি আওস [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ আবু হুরাইরার হাদীসটি হাসান সহিহ। জুমার দিনে করণীয় -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২. অনুচ্ছেদঃ জুমার দিনে এমন একটি সময় রয়েছে যখন দুআ ক্ববূলের আশা করা যায়

৪৮৯. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ জুমার দিনের যে মুহূর্তে [দুআ ক্ববূল হওয়ার] আশা করা যায় তা আসরের পর হইতে সূর্যাস্তের মধ্যে খোঁজ কর।

-হাসান। মিশকাত- [১৩৬০], তালীকুর রাগীব- [১/২৫১]। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। অন্য একটি সূত্রেও এ হাদীসটি আনাসের নিকট হইতে বর্ণিত হয়েছে। মুহাম্মাদ ইবনি আবু হুমাইদ একজন দুর্বল রাবী। একদল বিশেষজ্ঞ তাহাঁর স্মরণশক্তি দুর্বল বলেছেন। তাঁকে হাম্মাদ ইবনি আবু হুমাইদও বলা হয়ে থাকে। কেউ কেউ বলেছেন, ইনি আবু ইবরাহীম আনসারী, ইনি একজন প্রত্যাখ্যাত রাবী। একদল সাহাবা ও তাবিঈর ধারণা হল দুআ ক্ববূলের এ সময়টি আসরের পর হইতে শুরু করে সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত। ঈমাম আহমাদ এবং ইসহাকও একই রকম কথা বলেছেন। আহমাদ বলেছেন, যে সময়ে দুআ ক্ববূলের আশা করা যায় সে সম্পর্কিত বেশিরভাগ হাদীস হইতে জানা যায়, এ সময়টি আসরের পর এবং সূর্য ঢলে যাওয়ার পর হইতেও এর আশা করা যায়। এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস

৪৯০. আমর ইবনি আওফ [রাদি.] হইতে পর্যায়ক্রমে তাহাঁর পিতা ও দাদার হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ জুমার দিনের মধ্যে একটি বিশেষ সময় আছে। এ সময়ে বান্দাহ আল্লাহ তাআলার নিকট যা চায় আল্লাহ তাআলা তাকে তা দান করেন। লোকেরা বলিল, হে আল্লাহর রাসূল! এ সময়টি কখন? তিনি বললেনঃ যখন নামাজ শুরু হয় তখন হইতে তা শেষ হওয়া পর্যন্ত।

খুবই দুর্বল, ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১৩৮৪]। এ অনুচ্ছেদে আবু মূসা, আবু যার, সালমান, আবদুল্লাহ ইবনি সালাম, আবু লুবাবা ও সাদ ইবনি উবাদা এবং আবু উমামা [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ আমর ইবনি আওফের হাদীসটি হাসান এবং গারীব। এই হাদীসটির তাহকিকঃ খুবই দুর্বল

৪৯১. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যেসব দিনে সূর্য উদয় হয় তাহাঁর মধ্যে জুমার দিনই সর্বশ্রেষ্ঠ। এ দিনেই আদম [আঃ] -কে সৃষ্টি করা হয়েছিল। এদিনেই তাঁকে সেখান হইতে [পৃথিবীতে] নামিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এ দিনের মধ্যে এমন একটি সময় আছে যখন কোন মুসলিম বান্দা নামাজ আদায় করে আল্লাহ তাআলার নিকট কিছু চাইলে তিনি অবশ্যই তাকে তা দান করেন। আবু হুরাইরা [রাদি.] বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনি সালামের সাথে সাক্ষাত করে তাঁকে এ হাদীস প্রসঙ্গে জানালাম। তিনি বলেন, আমি সে সময়টি জানি। আমি বললাম, তাহলে আমাকেও বলে দিন, এ ব্যাপারে কৃপণতা করবেন না। তিনি বলিলেন, এ সময়টি আসরের পর হইতে সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত। আমি বললাম, তা কি করে আসরের পর হইতে পারে? অথচ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, বান্দা নামাজরত অবস্থায় এই মুহূর্তটি পেয়ে…। অথচ আপনি যে সময়ের কথা বলেছেন, তখন তো নামাজ আদায় করা হয় না। আবদুল্লাহ ইবনি সালাম [রাদি.] বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কি বলেননিঃ যে ব্যক্তি নামাযের অপেক্ষায় বসে থাকে প্রকারান্তরে সে নামাযের মধ্যেই থাকে? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বলিলেন, সেটাই এ সময়।

