বিপদে, বাহনে চড়ার সময়, অবতরণ করার সময় ও সফরের দুআ
বিপদে, বাহনে চড়ার সময়, অবতরণ করার সময় ও সফরের দুআ >>আবুদ দাউদ শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
অধ্যায়ঃ ১৫, অনুচ্ছেদঃ ৭৯-১২১=৪৩টি
অনুচ্ছেদ-৭৯ঃ সফরে বের হলে যে দুআ পড়তে হয়
অনুচ্ছেদ-৮০ঃ বিদায়ের সময় দুআ
অনুচ্ছেদ-৮১ঃ বাহনে চড়ার সময় যে দুআ পড়তে হয়
অনুচ্ছেদ-৮২ঃ কোন স্থানে অবতরণ করে যে দুআ পড়তে হয়
অনুচ্ছেদ-৮৩ঃ রাতের প্রথমভাগে সফর করা অনুচিৎ
অনুচ্ছেদ-৮৪ঃ কোন দিন সফর করা উত্তম
অনুচ্ছেদ-৮৫ঃ ভোরবেলা সফরে বের হওয়া
অনুচ্ছেদ-৮৬ঃ একাকী সফর করা
অনুচ্ছেদ-৮৭ঃ সফরকারীদের মধ্য হইতে একজনকে নেতা বানানো
অনুচ্ছেদ-৮৮ঃ কুরআন সাথে নিয়ে শত্রু এলাকায় সফর করা
অনুচ্ছেদ-৮৯ঃ সাজোয়া বাহিনী, ছোট সেনাদল ও সফরসঙ্গী কতজন হওয়া উত্তম
অনুচ্ছেদ-৯০ঃ মুশরিকদেরকে ইসলামের দাওয়াত প্রদান
অনুচ্ছেদ-৯১ঃ শত্রুর জনপদে অগ্নিসংযোগ
অনুচ্ছেদ-৯২ঃ গুপ্তচর প্রেরণ
অনুচ্ছেদ-৯৩ঃ পথচারীদের জন্য [মালিকের অনুমতি ছাড়া] পথে পড়ে থাকা খেজুর ভক্ষন ও পশুর দুধ পান
অনুচ্ছেদ-৯৪ঃ গাছতলায় পড়ে থাকা ফল খাওয়া
অনুচ্ছেদ-৯৫ঃ যারা বলেন, দুধ দোহন করিবে না
অনুচ্ছেদ-৯৬ঃ নেতার আনুগত্য প্রসঙ্গে
অনুচ্ছেদ-৯৭ঃ সৈন্যদের এক স্থানে সমবেত থাকার নির্দেশ
অনুচ্ছেদ-৯৮ঃ শত্রুর মুখোমুখি হওয়ার আশা করা অনুচিত
অনুচ্ছেদ-৯৯ঃ শত্রুর মোকাবেলার সময় যে দুআ পড়তে হয়
অনুচ্ছেদ-১০০ঃ মুশরিকদের প্রতি ইসলাম গ্রহণের আহবান
অনুচ্ছেদ-১০১ঃ যুদ্ধে কৌশল অবলম্বন করা
অনুচ্ছেদ-১০২ঃ গোপনে নৈশ আক্রমণ করা
অনুচ্ছেদ-১০৩ঃ সেনাবাহিনীর পিছনে অবস্থান করা
অনুচ্ছেদ-১০৪ঃ মুশরিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ চলবে
অনুচ্ছেদ-১০৫ঃ কেউ দৃঢ়ভাবে সাজদাহ্য় পড়ে থাকলে তাহাকে হত্যা করা যাবে না
অনুচ্ছেদ-১০৬ঃ যুদ্ধক্ষেত্র হইতে পলায়ন করা সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-১০৭ঃ মুসলিম বন্দীকে কুফরী করিতে বাধ্য করা হলে
অনুচ্ছেদ-১০৮ঃ গুপ্তচর মুসলিম হলে তার বিধান
অনুচ্ছেদ-১০৯ঃ যিম্মী গুপ্তচর সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-১১০ঃ নিরাপত্তাপ্রাপ্ত অমুসলিম ব্যক্তির মুসলিমদের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তি
অনুচ্ছেদ-১১১ঃ দুশমনের মুখোমুখি হওয়ার উত্তম সময় কোনটি?
অনুচ্ছেদ-১১২ঃ যুদ্ধের সময় নীরব থাকার নির্দেশ
অনুচ্ছেদ-১১৩ঃ যুদ্ধের সময় বাহন থেকে অবতরণ
অনুচ্ছেদ-১১৪ঃ যুদ্ধের সময় ময়দানে অহংকার প্রদর্শন
অনুচ্ছেদ-১১৫ঃ শত্রু দ্বারা ঘেরাও হলে
অনুচ্ছেদ-১১৬ঃ আক্রমণের উদ্দেশ্যে ওঁৎ পেতে থাকা
অনুচ্ছেদ-১১৭ঃ যুদ্ধক্ষেত্রে সারিবদ্ধভাবে অবস্থান করা
অনুচ্ছেদ-১১৮ঃ শত্রু নিকটবর্তী হলে তরবারি চালানো
অনুচ্ছেদ-১১৯ঃ মল্লযুদ্ধ সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-১২০ঃ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কর্তন নিষেধ
অনুচ্ছেদ-১২১ঃ নারী হত্যা সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৭৯ঃ সফরে বের হলে যে দুআ পড়তে হয়
২৫৯৮. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সফরে যাওয়ার সময় এ দুআ পাঠ করিতেন, “হে আল্লাহ! আপনিই [আমাদের] সফরসঙ্গী এবং পরিবারের অভিভাবক। হে আল্লাহ! সফরের কষ্ট হইতে, বিপদাপদে পতিত হয়ে ফিরে আসা হইতে এবং সন্তান-সন্ততি ও সম্পদের উপর কুদৃষ্টি পড়া হইতে আমি আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। হে আল্লাহ! আপনি আমাদের জন্য যমিনকে অনুকূল ও সফরকে সহজ ও আরামদায়ক করে দিন।”
সফরের দুআ -এই হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
২৫৯৯. আবুয যুবাইর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আলী-আযদী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তাহাকে জানিয়েছেন, ইবনি উমার [রাদি.] তাহাকে শিক্ষা দিয়েছেন যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সফরে বের হওয়ার সময় উঠের পিঠে সোজা হয়ে বসে তিনবার আল্লাহু আকবার বলে এ আয়াত পড়তেনঃ
[আরবী]
“মহান পবিত্র তিনি, যিনি একে আমাদের অনুগত বানিয়েছেন, তা না হলে একে বশ করিতে আমরা সক্ষম ছিলাম না। নিশ্চয়ই আমাদেরকে আমাদের রব্বের নিকট ফিরে যেতে হইবে” [সূরা আয-যুখরুকঃ আয়াত ১৩-১৪]। অতঃপর এ দুআ পাঠ করিতেনঃ
[আরবী]
তিনি যখন ফিরে আসতেন, এ দুআই পাঠ করিতেন, শুধু এটুকু বাড়িয়ে বলিতেনঃ
[আরবী] নাবী [সাঃআঃ] ও তাহাঁর সেনাবাহিনী কোন উঁচু স্থানে উঠার সময় আল্লাহু আকবার বলিতেন এবং নীচে নামার সময় সুবহানাল্লাহ বলিতেন। অতঃপর এভাবেই [শুকরিয়া] সলাতে নির্ধারণ হয়।
সফরের দুআ -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৮০ঃ বিদায়ের সময় দুআ
২৬০০. ক্বাযাআহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, ইবনি উমার [রাদি.] আমাকে বলিলেন, এসো তোমাকে ঐভাবে বিদায় জানাই, যেভাবে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে বিদায় দিয়েছেনঃ “আমি আল্লাহর নিকট তোমার দীন, আমানাত ও সর্বশেষ আমলের হিফাযাতের জন্য দুআ করছি।”
সফরের দুআ -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৬০১. আবদুল্লাহ আল-খাত্বমী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] কোন সেনাবাহিনীকে বিদায় দেয়ার সময় বলিতেনঃ “আমি আল্লাহর নিকট তোমাদের দীন, আমানাত ও সর্বশেষ আমলের হিফাযাতের জন্য দুআ করছি”।
সফরের দুআ -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৮১ঃ বাহনে চড়ার সময় যে দুআ পড়তে হয়
২৬০২. আলী ইবনি রবীআহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি দেখলাম, আলী [রাদি.] এর কাছে আরোহণের একটি পশু আনা হলে তিনি এর পা-দানিতে পা রাখতেই বলিলেন, বিসমিল্লাহ এবং এর পিঠে চড়ে সোজা হয়ে বসে বলিলেন, আল-হামদুলিল্লাহ”। অতঃপর তিনি এ আয়াত পড়লেনঃ “মহান পবিত্র তিনি, যিনি একে আমাদের অনুগত বানিয়েছেন, তা না হলে একে বশ করিতে আমরা সক্ষম ছিলাম না। নিশ্চয়ই আমাদেরকে আমাদের রব্বের নিকট ফিরে যেতে হইবে” [সূরাহ আয-যুখরুক ঃ আয়াত ১৩-১৪]। পুনরায় তিনি তিনবার আল-হামদুলিল্লাহ এবং তিনবার আল্লাহু আকবার বলিলেন। অতঃপর বলিলেন, “[হে আল্লাহ!] আপনার পবিত্রতা ঘোষণা করছি, আমিই আমার উপর যুলুম করেছি, আপনি আমাকে ক্ষমা করুন, আপনি ছাড়া কেউই গুনাহ ক্ষমা করিতে পারে না”। অতঃপর তিনি হেসে দিলেন। তাহাকে জিজ্ঞেস করা হলো, হে আমীরুল মুমিনীন! আপনি কেন হাসলেন? তিনি বলিলেন, আমি যেরূপ করলাম, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কেও এরুপ করিতে দেখেছি। তিনি যখন হেসেছিলেন তখন আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি হাসলেন কেন? তিনি বলিলেনঃনিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালক তাহাঁর বান্দার উপর সন্তুষ্ট হন যখন সে বলেঃ “[হে আমার রব্ব!] আপনি আমার গুনাহ ক্ষমা করুন”। আর বান্দা তো জানে যে, আমি [আল্লাহ] ছাড়া কেউই গুনাহ ক্ষমা করিতে পারে না।
সফরের দুআ -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৮২ঃ কোন স্থানে অবতরণ করে যে দুআ পড়তে হয়
