পেশাব পায়খানার দোয়া ও আদব

পেশাব পায়খানার দোয়া ও আদব

পেশাব পায়খানার দোয়া ও আদব >> সুনান তিরমিজি শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন

অধ্যায়ঃ ১, অনুচ্ছেদঃ (১-১৭)=১৭টি

১. অনুচ্ছেদঃ পবিত্রতা ছাড়া নামায ক্ববূল হয় না
২. অনুচ্ছেদঃ পবিত্রতা অর্জনের ফাযীলাত
৩. অনুচ্ছেদঃ পবিত্রতা নামাযের চাবি
৪. অনুচ্ছেদঃ মলত্যাগ করিতে যাওয়ার সময় যা বলবে
৫. অনুচ্ছেদঃ পায়খানা থেকে বের হবার পর যা বলবে
৬. অনুচ্ছেদঃ কিবলামুখী হয়ে পায়খানা বা পেশাবে বসা নিষেধ
৭. অনুচ্ছেদঃ উল্লিখিত ব্যাপারে অনুমিত সম্পর্কে
৮. অনুচ্ছেদঃ দাড়িয়ে পেশাব করা নিষেধ
৯. অনুচ্ছেদঃ দাড়িয়ে পেশাব করার অনুমতি সম্পর্কে
১০. অনুচ্ছেদঃ মলত্যাগ বা পেশাবের সময় গোপনীয়তা [পর্দা] অবলম্বন করা
১১. অনুচ্ছেদঃ ডান হাতে ইস্তিনজা করা মাকরূহ
১২. অনুচ্ছেদঃ পাথর বা ঢিলা দিয়ে ইস্তিনজা করা
১৩. অনুচ্ছেদঃ দুটি ঢিলা দিয়ে ইস্তিনজা করা
১৪. অনুচ্ছেদঃ যেসব বস্তু দিয়ে ইস্তিনজা করা মাকরূহ
১৫. অনুচ্ছেদঃ পানি দিয়ে ইস্তিনজা করা
১৬. অনুচ্ছেদঃ রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পায়খানার বেগ হলে তিনি দূরে চলে যেতেন
১৭. অনুচ্ছেদঃ গোসলখানায় পেশাব করা মাকরূহ

১. অনুচ্ছেদঃ পবিত্রতা ছাড়া নামায ক্ববূল হয় না

১. ইবনি উমার [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেনঃ পবিত্রতা ছাড়া নামায ক্ববূল হয় না। আর হারাম উপায়ে প্রাপ্ত মালের সাদকাও ক্ববূল হয় না। হান্নাদ বিগাইরি তুহূর –এর স্থলে ইল্লা বিতুহূর উল্লেখ করিয়াছেন।

সহিহ। ইবনি মাজাহ- [২৭২]। আবু ঈসা বলেন, এই অনুচ্ছেদে এ হাদীসটিই সবচাইতে সহিহ এবং উত্তম। এ অনুচ্ছেদে আবুল মালীহ, আবু হুরাইরা ও আনাস [রাঃআ:] হতেও বর্ণিত হাদীস রয়েছে।। উসামা পুত্র আবুল মালীহর নাম আমির। এও বলা হয় যে, তার নাম যাইদ ইবনি উসামা ইবনি উমাইর আল-হুযালী। এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

২. অনুচ্ছেদঃ পবিত্রতা অর্জনের ফাযীলাত

২. আবু হুরাইরা [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেছেনঃ যখন কোন মুমিন অথবা মুসলিম বান্দা ওযূ করে এবং মুখমণ্ডল ধোয়, তার মুখমণ্ডল হতে তার চোখের দ্বারা কৃত সকল গুনাহ পানির সাথে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সাথে দূর হয়ে যায়। যখন সে তার দুহাত ধোয়, তার দুহাতে কৃত সকল গুনাহ তার হাত হতে পানির সাথে অথবা পানির অবশিষ্ট বিন্দুর সাথে দূরীভূত হয়ে যায়। অতঃপর সে সকল গুনাহ হতে পবিত্র হয়ে যায়। সহিহ। আত্তালীকুর রাগীব- [১/৯৫]

আবু ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহিহ। এ হাদীসটি মালিক সুহাইল হতে, তিনি তাহাঁর পিতার সূত্রে এবং তিনি আবু হুরাইরা [রাঃআ:]-এর সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন। আবু সালিহ হচ্ছেন সুহাইলের পিতা। তাহাঁর নাম যাকওয়ান। আবু হুরাইরা [রাঃআ:]-এর আসল নাম নিয়ে মতবিরোধ আছে। কেউ বলেছেন, তাহাঁর নাম আবদুশ শামস, আবার কেউ বলেছেন তাহাঁর নাম আবদুল্লাহ ইবনি আমর। মুহাম্মাদ ইবনি ইসমাঈল [ইমাম বোখারী] এ ধরনের কথাই বলেছেন এবং এটাই সবচাইতে সহিহ।