-সহিহ। ইবনি মাজাহ- [১১৩৯]। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহিহ। জুমার দিনে করণীয় -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩. অনুচ্ছেদঃ জুমার দিন গোসল করা

৪৯২. সালিম [রঃ] হইতে তাহাঁর পিতার হইতে বর্ণীতঃ

তিনি নাবী [সাঃআঃ]কে বলিতে শুনেছেনঃ যে ব্যক্তি জুমার নামাযে আসে সে যেন গোসল করে আসে।

-সহিহ। ইবনি মাজাহ- [১০৮৮]। এ অনুচ্ছেদে উমার, আবু সাঈদ, জাবির, বারাআ, আয়িশাহ্‌ ও আবু দারদা [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ ইবনি উমারের হাদীসটি হাসান সহিহ। জুমার দিনে করণীয় -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৪৯৩. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে অন্য সূত্রেও রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর উপরোক্ত হাদীস বর্ণিত হয়েছে।

এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৪৯৪. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

“একদা উমার [রাদি.] জুমার নামাযের খুতবা দিচ্ছিলেন, এমন সময় রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর একজন সাহাবী এসে [মসজিদে] ঢুকলেন। তিনি [উমার] প্রশ্ন করিলেন, এটা কোন সময় [দেরি কেন]? তিনি বলিলেন, আমি আযান শুনেই ওযূ করে চলে এসেছি, মোটেই দেরি করিনি। তিনি [উমার] বলিলেন, শুধু ওযূই করিলেন? অথচ আপনার জানা আছে, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] গোসল করারও নির্দেশ দিয়েছেন।

-সহিহ। সহীহ্‌ আবু দাঊদ- [৩৬৭], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এ হাদীসটি আরো কয়েকটি সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। জুমার দিনে করণীয় -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৪৯৫. যুহরী হইতে বর্ণীতঃ

ইউনুস যুহরী হইতে এই হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। আবু ঈসা বলেনঃ আমি মুহাম্মাদ বুখারীকে এই হাদীস প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম, তিনি বলিলেন, সালিম তার পিতা থেকে হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন।

এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৪. অনুচ্ছেদঃ জুমার দিনে গোসলের ফযিলত

৪৯৬. আওস ইবনি আওস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে বললেনঃ যে ব্যক্তি গোসল করিল এবং গোসল করাল, সকাল সকাল মসজিদে আসল, ইমামের নিকটবর্তী হয়ে মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনল এবং নিশ্চুপ থাকল- তাহাঁর জন্য প্রতি কদমের বিনিময়ে এক বছরের [নফল] রোযা ও নামাযের সাওয়াব রয়েছে।

ওয়াকী বলেন, গোসল করিল এবং করাল শব্দের অর্থ নিজে গোসল করিল এবং স্ত্রীকে গোসল করাল। -সহিহ। ইবনি মাজাহ- [১০৮৭]। ইবনিল মুবারাক বলেনঃ গোসল করিল ও গোসল করাল এর অর্থ হলো- নিজে গোসল করিল এবং মাথা ধুল। এ অনুচ্ছেদে আবু বাক্‌র, ইমরান ইবনি হুসাইন, সালমান, আবু যার, আবু সাঈদ, ইবনি উমার ও আবু আইউব [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান। আবু আশআসের নাম শারাহীল। আবু জানাব হলেন, ইয়াহইয়া ইবনি হাবীব। জুমার দিনে করণীয় -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৫. অনুচ্ছেদঃ জুমার দিনে ওযূ করা

৪৯৭. সামুরা ইবনি জুনদুব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি জুমার দিন শুধু ওযূ করিল সেটাই তাহাঁর জন্য যথেষ্ট। আর যে ব্যক্তি গোসল করিল, গোসল করাই উত্তম।