২৬০৩. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সফর অবস্থায় রাত ঘনিয়ে এলে বলিতেনঃ “হে যমীন! আমার ও তোমার রব্ব আল্লাহ। আমি আল্লাহর নিকট তোমার অনিষ্ট হইতে, তোমার ভেতরের খারবী হইতে, তোমার মধ্যে সৃষ্ট অনিষ্ট হইতে এবং তোমার বুকে যেসব অনিষ্ট চলাফেরা করে তা হইতে আশ্রয় চাইছি। আমি আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাই সিংহ, বিষধর কালো সাপ, বিচ্ছু, তোমার শহরে অনিষ্ট জন্মদানকারী অধিবাসী ও এদের বংশধরের অনিষ্ট হইতে”।
সফরের দুআ -এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৮৩ঃ রাতের প্রথমভাগে সফর করা অনুচিৎ
২৬০৪. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ সূর্য ডুবে যাওয়ার পর রাতের প্রাথমিক অন্ধকার দূর না হওয়া পর্যন্ত তোমাদের গৃহপালিত জন্তু ছাড়বে না। কারণ সূর্য ডোবার সাথে সাথে রাতের প্রাথমিক অন্ধকার দূর না হওয়া পর্যন্ত শয়তানেরা বিপর্যয় সৃষ্টি করিতে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।
সফরের দুআ -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৮৪ঃ কোন দিন সফর করা উত্তম
২৬০৫. কাব ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বৃহস্পতিবার ছাড়া অন্য দিন খুব কমই সফরে যেতেন।
সফরের দুআ -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৮৫ঃ ভোরবেলা সফরে বের হওয়া
২৬০৬. সাখর আল-গামিদী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ “হে আল্লাহ! আপনি আমার উম্মাতকে ভোরের বরকত দান করুন”। তিনি কোন ক্ষুদ্র বা বিশাল বাহিনীকে কোথাও প্রেরণ করলে দিনের প্রথমভাগেই পাঠাতেন। বর্ণনাকারী সাখর [রাদি.] একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি তার পণ্যদ্রব্য দিনের প্রথমভাগে [ভোরে] পাঠাতেন, ফলে তিনি সম্পদশালী হয়েছিলেন এবং এভাবে তিনি অনেক সম্পদের অধিকারী হয়েছিলেন।
সফরের দুআ -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৮৬ঃ একাকী সফর করা
২৬০৭. আমর ইবনি শুআইব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও তার দাদা হইতে বর্ণীতঃ
তিনি [দাদা] বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ একাকী সফরকারী হচ্ছে একটি শয়তান, আর একত্রে দুইজন সফরকারী দুটি শয়তান। তবে একত্রে তিনজন সফরকারীই হচ্ছে প্রকৃত কাফেলা।
সফরের দুআ -এই হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-৮৭ঃ সফরকারীদের মধ্য হইতে একজনকে নেতা বানানো
২৬০৮. আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ তিন ব্যক্তি একত্রে সফর করলে তারা যেন নিজেদের মধ্য হইতে একজনকে আমীর বানায়।
সফরের দুআ -এই হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
২৬০৯. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ তিন ব্যক্তি একত্রে সফর করলে তারা যেন তাহাদের একজনকে আমীর নিযুক্ত করে। নাফি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আবু সালামাহকে বলিলেন, তাহলে আপনি আমাদের নেতা।
সফরের দুআ -এই হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
অনুচ্ছেদ-৮৮ঃ কুরআন সাথে নিয়ে শত্রু এলাকায় সফর করা
২৬১০
নাফি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কুরআন সাথে নিয়ে শত্রু এলাকায় সফর করিতে নিষেধ করেছেন। [মধ্যকারী বর্ণনাকারী] মালিক বলেন, আমার ধারণা শত্রুর হাতে পড়ে কুরআন অবমাননার আশঙ্কায় তিনি [সাঃআঃ] নিষেধ করেছেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৮৯ঃ সাজোয়া বাহিনী, ছোট সেনাদল ও সফরসঙ্গী কতজন হওয়া উত্তম
২৬১১
ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ সফরে উত্তম হচ্ছে চারজন সঙ্গী হওয়া, ক্ষুদ্রবাহিনীতে চারশো এবং সেনাবাহিনীতে চার হাজার সৈন্য হওয়া উত্তম। আর বারো হাজার সৈন্য হলে সংখ্যা সল্পতার কারণে পরাজিত হয় না।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৯০ঃ মুশরিকদেরকে ইসলামের দাওয়াত প্রদান
২৬১২
সুলাইমান ইবনি বুরাইদাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার পিতা হইতে বর্ণীতঃ
তিনি [বুরাইদাহ] বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কাউকে কোন সামরিক অভিযানের অধিনায়ক নিযুক্ত করে পাঠানোর সময় তাহাকে বিশেষভাবে আল্লাহকে ভয় করার এবং অধীনস্থ মুসলিম সৈন্যদের সাথে উত্তম ব্যবহার করার উপদেশ দিতেন। তিনি আরো বলিতেনঃ তুমি মুশরিক বাহিনীর সম্মুখীন হলে তাহাদেরকে তিনটি বিষয়ের যে কোন একটি গ্রহনের আহ্বান জানাবে। অতঃপর তারা যে কোন একটি গ্রহণ করলে তুমি তা মেনে নিবে এবং তাহাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হইতে বিরত থাকিবে। [এক] তুমি তাহাদেরকে ইসলাম গ্রহণের আহ্বান জানাবে। যদি তারা এটা মেনে নেয় তাহলে তাহাদের ইসলাম গ্রহণ মেনে নিবে এবং যুদ্ধ হইতে বিরত থাকিবে। এরপর তাহাদেরকে নিজ শহর ছেড়ে মুহাজিরদের শহরে হিজরাত করার আহ্বান জানাবে এবং তাহাদেরকে জানাবে, তারা এরুপ করলে তারাও মুহাজিরদের ন্যায় সুযোগ-সুবিধা পাবে এবং মুহাজিরদের উপর যে দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে তাহাদের উপরও তা বর্তাবে। আর যদি তারা দেশ ত্যাগে রাজী না হয় এবং নিজেদের দেশেই থাকতে চায়, তাহলে তাহাদের জানিয়ে দিবে, তাহাদের মর্যাদা বেদুঈন মুসলিমদের মত। তাহাদের উপরও আল্লাহর সেসব হুকুম প্রয়োগ হইবে যা মুমিনদের উপর হয়েছে। আর তারা মুসলিম বাহিনীর সাথে একত্রে জিহাদ না করলে তার ফাই ও গনিমাতের কোন অংশ লাভ করিবে না। [দুই] তারা ইসলাম গ্রহনে অস্বীকৃতি জানালে তাহাদের জিয্য়া প্রদানের আহ্বান জানাবে। তারা এটা মেনে নিলে তা অনুমোদন করিবে এবং যুদ্ধ হইতে বিরত থাকিবে। [তিন] তারা জিয্য়া প্রদানে অস্বীকার করলে আল্লাহর সাহায্য চাইবে এবং তাহাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাবে। আর তুমি যদি কোন দুর্গবাসীদের অবরোধ করো এবং তারা যদি আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী দুর্গ থেকে নামার জন্য তোমার নিকট আবেদন করে, তাহলে তুমি তাহাদের সেই আবেদন মানবে না। কারণ আল্লাহ তাহাদের বিষয়ে কি ফায়সালা দিবেন তা তোমরা অবহিত নও। বরং তোমরা নিজেদের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে তাহাদেরকে বাধ্য করিবে এবং তোমরা তোমাদের সুবিধামত তাহাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে। নুমান ইবনি মুকাররিন [রাদি.]-ও এটি নাবী [সাঃআঃ] এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৬১৩
সুলাইমান ইবনি বুরাইদাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার পিতা হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমারা আল্লাহর নাম নিয়ে আল্লাহর পথে যুদ্ধ করো। যারা আল্লাহর পথে কুফরী করেছে তাহাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো। তোমারা যুদ্ধ করে যাও কিন্তু বিশ্বাসঘাতকতা করো না, ওয়াদা ভঙ্গ করো না, গনীমাতের মাল আত্মসাৎ করো না, লাশ বিকৃত করো না এবং শিশুদের হত্যা করো না।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৬১৪
আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমরা যুদ্ধ করার সময় আল্লাহর নাম নিবে, আল্লাহর উপর ভরসা করিবে এবং আল্লাহর রাসূলের মিল্লাতের উপর অটল থাকিবে। অতি বৃদ্ধ, শিশু-কিশোর ও নারীদের হত্যা করিবে না এবং গনীমাতের মাল আত্মসাৎ করিবে না। তোমাদের গনীমাত একত্রে জড়ো করিবে, নিজেদের অবস্থার সংশোধন করিবে এবং সৎ কাজ করিবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালবাসেন।