এ অনুচ্ছেদে উসমান, সাওবান, সুনবিহী, আমর ইবনি আবাসা, সালমান ও আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাঃআ:] প্রমুখ সাহাবীদের বর্ণিত হাদীস রয়েছে। সুনবিহী যিনি আবু বাক্‌র [রাঃআ:]-এর নিকট হতে হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি রসুলুল্লাহ [সাঃআ:]-এর কাছ থেকে কোন হাদীস শুনেননি। তাহাঁর নাম আবদুর রাহমান ইবনি উসাইলা এবং ডাকনাম ছিল আবু আবদুল্লাহ। তিনি রসুলুল্লাহ [সাঃআ:]-এর সাথে দেখা করার জন্য বের হয়েছিলেন, কিন্তু রাস্তায় থাকাকালীন সময়েই রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] মারা যান। তিনি রসুলুল্লাহ [সাঃআ:]-এর বহু হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। আরেক সুনবিহী ইবনিল আসার আল-আহমাসী নামে পরিচিত। তিনি রসুলুল্লাহ [সাঃআ:]-এর সাহাবী। তাহাঁর বর্ণিত হাদীস হলঃ আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] কে বলিতে শুনেছিঃ পূর্ববর্তী উম্মাতদের নিকট আমি তোমাদের সংখ্যাধিক্যের গৌরব করব। অতএব আমি মারা যাবার পর তোমরা যেন একে অপরের সাথে ফিতনা-ফ্যাসাদে জড়িয়ে না পড়। এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩. অনুচ্ছেদঃ পবিত্রতা নামাযের চাবি

৩. আলী [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

নবি [সাঃআ:] বলেনঃ পবিত্রতা নামাযের চাবি; তাকবীর তার [নামাযের বাইরের সকল হালাল কাজ] হারামকারী এবং সালাম তার [নামাযের বাইরের সকল হালাল কাজ] হালালকারী।

হাসান সহিহ। ইবনি মাজাহ- [২৭৫] আবু ঈসা বলেন, এ অনুচ্ছেদে এ হাদীসটি সবচাইতে সহিহ এবং উত্তম। আবদুল্লাহ ইবনি মুহাম্মাদ ইবনি আকীল অতিশয় সত্যবাদী লোক। কিন্তু কিছু সংখ্যক বিশেষজ্ঞ তাহাঁর স্মরণশক্তির ব্যাপারে সমালোচনা করিয়াছেন। আবু ঈসা বলেনঃ আমি মুহাম্মাদ ইবনি ইসমাঈলকে [বোখারীকে] বলিতে শুনিয়াছি, আহমদ ইবনি হাম্বল, ইসহাক ইবনি ইবরাহীম এবং হুমাইদী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আবদুল্লাহ ইবনি মুহাম্মাদ ইবনি আকীলের হাদীসকে প্রমাণ হিসেবে নিয়েছেন। মুহাম্মাদ বলেন, তাহাঁর হাদীস বলিতে গেলে গ্রহণযোগ্যই। আবু ঈসা বলেনঃ এ অনুচ্ছেদে জাবির এবং আবু সাঈদ [রাঃআ:]-এর হাদীসও রয়েছে। এই হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ

৪. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেনঃ জান্নাতের চাবি হচ্ছে নামায, আর নামাযের চাবি হচ্ছে ওযূ।

হাদীসটির প্রথম অংশ জঈফ। ২য় অংশ সহিহ, পূর্বের সহিহ হাদীসের অংশ হওয়ার কারণে। –মিশকাত [২৯৪]। এই হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

৪. অনুচ্ছেদঃ মলত্যাগ করিতে যাওয়ার সময় যা বলবে

৫. আনাস ইবনি মালিক [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

আনাস ইবনি মালিক [রাঃআ:] থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পায়খানায় প্রবেশের কালে বলিতেনঃ

اللهم إني اعوذبك من الخبث والخبيث

ا হে আল্লাহ! শয়তান,জ্বিন ও সকল কষ্টদায়ক প্রাণী থেকে তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করি।

الخبث والبيث এর স্থলে الخبث والخبا ئث ও বর্ণিত আছে। এই হাদীছটির অন্যমত রাবী শুবা বলেন, তাহাঁর উস্তাদ আবদুল আযীয ইবনি সুহাইাব اعوذبك এর স্থলে এক সময় اعوذ بالله ও রিওয়ায়াত করিয়াছেন। – ইবনি মাজাহ ২৯৮, বুখারি ও মুসলিম

