মসজিদ নির্মাণের গুরুত্ব ও ফজিলত এবং প্রবেশের দুআ
মসজিদ নির্মাণের গুরুত্ব ও ফজিলত এবং প্রবেশের দুআ >> সুনান তিরমিজি শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন
অধ্যায়ঃ ২, অনুচ্ছেদঃ (১২২-১৩৩)=১২টি
১২২. অনুচ্ছেদঃ মসজিদে প্রবেশের দুআ
১২৩. অনুচ্ছেদঃ মসজিদে ঢুকে দুই রাকআত নামাজ আদায় করিবে
১২৪. অনুচ্ছেদঃ কবরস্থান ও গোসলখানা ছাড়া সমগ্র পৃথিবীই নামাজ আদায়ের জায়গা
১২৫. অনুচ্ছেদঃ মসজিদ নির্মাণের ফাযীলাত
১২৬. অনুচ্ছেদঃ কবরের উপর মসজিদ তৈরি করা মাকরুহ
১২৭. অনুচ্ছেদঃ মসজিদে ঘুমানো
১২৮. অনুচ্ছেদঃ মসজিদের মধ্যে ক্রয়-বিক্রয়, হারানো জিনিস খোঁজা এবং কবিতা আবৃত্তি করা মাকরূহ
১২৯. অনুচ্ছেদঃ যে মসজিদের ভিত্তি তাকওয়ার উপর প্রতিষ্ঠিত
১৩০. অনুচ্ছেদঃ কুবার মসজিদে নামাজ আদায় করা
১৩১. অনুচ্ছেদঃ কোন্ মসজিদ সবচেয়ে বেশি মর্যাদাপূর্ণ
১৩২. অনুচ্ছেদঃ মসজিদে পায়ে হেঁটে যাতায়াত
১৩৩. অনুচ্ছেদঃ মসজিদে বসা এবং নামাযের জন্য অপেক্ষা করার ফযিলত
১২২. অনুচ্ছেদঃ মসজিদে প্রবেশের দুআ
৩১৪. ফাতিমা আল-কুবরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন মসজিদে ঢুকতেন তখন মুহাম্মাদের [স্বয়ং নিজের] প্রতি দুরুদ ও সালাম পাঠ করিতেন এবং বলিতেনঃ
رَبِّ اغْفِرْ لِي ذُنُوبِي وَافْتَحْ لِي أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ
“রাব্বিগফির লী যুনূবী ওয়াফতাহ্ লী আবওয়াবারাহমাতিকা।” যখন তিনি মসজিদ হইতে বের হইতেন তখনও মুহাম্মাদের [নিজের] প্রতি দুরুদ ও সালাম পাঠ করিতেন এবং বলিতেনঃ
رَبِّ اغْفِرْ لِي ذُنُوبِي وَافْتَحْ لِي أَبْوَابَ فَضْلِكَ
“রব্বিগফির লী যুনূবী ওয়াফতাহ্ লী আবওয়াবা ফাদলিকা।”
রব্বিগ ফিরলী বাক্যবাদে সহিহ। ফজলুস্ নামাজ আলান্নাবী-[৭২-৭৩], তামাতুল মিন্নাহ-[২৯০]। মসজিদ নির্মাণের গুরুত্ব ও ফজিলত -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩১৫. আলী ইবনি হুজর [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ
ইসমাঈল ইবনি ইবরাহীম বলেছেন, আমি মক্কায় আবদুল্লাহ ইবনি হাসানের সাথে দেখা করে তাঁকে এ হাদীস প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম। তিনি আমার নিকট হাদীসটি এভাবে বর্ণনা করিলেন-“যখন তিনি [রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]] মসজিদে ঢুকতেন তখন বলিতেনঃ
رَبِّ افْتَحْ لِي بَابَ رَحْمَتِكَ
“রাব্বিফ্তাহ্লী বাবা রাহমাতিকা” এবং যখন বের হইতেন তখন বলিতেনঃ
رَبِّ افْتَحْ لِي بَابَ فَضْلِكَ
রাব্বিফ্তাহলী বাবা ফায্লিকা।
সহিহ। পূর্বের হাদীসের শব্দগুলো অধিক সহিহ। এ অনুচ্ছেদে আবু হুমাইদ, আবু উসাইদ ও আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ ফাতিমা [রাদি.]-এর হাদীসটি হাসান। ফাতিমার হাদীসের সনদ মুত্তাসিল [পরস্পর সংযুক্ত] নয়। কেননা হুসাইন [রাদি.]-এর কন্যা ফাতিমা তাহাঁর দাদী ফাতিমাতুল কুবরা [রাদি.]-এর দেখা পাননি। কেননা ফাতিমা [রাদি.] রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর ইন্তিকালের পর মাত্র কয়েক মাস বেঁচে ছিলেন। মসজিদ নির্মাণের গুরুত্ব ও ফজিলত -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১২৩. অনুচ্ছেদঃ মসজিদে ঢুকে দুই রাকআত নামাজ আদায় করিবে
৩১৬. আবু কাতাদা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেনঃ তোমাদের কোন ব্যক্তি যখন মসজিদে আসে, তখন সে যেন বসার আগে দুই রাকাআত নামাজ আদায় করে নেয়।