দুর্বলঃ যয়ীফ আল-জামিউস সাগীর [১৩৪৬], মিশকাত [৩৯৫৬]।
হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৯১ঃ শত্রুর জনপদে অগ্নিসংযোগ
২৬১৫
ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন ইয়াহুদী গোএের বনী নাদীরের বুওয়াইরাহ নামক খেজুর বাগান জ্বালিয়ে দেন ও কেটে ফেলেন, তখন মহান আল্লাহ এ আয়াত অবতীর্ণ করিলেনঃ “তোমরা যে খেজুরগাছ গুলো কেটেছো বা যেগুলো এর শিকড়ের উপর দাঁড়িয়ে থাকতে দিয়েছো, তা আল্লাহর নির্দেশেই ছিল। এটা ছিল পাপীদের লাঞ্ছিত করার জন্য” [সূরাহ আল-হাশরঃ আয়াত ৫]।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৬১৬
আয-যহূরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
উরওয়াহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমাকে উসামাহ ইবনি যায়িদ [রাদি.] বলিয়াছেন, একদা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাকে এক অভিযানের দায়িত্ব দিয়ে তার কাছ থেকে এ মর্মে প্রতিশ্রুতি নিলেন যে, তিনি বলিলেনঃ তুমি খুব ভোরে উবনা নামক জনপদে আক্রমণ করিবে এবং তা অগ্নিসংযোগ করিবে।
দুর্বলঃ যয়ীফ ইবনি মাজাহ [২৮৪৩]
হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২৬১৭
আবদুল্লাহ ইবনি আমর আল-গাযযী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি শুনিয়াছি আবু মুসহিরকে উবনা নামক জনপদ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলিলেন, আমরা তো ফিলিস্তীনের ইউবনা নামক স্থানকেই উবনা বলে জানি।
তাহকিক আলবানী – হাদিসের তাহকিকঃ মাক্কতু
হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
অনুচ্ছেদ-৯২ঃ গুপ্তচর প্রেরণ
২৬১৮
আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আবু সুফিয়ানের কাফেলার গতিবিধি পর্যবেক্ষণের জন্য নাবী [সাঃআঃ] বুসাইসা নামক এক ব্যক্তিকে গুপ্তচর হিসেবে পাঠালেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৯৩ঃ পথচারীদের জন্য [মালিকের অনুমতি ছাড়া] পথে পড়ে থাকা খেজুর ভক্ষন ও পশুর দুধ পান
২৬১৯
সামুরাহ ইবনি জুনদুব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমাদের কেউ কোন পশুপালের কাছ দিয়ে যাওয়ার সময় সেখানে যদি মালিককে উপস্থিত পায় তাহলে তার নিকট অনুমতি প্রার্থনা করিবে। সে অনুমতি দিলে দুধ দোহন করে পান করিবে। আর যদি সেখানে মালিক উপস্থিত না পায় তাহলে তিনবার ডাক দিবে। তাতে কেউ সাড়া দিলে অনুমতি চাইবে। আর কেউ সাড়া না দিলে দুধ দোহন করে পান করিবে, কিন্তু সঙ্গে নিতে পারবে না।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৬২০
আব্বাস ইবনি শুরাহবীল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি ক্ষুধায় কাতর হয়ে মাদীনাহর একটি বাগানে ঢুকে খেজুরের খোশা পরিষ্কার করে তা খেলাম এবং কিছু খেজুর কাপড়ে বেঁধে নিলাম। বাগানের মালিক এসে আমাকে মারধর করলো এবং আমার কাপড় ছিনিয়ে নিলো। আমি রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] কাছে এসে ঘটনাটি বলিলাম। তিনি বাগানের মালিককে [ডেকে এনে] বলিলেনঃ ছেলেটি অজ্ঞ ছিল তুমি তাঁকে জ্ঞান দাওনি। সে ক্ষুধার্ত ছিল তুমি খাওয়াওনি। তিনি তাহাকে আমার কাপড় ফেরত দেয়ার নির্দেশ দিলে বাগানের মালিক তা ফেরত দিলো এবং আমাকে এক কিংবা অর্ধ ওয়াসক খাদ্য দিলো।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৬২১
আবু বিশর হইতে বর্ণীতঃ
এই সানাদে পূর্বোক্ত হাদিসের অনুরূপ অর্থের হাদিস বর্ণিত।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৯৪ঃ গাছতলায় পড়ে থাকা ফল খাওয়া
২৬২২
আবু রাফি ইবনি আমর আল-গিফারীর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] চাচা হইতে বর্ণীতঃ
তিনি [চাচা] বলেন, আমি বালক বয়সে আনসারদের খেজুর গাছে ঢিল ছুঁড়ে মারতাম। একদা আমাকে নাবী [সাঃআঃ] এর নিকট ধরে নিয়ে আসা হলে তিনি বলিলেনঃ হে বালক! তুমি খেজুর গাছে ঢিল ছুঁড়ো কেন? সে বললো, খেজুর খাওয়ার জন্য। তিনি বলিলেনঃ ঢিল ছুঁড়ে খেজুর পেড়ো না, বরং গাছতলায় পড়ে থাকা খেজুর খাও। অতঃপর তিনি তার মাথায় হাত বুলিয়ে বলিলেনঃ হে আল্লাহ! এর পেট ভরে দিন, একে পরিতৃপ্ত করুন।
দুর্বলঃ যয়ীফ সুনান আত-তিরমিজি [২২০/১৩১২] এর কাছাকাছি শব্দে।
হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৯৫ঃ যারা বলেন, দুধ দোহন করিবে না
২৬২৩
ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, কেউ যেন মালিকের অনুমতি ছাড়া মালিকের পশুর দুধ দোহন না করে। তোমাদের কেউ কি পছন্দ করিবে যে, কেউ তার গুদাম ঘরে ঢুকে তা ভেঙ্গে তার খান্যদ্রব্য লুটপাট করুক? বস্তুর লোকদের পশুর স্তনসমূহে তাহাদের খাবার সঞ্চিত থাকে। কাজেই মালিকের অনুমতি ছাড়া তার পশুর দুধ দোহন করিবে না।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৯৬ঃ নেতার আনুগত্য প্রসঙ্গে
২৬২৪
ইবনি জুরাইজ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
[আল্লাহর বাণী] “হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য করো, রসূলের আনুগত্য করো এবং তোমাদের নেতৃবৃন্দের প্রতিও” [সূরাহ আন-নিসাঃ আয়াত ৫৯]। নাবী [সাঃআঃ] আবদুল্লাহ ইবনি ক্বায়িস ইবনি আদী [রাদি.] কে একটি অভিযানে ক্ষুদ্র বাহিনীর সেনাপতি করে পাঠান। এ সময় আবদুল্লাহকে উপলক্ষ করে এ আয়াত অবতীর্ণ হয়।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৬২৫
আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একটি সেনাদল প্রেরণ করিলেন এবং একজনকে এর সেনাপতি বানিয়ে তাহাদেরকে সেনাপতির কথা শোনার ও আনুগত্য করার নির্দেশ দিলেন। অতঃপর ঐ সেনাপতি আগুন জ্বালিয়ে তাহাদেরকে তাতে ঝাঁপ দেয়ার নির্দেশ দিলেন। একদল লোক তাতে ঝাঁপ দিতে অস্বীকার করে বললো, আমরা তো আগুন থেকেই পালিয়াছি [জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচার জন্যই ইসলাম কবুল করেছি]। আবার কিছু লোক আগুনে ঝাঁপ দেয়ার মনস্থ করলো। বিষয়টি নাবী [সাঃআঃ] এর কানে পৌঁছালে তিনি বলিলেনঃ তারা যদি আগুনে ঝাঁপ দিতো তাহলে চিরস্থায়ী জাহান্নামী হয়ে যেতো। তিনি আরো বলিলেনঃ আল্লাহর অবাধ্যতায় কারোর আনুগত্য নেই। আনুগত্য কেবল সৎ কাজে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৬২৬
আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ নেতা পাপ কাজের নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত তার নির্দেশ শোনা এবং আনুগত্য করা মুসলিম ব্যক্তির অবশ্য কর্তব্য, চাই তার মনঃপূত হোক বা না হোক। আর নেতা যখন পাপকাজের নির্দেশ দিবে তখন তার নির্দেশ শোনা ও আনুগত্য করা যাবে না।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৬২৭
উক্ববাহ ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] একটি ক্ষুদ্র সেনাদল অভিযানে পাঠালেন। আমি তাহাদের একজনকে একটি তরবারি দিলাম। লোকটি অভিযান থেকে ফিরে এসে আমাকে বললো, তুমি যদি দেখিতে যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের [অযোগ্যতার কারণে] কিভাবে তিরস্কার করেছেন! তিনি বলিয়াছেনঃ আমি যখন তোমাদের একজনকে [অধিনায়ক করে] পাঠালাম, অথচ সে আমার নির্দেশ মোতাবেক চললো না, তখন আমার নির্দেশ কার্যকর করার জন্য অন্য কাউকে কেন তার স্থলাভিষিক্ত করলে না। তোমরা কি এতই অপারগ ছিলে?
হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-৯৭ঃ সৈন্যদের এক স্থানে সমবেত থাকার নির্দেশ
২৬২৮
আবু সালাবাহ আল-খুশানী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] সাথে সেনাবাহিনীর লোকজন যখন কোন স্থানে [বিশ্রামের জন্য] নামতেন তখন তারা বিভিন্ন গিরিপথে ও উপত্যকায় ছড়িয়ে পড়তেন। সেজন্য রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ এসব গিরিপথে ও পাহাড়ী উপত্যকায় তোমাদের বিভক্ত হয়ে পড়াটা শয়তানের ষড়যন্ত্র। [বর্ণনাকারী বলেন] এরপর থেকে যে স্থানেই তিনি নামতেন, দলের লোকজন একত্রে অবস্থান করতো। এমনকি এরূপ বলা হতো যে, যদি একটি কাপড় তাহাদের উপর বিছিয়ে দেয়া হয় তাহাদের সবাইকে এর মধ্যে ঢেকে নেয়া সম্ভব।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৬২৯
সাহল ইবনি মুআয ইবনি আনাস আল-জুহানীর হইতে তার পিতা হইতে বর্ণীতঃ
তিনি [মুআয] বলেন, আমি আল্লাহর নাবীর [সাঃআঃ] সাথে অমুক অমুক যুদ্ধে যোগদান করেছি। একদা সৈনিকেরা [বিক্ষিপ্তভাবে তাঁবু ফেলে] স্থান সংকীর্ণ ও পথ বন্ধ করে দিয়েছিল। আল্লাহর নাবী [সাঃআঃ] এক সাহাবীকে লোকদের মাঝে ঘোষণা দেয়ার জন্য প্রেরণ করলেনঃ যে লোক স্থান সংকীর্ণ করেছে এবং যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে দিয়াছে, তার জিহাদ নেই।
হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
২৬৩০
সাহল ইবনি মুআয [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার পিতার সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা আল্লাহর নাবীর [সাঃআঃ] সাথে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি। এরপর বাকী অংশ উপরের হাদিসের অনুরূপ।
আমি এটি সহিহ এবং যঈফেও পাইনি।
হাদিসের তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
অনুচ্ছেদ-৯৮ঃ শত্রুর মুখোমুখি হওয়ার আশা করা অনুচিত
২৬৩১
উমার ইবনি উবাইদুল্লাহর মুক্ত দাস সালিম আবুন নাদর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি উমারের সচিব ছিলেন। তিনি বলেন, উমার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হারূরার যুদ্ধে রওয়ানা হলে আবদুল্লাহ ইবনি আবু আওফা [রাদি.] তাহাকে পত্র লিখে জানালেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর কোন কোন যুদ্ধে শত্রুর সম্মুখীন হয়েছেন, তিনি বলিয়াছেনঃ “হে লোকসকল! তোমরা শত্রুবাহিনীর সাক্ষাৎ কামনা করো না, বরং আল্লাহর কাছে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রার্থনা করো। যখন তোমরা শত্রুর সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হইবে, ধৈর্য ধারণ করিবে। আর জেনে রাখো, তরবারির ছায়ার নিচে জান্নাত”। অতঃপর তিনি বলিলেনঃ “হে আল্লাহ! আপনি কিতাব অবতীর্ণকারী, মেঘমালা পরিচালনাকারী এবং শত্রুবাহিনীকে পর্যুদন্তকারী, আপনি তাহাদেরকে পরাজিত করুন এবং তাহাদের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য করুন।”
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৯৯ঃ শত্রুর মোকাবেলার সময় যে দুআ পড়তে হয়
২৬৩২
আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যুদ্ধ আরম্ভের সময় বলিতেনঃ “হে আল্লাহ! আপনিই আমার শক্তির উৎস ও সাহায্যকারী, আপনার সাহায্যেই আমি কৌশল অবলম্বন করি, আপনার সাহায্যেই বিজয়ী হই এবং আপনার সাহায্যেই যুদ্ধ করি”।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১০০ঃ মুশরিকদের প্রতি ইসলাম গ্রহণের আহবান
২৬৩৩
ইবনি আওন [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি যুদ্ধের সময় মুশরিকদের ইসলাম গ্রহণের দাওয়াত দেয়া সম্পর্কে জানতে চেয়ে নাফি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এর নিকট পত্র লিখলাম। তিনি আমাকে লিখে জানালেন, এ নিয়ম ছিল ইসলামের প্রাথমিক যুগে। নাবী [সাঃআঃ] বনী মুসত্বালিকের উপর অতর্কিত আক্রমণ চালিয়েছেন। অথচ তারা মুসলিমদের এরূপ আক্রমণ সম্পর্কে কিছুই জানতো না। তাহাদের পশুগুলো তখন পানি পান করছিল। এমতাবস্থায় অতর্কিত আক্রমণ করে তিনি তাহাদের যুদ্ধে সক্ষম ব্যক্তিদের হত্যা করিলেন এবং অবশিষ্টদের বন্দী করিলেন। আর সেদিনই জুয়াইরিয়্যাহ বিনতুল হারিস তার হাতে বন্দী হন। এ ঘটনা আমার কাছে আবদুল্লাহ [রাদি.] বর্ণনা করেছেন। তিনি সেদিন ঐ সৈন্যবাহিনীতে শরীক ছিলেন। আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, এটি একটি উত্তম হাদিস। ইবনি আওন [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হাদিসটি নাফি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্রে বর্ণনা করেছেন। এ হাদিস বর্ণনায় তার সাথে কেউ অংশগ্রহণ করেননি।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৬৩৪
আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] ফাজর সলাতের সময় আক্রমণ করিতেন এবং আযান শোনার প্রতি লক্ষ্য রাখতেন। তিনি আযান শুনতে পেলে আক্রমণ করা থেকে বিরত থাকতেন [জনপদে মুসলিম থাকার কারণে], অন্যথায় [আযান না শোনা গেলে] তিনি আক্রমণ চালাতেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৬৩৫
ইবনি ইসাম আল-মুযানী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার পিতা হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের একটি ক্ষুদ্র বাহিনী প্রেরণের সময় বলিলেনঃ জনপদে কোন মাসজিদ দেখিতে পেলে কিংবা মুয়াজ্জিনের আযান ধবনি শুনতে পেলে কাউকে হত্যা করিবে না।
দুর্বলঃ মিশকাত [৩৯৩৫], যয়ীফ সুনান আত-তিরমিজি [২৬৭/১৬০৫]।
হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-১০১ঃ যুদ্ধে কৌশল অবলম্বন করা
২৬৩৬
আমর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি জাবির [রাদি.] এর নিকট শুনেছেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেন, যুদ্ধ হচ্ছে ধোঁকা বা রণকৌশল।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৬৩৭
কাব ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] কোন দিকে যুদ্ধে যাওয়ার প্রস্তুতি নিলে তা অন্যদের থেকে গোপন রাখতেন। তিনি বলিতেনঃ যুদ্ধ একটি ধোঁকা বা কৌশল মাত্র।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১০২ঃ গোপনে নৈশ আক্রমণ করা
২৬৩৮
ইয়্যাস ইবনি সালামাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার পিতা হইতে বর্ণীতঃ
তিনি [সালামাহ] বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর যুদ্ধে আবু বাকর [রাদি.] কে সেনাপতি নিয়োগ দিলেন। আমরা রাতের বেলা মুশরিকদের উপর আক্রমণ করে তাহাদেরকে হত্যা করলাম। ঐ রাতে আমাদের সাংকেতিক ডাক ছিল আমিত, আমিত। সালামাহ [রাদি.] বলেন, ঐ রাতে আমি নিজ হাতে সাতজন মুশরিক নেতাহাকে হত্যা করেছি।
হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-১০৩ঃ সেনাবাহিনীর পিছনে অবস্থান করা
২৬৩৯
আবুয যুবাইর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] তাহাদেরকে বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সফরে কাফেলার পিছনে অবস্থান করিতেন। তিনি দুর্বলদের নিজের বাহনে পিছনে উঠিয়ে নিতেন এবং তাহাদের জন্য দুআ করিতেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১০৪ঃ মুশরিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ চলবে
২৬৪০
আবু হুরাইরাহ [রাদি.] সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ আমি লোকদের বিরুদ্ধে ততক্ষণ পর্যন্ত যুদ্ধ করিতে আদিষ্ট হয়েছি যতক্ষণ না তারা এ সাক্ষ্য দেয় যে, “আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই”। তারা এ কালেমা পাঠ করলে তাহাদের জীবন ও সম্পদ আমার থেকে নিরাপদ থাকিবে। তবে এ কালেমার হকের [ইসলামের দণ্ডবিধির] কথা ভিন্ন। তাহাদের চূড়ান্ত হিসাব মহান আল্লাহর উপর ন্যস্ত।