আবু ঈসা বলেনঃ এ অনুচ্ছেদে আলী, যাইদ ইবনি আরক্বাম, জাবির ও ইবনি মাসুদ [রাঃআ:]-এর হাদীস রয়েছে। আবু ঈসা বলেন, এ অনুচ্ছেদে আনাসের হাদীস সর্বাধিক সহিহ এবং সর্বোত্তম। যাইদ ইবনি আরক্বাম [রাঃআ:] বর্ণিত হাদীসের সনদে অমিল রয়েছে। হিশাম দাস্‌তোয়াঈ এবং সাঈদ ইবনি আবী আরুবাহ কাতাদাহ হতে বর্ণনা করিয়াছেন। সাঈদ বর্ণনা করিয়াছেন কাসিম ইবনি আউফ শাইবানী হতে তিনি যাইদ ইবনি আরক্বাম হতে। হিশাম দাস্‌তোয়াই কাতাদাহ হতে তিনি যাইদ ইবনি আরক্বাম হতে বর্ণনা করিয়াছেন শুবা এবং মামার বর্ণনা করিয়াছেন কাতাদাহ হতে তিনি নাযার ইবনি আনাস হতে। শুবা বলেন, যাইদ ইবনি আরক্বাম হতে। মামার বলেন, নাযার ইবনি আনাস হতে তিনি তার পিতা হতে তিনি নবি [সাঃআ:] হতে। আবু ঈসা বলেনঃ আমি ইমাম বোখারীকে এ সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, কাতাদা সম্ভবতঃ কাসিম এবং নাযার উভয়ের সুত্রে এ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। পেশাব পায়খানার দোয়া ও আদব -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৬. আনাস ইবনি মালিক [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

নবি [সাঃআ:] মলত্যাগ করিতে যাওয়ার সময় বলিতেনঃ

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْخُبْثِ وَالْخَبَائِثِ 

“হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে জঘন্য পুরুষ ও স্ত্রী জ্বিন শাঈতানের ক্ষতি হতে আশ্রয় চাই।

সহিহ। দেখুন পূর্বের হাদীস। আবু ঈসা বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ্‌। পেশাব পায়খানার দোয়া ও আদব -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫. অনুচ্ছেদঃ পায়খানা থেকে বের হবার পর যা বলবে

৭. আয়িশাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবি [সাঃআ:] যখন পায়খানা হতে বের হতেন তখন বলিতেনঃ

غُفْرَانَكَ

“[হে আল্লাহ!] আমি তোমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি”।

সহিহ। ইবনি মজাহ-[৩০০] আবু ইসা বলেন হাদিসটি হাসান গরীব। আমি শুধু ইউসুফ ইবনি আবু বুরদার সুত্রে ইসরাইলের বর্ণনার মাধ্যমেই এ হাদিস জানতে পেরেছি। আবু বুরদা ইবনি আবু মুসার নাম হল আমির ইবনি আব্দুল্লাহ ইবনি কাইস আল-আশআরী। এ অনুচ্ছেদ শুধু আয়েশা [রাঃআ:]-এর সুত্রে নবি [সাঃআ:] হতে বর্ণিত এ হাদিস ব্যতীত অন্য কোন হাদিস আমরা জানি না। পেশাব পায়খানার দোয়া ও আদব -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৬. অনুচ্ছেদঃ কিবলামুখী হয়ে পায়খানা বা পেশাবে বসা নিষেধ

৮. আবু আইয়ুব আনসারী [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসুল [সাঃআ:] বলেছেনঃ তোমরা যখন মলত্যাগ করিতে যাও, তখন মলত্যাগ বা পেশাবের সময় কিবলাকে সামনে বা পেছনে রেখে বসো না, বরং পূর্ব অথবা পশ্চিম দিকে ফিরে বস। আবু আইয়ুব [রাঃআ:] বলেন, আমরা সিরিয়াতে এসে দেখিতে পেলাম এখানকার পায়খানাগুলো কিবলার দিকে করে স্থাপিত। অতএব আমরা কিবলার দিকে ঘুরে যেতাম এবং আল্লাহ তাআলার কাছে ক্ষমা চাইতাম।