-সহীহ। ইবনি মাজাহ– [১০৯১]। এ অনুচ্ছেদে আবু হুরাইরা, আনাস ও আয়িশাহ্‌ [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ সামুরার হাদীসটি হাসান। কেউ কেউ উল্লেখিত হাদীসটি মুরসাল হিসাবে বর্ণনা করিয়াছেন। নাবী [সাঃআঃ]-এর সাহাবী ও তাহাদের পরবর্তীগণ শুক্রবার গোসল করা উত্তম মনে করিয়াছেন, যদিও শুধু ওযূ করাও যথেষ্ট। ঈমাম শাফি বলেন, জুমার দিন গোসল করার জন্য নাবী [সাঃআঃ] যে হুকুম দিয়েছেন তা মুস্তাহাব, ওয়াজিব নয়। তাহাঁর বক্তব্যের সপক্ষে দলীল হলঃ উমার [রাদি.] উসমান [রাদি.] -কে বলিলেন, শুধু ওযূই করিলেন? অথচ আপনি জানেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] জুমার দিন গোসল করার নির্দেশ দিয়েছেন। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর এ নির্দেশ দ্বারা যদি গোসল করা ওয়াজিব প্রমাণিত হত তবে উমার [রাদি.] উসমান [রাদি.] -কে বসতে দিতেন না; বরং তাঁকে মসজিদ হইতে বের হয়ে গোসল করে আসতে বাধ্য করিতেন। অধিকন্তু উসমান [রাদি.] নিজেও গোসল করে আসতেন, শুধু ওযূ করে আসতেন না। কেননা উসমান [রাদি.] পর্যাপ্ত জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। অতএব জুমার দিন গোসল করা উত্তম কিন্তু ওয়াজিব নয়। জুমার দিনে করণীয় -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৪৯৮. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ভালভাবে ওযূ করে জুমার নামাজ আদায় করিতে আসে, ইমামের নিকটবর্তী হয়ে মনোযোগ সহকারে নীরবে খুতবা শুনে, তাহাঁর এ জুমুআ হইতে ঐ জুমুআ পর্যন্ত এবং আরো তিন দিনের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হইবে। যে ব্যক্তি কাঁকর-বালি ইত্যাদি নাড়াচাড়া করিল সে বাজে কাজ করিল।

-সহিহ। ইবনি মাজাহ- [১০৯০], মুসলিম। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহিহ। জুমার দিনে করণীয় -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৬. অনুচ্ছেদঃ জুমার দিন সকাল সকাল মসজিদে যাওয়া

৪৯৯. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ যে ব্যক্তি জুমার দিন নাপাকির গোসলের মত গোসল সেরে প্রথমে [জুমার নামাজ আদায় করার জন্য] মসজিদে আসল সে যেন একটি উট কুরবানী করিল। অতঃপর দ্বিতীয় মুহূর্তে যে ব্যক্তি আসল সে যেন একটি গাভী কুরবানী করিল। তৃতীয় মুহূর্তে যে আসল সে যেন শিংযুক্ত একটি মেষ কুরবানী করিল। চতুর্থ মুহূর্তে যে ব্যক্তি আসল সে যেন একটি মুরগী কুরবানী করিল। পঞ্চম মুহূর্তে যে ব্যক্তি আসল সে যেন একটি ডিম কুরবানী করিল। অতঃপর ঈমাম যখন [নামাযের জন্য] বের হয়ে আসেন তখন ফেরেশতাগণ আলোচনা শুনার জন্য উপস্থিত হয়ে যান।

-সহিহ। ইবনি মাজাহ- [১০৯২]। এ অনুচ্ছেদে আবদুল্লাহ ইবনি আমর ও সামুরা [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে । আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহিহ। জুমার দিনে করণীয় -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৭. অনুচ্ছেদঃ কোন ওজর ছাড়াই জুমার নামাজ ছেড়ে দেয়া

৫০০. আবুল জাদ আয-যমরী মুহাম্মাদ ইবনি আমরের ধারণানুযায়ী তিনি একজন সাহাবী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে লোক নিছক অলসতা ও গাফলতি করে পর পর তিন জুমুআ ছেড়ে দেয় আল্লাহ তাআলা তাহাঁর অন্তরে মোহর মেরে দেন।

