নামাজের মাকরুহ সমূহ ও নফল নামাজ বসে আদায় করা
নামাজের মাকরুহ সমূহ ও নফল নামাজ বসে আদায় করা >> সুনান তিরমিজি শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন
অধ্যায়ঃ ২, অনুচ্ছেদঃ (১৬২-১৭০)=৯টি
১৬২. অনুচ্ছেদঃ বসে নামাজ আদায় করলে দাড়িয়ে আদায়ের অর্ধেক সাওয়াব পাওয়া যায়
১৬৩. অনুচ্ছেদঃ নফল নামাজ বসে আদায় করা
১৬৪. অনুচ্ছেদঃ রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণীঃ আমি শিশুদের কান্না শুনলে নামাজ সংক্ষেপ করি
১৬৫. অনুচ্ছেদঃ দোপাট্টা পরিধান ছাড়া প্রাপ্তবয়স্কার নামাজ ক্ববূল হয় না
১৬৬. অনুচ্ছেদঃ নামাযের মধ্যে সাদল করা [কাঁধের উপর কাপর লটকে রাখা] মাকরুহ
১৬৭. অনুচ্ছেদঃ নামাযের মধ্যে পাথর-টুকরা অপসারণ করা মাকরূহ
১৬৮. অনুচ্ছেদঃ নামাযের মধ্যে [মাটিতে] ফুঁ দেওয়া মাকরূহ
১৬৯. অনুচ্ছেদঃ নামাযের মধ্যে কোমরে হাত রাখা নিষেধ
১৭০. অনুচ্ছেদঃ চুল বেঁধে নামাজ আদায় করা মাকরূহ
১৬২. অনুচ্ছেদঃ বসে নামাজ আদায় করলে দাড়িয়ে আদায়ের অর্ধেক সাওয়াব পাওয়া যায়
৩৭১. ইমরান ইবনি হুসাইন [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে কোন ব্যক্তির বসে বসে নামাজ আদায় করা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেনঃ যে ব্যক্তি দাড়িয়ে [নফল] নামাজ আদায় করে সেটাই উত্তম। যে ব্যক্তি বসে নামাজ আদায় করে তার জন্য দাঁড়িয়ে নামাজ আদায়কারীর অর্ধেক নেকী রয়েছে। আর যে ব্যক্তি ঘুমে অসাড় অবস্থায় বা শুয়ে নামাজ আদায় করে তার জন্য বসে বসে নামাজ আদায়কারীর অর্ধেক নেকী রহিয়াছে।
সহীহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১২৩১], বুখারী।এ অনুচ্ছেদে আবদুল্লাহ ইবনি আমর, আনাস ও সাইব [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ ইমরান ইবনি হুসাইনের হাদীসটি হাসান সহীহ। নামাজের মাকরুহ সমূহ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৭২. ইমরান ইবনি হুসাইন [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ সাঃআঃকে অসুস্থ ব্যক্তির নামাজ আদায় করা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেনঃ দাড়িয়ে নামাজ আদায় কর; যদি দাড়িয়ে আদায় করিতে সক্ষম না হও তবে বসে নামাজ আদায় কর; যদি বসে নামাজ আদায় করিতে সক্ষম না হও তবে [শুয়ে] কাত হয়ে নামাজ আদায় কর।
সহিহ। ইরওয়া-[২৯৯], বুখারী। আবু ঈসা বলেনঃ হুসাইন আল-মুয়াল্লিম হইতে ইবরাহীম ইবনি তাহমানের বর্ণনার মতো অন্য কেউ বর্ণনা করিয়াছেন বলে আমাদের জানা নেই। আবু উসামা এবং আরো অনেকে হুসাইন আল-মুয়াল্লিম হইতে ঈসা ইবনি ইউনুসের বর্ণনার অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। কিছু বিদ্বানের মতে নফল নামাযের জন্য এ সম্মতি দেয়া হয়েছে। হাসান [বাসরী] হইতে বর্ণিত আছে, নফল নামাজ আদায়কারী ইচ্ছা করলে দাড়িয়ে, বসে বা শুয়েও নামাজ আদায় করিতে পারে। সনদ সহীহ। যে অসুস্থ ব্যক্তি বসে নামাজ আদায় করিতে অক্ষম সে ব্যক্তি কিভাবে নামাজ আদায় করিবে এ ব্যাপারে বিদ্বানগণের মতের অমিল রহিয়াছে। একদল বিদ্বান বলেন, এমন ব্যক্তি ডানকাতে শুয়ে [কিবলার দিকে মুখ করে] নামাজ আদায় করিবে। আরেক দল বিদ্বান বলেন, চিৎ হয়ে শুয়ে কিবলার দিকে পা দিয়ে [মাথা সামান্য উচু করে] নামাজ আদায় করিবে। ইমরান ইবনি হুসাইনের এ হাদীসের ব্যাখ্যায় সুফইয়ান সাওরী বলেনঃ সুস্থ্য ব্যক্তি যার কোন উযর নেই সে বসে নামাজ পড়লে দাড়িয়ে নামাজ পড়ার অর্ধেক সাওয়াব পাবে যদি তা নফল নামাজ হয়। আর যে ব্যক্তির উযর বা আপত্তি আছে সে যদি বসে নামাজ পড়ে তবে সে দাড়িয়ে নামাজ পড়ার মতোই সাওয়াব পাবে। কোন কোন হাদীসে সুফইয়ান সাওরীর মতের সমর্থনে বর্ণনা রহিয়াছে। নামাজের মাকরুহ সমূহ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৬৩. অনুচ্ছেদঃ নফল নামাজ বসে আদায় করা