সহিহ। ইবনি মাজাহ-[৩১৮],বোখারী ও মুসলিম। আবু ঈসা বলেনঃ এ অনুচ্ছেদে আব্দুল্লাহ ইবনি হারিস, মাকিল ইবনি আবুল হাইসাম, আবু উমামা,আবু হুরাইরা ও সাহল ইবনি হুনাইফ [রাঃআ:]-এর হাদিসও রয়েছে। আবু ঈসা বলেন, এ অনুচ্ছেদে আবু আইয়ূবের হাদিসটি বেশি সহিহ এবং সর্বোত্তম। আবু আইয়ূবের নাম খালিদ ইবনি যাইদ এবং যুহরীর নাম মুহাম্মাদ ইবনি মুসলিম ইবনি উবাইদুল্লাহ ইবনি শিহাব আয-যুহরী। তার উপনাম আবু বাকর। আবুল ওলীদ আল-মাক্কী বলেন, আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনি ইদরীস শাফিঈ বলেছেন, নবি [সাঃআ:] বাণীঃ “মলত্যাগ বা পেশাবের সময় কবলাকে সামনে বা পেছনে রেখে বসবে না”- এ নিষেধাজ্ঞা খোলা ময়দানের জন্য। কিন্তু ঘরের মধ্যে মলত্যাগের সময় ক্বীবলাকে সামনে রেখে বসার অনুমুতি রয়েছে। ইসহাক ইবনি ইবরাহীমও একই রকম মত দিয়েছেন। আহমদ ইবনি হাম্বল বলেছেন, ক্বিবলাকে পেছনে রেখে মলত্যাগ – পেশাবে বসার ব্যাপারে নবি [সাঃআ:] এর অনুমতি রয়েছে কিন্তু ক্বিবলাকে সামনে করে বসা যাবেনা। তাহাঁর মতে, খোলা জায়গায় অথবা ঘেরা জায়গায় ক্বিবলাকে সামনে রেখে বসা ঠিক নয়। পেশাব পায়খানার দোয়া ও আদব -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭. অনুচ্ছেদঃ উল্লিখিত ব্যাপারে অনুমিত সম্পর্কে

৯. জাবির ইবনি আবদিল্লাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবি [সাঃআ:] কিবলাকে সামনে রেখে মলত্যাগ বা পেশাব করিতে নিষেধ করিয়াছেন। আমি তাহাঁর মৃত্যুর এক বছর আগে তাঁকে ক্বিবলার দিকে মুখ করে মলত্যাগ বা পেশাব করিতে দেখেছি।

সহিহ। ইবনি মাজাহ-[৩২৫] এ অনুচ্ছেদ আবু কাতাদা, আয়েশা ও আম্মার [রাঃআ:] হতে বর্ণিত হাদিসও রয়েছে। আবু ঈসা বলেন, এ অনুচ্ছেদে জাবিরের হাদিসটি হাসান গারীব। পেশাব পায়খানার দোয়া ও আদব -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১০. ইবনি লাহীআ হইতে বর্ণিতঃ

ইবনি লাহীআ আবু যুবাইরের সূত্রে, তিনি জাবিরের সুত্রে এবং আবু কাতাদার সূত্রে এ হাদীসটি বর্ণনা করছেন। তিনি [কাতাদা] রসুলুল্লাহ [সাঃআ:]-কে কিবলার দিকে ফিরে পেশাব করিতে দেখেছেন।

সনদ দুর্বল। কুতাইবা আমাদের কাছে এ তথ্য পরিবেশন করিয়াছেন। ইবনি লাহীআর হাদীসের চেয়ে জাবিরের হাদীস অধিকতর সহিহ। হাদীস বিশারদদের মতে, ইবনি লাহীআ দুর্বল রাবী। ইয়াহইয়া ইবনি সাঈদ আল-কাত্তান ও অন্যরা তাঁকে স্মরণশক্তিতে দুর্বল বলে সাব্যস্ত করিয়াছেন। পেশাব পায়খানার দোয়া ও আদব -এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১১. ইবনি উমার [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি একদিন উম্মুল মুমিনীন হাফসা [রাঃআ:]-এর ঘরের ছাদে উঠি। অতঃপর আমি নবি [সাঃআ:]-কে সিরিয়ার দিকে মুখ করে এবং কাবাকে পেছনে রেখে মলত্যাগ করিতে দেখি।

সহিহ। ইবনি মাজাহ-[৩২২],বোখারী ও মুসলিম। আবু ঈসা বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহিহ। পেশাব পায়খানার দোয়া ও আদব -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৮. অনুচ্ছেদঃ দাড়িয়ে পেশাব করা নিষেধ

১২. আয়িশাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,যে লোক তোমাদেরকে বলে, নবি [সাঃআ:] দাড়িয়ে পেশাব করিয়াছেন, তার কথা তোমরা বিশ্বাস কর না। তিনি সব সময় বসেই পেশাব করিতেন। সহিহ। ইবনি মাজাহ-[৩০৭]

