জুযউল রফইল ইয়াদাঈন
হাদীসঃ জুযউল রফইল ইয়াদাঈন
হাদীস পরিচিতিঃ জুযউল রফইল ইয়াদাঈন
লেখকঃ ইমাম বুখারী
সম্পূর্ণ নামঃ মুহাম্মদ বিন ইসমাইল বিন ইবরাহীম বিন মুগীরাহ বিন বারদিযবাহ
জন্মস্থানঃ বুখারা, উজবেকিস্তান
জন্মঃ ১৯৪ হিজরি
মৃত্যুঃ ২৫৬ হিজরি
মোট হাদীসঃ
হাদীস প্রকারঃ সহীহ, জয়ীফ
জুযউল রফইল ইয়াদাঈন ক্রয় বিক্রয়
প্রকাশনী | মূল্য |
---|---|
তাওহীদ পাবলিকেশন্স | ৬৩ |
জুযউল রফইল ইয়াদাঈন নিচে পড়ুন | ফ্রি |
তাওহীদ পাবলিকেশন্সঃ জুযউ রফইল ইয়াদায়ন ফিস সালাত, লেখকঃ ইমাম মুহাম্মদ ইবনে ইসমাইল বোখারী (র)। জুযউল রফইল ইয়াদাঈন এই বই টি থেকে প্রায় সবগুলি হাদিস দেয়া হয়েছে। ইমাম বুখারি এই বইটি লিখেছেন । এছারা আপনারা পড়তে পারেন হাদিস বুখারী শরীফ, আদাবুল মুফরাদ হাদীস ও জুজ উল কিরাত হাদিসের বই .
জুযউল রফইল ইয়াদাঈন
১ নং হাদীস: আলী বিন আবু তালিব (রাঃ) হইতে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) যখন সালাতের (তাকবীরে তাহরিমার) জন্য তাকবীর বলিতেন, তখন কাঁধ বরাবর দু’হাত উঠাতেন, যখন তিনি রুকূ’ করার ইচ্ছা পোষণ করিতেন। আর যখন রুকূ’ থেকে তাহাঁর মাথা উঠাতেন তখনও (ঐরুপ করিতেন)। আর যখন দু’রাকাআত শেষে (তৃতীয় রাকাআতের জন্য) উঠতেন তখনও অনুরূপ করিতেন।”
এটি উত্তম (হাসান) সনদে বর্ণিত হয়েছে। মুসনাদে আহমাদ (৯১/১), ইমাম তিরমিয়ী (৩৪২৩) একে হাসান সহীহ বলেছেন, ইবনু খুযাইমাহ (৫৮৪), ইবনু হিব্বান (উমদাতুল কারী ২৭৭/৫) উভয়ে তাহাদের সহীহাইনে উল্লেখ করিয়াছেন। ইমাম আহমাদ ও অন্যরা এটিকে সহীহ (নির্ভরযোগ্য) বলে মত দিয়েছেন। এর বর্ণনাকারী আবদুর রহমান বিন আবু যিনাদ বিশ্বস্ত (সিকাহ) ও হাদিস বর্ণনার ক্ষেত্রে উত্তম ব্যক্তি। ইমাম যাহাবী বলেন, তাহাঁর স্মৃতিশক্তি খর্ব হওয়ার পূর্বের বর্ণনাগুলো হাসান। (দেখুন সিয়ারে আলামুন নুবালা ৮ম খণ্ড, ১৬৮, ৭০ পৃষ্ঠা)। ইবনুল মাদীনী একে শক্তিশালী (কাউয়ি) বলে মত পোষণ করিয়াছেন। এ বর্ণনাটি আবদুর রহমান বিন আবু যিনাদ এর স্মৃতিশক্তি খর্ব হওয়ার পূর্বেকার। (নূরুল আইনাইন: ৮৩, ৮৪ পৃষ্ঠা) জুযউল রফইল ইয়াদাঈন হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
২ নং হাদীস: সালেম বিন আব্দুল্লাহ হইতে বর্ণিতঃ
তিনি তাহাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করিয়াছেন, তিনি বলেন, আমি নাবী (সাঃআঃ) কে (সালাতে) দু’হাত উত্তোলন করিতে দেখেছি। যখন তিনি (তাকবীরে তাহরিমার জন্য) তাকবীর বলিতেন, যখন রুকূ’ করিতেন ও যখন রুকূ’ থেকে মাথা উঠাতেন। কিন্তু তিনি দু’ সাজদাহর মাঝে এমনটি করিতেন না।
আলী বিন আবদুল্লাহ- যিনি তৎকালীন সময়ে বড় বিদ্বান ছিলেন, তিনি বলেন, যুহরী সালেম হইতে, তিনি তার পিতা হইতে বর্ণনা করিয়াছেন, রাফ্উল ইয়াদায়ন প্রতিটি মুসলিমদের জন্য অপরিহার্য বিষয়।
হাদিসটি মারফু’। এই বর্ণনাটি অক্ষরে অক্ষরে নির্ভরযোগ্য। হাদিসের মানঃ অন্যান্য
৩ নং হাদীস : মুহাম্মাদ বিন আমর হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী (সাঃআঃ) এর দশজন সাহাবীসহ আবু হামিদের নিকট ছিলাম, আবু কাতাদা তাঁদেরই একজন, তিনি বলেন, আমি তোমাদের মধ্যে আল্লাহর রাসূলের সালাত বিষয়ে বেশি জানি। তারা বলিলেন, কী রকম? আল্লাহর কসম! তুমিতো আমাদের চেয়ে বেশি সাহচর্য লাভ করনি। আর অনুসরণে আমাদের চেয়ে বেশি অগ্রগামীও ছিলে না। তিনি বলিলেন, কিন্তু আমি তাকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতাম। তারা বলিল, তার বর্ণনা দাও। তিনি বলিলেন, তিনি যখন সালাতের জন্য দাঁড়াতেন তাহাঁর দু’হাত উঠাতেন, যখন রুকূ’তে যেতেন ও রুকূ’ থেকে মাথা উঠাতেন, আর যখন তিনি দুরাকাআত শেষে (তৃতীয় রাকাআতের জন্য) দাঁড়াতেন তখনও অনুরূপ করিতেন।”
হাদিসটি সহীহ ও মারফু’। ইবনু খুযাইমাহ, ইবনু হিব্বান, ইবনুল জারুদ, তিরমিয়ী ও ইবনু তাইমিয়্যা একে সহীহ বলেছেন। আবদুল হামীদ বিন জাফর হচ্ছেন। সহীহ মুসলিমের রাবী। জুযউল রফইল ইয়াদাঈন হাদিসের মানঃ অন্যান্য
৪ নং হাদীস : আব্বাস বিন সাহল হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবু হুমাইদ, আবু উসাইদ ও মুহাম্মদ বিন মাসলমাহ (রাবীত্রয়) একত্রিত হয়ে রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর সালাতের বর্ণনা দিলেন। অতঃপর আবু হুমাইদ বলিলেন, আমি তোমাদের মধ্যে রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর সালাত সম্পর্কে বেশি জানি। তিনি (সালাতের জন্য) দাঁড়িয়ে আল্লাহু আকবার বলিতেন, তখন তাহাঁর দু’ হাত উঠাতেন, এরপর যখন তিনি রুকূ’’র জন্য আল্লাহু আকবার বলিতেন তখন দু’হাত উঠাতেন, এরপর তিনি (যখন) রুকূ’ করিতেন, তখন তার দু’হাত তাহাঁর দু’হাঁটুর উপর স্থাপন করিতেন”
এ হাদিসটি মারফু’ ও হাসান। ইবনু খুযাইমা ৫৮৯, ৬০৮, ৬৩৭, ৬৪০, ৬৮৯, ইবনু হিব্বান। ৪৯৪, তিরমিয়ী ২৬০ সকলেই একে সহীহ বলেছেন। মুহাম্মদ বিন ইয়াহইয়া আয যাহলী বলেন, যে ব্যক্তি এ হাদিস জানার পর রুকূ’র পূর্বে ও পরে রাফ্উল ইয়াদায়ন করিবে না, তার সালাত অপূর্ণাঙ্গ। হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
৫ নং হাদীস : আল আব্বাস আস সাঈদী হইতে বর্ণিতঃ