৩৭৩. রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্ত্রী হাফসা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইন্তিকালের এক বছর পূর্ব পর্যন্ত আমি তাকে বসে বসে নফল নামাজ আদায় করিতে দেখিনি। তারপর তিনি বসে বসে নফল নামাজ আদায় করিতেন এবং সূরাসমূহ শান্ত-স্থিরভাবে থেমে থেমে পাঠ করিতেন। এতে তা দীর্ঘ হইতে দীর্ঘতর হত।
সহিহ। সিফাতুস নামাজ-[৬০], মুসলিম। এ অনুচ্ছেদে উন্মু সালামা এবং আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ হাফসার হাদীসটি হাসান সহীহ। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট হইতে এরূপও বর্ণিত হয়েছেঃ “তিনি রাতের বেলা বসে নামাজ আদায় করিতেন। কিরাআতের তিরিশ অথবা চল্লিশ আয়াত বাকি থাকতে তিনি উঠে দাড়াতেন এবং তা পড়ে রুকূ-সাজদাহ করিতেন। দ্বিতীয় রাকআতেও তিনি এরূপ করিতেন। আরো বর্ণিত আছে, তিনি বসে নামাজ আদায় করিতেন যখন তিনি দাড়িয়ে কিরাআত পাঠ করিতেন, রুকূ-সাজদাহও দাড়িয়ে করিতেন। তিনি বসে কিরাআত পাঠ করলে রুকূ-সাজদাহও বসে করিতেন।” ঈমাম আহমাদ ও ইসহাক বলেন, উভয় হাদীস অনুযায়ী আমল করা যায়। অর্থাৎ দুটো হাদীসই সহীহ এবং তদনুযায়ী আমল করার যোগ্য।নামাজের মাকরুহ সমূহ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৭৪. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ সাঃআঃ বসে নামাজ আদায় করলে কিরাআতও বসে পাঠ করিতেন। তার কিরাআতের তিরিশ বা চল্লিশ আয়াত বাকি থাকতে তিনি উঠে দাড়িয়ে তা পাঠ করিতেন, তারপর রুকূ-সাজদাহ করিতেন। দ্বিতীয় রাকআতেও তিনি অনুরূপ করিতেন।
সহীহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১২২৬], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। আবু ঈসা বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ।নামাজের মাকরুহ সমূহ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৭৫. আবদুল্লাহ ইবনি শাকীক হইতে আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি তাকে [আয়িশাহ্কে] রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নফল নামাজ আদায় করা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করিলেন। আয়িশাহ্ [রাদি.] বলিলেন, তিনি কখনও দীর্ঘ রাত পর্যন্ত দাড়িয়ে নামাজ আদায় করিতেন, আবার কখনও দীর্ঘ রাত ধরে বসে নামাজ আদায় করিতেন। তিনি যখন দাড়িয়ে কিরাআত পাঠ করিতেন, তখন রুকূ-সাজদাহও দাড়ানো অবস্থায় করিতেন। তিনি বসে কিরাআত পাঠ করলে রুকূ-সাজদাহও বসে করিতেন
সহীহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১২২৮], মুসলিম।আবু ঈসা বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ। নামাজের মাকরুহ সমূহ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৬৪. অনুচ্ছেদঃ রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণীঃ আমি শিশুদের কান্না শুনলে নামাজ সংক্ষেপ করি
৩৭৬. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ সাঃআঃ বলেনঃ আল্লাহর কসম! নিশ্চয়ই আমি নামাযের মধ্যে বাচ্চার কান্না শুনতে পেলে তার মায়ের ব্যাকুল হওয়ার সম্ভাবনায় আমি নামাজ সংক্ষেপ করি।
সহীহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[৯৮৯], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ।এ অনুচ্ছেদে আবু কাতাদা, আবু সাঈদ ও আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে।আবু ঈসা বলেনঃ আনাসের হাদীসটি হাসান সহীহ। নামাজের মাকরুহ সমূহ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৬৫. অনুচ্ছেদঃ দোপাট্টা পরিধান ছাড়া প্রাপ্তবয়স্কার নামাজ ক্ববূল হয় না
৩৭৭. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ওড়না ব্যতিত প্রাপ্তবয়স্কা মেয়েদের নামাজ ক্ববূল হয় না।
সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[৬৫৫]। এ অনুচ্ছেদে আব্দুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। হাদীস বর্ণিত হায়িয শব্দের অর্থ বালেগ। আবু ঈসা বলেনঃ আয়েশা হাদীসটি হাসান। বিদ্বানগন এ হাদীসের আলোকে বলেছেন, কোন মহিলা বালেগ হওয়ার পর নামাযের সময় মাথার চুলের কিছু অংশ খোলা রাখলে তার নামাজ জায়িয হইবে না। ঈমাম শাফি এমত পোষণ করেন। তিনি বলেছেন, তার শরীরের কোন অংশ অনাবৃত থাকলে তার নামাজ হইবে না, হ্যাঁ পায়ের পাতার পিঠ খোলা থাকলে নামাজ হইবে। নামাজের মাকরুহ সমূহ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৬৬. অনুচ্ছেদঃ নামাযের মধ্যে সাদল করা [কাঁধের উপর কাপর লটকে রাখা] মাকরুহ
৩৭৮. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] নামাযের মধ্যে সাদল করিতে [কাপড় ঝুলিয়ে দিতে] নিষেধ করিয়াছেন।
এ অনুচ্ছেদে আবু জুহাইফা [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। হাসান। মিশকাত-হাদীস নং-[৭৬৪], তালীক আলা ইবনি খুজাইমাহ-[৯১৮], সহীহ্ আবু দাঊদ হাদীস নং-[৬৫০]।আবু ঈসা বলেনঃ আবু হুরাইরার হাদীসটি আমরা আতার সূত্রে মারফূ হিসাবে জানতে পারিনি, তবে ইসল ইবনি সুফিয়ানের সূত্রে জেনেছি। নামাযের মধ্যে বন্ধনহীনভাবে কাপড় ঝুলিয়ে দেয়া প্রসঙ্গে বিদ্বানদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। তাহাদের একদল এটাকে মাকরূহ বলেছেন। তাঁরা আরো বলেছেন, ইহূদীরা এরূপ করে। অপর দল বলেছেন, এক কাপড়ে নামাজ আদায় করলে বন্ধনহীনভাবে কাপড় ঝুলিয়ে দেয়া মাকরূহ। জামার উপড় কাপড়ে সাদল করা হলে কোন আপত্তি নেই। ঈমাম আহমাদ এই মত দিয়েছেন। ইবনিল মুবারাক নামাযের মধ্যে সাদল করা মাকরূহ বলেছেন।এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস
১৬৭. অনুচ্ছেদঃ নামাযের মধ্যে পাথর-টুকরা অপসারণ করা মাকরূহ
৩৭৯. আবু যার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমাদের কেউ যখন নামাযে দাঁড়ায় তখন সে যেন তার সামনের কাঁকর না মুছে। কেননা তখন রাহমাত তার সামনে থাকে।
যঈফ, ইবনূ মাজাহ [১০২৭] এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
৩৮০. মুআইক্বীব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে নামাযের মধ্যে কাঁকর সরানো প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেনঃ যদি তা সরানো খুবই দরকার হয় তবে একবার মাত্র সরাবে।
সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১০২৬]। আবু ঈসা বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহিহ। নামাজের মাকরুহ সমূহ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৬৮. অনুচ্ছেদঃ নামাযের মধ্যে [মাটিতে] ফুঁ দেওয়া মাকরূহ