এ অনুচ্ছেদে উমার ও বুরাইদা [রাঃআ:]-এর হাদীস রয়েছে। আবু ঈসা বলেন, এ অনুচ্ছেদে আইশার হাদীস অধিকতর হাসান ও সবচাইতে সহিহ। উমারের বর্ণিত হাদীস হলঃ ১২/১. উমার [রাঃআ:] বলেন, “রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] আমাকে দাঁড়িয়ে পেশাব করিতে দেখেন। তিনি বলেন হে উমার! দাঁড়িয়ে পেশাব কর না। [উমার বলেন,] তারপর আমি আর কখনও দাঁড়িয়ে পেশাব করিনি।” জঈফ, ইবনি মাজাহ [৩০৮] সিলসিলাহ আহাদীস যঈফাহ[৯৩৪]

আবু ঈসা বলেনঃ শুধুমাত্র আব্দুল কারীম ইবনিল মুখারিক এই হাদীসটিকে মারফু হিসেবে বর্ণনা করিয়াছেন। আর তিনি মুহাদ্দিসদের মতে জঈফ। আইয়ুব সাখতিয়ানী তাঁকে জঈফ বলেছেন এবং তাহাঁর সমালোচনা করিয়াছেন। অপর এক বর্ণনায় ইবনি উমার হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, উমার [রাঃআ:] বলেছেন, “আমি ইসলাম গ্রহণ করার পর কখনও দাঁড়িয়ে পেশাব করিনি”। এ হাদীসটি আবদুল কারীমের বর্ণিত হাদীস হতে অধিক সহিহ। এ অনুচ্ছেদে বুরাইদার হাদীস অরক্ষিত। দাঁড়িয়ে পেশাব করা নিষিদ্ধ হওয়ার তাৎপর্য হল, এটা প্রচলিত নিয়ম বিরোধী, তবে হারাম নয়। “আব্দুল্লাহ ইবনি মাসুদ [রাঃআ:] বলেনঃ তোমার দাঁড়িয়ে পেশাব করাটা একটা যুলুম ও বেয়াদবী।” পেশাব পায়খানার দোয়া ও আদব -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৯. অনুচ্ছেদঃ দাড়িয়ে পেশাব করার অনুমতি সম্পর্কে

১৩. হুযাইফা [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

নবি [সাঃআ:] কোন এক সম্প্রদায়ের আবর্জনা রাখার স্থানে আসেন এবং সেখানে দাঁড়িয়ে পেশাব করেন। অতঃপর আমি তাহাঁর জন্য পানি আনি। আমি অপেক্ষা করার জন্য একটু দূরে সরে দাঁড়াই। তিনি আমাকে ডাকলেন এবং আমি এসে তাহাঁর পায়ের সামনে দাঁড়ালাম। তিনি অজু করিলেন এবং মোজার উপর মাসিহ করিলেন।

সহিহ। ইবনি মাজাহ-[৩০৫] পেশাব পায়খানার দোয়া ও আদব -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১০. অনুচ্ছেদঃ মলত্যাগ বা পেশাবের সময় গোপনীয়তা [পর্দা] অবলম্বন করা

১৪. আনাস [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবি [সাঃআ:] যখন মলত্যাগ করার প্রয়োজন মনে করিতেন, তিনি মাটির কাছাকাছি না হওয়া পর্যন্ত বস্ত্র তুলতেন না।

সহিহ। সহিহ আবু দাউদ-[১১], সহীহাহ-[১০৭১] আবু ঈসা বলেন, অনুরূপ একটি হাদিস মুহাম্মদ ইবনি রাবীআ- আমাশের সূত্রে আনাস [রাঃআ:] –এর নিকট হতে বর্ণনা করিয়াছেন। ওয়াকী এবং আবু ইয়াহ ইয়া আল-হিম্মানী আমাশের সূত্রে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। কিন্তু আমাশ আনাসের জায়গায় ইবনি উমারের নাম উল্লেখ করিয়াছেন। ইবনি উমার [রাঃআ:] বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] মাটির কাছাকাছি না হওয়া পর্যন্ত পরিধানের বস্ত্র তুলতেন না। পেশাব পায়খানার দোয়া ও আদব -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১. অনুচ্ছেদঃ ডান হাতে ইস্তিনজা করা মাকরূহ

১৫. আবদুল্লাহ ইবনি আবী কাতাদা [রাঃআ:] হতে তাহাঁর পিতা হইতে বর্ণিতঃ

নবি [সাঃআ:] যে কোন ব্যক্তিকে ডান হাত দিয়ে নিজের লজ্জাস্থান স্পর্শ করিতে নিষেধ করিয়াছেন।