আল আব্বাস আস সাঈদী থেকে আমাদেরকে খবর দিচ্ছেন, তিনি বলেন, আমি আবু কাতাদা, আবু উসাইদ ও আবু হুমাইদ এর সঙ্গে বাজারে অবস্থান করছিলাম, এমতাবস্থায় তারা সকলেই বলিল, “আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর সালাত সম্পর্কে তোমাদের চেয়ে বেশি জানি। তখন তাহাদের একজন (আবু উসাইদকে) বলিলেন, তুমি সালাত আদায় কর। তখন তিনি তাকবীর দিয়ে কিরাআত পাঠ করিলেন, এরপর পুনরায় তাকবীর দিয়ে দু’হাত উঠালেন, এরপর তারা (তিনজন) বলিলেন, তুমি সঠিকভাবেই রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর সালাত আদায় করেছ।”
এ বর্ণনাটি হাসান। ইবনু ইসহাক মুদাল্লিস, কিন্তু সহীহ ইবনু খুযাইমাতে তার শ্ৰবণের ব্যাপারটিকে বলিষ্ঠ করা হয়েছে।
নোট: এটি যে কপি থেকে অনুবাদ করা হয়েছে, সেই জুযউ রফইল ইয়াদায়নের যহিরিয়্যা নুসখাটি (কপি) তে আবু ইসহাককে সহীহ ইবনু খুযাইমার বরাতে বিশ্বস্ত হিসেবেই উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু জুযউ রাফ্উল ইয়াদায়নের ভারতীয় কপিতে আবু ইসহাক সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, তিনি বিশুদ্ধ নন। হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
৬ নং হাদীস : মালিক ইবনুল হুওয়াইরিস হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাকবীর (তাহরীমা) দিয়ে দু’হাত উঠাতেন, আর যখন রুকূ’ করিতেন ও রুকূ’ থেকে মাথা উঠাতেন তখনও দু’হাত উঠাতেন।”
হাদিসটি মারফু’ ও এর সনদ সহীহ। ইমাম মুসলিম স্বীয় সহীহ এর মধ্যে এ হাদিসটি উল্লেখ করিয়াছেন। দেখুন হাদিস নং ৬৬। এটি সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমের প্রামাণ্য দলীল যে, আবু কিলাবা (বিশ্বস্ত বর্ণনাকারী) মালিক বিন হুওয়াইরিসকে রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর মৃত্যুর পর রুকূ’র পূর্বে ও পরে রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতে দেখেছেন। আবু কিলাবার উপর নাবিয়্যান্তের যে অভিযোগ, আর নাসর বিন আসিমের খারেজি হয়ে যাওয়ার বিষয়টি অগ্রহণযোগ্য। মালিক বিন হুওয়াইরিস থেকে এমন কোন বিশুদ্ধ প্ৰমাণ ভিত্তিক বর্ণনা নেই যে, তিনি সাজদাহইতে রাফ্উল ইয়াদায়ন করিয়াছেন। সুনান নাসাঈর বর্ণনাটি কাতাদার তাদলীসের কারণে যইফ। ক্বাতাদাহ শু’বা থেকে বর্ণনা করেন নি। বরং সাঈদ বিন আরূবা থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। (নাসাঈ ৬৭২) জুযউল রফইল ইয়াদাঈন হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৭ নং হাদীস : আনাস বিন মালিক (রাঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি (আনাস (রাঃ)) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) যখন রুকূ’’ করিতেন তখন তিনি তার দু’হাত উঠাতেন।
হাদিসটি মারফু’। হাদিসের মানঃ অন্যান্য
৮ নং হাদীস : আলী বিন আবূ তালিব (রাঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) যখন ফরয সালাত (আদায়ের) উদ্দেশ্যে দাঁড়াতেন, তখন আল্লহু আকবার বলিতেন ও তাহাঁর দু’হাত দু’কাঁধ বরাবর উঠাতেন। এরপর যখন তিনি রুকূ’’ করার ইচ্ছাপোষণ করিতেন, তখনও তিনি তা করিতেন, এরপর যখন তিনি রুকূ’’ থেকে মাথা উঠাতেন তখনও অনুরূপ করিতেন, তিনি তাহাঁর সালাতে বসাবস্থায় (হাত) উঠাতেন না, আর যখন দু’সাজদা (রাকাআত) শেষ করে দাঁড়াতেন তখনও ঐ ভাবে দু’হাত উঠাতেন আর তাকবীর দিতেন।
হাদিসটি মারফূ’ ও হাসান। হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
৯ নং হাদীস : আবূ নুআঈম আল ফযল বিন দুকাইন হইতে বর্ণিতঃ
আবূ নুআঈম আল ফযল বিন দুকাইন আমাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন, কায়স বিন সুলাইম আল আম্বারী আমাদেরকে খবর দিয়েছেন, তিনি বলেন, আমি আলকামা বিন ওয়ায়িল বিন হুজুরকে বর্ণনা করিতে শুনিয়াছি, আমার পিতা (ওয়ায়িল বিন হুজুর) আমাকে বলেছেন, আমি নাবী (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে সালাত আদায় করেছি, তিনি যখন সালাত আরম্ভ করিতেন তখন তাকবীর দিতেন ও দু’হাত উঠাতেন। অতঃপর তিনি যখন রুকূ’ করার ইচ্ছাপোষণ করিতেন ও রুকূ’র পরে ও দুহাত উঠাতেন।
এর সনদ সহীহ। ইমাম নাসাঈ ও কায়স বিন সালীম থেকে এ হাদিসটি বর্ণনা করিয়াছেন। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১০ নং হাদীস : আবদুল্লাহ বিন ইউসুফ হইতে বর্ণিতঃ
আবদুল্লাহ বিন ইউসুফ আমাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন, তিনি মালিক থেকে, তিনি ইবনু শিহাব থেকে, তিনি সালিম বিন আবদুল্লাহ থেকে, তিনি তাহাঁর পিতা (আবদুল্লাহ বিন উমার) থেকে বর্ণনা করেন,
রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) যখন সালাত আরম্ভ করিতেন তাহাঁর দু’হাত কাঁধ বরাবর উঠাতেন, আর যখন রুকূ’’র জন্য তাকবীর বলিতেন ও রুকূ’ থেকে মাথা উঠাতেন তখন ও অনুরূপ দু’হাত উঠাতেন। তিনি সাজদায় এরূপ (রাফ্উল ইয়াদায়ন) করিতেন না।
জুযউল রফইল ইয়াদাঈন হাদিসের মানঃ অন্যান্য . এ বর্ণনাটি সহীহুল সহিহ বুখারিতে (৭৩৫) রয়েছে। ইমাম মালিক তার মুয়াত্তায় (ইবনুল কাসিম ও মুহাম্মাদ আল শাইবানী থেকে) প্রায় একই রকম শব্দ অর্থে এটি বর্ণনা করিয়াছেন। রাফ্উল ইয়াদায়ন না করার প্রমাণে ইমাম মালিক থেকে বিশুদ্ধ সনদে কোন কিছু বর্ণিত হয়নি। আল মুদাওয়ানা একটি অনির্ভরযোগ্য সনদবিহীন একটি গ্রন্থ। পক্ষান্তরে রাফ্উল ইয়াদায়ন করা বিষয়ে ইমাম মালিক থেকে একাধিক হাদিস বিশুদ্ধ সনদে বর্ণিত হয়েছে। ই. জি. আত তামহীদ। হাদিসের মানঃ অন্যান্য