৩৮১. উম্মু সালামা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] আফলাহ নামের যুবককে দেখলেন, সে যখন সিজদায় যায় তখন ফুঁ দিয়ে ধুলা সরায়। তিনি বললেনঃ হে আফলাহ! তোমার চেহারায় ধুলা বালি লাগাও।
যঈফ, তালীকুর রাগীব [১/১৯৩], মিশকাত [১০০২], যঈফাহ [৫৪৮৫]।আহমাদ ইবনি মানী বলেন, আব্বাদ ইবনি আওয়াম [রাদি.] নামাযের মধ্যে ফুঁ দেয়া মাকরূহ মনে করিতেন। তিনি বলেছেন, এরূপ করলে নামাজ অবশ্য নষ্ট হইবে না। আহমাদ ইবনি মানী বলেনঃ আমি এই অভিমত সমর্থন করি। অপর এক বর্ণনায় এ যুবকের নাম রাবাহ বলে উল্লেখ আছে।এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
৩৮২. আহমাদ ইবনি আবদা আয-যাব্বী হইতে বর্ণীতঃ
আহমাদ ইবনি আবদা আয-যাব্বী হইতে, তিনি হাম্মাদ ইবনি যাইদ হইতে, তিনি মাইমূন হইতে….. উক্ত সূত্রে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। এই বর্ণনায় গোলামের নাম রাবাহ উল্লেখিত হয়েছে।
আবু ঈসা বলেনঃ উম্মু সালামার হাদীসের সনদ তেমন একটা সুবিধাজনক নয়। মাইমুন-আবু হামাযাকে কিছু বিশেষজ্ঞ দুর্বল বলেছেন। নামাযের মধ্যে ফুঁ দেয়া প্রসঙ্গে আলিমদের মধ্যে মতের অমিল আছে। একদল বলেছেন, নামাযের মধ্যে ফুঁ দিলে আবার নামাজ আদায় করিতে হইবে। সুফিয়ান সাওরী ও কুফাবাসীগণ এ মত ব্যক্ত করিয়াছেন। অপরদল বলেছেন, এটা মাকরূহ, তবে এতে নামাজ নষ্ট হইবে না। আহমাদ ও ইসহাক এ কথা বলেছেন।এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
১৬৯. অনুচ্ছেদঃ নামাযের মধ্যে কোমরে হাত রাখা নিষেধ
৩৮৩. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] যে কোন ব্যক্তিকে কোমরে হাত রেখে নামাজ আদায় করিতে নিষেধ করিয়াছেন।
সহিহ। সিফাতুস নামাজ-[৬৯], সহীহ্ আবু দাঊদ হাদীস নং-[৮৭৩], রাওয-[১১৫২], ইরওয়া হাদীস নং-[৩৭৪], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এ অনুচ্ছেদে ইবনি উমার [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ আবু হুরাইরার হাদীসটি হাসান সহিহ। একদল বিশেষজ্ঞ কোমরে হাত দিয়ে নামাযে দাঁড়ানো মাকরূহ বলেছেন। অপর একদল বিদ্বান কোমরে হাত রেখে হাঁটা মাকরূহ বলেছেন। নামাযের মধ্যে এক হাত অথবা দুই হাত কোমরে রাখাকে ইখতিসার বলে। বর্ণিত আছে, ইবলীস পথ চলার সময় কোমরে হাত রেখে চলে। নামাজের মাকরুহ সমূহ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৭০. অনুচ্ছেদঃ চুল বেঁধে নামাজ আদায় করা মাকরূহ
৩৮৪. আবু রাফি [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি হাসান ইবনি আলী [রাদি.]-এর নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তিনি নামাজ আদায় করছিলেন। তাহাঁর চুল ঘাড়ের নিকট বাঁধা ছিল। তিনি [আবু রাফি] তা খুলে দিলেন। এতে হাসান [রাদি.] রাগান্বিত হয়ে তাহাঁর দিকে তাকালেন। তিনি [আবু রাফি] বলিলেন, নামাযে মনোনিবেশ কর, রাগ কর না। কেননা আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি, এটা [নামাযে চুল বাঁধা] শাইতানের অংশ।
হাসান। সহীহ্ আবু দাঊদ হাদীস নং-[৬৫৩]।এ অনুচ্ছেদে উম্মু সালামা ও আব্দুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ আবু রাফির হাদীসটি হাসান। বিদ্বানগন এ হাদীস অনুযায়ী আমল করিয়াছেন। তাঁরা ঘাড়ের নিকট চুল বাঁধা রেখে নামাজ আদায় করা মাকরূহ বলেছেন। আবু ঈসা বলেনঃ ইমরান ইবনি মূসা মক্কাবাসী কুরাইশ, তিনি আইয়ুব ইবনি মূসার ভাই।এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস
Leave a Reply