সহিহ মুতাওয়াতির। হাদিসটি যাকাত অধ্যায়ের প্রথম দিকে গত হয়েছে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ মুতওয়াতির
২৬৪১
আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ আমি লোকদের বিরুদ্ধে ততক্ষণ পর্যন্ত যুদ্ধ করিতে আদিষ্ট হয়েছি যতক্ষণ না তারা এ সাক্ষ্য দেয় যে, “আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই, মুহাম্মাদ তাহাঁর বান্দা ও রাসূল এবং আমাদের ক্বিবলাহ্কে নিজেদের ক্বিবলাহ না মানবে, আমাদের নিয়মে যবেহকৃত পশু না খাবে এবং আমাদের সলাত না পড়বে। তারা এগুলো করলে তাহাদের জীবন ও সম্পদের ক্ষতি করা আমাদের জন্য বৈধ নয়। তবে কোন অপরাধের কারণে ইসলামী বিধানে তাহাদের শাস্তি হলে তা ভিন্ন কথা। মুসলিমদের প্রাপ্ত সুযোগ-সুবিধা তারাও ভোগ করিবে এবং মুসলিমদের উপর অর্পিত দায়িত্ব তাহাদের উপরও বর্তাবে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৬৪২
আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ আমি মুশরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিতে আদিষ্ট হয়েছি… বাকী অংশ উপরের হাদিসের অনুরূপ।
সহিহ। এর পূর্বেরটি দেখুন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৬৪৩
উসামাহ ইবনি যায়িদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে আল-হুরূকাত [নামক স্থানে] অভিযানে প্রেরণ করিলেন। আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে শত্রুরা পালিয়ে গেলো। আমরা তাহাদের এক ব্যক্তিকে ধরে ফেলতে যখন ঘেরাও করলাম, তখন সে “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” পাঠ করলো। এ সত্ত্বেও আমরা তাহাকে আঘাত করে হত্যা করলাম। পরে ঘটনাটি নাবী [সাঃআঃ] -কে জানালাম। তিনি বলিলেনঃ ক্বিয়ামাতের দিন লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু তোমার বিরুদ্ধে বাদী হলে কে তোমার জন্য সুপারিশ করিবে? আমি বলিলাম, হে আল্লাহর রাসূল! সে তো তরবারির ভয়ে কালেমা পাঠ করেছে। তিনি বলিলেনঃ সে তরবারির ভয়েই কালেমা পাঠ করেছে, তা কি তুমি তার অন্তর ফেড়ে দেখেছো? ক্বিয়ামাতের দিন “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু-র সামনে কে তোমাকে নাজাত দিবে [বর্ণনাকারী বলেন,] তিনি বারবার একথা বলিতে থাকলেন। এমনকি আমার মনে হচ্ছিল, আমি যদি এ দিনটির পূর্বে মুসলিম না হতাম!
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৬৪৪
আল-মিক্বদাদ ইবনিল আসওয়াদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! যদি আমি কোন কাফিরের মোকাবিলায় লড়তে গিয়ে তার তরবারির আঘাতে আমার একটি হাত কেটে যায়। তারপর সে আমার পাল্টা আক্রমণ থেকে আত্মরক্ষার জন্য কোন গাছে আড়ালে আশ্রয় নিয়ে বলে, আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য মুসলিম হয়েছি- একথা বলার পর হে আল্লাহর রাসূল! আমি কি তাহাকে হত্যা করবো? তিনি বলিলেনঃ না, তাহাকে হত্যা করো না। আমি আবার বলিলাম, হে আল্লাহর রাসূল! সে তো আমার হাত কেটে ফেলেছে। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ তাহাকে হত্যা করো না। কেননা তুমি তাহাকে হত্যা করলে এ হত্যার পূর্বে তুমি [ঈমান আনার কারণে] যে মর্যাদায় ছিলে, সে ঐ মর্যাদায় পৌছে যাবে। আর এ কালেমা পাঠের পূর্বে সে যে অবস্থায় ছিল, তুমি তার অবস্থায় চলে যাবে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১০৫ঃ কেউ দৃঢ়ভাবে সাজদাহ্য় পড়ে থাকলে তাহাকে হত্যা করা যাবে না
২৬৪৫
জারীর ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] খাসআম গোত্রের বিরুদ্ধে একটি ক্ষুদ্র বাহিনী প্রেরণ করিলেন। সৈন্যদল সেখানে পৌছে দেখলো যে, ঐ গোত্রের কিছু লোক সাজদাহ্য় পড়ে আছে। কিন্তু এ সত্ত্বেও তাহাদেরকে তাড়াতাড়ি হত্যা করা হলো। নাবী [সাঃআঃ] -এর কাছে এ সংবাদ পৌছলে তিনি তাহাদের ওয়ারিশদেরকে অর্ধেক দিয়াত [রক্তপন] প্রদানের নির্দেশ দিলেন। তিনি বলিলেনঃ আমি ঐ মুসলিম থেকে দায়মুক্ত যারা মুশরিকদের মধ্যে বসবাস করে। লোকেরা জিজ্ঞেস করলো, হে আল্লাহর রাসূল! রক্তপণের অর্ধেক রহিত হওয়ার কারণ কি? তিনি বলিলেনঃ দুই অঞ্চলের আগুনকে এক দৃষ্টিতে দেখা যাবে না।
সহিহ। অর্ধেক দিয়াত সম্পর্কিত বাক্যটি বাদে। ইরওয়া [১২০৭]।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১০৬ঃ যুদ্ধক্ষেত্র হইতে পলায়ন করা সম্পর্কে
২৬৪৬
ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, [মহান আল্লাহর বানী]ঃ “যদি তোমাদের বিশজন ধৈর্যশীল লোক থাকে, তবে তারা দুইশো [কাফির] ব্যক্তির উপর বিজয়ী হইবে” [সূরাহ আল-আনফালঃ আয়াত ৬৫]। এ আয়াত অবতীর্ণ করে আল্লাহ মুসলিমদের উপর ধার্য করে দিলেন যে, একজন মুসলিম সৈন্যের বিরুদ্ধে দশজন কাফির থাকলে সে পালাতে পারবে না। বিষয়টি মুসলিমদের কাছে খবই কঠিন নির্দেশ বলে মনে হলো। অতঃপর তাহাদের জন্য সহজ হুকুম আসলো। মহান আল্লাহ বলেন, “এখন আল্লাহ তোমাদের প্রতি নির্দেশ হালকা করে দিয়েছেন। তিনি জেনেছেন, এখনো তোমাদের মধ্যে দুর্বলতা আছে। সুতরাং তোমাদের একশো ধৈর্যশীল লোক তাহাদের দুইশো লোকের উপর বিজয়ী হইবে” [সূরাহ আল-আনফালঃ আয়াত ৬৬]। বর্ণনাকারী আবু তাওবাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ইয়াগলিবূ মিআতাইন পর্যন্ত পড়লেন। ইবনি আব্বাস বলেন,আল্লাহ যখন তাহাদের সংখ্যা কমিয়ে দিলেন, সেই পরিমাণে তাহাদের ধৈর্যও কমে গেলো।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৬৪৭
আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কর্তৃক প্রেরিত কোন এক সামরিক অভিযানকারী দলের সঙ্গে ছিলেন। তিনি বলেন, সৈন্যরা [কৌশলগত কারণে] পলায়ন করলে আমিও তাহাদের সাথে আত্মগোপন করি। অতঃপর বিপদমুক্ত হয়ে বাইরে এসে পরামর্শ করি, এখন কি করা যায়? আমরা তো যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালানোর কারণে আল্লাহর অসন্তুষ্টির পাত্র হয়েছি। আমরা বলিলাম, চলো আমরা মদিনাহ্য় গিয়ে আত্মগোপন করে থাকি যেন কেউ আমাদের দেখিতে না পায়। দ্বিতীয়বার জিহাদের সুযোগ এলে আমরা তাতে যোগদান করবো। ইবনি উমার [রাদি.] বলেন, অতঃপর আমরা মদিনাহ্য় প্রবেশ করে পরস্পর বলাবলি করলাম, আমরা যদি নিজেদেরকে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সামনে পেশ করি এবং আমাদের জন্য যদি তাওবাহ্র সুযোগ থাকে তাহলে মদিনায় থেকে যাবো। এর বিপরীত কিছু হলে মাদীনাহ্ ছেড়ে চলে যাবো। তিনি [ইবনি উমার] বলেন, আমরা ফাজ্রের সলাতের পূর্বেই [মাসজিদে] গিয়ে রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] অপেক্ষায় বসে থাকলাম। অতঃপর তিনি বেরিয়ে এলে আমরা দাঁড়িয়ে বলিলাম, আমরা তো পলাতক সৈনিক। তিনি আমাদের দিকে মুখ ফিরিয়ে বলিলেনঃ না, বরং তোমরা পুনরায় যুদ্ধে যোগদানকারী। ইবনি উমার [রাদি.] বলেন, অতঃপর আমরা তাহাঁর কাছে গিয়ে তাহাঁর হাতে চুমা দিলাম। তিনি বলিলেনঃ আমি মুসলিমদের আশ্রয়স্থল।
দুর্বলঃ ইরওয়া [১২০৩]।
হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২৬৪৮
আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, বদরের যুদ্ধের দিন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়ঃ “যে ব্যক্তি সেদিন পশ্চাঁদমুখী হয়ে পলায়ন করিবে”।[সূরাহ আল-আনফালঃ ১৬]।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১০৭ঃ মুসলিম বন্দীকে কুফরী করিতে বাধ্য করা হলে
২৬৪৯