১১ নং হাদীস : সালিম আব্দুল্লাহ হইতে বর্ণিতঃ
সালিম আব্দুল্লাহ, তাহাঁর পিতা (আবদুল্লাহ ইবনু উমার) যখন সিজদা থেকে মাথা উঠাতেন ও যখন (তাশাহুদের পরে) দাঁড়ানোর ইচ্ছা পোষণ করিতেন, তখন রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন।
হাদিস টি মাওকূফ ও এর সনদ সহীহ। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১২ নং হাদীস : নাফে’ হইতে বর্ণিতঃ
আবদুল্লাহ ইবনু উমার যখন সালাত শুরু করিতেন তখন রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন, যখন রুকূ’’ করিতেন, যখন রুকূ’ থেকে মাথা উঠাতেন, যখন দু’সাজদাহ (রাকআত) থেকে উঠে দাঁড়াতেন, তখন (তিনি) তাকবীর দিতেন ও রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন।
হাদিসটি মওকূফ ও সহীহ। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১৩ নং হাদীস : নাফে’ হইতে বর্ণিতঃ
ইবনু উমার (রাঃ) যখন কোন (অজ্ঞ) ব্যাক্তিকে রুকূ’র সময় ও রুকূ’ থেকে উঠার পর রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতে না দেখিতেন, তখন তার দিকে পাথর নিক্ষেপ করিতেন।
হাদিসটি মাওকূফ ও এর সনদ সহীহ। ইমাম নববী তার আল মাজমু শারহুল মুহাযযাব গ্রন্থে (৩য় খণ্ড ৪০৫ পৃষ্ঠা) এ হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন। অত্র হাদিস থেকে আরও জানা যায়, সুন্নাহ পরিত্যাগকারীকে পাথর নিক্ষেপ করে প্রহার করা বৈধ। তবে এটি অবশ্যই শাসক কর্তৃক হওয়া বাঞ্ছনীয়, যেমন অত্র হাদীসে আবদুল্লাহ ইবনু উমার যে কাজটি করিয়াছেন, তিনি তৎকালীন আমিরুল মুমিনীন ছিলেন। আর সুন্নাহ পরিত্যাগকারী অপরিচিত ব্যক্তিটির কাজের মাধ্যমে প্রতীয়মান হয়যে, সে অপরিচিত লোকটি সাহাবী ছিলনা। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১৪ নং হাদীস : আত্বা হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন আমি ইবনু আব্বাস, ইবনু যুবায়র, আবূ সাঈদ (আল খুদরী) ও জাবির (ইবনু আবদুল্লাহ) (রাঃ)-কে দেখেছি, তাঁরা যখন সালাত শুরু করিতেন ও রুকূ’’ করিতেন তখন রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন।
এ হাদিসটি হাসান। হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
১৫ নং হাদীস : আব্দুর রহমান আল আরাজ হইতে বর্ণিতঃ
তিনি আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করিয়াছেন, তিনি (আবূ হুরাইরা) যখন (সালাত শুরুর) তাকবীর দিতেন তখন রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন, যখন রুকূ’’ করিতেন ও যখন রুকূ’’ থেকে মাথা উঠাতেন তখন ও রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন।
এটি সহীহ হাদিস। যদিও মুহাম্মাদ বিন ইসহাকের তাদলীসের কারণে এটি দুর্বল কিন্তু ১৮ নং হাদিসটি সহীহ। ভিন্ন সনদের দুটি হাদিসের মতন যেহেতু এক, সুতরাং হাদিসটি সহীহ। জুযউল রফইল ইয়াদাঈন হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১৬ নং হাদীস : আসিম আল আহওয়াল হইতে বর্ণিতঃ
আসিম আল আহওয়াল থেকে আমাদের হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন, তিনি বলেন, আমি আনাস বিন মালিক (রাঃ)-কে দেখেছি, তিনি যখন সালাত শুরু করিতেন, তখন আল্লাহু আকবার বলিতেন ও রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন, আর প্রত্যেক রুকূ’তে (যাওয়ার সময়) ও রুকূ’’ থেকে মাথা উঠিয়েও রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন।
হাদিসটি মাওকূফ ও এর সনদ সহীহ। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১৭ নং হাদীস : আবূ হামযাহ হইতে বর্ণিতঃ
আবূ হামযাহ থেকে আমাদেরকে হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন, তিনি বলেন, আমি (আবদুল্লাহ) ইবনু আব্বাস (রাঃ)-কে দেখেছি, তিনি যখন (তাহরিমার) তাকবীর বলিতেন, আর যখন রুকূ’ করিতেন এবং যখন রুকূ’ থেকে মাথা উঠাতেন তখন রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন।
হাদিসটি মাওকূফ ও এর সনদ সহীহ। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১৮ নং হাদীস : আত্বা হইতে বর্ণিতঃ
আত্বা থেকে আমাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন, তিনি বলেন, আমি আবূ হুরাইরা (রাঃ)-এর সঙ্গে সালাত আদায় করেছি, তিনি যখন (সালাত শুরুর) তাকবীর দিতেন ও রুকূ’ করিতেন তখন রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন।
হাদিসটি মাওকূফ ও এর সনদ সহীহ। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
১৯ নং হাদীস : আমর বিন মুররাহ হইতে বর্ণিতঃ
আমর বিন মুররাহ থেকে আমাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন, তিনি বলেন, আমি হাযারা মাউতু এলাকার একটি মাসজিদে প্রবেশ করে দেখলাম, সেখানে আলকামা বিন ওয়ায়িল তার পিতা থেকে হাদিস বর্ণনা করছেন, তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লা’হু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রুকূ’র পূর্বে ও পরে রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন।
হাদিসটি মারফূ ও সহীহ। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২০ নং হাদীস : খাত্তাব বিন উসমান ইসমাঈল হইতে বর্ণিতঃ