সহীহ। ইবনি মাজাহ–[১০১৩], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এ অনুচ্ছেদে জাবির, আবু উমামা, আবু হুরাইরা, আবু যার ও কাব ইবনি মালিক [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ আবু কাতাদার হাদীসটি হাসান সহীহ। মুহাম্মাদ ইবনি আজলান এবং আরো অনেকে আমির ইবনি আব্দুল্লাহ ইবনি যুবাইর হইতে মালিক ইবনি আনাসের অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। সুহাইল ইবনি আবু সালিহ স্বীয় সনদে জাবির ইবনি আব্দুল্লাহর সূত্রে নাবী সাঃআঃ হইতে হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন। তবে এটি সুরক্ষিত নয়। আবু কাতাদা [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসটিই সঠিক। আমাদের সংগীরা এ হাদীসের উপর আমল করিয়াছেন। কোন ব্যক্তির মসজিদে ঢুকার পর বসার আগে দুই রাকাআত নামাজ আদায় করাকে তারা মুস্তাহাব মনে করেন। তিরমিয়ী বলেনঃ ইসহাক ইবনি ইবরাহীম আমাকে তথ্য দিয়েছেন যে, আলী ইবনি মাদীনী বলেন, সুহাইল ইবনি আবী সালিহ-এর হাদীসটি ভুল। মসজিদ নির্মাণের গুরুত্ব ও ফজিলত -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১২৪. অনুচ্ছেদঃ কবরস্থান ও গোসলখানা ছাড়া সমগ্র পৃথিবীই নামাজ আদায়ের জায়গা
৩১৭. আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কবরস্থান ও গোসলখানা ছাড়া সারা পৃথিবীই নামাজ আদায়ের উপযোগী।
সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[৭৪৫]। এ অনুচ্ছেদে আলী, আবদুল্লাহ ইবনি আমর, আবু হুরাইরা, জাবির, ইবনি আব্বাস, হুযাইফা, আনাস, আবু উমামা ও আবু যার [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। তাঁরা বলেছেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ “সারা পৃথিবীকে আমার জন্য মসজিদ এবং পবিত্র হওয়ার মাধ্যম বানানো হয়েছে”। আবু ঈসা বলেনঃ আবু সাঈদের হাদীসটি আবদুল আযীয ইবনি মুহাম্মাদের সূত্রে দুটি ধারায় বর্ণিত হয়েছে। একটি ধারায় আবু সাঈদের বরাত দিয়ে বর্ণনা করা হয়েছে, অপর ধারায় তাহাঁর নাম উল্লেখ করা হয়নি। এ হাদীসটিকে মুযতারিব [গোলমাল] বলা হয়েছে। সুফিয়ান সাওরী-আমর ইবনি ইয়াহ্ইয়া হইতে, তিনি তাহাঁর পিতার সূত্রে এ হাদীসটি মুরসাল হিসাবে বর্ণনা করিয়াছেন। এ সূত্রটিই বেশি সহীহ্ ও সুপ্রতিষ্ঠিত। মসজিদ নির্মাণের গুরুত্ব ও ফজিলত -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১২৫. অনুচ্ছেদঃ মসজিদ নির্মাণের ফাযীলাত
৩১৮. উসমান ইবনি আফফান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার সুপ্রসন্নতা অর্জনের উদ্দেশ্যে একটি মসজিদ তৈরী করে, আল্লাহ তাআলা তার জন্য জান্নাতে অনুরূপ একটি ঘর তৈরী করেন।
সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[৭৩৬], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ।এ অনুচ্ছেদে আবু বাকর, উমার, আলী, আবদুল্লাহ ইবনি আমর, আনাস, ইবনি আব্বাস, আয়িশাহ্, উম্মু হাবীবা, আবু যার, আমর ইবনি আবাসা, ওয়াসিলা ইবনিল আসকা, আবু হুরাইরা ও জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ উসমানের হাদীসটি হাসান সহিহ। মাহমুদ ইবনি লাবীদ নাবী রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে পেয়েছেন এবং মাহমুদ ইবনি রাবীও নাবী রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে দেখেছেন। তারা দুজনই মাদীনার বালক ছিলেন। মসজিদ নির্মাণের গুরুত্ব ও ফজিলত -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩১৯. নাবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ তালার সুপ্রসন্নতা অর্জনের উদ্দেশ্যে একটি মসজিদ তৈরি করিতে চাই তা ছোট হোক বা বড়, আল্লাহ তাআলা তাহাঁর জন্য জান্নাতে একটি ঘর তৈরি করেন।