সহিহ। ইবনি মাজাহ-[৩১০], বোখারী ও মুসলিম। এ অনুচ্ছেদে আয়িশাহ, সালমান, আবু হুরাইবা ও সাহল ইবনি হুনাইফ [রাঃআ:] হতে বর্ণিত হাদিসও রয়েছে। আবু ঈসা বলেন, হাদিসটি হাসান সহিহ। আবু কাতাদাহ আনসারী তার নাম হারিস ইবনি রিবয়ী। বিদ্বান বা পণ্ডিত ব্যক্তিগণ ডান হাত দিয়ে শৌচ করা মাকরূহ বলেছেন। এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১২. অনুচ্ছেদঃ পাথর বা ঢিলা দিয়ে ইস্তিনজা করা

১৬. আবদুর রাহমান ইবনি ইয়াযীদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, সালমান [রাঃআ:]-কে বলা হল, আপনাদের নবি প্রতিটি বিষয় আপনাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন; এমনকি পায়খানা-পেশাবের শিষ্টাচারও? সালমান [রাঃআ:] বলেন, হ্যাঁ, তিনি আমাদের কিবলামুখী হয়ে পায়খানা-পেশাব করিতে, ডান হাত দিয়ে ইস্তিনজা করিতে, আমাদের কাউকে তিনটি ঢিলার কম দিয়ে ইস্তিনজা করিতে, এবং শুকনা গোবর অথবা হাড় দিয়ে ইস্তিনজা করিতে নিষেধ করিয়াছেন। সহিহ। ইবনি মাজাহ-[৩১৬], বোখারী ও মুসলিম।

আবু ঈসা বলেনঃ এ অনুচ্ছেদ আয়িশাহ, খুযাইমা ইবনি সাবিত, জাবির ও সায়িব [রাঃআ:] হতে বর্ণিত হাদিসও রয়েছে। আবু ঈসা বলেন, সালমান [রাঃআ:]- এর বর্ণিত হাদিস হাসান সহিহ। বেশির ভাগ সাহাবা ও তাবিঈর মতে ইস্তিনজায় ঢিলা দ্বারা সুন্দরভাবে পরিষ্কার হয়ে যায় তবে তাই যথেষ্ট, পানির দরকার নেই। সুফিয়ান সাওরী, ইবনিল মুবারক, ইমাম শাফিঈ, আহমেদ ও ইসহাকের এটাই মত। এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৩. অনুচ্ছেদঃ দুটি ঢিলা দিয়ে ইস্তিনজা করা

১৭. আবদুল্লাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবি [সাঃআ:] মলত্যাগ করিতে যাওয়ার সময় [আমাকে] বললেনঃ আমার জন্য তিন টুকরা পাথর নিয়ে আস। রাবী বলেন, আমি দুটি পাথরের টুকরা এবং একটি শুকনা গোবরের টুকরা নিয়ে আসলাম। তিনি পাথরের টুকরা দুটো রাখলেন এবং গোবরের টুকরাটা ফেলে দিলেন। তিনি বললেনঃ “এটা নাপাক জিনিস”।

সহিহ। বোখারী – [১৫৬]। আবু ঈসা বলেন, কাইস ইবনি রাবী এ হাদীসটি আবু ইসহাক হতে, তিনি আবু উবাইদা হতে, তিনি আবদুল্লাহ [রাঃআ:] হতে ইসরাঈল বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। মামার এবং আম্মার ইবনি যুরাইক আবু ইসহাক হতে, তিনি আলক্বামা হতে, তিনি আবদুল্লাহ [রাঃআ:] হতে এ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। যুহাইর আবু ইসহাক হতে, তিনি আবদুর রহমান ইবনি আসওয়াদ হতে, তিনি নিজ পিতা আসওয়াদ ইবনি ইয়াযীদ হতে তিনি আবদু্‌ল্লাহ [রাঃআ:] হতে এ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। যাকারিয়া ইবনি আবু যায়িদাহ আবু ইসহাকের সূত্রে, তিনি আবদুর রাহমান ইবনি ইয়াযীদের সূত্রে, তিনি আবদুল্লাহ [রাঃআ:]-এর সূত্রে এ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। হাদীসটির সনদে অমিল রয়েছে। আমর ইবনি মুররা বলেন, আমি আবু উবাইদা ইবনি আবদুল্লাহকে প্রশ্ন করলাম, আপনি কি আবদুল্লাহ [রাঃআ:] হতে কোন হাদীস বর্ণনা করেছে? তিনি বলিলেন, না।