তিনি আবদে রব্বিহী বিন সুলাইমান বিন উমাইর থেকে আমাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন, তিনি বলেন, আমি উম্মুদ দারদা (রা:)-কে দেখেছি, তিনি সালাতে কাঁধ বরাবর রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন।
হাদিসটি মারফূ ও হাসান। হাদিসটি ইমাম বুখারীর তারীখ আল কাবীরেও (৬ষ্ঠ খন্ড ৭৮ পৃষ্ঠায়) বর্ণিত হয়েছে। হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
২১ নং হাদীস : মুহাম্মদ বিন মুকাতিল আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারক হইতে বর্ণিতঃ
মুহাম্মদ বিন মুকাতিল আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারক থেকে খবর দিয়েছেন, তিনি ইসমাঈল থেকে, তিনি আবদু রব্বিহী বিন সুলাইমান বিন উমাইর থেকে আমাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন, তিনি বলেন, আমি উম্মুদ দারদা (রা:)-কে দেখেছি তিনি যখন সালাত আরম্ভ করিতেন, যখন রুকূ’ করিতেন, আর যখন সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ বলিতেন তখন কাঁধ বরাবর রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন। আর তিনি বলিতেন, রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ।
ইমাম বুখারী (রহ.) বলেন, নাবী (সাঃআঃ)-এর সাহাবীগণের কতিপয় স্ত্রী তাহাদের চেয়ে (শরীয়তের বিষয়ে) বেশি জানতেন। এমনকি তারা সালাতে রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন।
হাদিসটি হাসান। হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
২২ নং হাদীস : ইসহাক বিন ইবরাহীম আল হানযালী মুহাম্মদ বিন ফুযাইল হইতে বর্ণিতঃ
ইসহাক বিন ইবরাহীম আল হানযালী মুহাম্মদ বিন ফুযাইল থেকে। তিনি আসিম বিন কুলাইব থেকে, তিনি মাহারিব বিন দীনার থেকে আমাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন, তিনি বলেন, আমি (আবদুল্লাহ) ইবনু উমার (রাঃ)- কে দেখেছি, তিনি রুকূ’তে (যাওয়ার পূর্বে) রাফ্উল ইয়াদায়ন করিয়াছেন, আমি তাকে সে সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি বলিলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) যখন দু’রাকাআত শেষে দাঁড়াতেন তখন তাকবীর দিতেন ও রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন।
হাদিসটির সনদ সহীহ। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২৩ নং হাদীস : মুসলিম বিন ইবরাহীম শুবাহ হইতে বর্ণিতঃ
তিনি আসিম বিন কুলাইব থেকে, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি ওয়ায়িল বিন হুজুর আল হাযরামী (রাঃ) থেকে আমাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন, তিনি নাবী (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে সালাত আদায় করিয়াছেন, যখন (তাহরিমার) তাকবীর বলিতেন তখন রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন, অতঃপর যখন রুকূ’ করার ইরাদা করিতেন তখনও রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন।
ইমাম বুখারী (রহ) বলেন, উমার ইবনুল খাত্তাব, জাবির বিন আবদুল্লাহ, আবূ হুরাইরা, উবাইদুল্লাহ বিন উমাইর, তার পিতা, আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস ও আবূ মূসা (রাঃ) থেকে নাবী (সাঃআঃ) থেকে হাদিস বর্ণিত হয়েছে, তিনি (সাঃআঃ) রুকূ’তে (যাওয়ার পূর্বে) ও রুকূ’ থেকে মাথা উঠিয়ে রাফ্উল ইয়াদায়ন করিয়াছেন। ইমাম বুখারী বলেন, আমরা যা কিছু উল্লেখ করলাম তা একজন অতি অল্প জানা লোকের জন্যও যথেষ্ট, ইনশা আল্লাহু তাআলা।
এর সনদ সহীহ। ইবনুল খুযাইমাহ (৬৯৮, ৬৯৭) একে সহীহ’র মধ্যে গণ্য করিয়াছেন। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২৪ নং হাদীস : মুহাম্মাদ ইবনু মুকাতিল আবদুল্লাহ হইতে বর্ণিতঃ
তিনি ইবনু জুরাইজ থেকে পাঠ করা শুনেছেন, তিনি বলেন, আল হাসান বিন মুসলিম আমাকে এ মর্মে খবর দিয়েছেন যে, তিনি ত্বাউস থেকে সালাতে রাফ্উল ইয়াদায়ন সম্পর্কিত হাদিস শুনেছেন, তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ, আবদুল্লাহ, আবদুল্লাহ অর্থাৎ আবদুল্লাহ ইবনু উমার, আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস ও আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র (তার তিনজনই) রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন। ত্বাউস বলেন, সালাত শুরুর প্রাক্কালে যে প্রথম তাকবীর দেয়া হয় সেখানে বাকী তাকবীরগুলোর চেয়ে কিছুটা বেশি হাত উঁচু করিতে হয়। (ইবনু জুরাইজ বলেন,) আমি আত্বা (বিন আবূ রিবাহ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনার নিকট কি এমন (কথা) পৌঁছেছে, প্রথম তাকবীরে অন্য তাকবীরগুলোর চেয়ে হাত বেশি উঠাতে হইবে? তিনি বলিলেন, না।
এর সনদ সহীহ। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২৫ নং হাদীস : বর্ণনাকারী হইতে বর্ণিতঃ
এমনকি মুসাদ্দাদ আমার নিকট হাদিস বর্ণনা করে বলেছেন, ইয়াযীদ বিন যুরাই আমাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন, তিনি সাঈদ থেকে, তিনি ক্বাতাদাহ থেকে, তিনি আল হাসান থেকে বর্ণনা করিয়াছেন, তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ)-এর সহচরগণের হাতগুলো দৃশ্যত পাখা সদৃশ, যখন রুকূ’তে যেতেন, আর যখন রুকূ’ থেকে তাহাদের মাথাগুলো উঠাতেন তখন তারা সেগুলো (হাতগুলো) উঠাতেন।