যঈফ, তালিকুর রাগিব [১/১১৭]। এ হাদীসটি কুতাইবা তিনি নুহু ইবনি কাইস হইতে তিনি আব্দুর রহমান হইতে তিনি যিয়াদ আন-নুসাইরী হইতে তিনি আনাস [রাদি.] হইতে তিনি নাবী কারিম [সাঃআঃ] হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
১২৬. অনুচ্ছেদঃ কবরের উপর মসজিদ তৈরি করা মাকরুহ
৩২০. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কবর যিয়ারতকারীনীদের, কবরের উপর মসজিদ নির্মাণকারীদের এবং কবরে বাতি জ্বালানো ব্যক্তিদের অভিসম্পাত করিয়াছেন।
যঈফ, ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১৫৭৫]। অধিক যিয়ারতকারীনী এই অর্থে এবং বাতি জ্বালানো বাদে হাদীসটি সহীহ। এ অনুচ্ছেদে আবু হুরাইরা ও আইশা [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ ইবনি আব্বাসের হাদীসটি হাসান। রাবি আবু সালিহ আবু তালিবের কন্যা উম্মে হানির আযাদকৃত গোলাম, তাহাঁর নাম বাযান বা বাযাম। এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য
১২৭. অনুচ্ছেদঃ মসজিদে ঘুমানো
৩২১. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর জীবন কালে মসজিদে ঘুমাতাম। অথচ আমরা তখন যুবক ছিলাম।
সহিহ। বুখারী। আবু ঈসা বলেনঃ ইবনি উমারের হাদীসটি হাসান সহিহ। একদল বিদ্বান মসজিদে ঘুমানোর পক্ষে অভিমত দিয়েছেন। ইবনি আব্বাস [রাদি.] বলেছেন, “মসজিদকে দিনের বা রাতের শোয়ার জায়গায় পরিণত কর না”। বিদ্বানদের একদল ইবনি আব্বাসের মতকেই গ্রহণ করিয়াছেন। মসজিদ নির্মাণের গুরুত্ব ও ফজিলত -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১২৮. অনুচ্ছেদঃ মসজিদের মধ্যে ক্রয়-বিক্রয়, হারানো জিনিস খোঁজা এবং কবিতা আবৃত্তি করা মাকরূহ
৩২২. আমর ইবনি শুআইব [রঃ] হইতে পর্যায়ক্রমে তাহাঁর পিতা ও দাদার হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] মসজিদে কবিতা আবৃত্তি করিতে, কেনা-বেচা করিতে এবং জুমুআর দিন জুমুআর নামাযের আগে বৃত্তাকারে গোল হয়ে বসতে নিষেধ করিয়াছেন।
হাসান। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[৭৪৯]।এ অনুচ্ছেদে বুরাইদা, জাবির ও আনাস [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ আব্দুল্লাহ ইবনি আমর ইবনিল আস-এর হাদীসটি হাসান। আমর ইবনি শুআইব হলেন ইবনি মুহাম্মাদ ইবনি আবদুল্লাহ ইবনি আমর ইবনিল আস মুহাম্মাদ ইবনি ইসমাঈল বুখারী [রঃ] বলেন, আমি দেখেছি, ঈমাম আহমাদ, ইসহাক ও অন্যান্যরা নিজেদের মতের সপক্ষে আমর ইবনি শুআইবের হাদীসকে দলীল হিসাবে গ্রহণ করিয়াছেন। ঈমাম বুখারী [রঃ] আরও বলেন, মুহাম্মাদ ইবনি শুআইব [রঃ] তাহাঁর দাদা আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.]-এর হাদীস শুনেছেন। আবু ঈসা বলেনঃ কিছু লোক আমর ইবনি শুআইবের হাদীসের সমালোচনা করিয়াছেন এবং তাঁকে যঈফ বলেছেন। তাঁরা মনে করেন, আমর তাহাঁর দাদার লিখিত সহীফা [সংকলিত হাদীসগ্রন্থ] হইতে হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। মনে হয় তাঁরা একথাই বলিতে চান যে, আমর ইবনি শুআইব তাহাঁর দাদার নিকট হইতে এসব হাদীস শুনেননি। ইয়াহ্ইয়া ইবনি সাঈদ বলেছেন, আমাদের মতে আমর ইবনি শুআইবের হাদীসটি দুর্বল।একদল বিশেষজ্ঞ আলিম মসজিদে কেনা-বেচা করা মাকরূহ বলেছেন। আহমাদ ও ইসহাক একইরকম মত পোষণ করিয়াছেন। তাবিঈদের একদল বিদ্বান এ ব্যাপারে অনুমতি দিয়েছেন। নাবী [সাঃআঃ]-এর কয়েকটি হাদীস হইতে মসজিদে কবিতা আবৃত্তি করার অনুমতির কথা জানা যায়।এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস
১২৯. অনুচ্ছেদঃ যে মসজিদের ভিত্তি তাকওয়ার উপর প্রতিষ্ঠিত
৩২৩. আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, খুদরা গোত্রের এক ব্যক্তি এবং আমর ইবনি আওফ গোত্রের এক ব্যক্তি তাকওয়ার উপর প্রতিষ্ঠিত মসজিদ কোনটি-তা নিয়ে সন্দেহে পতিত হল। খুদরা গোত্রের লোকটি বলিল, এটা রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] মসজিদ [মাদীনার মসজিদ]। অপর ব্যক্তি বলিল, এটা কুবার মসজিদ। বিষয়টি নিয়ে তারা উভয়ে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকটে আসল। তিনি বললেনঃ এটা এই মসজিদ অর্থাৎ মসজিদে নাব্বী। এ মসজিদে অফুরন্ত কল্যাণ নিহিত রয়েছে।
সহিহ। মুসলিম। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহিহ। হাদীসের রাবী ওনাইস ইবনি আবী ইয়াহইয়া সম্পর্কে ইয়াহইয়া ইবনি সাঈদকে জিজ্ঞেস করা হলে উত্তরে তিনি বলেন, তার মধ্যে কোন সমস্যা নেই। তার ভাই উনাইস ইবনি আবী ইয়াহইয়া তার চাইতে অধিক সুদৃঢ়। মসজিদ নির্মাণের গুরুত্ব ও ফজিলত -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৩০. অনুচ্ছেদঃ কুবার মসজিদে নামাজ আদায় করা
৩২৪. উসাইদ ইবনি যুহাইর আল-আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি নাবী [সাঃআঃ]-এর সাহাবা ছিলেন। তিনি [রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]] বলেন, কুবার মসজিদে নামাজ আদায় করলে উমরা করার সমান নেকী পাওয়া যায়।
সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১৪১১]। এ অনুচ্ছেদে সাহল ইবনি হুনাইফ [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ উসাইদ-এর হাদীসটি হাসান গারীব। আবদুল হামীদ ইবনি জাফর হইতে আবু উসামা বর্ণিত এ হাদীসটি ব্যতীত উসাইদের আর কোন সহীহ্ হাদীস আমাদের জানা নেই। রাবী আবুল আবরাদের নাম যিয়াদ মাদীনী। মসজিদ নির্মাণের গুরুত্ব ও ফজিলত -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৩১. অনুচ্ছেদঃ কোন্ মসজিদ সবচেয়ে বেশি মর্যাদাপূর্ণ
৩২৫. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ আমার এই মসজিদে এক রাকআত নামাজ আদায় করা অন্য মাসাজিদে এক হাজার রাকআত নামাজ আদায় করা হইতেও উত্তম, কিন্তু মাসজিদুল হারাম ব্যতীত।
সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১৪০৪], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। আবু ঈসা বলেনঃ হাদীসের রাবী কুতাইবা তার সনদে উবাইদুল্লাহর উল্লেখ করেননি। বরং তার সনদ যাইদ ইবনি রাবাহ, তিনি আবু আব্দুল্লাহ আল-আগার তিনি আবু হুরাইরাহ হইতে। এ হাদীসটি হাসান সহিহ। এ হাদীসটি আবু হুরাইরার নিকট হইতে বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। আবু আব্দুল্লাহ্ আল-আগারের নাম সালমান। এ অনুচ্ছেদে আলী, মাইমূনা, আবু সাঈদ, জুবাইর ইবনি মুতইম, আবদুল্লাহ ইবনিয যুবাইর, ইবনি উমার ও আবু যার [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। মসজিদ নির্মাণের গুরুত্ব ও ফজিলত -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩২৬. আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তিনটি মসজিদ ছাড়া অন্য কোথাও [সাওয়াবের আশায়] সফর করা যায় না। এ মসজিদগুলো হল, মাসজিদুল হারাম, আমার এই মসজিদ এবং মাসজিদুল আকসা।
সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১৪০৯], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ।আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহিহ।মসজিদ নির্মাণের গুরুত্ব ও ফজিলত -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৩২. অনুচ্ছেদঃ মসজিদে পায়ে হেঁটে যাতায়াত