খাব্বাব ইবনিল আরাত্তি [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা আমরা রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] নিকট আসলাম। তখন তিনি তাহাঁর চাঁদরকে বালিশ বানিয়ে তাতে ঠেস দিয়ে কাবা ঘরের ছায়ায় বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। আমরা তাহাঁর নিকট অভিযোগ করে বলিলাম, আপনি কি আমাদের জন্য সাহায্য চাইবেন না? আপনি কি আমাদের জন্য আল্লাহর নিকট দুআ করিবেনা না? অতঃপর তিনি উঠে বসলেন। তাহাঁর মুখমন্ডল রঙিন হয়ে গেলো। তিনি বলিলেনঃ তোমাদের পূর্বে যারা ছিল, তাহাদের কাউকে ধরে নিয়ে এসে তাহাকে গর্ত করে তাতে পুঁতে ফেলা হতো। অতঃপর করাত এনে তার মাথার উপর রেখে তা দিয়ে তাহাকে দ্বিখন্ডিত করা হতো। এরূপ নির্মম অত্যাচারও তাহাকে তার দ্বীন থেকে বিচ্যুত করিতে পারেনি। আল্লাহর শপথ! তিনি এই ইসলামকে পূর্ণতা দান করবেন। এমকি ভ্রমণকারী সানআ হইতে হাদারামাওত পর্যন্ত নিরাপদে যাতায়াত করিবে। আল্লাহর ভয় এবং তার মেষপালের জন্য বাঘের ভয় ব্যতীত তার জন্য অন্য কোন ভয় থাকিবে না। অথচ তোমরা তাড়াহুড়া করছো।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১০৮ঃ গুপ্তচর মুসলিম হলে তার বিধান
২৬৫০
আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে, আয-যুবাইরকে এবং আল-মিক্বদাদ [রাদি.]-কে পাঠিয়ে দিয়ে বলিলেনঃ তোমরা রওদা খাখ নামক বাগানের নিকট গিয়ে পৌঁছবে। সেখানে গিয়ে এক বৃদ্ধা মহিলাকে পাবে। তার নিকটে একটা চিঠি রয়েছে, তোমরা তা উদ্ধার করে আনবে। আমাদের ঘোড়াগুলো নিয়ে আমরা দ্রুত ছুটে চললাম এবং রওদায় পৌঁছে এক বৃদ্ধা মহিলাকে পেয়ে তাহাকে বলিলাম, চিঠিটি বের করো। সে বললো, আমার কাছে কোন চিঠি নেই। আমি বলিলাম, হয় চিঠি বের করে দাও, নতুবা তোমার পরনের কাপড় খুলে খোঁজ করবো। আলী [রাদি.] বলেন, সে তার চুলের খোপার মধ্য থেকে চিঠিটি বের করে দিলো। আমরা তা নিয়ে নাবী [সাঃআঃ] এর নিকট উপস্থিত হলাম। দেখা গেলো যে, তা হাত্বিব ইবনি আবু বালতাআহ কর্তৃক লিখিত মক্কায় কতিপয় মুশরিকের নামে পাঠানো চিঠি। তাতে রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] সামরিক তৎপরতার কিছু তথ্য উল্লিখিত ছিলো। তিনি হাত্বিবকে বলিলেনঃ এটা কি করলে? সে বললো, হে আল্লাহর রাসূল! আমার ব্যাপারে তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত নিবেন না। কুরাইশদের সাথে আমার সম্পর্কযুক্ত থাকলেও প্রকৃতপক্ষে আমি কুরাইশ বংশীয় নই। এখানকার বহু মুহাজিরদের মক্কার কুরাইশদের সাথে আত্মীয়তা রয়েছে। তারা তাহাদের মাধ্যমে মক্কায় অবস্থিত স্বীয় পরিবারের নিরাপত্তা বিধান করে থাকেন। কিন্তু আমার তাহাদের সাথে বংশগত আত্মীয়তা নেই। তাই আমি তাহাদের কিছু উপকার করে আমার পরিবারের রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা করার মনস্থ করেছিলাম। হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর শপথ! আমি কুফরী বশতঃ কিছু করিনি। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ সে তোমাদেরকে সত্যই বলেছে। উমার [রাদি.] বলিলেন, আমাকে এই মুনাফিকের গর্দান কেটে ফেলার অনুমতি দিন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ সে তো বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলো। তুমি কি অবহিত নও যে, আল্লাহ নিজেই বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের প্রতি সুসংবাদ দিয়েছেন। তিনি বলিয়াছেনঃ “তোমরা যা ইচ্ছে হয় করো, আমি তোমাদের অবশ্যই ক্ষমা করে দিয়েছি।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৬৫১
আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি পূর্ববর্তী ঘটনাটি সম্পর্কে বলেন, হাত্বিব মক্কাবাসীদের প্রতি একটি পত্র লিখলো। তাতে লিখা ছিল, মুহাম্মাদ [সাঃআঃ] তোমাদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ বর্ণনায় আলী আরো বলিলেনঃ মহিলাটি বললো, আমার কাছে কোন চিঠি নেই। আমরা তার উট বসিয়ে খোঁজ করেও তার কাছে কোন চিঠি পেলাম না। আলী বলিলেন, সেই সত্ত্বার শপথ! যাঁর নামে শপথ করা হয়! হয়ত তুমি চিঠি বের করে দিবে, নতুবা আমি অবশ্যই তোমাকে হত্যা করবো। এরপর বর্ণনাকারী বাকী হাদিস বর্ণনা করেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১০৯ঃ যিম্মী গুপ্তচর সম্পর্কে
২৬৫২
ফুরাত ইবনি হাইয়ান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাকে হত্যা করার নির্দেশ দেন। সে আবু সুফিয়ানের গুপ্তচর ও এক আনসার লোকের আশ্রিত ব্যক্তি ছিলো। একদা আনসারদের এক সমাবেশের নিকট দিয়ে যাওয়ার সময় সে বললো, আমি মুসলিম। জনৈক আনসার বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! সে নিজেকে মুসলিম বলে পরিচয় দিচ্ছে। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ তোমাদের মধ্যে এমন কিছু লোক রয়েছে যাদেরকে আমি তাহাদের ঈমানের উপর ছেড়ে দেই। ফুরাত ইবনি হাইয়ান তাহাদেরই একজন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১১০ঃ নিরাপত্তাপ্রাপ্ত অমুসলিম ব্যক্তির মুসলিমদের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তি
২৬৫৩
ইয়াস ইবনি সালামাহ ইবনি আকওয়া [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার পিতা হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] সফরে ছিলেন। এমতবস্থায় মুশরিকদের এক গুপ্তচর তাহাঁর কাছে এলো এবং কিছু সময় তাহাঁর সাহাবীদের নিকট বসে থাকার পর গোপনে সরে পড়লো। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেনঃ তাহাকে খুঁজে বের করো এবং তাহাকে হত্যা করো। সর্বপ্রথম আমিই তাহাকে পেলাম এবং তাহাকে হত্যা করে তার মাল-পত্র কেড়ে নিলাম। পরে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকেই ঐ মাল-পত্রগুলো দিয়ে দিলেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৬৫৪
ইয়াস ইবনি সালামাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমার পিতা সালামাহ [রাদি.] আমাকে বলিয়াছেন, আমি রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] সঙ্গী হয়ে হাওয়াযিন গোত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যোগদান করেছি। আমরা দুপুরের খাবার খাচ্ছিলাম। আর আমাদের অধিকাংশ লোক ছিল পদাতিক ও দুর্বল। ইতোমধ্যে এক ব্যক্তি লাল রঙের একটি উটে চড়ে আমাদের কাছে এলো। সে উটের কোমর থেকে রশি খুলে তার উটটিকে বেঁধে রেখে লোকদের সঙ্গে খেতে বসলো। সে তাহাদের শারীরিক দুর্বলতা ও বাহনের স্বল্পতা লক্ষ্য করে দৌড়ে তার উটের কাছে গিয়ে উটের রশি খুলে সেটাকে বসিয়ে তার পিঠে চড়লো। অতঃপর তার উট হাঁকিয়ে চলে গেলো। আসলাম গোত্রের এক ব্যক্তি ছাই রঙের একটি উষ্ট্রী নিয়ে তার পিছু করলো। দলের মধ্যে এটাই ছিল সেরা সওয়ারী। বর্ণনাকারী বলেন, আমি দৌড়ে তার পিছনে ছুটলাম। আমি যখন তার নিকট পৌঁছি তখন উষ্ট্রীর মাথা ছিল ঐ গুপ্তচরের উটের পাছার নিকটে। আমি সামনে এগিয়ে তার উটের পিছু ধরে ফেলি এবং আমি আরো এগিয়ে তার উটের লাগাম ধরে ফেলি এবং উটটিকে বসিয়ে দেই। উটটি হাঁটু গেড়ে বসলে আমি খাপ থেকে তরবারী বের করে লোকটির মাথায় আঘাত হানলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। আমি তার বাহন ও মালপত্র নিয়ে আসলাম। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সকলের মাঝখান দিয়ে আমার সামনে এসে বলিলেনঃ কে লোকটিকে হত্যা করেছে? লোকেরা বললো, সালামাহ ইবনিল আকওয়া। তিনি বলিলেনঃ নিহইতের সব মাল-পত্র তার প্রাপ্য।
হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-১১১ঃ দুশমনের মুখোমুখি হওয়ার উত্তম সময় কোনটি?