আবু ঈসা বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনি আবদূর রাহমান দারিমীকে প্রশ্ন করলাম, আবু ইসহাকের সূত্রে বর্ণিত এসব রিওয়াতের মধ্যে কোনটি সবার্ধিক সহীহ্‌ ? তিনি এর কোন জবাব দিতে পারেননি। আমি এ সম্পর্কে মুহাম্মদকে [বোখারী] প্রশ্ন করলাম। তিনিও এর কোন জবাব দেননি। আবু ইসহাকের সূত্রে যুহাইর হতে বর্ণিত হাদীসকে তিনি বেশি সহিহ বলে গ্রহণ করিয়াছেন এবং সহিহ বোখারীতে তা সংকলন করিয়াছেন। আবু ঈসা বলেনঃ আমার মতে ইসহাকের সূত্রে ইসরাঈর ও কাইস হতে বর্ণিত হাদীস সবচাইতে সহিহ। কেননা আবু ইসহাক হতে বর্ণিত হাদীসসমূহ স্মরণ রাখার ব্যাপারে ইসরাঈল অন্যদের তুলনায় বেশি নির্ভরযোগ্য এবং সুপরিচিত রাবী। তাছাড়া কাইস ইবনি রাবী ও তাহাঁর অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন।

আবু ঈসা বলেনঃ আমি আবু মূসা মুহাম্মদ ইবনি মুসান্নাকে বলিতে শুনিয়াছি; তিনি বলেন, আমি আব্দুর রহমান ইবনি মাহদীকে বলিতে শুনিয়াছি, আবু ইসহাক হতে সুফিয়ানের যে সমস্ত হাদীসের ক্ষেত্রে আমি ইসরাঈলের উপর নির্ভর করেছি সেক্ষেত্রে আমি অনেক হাদীস হারিয়ে ফেলেছি। কেননা সুফিয়ানের বর্ণনা অধিক পরিপূর্ণ। আবু ঈসা বলেনঃ আবু ইসহাকের সূত্রে যুহাইরের বর্ণনা খুব বেশি শক্তিশালী নয়। কেননা তিনি তাহাঁর নিকট শেষ বয়সে হাদীস শুনেছেন। ইবনি হাম্বল বলেন, তুমি যদি যায়িদা ও যুহাইরের নিকট হাদীস শুনে থাক তাহলে অন্যের নিকট তা শুনার প্রয়োজন নেই। কিন্তু তুমি যদি যুহাইরকে আবু ইসহাকের হাদীস বর্ণনা করিতে শুন তাহলে তা অন্যের নিকট জিজ্ঞেস করে নিও। আবু ইসহাকের নাম আমর ইবনি আবদিল্লাহ সাবিয়ী হামদানী। আবু উবাইদা বিনু আবদিল্লাহ ইবনি মাসুদ তাহাঁর পিতার নিকটে কোন হাদীস শুনেননি। তার আসল নামও জানা যায়নি। এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৪. অনুচ্ছেদঃ যেসব বস্তু দিয়ে ইস্তিনজা করা মাকরূহ

১৮. আবদুল্লাহ ইবনি মাসুদ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেছেনঃ তোমরা শুকনা গোবর দিয়ে আর হাড় দিয়ে ইস্তিনজা করিবে না। কেননা এগুলো তোমাদের ভাই জ্বিনদের খাদ্য।

সহিহ। আল-ইরওয়া- [৪৬], মিশকাত-[৩৫০], যাঈফাহ-[১০৩৮] এর অধীনে। এ অনুচ্ছেদে আবু হুরাইরা, সালমান, জাবির ও ইবনি উমার [রাঃআ:]-এর সূত্রে বর্ণিত হাদীসও রয়েছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি ইসমাঈল ইবনি ইবরাহীম ও অন্যরা দাঊদ ইবনি আবী হিনদের সূত্রে, তিনি শাবী হতে, তিনি আলক্বামা হতে, তিনি আবদুল্লাহ [রাঃআ:] হতে বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি [আবদুল্লাহ] জ্বিনদের রাতে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিলেন। হাদীসটি বিস্তারিতভাবে বর্ণিত হয়েছে। শাবী বলেন, নবি [সাঃআ:] বলেছেন, তোমরা শুকনা গোবর অথবা হাড় দিয়ে ইস্তিনজা কর না। কেননা এটা তোমাদের ভাই জ্বিনদের খাদ্য।

হাফস ইবনি গিয়াসের বর্ণনা হতে ইসমাঈলের বর্ণনা বেশি সহিহ। এ হাদীসের উপরই মনীষীরা আমল করেন [গোবর ও হাড় দিয়ে শৌচ করেন না]। এ অনুচ্ছেদে জাবির ও ইবনি উমার [রাঃআ:]-এর সূত্রে বর্ণিত হাদীসও রয়েছে। এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৫. অনুচ্ছেদঃ পানি দিয়ে ইস্তিনজা করা