সহীহ। মূল কপিতে (মাখতূতাহ) শুবার উল্লেখ রয়েছে, যেখানে অন্য কপিতে সাঈদ বিন আরুবাহর উল্লেখ রয়েছে, যা ঠিক নয়। এ বর্ণনাটি শাহেদ থাকার কারণে সহীহ। ক্বাতাদাহ থেকে শুবা কর্তৃক বর্ণনাটিও বিশুদ্ধ। তাই ক্বাতাদাহর তাদলীসের বিষয়টি প্রত্যাখ্যাত। আবূ দাঊদের বর্ণনায় (১ম খন্ড ১১০ পৃষ্ঠা) صدرهمإلى(প্রথম তাকবীরে বক্ষ পর্যন্ত রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন) আছে, যা শারীক আল কূফীর তাদলীসের কারণে দুর্বল। হাদিসের মানঃ অন্যান্য
২৬ নং হাদীস : মূসা বন ইসমাঈল আবূ হেলাল হইতে বর্ণিতঃ
তিনি হুমাইদ বিন হিলাল থেকে আমাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন, তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ)-এর সহচরবৃন্দ যখন সালাত আদায় করিতেন তাহাদের হাতগুলো পাখা সদৃশ কান পর্যন্ত উঠতো।
(ইমাম বুখারী (রহ.) বলেন) আল হাসান (আল বাসরী) ও হুমাইদ বন হিলাল কোন একজন সাহাবীকেও বাদ দেননি। (অর্থাৎ তাবেয়ীগণের কথা অনুযায়ী বলা যায়, সকল সাহাবী কোন প্রকার ব্যতিক্রম ছাড়াই রাফ্উল ইয়াদায়ন করিয়াছেন)
-এ বর্ণনাটি হাসান। আবূ হিলাল মুহাম্মদ বিন সালীম আল বাসরী দুর্বল রাবী (দেখুন তুহফা আল আকয়িয়্যাহ ৯৮, ১৭ পৃষ্ঠা) কিন্তু এর পূর্বে বর্ণিত শাহেদ হাদিসটির কারণে এটি হাসান বলে পরিগণিত হয়েছে। জুযউল রফইল ইয়াদাঈন হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
৩৫ নং হাদীস : আবূল ইয়ামান হইতে বর্ণিতঃ
আবূল ইয়ামান আমাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন, তিনি শু’আইব থেকে, তিনি যুহরী থেকে, তিনি সালিম বিন আবদুল্লাহ থেকে, আবদুল্লাহ ইবনু উমার বলেন, আমি নাবী (সাঃ)-কে দেখেছি, যখন তিনি সালাতে (শুরুর) তাকবীর বলিতেন, তখন তাকবীর বলার সঙ্গে দু’হাত তাহাঁর দু’কাঁধ পর্যন্ত উঠাতেন। আর যখন তিনি রুকূ’র জন্য তাকবীর বলিতেন, তখন তাকবীর বলার সঙ্গে দু’হাত তাহাঁর দু’কাঁধ পর্যন্ত উঠাতেন। আর যখন তিনি রুকূ’র জন্য তাকবীর বলিতেন, তখনও অনুরূপ করিতেন, যখন তিনি সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ বলিতেন, তখনও ঐরূপ করিতেন, আর বলিতেন, রাব্বানা লাকাল হামদ। আর তিনি যখন সাজদাহ করিতেন, তখন ঐরূপ করিতেন না। আর যখন তিনি সাজদাহ থেকে মাথা উঠাতেন তখনও ঐরূপ করিতেন না।
হাদিসটি সহীহ। বর্ণনাটি সহীহ বুখারীতেও (৭৩৮) উল্লেখ আছে। সালীম থেকে যুহরীর শ্রবণের বাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে। (দেখন অত্র পুস্তকের ৩৮ নং হাদিস) ইমাম বুখারী (রহ.) বলেন, ইবনুল মুবারক রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন, আমাদের জানা মতে জ্ঞানের দিক দিয়ে তিনি তৎকালীন সময়ের বড় বিদ্বান ছিলেন। যদিও অজ্ঞ ব্যক্তি যারা সালাফদের সম্পর্কে অজ্ঞ তাহাদের ইবনুল মুবারককে (দলীলসহ) অনুসরণ করা উচিত যিনি (ইবনুল মুবারক) রাসূলুল্লাহ (সাঃ), সাহাবীগণ ও তাবেয়ীগণকে মান্য করিতেন। অজ্ঞ লোকেদের নিকট থেকে দলীল গ্রহণ করার চেয়ে এটা তার জন্য অধিক উত্তম হইবে। এখানে একটি বিষয় লক্ষণীয় যে, ইমাম ইবনুল মুবারকের রাফ্উল ইয়াদায়ন করাটা মুতাওয়াতির সূত্রে প্রমাণিত। (দেখুন সুনান তিরমিযী), বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, তাহাদের মধ্যকার কেউ কেউ বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর যুগে ইবনু উমার (রাঃ) ছোট ছিলেন। অথচ নাবী (সাঃ) তার সৎ হওয়ার ব্যাপারে সাক্ষ্য প্রদান করিয়াছেন। জুযউল রফইল ইয়াদাঈন হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩৬ নং হাদীস : ইয়াহইয়া বিন সুলাইমান হইতে বর্ণিতঃ
ইয়াহইয়া বিন সুলাইমান আমাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন, তিনি ইবনু ওয়াহব থেকে, তিনি ইউনুস থেকে, তিনি ইবনু শিহাব থেকে, তিনি সালিম বিন আবদুল্লাহ থেকে, তিনি তাহাঁর পিতা (আবদুল্লাহ বিন উমার) থেকে, তিনি (উম্মুল মু’মিনীন) হাফসা থেকে বর্ণনা করিয়াছেন, নিশ্চয়ই রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, অবশ্যই আবদুল্লাহ ইবনু উমার সৎ ব্যক্তি।
হাদিসটি সহীহ। ইমাম বুখারী হাদিসটিকে সহীহুল বুখারী (৩৭৪১, ৩৭৪০) এ বর্ণনা করিয়াছেন। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩৭ নং হাদীস: আলী বিন আবদুল্লাহ হইতে বর্ণিতঃ
আলী বিন আবদুল্লাহ আমাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন, তিনি সুফইয়ান থেকে, তিনি বলেন, আমর (বিন দীনার) বলেছেন, ইবনু উমার বলেন, অবশ্যই আমার পিতা যখন ইসলাম গ্রহণ করিলেন, সে সময়কার কথা বলব, (কাফিররা) বলিল, উমার নাস্তিক (ধর্মত্যাগী) হয়ে গেছে। উমার নাস্তিক (ধর্মত্যাগী) হয়ে গেছে। তখন আল আসী বিন ওয়ায়িল এসে বলিল, উমার নাস্তিক (ধর্মত্যাগী) হয়ে গেছে তো কী হয়েছে? আমি তার প্রতিবেশী (তার সাহায্যকারী)। তখন তারা তাকে (উমার (রাঃ)) ছেড়ে দিল।
ইমাম বুখারী বলেন, সাঈদ ইবনুল মুসায়্যিব বলেছেন, আামি যদি কারো ব্যাপারে জান্নাতী হওয়ার সাক্ষ্য দিতাম, তাহলে অবশ্যই ইবনু উমারের জন্যই সাক্ষ্য দিতাম। জাবির ইবনু আবদুল্লাহ বলেন, নাবী (সাঃ)-এর তরিকা আঁকড়ে ধরা ও পুঙ্খাণুপুঙ্খভাবে তাহাঁর অনুসরণকারী ইবনু উমারের চেয়ে বেশি কেউ ছিল না।