৩২৭. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ নামাযের জামাআত শুরু হয়ে গেলে তোমরা দৌঁড়ে বা তাড়াহুড়া করে এসো না, বরং ধীরেসুস্থে হেঁটে এসো। জামাআতে যতটুকু পাও আদায় করে নাও, যতটুকু ছুটে যায় তা সালামের পরে পুরা কর।
সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[৭৭৫], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এ অনুচ্ছেদে আবু কাতাদা, উবাই ইবনি কাব, আবু সাঈদ, যাইদ ইবনি সাবিত, জাবির ও আনাস [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ মসজিদে হেঁটে আসা সম্পর্কে আলিমদের মধ্যে মতের অমিল রয়েছে। এক দলের মতে, তাকবীরে উলা [তাকবীরে তাহরীমা] ছুটে যাওয়ার আশংকা হলে তাড়াতাড়ি আসবে। তাহাদের কারো কারো সম্পর্কে এ পর্যন্তও বর্ণিত আছে, তাঁরা দৌঁড়ে এসে নামাজ ধরতেন। অপর দল দৌঁড়ে আসাকে মাকরূহ বলেছেন। তাঁরা ধীরেসুস্থে, শান্তভাবে আসাই পছন্দ করিয়াছেন। ঈমাম আহমাদ ইসহাক এই মতের প্রবক্তা। তাঁরা উভয়ে বলেছেন, এ ব্যাপারে আবু হুরাইরার হাদীস অনুযায়ী আমল করিতে হইবে। ইসহাক বলেছেন, তাকবীরে উলা ছুটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলে দ্রুত হেঁটে এসে জামাআত ধরাতে কোন অপরাধ নেই। মসজিদ নির্মাণের গুরুত্ব ও ফজিলত -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩২৮. আল-হাসান ইবনি আলী হইতে বর্ণীতঃ
আল-হাসান ইবনি আলী বর্ণনা করেন, তিনি আব্দুর রাজ্জাক হইতে, তিনি মামার হইতে, তিনি যুহরী হইতে, তিনি সাঈদ ইবনিল মুসাইয়িব হইতে, তিনি আবু হুরাইরা হইতে তিনি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে, আবু সালামার সূত্রে বর্ণিত আবু হুরাইরার মতোই হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।
এই হাদীসটি ইয়াযিদ ইবনি যুরাই-এর হাদীসের চেয়ে অধিক সহিহ। মসজিদ নির্মাণের গুরুত্ব ও ফজিলত -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩২৯. ইবনি আবী উমার হইতে বর্ণীতঃ
ইবনি আবী উমার বর্ণনা করিয়াছেন সুফইয়ান হইতে, তিনি যুহরী হইতে, তিনি সাঈদ ইবনিল মুসাইয়্যিব হইতে তিনি আবু হুরাইরা হইতে, তিনি নাবী [সাঃআঃ] হইতে অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন।
এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
১৩৩. অনুচ্ছেদঃ মসজিদে বসা এবং নামাযের জন্য অপেক্ষা করার ফযিলত
৩৩০. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি যে পর্যন্ত মসজিদে নামাযের প্রতীক্ষায় থাকে, সে যেন নামাযের মধ্যেই থাকে, আর যতক্ষন পর্যন্ত তোমাদের কেউ মসজিদে থাকে ফেরেশতারা সে পর্যন্ত তার জন্য দুআ করিতে থাকে-
اللَّهُمَّ اغْفِرْ لَهُ اللَّهُمَّ ارْحَمْهُ
“আল্লাহুম্মাগফিরহু আল্লাহুম্মারহামহু।” হাদাস [ওযূ ছুটে] না যাওয়া পর্যন্ত তার জন্য দুআ চলতে থাকে। হাযরামাওতের এক ব্যক্তি বলিল, হে আবু হুয়াইরা! হাদাস কাকে বলে? তিনি বলিলেন, নিঃশব্দে বা স্বশব্দে বায়ু বের হওয়া।
সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[৭৯৯], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এ অনুচ্ছেদে আলী, আবু সাঈদ, আনাস, আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ ও সাহল ইবনি সাদ [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ আবু হুরাইরার হাদীসটি হাসান সহিহ। মসজিদ নির্মাণের গুরুত্ব ও ফজিলত -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
Leave a Reply