১৯. ‘আয়িশাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি [মহিলাদের] বলিলেন, তোমরা তোমাদের স্বামীদের পানি দ্বারা ইস্তিনজা করার নির্দেশ দাও। আমি [স্ত্রীলোক হিসাবে] তাহাদের [এ নির্দেশ দিতে] লজ্জাবোধ করছি। কেননা রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] ও পানি দিয়ে ইস্তিনজা করিতেন।

সহিহ। ইরওয়া- [৪২]। এ অনুচ্ছেদে জারীর ইবনি আবদিল্লাহ আল-বাজালী, আনাস ও আবু হুরাইরা [রাঃআ:] কর্তৃক বর্ণিত হাদীসও রয়েছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। মনীষীগণ এ হাদীসের উপরই আমল করেন। তাঁরা পানি দিযে ইস্তিনজা করা পছন্দ করেন, যদিও তাহাদের মতে ঢিলা দ্বারা ইস্তিনজা করলেই যথেষ্ট। তাঁরা সবাই পানি দ্বারা ইস্তিনজা করা উত্তম বলেছেন। সুফিয়ান সাওরী, ইবনিল মুবারক, শাফিঈ, আহমদ ইবনি হাম্বল ও ইসহাক এ মতই সঠিক মনে করেন। এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৬. অনুচ্ছেদঃ রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পায়খানার বেগ হলে তিনি দূরে চলে যেতেন

২০. মুগীরা ইবনি শুবা [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি কোন এক সফরে নবি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিলাম। নবি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মলত্যাগের প্রয়োজন হলে তিনি অনেক দূরে চলে গেলেন।

সহিহ। ইবনি মাজাহ- [৩৩০১]। এ অনুচ্ছেদে আবদুর রহমান ইবনি আবী কুরাদ, আবু ক্বাতাদা, জাবির, উবাইদ, আবু মূসা, ইবনি আব্বাস ও বিলাল ইবনিল হারিস [রাঃআ:] হতে বর্ণিত হাদীসও রয়েছে। আবু ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহিহ। নবি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট হতে আরো বর্ণিত আছেঃ তিনি সফরে থাকার সময় যেমন আশ্রয়স্থল খুঁজতেন তেমনি পেশাবের জন্য নরম জায়গা খুঁজতেন। আবু সালামর নাম আব্দুল্লাহ ইবনি আব্দর রহমান ইবনি আউফ আয্‌-যুহরী। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৭. অনুচ্ছেদঃ গোসলখানায় পেশাব করা মাকরূহ

২১. আবদুল্লাহ ইবনি মুগাফফাল [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

নবি [সাঃআ:] কোন ব্যক্তিকে নিজের গোসলখানায় পেশাব করিতে নিষেধ করিয়াছেন। তিনি আরো বলেছেনঃ [মানুষের মনে] বেশিরভাগ ওয়াসওয়াসা তা হতেই সৃষ্টি হয়।

প্রথম অংশ সহিহ, দ্বিতীয় অংশ জঈফ। ইবনি মাজাহ- [৩০৪]। এ অনুচ্ছেদে নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একজন সাহাবী হতে বর্ণিত হাদীসও রয়েছে। আবু ঈসা বলেন, এটা গারীব হাদীস। শুধু আশআস ইবনি আবদিল্লাহ এটাকে সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীস বলে বর্ণনা করিয়াছেন এবং তাকে অন্ধ আশআস বলা হয়। এক দল মনীষী গোসলখানায় পেশাব করা মাকরূহ বলেছেন। তাহাদের মতে, এর দ্বারা মানুষের সন্দেহপ্রবণতা সৃষ্টি হয়। অপর দলের মতে, তার অনুমতি আছে। এদরে মধ্যে ইবুন সীরীন অন্যতম। কেউ তাঁকে প্রশ্ন করিল, লোকেরা বলাবলি করছে, বেশিভাগ সন্দেহপ্রবণতা এখান হতেই সৃষ্টি হয় এটা কেমন করে? তিনি উত্তরে বলেছেনঃ আল্লাহ আমাদের প্রভু, তাহাঁর কোন শারীক নেই। ইবনিল মুবারাকের মতে, যদি গোসলখানার পানি গড়িয়ে যায় তাহলে সেখানে পেশাব করার অনুমতি আছে। আবু ঈসা বলেনঃ আহমদ ইবনি আবদাহ আল-আমুলী হিব্বান হতে, তিনি আব্দুল্লাহ ইবনি মুবারক হতে এ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। এই হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য


by

Comments

Leave a Reply