ইমাম বুখারী বলেন, কতিপয় অজ্ঞ লোক ওয়ায়িল বিন হুজর সম্পর্কে সমালোচনা করিয়াছেন (যে সমালোচনা বাতিল)। সন্দেহাতীতভাবে ওয়ায়িল বিন হুজর ছিলেন ইয়ামানের রাজপুত্র। তিনি যখন নাবী (সাঃ)-এর নিকট আগমন করেন তখন নাবী (সাঃ) তাকে সম্মানিত করেন এবং তাকে একখণ্ড জমি বরাদ্দ দেন। আর তার সঙ্গে মুআবিয়া বিন আবূ সুফইয়ানকে প্রেরণ করেন।
ইমাম বুখারী এ হাদিসটিকে একই সনদে স্বীয় সহীহুল বুখারীর (৩৮৬৫) মধ্যে উল্লেখ করিয়াছেন। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩৮ নং হাদীস : হাফস বিন উমার হইতে বর্ণিতঃ
হাফস বিন উমার আমাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন, তিনি জামে’ ইবনু মাত্বার থেকে, তিনি আলকামা বিন ওয়ায়িল থেকে, তিনি তাহাঁর পিতা (ওয়ায়িল বিন হুজর) থেকে বর্ণনা করিয়াছেন, নিশ্চয় নাবী (সাঃ) তাঁকে (ওয়ায়িল বিন হুজরকে) হাযরামাওত এলাকায় এক টুকরা জমি বরাদ্দ দিয়েছিলেন।
এর সনদ সহীহ। ইমাম তিরমিযী (১৩৮১) একে হাসান বলেছেন। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৩৯ নং হাদীস : আবদুল্লাহ বিন সালিহ হইতে বর্ণিতঃ
আবদুল্লাহ বিন সালিহ আমাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি আল লাইস থেকে, তিনি ইউনুস (বিন ইয়াযীদ আল আইলী) থেকে, তিনি ইবনু শিহাব (আর যুহরী) থেকে, তিনি সালিম আবদুল্লাহ থেকে, নিশ্চয় আবদুল্লাহ ইবনু উমার বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে দেখেছি, যখন তিনি সালাতের জন্য দাঁড়াতেন, তখন কাঁধ বরাবর রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন, অতঃপর তাকবীর বলিতেন। যখন তিনি রুকূ’ থেকে মাথা উঠাতেন তখনও অনুরূপ (কাঁধ বরাবর রাফ্উল ইয়াদায়ন) করিতেন। অতঃপর বলিতেন, সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ। আর তিনি যখন সিজদা থেকে মাথা উঠাতেন তখন তিনি এরূপ (রাফ্উল ইয়াদায়ন) করিতেন না।
হাদিসটি সহীহ। জমহুর মুহাদ্দিসগণের নিকট ইউনুস বিন ইয়াযীদ আল আইলী বিশ্বস্ত বর্ণনাকারী এবং তার হাদিস সহীহ। তার ব্যাপারে সমালোচনা অগ্রহণযোগ্য। (তাহযীবুত তাহযীব প্রমুখ) হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৪০ নং হাদীস : আবূ আন-নু’মান (মুহাম্মাদ বিন ফযল আরিম) হইতে বর্ণিতঃ
আবূ আন-নু’মান (মুহাম্মাদ বিন ফযল আরিম) আমাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি আবদুল ওয়াহিদ বিন যিয়াদ আশ শাইবানী থেকে, তিনি মুহারিব বিন দিসার থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ বিন উমারকে দেখেছি, তিনি যখন সালাত আরম্ভ করিতেন, তখন তাকবীর দিতেন ও রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন। যখন তিনি রূকূ করার মনন্থ করিতেন তখনও রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন। যখন তিনি রুকূ’ থেকে মাথা উঠাতেন তখনও (অনুরূপ রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন)।
এর সনদ সহীহ। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৪১ নং হাদীস : আল আইয়াম ইবনুল ওয়ালিদ হইতে বর্ণিতঃ
আল আইয়াম ইবনুল ওয়ালিদ আমাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি আবদুল আ’লা থেকে, তিনি উবাইদুল্লাহ থেকে, তিনি নাফি’ থেকে, তিনি ইবনু উমার থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি তাকবীর (তাহরীমা) বলে রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন, যখন রুকূ’তে যেতেন তখন রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন। আর যখন সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ বলিতেন তখন রাফ্উল ইয়াদায়ন। আর ইবনু উমার রাফ্উল ইয়াদায়ন করে বলেন, নাবী (সাঃ)-ও অনুরূপ করিতেন।
এ হাদিসটি সহীহ। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৪২ নং হাদীস : ইবরাহীম ইবনুল মুনযির হইতে বর্ণিতঃ
ইবরাহীম ইবনুল মুনযির আমাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি মা’মার থেকে, তিনি ইবরাহীম বিন ত্বহমান থেকে, তিনি আবুয যুবায়র থেকে বর্ণনা করে বলেন, আমি ইবনু উমার (রাঃ)-কে দেখেছি। তিনি যখন সালাতের জন্য দাঁড়াতেন তখন তিনি কান বরাবর রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন। যখন তিনি রুকূ’ থেকে মাথা উঠাতেন তখনও রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন। আর যখন তিনি (দু’রাকআত শেষে দাঁড়াতেন তখনও অনুরূপ (রাফ্উল ইয়াদায়ন) করিতেন।
হাদিসটি সনদ হাসান। মাসায়িলে আবদুল্লাহ বিন আহমাদ (১/২৪৪, ২৪৩) ও আত তাহমীদ (৯/১২৭) গ্রন্থে এর শাহেদ হাদিস রয়েছে। হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
৪৩ নং হাদীস : আবদুল্লাহ বিন সালিহ হইতে বর্ণিতঃ
আবদুল্লাহ বিন সালিহ আমাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি আল লাইস থেকে, তিনি নাফি’ থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। (তিনি বলেন, আবদুল্লাহ) ইবনু উমার যখন সালাতের জন্য উদ্যত হইতেন তখন রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন, যখন রুকূ’তে যেতেন, আর যখন রুকূ’ থেকে মাথা উত্তোলন করিতেন, আর যখন দুই সিজদাহ (রাকআত) থেকে উঠে দাঁড়াতেন তখনও তাকবীর বলে রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন।