-সহিহ। ইবনি মাজাহ– [১১২৫]। এ অনুচ্ছেদে ইবনি উমার, ইবনি আব্বাস ও সামুরা [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ আবুল জাদের হাদীসটি হাসান। ঈমাম বুখারীকে আবুল জাদের নাম জিজ্ঞেস করলে তিনি অজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং বলেন, তাহাঁর সূত্রে কেবল এই হাদীসটি বর্ণিত আছে। মুহাম্মাদ ইবনি আমরের সূত্রেই শুধুমাত্র আমরা এই হাদীসটি জেনেছি। জুমার দিনে করণীয় -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৮. অনুচ্ছেদঃ নাই

৫০১. জনৈক সাহাবী হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে কুবা পল্লী হইতে জুমার নামাজে হাযির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

এই হাদীসটির সনদ দুর্বল। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি আমরা কেবল উল্লেখিত সনদেই জানতে পেরেছি। এ অনুচ্ছেদে সহীহ্‌ সনদ সূত্রে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কোন হাদীস নেই। আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিত আছে, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ “এমন ব্যক্তির উপরও জুমুআ ওয়াজিব যে নামাজ আদায় করে রাতের প্রথম দিকেই নিজ পরিবারে পৌছে যেতে পারে”।এটাও যঈফ হাদীস। কেননা এ হাদীসের এক রাবী আবদুল্লাহ ইবনি সাঈদ আল-মাকবূরী হাদীসশাস্ত্রে দুর্বল। ইয়াহইয়া ইবনি সাঈদ আল কাত্তান তাকে দুর্বল বলেছেন। জুমার নামাজ কার উপর ওয়াজিব তা নিয়ে আলিমদের মধ্যে মতের অমিল আছে। কেউ কেউ বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার নামাজ আদায় করে রাতের মধ্যেই ঘরে পৌঁছে যেতে পারে তার উপর জুমুআ ওয়াজিব। অন্য একদল মনীষী বলেছেন, যতদূর আযানের শব্দ পৌঁছে ততদূর পর্যন্ত লোকদের উপর জুমুআ ওয়াজিব। ঈমাম শাফি, আহমাদ ও ইসহাক এই মত দিয়েছেন। এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস

৫০২. আহমাদ ইবনি হাসান হইতে বর্ণীতঃ

আমি [তিরমিযী] আহমাদ ইবনি হাসানকে বলিতে শুনেছিঃ আমরা আহমাদ ইবনি হাম্বলের নিকট উপস্থিত ছিলাম। কার উপর জুমুআ ওয়াজিব এ নিয়ে আলোচনা জমে উঠল। আহমাদ ইবনি হাম্বল এ বিষয়ের উপর নাবী [সাঃআঃ]–এর কোন হাদীস উল্লেখ করেননি। আহমাদ ইবনি হাসান বলেন, আমি আহমাদ ইবনি হাম্বলকে বললাম, আবু হুরাইরা [রাদি.] এ প্রসঙ্গে নাবী [সাঃআঃ]–এর একটি হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি অবাক হয়ে প্রশ্ন করিলেন, নাবী [সাঃআঃ]-এর হাদীস! আমি বললাম, হ্যাঁ। আবু হুরাইরা [রাদি.] বর্ণনা করেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রাত হইতে হইতে বাড়ি পৌঁছতে পারবে তাহাঁর উপরও জুমুআ ওয়াজিব। এ হাদীস শুনে আহমাদ ইবনি হাম্বল আমার উপর রেগে গেলেন এবং বলিলেন, তোমার আল্লাহর নিকটে ক্ষমা চাও, তোমার আল্লাহর নিকটে ক্ষমা চাও।

খুবই দুর্বল, মিশকাত [১৩৭৬]। আবু ঈসা বলেনঃ আহমাদ ইবনি হাম্বল এ কথা এ জন্যই বলেছেন, তিনি এ হাদীসকে গণনাতেই ধরেন না। কেননা তার সনদ দুর্বল। এই হাদীসটির তাহকিকঃ খুবই দুর্বল


by

Comments

Leave a Reply