২৬৫৫
মাক্বিল ইবনি ইয়াসার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নুমান ইবনি মুক্বাররিন [রাদি.] বলেন, আমি রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] সাথে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি। তিনি দিনের প্রথমভাগে যুদ্ধে আরম্ভ না করলে তা বিলম্বিত করিতেন যতক্ষণ না সূর্য ঢলে পড়তো, বাতাস শুরু হতো এবং সাহায্য অবতীর্ণ হতো।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১১২ঃ যুদ্ধের সময় নীরব থাকার নির্দেশ
২৬৫৬
ক্বায়িস উমামাহ ইবনি আব্বাস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] এর সাহাবীগণ যুদ্ধের সময় উচ্চস্বরে কথাবার্তা বলা অপছন্দ করিতেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ মাওকুফ
২৬৫৭
আবু বুরদাহ [রাদি.] হইতে তার পিতার থেকে নাবী [সাঃআঃ] সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
পুর্বোক্ত হাদিসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-১১৩ঃ যুদ্ধের সময় বাহন থেকে অবতরণ
২৬৫৮
আল-বারাআ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, হুনাইনের যুদ্ধের দিন নাবী [সাঃআঃ] মুশরিকদের মুখোমুখি হন এবং মুসলিমরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়, তখন তিনি তাহাঁর খচ্চর থেক নেমে পায়ে হাঁটতে লাগলেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১১৪ঃ যুদ্ধের সময় ময়দানে অহংকার প্রদর্শন
২৬৫৯
জাবির ইবনি আতীক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলিতেনঃ আল্লাহ এক প্রকার আত্মমর্যাদা পছন্দ করেন, এবং আরেক প্রকার আত্মমর্যাদা তিনি ঘৃণা করেন। মহান আল্লাহ যেটা পছন্দ করেন তা হলো, সন্দেহজনক বিষয় বর্জনের আত্মসম্মানবোধ। সন্দেহজনক বিষয় ব্যতীত অন্য ক্ষেত্রে আত্মসম্মানবোধ প্রদর্শনকে আল্লাহ ঘৃণা করেন। অনুরূপভাবে, এক প্রকার অহংকার প্রদর্শনকে আল্লাহ অপছন্দ করেন, আর এক প্রকার অহংকারকে পছন্দ করেন। আল্লাহ যে অহংকার প্রদর্শন পছন্দ করেন তা হলো, যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রুর মোকাবিলায় অহংকার প্রদর্শন করা [যেন দুশমন ভয় পায়] এবং সদাক্বাহ্ দেয়ার সময় নিজেকে গৌরবান্বিত মনে করা। মহান আল্লাহ যেরূপ অহংকারকে ঘৃণা করেন তা হলো, যুলুম-অত্যাচার ও বিদ্রোহমূলক কাজে অহংকার প্রদর্শন করা। বর্ণনাকারী মূসা স্বীয় বর্ণনায় খুয়ালা শব্দের পর ফাখর [অহংকার] শব্দ উল্লেখ করেছেন।
হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-১১৫ঃ শত্রু দ্বারা ঘেরাও হলে
২৬৬০
আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আসিম ইবনি সাবিতের নেতৃত্বে দশজনকে গুপ্তচর হিসেবে পাঠালেন। হুযাইল গোত্রের প্রায় একশো তীরন্দাজ তাহাদের মোকাবিলা করিতে বের হলো। আসিম [রাদি.] তাহাদের আগমন টের পেয়ে সাথীদের নিয়ে একটি টিলায় আত্মগোপন করিলেন। শত্রুরা তাহাদেরকে বললো, তোমরা নেমে এসে আত্মসমর্পণ করো। আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, তোমাদের কাউকে হত্যা করবো না। আসিম [রাদি.] বলিলেন, আমি কাফিরদের দেয়া নিরাপত্তা ওয়াদায় আমি টিলা থেকে নামবো না। তারা তীর ছুঁড়ে আসিম [রাদি.]-সহ সাতজনকে শহীদ করলো। বাকী তিনজন কাফিরদের প্রতিশ্রুতির উপর নির্ভর করে টিলা থেকে নেমে আসেন। এ তিনজন হলেন খুবাইব[রাদি.], যায়িদ ইবনি দাসিনাহ [রাদি.] এবং আরেকজন [আবদুল্লাহ ইবনি তারিক]। কাফিররা তাহাদেরকে কাবু করে ধনুকের রশি খুলে তা দিয়ে তাহাদেরকে শক্ত করে বাঁধলো। এ দেখে তৃতীয় জন বলিলেন, এটা তো প্রথম বিশ্বাসঘাতকতা। আল্লাহর শপথ! আমি তোমাদের সঙ্গে যাবো না। আমি আমার [নিহত] সাথীদের সাথে মিলিত হওয়াই পছন্দ করি। কাফিররা তাঁকে টেনে-হিঁচড়ে নিতে চাইলে তিনি যেতে অস্বীকার করায় তারা তাহাকেও শহীদ করলো। খুবাইব [রাদি.] বন্দী অবস্থায় থাকলেন। কাফিররা তাহাকে হত্যার জন্য একত্র হলে খুবাইব [রাদি.] নাভীর নীচের চুল পরিষ্কার করার জন্য একটা ক্ষুর চেয়ে নিলেন। কাফিররা যখন তাহাকে হত্যা করার জন্য বের হলো, খুবাইব [রাদি.] তাহাদেরকে বলিলেন, আমাকে দুই রাকআত সলাত আদায়ের সুযোগ দাও। অতঃপর তিনি বলিলেন, আল্লাহর শপথ! আমি যদি তোমাদের এরূপ ধারণা করার আশংকা না করতাম যে, আমি ভয় পেয়েছি, তাহলে আমি সলাত আরো দীর্ঘায়িত করতাম।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৬৬১
আয-যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমাকে আমর ইবনি আবু সুফিয়ান ইবনি উসাইদ ইবনি জারিয়া আস-সাক্বাফী এ হাদিস জানিয়েছেন। তিনি আবু হুরায়রার [রাদি.] সাথী ছিলেন। উল্লেখিত সানাদে তিনি উপরের হাদিসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১১৬ঃ আক্রমণের উদ্দেশ্যে ওঁৎ পেতে থাকা
২৬৬২
আল-বারাআ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুলাহ [সাঃআঃ] উহুদের যুদ্ধের দিন আবদুল্লাহ ইবনি জুবাইরের [রাদি.] পঞ্চাশজন তীরন্দাজের নেতা নিযুক্ত করিলেন। তিনি তাহাদেরকে সতর্কতামূলক বলিলেনঃ যদি তোমরা দেখ পাখি আমাদের গোশত ছিঁড়ে খাচ্ছে, তবুও তোমাদের ডেকে না পাঠানো পর্যন্ত তোমরা এ স্থান ত্যাগ করিবে না। আর যদি দেখো, আমরা শত্রুদের পরাজিত করেছি, তবুও ডেকে না পাঠানো পর্যন্ত তোমরা তোমাদের স্থান ত্যাগ করিবে না। বর্ণনাকারী বলেন, আল্লাহ মুশরিকদের পর্যুদস্ত করিলেন। আল্লাহর শপথ! আমি দেখলাম, শত্রুপক্ষের নারীরা [পালানোর জন্য] পাহাড়ে উঠছে। আবদুল্লাহ ইবনি জুবাইরের [রাদি.] সাথীরা বললো, হে লোকেরা! গণীমাতের মাল সংগ্রহ করো। তোমারদের সাথীরা যুদ্ধে বিজয়ী হয়েছে। এখনও কিসের জন্য অপেক্ষা করছো? একথা শুনে আবদুল্লাহ ইবনি জুবাইর [রাদি.] বলিলেন, রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] নির্দেশ কি তোমরা ভুলে গেছো? তারা বললো, আল্লাহর শপথ! আমরা নিশ্চয়ই যাবো এবং গনীমাত সংগ্রহ করবো। তারা চলে গেলো। ফলে তাহাদের মুখের উপর মারা হলো এবং তারা পরাজিত হলো।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১১৭ঃ যুদ্ধক্ষেত্রে সারিবদ্ধভাবে অবস্থান করা
২৬৬৩
হামযাহ ইবনি আবু উসাইদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার পিতা হইতে বর্ণীতঃ
তিনি [পিতা] বলেন, আমরা বদর প্রান্তরে সারিবদ্ধ হওয়ার সময় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ শত্রুসৈন্য তোমাদের নাগালে এসে গেলে তোমরা তীর ছুড়বে এবং কিছু তীর অবশিষ্ট রাখবে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১১৮ঃ শত্রু নিকটবর্তী হলে তরবারি চালানো
২৬৬৪
মালিক ইবনি হামযাহ ইবনি আবু উসাইদ আস- সাইদী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার পিতা ও দাদা হইতে বর্ণীতঃ
তিনি [দাদা] বলেন, নাবী [সাঃআঃ] বদরের যুদ্ধের দিন বলিলেনঃ শত্রুরা তীরের নাগালে এসে গেলে তোমাদের ধনুক থেকে তীর ছুড়বে এবং তোমাদের তরবারির কাছাকাছি না আসা পর্যন্ত তরবারি চালাবে না।
দুর্বলঃ মিশকাত [৩৯৫৪]।
হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-১১৯ঃ মল্লযুদ্ধ সম্পর্কে
২৬৬৫
আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, বদরের দিন যুদ্ধের ময়দানে উতবাহ ইবনি রবীআহ অগ্রসর হলো এবং তার পিছনে তার ছেলে ও তার ভাই আসলো। উতবাহ ডেকে বললো, আমার মোকাবিলা করার মত কে আছো? কতিপয় আনসার যুবক তার জবাব দিলে উতবাহ বললো, তোমরা কে? তারা তাহাকে জবাব দিয়ে জানালো। সে বললো, তোমাদের সাথে যুদ্ধ করার ইচ্ছা আমাদের নেই। আমরা আমাদের চাচাতো ভাইদের চাই। একথা শুনে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ উঠো হে আলী, হে হামযা, ওঠো হে উবাইদাহ ইবনিল হারিস। হামযাহ [রাদি.] উতবাহ্র দিকে এবং আমি [আলী] শইবাহ্র দিকে অগ্রসর হয়ে উভয়কে হত্যা করলাম। উবাইদাহ [রাদি.] ও ওয়ালীদের মধ্যে যুদ্ধ চলতে থাকলো। দুজনেই দুজনকে আহত করলো। অতঃপর আমরা ওয়ালীদের দিকে অগ্রসর হয়ে তাহাকে হত্যা করলাম এবং আহত উবাইদাহ্কে তুলে আনলাম।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১২০ঃ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কর্তন নিষেধ
২৬৬৬
আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ হত্যাকান্ডের ব্যাপারে নিস্কলুষ হত্যাকারী ঈমানদার বটে।
দুর্বলঃ যয়ীফ আল-জামিউস সাগীর [৯৬৩], যয়ীফ সুনান ইবনি মাজাহ [৫৮৪/২৬৮২]
হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২৬৬৭
আল হাইয়্যজ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
ইমরানের [রাদি.] একটি গোলাম পালিয়ে গেলো। তিনি আল্লাহর নামে মানত করিলেন যে, তিনি তাহাকে কাবু করিতে পারলে তার হাত কেটে দিবেন। তিনি আমাকে বিষয়টি জিজ্ঞেস করিতে সামুরাহ ইবনি জুনদুবের [রাদি.] নিকট পাঠান। আমি তাহাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে দান-খয়রাতের প্রতি উৎসাহিত করিতেন এবং মানুষের অঙ্গ–প্রতঙ্গ কেটে বিকৃত করিতে নিষেধ করিতেন। অতঃপর আমি ইমরান ইবনি হুসাইনের [রাদি.] নিকট আসি এবং তাহাকেও একই বিষয়ে জিজ্ঞেস করি। তিনিও বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে দান খয়রাত করিতে উৎসাহিত করিতেন আর মানুষের নাক-কান বিকৃত করা নিষেধ করিতেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১২১ঃ নারী হত্যা সম্পর্কে
২৬৬৮
আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর কোন এক যুদ্ধে এক মহিলাকে নিহত অবস্থায় পাওয়া গেলো। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নারী ও শিশুদের হত্যা করিতে নিষেধ করিলেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৬৬৯
রাবাহ ইবনি রবী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা কোন এক যুদ্ধে রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] এর সাথে ছিলাম। তিনি লোকদেরকে একটি স্থানে ভিড় জমাতে দেখে এক লোককে পাঠিয়ে বলিলেনঃ দেখে আসো, ঐ লোকেরা কি জন্য ভিড় জমিয়েছে। লোকটি এসে বললো, তারা একটি নিহত মহিলার লাশের কাছে একত্র হয়েছে। তিনি বলিলেনঃ এ মহিলা তো যুদ্ধ করেনি। একে কেন হত্যা করা হলো! বর্ণনাকারী বলেন, খালিদ ইবনিল ওয়ালীদ [রাদি.] অগ্রবর্তী দলের নেতৃত্বে ছিলেন। নাবী [সাঃআঃ] এক ব্যক্তিকে পাঠিয়ে বলিলেনঃ খালিদকে বলো, নারী এবং শ্রমিককে হত্যা করিবে না।
হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
২৬৭০
সামুরাহ ইবনি জুনদুব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ [যোদ্ধাবাজ] মুশরিক বৃদ্ধদের হত্যা করিবে এবং তাহাদের অল্প বয়স্কদের অবশিষ্ট রাখবে।
দুর্বলঃ যয়ীফ সুনান আত-তিরমিজি [২৭২/১৬৪৮] এ শব্দেঃ মিশকাত [৩৯৫২], যয়ীফ আল-জামিউস সাগীর [১০৬৩]।
হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২৬৭১
আয়ীশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, বনী কুরাইযার কোন মহিলাকে হত্যা করা হয়নি। তবে এক মহিলাকে হত্যা করা হয়। সে আমার পাশে বসে কথা বলছিল এবং অট্টহাসিতে ফেটে পড়ছিলো। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বাজারে তাহাদের পুরুষদেরকে হত্যা করছিলেন। এমন সময় এক ব্যক্তি তার নাম ধরে ডেকে বললো, অমুক মহিলাটি কোথায়? সে বললো, আমি। আমি [আয়ীশাহ] বলিলাম, তোমার কি হলো? [ডাকছো কেন?] সে বললো, আমি যা ঘটিয়েছি সেজন্য [সে নাবী [সাঃআঃ] কে অশ্লীল ভাষায় গালি দিয়েছিলো]। আয়ীশাহ [রাদি.] বলেন, তাহাকে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হলো। আমি ঘটনাটি আজও ভুলতে পারিনি। আমি তার এ আচরণে অবাক হয়েছিলাম যে, তাহাকে হত্যা করা হইবে একথা জেনেও সে অট্টহাসিতে ফেটে পড়ছিলো।
হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
২৬৭২
আস-সাব ইবনি জাস্সামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করিলেন, মুশরিকদের বাসস্থানে রাতে আক্রমন করলে তাহাদের নারী ও শিশুরাও নিহত হইতে পারে, [এমতাবস্থায় এর হুকুম কি]। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেনঃ তারাও তাহাদের অন্তর্ভুক্ত। আমর ইবনি দীনার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলিলেন, তারা তাহাদের পিতাহাদের অন্তর্ভুক্ত। ঈমাম যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নারী ও শিশুদের হত্যা করা নিষেধ করেছেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১২২
শত্রুকে আগুনে পোড়ানো অপছন্দনীয়
২৬৭৩
মুহাম্মাদ ইবনি হামযাহ আল-আসলামী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার পিতা হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক অভিযানে তার পিতাহাকে সেনাপতি নিযুক্ত করেন। হামযাহ [রাদি.] বলেন, আমরা অভিযানে বের হওয়ার সময় তিনি বলে দিলেন যে, অমুক ব্যক্তিকে পেলে আগুন দিয়ে পোড়াবে। আমি পিঠ ফিরে চলে যাওয়ার সময় তিনি আমাকে পুনরায় ডাকলেন। আমি তাহাঁর নিকট ফিরে এলে তিনি বলিলেনঃ তোমরা অমুক ব্যক্তিকে পেলে হত্যা করিবে, আগুনে পোড়াবে না। কেননা কেবল আগুনের প্রভুই আগুন দিয়ে শাস্তি দেয়ার অধিকারী, অন্য কেউ নয়।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৬৭৪
আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে এক অভিযানে প্রেরণের সময় বলিলেনঃ তোমরা যদি অমুক অমুক ব্যক্তিকে পাও … অতঃপর বাকী অংশ উপরের হাদিসের অনুরুপ।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৬৭৫
আবদুর রহমান ইবনি আবদুল্লাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার পিতা হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা আমরা রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] সফর সঙ্গী ছিলাম। তিনি তাহাঁর প্রয়োজনে অন্যত্র গেলেন। আমরা দুটি বাচ্চাসহ একটি পাখি দেখিতে পেয়ে বাচ্চা দুটোকে ধরে নিলাম। মা পাখিটা সাথে সাথে আসলো এবং পাখা ঝাঁপটিয়ে বাচ্চার জন্য অস্থিরতা প্রকাশ করিতে লাগলো। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ফিরে এসে বলিলেনঃ কে এর বাচ্চা নিয়ে এসে একে অস্থিরতায় ফেলেছে? বাচ্চাগুলো এদের মায়ের কাছে ফিরিয়ে দাও। তিনি আমাদের পুড়িয়ে দেয়া একটা পিঁপড়ার ঢিবি দেখিতে পেয়ে বলিলেনঃকে এগুলো পুড়িয়েছে? আমরা বলিলাম, আমরা। তিনি বলিলেনঃআগুনের রব্ব ব্যতীত আগুন দিয়ে কিছুকে শাস্তি দেয়ার কারো অধিকার নেই।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
Leave a Reply