সহীহ। ইমাম বুখারীর মত অভিজ্ঞ মুহাদ্দিসগণ যখন আবদুল্লাহ বিন সালিহ থেকে হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন তখন তার হাদিস সহীহ। (তাহযীবুত তাহযীব, হাদীউস সারী মুকাদ্দামা ফাতহুল বারী, প্রমুখ) সুতরাং “কাসীরুল গালাত” কর্তৃক এ বর্ণনার দোষ-ত্রুটি নির্ণয়টি বাতিল। এ হাদিসটি বিভিন্ন সনদে বর্ণিত হয়েছে। জুযউল রফইল ইয়াদাঈন হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৪৪ নং হাদীস : মূসা বিন ইসমাঈল হইতে বর্ণিতঃ
মূসা বিন ইসমাঈল আমাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি হাম্মাদ বিন সালামাহ থেকে, তিনি আইয়ূব থেকে, তিনি নাফি’ থেকে, তিনি ইবনু উমার থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। নাবী (সাঃ) যখন (তাহরিমার) তাকবীর বলিতেন তখন রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন, যখন রুকূ’তে যেতেন তখন, যখন রুকূ’ থেকে তাহাঁর মাথা উঠাতেন (তখনও রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন)।
হাদিসটি সহীহ। মূসা বিন ইসমাঈল থেকেও ইমাম বাইহাকী তার মা’রিফাতুস সুনান (১/৪২) এটি বর্ণনা করিয়াছেন। হাম্মাদ বিন সুলাইমানের স্মৃতিশক্তি খর্ব হওয়ার পূর্বে বর্ণিত হাদিস এটি। (আল কাওয়াকিবুন নিরাত, প্রমুখ) তাছাড়া এর বহু শাহেদ রয়েছে। ইমাম মুসলিমও এটি ক্বাতাদাহ থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। (৩৯১/৮৬৫)। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৪৫ নং হাদীস : মূসা বিন ইসমাঈল হইতে বর্ণিতঃ
মূসা বিন ইসমাঈল আমাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি হাম্মাদ বিন সালামাহ থেকে, তিনি ক্বাতাদাহ থেকে, তিনি নাসর বিন আসিম থেকে, তিনি মালিক ইবনুল হুওয়াইরিস থেকে বর্ণনা করিয়াছেন।
হাদিসটি সহীহ।
নিশ্চয়ই নাবী (সঃ) যখন সালাতে প্রবেশ করিতেন তখন কানের ছিদ্র বরাবর দু’হাত উঠাতেন (রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন)। যখন রুকূ’তে যেতেন তখন, যখন রুকূ’ থেকে তাহাঁর মাথা উঠাতেন তখনও অনুরূপ (রাফ্উল ইয়াদায়ন) করিতেন।
হাদিসটি সহীহ। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৪৬ নং হাদীস : মাহ্মুদ হইতে বর্ণিতঃ
মাহ্মুদ আমাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি ইবনু উলাইয়াহ থেকে, তিনি খালিদ থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। আবূ কিলাবা যখন রুকূ’তে যেতেন তখন রাফ্উল ইয়াদায়ন, যখন রুকূ’ থেকে তাহাঁর মাথা উঠাতেন তখনও অনুরূপ (রাফ্উল ইয়াদায়ন) করিতেন। যখন তিনি সাজদায় যাওয়ার জন্য ঝুঁকতেন তাহাঁর দু’হাঁটু দিয়ে শুরু করিতেন। যখন তিনি উঠে দাঁড়াতেন দু হাতের উপর ভর দিয়ে দাঁড়াতেন। তিনি হাদিসটি মালিক ইবনুল হুওয়াইরিস থেকে উল্লেখ করিয়াছেন।
হাদিসটি যঈফ। এখানে দুজন মাহমুদ নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। যদি মাহমুদ বিন গাইলান হয় তাহলে হাদিসটি সহীহ। আর যদি মাহমুদ বিন ইসহাক আল খাযাঈল হয়ে থাকে তাহলে হাদিসটি মুনকাতি। এরকম অনিশ্চয়তার কারণে হাদিসটিকে যঈফ হিসেবেই ধরে নেয়া হলো। আল্লাহই ভালো জানেন। জুযউল রফইল ইয়াদাঈন হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
৪৭ নং হাদীস : আবদুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ হইতে বর্ণিতঃ
আবদুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ আমাদেরকে হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি আবূ আমির থেকে, তিনি ইব্রাহীম বিন ত্বাহমান থেকে, তিনি আবু যুবায়র থেকে, তিনি ত্বাউস থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। ইবনু আব্বাস যখন সালাতের জন্য দাড়াতেন তখন তাহাঁর দু’কান বরাবর রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন। যখন তিনি রুকূ’ থেকে তাহাঁর মাথা উঠিয়ে সোজা হয়ে দাড়াতেন তখনও অনুরুপ করিতেন।
হাদিসটি সহীহ। আবূ যুবায়র তাদলিসের কারণে হাদিসটি দূর্বল হলেও এর অনেকগুলো শাহেদ হাদিস থাকার কারণে সহীহ বলে স্বীকৃত। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৪৮ নং হাদীস : মুহাম্মাদ বিন মাকাতিল হইতে বর্ণিতঃ
মুহাম্মাদ বিন মাকাতিল আমাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি আবদুল্লাহ থেকে, তিনি ইসমাঈল থেকে, তিনি স্বালিহ বিন কাইসান থেকে, তিনি আবদুর রহমান আল আ’রাজ থেকে, তিনি আবু হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি বলেন , রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন সালাত শুরু করিতেন আর যখন রুকূ’তে যেতেন তখন তাহাঁর কাঁধ বরাবর (দু’হাত উঠিয়ে ) রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন।
হাদিসটির মতন সহীহ। ইসমাইল বিন আইয়াশের সিরিয়ার বাইরের লোক থেকে বর্ণনার কারণে এর সনদ দুর্বল। (ইসমাইল বিন আইয়াশের সিরিয়ার নন এমন ব্যক্তি থেকে বর্ণনার কারণে দুর্বল মনে করা হয়েছে )। কিন্তু এর অনেক শাহেদ হাদিস আছে । (দেখুন সহীহ ইবনু খুযাইমাহ (১/৩৪৪) ভারতীয় ছাপার মধ্যে মুহাম্মাদ বিন মুকাতিল এর পর “আখবারানা আফিয়া” কথাটি ভুল। সঠিক শব্দ হল “আখবারানা আবদুল্লাহ” যা আসল যহিরিয়্যাহ কপিতে উল্লেখ আছে। জুযউল রফইল ইয়াদাঈন হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৪৯ নং হাদীস : ইসমাঈল হইতে বর্ণিতঃ
ইসমাঈল আমাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি মালিক থেকে, তিনি নাফি’ থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। আবদুল্লাহ ইবনু উমার যখন সালাত আরম্ভ করিতেন আর যখন রুকূ’ থেকে মাথা উঠাতেন তখন তাহাঁর কাধ বরাবর রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন।
হাদিসটি সহীহ। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫০ নং হাদীস : মুহাম্মাদ বিন মাকাতিল হইতে বর্ণিতঃ
মুহাম্মাদ বিন মাকাতিল আমাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি আবদুল্লাহ (ইবনুল মুবারক) থেকে, তিনি (মুহাম্মাদ) বিন আজলান থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি বলেন, আমি আল নু’মান বিন আবূ আইয়াশকে বলিতে শুনিয়াছি, প্রতিটি জিনিসের একটি সৌন্দর্য রয়েছে, আর সালাতের সৌন্দর্য হচ্ছে তোমার রাফ্উল ইয়াদায়ন করা, যখন তুমি (সালাত শুরুর) তাকবীর দিবে, যখন রুকূ’তে যাবে, আর যখন রুকূ’ থেকে মাথা উত্তোলন করিবে (তখন রাফ্উল ইয়াদয়ন করা)।
এর সনদ সহীহ। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫১ নং হাদীস : মুহাম্মাদ বিন মাকাতিল হইতে বর্ণিতঃ
মুহাম্মাদ বিন মাকাতিল আমাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি আবদুল্লাহ (ইবনুল মুবারক) থেকে, তিনি আল আওযাঈ থেকে, তিনি হাসান বিন আত্বিয়্যাহ থেকে, তিনি আল কাসিম বিন মুখাইমিরাহ থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি বলেন, রাফ্উল ইয়াদায়ন হচ্ছে তাকবীরের জন্য। তিনি বলেন, আমি যখন ঝুকতাম তখন তাকে দেখেছি (অর্থাৎ যখন রুকূ’র জন্য ঝুকতাম তখন রাফ্উল ইয়াদায়ন করতাম )।
হাদিসটির সনদ সহীহ। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
৫২ নং হাদীস : মুহাম্মাদ বিন মাকাতিল হইতে বর্ণিতঃ
মুহাম্মাদ বিন মাকাতিল আমাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি আবদুল্লাহ (ইবনুল মুবারক) থেকে, তিনি শারীক থেকে, তিনি আল লাইস থেকে, তিনি আত্বা থেকে বর্ণনা করিয়াছেন, তিনি বলেন, আমি জাবির বিন আবদুল্লাহ ও আবূ সাঈদ আল খুদরী ও ইবনু আব্বাস (রাঃ)–কে দেখেছি, তারা যখন সালাত আরম্ভ করিতেন তখন রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন, যখন রুকূ’তে যেতেন তখন, যখন রুকূ’’ থেকে তাঁদের মাথা উঠাতেন তখনও (রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন)।
হাদিসটি হাসান। মূল জহিরিয়া নুসখার মধ্যে হাদ্দাসানা মুহাম্মাদ বিন মাকাতিল লেখা আছে যেখানে ভারতীয় ছাপায় শুধু হাদ্দাসানা মাকাতিল লেখা রয়েছে। যা ভুল। হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
৫৩ নং হাদীস : মুহাম্মাদ বিন মাকাতিল হইতে বর্ণিতঃ
মুহাম্মাদ বিন মাকাতিল আমাদেরকে খবর দিয়েছেন। তিনি আবদুল্লাহ (ইবনুল মুবারক) থেকে, তিনি ইকরামাহ বিন আম্মার থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি বলেন, আমি সালিম বিন আবদুল্লাহ, আল কাসিম বিন মুহাম্মাদ, আত্বা, ও মাকহূলকে দেখেছি, তারা সালাতে রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন, যখন রুকূ’তে যেতেন ও যখন (রুকূ’ থেকে মাথা) উঠাতেন।
এর সনদ হাসান। যদিও ইকরামাহ বিন আম্মার হাদিস শ্রবণের ব্যাপারটি নিশ্চিত করিয়াছেন। তথাপি তিনি হাসানুল হাদিস। (যার বর্ণিত হাদিস হাসান) জুযউল রফইল ইয়াদাঈন হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
৫৪ নং হাদীস : লাইস হইতে বর্ণিতঃ
জারীর লাইস থেকে বর্ণনা করে বলেন, আত্বা ও মুজাহিদ উভয়ে সালাতে রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন। নাফি’ ত্বাউসও অনুরুপ (রাফ্উল ইয়াদায়ন) করিতেন।
হাদিসটি হাসান। এটি পূর্ণ সনদ সহকারে যদিও পাওয়া যায়নি, তথাপি আত্বা, মুজাহিদ, নাফি’ ও ত্বাউস কর্তৃক রাফ্উল ইয়াদায়নের হাদিস বিশুদ্ধ সনদে প্রমাণিত। হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
৫৫ নং হাদীস : লাইস হইতে বর্ণিতঃ
তিনি উমার, সাইদ বিন যুবায়র ও ত্বাউস সূত্রে বর্ণনা করেন, তারা ও তাঁদের সঙ্গী সাথীরা যখন রুকূ’ করিতেন তখন রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন।
হাদিসটি হাসান। এটি মুত্তাসিল সনদে পাওয়া যায়নি। কিন্তু এর অনেক শাহেদ হাদিস থাকার কারণে হাসান।হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
৫৬ নং হাদীস : মূসা বিন ইসমাঈল হইতে বর্ণিতঃ
মূসা বিন ইসমাঈল আমাদেরকে হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি আবদুল ওয়াহিদ বিন যিয়াদ, তিনি আসিম থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি বলেন, আমি আনাস বিন মালিক (রাঃ)–কে দেখেছি, তিনি যখন সালাত আরম্ভ করিতেন তখন তাকবীর বলিতেন, অতঃপর রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন, যখনই রুকূ’তে যেতেন ও রুকূ’ থেকে মাথা উঠাতেন (তখনও রাফ্উল ইয়াদায়ন করিতেন)।
জুযউল রফইল ইয়াদাঈন হাদিসটির সনদ সহীহ। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
বইটির PDF/ মুল কপি পেতে হলে নিচে Comment/ কমেন্ট এর মাধ্যমে আমাদেরকে জানান, তাহলে আমরা আপনাদেরকে পাঠিয়ে দিতে পারব। ইনশাআল্লাহ।
Leave a Reply